<রোমীয় ৭:১৪-২৫>
“কারণ আমরা জানি, ব্যবস্থা আত্মিক, আমি মাংসময়, পাপের অধীনে বিক্রীত। কারণ আমি যাহা সাধন করি, তাহা জানি না; কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহাই যে কাজে করি, এমন নয়, বরং যাহা ঘৃনা করি, তাহাই করি। কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি না, তাহাই যখন করি, তখন ব্যবস্থা যে উত্তম, ইহা স্বীকার করি। এইরূপ হওয়াতে সেই কার্য্য আমি আর সাধন করি না, আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। যেহেতুক আমি জানি যে আমাতে, অর্থাৎ আমার মাংসে উত্তম কিছুই বাস করে না; আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়। কেননা আমি যাহা ইচছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। পরন্ত যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। অতএব আমি এই ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি যে, সৎকাৰ্য্য করিতে ইচ্ছা করিলেও মন্দ আমার কাছে উপস্থিত হয়। বস্তুত আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করি। কিন্তু আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য এক ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি; তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে। দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপনি মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ-ব্যবস্থার দাসত্ব করি।”
কত অদ্ভুত তাঁর দয়া!
আমরা প্রভুকে ধন্যবাদ দিই যে, তিনি আমাদের এই গ্রীষ্মকালীয় বাইবেল উপাসনার সুযোগ দিয়েছেন এবং আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রন করে, টাইফুন প্রতিরোধ করে এই সুন্দর দিন দেখতে দিয়েছেন। তিনি আত্মাদের পাঠিয়েছেন এবং তাঁর লোকদের একত্রিত করেছেন আমাদেরকে তাঁর বাক্য দেবার জন্য এবং একে অপরের সহিত পবিত্র আত্মায় এবং সহভাগিতায় আনন্দ করার জন্য।
ঈশ্বর জীবন্ত! কত অদ্ভত তাঁর দয়া! লোকজন এখন ভাবছে যে, সামুদ্রিক ঝড় ‘‘ডগ” আমাদের দেশে আসবে, সুতরাং অফিসের কর্মকর্তারা ইন-জে উপত্যকার সমস্ত লোকজন সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আজ দুপুরে আমি ইন-জে’র শহরতলীতে গিয়েছিলাম। আমি শুনেছিলাম লোকে একে অপরের সাথে বলাবলি করতেছিল, ঝড়ের উপর দঃখ প্রকাশ করছিল, মনে মনে কল্পনা করছিল যে, কত শক্তিশালী এবং ক্ষতিকর এই সামুদ্রিক ঝড়, যদিও আমরা ঈশ্বরের সন্তান এবং এই গ্রীষ্মকালীয় সম্মেলনে সমবেত হয়েছি।
কিন্তু তারা যেটা আশা করছে, সেভাবেই কি সবকিছু ঘটবে? আমরা যদি প্রার্থনা করি তাহলে ঈশ্বরের দয়ায় বৃষ্টি হবেনা। ঈশ্বর কি তাঁর লোকদের উড়িয়ে নিয়ে যাবেন? আবহাওয়ার উপরে ঈশ্বরের কর্তৃত্ব আছে, কিন্তু তিনি আমাদের বিশ্বাসের কারণে তা করেন না। তিনি বুদ্ধিপূর্বক কাজ করেন, তার অর্থ হল, ঈশ্বর আমাদের মধ্যে তাদের পরীক্ষ করেন না, যাদের বিশ্বাস তাদের আশ্চর্যান্বিত করে, “যখন আমরা গ্রীষ্মকালীন সম্মেলনে ছিলাম, তখন কেন ঈশ্বর আমাদের টাইফুন দিলেন।”
যখন আমি খবরে এই ব্যপারে শুনলাম, তখন আমার এই টাইফুন প্রতিরোধ করার কোন ক্ষমতা ছিল না। আমি যা কিছু করতে পারি তা হল-প্রার্থনা। এই গ্রীকালীন বাইবেল সম্মেলন তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে, আমার করার কোন কিছুই ছিলনা। আমি দুঃখার্ত ছিলাম যে, এই সভা আসন্ন ঘূর্নিঝডের জন্য শক্তিশালী হবে না, যা হবে কোন কিছু জোড়া তালি লাগানোর মত। সুতরাং আমি সাহায্য করতে পারি না, কিন্তু ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করতে পারি। আমি প্রার্থনা করি, -“ঈশ্বর আমাদেরকে সাহায্য কর। আমাদের রক্ষা কর। যীশু নামে চাই, আমেন।” এবং যথেষ্ট নিশ্চিত যে, ঈশ্বর ঘূর্ণিঝড় টাইফূন প্রতিরোধ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি ঈশ্বর সব কিছুই জানেন। তিনি আমাদের নিরাপত্তা দেন, কারণ আমাদের চাইতে আমাদের অবস্থা ভাল জানেন।
