Search

דרשות

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[7-4] যে কারণে আমরা প্রভুর প্রশংসা করতে পারি (রোমীয় ৭:৫-১৩)

< রোমীয় ৭:৫-১৩ >
 “কেননা যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফর উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত। কিন্তু এক্ষনে আমরা ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হইয়াছি; কেননা যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম, তাহার সম্বন্ধে মরিয়াছি, যেন আমারা অক্ষরের প্রাচীনতায় নয়, কিন্তু আত্মার নূতনতায় দাস্যকৰ্ম্ম করি। তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দুরে থাকুক; বরং পাপ কি তাহা আমি জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা “লোভ করিও না,” এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না; কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া সেই আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সম্পন্ন করিল; কেননা ব্যবস্থা ব্যতিরেকে পাপ মৃত থাকে। আর আমি এক সময়ে ব্যবস্থা ব্যতিরেকে জীবিত ছিলাম, কিন্তু আজ্ঞা আসিলে পাপ জীবিত হইয়া উঠিল, আর আমি মরিলাম; এবং জীবন জনক যে আজ্ঞা, তাহা আমার মৃত্যুজনক বলিয়া দেখা গেল। ফলতঃ পাপ সুযোগ পাইয়া আজ্ঞা দ্বারা আমাকে প্রবঞ্চনা করিল, ও তদ্দ্বারা আমাকে বধ করিল। অতএব ব্যবস্থা পবিত্র, এবং আজ্ঞা পবিত্র, ন্যায্য ও উত্তম। তবে যাহা উত্তম, তাহাই কি আমার মৃত্যুস্বরূপ হইল? তাহা দুরে থাকুক। বরং পাপই এইরূপ হইল, যেন উত্তম বস্তু দ্বারা আমার মৃত্যু সাধনে তাহা পাপ বলিয়া প্রকাশ পায়, যেন আজ্ঞা দ্বারা পাপ অতিশয় পাপিষ্ঠ হইয়া উঠে।”
 
