Search

Sermons

বিষয় ১১: আবাস

[22-1] নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী, যেখানে জীবন জলের নদী প্রবাহমান (প্রকাশিত বাক্য ২২:১-২১)

নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী, যেখানে জীবন জলের নদী প্রবাহমান
< প্রকাশিত বাক্য ২২:১-২১ >
“আর তিনি আমাকে জীবন-জলের নদী দেখাইলেন, তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল, তাহা ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন হইতে নির্গত হইয়া তথাকার চকের মধ্যস্থানে বহিতেছে; নদীর এপারে ওপারে জীবন-বৃক্ষ আছে, তাহা দ্বাদশ বার ফল উৎপন্ন করে, এক এক মাসে আপন আপন ফল দেয়, এবং সেই বৃক্ষের পত্র জাতিগণের আরোগ্য নিমিত্তক। এবং কোন শাপ আর হইবে না; আর ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন তাহার মধ্যে থাকিবে; এবং তাঁহার দাসেরা তাঁহার আরাধনা করিবে, ও তাঁহার মুখ দর্শন করিবে, এবং তাঁহার নাম তাহাদের ললাটে থাকিবে। সেখানে রাত্রি আর হইবে না, এবং প্রদীপের আলোকে কিম্বা সূর্য্যের আলোকে লোকদের কিছু প্রয়োজন হইবে না, কারণ প্রভু ঈশ্বর তাহাদিগকে আলোকিত করিবেন; এবং তাহারা যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবে। পরে তিনি আমাকে কহিলেন, এই সকল বচন বিশ্বসনীয় ও সত্য; এবং যাহা যাহা শীঘ্র ঘটিবে, তাহা আপন দাসদিগকে দেখাইবার জন্য প্রভু, ভাববাদিগণের আত্মা সকলের ঈশ্বর, আপন দূতকে প্রেরণ করিয়াছেন। আর দেখ, আমি শীঘ্রই আসিতেছি; ধন্য সেই জন, যে এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল পালন করে। আমি যোহন এই সমস্ত দেখিলাম ও শুনিলাম। এই সকল দেখিলে ও শুনিলে পর, যে দূত আমাকে এই সমস্ত দেখাইতেছিলেন, আমি ভজনা করিবার জন্য তাঁহার চরণের সম্মুখে পড়িলাম। আর তিনি আমাকে কহিলেন, দেখিও, এমন কর্ম্ম করিও না; আমি তোমার সহদাস, এবং তোমার ভ্রাতা ভাববাদিগণের ও এই গ্রন্থে লিখিত বচন পালনকারিগণের সহদাস; ঈশ্বরেরই ভজনা কর। আর তিনি আমাকে কহিলেন, তুমি এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল মুদ্রাঙ্কিত করিও না; কেননা সময় সন্নিকট। যে অধর্ম্মাচারী, সে ইহার পরেও অধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে কলুষিত, সে ইহার পরেও কলুষিত হউক; এবং যে ধার্ম্মিক, সে ইহার পরেও ধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে পবিত্র, সে ইহার পরেও পবিত্রীকৃত হউক। দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি; এবং আমার দাতব্য পুরস্কার আমার সহবর্ত্তী, যাহার যেমন কার্য্য, তাহাকে তেমন ফল দিব। আমি আল্‌ফা এবং ওমিগা, প্রথম ও শেষ, আদি এবং অন্ত। ধন্য তাহারা, যাহারা আপন আপন পরিচ্ছদ ধৌত করে, যেন তাহারা জীবনবৃক্ষের অধিকারী হয়, এবং দ্বার সকল দিয়া নগরে প্রবেশ করে। বাহিরে রহিয়াছে কুক্কুরগণ, মায়াবিগণ, বেশ্যাগামীরা, নরঘাতকেরা ও প্রতিমাপূজকেরা, এবং যে কেহ মিথ্যা কথা ভাল বাসে ও রচনা করে। আমি যীশু আপন দূতকে পাঠাইলাম, যেন সে মণ্ডলীগণের নিমিত্ত তোমাদের কাছে এই সকল সাক্ষ্য দেয়। আমি দায়ূদের মূল ও বংশ, উজ্জ্বল প্রভাতীয় নক্ষত্র। আর আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস। যে শুনে, সেও বলুক, আইস। আর যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক। যাহারা এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল শুনে, তাহাদের প্রত্যেক জনের কাছে আমি সাক্ষ্য দিয়া বলিতেছি, যদি কেহ ইহার সহিত আর কিছু যোগ করে, তবে ঈশ্বর সেই ব্যক্তিকে এই গ্রন্থে লিখিত আঘাত সকল যোগ করিবেন; আর যদি কেহ এই ভাববাণী-গ্রন্থের বচন হইতে কিছু হরণ করে, তবে ঈশ্বর এই গ্রন্থে লিখিত জীবন-বৃক্ষ হইতে ও পবিত্র নগর হইতে তাহার অংশ হরণ করিবেন। যিনি এই সকল কথার সাক্ষ্য দেন, তিনি কহিতেছেন, সত্য, আমি শীঘ্র আসিতেছি। আমেন; প্রভু যীশু, আইস। প্রভু যীশুর অনুগ্রহ পবিত্রগণের সঙ্গে থাকুক। আমেন।”
 
 

