Search

Predigten

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[4-1] রোমীয় পুস্তকের চতুর্থ অধ্যায়ের উপস্থাপন

রোমীয় ৪:৬-৮ পদে পৌল ঈশ্বরের আশীর্বাদ প্রাপ্তদের কথা বলেছেন। যাদের ব্যবস্থাবিহীন কর্ম ক্ষমা হয়েছে এবং যাদের পাপ আচ্ছাদিত হয়েছে, তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে আসলেই অনুগ্রহ পেয়েছে। তাই পৌল ঘোষণা করেন, “ধন্য সেই ব্যক্তি, যাহার পক্ষে সদাপ্রভু পাপ গণনা করেন না”(রোমীয় ৪:৮পদ)। 
এখানে অব্রাহামকে পৌল আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি হিসাবে দেখিয়েছেন। বাইবেলে অব্রাহামকে বিশ্বাসের আদর্শ হিসাবে দেখান হয়েছে, অব্রাহামের মাধ্যমে সত্য এবং আশীর্বাদ যুক্ত বিশ্বাসের বিষয়টি প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেছেন। নিজের কর্ম দ্বারা গর্ব করার মত অব্রাহামের অনেক বিষয় ছিল, কিন্তু আসলে তিনি তা করেননি। কেবলমাত্র ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করার মাধ্যমে তাঁর পক্ষে ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল। 
অব্রাহাম যেমন বিশ্বাস করেছিলেন, বাইবেল বলে ঠিক তেমনি সরল বিশ্বাসে ধার্মিক এবং আশীর্বাদের পাত্র হওয়া যায়। কিভাবে ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জন করা যায়, এই অধ্যায়ে প্রেরিত পৌল তা বর্ণনা করেছেন। 
জগতে থাকাকালীন পাপ করেননি, এমন কোন ব্যক্তি নেই। উপরোন্ত, ঘন মেঘে যেমন চারিদিক ঢেকে ফেলে, মানুষের পাপ তেমনি ঘনীভূত হয়েছে। যিশাইয় পুস্তকে লেখা আছে যে, “আমাদের পাপ এবং অধর্ম মেঘের মত ঘন” (যিশাইয় ৪৪:২২পদ)। তাই যীশু খ্রীষ্টের ধার্মিকতাকে বিশ্বাস না করে ঈশ্বরের বিচার দন্ড এড়াবে, এমন কোন ব্যক্তি জগতে নেই। 
যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত সেচন ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে পূর্ণরূপে সাধন করেছে। যারা পাপের ক্ষমা পেয়েছে এবং যারা মাংসের পাপ করেনি, তাদের উভয়ের জন্য। উপরোক্ত, পাপের সম্বন্ধে সজ্ঞান না থেকেও আমরা পাপ করি, সেই পাপের জন্য বিচার দন্ড আমাদের প্রাপ্য।
প্রত্যেককে এটা মনে রাখা উচিত যে, ক্ষুদ্রতম পাপের জন্যও ঈশ্বরের বিচারে মানুষের মৃত্যুদন্ড হবে। বাইবেল বলে যে, “পাপের বেতন মৃত্যু” (রোমীয় ৬:২৩পদ) এবং এইজন্য আমাদের ঈশ্বরের ব্যবস্থা জানা উচিত এবং তাতে বিশ্বাস করা উচিত। আমাদের চিন্তা এবং কর্মে যে সব পাপ আমরা করছি, তার মূল্য আমাদের অবশ্যই দেওয়া উচিত, পাপের মূল্য পূর্ণরূপে পরিশোধ করলে আমাদের পাপের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অন্য কথায়, যত কঠোর সাধনাই করি না কেন, পাপের মূল্য সম্পূর্ণরূপে পরিশোধ না করা পর্যন্ত আমরা বিচারদন্ড এড়াতে পারব না। আমাদের এটা জানা উচিত যে, পাপে থাকা অবস্থায় যীশুকে বিশ্বাস করলে প্রত্যেক ব্যক্তি সেই পাপের জন্য বিচারিত হবে। ছোট পাপ বা বড় পাপ, বুঝে বা না বুঝে পাপ, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত পাপ আমাদের সমস্ত পাপে পৃথিবী পরিপূর্ণ। এই সত্য আমাদের স্বীকার না করে উপায় নেই যে, আমাদের নিজের পাপের কারণে ঈশ্বরের ব্যবস্থানুযায়ী আমরা মৃত্যুর যোগ্য, “পাপের বেতন মৃত্যু।”
জল, রক্ত এবং পবিত্র আত্মায় নিহিত ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে মানুষ (নারী/পুরুষ) তার সমস্ত পাপের ক্ষমা পেতে পারে। ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে পাপের মুক্তি পেলে মানুষ অবিরত ঈশ্বরের প্রশংসা করার যোগ্যতা অর্জন করে, কারণ তিনি (যীশু) তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যেহেতু প্রভু তাঁর বাপ্তিস্ম, রক্ত এবং পুনরুত্থান দ্বারা আমার মেঘের ন্যায় পাপ সহ জগতের সমস্ত পাপ ইতিপূর্বে তুলে নিয়েছেন, এবং এইভাবে আমাদেরকে অনন্ত জীবন দিয়েছেন, তাই আমরা প্রভুর কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রভু যদি যর্দ্দনে যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত এবং ক্রুশে রক্ত সেচনের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে না নিতেন, তাহলে নরকের মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপের মূল্য পরিশোধ করতে হত। যদি সম্পূর্ণরূপে আমাদের পাপের ক্ষমা না দিতেন, তাহলে আমরা কিভাবে তাঁর প্রশংসা করতাম? যদি আমাদের হৃদয় পাপে পূর্ণ থাকত তাহলে পবিত্র ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা কি তাঁর নামে প্রশংসা করতে পারতাম? আমরা কি এই বলে তাঁর প্রায়শ্চিত্তের জন্য প্রশংসা করতে পারতাম? বলতে পারতাম, “তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেছেন” অথচ হৃদয় ভরা পাপ রয়েছে? -না। 
কিন্তু এখন ধার্মিকতার মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করতে পারি। যেহেতু আমরা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি এবং তাতে আবৃত হয়েছি বিধায় এই সকল সম্ভব হয়েছে। 
 