 
প্রভুর প্রশংসা করি, যিনি এখন পর্যন্ত আমাকে চালাচ্ছেন
 
আমি প্রভুর প্রশংসা করি যে, তিনি আবারও আমাকে আপনাদের মত লোকদের সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আন্তরিকভাবে তাঁকে ধন্যবাদ দেই যে, আমাকে আজকের দিন পর্যন্ত সুখে বাঁচিয়ে রেখেছেন। ঈশ্বর এবং তাঁর অনুগ্রহ সর্বদা আমার উপরে ছিল, এমনকি বিভিন্ন সময়ে তখনও, যখন নিরুৎসাহিত, বিষম অভিজ্ঞতা, নিদারুন যন্ত্রনা এবং বিভিন্ন কাজে নিজের মধ্যে দুর্বলতা অনুভব করতাম। তিনি দুঃখ এবং আনন্দ উভয় সময়ই আমার পাশে থেকে আমার জীবন পরিচালনা করতেন। এমন কোন মুহূর্ত নেই যে, তিনি আমাকে একা ফেলে গেছেন, এমন কি এক সেকেন্ড ও না।
ঈশ্বর আমাদের কত আশীর্বাদ করেছেন! ঈশ্বর আমাদের কত পছন্দ করেন, তিনি সম্ভবত দুই অথবা তিন বার আমাদের অনুগ্রহ করেন কিন্তু পরিনামে আমরা অধৈৰ্য্য হয়ে পড়ি। কিন্তু ঈশ্বর মানুষ নন এবং তাঁর ধৈৰ্য্য অসীম। আমরা ভালকাজ করি বা না করি, তাঁর বাক্য পালন করি বা না করি সে দিকে না তাকিয়েই তিনি অবিরত আমাদের তাঁর অনুগ্রহ প্রদান করে চলেছেন। প্রভুর এই ভালবাসাকে আমার সাহায্য নয় কিন্তু প্রশংসা, আরাধনা এবং সেবা করতে পারি। রাজা দায়ূদ সারা জীবন ঈশ্বরের প্রশংসা করেছেন, জীবনের বিপদ সংকুল অবস্থায় তিনি তাঁর ধন্যবাদ করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন,“কেননা তোমার দ্বারা আমি সৈন্যদলের বিরুদ্ধে দৌড়ি; আমার ঈশ্বরের দ্বারা প্রাচীর উল্লঙ্ঘন করি”(গীতসংহিতা ১৮:২৯)।
 ঈশ্বর আমাদের কত ভালবাসেন, আমরা তাঁর যথযথ প্রশংসা করি না। আমরা যদি পৃথিবীর সমান বড় একটা গির্জাঘর তৈরী করি, আমরা কি সন্তুষ্ট হব? আমরা কি সন্তুষ্ট হব, যদি আমরা আকাশচুম্বী গির্জাঘর তৈরী করি? অবশ্যই না! আমরা সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে বৃহৎ গির্জাঘর তৈরী করতে পারি, যা আমরা সব সময় কল্পনা করি, কিন্তু গির্জাঘরের সৌন্দৰ্য্য এবং আকৃতি কোন ব্যপার না, কিন্তু ব্যপার হল, ঈশ্বর আহুত আত্মাদের জন্য মূল্যবান কাজ করেন, তাদের তাঁর বাক্য শুনান এবং তাঁর কাজে বিশ্বাসের দ্বারা নূতন জন্ম নেওয়ার অনুপ্রেরণা দেন। এত সমস্ত আশীর্বাদের জন্য আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা ছাড়া আর কিছু করতে পারি না। তাঁর পক্ষে কাজ করার মাধ্যমে যে ফল উৎপন্ন করছি তার জন্য ধন্যবাদ জানাই, নতুবা আমাদের জীবন ধংস হয়ে যেত। 
 আপনি কি ঈশ্বরের প্রশংসায় পরিপূর্ণ নন যে, তিনি আপনাকে এই নূতন মিলন কেন্দ্রে বসতে দিয়েছেন? ঈশ্বর আমাদের তাঁর অসীম দয়া করেছেন এবং আমাদেরকে তাঁর চোখের মণি করে রেখেছেন। তাঁর এই সমস্ত ভালবাসার উপযুক্ত হওয়ার জন্য আমরা কে, বা কি করছি? আমরা কেউ নই এবং আমরা কিছুই করি না। তথাপি ঈশ্বর তাঁর সম্মুখে আমাদের বহুমূল্য করেছেন, আমরা তাঁকে দেখানে পারিনি একারণে নয়, কারণ হল আমাদের নূতন জন্ম নিতে হবে। যীশুর কাছে আসার পূর্বে আমরা যা-ই হোক আমরা মূল্যবান ছিলাম। ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর সন্তান বানিয়েছেন যারা উন্মাদনায় লালায়িত, মরুভূমীতে পথভ্রষ্ট হয়েছিলাম এবং গন্তব্য ছিল মৃত্যু এবং ধুলা ও ছাইয়ের মত নিঃশেষ হয়ে যেতাম।
 ঈশ্বর-দেয় প্রেম কি অপূর্ব এবং মহৎ! ধন্য প্রভু! এই পৃথিবীর অনেক আত্মার জন্য ঈশ্বর তাঁর ধার্মিকতার শর্তহীন ভালবাসা দ্বারা আমাদের পরিত্রাণ করেছেন। পরিত্রাণ পাপমুক্তির চেয়েও বড় বিষয়। এর অর্থ হল, আমাদের আত্মার এখন ঈশ্বরের সাথে মিলিত। এর অর্থ হল, তাঁর ভালবাসা এখন আমাদের অধিকার। তার অর্থ তাঁর আশীর্বাদও আমাদের অধিকার।
তাঁর অদ্ভুত পরিচালনা এবং উদ্দীপনার দ্বারা আমরা নিজেদেরকে তাঁর মন্ডলীতে খুঁজে পাই। ঈশ্বর যদি আমাদের না রাখেন, তাহলে কিভাবে আমরা এখানে থাকতে পারি? তিনি যদি আমাদের ভাল না বাসতেন এবং অনুগ্রহ না করতেন, তাহলে কিভাবে আমরা তাঁর সুসমাচার বুঝতাম এবং তাঁর সেবা করতাম। আমরা ঈশ্বরের সেবা করি, কারণ তিনি জীবন্ত, আমাদের সঙ্গে আছেন, এবং আমাদেরকে আশীর্বাদ করছেন।
ঈশ্বর যদি আমাদের না রাখতেন অনুগ্রহ না করতেন, তাহলে আমরা পূর্বে বা এখন তাঁর প্রশংসা করতে পারতাম না। ঈশ্বর আমাদিগকে ভালবেসেছেন, অনুগ্রহ করেছেন, উদ্দীপ্ত করেছেন এবং তাঁর দয়ার হস্ত দ্বারা তিনি আমাদের ঢেকে রেখেছেন, যেন আমরা অবশ্যই তাঁকে অনুসরণ, সেবা, প্রশংসা এবং তার আরাধনা করি। এটা কি সত্যি নয়? তাঁর অদ্ভুত কাজ এবং অফূরন্ত ভালবাসার জন্য আমরা আমাদের হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রশংসা করি।
ঈশ্বর যাকে রক্ষা করেন, তার জন্য প্রচুররূপে করেন। তিনি আমাদের যা দিয়েছেন, যা নূতন জন্ম প্রাপ্ত পবিত্র লোকের বিশ্বাসের শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে, যার প্রমাণ হচ্ছে, ঈশ্বর আমাদের সুরক্ষা করছেন এবং ধরে রেখেন।
 আমি বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর এই পৃথিবীর সমস্ত মন্ডলী এবং নূতন জন্ম প্রাপ্ত উপাসকদের অনুগ্রহ করেছেন এবং অনন্তকাল করবেন। আমাদের অনেক কঠোর অভিজ্ঞতা হয়েছে, এমনকি ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে থাকা অবস্থায়ও আমাদের আত্মাকে আরো শক্তিশালী করতে এবং আরো অনুগ্রহ গ্রহণের জন্য হৃদয়কে বিশ্বাসে প্রস্তুত করতে আমাদের তৈরী করেছেন। তাঁর দয়া করত মহৎ। আমি প্রভুকে আবারো একবার ধন্যবাদ দেই।
 