টীকা

 
পদ ১: “আর তিনি আমাকে জীবন-জলের নদী দেখাইলেন, তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল, তাহা ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন হইতে নির্গত হইয়া তথাকার চকের মধ্যস্থানে বহিতেছে;”
এটা এখানে বলে যে, যোহনকে “জীবন-জলের নদী দেখাইলেন, তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল,” দেখানো হয়েছে৷ এই পৃথিবীতে জীবনকে পরিপুষ্ট করতে জল শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে৷ এই পদটি এখানে আমাদেরকে বলে যে, এই জীবন জল নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবাহিত হচ্ছে, যেখানে সাধুগণ অনন্তকাল বাস করবে৷ মেষশাবকের সিংহাসন হতে নির্গত হয়ে জীবন জলের নদী স্বর্গরাজ্যকে সিক্ত করেছে৷ “মেষশাবকের সিংহাসন” এই অনুচ্ছেদে মেষশাবক বলতে যীশু খ্রীষ্টকে বোঝানো হয়েছে, যিনি পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় মানবজাতিকে উদ্ধার করেছেন৷
ঈশ্বর তাঁর সাধুগণকে যে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী দিয়েছেন তাতে জীবন জল প্রবাহিত হচ্ছে৷ যখন এই বাগান সুন্দর জলের রঙের ন্যায় পরিস্কার ও স্বচ্ছ হবে, তখন কেবল এটা চমত্কার বলে বর্ণনা করা যেতে পারে৷ ঈশ্বর আমাদেরকে যে জীবন জল দিয়েছেন, তা সাধারণ নদীর জল নয়, কিন্তু এটা সেই জল, যা এখানে বসবাসরত সমস্ত কিছুর জীবন প্রদান করে৷ এই রূপে এই জীবন নদী থেকে জীবনের সমস্ত কিছুর সতেজতা আসে৷ সুতরাং, সাধুগণ যারা জীবন জলের নদীর ধারে বাস করে, তারা এই জল পান করবে, অনন্ত জীবন উপভোগ করবে এবং যুগপর্যায়ে যুগে যুগে বাস করবে৷
মেষশাবক এবং ঈশ্বরের স্বর্গ হতে জীবন জলের নদী নির্গত হচ্ছে৷ নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে সাধুগণ মেষশাবক এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহের জন্য প্রশংসা না করে পারে না, যেহেতু ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর অনুগ্রহের জীবন দান করেছেন৷ আমি কৃতজ্ঞ যে নুতন জীবনের সমস্ত অনুগ্রহ প্রভুর সিংহাসন থেকে নির্গত হয়৷
 
পদ ২: “নদীর এপারে ওপারে জীবন-বৃক্ষ আছে, তাহা দ্বাদশ বার ফল উৎপন্ন করে, এক এক মাসে আপন আপন ফল দেয়, এবং সেই বৃক্ষের পত্র জাতিগণের আরোগ্য নিমিত্তক।”
স্বর্গে সাধুগণের জন্য প্রভুর চমত্কার আশীর্বাদ রয়েছে, যেহেতু বাক্য এখানে আমাদেরকে বলছে যে, প্রভু আমাদেরকে নদীর পাশের জীবন বৃক্ষ দেবেন৷ জীবন বৃক্ষ, যা বারো প্রকারের ফল ধারণ করে, প্রতি মাসে নুতন ফল ধারণ করে, তা নুতন জীবনের শক্তি আনয়ন করে৷ এখানে আরো বলা হয়েছে এর পাতা জাতিগনের আরোগ্যের নিমিত্ত৷
কেননা, প্রভু যে আশীর্বাদ সাধুগণকে প্রদান করেছেন তা এতই মহৎ, এতই মহান যে, আমরা যা কিছু করি, আমরা তাঁর ও পিতা ঈশ্বরের গৌরবে করতে পারি৷ তাহলে, সমস্ত সাধুগণের যা করা উচিত, তা কেবল তাদের নিজের মত করে প্রভুর জন্য মূল্যবান কিছু করার চেষ্টা করা নয়, বরং তাদেরকে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী এবং নুতন জীবন দানের জন্য তাদের কৃতজ্ঞ চিত্তে কেবল প্রভুর গৌরব করবে৷ “ধন্য প্রভু! হাল্লেলুয়া!” কেবল এইভাবে চিত্কার করতে সাধুগণের হৃদয় প্রস্তুত করার জন্য আমি প্রভুর প্রশংসা করি৷
 
