(মথি ৭:২১-২৩)
“যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পাইবে। সেই দিন অনেকে আমাকে বলিবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম-কার্য্য করি নাই? তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্ম্মাচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।”
হয়তো আমিই সেই ব্যক্তি
যারা হে প্রভু, হে প্রভু, করে তারা প্রত্যেকেই কি স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে?
না৷ যারা পিতার ইচ্ছা পালন করে কেবলমাত্র তারাই পারবে৷
যীশু খ্রীষ্ট বলেন, “যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পাইবে৷” এই কথাগুলো অনেক খ্রীষ্টিয়ানের মনে ভয়ের সৃষ্টি করেছে, এবং এই জন্য তারা ইশ্বরের ইচ্ছা পালন করার উদ্দেশ্যে প্রচুর পরিশ্রম করে৷
অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানের ধারণা হল শুধুমাত্র যীশুতে বিশ্বাস করলেই স্বর্গরাজ্যে যাওয়া যাবে, কিন্তু মথি ৭:২১ পদে বলা হয়েছে যে, যারা হে প্রভু, হে প্রভু করে, তারা সকলে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷
এই বাক্যটি পড়ে তারা অবাক হয়ে ভাবে “হয়তো আমিই সেই ব্যক্তি” তারা এই বলে নিজেদেরকে সান্ত্বনা দেয় যে, “না, যীশু অবশ্যই অবিশ্বাসীদের এই কথা বলেছেন৷” কিন্তু চিন্তাটা তাদের মনে থেকেই যায় এবং অবিরত খোঁচাতে থাকে৷
কাজেই তারা বাক্যটির শেষাংশ ধরে থাকে, “যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পাইবে৷” “পিতার ইচ্ছা পালন করে” এই অংশটির উপর জোর দেয় এবং মনে করে যে, নিয়মিত দশমাংশ দিয়ে, অতিপ্রত্যুষে প্রার্থনা করে, প্রচার করে, অন্যের প্রতি ভালো কাজ করে এবং পাপ না করে, এবং এইভাবে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে৷ এই জন্য তাদের উপর আমার মায়া হয়৷
এই বাক্যটি সঠিকভাবে বুঝতে না পেরে অনেকে ভুল করে৷ তাই আমি পরিষ্কারভাবে এটি ব্যাখ্যা করতে চাই যেন, আমরা সকলেই ইশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে পারি এবং সেইভাবে জীবনযাপন করতে পারি৷
প্রথমতঃ আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে, পিতার ইচ্ছা হল তাঁর পুত্রের মাধ্যমে সমস্ত নরলোকের পাপভার তুলে নেওয়া এবং এইভাবে আমাদেরকে মুক্ত করা৷
ইফিষীয় ১:৫ পদে লেখা আছে, “তিনি আমাদিগতে যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আপনার দত্তক পুত্রতার নিমিত্ত পূর্ব হইতে নিরূপণও করিয়াছেন; ইহা তিনি নিজ ইচ্ছার হিতসংকল্প অনুসারে করিয়াছিলেন৷”
অন্য কথায় বলতে গেলে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেন জানতে পারি যে, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে নিয়েছেন এবং সেই সুসমাচারের মাধ্যমে যেন নুতন জন্ম লাভ করি৷ তিনি চান আমরা যেন, যীশুর উপরে সমস্ত পাপ ফেলে দিয়ে জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করি৷ এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা৷
শুধু “হে প্রভু, হে প্রভু” বললেই
যীশুতে বিশ্বাস করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই কোনটা জানতে হবে?
পিতার ইচ্ছা৷
“যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পাইবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পাইবে” (মথি ৭:২১)৷
দুইভাবে আমাদেরকে অবশ্যই পিতার ইচ্ছা জানতে হবে৷ প্রথমতঃ আমাদেরকে ইটা জানতে হবে এটা তাঁরই ইচ্ছা যেন আমরা পাপের ক্ষমা পাই এবং জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করি৷ দ্বিতীয়তঃ আমাদের সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতে আমাদের কাজ করতে হবে৷
এটা তাঁরই ইচ্ছা যেন জগতের সমস্ত মানুষের পাপ মুছে ফেলা হয়৷ শয়তান আমাদের পিতৃপুরুষ আদমকে পাপের ফাঁদে ফেলেছিল৷ কিন্তু আমাদের পিতার ইচ্ছা যেন, মানুষের পাপ মুছে ফেলা হয়৷ আমাদের এটা বুঝতে হবে যে, পিতার ইচ্ছা এই নয় যে, আমরা নিয়মিত দশমাংশ দিই বা খুব ভোরে উঠে প্রার্থনা করি, কিন্তু তাঁর ইচ্ছা যেন পাপ থেকে আমরা মুক্ত হই৷ এটা তাঁর ইচ্ছা যেন আমরা পাপের সাগর থেকে উদ্ধার পেতে পারি৷
বাইবেল বলে যে, যারা হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তারা সকলেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না৷ তার মানে হল এই যে, আমাদের শুধু যীশুতে বিশ্বাস করলেই হবে না, কিন্তু সেই সাথে পিতার ইচ্ছাও জানতে হবে৷ তাঁর ইচ্ছা যেন আমরা পাপ থেকে এবং নরকের বিচার থেকে উদ্ধার পাই, কারণ আদম ও হবার কাহিনী থেকে আমরা জানতে পারি যে, আমরা পাপ না করে পারি না৷
পিতার ইচ্ছা
পিতার ইচ্ছা কি?