আবহাওয়া যথার্থরূপে প্রমান দেয় যে, ঈশ্বর জীবন্ত। আমি আমার তাম্বুতে বন্দুকের গুলির মত একটি বজ্র নিনাদ শুনেছিলাম। তাই আমি তাম্বু থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম, এবং আকাশের দিকে তাকিয়েছিলাম। আকাশ অন্ধকার ছিল এবং ঘন মেঘ উপত্যকার উপর দিয়ে আসছিল। সুতরাং আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “প্রভু মেঘ কি আসছে?” আমার হৃদয় দূর্বল হতে আরম্ভ করল, “প্রভু কি হতে যাচ্ছে? ঘুর্নিঝড় কি এখানে পৌঁছাবে? সত্যি এখানে?” কিন্তু আমি প্রার্থনা করেছিলাম এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস করেছিলাম, “প্রভু আমি বিশ্বাস করি তুমি আমাদের দেখাশুনা করবে, আমি তোমাতে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করছি যে, তুমি আমাদের জন্য কাজ করছ।” ঈশ্বর সত্যিই আমাদের আশীর্বাদ করেন, যেভাবে আমরা তাঁকে বিশ্বাস করি। আমি হৃদয় দিয়ে তাঁর ধন্যবাদ করি।
মাংস স্বার্থপর এবং মন্দ
ঈশ্বর যদি আমাদের পক্ষে কাজ না করেন তাহলে আমরা কিছুই করতে পারি না। আমাদের ঈশ্বর আমাদের রক্ষা এবং সাহায্য করেন। আসুন তাঁর বাক্য দেখি। রোমীয় ৭:১৪-২৫ পদে আমাদের বলা হয়েছে যে, প্রেরিত নিজেকে মাংসে স্থিত এবং পাপে বিক্রিত হতে দেখেছেন। তিনি আরো বুঝতে পারেন যে, এটা ব্যবস্থা এবং যতক্ষন তিনি বেঁচে আছেন, মাংস কোন সাহায্য নয় কিন্তু পাপ করবে।
আমরা যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত হই, তারাও মন্দ কাজ করি। যদিও মাংসের দ্বারা ভাল কাজ করতে চাই। রোমীয় ৭:১৯ পদে আছে, “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি।” আমরা দেখতে পাই আমাদের মধ্যে কোন ভাল কাজ নেই। সে কারণে আমরা দুঃখে দীর্ঘশ্বাস ফেলি এবং চিন্তা করি, “আমি বিশ্বাস করতে সক্ষম হব?” আমরা আমাদের হতাশ এবং মন্দ মাংসের কারণে মহা দুর্দশাগ্রস্ত হই। আপনি কি জানেন মাংস কত স্বার্থপর? রোমীয় ৪:১৪ পদে আছে, “কারণ আমরা জানি, ব্যবস্থা আত্মিক, আমি মাংসময়, পাপের অধীনে বিক্রীত।”
আমরা শুধু আমাদের নিজেদের কথাই বলছি, এমনিতেই আমরা কু-কর্মের বীজ। আপনি কি জানেন সমস্ত মানব জাতির মত আমরা কতটা স্বার্থপর? আমরা অবশ্যই জানি আমরা মন্দ, কিন্তু আমরা ঈশ্বরের কাছে আসি না, আমরা আমাদের দিকে যাই। ঈশ্বর অবশ্যই ভাল এবং তাঁর ইচ্ছা উত্তম। যদিও আমরা আমাদের খুব ভালবাসি তথাপি আমরা জানি যে, আমরা মন্দ। ঈশ্বর আমাদের আজ্ঞা দিয়েছেন, তাঁর সম্মুখে অন্য কাউকে ঈশ্বর বলে না মানতে। ঈশ্বর আমাদেরকে পাপ সম্পর্কে জ্ঞান দেবার জন্যে এগুলি বলেছেন।
যদিও আমরা জানি আমরা স্বার্থপর এবং আত্ম-ধার্মিক, আমরা নিজেদেরকে ভালবাসি এবং সবকিছু নিজেদের জন্যই করি। যখন আমরা কোন কিছু পাই, আমরা ছটফট করে উঠি, কিন্তু প্রভুর কাছে আমরা কত কৃপন! এর কারণ হল, আমরা জ্ঞানহীন। শিশুদের কখনো রান্নার কাজে যেতে দেয়া হয় না। তাদের হাত ভাঙ্গার আগ পর্যন্ত তারা থামে না এবং তারা এটা কাউকে বলতে পারে না; কারণ তারা জ্ঞানহীন এবং ছোট। তারা জানে না যে, পৃথিবীতে তারা রান্না করার চেয়ে কতটা বেশী মূল্যবান। আমরা যেটা পছন্দ করি, শিশুরা সেটা পছন্দ করে।
আমাদের পাপ ধুয়ে গেছে, কিন্তু আমরা স্বার্থপর রয়ে গেছি। আমরা প্রভুর ধন্যবাদ করি যে, তিনি তাঁর ক্ষমতা দ্বারা আমাদের পবিত্র আত্মা দিয়েছেন এবং পাপহীন করেছেন। কিন্তু পাপ থেকে রেহাই পাওয়ার পর আমাদের নিজেদের মধ্যে একটা যুদ্ধ শুরু হয় এবং আমরা নূতন জন্ম নিই। এই যুদ্ধ হল মাংস এবং আত্মার মধ্যকার যুদ্ধ। নূতন জন্ম লাভের পর আমরা খুশী হই কিন্তু খুব শিঘ্রই এই যুদ্ধ দ্বারা আমরা আক্রান্ত হই। কিন্তু এখন চান যেন, আমরা তাঁর রাজ্যের জন্য কাজ করি।
