Search

Sermons

বিষয় ১১: আবাস

[10-2] আপনি কি জানেন কখন সাধুগণের রূপান্তর ঘটবে? (প্রকাশিত বাক্য ১০:১-১১)

আপনি কি জানেন কখন সাধুগণের রূপান্তর ঘটবে?
< প্রকাশিত বাক্য ১০:১-১১ >
 
কখন রূপান্তর ঘটবে সে বিষয়ে, চলুন আমরা মনোনিবেশ করি৷ বাইবেলে অনেক অনুচ্ছেদ রয়েছে যেখানে রূপান্তরের বিষয় বলা হয়েছে৷ নুতন নিয়মে অনেক অনুচ্ছেদ রয়েছে, যা এই বিষয় বর্ণনা করে, এবং পুরাতন নিয়মেও এরূপ বর্ণনা করে, যেখানে আমরা দেখতে পাই, যেমন, ইলিশায় যিনি অগ্নিরথে স্বর্গে আরোহন করেছিলেন, এবং হনোক ঈশ্বরের সাথে হেঁটেছিলেন ও তাঁর দ্বারা নীত হয়েছিলেন৷ এভাবে আমরা দেখতে পাই যে, বহু জায়গায় রূপান্তর সম্পর্কে বাইবেলে বলা হয়েছে৷ রূপান্তরের অর্থ “উর্দ্ধে উঠা”৷ এটা এই অর্থ বহন করে যে, ঈশ্বর তাঁর ক্ষমতায় তাঁর সন্তানদেরকে স্বর্গে উঠাবেন৷ 
যাহোক, সাধারনত রূপান্তরের এই প্রশ্নটি বাইবেলের সবচেয়ে হতবুদ্ধিকর৷ ঈশ্বর কখন তাঁর সন্তানদেরকে উর্দ্ধে উঠাবেন? রূপান্তরের সময়ে এই প্রশ্নটি খ্রীষ্টিয়ান সম্প্রদায়ের জিজ্ঞাসিত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন হবে৷
আমরা ১ থিষলনীকীয় ৪:১৪-১৭ পদ খুলি এবং দেখি যে, ঈশ্বর প্রেরিত পৌলের মধ্যে দিয়ে আমাদেরকে কি বলেছেন: “কেননা আমরা যখন বিশ্বাস করি যে, যীশু মরিয়াছেন, এবং উঠিয়াছেন, তখন জানি, ঈশ্বর যীশু দ্বারা নিদ্রাগত লোকদিগকেও সেইরূপে তাঁহার সহিত আনয়ন করিবেন। কেননা আমরা প্রভুর বাক্য দ্বারা তোমাদিগকে ইহা বলিতেছি যে, আমরা যাহারা জীবিত আছি, যাহারা প্রভুর আগমন পর্য্যন্ত অবশিষ্ট থাকিব, আমরা কোন ক্রমে সেই নিদ্রাগত লোকদের অগ্রগামী হইব না। কারণ প্রভু স্বয়ং আনন্দধ্বনি সহ, প্রধান দূতের রব সহ, এবং ঈশ্বরের তূরীবাদ্য সহ স্বর্গ হইতে নামিয়া আসিবেন, আর যাহারা খ্রীষ্টে মরিয়াছে, তাহারা প্রথমে উঠিবে। পরে আমরা যাহারা জীবিত আছি, যাহারা অবশিষ্ট থাকিব, আমরা আকাশে প্রভুর সহিত সাক্ষাৎ করিবার নিমিত্ত সকসঙ্গে তাহাদের সহিত মেষযোগে নীত হইব; আর এইরূপে সতত প্রভুর সঙ্গে থাকিব।” 
এছাড়াও যিহুদা ১৪ পদে, ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন যে, “আর আদম অবধি সপ্তম পুরুষ যে হনোক, তিনিও এই লোকদের উদ্দেশে এই ভাববাণী বলিয়াছেন, ‘দেখ, প্রভু আপন অযুত অযুত পবিত্র লোকের সহিত আসিলেন,” অন্যদিকে প্রধান দূতের তুরী বাজানোর সাথে সাথে সাধুগণ আমাদের ঈশ্বরের সাথে উর্দ্ধে নীত হবেন, এবং আবার পুনরায় আমাদের প্রভুর সাথে পৃথিবীতে নেমে আসবেন৷ বাইবেল অনুসারে এটাই রূপান্তরের ব্যাখ্যা৷
যে কারণে আমরা পূর্বের অনুচ্ছেদটি দেখেছি, তার কারণ প্রকাশিত বাক্য ১০ অধ্যায় আমাদেরকে বলে যে কখন রূপান্তর আসবে৷ এভাবে আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, এই অধ্যায়ের সাত পদে অনুচ্ছেদের অন্তর্নিহিত তাত্পর্য খুঁজে পাওয়া যায়, “কিন্তু সপ্তম দূতের ধ্বনির দিনসমূহে, যখন তিনি তূরী বাজাইতে উদ্যত হইবেন, তখন ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব সমাপ্ত হইবে, যেমন তিনি আপন দাস ভাববাদিগণকে এই মঙ্গলবার্ত্তা জানাইয়াছিলেন। ” এই পদটি হল, আমাদের সমস্ত প্রশ্নের এবং রূপান্তরের সমন্ধে উত্তরদানের চাবি, তাই এই পদ আমাদেরকে বলে, কখন রূপান্তর ঘটবে৷
এই উদ্দেশ্যে ঈশ্বর যোহনের নিকটে একজন শক্তিমান দূতকে পাঠিয়েছিলেন এবং তিনি দেখিয়েছিলেন এই দূতের মধ্যে দিয়ে তিনি কি করবেন, যেহেতু প্রভু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন৷ এই দূত স্বর্গের দিকে তার হস্ত উত্তোলন করবেন, “আর যিনি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে জীবন্ত, যিনি আকাশ ও তন্মধ্যস্থ বস্তু সকলের এবং পৃথিবী ও তন্মধ্যস্থ বস্তু সকলের এবং সমুদ্র ও তন্মধ্যস্থ বস্তু সকলের সৃষ্টি করিয়াছিলেন” তাই কোনো দেরী হবে না, অর্থাৎ, কোনো কারণ ব্যতিরেকে আর বিলম্ব করবেন না৷ এর অর্থ হচ্ছে, “আর সময় নেই”৷ ফিরে তাকানোর আর সময় নেই, অর্থাৎ, সপ্তম দূতের তুরী বাজানোর দিন, ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব সম্পন্ন হবে, যেভাবে ঈশ্বর তাঁর দাস ভাববাদীদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন৷