 

পৌল বলেন যে, ঈশ্বরের সাধিত কাজে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করেছি

 
“তবে কি বলিব? মাংস সম্বন্ধে আমাদের আদি পিতা যে অব্রাহাম, তিনি কি প্রাপ্ত হইয়াছেন? কারণ অব্রাহাম যদি কার্যহেতু ধার্মিকগণিত হইয়া থাকেন, তবে শ্লাঘার বিষয় তাঁহার আছে; কিন্তু ঈশ্বরের কাছে নাই; কেননা শাস্ত্রে কি বলে? “অব্রাহাম ঈশ্বরের বিশ্বাস করিলেন, এবং তাহা তাঁহার পক্ষে ধার্মিকতা বলিয়া গণ্য হইল।” যে কাৰ্য্য করে তাহার বেতন তো তাহার পক্ষে অনুগ্রহের বিষয় বলিয়া নয়, প্রাপ্য বলিয়া গণিত হয়। কিন্তু যে ব্যক্তি কার্য্য করে - তাঁহারই উপর বিশ্বাস করে, যিনি ভক্তিহীনকে ধার্মিক বলিয়া গণনা করেন- তাহার বিশ্বাসই ধার্মিকতা বলিয়া গণিত হয়’’ (রোমীয়৪:১-৫)।
অব্রাহামের দৃষ্টান্তের মাধ্যমে প্রেরিত পৌল এখানে ধার্মিক হওয়ার পথ নির্দ্দেশ দিয়েছেন। কর্মের ফল প্রত্যেকেরই ভোগ করতে হবে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের অনুগ্রহ যে, নিজেদের সৎকর্ম বা সৎ জীবন-যাপন নয়, কেবলমাত্র নূতন জন্ম লাভের মাধ্যমে আমরা ধার্মিক গণিত হতে পারি।
প্রেরিত পৌল বলেন, “যে কাৰ্য্য করে তাহার বেতন তো তাহার পক্ষে অনুগহের বিষয় বলিয়া নয়, প্রাপ্য বলিয়া গণিত হয়।” যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং বলিদানের রক্ত দ্বারা কিভাবে একজন পাপী পরিত্রাণ পেতে পারে, সেই কথাই এখানে বলা হয়েছে। ঈশ্বরের ধার্মিকতা, বিশ্বাসীদের জন্য পাপের ক্ষমা অর্থাৎ পরিত্রাণ ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান।
পাপীর পরিত্রাণ ঈশ্বরের ধার্মিকতার নিঃশর্ত অনুগ্রহ দান। পাপে জন্ম বিধায় পাপী যেমন পাপ না করে থাকতে পারে না, তাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্বীকার না করে পারে না যে, সে কঠোর পরিশ্রম সহ অনুতাপের প্রার্থনা করলেও এই ধরণের পাপীর পাপ দূর হয়ে যায় না। 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে কোন পাপী নিজের সম্পর্কে গর্ব করতে পারে না। “আমরা ত সকলে অশুচি ব্যক্তির সদৃশ হইয়াছি, আমাদের সবপ্রকার ধার্মিকতা মলিন বস্ত্রের সমান’ (যিশাইয় ৬৪:৬)। তাই যখন যর্দ্দন নদীতে প্রভুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় প্রায়শ্চিত্তের দ্বারা ঈশ্বরের যে ধার্মিকতা পূর্ণতা পেয়েছে, তাতে বিশ্বাস না করে পাপীর উপায় নেই। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমেই মানুষ কেবল পাপের ক্ষমা পেতে পারে। ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করার জন্য পাপীর অন্য আর কোন পথ নেই। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করেই কেবল আপনি পাপ থেকে মুক্ত হতে পারেন।
যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় প্রায়শ্চিত্তের মৃত্যুর মাধ্যমে তাঁর ধার্মিকতা লাভ করা যায়। কাজেই, পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে, ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করার মাধ্যমে তা সম্ভব। এটাই সত্য। এটাই ঈশ্বরের ধার্মিকতার অনুগ্রহের দান।
 
 

