Search

Kazania

বিষয় ১১: আবাস

[1-2] সাতটি যুগ সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে (প্রকাশিত বাক্য ১: ১-২০)

সাতটি যুগ সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে
<প্রকাশিত বাক্য ১: ১-২০ >
 
এই অন্ধকার যুগেও প্রভু আমাদের যে, প্রত্যাশা দিয়েছেন, সেই জন্য আমি তাঁর ধন্যবাদ করি৷ আমাদের প্রত্যাশা এই যে, প্রকাশিত বাক্যে লিখিত সমস্ত ঘটনাই প্রকাশ পাবে, এবং বিশ্বাসে আমরা এই প্রতীক্ষায় আছি যে, ভাববাণীর বাক্যগুলো পূর্ণ হবে৷
প্রকাশিত বাক্যে অনেক কিছু লেখা হয়েছে৷ বিভিন্ন পন্ডিতেরা অনেক রকম মতবাদ ও তাত্পর্য ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু বাইবেল ভিত্তিক কোনটা হয়েছে, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে৷ একমাত্র ঈশ্বরের অনুগ্রহেই আমি অফুরন্ত সময় ধরে প্রকাশিত বাক্য পড়েছি এবং গবেষণা করেছি, এবং এই কারণে, আমি এই বইটি লিখতে সক্ষম হয়েছি৷ এমনকি এই লেখার সময়ও আমার হৃদয় প্রত্যাশায় পূর্ণ রয়েছে৷ পবিত্র আত্মাও আমাকে এই বই লিখতে সম্পূর্ণরূপে সাহায্য করেছেন৷
এটা কিছুটা বিস্ময়ের বিষয় যে, আমার হৃদয়ও স্বর্গীয় প্রত্যাশায় এবং সহস্র বর্ষের রাজ্যের গৌরবে পর্যাপ্তরূপে পূর্ণ থাকবে৷ প্রভুর পক্ষে সাক্ষ্যমর হওয়া যে কতটা গৌরবের বিষয় তাও আমি অনুধাবন করতে পেরেছি৷ এখন, ঈশ্বর আমাকে যে জ্ঞানের বাক্য দিয়েছেন, টা আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই, যেন আপনি টা বুঝতে পারেন৷
প্রকাশিত বাক্যের উপরে এই বইটি লেখার সময়েও আমার হৃদয় ঈশ্বরের মহিমায় পূর্বের চেয়ে আরও বেশী পূর্ণ হচ্ছে৷ আমি খোলাখুলিভাবে বলতে চাই যে, এর পূর্বে প্রকাশিত বাক্যের মহত্ত্ব আমি বুঝতে পারি নি, যোহনকে ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের জগত দেখিয়েছেন৷ “যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য” বলতে প্রথমেই কি বোঝানো হয়েছে? প্রকাশিত বাক্যের আভিধানিক অর্থ হল স্বর্গীয় সত্য প্রকাশ করা বা তার সাথে যোগাযোগ৷ যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য তাই, ভবিষ্যতে যীশু খ্রীষ্টে যে ঘটনা ঘটবে তাই বোঝানো হয়েছে৷ অন্যভাবে বলতে গেলে, শেষ কালে যে সমস্ত ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, ঈশ্বর টা যীশু খ্রীষ্টের দাস যোহনকে দেখিয়েছেন৷
প্রকাশিত বাক্যের গভীরে প্রবেশ করার আগে একটা বিষয় আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে, টা হল – ভাববাণীর এই পুস্তকটি প্রতিকী নাকি বাস্তবতা মূলক৷ প্রকাশিত বাক্যে যা লেখা হয়েছে, তার সবই বাস্তবতা মূলক, যা ঈশ্বর যোহনকে দর্শনের মাধ্যমে দেখিয়েছিলেন এবং যোহন আমাদের কাছে তা সবিস্তারে বর্ণনা করেছিলেন৷
একথা সত্য যে, বিভিন্ন পন্ডিতগণ ভাববাণীমূলক এই পুস্তকের বিভিন্ন ব্যাখ্যা এবং মতবাদ দাঁড় করিয়েছেন৷ এটাও সত্য যে, পন্ডিতেরা তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন যেন প্রকাশিত বাক্যের নিগুঢ়তত্ত্ব উন্মোচন করতে পারেন৷ কিন্তু তাদের এইসব কল্পিত ধারণা বা ব্যাখ্যাগুলো খ্রীষ্টীয় সমাজের বেশ ক্ষতি করেছে, যেহেতু তারা বাইবেলের সত্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন নি, যার কারণে দ্বিধার সৃষ্টি হয়েছে৷ যেমন অনেক রক্ষনশীল পন্ডিতেরা তথাকথিত ""amillennialism`` কে সমর্থন করেছেন, অর্থাৎ - তারা দাবি করেন যে, সহস্র বত্সরের রাজ্য বলতে কিছু নেই৷ কিন্তু এ ধারণা বাইবেলের সত্য থেকে অনেক দুরে৷ 