 

আমাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রশংসা করতে পারি

 
“কেননা যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত। কিন্তু এক্ষনে আমরা ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হইয়াছি; কেননা যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম, তাহার সম্বন্ধে মরিয়াছি, যেন আমারা অক্ষরের প্রাচীনতায় নয়, কিন্তু আত্মার নূতনতায় দাস্যকৰ্ম্ম করি” (রোমীয় ৭:৫-৬)। বাইবেল বলে যে, যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত। যাহোক, বাইবেল বলে, “এক্ষনে আমরা ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হইয়াছি; কেননা যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম, তাহার সম্বন্ধে মরিয়াছি, যেন আমারা অক্ষরের প্রাচীনতায় নয়, কিন্তু আত্মার নূতনতায় দাস্যকৰ্ম্ম করি।”
মাংস কি পাপ বাসনা হইতে মুক্ত হইতে পারে? মানুষের জীবনে দুটি সমস্যা বিদ্যমান। একটি হচ্ছে মাংস এবং অন্যটি হচ্ছে হৃদয়। মাংস যতই কঠিন চেষ্টা করুক না কেন, ইহা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় পৌঁছাতে পারে না। ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতেও পারে না। আমাদের মাংস যতই চেষ্টা করুক না কেন, এমন কি নূতন জন্মগ্রহণ করার পরেও আমাদের মাংস কখনোই ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে পারে না। এজন্যই প্রেরিত পৌল বলেছেন, “কেননা যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফর উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত। কিন্তু এক্ষনে আমরা ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হইয়াছি; কেননা যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম, তাহার সম্বন্ধে মরিয়াছি”।
রোমীয় ৪:১৫ পদে বলা হয়েছে, “ব্যবস্থা ত ক্রোধ সাধন করে, কিন্তু যেখানে ব্যবস্থা নাই, সেখানে ব্যবস্থা লঙ্ঘনও নাই।” আমাদের অবশ্যই অন্তর দিয়ে আমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা করতে হবে। আত্মার নূতনতায় তাঁর প্রশংসা করার জন্য ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন, অক্ষরের প্রাচীনতায় নয় কারণ আমরা যারা ব্যবস্থার অধীনে, তারা ব্যবস্থার ক্রোধে দন্ডিত হয়েছি।
মাংস হৃদয় হইতে পৃথক। মাংস সীমাবদ্ধ কিন্তু হৃদয় বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করতে এবং তাঁর প্রশংসা করতে পারে। হৃদয় পাপ থেকে মুক্তও হতে পারে।
আমরা ব্যবস্থা সম্বন্ধে মৃত। আমি মৃত, কারণ আমি যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম তাহাতে মরিয়াছি। আমাদের দেহ ইতিমধ্যে ঈশ্বর সম্বন্ধে মৃত। মাংসের দ্বারা আমরা না পারি ঈশ্বরের ধার্মিকতায় পৌঁছাতে, না পারি ঈশ্বরের ব্যবস্থার সম্মুখে শুদ্ধ হয়ে আসতে। মাংস দন্ড এড়াতে পারবে না। এমন কি পিতা আমাদের জন্য তাঁর যে এক জাত পুত্র পাঠিয়েছিলেন যীশু খ্রীষ্ট, তাঁর উপরে ব্যবস্থার সমস্ত ক্রোধ অর্পণ করলেন, এবং তিনি আমাদের স্থলে ক্রুশবিদ্ধ হলেন। এইরূপে ঈশ্বর আত্মার নূতনীকরণে বিশ্বাসের দ্বারা প্রভুর সেবা করতে আমাদেরকে অধিকার দিয়েছেন, অক্ষরের প্রাচীনতায় নয়, যা ব্যবস্থা দ্বারা ক্রোধের অধীনে আবদ্ধ।
আমরা এখন বিশ্বাসের দ্বারা প্রভুর ধন্যবাদ করতে পারি। আমরা মাংসে থাকা অবস্থায়ও আমাদের হৃদয় প্রভুর প্রশংসা করতে পারে। আমাদের হৃদয় বিশ্বাস করতে পারে যে, প্রভু আমাদের ভালবাসেন। আমরা প্রভুর প্রশংসা করতে পারি, কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে, আমরা খ্রীষ্টেতে মরিয়াছি। ঈশ্বর আমাদের ব্যবস্থার কোপ হইতে নিস্তার করেছেন। পিতা ঈশ্বর তাঁর একজাত পুত্রকে আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন, যাহা ব্যবস্থার অভিশাপে এবং ঈশ্বরের বিচারে অভিশপ্ত ছিল, যখন কালের পূর্ণতা আসবে, তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর সন্তানের উপর অর্পণ করবেন। এইরূপে যারা তাঁর ভালবাসা গ্রহণ করে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে, ঈশ্বর তাদেরকে তাদের পাপ, ঈশ্বরের বিচার এবং ব্যবস্থার কোপ হইতে পরিত্রাণ করিবেন। আমাদের সমস্ত পাপ থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্রাণ করার জন্য আমরা প্রভুর ধন্যবাদ করি।