পাপ থেকে মুক্ত করে আমাদেরকে তাঁর সন্তান করা৷
মথি ৩:১৫ পদে বলা হয়েছে, “কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত”। এভাবেই ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ করা, যে আমাদেরকে আমাদের সকল পাপ থেকে রক্ষা করার জন্য যীশুর এই পৃথিবীতে আগমন৷ যীশু যখন যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন তখন ঈশ্বরের ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছিল৷
তিনি আমাদের মুক্ত করে তাঁর সন্তান করতে চেয়েছিলেন৷ এবং সেই উদ্দেশ্যে তাঁর পুত্র আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন৷ এটাই তাঁর ইচ্ছা যেন সমস্ত মানুষ তাঁর সন্তান হয়৷ তাই তিনি তাঁর নিজ পুত্রকে পাঠালেন যেন, শয়তানের ফাঁদে পড়া পাপী মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করা যায়৷ এটাই তাঁর ইচ্ছা ছিল যেন তাঁর পুত্রের আত্মবলিদানের মাধ্যমে সমস্ত মানুষ তাঁর সন্তান হতে পারে৷
যীশু যখন বাপ্তায়জিত হলেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন তখনই ঈশ্বরের ইচ্ছা পালিত হল৷ এটা তাঁর ইচ্ছা যেন আমরা বিশ্বাস করি যে, যীশু যখন বাপ্তায়জিত হলেন তখনই আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হল এবং আমাদের সেই পাপের বিচার দন্ড হিসাবে তিনি ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করলেন৷
“কারণ ঈশ্বর জগতকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে প্রদান করিলেন” (যোহন ৩:16)৷ ঈশ্বর তাঁর সন্তানগণকে পাপ থেকে উদ্ধার করলেন৷ এবং সে উদ্দেশ্যে যীশু প্রথম যে কাজটি করলেন, তা হল তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হলেন৷
“কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন (মথি ৩:১৫)”৷ ঈশ্বরের ইচ্ছায় যীশু এই পৃথিবীতে এলেন, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন, ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন এবং পুনরুত্থিত হলেন৷
এই সব আমাদের পরিষ্কারভাবে জানা উচিৎ৷ অনেকে মথি ৭:২১ পদ পড়ে এবং মনে করে যে, এটাই তাঁর ইচ্ছা যেন আমরা মৃত্যু পর্যন্ত ঈশ্বরের সেবা করি এবং আমাদের সমস্ত সম্পদ মন্ডলীকে দান করি৷
খ্রীষ্টীয় ভাই-বোন, আমরা যীশুতে যারা বিশ্বাস করি, প্রথমত আমাদের ঈশ্বরের ইচ্ছা জানতে হবে এবং সেই মত কাজ করতে হবে৷ তাঁর ইচ্ছা না জেনে মন্ডলীর জন্য নিজেকে উত্সর্গ করে কোনো লাভ হবে না৷
লোকেরা তাদের গোঁড়া মন্ডলীতে কঠোর পরিশ্রম করার পরে চিন্তা করে যে আর কি করা যেতে পারে৷ কিন্তু আমি প্রেসবিটেরিযান চার্চে ক্যালভিনের মতবাদ পড়েছি এবং এমন একজন মায়ের কাছে মানুষ হয়েছি যিনি একজন অভিজ্ঞ পালকের মত ধর্মপরায়ণা৷ আমি তথাকথিত অর্থডক্স মন্ডলীতে মানুষ হয়েছি৷
প্রেরিত পৌল বলেন যে , তাঁর গর্ব করার মত অনেক কিছুই ছিল, তিনি বিন্যামীন বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সেই সময়কার বিখ্যাত ব্যবস্থাবেত্তা গুরু গমলিয়েলের কাছে পড়াশুনা করেছিলেন৷ পৌল নুতন জন্ম পাওয়ার আগে, যীশুতে যারা বিশ্বাস করত সেইসব বিশ্বাসীদেরকে গ্রেফতার করতেন৷ কিন্তু দম্মেশকে যাওয়ার পথে তিনি যীশুকে বিশ্বাস করেন এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে নুতন জন্ম লাভ করে ধার্মিক হন৷
ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পূর্বে তাঁর ইচ্ছা আমাদের জানতে হবে
যীশুতে বিশ্বাস করার পূর্বে আমাদের কি করা উচিৎ?