প্রকাশিত বাক্যের ২০ অধ্যায়ে সহস্র বর্ষের রাজত্বের বিষয়ে বাস্তবতামূলক লেখা রয়েছে, সেখানে লেখা রয়েছে যে, এই রাজ্যে ভক্তগণ শুধু যে রাজত্ব করবেন তাই নয়, কিন্তু হাজার বছর তারা খ্রীষ্টের সাথেও থাকবেন৷ অন্যদিকে একুশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, সহস্র বর্ষের রাজত্বের পড়ে ভক্তগণ নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীর অধিকারী হবেন এবং খ্রীষ্টের সঙ্গে অনন্তকাল রাজত্ব করবেন৷ বাইবেল আমাদের বলে যে, বিশ্বাসীদের হৃদয়ে এ সমস্ত সত্য প্রতিকী হিসাবে যে সিদ্ধ হবে তা নয়, বরং ইতিহাসের বাস্তবতায় টা সিদ্ধ হবে৷
কিন্তু বর্তমানের খ্রীষ্টিয়ানদের দিকে তাকালে দেখা যায় যে, খুব অল্পজনের মধ্যেই এই সহস্র বর্ষের রাজ্যের প্রত্যাশা রয়েছে৷ তাদের দাবি যদি অস্বীকার মূলক হয়, তার মানে কি এই বোঝায় না যে, বিশ্বাসীগণের কাছে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অন্তঃসারশূন্য ? বিশ্বাসীদের যদি সহস্রাব্দের রাজ্যের প্রতীক্ষা বা নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীর প্রত্যাশা না থাকত, তবে ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের প্রতি তাদের বিশ্বাস অমূলক হত৷
এর সাথে সম্পর্ক রেখে বলা যায় যে, প্রকাশিত বাক্যে ৬৬৬ সংখ্যার যে ছাপের কথা বলা হয়েছে, অনেক ধর্মতত্ত্ববিদ এবং প্রচারকেরা আজকাল একে প্রতিকী হিসাবে মনে করেন৷ কিন্তু ভুল করবেন না; যে সমস্ত দুর্ভাগা আত্মাগণ এই ভ্রান্ত দাবি করে, যখন এই ভাববাণী পূর্ণতা পাবে, তখন দেখা যাবে যে, তারা বালুচরে ঘর বেঁধেছে৷
যারা যীশুতে বিশ্বাস করে, তারা যদি বাইবেলে প্রকাশিত এই সত্যের বাক্যে বিশ্বাস না করে, ঈশ্বর তাদেরকে অবিশ্বাসী হিসাবে গণ্য করবেন৷ এর দ্বারা শুধু এটাই বোঝা যায় যে, তারা যে শুধু ঈশ্বরের দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচার জানে না, তাই নয়, পবিত্র আত্মাও তাদের মধ্যে বসবাস করেন না৷ এই জন্য তাদের হৃদয়ে আমাদের জন্য ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত সহস্র বর্ষের রাজত্ব বা সেই নুতন আকাশ বা নুতন পৃথিবীর কোনো প্রত্যাশাই নেই৷ এমনকি যীশুতে তারা বিশ্বাস করলেও ঈশ্বরের লিখিত বাক্যের সত্য অনুযায়ী তারা তাঁকে বিশ্বাস করে নি৷ প্রকাশিত বাক্যে যা লেখা হয়েছে টা ঈশ্বরের বাক্য, অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীতে যা অবশ্যই ঘটতে যাচ্ছে, এখানে সেইসব ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে৷
