Search

Sermões

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[8-4] মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি (রোমীয় ৮:৪-১১)

< রোমীয় ৮:৪-১১ >
 “যেন আমরা যাহারা মাংসের বশে নয়, কিন্তু আত্মার বশে চলিতেছি, ব্যবস্থার ধর্ম্মবিধি সেই আমাদিগেতে সিদ্ধ হয়। কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে। কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি। কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতা, কারণ তাহা ঈশ্বরের ব্যবস্থার বশীভূত হয় না, বাস্তবিক হইতে পারেও না। আর যাহারা মাংসের অধীনে থাকে, তাহারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করিতে পারে না। কিন্তু তোমরা মাংসের অধীনে নও, আত্মার অধীনে রহিয়াছ, যদি বাস্তবিক ঈশ্বরের আত্মা তোমাদিগেতে বাস করেন। কিন্তু খ্রীষ্টের আত্মা যাহার নাই, সে খ্রীষ্টের নয়। আর যদি খ্রীষ্ট তোমাদিগেতে থাকেন, তবে দেহ পাপ প্রযুক্ত মৃত বটে, কিন্তু আত্মা ধার্ম্মিকতা প্রযুক্ত জীবন। আর যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন, তাঁহার আত্মা যদি তোমাদিগেতে বাস করেন, তবে যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন। অতএব, হে ভ্রতৃগণ, আমরা ঋণী, কিন্তু মাংসের কাছে নয় যে, মাংসের বশে জীবন-যাপন করিব।”
 
 তত্ত্ববধানকারীদের উদ্দেশ্য হল সাহিত্যের মধ্যে দিয়ে প্রভাবিত করা সেটা আমরা এখন করছি। যখন আমরা ঈশ্বরের বাক্য পড়ি আমরা আশীর্বাদ যুক্ত হই। এবং যখন আমরা তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করি আমাদের আস্থা বেড়ে যায়। 
 গত পাঁচ শতক যাবৎ মানুষ এই ধরণের ভ্রান্ত মতবাদে ভুগছে
যেমন পবিত্রতার মতবাদ, ন্যায়পরায়ণতার মতবাদ, এবং অন্য যারা দাবী করে যে অনুতাপের প্রার্থনা দ্বারা পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। 
 রোমীয় ৮:৩ পদে আমাদিগকে বলা হয়েছে যে, মাংস দূর্বল হওয়াতে যাহা করিতে পারে নাই ঈশ্বর তাহা করিয়াছেন, নিজ পুত্রকে পাপময় মাংসের সাদৃশ্যে এবং পাপার্থক বলিরূপে পাঠাইয়া মাংসে পাপের দন্ডাজ্ঞা করিয়াছেন।
 আজকে আমরা ঈশ্বরের সত্যের জন্য রোমীয় ৮:৪-১১ পদ দেখি। রোমীয় ৪:৩-৪ পদে বলা হয়েছে, “কেননা শাস্ত্রে কি বলে? “অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করিলেন, এবং তাহা তাঁহার পক্ষে ধার্ম্মিকতা বলিয়া গণিত হইল।” যে কাৰ্য্য করে, তাহার বেতন ত তাহার পক্ষে অনুগ্রহের বিষয় বলিয়া নয়, প্রাপ্য বলিয়া গণিত হয়।” অবশ্যই এটা প্রশ্নঃ এর অর্থ কি?
 
 

প্রথমত, মাংসে জীবন-যাপন না করার অর্থ কি ?