আমাদের প্রথমে তাঁর ইচ্ছা জানা উচিৎ৷
ঈশ্বরের ইচ্ছা আমাদের পবিত্রতা “ফলতঃ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা, যেন তোমরা ব্যভিচার হইতে দুরে থাক” (১ থিষলনীকীয় ৪:৩)৷ আমরা জানি যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যে আমরা জল ও আত্মার মাধ্যমে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র হই এবং বিশ্বাসী জীবনযাপন করি৷
যে যীশুতে বিশ্বাস করে, অথচ তার হৃদয়ে পাপ রয়েছে, সে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপন করে না৷ তাঁর ইচ্ছা পালন করার অর্থ হল যেন আমরা যীশুর মাধ্যমে পরিত্রাণ গ্রহণ করে পবিত্র হই৷ এটা জানাই হল ঈশ্বরের ইচ্ছা৷
আমি যখন আপনাকে প্রশ্ন করি, “আপনি যীশুতে বিশ্বাস করছেন এবং তারপরেও কি আপনার হৃদয়ে পাপ রয়েছে?” আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তবে এটা পরিস্কার যে আপনি এখনও ঈশ্বরের ইচ্ছা জানেন না৷ ঈশ্বরের ইচ্ছা এটাই যে আমরা পবিত্র হই এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হই৷
একজন লোকের বাধ্য ছেলে ছিল৷ একদিন সে তার বড় ছেলেকে ডাকল, এই ছেলেটি ছিল সবচেয়ে বাধ্য, ছেলেকে সে বলল, “তুমি মাঠের ওই পাড়ের গ্রামে গিয়ে -------৷”
তার কথা শেষ হওয়ার পূর্বে ছেলেটা বলল, “ঠিক আছে বাবা” এবং বলেই সে চলে গেল৷ তাকে কি করতে হবে সে জানার জন্য অপেক্ষা করল না৷ সে চলে গেল৷
বাবা তাকে ডেকে বললেন, “হে পুত্র, তুমি খুব বাধ্য------ এটা খুবই ভালো বিষয়, কিন্তু তোমাকে কি করতে হবে সেটাতো তোমাকে জানতে হবে৷”
কিন্তু ছেলে বলল, “ঠিক আছে৷ আমি তোমার বাধ্য থাকব৷ আমার চেয়ে আর বাধ্য কে?”
কিন্তু শেষ পর্যন্ত সে খালি হাতে ফিরে এল৷ কারণ সে জানত না যে বাবা তাকে কি করতে বলেছে৷ সে শুধু অন্ধভাবে বাধ্য থাকল৷
আমরা যদি যীশু খ্রীষ্টকে না জানি, আমরাও তার মত হব৷ অনেকে খুব একাগ্র হয়, ঈশ্বরের ইচ্ছা না জেনে বিভিন্ন মতবাদ অনুসরণ করে, নিয়মিত দশমাংশ দেয়, রাতে প্রার্থনা করে, উপবাস ইত্যাদি সবই করে৷
তারা যখন হৃদয়ে পাপ নিয়ে মারা যায়, তাদেরকে স্বর্গের দরজা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য খুবই ব্যগ্র ছিল,কিন্তু তাঁর ইচ্ছাটা কি তা জানত না৷
ব্যবস্থাবিহীনতায় বেঁচে থাকার মানে কি?