প্রকাশিত বাক্যের ২ এবং ৩ অধ্যায় এশিয়ার সাতটি মন্ডলীর সমন্ধে সতর্কীকরণের বাক্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে৷ সেখানে এই সাতটি মন্ডলীর প্রতি ঈশ্বরের প্রশংসা এবং তিরস্কার লিপিবদ্ধ করা হয়েছে৷ সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, তাদেরকে ঈশ্বর জীবন-মুকুট দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন, যারা তাদের বিশ্বস্ততা ধরে রাখতে পারবে এবং পরীক্ষায় জয়ী হবে৷ এর অর্থ হল, শেষ কালে সব বিশ্বাসীদের জন্য সাক্ষ্যমরের মৃত্যু অপেক্ষা করছে৷
প্রকাশিত বাক্যের পুস্তকটি সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু, তাদের পুনরুত্থান ও রূপান্তর এবং তাদের জন্য ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত সহস্র বর্ষের রাজত্ব এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী সম্পর্কে লেখা হয়েছে৷ সাক্ষ্যমরের মৃত্যু সম্পর্কে যাদের নিশ্চয়তা রয়েছে, তাদের জন্য প্রকাশিত বাক্য শান্তি এবং মহা আশীর্বাদের বিষয় হতে পারে; কিন্তু এতে যারা বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য খুব অল্পই এখানে আছে৷ সুতরাং প্রকাশিত বাক্যে লিখিত প্রতিজ্ঞার ভিত্তিতে এবং শেষ কালের সত্য বাক্যের ভিত্তিতে অনমনীয় বিশ্বাসের সাহায্যে দৃঢ়ভাবে জীবনযাপন করতে পারি৷
প্রকাশিত বাক্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হল, সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু তাদের পুনরুত্থান ও রূপান্তর এবং সহস্র বর্ষের রাজত্ব এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী, এই প্রাথমিক মন্ডলীর জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্য এবং সংকল্প ছিল, যেন সাধুগণ তাদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু পর্যন্ত স্থির থাকতে পারে৷ কারণ, এই সমস্ত কিছু ঈশ্বরের সংকল্প ছিল যে, তিনি সমস্ত সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু সম্পর্কে বলেছিলেন৷ অন্য কথায় ঈশ্বর আমাদের বলেছেন যে, শেষ কালে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর মাধ্যমে সাধুগণ খ্রীষ্টারীকে জয় করবে৷
প্রকাশিত বাক্যের ১-৬ অধ্যায়ের নিগুঢ়তত্ত্ব ভালোভাবে বুঝতে পারলে পুরো পুস্তকটির সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে৷ প্রথম অধ্যায়কে ভূমিকা বলা যেতে পারে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অধ্যায়তে আদি মন্ডলীর সাধুগণের মৃত্যু সমন্ধে বলা হয়েছে৷ যীশু যে ঈশ্বরের সিংহাসনে বসে আছেন, চতুর্থ অধ্যায়ে সে বর্ণনা আছে৷ পিতা ঈশ্বরের সংকল্প এবং টা পূর্ণতা হওয়ার বিষয়ে যীশু খ্রীষ্ট ৫ অধ্যায়ে প্রকাশ করেছেন এবং মানুষের জন্য যে সাতটি যুগ ঈশ্বর নির্ধারণ করে রেখেছেন, ষষ্ঠ অধ্যায়ে সেই বিষয়ে প্রকাশ করা হয়েছে৷ ষষ্ঠ অধ্যায়টি বোঝা বিশেষভাবে প্রয়োজন কারণ, এখানে পুরো পুস্তকটিকে বোঝার দরজা আমাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে৷ 
যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পিতা ঈশ্বর মানবজাতির জন্য যে পরিকল্পনা করে রেখেছেন, ষষ্ঠ অধ্যায়ে সেই ৭টি যুগের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে৷ মানবজাতির জীবনে ঈশ্বর যে সাতটি যুগ আনয়ন করবেন, এই মহাপরিকল্পনাতে ঈশ্বরের সেই স্বর্গীয় দুরদর্শিতার বিষয়ে বলা হয়েছে৷ এই ৭টি যুগ সম্পর্কে আমরা জানতে ও বুঝতে পারবে, তখন আমরা বুঝতে পারব যে, আমরা কোন যুগে বাস করছি৷ আমরা আরো বুঝতে পারব যে, পান্ডুর বর্ণ অশ্বের যুগে সমস্ত কিছু জয় করে বেঁচে থাকতে হলে, এবং খ্রীষ্টারীর যুগে জয়ী হতে গেলে কি ধরণের বিশ্বাসের প্রয়োজন৷
