Due to COVID-19 and disruption to international mail service we have temporally suspended our ‘Free Print Book service’.
In the light of this situation we are not able to mail you the books at this time. Pray that this pandemic will end soon and the resumption of the postal service.
যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন ঈশ্বরের দাস, যীশুর জন্মের ছয় মাস পূর্বে তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। মালাখি পুস্তকে তাঁর বিষয়ে ভাব্বানী করা হয়েছিল এবং তিনি পুরাতন নিয়মে সর্বশেষ ভাববাদী। “তোমার আমার দাস মোশির ব্যবস্থা স্মরণ কর; তাহাকে আমি হোরেবে সমস্ত ইস্রায়েলের জন্য সেই বিধি ও শাসনকলাপ আদেশ করিয়াছিলাম। দেখ, সদাপ্রভুর সেই মহৎ ও ভয়ংকর দিন আসিবার পূর্বে আমি তোমাদের নিকটে এলিয় ভাববাদীকে প্রেরণ করিব। সে সন্তানদের প্রতি পিতৃগনের হৃদয়, এবং পিতৃগণের প্রতি সন্তানদের হৃদয় ফিরাইবে; পাছে আমি আসিয়া পৃথিবীকে অভিশাপে আঘাত করি” (মালাখি ৪:৪-৬ পদ)। যীশু যখন জন্মগ্রহণ করেন ইস্রায়েলীয়েরা তখন ঈশ্বরীয় নিয়মের বাক্যে অগ্রাহ্য করে বিজাতীয় দেবতার উপাসনা করত। তারা অন্ধ ও দোষমুক্ত বলি উৎসর্গ করত এবং ঈশ্বরের মন্দিরকে ব্যবসা কেন্দ্রে পরিনত করেছিল। মোশির ব্যবস্থায় ও ভাববানী গ্রন্থে যীশুর সমম্ন্ধে অনেক ভাববানী করা হয়েছিল। ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে, অর্থাৎ মানুষ নিজেকে পাপী হিসাবে দেখতে পায় (রোমীয় ৩:২০ পদ)।ব্যবস্থা গ্রন্থে যা লেখা আছে সেগুলো অনুসরণ ও পালন না করা পাপ। পুরাতন নিয়মের সময়ে যখনই কেউ কোন ব্যবস্থা লঙ্ঘন করত তখনই সে সমাগম তাম্বুতে পাপার্থক বলি নিয়ে আসত। সেই বলির মস্তকের উপর নিজের হাত রাখতো যেন তার সেই পাপ সেই বলির উপরে অর্পিত হয়। এবং তারপর পাপের ক্ষমা লাভ ও ঈশ্বরের সাথে পূণর্মিলনের উদ্দেশ্যে বলিদান করত। তখন যাজক সেই বলিকৃত পশুর কিছুটা রক্ত হোমবলির বেদির উপরে ছিটিয়ে দিতেন এবং বাকি রক্ত বেদিমূলে ঢেলে দিতেন। যাহোক, এই প্রাত্যহিক বলিদানের মাধ্যমেও ইস্রায়েল তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেত না। তাই ঈশ্বর তাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত দিন বিষয়ক স্থায়ী নিয়ম স্থির করলেন। অর্থাৎ সপ্তম মাসের দশম দিনে তিনি তাদের বিগত বছরের সকল পাপ ক্ষমার নিয়ম দিলেন। সেইদিনে মহাযাজক হারোণ দুটি ছাগের মাঝে গুলিবাঁট করতেন; একটি প্রভুর জন্য এবং অন্যটি প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তারপর তিনি প্রভুর উদ্দেশ্যে বলির জন্য নির্ধারিত ছাগটির মস্তকে হস্তার্পণ দ্বারা ইস্রায়েলীয়দের সারা বছরের পাপ ছাগটির উপর অর্পণ করতেন। অতপর ছাগটির রক্ত সাতবার পাপাবরণের উপরে ও চতুর্দিকে ছিটিয়ে দিতেন। পবিত্র স্থানের উদ্দেশ্যে বলিদানের পর তিনি অন্য ছাগটি উৎসর্গ করতেন। ছাগটির মস্তকে হাত রাখতেন এবং ইস্রায়েলীয়দের সারা বছরের পাপ স্বীকার করতেন এবং এইভাবে ছাগটির উপর