প্রেরিত পৌল পরিত্রাণের কথা বলেছেন

 
অব্রাহামকে আদর্শ হিসাবে দেখিয়ে প্রেরিত পৌল এর ব্যাখ্যা করেছেন। “যে কার্য্য করে, তাহার বেতন তাহার পক্ষে অনুগ্রহের বিষয় বলিয়া নয়, প্রাপ্য বলিয়া গণিত হয়।” প্রেরিত পৌল এখানে বলেছেন যে, ব্যবস্থাসিদ্ধ কোন কর্মের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করা যায় না। আত্মিক ত্বকছেদের ধর্মময় বাক্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে কেবল ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করা যায়।
মানুষের চেষ্টা বা কর্ম দ্বারা ঈশ্বরীয় ধার্মিকতা লাভ করা যায় না। ঈশ্বরের ধার্মিকতার দান হল; আপনি আমি -আমরা নরকগামী ছিলাম, কিন্তু যর্দ্দন নদীতে যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ নিজের কাঁধের উপরে তুলে নিয়েছেন। সেই পাপ নিয়ে তিনি ক্রুশের উপরে তাঁর রক্তের মাধ্যমে আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করেছেন। যীশু এইভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধন করেছেন। তাঁর ধর্মময় সমস্ত কার্য্য দ্বারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা পরিপূর্ণতা পেয়েছে। যা দ্বারা পাপীরা অনন্ত মৃত্যু থেকে উদ্ধার পেয়েছে।
 
 
যারা ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করতে পারে
 
৫ পদে বলা হয়েছে, “কিন্তু যে ব্যক্তি কার্য্য করে না-তাহারই উপরে বিশ্বাস করে, যিনি ভক্তিহীনকে ধার্মিক গণনা করেন-তাহার বিশ্বাসই ধার্মিকতা বলিয়া গণিত হয়।” এই অংশে ‘ভক্তিহীন’ কথাটি ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রেরিত পৌল ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভের উপায় ব্যাখ্যা করেছেন। যারা ভক্তিহীন’ তারা যে শুধু ভক্তিহীন তাই নয়, সারাজীবন ধরে অনৈতিক পাপে লিপ্ত। ঈশ্বরের বাক্য ঠিকই বলে যে, মানুষ জন্মগতভাবে ‘পাপের সমষ্টি। উপরোন্ত, যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ ঈশ্বরের ভয়ানক বিচারের সম্মুখীন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত পাপ না করে থাকতে পারে না। যাহোক, আমাদের মত ভক্তিহীনদের ঈশ্বর যদি পাপহীন এবং ধার্মিক বিশ্বাসী হিসাবে আহবান করতে চান, তাহলে ঈশ্বরের ধার্মিকতা ছাড়া আর কিভাবে তা সম্ভব?
আমাদের মত ভক্তিহীনদের সম্বন্ধে প্রভু বলেন, জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য পুরাতন নিয়মের সর্বশেষ মহাযাজক যোহন বাস্তাইজকের কাছে যর্দ্দন নদীতে প্রভু নিজে বাপ্তাহজিত হয়েছিল। “পাপের বেতন মৃত্যু” -এই বাক্যের পরিপূর্ণতা দেওয়ার জন্য তিনি ক্রুশে প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে রক্ত সেচন করে আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করলেন। আপনি কি বিশ্বাস করেন যে, বাপ্তিস্ম এবং ক্ৰুশীয় রক্ত সেচনের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা দ্বারা যীশু খ্রীষ্ট মূল্য পরিশোধ করেছেন? ধার্মিকতা লাভের জন্য যারা তাঁর ধার্মিকতাকে বিশ্বাস করে, ঈশ্বর তাদের বিশ্বাসের স্বীকৃতি দেন। এটা কোন বাধ্যবাধকতা নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতার সততায় প্রতিষ্ঠিত সত্য।
সুতরাং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসী ব্যক্তিকে পিতা ঈশ্বর বলেন, “হ্যা, তুমি আমার প্রজা। তুমি আমার ধার্মিকতায় বিশ্বাস কর। তুমি আমার সন্তান হয়েছ। তুমি পাপ মুক্ত। কেন? আমার পুত্র বাপ্তিস্ম এবং রক্ত দ্বারা তোমাকে পাপমুক্ত করেছেন। ‘পাপের বেতন মৃত্যু’ এই বাক্যানুসারে তিনি তাঁর রক্ত দ্বারা তোমার সমস্ত পাপের মূল্য পরিশোধ করেছেন। তোমার জন্য মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন। তাই তিনি তোমার ত্রাণকর্তা ও ঈশ্বর। তুমি কি তা বিশ্বাস কর?”
 “হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি।” তিনি আরও বলেন, “আমার পুত্র তাঁর ধৰ্ম্মময় কাজের দ্বারা আমার যে ধার্মিকতা সাধন করেছেন, তা আমি তোমাকে দিয়েছি। তাই এখন তুমি আমার সন্তান, আমার পুত্রের জল ও রক্ত দ্বারা আমি তোমাকে দত্তক নিয়েছি।”
সব মানুষ ঈশ্বরের সাক্ষাতে ভক্তিহীন। যাহোক, আমাদের ইতিপূর্বে কৃতপাপ এবং ভবিষ্যতের পাপ, উভয়ই তৎক্ষনাৎ যোহনের কাছে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে প্রভু যীশু তুলে নিয়েছেন। উপরোন্ত, ঈশ্বর, তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা আমাদেরকে তাঁর ধার্মিকতায় সজ্জিত করেছেন এবং এইভাবে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন।
 “কেননা তোমরা সকলে, খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস দ্বারা, ঈশ্বরের পুত্র হইয়াছ; কারণ তোমরা যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছ; সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ” (গালাতীয় ৩:২৬-২৭)। এখন প্রশ্ন হল আমরা অন্তর দিয়ে ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করি কি না? বিশ্বাস করলে আমরা ধার্মিক হই, বিশ্বাস না করলে আমরা ধার্মিকতা হারাই।
 
 
ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ভক্তিহীনেরাও..........
 