ষষ্ঠ অধ্যায়ে লেখা আছে, প্রথম মুদ্রা খুললে একটি শ্বেত অশ্ব বেরিয়ে এলো৷ অশ্বারোহীর হাতে ধনুক ও তাকে একটি মুকুট দেওয়া হল, এবং সে জয় করতে করতে এবং জয় করবার জন্য বের হল৷ শুক্ল বর্ণ অশ্বের আরোহী যীশু খ্রীষ্ট, তাঁর হাতে ধনুক রয়েছে, এর অর্থ হল, তিনি অবিরত শয়তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন, এবং জয় করেছেন৷ অন্যভাবে বলতে গেলে শুক্লবর্ণের অশ্বের যুগ বলতে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিজয় সম্পর্কে বলা হয়েছে, যা ঈশ্বর এই পৃথিবীর জন্য অনুমোদন করেছেন, এবং ঈশ্বরের সংকল্প পুনর্বার সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত এই রূপে চলতে থাকবে৷
দ্বিতীয় যুগ হল, লোহিত বর্ণ অশ্বের যুগ৷ এটা শয়তানের যুগ; যখন শয়তান মানুষের হৃদয়কে প্রতারণা করে যুদ্ধের জন্য প্রলুব্ধ করবে, জগত থেকে শান্তি হরণ করবে এবং ভক্তগণের উপরে তাড়না করবে৷
লোহিত বর্ণের অশ্বের যুগের পরে আসবে কৃষ্ণবর্ণের অশ্বের যুগ, যখন দুর্ভিক্ষ মানুষের দেহ ও আত্মাকে আঘাত করবে৷ আপনি এবং আমি এখন আত্মিক ও দৈহিক দুর্ভিক্ষের যুগে বাস করছি৷ অদূর ভবিষ্যতে পান্ডুর বর্ণের অশ্বের যুগ আসছে, খ্রীষ্টারীর উত্থান হবে এবং তার উত্থানে সমস্ত পৃথিবী মারাত্মক ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হবে৷
পান্ডুর বর্ণের অশ্বের যুগটি চতুর্থ যুগ৷ সপ্ত তুরীর মহামারীর দ্বারা পৃথিবী আক্রান্ত হবে, এক তৃতীয়াংশ বন-জঙ্গল পুড়ে যাবে এবং এক-তৃতীয়াংশ সাগর রক্তে পরিণত হবে, এক-তৃতীয়াংশ বিশুদ্ধ খাবার জল রক্ত হয়ে যাবে, এবং আক্রান্ত হয়ে সূর্যের এক-তৃতীয়াংশ অন্ধকার হয়ে যাবে৷ 
পঞ্চম যুগ হল, সাধুগণের পুনরুত্থান ও রূপান্তরের যুগ৷ প্রকাশিত বাক্য ৬:৯-১০ পদে যেমন লেখা আছে, “পরে তিনি যখন পঞ্চম মুদ্রা খুলিলেন, তখন আমি দেখিলাম, বেদির নীচে সেই লোকদের প্রাণ আছে, যাঁহারা ঈশ্বরের বাক্য প্রযুক্ত, এবং তাঁহাদের কাছে যে সাক্ষ্য ছিল, তৎপ্রযুক্ত নিহত হইয়াছিলেন। তাঁহারা উচ্চ রবে ডাকিয়া কহিলেন, হে পবিত্র সত্যময় অধিপতি, বিচার করিতে এবং পৃথিবী নিবাসীদিগকে আমাদের রক্তপাতের প্রতিফল দিতে কত কাল বিলম্ব করিবে? ”
ষষ্ঠ যুগ হল, মহাক্লেশের যুগ৷ প্রকাশিত বাক্য ৬:১২-১৭ পদ অনুযায়ী, পরে আমি দেখিলাম, তিনি যখন ষষ্ঠ মুদ্রা খুলিলেন, তখন মহাভূমিকম্প হইল; এবং সূর্য্য লোমজাত কম্বলের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ ও পূর্ণচন্দ্র রক্তের ন্যায় হইল; আর ডুমুরগাছ প্রবল বায়ুতে দোলায়িত হইয়া যেমন আপনার অপক্ব ফল ফেলিয়া দেয়, তেমনি আকাশমণ্ডলস্থ তারা সকল পৃথিবীতে পতিত হইল; আর আকাশমণ্ডল সঙ্কুচ্যমান পুস্তকের ন্যায় অপসারিত হইল, এবং সমস্ত পর্ব্বত ও দ্বীপ স্ব স্ব স্থান হইতে চালিত হইল। আর পৃথিবীর রাজারা ও মহতেরা ও সহস্রপতিগণ ও ধনবানেরা ও বিক্রমিবর্গ এবং সমস্ত দাস ও স্বাধীন লোক গুহাতে ও পর্ব্বতীয় শৈলে আপনাদিগকে লুকাইল, আর পর্ব্বত ও শৈল সকলকে কহিতে লাগিল, আমাদের উপরে পতিত হও, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার সম্মুখ হইতে এবং মেষশাবকের ক্রোধ হইতে আমাদিগকে লুকাইয়া রাখ; কেননা তাঁহাদের ক্রোধের মহাদিন আসিয়া পড়িল, আর কে দাঁড়াইতে পারে?