আমরা সর্বন্তকরণে বিশ্বাস করি যে, ঈশ্বর আমাদের তাঁর ধার্মিকতায় পরিত্রাণ করেছেন। ঈশ্বরের প্রেমের জন্য আমরা সমস্ত অন্তকরণে তাঁর প্রশংসা, ধন্যবাদ ও গৌরব করি। কিন্তু এই জিনিসগুলি কি আমরা মাংসের দ্বারা করতে পারি? যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধনকরিত। মাংস শুধু ঈশ্বরের ক্রোধের অধীনে বসবাস করে।
আমরা এখন বিশ্বাসের দ্বারা ব্যবস্থার এই দন্ড থেকে মুক্ত হয়েছি। অক্ষরের প্রাচীনতায় কিংবা ঈশ্বরের ব্যবস্থার দন্ডের দ্বারা নয়, এমনকি ব্যবস্থার দ্বারা আমরা বিচারিত হলেও ঈশ্বর আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রেম এবং পরিত্রাণে বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর সেবা করার জন্য।
আমরা কেউই আমাদের উত্তম কাজের দ্বারা ঈশ্বরের সেবা করতে পারি না। যদিও আমরা নূতন জন্ম লাভ করি, আমরা মাংসের দ্বারা তাঁর সেবা করতে পারি না। আমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে মাংসের দ্বারা প্রভুর সেবা করার চেষ্টা করতে করতে হতাশ হয়ে পড়েছে? আমরা কখনোই মাংস দ্বারা প্রভুর সেবা করতে পারি না। পাপের বাসনা সকল সর্বদা মাংসকে দাসত্বে রাখে। এমনকি নূতন জন্ম প্রাপ্ত হয়েও আমরা মাংসের দ্বারা প্রভুর সেবা করতে পারি না। একমাত্র বিশ্বাসের দ্বারা আমরা আমাদের অন্তর দিয়ে প্রভুর প্রশংসা করতে পারি, অতএব আপনি যখন ঈশ্বরের প্রশংসা করেন, তখন অন্তর দিয়ে তাঁকে বিশ্বাস করুন এবং তাঁর প্রেমের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিন। তখন মাংস বিশ্বাস অনুসরণকারী অস্ত্র হিসাবে রুপান্তরিত হতে পারে।
 আমি প্রভুর প্রশংসা করি যে, আমি আমার হৃদয় দিয়ে তাঁকে বিশ্বাস করি, এর জন্যে তিনি ব্যবস্থার সমস্ত দন্ড হতে আমাদেরকে মুক্ত করেছেন। আমি প্রভুর ধন্যবাদ করি, তিনি আমাদের প্রতিদিনের পাপ এবং ব্যবস্থার দন্ড হতে মুক্ত করেছেন। আমাদের প্রভু আমাদের মুক্ত করেছেন, এতে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের অক্ষমতা এবং দূর্বলতাকে প্রচন্ড ঘৃনা করেও ঈশ্বর আমাদেরকে মুক্ত করেছেন, কারণ তিনি আমাদের ভালবাসেন, এটা কত বিস্ময়কর যে, আমাদের সম্পূর্ণ অক্ষমতা সত্ত্বেও ঈশ্বর আমাদেরকে ধার্মিক গণিত করেছেন? ইহা কত বিস্ময়কর যে, ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর দাস হিসাবে গণিত করেছেন।
আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে পারি, কারণ তিনি ব্যবস্থার দন্ড হইতে আমাদেরকে মুক্ত করেছেন। আমরা আমাদের আত্মা এবং হৃদয় দ্বারা প্রভুর সেবা করতে পারি। আমরা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি। আমরা প্রভুর ধন্যবাদ করি যে, তিনি আমাদের পাপ এবং তাঁর ক্রোধ হতে আমাদিগকে মুক্ত করেছেন। আপনি কি তাঁর ধন্যবাদ করেন? কতবার আমরা তাঁর ইচ্ছামত চলতে ব্যর্থ হয়েছি, এমনকি সর্বোত্তম চেষ্ট করেও সেরূপ পারি? কতবার আমরা শ্লাঘা করেছি? আমাদের কতগুলো দূর্বলতা আছে? আমরা আমাদের মাংস এবং ভাল কাজের দ্বারা কখনো প্রভুর প্রশংসা করি না, এখনো করি না, ভবিষ্যতেও করব না। ঈশ্বর আমাদের হৃদয়ের জন্য যা করেছেন, তার জন্য আমরা তাঁর প্রশংসা করি। আমাদের হৃদয় এবং বিশ্বাসের দ্বারা শুধুমাত্র আমরা প্রভুর প্রশংসা করতে পারি।
 
