< রোমীয় ১:১৭-১৮ >
“কারণ ঈশ্বর-দেয় এক ধার্ম্মিকতা সুসমাচারে প্রকাশিত হইতেছে, তাহা বিশ্বাসমূলক ও বিশ্বাসজনক, যেমন লেখা আছে, “কিন্তু ধার্ম্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে”। কারণ ঈশ্বরের ক্রোধ স্বর্গ হইতে সেই মনুষ্যদের সমস্ত ভক্তিহীনতা ও অধার্ম্মিকতার উপরে প্রকাশিত হইতেছে, যাহারা অধার্ম্মিকতায় সত্যের প্রতিরোধ করে।”
আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে
লেখা আছে যে, “ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে।” আমরা বিশ্বাস দ্ধারা বাঁচি কিনা? ধার্মিককে বাঁচার একটিমাত্র উপায়, আর তা হল বিশ্বাস। বিশ্বাস ধার্মিককে বাঁচায়। ঈশ্বরে বিশ্বাস করলে আমরা বাঁচতে পারি এবং সবকিছু করতে পারি। শুধুমাত্র ধার্মিকগণই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে। “শুধুমাত্র” কথাটির দ্বারা ধার্মিক ছাড়া অন্য কেউ বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে পারে না, -সে কথা বোঝান হয়েছে। তাহলে পাপীদের কি অবস্থা হবে? পাপীরা বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে পারে না। আপনি কি এখন বিশ্বাস দ্বারা বাঁচেন? আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে।
প্রকৃত বিশ্বাস সম্বন্ধে জানতে অনেক সময় প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে যে, ঈশ্বরে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা বাঁচি, বিশ্বাস না করলে আমাদের মৃত্যু হয়। এটাও অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, বিশ্বাস দ্বারা জীবন যাপন করাই ধার্মিকের অদৃষ্ট।
পাখা থাকা সত্ত্বেও পাখি যদি তা ব্যবহার না করে, পৃথিবীর অন্যান্য পশুরা তাদের মেরে ফেলবে। কাজেই বিশ্বাসে জীবন যাপন করা ধার্মিকদের জন্য একমাত্র পথ হিসাবে নির্ধারন করা হয়েছে। ঈশ্বর কর্তৃক ধার্মিকদের জন্য এই অদৃষ্ট, এটাই নির্ধারন করা হয়েছে যে, তারা বিশ্বাস দ্বারা বাঁচবে। যদি তারা ব্যর্থ হয়, তাদের আত্মা মৃত্যুবরণ করবে।
বিশ্বাসের সাথে একজন খ্রীষ্টিয়ানো এবং সত্য পথের শুরু হয়। জল ও আত্মায় নূতন জন্ম লাভ করার পরে একজন ধার্মিক ব্যক্তি কি ভবে পারিপার্শিকতার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে? আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, বিশ্বাসে আমাদের জীবন- যাপন করতে হবে।
আপনি কি বুঝতে পারছেন? এটাই ধার্মিকদের জীবন। বিশ্বাস না থাকলে আমরা মারা যাই এবং পরীক্ষা সহ্য করার কোন ক্ষমতা আমাদের থাকেনা। যে ব্যক্তি বিশ্বাসে জীবন-যাপন করে না বা বিশ্বাস জীবনে প্রয়োগও করে না, জীবনে পরীক্ষা এলে তার মৃত্যু হয়। ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কেউ যদি স্বীকার করে, “প্রভু আমি তোমাকে বিশ্বাস করি,” তাহলে অসম্পূর্ণ এবং দূর্বল হলেও সে বাঁচতে পারে। ঈশ্বরে বিশ্বাস করার কারণেই সে (নারী/পুরুষ) বাঁচতে পারে। যে মানুষ ঈশ্বরে যতটা বিশ্বাস করে, ঈশ্বর ততটা তাকে এবং তার কাজে সাহায্য করেন।
নিজেদের সিমাবদ্ধতা দ্বারা আমরা বিশ্বাস সম্বন্ধে শিখি