জল ও আত্মার সুসমাচার না জেনে পাপী থাকা অবস্থায় যীশুতে বিশ্বাস করা৷
“সেই দিন আমাকে অনেকে বলিবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই কি আমরা ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভুত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রমকার্য করি নাই? তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্মচারীরা আমার নিকট হইতে দূর হও” (মথি ৭:২২-২৩)৷
ঈশ্বর আমাদের কাছে কিছু কাজ এবং বিশ্বাস প্রত্যাশা করেন৷ তিনি চান আমরা যেন বিশ্বাস করি যে, যীশু আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন৷ অনেকে ভাববাণী বলে, ভুত ছাড়ায় এবং অনেক পরাক্রম কার্য করে, তাঁর নামেই করে, অথচ জল ও আত্মার সত্য জানে না৷
পরাক্রম কাজ করার মানে বড় বড় গীর্জাঘর তৈরী করার মত, অথবা নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে মন্ডলীতে দান করার মত, অথবা নিজের জীবন প্রভুর জন্য উত্সর্গ করার মত৷
ভাববাণী বলার অর্থ হল নেতা হওয়া৷ এই ধরণের লোকেরা ফরীশীদের মত যারা ব্যবস্থা অনুসারে জীবনযাপন করতে ভালবাসে৷ এরাও হল গোঁড়া খ্রীষ্টিয়ানদের মত৷
ভুত ছাড়ানো মানে ক্ষমতা ব্যবহার করা৷ তারা সকলেই বিশ্বাসে এত উদ্যোগী যে, তারা জানে না শেষে প্রভু তাদের বলবেন যে, তিনি তাদের চেনেন না৷ তিনি তাদের কাছে জানতে চাইবেন, তিনি যখন তাদেরকে জানেন না, তখন তারা তাঁকে জানে কিভাবে৷
প্রভু বলেন, “আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্ম্মাচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।” সেই দিন লোকেরা তাঁকে চিত্কার করে বলবে, “হে প্রভু, আমি বিশ্বাস করি তুমিই আমার ত্রাণকর্তা৷” তারা বলবে যে, তারা তাঁকে ভালবাসে, কিন্তু তাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে৷ ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা বিহীন (যারা পাপ থেকে মুক্ত হয় নি) বলবেন৷ এবং তাদেরকে দূর করে দেবেন৷
সেই দিন, নুতন জন্ম না পেয়ে যারা মরে ছিল তারা চিত্কার করে বলবে, “আমি ভাববাণী বলেছি, গীর্জাঘর এবং তোমার নামে ৫০ জন মিশনারীকে পাঠিয়েছি৷”
কিন্তু সেই পাপীদের যীশু বলবেন, “আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে ব্যবস্থাবিহীন লোকেরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।”
“আপনি কি বলছেন? আপনি কি জানেন না যে, আপনার নামে ভাববাণী বলেছি? দীর্ঘদিন গীর্জার সেবা করেছি, অন্যকেউ আপনাকে বিশ্বাস করতে বলেছি৷ আপনি কিভাবে আমাকে বলেন যে আমাকে জানেন না?
তিনি উত্তর দেবেন, “আমি কখনও তোমাকে জানি নি৷ তোমরা যারা বলছ আমাকে জান, অথচ তোমাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে, তোমরা আমার নিকট থেকে দূর হও৷”
হৃদয়ে পাপ সহ তাঁকে বিশ্বাস করা বা পরিত্রােণর ব্যবস্থায় বিশ্বাস করা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ব্যবস্থাহীনতার সমান৷ তাঁর ইচ্ছা না জানাও ব্যবস্থাহীনতা৷ তাঁর ইচ্ছা না জেনে, জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ না করা, বা সেই আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকা ব্যবস্থাহীনতার সমান৷ তাঁর ইচ্ছার বাধ্য না হয়ে তাঁর অনুসরণ করা ব্যবস্থাহীনতা৷ ব্যবস্থাহীনতা একটি পাপ৷
বাইবেলে ঈশ্বরের ইচ্ছা
ঈশ্বরের সন্তান কারা?
পাপহীন ধার্মিকেরা৷
জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করার সুসমাচার জানা ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ সত্য সুসমাচারের মাধ্যমে আমরা পুনর্জন্ম লাভ করতে পারি৷ এটাও তাঁর ইচ্ছা যেন আমরা তাঁর সন্তান হয়ে এই সুসমাচারের বিশ্বাসে বেঁচে থাকি৷ ঈশ্বরের ইচ্ছা আমাদের জানতে হবে, কিন্তু অনেকেই নুতন জন্ম লাভের এই জল ও আত্মার সুসমাচার জানে না৷
যখন আমি কাউকে জিজ্ঞাসা করি কেন সে যীশুকে বিশ্বাস করে, অনেকের কাছ থেকে উত্তর আসে যে, পাপ থেকে মুক্ত হবার জন্য তারা যীশুতে বিশ্বাস করে৷
তখন আমি জানতে চাই, “তাহলে, তাহলে আপনার হৃদয়ে কি পাপ আছে?”
