< রোমীয় ৭:১-৪ >
“অথবা হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা কি জান না- কারণ যাহারা ব্যবস্থা জানে, আমি তাহাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্য যত কাল জীবিত থাকে, তত কাল পর্যন্ত ব্যবস্থা তাহার উপরে কর্ত্তৃত্ব করে? কারণ যত দিন স্বামী জীবিত থাকে, তত দিন সধবা স্ত্রী ব্যবস্থা দ্বারা তাহার কাছে আবদ্ধ থাকে; কিন্তু স্বামী মরিলে সে স্বামীর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হয়। সুতরাং যদি সে স্বামী জীবিত থাকিতে অন্য পুরুষের হয়, তবে ব্যভিচারিণী বলিয়া আখ্যাত হইবে; কিন্তু স্বামী মরিলে সে ঐ ব্যবস্থা হইতে স্বাধীন হয়, অন্য স্বামীর হইলেও ব্যভিচারিণী হইবে না। অতএব, হে আমার ভ্রাতৃগণ, খ্রীষ্টের দেহ দ্বারা ব্যবস্থার সম্বন্ধে তোমাদেরও মৃত্যু হইয়াছে, যেন তোমরা অন্যের হও, যিনি মৃতদের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইয়াছেন, তাঁহারই হও; যেন আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশে ফল উৎপন্ন করি।”
আপনি কি কখনও পাকানো সূতার বান্ডেল দেখেছেন? যীশুর বাপ্তিস্মের সত্যে প্রেরিত পৌলের যে বিশ্বাস ছিল, সেই সম্বন্ধে না জেনে আপনি যদি এই অধ্যায় বুঝতে চান, তাহলে আপনার বিশ্বাস আগের চেয়ে আরো বেশি দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়বে।
এই অধ্যায়ে পৌল বলেন যে, যেহেতু প্রত্যেকেই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে পাপে পরিপূর্ণ, তাই সেই পাপের আত্মার মৃত্যুর মাধ্যমেই মানুষ যীশু খ্রীষ্টের কাছে আসতে পারে এবং নূতন জন্ম লাভ করতে পারে।
পৌল যে সত্য অনুধাবন করেছিলেন
রোমীয় ৭:৭ পদে বলা হয়েছে, “তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দূরে থাকুক; বরং পাপ কি, তাহা জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা “লোভ করিও না,” এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না; পৌল বলছেন “লোভ করিও না,” “এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না;” তিনি আরো বলছেন, “কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া সেই আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সম্পন্ন করিল।” পৌল অনুধাবন করতে পেরেছিলেন যে, তিনি ব্যবস্থার ৬১৩টি বিধিই লঙ্ঘন করছিলেন। অন্য কথায়, তিনি ছিলেন পাপের সমষ্টি -যে পাপ না করে পারে না; তিনি ছিলেন আদমের (যিনি সমস্ত পাপের উৎস) উত্তরসুরী, এবং পাপে তিনি মাতার গর্ভে এসেছিলেন।
এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণকারী প্রত্যেকেই জন্মমুহূর্ত থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পাপী। এই কারণে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে সক্ষম নয়। কিভাবে এই পাপের সমষ্টি ৬১৩টি বিধিসহ ঈশ্বরের সব ব্যবস্থা পালন করতে পারে? ঈশ্বরের সাক্ষাতে যখন নিজেদেরকে আমরা ব্যবস্থা অনুযায়ী পাপী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি, তখনই আমরা যীশু খ্রীষ্টের কাছে, অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্মিকতার কাছে আসতে পারি; এবং তখনই বুঝতে পারি যে, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা চুড়ান্তভাবে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি। যীশু খ্রীষ্টই হলেন ঈশ্বরের ধার্মিকতা। যোহনের দ্বারা নেওয়া তাঁর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে তিনি আমাদের কাছে ঈশ্বরের এই ধার্মিকতা আনয়ন করলেন। এইজন্য, অবশ্যই আমাদের সকলকে ঈশ্বরের এই ধার্মিকতা সম্পর্কে জানতে হবে এবং তাতে বিশ্বাস করতে হবে। আমাদের যীশুতে বিশ্বাস করতে হবে এই কারণে যে, তাঁর মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা প্রকাশিত হয়েছে।
আপনি কি ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে জানেন এবং তাতে বিশ্বাস করেন? জল ও আত্মার সুসমাচারের মধ্যে ঈশ্বরের ধার্মিকতার নিগুঢ়তত্ত্ব নিহিত রয়েছে। যর্দ্দনে যোহনের কাছে নেওয়া যীশুর বাপ্তিস্মের মাঝেই এই নিগুঢ়তত্ত্ব নিহিত। আপনি কি এই নিগুঢ়তত্ত্ব জানতে চান? এই সত্যে যদি আপনি বিশ্বাস করতে চান, তবে বিশ্বাসে আপনি ঈশ্বরের ধার্মিকতা অর্জন করতে পারবেন।
ঈশ্বরের ব্যবস্থা ও আজ্ঞা সম্বন্ধে না জানা থাকলে, আমরা কখনোই বুঝতে পারব না যে আমরা পাপী; অথচ অবিরত আমরা পাপ করে চলেছি। কিন্ত মন্ডলীতে যোগ দেওয়ার পর থেকে আমরা বুঝত পারি যে, আমরা বাস্তবিকই পাপে পরিপূর্ণ, এবং এই পাপের কারণে আমরা আত্মিকভাবে মৃত। এইজন্য, আত্মাগণকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছে আনার জন্য প্রেরিত পৌল নিজের অতীত অভিজ্ঞতা স্মরণ করছেন, যখন তিনি ভ্রান্তভাবে ঈশ্বরের ব্যবস্থা ও আজ্ঞায় বিশ্বাস করেছিলেন।
একটি উদাহরন দিচ্ছি যার দ্বারা আপনার জন্য ঈশ্বরের ব্যবস্থার ভূমিকা সম্বন্ধে বুঝতে সহজ হবে। এই মুহূর্তে আমি বাইবেলটি ধরে আছি। যদি আমি বাইবেলটির পৃষ্ঠার মধ্যে মূল্যবান কিছু লুকিয়ে রাখি এবং বলি, “এর মধ্যে কি লুকানো আছে, কখনো তা খুঁজে দেখার চেষ্ট করবেন না;” যখনই আপনি এই নিষেধটি শুনবেন, সেই মুহূর্ত থেকে আপনার ভিতরে কি প্রতিক্রিয়া হবে? ভিতরের লুকানো জিনিসটি দেখার জন্য আপনার মধ্যে কি প্রচন্ড ইচ্ছা জাগবে না? কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে আপনি আমার নির্দেশ অমান্য করবেন। যে মুহূর্ত থেকে আপনার ভিতরে ঐ লুকানো জিনিসটি দেখার জন্য প্রবল আগ্রহ জন্মাবে, তখন থেকেই আপনি সেটা দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠবেন। কিন্তু আমি যদি আপনাকে বাইবেলের মধ্যে দেখতে নিষেধ না করতাম, তাহলে আপনার মধ্যে কখনোই এমন তীব্র কৌতুহল জাগত না। ঠিক একই ভাবে, ঈশ্বর যখন আমাদের নিষেধ করেন, তখন আমাদের ভিতরের সুপ্ত পাপ(অভিলাষ)গুলো সুযোগ মত বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করে।
ঈশ্বর-দেয় ব্যবস্থার দ্বারা মানুষের অন্তরের পাপ প্রকাশ পায়, তিনি ব্যবস্থা শুধু পালন করার জন্য দেননি, বরং আমাদের পাপ প্রকাশ এবং পাপী সাব্যস্ত করার জন্য ব্যবস্থা দিয়েছেন। আমরা সবাই ধংস হয়ে যাব, যদি আমরা যীশুর কাছে না যাই এবং ঈশ্বরীয় ধার্মিকতা, যা যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত সেচনের দ্বারা পাওয়া যায় - এটা বিশ্বাস না করি। আমাদের অন্তরে ধারন করা উচিত যে, ব্যবস্থার কাজ হচ্ছে আমাদেরকে খ্রীষ্টের সম্মুখে আনা এবং তাঁর মাধ্যমে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতাকে বিশ্বাস করতে সাহায্য করা।