আমি চাই, আপনি চিন্তা করুন-আপনি বিশ্বাস দ্বারা বেঁচেছেন কিনা। নূতন জন্ম লাভ করার পরপরই মানুষ বিশ্বাসে জীবন ধারন করে না। প্রথম দিকে সে পরিস্থিতি অনুসারে জীবন-যাপন করে, তাই কিভাবে বিশ্বাসে জীবন-যাপন করতে হয়, তা তার (নারী /পুরুষ) জানা থাকে না। কেন? কারণ, পৃথিবীর মানুষ নিজের পরিশ্রমের মধ্যমে টাকার মালিক হতে পারে, বিশ্বাস করার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু যখনই আমরা নিজেদের শক্তির সাহায্যে বাঁচতে চেষ্টা করি, তখনই নিজেদের সিমাবদ্ধতা দেখে অবাক হই। আমরা বুঝতে পারি, বেঁচে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তাহলে আমাদের কিভাবে বাঁচতে হবে? আমাদের বিশ্বাস প্রয়োগ করতে হবে। বিশ্বাস প্রয়োগ না করলে এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস না করলে, সত্যিকার অর্থে আমরা কখনোই বাঁচতে পারি না।
এমন কি ছোট ছোট বিষয়ের মধ্যে দিয়েও আমাদের বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে, প্রভুকে বলতে হবে, “প্রভু আমি তোমাতে বিশ্বাস করি, আমাকে সাহায্য কর।” যখন আমরা অন্যান্য বিষয়ে ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, বলি, “প্রভু আমি তোমাতে বিশ্বাস করি,” আমরা প্রমান করি যে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়েও আমরা বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে পারি।
বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে আমরা সফলতা লাভ করতে পারি এবং শক্তিশালী হওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি। যাহোক, ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকলে আমরা বুঝতে পারি না যে, তাঁর আশীর্বাদে আমরা সফল হতে পারি। কাজেই বিশ্বাস না থাকার কারণে আমরা পরাজিত হই। সমস্ত বিষয়ে বিশ্বাস থাকা খুবই জরুরী, তাহলে আমরা বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে শিখব।
পুরাতন নিয়মের কালে মানুষ বিশ্বাস দ্বারা বাঁচত এবং নূতন নিয়মের সময়েও বিশ্বাস দ্বারা মুক্ত হওয়া সঠিক। কিভাবে পরিত্রাণ সম্পর্কে আমরা নিশ্চয়তা পাই? যীশু খ্রীষ্ট আমাদের জন্য যা সাধন করেছেন, তাতে বিশ্বাস করেই কি আমরা ধার্মিক হয়েছি? - হ্যাঁ, আমরা হয়েছি। তাতে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে বাঁচতে চাইলে ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করেন। প্রথমতঃ শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন এবং প্রয়োজনীয় বিষয় যাচ্ঞা করুন, তাহলে ঈশ্বর সাহায্য করবেন। যেমন পরিত্রাণ দিয়েছেন, তেমনি অন্য বিষয়গুলিও ঈশ্বর আমাদের দেন। জীবনে প্রতিটা ক্ষেত্রে বিশ্বাস লাভ করা সম্ভব। এটাই জীবন।
ধার্মিকের জীবনটাই হল বিশ্বাস। বিশ্বাসই জীবন। ঠিক যেমন মাংসের সাথে রক্ত। মাংসের সাথে রক্ত না থাকলে যেমন প্রতিটা মানুষ (নারী / পুরুষ) মারা যায়, নূতন জন্ম প্রাপ্ত ব্যক্তির বিশ্বাস না থাকলেও তেমনি তার আত্মা মারা যায়। ঈশ্বরে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে, “ঈশ্বর, আমি তোমাতে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি তুমি আমাকে সাহায্য কর এবং আমরা সমস্যার সমাধান কর।”
অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস যাচ্ঞা করার আগে বিশ্বাসে ঈশ্বরের রাজ্য ধার্মিকতার জন্য চেষ্টা করতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে, নিশ্চয়ই ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন। আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে। ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস ছাড়া বাঁচতে পারে না।পৃথিবীতে জীবন যাপন কালে, কোন সময় আমাদের মাংস পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে এবং কখনও কখনও আমরা বিপদে পড়ি বা মারাত্মক পরিস্থিতির সম্মুখীন হই। সেই সব ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আমাদের প্রয়োজন, -তাহল ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস; ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেছেন -এই বিশ্বাস; তিনি আমাদের সাহায্য করেন এবং তিনি মঙ্গলময়।