 
 এর অর্থ হল যেন আমরা মাংসিক/জাগতিক সুবিধার পিছনে না দৌঁড়াই। এর দ্বারা আত্মার চালনা এবং মাংসিক কামনার বৈসাদৃশ্যের সৃষ্টি হয়, এবং ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে যারা না চলে তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। “কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহার মাংসিক বিষয় ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে।” “মাংসিক বিষয়” বলতে কি বুঝান হয়েছে? এর অর্থ হল এমন অনেক লোক আছে যারা নিয়মিত মন্ডলীতে যোগ দেওয়ার পরেও নিজেদের অবিলাষ পূর্ণকরতে ব্যস্ত থাকে। 
 সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, এই জগতের লাবের আশায় কোন খ্রীষ্টিয়ানের মন্ডলীতে যাওয়া উচিত নয়। এটাই হল মাংসিক ভাব। এই সমস্ত লোকেরা বড় বড় গীর্জায় গিয়ে নিজেদেরকে এবং নিজেদের ব্যবসার গুনগান করে, যেন তারা তাদের ব্যবসার জন্য আরও অধিক ক্রেতা পেতে পারে। নিজেদের মাংসিক স্বার্থে তারা গীর্জায় যোগ দেয় এবং যীশুতে বিশ্বাস করে।
 এছাড়াও অনেকে আছে যারা খ্রীষ্টিয়ান সমাজের মধ্যে দলীয় করণের শিক্ষা দেয় আরও অনেকে আছে যারা জাগতিক বিষয়ের অন্বেষণের জন্য তাদের শিষ্যদের অনুপ্রাণিত করে, কারণ তারা নিজেরাও মাংসিক বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। 
 আমরা অতি সহজেই খ্রীষ্টিয় সমাজের এইসব দলীয়ভাগকারীকে চিনতে পারি। আসলে এরা কারা? এরা নিজেদের সম্প্রদায় সম্পর্কে গর্ব করে, এই ভাবে নিজেদের বিশ্বাসকে ভ্রন্ত করে। তারা বলে অমুক অমুক ভাবে তাদের সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের অমুক অমুক ধৰ্ম্মতত্ত্ব বিদ আছেন-যারা পৃথিবী ব্যাপী বিখ্যাত, তাদের এরকম দৃঢ় রীতি বয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সমস্ত গর্ব অন্তঃসার শূণ্য এবং তারা নিজেদের বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল। পৃথিবীতে এরকম বিশ্বাসধারী অনেকেই আছেন।
 তাদের নিজেদের মাংসের সুবিধার জন্য সমাজের লোকেরা যীশুতে বিশ্বাস করে। যারা মাংসে জীবন-যাপন করে। যারা মাংসে জীবন-যাপন করে মন্ডলীতে দম্ভ দেখায় এবং তাদের বৃহৎ মন্ডলীতে উপস্থিত হয়ে এধরনের লক্ষ্য থাকে যেমন- “আপনার স্ত্রীকে প্রেম করুন।” কিন্তু তাদের পক্ষে কি “যারা সাংসে জীবন-যাপন করে।” মন্ডলী কি তাদের লক্ষ্য হিসাবে তাদের স্ত্রীর দিকে তাদের চোখ নিবদ্ধ করতে পারে? তাদের উচিত না। তাহলে আমি বলছি যে, আমাদের স্ত্রদের ভালবাসা উচিত না? অবশ্যই না! কিন্তু যাইহোক এই ধরণের সুন্দর এবং আকর্ষণীয় লক্ষ্য মন্ডলীর উদ্দেশ্য হতে পারে না।
 যারা মাংসে জীবন-যাপন করে তারা মাংসিক বিষয় ভাবে। আজকাল অনেক উপাসকরা অন্যদেরকে মন্ডলীতে আনায়নে আগ্রহী করার জন্য মন্ডলী বৃদ্ধি করতে, উপহার দিতে এবং গীর্জাঘর বড় করতে নিজেদেরকে মনোযোগী করেন এটা বর্তমানে তাদের বিশ্বাসের প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় সবচেয়ে লম্বা। এবং সবচেয়ে বৃহৎ গীর্জাঘর তৈরী করাই তাদের লক্ষ্য। এমন কি তারা উচ্চস্বরে বলে যে অনেক অনুসারীদের একসঙ্গে সমাগম তাদেরকে স্বর্গের দিকে পরিচালিত করে এবং আরও অনেক ধরণের অযুহাত দেখায়, এবং তাদের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হল গীর্জাঘরকে আরও বড় করতে হবে টাকা উঠান। 
 মন্ডলী তৈরী করা তাদের মাংসিক বিষয় ভাবতে শেখায়, এবং
তারা তাদের অনুসারীদের গোঁড়া ধার্মিক হিসাবে তৈরী করে। কিছু কিছু প্রচারক তাদের ক্ষমতার সফলতাকে দাঁড় করাতে উপাসক মন্ডলীকে গোঁড়া, অর্ধউন্মাদ, ভ্রান্ত এবং চূড়ান্ত ভাবে কু-পথে পরিচালিত করে। 
 
 

যারা ঈশ্বরের আত্মার বশে চলে

 
