Search

Mahubiri

বিষয় ১১: আবাস

[5-1] যীশু যিনি পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধি স্বরূপ সিংহাসনে বসে আছেন (প্রকাশিত বাক্য ৫:১-১৪)

যীশু যিনি পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধি স্বরূপ সিংহাসনে বসে আছেন
< প্রকাশিত বাক্য ৫:১-১৪>
“ আর, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, আমি তাঁহার দক্ষিণ হস্তে এক পুস্তক দেখিলাম; তাহা ভিতরে ও বাহিরে লিখিত ও সপ্ত মুদ্রায় মুদ্রাঙ্কিত। পরে আমি দেখিলাম, এক শক্তিমান্‌ দূত মহারবে এই কথা ঘোষণা করিতেছেন, ঐ পুস্তক খুলিবার ও তাহার মুদ্রা সকল খুলিবার যোগ্য কে? কিন্তু স্বর্গে কি পৃথিবীতে কি পৃথিবীর নীচে সেই পুস্তক খুলিতে অথবা তাহার প্রতি দৃষ্টি করিতে কাহারও সাধ্য হইল না। তখন আমি বিস্তর রোদন করিতে লাগিলাম, কারণ সেই পুস্তক খুলিবার ও তাহার প্রতি দৃষ্টি করিবার যোগ্য কাহাকেও পাওয়া গেল না। তাহাতে সেই প্রাচীনবর্গের মধ্যে এক জন আমাকে কহিলেন, রোদন করিও না; দেখ, যিনি যিহূদাবংশীয় সিংহ, দায়ূদের মূলস্বরূপ, তিনি ঐ পুস্তক ও উহার সপ্ত মুদ্রা খুলিবার নিমিত্ত বিজয়ী হইয়াছেন। পরে আমি দেখিলাম, ঐ সিংহাসনের ও চারি প্রাণীর মধ্যে ও প্রাচীনবর্গের মধ্যে এক মেষশাবক দাঁড়াইয়া আছেন, তাঁহাকে যেন বধ করা হইয়াছিল; তাঁহার সপ্ত শৃঙ্গ ও সপ্ত চক্ষু; সেই চক্ষু সমস্ত পৃথিবীতে প্রেরিত ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা। পরে তিনি আসিয়া, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার দক্ষিণ হস্ত হইতে সেই পুস্তক গ্রহণ করিলেন। তিনি যখন পুস্তকখানি গ্রহণ করেন, তখন ঐ চারি প্রাণী ও চব্বিশ জন প্রাচীন মেষশাবকের সাক্ষাতে প্রণিপাত করিলেন; তাঁহাদের প্রত্যেকের কাছে একটী বীণা ও সুগন্ধি ধূপে পরিপূর্ণ স্বর্ণময় বাটি ছিল; সেই ধূপ পবিত্রগণের প্রার্থনাস্বরূপ। আর তাঁহারা এক নূতন গীত গান করেন, বলেন, ‘তুমি ঐ পুস্তক গ্রহণ করিবার ও তাহার মুদ্রা খুলিবার যোগ্য; কেননা তুমি হত হইয়াছ, এবং আপনার রক্ত দ্বারা সমুদয় বংশ ও ভাষা ও জাতি ও লোকবৃন্দ হইতে ঈশ্বরের নিমিত্ত লোকদিগকে ক্রয় করিয়াছ; এবং আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে তাহাদিগকে রাজ্য ও যাজক করিয়াছ; আর তাহারা পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করিবে।’ পরে আমি দৃষ্টি করিলাম, এবং সেই সিংহাসনের ও প্রাণিবর্গের ও প্রাচীনবর্গের চারিদিকে অনেক দূতের রব শুনিলাম; তাঁহাদের সংখ্যা অযুত গুণ অযুত ও সহস্র গুণ সহস্র। তাঁহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিলেন, ‘মেষশাবক, যিনি হত হইয়াছিলেন, তিনিই পরাক্রম ও ধন ও জ্ঞান ও শক্তি ও সমাদর ও গৌরব ও ধন্যবাদ, এই সকল গ্রহণ করিবার যোগ্য।’ পরে স্বর্গে ও পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নীচে ও সমুদ্রের উপরে যে সকল সৃষ্ট বস্তু, এবং এই সকলের মধ্যে যাহা কিছু আছে, সমস্তেরই এই বাণী শুনিলাম, ‘যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার প্রতি ও মেষশাবকের প্রতি ধন্যবাদ ও সমাদর ও গৌরব ও কর্ত্তৃত্ব যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে বর্ত্তুক।’ আর সেই চারি প্রাণী কহিলেন, আমেন। আর সেই প্রাচীনেরা প্রণিপাত করিয়া ভজনা করিলেন।”
 
 