উপরোন্তু, ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে যা কিছু যাচ্ঞা করি, তা তিনি আমাদের দেন, এই বিশ্বাসেরও প্রয়োজন রয়েছে। মাংস পরিশ্রান্ত হয় বিধায় বিশ্বাসই ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। আমরা ঈশ্বরের কাছে যা প্রত্যাশা করি, বিশ্বাস সেই বিষয়ে আমাদের উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা যোগায়।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস ব্যবহার করতে হবে
আমাদের কিভাবে বাঁচতে হবে? এইভাবে প্রার্থনা করতে হবে, “হে ঈশ্বর আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। আমার এই এই জিনিসের দরকার রয়েছে, আমাকে সাহায্য কর প্রভু।” আমি আমাদের মূল দূর্বলতার কথা বলছি না। আসুন, আমরা বিশ্বাস দ্বারা বাঁচি, বলি, “প্রাত্যহিক জীবনের জন্য আমার অমুক অমুক জিনিসের প্রয়োজন। আমাকে দয়া ক’রে সাহায্য কর প্রভু। আমি বিশ্বাস করি তুমি আমার জন্য এটা করবে।” যে ব্যক্তি বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে চায়, তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের কাছে যাচ্ঞা করতে হবে। যেমন, “হে প্রভ, আমার টুথপেস্ট নেই, আমাকে টুথপেস্ট দাও। আমি তোমাকে বিশ্বাস করি।” কাজেই, আমাদের এইভাবে এই অভিজ্ঞতা হয় যে, যখন আমরা অনুসন্ধান করি এবং কিছু যাচ্ঞা করি তিনি আমাদের প্রার্থনার উওর দেন।
পাপীরা কিভাবে বাঁচে? পাপীরা নিজের শক্তির উপরে নির্ভর করে, কিন্তু ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে। যদি আমরা জানি যে, ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে, তাহলে আমাদের জীবনে বিশ্বাসের প্রয়োগ করতে পারি। যা আমাদের আছে তা দ্বারা আমরা বাঁচি না, কিন্তু বিশ্বাস দ্বারা বাঁচি। আপনি কি বুঝতে পেরেছেন? “ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে।” ধার্মিকের সবচেয়ে যেটা বেশী প্রয়োজন সেটা হল বিশ্বাস, কিন্ত যখন আমাদের সব অবলম্বন শেষ হয়ে যায়, তখন আমরা বিশ্বাসের ব্যবহার করি।
আমাদের সমস্ত শক্তি ও সম্পদ ব্যবহার করা হয়ে গেলে আমরা বিশ্বাস ব্যবহার করি। যাহোক, আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, বিশ্বাসে জীবন যাপন করাই সত্য এবং তা ঈশ্বরের আদেশ, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার । উপরে প্রতিষ্ঠিত, যা আমাদের জীবনের জন্য অতিব প্রয়োজনীয়। বিশ্বাস দ্বারা বাঁচুন। ঈশ্বরের বিশ্বাস করুন এবং যাচ্ঞা করুন, তবেই আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিস আমরা লাভ করতে পারি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাসে জীবন-যাপন করা শিখতে হবে এবং এইভাবে ক্রমান্বয়ে আমাদের বিশ্বাস দৃঢ় হবে।
পাঁচটি চিকন পাথর দ্বারা বিশ্বাসে দায়ূদ গলিয়াৎকে বধ করেছিলেন। ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন, এই দায়ূদ গলিয়াৎকে বধ করেছিলেন, ভেবেছিলেন, “হে ঈশ্বর আমি তোমাতে বিশ্বাস করি, একে বধ করা তোমারই ইচ্ছা।” দৃঢ়তার সাথে তিনি গলিয়াৎকে বললেন, “তুমি খগড়, বর্শা ও শল্য লইয়া আমার কাছে আসিতেছ, কিন্তু আমি বাহিনীগণের সদাপ্রভুর নামে তোমার নিকট আসিতেছি” ( ১শমূয়েল ১৭:৪৫ )। বিশ্বাসে অব্রাহাম যখন আহবান পেলেন, প্রতিজ্ঞাত দেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন, কোথায় যাচ্ছেন তা না জেনে বেরিয়ে পড়লেন।
