Search

Kazania

বিষয় ১২: প্রেরিতের বিশ্বাসসূত্রের বিশ্বাস

[11-21] প্রায়শ্চিত্তের দিনে মহাযাজক বলি উৎসর্গ করতেন (লেবীয় পুস্তক ১৬:১-৩৪)

প্রায়শ্চিত্তের দিনে মহাযাজক বলি উৎসর্গ করতেন
(লেবীয় পুস্তক ১৬:১-৩৪)
“হারোণের দুইপুত্র সদাপ্রভুর নিকটে উপস্থিত হইয়া মারা পড়িলে পর, সদাপ্রভু মোশির সহিত আলাপ করিলেন। সদাপ্রভু মোশিকে এই কথা কহিলেন, তুমি আপন ভ্রাতা হারোণকে বল, যেন সে অতি পবিত্র স্থানে তিরস্করিণীর ভিতরে, সিন্দুকের উপরিস্থ পাপাবরণের সম্মুখে সৰ্ব্ব সময়ে প্রবেশ না করে, পাছে তাহার মৃত্যু হয়; কেননা আমি পাপবরণের উপরে মেঘে দর্শন দিব। হারোণ পাপার্থে একটী গোবৎস ও হোমার্থে একটী মেষ লইয়া, এইরূপে অতি পবিত্র স্থানে প্রবেশ করিবে। সে মসীনার পবিত্র অঙ্গরক্ষিণী পরিধান করিবে, মসীনার জাঙ্ঘিয়া পরিধান করিবে, মসীনার কটিবন্ধন পরিবে, এবং মসীনার উষ্ণীষে বিভুষিত হইবে; এ সকল পবিত্র বস্ত্র; সে জলে আপন শরীর ধৌত করিয়া এই সকল পরিধান করিবে। পরে সে ইস্রায়েল-সন্তানগণের মন্ডলীর নিকটে পাপার্থক বলিরূপে দুইটী ছাগ ও হোমার্থে একটী মেষ লইবে। আর হারোণ আপনার জন্য পাপার্থক বলির গোবৎস আনয়ন করিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিবে। পরে সেই দুইটী ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বার সমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থি করিবে। পরে হারোণ ঐ দুইটী ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে। কিন্তু গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ ত্যাগের নিমিত্ত হয়, সে যেন ত্যাগের নিমিত্তে প্রান্তরে প্রেরিত হইতে পারে, তন্নিমিত্ত তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাকে জীবিত উপস্থিত করিতে হইবে। পরে হারোণ আপনার পাপর্থক বলির গোবৎস আনিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিবে, ফলতঃ সে আপনার পাপার্থক বলি সেই গোবৎসকে হনন করিবে; আর সদাপ্রভুর সম্মুখ হইতে বেদির উপর হইতে, প্রজ্জলিত অঙ্গারে পূর্ণ অঙ্গারধানী ও এক মুষ্টি চুর্ণীকৃত সুগন্ধি ধূপ লইয়া তিরস্করিণীর ভিতরে যাইবে। আর ঐ ধূপ সদাপ্রভুর সম্মুখে অগ্নিতে দিবে; তাহাতে সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরিস্থ পাপাবরণ ধুপের ধুম মেঘে আচ্ছন্ন হইলে সে মরিবে না। পরে সে ঐ গোবৎসের কিঞ্চিৎ রক্ত লইয়া পাপাবরণের পূর্ব্বপার্শ্বে অঙ্গুলি দ্বারা ছিটাইয়া দিবে, এবং অঙ্গুলি দ্বারা পাপাবরণের সম্মুখে ঐ রক্ত সাত বার ছিটাইয়া দিবে। পরে সে লোকদের পাপার্থক বলির ছগটী হনন করিয়া তাহার রক্ত তিরস্করিণীর ভিতরে আনিয়া যেমন গোবৎসের রক্ত ছিটাইয়া দিয়াছিল, সেইরূপ তাহারও রক্ত লইয়া করিবে, পাপাবরণের উপরে ও পাপাবরণের সম্মুখে তাহা ছিটাইয়া দিবে। আর ইস্রায়েল সন্তানগণের নানাবিধ অশুচিতা ও অধৰ্ম্ম, অর্থাৎ সৰ্ব্বধিক পাপপ্রযুক্ত সে পবিত্র স্থানের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, এবং যে সমাগম তাম্বু তাহাদের সহিত, তাহাদের নানাবিধ অশৌচের মধ্যে বসতি করে, তাহার নিমিত্তে সে তদ্রুপ করিবে। আর প্রায়শ্চিত্ত করিবার জন্য পবিত্র স্থানে প্রবেশ করা অবধি যে পর্যন্ত সে বাহির না হয়, এবং আপনার ও নিজ কুলের এবং সমস্ত ইস্রায়েল-সমাজের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত সমাপ্ত না করে, সেই পৰ্য্যন্ত সমাগম তাম্বুতে কোন মনুষ্য থাকিবে না। সে নির্গত হইয়া সদাপ্রভুর সম্মুখবর্ত্তী বেদীর নিকটে গিয়া তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে? এবং সেই গোবৎসের কিঞ্চিৎ রক্ত ও ছাগের কিঞ্চিৎ রক্ত লইয়া বেদির চারিদিকে শৃঙ্গের উপরে দিবে। আর সে রক্তে কিয়দংশ লইয়া আপন আঙ্গুলি দ্বারা তাহার উপরে সাত বার ছিটাইয়া দিয়া তাহা শুচি করিবে, ও ইস্রায়েল-সন্তানগণের অশৌচ হইতে তাহা পবিত্র করিবে। এইরূপে সেই পবিত্র স্থানের, সমাগম-তাম্বুর ও বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্তকাৰ্য্য সমাপ্ত করিলে পর সেই জীবিত ছাগটী আনিবে; পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগটী ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অৰ্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও তাহাদের সর্বাধিক পাপ তাহার উপর স্বীকার করিয়া সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তুত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে। আর ঐ ছাগ নিজের উপরে তাহাদের সমস্ত অপরাধ বিছিন্ন ভূমিতে বহিয়া লইয়া যাইবে; আর সেই ব্যক্তি ছাগটীকে প্রান্তরে ছারিয়া দিবে। আর হারোণ সমাগম-তাম্বুতে প্রবেশ করিবে, এবং পবিত্র স্থানে প্রবেশ করিবার সময়ে যে সকল মসীনা-বস্ত্র পরিধান করিয়াছিল, তাহা ত্যগ করিয়া সেই স্থানে রাখিবে। পরে সে কোন পবিত্র স্থানে আপন শরীর জলে ধৌতকরিয়া নিজ বস্ত্র পরিধান করতঃ বাহিরে আসিবে এবং আপনার হোম বলি ও লোকদের হোম বলি উৎসর্গ করিয়া আপনার নিমিত্তে ও লোকদের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিবে। আর সে পাপার্থক বলির সে মেদ বেদিতে দগ্ধ করিবে। আর যে ব্যক্তি ত্যাগের ছাগটী ছাড়িয়া দিয়া ছিল, সে আপন বস্ত্র ধৌত করিবে, ও আপন গাত্র জলে ধৌত করিবে, তৎপরে শিবিরে আসিবে। আর পাপার্থক বলির গোবৎস ও পাপার্থক বলির ছাগ, যাহাদের রক্ত প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে পবিত্র স্থানে আনিত হইয়াছিল, লোকেরা তাহাদিগকে শিবিরের বাহিরে লইয়া গিয়া তাহাদের চর্ম্ম, মাংস ও মল অগ্নিতে পোড়াই দিবে। আর যে জন তাহা পোড়াইয়া দিবে, সে আপন বস্ত্র ধৌত করিবে ও আপন গাত্র জলে ধৌত করিবে, তৎপরে শিবিরে আসিবে। তোমাদের নিমিত্ত ইহা চির স্থায়ী বিধি হইবে; সপ্তম মাসের দশম দিনে স্বদেশী বিম্বা তোমাদের মধ্যে প্রবাস কারী বিদেশী, তোমরা আপন আপন প্রাণকে দুঃখ দিবে ও কোন ব্যবসায় কৰ্ম্ম করিবে না। কেননা সেই দিন তোমদিগকে শুচি করণার্থে তোমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা যাইবে; তোমরা সদা প্রভুর সম্মুখে আপনাদের সকল পাপ হইতে শুচি হইবে। তাহা তোমাদের বিশ্রামার্থক বিশ্রম দিন; এবং তোমরা আপন আপন প্রাণকে দুঃখ দিবে; ইহা চিরস্থায়ী বিধি। পিতার স্থানে যাজন কৰ্ম্ম করিতে যাহাকে অভিষেক ও হস্ত পূরণ দ্বারা নিযুক্ত করা যাইবে, সেই যাযক প্রায়শ্চিত্ত করিবে, এবং মশীনা বস্ত্র অর্থাৎ পবিত্র বস্ত্র সকল পরিধান করিবে। আর সে পবিত্র ধর্ম্মধামের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, এবং সমাগম- তাম্বুর ও বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, এবং যাজকগণের ও সমাজের সমস্ত লোকের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে। ইস্রায়েল- সন্তানগণের জন্য তাহাদের সমস্ত পাপপ্রযুক্ত বৎসরের মধ্যে একবার প্রায়শ্চিত্ত করা তোমাদের পক্ষে চিরস্থায়ী বিধি হইবে। তখন [হারোণ] মোশির প্রতি সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে কৰ্ম্ম করিলেন।”
 
 
প্রায়শ্চিত্তের দিনে একমাত্র মহাযাজকই ইস্রায়েলদের পক্ষে নৈবেদ্য উৎসর্গ করতেন। ইস্রারেলদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সপ্তম মাসে দশম দিনে বছরে একবারই এই নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হত। মহাযাজক হারোন এই দিনে ইস্রায়েলদের পক্ষে তাদের অধর্ম ও পাপ থেকে মুক্তি লাভের উদেশ্যে এই নৈবেদ্য উৎসর্গ করত। এই কারণে প্রায়শ্চিত্ত দিবস ইস্রায়েলদের জন্য একটি বড় পর্ব দিন।
অন্যান্য নৈব্যেদের মতো প্রায়শ্চিত্ত দিনের নৈবেদ্যের ও এটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন ছিল-খুঁদ বিহীন পশু, হস্তার্পণ এবং বলি দানকৃত পশুর রক্ত সেচন, এই উপায়ে উৎসর্গকৃত নৈবেদ্য ঈশ্বর সন্তস চিত্তে গ্রহণ করতেন। অন্যান্য নৈবেদ্য থেকে এই নৈবেদ্যের বিশ্যেষ যে পার্থক্য ছিল তা হল বলির রক্ত মহাযাজক মহাপবিত্র স্থানে নিয়ে যেত।
 নিজের জন্য এবং নিজের পরিবারের জন্য নৈবেদ্য উৎসর্গ করার পর হারোন ইস্রায়েল জাতির পক্ষে নৈবেদ্য উৎসর্গ করত দুটো ছাগ উৎসর্গ করতেন। পাপর্থক বলিরূপে যে ভাবে বৃষ উৎসর্গ করতেন সেইভাবে প্রথমটি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতেন, তারপর; দ্বিতীয়টি উৎসর্গ করতেন। দ্বিতীয়টিকে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হত, তারপূর্বে মহাযাজক হারোন সমস্ত ইস্রায়েলের সন্মুখে তাদেরই পক্ষে ঐ ছাগের মস্তকে হস্তার্পণ করে তাদের সমস্ত পাপ অপরাধ স্বীকার করতেন এবং তারপর পূর্ব থেকে প্রস্তুত একজন ব্যক্তি এই ছাগটিকে প্রান্তরে ছেড়ে দিয়ে আসতেন।
 