প্রভু আমাদের জন্য তাঁর গৌরব ত্যাগ করেছেন। তাঁকে মাংসের সাদৃশ্য পাঠানো হয়েছিল। তাঁকে এ পৃথিবীতে সুদর্শন পুরুষ করে পাঠানো হয়নি। তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন একজন সাধারণ মানুষের মত, হয় তো তিনি খাটো পা যুক্ত এবং কৎসিত ছিলেন। বস্তুত বলা হয়েছে, যীশু মোটেও সুদর্শন ছিলেন না। যিশাইয় বলেন, “কারণ তিনি তাঁহার সম্মুখে উৎপন্ন চারা ন্যায়, এবং শুষ্ক ভূমিতে উৎপন্ন মূলের ন্যায় উঠিলেন; তাঁহার এমন রূপ কি শোভা নাই যে, তাঁহাকে প্রতি দৃষ্টি করি, এবং এমন আকৃতি নাই যে, তাহাকে ভালবাসি” (যিশাইয় ৫৩:২)।
আমাদের মাংস কেবল পাপের দাসত্ব করে। পৌল জানতেন যে, তার দেহ একটা পাপের সমষ্টি। তাই তিনি বলেন, “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি।” তবে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি, কারণ তিনি পাপ সম্পর্কে লজ্জিত ছিলেন।
আমরা আবর্জনার স্তুপের মত। আমরা পাপের সমষ্টি। নিজেদের কাঁধে নোংরামি বা আবর্জনার বোঝা বয়ে চলেছি, তা কত দুঃখ জনক! তারপরেও বিবেক দ্বারা দোষী হয়ে আমরা ঈশ্বরকে বলি, “হে প্রভু আমি এভাবে বাঁচতে চাই না, আমি চাই তোমার ইচ্ছানুসারে চলতে।” কিন্তু আমি পাপ করে ফেলি, প্রভু কিভাবে আমরা এর থেকে মুক্তি পেতে পারি।
নিজের মন্দতা জানতে পারলে আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করতে পারি
আমাদের ঈশ্বর প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যে অনুগ্রহ আমাদিগকে দান করেছেন, তা অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের আত্মার জন্য প্রভু যা করেছেন, তা অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে। কেবলমাত্র তখনই আমরা জানতে পারি কোনটা ঠিক, শুধুমাত্র যখন আমরা প্রভুর সেবা করতে আরম্ভ করি। ইহা ঈশ্বরের দয়া এবং তাঁহাতে আমাদের বিশ্বাস এজন্য আমরা তাঁর অনুসন্ধান করি, আমাদেরকে তাঁর কাছে উৎসর্গ করি, এবং যেভাবে ঈশ্বরকে অন্তর দিয়ে অনুসরন করি এবং তাঁর সাথে চলি, তাহাতে আমাদের সামনে যত পরীক্ষা আসুক আমরা জয়ী হব।
যখন আমরা জানতে পারি যে, ঈশ্বরের সম্মুখে আমরা মন্দ এবং মূল্যহীন, তখন আমরা নিজেদেরকে অস্বীকার করতে আরম্ভ করি। আমরা বুঝি যে, মাংসের কারণে ঈশ্বরের সেবা ব্যতীত পাপকে এড়ানো অসম্ভব, এবং আমরা কিছুই করতে পারি না, যদিও দূর্বলতার জন্য প্রভু আমাদিগকে মহা আশীর্বাদ করেন। আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি, কারণ আমাকে তিনি তাঁর সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। যদি প্রভু আমাকে সুসমাচার প্রচারের সুযোগ না দিতেন, তাহলে আমি পাপের সমষ্টিই থেকে যেতাম। কারণ আমি মাংসময় দেহে আছি, তাই তাঁর সাক্ষাতে ধর্মময় কোন কাজই আমার নাই।
ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেই যে, তিনি আমাকে তাঁর সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। সেই জন্য আমি এইভাবে প্রার্থনা করি, প্রভু আমি তোমার ধন্যবাদ করি। প্রভু আমার অর্থের প্রয়োজন কিন্তু আমার কিছুই নাই। যদিও আমার কিছুই নাই, তবুও আমি তোমার পক্ষে কাজ করতে চাই। দয়া করে আমাকে সাহায্য কর। আমার জন্য নয়, কিন্তু প্রভুর কাজের জন্য আমি অর্থ ব্যয় করব। আমি যদি আমার জন্য অর্থ ব্যয় করি, তবে আমার মাংসিক দেহ সুখ পাবে। কিন্তু আমি প্রভুর জন্য এবং ধর্মময় কাজের জন্য অর্থ ব্যয় করতে চাই, এই অর্থ আমার কাছে খুবই মূল্যবান কারণ আমি এর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। যেহেতু এই অর্থ আমার কাছ মূল্যবান, তোমার উদ্দেশেই আমি এই অর্থ উৎসর্গ করছি। দয়া করে তোমার কাজের জন্য এই অর্থ ব্যয় কর।