এ জন্য প্রেরিত পৌল প্রচার করতেন, “কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া সেই আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সম্পন্ন করিল; কেননা ব্যবস্থা ব্যতিরেকে পাপ মৃত থাকে” (রোমীয় ৭:৮)। ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রেরিত পৌল আমাদের দেখিয়েছেন যে, সাধারণ মৌলিক পাপগুলি কি? তিনি স্বীকার করতেন যে, তিনি মূলতঃ একজন পাপী ছিলেন, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের দেওয়া ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার বিশ্বাসের দ্বারা তিনি তার আত্মিক জীবনে ফিরে এসেছিলেন।
পৌলের অনুতাপ এবং বিশ্বাস
এই প্রেরিত পৌল বলেন যে, “এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি”(রোমীয় ৭:২৪)।
প্রেরিত পৌল স্বীকার করেন, এমনকি ঈশ্বরের ধার্মিকতার থেকেও তিনি পাপী এবং এমন ছিলেন যে, ঈশ্বরের ধার্মিকতা শুধু তার জন্য নয় বাকী সমগ্র মানব জাতির জন্য অপরিহার্য ছিল।
বাপ্তিস্মের নিগুঢ়তত্ত্ব সঠিক ভাবে জানার মাধ্যমে আমাদের ঈশ্বরের ধার্মিকতা ধারন করা উচিত, যেটা যীশু গ্রহন এবং বিশ্বাস করেছিলেন। যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তে যে ধার্মিকতা পাওয়া যায় সেটা আপনার এবং আমার জানা এবং বিশ্বাস করা উচিত। আর শুধু মাত্র তখনই আমাদের আত্মা ও মাংস, যা শুধু পাপ করতে পছন্দ করে, পাপ থেকে মুক্ত হয়। আমাদের অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না যে, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যু ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধন করেছে।
যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানে না, শেষকালে তারা পাপী হিসাবে পিছনে পড়ে থাকবে, কতনা কঠোরভাবে তারা ব্যবস্থা পালন করেছিল। আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে ব্যবস্থা শুধু আমাদের পালন করার জন্যই দেওয়া হয় নাই। ব্যবস্থানুসারীরা বোঝে না যে, বাপ্তিস্মের মধ্যেই পাপ মোচন সুপ্ত আছে, যা যীশু তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে গ্রহণ করেছিলেন। এর ফলে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে ভুল বোঝে ভাবে যে, এটা শুধু তাদের পালন করার জন্য দেওয়া হয়েছে এবং তারা সন্দেহের মধ্যে বাস করতে থাকে। কিন্তু আমরা অবশ্যই ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের পাপ চিনতে পারি এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা আমরা বাঁচতে পারি। আমরা অবশ্যই আমাদের নিজেদের ধার্মিকতার বিরুদ্ধাচারণ করে ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতার বিপক্ষে যাওয়া উচিত নয়। তবে আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করতে হবে, যা যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে পরিপূর্ণতা পেয়েছে। অন্য কথায় আমাদের প্রয়োজন ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে শেখা, যিনি ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধন করেছেন।
এজন্য প্রেরিত পৌল তার নিজের মাংসের দিকে চেয়ে চিৎকার করে বলেছেন, “হায় দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি”, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন, প্রেরিত পৌলের স্বীকারোক্তির কারণ হল, যতই সে পাপ করছে তার চেয়ে বেশী যীশু তার বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধন করেছেন, তার চেয়ে বেশী আমাদেরও আনন্দ এবং বিজয়ের ধ্বনি করা উচিত। কারণ আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছি, যদিও আমরা মাংসের ব্যবস্থা এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতার মাঝে কঠিন জীবন যাপন করছি। প্রেরিত পৌলের যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস ছিল। এভাবে প্রেরিত পৌল তার বিশ্বাসে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় বাস করতেন এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা তিনি তাঁর প্রশংসা করতেন।
রোমীয় ৭ অধ্যায়ে প্রেরিত পৌল তাঁর অতীতের দুর্ভাগ্যের বিষয় এবং পরবর্তীতে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার বিষয় সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করেছেন। প্রেরিত পৌলের বিশ্বাসের বিজয়ের কারণ ছিল ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস।
“অথবা হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা কি জান না-কারণ যাহারা ব্যবস্থা জানে, আমি তাহাদিগকেই বলিতেছি, -মনুষ্য যতকাল জীবিত থাকে, তত কাল পর্যন্ত ব্যবস্থা তাহার উপরে কর্ত্তৃত্ব করে?”(রোমীয়৭:১)।
২৪এবং ২৫ পদে ৭ অধ্যায়ের নিগুঢ়তত্ত্ব পাওয়া যায়। প্রেরিত পৌল লিখেছেন, “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপন মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করি”।
রোমীয় ৬ অধ্যায়ে প্রেরিত পৌল বিশ্বাস সম্পর্কে বলেছেন, যা আমাদেরকে খ্রীষ্টের সহিত একত্রে সমাধিস্থ পুনরুজ্জীবিত হতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর দ্বারা আমাদের একত্রীকরণের মাধ্যমে আমরা এই বিশ্বাস অর্জন করতে পারি।
প্রেরিত পৌল উপলব্দি করেছিলেন যে, তিনি একজন হতভাগ্য মানুষ, যার মাংস এত দূর্বল ছিল যে, যীশুকে পাওয়ার আগে তিনি শুধু ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতেন এমন নয়, কিন্তু যীশুর সম্মুখে আসার পরেও তিনি ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতে লাগলেন। তিনি এভাবে আর্তনাদ করতেন,“এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” পরিশেষে তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা তিনি মৃত্যুর দেহ হইতে নিস্তার পেতে পারেন। বলা হয়েছে “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা এবং তার সঙ্গে একীভূত হয়ে মাংসিক এবং মানষিক পাপ হতে মুক্ত হয়েছিলেন।
পৌলের চুড়ান্ত স্বীকারোক্তি ছিল, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপন মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করি” (রোমীয় ৭:২৫)। এবং ৮অধ্যায়ের শুরুতে, তিনি স্বীকার করেছিলেন, “অতএব এখন, যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই। কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে জীবনের আত্মার যে ব্যবস্থা, তাহা আমাকে পাপের ও মৃত্যুর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত করিয়াছে”(রোমীয় ৮:১-২)।