 

আমরা মাংসের দ্বারা প্রভুর প্রশংসা করতে পারি না

 
আমরা যখন প্রভুকে অনুসরণ করি, তখন আমাদের নিজস্ব ধার্মিকতা ভেঙ্গে চুর্ণ হয়ে যায়। পার্থিব মন এবং মাংস অবশ্যই বিভক্ত হয়ে যায়। এটাই আত্মা এবং মাংসের পৃথকীকরণ।
আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন? মাংসের দ্বারা চেষ্টা করা আমাদের পক্ষে বৃথা। যখন আমরা গান করি, আনন্দ করি, বিশ্বাস করি, অনুসরণ করি এবং আমাদের হৃদয় দ্বারা প্রশংসা করি, তখন হৃদয়ের ইচ্ছায় আমাদের মংস প্রভুর সেবা করতে পারে। আমরা আমাদের প্রভুর ধন্যবাদ এবং প্রশংসা করি এই গানের মাধ্যমে,
“♪আমার সব পাপ গিয়েছে, কালভেরীতে, জীবন গানে পূর্ণ হয়েছে, সবই কালভেরীর জন্যে, খ্রীষ্ট আমার পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য পাপ থেকে জীবিত হয়েছেন - একদিন তিনি আসছেন, আহ কি বিস্ময়কর আশীর্বাদের দিন! সমস্ত, হ্যাঁ সবকিছুই কালভেরীর জন্যে।♪” কিন্তু মাঝে মাঝে মাংসের কারণে আমরা উচোট খাই। মনে মনে বলি, “আমার পাপ নেই, তবুও কেন আমি দূর্বল?” তার পর আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই, “♪আমার সমস্ত পাপ চলে গেছে- তা ঠিক♪”- “♪জীবন আনন্দগানে পরিপূর্ণ♪”-তাও ঠিক- “♪কালভেরীতে আমার পাপ চলে গিয়েছে♪”- সব কিছুই ঠিক আছে, কিন্তু আমি কেন দূর্বল? আমার উচিত সবসময় ধন্যবাদ সহকারে প্রভুকে অনুসরণ করা, কিন্তু আমি কেন অধর্মে পরিপূর্ণ? হায় হায়, আমি দুর্ভাগা মানুষ!
যখন আমরা দুঃখে থাকি, তখন ঈশ্বর বলেন, “হে আমার প্রাণ কেন অবসন্ন হও? তুমি কি জান না যে আমি তোমার ত্রাণকর্তা? আমি তোমাকে ধার্মিক করেছি।” মাংসময় দেহে আমরা প্রভুর সেবা করতে পারি না; প্রভুকে অনুসরণও করতে পারি না। তিনি আমাদের জন্য যা সাধন করেছেন, অর্থাৎ তিনি আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করেছেন, আমাদেরকে ভালবেসেছেন, তাঁর সেই সাধিত কাজে বিশ্বাস করে এবং তাঁর ধন্যবাদ ও গৌরব করে তাঁর সেবা করতে পারি।
 আমি চাই আপনি হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করুন। আরো চাই হৃদয় দিয়ে আপনি বিশ্বাস করুন এবং তাঁর ধন্যবাদ করুন। শুধু হৃদয় দিয়েই তা করা সম্ভব। মাংস দ্বারা অসম্ভব। পরিত্রাণ পাবার পরেও আমাদের মাংস অপরিবর্তিত থাকে। উপরোক্ত অংশে প্রেরিত পৌল পরিত্রাণের পূর্বের এবং পরের উভয় অবস্থার বর্ণনা করেছেন। যারা পরিত্রাণ পেয়েছে এবং যারা পরিত্রাণ পায় নাই, উভয়ের জন্য ঈশ্বরের বাক্য একই।
 
 

পরিত্রাণ পাবার পরেও কি আপনি মাংস দ্বারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে চাচ্ছেন?