প্রায়শ্চিত্তের দিনে নৈবেদ্যের মাধ্যমে ইস্রায়েলের সমস্তপাপ ধৌত হত।

 
প্রায়শ্চিত্তের দিনে মহাযাজক সমস্ত ইস্রায়েলের পক্ষে হস্তার্পণের মাধ্যমে বলির মস্তকে তাদের পাপ অর্পণ করতেন। তিনি দুটো ছাগ নিতেন, গুটিবাট করতেন, একটি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে, অন্যটি ইস্রায়েল জাতির উদ্দেশ্যে।
হস্তার্পণের উদ্দেশ্য হল বলির মস্তকে হাত রাখার মাধ্যমে সমস্ত পাপ সে বলির উপরে অর্পণ করা। এই হস্তার্পণ প্রথা ঈশ্বর নির্ধারিত পাপ ধৌত হবার উপায় এবং নতুন নিয়মেও এই একই পদ্ধতিতে বাপ্তিস্মের সময়ে যীশুর উপরে হস্তার্পণের মাধ্যমে সমস্ত জগতের পাপ ভার তাঁর উপরে অর্পণ করা হয়। মহাযাজকের নিজের পাপ, তার পরিবারের পাপ, এবং ইস্রায়েল জাতির একবছরের পাপ ধৌত করার উদ্দেশ্যে ছাগের মস্তকে পাপ অর্পণ করার জন্য হস্তার্পণ করা হত। যেহেতু, মহাযাজক হস্তার্পণের মাধ্যমে বলির মন্তকে ইস্রায়েলের সমস্ত পাপ অর্পণ করতেন তাই ইস্রায়েলের এক বছরের পাপ মোচন হত। এই ভাবে এই প্রায়শ্চিত্তের দিনে পাপ থেকে মুক্ত হবার কারণে ইস্রায়েল জাতি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করত।
প্রত্যেক পাপীকেই অপরিহার্য ভাবে বিচারিত হতে হবে। মানুষের পাপ নিয়ে বলি হবার পূর্বে বলির পশুকে প্রথমে মানুষের পাপ নিজের উপরে তুলে নিতে হত। মহাযাজক যদি হস্তার্পণ ছাড়াই বলি উৎসর্গ করতেন তাতে ঈশ্বরকে অবমাননা করা হত এবং এই জন্য তিনি তা করতেন না। সমগ্র মানব জাতি পাপে পতিত হবার পরে তাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করার নিমিত্ত ঈশ্বরকে হস্তার্পণ প্রথা প্রতিষ্ঠা করতে হয়, যাতে মানুষ তাদের পাপ থেকে মুক্তি পায়। ইস্রায়েলদের পাপ মোছার জন্য ঈশ্বর মহাযাজক তুললেন এবং তার মাধ্যমে হস্তার্পণ দ্বারা একবারে চির তরে বলির উপরে তাদের পাপ অর্পণ করার প্রতিনিধি স্বরূপ করলেন। সমাগম তাম্বুতে সব বলির পশু যেমন হস্তার্পণের মাধ্যমে নিজেদের উপরে ইস্রায়েলিয়দের সমস্ত পাপ তুলে নিতে এবং তাদের পক্ষে নিজেরা পাপী সাবস্থ্য হত, রক্ত সেচন করত ও মারা যেত।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা ও প্রেম সম্পূর্নরূপে পূর্ণতা দিতে প্রায়শ্চিত্তের দিনে ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে মহা যাজককে হস্তার্পণের মাধ্যমে বলির উপরে তদের পাপ অর্পণ করতে হত এবং বছরে একবারই তাদের হত্যা করে রক্ত সেচন করা হত। অন্য কথায়, এই বলির মাধ্যমে ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির একবছরের পাপ চিরতরে মুছে দিতেন। এই ব্যবস্থার দ্বারাই ঈশ্বরের ন্যায়পরায়তা এবং অনুগ্রহ প্রকাশ পেত কারণ ঈশ্বর ন্যায়বান, ব্যবস্থা অনুসারে তাঁর সন্তান দের পাপ একবারে চিরতরে মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে যীশু খ্রীষ্টকে মেষসাবক প্রতিপন্ন করলেন এবং হস্তার্পণ দ্বারা তাঁর উপরে পাপ অর্পণ করলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করালেন।
যীশু নিজেকে চিরন্তন বলিরূপে উৎসর্গ করলেন একই পদ্ধতিতে নিজের উপরে সকলের পাপ তুলে নিলেন এবং এভাবে তিনি পাপের পরিত্রাণ সাধন করলেন। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই সে সত্য বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের সাক্ষাতে উপস্থিত হতে হবে, যে সত্য নীল, বেগুনী এবং লাল এবং মিহি মসীনাসুতায় প্রকাশিত হয়েছে। এই বিশ্বাসেই সমস্ত পাপ থেকে একবারেই চিরতরে মুক্ত হওয়া যায়। সুতরাং যে কেউ তার পাপ থেকে মুক্তি চায় তাকে অবশ্যই জল ও আত্মার প্রকৃত সুসমাচার বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের সাক্ষাতে উপস্থিত হতে হবে।
 


হস্তার্পণের তাৎপর্য

 
হস্তার্পণ অর্থ হল “অর্পণ করা, স্থানান্তর করা অথবা সমাধিস্থ্য করা” (লেবীয় ১:৩-৪ পদ)। যখন কোন ইস্রায়েল অজানিত ভাবে কোন পাপ করে ফেলত এবং যখন সে সেই পাপ বুঝতে পারত তখন তাকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোম বলি উৎসর্গ করতে হত (লেবীয় ৪:২৭-২৯ পদ)। প্রথমে তাকে একটি নিখুদ বলির পশু আনতে হত এবং তার পর হস্তার্পণের মাধ্যমে তার মস্তকে নিজের সমস্ত পাপ অর্পণ করতে হত। তাকে বলিটির গলা কাটতে হত, রক্ত পাত করতে হত এবং সেই রক্ত মহাযাজককে দিতে হত (লেবীয় ৪:২৭-২৮পদ)। তারপর মহাযাজক তার আঙ্গুলে সেই রক্ত নিয়ে যজ্ঞবেদীর শৃঙ্গে ছিটিয়ে দিতেন এবং বাকী রক্ত বেদীর গোড়ায় ঢেলে দিতেন। বলির মেদও তাকে যজ্ঞবেদীতে পোড়াতে হত এবং ঈশ্বর সেই মেদের পোড়া গন্ধ নিতেন।
 আমরা জেনেছি যে, ইস্রায়েলদের সমস্ত পাপ মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে ঈশ্বর প্রায়শ্চিত্তের দিন নিরুপন করেছিলেন, যেখানে বলির। পশুর উপরে হস্তার্পণ করা হত এবং রক্ত সেচন করা হত। এক্ষেত্রেও ঈশ্বর বলির উপরে হস্তাৰ্পণ ইস্রায়েলদের পাপ ধৌত করেণ নাই। তেমনি ভাবে পুরাতন নিয়মের প্রায়শ্চিত্ত দিনের নৈবেদ্যর সাথে নতুন নিয়মের যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচন নিবিড় ভাবে সম্পর্ক যুক্ত। 
পুরাতন নিয়মে যেমন পশুটিকে নিখুঁত হতে হত নতুন নিয়মেও যীশু তেমনি নিস্পাপ মেষ শাবকরূপে আবির্ভূত হলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন। পুরাতন নিয়মে যেমন হস্তার্পণের মাধ্যমে বলির পশুকে সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিতে হত, তেমনি যর্দ্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে হস্তার্পণের মাধ্যমে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে যীশু নিজের উপর জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নিলেন (মথি ৩:১৫ পদ)। পুরাতন নিয়মের বলির পশুকে এবং নতুন নিয়মে যীশুকে একই ভাবে হস্তার্পণের মাধ্যমে পাপ তলে নিতে হয় এবং একইভাবে রক্ত সেচনের মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করতে হয়। হস্তার্পণ এবং রক্ত সেচন পাপীদের পাপমুক্ত করার জন্য পুরাতন ও নতুন নিয়মে একই ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।
 

মানুষের পাপ অপরিহার্য্য ভাবেই ঈশ্বরের ক্রোধ সৃষ্টি করে।
 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা পাপী পাপের কারণে আমাদের মরণ ছাড়া উপায় ছিলনা যেমন করে বলির পশুরা পাপ নিয়ে মৃত্যুবরণ করত। যখন আমরা দেখতে পাই যে, বলির পশুকে টুকরো টুকরো করে কেটে হোমবলীর বেদীতে উৎসর্গ করা হত, একই ভাবে আমরা বুঝতে পারি যে ঈশ্বরের সাক্ষাতে মৃত্যুযোগ্য ছিলাম যে আমরা প্রভু যোহনের কাছে বাপ্তইজিত হবার মাধ্যমে এবং রক্ত সেচনের দ্বারা আমাদেরকে উদ্ধার করলেন।
তাই যারা এখনো নতুন জন্ম লাভ করেনি তাদেরকে নিজেদের পাপী হিসাবে স্বীকার করতে হবে এবং তাদের জানতে হবে যে, তারা ঈশ্বরের ভয়ানক ক্রোধের পাত্র এবং তাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে যে যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচনই পাপ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ। আমাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য শাস্তি না দিয়ে ঈশ্বর অনন্তকালীয় বলির উপরে আমাদের পাপ অর্পণ করলেন সেই বলি আমাদের জন্য রক্ত সেচন করলেন এবং সেইভাবে পাপ মোচন করলেন (লেবীয় ১৬:১-৩৪ পদ। রোমীয় ৮:৩-৪, ইব্রীয় ১০:১০-১২ পদ)। এখানও কি আপনার হৃদয়ে পাপ আছে? তাহলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আপনার অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে আপনি পাপী, ঈশ্বরের বিচার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে, এবং আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টির পূর্বে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আপনার জন্য পরিত্রাণের পরিকল্পনা করেছেন।
উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ না করলে পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয় না। এ জন্য ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে বলিদানের প্রথা দিয়েছিলেন। এই বলিদানের প্রথার মাধ্যমে, একমাত্র বলির মস্তকে হস্তার্পণের দ্বারা এবং বলি রক্ত সেচনের দ্বারা ইস্রায়েল জাতিকে তাদের পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পথ করে দিয়েছিলেন।
বিশ্বাসে আমাদেরকেও সেই বলি উৎর্সগ করতে হবে, অথ্যাৎ শাস্ত্রের বাক্য অনুযায়ী সেই বলিদানের সাথে মিল থাকতে হবে। প্রভু তাঁর রক্ত সেচন করেছিলেন কারণ তিনি বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, তাই সেই পাপের শাস্তি ও তাঁকে বহণ করতে হয়েছিল এবং এভাবে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন (মথি ৩:১৫, যোহন ১:২৯, যিশাইয় ৫৩:১-৭) যখন আমরা জল ও আত্মার বাক্যে বিশ্বাস করি, এবং যখন আমরা প্রভুর উপরে হাত রাখি, কারণ তিনি আমাদের জন্য বলি হয়েছিলেন, এভাবে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পণ করা হয়েছিল। আমরা এই বিশ্বাসে পাপের ক্ষমা পেতে পারি যে, প্রভু আমদের সমস্ত পাপ এবং পাপের শাস্তির নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন এবং আমাদের পাওনা মৃত্যু তিনি বরণ করেছিলেন। জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা আমরা আমাদের পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করতে পারি, কারণ তিনি সেই বলির মেষ হয়েছেন এবং আমরা তাঁর সাথে মরতে পারি ও জীবিত হতে পারি (রোমীয় ৬:১-১১, গালাতীয় ৩:২৭)।
প্রায়শ্চিত্তের দিনে হোমবলির আত্মিক শিক্ষা থেকে আমরা যা বুঝতে পারি তাহল প্রথমে, আমাদেরকে আমাদের পাপ ও পাপের দন্ডাজ্ঞা সম্বন্ধে জানতে হবে এবং তারপর আমাদের বিশ্বাসে হোমবলি উৎসর্গ করতে হবে যা ঈশ্বর গ্রহণ করতে চান তা হল, আমাদের যীশুকে যিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্ত দ্বারা আমাদের পরিত্রাণ সম্পন্ন করেছেন তাঁকে বিশ্বাস করা। আমাদের যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করে তাঁর মাথার উপর হস্তার্পণ করতে হবে। কেন? কারণ কেবল মাত্র যখন আমরা বিশ্বাসে পাপার্থক হোমবলির উপর হস্তার্পণ করি এবং রক্ত ছিটাই তখনই আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি।
এই রূপে, যে কেই তার পাপ মোচন করতে চায় তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের স্বাক্ষাতে তার জীবনের মূল্য পরিশোধ করতে হবে, কেননা পাপের বেতন মৃত্যু। ধনি অথবা গরিব, প্রত্যেকেরই পাপের বেতন হিসেবে তার পাপার্থক হোমবলি উৎসর্গ করতে হবে এবং জীবনের মূল্যের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এরূপ না হওয়া পর্যন্ত কেউ-ই বিশ্বাসে পাপের ক্ষমা গ্রহণ করতে পারবে না।
 