মূলতঃ ঈশ্বর-দেয় দুটি ব্যবস্থা হল; পাপ এবং মৃত্যুর ব্যবস্থা এবং জীবনের আত্মার ব্যবস্থা। জীবনের আত্মার ব্যবস্থা পৌলকে পাপ এবং মৃত্যুর ব্যবস্থা হতে রক্ষা করেছিল। এর অর্থ যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং তাঁর মৃত্যুতে বিশ্বাস, যা তার সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছিল, তিনি নিজে যীশুর সাথে যুক্ত হয়েছিলেন এবং তার সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। আমাদের সকলেরই এই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, প্রভুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুতে আমরা সবাই এক।
রোমীয় ৭ অধ্যায়ে পৌলি স্বীকার করেছেন যে, তিনি পূর্বে থেকেই ব্যবস্থার অধীনে থেকে পাপ করতেন, কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তিনি সেই শাস্তিযোগ্য পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এড়ন্যই তিনি পবিত্র আত্মার মাধ্যমে ঈশ্বরের সেবা করতেন, যারা তার ভিতরে বর্তমান ছিলেন।
যে সত্য পৌল অনুধাবন করেছিলেন
প্রেরিত পৌল স্বীকার করেছেন, “তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দূরে থাকুক; বরং পাপ কি তাহা আমি জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা “লোভ করিও না”এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না”(রোমীয় ৭:৭)। ব্যবস্থা যদি না বলিত “লোভ করিও না”তাহলে লোভ কি, তাহা তিনি জানিতেন না। পৌল ব্যবস্থা এবং পাপের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করেছেন, বলেছেন, “কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সম্পন্ন করিল।” এর অর্থ হল, মানুষের হৃদয় মূলতঃ পাপে পূর্ণ। মাতৃ জঠরে জন্ম মুহূর্ত থেকে মানুষ পাপী, আর জন্ম গ্রহণ করে বার রকমের পাপ নিয়ে।
এই বার রকমের পাপগুলি হল, বেশ্যাগমন, চৌর্য্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোঐ, দুষ্টতা, ছল, কপটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান, ও মূর্খতা। প্রত্যেকে মরণ পর্যন্ত এই পাপগুলি করে। কিভাবে একজন এই পৃথিবীতে বার রকমের পাপ নিয়ে জন্মগ্রহন করে ঈশ্বরের ব্যবস্থা ও আজ্ঞা পালন করতে পারে? যে মুহূর্ত থেকে ব্যবস্থা বলে এবং আমরা শুনি যে, কি আমাদের করণীয় এবং করণীয় নয়, সেই মুহূর্ত থেকে পাপ আমাদের মধ্যে কাজ আরম্ভ করে।
যখন আমরা ব্যবস্থা এবং ঈশ্বরের আজ্ঞা জানতাম না, তখন পাপ আমাদের ভিতরে সুপ্ত অবস্থায় ছিল। কিন্তু যখন আজ্ঞা শুনতে পেলাম যে, কি করণীয় এবং কি করনীয় নয়, তখন এই পাপগুলি বেরিয়ে আসল এবং আমাদেরকে আরো পাপী সাব্যস্ত করল।
নূতন জন্ম না হলে, জল ও আত্মার সত্যে বিশ্বাস না করলে এবং না বুঝতে পারলে তার মধ্যে পাপ রয়ে যায়। এই পাপ আজ্ঞার দ্বারা সক্রিয় হয়ে আরো অধিক পাপ উৎপন্ন করে। ব্যবস্থা, যা একজন প্রশিক্ষকের ন্যায় লোকদের বলে, কোনটা করণীয় এবং কোনটা করণীয় নয়, যা আরো পাপ পুষে রাখার চেষ্টা করে। যাহোক, পাপ ঈশ্বরের আজ্ঞার বিরোধীতা এবং অমান্য করে। যখন একজন পাপ আজ্ঞা শুনতে পাপ, তখন তার (নারী/পুরুষ) অন্তরের পাপগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তাকে (নারী/পুরুষ) অধিক পাপ করায়।
দশ আজ্ঞার মধ্য দিয়ে আমরা অনুধাবন করতে পারি যে, আমাদের ভিতরে পাপ রয়েছে। ব্যবস্থার কাজ হচ্ছে, আমাদের হৃদয়ের ভিতরের পাপ প্রকাশ করা, আমাদের বুঝানো যে, ঈশ্বরের আজ্ঞা পবিত্র এবং আমাদের পাপাচরণ থেকে আমাদের সজাগ করে। আমাদের মৌলিকত্ব হল, আমরা লোভ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে ঈশ্বরের সৃষ্টির সমস্ত কিছুর উপরে লোভ করি। সেই সাথে সম্পদ বা অংশীদারিত্বেও, যা আমাদের নিজস্ব নয়। সুতরাং আজ্ঞা বলছে, “লোভ করিও না” আরো বলছে, আমরা পাপী হয়ে জন্মেছিলাম এবং জন্মলগ্ন থেকে আমাদের গন্তব্য হচ্ছে নরকে যাওয়া। ইহা আরো আমাদেরকে ত্রাণকর্তা, যিনি ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধন করেছেন, তাকে অনুরোধ করতে দেখিয়ে দেয়।
এই জন্যই পৌল স্বীকার করেছেন যে, পাপ আজ্ঞার দ্বারা সমস্ত সুযোগ হরণ করে তার দ্বারা সমস্ত মন্দ কাজ করায়। পৌল উপলব্ধি করেছিলেন যে, তিনি একজন মহাপাপী, যিনি ঈশ্বরের সুন্দর আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছিলেন, এজন্য তিনি আসলেই পাপে জন্মেছিলেন এবং ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় বিশ্বাসের পূর্বে তিনি পাপী ছিলেন।
যখন ৭ অধ্যায় আমরা দেখি, আমরা খুঁজে পাই যে, পৌল ছিলেন খুবই আত্মিক, বাইবেলের ব্যপক জ্ঞান এবং মহা আধ্যাতিক জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তি। তিনি ব্যবস্থার মাধ্যমে পরিস্কারভাবে জানতেন যে, তার ভিতরে পাপ রয়েছে, যে আজ্ঞার দ্বারা তাকে দিয়ে সর্ব প্রকার মন্দ কাজ করায়। তিনি জানতে পারলেন যে, ঈশ্বরের ব্যবস্থার কাজ হচ্ছে তার ভিতরের সমস্ত পাপ প্রকাশ করা। তিনি পাপ যেভাবে গ্রহণ করেছিলেন, তিনি স্বীকার করেন যে, ব্যবস্থা জীবন নিয়ে আসে এবং মৃত্যুতেও নিয়ে যায়।
আপনার বিশ্বাস কতটুকু? তা কি পৌলের মত? যীশুতে বিশ্বাস করেন বা না করেন আপনার হৃদয়ে কি পাপ নাই? যদি থাকে, এর অর্থ হল, আপনি এখনো ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানেন না, পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করেন নাই; এবং যে পাপীদের গন্তব্য নরক তারা অবশ্যই বিচারিত হবে। আপনি কি এই ঘটনা অবগত আছেন, যদি থাকেন, তাহলে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করুন, যার মধ্যে ঈশ্বরের ধার্মিকতা প্রকাশিত। আপনি পাপ থেকে মুক্তি পাবেন, ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করবেন এবং পবিত্র আত্মা আপনার উপরে আসবে। আমরা অবশ্যই জল আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি।
ব্যবস্থার মাধ্যমে পৌল পাপ দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন
প্রেরিত পৌল বলেন, “এবং জীবনজনক যে আজ্ঞা, তাহা আমার মৃত্যুজনক বলিয়া দেখা গেল। ফলতঃ পাপ সুযোগ পাইয়া আজ্ঞা দ্বারা আমাকে প্রবঞ্চনা করিল, ও তার দ্বারা আমাকে বধ করিল” (রোমীয় ৭:১০-১১)। ব্যবস্থার সুযোগ পাপ পৌলকে প্রতারিত করেছিল। পৌল ব্যবস্থা বিশ্বাস করতেন, যা ছিল সত্য এবং সঠিক এবং তাতে তার হৃদয়েল বার প্রকারের পাপ জাগ্রত হল এবং তাকে নষ্ট করে ফেলল। এর অর্থ হল, পৌল পাপ দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, কারণ তিনি ঈশ্বরের ব্যবস্থার উদ্দেশ্য বুঝতে পারেন নি।