পদ ৩: “এবং কোন শাপ আর হইবে না; আর ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন তাহার মধ্যে থাকিবে; এবং তাঁহার দাসেরা তাঁহার আরাধনা করিবে,”
সাধুগণকে স্বর্গ রাজ্যে বাস করতে, ঈশ্বর তাদেরকে যুগপর্যায়ে যুগে যুগে আশীর্বাদ করেছেন৷ যেহেতু প্রভু এবং ঈশ্বরের সিংহাসন সাধুগণের মধ্যে, এটা আমাদেরকে দেখায় যে, সাধুগণ যারা স্বর্গরাজ্যে বাস করেছে, তারা তাদের হৃদয়ের মাঝে মেষশাবককে স্থান দেয়৷ অতএব, সাধুগণের হৃদয় সর্বদা সত্য ও সুন্দরে উপচে পড়ে এবং তাদের জীবন আনন্দে পরিপূর্ণ থাকে৷ 
“তাঁহার দাসেরা তাঁহার আরাধনা করিবে” এই অংশ থেকে আমরা দেখতে পাই যে, সাধুগণ স্বর্গরাজ্যে বাস করছে, এবং তারা প্রভুর খুব কাছে প্রভুর গৌরবে আবৃত৷ স্বর্গরাজ্য, যেখানে আমাদের প্রভু বাস করেন তা খুবই সুন্দর ও উজ্বল দীপ্তিশীল রাজ্য৷
এইরূপে তাঁর দাসেরা যারা তাঁর আরাধনা করে, তারা খুব নিকট থেকে তাঁর সমস্ত গৌরব উপভোগ করতে পারে৷ এটা আমাদেরকে বলে যে, স্বর্গরাজ্যে প্রভুর দাসেরা থাকবে৷ দাস শব্দটি বিনয়ী বা নম্রতার প্রতীক শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু দাসগণ যারা আমাদের গৌরাবন্বিত প্রভুর খুব কাছ থেকে আরাধনা করেছে, তারা স্বর্গরাজ্যের আরো বেশী আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে, যেহেতু তারা এরূপ অবর্ণনীয় মহা উজ্বল দীপ্তিশীলরূপে আবৃত৷ স্বর্গরাজ্যে যারা প্রভুর দাস হয়েছে, তারাও তাদের মত, স্বর্গের সমস্ত গৌরবে আবৃত হবে এবং তারা সবচাইতে বেশী সুখী হবে৷
 
পদ ৪: “ও তাঁহার মুখ দর্শন করিবে, এবং তাঁহার নাম তাহাদের ললাটে থাকিবে।”
প্রভুর সমস্ত দাস এবং সাধুগণ কার অধিকারে থাকবে? তারা প্রভুর অধিকারে থাকবে৷ তারা প্রভুর লোক এবং ঈশ্বরের সন্তান৷ যারা স্বর্গরাজ্যে প্রভুর আরাধনা করছে, তারা তাদের কপালে তাদের নাম লিপিবদ্ধ করেছে৷ যেহেতু তারা তাঁর সন্তান হয়েছে, তাই প্রভু সর্বদা তাদেরকে রক্ষা ও আশীর্বাদ করেন৷ তাঁর নাম সাধুগণের কাছে রয়েছে, তাই তারা খুবই গৌরব উজ্বল দীপ্তি এবং মহা আনন্দ তাদের মধ্যে আবৃত হয়েছে৷ যারা তাঁর কারণে লজ্জিত এবং প্রভুর সেই সকল দাস যারা তাঁর উজ্বল দীপ্তিশীলতায় অজ্ঞ, তারা কখনও স্বর্গের নাগরিক হতে পারে না৷
স্বর্গে বসবাসরত সাধুগণের কপালে প্রভুর নাম লিখিত৷ এই আশীর্বাদ প্রভু কর্ত্তৃক প্রদান করা হয়েছে৷ এখন থেকে সাধুগণ তাঁর৷ তাই, সাধুগণ যারা প্রভুর হয়েছে, শয়তান তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না৷ ঈশ্বর ও সাধুগণ অনন্তকালের জন্য উজ্বল দীপ্ত স্বর্গে বাস করবে৷ সাধুগণ প্রত্যেকদিন প্রভুর গৌরব উজ্বল দীপ্ত মুখমন্ডল দেখবে, এর অর্থ হল, তারা তাঁর প্রেমে বাস করবে এবং যুগপর্যায়ে যুগে যুগে চমত্কার আশীর্বাদে আশীর্বাদযুক্ত হবে৷
সাধুগণের জানার আরো একটি বিষয় আছে; প্রভু যীশুর সাথে পিতা ঈশ্বর ও পবিত্র আত্মাও তাদের পরিবারের হবে৷ আমাদের অবশ্যই ভুলে গেলে চলবে না যে, স্বর্গরাজ্যে পিতা ঈশ্বর, তাঁর পুত্র যীশু, পবিত্র আত্মা, সাধুগণ, এবং সমস্ত কিছুই একসঙ্গে এক পরিবারে চিরস্থায়ী শান্তিতে বাস করবে৷ আমাদেরকে তাঁর করার জন্য আমি প্রভুকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷
 