প্রায়চিত্তের দিনে পুরাতন নিয়মের হোম বলি

 
আসুন আমরা লেবীয় পুস্তক ১৬:৬-১০ পদ পর্যন্ত দেখি “আর হারোণ আপনার জন্য পাপার্থক বলির গোবৎস আনয়ন করিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিবে। পরে সেই দুইটি ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বার সমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে। পরে হারোণ ঐ দুইটি ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; একগুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে। কিন্তু গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ ত্যাগের নিমিত্তে হয়, সে যেন ত্যাগের নিমিত্তে প্রান্তরে প্রেরিত হইতে পারে, তন্নিমিত্ত তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাকে জীবিত উপস্থিত করিতে হইবে।”
ইস্রায়েল লোকদের বিশ্বাসে তাদের পাপের ক্ষমার নিমিত্ত, প্রধান যাজক তাদের পক্ষ্য থেকে তাদের হস্তার্পণ সম্পাদিত হোমবলি এবং এর রক্ত প্রদান করত। তাহলে, আজকের দিনের খ্রীষ্টিয়ানদের অবস্থা কেমন? যারা নিজেদের পাপ হোমবলির উপর অর্পণ করা ব্যতীত পাপের ক্ষমা গ্রহণের পথ অনুসন্ধান করে, তবে তাদের এরূপ করাটা কি কল্পনা প্রসূত এবং ভিত্তিহীন বিশ্বাস নয়? যদি আপনার বিশ্বাস এরূপ না হয় যে, আপনি হস্তার্পণের বিশ্বাসে যীশু খ্রীষ্টের উপর পাপ অর্পণ করেছেন, তাহলে আপনার এতে একটা সমস্যা আছে। যতক্ষন পর্যন্ত আপনি যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস না করেন ততক্ষন পর্যন্ত এটা সত্য বিশ্বাস হতে পারে না। 
আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে তাঁর আইন ভঙ্গ না করে এবং অতীতে পাপ না করে থকতে পারিনি। তাই যদি আমরা পুরাতন নিয়মের সময়ে বাস করতাম তবে আমাদরেকেও পাপের ক্ষমা পাবার নিমিত্ত প্রধান যাজককে হোম বলি প্রদান করতে হত। ঈশ্বরকে বিশ্বাসে হোমবলি প্রদান করে আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে আমরা আমাদের পাপের কারণে ধ্বংস না হয়ে পারতাম না এবং এরপর আমাদের বিশ্বাস করতে হবে হস্তার্পণের ও রক্ত সেচনে যা দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ হোমবলির উপর বর্তায় যা ঈশ্বর আমাদরে জন্য প্রস্তুত করে রেখেছিলেন।
কারণ উৎসর্গীকৃত পশুর উপর হস্তার্পণ এবং রক্ত সেচনের পরিত্রাণের শক্তি ছিল, পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের স্থাপিত আইনানুসারে প্রধান যাজক হোমবলি উৎসর্গ করত এবং লোকেরা তার মাধ্যমে তাদের পাপের ক্ষমা গ্রহণ করত। পাপৰ্থক হোমবলির উপর হস্তার্পণের মাধ্যমে প্রধান যাজক তার লোকদের এক বছরের পাপের মূল্য এটার উপর অর্পণ করত, এটার গলা কাটত এবং রক্ত নিত আর ঈশ্বরের সাক্ষাতে অনুগ্রহের সিংহাসনের চারিদিকে এবং পূর্ব পার্শে সাত বার এই রক্ত ছিটাত। এরূপ করে তিনি প্রতিবছর ঈশ্বরের স্বাক্ষাতে সঠিক উপহার দেওয়া থেকে কখনো বিরত থাকতেন না। ঐসব দিনে ইস্রায়েলের লোকেরা এভাবেই তাদের পাপের যথার্থ ক্ষমা গ্রহণ করতেন।
এই রূপে, প্রধান যাজকের মাধ্যমে পাপার্থক বলি উৎসর্গ করে ইস্রায়েলের লোকেরা তাদের হৃদয়ে বিশ্বাস করত এবং নিশ্চিত হত যে এভাবে তারা তাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছে। পুরাতন নিয়মে প্রায়শ্চিত্তের যে হোম বলি দেখানো হয়েছে নুতন নিয়মে তা হল যীশু খ্রীষ্ট জগতের সমস্ত পাপ যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ ও ক্রুশে রক্ত সেচন করে তুলে নিয়েছিলেন এবং আমাদের যীশু খ্রীষ্টকে আমাদের ত্রাণকর্তা রূপে বিশ্বাস এবং বিশ্বাসে পাপের ক্ষমা গ্রহণ করে অনন্ত জীবন লাভ করতে হবে। পৃথিবীতে যাদের আত্মা কষ্ট এবং যন্ত্রনার মধ্যে আছে পাপের কারণে, তাদের অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করে অনন্ত পাপের ক্ষমা গ্রহণ করতে হবে এবং এটা অবশ্যই তাদের হৃদয়ে বিশ্বাস করতে হবে। এরূপে, পূর্বেই পাপ ক্ষমার নিমিত্ত পাপার্থক হোমবলি এবং তাঁর দ্বারা এটার সম্পাদনের প্রতিজ্ঞা ঈশ্বর কর্তৃক স্থাপিত ছিল আর পরিত্রণের এই প্রতিজ্ঞা সমাগম-তাম্বুতে ব্যবহৃত নীল, বেগুনী ও লাল এবং সাদা মিহি মসীনা বস্ত্রের সুতায়ও প্রতীয়মান ছিল।
 


প্রায়শ্চিত্ত দিনের বলিদান সমাগম তাম্বুতে পূর্ণতা পেয়েছে

 
প্রায়শ্চিত্তের দিনে মহাযাজক ইস্রায়েল জাতির পাপের জন্য চিন্তা করতেন সকলের সামনেই বলির উপরে হস্তাৰ্পণ করতেন (লেবীয় ১৬:১-২৩ পদ)। তাঁর জন্য এটা অবশ্য কর্তব্য ছিল যে তিনি তাদের পক্ষে বলির উপরে হস্তার্পণ করবেন। মহাযাজক হারোন যখন সমাগম তাম্বুতে প্রায়শ্চিত্তের দিনে বলি উৎসর্গ করতে প্রবেশ করতেন, তখন তাঁর সাথে আর কেউ ঢুকতে পারত না। এটা ছিল একটি অসাধারণ পর্ব, কারণ প্রায়শ্চিত্তের দিন ছাড়াও অন্যান্য সময়ে সমাগম-তাম্বুর প্রাঙ্গনে আরো অনেক যাজক থাকতো।
 মহাযাজক ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ হস্তার্পণের মাধ্যমে বলির উপরে অর্পণ করতেন, এই বলির কিছু রক্ত মহাপবিত্র স্থানে নিয়ে যেতেন এবং পূর্ব দিকের অনুগ্রহ সিংহাসরে উপরে আঙ্গুল দিয়ে ছিটিয়ে দিতেন এবং অনুগ্রহ সিংহাসনের সামনে সাত বার ছিটাতেন (লেবীয় ১৬:১৪ পদ)। 
এসময়, মহাযাজকের পোষাকের সাথে বেঁধে রাখা স্বর্ণের ঘন্টা বেজে উঠত এবং যতবার মহাযাজক অনুগ্রহ সিংহাসনে এবং তাঁর পূর্ব দিকে রক্ত ছিটাতেন, ততবার ঘন্টা বেজে উঠত এবং বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ইস্রায়েলরা সে ঘন্টার শব্দ শুনতে পেত। ইস্রায়েলরা যখন ঘন্টার শব্দ শুনতে পেত, তখন তারা বুঝতে পারত যে, মহাযাজক তাদের পক্ষে নৈবেদ্য উৎসর্গ করছেন। ঘন্টা সাতবার শোনার পরে তারা নিশ্চিত হত এবং বুঝতে পারত যে, প্রায়শ্চিত্তের বলিদান এখন শেষ হয়েছে এবং তাদের এক বছরের পাপের ক্ষমা হয়েছে। 
এর পরে, মহাযাজক সমাগম-তাম্বুর বাইরে বেরিয়ে আসতেন এবং অন্য ছাগটি উৎসর্গের জন্য নিতেন। সমস্ত ইস্রায়েল লোকের সামনে প্রায়শ্চিত্ত দিনে তিনি এই নৈবেদ্য উৎসর্গ করতেন। ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে প্রায়শ্চিত্তের দিনে কোন কিছু করতে নিষেধ করেছিলেন। (লেবীয় ১৬:২০-২১, ২৯ পদ)। সমাগম-তাম্বুর বাইরে জড় হওয়া বিশাল ইস্রায়েল লোক সমাজের সামনে নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হত, বলির ছাগের মস্তকে মহাযাজক হস্তার্পণ করতেন এবং পূর্ব থেকে নির্ধারিত একজন ব্যক্তির সাহায্যে সেই ছাগটিকে প্রান্তরে পাঠিয়ে দিতেন।
 প্রায়শ্চিত্তের দিনে মহাযাজক ছাগটিকে সমস্ত ইস্রায়েল লোকের সামনে আনতেন, এর মাথার উপরে হাত রাখতেন এবং ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ ও অধর্ম স্বীকার করতেন, এবং এই ভাবে সেই ছাগটির উপরে তাদের সমস্ত পাপ অর্পণ করতেন। “হে প্রভু, বিগত সারাটি বছর ধরে ইস্রায়েল জাতির লোকেরা যে সকল পাপ করেছ, আমি তোমার কাছে সেগুলো স্বীকার করছি। তোমার সমস্ত ব্যবস্থা আমরা পূর্ণরূপে পালন করতে পারিনি। আমরা তোমার বিরুদ্ধে এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে অসংখ্য পাপ করেছি। তুমি আমাদেরকে যে জীবন যাপন করতে বলেছিলে, আমরা তা করতে পারিনি, এবং তুমি যে সব কাজ আমাদের করতে নিষেধ করেছিলে, আমরা সেই সব অন্যায় কাজ করেছি। গত বছর আমরা তোমার অনেক আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছি। আমরা মিথ্যা কথা বলেছি। খুন করেছি। ব্যভিচার করেছি। চুরি করেছি।” এই ভাবে মহাযাজক সাক্ষির মাথায় হাত রেখে সমস্ত ইস্রায়েল জাতির সামনে তাদের সমস্ত পাপ একে একে স্বীকার করতেন এবং সেই ছাগটিকে একজন উপযুক্ত ব্যক্তির সাহায্যে প্রান্তরে পাঠিয়ে দিতেন।
যেহেতু পাপের বেতন মৃত্যু, তাই ঈশ্বর সমস্ত ইস্রায়েল জাতির পাপ বহণ করা সেই ছাগটিকে আর বাঁচতে দিতেন না। প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া ছাগটিকে আনেক কষ্ট করতে হত এবং এক সময় কষ্ট করতে করতে, ইস্রায়েলদের সমস্ত পাপ নিয়ে, অধর্ম নিয়ে সেই প্রান্তরেই তাকে মরতে হত। তখন, ইস্রায়েলের সমস্ত লোকেরা সমাগম-তাম্বুর ভোজ প্রস্তুত করত, কারণ প্রায়শ্চিত্তের দিনের বলি উৎসর্গের মাধ্যমে তারা তাদের গত এক বছরের সমস্ত পাপ ক্ষমা পেয়েছে (লেবীয় ২৩:৩৪ পদ)।
 হস্তার্পণ মানে এর মাধ্যমে ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ সেই বলির উপরে অর্পণ করা হত। যখন মহাযাজক বলির সেইছাগের মাথায় হাত রাখতে, ইস্রায়েলের সারা বছরের পাপ একবারে একত্রে সেই ছাগের উপরে অর্পণ করা হত। ইস্রায়েলদের প্রত্যেকের প্রত্যেটি ছোট বড় পাপ মহাযাজকের হস্তার্পণের মাধ্যমে সে ছাগটির উপরে অর্পণ করা হত।
পুরাতন নিয়মে মহাযাজক হস্তার্পণের মাধ্যমে যেমন ইস্রায়েলের সমস্ত পাপ অর্পণ করা হত, তেমনি বর্তমানে ও কি হস্তার্পণের মাধ্যমে বর্তমানে সমস্ত পাপ বলির উপরে অর্পণ করা যায়? যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে বর্তমান কালের মানুষদের পাপ ক্ষমা পর উপায় কি আছে? বর্তমানে কে, কীভাবে এবং কার মাধ্যমে পাপ অর্পণ করা হয়? পুরাতন নিয়মে ঈশ্বর যেমন বলিদানের প্রথা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, ঠিক এ কিভাবে নতুন নিয়মে যীশু খ্রীষ্ট যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ার মাধ্যমে জগতে সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। প্রায়শ্চিত্তের দিনে যেমন সারা বছরের সমস্ত পাপ একবারে ছাগের উপরে অর্পণ করা হত, তেমনি ভাবে সর্বশেষ মহাযাজক রূপে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নেয়ার সময় যীশু খ্রীষ্টের উপরে জগতের সমস্ত মানুষের সমস্ত পাপ অর্পণ করা হয়েছে। তাহলে বর্তমানের মানুষের পাপ গুলো কোথায়? সেগুলো এখন যীশু খ্রীষ্টের মস্তকে।
প্রান্তরে ছেরে দেওয়া ছাগটি যেমন মহাযাজকের দ্বারা অর্পিত ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ গ্রহণ করত, বর্তমান কালে যীশুও তেমনি তাঁর বাপ্তিস্মের সময় যোহন বাপ্তাইজকের হস্তার্পণের মাধ্যমে নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। যীশু আমাদের পক্ষে বলির মেষ হয়েছিলেন, তিনি আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। অন্যকথায়, যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, নিজেকে সম্পূর্ণ করেছিলেন, যেমন পুরাতন নিয়মে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া ছাগ ইস্রায়েলদের পাপ নিজের উপর তুলে নিতো এবং সে পাপের শাস্তি হিসেবে প্রান্তরে মৃত্যুবরণ করত।
 প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া ছাগটি কোন ভাবেই বেঁচে থাকতে পারতো না, কারণ মরুভূমিতে কোন জল ছিল না, সুধু তীব্র রোদে পুড়ে ছগটি এক সময় মারা পরত। ঠিক একই ভাবে যীশু ও ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন, কারণ তিনি বাপ্তিস্মের সময়ে নিজের উপরে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন। যে রকম সেই ছাগটিকে জন প্রানীহীন প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হত, তেমনি যীশু ও জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নেওয়ার পরে জগতের সমস্ত মানুষের দ্বারা ঘৃনিত হলেন। ছাগটিকে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হত, জন প্রানীহীন মরুভূমিতে এদিক সেদিক ঘুরতে ঘুরতে এক সময় মারা পড়ত।
একই ভাবে, যীশুও আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার পর মানুষের দ্বারা ঘৃনিত হলেন। পাপের সমস্ত দন্ড নিয়ে তাঁকে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করতে হত, আমাদের পাপের জন্য তাঁকে রক্ত সেচন করতে হল এবং শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করতে হল। এটাই যীশু খ্রীষ্টের সাধিত পরিত্রাণ, যা তিনি জলও আত্মার সুসমাচার দ্বারা সাধন করেছেন।
ইস্রায়েল লোকেরা পাপ ক্ষমার প্রায়শ্চিত্তের প্রথা তাদের নিজের চোখেই দেখে ছিল এবং হৃদয়ে বিশ্বাস করেছিল। তাদের মত আমাদেরকেও দেখে, শুনে এবং যীশুর সাধিত কাজে বিশ্বাস করে পাপের ক্ষমা পেতে হবে। এর দ্বারা আমরা জানতে পারি যে যীশু খ্রীষ্ট যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিবেন, জগতের সমস্ত পাপ বহণ করবেন, ক্রুশে বিদ্ধ হবেন, রক্ত সেচন করবেন, মৃত্যুবরণ করবেন এবং আবার জীবিত হবেন। এবং আমাদের আত্মিক চোখে দেখে এবং হৃদয়ে বিশ্বাস করে আমরা পরিত্রাণ পাবো।
প্রায়শ্চিত্তের দিনের নৈবেদ্য তত দিন থাকবে যত দিন ইস্রায়েল জাতি থাকবে। তারা এলেন ও ঈশ্বরের সে কথা অনুযায়ী সপ্তম মাসের দশম দিনে এ নৈবেদ্য উৎসর্গ করে, “ইস্রায়েল সন্তান গনের জন্য তাহাদের সমস্ত পাপ প্রযুক্ত বৎসরের মধ্যে একবার প্রায়শ্চিত্ত করা তোমাদের পক্ষে চির স্থায়ী বিধি হইবে (লেবীয় ১৬:৩৪ পদ)।” এভাবে ইস্রায়েল জাতিকে প্রায়শ্চিত্ত দিনে নৈবদ্য উৎসর্গ করার মাধ্যমে ঈশ্বর তাদের উপর আর্শিবাদ ঢেলে দিতেন, যেন তাদের সমস্ত পাপ ধৈত হয়ে যায় এবং তারা যেন পাপের শাস্তি থেকে মুক্তি পায়।
ঠিক এরকম ভাবে, বর্তমান কালের লোকেরা বিশ্বাস পাপ এবং পাপের শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে, যদি তারা বিশ্বাস করে যে যীশু যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন, ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছেন রক্ত সেচন করেছেন এবং এই ভাবে চিরদিনের জন্য তিনি জগতের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন। যীশু খ্রীষ্ট বাপ্তিস্মের সময় সমস্ত মানুষের পাপের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এবং এভাবে তিনি স্বর্গীয় মহাযাজক হয়েছেন। এখন পরিত্রাণ পাবার জন্য আমাদের আর অন্য কিছু করতে হবে না, শুধুমাত্র যীশুর কাজে বিশ্বাস করতে হবে।
 