তারা বলে, “অবশ্যই আছে”
“তাহলে, আপনি কি পরিত্রাণ পেয়েছেন, নাকি পান নি?”
“অবশ্যই পেয়েছি”৷
“যার হৃদয়ে পাপ রয়েছে, সে কি স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে?”
“না, সে পারে না”
তাহলে, আপনি কি স্বর্গে যাচ্ছেন, নাকি নরকের আগুনে যাচ্ছেন?
তারা বলে যে, তারা স্বর্গে যাচ্ছে, যাচ্ছে কি? তারা নরকেই যাবে৷
অনেকের ধারণা হৃদয়ে পাপ থাকলেও যেহেতু তারা যীশুতে বিশ্বাস করে তাই তারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে এবং এটাই তাদের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গরাজ্যে পাপীদের গ্রহণ করবেন না৷
ঈশ্বরের ইচ্ছা কি? বাইবেলে বলা হয়েছে যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা হল তাঁর পুত্রে বিশ্বাস করা এবং যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করা৷
যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারা নুতন জন্ম লাভ করে তাঁর সন্তান হয়েছে৷ তাঁর সন্তান হওয়া আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়৷ তাঁর সন্তানেরা ধার্মিক৷ ঈশ্বর যখন আমাদের ধার্মিক হিসাবে গণনা করেন, তিনি কি পাপী-ধার্মিককে বোঝাতে চান? ঈশ্বর কখনও মিথ্যা বলেন না৷ সুতরাং তাঁর সম্মুখে আমরা হয় পাপী, নয়তো ধার্মিক ব্যক্তি হই৷ ‘পাপহীন বলে বিবেচিত’ কখনও হবে না৷ যারা পবিত্র হওয়ার জন্য জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তিনি কেবল তাদেরকে আহ্বান করেন৷
কিভাবে আমরা ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি?
জল ও রক্তের সুসমাচার গ্রহণ করে৷
কারণ ঈশ্বর জগতের সমস্ত পাপভার তাঁর পুত্রের উপরে অর্পণ করেছেন, এবং সেই পাপের কারণেই ক্রুশীয় বিচার দন্ডে নিজ পুত্রকে বিচারিত করেছেন৷ ঈশ্বর কখনও মিথ্যা বলতে পারেন না৷ তিনি বলেন, “পাপের বেতন মৃত্যু” (রোমীয় ৬:২৩)৷ যখন তাঁর পুত্র মৃত্যুবরণ করলেন, তখন তিন ঘন্টা যাবৎ পৃথিবী অন্ধকার হয়ে রইল৷
যীশু উচ্চ রবে চীৎকার করিয়া ডাকিয়া কহিলেন, “এলী এলী লামা শবক্তানী,” অর্থাৎ “ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করিয়াছ?” (মথি ২৭:৪৬)৷
যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন যেন, সমস্ত মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করা যায়৷ তিনি জানতেন তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হবে এবং ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে, টা জানা সত্ত্বেও তিনি সমস্ত মানুষের পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন৷ কাজেই যর্দনে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে নিজের উপরে পাপ তুলে নেওয়ার কারণে ঈশ্বর তাঁর পুত্রের বিচার করলেন এবং তিন ঘন্টা তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন৷
“কেননা যত লোক তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন” (যোহন ১:১২)৷
আপনি কি ঈশ্বরের সন্তান? আমরা নুতন জন্ম প্রাপ্ত, কারণ আমরা নুতন জন্ম লাভের জল ও আত্মার সুসমাচার গ্রহণ করেছি৷ যারা এইভাবে নুতন জন্ম লাভ করেছে, তারা ধার্মিক৷ আমরা এখন সকলে ধার্মিক৷
“ঈশ্বর যখন আমাদের সপক্ষ, তখন আমাদের বিপক্ষ কে?” (রোমিও ৮:৩১)৷ যখন কোনো ধার্মিক ব্যক্তি ঈশ্বরের সাক্ষাতে এবং মানুষের সামনে নিজেকে ধার্মিক হিসাবে দাবি করে, তখন অপরিত্রাণ প্রাপ্ত লোক তার বিচার করে৷ সুতরাং প্রেরিত পৌল বলেছেন, “ঈশ্বরের মনোনীতদের বিপক্ষে কে বিচার করিবে?” (রোমীয় ৮:৩৩)৷ যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, আমাদেরকে শুচি, ধার্মিক ও তাঁর সন্তান করেছেন৷ তিনি আমাদের তাঁর গর্বিত সন্তান হওয়ার অধিকার দিয়েছেন৷
যারা জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করেছে, তারা তাঁর সন্তান৷ তারা তাঁর সঙ্গে অনন্তকাল বাস করবে৷ তারা অন্যান্য সাধারণ জীবের মত নয়, কিন্তু ঈশ্বরের সন্তান হয়ে চিরকাল স্বর্গরাজ্যে বাস করবে৷
এখন তারা ঈশ্বরের ধার্মিক সন্তান, কেউ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে না, তাদের বিচার করতে পারে না, বা ঈশ্বর থেকে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে না৷
যীশুতে জীবনযাপন করতে হলে, আমাদের জল ও আত্মার সুসমাচার জানতে হবে৷ আমাদের বাইবেল জানতে হবে৷ এটা অতি আবশ্যক যে, আমরা যেন ঈশ্বরের ইচ্ছা জানতে পারি এবং তাতে বিশ্বাস করতে পারি এবং সেই অনুসারে তাঁর ইচ্ছা পালন করতে পারি৷
এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা যেন পাপীরা জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করে
কেন ঈশ্বর পাপী মানুষের সাদৃশ্যে তাঁর পুত্রকে পাঠালেন?
