Search

Sermons

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[7-1] রোমীয় পুস্তকের সপ্তম অধ্যায়ের উপস্থাপন

ঘটনার আলোকে ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুযায়ী পাপ মোচনের পূর্বেই তাঁর দেহকে পাপের নিমিত্তে বলি হতে হয়েছিল। প্রেরিত পৌল পাপে মৃত ছিলেন, যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পাপ স্বীকার করেছিলেন। ব্যবস্থার অভিশাপ এবং শাসন থেকে বাঁচতে আমরা যারা যীশুতে বিশ্বাস করি, অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্মিকতায় গণিত হওয়ার পূর্বে, আমাদের আবার নূতন জন্ম নিতে হয়। পাছে ব্যবস্থার শাসন আমাদের উপরে আসে। যিনি আমাদেরকে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় এনেছেন, সেই যীশুর সম্মুখে না এলে আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি না।
 পৌল আত্মিক বিষয়ে যা কিছু বলতেন, দৈহিক ভাবে তা বোঝা যেত না। তা হল যারা পাপে মৃত, তারা আর পাপের অধীনে থাকে না, ঠিক একজন নারীর স্বামী মারা গেলে সে যেমন তার সমস্ত বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি পায়। এই পথটি শুনতে সাধারণ হলেও ইহা আত্মিকভাবে রক্ষা পাবার পথ। ইহার অর্থ-যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় গণিত হয়নি, বস্তুতঃ ব্যবস্থার শাসন উপর- এ দুটি তারা পছন্দ করুন বা না করুক। কারণ তারা এখনো তাদের পাপ সমস্যার বিশ্লেষণ করেনি।
 রোমীয় ৬:২৩ পদে আমাদের বলা হয়েছে,“কেননা পাপের বেতন মৃত্যু”এর অর্থ শুধুমাত্র তখনই পাপ আর থাকে না, যখন এর বেতন পরিশোধ হয়ে যায়। যদি কেউ যীশুতে বিশ্বাস করেও না জানে যে, যীশুতেই ঈশ্বরের ধার্মিকতা, তবে সে পাপে বসবাস করে এবং অবশ্যই পাপের বেতন পাবে। এ জন্যই আমাদের যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় মিলিত হতে হবে। একমাত্র ঈশ্বরের ধার্মিকতার সম্মুখে এসেই আমরা পাপ এবং ব্যবস্থা থেকে উদ্ধার পেয়ে খ্রীষ্টবরের সাথে মিলিত হতে পারি।
    আমরা যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার অনুসন্ধান করতে পারি কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস ব্যতিত কেউই ব্যবস্থা থেকে মুক্ত হতে পারে না। ব্যবস্থার শাসন ভেঙ্গে বেরিয়ে আসার একটি মাত্র পথ হল, ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করা। আপনি কি যীশু খ্রীষ্টে ঈশ্বরের ধার্মিকতা খুঁজে পেয়েছেন? যদি না পেয়ে থাকেন, তাহলে এখনই সময়, আপনি আপনার নিজের ধার্মিকতা পরিত্যাগ করে ঈশ্বরের বাক্যের কাছে ফিরে আসুন।
 
 