 
পরিত্রাণ পাবার পরেও কি আপনি মাংস দ্বারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে চাচ্ছেন? আপনি অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং অন্যদের চেয়ে বেশী ঈশ্বরের কাজ করতে পারেন, এই কারণে কি আপনি মনে করছেন যে, আপনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করছেন? যাদের হৃদয় অধার্মিকতায় ভরপুর, এক সময় তারা নর্দমায় নিক্ষিপ্ত হবে। যারা নর্দমায় এবং সারের ঢিবিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, পৃথিবীতে এখনো এমন অনেক মানুষ রয়েছে।
এই গ্রীস্মকালীন বাইবেল সভায় এমন একজন কেউ রয়েছেন, যিনি সারের ঢিবিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন, আমি সত্যিকারের সারের ঢিবির কথা বলছি, ভাগ্যক্রমে যেটা এখনো কেউ ব্যবহার করে নাই। যদি কেই ইতিপূর্বে তা ব্যবহার করত তাহলে এই খুব বিপদে পড়ে যেতেন। এই বাইবেলের সভার প্রস্তুতির সময়ে আমরা পাহাড়ে কয়েকটা গর্ত এবং কয়েকটা ঘর তৈরী করেছিলাম। সেই পায়খানাগুলোর কয়েকটি পাদানী রেখেছিলাম কিন্তু সেগুলো তখনো সংযুক্ত করা হয়নি। তাই পা পিছলে সেই বোন গর্তে পড়ে গিয়েছিলেন। আত্মধার্মিকতায় পূর্ণ মানুষের জন্যও ঈশ্বর এই রমক গর্ত খুঁড়ে রেখেছেন। ঈশ্বর চান যেন আমরা কেবলমাত্র তাঁরই গৌরব করি।
পরিত্রাণ পাবার পরে যখন আমি সৎ পথ থেকে সরে যাই, আমার আত্মায় তখন কোন শান্তি বা আনন্দ থাকে না। তখন আমি নিজেকে প্রশ্ন করলে বুঝতে পারি যে, আমার পরিচ্ছদ পাপে কলুষিত হয়ে গেছে। আমি বুঝতে পারি যে, ঐ পথে আমার যাওয়া উচিত ছিল না, কিন্তু আমি ভুলে যাই। যখন আমি বুঝতে পারি তখন অনুতাপ করি, “আমার এটা করা উচিত হয়নি। আমি কি চিন্তা করছিলাম? হে প্রভু পাপ থেকে আমাকে মুক্ত করার জন্য আমি তোমার প্রশংসা করি।” কিন্তু পরিবর্তে আমি আবারও পাপ করি। মাঝে মাঝে আমি ঈশ্বরের অনুগ্রহের অধীনে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করেই পাপ করে ফেলি। তখন পাপ থেকে পালিয়ে ঈশ্বরের কাছে আবার ফিরে আসি। আমি দোদুল্যমান। তাই আমি দুঃখে আর্তস্বর করি। এবং আমার মরে যেতে ইচ্ছা হয়।
পাপ ক্ষমা পাওয়ার পরে আমি বুঝতে পারি, কতটা নোংরা আমি ছিলাম। আমি গভীর ভাবে বুঝতে পেরেছিলাম এবং ভেবেছিলাম, “কি মারাত্মক বিষয়! হে ঈশ্বর, তোমাকে বিশ্বাস করার পরেও কেন আমি এত দূর্বল এবং অযোগ্য? ব্যবস্থা দ্বারা বোধগম্য পাপের অভিলাষ আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কাজ করে। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, যতই আমি ব্যবস্থা অনুসারে চলতে চেষ্টা করি, পাপের অভিলাষ তত বেশী করে আমাকে চেঁপে ধরে। আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, মাংসের দ্বারা কখনো ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী জীবন-যাপন করা যায় না। আমি আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে ঈশ্বরের ধার্মিকতার অস্ত্ররূপে সমর্পণ করার মাধ্যমে ঈশ্বরের পক্ষে কাজ করতে শুরু করলাম, এবং হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের সাধিত কাজে বিশ্বাস করার জন্য আমি তাঁর প্রশংসা করলাম।
 