যেন তাঁর উপরে সমস্ত পাপ অর্পিত হয়৷
এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা যেন আমরা মুক্তি লাভ করি এবং জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করি৷ ফলতঃ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা, যেন তোমরা ব্যভিচার হইতে দুরে থাক” (১ থিষলনীকীয় ৪:৩)৷
এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা ছিল যে, তিনি তাঁর পুত্রকে এই পৃথিবীতে পাঠাবেন এবং তাঁর উপরে জগতের সব পাপ অর্পণ করবেন, যেন আমরা পরিত্রাণ পাই৷ এটা আত্মার ব্যবস্থা যেন আমরা জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করি৷ এটাই আমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছে৷
আমরা মুক্ত৷ এখন আপনারা কি ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে পারছেন? তাঁর ইচ্ছা আমরা যেন সকলে মুক্ত হই৷ তাঁর ইচ্ছা নয় যেন আমরা জগতের সাথে সমঝোতা করি৷ কিন্তু আমরা যেন, তাঁকে বিশ্বাস করি এবং একমাত্র তাঁরই আরাধনা করি এটাই তাঁর ইচ্ছা৷
এটাও ঈশ্বরের ইচ্ছা যে, যারা নুতন জন্ম লাভ করেছে তারা যেন সুসমাচারের সাক্ষ্য দেয় এবং মন্ডলীতে থাকে এবং হারিয়ে যাওয়া আত্মাকে প্রভুর কাছে ফিরিয়ে আনতে পারে৷
আমরা পাপ করতে চাই বলেই পাপ করি না, কিন্তু আমরা পাপ করি দুর্বলতার কারণে৷ কিন্তু যীশু সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ যোহন বাপ্তাইজকের কাছ থেকে বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে ঈশ্বর যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করেছেন৷ তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এই উদ্দেশ্যেই পাঠিয়েছিলেন এবং যোহনের কাছে বাপ্তাইজিত হতে দিয়েছিলেন৷ এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা মুক্ত হই এবং এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা৷
ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যেন আমরা তাঁর পাঠানো যীশুতে বিশ্বাস করি
কেন যীশু পাপী মানুষের সাদৃশ্যে পৃথিবীতে এসেছিলেন?
মানব জাতির সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য৷
বাইবেল বলে যে, ঈশ্বরের ইচ্ছা এই যেন, তিনি যাকে পাঠিয়েছিলেন তাঁকে যেন বিশ্বাস করা হয়৷ “তখন তাহারা তাঁহাকে কহিল, আমরা যেন ঈশ্বরের কার্য্য করিতে পারি, এ জন্য আমাদিগকে কি করিতে হইবে? যীশু উত্তর করিয়া তাহাদিগকে কহিলেন, ঈশ্বরের কার্য্য এই, যেন তাঁহাতে তোমরা বিশ্বাস কর, যাঁহাকে তিনি প্রেরণ করিয়াছেন। তাহারা তাঁহাকে কহিল, ভাল, আপনি এমন কি চিহ্ন-কার্য্য করিতেছেন, যাহা দেখিয়া আমরা আপনাকে বিশ্বাস করিব? আপনি কি কার্য্য করিতেছেন? আমাদের পিতৃপুরুষেরা প্রান্তরে মান্না খাইয়াছিলেন, যেমন লেখা আছে, “তিনি ভোজনের জন্য তাহাদিগকে স্বর্গ হইতে খাদ্য দিলেন” (যোহন ৬:২৮-৩১)৷
লোকেরা যীশুকে বলল যে, মোশিকে ঈশ্বর একটা চিহ্ন দিয়েছিলেন, যখন তারা কনানের উদ্দেশ্যে চলছিল, তখন ঈশ্বর তাদের স্বর্গ থেকে মান্না দিয়েছিলেন, এই চিহ্ন দেখে ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিল (যোহন ৬:৩২-৩৯)৷ লোকে যীশুকে জিজ্ঞাসা করল, “আমরা যেন ঈশ্বরের কার্য্য করিতে পারি, এ জন্য আমাদিগকে কি করিতে হইবে?”