প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে মশীহ তাঁর নিজের দেহকে পিতা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রদান করেছেন
 
ঈশ্বর কেন ইস্রায়েল জাতিকে প্রায়শ্চিত্তের দিনে নৈবেদ্য উৎসর্গ করতে বলেছিলেন? এই জন্য বলেছিলেন যেন বিশ্বাসে তারা ভবিষ্যত দেখতে পায়, যখন পিতা ঈশ্বর তাঁর পুত্র প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে নৈবেদ্য হিসাবে জগতের সমস্ত মানুষের জন্য প্রদান করবেন, এবং তিনি বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবেন ও রক্ত সেচন করবেন। এই জন্য ঈশ্বরের একজাত পুত্র এবং মানুষের পরিত্রাণ কর্তা যীশু খ্রীষ্ট আমাদের প্রত্যেকের পাপ মুছে দেওয়ার জন্য এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, ঈশ্বরের প্রেমে মানুষের জন্য পরিত্রাণ সাধন করলেন। যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে, তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন এবং এভাবে জগতের মানুষের সব পাপ ও অধর্ম মুছে দিয়েছিলেন এবং মানুষের পাপের শাস্তি নিজে বহণ করেছিলেন এবং এই ভাবে তিনি আমাদের ত্রাণকর্তার হয়েছেন।
ঈশ্বর প্রথমে মশিকে ডাকলেন এবং ব্যবস্থা দিলেন। তার পরে তিনে মশিকে সমাগম তাম্বু তৈরি করতে আদেশ দিলেন। নীল, বেগুনী এবং লাল সুতা এবং মিহি মসীনা সুতা দ্বারা তৈরি করতে বলেন এবং বলিদানের প্রথা দিলেন। এর মাধ্যমে ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে হস্তাৰ্পণ ও রক্ত সেচনের গুরুত্ব বুঝালেন এবং এই ভাবে যীশু খ্রীষ্টকে দেখালেন কারণ সমাগম-তাম্বুর মাধ্যমে ঈশ্বর যীশুর পরিত্রাণ কাজে ভবিষ্যত বানী করলেন। তিনি এই পৃথিবীতে আসবেন, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের পাপ নিজের উপর তুলে নিবেন, ক্রুশে বিদ্ধ হবেন এবং রক্ত সেচন করবেন। সমাগম-তাম্বুর তৈরির জন্য যে সব উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলোর মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর পরিত্রাণের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছিলেন।
সমাগম-তাম্বুর দরজা যে উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়েছিল, তাঁর মাধ্যমে নীল সুতা দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে যীশু যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে একেবারে চির দিনের জন্য আমাদের সমস্ত পাপ নিজে তুলে নিয়েছেন। বেগুনী সুতা দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে যীশুই রাজাদের রাজা, প্রভুদের প্রভু, তিনি সমস্ত বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। লাল সুতা দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে যে, যীশু বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন এবং শাস্তি হিসেবে ক্রুশে রক্ত সেচন করেছেন। মিহি মসীনা সুতা দ্বারা প্রকাশ করা হয় যে নীল, বেগুনীও লাল সুতার সত্য বাইবেলে প্রকাশ করা হয়েছে এবং এই বাক্য যে বিশ্বাস করবে সে তাঁর পাপ থেকে মুক্তি পাবে।
 এখন সকলকে এই সত্য মনে করতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে যীশু খ্রীষ্ট আমাদের ত্রানকর্তা, যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন। সমাগম-তাম্বুর তৈরির উপকরণ নীল, বেগুনী এবং লাল সুতা এবং মিহি মসীনাসুতা দ্বারা যে সত্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বিশ্বাস করতে হবে। এবং পাপের ক্ষমা পেতে হবে। মোশির মাধ্যমে ঈশ্বর পরিত্রাণের ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, পাপের ক্ষমার ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। যখন উপযুক্ত সময় হল তিনি যীশু খ্রীষ্টকে পৃথিবীতে পাঠালেন, যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিতে দিলেন। যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাদেরকে পাপের ক্ষমা দেন।
এই জন্য, যখন আমরা যীশু খ্রীষ্টকে ত্রাণকর্তার হিসাবে স্বীকার করি তখন আমরা জানতে পারি যে যীশু বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন। যেমন করে পুরাতন নিয়মে বলির পশু হস্তার্পণের মাধ্যমে ইস্রায়েল সমস্ত পাপ ও অধর্ম নিজের উপর তুলে নিত। তেমনি যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে এসে যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছিলেন, এবং ক্রুশে তাঁর মহামূল্য রক্ত সেচন করেছিলেন এবং এই ভাবে একেবারে অনন্ত কালের জন্য বিশ্বাসীদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন।
 বাক্য যে ভাবে লিখিত আছে, সেই বাক্যেই আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। বাইবেলের সত্য হল এই যে, পুরাতন নিয়মে মহাযাজক যেভাবে নৈবেদ্য উৎসর্গ করতেন, যীশু এই পৃথিবীতে এলেন, বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন, ক্রুশে বিদ্ধ হলেন এবং আমাদেরকে একবারে অনন্ত কালের জন্য পাপ থেকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে রক্ত সেচন করলেন। এই জন্য বাইবেলে বাক্য যে ভাবে লিখিত আছে, সে বাক্যে আমাদের কে অবশ্য বিশ্বাস করতে হবে। আমরা অনন্ত কালের জন্য নরকের যোগ্য ছিলাম, কিন্তু যীশু এই পৃথিবীতে এসে তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের দ্বারা ঈশ্বর আমাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করলেন।
ঈশ্বর আমাদের সবার পাপ ক্ষমা করলেও আমরা যদি এই বিশ্বাস না করি, তবে কখনই ক্ষমা পাবে না। একটা মাত্র পাপ ছাড়া আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, “পবিত্র আত্মার নিন্দা” (মার্ক ৩:২৮-২৯ পদ)। সেই ভাবে, যারা সত্যি সত্যি পেতে চায়, তাদের কে বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, রক্ত সেচন করেছিলেন, মৃত্যু কে পুনরায় জীবিত হয়েছিলেন এবং এই ভাবে তিনি আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। এই সত্য বিশ্বাস ছাড়া আর কোন ভাবে কি আমরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি? আমাদের জন্য এখনেই সময় যে আমরা জল ও আত্মার এই সত্য সুসমাচারের বিশ্বাস করি।
প্রত্যেককে অবশ্যই বুঝতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে যে, সমাগম-তাম্বুর দরজায় যে নীল, বেগুনী ও লাল সুতা এবং মিহি মসীনাসুতা ব্যবহার করা হয়েছে, তার দ্বারা যীশু ভবিষ্যতে যে পরিত্রাণকাজ সাধন করবেন সেই কথা প্রকাশ করা হয়েছে। যেহেতু পরিত্রাণপাবার জন্য আমাদেরকে যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করতে হয়, তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্ত সেচনে বিশ্বাস করতে হয়, তাই পরিত্রাণের জন্য এই সব সত্যে আমদেরকে অবশ্য বিশ্বাস করতে হবে। নির্দিধায় এবং নিঃসন্ধেহে এই সত্যে বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশুর এই পৃথিবীতে এসে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন, পুনরুত্থান করেছিলেন এবং এই সব কিছুই জগতের মানুষকে জগতের পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য করেছিলেন।
 

পিতা ঈশ্বর তাঁর পুত্রের কাছ থেকে যে বলিদান চেয়েছিলেন
 
আসুন আমরা ইব্রীয় ১০:৫-৯ পদ পড়ি, “এই কারণে খ্রীষ্ট জগতে প্রবেশ করবার সময়ে বলেন, “তুমি যজ্ঞ ও নৈবেদ্য ইচ্ছা কর নাই, কিন্তু আমার জন্য দেহ রচনা করিয়াছ হোমে ও পাপার্থক বলিদানে তুমি প্রীত হও নাই। তখন আমি কহিলাম, দেখ, আমি আসিয়াছি, গ্রন্থ খানিতে আমার বিষয় লিখিত আছে হে ঈশ্বর, যেন তোমার ইচ্ছা পালন করি।” উপরে তিনি কহেন, “যজ্ঞ, নৈবেদ্য, হোমও পাপার্থক বলিদান তুমি ইচ্ছা কর নাই, এবং তাহাতে প্রীত ও হও নাই”-এই সকল ব্যবস্থানুসারে উৎসৃষ্ট হয়-তৎপরে তিনি বলিলেন “দেখ, তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি।” তিনি প্রথম বিষয় লোপ করিতেছেন, যেন দ্বিতীয় বিষয় স্থির করেণ।”
এখানে যে বলা হয়েছে ঈশ্বর বলিদান ও নৈবেদ্য চান না- তার মানে কি? এই অংশটি গীতসংগিতা ৪০:৬-৭ পদ থেকে নেওয়া চয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, পুরাতন নিয়মের বলিদানের মাধ্যমে সম্পূর্নরূপে পাপের ক্ষমা পাওয়া যায় না, তাই চিরন্তন পাপার্থক বলি উৎসর্গ করতে হবে। এই জন্য যীশু পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান করেছেন এবং আমাদের ত্রাণকর্তার হয়েছেন। গীতসংগিতা ৪০:৭ পদে লেখা আছে, “তখন আমি কহিলাম দেখ, আমি আসিয়াছি, গ্রন্থ খানিতে আমার বিষয় লিখিত আছে।” এর মানে হল এই যে যীশু খ্রীষ্ট পৃথিবীতে এসেছিলেন, হস্তার্পণ দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, রক্ত সেচন করেছেন এবং পুরাতন নিয়মে লেখা বাক্য অনুযায়ী পরিত্রাণ সাধন করেছেন।
পুরাতন নিয়মে যুগে ইস্রায়েল জাতির পাপ ক্ষমার জন্য প্রায়শ্চিত্তদ দিনে বলিদান উৎসর্গ মাধ্যমে, বলির মস্তকে হস্তার্পণের দ্বারা পাপ স্বীকার দ্বারা তাদের পাপ থেকে মুক্ত হত। একই ভাবে যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে এলেন অনন্তকালীয় বলিরূপে জগতের সমস্ত পাপ ভার নিজের উপরে তুলে নিলেন, হস্তার্পণের মাধ্যমে, এবং জগতের সমস্ত মানুষে পাপের শাস্তি নিজে বহণ করলেন, জগতের সমস্ত পাপের ভার বহণ করে ক্রুশে দিলেন, বহুমূল্যে রক্ত সেচন করলেন এবং মৃত্যু বরণ করলেন। এই কাজের দ্বারা যারা বিশ্বাস করে তাদের কে প্রভু অনন্ত কালের পরিত্রাণ দান করেছেন।
সমাগম-তাম্বুর প্রথার মাধ্যমে ঈশ্বর যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন নতুন নিয়মে সেই প্রতিজ্ঞা অনুসারে যীশু পৃথিবীতে এলেন, এবং সকলের জন্য পরিত্রাণ সাধন করলেন। যারা বিশ্বাস করে তারা তাদের পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। সমাগম তাম্বুতে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে যীশু পৃথিবীতে এসে বাপ্তিস্ম নিয়ে এবং রক্ত সেচন করে সমস্ত মানুষকে একবারে আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিলেন। যীশু সত্যিই সেই প্রতিজ্ঞা অনুসারে যীশু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তিস্ম নিয়ে এবং রক্ত সেচন করে মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করলেন। অন্য কথায়, ঈশ্বরের সব প্রতিজ্ঞা যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা পূর্ণ হল এবং পরিত্রাণ সাধন করলেন।
     পুরাতন নিয়মে ইস্রায়েলরা ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে। তারা বিশ্বাস করে যে ভাবাদীদের কথা ঈশ্বরের কথা। কিন্তু তারা যীশু খ্রীষ্ট বিশ্বাস করতে পারে না। যিনি এই পৃথিবীতে নতুন নিয়মের সময় ত্রান কর্তারূপে এসেছিলেন। পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, এমনকি ইস্রায়েলরাও বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর নিজেই যীশু খ্রীষ্ট রূপে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং তাদের হৃদয়ে যীশু মোশীও রূপে গ্রহণ করতে হবে।
 


যীশু কেন এসেছিলেন?