 এমন কি ভক্তিহীনদের জন্য ও ঈশ্বর তাঁর ধার্মিকতা দানের প্রতিজ্ঞা করেছেন; যদি তারা বিশ্বাস করে যে, যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নেওয়ার সময়ে একবারেই যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে, ঈশ্বর প্রত্যেক বিশ্বাসীকে তাঁর ধার্মিকতা দান করেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করলে জগতের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ পরিত্রাণ পায়। যারা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে, পিতা ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর সন্তান হওয়ার অধিকার দিয়েছেন। “হ্যাঁ, এখন তুমি পাপ মুক্ত। আমার পুত্র তোমাকে তোমার সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন।তুমি ধার্মিক। তোমার সমস্ত পাপ থেকে তুমি মুক্ত হয়েছে।”
আমরা ভক্তিহীন হওয়া সত্ত্বেও ঈশ্বর তাঁর ধার্মিকতা দিয়ে আমাদের ধার্মিকতা মুদ্রাঙ্কিত করেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা অনন্তকাল স্থায়ী। প্রভু যীশু সমগ্র মানব জাতির জন্য যথার্থ কাজ করেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা দ্বারা জগতের সমস্ত মানুষ তাদের পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছে। তাঁর ধার্মিকতার মাধ্যমে ঈশ্বর ভক্তিহীনদেরকে পাপমুক্ত হিসাবে গণ্য করেন। “ধন্য সেই ব্যক্তি যাহার পক্ষে ঈশ্বর অপরাধ গণনা করেন না।” কারণ, বিশ্বাসে সে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করে।
 ঈশ্বর আমাদের কাছে জানতে চান, “তুমি কি ধার্মিক”? আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, তাঁর সাক্ষাতে আমরা ভক্তিহীন। এই সত্য জানার দ্বারা আমরা কৃতজ্ঞ হয়েছি এই জন্য যে, যীশু পাপীদের জন্য বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন, মানুষের নিজের চেষ্টায় নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। অথচ আমরা যদি মনে করি যে, আমরা ব্যবস্থা যথাযথভাবে পালন করতে পারি, তাহলে আমরা কখনই কৃতজ্ঞ হতে পারব না, বা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে পারব না।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা, যা “ভক্তিহীনদের ধার্মিক করে,’’ তাতে বিশ্বাস করলে তাঁর ধার্মিকতা লাভ করা যায়। যীশুর প্রায়শ্চিত্ত ও বিচারে যে বিশ্বাস করে, তাকে ঈশ্বরের ধার্মিকতা দান করা হয়, কিন্তু ধার্মিকতায় যে বিশ্বাস করে না, তার জন্য ঈশ্বরের সমস্ত আশীর্বাদ রুদ্ধ থাকে।
এমনকি নূতন জন্মপ্রাপ্ত ধার্মিকদের জন্যও, যীশুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তাদের বাইরে যাওয়া ও ভিতরে আসা নির্ভর করে, যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে, তারাও জগতে থাকাকালীন সময়ে পাপ না করে পারে না। কাজেই প্রতিদিন কৃতজ্ঞতার সাথে ঈশ্বরের এই ধার্মিকতা আমাদের গণনা করা উচিত যে, প্রভু যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত সেচনের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যতবার আমরা এই আনন্দপূর্ণ সংবাদ শুনবো, ততবার আমাদের হৃদয় ও আত্মা নবীনীকৃত হবে এবং অপরিমেয় শক্তিতে পূর্ণ হবে। “কিন্তু যে ব্যক্তি কার্য্য করে না- তাঁহারই উপরে বিশ্বাস করে, যিনি ভক্তিহীনকে ধার্মিক গণনা করেন- তাহার বিশ্বাসই ধার্মিকতা বলিয়া গণিত হয়” এই অংশে পৃথিবীর সব মানুষের কথা বলা হয়েছে।
বাইবেলে অব্রাহামের দৃষ্টান্ত দ্বারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জনের কথা বলা হয়েছে। যদিও, “যে কাৰ্য্য করে”- এ কথাটি দ্বারা ঈশ্বরের পরিত্রাণের জন্য কৃতজ্ঞ হওয়ার পরিবর্তে তাঁর বিপরীত অর্থ বোঝা যাচ্ছে। “যে কাৰ্য্য করে” সে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে না, তাই কৃতজ্ঞ হয় না। বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি নিজের কাৰ্য্য দ্বারা স্বর্গে যেতে চায়, তার জন্য ঈশ্বরের ধার্মিকতা নয়।
 কেন? কারণ নিজের কাৰ্য্য দ্বারা এবং প্রতিদিন নিজের জন্য অনুতাপের প্রার্থনা করে কেউ কোনভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জন করতে পারে না। এই ধরণের ব্যক্তি যথাযথ ভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পায় না, কারণ নিজের সৎকর্মগুলো দূরে সরিয়ে রেখে সে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করতে চায় না। উপবাস এবং ক্রন্দন সহ অনুতাপের প্রার্থনার মাধ্যমে সে পরিত্রাণ পেতে চায়। তাই, ঈশ্বরের ধর্মময় বাক্যে সত্যিকার অর্থে বিশ্বাস করে মানুষ ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করতে পারে।
 