যীশু তাদের উত্তর দিয়ে বললেন যে, ঈশ্বরের কাজ করতে হলে, তাদেরকে তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে৷ আমরা যদি ঈশ্বরের কাজ করতে চাই, তবে যীশু খখ্রীষ্টের কাজে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে৷ আমাদের জন্য এটাই একমাত্র ঈশ্বরের ইচ্ছা নয় যে, আমরা সুসমাচারে বিশ্বাস করি এবং টা প্রচার করি, কিন্তু তাঁর ইচ্ছা আমরা যেন সেই সাথে, সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করি৷
ঈশ্বর আমাদের আদেশ দিয়েছেন, “অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সে সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও (মথি ২৮:১৯-২০)৷
যীশু পরিষ্কারভাবে আমাদের বলেছেন যেন, পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার নামে বাপ্তাইজ করা হয়৷ পিতার ও আত্মার উদ্দেশ্যে তিনি যা করেছেন তার সব কিছুই তাঁর বাপ্তিস্মে নিহিত৷ আমরা যখন টা বুঝতে পারি, এবং যীশুর সাধিত সমস্ত কাজ দেখতে পারি এবং সেই কাজ সমন্ধে পবিত্র আত্মার সাক্ষ্য বুঝতে পারি৷
জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ঈশ্বর যীশুকে পাঠিয়েছিলেন৷ সুতরাং কেবলমাত্র ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস করার পড়ে আমরা তাঁর দাস হতে পারি এবং মুক্ত হতে পারি৷
ঈশ্বরের কাজ করা
আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কি?
সারা পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা৷
আমরা যদি ঈশ্বরের কাজ করতে চাই, তবে প্রথমে আমাদেরকে অবশ্যই যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে৷ তিনি যাঁকে প্রেরণ করেছেন, তাঁকে বিশ্বাস করা ঈশ্বরের কাজ৷ যীশুতে বিশ্বাস করতে হলে প্রথমে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে, তিনি জল ও রক্ত দ্বারা আমাদের পরিত্রাণ করেছেন৷
যখন আমরা যীশুতে বিশ্বাস করি এবং সুসমাচার প্রচার করি তখনই আমাদের দ্বারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করা হয়৷ এইভাবে আমরা ঈশ্বরের কাজ করে থাকি৷ তিনি আমাদের বলেছেন যে, যারা জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম প্রাপ্ত হয়ে আশীর্বাদ লাভ করেছে, কেবলমাত্র তারাই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে৷
আসুন আমরা সকলে এই প্রকৃত সত্য জেনে, বুঝে এবং তাতে বিশ্বাস করে স্বর্গরাজ্যে স্থান করে নি৷ বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হয়েছে, এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে পারি৷ তাঁর রাজ্য বৃদ্ধির জন্য বাঁচুন৷ সর্বোপরি, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সুসমাচার প্রচার করুন৷
সহ-খ্রীষ্টীয় ভাই-বোন, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তাঁরাই ঈশ্বরের কাজ করে৷ যাঁকে তিনি পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে বিশ্বাস করাই ঈশ্বরের কাজ৷ তাঁর ইচ্ছা পালন করার অর্থ হল এই যে, তিনি যাঁকে পাঠিয়েছিলেন তাঁর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হয়েছে, এবং তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন৷
যীশু যখন যর্দনে বাপ্তাইজিত হলেন, এবং আমাদের সকলের জন্য ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন, তখনই মানুষের পাপ থেকে মুক্তির কাজ সাধিত হল৷ ঈশ্বরের কাজের দ্বিতীয় অংশ হল যাঁকে তিনি পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে বিশ্বাস করা, যিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন সেই ত্রাণকর্তাকে বিশ্বাস করা৷ এবং পৃথিবীব্যাপী সুসমাচার প্রচার করা৷
এখন যারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত হয়েছে, পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত তাদের সুসমাচার প্রচার করা উচিৎ৷
ঈশ্বরের ইচ্ছা যা জেনে যারা যীশুতে বিশ্বাস করে, তারা কোথায় যাবে?