 

মাংসিক দেহ হল পাপের অভিলাষের সমষ্টি

 
যারা জানে না যে, তাদের দেহ পাপের অভিলাষের সমষ্টি, তারা যখন প্রভুর পথ থেকে সরে গিয়ে পাপে পতিত হয়, তখন তারা নিজেদের পাপবস্থা বুঝতে পেরে বিস্মিত হয়। আমাদের অবশ্যই হৃদয় দিয়ে প্রভুতে বিশ্বাস করতে হবে, তাঁর প্রশংসা করতে হবে, তাঁর গৌরব করতে হবে এবং তাঁর বাক্য অনুসারে চলতে হবে। প্রভুকে অনুসরণ করার অর্থ হল, প্রভুর আশীর্বাদ লাভ করা। কেবলমাত্র হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করার মাধ্যমেই আমরা তাঁকে অনুসরণ করতে পারি। যখন আমরা মাংসে জীবন-যাপন করি, তখন ব্যবস্থা দ্বারা বুঝতে পারা পাপের অভিলাষগুলো আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গে কাজ করে। এবং পাপের ফল মৃত্যু উৎপন্ন করে। হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রশংসা না করলে বা তাঁর বাক্য না মানলে, মাংসিক দেহ খুব তাড়াতাড়ি পাপের অভিলাষে পতিত হয়। আমাদের প্রত্যেকের প্রবৃত্তি এই রকম, প্রেরিত পৌলেও তেমন ছিল।
সুসমাচার প্রচার করতে গিয়ে প্রেরিত পৌল অবিমোহিত জীবন-যাপন করেছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন যে, মাংসের অভিলাষ থেকে পাপের বাসনা জাগ্রত হয়। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, “আমি ভীত। কিছুক্ষণ আগে আমার হৃদয় আনন্দে পূর্ণ ছিল, এখন কেন এতটা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ল? আমার সমস্যাটা কিছুক্ষণ আগে এতটা আত্মিক ছিলাম, কিন্তু এখন নিজেকে অপদার্থ মনে হচ্ছে।”এই চিন্তার পরেই তিনি বুঝতে পারলেন যে, আত্মা থেকে মাংসকে আলাদা না করলে, তিনি প্রভুকে অনুসরণ করতে পারবেন না।“দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি। মাংসিক দেহে ভাল কিছু করতে পারি নাই।”
হৃদয় দিয়ে যখন আমরা প্রভুর প্রশংসা করি এবং তাঁর বাক্য পালন করি, তখন আমাদের দেহ আমাদের হৃদয়ের সাথে এক হয়। পৌল এই সত্য বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি পাপ না করে পারতেন না। আপনি কি এটা বুঝতে পারছেন? যারা পাপ থেকে মুক্ত হয় তারা হৃদয় দিয়ে প্রভুর প্রশংসা করে, তাঁকে বিশ্বাস করে এবং তাঁর বাক্য পালন করে; মাংসিক দেহ তাদের হৃদয়কে অনুসরণ করে। কেউ হয়তো প্রথমে চিন্তা করতে পারে, “আমি পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। হাল্লিলূয়া। আমি সুখি।” কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই ব্যক্তির পাপের অভিলাষগুলো প্রকাশ হতে থাকে। যারা আত্মধার্মিকতায় পূর্ণ, পাপের অভিলাষগুলো প্রকাশ হয়ে পড়লে তারা আরো বেশী হতাশ হয়। অভিলাষগুলো ক্রমান্বয়ে ধীরে ধীরে প্রকাশ হতে থাকে। যদিও তারা সেরকম চিন্তা করে না, কিন্তু নিজেদের সম্পর্কে তাদের যে ধারণা, তার চেয়ে তারা অনেক বেশী মন্দ।
 আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, মাংসিক দেহ পাপের অভিলাষের সমষ্টি। মাংসের উপরে আমরা কোন আস্তা রাখতে পারি না; অবশ্যই মাংসিক দেহের উপরে নির্ভর করবেন না। বরং ঈশ্বরের অনুগ্রহে বিশ্বাস করুন, প্রভুর প্রশংসা করুন এবং হৃদয় দিয়ে প্রভুর অনুসরণ করুন। শুধু হৃদয় দিয়েই এগুলো করা সম্ভব। প্রভুর প্রশংসা করি, যে আমার মত আত্মধার্মিকতায় পূর্ণ ব্যক্তিকে তিনি উদ্ধার করেছেন এবং তাঁর সুসমাচার প্রচারের কাজে নিয়োগ করেছেন। ঈশ্বরের অনুগ্রহ ছাড়া এটা আমি করতেই পারতাম না। আমি শুধু প্রভুর প্রশংসাই করতে পারি।
 