 যাহোক, খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে ইহারা তারা যারা সত্যিকারভাবে ঈশ্বরের আত্মার বশে জীবন-যাপন করে। ইহারা যারা আত্মার বশে জীবন-যাপন করে, তারা ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে জীবন-যাপন করে, তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও বাক্যে কি লেখা আছে তা তারা বিশ্বাস করে, যা তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে এবং জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করে।
 বাইবেল বলে, যারা আত্মার বশে চলে, তারা আত্মিক বিষয় ভাবে। যদি আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস দ্বারা পাপের ক্ষমা পেয়ে থাকি, আমাদের উচিত ভাবনা-চিন্তাহীনভাবে বসে না থাকা, কিন্তু আত্মার ধ্যানে জীবন-যাপন করা উচিত। যারা আত্মিকভাবে চিন্তা করে, তারা আত্মায় জীবন-যাপন করে এবং আত্মায় বিশ্বাস দ্বারা সমস্ত কাজ করে। যারা আত্মার অনুসরণ করে খুশী হয়, এ সব লোকেরা পৃথিবীর অন্যদের রক্ষা করতে এবং বিশ্বাসের দ্বারা জীবন-যাপন করে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে। অতএব, আমাদের পাপ ক্ষমা হয়ে গেছে এবং অবশ্যই আমাদের মন আত্মার বশে চলে এবং তাঁহাতে জীবন-যাপন করে।
 আমাদের জীবন-যাপনের মধ্যে লক্ষ্য হচ্ছে, আত্মার কাজের পরিপূর্ণতা সাধন করা, আর তা হল জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করা। আমাদের মন আত্মার বশে চালন উচিত। আপনি আপনার মনকে কতটা আত্মার বশে চালান? আমরা আত্মিক সংগ্রামে ধাবিত এবং অবশ্যই ইহা প্রচার এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা আত্মিক বিষয় অনুসরণ করা উচিত। আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে ঈশ্বর কিসে সন্তুষ্ট হন এবং ঈশ্বরের কাজে মনোযোগের দ্বারা আত্মার কাজের প্রতিযোগীতা করতে হবে। এমনকি যদিও আমরা দূর্বল এবং অক্ষম থাকি। একটি নির্দিষ্ট কাজ করার পরে প্রভুর জন্য কাজ করতে আমাদের হৃদয় ব্যকুলতা থাকা উচিত। সাহিত্যের মাধ্যমে এখন আমরা পৃথিবী ব্যাপী জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করছি। প্রতিদিন আমাদের ওয়েভসাইটের মাধ্যমে পৃথিবী ব্যাপী ২০০ থেকে ৩০০ লোক আমাদের এই বিনামূল্যের। খ্রীষ্টিয় বই এবং ই-বুক পড়তে পারছে। বিশ্বাস দ্বারা চালিত হয়ে সারা পৃথিবীর সব দেশের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে জল ও আত্মার এই সুসমাচার প্রচার করার মাধ্যমে আমরাও আপনার সাথে মন্ডলীতে থেকে খ্রীষ্টের সেবা করছি। যদি আমরা আত্মিক বিষয়ের উপর গুরুত্ব না দিতাম, তাহলে আমরা আত্মার এই ফল ভোগ করতে পারতাম না। আত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের প্রত্যেকেরই তাঁর কাজে করে যাওয়া উচিত। তবেই আমরা আমাদের আত্মিক বর যীশু খ্রীষ্টকে সন্তুষ্ট করতে পারব, যেমন হিতোপদেশ ৩১ অধ্যায়ে গুনবতী ভাৰ্য্যার বর্ণনা রয়েছে।
 ৮ পদে বলা হয়েছে, “আর যাহারা মাংসের অধীনে থাকে, তাহারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করিতে পারে না।” অর্থাৎ যারা এখনো পাপের ক্ষমা পায়নি। “কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি।”
 (রোমীয় ৮:৭-৮) অর্থাৎ যারা প্রভুর আত্মা পায়নি, তারা ঈশ্বরের পথে কাজ করতে পারে না, বা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। 
 পাপীরা ঈশ্বরের ব্যবস্থার কাছে নিজেদের সমর্পণ করে না। ঈশ্বরের ধার্মিকতার কাছেও করে না। তারা তাঁকে সন্তুষ্ট করতে পারে না, কারণ তারা তাদের জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছা বুঝতে পারে না, যেহেতু পবিত্র আত্মা তাদের মধ্যে বাস করে না। জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে মানবজাতির সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়েছে, সেটাই কেবল প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারে। পাপীর প্রশংসায় ও আরাধনায় তিনি সন্তুষ্ট হন না। 