পদ ৫: “সেখানে রাত্রি আর হইবে না, এবং প্রদীপের আলোকে কিম্বা সূর্য্যের আলোকে লোকদের কিছু প্রয়োজন হইবে না, কারণ প্রভু ঈশ্বর তাহাদিগকে আলোকিত করিবেন; এবং তাহারা যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবে।”
বাইবেল এখানে বলে যে, নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে সাধুগণ প্রভুর সাথে রাজত্ব করবে৷ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা ধার্মিক হয়েছে, পরিত্রাণ গ্রহণ করেছে, তারা প্রভুর সাথে স্বর্গে রাজত্ব করতে সক্ষম হয়েছে, এবং তাঁর প্রাচুর্য্যে, উজ্বলদীপ্ত ও ক্ষমতায় যুগপর্যায়ে যুগে যুগে বাস করতে সক্ষম হয়েছে৷ এই সুসমাচারে আমরা পুনরায় বিস্ময়ে বিহ্বল হয়েছি যে, সুসমাচারের কি বিস্ময়কর ক্ষমতা এবং আশীর্বাদ আমাদের রয়েছে৷
এই গৌরব এবং আশীর্বাদের জন্য আমি ত্রিত্ব ঈশ্বরের প্রশংসা করি৷ পৃথিবীতে থাকাকালীন যে সমস্ত সাধুগণ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেছে, তারা স্বর্গরাজ্যে রাজত্ব করবে৷ কি অদ্ভুত আশীর্বাদ এটা! আমরা প্রভুর প্রশংসা না করে পারি না৷ এটা খুবই সত্য এবং সঠিক যে, তাদের এরূপে ঈশ্বরের প্রশংসা করা উচিত৷
নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে যেখানে সাধুগণ বাস করছে, সেখানে কোনো বাতি, বৈদ্যুতিক বাল্ব বা সূর্যের আলোর প্রয়োজন নেই৷ কেন? তার কারণ ঈশ্বর নিজেই নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীর দীপ্তি হয়েছেন, সেখানে কোনো রাত্রি হবে না৷ তাঁর সন্তান হিসাবে যুগপর্যায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করতে ঈশ্বর তাঁর সাধুগণকে অনুমতি দিয়েছেন৷ এই আশীর্বাদ আমাদেরকে পুনরায় মনে করিয়ে দেয় যে, সাধুগণ প্রভুর নিকট হতে কি মহা আশীর্বাদ গ্রহণ করেছেন৷
আমরা সাধুগণ অবশ্যই এটা উপলব্ধি করব যে, আমাদের পরিত্রাণের পর আমাদের প্রভু আমাদেরকে স্বর্গের কি মহা আশীর্বাদ করেছেন৷ প্রভু তাঁর সাধুগণের উপরে যে আশীর্বাদ করেছেন, তা আকাশের চাইতে বৃহৎ এবং উঁচু৷ যে আশীর্বাদের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর তাদেরকে চালিয়ে নিয়েছেন, সেই আশীর্বাদ অবশ্যই তাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না৷ মহানুভবতা, গৌরব, এবং আশীর্বাদ যা সাধুগণকে প্রদান করেছেন এবং যুগপর্যায়ে যুগে যুগে উজ্বলদীপ্ত এবং প্রাচুর্য্যে বাস করেছে তার জন্য সাধুগণ কেবল প্রভুকে অনন্তকালীন ধন্যবাদ দিতে পারে এবং প্রভুর প্রশংসা করতে পারে৷ আমি আমার প্রভুর প্রশংসা করি৷ হাল্লিলুয়া! আমেন!
 
পদ ৬: “পরে তিনি আমাকে কহিলেন, এই সকল বচন বিশ্বসনীয় ও সত্য; এবং যাহা যাহা শীঘ্র ঘটিবে, তাহা আপন দাসদিগকে দেখাইবার জন্য প্রভু, ভাববাদিগণের আত্মা সকলের ঈশ্বর, আপন দূতকে প্রেরণ করিয়াছেন।”
“এই সকল বচন বিশ্বসনীয় ও সত্য;” ঈশ্বর প্রকাশিত বাক্যের মধ্যে দিয়ে সাধুগণের কাছে যে সকল বাক্য প্রকাশ করেছেন, তার সেই সকল প্রতিজ্ঞা তিনি অবশ্যই পূর্ণ করেছেন৷ এই কারণে আমাদের প্রভু পূর্বেই তাঁর দাসগণের মধ্যে দিয়ে পবিত্র আত্মারূপে তাঁর সাধুগণকে সমস্ত কিছুই বলেছেন৷ প্রকাশিত বাক্যের সবচেয়ে আশীর্বাদযুক্ত বচন কোনটি? প্রকাশিত বাক্যে অনেকগুলো আশীর্বাদ বচন রয়েছে, কিন্তু খুবই আশীর্বাদযুক্ত বচন হল, ঈশ্বর সাধুগণকে প্রভুর সাথে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে রাজত্ব করতে এবং গৌরব ও ক্ষমতার সাথে বাস করতে দেবেন৷
কেননা ঈশ্বর অবশ্যই খুব শীঘ্র তাঁর কার্য সম্পূর্ণ করবেন, সাধুগণ কখনই তাদের বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে না, অথবা ফাঁদে পড়ে বিলীন হতে পারে না৷ সাধুগণ অবশ্যই তাদের বিশ্বাসের প্রত্যাশায় সমস্ত পরীক্ষা এবং ক্লেশ জয় করবে৷ আমাদের তাঁর সমস্ত ভাববাণী ও প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করতে, সাধুগণকে প্রস্তুত করতে, এবং ঈশ্বরের সত্য মন্ডলীতে আসতে দেরী করবেন না৷ আমাদের প্রভু তাঁর দাসদেরকে এই পৃথিবীতে পাঠাবেন এবং ভাববাণী বাক্য বলতে প্রস্তুত করবেন, যেন তিনি তাঁর সাধুগণকে এবং মন্ডলীকে এই সমস্ত আশীর্বাদের বিষয় বলতে পারেন৷
 