যারা নিজেদের মন্দতা সম্পর্কে জানে, তারা জানে যে, তাদের মধ্যে ভাল কিছুই নাই। “তাদের ভিতরে ভাল কিছুই নাই”- কথাটি দ্বারা আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি? আমি বুঝাতে চাচ্ছি যে, তাদের মাংসিক দেহে শুধু মন্দতাই রয়েছে। কেবলমাত্র নিজের জন্য বেঁচে থাকা মন্দ বিষয়।
আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি
পৌল স্বীকার করেন, “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপনি মন দিয়া ঈশ্বরের দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ-ব্যবস্থার দাসত্ব করি” (রোমীয় ৭:২৪-২৫)। মাংস কিসের দাসত্ব করে? মাংস সব সময় পাপের দাসত্ব করে। কিন্তু আমরা আত্মা দ্বারা প্রভুর আরাধনা করি। কার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ জানাই? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।
পৌল বলেন,“আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” আমি ও তাই করি। প্রভু যদি আমাদের সব পাপ তুলে না নিতেন, তাহলে আমি পরিত্রাণ পেতাম না, কারণ এখন পর্যন্ত আমার দেহ পাপের দাসত্ব করে।
“আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। আমিও তাই করি”। প্রভু আমাদের মাংসের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। তাই আমরা তাঁর ধন্যবাদ করি। এমনকি আমরা পাপের ক্ষমা লাভ পাবার পরেও আমাদের দেহ শুধু পাপের দাসত্ব করে। কিন্তু আমাদের আত্মা ঈশ্বরের সেবা করতে চায়। আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। কারণ যীশু খ্রীষ্টে মাধ্যমে তিনি আমাদের আত্মাকে ধার্মিক করেছেন। আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন? আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি এবং তাঁর সেবা করি। কারণ তিনি আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন। প্রভু যদি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে না নিতেন এবং মাংসের পাপ থেকে আমাদের উদ্ধার না করতেন, তাহলে অনন্ত কালের জন্য আমরা ধংস হয়ে যেতাম। আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন?
প্রভু যদি আমাদের পাপ তুলে না নিতেন, তাহলে কিভাবে আমরা শান্তি পেতাম, প্রভুর ধন্যবাদ করতে পারতাম এবং তাঁর আরাধনা করতে পারতাম? যে ব্যক্তি এখনো পাপের মধ্যে রয়েছে, সে কি করে অন্যকে সাহায্য করতে পারে? জেলে থাকা অবস্থায় কি করে কেউ জেলের অন্য লোকদের উদ্ধার করতে পারে? “আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।” আমরা যেন তাঁর সেবা করতে পারি এবং আত্মায় তাঁর শাস্তি পেতে পারি, তাই তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন।
জগত সম্বন্ধে আমরা মৃত
প্রভুর সাহায্য ছাড়া আমরা কিভাবে সুসমাচার প্রচার করতে পারি, ঈশ্বরের সেবা করতে পারি, তাঁর জন্য কাজ করতে পারি এবং তাঁর কাজে অবদান রাখতে পারি? এই সব কিছু আমরা প্রভুর মাধ্যমে করতে পারি। আজ, কাল, পরশু এবং সব সময় আমরা প্রভুর আরাধনা করি। অবিরত করি, এর কোন পরিবর্তন হয় না। এটাই প্রকৃত বিশ্বাস। যারা প্রভুর সেবা করে, তারা গুনবতী ও জ্ঞানী স্ত্রী লোকের মত যে সব সময় তার ঘর সুন্দর রাখে। গরম কড়াই আগুন থেকে সরিয়ে ফেললে যেমন সাথে সাথে ঠান্ডা হয়ে যায়, তেমনি ক্ষনস্থায়ী বিশ্বাসের জীবন-যাপন করবেন না। যতদিন তিনি না আসেন, ততদিন পর্যন্ত প্রভুকে আপনার অনুসরন করা উচিত। নূতন জন্ম পাবার পরে জগত থেকে নিজেকে আপনার বিচ্ছিন্ন রাখা উচিত। আমি আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনি এখন আর জগতের নন। জগত সম্পর্কে আমরা মরে গেছি।
জগতের পরিবারের তালিকা থেকে আমাদের নাম মুছে গেছে। আপনি কি বুঝতে পারছেন? আমাদের নাম আর সেখানে নেই।
জগত হয়তো আপনাকে বলতে পারে, “অনেক দিন তোমাকে দেখি না, খবর কি? শুনলাম তুমি নাকি গির্জায় যোগ দিচ্ছ। আরো শুনলাম তোমার পাপ নাকি ক্ষমা হয়ে গেছে। তাহলে তোমার আর কোন পাপ নেই?”