তাহলে, আমাদের জন্য ঈশ্বরের নির্ধারিত সপ্তম যুগে কি ঘটবে? এই যুগে ঈশ্বর তাঁর সাধুগনকে সহস্র বর্ষের রাজত্ব দেবেন এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী দেবেন৷
আমরা তাহলে, এই সাতটি যুগের মধ্যে কোনটিতে বাস করছি? আমরা লোহিত বর্ণের অশ্বের যুগের যুদ্ধের দামামা কাটিয়ে এখন কৃষ্ণবর্ণের অশ্বের যুগে আছি৷
হতাশাব্যঞ্জকরূপে নয়, কিন্তু বিশ্বাসীগণকে প্রত্যাশাযুক্ত আত্মায় অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রকাশিত বাক্য পুরোটা লেখা হয়েছে৷ ঈশ্বর বলেন যে, শুধু যে শেষ কালে সহস্র বর্ষের রাজত্বের প্রত্যাশাই বিশ্বাসীগণকে দেবেন তাই নয়, বরং তাদেরকে এই জগতে অনাথ ফেলে রাখবেন না তাও তিনি বলেছেন৷
প্রকাশিত বাক্যের সত্য অনুধাবন করতে হলে প্রথমেই আমাদের এই সমস্ত ভ্রান্ত শিক্ষা দূর করতে হবে, যথা; মহাক্লেশের পূর্বে রূপান্তর, amillenialism, মহাক্লেশ পরবর্তী রূপান্তর এবং শাস্ত্রের প্রতি ফেরা৷ 
যীশু খ্রীষ্টে সাতটি যুগ ঈশ্বর আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন৷ সৃষ্টির একেবারে প্রথমে ঈশ্বর সাধুদের জন্য যীশু খ্রীষ্টের এই সাতটি যুগের সংকল্প করেছিলেন৷ তথাপি, ঈশ্বরের নির্ধারিত এই সাতটি যুগ সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে অনেক পন্ডিতেরা তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যায় কাল্পনিক চিন্তা থেকে প্রকাশিত বাক্যের ব্যাখ্যা করেছেন, যার ফলে মানুষ আরো বেশী দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে৷ কিন্তু আমাদের সকলকে ঈশ্বরের পরিকল্পিত এই সাতটি যুগ সম্পর্কে জানতে হবে এবং এই সত্যের জ্ঞান এবং বিশ্বাস দ্বারা আমাদের জন্য তিনি যা সাধন করেছেন তার জন্য ধন্যবাদ ও গৌরব করতে হবে৷ সাধুগণের জন্য ঈশ্বরের নির্ধারিত পরিকল্পনা এবং সংকল্প এই সাতটি যুগের মধ্যেই সিদ্ধ হবে৷
আমি আশা করি যে, এ পর্যন্ত যতটুকু আলোচনা করেছি, তার দ্বারা প্রকাশিত বাক্যের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার মৌলিক ধারণা হয়েছে৷ প্রকাশিত বাক্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে, জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে যীশু খ্রীষ্টে সাতটি যুগ ঈশ্বরের সাতটি যুগের সূচনা করেছে৷ এই সাতটি যুগ সম্পর্কে জানতে পারলে আমাদের বিশ্বাস আরো গাঢ় হবে৷ এই জানার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারব, কৃষ্ণবর্ণের অশ্বের যুগে কোন ধরণের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের গমন করতে হবে এবং এই উপলব্ধির মাধ্যমে আমরা বিশ্বাসে বেঁচে থাকতে পারব৷