প্রথমে পৌল ভেবেছিলেন যে, ঈশ্বর তাকে ব্যবস্থা দিয়েছেন শুধু পালন করা জন্য। এর পরে তিনি অনুধাবন করলেন, ব্যবস্থা শুধু পালন করার জন্য নয়, ঈশ্বরীয় পবিত্রতা দ্বারা লোকদের অন্তরের পাপ প্রকাশ করার জন্য, ঈশ্বরের দ্বারা অবিশ্বাসীদের বিচার করার জন্য। পৌল ঈশ্বরের আজ্ঞা ও ব্যবস্থা সঠিকভাবে জেনেও পাপ দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলেন, এইভাবে অধিকাংশ লোক প্রতারিত হচ্ছে।
এই সত্য আমাদের অনুধাবন করতে হবে যে, পালন করার জন্য ঈশ্বর তাঁর আজ্ঞা বা ব্যবস্থা দেননি, আমরা যেন আমাদের পাপ বুঝতে পারি এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করতে পারি, এই জন্য ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছেন। কিন্তু পাপসহ আমরা ব্যবস্থা অনুসরণ করতে চাচ্ছি বিধায় আমাদের পাপবস্থা আরো প্রকটভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
কাজেই ব্যবস্থা পবিত্র হলেও, ব্যবস্থা দ্বারা পবিত্র জীবন যাপন করার ক্ষমতা মানুষের নাই, পাপীরা এই সত্য অনুধাবন করতে পারে। সেই মুহূর্তে সে বুঝতে পারে, ব্যবস্থার মাধ্যমে তার নরকে যাওয়া ছাড়া উপায় নাই। কিন্তু পাপীরা যারা জল আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না, মনে করে যে, ঈশ্বর তাদের পালনার্থে ব্যবস্থা দিয়েছেন। তারা ব্যবস্থা পালন করার চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারিত করে এবং শেষে ধংসে পতিত হয়।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা অগ্রাহ্য করে যাদের নূতন জন্ম হয় না, তখন তারা অনুতাপের দ্বারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। পরিশেষে, যাহোক, তারা অনুধাবন করে যে, তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থার উদ্দেশ্যকে ভুল বুঝেছিল এবং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতারণা করে, পাপ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদেরকে প্রতারিত করে। ঈশ্বরের ব্যবস্থা পবিত্র কিন্তু তাদের ভিতরকার পাপ তাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়।
প্রেরিত পৌল বলেন, “অতএব ব্যবস্থা পবিত্র, এবং আজ্ঞা পবিত্র, ন্যায্য ও উত্তম। তবে যাহা উত্তম, তাহাই কি আমার মৃত্যুস্বরূপ হইল? তাহা দূরে থাকুক।”(রোমীয় ৭:১২-১৩)। যারা এই সত্যে বিশ্বাসপূর্বক ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় তাদের প্রয়োজন অনুভব করে এবং অতঃপর বিশ্বাস করে যে জল এবং আত্মাই প্রকৃত সত্য। একজন ব্যক্তি যে জল ও আত্মার সত্যে বিশ্বাসী, সে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসী। আসুন, আমারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে তাঁর পবিত্রতায় পৌঁছে আমরা আমাদের সমস্ত পাপ হইতে মুক্ত হই। আমি চাই আপনারা সকলে তাঁর সুসমাচার দ্বারা আশীর্বাদযুক্ত হোন।
পৌলের দেহ এবং মন কেমন ছিল?
পৌল আত্মায় পূর্ণ ছিলেন এবং ঈশ্বরের বাক্য গভীরভাবে বুঝতেন। যাহোক, নিচের বাক্যে তিনি তার মাংসের কথা বলেছেনঃ “কারণ আমরা জানি, ব্যবস্থা আত্মিক, কিন্তু আমি মাংসময়, পাপের অধীনে বিক্রীত। কারণ আমি যাহা সাধন করি, তাহা জানি না; কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি তাহাই যে কাজে করি, এমন নয়, বরং যাহা ঘৃনা করি, তাহাই করি। কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি না, তাহাই যখন করি, তখন ব্যবস্থা যে উত্তম তাহা স্বীকার করি। এইরূপ হওয়াতে সেই কাৰ্য্য আর আমি সাধন করি না, আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে।”(রোমীয় ৭:১৪-১৭)। তিনি বলেছেন যে, তিনি পাপ করতেন, কারণ তিনি রক্ত মাংসের তৈরী। যেহেতু তিনি রক্ত মাংসের ছিলেন, তিনি নিজে নিজেই দেখতেন তিনি মাংসের ইচ্ছায় চলছেন, তথাপি তিনি ভাল কিছু করতে চাইতেন।
এভাবে পৌল উপলব্ধি করেন, এমনকি পৌল নূতন জন্মের পরেও যন্ত্রনার মধ্যে ছিলেন, কারণ তার মধ্যে মন্দতা ছিল, যদিও তিনি ভাল কিছু করতে চাইতেন। যখন পৌল বলেন যে, তার মধ্যে মন্দতা ছিল, তিনি সেটা তার মাংসকে দায়ী করেন। তিনি দেখলেন তার আর একটি ব্যবস্থা আত্মার ব্যবস্থার বিপক্ষে তার মাংসকে দুর্বল করছে এবং তাকে পাপ করাচ্ছে। তিনি শুধুমাত্র অনুভব করেছিলেন যে, তার নিজেস্ব কোন পছন্দ নেই, কিন্তু তাকে বিচারিত হতে হবে, যেমন তিনি দেখলেন, তার মাংস তাকে দিয়ে পাপ করাচ্ছে। কারণ পৌলও মাংসের ছিলেন, “বস্তুতঃ আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করি। কিন্তু আমার অঙ্গ প্রত্যঙ্গে অন্য এক প্রকার ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি; তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গ প্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে” (রোমীয় ৭:২২-২৩)। এই জন্য তিনি তার মাংস সম্বন্ধে বিলাপ করেছেন, ক্রন্দন করেছেন, “হায় দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি!” (রোমীয় ৭:২৪)। তার মাংস থেকে যে পাপ উৎপন্ন হয়, সেই পাপ বশতঃ বিলাপ করছিলেন।
এই জন্য পৌল তার পক্ষে ঘোষনা করেন, “হায় দূর্ভগ্য মনুষ্য আমি!” কিন্তু যীশু খ্রীষ্টকে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধনের জন্য ধন্যবাদ জানান। এর কারণ ছিল যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে এসেছিলেন, বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং সমগ্র মানব জাতির পাপের ক্ষমার জন্য ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন। তিনি আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের ধন্যবাদ করতেন এ জন্যে যে, তার বিশ্বাস যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে তাকে তাঁর সাথে যুক্ত করে।
পৌল জানতেন যে, যখন যোহন যীশুকে বাপ্তাইজিত করেন, তার তথা পৃথিবীর সমস্ত পাপ তখন এবং চিরদিনের জন্য যীশুর মধ্যে চলে গেল। তিনি আরো জানতেন যে, যীশু যখন আমাদের জন্য ক্রুশে মরেছেন, আমরা সবাই তখন পাপে মরেছি। আমাদের অবশ্যই জল এবং আত্মার সত্যে একত্রে বিশ্বাস থাকতে হবে। আপনার হৃদয় কি যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং রক্তের সাথে একীভূত? অন্য কথায় আপনার হৃদয় কি জল ও আত্মার সুসমাচারের সাথে একীভূত, যা ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে পূর্ণ করে। আমাদের অবশ্যই এই বিশ্বাসের সাথে যুক্ত থাকতে হবে যে, বাপ্তিস্ম যা আমাদের প্রভু যোহন কর্তৃক নিয়েছিলেন এবং রক্ত যা তিনি ক্রুশে ঝরিয়েছিলেন। আমাদের বিশ্বাসে যুক্ত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জল আত্মার সুসমাচারের সঙ্গে যুক্ত হওয়াই ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হওয়া।