ধার্মিক বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে’ চারটি সুসমাচারে এই কথাটিকে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। যাহোক, একথা জানি যে, বিশ্বাসের জীবন হল ধার্মিকের জীবন, খ্রীষ্টিয়ানের জীবন ? আমি একথা বলছি না যে, শারিরীক শক্তি এবং সম্পদের উপর নির্ভরশীলতা আমাদের ত্যাগ করতে হবে। আমার পরামর্শ হল, যেন আমরা পার্থিব বিষয়ের উপর নির্ভরশীলতা পরিত্যাগ করে বিশ্বাস জীবন-যাপন করতে পারি। তাহলে কোন বিশ্বাসে ? ঈশ্বরে বিশ্বাসে। ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলে এবং তাঁর কাছে যাচ্ঞা করলে ঈশ্বর কাজ করেন। বিশ্বাস করুন যে, ঈশ্বর প্রার্থনার উত্তর দেন এবং মন্ডলীর নেতাকে বিশ্বাস করুন। মন্ডলীতে যোগ দিন এবং ঈশ্বরের সেবা করুন। আপনি কি বিশ্বাস করেন? আমরা প্রত্যেকেই ধার্মিক। বিশ্বাস দ্বারা আমাদের বাঁচতে হবে।
হৃদয় দিয়ে আমরা যে সকল বিষয়ের উপর নির্ভর করি, সে সব অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। অবশ্যই ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে হবে, যত ক্ষুদ্র বিষয় হোক না কেন - বিশ্বাসের মাধ্যমে যাচ্ঞা ও গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বাস দ্বারা জীবন-যাপন করার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। তাহলে প্রভুর সাথে রাজত্ব করতে পারব এবং জগতের লোকের উপহাস আমাদের শুনতে হবে না। ঈশ্বর বলেন যে, “তিনি আমাসের শক্রগণের সাক্ষাতে আমার সম্মুখে মেঝ সাজাইয়া থাকেন” (গীত ২৩:৫)। বৃহত্তম মূল্য পরিশোধ করার অর্থ ঈশ্বরের সাক্ষাতে। আশীর্বাদ যুক্ত হওয়া। পরিস্থিতির উন্নতি করার মাধ্যমে বাঁচা নয়, কিন্তু বিশ্বাস দ্বারা বাঁচা।
আপনি কি কখনও বিশ্বাস দ্বারা বেঁচেছেন ? অগণিত লোক কখনও বিশ্বাস দ্বারা বাঁচেনি, কিন্তু এমন অনেক লোক আছে, যাদের প্রার্থনার মাধ্যমে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। একবার নয়, কিন্তু অবিরত আমাদের এই অভিজ্ঞতা লাভ করা উচিত।বারবার এইভাবেই ধার্মিকদের জীবন - যাপন করা উচিত। পার্থিব বিষয়ের উপর নির্ভর না করে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা উচিত। এটাই ধার্মিকদের জীবন। আমাদের অবশ্যই এভাবে জীবন - যাপন করতে হবে। কেবলমাত্র বিশ্বাসেই আমরা জীবন - যাপন করতে পারি। এবং ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভ করতে পারি।
ঈশ্বরের সাক্ষাতে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন, তা হল বিশ্বাস
আপতঃদৃষ্টিতে মনে হয়, বিশ্বাস অর্জন করা খুব কঠিন বিষয় . কিন্তু আসলে এটা খুব সহজ ব্যাপার। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ছাড়া আর অন্য কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না। কেবলমাত্র ঈশ্বরে। বিশ্বাস করতে হবে। মানুষ মনে করে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা খুব কঠিন, কিন্ত আসলে তা কঠিন নয়। আমি আমার পিতাকে “পিতা” বলি এবং বিশ্বাস করি তিনি আমার পিতা, কারণ তিনি আসলেই আমার পিতা। তিনি যে আমার পিতা , তা আমার নিজের বিশ্বাসের উপরে নির্ভর করে না। এই স্থান থেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করা