 
যীশু যেহেতু তাঁর পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করতে এসেছিলেন, যারা তাঁকে বিশ্বাস করে, তিনি তাদের সবার ত্রানকর্তা। কারণ এই পৃথিবীতে এসে অনন্ত কালের জন্য সব পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। ইব্রীয় ১০:১০ পদে লেখা আছে, “সেই ইচ্ছাক্রমে, যীশু খ্রীষ্টের দেহ একবার উৎসর্গ করণ দ্বারা, আমরা পবিত্ৰীকৃত হইয়া রহিয়াছি।” আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছায় যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, পিতার ইচ্ছায় বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, পিতার ইচ্ছায় ক্রুশে জীবন দিয়েছেন, রক্ত সেচন করেছিলেন, মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছিলেন, এবং সেই ভাবে যারা বিশ্বাস করে তাদের ত্রাণকর্তার হয়েছেন। পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমাদের পাপ মুছে দেওয়ার জন্য এবং যীশু খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে এসে বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচন করেছিলেন। সেই জন্য তিনি নিজের ইচ্ছায় নিজেকে বলি রূপে উৎসর্গ করলেন। প্রকৃত পরিত্রাণ সাধন করলেন।
কারণ যীশু খ্রীষ্ট শুধুই ইস্রায়েলদের পাপ মোচন করার জন্য এই পৃথিবীতে আসেন নাই, কিন্তু জগতে সমস্ত পাপীদের জন্য এই জগতে এসেছিলেন এই সত্য হৃদয়ে বিশ্বাস করলেই কেবল পরিত্রাণ পাওয়া যায়। যীশু তার ৩৩ বছরের জীবনে একবার মাত্র বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, একবার মাত্র নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন, এবং এই ভাবে সমস্ত পাপীকে অনন্ত কালের জন্য এক বারেই পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। এটাই হল একমাত্র সত্য পরিত্রাণ।
 যীশু খ্রীষ্ট পৃথিবীর সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবী শেষ পর্যন্ত সমস্ত মানুষের কৃত পাপের জন্য এক বারেই মুক্তি সাধন করলেন। তিনি একবারের জন্য নিজের দেহকে উৎসর্গ করেছিলেন যেন আমরা চির কালের জন্য শূচি হতে পারি। যেহেতু তিনি যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন এবং আমাদের সমস্ত পাপের জন্য দোষী হয়েছিলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন, তাই এখন আমাদের আনন্দিত মনে জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করা উচিত এবং এই ভাবে আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হওয়া উচিত পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছায় যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ বহণ করার জন্য এবং সেই পাপের মূল্য পরিশোধ করার জন্য এই পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং পিতার ইচ্ছানুযায়ী ঈশ্বরই প্রেমে সফলতার সাথে সত্য পরিত্রাণ করেণ।
আপনি এবং আমি, আমরা যারা এই আধুনিক পৃথিবীতে আছি, আমাদের এই সত্য বাক্য অবশ্যই বিশ্বাস করা উচিত। যীশু বাপ্তিস্ম এবং ক্রশে তাঁর রক্ত সেচন এই দুটি কাজ এক সূত্রে বাধতে হবে এবং এক সত্য হিসাবে বিশ্বাস করতে হবে যার দ্বারা আমরা প্রকৃত রূপে পাপের ক্ষমা পাই। আমরা যদি তা করতে না পারি, তাহলে আমরা অনন্ত কালীয় পাপের ক্ষমা থেকে বঞ্চিত থাকব। তাই ঈশ্বরের লিখিত বাক্য অনুসারে জল ও আত্মার সত্য সুসমাচারে আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। জল ও আত্মার সুসমাচারে পরিত্রাণ রয়েছে। কিন্তু আমার যদি এর সাথে অন্য কিছু যোগ করি, বা কোন কিছু বাদ দেই, অথবা যেমন আছে তেমনি এই প্রকৃত সত্যে বিশ্বাস না করি, তবে আমরা পরিত্রাণ হারাব, নিজেরাও হারিয়ে যাব।
 আমাদেরকে এমন কোন কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করলে চলবে না যে, এই জল ও আত্মার সত্য সুসমাচার জগতের অন্যান্য সাধারণ মতবাদের মত, যার মাধ্যমে বিশ্বাস করা হয় যে, প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনার মাধ্যমে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইলে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। ঈশ্বর ইব্রীয় ১০:১১ পদে পরিস্কার ভাবে বলেছেন যে, “আর প্রত্যেক যাজক দিন দিন সেবা করিবার এবং এক রূপ নানা যজ্ঞ পূনঃ পূনঃ উৎসর্গ করিবার জন্য দাঁড়ায়; সে সকল যজ্ঞ কখনও পাপ হরণ করিতে পারে না।” অন্য কথায়, তিনি আমাদের বলতে চেছেয়ছেন যে, আমরা যদি প্রতিদিন সুধু মাত্র ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রার্থনা করলেও আমাদের পাপের ক্ষমা পাবনা।
যীশু খ্রীষ্ট পিতা ঈশ্বরের কাছে তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্যমে পরিত্রাণের যে বলি উৎসর্গ করেছেন, সেটাই প্রকৃত বলি এবং এই সত্যে বিশ্বাস করা দ্বারা আমরা প্রকৃত রূপে পাপের ক্ষমা পাই। যেহেতু যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নেওয়ার সময় যীশুর উপরে জগতের সমস্ত পাপের ভার অর্পিত হয়েছিল, সেই পাপ বহণ করে তিনি ক্রুশে পাপের শাস্তি স্বরূপ মৃত্যু বরণ করলেন। এবং যারা এই সত্যে বিশ্বাস করে যীশু বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশের রক্ত দ্বারা তাদের পাপ ধূয়ে যায়।
যীশুর নেয়া বাপ্তিস্মে এবং ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করা দ্বারা আমরাও তাঁর সাথে মৃত্যুবরণ করি এবং তার সাথেই আবার বিশ্বাসে জীবিত হই। রোমীয় ৬:২৩ পদে বলা হয়েছে, “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টে অনন্তজীবন।” যে পাপ হোক না কেন, সব পাপের বেতনই মৃত্যু। জীবন দিয়ে পাপের মূল্য দিতে হয়। এইজন্য যীশু খ্রীষ্টের জন্য এটা আবশ্যক ছিল যে, তিনি মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে আসবেন, যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নেবেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করবেন। যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আপনার সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পণ হয়েছে। তিনি সেই পাপ বহণ করে আমাদের সমস্ত পাপের মূল্য রূপে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করলেন এবং এই ভাবে একবারে চিরকালের জন্য আমাদের পাপ মুছে নিলেন। ঈশ্বর আমাদেরকে এই সত্য সুসমাচার দিয়েছেন, তার পরেও দেখা যায় অনেকেই প্রত্যেক দিন ঈশ্বরের কাছে তাদের পাপের জন্য ক্ষমা চায়। আসলে তারা জল ও আত্মার সত্য সুসমাচার জানে না।
মানুষের হৃদয়ে যখন পাপ থাকে তখন ঈশ্বরের সামনে তারা ভীতু না হয়ে পারে না। এ কথা সত্য যে, এখনও এমন অনেকে আছে যারা জল ও আত্মার সুসমাচার সম্বন্ধে জানে না, তারা ভয়ে ভয়ে থাকে কারণ তাদের বিবেক তাদেরকে দোষী করে। যা হোক যীশু মানুষকে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন এবং এই ভাবে মানুষকে সত্যি কারের পরিত্রাণ দিয়েছেন। তাহলে কি কারণে আমাদের উদ্বিগ্ন হতে হবে? যখন জল ও আত্মার সুসমাচার, ঈশ্বরের দেওয়া সুসমাচার আমাদের কে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করে, আমাদের কী ভয়ের কিছু আছে?
যারা জানে এবং সত্যিই বিশ্বাস করে যে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা যীশু মানুষের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, তারা প্রকৃত ভাবে বিশ্বাসে পরিত্রাণ পায়। ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন, “তোমাদের পাপ সকল সিন্দুরবর্ণ হইলেও হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ হইবে; লাক্ষার ন্যায় রাঙ্গা হইলেও মেষ লোমের ন্যায় হইবে।” বিশ্বাসে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি, কারণ পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা অনুসারে যীশু এই পৃথিবীতে এসে বাপ্তিস্ম গ্রহনের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপের ভার নিজের উপরে তুলে নিলেন। নিজে বলি রূপে হস্তার্পণের মাধ্যমে সমস্ত পাপ তুলে নেন। কারণ যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে তিনি সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিলেন এবং সেই পাপ নিয়ে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন। এই পরিত্রাণের কথাই ঈশ্বর পুরাতন নিয়মে বলেছিলেন। বিশ্বাসের দ্বারা আমরা আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি।
তারপর আমরা দেখতে পাই যে, এই মহা সত্য উপেক্ষা করে অনেকে কোন রকমে যীশুতে বিশ্বাস করে, যেন তাঁকে দয়া করেছে। তাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য তারা প্রতিদিন কান্ন কাটি ও চিৎকার করে, কারণ তাদের বিশ্বাস শুধু মাত্র যীশুর ক্রুশকে ঘিরে, তারা অন্ধ ভাবে যীশুর ক্রুশকে বিশ্বাস করে। এই সকল লোকের হৃদয় ভ্রান্তিতে পরিপূর্ণ এবং এই ভুল বিশ্বাস কে তাদের অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে।
আপনার এবং আমার আমাদের উভয়ের জন্য যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের প্রয়োজন, আমাদের সহানুভুতি বা আরাধণা না হলেও যীশুর কিছু এসে যায় না। সহজ সত্যই হল যে, আমাদের মত পাপী দের জন্য যীশু খ্রীষ্টের একান্ত প্রয়োজন,এবং যে সমস্ত লোক কোন বিশেষ কারণ ছাড়া সাধারণ ভাবে ঈশ্বরের বিশ্বাস করে, মনে করে যে ঈশ্বর তাদের আরাধণা ভিক্ষা করেণ, যেন তারা তাঁকে বিশ্বাস করে। কিন্তু এই ধরণের বিশ্বাস ঈশ্বর দ্বারা পরিত্যাক্ত।
যে সমস্ত লোকেরা মনে করে যে, যীশু তাদের কাছে করুণা চান যেন তারা তাঁকে বিশ্বাস করে, এই ধরণের লোকেরা তাদের অহংকারী হৃদয়ে কখনও জল ও আত্মার সুসমাচারের বিশ্বাস করতে পারে না, এই জন্য প্রকৃত ভাবে তারা পাপের ক্ষমা পায় না। ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা খুব অল্প, তারা তাদের প্রতিবেশির কথার্তার সাথে মিলিয়ে ফেলে, নিজেদের মত মনে করে যে ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলে তাকে করুণা করা হবে।
শেষ পর্যন্ত তারা সেই ধরণের লোক যারা বিশ্বাস করে না যে পাপ ক্ষমা পাবার জন্য যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্ৰুশীয় রক্তে বিশ্বাস করতে হবে এবং তারা ঈশ্বরের বিপক্ষ। তারা বিশ্বাস করে যে, অনুতাপের প্রার্থনা করলে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস না করলেও কারা পাপের ক্ষমা পাবে না। কারণ তারা অনর্থক ঈশ্বরের নাম নেয়, তারা জানেও না এবং বিশ্বাসও করে না যে যীশু খ্রীষ্ট ত্রাণকর্তার হিসাবে তাদের সব পাপ মুছে দিয়েছেন, তাই তারা পরিত্রাণও পাবে না।
ঈশ্বর বলেন “আমি যাহাকে দয়া করি তাহাকে দয়া করিব; ও যাহার প্রতি করুণা করি, তাহার প্রতি করুণা করিব।” (রোমীয় ৯:১৫ পদ)। ঈশ্বর যদি দয়া করে পাপী দেরকে পরিত্রাণ দান করে তবে তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছা অনুসারে করেণ। এ জন্য জল ও আত্মার সুসমাচারে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং সত্য পরিত্রাণ গ্রহণ করতে হবে।
যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের বাক্যে বিশ্বাস করে না তারা বুঝতে পারবে ঈশ্বরের কোপ ও দন্ড কতটা ভয়ানক। যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের প্রেমের মহত্ত্ব বুঝতে পারবে। যখন মানুষ ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজের পাপ বুঝতে পারে এবং স্বীকার করে, তখন যদি সে ঈশ্বরের দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তাহলে সে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হবে।
 যারা বিশ্বাস করে যে যীশু খ্রীষ্ট তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তারা পাপ থেকে মুক্ত হবে। অন্য দিকে, যারা এই সত্যকে তুচ্ছ করবে, তারা তাদের পাপের জন্য ভয়ানক শাস্তি ভোগ করবে। তাই জগতের সমস্ত মানুষকে আসল সত্যে। অর্থাত্জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে। যে পাপীরা ঈশ্বরের বিচারে ভয় করে না এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না, তারা অবস্যই পাপের শাস্তি পাবে। কিন্তু যারা যীশুর পাপ ক্ষমা বিশ্বাস করে, তারা তাদের সমস্ত পাপ থেকে ক্ষমা পাবে।
যাদের হৃদয়ে পাপ আছে, তারা ভুল মতবাদের পরিত্রাণে বিশ্বাস করে, জল ও আত্মার সুসমাচার থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত, তারা তাদের মনকে মিথ্যা সান্ত্বনা দিতে চায়। এমন অনেক লোক আছে, যারা বলে “যেহেতু আমি যীশুকে বিশ্বাস করি, তাই আমার হৃদয়ে পাপ থাকলে ক্ষতি নাই।” কিন্তু আমাদের এই কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, হৃদয়ে পাপ থাকলে নরকের শাস্তি ভোগ করতেই হবে। কারণ ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে অবশ্যই ন্যায় বিচার করবেন। কারণ তারা শয়তানের পক্ষ নিয়েছে, ঈশ্বর তাদের কখনই ছাড়বেন না।
কিন্তু যারা ঈশ্বরের বিচার জানে, তারা জানে যে অবশ্যই পাপের বিচার হবে, তারা ঈশ্বরের কাছে তাঁর দয়া প্রার্থনা করে, সত্যের অনুসন্ধান করে, এবং ঈশ্বরের পক্ষে কাজ করে। এ ধরণের লোকদের জন্য সত্য হলো যে যীশু খ্রীষ্ট বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। প্রত্যেক পাপী কে সত্য বিশ্বাস করতে হবে এবং পাপের ক্ষমা পেতে হবে। যীশু তাঁর বাপ্তিস্মর মাধ্যমে একবারে অনন্ত কালের জন্য জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন, একবার ক্রুশে মরেছেন এবং এভাবে আমাদের পাপ মুছে দিয়ে আমাদের ধার্মীক করেছেন।
জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদের সকলকে সত্য পরিত্রাণ সম্বন্ধে অবশ্যই জানতে হবে এবং আমাদের হৃদয়ে এই সত্যর বিশ্বাস অবশ্যই গভীর ভাবে থাকতে হবে। যারা হৃদয় দিয়ে সত্যিই এই সত্যে বিশ্বাস করে, তারা যে পাপই করুক না কেন, এই সত্য বিশ্বাস করার দ্বারা সমস্ত পাপের ক্ষমা পাবে এবং অনন্ত জীবন পাবে। আপনি কি বাক্যে বিশ্বাস করতে চান না, জল ও আত্মার সুসমাচার হৃদয়ে ধারণ করতে চান না, অথবা আপনি কি চান না যে এই সুসমাচারের মাধ্যমে আপনার সমস্ত পাপ দূর হয়ে যাক? যারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করে, তারা অবশ্যই পাপের ক্ষমা পাবে।
 