পদ ৭: “আর দেখ, আমি শীঘ্রই আসিতেছি; ধন্য সেই জন, যে এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল পালন করে।”
কেননা প্রকাশিত বাক্য এই গ্রন্থের ভাববানীর বচন আমাদেরকে সাধুগণের ভবিষ্যতে সাক্ষ্যমর সম্পর্কে বলে, এটা আমাদের কাছে প্রকাশ করে যে, সাধুগণ যখন খ্রীষ্টারীর দ্বারা নির্যাতিত হবে তখন এমন সময় আসবে, যখন তারা মৃত্যুতে তাদের বিশ্বাস রক্ষা করবে৷ কারণ এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা, সাধুগণ অবশ্যই তাদের বিশ্বাস রক্ষা করবে৷ তখন তারা তাদের পুনরুত্থান এবং রুপান্তরে অংশ নেবে, সহস্র বছর খ্রীষ্টের রাজ্যে রাজত্ব করতে আসবে, এবং তারপর যুগপর্যায়ে যুগে যুগে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে বাস করবে৷ এইরূপে সাধুগণ ঈশ্বরের সমস্ত বাক্যে বিশ্বাস করবে, যে বাক্য আমাদের প্রভু তাদেরকে বলেছেন, এবং তাদের বিশ্বাস রক্ষা করেছেন৷ শেষ সময়ে তারাই সবথেকে বেশী আশীর্বাদযুক্ত হবে, যারা আমাদের প্রভুর বাক্যে বিশ্বাস করবে এবং বিশ্বস্ত জীবনযাপন করবে৷
ঈশ্বর তাঁর সাধুগণকে বলেছেন, তিনি খুব শীঘ্রই আসবেন৷ কোনো বিলম্ব না করেই প্রভু আমাদের কাছে আসবেন৷ যে বাক্য সাধুগণকে তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ আনয়ন করে সেই জল ও আত্মার বাক্য হতে নির্গত ঈশ্বরের সকল আশীর্বাদে পরিপূর্ণ করতে, আমাদের প্রভু শীঘ্র এই পৃথিবীতে আসবেন৷
রক্ষা পাওয়ার পরে, সাধুগণ তাদের কাছে প্রভুর প্রতিজ্ঞাত আশীর্বাদের বাক্য অবশ্যই রাখবে, এবং বিশ্বাসে তা পালন করবে৷ যদি তাদের হৃদয় কখনো প্রভুর বাক্যের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তাহলে তারা সমস্ত কিছুই হারিয়ে ফেলবে, আর এ কারণেই তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাসে প্রভুর বাক্যকে রক্ষা করতে বা ধরে রাখতে হবে৷ অপরদিকে ঈশ্বর সাধুগণকে প্রভুতে তাদের বিশ্বাস ধরে রাখতে বলেছেন৷
 
পদ ৮: “আমি যোহন এই সমস্ত দেখিলাম ও শুনিলাম। এই সকল দেখিলে ও শুনিলে পর, যে দূত আমাকে এই সমস্ত দেখাইতেছিলেন, আমি ভজনা করিবার জন্য তাঁহার চরণের সম্মুখে পড়িলাম।”
এখানে ভাববাদী ও দূত ছিলেন, ঈশ্বরের ভাববাণী বর্ণনা করেছিলেন৷ অতএব, আমরা অবশ্যই ঈশ্বরের প্রশংসা করব, যিনি তাদেরকে যেমন বলেছিলেন তেমন কার্য করেন, আর আমরা কেবলমাত্র তাঁকেই ভজনা করব৷ কখনও কখনও লোকেরা নিজেদেরকে ঈশ্বরের ন্যায় উচ্চ করার চেষ্টা করে, এবং এইরূপে প্রতারিত হয়৷ তারা এমন করে, কারণ হয় তারা প্রতারক, না হয় ভাক্ত ভাববাদী৷ একমাত্র ঈশ্বরই সমস্ত প্রশংসা, ভজনা, গৌরব এবং সমাদর পাওয়ার যোগ্য৷
 
পদ ৯: “আর তিনি আমাকে কহিলেন, দেখিও, এমন কর্ম্ম করিও না; আমি তোমার সহদাস, এবং তোমার ভ্রাতা ভাববাদিগণের ও এই গ্রন্থে লিখিত বচন পালনকারিগণের সহদাস; ঈশ্বরেরই ভজনা কর।”
ঈশ্বরের সত্য ভাববাদী হয়ে আমরা কি করব? প্রথমে আমরা অবশ্যই প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারের নিগুঢ়তত্ত্ব বিশ্বাস করব৷ তারপরে আমরা ঈশ্বরের লোক, এবং একে অপরের ভাই-বোন্ হয়ে উঠব৷ আর এর পরেই কেবলমাত্র ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর কার্যভার দিতে পারেন৷ যারা ঈশ্বরের দাস হয়েছে, তাদেরকে অবশ্যই এই বাক্যে বিশ্বাস করতে হবে, এবং বিশ্বাসে পালন করতে হবে৷ এরাই তারা যারা নিজেরা এটা পালনের দ্বারা সমস্ত গৌরব ঈশ্বরকে প্রদান করে৷ আমাদের প্রভু এই জগতের সমস্ত কিছুর ভজনা ও গৌরবের যোগ্য৷ হাল্লেলুয়া!
 