 পাপীদের প্রশংসা দ্বারা ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন না। হস্ত উত্তোলন পূর্বক পাপীরা যতই তাঁর প্রশংসা করুক না কেন, চোখের জলে যতই তাঁর আরাধনা করুক, ঈশ্বরকে তা সন্তুষ্ট করতে পারে না। আবেগে আপ্লুত হওয়ার মাধ্যমে পাপী খ্রীষ্টিয়ানেরা প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে চায়। তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। যারা পাপের মধ্যে রয়েছে তারা প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারে না, কারণ তারা পাপী তারা যতই চেষ্টা করুক না কেন প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে তাদের আগ্রহের মাত্রার উপর নির্ভর করে না, অসম্ভব তার উপরই নির্ভর করে। 
 বড় বড় গীর্জাঘর তৈরী করে কি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যাবে? তিনি সন্তষ্ট হবে না। যদি বড় গীর্জা ঘরে উপসনা করার প্রয়োজন পড়ে, তাহলে সাধ্যমত বড় গীর্জাঘর তৈরী করতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বড় গীর্জা ঘরের মাধ্যমে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যাবে।
 সম্প্রতি আমার শহরে ৩০লক্ষ আমেরিকান ডলার খরচ করে একটি নূতন গীর্জাঘর তৈরী করা হয়েছে, অথচ তার পাশেই পরান গীর্জাঘরটি যথেষ্ট সুন্দর রয়েছে এবং সদস্যদের বসার জন্য যথেষ্ট জায়গাও রয়েছে। যখন মন্ডলীর সভ্য সংখ্যা ২০০ থেকে ৩০০ জন, এই নূতন ঘর তৈরী করা কি তখন প্রয়োজন ছিল? ঈশ্বরের মন্ডলী ইটের তৈরী নয়। ঈশ্বর বলেন যে, আমরাই তাঁর মন্দির এবং ধার্মিকের হৃদয়ে ঈশ্বরের আত্মা বাস করেন।
 প্রয়োজন থাকলে অবশ্যই বড় গীর্জাঘর তৈরী করতে হবে, কিন্তু বড় ঘর তৈরী করার মাধ্যমে কি ঈশ্বরের গৌরব করা যায়? না, কখনোই না। অধিক সংখ্যক লোক গীজা ঘরে জড়ো করতে পারলে কি প্রভুর গৌরব বেশী হয়? না, এসবের মাধ্যমে ঈশ্বরের গৌরব প্রকাশিত হয় না। যারা মাংসে জীবন যাপন করে, তারা প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারে না।
 কখনও কখনও এমন ধার্মিক ব্যক্তিও দেখা যায়, যারা জাগতিক লাভের আশায় জীবন-যাপন করে। এসব লোকেরা প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। ধার্মিকদের মধ্যে এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে, যারা মাংসিক ধ্যান ধারনার মধ্যে বন্দি আছে। এই ধরনের লোকেরা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে, মন্ডলীতে তারা যথাযথ বিশ্বাসে জীবন-যাপন করতে পারে, কিন্তু যারা সব সময় বিভিন্ন অভিযোগ এনে মন্ডলীকে দোষারোপ করে, এবং একসময় মন্ডলী পরিত্যাগ করে চলে যায়। 
 তাই আমরা যারা ধার্মিক আমাদের উচিত ধার্মিক জীবন-যাপনের মাধ্যমে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা, মাংসিক লাভের পিছনে দৌড়ান নয়। ঈশ্বরের কাজ এবং তাঁর ধার্মিকতার বিষয়ে আমাদের চিন্তা করা উচিত, তাঁর ধার্মিকতার পক্ষে কাজ করা উচিত এবং আমাদের দেহ, মন এবং যা কিছু সব তাঁর কাজে ব্যবহার করা উচিত। ঈশ্বকে সন্তুষ্ট করতে পারে আমাদের এমন জীবন-যাপন করা উচিত। 
 
 

খ্রীষ্টের আত্মায় যারা রয়েছে

 
 আসুন ৯ পদটি একসঙ্গে পড়ি,“কিন্তু তোমরা মাংসের অধীনে নও, আত্মার অধীনে রহিয়াছ, যদি বাস্তবিক ঈশ্বরের আত্মা তোমাদিগেতে বাস করে। কিন্তু খ্রীষ্টের আত্মা যাহার নাই, সে খ্রীষ্টের নয়। ”