তারা নরকে যাবে৷
“সেই দিন অনেকে আমাকে বলিবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম-কার্য্য করি নাই? তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্ম্মাচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।” (মথি ৭:২২-২৩)৷
কারা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে পাপী এবং করা ব্যবস্থাবিহীন অবস্থায় রয়েছে, এই অংশে টা সরাসরি আমাদেরকে জানানো হয়েছে৷
যারা ‘হে প্রভু, হে প্রভু’ বলে, তাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত নয়৷ তাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে, তাই তারা এখনও যন্ত্রণা ভোগ করছে৷ তাই তারা চিত্কার করে, কিছুটা অভিযোগের সুরে, অযোগ্য ভাবে হে প্রভু, হে প্রভু বলে প্রার্থনা উত্সর্গ করে৷
তারা বিশ্বাস করে যে যদি তারা প্রার্থনার সময় চিত্কার করে কাঁদতে পারে তবে তাদের বিবেক পরিস্কার হয়ে যাবে, কিন্ত এটা অবাস্তব, কারণ, তাদের হৃদয়ে পাপ থাকে৷ তারা পাহাড়ে গিয়ে চিত্কার করে কাঁদতে থাকে, যেন ঈশ্বর অনেক দুরে রয়েছেন৷ যখন আমাদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস থাকে না, তখনই বার বার হে প্রভু, হে প্রভু বলার প্রবৃত্তি জাগে৷
কিছু কিছু মন্ডলীতে সভ্যরা নুতন জন্ম প্রাপ্ত নয়, তারা এমনভাবে প্রার্থনা করে যেন পুলপিট ভেঙ্গে পড়ে৷
কিন্তু বাইবেলে আমরা দেখতে পাই, যারা হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তারা সকলেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়৷ কেবলমাত্র যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেছে এবং সেই বিশ্বাসে তারা ঈশ্বরের কাজ করছে, তারাই প্রবেশ করতে পারবে৷
বাইবেল বলে যে, হৃদয়ে পাপ নিয়ে তাঁকে ডাকা ব্যবস্থা-বিহীনতার সমান৷ আপনি কি কখনও পাহাড়ে প্রার্থনা সভায় গিয়েছেন? কিছু কিছু বৃদ্ধা মহিলা সারাজীবন শুধু কাঁদতেই থাকে, কারণ তারা যীশুর সত্যের পরিচয় পায় নি, বা পবিত্র আত্মাকেও হৃদয়ে গ্রহণ করে নি, এমনকি জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্মও পায়নি৷ তারা খুব আকুল স্বরে তাঁকে ডাকে, কারণ তাদের হৃদয়ে নরকে যাওয়ার স্থায়ী ভয় রয়েছে৷
ধরুন, কোনো ব্যক্তি যিনি সারাজীবন মিশনারী হিসাবে মন্ডলীর পরিচর্যা করেছেন, অথবা কোনো পালক এক সময়ে প্রভু কর্তৃক অগ্রাহ্য হল৷ পিতার কাছ থেকে ত্যাজ্য হওয়া বা স্বামী অথবা স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ব্যথা মানুষের হৃদয়কে ভেঙ্গে দেয়, কিন্তু যিনি রাজাদের রাজা, যিনি আমাদের হৃদয়ের বিচারক, তাঁর কাছ থেকে পরিত্যক্ত হলে আমরা কোথায় যাব?
আমি আশা করি আপনাদের কারো জীবনে এমন ঘটবে না৷ দয়া করে জল ও আত্মার সুসমাচার শুনুন ও তাতে বিশ্বাস করুন৷ নুতন জন্ম লাভের উদ্দেশ্যে এটাই আমাদের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে জীবন ধারণ করুন৷
আমাদেরকে, খ্রীষ্টিয়ানদেরকে, জল ও আত্মার সুসমাচারে যথার্থ বিশ্বাস করতে হবে, এবং বাইবেলের সত্যের শক্তি লাভ করতে হবে৷ কেবলমাত্র তখনই আমরা ঈশ্বরের বিচার থেকে রেহাই পাব৷[3-9] < মথি ৭:২১-২৩> আসুন, বিশ্বাসে পিতার ইচ্ছা পালন করি