পাপে মৃত হওয়ার পর খ্রীষ্টের সম্মুখীন হওয়া

 
 রোমে পৌল তার ভ্রাতৃগণের উদ্দেশে বলেছিলেন “খ্রীষ্টের দেহ যারা ব্যবস্থার সম্বন্ধে তোমাদেরও মৃত্যু হইয়াছে।” “খ্রীষ্টের দেহ দ্বারা ব্যবস্থার সম্বন্ধে মরিয়াছ” - এ কথাটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে পাপ মুক্তি ছাড়া কেউই খ্রীষ্টের কাছে যেতে পারে না। অন্য অর্থে খ্রীষ্টের দেহ দ্বারা অবশ্যই আমাদের পাপ মোচন হয়। এটা সম্ভবত তখনই হয়, যখন কেউ যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্মে এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস করে।
 “যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম” এটা বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা পাপে খ্রীষ্টেতে মরতে পারি। কারণ যোহনের দ্বারা বাপ্তাহজিত হয়ে। সমস্ত পাপ নিয়ে মানবজাতিকে তাঁর দেহ দ্বারা মুক্ত করতে যীশু খ্রীষ্ট মৃত্যু বরণ করেছিলেন। যখন আমরা এটা বিশ্বাস করি, তখন আমাদের পাপ আর থাকে না। এটা সত্য যে, যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম হওয়াতে পৃথিবীর সমস্ত পাপ মোচন হয়ে গেছে। এই সত্যটি শুধু মাত্র জানার জন্য নয়, কিন্তু আপনার হৃদয়ে বিশ্বাসের সহিত ধরে রাখার জন্য। যতদিন আমরা ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ না করি, ততদিন আমাদের এই বিশ্বাস রাখতে হবে। এই জন্যই পৌল বলেছেন যে, খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে আমাদের ব্যবস্থার উদ্দেশে মরতে হবে। যেমন ধরুন, যারা এই সত্যে বিশ্বাসী তারা যীশুর কাছে যেতে, তাঁর সাথে বাস করতে এবং ঈশ্বরের পক্ষে ধার্মিকতার পুরস্কার পেতে পারে। 
 আক্ষরিক অর্থে পুরাতন ধ্যান-ধারনায় আমাদের বিশ্বাস করা উচিত নয়, কিন্তু নূতন সত্যের আত্মায় বিশ্বাস করা উচিত। ব্যবস্থার কারণে পাপীরা আসলে বেশী পাপে পতিত হয়। এর কারণ ব্যবস্থা অধিক পাপ প্রকাশ করে, যেগুলো তাদের ভিতরে লুকানো থাকে। এর দ্বারা পাপ জানতে পারে এবং আরো বেশী পাপ করে। ব্যবস্থার আর একটি কাজ হল, আমাদেরকে পাপের সাথে পরিচিতি করানো, কিন্তু এর আরো কাজ হচ্ছে পাপের প্রকৃতি প্রকাশ করা, এবং আমাদেরকে আরো পাপে লিপ্ত করে। ঈশ্বর আমাদের পালন করার জন্য এটা দেননি, আমরা জানতাম না কোথায় আমাদের ভিতরে এত বেশী পাপ লুকানো থাকে। কিন্তু ঈশ্বর আমাদেরকে ব্যবস্থা। দিয়েছিলেন, ব্যবস্থা শুধু আরো বেশী পাপে পূর্ণ করে না, বরং ক্রমান্বয়ে আরো বেশী পাপে লিপ্ত করায়।
 সেইজন্য পৌল বলেন যে, যেহেতু আমরা পাপে খ্রীষ্টের দেহে মরেছি, তাই ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে এখন আমাদের প্রভুর কাজ করতে হবে। তিনি আমাদেরকে বলছেন, আমরা যেন আক্ষরিক অর্থে তাঁর বাক্য গ্রহণ করার পরিবর্তে, পবিত্র আত্মার সাহায্যে এবং হৃদয়ের গভীরের পাপ মুক্তির অনুগ্রহ দানের সাহায্যে প্রভুর কাজ করি। বাইবেল আমাদের বলে যে, “কেননা অক্ষর বধ করে, কিন্তু আত্মা জীবন দান করে,” জল ও আত্মার সুসমাচার, যা হল ঈশ্বরের ধার্মিকতা, তার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করে প্রভুকে আমাদের অনুসরন করতে হবে। আমরা যখন ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করছি, অন্য কথায় ঈশ্বরের বাক্যের নিগুঢ়তত্ত্ব আমাদের জানতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে।
 
 

তাহলে ব্যবস্থা কি পাপ? অবশ্যই না!