 পৌলের ব্যাখ্যানুযায়ী এই অংশে এটাই বুঝানো হচ্ছে যে, যদি আমরা জও আত্মার সুসমাচারে অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি, যদি আমাদের পাপের ক্ষমা হয়ে থাকে, তাহলে আমরা আর মাংসে থাকি না, আত্মায় চলি। যার মধ্যে আত্মা রয়েছে, সে খ্রীষ্টে আছে, খ্রীষ্টের আত্মা যার নাই সে খ্রীষ্টের নয়।
 সুতরাং আমরা আর মাংসে চলতে পারি না, আমাদের আত্মায় চলতে হবে। যারা আমরা আত্মায় চলছি, জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে যারা আমরা পাপের ক্ষমা পেয়েছি, আমাদের ভুললে চলবে না যে, আমরা ধার্মিকতার সৈনিক, খ্রীষ্টের ধার্মিকতার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার অধিকার রাখি। মাংসিক দূর্বলতার কারণে আমাদের হতাশ হওয়া উচিত নয়, দূর্বলতা সত্ত্বেও বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে হবে, আমরা তাঁর, তাঁর মধ্যে আছি এজন্য আমরা তাঁর কর্মী।
 আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, নূতন জন্ম লাভ করার পরে আমরা শুধু মাংসিক বিষয়ের প্রতি ধাবিত হব না। এই সত্য জেনেই আমাদের জীবন ধারণ করতে হবে যে, ধার্মিক ঈশ্বরের ধার্মিকতার মাধ্যমেই বাঁচে। ১০ পদে খ্রীষ্টিয়ানদের জীবন ধারা সম্পর্কে বলা হয়েছে, “আর যদি খ্রীষ্ট তোমাদিগেতে থাকেন, তবে দেহ পাপ প্রযুক্ত মৃত বটে, কিন্তু আত্মা ধার্ম্মিকতা প্রযুক্ত জীবন।”
 প্রকৃতপক্ষে আমরা, অর্থাৎ আমাদের দেহ পাপ প্রযুক্ত যীশু খ্রীষ্টের সাথে ক্রুশে মৃত্যু বরণ করেছেন। ঈশ্বরের ধর্মময় কাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। কারণ এই ধার্মিকতার মাধ্যমে ধার্মিক আত্মা অনন্ত জীবন লাভ করেছে। অনন্ত জীবন! আমাদের এটা জানা উচিত যে, যাদের বিচার হয়ে গেছে তারা শুধু মাংসের বশে জীবন-যাপন করতে পারে না। যারা নূতন জন্ম পাওয়ার পরে ঈশ্বরের ধার্মিকতার জন্য জীবন-যাপন করে না। ঈশ্বরের ধার্মিকতা থেকে তারা অনেক দূরে রয়েছে।
 ঈশ্বরের ধার্মিকতা অনুযায়ী জীবন-যাপন করব, এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। জলও আত্মার মাধ্যমে নূতন জন্ম লাভ করার পরে আপনাদের কারো কারো মধ্যে এই রকম চিন্তা আসতে পারে, “বাইবেল বলছে,-যারা মাংসে আছে তারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। আমি অবশ্য তাদেরই একজন”। কিন্তু এটা ঠিক নয়। তাঁর ধার্মিকতার সৈনিক হিসাবে জীবন-যাপন করার উদ্দেশে ঈশ্বর আমাদের নূতন জন্ম দিয়েছেন।
 কিছু কিছু লোকের চিন্তা এই রকম, কারণ তারা বাইবেলের ভুল ব্যাখ্যা করে। যদিও অনেক ধার্মিক ব্যক্তি ভাবতে পারে যে, মাংসিক দূর্বলতার কারণে তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে জীবন ধারণ করতে পারে না, কিন্তু সত্য হল এই যে, হৃদয়ে পবিত্রতা থাকার কারণে ঈশ্বরের পক্ষে কাজ করার মাধ্যমে তারা আনন্দ করতে পারে।ঈশ্বরের পক্ষে কাজ করার মাধ্যমে মানুষ সুখী এবং আনন্দিত হয়, ভাল থাকতে পারে। অন্য কথায় ঈশ্বরের কার্য্যবিহীন জীবন উদ্দেশ বিহীন, অনুপ্রেরণাহীন ও অভিশপ্ত জীবন।
 জল ও আত্মার সুসমাচার গ্রহণ করার পরে এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতায় জীবন-যাপন করলে পবিত্র আত্মা আমাদের অন্তরে বাস করেন। যে ব্যক্তি পাপের ক্ষমা পায়, পবিত্র আত্মা তার উপরে। অবতীর্ণ হন এবং তার অন্তরে বাস করেন। পবিত্র আত্মা যাদের মধ্যে বাস করেন, তাদের জীবন কেমন হয়? তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় জীবন-যাপন করেন এবং তাঁর ধর্মময় কাজ করেন।
 অল্প কথায় বলতে গেলে, যারা পাপের ক্ষমা পেয়েছে, অর্থাৎ যাদের বিচার হয়ে গেছে, তারা শুধু বিশ্বাস দ্বারা বাঁচে। বিশ্বাসে জীবন-যাপন করার মাধ্যমে এবং ঈশ্বরের কাজ করার মাধ্যমে ধার্মিকেরা বিশ্বাস রক্ষা করতে পারে। যদি আপনি চিন্তা করেন যে, বিচার এড়িয়ে আপনি এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবেন, তাহলে আপনি বুঝতে পারেননি যে, আপনাকে পাপের ক্ষমা দেওয়া হয়েছে এবং আপনার গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে। 