 
যে কাৰ্য্য করে, তার পক্ষে তা অনুগ্রহের বিষয় নয়
 
“কিন্তু যে ব্যক্তি কাৰ্য্য করে না- তাঁহারই উপরে বিশ্বাস করে, যিনি ভক্তিহীনকে ধার্মিক গণনা করেন, তাহার বিশ্বাসই ধার্মিকতা বলিয়া গণিত হয়” (রোমীয় ৪:৫পদ)। 
বন্ধুগণ, যে ব্যক্তি অব্রাহামের ন্যায় ঈশ্বরকে এবং তাঁর কাজে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রের এই অংশে তার কথা বলা হয়েছে। তিনি সমুদয় ভক্তিহীনকে উদ্ধার করেছেন, আমরা সেই পরিত্রাণকর্তা প্রভু যীশুতে বিশ্বাস করি। পৃথিবীতে দুই ধরণের খ্রীষ্টিয় বিশ্বাসী রয়েছে। ৪পদে এমন ব্যক্তি কথা বলা হয়েছে, “যে কাৰ্য্য করে,” অর্থাৎ যে মনে করে পরিত্রাণ ঈশ্বরের অনুগ্রহে নয়, কিন্তু তার প্রাপ্য। কারণ এই ধরণের লোকেরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে যীশুকে বিশ্বাস করার পরেও নিজের সৎ কর্মের শ্লাঘা করে এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতার পরিত্রাণকে অগ্রাহ্য করে। ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জনের জন্য কি ধরণের বলিদান প্রয়োজন আছে বলে আপনি মনে করেন?
আমরা ভক্তিহীন হওয়া সত্ত্বেও ঈশ্বর তাঁর ধার্মিকতা দিয়ে আমাদের ধার্মিকতাকে মুদ্রাঙ্কিত করেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা অনন্তকাল স্থায়ী। প্রভু যীশু সমগ্র মানব জাতির জন্য যথার্থ কাজটি করেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা দ্বারা জগতের সমস্ত মানুষ তাদের পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছে। তার ধার্মিকতার মাধ্যমে ঈশ্বর ভক্তিহীনদের পাপমুক্ত হিসাবে গণ্য করেন। ধন্য সেই ব্যক্তি, “যাহার পক্ষে ঈশ্বর পাপ গণনা করেন না।” কারণ বিশ্বাসে সে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করে।
ঈশ্বর আমাদের কাছে জানতে চান, “তুমি কি ধার্মিক?” আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, তাঁর সাক্ষাতে আমরা ভক্তিহীন। এই সত্য জানার দ্বারা আমরা কৃতজ্ঞ হয়েছি এই জন্য যে, যীশু পাপীদের জন্য বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন, মনুষের নিজের চেষ্টায় নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। অথচ আমরা যদি মনে করি যে, আমরা ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে পালন করতে পারি, তাহলে আমরা কখনও কৃতজ্ঞ হতে পারব না বা তার ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে পারব না।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা যা, “ভক্তিহীনদের ধার্মিক করে” তাতে বিশ্বাস করলে তাঁর ধার্মিকতা লাভ করা যায়। যীশুর প্রায়শ্চিত্ত ও বিচারে যে বিশ্বাস করে, তাকে ঈশ্বরের ধার্মিকতা দান করা হয়, কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতায় যে বিশ্বাস করে না, তার জন্য ঈশ্বরের সমস্ত আশীর্বাদ ও অনুগ্রহ রুদ্ধ থাকে।
এমন কি নূতন জন্ম প্রাপ্ত ধার্মিকদের জন্যও, যীশুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তাদের বাইরে যাওয়া ও ভিতরে আসা নির্ভর করে, যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে, তারাও জগতে থাকাকালীন সময়ে পাপ না করে পারে না। কাজেই প্রতিদিন কৃতজ্ঞতার সাথে ঈশ্বরের এই ধার্মিকতা আমাদের গণনা করা উচিত যে, প্রভু যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত সেচনের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যতবার আমরা এই আনন্দপূর্ণ সংবাদ শুনব, ততবার আমাদের হৃদয় ও আত্মা নবীনীকৃত হবে এবং অপরিমেয় শক্তিতে পূর্ণ হবে।