ঈশ্বরের সংকল্পিত সাতটি যুগের মধ্যে পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ যখন আসবে, তখন বিশ্বাসীগণকে (আমি/আপনিও আছি) সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করতে হবে, যখন বিশ্বাসীরা এটা অনুধাবন করতে পারবে, তখন তাদের হৃদয় প্রত্যাশায় পূর্ণ হবে, আগে যা দেখতে পায় নি, তাদের চোখ তাই দেখতে পাবে৷ ঈশ্বরের সাধুগণ ও ভক্তগণ বুঝতে পারবে যে, সাক্ষ্যমরের যুগ আসন্ন, তাদের জীবনের সমস্ত জঞ্জাল পরিস্কার হয়ে যাবে৷ যখনই তারা বুঝতে পারবে যে, পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগে তাদের সাক্ষ্যমর হতে হবে৷ তখন যা তারা অনুভব করতে পারছে না, সে উদ্দেশ্যে তাদের হৃদয় প্রস্তুত হবে৷
আদি মন্ডলীর সাধুগণ যেভাবে সাক্ষ্যমর হয়েছিলেন, আমাদের সকলের তেমনি সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করতে হবে৷ এই কথা আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে, পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ যখন আসবে, প্রকৃত বিশ্বাসীদের জন্য তখন সাক্ষ্যমরের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী হবে৷ কারণ, তাদের মৃত্যু তত্ক্ষনাৎ তাদের রূপান্তরে পরিণত হবে৷
সাক্ষ্যমরের মৃত্যু পুনরুত্থানে পরিণত হওয়ার পর এবং পুনরুত্থানে রূপান্তরের সাথে আমরা প্রভুর সাথে স্বর্গে মিলিত হব৷ সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর পর আমাদের প্রভু তাদেরকে মৃত্যু থেকে উঠাবেন, এবং তাদেরকে স্বর্গীয় বিবাহভোজে আনবেন৷
সাধুগণের রূপান্তরের সময় যখন আসবে পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে৷ এক-তৃতীয়াংশ পুড়ে যাবে, সাগর, নদী এমনকি ঝর্নাও রক্তে পরিণত হবে৷ আপনি কি এরকম পৃথিবীতে বাস করতে চান? যেহেতু জগতে আর কোনো প্রত্যাশা থাকবে না, তাই সাধুগনকে অবশ্যম্ভাবীভাবে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করতে হবে৷
ভয়ে কম্পমান, ধ্বংসযজ্ঞের পৃথিবীতে আপনি কি বাস করতে চান? অবশ্যই না৷ শেষ কালে সাধুদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করতে হবে৷ তারপরেই তাদের পুনরুত্থান এবং রূপান্তর-এর মাধ্যমে ঈশ্বরের সাথে অনন্তকাল সহস্র বর্ষের রাজত্ব এবং নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে বসবাস৷
বাইবেল পরিষ্কারভাবে আমাদের বলে যে, মহাক্লেশের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ সেই সাত বছরের মধ্যে সাড়ে তিন বছর কালে, বিশ্বাসীরা তাদের বিশ্বাসে খ্রীষ্টারীর বিরোধিতা করার জন্য সাক্ষ্যমর হবে, পরে তাদের পুনরুত্থানে রূপান্তর হবে এবং খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমন হবে৷ অন্যকথায়, খ্রীষ্টের পুনরাগমন ও সাধুগণের পুনরুত্থান ও রূপান্তর, মহাক্লেশের মধ্যে তাদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর পরেই হবে৷ এই বিষয়ে সুবিবেচনামূলক চিন্তা করার এখনই প্রকৃত সময়৷
ঈশ্বরের সংকল্পিত পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ আসবার পূর্বেও কি আমরা সাক্ষ্যমর হতে পারি? অবশ্যই না৷ কিন্তু “মহাক্লেশপূর্ব রূপান্তর” মতবাদ এই শিক্ষা দেয় যে, মহাক্লেশের শুরু হওয়ার পূর্বেই সাধুগণের রূপান্তর হবে, এবং এই কারণেই তারা সাত বছরের মহাক্লেশ থেকে রেহাই পাবে৷ এই মতবাদের দাবি হল, কোনো সাক্ষ্যমরের মৃত্যু বলে কিছু নেই, এবং এটাও বিশ্বাস করে না যে, পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ সাধুগণের জীবনে আসবে৷ 