 ধার্মিকদের গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে। নূতন জন্ম লাভ করার আগে তারা এই জগতের জন্য এবং নিজেদের মাংসিক সুখ অভিলাষের উদ্দেশ্যে জীবন-যাপন করত এবং সুখী হতে চাইত। কিন্তু নূতন জন্ম পাওয়ার পরে পূর্বের জীবন-যাপন করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। আমরা পাপের ক্ষমা পেয়েছি। লাখ টাকা বেতন পেলেও কি আমরা সুখী হতে পারতাম? আমরা যখন অন্য আত্মাগণকে এই জগত থেকে মুক্ত করতে চাইছি, জাগতিক বিষয়ে তখন আমরা কিভাবে সন্তুষ্ট হতে পারতাম?
 অতএব, আমি চাইছি আপনি নিজেকেই জাগতিক এবং আত্মিক বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করুন। সেই বিষয়গুলো জানার জন্য নয়, কিন্তু আমি চাইছি বিষয়গুলো নিয়ে আপনি গভীরভাবে চিন্তা করুন।
 পরবর্তী বইয়ে আমি রোমীয় ১ থেকে ৬ অধ্যায় পর্যন্ত আলোচনা করেছি, এবং এই বইয়ে ৭ থেকে ১৬ অধ্যায় পর্যন্ত আলোচনা করছি। আমাদের খ্রীষ্টিয় বইয়ের তালিকায় এই বই দুটি চার এবং পাঁচ নম্বর বই, যা সারা পৃথিবীর খ্রীষ্টিয়ানদের কাছে পড়ার জন্য বিতরণ করা হবে। আমি জানি আমাদের এই বইগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর অনেকেই ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে জানতে পারবে। আমরা পরবর্তী তিনটি উপদেশমূলক বইয়ের মাধ্যমে আমি পরিত্রাণের মূল বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। প্রথম বই সুসমাচার সম্পর্কে দ্বিতীয় বই ধর্মতত্ত্ব (থিওলজী) সম্পর্কে এবং তৃতীয় বইয়ে পবিত্র আত্মা এবং পবিত্র আত্মা লাভ করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। চতুর্থ এবং পঞ্চম বইটির মাধ্যমে ধর্ম তত্ত্বের ভ্রান্ত মতবাদ সম্পর্কে, যীশুতে বিশ্বাস করার পরেও কেন খ্রীষ্টিয়ানেরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে না, সেই সম্পর্কে এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে প্রকাশিত ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি।
 আমার বিশ্বাস এই বইয়ের মাধ্যমে আরো ব্যাপকভাবে সুসমাচার প্রকাশিত হবে। প্রথম দুইটি বই প্রকাশের পরে তৃতীয় বই প্রকাশের সময়কে তুলনা করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে, সুসমাচার প্রচারের গতি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন, তৃতীয় বই প্রকাশের পরে, অনেক অনেক মানুষ প্রথম এবং দ্বিতীয় বই পেতে চাচ্ছে।
 এই দুইটি বই প্রকাশের পরেও আমরা বুঝতে পারব যে, জল ও আত্মার সুসমাচারের ক্ষমতা কত মহৎ। আমি প্রার্থনা করি ঈশ্বরের ধার্মিকতা সম্পর্কে যারা জানবেন, ঈশ্বরের আশীর্বাদ যেন প্রচুররূপে তাদের উপর বর্ষিত হবে। রোমীয় পুস্তকের তাৎপর্য তারা বুঝতে পারবেন, ঈশ্বরের ধার্মিকতা নিহিত সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমে তারা বুঝতে পারবেন।
 সুসমাচারের জন্য আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। আপনিও কি ঈশ্বরের কাজ করছেন না? পাপীদেরকে পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার সুসমাচার প্রচারকাজে আপনিও সহায়তা করছেন। আমরা যখন আমাদের উপরে অর্পিত কাজে বিশ্বস্ত থাকছি, সুসমাচার প্রচারের কাজে সহায়তা করছি, এর দ্বারা আমরা পাপীকে পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার ও সহায়তা করছি। তাহলে জাগতিক স্বার্থে কিভাবে আমরা এই মহৎ কাজ পরিত্যাগ করতে পারি?