যদি আপনি আপনার সৎ কর্ম দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে গমনাগমন করতে চান, তাহলে আপনি ঈশ্বরের ধার্মিকতাহীন পাপীই রয়ে, যাবেন। আপনি কি জানেন অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানেরা পবিত্রতার মতবাদের অনুসরন করে, তারা সর্বক্ষণ সৎকর্ম দ্বারা নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে, তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহরূপ ধার্মিকতাকে দূরে ঠেলে দিয়ে নিজেদেরকে ঈশ্বরের শক্র করে তোলে। বাইবেল একথা বলে না যে, সৎকর্ম দ্বারা আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে লাভ করতে পারি।
 “কর্ম-নির্ভর” শিক্ষা এই শিক্ষা দেয় যে, অনুতাপের প্রার্থনা দ্বারা পবিত্র হওয়া যায়। তারা বলে যে, আপনি যদি পরিষ্কার এবং সৎ জীবন-যাপন করেন তাহলে আপনি আরও ধার্মিক হবেন, মৃত্যু পর্যন্ত ধার্মিক জীবন-যাপনের মাধ্যমে আপনি মুক্তি পাবেন; যদিও যীশু খ্রীষ্ট আপনার পাপ মুছে দিয়েছেন। যাহোক, কর্ম-নির্ভর বিশ্বাস ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিরুদ্ধে। যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিরোধিতা করে, তারা দিয়াবলের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে। কারণ তারা প্রভুর ধার্মিকতা অস্বীকার করে, প্রভুর সাক্ষাতে তারা পাপের ক্ষমা পেতে পারে না।
ভ্রাতৃগণ, আমরা ১০০% ভক্তিহীন ছিলাম। বাস্তবতা হল এই যে, ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে অনেকে ভ্রান্ত বিশ্বাস অনুসরন করেন। কারণ অনেকেই মনে করেন যে, যে কোন ভাবেই তারা ধার্মিক, অথচ তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে বিশ্বাস করে না। তারা বিশ্বাস করে যে, প্রতিদিনের অনুতাপের প্রার্থনা করলে এমন কি ভবিষ্যতের পাপেরও ক্ষমা পাওয়া যাবে। তাই তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে অন্বেষণ করে না এবং তাতে বিশ্বাসও করে না, নিজেদের কর্মের উপর নির্ভর করে নিজেদেকে তারা ধার্মিক মনে করে। 
কোন প্রকারের লোক ধার্মিক হতে পারে? যারা ভালভাবে অনুতাপের প্রার্থনা করতে পারে না। তার মানে এই নয় যে, পাপ স্বীকারের প্রয়োজন নেই। আশা করি আপনি আমাকে ভুল বুঝবেন না। “ধার্মিকের জীবন” সম্পর্কে আমি পরবর্তীতে আলোচনা করব। যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিরোধিতা করে, উপবাস প্রার্থনা এবং ধর্মীয় জীবন-যাপনের মাধ্যমে তারা সৎকর্মের পাহাড় গড়তে চায়।
 যাহোক, যারা জানে যে, পাপী অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য তাদের কর্ম যথেষ্ট নয়, যীশুর প্রায়শ্চিত্তের অনুগহ হৃদয়ে বিশ্বাস করে তারা ধার্মিক হতে পারে। একটি বিষয় আমাদের অবশ্যই করতে হবে, অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে, গর্ব করার মত আমাদের কোন ধার্মিকতা নাই। ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্বীকার করতে হবে, “হে ঈশ্বর, আমরা এই পাপ করেছি। আমরা মৃত্যু পর্যন্ত পাপী।” সততার সাথে এই বিষয়টি আমাদের স্বীকার করতে হবে এবং অন্য যে বিষয়টি আমাদের বিশ্বাস করতে হবে, তা হল যীশু খ্রীষ্ট সম্পূর্ণরূপে তাঁর ধার্মিকতা সাধন করেছেন।
 ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রত্যেক পাপী তার পাপ থেকে মুক্ত হয়ে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। আমরা যীশু খ্রীষ্টের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে তাঁর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি, কারণ আমরা যারা পাপের কারণে ধ্বংসের যোগ্য ছিলাম, আমরা তাঁর মাধ্যমে পরিত্রাণ পেয়েছি।
 