টীকা

 
পদ ১: “আর, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, আমি তাঁহার দক্ষিণ হস্তে এক পুস্তক দেখিলাম; তাহা ভিতরে ও বাহিরে লিখিত ও সপ্ত মুদ্রায় মুদ্রাঙ্কিত।”
এই পদটিতে বলা হয়েছে যে, পিতা ঈশ্বরের দক্ষিন হস্তে সপ্ত মুদ্রায় মুদ্রাঙ্কিত একটি পুস্তক ছিল৷ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পিতা ঈশ্বরের দক্ষিন হস্ত থেকে পুস্তকটি গ্রহণ করলেন, এর অর্থ যীশু খ্রীষ্টকে স্বর্গের সমস্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে৷
 
পদ ২-৪ : “পরে আমি দেখিলাম, এক শক্তিমান্‌ দূত মহারবে এই কথা ঘোষণা করিতেছেন, ঐ পুস্তক খুলিবার ও তাহার মুদ্রা সকল খুলিবার যোগ্য কে? কিন্তু স্বর্গে কি পৃথিবীতে কি পৃথিবীর নীচে সেই পুস্তক খুলিতে অথবা তাহার প্রতি দৃষ্টি করিতে কাহারও সাধ্য হইল না। তখন আমি বিস্তর রোদন করিতে লাগিলাম, কারণ সেই পুস্তক খুলিবার ও তাহার প্রতি দৃষ্টি করিবার যোগ্য কাহাকেও পাওয়া গেল না।”
যীশু খ্রীষ্ট ছাড়া পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিস্বরূপ এমন কোনো ধার্মিক ব্যক্তিবর্গ সেখানে ছিল না, যারা পৃথিবীর বিচার করতে পারে, নুতন স্বর্গ এবং নুতন পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারে এবং সেখানে বাস করতে পারে৷
 
পদ ৫: “তাহাতে সেই প্রাচীনবর্গের মধ্যে এক জন আমাকে কহিলেন, রোদন করিও না; দেখ, যিনি যিহূদাবংশীয় সিংহ, দায়ূদের মূলস্বরূপ, তিনি ঐ পুস্তক ও উহার সপ্ত মুদ্রা খুলিবার নিমিত্ত বিজয়ী হইয়াছেন।” 
এখানে এই শব্দগুলো “যিহূদাবংশীয় সিংহ, দায়ূদের মূলস্বরূপ,” বিষয়টি হল যে, যীশু খ্রীষ্ট সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং রাজাদের রাজা, যিনি পিতার সংকল্প সাধনে সম্পূর্ণরূপে যোগ্য ও সমর্থ৷ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি পিতার সংকল্প সাধনে পরিপূর্ণ ছিলেন, তিনি নিজেই ঈশ্বর ছিলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিনিধি ছিলেন৷
 
পদ ৬: “পরে আমি দেখিলাম, ঐ সিংহাসনের ও চারি প্রাণীর মধ্যে ও প্রাচীনবর্গের মধ্যে এক মেষশাবক দাঁড়াইয়া আছেন, তাঁহাকে যেন বধ করা হইয়াছিল; তাঁহার সপ্ত শৃঙ্গ ও সপ্ত চক্ষু; সেই চক্ষু সমস্ত পৃথিবীতে প্রেরিত ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা।”
যীশু খ্রীষ্ট, যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন, পিতা ঈশ্বর হতে স্বর্গ ও পৃথিবীর সমস্ত কর্তৃত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছে৷ তিনিই একমাত্র ব্যক্তি এই পৃথিবীতে মাংসময় দেহে এসেছিলেন এবং পৃথিবীর সমস্ত পাপ গ্রহণ করেছেন, এবং আমাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণের নিমিত্ত মৃত্যুবরণ করেছেন৷ 
 
পদ ৭: “পরে তিনি আসিয়া, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার দক্ষিণ হস্ত হইতে সেই পুস্তক গ্রহণ করিলেন।”
যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের যোগ্য ছিলেন ছতিনি পিতার নিকট থেকে পুস্তকটি গ্রহণ করলেন৷ এর অর্থ হচ্ছে তখন থেকেই আমাদের প্রভু, ঈশ্বরের সমস্ত কার্য সম্পাদন করে যাচ্ছিলেন৷
 
পদ ৮: “তিনি যখন পুস্তকখানি গ্রহণ করেন, তখন ঐ চারি প্রাণী ও চব্বিশ জন প্রাচীন মেষশাবকের সাক্ষাতে প্রণিপাত করিলেন; তাঁহাদের প্রত্যেকের কাছে একটী বীণা ও সুগন্ধি ধূপে পরিপূর্ণ স্বর্ণময় বাটি ছিল; সেই ধূপ পবিত্রগণের প্রার্থনাস্বরূপ।”
এর অর্থ হচ্ছে যে, পিতার জন্য ঈশ্বর স্বরূপ, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট কার্য করবেন, যার প্রথম প্রমান পাওয়া যায়, চব্বিশজন প্রাচীন এবং চারি প্রাণীর পবিত্রগণের প্রার্থনা দ্বারা৷
 