 আপনার কাছে আমি এই বিষয়টি পরিষ্কর করতে চাই যে, আমরা ধার্মিকেরা কেবলমাত্র মাংসিক উদ্দেশ্যে জীবন-যাপন করতে পারি না। আত্মাগণকে জয় করার জন্য এবং তাঁর ধার্মিকতায় জীবন-যাপন করার উদ্দেশে আমাদের গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে। এটা আমাদের অবশ্যই জানতে হবে এবং বাকী জীবনটা ঈশ্বরের উদ্দেশে সত্য সুসমাচার প্রচারের জন্য এবং হারিয়ে যাওয়া আত্মাগণের পরিত্রাণের জন্য যাপন করতে হবে। রোমীয় পুস্তকের এই অংশে এই কথাই বলা হয়েছে। আসুন ১০ এবং ১১ পদ দেখি, “আর যদি খ্রীষ্ট তোমাদিগেতে থাকেন, তবে দেহ পাপ প্রযুক্ত মৃত বটে, কিন্তু আত্মা ধার্ম্মিকতা প্রযুক্ত জীবন। আর যিনি মূতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন, তাঁহার আত্মা যদি তোমাদিগেতে বাস করেন, তবে যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন।”
 উপরোক্ত অংশে বলা হচ্ছে, পাপের কারণে আমাদের দেহ আগেই মারা গেছে। কিন্তু ঈশ্বরের ধার্মিকতা এবং বিশ্বাসের কারণে আমাদের আত্মা জীবিত রয়েছে। যদি কেউ ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করে, সে নূতন জীবন পায়। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা নূতন জীবন লাভ করেছি।
 ১১ পদ বলছে, “আর যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন, তাঁহার আত্মা যদি তোমাদিগেতে বাস করেন, তবে যিনি মূতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন।” অর্থাৎ শেষকালে তিনি আমাদের জীবিত করবেন। বহুপূর্বে মাংসে এবং পাপে আমাদের যে জীবন ছিল তা চলে গেছে। আমাদের গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে যেন আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বাকী জীবন-যাপন করতে পারি।
 এই কথা ভেবে আপনি হয়তো ধার্মিক জীবন-যাপনের বিষয় হতাশ হতে পারেন, “সন্দেহ নেই যে তাদের কথা অনুসারে প্রায়ই ধার্মিকেরা একত্রিত হবে।” কিন্তু তাদের পরেও আপনার পাশ্ববর্তী ধার্মিক ব্যক্তি অলস ভাবে বসে থাকা বা অন্য জনের উচ্চ ঈশ্বরের প্রশংসা আপনার মনকে নূতন করতে পারে, যদি আপনি মন্ডলীতে থাকেন। কারণ পবিত্র আত্মা মন্ডলীতে এবং বিশ্বাসীদের হৃদয়ে কাজ করেন, আপনার হৃদয় নূতন হবে, আপনি নূতন শক্তি পাবেন, আত্মিক খাদ্য পাবেন এবং আত্মিক কাজ করার জন্য আত্মার শক্তি পাবেন।
 বিশ্বাসীদের সমাগমে আপনি সতেজ হবেন। আপনি যে জগত থেকে পৃথক এই প্রকাশ করে যে আপনার গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে। এই কারণে যারা মাংসিক ভাবে জীবন-যাপন করে তারা মাংসিক বিষয় ভাবে, কিন্তু যারা আত্মায় জীবন-যাপন করে, তারা আত্মিক বিষয় ভাবে। যাদের বিচার হয়ে গেছে তারা মাংসিক জীবন-যাপন করে না। ধার্মিকেরা পাপের দাসত্ব করতে চায় না। আমরা অন্ততপক্ষে আত্মার বশে জীবন - যাপন করতে চাই এবং আত্মিক বিষয় ভাবি। ধার্মিকেরা আত্মিক কাজ করে, খ্রীষ্টের জন্য আত্মা জয়ের কাজ করে।