 
 পৌল ব্যবস্থার কার্য্যকারিতার উপরে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করতেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, ব্যবস্থার কার্য্যকারিতা অনুধাবন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বে পৌল নিজেই তাঁর পাপগুলো ধরতেন, এ কারণেই তিনি নিজের পাপগুলো চিনতে পারতেন না, কিন্তু ঈশ্বরের ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি জানতে পারলেন যে তাঁর হৃদয়ে লোভ আছে। 
 পৌল ব্যবস্থা সম্পর্কে যেমন বুঝেছিলেন, আমি আশা করি যীশুতে বিশ্বাসীরা আজকে ব্যবস্থা সম্পর্কে একই ধারণায় পৌঁছেছেন। অনেক লোক আছে যারা ব্যবস্থার সত্যকে বোঝে না, ব্যবস্থার দ্বারা নিজেদের জীবনকে খুবই কঠিন ভাবে অতিবাহিত করে। তারা মন্ডলীতে যায় এবং ভাবে যদি তারা আর একটু চেষ্টা করে তাহলে তারা সমস্ত ব্যবস্থাই পালন করতে সক্ষম হবে। বাস্তবিক এই সমস্ত লোক প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতাকে মোটেই খুঁজে পাবে না। 
 তারা ঈশ্বর-দেয় ব্যবস্থার নিগুঢ়তত্ত্ব বোঝে নাই, এবং এইরূপে বিধিসম্মত হতে পারে নাই। তারা ভন্ডের ন্যায় অন্ধ, এমনকি নিজেদের অন্তর দেখতেও তারা অক্ষম এবং তারা জানে না যে, তারা খ্রীষ্টিয়ান সমাজে ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে। এ রকম অনেক লোক বর্তমান খ্রীষ্টিয়ান সামাজে আছে। যারা সত্যিকারভাবে ঈশ্বরের ধার্মিতা জানে না এবং বিধিসম্মতভাবে যারা যীশুকে তাদের নামমাত্র ত্রাণকর্তা হিসাবে গ্রহণ করে, তারা অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাবে না।
 ঈশ্বরীয় ব্যবস্থা দ্বারাই পৌল উপলব্ধি করেন যে, তার অন্তরে লোভ রয়েছে। পৌল বিধিসম্মতভাবে চলতেন, যখন তিনি ব্যবস্থা দ্বারা তার পাপ উপলব্ধি করেন, তখন তিনি ভাবলেন যে, ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে হবে। ঈশ্বরের ব্যবস্থা পৌলের হৃদয়ের লোভকে প্রকাশ করল, এবং পৌলের পাপকে আরো ভারী করে তুলল। এভাবে পৌল উপলব্ধি করেন যে, তিনি একজন কবরপ্রাপ্ত পাপী ছাড়া আর কিছুই না।
 মানুষের অন্তরে বার প্রকারের পাপ থাকে। যখন পৌল ব্যবস্থার আসল কাজ সম্বন্ধে জানতেন না, উপলব্ধি করতেন না কতটা পাপে তিনি পরিপূর্ণ, তখন তিনি নিজেই নিজেকে ভাল মানুষ ভাবতেন। কিন্তু ঈশ্বরীয় ব্যবস্থা মোতাবেক চলার ফল হিসাবে তিনি দেখতে পেলেন, ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে তিনি অক্ষম এবং এই ব্যবস্থা আসলে তার পাপ আরো বেশী প্রকাশ করতে লাগল। 
 লোকে যখন যীশুতে বিশ্বাস করে, তখন তারা কেমন হয়? যখন আপনি প্রথম যীশুতে বিশ্বাস করতে শুরু করেন, তখন অবশ্যই বিশ্বাসে প্রজ্জ্বলিত হবেন, কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আপনি আপনার ভিতরের মৌলিক পাপগুলো খুঁজে পাবেন। কিসের মাধ্যমে আপনি এই পাপগুলি খুঁজে পেলেন? ঈশ্বরীয় ব্যবস্থা এবং লিখিত ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের হৃদয় বার প্রকারের পাপ দ্বারা কতটুকু পরিপূর্ণ, তা আমরা খুঁজে বের করতে পারি। আর ব্যবস্থার সামনে নিজেরাই নিজেদের পাপ দেখতে দেখি এবং ভীত হই।এ কারণে আমরা যে সত্যিই পাপের ভান্ডার, সেটা ব্যবস্থার মাধ্যমেই খুঁজে পাই। 
 কিছু লোক আছে, যারা নিজেদেরকে সান্ত্বনা দেবার জন্য। ন্যায়পরায়নতার মতবাদ সৃষ্টি করে। এই মতবাদ দাবী করে, যদিও আমাদের অন্তরে পাপ থাকে, শুধুমাত্র যীশুতে বিশ্বাস করার কারণে, ঈশ্বর আমাদের ধার্মিক হিসাবে গণ্য করবেন। এটা শুধু মাত্র মানুষের সৃষ্ট মতবাদ ।মানুষ নিজেদের পাপ লুকাতে এবং এবং আত্মতুষ্টি লাভের জন্য এই ধরণের মতবাদ তৈরী করেছে। এতে ব্যবস্থার সামনে তারা পাপী হিসেবে প্রকাশিত হয় এবং তাদের পাপের ওজন বেড়ে ভারী থেকে আরো ভারী হয়ে তাদের মনের উপরে চেপে বসে। সমস্ত পাপ থেকে আমাদের মুক্তির জন্য অন্য কিছু নয়, কিন্তু সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে, যার মধ্যে ঈশ্বরের ধার্মিকতা নিহিত। এটাই আমাদের পাপ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।