“না আমার আর কোন পাপ নেই।”
“ অদ্ভুত বিষয়! আমার মনে হয় তুমি ভ্রান্ত মন্ডলীতে যোগ দিয়েছ।”
“না, এরকম চিন্তা করো না। আমার মন্ডলীতে আস। তাহলে দেখতে পাবে, তা কত আনন্দের।”
“এখনো আমার মনে হয় তুমি ভুল করছ।”
এখন আমরা চিন্তা করি, কেন তারা আমাকে বুঝতে পারে না? আমি প্রার্থনা করি যেন, তারা আমার কথা বুঝতে পারে। কিন্তু যারা এখনো নূতন জন্ম পায়নি, তারা কি আমাদের ভাষা বুঝতে পারবে? যারা বুঝতে পারে না যে, মানুষ পাপের ক্ষমা পেতে পারে, তারা কিভাবে আমাদের কথা বুঝতে পারবে? তারা কিভাবে বুঝতে পারবে যে, যীশু তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন? তারা বুঝতে পারে না। সুতরাং, এই আশা করবেন না যে, তারা আপনাকে বুঝতে পারবে। আমাদের জন্য প্রভু জগকে বিদায় জানিয়েছেন। ক্রুশের উপর হলুদ রুমাল দুলিয়ে তিনি বলেছেন, “সমাপ্তি হইল” (যোহন ১৯:৩০)। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, মায়ার কারণে আমরা জগতকে বিদায় জানাতে পারব না। তিনি আরো বলেছেন, “জগতের পরিবারের তালিকা থেকে আমি তোমাদের নাম মুছে দিয়েছি।”
আমরা যারা তাঁর সেবা করতে পারতাম না, আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে তিনি আমাদের তাঁর সেবা করার সামর্থ দিয়েছেন
আমরা কখনো প্রভুর সেবা করতে পারতাম না। কিন্তু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তিনি আমাদের তাঁর সেবা করার সামর্থ দিয়েছেন। প্রকৃতিগতভাবে প্রভুর সেবা করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তিনি আমাদের আহবান করেছেন এবং তাঁর সেবা করার ক্ষমতা দিয়েছেন; এই জন্য অবশ্যই তাঁর প্রশংসা করা উচিত। প্রভু আমাদের ব্যবহার করেন। এটা ঠিক নয় যে, আমরা তাঁর কাজ করি। আপনি কি বুঝতে পারছেন? ধার্মিক প্রভু তাঁর ধর্মময় কাজের জন্য আমাদের ব্যবহার করেন।
একবার প্রচারক লী স্যারের চিঠি সম্পর্কে প্রচার করেছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন যে, তার জীবনটা দুর্গন্ধময় সারের স্তুপের মত ছিল। তা ছিল ভদ্র উদাহরণ। এর চেয়ে ভিন্ন কিছু আপনি কল্পনা করতে পারেন। আমরা এখনো নোংরা। যিরমিয় ১৭:৯ পদে বলা হয়েছে, “অন্তঃকরণ সর্বাপেক্ষা বঞ্চক”। আমাদের মত সর্বাপেক্ষা বঞ্চকদের ঈশ্বর তাঁর প্রশংসা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমাদের প্রভু সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী। তাঁর ধর্মময় কাজের জন্য তিনি আমাদের আহবান করেছেন।
প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন, তাই আমরা তাঁর অনুগ্রহে জীবন-যাপন করতে পারি এবং তাঁকে অনুসরন করতে পারি। তাঁর সাথে আমরা দুঃখভোগ করতে পারি এবং তাঁর সাথে আমরা গৌরবান্বিত হতে পারি। প্রভুর উদ্দেশে আমরা ইতিপূর্বে মরে গেছি। যদি প্রভু আমাদের পাপ তুলে না নিতেন, তাহলে আমরা পরিত্রাণের বাইরে থেকে যেতাম। আমরা যদি মাংসে জীবন-যাপন করতাম, তাহলে আমরা জগতের লোক থেকে যেতাম।
প্রভু আমাদের একেবারে অনন্তকালের জন্য উদ্ধার করেছেন। তিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন এবং তাঁর অনন্তকালীয় কাজের অস্ত্র করেছেন। কি ভীষণ নোংরা এবং মন্দ আমরা! প্রভুর সাথে মিলিত হবার পর আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা কতটা নোংরা এবং মন্দ। তাই যখন আলো দেখতে পাই, আমরা তখন আনন্দ করি। কিন্তু নিজেদের দিকে আমরা যখন তাকাই, তখন পৌলের মত দঃখ করে বলি, “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” (রোমীয় ৭:২৪)।
কিন্তু তার পরেই পৌল প্রভুর প্রশংসা করেন, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি”। প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। আমাদের মাংসের পাপ তিনি মুছে দিয়েছেন। প্রতিদিন আমাদের দেহ কত পাপ করে? এমন ভন্ডামী করবেন না যে, আপনার মাংস পাপ করে না।
আপনি কি প্রভুর ধন্যবাদ করেন?