যখন সপ্তম তুরীর মারীর শেষ তুরী বাজবে, তখন পৃথিবী সপ্তবাটির মারীতে প্রবেশ করবেন৷ তখন আমাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে, এই পৃথিবীর জন্য অবশিষ্ট আর কোনো সময় থাকবে না৷ যেভাবে ৭ পদে ঈশ্বরের বাক্য বলে, সেই দিনে, “সপ্তম দূতের ধ্বনির দিনসমূহে, যখন তিনি তূরী বাজাইতে উদ্যত হইবেন, তখন ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব সমাপ্ত হইবে, যেমন তিনি আপন দাস ভাববাদিগণকে এই মঙ্গলবার্ত্তা জানাইয়াছিলেন।” এটি রূপান্তরের সময় সম্পর্কে বলে৷ অন্যত্র পৌলও বলেছেন যে, ঈশ্বরের তুরীধ্বনি ও একজন প্রধান দুতের ধ্বনিতে রূপান্তর ঘটবে৷ এটাই, যা পৌল তার হৃদয়ে রেখেছিলেন এবং এটাই হচ্ছে বাইবেলে উল্লিখিত রূপান্তরের বিষয়ে ভাব মূল কেন্দ্রবিন্দু৷ 
কিন্তু সপ্তম দূতের ধ্বনির দিনসমূহে, যখন তিনি তূরী বাজাইতে উদ্যত হইবেন, তখন ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব সমাপ্ত হইবে, যেমন তিনি আপন দাস ভাববাদিগণকে এই মঙ্গলবার্ত্তা জানাইয়াছিলেন। এই বাক্য আমাদেরকে বলে যে, যখন সপ্তম দূত তার তুরী বাজাবে, তখন সাধুগণের রূপান্তর ঘটবে, তাদেরকে আকাশে তুলে নেওয়া হবে৷ ঈশ্বরের দাসগণ যখন হারানো আত্মাদের নিকট জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করবে, তখন বাস্তবিকই পবিত্র আত্মা সেইসব বিশ্বাসীদের উপরে নেমে আসবে, যারা সত্য সুসমাচার গ্রহণ করে এবং তারা সত্যই ঈশ্বরের সন্তান হবে৷ একইভাবে আমাদেরও রূপান্তর,ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব আমাদেরকে সত্যে নিয়ে যাবে, সাধুগণকে আকাশে তুলে নেবে৷
এরপর, ঈশ্বর সপ্তবাটির সর্বশেষ মারী পৃথিবীতে ঢেলে দিয়ে এই পৃথিবীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবেন, এই পৃথিবীতে ঈশ্বরের রাজ্য আনয়ন করবেন, যেখানে আমরা খ্রীষ্টের সাথে সহস্র বছর রাজত্ব করব, এবং আমাদেরকে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে নিয়ে যাবেন, যেখানে আমরা অনন্তকালের জন্য বাস করব৷
যোহনের কাছে রূপান্তরের আগমনের বিষয় বলার পর, ঈশ্বর তাকে ক্ষুদ্র পুস্তকটি খেয়ে ফেলতে এবং ভাববাণী বলতে নির্দেশ দিলেন৷ ঈশ্বরের দাসগণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, তাদেরকে এই শেষকালে অবস্থিত সাধুগণের রূপান্তর ও এর প্রকৃত সময় সম্পর্কে অবশ্যই শিক্ষা দিতে হবে৷ বাইবেলের প্রকৃত তত্ত্ব অনুসারে তাদের এই বিষয় শিক্ষা দেওয়া উচিত৷ তাছাড়া তাদের কাছে অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচার সঠিকভাবে প্রচার করতে হবে৷ ঈশ্বরের দাসগণ ও সাধুগণ, যারা শেষ সময়ের মধ্যে বেঁচে থাকবে, তাদেরকে এগুলো অবশ্যই করতে হবে৷ এভাবে এই কাজের দ্বারা ঈশ্বর সাধুগণকে বিশ্বস্ত করেছেন, তিনি তাদেরকে বলেন যে, তিনি আর বিলম্ব করবেন না, বরং তিনি তাঁর কার্য সম্পূর্ণ করবেন৷ যখন সময় সন্নিকট হবে, ঈশ্বর বাস্তবিক সমস্ত সম্পূর্ণ করবেন৷
১১ অধ্যায়ে, যে দুটি জিতবৃক্ষ দৃষ্টিগোচর হয়, তা হল, দুজন ভাববাদী৷ ঈশ্বরের এই দুই দাস দুটি জিতবৃক্ষ রূপে প্রকাশিত হয়েছে, খ্রীষ্টারীর সাথে তাদের যুদ্ধে তারা খ্রীষ্টারী দ্বারা হত হবে৷ কিন্তু তারা আবার মৃত্যু থেকে জীবিত হবে এবং সাড়ে তিনদিন পর রূপান্তরিত হবে৷ অন্যদিকে, ঈশ্বর আমাদেরকে ভিন্নভাবে দেখিয়েছেন যে, রূপান্তর ঘটবে, তখন যখন খ্রীষ্টারীর এই সময়ে সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবেন৷