অনুতাপের প্রার্থনা আপনাকে পরিত্রাণ করতে পারে না

 
বর্তমান কালে এমন অনেক লোক আছে যারা যীশুকে বিশ্বাস করে, তারপরও প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনা করে, ঈশ্বরের কাছে তাদের ক্ষমা চায়। তারা প্রতিদিন তাদের নৈবেদ্য উৎসর্গ করার মাধ্যমে বেঁচে থাকে, যেন পুরাতন নিয়মে বসবাস করছে। কিন্তু বর্তমান এই রকম জীবন যাপন করার প্রয়োজন নেই। যতবার আপনি পাপের জন্য অনুতাপ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেণ, ততবারই কি যীশু ক্রুশে আপনার জন্য রক্ত সেচন করেণ? এটা ঠিক নয়। বরং যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশের রক্তে বিশ্বাস করে আপনাকে একবারে অনন্ত কালের জন্য পাপ থেকে মুক্ত হতে হবে। যারা প্রতিদিন প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনা করে পাপের ক্ষমা পেতে চায় তারা কখনই অনন্তকালীয় পাপের ক্ষমা পায় না, তাদের বিশ্বাস দ্বারা তারা কখনও সত্যিকার পরিত্রাণ পায় না।
যদি প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনা দ্বারা প্রত্যেকের পাপের ক্ষমা পাওয়া যেত, অথবা মানুষের তৈরি নিয়মের দ্বারা পাপের ক্ষমা পাওয়া যেত, তাহলে ঈশ্বর পাপের ক্ষমার প্রকৃত পথ প্রতিষ্টা করতেন না, বলতেন না যে, পাপের বেনত মৃত্যু। মানুষকে তাদের পাপ থেকে মুক্ত হতে হবে তাদেরকে অবশ্যই এমন নৈবদ্য উৎসর্গ যার দ্বারা তারা বিশ্বাসে যীশুর উপরে তাদের পাপ অর্পণ করবে। আমাদের সে বিশ্বাস অবস্যই থাকতে হবে, অনুতাপের প্রার্থনা নয়, কিন্তু সমাগম-তাম্বুর তৈরিতে যে চারটি রং ব্যবহার করা হয়েছে-নীল, বেগুনী এবং লাল সূতা ও মসীনা সুতার পরিত্রাণের যে সত্য প্রকাশিত হয়েছে, সে সত্য আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। অর্থাৎ অন্য কথায় বলতে গেলে, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের বিশ্বাস করে, তারা সত্যই পাপের ক্ষমা পায়। আমাদেরকে অবশ্যই হৃদয় দিয়ে এই সত্যে বিশ্বাস করতে হবে।
পুরাতন নিয়মে পাপীরা যেমন হস্তার্পণের মাধ্যমে তাদের পাপ বলির পশুর উপরে অর্পণ করত যখন তারা পাপার্থক বলি উৎসর্গ করত, তেমনি ভাবে আমাদেরকেও বিশ্বাসে যীশুর উপরে আমাদের পাপ অর্পণ করতে হবে, কারণ যীশু হস্তার্পণের মাধ্যমে বাপ্তিস্মর নিয়েছিলেন। যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস দ্বারাই আমাদেরকে ঈশ্বরের দেয়া অনন্তকালীয় পাপের ক্ষমা দূর করতে হবে। ঈশ্বর বলেন, “কারণ লোকে হৃদয়ে বিশ্বাস করে ধার্মিকতার জন্য”। এবং “অতএব বিশ্বাস শ্রবন হইতে এবং শ্রবন খ্রীষ্টের বাক্য দ্বারা হয়।” (রোমীয় ১০:১০, ১৭ পদ)। 
যোহন ১:২৯ পদে বলা হয়েছে, “পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকটে আসিতে দেখিলেন আর কহিলেন ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষ শাবক, যিনি জগতে পাপ ভার লইয়া যান!” এই অংশে সাক্ষ দেওয়া হয়েছে যে, যে দিন যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়ে ছিলেন, তার পরের দিন তিনি এই কথা বলেন। যোহন বাপ্তাইজক যখন যীশুকে তাঁর কাছে আসতে দেখলেন, তখন বললেন, “ও হে লোকেরা! ঐ দেখ তিনি!” তখন চারিদিকের মানুষের মধ্যে চমক সৃষ্টি হল যোহন চিত্কার করে বললেন, “ঐ দেখ! ঈশ্বরের মেষ শাবক এদিকে আসছেন! তিনি ঈশ্বরের পুত্র, তিনি ঈশ্বরের মেষ শাবক যিনি আমার মাধ্যমে জগতের পাপের ভার নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন। তিনি আমাদের ত্রানকর্তা।”
 তিনি যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের মেষ শাবক। “ঐ দেখ! ঈশ্বরের মেষ শাবক যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান!” যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন, এবং যীশুর উপর সমস্ত পাপ অর্পণ করেছিলেন, এই জন্য তিনি এই সাক্ষ দিতে পেরেছিলেন। কারণ, যখন যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন এবং যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করেছিলেন, অন্য কথায়, যীশু খ্রীষ্ট বলির মেষ শাবক হলেন এবং পিতা ঈশ্বারের ইচ্ছায় জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন।
পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের কাছে বলিদান উৎসর্গ করে পাপের ক্ষমা পাওয়া যেত, কিন্তু নতুন নিয়মে শুধু মাত্র এই বিশ্বাসে পাপ থেকে ক্ষমা পাওয়া যায়, সেই বিশ্বাস হল এই যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশের রক্তের মাধ্যমেই আমাদের পাপ মুছে দিয়েছেন। কারণ ঈশ্বর ইস্রায়েলদের পাপ মুছে দেওয়ার জন্য বৃষ, মেষ শাবক এবং ছাগল ইত্যাদি পশু বলি রূপে গ্রহণ করতেন, এবং অসংখ্য পশুর রক্ত পাত করা হত এবং খন্ড খন্ড করা হত এবং হোমবলি রূপে উৎসর্গ করা হত সত্যিই মানুষের পাপের কারণে অসংখ্য পশুকে হত্যা করা হত।
 কিন্তু নতুন নিয়মে যীশু এরকম পশু উৎসর্গ করেণ নাই। তিনি নিজের দেহকে আমাদের জন্য উৎসর্গ করেছেন। ঈশ্বরের মেষ শাবক যীশু এই পৃথিবীতে এলেন, বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপভার নিজের উপরে তুলে নিলেন, এবং রক্ত সেচন করলেন, যারা বিশ্বাস করে, তিনি তাদেরকে একেবারে চিরদিনের জন্য পাপ থেকে পরিত্রাণ করলেন। জল, রক্ত ও আত্মার দ্বারা যীশু চিরকালের জন্য আমাদের পাপ দূর করলেন।
ঈশ্বর এখন আপনাকে এবং আমাকে এই সত্য পরিত্রাণে বিশ্বাস করতে বললেন। তিনি আমাদের বললেন, “আমি তোমার সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি, কারণ আমি তোমাকে ভালবাসি।” এই ভাবে আমি তোমাকে পরিত্রাণ দিয়েছি। সুতরাং বিশ্বাস কর। আমার পুত্রকে বলিরূপে উৎসর্গ করে আমি তোমার সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি। আমার পুত্রকে আমি ৩৩ বছর বয়স পর্যন্ত এই পৃথিবীতে রেখেছিলাম এবং আমি তাকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলাম। তোমার জন্য আমি তাঁকে রক্ত সেচন করতে দিয়েছি এবং এই ভাবে আমি তোমাকে জগতের পাপ থেকে এবং পাপের শাস্তি থেকে মুক্ত করেছি। এখানে, এই সত্য বিশ্বাস করলে তুমি আমার নিজের সন্তান হতে পারবে, তোমাকে আমি ভালবাসি এবং আমার বাহুর মধ্যে তোমাকে জড়িয়ে রেখেছি।” এই সত্য জানুন এবং বিশ্বাস করুণ যে যারা যীশু রক্তে এবং বাপ্তিস্ম বিশ্বাস করে তিনি তাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেণ, তারাও ঈশ্বরের নিজের সন্তান হবার অধিকার পায়।
 


যীশু কি সত্যি জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন?