মাংসময় দেহে আমরা যে সমস্ত পাপ করি, প্রভু তা মুছে দিয়েছেন। আপনি কি বিশ্বাস করেন? যীশু যে জগতের পাপ তুলে নিয়েছেন, তা আপনার কাছে বড় বিষয় নাও হতে পারে, যখন আপনি বুঝতে পারবেন যে, তিনি আপনার মাংসের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তখন আপনি আনন্দে চিৎকার করবেন, “যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। প্রভু, আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তোমার প্রশংসা করি”।
পাপের নিজস্ব ওজন আছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সারাজীবন ধরে আমরা যত পাপ করি, প্রভু তা তুলে নিয়েছেন। কতটা কৃতজ্ঞ আমাদের হওয়া উচিত! আমরা যদি অল্প পাপ করতাম, তাহলে অনুতাপের প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা সেই পাপের ক্ষমা চাইতাম। কিন্তু সারা জীবন ধরে অবিরত আমরা অসংখ্য পাপ করি। যখন আমরা এটা বুঝতে পারি, তখন প্রভুর প্রশংসা না করে পারি না, “হে প্রভু, আমি তোমার ধন্যবাদ করি। তুমি আমার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছ। আমি তোমার প্রশংসা করি”। আমরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অর্থাৎ “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে”। আপনি কি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করেন এবং এই ভাবে পাপ স্বীকার করেন? “প্রভু তোমার ধন্যবাদ করি। তোমার ধার্মিকতার মাধ্যমে আমাকে আহবান করেছ এবং উদ্ধার করেছ। এই জন্য আমি তোমার ধন্যবাদ করি। আমার মাংসের সমস্ত পাপ থেকে আমাকে উদ্ধার করেছ বলে আমি তোমার ধন্যবাদ করি।” আপনি কি প্রভুর ধন্যবাদ করেন? পাপের ক্ষমা পাওয়া এ রকম সহজ ব্যাপার, কিন্তু এটাকে হালকা করে নেবেন না। এটা খুবই পবিত্র, মহৎ, মূল্যবান এবং অনন্তকালস্থায়ী।
আমাদের নিজস্ব ভাল কিছু নেই, তাই অবশ্যই প্রভুকে আমাদের অনুসরন করতে হবে
আমরা পাপের সমষ্টি। আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, আমরা অন্ধকারাচ্ছন্ন। “আমি অন্ধকার কিন্তু তুমি আলো। আমি সম্পূর্ণরূপে অন্ধকার হলেও তুমি প্রকৃত আলো। তুমি সূর্য্য, আমি চাঁদ।” সূর্যের আলোতে আলোকিত হয়ে চাঁদ পৃথিবীকে আলোকিত করে।
চাঁদ নিজেই আলো দিতে পারে না। সূর্যের থেকে আলো গ্রহণ করে সেই আলো প্রতিফলিত করে। সব কিছুই অন্ধকারাচ্ছন্ন। আপনি আলো না অন্ধকার? প্রভুবিহীন অবস্থায় আমরা অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকি। যীশু খ্রীষ্টের কারণে আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে পারি, তাঁর প্রশংসা করতে পারি এবং তাঁকে অনুসরন করতে পারি। কারণ খ্রীষ্টে কোন দন্ডাজ্ঞা নেই। অন্য কথায়, মাংসের দাসত্ব করা মানেই অন্ধকারের দাসত্ব করা, যত শীঘ্র পারেন মাংসকে পরিত্যাগ করুন। আমরা যত কঠিন পরিশ্রম করি না কেন, আমাদের মাংসের কোন পরিবর্তন হয় না। আমাদের ভিতরে উত্তম কিছুই নেই। আমাদের মাংস চিরস্থায়ী নয়, তাই আমাদের অবশ্যই আত্মায় বাঁচতে হবে। যে আত্মায় জীবন-যাপন করে সে জ্ঞানী। যত শীঘ্র সম্ভব নিজেদেরকে জানতে হবে এবং নিজেদের সত্ত্বাকে পরিত্যাগ করতে হবে। আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, প্রত্যাশা করার মত আমাদের কিছুই নেই এবং আমাদের ভিতরে উত্তম কিছুই নেই। আমরা পাপের সমষ্টি, সব সময় মাংসের দাসত্ব করি। মাংস বলে, “আমি যা চাই তাই দাও”। এবং রক্ত চোষা জোঁকের মত আমাদের দেহের সাথে লেগে থাকে (হিতোপদেশ ৩০:১৫)।