পূর্বেই আমরা অবশ্যই জেনেছি যে, সাধুগণ মহাক্লেশের মধ্যে থাকবেন, সপ্ততুরীর মারীর প্রথম ছয়টি মারী অতিক্রম করা পর্যন্ত এই পৃথিবীতে অবস্থান করবে৷ এবং এই সপ্ততুরীর মারীর থেকে ঈশ্বর সাধুগণকে রক্ষা করবেন, কিন্তু খ্রীষ্টারী তার কঠোর নিষ্ঠুরতায় তাদেরকে হত্যা করবে, যেভাবে সে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে তার শেষ পরীক্ষা খাত তৈরী করেছে৷ এই সময় সাধুগণ যে মৃত্যুকে বরণ করবে, তা সাক্ষ্যমরের মৃত্যু৷ কেননা তারা তাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে ধার্মিকতার মৃত্যুবরণ করবে, এটাকেই আমরা “সাক্ষ্যমরত্ব” বলি৷ অতএব, আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, এই সাক্ষ্যমরত্বের পরেই রূপান্তর আসবে, এবং এই বিশ্বাস অন্যদের কাছে প্রচার করতে হবে৷
অনেক লোকই এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছে যে, মহাক্লেশের আগে না পরে রূপান্তর ঘটবে৷ পুরাতন কালে লোকেরা মনে করত যে, মহাক্লেশের পরেই খ্রীষ্ট আসবেন এবং যীশুর সাথে সাধুগণ উর্দ্ধে নীত হবেন৷ কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ান বিশ্বাস করে যে, মহাক্লেশের পূর্বে রূপান্তর আসবে৷ তারা মনে করে যে, সপ্তবাটির বা সপ্ততুরীর মারীতে তাদের কিছুই করার থাকবে না, এবং যখন তারা তাদের প্রতিদিনের সাধারণ জীবনযাপন করতে থাকবে, এর মধ্যে দিয়েই তারা উর্দ্ধে নীত হবে৷ আমরা অবশ্যই এই ভ্রান্ত শিক্ষা দ্বারা প্রতারিত হব না৷ এই লোকেরা তাদের জ্ঞানে রূপান্তরের সময় নিকট থেকে আরো নিকটে তাই তাদের ধার্মিকতা শিথিল হয়ে পড়বে, এবং তাদের বিশ্বাস হারিয়ে যাবে৷ আমি যখন আপনাকে বলছি যে, মহাক্লেশের মধ্যান্তরে রূপান্তর আসবে, তখন কিন্তু আপনাকে এটা বলি নি যে, আপনাকে আরো ধার্মিক হতে হবে৷ আমি শুধু আপনাকে রূপান্তরের সময় সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা দিতে চেয়েছি এবং প্রাক-ক্লেশের রূপান্তরের শিক্ষা থেকে সরে যেতে বলেছি, ৭ পদে ঈশ্বর আমাদেরকে বিস্তারিতভাবে বলেন, কিন্তু সপ্তম দূতের ধ্বনির দিনসমূহে, যখন তিনি তূরী বাজাইতে উদ্যত হইবেন, তখন ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব সমাপ্ত হইবে, যেমন তিনি আপন দাস ভাববাদিগণকে এই মঙ্গলবার্ত্তা জানাইয়াছিলেন। সপ্তবাটির মারী যখন ঢালা হবে, পূরবর্তী সপ্ততুরীর অদৃশ্যমারী অবিরত একের পর এক ঢালা হবে৷ আমরা, সাধুগণ অবশ্যই এটা বুঝব৷
প্রকাশিত বাক্য ১৬:১-২ পদ আমাদেরকে বলে, “পরে আমি মন্দির হইতে এক উচ্চ বাণী শুনিলাম, তাহা ঐ সপ্ত দূতকে কহিল, তোমরা যাও, ঈশ্বরের রোষের ঐ সপ্ত বাটি পৃথিবীতে ঢালিয়া দেও। পরে প্রথম দূত গিয়া পৃথিবীর উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে সেই পশুর ছাববিশিষ্ট ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারী মনুষ্যদের গাত্রে ব্যথাজনক দুষ্ট ক্ষত জন্মিল। ” মারীর বাটিগুলো প্রথম মারী অনুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একের পর এক ঢেলে দেওয়া হল, সপ্তদূত কোনো তুরীধ্বনি ছাড়াই একের পর এক বাটি খালি করতে লাগল৷ অন্যভাবে বলতে গেলে, একের পর এক সপ্তবাটির মারী ঢেলে দেওয়ার অর্থ পৃথিবীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়া৷ কেন? কারণ সপ্ত বাটির মারী ঢেলে দেওয়ার সাথে সাথে এবং সেই সাথে সপ্ততুরীর মারী নেমে আসলে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে৷
সপ্ততুরীর মারী যখন আনয়ন করা হবে তখন এক মারীর পর অন্য মারীর আগমনে সামান্য বিলম্ব বা দেরী হবে না, কিন্তু সপ্তবাটির মারীতে এরূপ কোনো বিরতি বা বিলম্বই হবে না৷ কেননা সপ্তবাটির এই মারী শেষ মুহুর্তের জন্য সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে, তাদের নির্দেশে সপ্ততুরীর মারী আনয়নের পরে, যখন চূড়ান্তভাবে শেষ তুরী বাজাবে, সমস্ত কিছু সমাপ্ত হবে, এবং পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে নুতনতায় পরিনত হবে৷ 