রোমীয় ৬:৩পদে বলা হয়েছে, “অথবা তোমরা কি জান না যে, আমরা যত লোক খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাঙাইজিত হইয়াছি, সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি?” অর্থ হল, যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাসের দ্বারা আমরাও তাঁর সহিত বাপ্তাইজিত হয়েছি, মানে আমরা আমাদের প্রভুর মৃত্যুতে তাঁর সাথে একীভূত হয়েছি। আর তা হল, বিশ্বাসে যুক্ত হয়ে বাপ্তাইজিত হয়ে আমরা আত্মিকভাবে তাঁর মৃত্যুতে বাপ্তাইজিত হয়েছি। প্রভুর সাথে যুক্ত হওয়াই হল তাঁর বাপ্তিস্মে যুক্ত হওয়া এবং মৃত্যুতে তাঁর মৃত্যুর সহিত একীভূত হই।
আমাদের অবশ্যই বাপ্তিস্ম এবং যীশুর মৃত্যুতে বিশ্বাস এবং একীভূত হতে হবে, যা ঈশ্বরের ধার্মিকতার পূর্ণতা সাধন করেছে। আপনি যদি এখনো জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস না করে থাকেন, যা ঈশ্বরের ধার্মিকতা ধারন করে, তাহলে আপনি যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তার মৃত্যুর সহিত একীভূত নন। আর এটাই সুসমাচার যা, ঈশ্বরের ধার্মিকতা প্রকাশ করেছে।
আমাদের হৃদয় যদি যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর সাথে যুক্ত না হয়, আমাদের বিশ্বাস আসলে আক্ষরিক এবং মূল্যহীন। আপনি নিজেই যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্তের সাথে যুক্ত হোন এবং সেগুলোকে বিশ্বাস করুন। আমরা তা কিভাবে বিশ্বাস কবর, বিদ্যাগত বিশ্বাস মূল্যহীন? উদাহরণ স্বরূপ একটি সুন্দর ঘরের ভালটা কি, যদি সেটা আপনার না হয়? আমাদিগতে ঈশ্বরীয় ধার্মিকতা তৈরী করতে, আমাদের অবশ্যই জানতে হবে, যীশু জলে বাপ্তিস্ম নিয়ে আমাদের সব পাপ ধুয়ে দিয়েছেন এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর আমাদের মাংসিক মৃত্যুর উদ্দেশ্য। আমাদের বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে প্রভুর দ্বারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণ হয়েছে। আমাদের অবশ্যই একদিন প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে এবং সবারই জীবনের নূতনতায় চলতে হবে।
এভাবে আপনি বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুতে একীভূত হলে ঈশ্বরের ধার্মিকতা সত্যিকারভাবে আপনার উপরে আসবে। আমাদের অবশ্যই যীশুর মৃত্যু এবং ব্যাপ্তিস্মে একীভূত হতে হবে, যদি না হই, আমাদের বিশ্বাস অনর্থক।
“ দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” (রোমীয় ৭:২৪) এটা শুধু মাত্র পৌলের অনুতাপ নয়, কিন্তু তা আপনার এবং আমারও অনুতাপ, তাদের মত যারা খ্রীষ্ট থেকে এখনো পৃথক। তিনি যীশু যিনি ধংসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করেন এবং এর সমাধান হতে পারে শুধুমাত্র প্রভুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে, যিনি আমাদের জন্য বাপ্তাইজিত, ক্রুশে বিদ্ধ এবং পুনরুত্থিত হয়েছেন।
পৌল বলেন, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” এখানে দেখা যাচ্ছে, পৌল নিজে প্রভুর সঙ্গে একীভূত। আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে, যদি আমরা একীভূত হই এবং বিশ্বাস করি যে, প্রভু তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন, আমরা ক্ষমা পাব এবং অনন্ত জীবন লাভ করব। একীভূত হৃদয় দিয়ে যদি আমরা যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়ে যায়। তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাসের সাথে যুক্ত হয়ে আপনি তাঁর সাথে মরবেন এবং জীবিত হবেন।
যীশু ত্রিশ বছর বয়সে এই পৃথিবীতে তাঁর কাজ আরম্ভ করেন। সর্বপ্রথম কাজ হল, তিনি যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে আমাদের পাপ মোচনের কাজ শুরু করেন। কেন তিনি বাপ্তাইজিত হলেন? এটা তাঁর জন্য ছিল মানব জাতির সমস্ত পাপ বহন করা। যখন আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় আমাদের হৃদয় একীভূত করি, যীশুর দ্বারা চালিত হই, যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সত্যিকার ভাবেই আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়। আমাদের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পিত হলো, আর তৎক্ষণাৎ এবং চিরদিনের জন্য ধুয়ে গেল।
আমাদের প্রভু সত্যিকারভাবে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ বহন করতে তিনি বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং পাপের মূল্য পরিশোধ করতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। বাপ্তিস্মের পূর্বে যীশু যোহনকে বলেছিলেন, “কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত”(মথি ৩:১৫)। বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা “সমস্ত ধার্মিকতা”যীশুতে সাধিত হয়েছিল, যা মানব জাতির সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছিল, যাদের গন্তব্য ছিল নরক, এবং তিনি মৃত্যু এবং পুনরুত্থানও গ্রহণ করেছিলেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতা কি? পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যু, যা সমস্ত পাপীকে রক্ষ করে - এটাই ঈশ্বরের ধার্মিকতা। মানুষের বেশে যীশুর এ পৃথিবীতে আসা এবং বাপ্তিস্ম গ্রহণের কারণ ছিল, মানব জাতির সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া এবং ধুয়ে দেওয়া।
কেন যোহন যীশুকে বাপ্তাইজিত করলেন? মানব জাতির সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার মাধ্যমে যেন ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণ করতে পারেন, এই জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। আমরা যারা খ্রীষ্ট যীশুতে বাপ্তাইজিত হয়েছি, তারা তাঁর মৃত্যুতেও বাপ্তাইজিত হয়েছি এবং এখন জীবনের নূতনতায় চলছি; এ জন্যেই তিনি পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করা হচ্ছে; যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশীয় মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের সহিত আমাদের একীভূত হওয়া। এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যীশু আমাদেরসমস্ত পাপ নিজেই তুলে নিয়েছিলেন, যখন তিনি বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তিনি যখন ক্রুশে মরেছেন, আমরাও তাঁর সাথে সমাধিস্থ হয়েছি, কারণ, তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমরা তাঁর সাথে একীভূত। হৃদয়ে প্রভুর সাথে একীভূত