 ঈশ্বরের কাজের জন্য আমাদেরকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, আমাদের মনকে সেইভাবে প্রস্তুত করতে হবে, নিজেদের চিন্তাভাবনা ত্যাগ করতে হবে। বাকী জীবন-এভাবেই যাপন করতে হবে। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় জীবন-যাপন করার উদ্দেশে আপনার গন্তব্য পরিবর্তিত হয়েছে, কারণ জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করার মাধ্যমে আপনি পাপ থেকে মুক্ত হয়েছেন। আশা করি এ সত্য আপনি জানেন। 
 আমি দুঃখিত যে, আপনি আর জগতে ফিরে যেতে পারেন না বা পাপের দাসত্ব আর করতে পারেন না। যদি জগতে ফিরে যান, নিজের মৃত্যু নিজেই ডেকে আনবেন। জাগতিকমনা হওয়া মানেই মৃত্যু। আপনার আত্মার মৃত্যু হবে, মনের মৃত্যু হবে, আপনার দেহ মরে যাবে যদি আপনি এখনো জগতস্হ বিষয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকেন। বেরিয়ে আসার পরে ইস্রায়েলীয়রা আর মিশরে ফিরে যায়নি। সুফ সাগর পার হওয়ার পরে তারা আর মিশরীয়দের সাথে সাক্ষাত করে খুশী হয়নি। সুতরাং আমরা যারা পাপের রাজত্ব থেকে বেরিয়ে এসেছি, তারা আর সেখানে ফিরে যেতে পারি না বা আত্মিক মিশরীয়দের সাথে সাক্ষাতে খুশীও হতে পারি না।
 কোন ধার্মিক বা নূতন জন্মপ্রাপ্ত ব্যক্তি জগতের পাপীদের প্রতি ফিরে গেলে ঈশ্বরের মন্ডলীতে ফিরে আসার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠবে। মন্ডলীতে ফিরে আসার জন্য তার মাঝে প্রচন্ড ব্যকুলতা থাকবে। সুতরাং আসুন আমরা আত্মিক বিষয়ের উপর আমাদের মনকে স্থাপন করি।
 ঈশ্বরের আত্মার বিষয় বলতে কি বুঝানো হয়েছে? ঈশ্বরীয় বিষয় নয় কি? ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারের বিষয় নয় কি? তার পরেও কি আমরা দূর্বল এবং অশুচী হই? আপনি দূর্বল এবং আমিও তেমনি। দূর্বলতা এবং অশুচীতার কারণে আপনি কি পাপের ক্ষমা পাননি? অবশ্যই পেয়েছেন! তাহলে কি পবিত্র আত্মা আপানার অন্তরে বাস করে? দৃঢ়ভাবে বলতে চাই-হ্যাঁ ! 
 তাহলে কি আমরা আত্মিক বিষয়ের উপর আমাদের মনকে বশ করতে সমর্থ? অবশ্যই, আমরা সকলেই আমাদের মনকে আত্মিক বিষয়ে বশ করতে পারি। আপনি কি জানেন যে, আত্মিক কাজ করার জন্যই-ঈশ্বর আপনার গন্তব্য পরিবর্তন করে দিয়েছেন? আপনি কি তা বিশ্বাস করেন?
 আমাদের মন এমন পরিবর্তিত। আপনি যদি এখনও বুঝতে না পারেন যে, আপনার হৃদয় পরিবর্তিত হয়েছে, তাতে আপনার সমস্যা হবে। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় আপনার মনকে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করতে হবে। কারণ ঈশ্বরের মন্ডলী আপনার বাড়ী হবে, বিশ্বাসীগণ আপনার ভাইবোন, পিতামাতা,-অর্থাৎআত্মীয় স্বজনের মত হবে, অর্থাৎ একই আত্মায় আপনারা এক হবেন। পূর্বে যদি এ বিষয় চিন্তা করে না থাকেন এখনই এই বিষয় ভাবুন, গুরুত্ব দিয়ে ভাবুন।
 মনে করবেন না কেবল রক্ত মাংসের আত্মীয়েরাই কেবল আপনার আত্মীয়। মন্ডলী হল আপনার বাড়ী এবং প্রত্যেক নূতন জন্ম প্রাপ্ত ব্যক্তির বাড়ী। আপনি ঈশ্বরের পরিবারের সদস্য। এই কারণে আমরা অবশ্যই আত্মায় জীবন-যাপন করব। ঈশ্বরের উদ্দেশে আত্মিকমনা হয়ে ঈশ্বরীয় শান্তির জন্য জীবন-যাপন করব।