এ কারণেই প্রকাশিত বাক্য ১১:১৫-১৮ পদে লিখিত: “পরে সপ্তম দূত তূরী বাজাইলেন, তখন স্বর্গে উচ্চ রবে এইরূপ বাণী হইল, ‘জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন।’ পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁহারা ঈশ্বরের সম্মুখে আপন আপন সিংহাসনে বসিয়া থাকেন, তাঁহারা অধোমুখে প্রণিপাত করিয়া ঈশ্বরের ভজনা করিয়া কহিতে লাগিলেন, ‘হে প্রভু ঈশ্বর, সর্ব্বশক্তিমান্‌, তুমি আছ ও ছিলে, আমরা তোমার ধন্যবাদ করিতেছি, কেননা তুমি আপন মহাপরাক্রম গ্রহণ করিয়া রাজত্ব করিয়াছ। আর জাতিগণ ক্রুদ্ধ হইয়াছিল, কিন্তু তোমার ক্রোধ উপস্থিত হইল, আর মৃত লোকদের বিচার করিবার সময় এবং তোমার দাস ভাববাদিগণকে ও পবিত্রগণকে ও যাহারা তোমার নাম ভয় করে, তাহাদের ক্ষুদ্র ও মহান সকলকে পুরস্কার দিবার, এবং পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ করিবার সময় উপস্থিত হইল।’ ”
এই অনুচ্ছেদটি এখানে বলে যে, যখন সপ্তম দূত তার তুরী বাজাল, উচ্চরবে শোনা গেল, বলল, “জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন।” কিন্তু মারী মন্তব্য করার মত কিছুই নেই৷ কেন? কারণ সপ্তম তুরীর শব্দে এখনই সপ্তম মারী হবে না বরং রূপান্তর হবে৷ ঈশ্বর সাধুদের জীবিত করবেন ও তুলে নেবেন, যারা এখন পৃথিবীতে বসবাস করছে এবং যারা নিদ্রিত আছে তাদের উভয়কে, এবং যখন তাদের রূপান্তর শেষ হবে, তিনি সপ্তবাটির মহামারী ঢেলে দেবেন ও পৃথিবীকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে ফেলবেন৷ 
কখন আমাদের রূপান্তর ঘটবে, আমরা যদি তা চিহ্নিত করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে কেবলমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের দিকে তাকাতে হবে যা প্রকাশিত বাক্য ১০:৭ পদে পাওয়া যাবে৷ একইসাথে ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব অবসম্ভাবী ভাবে সম্পন্ন হবে, যেভাবে তিনি তাঁর দাসগণ ও ভাববাদীদের কাছে ঘোষণা করেছেন৷ ঈশ্বরের নিগূঢ়তত্ত্ব এটা প্রকাশ করে যে, রূপান্তর সকলের নয়, কিন্তু সাধুগণেরই হবে৷
আপনার পরিস্কার ধারণা ও সঠিক বিশ্বাসের জন্য আমি এখানে আরেকটি অনুচ্ছেদ উপস্থাপন করছি৷ বাইবেল আবার বলে, “দেখ, আমি তোমাদিগকে এক নিগূঢ়তত্ত্ব বলি; আমরা সকলে নিদ্রাগত হইব না, কিন্তু সকলে রূপান্তরীকৃত হইব; এই মুহূর্ত্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে হইব; কেননা তূরী বাজিবে, তাহাতে মৃতেরা অক্ষয় হইয়া উত্থাপিত হইবে, এবং আমরা রূপান্তরীকৃত হইব।” (১করিন্থীয় ১৫:৫১-৫২)৷ বাইবেল কি পরিষ্কারভাবে বলে নি যে, শেষ তুরীধ্বনিতে সাধুগণ রূপান্তরিত হবে? যখন তুরী বাজবে খ্রীষ্টে মৃতেরা অক্ষয় হয়ে উত্থাপিত হবে, এবং এক মুহুর্তের মধ্যে আমরাও রূপান্তরিত হব৷ 
১১ অধ্যায়ে যে দূতকে উপস্থাপন করা হয়েছে তিনি ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত শক্তিমান দূত, অন্যান্য দুতের থেকে আলাদা, যিনি প্রথম ছয়টি তুরী বাজাবেন৷ আমরা যখন এই শক্তিমান দূতের দিকে তাকাই আমরা দেখি, তিনি দেখতে এতই ঈশ্বরের মত যে, আমরা তাকে দেখে ঈশ্বর বলে ভুল করতে পারি: “তাঁহার মস্তকের উপরে মেঘধনুক, তাঁহার মুখ সূর্য্যতুল্য, তাঁহার চরণ অগ্নিস্তম্ভতুল্য, এবং তাঁহার হস্তে খোলা একখানি ক্ষুদ্র পুস্তক ছিল। তিনি সমুদ্রে দক্ষিণ চরণ ও স্থলে বাম চরণ রাখিলেন; এবং সিংহগর্জ্জনের ন্যায় হুঙ্কারশব্দে চীৎকার করিলেন; আর তিনি চীৎকার করিলে সপ্ত মেঘধ্বনি আপন আপন রব শুনাইল।”
অপর দিকে, এই দূতকে ঈশ্বর ভেবে আমরা ভুল করতে পারি, কেননা যীশু খ্রীষ্ট যে কার্য করতেন, তাঁর পক্ষে এই শক্তিমান দূত তার চরণ সমুদ্রে ও স্থলে রাখবেন, উভয়কে ধ্বংস করবেন, এবং যখন মেঘগর্জন আসবে, তিনি সমস্ত কিছু সম্পন্ন করবেন যা ঈশ্বর বিশ্বব্রহ্মান্ড ও মানুষ সৃষ্টির শুরুতে যীশু খ্রীষ্টে সংকল্প সাধন করেছেন৷