খাওয়া দাওয়ার পরে একবার পায়খানায় গেলেই আমাদের আবার ক্ষুধা লাগে। যত রকম ভাবেই চেষ্টা করি না কেন, আমাদের মাংস কখনও তৃপ্ত হয়না। যত বেশীই খাই বা যত ভাল খাবারই খাই না কেন, কিছুক্ষন পরে আমাদের আবার ক্ষুধা লাগে। কিন্তু আমরা যত বেশী প্রভুর প্রশংসা করি, যত তাঁর পথে চলি, ততই আমাদের আনন্দ বৃদ্ধি পায়।
প্রভুকে অনুসরন করলে আমরা কখনও শুন্য থাকি না। পরিত্রাণ পাবার মাধ্যমে আপনি কি অনন্ত আনন্দ পেতে চান? তাহলে প্রভুকে অনুসরন করুন। আপনি কি আলোকিত জীবন-যাপন করতে চান? প্রভুকে অনুসরন করুন। আপনি কি ফলবান জীবন-যাপন করতে চান? এটা মনে রাখুন যে, আপনি অন্ধকার, আলোকে অনুসরন করুন।
প্রভু আমাদের যে দিকে চালান, আমরা সে দিকে চলি, যেখানে থামতে বলেন, সেখানে থামি। প্রভু যা করতে বলেন, আমরা তাই করি, তা করতে নিষেধ করেন, আমরা তা করি না। আমরা অবশ্যই তাঁর সাথে এবং তাঁকে অনুসরন করে চলব। প্রত্যাশা করার মত আপনার ভিতরে কি কিছু আছে? অবশ্যই না। তাঁকে আমাদের অবশ্যই অনুসরন করতে হবে, কারণ প্রত্যাশা করার মত আমাদের নিজেদের কিছুই নাই। আপনার মাংস কি অনন্তকাল স্থায়ী? অবশ্যই না। তাহলে, যা কিছু দিতে পারবে না, বা যা অনন্তকালস্থায়ী নয়, কেন তা অনুসরন করছেন?
অনেক দিন আগে এই ধরনের গান আমি গাইতাম, “আমার যৌবন আমাকে ফিরিয়ে দাও।” কিন্তু এখন ঈশ্বর আমার যৌবন ফিরিয়ে না দিলেও আমি ভাল আছি। দ্বিতীয়ত আমার মনে হয়, যৌবন ফিরে পেতে আমি সুখী হতাম না। আমাদের জীবনের আলো প্রভুকে অনুসরন করলে, ধার্মিকতার মুকুট আমাদের জন্য রয়েছে। আপনাকে আবার শৈশবে ফিরে যাবার প্রয়োজন নেই। বরং আমরা গাই, “♪আমি প্রভুকে অস্বীকার করব না, জীবনে বাকী সময় প্রতিদিন তাঁর অনুসরন করব।♪” এতে বোঝা যায় যে, সত্যিকার বিশ্বাস থাকলে আমরা প্রভুকে অস্বীকার করি না, সব সময় ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। আসুন সুসমাচারের এই গানটি করি।
“♪আমি ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করি। যিনি ধূলি থেকে মানুষ সৃষ্টি করেছেন, নাসিকায় প্রায় বায়ু প্রবেশ করিয়েছেন, যিনি তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন আমি তাঁর সাদৃশ্যে সৃষ্ট তাই আমাকে তাঁর উদ্দেশে উৎসর্গ করি আমি প্রভুকে অস্বীকার করব না জীবনের শেষ পর্যন্ত তাঁর অনুসরন করব।♪”
প্রভুকে আমি আসলেই ধন্যবাদ দেই
প্রভুকে আমি আসলেই ধন্যবাদ দেই। তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তাঁর সেবা করার অধিকার দিয়েছেন এবং তাঁর ধর্মময় কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। মাংসে আমরা যে সব পাপ করি প্রভু যদি তা তুলে না নিতেন, তাহলে আমরা কিভাবে তাঁর কাজ করতে পারতাম? ০.১%ও পারতাম না। যত ভাল স্বভাবেরই হোক না কেন, পাপী সব সময়ই মন্দ। প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের তাঁর সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন, তা কত আনন্দের বিষয়। আমরা যারা মন্দ বিষয়ের ভিতরে নিমজ্জিত ছিলাম, প্রভু আমাদের সেই সব মন্দতা মুছে দিয়েছেন, তা কত চমৎকার বিষয়! আমরা নরকযোগ্য ছিলাম, দুর্ভাগা ছিলাম এবং ব্যর্থ জীবন-যাপন করছিলাম।