সেই পাপ অর্পণ করতেন। তারপর পূর্ব থেকে প্রস্তুত কোন ব্যক্তি দ্বারা ছাগটিকে প্রান্তরে পাঠিয়ে দিতেন। এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা তাদের সারা বছরের পাপ থেকে মুক্ত হত। যাহোক, পুরাতন নিয়মে বছরের পর বছর এভাবে বলিদান করার পরেও নিজেদের তারা সূচী করতে পারেনি। এটা ছিল অনাগত মসিহের ছায়াস্বরূপ। ইস্রায়েলের লোকেরা ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অপেক্ষা করেনি। বরং পুরাতন নিয়মের ভাববাদীদের কথা অমান্য করে পাপপূর্ণ অবস্থার তারা অন্য দেবতাদের পূজা করত। এই জন্য ঈশ্বর পূর্বেই বলেছিলেন যে তিনি যোহন বাপ্তাইজককে পাঠাবেন, যেন তিনি যীশুকে গ্রহণ করার জন্য ইস্রায়েলিয়দের হৃদয় প্রস্তুত করতে পারেন। যীশুকে বাপ্তিস্ম দেওয়ার আগে যোহন বাপ্তিইজক প্রান্তরে ইস্রায়েলদেরকে মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্ম দিতেন। যোহন বাপ্তাইজক তাদের জলে বাপ্তাইজিত করতেন এই উদ্দেশ্যে যেন তারা বিশ্বাস করে যে, তিনি হস্তার্পণ দ্বারা যীশুকে বাপ্তাইজিত করবেন যেন যীশু জগতের পাপভার তুলে নেন এবং তাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য ক্রুশে হত হন। তিনি বলতেন যে, যীশু এসে অসম্পূর্ণ বলিদান প্রথা দূর করে দিবেন এবং যেমনভাবে ইস্রায়েলরা নির্দোষ পাপার্থক বলির মাধ্যমে পাপমুক্ত হত তেমনিভাবে যীশুও পুরাতন নিয়মের প্রথা অনুযায়ী নির্দোষ বলিরূপে একবারই নিজেকে উৎসর্গ করবেন। অনেক ইস্রায়েলিয়রা পাপ স্বীকার করে মন পরিবর্তনের মাধ্যমে তাঁর কাছে বাপ্তাইজিত হতো। “মন পরিবর্তন” অর্থ “প্রভুর প্রতি মন ফিরানো”। পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা স্নরণ করে তারা যোহনের কাছে আসতো, তারা স্বীকার করত যে, সারা জীবন ধরে তারা পাপ করছে। তারা স্বীকার করতো যে, ব্যবস্থা অনুসারে সৎ কাজের মাধ্যমে তারা স্বর্গ রাজ্যের প্রবেশ করতে পারবে না। বরং যীশু খ্রীষ্টের প্রতি মন ফিরাতে হবে যিনি একবারেই সকলের পাপ মুছে ফেলেন এবং স্বর্গ রাজ্যের দুয়ার খুলে দেন। এই কারণে যোহন তাদের বাপ্তিস্ম দিতেন যে, যেন তারা তাদের পাপের ভার বুঝতে পারে, যেন তারা যীশুর অন্বেষণ করে। যীশু মহাযাজক ও মানব জাতির প্রতিনিধি, তিনি ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা মানুষকে তাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করবেন, যেমন যোহন বাপ্তাইজিত করতেন। বাইবেল অনুযায়ী এটাই যথার্থ মন পরিবর্তন। এই জন্য যোহন মানুষের কাছে বললেন, “আমি তোমাদিগকে মন পরিবর্তনের নিমিত্ত জলে বাপ্তাইজ করিতেছি বটে, কিন্তু আমার পশ্চাৎ যিনি আসিতেছেন, তিনি আমা অপেক্ষা শক্তিমান; আমি তাহার পাদুকা বাহিবারও যোগ্য নাই; তিনি তোমাদিগকে পবিত্র আত্মা ও অগ্নিতে বাপ্তাইজ করিবেন” (মথি ৩:১১ পদ)। যোহন বাপ্তাইজক মানুষের মন যীশুর প্রতি ফিরিয়েছিলেন, এবং সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, যীশুই জগতের পাপভার নিয়ে যান (যোহন ১:২৯ পদ) এবং সাক্ষাৎমরের মৃত্যুবরণ করেন।