হয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতা বিশ্বাস করা আমাদের পক্ষে ক্রুশ তুল্য, এমনকি তা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পরেও। ঈশ্বরের ধন্যবাদ দিতে পারি, কারণ আমরা সবাই খ্রীষ্টের সাঙ্গে মরেছি, যখন তিনি ক্রুশে মরিলেন, এই জন্য তিনি বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা ধারণ কআেমাদের পাপ মোচনের মাধ্যমে বিশ্বাস দ্বারা যীশুর সাথে একীভূত হওয়া প্রয়োজন। পাপ মোচনের অনুগ্রহদান গ্রহণ করার পরে। আমাদের বিশ্বাস হ্রাস পেতে পেতে এক সময় সেটা শুধু আনুষ্ঠানিকতায় পরিনত হয়। কিন্তু আমরা যদি আমাদের হৃদয়কে প্রভুর ধার্মিকতার সাথে একীভূত করি, তাহলে আমাদের হৃদয়ে ঈশ্বর বাস করবেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় আমরা যদি একীভত হই, তাহলে আমরা তাঁর সঙ্গে বাস করব, যদি তা না করি, তাহলে তাঁর সাহায্য তো পাবই না বরং তার কাছে আমরা মূল্যহীন হব। আমরা যদি প্রভু ঈশ্বরের সাথে একীভূত না হই এবং শুধু মাত্র দর্শকের ভুমিকা পালন করি, যেরূপে আমরা আমাদের প্রতিবেশীর বাগানের প্রশংসা করি, তাহলে আমরা ঈশ্বর থেকে পৃথক হওয়ার মাধ্যমে তাঁর কাছে থেকে ধীরে ধীরে অবান্তর হয়ে যাব। অতএব আমাদের অবশ্যই প্রভুর বাক্যে এবং বিশ্বাসে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় একীভূত হতে হবে।
যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে আমরা যদি বিশ্বাসে একীভূত হই, তাহলে আমরা খ্রীষ্টিয়ান যারা প্রভুতে একীভূত
ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করা হচ্ছে, প্রভুর সাথে একীভূত হওয়া এবং বিশ্বাসে তাঁর ধার্মিকতা স্বীকার করা। আমাদের জীবনের প্রতিটি দৃষ্টিভঙ্গি ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হওয়া উচিত। এই ভাবেই আমাদের বাঁচা উচিত। আমরা যদি তাঁর ধার্মিকতার সাথে যুক্ত না হই, তাহলে আমরা ধীরে ধীরে মাংসের দাস হয়ে যাব এবং মারা পড়ব, কিন্তু এই মুহূর্তে আমরা নিজেরা ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হই, আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। শুধু মাত্র যখন আমরা আমাদের হৃদয় ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে একীভূত করি তখন আমরা তাঁর দাসে পরিণত হই। ঈশ্বরের সমস্ত যজ্ঞ কাজ তখন আমাদের উপরে যথাযথ হবে তাঁর কাজ এবং ক্ষমতা ধীরে ধীরে আমাদের অধিকারে আসবে। যাহোক, আমরা যদি তাঁর সাথে একীভূত না হই, আমরা তাঁর ধার্মিকতার কাছে মূল্যহীন হয়ে যাব।
আমরা মাংসিকভাবে রুগ্ন এবং দূর্বল, ঠিক পৌল যেমনটি ছিলেন, সুতরাং অবশ্যই আমাদের হৃদয়কে ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত করতে হবে। আমাদের অবশ্যই এই বিশ্বাসে একীভূত হতে হবে যে, যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করতে ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন। এটা এক ধরনের বিশ্বাস, যাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন এবং আমাদের দেহ ও আত্মায় আশীর্বাদ আনয়ন করে। হৃদয়ে বিশ্বাসযুক্ত হয়ে আমরা যদি ঈশ্বরের প্রচেষ্টায় বিশ্বাস করি, তার প্রতিজ্ঞাত সমস্ত আশীর্বাদও স্বর্গ থেকে আমাদের উপরে বর্ষিত হবে। এ কারণেই আমাদের অবশ্যই তাঁর সাথে একীভূত হতে হবে।
অন্য কথায় আমরা যদি ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে আমাদের হৃদয় একীভূত না করি, তাহলে আমরা তাঁর সেবা করছি না। ঐ সমস্ত খ্রীষ্টিয়ানরা, যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় তাদের হৃদয় একীভূত করে না, অন্য সব কিছু থেকে পার্থিব বিষয়কে ভালবাসে। জগতের অবিশ্বাসীদের সাথে তাদের কোন পার্থক্য নেই। শুধুমাত্র তখনই তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা অনুধাবন করতে পারবে, যখন তাদের পার্থিব ধন যা তারা প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসে, তা তাদের নিকট থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। বস্তুর কোন মূল্য বা শক্তি নেই যা জীবনকে পরিচালিত করতে পারে। একমাত্র প্রভুর ধার্মিকতাই আমাদের পাপ ক্ষমা করতে, অনন্ত জীবন এবং আশীর্বাদ দান করতে পারে। আমাদের অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে, যদি ঈশ্বরের ধার্মিকতায় আমরা একীভূত হই, যেমনি আমরা আমাদের প্রতিবেশীর প্রতি, তাহলে আমরা বাঁচতে পারব।
আমাদের হৃদয়কে অবশ্য প্রভুর ধার্মিকতার সাথে একীভূত করতে হবে। আমাদের অবশ্যই বিশ্বাসে বাঁচতে হবে এবং খ্রীষ্টে সাথে আমাদের হৃদয়কে একীভূত করতে হবে। খ্রীষ্টের ধার্মিকতার সাথে যে বিশ্বাস যুক্ত তা সুন্দর। ৭ অধ্যায়ে পৌল চূড়ান্তভাবে যা বলেছেন তা হল প্রভুর সাথে একীভূত হয়ে আমাদের আধ্যাত্মিক জীবন যাপন করতে হবে।
আপনি কি কখনো এমন কাউকে দেখেছেন যিনি, ঈশ্বরের ধার্মিকতার দ্বারা তাঁর হৃদয় একীভূত না করে তাঁর দাস হয়েছে? এমন কেউই নেই। আপনি কি এমন কাউকে দেখেছেন যিনি, জল ও আত্মার সুসমাচার স্বীকার করেন এবং এবং ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় যুক্ত হওয়া ছাড়াই পাপ ক্ষমার প্রয়োজন মনে করে? এমন কেউই নেই। আমরা বাইবেল সম্পর্কে কতটুকু জানি, আমরা যদি ঈশ্বরের ধার্মিকাতায় যুক্ত না হই, আমাদের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায় এবং যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস দ্বারা আমরা আমাদের সমস্ত পাপ পরিত্যাগ করতে পারি।
এমন কি যদি কখনো আমরা পাপের ক্ষমা পাই এবং মন্ডলীতে যাই, যদি আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত না হই, আমরা পাপী, যাদের ঈশ্বরের পরিকল্পনায় কোন অধিকার নেই। যদিও আমরা বলি যে, আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, আমরা ঈশ্বর থেকে পৃথক হয়ে যাব, যদি তাঁর ধার্মিকতায় যুক্ত না হই। যদি আমরা সান্তনা, সাহায্য এবং খ্রীষ্টের দ্বারা পরিচালিত হতে চাই, আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হতে হবে।
আপনি কি জল ও আত্মায় বিশ্বাসের মাধ্যমে আপনার সমস্ত পাপের ক্ষমা এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতা গ্রহণ করেছেন? আপনি কি পৌলের মত ব্যবস্থা পালন করেন? আমাদের সব সময় ঈশ্বরের ধার্মিকতায় যুক্ত থাকতে হবে। আমরা নিজেরা যদি ঈশ্বরের ধার্মিকাতায় যুক্ত না থাকি, তাহলে কি ঘটনা ঘটবে? আমরা ধংস হয়ে যাব। কিন্তু যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত, তাদের জীবন ঈশ্বরের মন্ডলীর দ্বারা পরিচালিত হবে।
ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করার অর্থ হল, ঈশ্বরের মন্ডলীতে যুক্ত হওয়া ও তাঁর দাস হওয়া। আমরা অবিরত বিশ্বাসে বাঁচতে পারি শুধুমাত্র প্রতিদিন ঈশ্বরের ধার্মিকতায় যুক্ত হলে। যারা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে তাদের পাপের ক্ষমা পেয়েছে, তারা অবশ্যই প্রতিদিন ঈশ্বরের মন্ডলীর সাথে একীভূত হয়। যেহেতু মাংস সর্বদা পাপের ব্যবস্থা পালন করতে চায়, অবশ্যই আমাদের ঈশ্বরের ব্যবস্থা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে এবং বিশ্বাসের দ্বারা বাঁচতে হবে। আমরা প্রভুর সাথে যুক্ত হতে পারি, যদি ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি এবং তা আলোচনা করি।
আমরা যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি, তাদের প্রতিদিনই ঈশ্বরের দাসত্ব এবং মন্ডলীর সাথে যুক্ত হওয়া উচিত। এভাবে চলতে আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে স্মরণ করতে হবে। আমাদের প্রতিদিন ঈশ্বরের মন্ডলীর সাথে একীভূত হতে হবে এবং মন্ডলীর জন্য চিন্তার করতে হবে। আমাদের অবশ্যই এই ঘটনা বিশ্লেষণ করতে হবে যে, প্রভু আমাদের পরিবর্তে আমাদের পাপ বহন করার জন্য বাপ্তাইজিত হয়েছেন। যখন আমরা এই বিশ্বাসে এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় যুক্ত হই, আমরা ঈশ্বর থেকে শান্তি পাই এবং আপনিও নূতনত্ব, আশীর্বাদ এবং তাঁর দ্বারা ক্ষমতা লাভ করবেন।
আপনি ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হোন, তাহলে আপনি নূতন শক্তি খুঁজে পাবেন। এখনই ঈশ্বরীয় ধার্মিকতায় যীশুর বাপ্তিস্মে একীভূত হোন। আপনার সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া হবে। খ্রীষ্টের ক্রুশীয় মৃত্যুতে আপনার হৃদয় একীভূত করুন। আপনিও তাঁর সহিত মৃত্যুবরণ করুন। তাঁর পুনরুত্থানের সহিত একীভূত হোন। আপনিও আবার জীবিত হবেন। ক্রমান্বয়ে আপনি যখন আপনার হৃদয় দিয়ে খ্রীষ্টের সহিত একীভূত হবেন, আপনি মরবেন এবং খ্রীষ্টের সহিত পুনরুত্থিত হবেন, এভাবে ধীরে ধীরে আপনার সমস্ত পাপ পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
আপনি যদি খ্রীষ্টের সাথে যুক্ত না হতেন, তাহলে কি ঘটত? আমরা বিভ্রান্ত হই, আমরা হয়তো জিজ্ঞাসা করি, “যীশু কেন বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন?” পুরাতন এবং নূতন নিয়মের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য হল এই যে, পুরাতন নিয়মে “হস্তার্পণ” এর কথা বলা হয়েছে, নূতন নিয়মে বাপ্তিস্মের কথা বলা হয়েছে। তাহলে? বড় বিষয়টি কি? মানবীয় বুদ্ধি ভিত্তিক বা ধর্মতত্ত্ব ভিত্তিক বিশ্বাস প্রকৃত বিশ্বাস নয়, তা বিশ্বাসীদেরকে ক্রমান্বয়ে ঈশ্বর থেকে দুরে সরিয়ে নেয়।
যারা এরূপ রীতিতে বিশ্বাস করে তারা এমন ছাত্রের ন্যায়, যে সর্বদা তার শিক্ষকের নিকট থেকে শুধু জ্ঞান গ্রহণ করে। যদি ছাত্রটি সত্যিকারভাবে তার শিক্ষকে সম্মান করে থাকে, তবে সে তার মহৎ চরিত্র, নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা গ্রহন করা উচিত নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ব্যক্তিত্ব, দয়া, ভালবাসা এবং শাসন আমাদের হৃদয় দিয়ে গ্রহণ করা উচিত। আমরা যেন তাঁর বাক্য থেকে শুধু জ্ঞানার্জনের চেষ্ট না করি, কিন্তু যেন তাঁর ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হই। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় একত্রীকরণ বিশ্বাসীদেরকে সত্য জীবন জয় করতে প্রেরণা দেয়। ঈশ্বরের সাথে যুক্ত হোন। একীভূত বিশ্বাসই সত্য বিশ্বাস আক্ষরিক জ্ঞানলব্ধ বিশ্বাস একীভূত বিশ্বাস নয়, তা ভাসমান বিশ্বাস।
“ঈশ্বরের অনুগ্রহ”গানে যেমন গাওয়া হয়েছে, “স্বর্গীয় সাগর একটি সীমাহীন এবং গভীর জলোচ্ছাস”। যখন আমাদের হৃদয় ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হয়, সেখানে ঈশ্বর প্রদত্ত দয়া সীমাহীন এবং গভীর প্রশান্তি বয়ে আনে। কিন্তু আক্ষরিক জ্ঞানের বিশ্বাস ঈশ্বরের সাথে যুক্ত নয় যা টলটলায়মান পানির মত। যখন সাগর কানায় কানায় পূর্ণ, সেখানে সহজে ফেনা তৈরী হয়, কিন্তু যেখানে নীল ঢেউএবং সাগর খুব গভীর তা বর্ণনাতীত। কিন্তু পরিপূর্ণ জল, যেখানে ঢেউ তীরে এসে আছড়ে পড়ে, সেখানে ফেনা হয় এবং তালগোল পাকাইয়া একাকার হয়ে যায়। যাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত, যারা প্রভুর বাক্যে একীভূত তারা সাগরের শান্ত ঢেউয়ের মত।
তাদের হৃদয় ঈশ্বর কেন্দ্রিক, দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং সর্ববস্থায় অটল। তাদের হৃদয় উচ্চাশার দিকে ধাবিত হয়, কিন্তু যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত নয় তারা অল্প সমস্যায় কাতর হয়।
আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আমরা প্রভুর সাথে সংযুক্ত। আমাদের অবশ্যই প্রভুর বাক্যের সাথে যুক্ত হতে হবে। আমাদের অবশ্যই তুচ্ছ ঘটনায় দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া উচিত নয়। যারা প্রভুর সাথে যুক্ত তারা খ্রীষ্টের সহিত বাপ্তাইজিত হয়, মৃত্যুবরণ করে এবং আবার খ্রীষ্টের সহিত মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়। কারণ আমরা বেশী দিন পৃথিবীতে থাকব না। আমাদের অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে যুক্ত হতে হবে তার প্রশংসা করার জন্য। যিনি আমাদেরকে তাঁর ধার্মিকতার দাস হিসাবে গ্রহণ করেছেন।
যদি আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতার সহিত যুক্ত হই, আমরা সুখে- শক্তিতে এবং শক্তিতে পূর্ণ হব। কারণ ঈশ্বরের শক্তি ধীরে ধীরে আমরা পেয়ে যাব। তাঁর শক্তি এবং আশীর্বাদ আমদেরকে গঠন করে এবং আমরা মহা আশীর্বাদে বাস করি। যদি আমরা বিশ্বাসের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর সাথে যুক্ত হই, তার ক্ষমতা ধীরে ধীরে আমরা লাভ করব।
আপনার হৃদয় প্রভুর সাথে যুক্ত করুন। যদি আপনি প্রভুর সাথে যুক্ত হন, তাহলে আপনি প্রভুর মন্ডলীর সাথেও যুক্ত হবেন। যারা প্রভুর সাথে যুক্ত হয়, তারা তাঁর সহভাগীতায় একে অপরের সাথে যুক্ত হয়, ঈশ্বরের বাক্যে এবং তাঁর কাজে তারা বিশ্বাসে বেড়ে ওঠে।
যাহোক, আমরা যদি খ্রীষ্টের সাথে আমাদের হৃদয় যুক্ত না করি, তাহলে আমরা সব কিছু হারিয়ে ফেলব। যদি আমাদের সরিষা দানার মত বিশ্বাস হয়, তাহলে প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেবেন। আমাদের দূর্বলতা সত্ত্বেও প্রতিদিন প্রভুর সাথে যুক্ত হওয়া উচিত। একমাত্র একীভূত সত্যই আপনাকে বাঁচাবে এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রশংসা হবে।