প্রভু তাঁর অনুগ্রহে আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়ে আমাদেরকে আশীর্বাদ করেছেন। এই প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস প্রমান করে যে, আমাদের জন্য ঈশ্বরের অনুগ্রহ মহৎ। হৃদয়ে পাপ নিয়ে আমরা কিভাবে ধার্মিক হতে পারতাম? আমাদের হৃদয়ে যে পাপ নেই, তা অবশ্যই অসাধারণ অনুগ্রহ। ঈশ্বরের প্রশংসা হোক। এখন আমরা প্রভুর বাক্য শুনছি, হয়তো এই প্রার্থনার গৃহ থেকে বেরিয়ে যাবার পর পরই আমরা আবার পাপ করব। তাই প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন বিধায় আমরা তাঁর ধন্যবাদ করি। এ ব্যপারে কোন সন্দেহ নেই যে, যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে প্রভুর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হয়েছে এবং ক্ৰুশীয় বিচারের মাধ্যমে তিনি আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন। আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি এবং তাঁর প্রশংসা করি। তাহলে আমরা কিভাবে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারি? যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারি।
সুপ্রিয় ভক্তগণ, সারাজীবন ধরে যত চেষ্টা করি না কেন, প্রভুর অনুগ্রহের প্রতিদান আমরা কখনই দিতে পারব না। যিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, দূর্বলতা সত্ত্বেও তাঁর কাজে নিয়োগ করেছেন, অনন্তকাল ধরেও তাঁর প্রশংসা করলেও যথেষ্ট হবে না। সারাজীবন তাঁর প্রশংসা করলেও শেষ হবে না।
আমরা জানি যে, আমাদের মধ্যে উত্তম কিছুই বাস করে না। বিষয়টি চিন্তা করুন। সারাজীবন কি আপনি পাপ করবেন? আপনি অবশ্যই পাপ করবেন, কিন্তু ইতিপূর্বেই প্রভু আপনার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। ঈশ্বরের কাজ করার জন্য প্রভু আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। প্রভু তাঁর সেবা করার অধিকার দিয়েছেন। প্রভুকে ধন্যবাদ না দিয়ে আমরা পারি না। আমি চাই আপনি প্রভুর প্রশংসা করুন এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে সারাজীবন ধরে কৃতজ্ঞতার জীবন-যাপন করুন। ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতার জীবন-যাপন করার জন্য প্রভু আমাদের অধিকার দিয়েছেন। মাংসে কৃত সমস্ত পাপ থেকে ঈশ্বর আমাদের উদ্ধার করেছেন। আমরা যেন হৃদয় দিয়ে তাঁর সেবা করতে পারি, সেই উদ্দেশ্যে প্রভু আমাদের পরিত্রাণ করেছেন। প্রভুর অনুগ্রহ এত মহৎ যে, আমরা তাঁর অনুসরন করতে চাই এবং তাঁর সেবা করতে চাই। আসুন অন্তঃকরণে তাঁর সেবা করি।
যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে দেওয়া ঈশ্বরের অনুগ্রহ কত মহৎ! আমি চাই আপনি যেন বুঝতে পারেন, আমাদের মাংস কত মন্দ এবং দূর্বল, যেন আপনি নিজের কর্ম বুঝতে পারেন, প্রভু আপনার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন কি না, তা যেন বুঝতে পারেন, যেন প্রভুর ধন্যবাদ করেন এবং বিশ্বাসে জীবন-যাপন করেন। যিনি আমাদের এই মূল্যবান জীবন দিয়েছেন, আমি সেই প্রভুর ধন্যবাদ করি। “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপনি মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করি” (রোমীয় ৭:২৫)। হৃদয় দিয়ে আমরা ঈশ্বরকে ভালবাসি, কিন্তু মাংস দিয়ে আমরা পাপকে ভালবাসি। কিন্তু আমাদের প্রভু প্রিয়তম। যতক্ষন আমরা ব্যবস্থাবিহীন কাজের মাধ্যমে পাপ না করছি, ততক্ষন পাপ হয় না। কিন্তু ভবিষ্যতেও যেসব পাপ আমরা করব, তাও প্রভু ইতিপূর্বে মুছে দিয়েছেন। তাই প্রভু প্রিয়তম এবং তাই তাঁর ধন্যবাদ করা উচিত।
প্রভু তোমার ধন্যবাদ করি। তোমার ধন্যবাদ করার মত হৃদয় দিয়েছ বলে আমি তোমার প্রশংসা করি এবং সারাজীবন ধরে মাংসে কৃত পাপ ক্ষমা করেছ বলে আমি তোমার ধন্যবাদ করি।