 পৌল তার অতীতে ভাবতেন ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছেন পালন করার জন্য, তিনি মনে মনে এটাকে স্বাভাবিক ভাবতেন এবং ভাল ভাবে পালন করতে চেষ্টা করতেন। এর বিপরীতে তিনি দেখলেন, ব্যবস্থা পালন করে, তিনি তার আত্মাকে পাপের কারণে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। পরিশেষে, পৌল উপলব্ধি করেছিলেন যে, ভুল করে, ভুল বুঝে তিনি ঈশ্বরীয় ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেছিলেন। 
 মার্ক ৭:২১-২৩ পদে উল্লেখ আছে, প্রত্যেকের অন্তরে বার প্রকারের পাপ আছে। “কেননা ভিতর হইতে, মনুষ্যদের অন্তকরণ হইতে, কুচিন্তা বাহির হইয়-বেশ্যাগমন, চৌর্য্য, নরহত্যা, ব্যাভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মুখর্তা। এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর হইতে বাহির হয়; এবং মনুষ্যকে অশুচি করে।”
 ঈশ্বরের ব্যবস্থার মাধ্যমে পৌল এবং অন্য সবাই এক সময় নিজেদের পাপ চিহ্নিত করতে পারলেন। ব্যবস্থা দ্বারা তাঁরা অনুধাবন করলেন যে, পাপের কারণে তারা মৃত্যুর যোগ্য, এবং তখন তাঁরা যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতার সন্ধান পেলেন এবং তাতে বিশ্বাস করলেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে আপনার কি ধারণা ? আপনি ঈশ্বরের সমস্ত আজ্ঞা পালন করতে সক্ষম, এই চিন্তা থেকেই কি আপনি এখনো ব্যবস্থা অনুসরন করছেন? আমরা যেন আমাদের পাপ। চিনতে পারি এবং পাপ থেকে মুক্ত হয়ে প্রভুর কাছে ফিরে আসতে পারি , অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করতে পারি, সেই উদ্দেশে ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। কেন ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, তার কারণ। ভালভাবে বুঝে তাতে আমাদের সঠিক ভাবে বিশ্বাস করতে হবে। একবার এই সত্য বুঝতে পারলে, আপনি জল ও পবিত্র আত্মার। সুসমাচারের মাহাত্ম্য বুঝতে পারবেন।
 যারা ঈশ্বরের আজ্ঞা বা ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নিজেদের পাপ অবস্থা সম্পর্কে পরিষ্কার জ্ঞান লাভ করতে পারে। যারা ব্যবস্থার উদ্দেশ্য বুঝতে পারে না, বা যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে না, তারা ধর্মীয় জীবন যাপনে মারাত্মক অসুবিধার সম্মূখীন হবে এবং নিজেদের ধ্বংস নিজেরাই ডেকে আনবে। তার কারণ হল, পাপে পঙ্কিল এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অবস্থায় কেউ যে পাপ করা থেকে নিজেকে প্রতি নিয়ত বিরত রাখতে পারে, তা একেবারেই অসম্ভব। এই কারণেই, অনেক লোক আছে, যারা নিজেদেরকে সংসার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে নির্বাসিত এবং একাকী তপস্যার জীবন যাপন করে। তারা মনে করে যে, সংসার থেকে পালিয়ে, বনে-জঙ্গলে বা পাহাড়-পর্বতে তপস্যার জীবন যাপন করলে, পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে, কিন্তু আসলে তা সম্ভব নয়।