প্রভুর ধার্মিকতার সাথে এক হয়ে আমরা আরো শক্তি প্রাপ্ত হই এবং আমাদের বিশ্বাস আরো দৃঢ় হয়। ঈশ্বরের বাক্যের সাথে যুক্ত হলে আমাদের হৃদয় সত্যে পূর্ণ হয়। নিজের চিন্তাভাবনা থেকে প্রভুর পক্ষে দৃঢ় হওয়া অসম্ভব। যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশ ও পুনরুত্থানের সাথে এক হলে শাস্ত্রের ভিত্তিতে আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং দৃঢ় হয়।
প্রভুর সাথে অবশ্যই আমাদের হৃদয়কে এক করতে হবে। তাঁর সাথে একীভূত বিশ্বাসই প্রকৃত বিশ্বাস, যে বিশ্বাস তাঁর সাথে যুক্ত নয় তা মিথ্যা বিশ্বাস।
আমরা প্রভুর ধন্যবাদ করি এই জন্যে যে, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে আমরা আমাদের বিশ্বাসকে দৃঢ় করতে পারছি। আজ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত অর্থাৎ প্রভুর আগমন দিন পর্যন্ত প্রভুর সাথে আমাদের হৃদয়কে অবশ্যই যুক্ত থাকতে হবে, আসুন আমরা তাঁর সাথে এক হই।
যেহেতু তাঁর সাক্ষাতে আমরা দূর্বল, এজন্যে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের হৃদয়কে এক করতে হবে। পৌলও ঈশ্বরের সাথে এক হয়ে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। তিনি ঈশ্বরের মহামূল্য সন্তান হয়েছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের যে ধার্মিকতা সাধন করেছিলেন, তিনি সেই জল ও আত্মার সুসমাচার সারা পৃথিবীতে প্রচার করেছিলেন। যেহেতু আমরা দুর্বল, ঈশ্বরের ব্যবস্থা হৃদয় দিয়ে এবং পাপের ব্যবস্থা আমরা মাংসের দ্বারা পালন করি, সেই জন্যে কেবলমাত্র প্রভুর সঙ্গে এক হয়ে বাঁচতে চাই।
যীশুর ধার্মিকতার সাথে যুক্ত বিশ্বাস সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন কি? যীশুর বাপ্তিম্মের সাথে আপনার বিশ্বাস কি এক? যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সাথে আপনার বিশ্বাসকে এক করার এলনই প্রকৃত সময়। যাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের ধার্মিকতার সাথে এক নয়, পবিত্রাণ বা অনন্ত জীবন সম্পর্কে তাদের জীবন ব্যর্থ।
কাজেই, পাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রভুর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করা অপরিহার্য। প্রভুর সাথে এক হলে আমরা পাপ ক্ষমার আশীর্বাদ লাভ করতে পারি এবং ঈশ্বরের সন্তান হতে পারি। তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে এবং নিজেকে তাঁর সাথে এক করে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করুন। তাহলে ঈশ্বরের ধার্মিকতা আপনার হবে এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদ সব সময় আপনার সহবৰ্ত্তী থাকবে।
যীশু খ্রীষ্টের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিন!
প্রেরিত পৌল বলেন যে, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তিনি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করেন। যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করার জন্য তিনি তাঁকে ধন্যবাদ জানান। ঈশ্বরের ধার্মিকতা লাভ করার পরেও প্রেরিত পৌল আত্মায় ঈশ্বরের ব্যবস্থা এবং মাংসে পাপের ব্যবস্থা দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু যখন থেকে তিনি সমস্ত হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতা বিশ্বাস করেছেন, তখন থেকে তার কোন পাপ ছিল না।
পৌল স্বীকার করেন যে, যীশু খ্রীষ্টের ব্যবস্থায় তিনি দোষী ছিলেন এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে তিনি পাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। তিনি আর বলেন যে, যারা ঈশ্বরের ক্রোধ ও শান্তি পাওয়ার যোগ্য, তারাও হৃদয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ পেতে পারে। নূতন জন্মপ্রাপ্তদের হৃদয়ে পবিত্র আত্মার ইচ্ছা এবং মাংসের অভিলাষও রয়েছে। কিন্তু নূতন জন্ম যারা পায়নি, তাদের হৃদয়ে কেবল মাংসের অভিলাষ রয়েছে। কাজেই, পাপীরা কেবল পাপই করতে থাকে, নিজেদের সৌন্দর্যকে অন্যের দৃষ্টিতে আরো সুন্দর করে তোলার জন্য তারা আরো বেশী পাপে লিপ্ত হয়।
যে সমস্ত ডিকন এবং প্রাচীনেরা নূতন জন্ম পায়নি, তারা বলে, আমি সৎভাবে বাঁচতে চাই, কিন্তু তা বড়ই কষ্ট সাধ্য ব্যপার।” তারা কেন এ রকম জীবন-যাপন করে, তা আমাদের বুঝতে হবে। কারণ তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে পরিত্রাণ পায়নি। তাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতা নেই, শুধু পাপ রয়েছে। কিন্তু নূতন জন্ম প্রাপ্তদের হৃদয়ে পবিত্র আত্মা এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতা রয়েছে, কোন পাপ নেই।
হৃদয়ে পাপ থাকা অবস্থায় পৌল দুঃখ করে বলেছিলেন,“কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না, কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” তার পরেই পৌল বলেছেন, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি”(রোমীয় ৭:২৫)। এর অর্থ হল, তিনি যীশু খ্রীষ্টের সাধিত ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করার মাধ্যমে পরিত্রাণ পেয়েছিলেন।
৭ অধ্যায়ে প্রেরিত পৌল যা বলতে চাচ্ছেন, নূতন জন্ম লাভ করার আগে তিনি ধর্মীয় জীবন-যাপন করতেন, কিন্তু তিনি ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন। কিন্তু তিনি বলেন যে, যীশু খ্রীষ্ট, যিনি ঈশ্বরের ধার্মিকতা সাধন করেছিলেন, তিনি তাকে তার দুর্ভাগা অবস্থা থেকে মুক্ত করেছিলেন। যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের ধার্মিকতা সাধন করেছিলেন, এই সত্য যে বিশ্বাস করে সেই পরিত্রাণ পায়।
ঈশ্বরের ধার্মিকতায় যারা বিশ্বাস করে তারা হৃদয়ে ঈশ্বরের ব্যবস্থা এবং মাংসে পাপের ব্যবস্থা পালন করে। তাদের মাংস পাপের প্রতি দুর্বল থাকে, কারণ নূতন জন্ম লাভ করলেও তাদের মাংস পরিবর্তিত হয় নাই। মাংসে পাপের অভিলাষ থাকে, কিন্তু হৃদয়ে যে ঈশ্বরের ধার্মিকতা বিশ্বাস করে, তার হৃদয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতার প্রতি আগ্রহ থাকে। অন্যদিকে, যারা পাপের ক্ষমা পায়নি তাঁদের মন এবং দেহ উভয়ই পাপ করতে চায়, কারণ তাঁদের হৃদয়ের মূলে পাপের বীজ রয়েছে। কিন্তু যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে তারা তাঁর ধার্মিকতা অনুযায়ী জীবন যাপন করে।
যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি, কারণ খ্রীষ্টই ঈশ্বরের ধার্মিকতা সাধন করেছেন। ঈশ্বরের ধন্যবাদ হোক, তিনি আমাদের তাঁর ধার্মিকতা দিয়েছেন এবং তাতে বিশ্বাস করতে পরিচালনা দিচ্ছেন।