সপ্ততুরীর মারীর, প্রথম ছয়টি মারীর অভিজ্ঞতার মধ্যে আমরা সাধুরা থাকব, এবং তখনও আমরা অবিরত সুসমাচার প্রচার করব৷ ঈশ্বর যোহনকে ক্ষুদ্র পুস্তকটি নিতে ও খেতে বললেন এবং পুনরায় ভবিষ্যদ্বাণী করতে বললেন, কিন্তু এই বাক্য সরাসরি আপনাকে ও আমাকে বলে- তা হল, শেষ দিন পর্যন্ত অবিরত আমরা আমাদের বিশ্বাসে থাকব ও বেঁচে থাকব৷ যেহেতু যখন সপ্তম তুরী বাজবে, তখন সত্যই আমাদের রূপান্তর আসবে, আমাদের রূপান্তরের এই সত্য অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে, বিশ্বাসে ধারণ করতে ও বাক্য শুনতে হবে, এবং সেই দিনের আগমন পর্যন্ত সুসমাচার প্রচার করতে হবে৷
সপ্তম তুরী বেজে উঠার পূর্ব পর্যন্ত, এই মারীর মধ্যে খ্রীষ্টারী সক্রিয় হয়ে উঠবে, এতে সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবে, এবং অল্প পরেই তারা রূপান্তরিত হবে৷ এমনকি এই সময় যখন যীশু খ্রীষ্টে অনেক বিশ্বাসীর বিশ্বাস মূলে স্থলিত হবে এবং তার প্রাণশক্তি হারিয়ে যাবে, তখন আপনি ও আমি অবশ্যই স্থির হয়ে বেঁচে থাকব৷ অর্থাৎ, আমরা অবশ্যই বিশ্বাস করব যে, সপ্তম তুরী বেজে উঠার পরেই- আমাদের রূপান্তর আসবে এবং এই বিশ্বাসেই আমরা আমাদের জীবনযাপন করব৷
শীঘ্রই আমরা আমাদের স্বচক্ষে সপ্ততুরীর মহামারী দেখতে পাব৷ আমাদের স্বচক্ষে প্রথম থেকে ছয়টি মারী দেখব, এবং গণনা করব৷ এরপর, আমরা সাধুরা যখন অনুভব করব যে, আমাদের সাক্ষ্যমরত্বের সময় এসেছে, তখন আমরা তদানুসারে সাক্ষ্যমর হব৷ এটা না রুপকথা না বৈজ্ঞানিক কাহিনী৷ না এটা এমন কিছু যা আপনি বিশ্বাস করতেও পারেব না না করতেও পারেন, বিশ্বাস করা বা না করা সম্পূর্ণ আপনার নিজস্ব খেয়ালখুশি৷ এটা এমন একটি বিষয়, যা বাস্তবিক আপনার ও আমার প্রতি ঘটবে৷
প্রকাশিত বাক্য ১০:৭ এই পদ প্রকাশিত বাক্যের বাক্য থেকে পরিষ্কারভাবে রূপান্তরের বিষয় প্রকাশ করে, আমাদেরকে বলে যে, সপ্তমতুরী বেজে উঠার সাথে সাথে সাধুগণের রূপান্তর আসবে, এবং সপ্তবাটির মারীতে পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে৷ সাধুগণ উর্দ্ধে উঠার পরে, ঈশ্বর সমগ্র পৃথিবী তার উত্তরাধিকারীদের কাছে আনয়ন করবেন৷ যখন সমস্ত সাধুগণ রূপান্তরিত হবে, তারা আকাশে প্রভুর প্রশংসা করবে৷ আর এই পৃথিবীতে সপ্তবাটির মারী ঢালা হবে, সম্পূর্ণরূপে পৃথিবী ধ্বংস করা হবে, এবং যখন সপ্তবাটির মারী শেষ হবে, সাধুগণ প্রভুর সাথে নুতনীকৃত পৃথিবীতে নেমে আসবেন৷ আর তখন সহস্রাব্দের রাজ্য, খ্রীষ্টের রাজ্য, এই পৃথিবীতে স্থাপিত হবে৷ 
আজকের খ্রীষ্টিয়ানেরা প্রাক-ক্লেশের রূপান্তর মতবাদকে খুবই গুরুত্ব দেয়, এবং বর্তমানে তাদের মধ্যে অনেকে সহস্রাব্দবাদের পক্ষে কথা বলে, অর্থাৎ তারা বলতে চায় যে, সহস্রাব্দের রাজ্যের মত কোনো বিষয় নেই৷ তাহলে কি সহস্রাব্দের রাজ্যের বাস্তবতা নেই? বর্তমান সময়ে অনেকে আছে যারা এরূপ বিশ্বাস করে৷ তাদের মধ্যে কোরিয়ার কিছু বড় বড় মন্ডলীর প্রচারক বা নেতা, তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঘোষণা করে যে, প্রকাশিত বাক্যে কিছু রূপান্তরের ৬৬৬ সংখ্যা কোনো বিষয় নয়, বরং প্রতিকী৷ যেমন আমাদের প্রভু একদা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “মনুষ্যপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি সত্যই পৃথিবীতে বিশ্বাস খুঁজে পাবেন?” বাস্তবিকই শেষ সময় সত্য বিশ্বাসী খুঁজে পাওয়া খুবই কষ্টকর হবে৷
কিন্তু আমাদের প্রভু বলেন যে, বাস্তবিক প্রকৃতই আমাদের রূপান্তর ঘটবে৷ যখন আমরা রূপান্তরিত হব, আমরা আকাশে প্রভুর সাথে মিলিত হব এবং তাঁর প্রশংসা করব, আর তাঁর দ্বারা আমরা প্রতিপালিত হব, এবং তাঁর সাথে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসব৷ সহস্রাব্দের রাজ্য নেমে আসবে, আমরা আমাদের পুনরুত্থিত ও রূপান্তরিত দেহে নুতন জীবনে বেঁচে থাকব, সমস্ত কিছুর মধ্যে যা নুতনীকৃত, আমাদের পরিবর্তিত জীবন থেকে আশীর্বাদে নিয়ে যাবে৷ ঈশ্বর কর্তৃক আবৃত এরূপ গৌরবে আমরা বাস করব৷ আপনাকে এবং আমাকে অবশ্যই এই বিশ্বাস ও প্রত্যাশায় বাস করতে হবে৷ আর যখন সহস্রাব্দের রাজ্য শেষ হবে, আমরা নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবেশ করব, এবং অনন্ত সম্মান ও গৌরবে খ্রীষ্টের সাথে অনন্তকাল রাজত্ব করব৷