শুরু হয়। আমি ঈশ্বরে বিশাস করি। কেন ? কারণ, ঈশ্বর সব সময় ধার্মিকদের পাশে আছেন, তাদেরকে প্রেম করেন, তাদের পিতা ও পরিত্রাণকর্তা হন। দ্বিতীয়তঃ সন্তান ( ছেলে/মেয়ে ) যেমন পিতার কাছে তার প্রয়োজন জানায়,তেমনি ঈশ্বরের কাছে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রয়োজন জানাই। সর্বোপরি পিতা ঈশ্বর আমাদের প্রার্থনা শোনেন এবং যা চাই আমরা তা পাই। একটি সাধারণ বিশ্বাসের উপরে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে এবং সেখান থেকে তা শুরু হয়।
ঈশ্বর আলফা এবং ওমেগা, প্রথম ও শেষ, তাই আমাদের বিশ্বাসে বাঁচতে হবে। আমাদের সারাটা জীবন বিশ্বাসের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। বিশ্বাসে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি এবং বিশ্বাসে আমরা তাঁর। দ্বারা প্রতিপালিত হচ্ছি। বিশ্বাস আছে বলেই আমরা বলতে পারি, “হে প্রভু, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। আমাকে রক্ষা কর এবং প্রতিপালন কর।” শয়তানের হুমকিতে যখন আমরা দুর্বল ও ভীত হয়ে পড়ি, তখন আমাদের কি করা উচিত? ঈশ্বরে বিশ্বাস করা উচিত, “হে প্রভু , দয়া করে আমাকে রক্ষা কর। আমি বিশ্বাস করি তুমি আমাকে সুরক্ষা করবে,” এবং যেহেতু ঈশ্বরই আমাদের পিতা, তাই তিনি আমাদের রক্ষা করবেন। তিনি আমাদের ভালবাসেন বলেই কখনও কখনও আমরা ভুল প্রার্থনা করলেও তিনি আমাদের রক্ষা করেন। বিশ্বাস করাই হল সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা খুবই সহজ। ঈশ্বর আমাদের মাঝে বিশ্বাস দিয়েছেন, এইজন্য তিন আমাদের ক্রমান্বয়ে আরও দৃঢ় বিশ্বাসের দিকে চালিত করেন। ঈশ্বর সাথে থাকলেও আমরা যদি বিশ্বাস না করি, তাহলে কোন ফল হবে না। বিশ্বাস দ্বারা আমরা বাঁচি এবং আমরা বিশ্বাস করি।
বিশ্বাসমূলক ও বিশ্বাসজনক
রোমীয় ১:১৭পদে আছে, “কারণ ঈশ্বর-দেয় এক ধার্ম্মিকতা সুসমাচারে প্রকাশিত হইতেছে, তাহা বিশাসমূলক ও বিশ্বাসজনক, যেমন লেখা আছে, “কিন্ত ধার্ম্মিক ব্যাক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে” বারবার বিশ্বাস প্রয়োগ করার মাধ্যমে আমরা বিশ্বাসের মানুষ হতে পারি। আমি চাই যেন আপনারা এই সত্য বুঝতে পারেন। সত্যিকার অর্থে ঈশ্বর থাকলেও, আমরা যদি ঈশ্বরে বিশ্বাস না করি তাহলে ঈশ্বর আমাদের সাথে থাকেন না। আপনি যদি নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিশ্বাস করেন যে, ঈশ্বর জীবন্ত এবং তিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন, তাহলে আপনার বিশ্বাস দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হবে।
আপনি যদি বিশ্বাসে ঈশ্বরের লোক হতে পারেন, তাহলে ঈশ্বরের সবকিছু বিশ্বাসের মাধ্যমে আপনার হবে। রোমীয় ১:১৭ পদে কি লেখা আছে, “কারণ ঈশ্বর-দেয় এক ধার্ম্মিকতা সুসমাচারে প্রকাশিত হইতেছে, তাহা বিশ্বাসমূলক ও বিশ্বাসজনক,” অর্থাৎ বিশ্বাসের শুরু বিশ্বাস দ্বারা এবং শেষও বিশ্বাসের দ্বারা। কাজেই, যদি আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি এবং যদি বিশ্বাস করি যে, তিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন, তাহলে আমরা উদ্ধার পাব এবং ঈশ্বরের সন্তান হতে পারব। বিশ্বাস না করলে আমরা বিশ্বাসের সন্তান হতে পারি না। ঈশ্বরে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা যা কিছু অন্তর থেকে তাঁর কাছে যাচ্ঞা করি, তিনি সেই প্রার্থনার উত্তর দেন। রোমীয় ১:১৭ পদটি খুব ছোট একটি অংশ হলেও প্রেরিত পৌল এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন। এখন কি আপনি বুঝতে পারছেন, কিভাবে বিশ্বাস দ্ধারা ধার্মিক বাঁচে? “ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস হেতু বাঁচিবে।” পাপীদের জন্য নয়, কিন্ত ধার্মিকদের জন্য বিশ্বাস অপরিহার্য্য।