 
আসুন ইব্রীয় ১০:১৪-১৮ পদ দেখি “কারণ যাহারা পবিত্র কৃত হয়, তাহাদিগকে তিনি একই নৈবেদ্য দ্বারা চিরকালের জন্য সিদ্ধ করিয়াছেন, আর পবিত্র আত্মার আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ অগ্রে তিনি বললেন, ‘সেই কালের পর, প্রভু কহেন, আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব,’ তৎপরে তিনি বলেন, ‘এবং তাহাদের পাপ ও অধর্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না।’ ভাল, যে স্থানে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না।”
এই অংশে পরিস্কার করে বলা হয়েছে, “যে স্থানে এই সকলর মোচন হয়, সেই স্থানে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না।” শুভ সংবাদ শুনুন, যীশু যখন বাপ্তিস্ম নিলেন তখন আমাদের সব পাপ তাঁর উপরে তুলে নিলেন। আমরা, আপনি এবং আমি সারা জীবন যে সব পাপ করি শুধু সেই পাপ গুলোই নয়, কিন্তু সমস্ত মানব জাতির সব পাপও যীশুর উপরে অর্পিত হলো। ঈশ্বরের সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করার জন্য যীশু হস্তার্পণ দ্বারা জলে বাপ্তিস্ম নিলেন এবং এই ভাবে সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন।
নিজের কাঁধে সব পাপ তুলে নেওয়ার পর, তিনি মানুষের সমস্ত পাপের জন্য ক্রুশে শাস্তি ভোগ করলেন এবং সেই জন্য, যারা এখন এই সত্যে বিশ্বাস করে, তারা পাপের শাস্তি থেকে মুক্তি পায়। মহাযাজক যেমন বলির উপরে হস্তার্পণ দ্বারা ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ অর্পণ করতেন, তেমনি বাপ্তিস্ম দেওয়ার মাধ্যমে যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন এবং এই পাপ কাঁধে নিয়ে যীশু ক্রুশ বিদ্ধ হলেন এবং যারা বিশ্বাস করে, তাদের কে এভাবে পাপ থেকে মুক্ত করলেন। তাই, যারা বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার পায়।
রোমীয় ১০:১০ পদে বলে, “কারণ লোকে হৃদয়ে বিশ্বাস করে ধার্মিকতার জন্য, এবং মুখে স্বীকার করে, পরিত্রাণের জন্য।” সবার জন্য, ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিশ্বাস করলে ধার্মিক হওয়া যায়, সত্য পরিত্রাণ হৃদয়ে বিশ্বাস করলে পাপের ক্ষমা হয় এবং স্বর্গে প্রবেশ করা যায়। ভাই বোনেরা, আপনি কি হৃদয়ে বিশ্বাস করে, এবং সমস্ত পাপ স্বীকার করেছেন, বিশ্বাস করেছেন যে যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্ত “ঈশ্বরের ধার্মিকতা,” “সত্য পরিত্রাণ” এবং “পাপ ক্ষমার সুসমাচারের উপাদান”? পুরাতন নিয়মে বলিদান প্রথার মাধ্যমে বলির পশুর উপরে হস্তার্পণ না করলে পাপের মোচন হত না। ঠিক একণ ভাবে আমরা যদি যীশুর বাপ্তিস্মকে বাদ দিয়ে শুধু তার রক্তে বিশ্বাস করে, তাহলে আমাদের পাপ মুছে যাবে না।
“এবং তাহাদের পাপ ও অধর্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না। ভাল, যে স্থনে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থানে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না” (ইব্রীয় ১০:১৭-১৮ পদ)। ঈশ্বর কেন এখানে এই কথা বললেন যে তিনি আমাদের পাপ আর স্মরণে আনবেন না? যদিও আমরা মৃত্যু পর্যন্ত পাপ না করে পারি না, যীশু বাপ্তিস্ম নিয়ে একেবারে চিরদিনের জন্য জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিলেন, আমাদের পরিত্রাণ সাধন করলেন, এই পরিত্রাণ চির দিনের জন্য এবং আমরা যারা বিশ্বাস করি, আমরা এখন পাপ থেকে মুক্ত আছি। এই জন্য ঈশ্বরের আর আমাদের পাপ স্মরণ করার দরকার নেই।
 ঈশ্বরের ধার্মিকতা মানে তাঁর ন্যায় বিচার। পিতা ঈশ্বরের ন্যায় বিচার এ কথা বলে যে, তিনি পবিত্র এবং যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে তারা পবিত্র, পাপ থেকে মুক্ত। একেবারে সৃষ্টির প্রথম থেকে ঈশ্বর আমাদের ভালবেসেছেন এবং আমাদেরকে তাঁর সন্তান করতে চেয়েছেন। কিন্তু তিনি আমাদের যতই তাঁর সন্তান করতে চান না কেন, আমাদের পাপের কারণে তিনি তা করতে পারেন নাই। এই জন্য পিতা ঈশ্বর এই সমস্যা সমাধান করার পথ দেখিয়েছেন।
কারণ ঈশ্বর আমাদের পক্ষে এক নির্দোষ বলিদান করার পরিকল্পনা করেছেন, আমাদের পাপ সেই বলির উপরে অর্পণ করেছেন। যীশু বাপ্তিস্ম নিতে দ্বিধা করেণ নাই, তিনি আমাদের পক্ষে বলি হয়েছেন, ভয়ানক শাস্তি ভোগ করেছেন এবং এই ভাবে তিনি আমাদের জন্য অনন্তকালের জন্য পাপার্থক বলি হয়েছেন। এবং এই পাপার্থক বলির মাধ্যমে, যারা বিশ্বাস করে, ঈশ্বর তাদেরকে নিজের সন্তান করার ব্যবস্থা করেছেন। এখন, যারা এই সুসমাচারে বিশ্বাস করে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে তাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়ে গেছে। কারণ যীশু বাপ্তিস্ম গ্রহণ দ্বারা ইতিপূর্বেই জগতের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন, আমরা যদি বিশ্বাস করি যে মানুষের পাপের কারণে যীশু ভয়ানক শাস্তি ভোগ করেছেন, তাহলে আমাদের পাপের জন্য আমাদেরকে আর পাপার্থক বলি উৎসর্গ করতে হবে না। ভাই বোনেরা, এখনও কি আমাদের পাপের জন্য বলি উৎসর্গ দরকার আছে? না। অবশ্যই না।
 আপনি কি জানেন পাপহীন, নির্দোশ ও পবিত্র হয়েও যীশু খ্রীষ্টকে কেন ক্রুশে মরতে হল? আসলে যীশু নিজে কোন পাপ না করলেও তাঁকে ক্ৰুশে মরতে হল। এর একমাত্র কারণ এই যে যীশু যখন যর্দ্দন নদীতে যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিলেন, তখনই তিনি আমদের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিলেন, তাই তাকে আমাদের পক্ষে মরতে হল। যেহেতু, তিনি বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে সমস্ত মানুষ জাতির পাপ পূর্বেই নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, তাই সে পাপের শাস্তি হিসাবে তাঁকে ক্রুশে মরতে হল এবং ধার্মিকতা সাধিত হল।
 ঈশ্বরের পুত্র যখন আমাদের জন্য বাপ্তিস্ম নিয়ে ধার্মিকতা সাধন করলেন, তাই আমরা তাঁকে কিভাবে ধন্যবাদ দিতে পারি? মেষ যেমন লোম ছেদকের কাছে নীরব, যীশু তেমনি আমাদের পাপের বোঝা কাঁধে নিয়ে নীরব থাকলেন, ক্রুশের যাতনা ভোগ করলেন আমাদের সকলকে অবশ্যই তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশ সব সময় সাধন করতে হবে। কারণ তিনি যদি ক্রুশের শাস্তি ভোগ না করতেন, তাহলে আমাদের পাপের জন্য আমাদেরকেই অবশ্যই শাস্তি ভোগ করতে হত।
আমাদের প্রভু শুধু যে আমাদের পাপ বহণ করেছেনে তাই নয়, সেই সাথে আমাদের পাপের শাস্তিও তিনি ভোগ করেছেন। অন্য ভাবে যদি বলি, আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু নিজেই আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন, আমাদের নিজেদের পাপার্থক বলি হয়েছেন, নীরবে ক্রুশের শাস্তি ভোগ করেছেন। এই সব কিছু যেন আমরা পাপ থেকে মুক্ত হই এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করি। এই জন্য বাইবেল বলে, ‘‘ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না। অতএব, হে ভ্রাতৃগন, যীশু আমাদের জন্য ‘তিরস্করিনী’ দিয়া (অর্থাৎ আপন মাংস দিয়া) যে পথ সংস্কার করিয়াছেন।” (ইব্রীয় ১০:১৮-১৯ পদ)।
এখন কি আপনি বিশ্বাস করেণ, কেন যীশু খ্রীষ্ট ক্রুশে মরে ছিলেন? আমাদেরকে অবশ্যই শুধুমাত্র যীশুর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করলে চলবে না, সেই সাথে ভাল করে বুঝতে হবে কেন যীশু ক্রুশে মরেছিলেন এবং আমাদেরকে পরিস্কার ভাবে অবশ্যই বুঝতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে কেন যীশু বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন। যদি আপনি এবং আমি সঠিক ভাবে জানতে ও বিশ্বাস করতে চাই যে কোথায় এবং কিভাবে আমাদের পাপ ধৌত হয়েছে, তবে অবশ্যই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে এবং বুঝতে হবে যে, যীশু যখন যর্দ্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নেয় তখনই তিনি আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন এবং এই ভাবে বিশ্বাস আমাদের পাপ সকল ধৌত হবে।
 


জল ও আত্মার সত্য সুসমাচার জেনে এবং তাতে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা এখন আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি

 
এতক্ষণ আপনাকে যা বলেছি তা হল জল ও আত্মার সুসমাচার, বাইবেলে যার পূর্ণ বিবরণ রয়েছে। পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে এই পরিত্রানের সত্যর পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং সমাগম-তাম্বুর দরজায় নীল, বেগুনী এবং লাল সুতায় এই সত্য প্রকাশিত হয়েছে। আমার সহকর্মীদের সাথে আমিও পৃথিবীর অসংখ্য মানুষের কাছে এই নীল, বেগুনী এবং লাল সুতায় প্রকাশিত সত্য প্রচার করে আসছি। এখন পর্যন্ত, এমনকি এই মূহুর্তেও আমাদের বই গুলোর মাধ্যমে এই সত্য সুসমাচার সারা পৃথিবীতে প্রচারিত হচ্ছে।
হ্যাঁ, পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যারা যীশুতে বিশ্বাস করে, অথচ জল ও আত্মার সুসমাচার জানে না। আমি সাহস করে এদের কে বোকা মানুষ বলি, করণ এই জল ও আত্মার সুসমাচার হল মূল সত্য, যীশু খ্রীষ্ট যে বলিদান সম্পর্ণ করেছেন। সমাগম তাম্বুতে এই পরিত্রাণের সত্য প্রকাশিত হয়েছে। এখন এটা আপনার কাজ। আপনি যদি আসল সত্য না জেনে বিশ্বাস করে থাকেন, আপনার জন্য এখই সময় ফিরে আসার, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করুণ এবং আপনার পাপ থেকে মুক্ত হন।
যীশু বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু সম্বন্ধে জগৎ সৃষ্টির পূর্বে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছিল। এবং তা নীল, বেগুনী এবং মিহি মসীনা সুতার দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল। সেই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করতে এবং আপনাকে ও আমাকে আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ করতে যীশু বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, ক্রুশে মরেছিলেন, মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছিলেন, এবং এখন পিতা ঈশ্বরের দক্ষিন পাশে বসে আছেন। 
প্রকৃত সত্য না জেনে, আপনি কি এলনও আপনার নিজেস্ব জ্ঞান বুদ্ধি ও আবেগ দ্বারা যীশুতে বিশ্বাস করতে চেষ্টা করছেন? এই পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে, কিন্তু এখন তাদের সেই মিথ্যা বিশ্বাস থেকে ফিরাতে হবে, সমাগম-তাম্বুর দরজার নীল, বেগুনী এবং লাল সুতা ও মিহি মসীনা সুতায় জল ও আত্মার সুসমাচারের যে সত্য প্রকাশিত হয়েছে, তাতে মনে প্রানে বিশ্বাস করতে হবে।
ইব্রীয় ১০:১৯-২০ পদে বলা হয়েছে, “অতএব, হে ভ্রাতৃগন, যীশু আমাদের জন্য ‘তিরস্করিনী’ দিয়া, অর্থাৎ আপন মাংস দিয়া, যে পথ সংস্কার করিয়াছেন, আমরা সেই নূতন ও জীবন্ত পথে, যীশুর রক্তের গুনে পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে সাহস প্রাপ্ত হইয়াছি;” যীশু যখন বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং তারপর যখন ক্রুশে মরলেন, তখন মন্দিরের তিরস্করিণী ছিড়ে গেলো এবং যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশের রক্তে মানুষের পাপ ধুয়ে গেল। নীল, বেগুনী এবং লাল সুতা ও মিহি মসীনা সুতায় তৈরি এই তিরস্করিণী এতই শক্ত ছিল যে এর চার কোনায় চারটা ঘোড়া দিয়ে টানলেও তা ছিড়া সম্ভব ছিল না।
 এই শক্ত তিরস্করিণী কেহ না ধরলেও উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিড়ে গেল, এর দ্বারা এটাই প্রকাশিত হয় যে, যীশু যখন তাঁর কাজ সমাপ্ত করলেন, তখনই স্বর্গের দরজা একেবারে খুলে গেল। মন্দিরের তিরস্করিণী উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিড়ে যাওয়ার মানে পাপের সমস্ত দেয়াল ভেঙ্গে গেল, ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপের দেয়াল ভেঙ্গে দিলেন।
তাহলে পাপের দেয়াল ভেঙ্গে গেল-এর মানে কি? এর মানে হল এই যে, যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশের রক্তে যে বিশ্বাস করবে সেই পাপের ক্ষমা পাবে। ঈশ্বর সমাগম-তাম্বুর দরজার মাধ্যমে যা প্রকাশ করতে চাইলেন তা হল যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা একবারেই অনন্ত কালের জন্য মানুষের পরিত্রাণ সাধিত হয়েছে, সেই সত্য নীল, বেগুনীও লাল সুতা এবং মিহি মসীনা সুতায় প্রকাশিত হয়েছে। কারণ আমাদের অনন্ত কালীয় প্রায়শ্চিত্ত ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী সাধন করা হয়েছে, মহা পবিত্র স্থানের দরজার পর্দার যে নীল, বেগুনীও লাল সুতা এবং মিহি মসীনা সুতা ব্যবহার করা হয়েছে, সেই পর্দার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ছিড়ে গেল, মানুষের হাত দ্বারা নয় ঈশ্বরের হাত দ্বারা।
এর দ্বারা প্রকাশিত হয় যে যীশু খ্রীষ্ট মানুষের অনন্ত কালের মুক্তি দাতা হয়েছেন, আমরা যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, আমাদেরকে তিনি সত্যিই পরিত্রাণ করেছেন। পিতা ঈশ্বর নির্ধারন করেছেনে যে ব্যক্তি যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশের রক্তে বিশ্বাস করবে, সেই পাপ থেকে মুক্ত হতে পারবে এবং তাঁর সন্মুখে দাড়াতে পারবে। আপনি এই সত্যে বিশ্বাস করবেন, না কি করবেন না?
ঈশ্বর যেমন আপনাকে ভাল বেসেছেন, ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টও আপনাকে তেমন ভালবাসেন এবং তিনি বাপ্তিস্ম নিয়ে ও ক্ৰুশে মরে আপনাকে সত্যিকারের পরিত্রাণ দিয়েছেন। যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে দেওয়া ঈশ্বরের প্রেমে বিশ্বাস করে এবং সে সত্য দ্বারা আমরা স্বর্গে প্রবেশ করতে পারি, সে সত্যে বিশ্বাস করে আমাদের সমস্ত পাপ দুর হয়ে গেছে। জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, আমাদের আদি পাপও ক্ষমা হয়ে গেছে। কারণ যীশু বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশের রক্ত পূর্বেই আমাদের সমস্ত পাপ এবং শাস্তি থেকে মুক্ত করেছে।
ইব্রীয় ১০:২২পদ বলে, “এই জন্য আইস, আমরা সত্য হৃদয় সহকারে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় (ঈশ্বরের) নিকট উপস্থিত হই; আমরাতো হৃদয় প্রোক্ষন পূর্বক মন্দ হইতে মুক্ত, এবং সূচি জলে স্নাত দেহ বিশিষ্ট হইয়াছি।” বাইবেলের অবিরত পাপ ধৌত হওয়ার কথা বলা হয়েছে এই সত্যে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হই, সত্যটা হল এই যে যীশু খ্রীষ্ট তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের দেহের ও মনের সমস্ত পাপ ধৌত করে দিয়েছেন। 
মহাযাজক যেমন বলি উৎর্সগের পরে প্রক্ষালন পাত্রে সমস্ত ময়লা ধূয়ে ফেলতেন, আমরাও তেমনি যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করা দ্বারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হই, এই সত্য আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে। মহাযাজক যেমন প্রতিদিন পিতলের পাত্রে নিজেকে ধৌত করতেন, আমাদেরকেও প্রতিদিন এই সত্য বিশ্বাস করেও মনে রেখে আজি পাপ ধৌত করতে হবে যে যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন, কারণ এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে আমরা অনেক সময় পাপে জড়িয়ে পড়ি।
দেহ মন বা চিন্তা দ্বারা আমরা যেসব পাপ করি সে সব পাপকে জগতের পাপ বলা হয়। তাহলে আমাদের এই জগতের পাপ কোন বিশ্বাসের দ্বারা ধৌত হতে পারে? শুধুমাত্র যীশুর নেওয়া বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করার দ্বারাই আমরা এই সকল পাপ ধৌত করতে পারি। যারা একবার যীশু বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করার মাধ্যমে তাদের হৃদয় থেকে পাপ ধৌত করেছে, তদেরকে অবশ্যই তাদের হৃদয় পরিস্কার রাখতে হবে। এবং যখনই তারা পাপ করবে, তখনই এই বিশ্বাসে আবার তাদের হৃদয় ধৌত করতে হবে। যারা প্রতিদিন যীশুর বাপ্তিস্ম স্মরণ করে এবং বিশ্বাসে তাদের বস্ত্র পরিস্কার রাখে, তারা বাধ্য। কারণ যোহনের কাছে যীশু যখন বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন তখনই আমাদের সমস্ত পাপ যীশুর উপর অর্পিত হয়েছিল। প্রতিদিন এই বিশ্বাসে দাড়িয়ে থেকে এবং এই বিশ্বাস স্মরণ করে আমরা চিরদিনের জন্য আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারি।
আপনাকে অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে, অর্থাৎ যীশু যোহনের কাছে যখন বাপ্তিস্ম নিলেন, তখনই আপনার সমস্ত পাপ তার উপর অর্পিত হয়েছে। এই সুসমাচারে বিশ্বাস করলে আপনাকে কোন কিছু হারাতে হবে না, কারণ সর্বশক্তিমান ঈশ্বর পুরাতন নিয়মের যুগের পূর্বে, এমন জগত সৃষ্টির পূর্বে এই সঙ্কল্প করছিলেন। যীশু যে যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে আপনার পাপ তুলে নিয়েছেন এবং সেই পাপের শাস্তি বহণ করে ক্রুশে গিয়েছেন, আপনাকে ঈশ্বরের ধার্মিকতা এবং পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য তাহা বিশ্বাস কর, যে সত্য দ্বারা আপনি জেনেছেন যে যীশু রাজাদের রাজা, সেই সত্য আপনাকে পাপ থেকে মুক্ত করেছে, আপনার হৃদয়ের পাপ গুলো ধৌত করে আপনাকে নতুন করে দিয়েছে, বিশুদ্ব জল দ্বারা আপনার দেহকে ধৌত করেছে, সেটাই জল ও আত্মার সুসমাচার আপনার জীবনের জন্য অপরিহার্য্য বাক্য এবং আপনি যখন বিশ্বাস করবেন তখন তা আরো উজ্জ্বল হবে।
জনসম্মুখে যীশুর কাজের ৩ বছরের সময়ের মধ্যে সব চেয়ে প্রধান যে কাজ তিনি করেণ, তা হল তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেণ, যেন সমস্ত মানব জাতি পাপ থেকে উদ্ধার পায়। অন্য কথায়, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন এবং এই জন্য তাঁকে যোহনের কাছে যেতে হয়েছিল এবং বাপ্তিস্ম নিতে হয়েছিল। তাই চারটি সুসমাচারেই প্রথমে এই বিশেষ ঘটনা লেখা হয়েছে।
আসলে আপনি এবং আমি, আমাদের পাপের জন্য অবশ্যই আমাদের মরতে হত। কিন্তু কি ঘটল? আমাদের প্রভু পৃথিবীতে এলেন এবং যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিলেন, ঈশ্বরের মেষ শাবক হলেন জগতের সমস্ত পাপ নিয়ে ক্রুশে মরলেন, তাঁর দুই হাতে এবং দুই পায়ে আমাদের পাপের জন্য পেরেক মারা হয়েছিল, তিনি তাঁর হৃদয় থেকে রক্ত মোচন করলেন এবং মৃত্যু বরণ করলেন এবং মৃত্যু থেকে আবার জীবিত হলেন। এই জন্য যখন শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন, তখন যীশু বললেন, “সমাপ্ত হইল।”
 যীশু যা যা বলেছেন এবং করেছেন সে গুলো সবই সত্যি। আমাদেরকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য যীশু পাপের বলি হলেন এবং তৃতীয় দিন আবার জীবিত হলেন এবং মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার পর তিনি চল্লিশ দিন পুনরুত্থানের সাক্ষ্য দিলেন, স্বর্গে আহোরন করলেন এবং এখন পিতা ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিন পাশে বসে আছেন। আবার যীশু খ্রীষ্ট আমাদের নিতে এই পৃথিবীতে আসবেন। প্রথম বার যখন তিনি পৃথিবীতে এলেন, তখন ত্রাণকর্তার হিসেবে এসেছিলেন, কিন্তু এখন তিনি দ্বিতীয়বার, যারা বিশ্বাস করে না, তাদের বিচার করতে আসবেন।
আপনাকে এখন বুঝতে হবে যে, যীশু খ্রীষ্ট বিচারক হিসাবে আবার আসছেন, যারা জল, রক্ত ও আত্মার পরিত্রাণ বিশ্বাস করে, ঈশ্বরের সেই সব সন্তানদের। ৩ বছর জীবন কালে তিনি পরিত্রাণ সাধন করলেন, তাদেরকে স্বর্গে হাজার বছরের রাজ্যে যাওয়ার অধিকার দিলেন এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেণ, তাদের বিচার করতে, তারা ঈশ্বরের ভালবাসা তুচ্ছ করেছে।
এখন আপনি অবশ্যই আর জল ও আত্মার সুসমাচার অবহেলা করতে পারবেন না, বলতে পারবেন না যে আপনি জানেন না, কিন্তু আপনাকে অবশ্যই পরিত্রারের এই সত্য বিশ্বাস করতে হবে। আপনাকে অবশ্য বুঝতে হবে যে, ঈশ্বর যেমন সমাগম-তাম্বুর এবং বলিদানের প্রথার মাধ্যমে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট ও তেমনি এই পৃথিবীতে এলেন এবং হস্তার্পণের মাধ্যমে বাপ্তিস্ম নিলেন, ক্রুশে মরলেন এবং এই ভাবে পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে তাদের সব পাপ থেকে উদ্ধার করলেন এবং আপনাকে এই সত্যে বিশ্বাস করে অবশ্যই পাপের ক্ষমা পেতে হবে।
এমন কি ইস্রায়েল জাতিও এখনো এই সত্য থেকে দূরে আছে এবং এখনো মশীহের অপেক্ষা করছে। কিন্তু ইস্রায়েল জাতিকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, তারা যতই আগ্রহান্বিত হয়ে মশীহ অন্য কথায় যীশুর জন্য অপেক্ষা করুক না কেন, স্বাভাবিক ভাবে মশীহ যীশু ছাড়া আর কেহই নয়। যীশু ছাড়া এই পৃথিবীতে অন্য কোন মশীহ নেই এটাই সত্য স্বতঃ প্রমান, এবং যখন এটাই তখন ইস্রায়েলীয়দের জন্য আলাদা কোন সত্য আসবে না, তাদের অন্য কোন ত্রাণকর্তা নেই।
তাই ইস্রায়েলের লোকদের ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস না করার জন্য অনুতাপ করতে হবে এবং যীশু খ্রীষ্টকে তাদের প্রকৃত মশীহ রূপে গ্রহণ করতে হবে। যীশু খ্রীষ্টই প্রথম ত্রাণকর্তা, ইস্রায়েল লোকদের এই সত্য আবারও বিশ্বাস করবে, তাদের ঈশ্বর আত্মিকভাবে পছন্দ করেছিলেন। 
এমনকি এখনো ইস্রায়েলের লোকেরা একজন মর্যাদাসম্পন্ন, রাজোচিত এবং ক্ষমতাসম্পন্ন মশীহের জন্য অপেক্ষা করছে যিনি তাদের পাপ মুক্ত এবং পৃথিবীর সমস্ত দুঃখ কষ্ট থেকে মুক্ত করতে পারবেন। কিন্তু ইতিমধ্যে যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে মানুষরূপে এসেছিলেন এবং তাদের পাপমুক্ত করেছেন, যারা তাদের সমস্ত পাপের নিমিত্ত নরকের আগুনে বিচারিত না হয়ে পারত না। তাই তাদের এই সত্যতা যাচাই এবং এটাতে বিশ্বাস করতে হবে। তাদের পাপের নিমিত্ত তাদের আত্মা রক্ষা করার জন্য, পুরাতন নিয়মের প্রতিজ্ঞানুসারে হোমবলিরূপে যীশু নিজেই এই জগতে এসেছিলেন, তাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছিলেন এবং তাদের ঈশ্বরের নিজের লোক তৈরি করেছেন।
যীশু খ্রীষ্ট যিনি ত্রাণকর্তারূপে এই পৃথিবীতে এসে জল ও আত্মার সুসমাচারে প্রতীয়মান নীল, বেগুনী ও লাল এবং সাদা মিহি মসীনা বস্ত্রের মাধ্যমে আমাদের সাবাইকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। আর যারা তাঁকে বিশ্বাস করে তিনি নিশ্চিতরূপে তাদেরকে তাঁর সহস্রাব্ধের রাজত্বে তাঁর সাথে রাজত্ব করতে দেবেন। এরপর ঈশ্বরের অনন্তকালীন রাজ্যের জন্য তিনি তাদের অনুমোদন করবেন এবং তারা স্বয়ং ঈশ্বরের সঙ্গে সুখে এবং গৌরবে চিরদিন বসবাস করবে।
একারণে, আমরা যখন এখনো এই পৃথিবীতে আছি তখন আমাদের সবাইকে জল ও আত্মার সত্য সুসমাচার হৃদয়ে বিশ্বাস করতে হবে এবং ঈশ্বরের নিজের সন্তান হতে হবে। কেবলমাত্র যারা সুসমাচারের এই সত্যতা বিশ্বাস করে তারা ঈশ্বরের পাপ মুক্ত সন্তান হয় এবং পরবর্তী পৃথিবীর সমস্ত অর্শিবাদ গ্রহণের নিশ্চয়তা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
হাল্লিলুয়া! আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দিই যে, তিনি আমাকে আত্মিক ভাবে স্বর্গীয় আর্শিবাদের বিশ্বাস প্রদান করেছেন। প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি শীঘ্র আবার আসবেন; এরূপে, প্রভু আসছেন।