যদি “মহাক্লেশপূর্ব রূপান্তর মতবাদ” সত্যিই হত, তবে ১৩ অধ্যায়ে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর কথা যে লেখা রয়েছে, তার দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে? একথা পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবে, কারণ যাদের নাম ঈশ্বরের জীবন পুস্তকে লেখা হয়েছে, তারা শয়তানের দ্বারা বন্দি হবে না৷
যারা “মহাক্লেশ পরবর্তী রূপান্তর মতবাদ” শিক্ষা দেয় পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ সম্পর্কে তাদের যথেষ্ট জ্ঞান নেই, এবং সেই সাথে সাক্ষ্যমরের মৃত্যু এবং সাধুগণের পুনরুত্থান সমন্ধে ধারণা নেই৷ এই কাল্পনিক তথ্যানুসারে, সাধুগণ মহামারীর সপ্ততুরীর শেষ তুরী বেজে উঠা পর্যন্ত এই পৃথিবীতে থাকবে৷ কিন্তু প্রকাশিত বাক্য নির্দ্বিধায় আমাদের বলে যে, সাধুগণের পুনরুত্থান ও রূপান্তর হবে তখন, যখন শেষ দূত তুরী বাজাবে; অর্থাৎ তার পূর্বে ঈশ্বরের ক্রোধের সাতটি বাটি এই পৃথিবীতে ঢালা হবে৷ এই কারণে, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য প্রকাশিত বাক্য মহাশান্তি ও আশীর্বাদের বাক্য৷
""Amillennialism`` মানুষের মধ্যে হতাশা ও বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, এতে সত্য নেই, আমাদের প্রভু তাঁর শিষ্যদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, সাধুগণ পাঁচটি বা দশটি নগরের উপর করায় পুরস্কৃত হবে, যেটা সহস্রাব্দের রাজত্বের সময় হবে৷
একথা আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, যে মহাক্লেশ পূর্ব রূপান্তর মতবাদ, মহাক্লেশ পরবর্তী রুপান্তরের মতবাদ এবং ""Amillennialism`` মতবাদগুলো কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন হেয়ালীপনা, যার দ্বারা বিশ্বাসীদের মধ্যে কেবল অবিশ্বাস এবং দ্বিধা’র সৃষ্টি হয়৷ 
তাহলে ঈশ্বর কেন আমাদের প্রতি প্রকাশিত বাক্য দিলেন? এই কারণে তিনি আমাদের প্রকাশিত বাক্য দিলেন, যেন আমরা ঈশ্বরের সাতটি যুগের পরিকল্পনা বুঝতে পারি এবং যীশুর শিষ্যেরা স্বর্গরাজ্যের প্রত্যাশায় থাকতে পারে৷
এমনকি এখন ঈশ্বরের পরিকল্পিত ঘতনাগুলিই ঘটছে৷ আমরা এখন যে যুগে বাস করছি, টা কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ৷ এই কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ খুব তাড়াতাড়িই শেষ হয়ে যাবে, এবং তখনই পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ আসবে, এবং এই পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগে খ্রীষ্টারীর উত্থান হবে এবং সাধুগণকে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করতে হবে৷ এটা সেই যুগ, যখন জগতের সমস্ত ক্ষমতা খ্রীষ্টারীর অধীনে একত্রিত ও সমন্বিত হবে৷ যীশুর শিষ্যদের অবশ্যই এখন প্রস্তুত হতে হবে, এবং আসন্ন পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগে টিকে থাকার জন্য বিশ্বাস দৃঢ় হতে হবে৷
The New Life Mission

Weź udział w naszej ankiecie

Skąd się o nas dowiedziałeś?