আমরা যখন সহস্রাব্দের রাজ্যে এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবেশ করব, তখন সপ্ত দূতগণ আমাদের পরিচারক হবেন৷ ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্ট কর্তৃক সমস্ত আত্মিক অস্তিত্ব সমস্ত পৃথিবী এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে, তা কার জন্য হবে? এগুলো সবই আমাদের হবে৷ এ কারণে বাইবেল বলে যে, একজন যিনি ধার্মিকদের সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী হবেন৷ কেননা আপনি ও আমি সেই ধার্মিক যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা নুতন জন্ম লাভ করেছি, আমরা ঈশ্বরের উত্তরাধিকারী সুত্রে যুক্ত, তাঁর সমস্ত কিছু উত্তরাধিকারী সুত্রে প্রাপ্ত হব৷ যেভাবে আপনি ও আমি বিশ্বাসে অবশ্যই এই পৃথিবীর কষ্ট জয় করতে পারব এবং আমাদের উত্তরাধিকারীদের প্রতি দৃষ্টি রেখে দীর্ঘসহিষ্ণু থাকতে পারব৷ ঈশ্বরের অভিজাত সৈন্যের ন্যায় আমাদের অবশ্যই যুদ্ধে জয়ী বিশ্বাস থাকতে হবে৷ 
ঈশ্বর আমাদেরকে বলেছেন যে, কোনো বিলম্ব ছাড়াই এই সমস্ত খুব শীঘ্রই সম্পন্ন হবে৷ অর্থাৎ, বাস্তবিকই অতি অল্প সময়ের মধ্যে এগুলো হবে৷ হতে পারে কেউ কেউ তখন আশ্চর্য জ্ঞান করবে যে, কেন ঈশ্বর এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিতভাবে আমাদেরকে বলেন নি৷ এই প্রশ্নের উত্তরটি হচ্ছে, ঈশ্বরের কার্য তাঁর বিজ্ঞতায় লুক্কাইত (হিতোপদেশ ২৫:২, লুক ১০:২১)৷
ঈশ্বরের সংকল্প কোথায় পরিষ্কারভাবে লিখিত হয়েছে, এই পৃথিবীতে বিক্ষোভ সৃষ্টি করার জন্য, এটা একটা কারণ হবে৷ তখন সাধুগণ শেষ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে সমর্থ হবে না৷ বড়জোর সমস্ত সাধুগণ অবিশ্বাসীদের দ্বারা হত হবে, এবং একজন সাধুও থাকবে না৷ শেষ কাল সম্পর্কে বাইবেলে বিস্তারিতভাবে লেখা হয়েছে, যারা জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা নুতন জন্ম লাভ করে নি, তারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত বিশ্বাসীদের হত্যা করবে৷ ঈশ্বর গুপ্ত সংকল্পগুলো কেবলমাত্র তাঁর উপযুক্ত সন্তানগনের কাছেই প্রকাশ করেন, এবং অন্যদের কাছে তা গোপন রাখেন এটা ঈশ্বরের প্রজ্ঞা৷ ঈশ্বর তাঁর সংকল্প আমাদের কাছে প্রকাশ করেছেন, এবং তা জানতে আমাদের অধিকার দিয়েছেন, এর একমাত্র কারণ হল, এই যুগের ধার্মিকদের জন্য এটা খুবই প্রয়োজনীয়৷
আর নুতন জন্মপ্রাপ্ত ঈশ্বরের মন্ডলীগুলো শেষ কাল সমন্ধে এখন বিস্তারিতভাবে বলছে, তার অর্থ হচ্ছে শেষ দিন আমাদের খুবই নিকটে৷ কারণ ক্লেশের যুগ আসন্ন, প্রকাশিত বাক্যের বাক্য প্রচারিত হচ্ছে যেন, শেষ কাল সম্পর্কে সাধুগণের সঠিক জ্ঞান থাকে, এবং তারা এর মধ্যে দিয়ে সেই আসন্ন ক্লেশ জয় করতে পারে৷ এমনকি নুতন জন্ম প্রাপ্তেরা, তাদেরকে যদি কোনো ধারণা ছাড়াই মহাক্লেশের সম্মুখীন হতে হয়, তারা বুঝবে না তাদের কি করতে হবে, এবং সত্যই যখন মহাক্লেশ উপস্থিত হবে, তাদেরকে মহাদুশ্চিন্তার মধ্যে পড়তে হবে৷ যারা কেবলমাত্র নিজেদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে, তাদের জন্য এই সমস্যা আরো বেশী হবে৷
আমরা ভাবতে পারি যে, অনেক অপ্রস্তুত আত্মা, তারা তাদের অজ্ঞতা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছে, যখন শেষ সময় আসবে, তারা ভুল পথে যেতে শুরু করবে৷ “ঈশ্বর কি আপনাকে কিছু বলেছেন?” যখন আপনি প্রার্থনা করছিলেন, তখন কি আপনাকে দর্শন দেখান নি? ঈশ্বর থেকে দর্শন পাওয়ার জন্য অনেকে বিক্ষুব্ধ হবে, এবং অনেকে দাবি করবে যে তারা শেষকালের এমন দর্শন দেখেছে৷ যখন আপনি প্রার্থনা করছিলেন, তখন কি আপনাকে কিছু বলেন নি? সাধুগণ যদি অজ্ঞ হয়, তাহলে শেষকালে সাধুগণের মধ্যে উত্থাপিত এই প্রশ্ন হবে খুবই সাধারণ৷