পাপীদের জন্য প্রথমতঃ যেটা প্রয়োজন, তাহা হল যীশুকে প্রাণকর্তা হিসাবে বিশাস ও গ্রহণ করা। যাহোক, আমরা, নূতন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানেরা বিশ্বাসে জীবন-যাপন করতে পারি। বেঁচে থাকতে হলে কি আমাদের একটা পা দুটো জিনিসের প্রয়োজন? না। বড় বড় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক জিনিসের আমাদের প্রয়োজন হয়। সব ব্যাপারে ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে। আপনি কি বিষয়টি বুঝতে পারছেন ? আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে। বিশ্বাসে আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি এবং বিশ্বাসেই আমরা সমস্ত সংকট থেকে উদ্ধার পাচ্ছি। দূর্বলতা সত্ত্বেও আমাদের বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে। বিয়ে করা থেকে শুরু করে সুসমাচার প্রচার করা পর্যন্ত, সব ব্যাপারেই আমাদের বিশ্বাস প্রয়োজন। যখন আমরা কারো কাছে সুসমাচার প্রচার করি, তখন বিশ্বাসে আমরা এই রকম প্রার্থনা করি, “হে ঈশ্বর, আমি বিশ্বাস করি, তমি এই আত্মাকে রক্ষা করবে।” সব কিছু আমার বিশ্বাস দ্বারা ।
বিশ্বাস ছাড়া আমরা সুসমাচার প্রচার করতে পারি না। শুধুমাত্র বিশ্বাস দ্বারা সুসমাচার প্রচার করতে পারি। বিশ্বাস দ্বারা সুসমাচার প্রচার করলে মানুষ রক্ষা পায়। আপনি কি কখনও বিশ্বাস দ্বারা জীবন-যাপন করেছেন? মানুষ বিশ্বাসহীন ভাবে জীবন-যাপন করে, তারা জানে যে, বিশ্বাসের অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে, তাই পরীক্ষার সময়ে তারা মনে করে, তারা বিরাট পাহাড়ের নিচে পড়ে আছে যা অতিক্রম করা দুঃসাধ্য। যতক্ষণ শক্তি থাকে, ততক্ষণ তারা চেষ্টা করে, শেষে বুঝতে পারে কিছু একটার অভাব রয়েছে। বিশ্বাসের উপর তাদের আস্থা নাই, এবং অনিচ্ছাকৃত ভাবে বেঁচে থাকে, বলে, “মরতে পারছি না বলে বেঁচে আছি।”
কিন্তু ধার্মিকেরা বিশ্বাস দ্বারা স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে ইতিবাচক জীবন-যাপন করে, তারা বিশ্বাস করে এবং যাচ্ঞা করে এবং তারা উত্তর পায়। বিশ্বাস না থাকলে আমাদের মাঝে অমূলক চিন্তা-ভাবনা ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। তখন আমরা মন্ডলীর সাথে চলতে পারি না। বিশ্বাস ছাড়া আমরা প্রভুর সাথে কিভাবে চলতে পারি ? মাংসে বিশ্বাস করার মত কিছু আছে কি ? কিছু না। কিভাবে আমরা বিশ্বাস করতে পারি ? ঈশ্বরে বিশ্বাস না করলে আমরা বিশ্বাস অর্জন করতে পারি না। বিশ্বাসে জীবন-যাপন করলে আমরা মন্ডলীর সাথে চলতে পারি এবং বিশ্বাস দ্বারাই বিশ্বাসে জীবন-যাপন করা যায়। আপনি কি বুঝতে পারছেন? আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন ? তাহলে আপনার যা প্রয়োজন তা যাচ্ঞা করুন। ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন, তাহলে সব কিছু ভালভাবে চলবে। সমস্যা হল, আমরা বুঝতে পারি না যে, আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস দ্বারা বাঁচতে হবে।
আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি যে, বাকী জীবনটা বিশ্বাস দ্ধারা যাপন করার জন্য তিনি আমাদের চালনা দিচ্ছেন।