পদ ১০: “আর তিনি আমাকে কহিলেন, তুমি এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল মুদ্রাঙ্কিত করিও না; কেননা সময় সন্নিকট।”
প্রকাশিত বাক্যে লিখিত প্রতিজ্ঞাত বাক্যসকল অবশ্যই লুকিয়ে রাখা যাবে না৷ কেননা শীঘ্রই তা পরিপূর্ণ হবে, প্রত্যেকের কাছে প্রচারিত হবে৷ আমেন! চলুন আমরা সকলে প্রকাশিত বাক্যের ভাববানীর বচনে বিশ্বাস করি, এবং প্রচার করি৷
 
পদ ১১: “যে অধর্ম্মাচারী, সে ইহার পরেও অধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে কলুষিত, সে ইহার পরেও কলুষিত হউক; এবং যে ধার্ম্মিক, সে ইহার পরেও ধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে পবিত্র, সে ইহার পরেও পবিত্রীকৃত হউক।”
প্রভুর ফিরে আসার দিন যখন সন্নিকট হবে, তিনি তাদেরকে বলেন, যারা পাপ করেছে, তারা এর পরেও পাপ করুক, যারা পবিত্র, তারা আরো পবিত্রীকৃত হোক, যারা কলুষিত, তারা এর পরেও কলুষিত হবে৷ যখন শেষ সময় আসবে, প্রভুর জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা যাদের হৃদয় পাপ মুক্ত হবে, তারা তখনও এই পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচার করবে, আর যারা প্রভুর দেওয়া পবিত্রতা রক্ষা করবে, এবং বিশ্বাসে জীবনযাপন করবে৷ আমাদের প্রভু আমাদেরকে বিশ্বাস ধরে রাখতে উপদেশ দিয়েছেন যা এখন আমাদের কাছে রয়েছে৷
 
পদ ১২: “দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি; এবং আমার দাতব্য পুরস্কার আমার সহবর্ত্তী, যাহার যেমন কার্য্য, তাহাকে তেমন ফল দিব।”
অপর দিকে আমাদের প্রভু শীঘ্রই আসবেন, এবং যে সমস্ত সাধুগণ জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করতে কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং প্রচার করেছে তাদেরকে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী এবং স্বর্গ দেবেন; তাদের উত্সর্গ দানের জন্য তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন৷ সাধুগণ যখন প্রকাশিত বাক্যে ভাববাণী পূর্ণ বচনে বিশ্বাস করবে, তখন তারা শেষ দিন পর্যন্ত তাদের বিশ্বাস ধরে রাখতে সক্ষম হবে; তারা প্রভুতে তাদের প্রত্যাশা রাখবে৷ আমরা অনুধাবন ও বিশ্বাস করব যে, যেহেতু আমাদের প্রভু প্রতাপান্বিত ও দয়াবান, কাজেই প্রভু সাধুগণকে তাদের পরিশ্রমের জন্য আরও অধিক পরিমানে আশীর্বাদে পুরস্কৃত করবেন৷ 
 
পদ ১৩: “আমি আল্‌ফা এবং ওমিগা, প্রথম ও শেষ, আদি এবং অন্ত। ”
আমাদের প্রভু সমস্ত কিছুর শুরু এবং শেষ৷ তিনি নিজেই আমাদের ঈশ্বর এবং ত্রাণকর্তা, যিনি আমাদের জন্য সম্পূর্ণ পরিত্রাণ আনয়ন করেছেন, যা কেবল তিনিই আমাদের দিতে পারেন৷ সমগ্র বিশ্বব্রহ্মান্ডের সমস্ত ইতিহাস, স্বর্গ মর্ত্যের ইতিহাস, সমস্ত কিছুই প্রভু থেকে শুরু হয়েছে এবং তাঁর দ্বারাই সমাপ্ত হবে৷
 
পদ ১৪: “ধন্য তাহারা, যাহারা আপন আপন পরিচ্ছদ ধৌত করে, যেন তাহারা জীবনবৃক্ষের অধিকারী হয়, এবং দ্বার সকল দিয়া নগরে প্রবেশ করে।”
কারণ সমগ্র জীবনে প্রভু আমাদের কাছে যা বলেছেন, সাধুগণ তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করবে৷ তাঁর বাক্য রক্ষা করবে ও তা প্রচার করবে৷ তারা এরূপ করবে, কেননা আমাদের প্রভু তাঁর সাধুগণের কাছে যে বাক্য এবং বিশ্বব্রহ্মান্ডের সমস্ত কিছু যা বলেছেন তা সবই সত্য৷ এই কারণে সাধুগণ এবং ঈশ্বরের দাসগণ প্রভুর বাক্য তাদের হৃদয়ে ধরে রাখবে৷ তারা আরো দৃঢ়তার সাথে ঈশ্বরের বাক্যকে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের বিশ্বাস রক্ষা করবে, যেন নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে রোপিত জীবন-বৃক্ষের ফল ভোজন করার অধিকার তাদের থাকে৷
 
পদ ১৫: “বাহিরে রহিয়াছে কুক্কুরগণ, মায়াবিগণ, বেশ্যাগামীরা, নরঘাতকেরা ও প্রতিমাপূজকেরা, এবং যে কেহ মিথ্যা কথা ভাল বাসে ও রচনা করে।”
যারা পূর্বে উল্লিখিত অনুচ্ছেদে মন্তব্য করেছে, তারা এইরূপ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে নি৷ খ্রীষ্টারী এবং তার অনুসারীরা তাদের চিহ্নকার্য এবং অলৌকিক কার্যের দ্বারা লোকেদেরকে ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করে, আর কখনো কখনো তাদেরকে এইভাবে ভ্রান্ত চিহ্নকার্য প্রদর্শনের দ্বারা প্রতারিত করেছে যে, খ্রীষ্টারীই তাদের উদ্ধারকর্তা৷ খ্রীষ্টারীর প্রতিমূর্তিতে ভজনা করণের দ্বারা তারা লোকদেরকে তাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়৷ আমাদের প্রভু এই প্রকার লোকেদেরকে পবিত্র নগরীর বাইরে রাখবেন, যেন তারা কখনই নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবেশ না করতে না পারে৷ কেবলমাত্র সাধুগণ, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা বিশ্বাস রক্ষা করেছে তাদের জন্যই প্রভুর নগরী খুলে দেওয়া হবে৷
 