কিন্তু ঈশ্বর এভাবে কাজ করবেন না, কেননা তিনি ইতিমধ্যে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, “যাহার কর্ণ আছে, সে শুনুক, আত্মা মণ্ডলীগণকে কি কহিতেছেন।” মন্ডলীর মধ্যে দিয়ে পবিত্র আত্মা কি বলে, সাধুকে তা অবশ্যই শুনতে হবে৷ কারণ পবিত্র আত্মা ঈশ্বরের বাক্যের নিশ্চয়তা দিচ্ছে, কোনটি সত্য এবং সঠিক তা আস্বাদন করতে বলছে, শেষকালে যখন মহামারী নেমে আসবে, আমরা সাধুর আগমনকৃত ক্লেশে বিস্মিতহব না, বরং বিশ্বাসে বেঁচে থাকব, কেননা ইতিমধ্যে আমরা সত্য বাক্য শুনেছি এবং পূর্বেই বিশ্বাসে তা আমাদের হৃদয়ে খোদাই করে রেখেছি৷
এই কারণে ভবিষ্যতে কি ঘটবে এবং ঈশ্বরের দাসগণ যে বাক্যের ভিত্তিতে সত্য প্রচার করতে থাকবে, তা যোহন আমাদের কাছে পূর্বে প্রকাশ করেছেন৷ ভাববাণী বলার অর্থ হল, ভবিষ্যতে কি ঘটবে ঈশ্বরের বাক্যের ভিত্তিতে সেই সকল জানা এবং প্রচার করা; কিন্তু স্বপ্নে বা প্রার্থনায় দর্শন দেখা নয়৷
আমাদের রূপান্তর বাস্তবিকই আসবে, এবং আমরা ঈশ্বরের পবিত্রগণ এটা কখনও ভুলবেন না এবং এও ভুলবেন না যে, এখন আপনি একজন ধার্মিক, যখন আপনার রূপান্তর আসবে, আপনি খ্রীষ্টের সাথে আকাশে থাকবেন এবং সহস্র সহস্র বছর বাস করতে পৃথিবীতে নেমে আসবেন, এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে চিরকালের জন্য বাস করবেন৷ আপনি যদি শুনে থাকেন যে লোকেরা সমন্ধে কথা বলছে. অথবা তারা যদি দাবি করে যে, কোনো সহস্রাব্দের রাজ্য নেই, এই অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে তাদেরকে এই সত্য বলুন যা আমরা এখানে আলোচনা করছি৷ এছাড়াও আপনি তাদেরকে ১ থিষলনীকীয় ৪ এবং ১ করিন্থীয় ১৫ অধ্যায় দেখাতে পারেন এবং তাদেরকে বলুন যে, শেষ তুরীধ্বনিতে তারা তাঁর সাথে আকাশে নীত হবেন৷ কেবলমাত্র যখন আপনি এই রূপান্তরে বিশ্বাস করবেন তখন আপনি আপনার বিশ্বাস রক্ষা করতে পারবেন৷ 
রূপান্তরিত হতে হলে সাক্ষ্যমর হতে হবে এবং দেহের পুনরুত্থান হতে হবে৷ কারণ পুনরুত্থানের সাথে যুগপৎভাবে রূপান্তর ঘটবে, অর্থাৎ যখনই আমরা পুনরুত্থিত হব সেই সাথে সাথে রূপান্তরিত হয়ে আকাশে নীত হব৷ কাজেই, রূপান্তর এবং পুনরুত্থান একই ঘটনা৷ প্রথম পুনরুত্থানে অংশী হওয়া মানে প্রভুর সাথে সহস্রাব্দের রাজ্যে বাস করা৷ রূপান্তরিত হওয়ার মনেও এক হাজার বছর এই পৃথিবীতে প্রভুর সাথে থাকা৷
তাহলে কেন আমরা রূপান্তরিত হব? কারণ ঈশ্বর সপ্তবাটির মারী ঢেলে দিয়ে এই পৃথিবীর সমস্ত কিছু ধ্বংস করে ফেলবেন- অর্থাৎ এই মারী থেকে তাঁর সন্তানগণদের উদ্ধারের জন্য তিনি মারীর পূর্বেই সাধুদের রূপান্তর করবেন৷ পাপীদের থেকে সাধুদেরকে আলাদা করতে এবং তাদেরকে ভিন্ন গন্তব্য দেখাতে, তিনি সাধুগণকে রূপান্তরিত করবেন৷ যেহেতু, আমরা আমাদের রূপান্তরে, আমাদের পুনরুত্থান, এবং আমাদের সাক্ষ্যমরত্ব এই সমস্ত কিছুতে আমরা অবশ্যই বিশ্বাস করি৷
কিছু লোকের কাছে জল ও আত্মার সুসমাচার বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে, আবার কিছু লোকের কাছে রহস্যাবৃত রয়ে গেছে৷ যেমন সাধুগণের সাক্ষ্যমরত্ব, পুনরুত্থান, রূপান্তর, এবং সহস্রাব্দের রাজ্যে তাদের রাজত্ব, এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী এ সমস্তই ঈশ্বরের সপ্ত বিষয়৷ কেবলমাত্র নুতন জন্ম প্রাপ্তদের কাছেই ঈশ্বর এগুলো প্রকাশ করেছেন, এবং এই সমস্ত গুপ্ত বিষয় দেখিয়েছেন৷ আর তাদেরকে এই সমস্ত গুপ্ত বিষয় বিশ্বাস করতে , তাদেরকে সময়ের মধ্যে বেঁচে থাকতে, এবং স্বর্গরাজ্য ও রূপান্তরের প্রত্যাশায় তাদেরকে সমস্ত কষ্ট জয় করতে, তিনি তাদেরকে সমর্থ করেছেন৷
আপনার এবং আমার অবশ্যই এই প্রকার বিশ্বাস থাকতে হবে৷ এই প্রকার বিশ্বাস ব্যতিত অর্থাৎ, তাহল, আমরা রূপান্তরিত হব, আমরা নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে বাস করব, যখন খ্রীষ্টারী দ্বারা হত হব, তখন প্রভু আমাদেরকে মৃত্যু থেকে উঠাবেন, আমাদের রূপান্তর করবেন, আমাদেরকে আকাশে বাস করতে অনুমতি দেবেন, এবং তারপরে তাঁর সাথে সহস্র বত্সর রাজত্ব করতে আমাদেরকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবেন- এই বিশ্বাস ব্যতিত শেষকালে কঠিন ও অস্বস্থিকর জীবনের মধ্যে দিয়ে আমরা বেঁচে থাকতে সমর্থ হব না৷