 
কোন ব্যক্তি প্রকৃতরূপে আশীর্বাদ প্রাপ্ত
 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে কোন ব্যক্তি আশীর্বাদ প্রাপ্ত? বাইবেল এই ব্যক্তিকে আশীর্বাদ প্রাপ্ত বলা হয়েছে, “ধন্য তাহারা, যাহাদের অধর্ম ক্ষমা হইয়াছে, যাহাদের পাপ আচ্ছাদিত হইয়াছে।” এমন কি যে ব্যক্তি ঈশ্বরের সাক্ষাতে কোন সৎকর্ম করে নি, যার জীবনে দুর্বলতা এবং অধর্ম রয়েছে, ব্যবস্থার কোন অংশই পালন করতে পারে না, ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করলে, ঈশ্বর তার পাপের ক্ষমা করেন এবং তাকে আশীর্বাদ করেন। কারণ, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধিত হয়েছে, যা আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছে। এই প্রকার লোকেরা ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে বিশ্বাস করে, তারা সবচেয়ে আশীর্বাদ প্রাপ্ত, কারণ অসংখ্য মানুষের মধ্যে কেবল তারাই ঈশ্বরের বিশেষ আশীর্বাদ লাভ করেছে। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে আমরা পাপের ক্ষমা অর্থাৎ পরিত্রাণ পেয়েছি। ঈশ্বর যদি বলেও থাকেন, তার পরেও কি তাঁর বাক্যের সাথে আমাদের কিছু যোগ করা উচিত? না। উচিত নয়।
 জগতে অনেক লোক যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করে, অথচ পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য তারা নিজেদের কর্মের উপর নির্ভর করে।
যীশু যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, ক্ৰুশে রক্ত সেচন করেছিলেন এবং পুনরুত্থানের মাধ্যমে পরিত্রাণ সাধন করেছেন; ঈশ্বর দত্ত পরিত্রাণ লাভের জন্য এই সত্যের সাথে কি আর কোন কিছু যোগ করার দরকার আছে? না, আর কিছু নেই। যাহোক, বর্তমানে খ্রীষ্টিয়ানেরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের ব্যাপারে দ্বিধান্বিত। মানুষ জানে যীশুকে বিশ্বাস করলে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। অন্যদিকে, তারপরেও তারা মনে করে যে, পরিত্রাণ লাভের জন্য সৎভাবে জীবন-যাপনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে পবিত্র হওয়া যায় এবং যীশুতে বিশ্বাস করার সাথে সাথে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে চায়। এভাইে তারা দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
তাদের ধারণা গুলি ধার্মিকের মতই মনে হয়, যদিও ঈশ্বরের ধার্মিকতা থেকে এর পার্থক্য অনেক ব্যাপক। মানুষ কিভাবে ঈশ্বরকে ভালভাবে বিশ্বাস করতে পারে? জল ও আত্মার বাক্যে নিহিত ঈশ্বরের ধার্মিকতায় পূর্ণরূপে বিশ্বাসের মাধ্যমে কেবল তা পাওয়া সম্ভব এবং এইভাবেই আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। ঈশ্বরের সত্য অর্থাৎ যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্ৰুশীয় রক্তে ঈশ্বরের ধার্মিকতা বিশুদ্ধরূপে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। 
খ্রীষ্টিয় ভিত্তিহীন মতবাদ- ক্রমান্বয়ে পবিত্রতা অর্জন করে, নিঃশর্ত মনোনয়ন, নামধারী ন্যায়পরায়নতা অথবা শুকরের মাংস খাওয়া যাবে না, বিশ্রামবার পালন করতে হবে-এই সব ভ্রান্ত বিশ্বাস আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। এই সমস্ত বিষয়ে কোন সদুত্তর তাদের কাছে নাই। 
বন্ধুগণ কোন প্রকার সৎকর্ম ছাড়া শুধু মাত্র ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব-এটা সঠিক কি না? হ্যাঁ, এটাই প্রকৃত বিশ্বাস। ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করার জন্য, কি এমন কাজ আমরা করেছি? ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কি এমন কোন ভাল কাজ আমরা করেছি? না। এমন কি আমাদের চিন্তা-ভাবনায়ও কি আমরা সৎ না। আমরা সৎ নই। তার মানে, আমরা কি যাচ্ছে-তাই জীবন- যাপন করব? না। তাঁর সন্তান হওয়ার জন্য ব্যবস্থা পালনের মাধ্যমে কি আমাদের সৎ জীবন-যাপন করা উচিত? না। এর অর্থ এই যে, কেবলমাত্র ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস দ্বারাই আমরা তাঁর সন্তান হতে পারি, পাপের ক্ষমা পেতে পারি, এবং যথাযথ বিশ্বাসের মাধ্যমে পবিত্র আত্মারূপ অনুগ্রহ লাভ করতে পারি।
সৎ জীবন-যাপন করা মানুষের পক্ষে একবারেই অসম্ভব। কোন ব্যক্তি যদি কোন কাজ না করে, যদি শুধু যীশুর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে, তাহলে পাপের ক্ষমা লাভ করে ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে পারে। জন্মগত ভাবেই মানুষ সৎ জীবন-যাপন করতে অসমর্থ। সেই জন্য ঈশ্বর আমাদের করুণা করলেন, যীশুকে পৃথিবীতে পাঠালেন, যোহন, বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পণ করলেন। সেই পাপের বোঝা নিয়ে যীশুকে ক্রুশে প্রাণ দিতে হল এবং পাপ সমস্যার সমাধান করা হল।
একটি প্রাচ্য প্রবাদ আছে, “পরার্থে জীবন দান।” একজন ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়ে কেউ যখন নিজেই ডুবে মরে মানুস এই মহৎ কর্মের জন্য তাকে ভূঁয়োশী প্রশংসা করে। বন্ধুগণ, একজন ডুবন্ত মানুষকে উদ্ধার করতে চাওয়া খুবই স্বাভাবিক, কিন্তু আমরা এটাকে খুব উচ্চভাবে দেখি।
আর একটি প্রবাদ আছে, "Ingwa-eungbo” তার অর্থ হল ভাল কাজ করলে শাস্তি পেতে হবে, সত্যি কি এমন ব্যক্তি আছে যে অন্যের জন্য নিজের জীবন দিতে পারে? এমন কি স্বামী স্ত্রীর যে দাম্পত্য প্রেম, তার মধ্যেও তাদের পরস্পরের প্রতি বাসনা রয়েছে তেমনি ভাবেই প্রত্যেক মানুষই আত্মকেন্দ্রিক।
তাই ঈশ্বর বলেন, মানুষের মধ্যে ভাল কিছু নাই। নিজেদেরকে ভাল করে দেখা উচিত যে, আমরা সত্যি সত্যি ঈশ্বরের ধার্মিকতায় নির্ভর ও বিশ্বাস করি কিনা, আমরা কোন রকম ভাল কাজ না করেও ঈশ্বরের ধার্মিকতা আমাদের জঘন্যতম পাপও মুছে দিয়েছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের পাপমুক্তি অর্থাৎ পরিত্রাণ লাভ করা উচিত।
 