পদ ১৬: “আমি যীশু আপন দূতকে পাঠাইলাম, যেন সে মণ্ডলীগণের নিমিত্ত তোমাদের কাছে এই সকল সাক্ষ্য দেয়। আমি দায়ূদের মূল ও বংশ, উজ্জ্বল প্রভাতীয় নক্ষত্র।”
ঈশ্বরের মন্ডলী এবং সাধুগণের জন্য আমাদের প্রভু ঈশ্বরের দাসগণকে পাঠিয়েছেন, এবং তিনি যে বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে আসবেন, সেই বিষয়ে তাদেরকে প্রস্তুত করেছেন৷ যিনি তাদেরকে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত করেছেন, তিনি যীশু খ্রীষ্ট, ঈশ্বর সাধুগণের ত্রাণকর্তা হয়েছেন৷ 
 
পদ ১৭: “আর আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস। যে শুনে, সেও বলুক, আইস। আর যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক।”
ঈশ্বরের ধার্মিকতার জন্য, এই পৃথিবীতে যারা ক্ষুধার্ত ও পিপাসিত, আমাদের প্রভু তাদেরকে জীবন জলের বাক্যের নীচে আমন্ত্রণ করেছেন৷ ঈশ্বরের ধার্মিকতার জন্য যে কেউ ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত, তাদেরকেও প্রভু আগমনের আশীর্বাদ দিয়েছেন, তাঁর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা প্রত্যেককে যীশু খ্রীষ্টের কাছে আসতে বলেছেন৷ যে কেউ বিনামূল্যে জল ও আত্মার সুসমাচারের সত্য গ্রহণ করতে পারে৷ যাদের এই আকাঙ্খা নেই, তাদের থেকে জীবন জল বাদ দেওয়া হয়েছে৷ আপনি যদি ইচ্ছা করেন, তাহলে আপনিও জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা প্রভুর দেওয়া জীবন জল পান করতে পারেন৷
 
পদ ১৮: “যাহারা এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল শুনে, তাহাদের প্রত্যেক জনের কাছে আমি সাক্ষ্য দিয়া বলিতেছি, যদি কেহ ইহার সহিত আর কিছু যোগ করে, তবে ঈশ্বর সেই ব্যক্তিকে এই গ্রন্থে লিখিত আঘাত সকল যোগ করিবেন”
শাস্ত্র হল ঈশ্বরের বাক্য৷ কাজেই, যখন আমরা এই বাক্যে বিশ্বাস করি, তখন না আমরা এর সাথে যোগ করতে পারি, না এর থেকে বাদ দিতে পারি৷ এই পদ আমাদেরকে বলে, যেহেতু শাস্ত্র ঈশ্বরের বাক্য, কাজেই কেউই এই লিখিত সত্য বাক্যের সাথে কোনো কিছু যোগ অথবা বিয়োগ করে বিশ্বাস করতে পারে না, বা লিখিত সত্যের বাক্য ত্যাগ করে বেঁচে থাকতে পারে না৷ সুতরাং, আমরা অবশ্যই সতর্ক হব৷ ঈশ্বরের পপ্রত্যেকটি বাক্যই গুরুত্বপূর্ণ; গুরুত্বহীন মনে করে কেউই এটা কখনও উপেক্ষা করতে পারে না৷
প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে এখনও লোকেরা অজ্ঞ রয়েছে৷ এই কারণে তাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার পেতে হবে, কেননা, যদিও তারা দাবি করেছে যে, তারা যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তারূপে বিশ্বাস করেছে, তথাপি তারা এখনও পাপী রয়েছে, এবং তারা তাদের ধ্বংসে প্রবেশ করবে৷ পাপীদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে, আমাদের প্রভু তাদেরকে জল ও রক্ত দিয়েছেন (১ যোহন ৫:৪-৫, যোহন ৩:৩-৭)৷ তথাপি অনেকে রয়েছে তারা কেবল যীশুর ক্রুশীয় রক্তকে প্রাধান্য দেয়, তাই তারা তাদের পাপ থেকে এখনও রক্ষা পায় নি, আর তাই তারা প্রকাশিত বাক্যের লিখিত সমস্ত মারীর সম্মুখীন হবে৷
যারা যীশুকে বিশ্বাস করে বলে দাবি করে, অথচ এখনো এই সত্য সমন্ধে অজ্ঞ যে, খ্রীষ্ট যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তারা আরো বেশি ভয়ানক যন্ত্রণা ভোগ করবে৷ কেন? তার কারণ প্রভু তাদেরকে যে জল ও আত্মার সুসমাচার দিয়েছেন, তাতে তারা বিশ্বাস করে নি, এবং তারা এখনও নুতন জন্ম গ্রহণ করে নি৷ যে কেউ প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচার অগ্রাহ্য করবে তারা অনন্তকালীন জ্বলন্ত অগ্নিহ্রদে প্রবেশ করবে ও অনন্ত শাস্তি ভোগ করবে৷ এই প্রকার লোকেদের জন্য সেই অনুতাপের দিন অবশ্যই আসবে৷
 