সাধুগণের সুন্দর স্বপ্ন রয়েছে, এবং অন্য কেউ নয়, কেবল আমাদের প্রভু এই স্বপ্ন সত্য করতে পারেন৷ এই প্রত্যাশা ব্যতিত, আমরা কেবল এই বিষন্ন পৃথিবীতে দুঃখে ভারাক্রান্ত ও কষ্টভোগে বাস করি৷
পৌল তিমথীয়কে সুন্দর বিষয় ধারণ করতে বলেছিলেন, যা তাকে বিশ্বাসী করবে৷ এই সুসমাচার হল সুন্দর, আমাদের সাক্ষ্যমরত্ব, পুনরুত্থান ও রূপান্তর, ও এরূপ আরো সহস্রাব্দের রাজ্য, এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে বাস করাও এরূপ সুন্দর৷ এগুলো সমস্ত কিছুই উত্তম ও সুন্দর বিষয়৷ এগুলো কেবল সাধুগণের অধিকারে, এবং এগুলো সমস্ত কিছুই অনুধাবনযোগ্য, বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা, অলিক বা কাল্পনিক নয়৷ প্রভু কর্তৃক আমাদেরকে এই বিশ্বাস ও প্রত্যাশা দেওয়া হয়েছে৷ এই যুগে আমরা অবশ্যই সেই দিনের প্রত্যাশায় বেঁচে থাকব, যখন আমাদের কাছে সহস্রাব্দের রাজ্য এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী আনয়ন করা হবে৷
যারা রূপান্তরিত হবে, তারা আপনি ও আমি ছাড়া অন্য আর কেউ নয়৷ আমরা অবশ্যই এই বিশ্বাসে বেঁচে থাকব, সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করব, যখন আমাদের রূপান্তর হবে, প্রভুর সম্মুখে দাঁড়াব এবং সহস্রাব্দের রাজ্যে এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে রাজত্ব করব৷
ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন নি যে, তিনি আসবেন, তিনি খুব শীঘ্রই আসবেন৷ সাত বছরের মহাক্লেশের প্রথমার্ধে যে মহামারী আসবে তা ধীর ও ক্ষনস্থায়ী হবে৷ যদি সাত বছর যাবৎ মহাক্লেশের মারীগুলো চলতেই থাকে, তাহলে মানুষ কিভাবে টিকে থাকত? প্রাথমিক মারীগুলো সংক্ষিপ্ত কিন্তু যতই সময় গাড়াতে থাকবে ততই আরো অনেক কিছু প্রকাশ পেতে থাকবে৷ যখন সপ্তম তুরীর মারী উপস্থিত হবে, তখন তা একটি সুবিন্যস্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে৷
শয়তান যখন সাধুগণের বিশ্বাস হরণ করার চেষ্টা করবে, তখন সে কতগুলো মন্ডলীর নেতাকে হত্যা করে উদাহরণ সৃষ্টি করবে৷ শয়তান বলবে, “তুমি যদি ঈশ্বরকে অস্বীকার কর, তাহলে আমি তোমার জীবন রক্ষা করব৷” এমনকি জগত যদি মঙ্গলের দিকেও ধাবিত হয়, তখনও মানুষ শয়তানের প্রস্তাব সম্পর্কে দুইবার ভাববে৷ যখন সে ভালোভাবে জানতে পারবে যে, প্রভু সপ্তবাটির মারী ঢেলে দেবেন, এবং এই মারী দ্বারা আনীত দুঃখকষ্টের মধ্যে দিয়ে সে গমন করবে, তখন কি সে প্রভুকে অস্বীকার করতে পারবে, এটা কে নিশ্চিত? সাধুগণ যারা জগতের শেষ গতি জানে, না তারা অস্বীকার করতে পারে, না তাদের বিশ্বাসের সাথে প্রতারণা করতে পারে৷ কারণ আমাদের হৃদয়ে পবিত্র আত্মা রয়েছেন, তিনি আমাদেরকে সাহস দেন৷
কেননা শেষকালে ঈশ্বরের সমস্ত সংকল্পই দ্রুত সম্পূর্ণ হবে, বিরক্তিকর কোনো সুযোগ থাকবে না৷ ক্ষনকালীন মারী যখন শেষ হবে, তখন পুনরুত্থান হবে এবং এরপর রূপান্তর আসবে, যা আমাদেরকে আকাশে তুলে নেবে৷ ঈশ্বরের গৌরবার্থে আমাদের মাংসিক দেহ আত্মিক দেহে রূপান্তরিত হবে৷ ঈশ্বরের রাজ্যে আমরা সম্পূর্ণ নুতন পৃথিবীতে আনন্দ করতে পারব, এমন সুন্দর এবং আরম্ভরপুর্ণ যা পূর্বে কখনও এই পৃথিবীতে অনুভূত হয় নি৷ স্থান ও সময়ের সংকীর্ণতা থেকে আমাদের দেহ মুক্ত৷ বিস্ময়কর ও সুন্দর পৃথিবীতে আমরা বাস করব, যেখানে ইচ্ছা সেখানে আমরা যেতে পারব৷
এমন মহাআশীর্বাদের জন্য আমি প্রভুকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই৷ ঈশ্বর তাঁর বাক্যের মধ্যে দিয়ে মহাক্লেশ, মারী, আমাদের সাক্ষ্যমরত্ব, পুনরুত্থান ও রূপান্তর বিষয়ে বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করার জন্য আমি প্রভুকে ধন্যবাদ জানাই৷ আর আমি প্রার্থনা করি যেন, শেষকাল সমন্ধে জেনে এবং তাতে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের হৃদয় সর্বদা বেঁচে থাকে৷