 আমাদের অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে যে, যদিও পৃথিবীর প্রত্যেকেই পাপ করে এবং প্রত্যেকের হৃদয়ে পাপ থাকে, তাই সেই সব পাপ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হল ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানা এবং তাতে বিশ্বাস করা। পাপ এড়াতে আমরা যদি সংসার থেকে পালাতে চাই, তবুও আমাদের হৃদয়ের পাপ থেকে আমরা পালাতে পারি না। কারণ, আমাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে। পাপ থেকে প্রকৃতভাবে উদ্ধার পেতে হলে , আমাদের অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে। ঈশ্বরের ব্যবস্থা ও আজ্ঞা আমাদের পাপকে আরো নির্দিষ্ট ভাবে চিনতে সাহায্য করে। যারা নিজেদের পাপের জঘন্যতা বুঝতে পারে, তাদেরকে অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারে প্রকাশিত ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে জানতে হবে এবং তাতে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে।
 “এবং জীবনজনক যে আজ্ঞা, তাহা আমার মৃত্যুজনক বলিয়া দেখা গেল। ফলতঃ পাপ সুযোগ পাইয়া আজ্ঞা দ্বারা আমাকে প্রবঞ্চনা করিল, ও তদ্দ্বারা আমাকে বধ করিল” (রোমীয় ৭:১০-১১)। ব্যবস্থা সম্পর্কে আমাদের যথাযথ জ্ঞান অবশ্যই থাকতে হবে। যারা সঠিকভাবে ব্যবস্থা বোঝে না, সারাজীবন ধরে তারা ব্যবস্থার মধ্যে ডুবে থাকে এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা ব্যবস্থার হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য পালিয়ে বেড়াতে চায়। যারা ব্যবস্থার প্রকৃত ভূমিকা সঠিকভাবে বুঝতে পারে, কেবলমাত্র তারাই যীশুর মাধ্যমে সাধিত ঈশ্বরের ধার্মিকতা ভালবাসে এবং তাতে বিশ্বাস করে। তাহলে, আপনি কি ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্বন্ধে জানেন?
 প্রেরিত পৌল বলেন যে, নূতন জন্ম লাভ করার আগে তিনি মাংসের বশীভূত ছিলেন এবং পাপের কাছে বিক্রিত ছিলেন। তিনিও স্বীকার করলেন যে, যেহেতু তিনি সব সময় ব্যবস্থা অনুযায়ী জীবন-যাপন করতে চাইতেন, তথাপি তিনি যা না করতে চাইতেন, শেষ পর্যন্ত সেই পাপ -ই করতেন। তার কারণ হল, তাঁর ভিতরে পবিত্র আত্মা ছিলেন না, ঈশ্বরের ধার্মিকতাও তাঁর ছিল না। তাই প্রেরিত পৌল কারণ হি বে স্বীকার করছেন যে, যেহেতু তাঁর হৃদয়ে পাপ ছিল, তাই তিনি পাপনা করতে চাইলেও পাপ করে ফেলতেন; কারণ তখনও তিনি ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানতেন না।
 তথাপি, পৌল একটা ব্যবস্থা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, -পাপের ব্যবস্থা, তিনি এই মৌলিক সত্যটি বুঝতে পেরেছিলেন যে, হৃদয়ে পাপ থাকা অবস্থায় কেউই পাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে না। তিনি আরো বুঝতে পারলেন যে, ভিতরের মনুষ্য সব সময় ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুসারে চলতে চায়। কিন্তু পৌল স্বীকার করলেন যে, পাপের গাছ যেমন পাপ-ফল জন্ম দেয়, তেমনি পাপী হিসেবে অবিরত তিনি পাপে জীবন - যাপন করতেন, তখনও তিনি যীশু খ্রীষ্টকে জানেন নাই এবং পাপের ক্ষমাও পান নাই। অন্য কথায়, পাপের কারণে তিনি মৃত্যুর যোগ্য ছিলেন। 
 এইজন্য তিনি দূর্ভাগা মানুষ হিসেবে স্বীকার করেছেন, আর্তনাদ করেছেন “এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” (রোমীয় ৭:২৪) এটা ছিল প্রেরিত পৌলের পাপী থাকা অবস্থার সৃতি। পৌলের মত আপনারও এই স্বীকারোক্তির প্রয়োজন রয়েছে। যে দেহ ব্যবস্থা পালন করতে পারে না, আপনি কি এখনও সেই মৃত্যুর দেহে বন্দী আছেন? আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে হবে। জল ও আত্মার সুসমাচারে ঈশ্বরের ধার্মিকতা নিহিত আছে, এবং এই সুসমাচারে বিশ্বাস করে আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জন করতে পারি। 
 যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিসে এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস করে পৌল দূর্ভাগ্যের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।
The New Life Mission

TAKE OUR SURVEY

How did you hear about us?