পদ ১৯: “আর যদি কেহ এই ভাববাণী-গ্রন্থের বচন হইতে কিছু হরণ করে, তবে ঈশ্বর এই গ্রন্থে লিখিত জীবন-বৃক্ষ হইতে ও পবিত্র নগর হইতে তাহার অংশ হরণ করিবেন।”
যীশু যে যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে, মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশবিদ্ধ করে একেবারেই সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, আমাদের মধ্যে কেউ কি এমন আছে, যার খ্রীষ্টীয় বিশ্বাস সত্য বাক্য পরিত্যাগ করেছে? যদি এমন কেউ থাকে তাহলে এ ধরণের লোকেরা অবশ্যই ঈশ্বরের পবিত্র নগরীতে প্রবেশের অধিকার হারিয়ে ফেলবে, যেহেতু তারা বিশ্বাস করে নি যে আমাদের প্রভু মানবজাতির সমস্ত পাপ একেবারেই নিজের উপরে তুলে নিতে যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছেন৷ প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচার অগ্রাহ্য করার কারণে তারা এমনিতেই পাপ করেছে৷
তাই খ্রীষ্টিয়ানদেরকে তাদের হৃদয়ে অবশ্যই এই বিশ্বাস ধরে রাখতে হবে যে, যীশু যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন৷ তারা এরূপ না করলে প্রভুর দেওয়া পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করার গৌরবথেকে সকলে বাদ পড়ে যাবে৷ আপনি যদি বিশ্বাস করেন যে, যীশু আপনার ত্রাণকর্তা, তাহলে আপনাকে এই বিশ্বাসের দ্বারা আপনার সমস্ত পাপ থেকে পরিস্কৃত হতে হবে যে, যীশু এই পৃথিবীতে এসেছেন, জগতের সমস্ত মানবজাতিকে পাপ থেকে সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করতে যর্দন নদীতে যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছেন, আর এইভাবে মানবজাতি কর্ত্তৃক সমস্ত পাপ নিজের উপরে বহনের দ্বারা তাদেরকে পরিস্কার করেছেন৷ যে স্রোত, যার দ্বারা আপনি আপনার সমস্ত কলুষতা থেকে পরিস্কৃত হতে পারেন, তা হল বাপ্তিস্ম, যা আমাদের প্রভু গ্রহণ করেছেন৷ এইভাবে আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন, তাঁর নিজের মৃত্যু দ্বারা আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করতে আমাদের প্রভু তাঁর রক্ত সেচন করেছেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেছেন৷ 
যোহনের কাছ থেকে যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছেন, তা আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের নির্দিষ্ট প্রমাণ৷ ১ পিতর ৩:২১ পদ আমাদেরকে বলে, “আর এখন উহার প্রতিরূপ বাপ্তিস্ম অর্থাৎ মাংসের মালিন্যত্যাগ নয়, কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে সৎসংবেদের নিবেদন তাহাই যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা তোমাদিগকে পরিত্রাণ করে৷” আমাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, যীশু জগতের সমস্ত পাপের মূল্য পরিশোধ করতে ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছেন৷
এই কারণে ঈশ্বর যেমন ১৯ পদে সমগ্র মানবজাতিকে পুনরায় তাঁর সতর্কতার বাক্য দিয়েছেন৷ ঠিক একইভাবে এতে কোনো সংযোজন বা বিয়োজন ব্যতিরেকেই আমরা অবশ্যই এই জল ও আত্মার সুসমাচারের বাক্যে বিশ্বাস করব৷
 
পদ ২০: “যিনি এই সকল কথার সাক্ষ্য দেন, তিনি কহিতেছেন, সত্য, আমি শীঘ্র আসিতেছি। আমেন; প্রভু যীশু, আইস।“
আমাদের প্রভু খুব শীঘ্রই এই পৃথিবীতে আবারও আসবেন৷ আর সাধুগণ যারা প্রভুকে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পাপের ক্ষমা গ্রহণ করেছে, এবং স্বর্গীয় গৌরবে আবৃত, তারা আন্তরিকতার সাথে প্রভুর দ্বিতীয় আগমনের অপেক্ষা করছে৷ কারণ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারা প্রভুর সাথে মিলিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে, তারা প্রভুর আগমনের জন্য অপেক্ষা করে এবং সাধুগণ প্রতিজ্ঞাত তাঁর আশীর্বাদে তাদেরকে আবৃত করেন৷ তাই সাধুগণ অতি আগ্রহের সাথে বিশ্বস্ত এবং কৃতজ্ঞতার সাথে প্রভুর দ্বিতীয় আগমনের জন্য প্রত্যাশা করছে৷
 
পদ ২১: “প্রভু যীশুর অনুগ্রহ পবিত্রগণের সঙ্গে থাকুক। আমেন।”
ঈশ্বরের দেওয়া পবিত্র নগরীতে যারা প্রবেশ করতে আগ্রহী, তাদের প্রতি প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আশীর্বাদ যাচঞা করে, একটি আশীর্বাদের প্রার্থনার মধ্য দিয়ে প্রেরিত যোহন প্রকাশিত বাক্য পুস্তকটি সমাপ্ত করেছেন৷ আসুন, আমরাও বিশ্বাসে অব্যর্থ ভাবে যীশু খ্রীষ্টের দেওয়া পবিত্র নগরীতে ধার্মিক হিসাবে প্রবেশ করি৷
The New Life Mission

Participez à notre enquête

Comment avez-vous entendu parler de nous ?