 
ব্যবস্থাবিহীন কর্মের সমস্ত পাপ থেকে আপনাকে মুক্ত হতে হবে
 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে ব্যবস্থাবিহীন কাজগুলো কি? ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের ভুল কাজগুলিই হল ব্যবস্থাবিহীন পাপ।।
ঈশ্বরের সাক্ষাতে আপনার এবং আমার পাপ কিভাবে আচ্ছাদিত হতে পারে? বুলেট প্রুফ মোটা বর্মে আমাদের পাপকে আচ্ছাদিত করা যায়? অথবা এক মিটার পুরু শক্তিশালী ধাতুর তৈরী বর্ম কি ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের পাপ ঢাকতে পারে? বন্ধুগণ, আমাদের সৎকাজগুলো কি ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের মন্দ কাজ বা দোষগুলো ঢাকতে পারে? না। মানুষের সৎকাজ আত্মতুষ্টি ছাড়া আর কিছুই নয়। সৎকর্মের দ্বারা নিজের বিবেকের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ ঈশ্বরের ন্যায়বিচারের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে না। 
“ধন্য সেই ব্যক্তি যাহার পাপ আচ্ছাদিত হইয়াছে।” বাইবেল এটাই বলা হয়েছে। বন্ধুগণ, যদি ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা আমাদের পাপ ঢাকতে চাই, তাহলে একটাই মাত্র কাজ করতে হবে, আর তা হল, পরিত্রাণ দানকারী ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে হবে। বাপ্তাইজিত হওয়ার জন্য যীশু খ্রীষ্টের এই পৃথিবীতে আসা, পাপ তুলে নেওয়া, ভয়ানক বিচারে বিচারিত হওয়া- এই সব কিছুর মধ্যে ঈশ্বরের ধার্মিকতা নিহিত রয়েছে। তার কারণ বাপ্তাইজিত হওয়ার মাধ্যমে যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন, যার শাস্তি স্বরূপ ঐশীয় মৃত্যুর মত বিচার মেনে নিলেন। এটাই ঈশ্বরের ধার্মিকতা। তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করলে সমস্ত পাপ আচ্ছাদিত হয়।
কেউ যদি সৎকর্ম দ্বারা নিজের পাপ ঢাকতে চায়, ঈশ্বরের সাক্ষাতে তার কোন মূল্য নেই। শুধুমাত্র যীশু খ্রীষ্টের ধর্মময় পথ অর্থাৎ তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচন আমার পাপ আচ্ছাদন করতে পারে। নিজের পাপের কারণে ঈশ্বরের ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের বিচারিত এবং ধ্বংস হওয়ার এবং নরকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যীশু এই জগতে এসে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হয়ে এবং ক্রুশে মৃত্যু বরণ করে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধন করলেন। এই সত্য আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ আচ্ছাদিত হয়। কেন? কারণ তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচনের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপের ক্ষতিপূরণ ইতিমধ্যে করা হয়েছে। এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে আপনার এবং আমার পাপ আচ্ছাদিত হয়।
কোন ধরণের ব্যক্তি আশীর্বাদ পায়? এই বিশ্বাস যার আছে সেই আশীর্বাদ পায়। “ধন্য তাহারা, যাহাদের অধর্ম ক্ষমা হইয়াছে; যাহাদের পাপ আচ্ছাদিত হইয়াছে;” এই বিশ্বাস যার আছে সে সুখী এবং আশীর্বাদ প্রাপ্ত। আপনার এবং আমার কি এই বিশ্বাস আছে? যে ব্যক্তি হৃদয়ে বিশ্বাস দ্বারা এই সত্য গ্রহণ করেছে যে, যীশু খ্রীষ্ট জল ও মাআ দ্বারা আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন, সে প্রকৃতপক্ষে বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি। যে ব্যক্তি এই একই সঙ্গে যীশু খ্রীষ্টের হৃদয়ে বিশ্বাস করে এবং যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে যে জীবন, তা যে ধারনা করে, সে সত্যি একজন আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি। বিশ্বাস দ্বারা আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসীরা আশ্চর্য পরিত্রাণ লাভ করেছি,- যার মধ্যে মানুষের চিন্তা-ধারা বা গুণাবলী বিন্দুমাত্র নাই। একজন সত্যিকারের আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি এই সত্যে বিশ্বাস করে, তা হৃদয়ে ধারণ করে এবং সে সত্য সুসমাচার প্রচার করতে পারে।
বন্ধুগণ, ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার জন্য এবং পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য কখনও তার অনুগ্রহের সাথে নিজের ভাল কাজগুলি যোগ করার চেষ্টা করবেন না। আপনি কি সৎ? অসৎ হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে সৎ মনে করা, অথবা নিজের মধ্যে সৎ হওয়ার গুণাবলি রয়েছে,- এই কথা চিন্তা করা একগুঁয়েমীর সামিল। কোন কোটিপতির কাছ থেকে নিতান্ত কোন গরীব ব্যক্তি যখন মহা মূল্যবান হীরা উপহার পায়, “কৃতজ্ঞতা” জানানো তার তখন একমাত্র কাজ। ঈশ্বরের ধার্মিকতার ক্ষেত্রে একই বিষয় প্রযোজ্য। 
ঈশ্বর কর্তৃক আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি সম্বন্ধে রোমীয় ৪ অধ্যায়ে বলা হয়েছে। ঈশ্বরের ধার্মিকতাপূর্ণ সুসমাচারের বাক্যে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে এই প্রকার লোকেরা সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার পায়।
 আমি চাই যেন এই আশীর্বাদ আপনার হয়।