পদ ৯: “এক নূতন গীত গান করেন, বলেন, ‘তুমি ঐ পুস্তক গ্রহণ করিবার ও তাহার মুদ্রা খুলিবার যোগ্য; কেননা তুমি হত হইয়াছ, এবং আপনার রক্ত দ্বারা সমুদয় বংশ ও ভাষা ও জাতি ও লোকবৃন্দ হইতে ঈশ্বরের নিমিত্ত লোকদিগকে ক্রয় করিয়াছ;”
এখানে ঈশ্বরের প্রতিনিধি হয়ে আসার পরেই, স্বর্গের দূতদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছেন৷ পৃথিবীর সমস্ত পাপীদের পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য যীশু খ্রীষ্টকে স্বর্গীয় দূতগণ প্রদান করেছেন৷ পৃথিবীর সমস্ত পাপীদের পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য যীশু এই পৃথিবীতে যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং তিনি পাপের মুল্যস্বরুপ নিজের রক্ত দ্বারা পিতার জন্য এই সমস্ত পাপীদেরকে বন্দি দশা থেকে উদ্ধার করেছেন৷ এই কারণেই একজন, যিনি তাঁর ধার্মিক কাজের জন্য তাদের ঈশ্বর হয়েছেন, স্বর্গের দূতগণ তাঁর প্রশংসা করেছেন৷
 
পদ ১০: “এবং আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে তাহাদিগকে রাজ্য ও যাজক করিয়াছ; আর তাহারা পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করিবে।”
যীশু খ্রীষ্ট, যিনি পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে সাধুদের ঈশ্বরের রাজ্যে প্রজা ও যাজক করেছিলেন এবং তাদেরকে সেই রাজ্যের উপর রাজত্ব করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত করেছিলেন৷ এ কারণেই তিনি স্বর্গদূতদের সমস্ত গৌরব ও প্রশংসা গ্রহণে আরো বেশী যোগ্য ছিলেন৷
 
পদ ১১-১২: “পরে আমি দৃষ্টি করিলাম, এবং সেই সিংহাসনের ও প্রাণিবর্গের ও প্রাচীনবর্গের চারিদিকে অনেক দূতের রব শুনিলাম; তাঁহাদের সংখ্যা অযুত গুণ অযুত ও সহস্র গুণ সহস্র। তাঁহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিলেন, ‘মেষশাবক, যিনি হত হইয়াছিলেন, তিনিই পরাক্রম ও ধন ও জ্ঞান ও শক্তি ও সমাদর ও গৌরব ও ধন্যবাদ, এই সকল গ্রহণ করিবার যোগ্য।”
যোহনের দ্বারা তাঁর বাপ্তিস্ম গ্রহণের মধ্য দিয়ে, যীশু জগতের সমস্ত পাপ তাঁর নিজের উপরে বহন করলেন, ক্রুশে রক্ত ঝরালেন এবং এভাবে তিনি, পিতার একজন প্রতিনিধিরূপে স্বর্গের সমস্ত প্রাণীবর্গের থেকে পরাক্রম, ধন, জ্ঞান, শক্তি, সমাদর, গৌরব এবং ধন্যবাদ গ্রহণের যোগ্য হলেন৷ স্বর্গের দূতগণ এবং তাদের চারিদিকে দুতেদের সকলের প্রশংসা এবং আরাধনা তিনি গ্রহণ করলেন৷ হাল্লিলুয়া! প্রভুর প্রশংসা হোক! ঈশ্বরের সিংহাসনের চারিদিকে চারি প্রাচীনবর্গ, ২৪ জন প্রাচীনবর্গ ছিলেন৷ যিনি তাঁর সীমাহীন গৌরবের জন্য সমস্ত আত্মাকে পাপ থেকে মুক্ত করেছেন, তারা সেই ঈশ্বরেরঈশ্বরের প্রশংসা করছিল৷
 
১৩-১৪ পদ: “পরে স্বর্গে ও পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নীচে ও সমুদ্রের উপরে যে সকল সৃষ্ট বস্তু, এবং এই সকলের মধ্যে যাহা কিছু আছে, সমস্তেরই এই বাণী শুনিলাম, ‘যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার প্রতি ও মেষশাবকের প্রতি ধন্যবাদ ও সমাদর ও গৌরব ও কর্ত্তৃত্ব যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে বর্ত্তুক।’ আর সেই চারি প্রাণী কহিলেন, আমেন। আর সেই প্রাচীনেরা প্রণিপাত করিয়া ভজনা করিলেন।”
অবশেষে, ঈশ্বরের একজন যোগ্য প্রতিনিধিরূপে যীশু খ্রীষ্ট উঠে এসেছেন এবং স্বর্গের দূতদের নিকট থেকে সমস্ত প্রশংসা ও ভজনা গ্রহণ করেছেন৷ ঈশ্বর এতই যোগ্য হবেন যা, এটা ছিল বিস্ময়ের বিহ্বল হওয়া এবং কৃতজ্ঞতা পূর্ণের মত যে, স্বর্গের সমস্ত দূতেরা ধন্যবাদ, সমাদর এবং গৌরব যুগপর্যায়ে যুগে যুগে তাঁকে দিয়েছেন৷ পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, স্বর্গ ও পৃথিবীর সমস্ত পবিত্রগণের গৌরব এবং সমাদর অবশ্যই তাঁকে দত্ত হয়েছে৷