 
প্রভুর প্রশংসা করার সুযোগ পেয়েছি বলে আমি তাঁর ধন্যবাদ করি
 
যিনি আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন, এবং মাংস দ্বারা নয়, কিন্তু হৃদয় দিয়ে তাঁর প্রশংসা করার জন্য পবিত্র আত্মা দান করেছেন, আমি সেই প্রভুর ধন্যবাদ করি। আমি প্রভুর প্রশংসা ও গৌরব করি যে, হৃদয় দিয়ে তাঁকে বিশ্বাস করতে পারি।
“অতএব আমরা সর্বদা সাহস করিতেছি, আর জানি, যত দিন এই দেহে নিবাস করিতেছি, তত দিন প্রভু হইতে দূরে প্রবাস করিতেছি” 
(২ করিন্থীয় ৫:৬)। যিনি আমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন, আমি সেই প্রভুর ধন্যবাদ করি। আমি প্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি, আমি তাঁর গৌরব করি, এবং তাকে বিশ্বাস করি। পাপের অভিলাষে জীবন-যাপন করার জন্য আমরা মৃত্যুর যোগ্য ছিলাম, কিন্তু প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করার মাধ্যমে তিনি আমাদের পরিত্রাণের অধিকার দিয়েছেন। তাঁর প্রশংসা করার ক্ষমতা তিনি আমাকে দিয়েছেন এবং আমার অন্তরে আনন্দ দিয়েছেন।
মাংস দ্বারা ঈশ্বরের সেবা করা চেষ্টা করবেন না, কারণ তা অসম্ভব। মাংসের দেহ দ্বারা ধর্মময় কাজ করার চেষ্টা করবেন না। তা অর্জন করা সম্ভব নয়। তাহলে কিভাবে আমরা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করতে করতে পারি? উত্তর হলো- আমাদের হৃদয় দিয়ে। আত্মার নূতনতায় হৃদয় দিয়ে আমরা তাঁর সেবা করতে পারি। ঈশ্বর আমাদের পরিত্রাণ দিয়েছেন, সুতরাং হৃদয় দিয়েই তাঁকে অনুসরন করুন, সেভাবেই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করি। লোকেরা কিভাবে নিজে নিজে বিলাপ করে? তারা দুঃখে আর্তনাদ করে এবং নিজেদের দোষী করে, “কেন আমি এমন বিশ্বাস করি?” তাদের মত হবেন না। মাংসময় দেহে পাপ করবে না- তা অসম্ভব। আমি চাই আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করুন এবং হৃদয় দিয়ে তাঁর প্রশংসা করুন। তখন মাংস হৃদয়কে অনুসরন করবে। পরিত্রাণ পাবার পরেই কি দীর্ঘদিন যাবত মাংসময় দেহে প্রভুকে অনুসরন করতে চেয়েছেন? যা করতে চেয়েছেন, তা করতে কি আপনার সমস্যা হয়েছে? তাই যদি হয়, সমস্যাটা হল এই- আপনি মাংসময় দেহে প্রভুর সেবা করতে চেয়েছেন, হৃদয় দিয়ে নয়। যারা আমার নিন্দা করে এবং আমাকে অসম্মান করে, তারা আমার সমন্ধে কি বলে জানেন? তারা আমাকে ঠাট্টা করে এবং আমার সম্বন্ধে অপবাদ রটায়। কিন্তু আমি শুধু হাসি, কারণ তারা জানে না, আমার ভিতরে কি রয়েছে।
আমি সুসমাচার প্রচার করতে পারি, কারণ প্রভু আমার সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। যদি প্রভু আমার সমস্ত পাপ না ধুতেন, তাহলে আমি ঈশ্বরের বিচার দন্ড ভোগ করতাম এবং তাঁর দৃষ্টিতে মৃত পরিগণিত হতাম। ঈশ্বর তাঁর আত্মার সঙ্গে এক করার মাধ্যমে আমাদেরকে ধার্মিক করেছেন। তিনি আমাদেরকে তাঁর প্রশংসাকারী করেছেন। কৃতজ্ঞ চিত্তে জীবন-যাপন করতে শিখিয়েছেন। তাঁর অনুগ্রহে আনন্দ করতে শিখিয়েছেন। ঈশ্বরের প্রশংসা হউক! তিনি আমাদের তাঁর সন্তান করেছেন এ জন্য তাঁর প্রশংসা করি। সমস্ত গৌরব প্রশংসা কেবলমাত্র তাঁরই হোক।
 কখনোই দেরী হয়নি। মাংসের উপর নির্ভর করবেন না। প্রথমতঃ খুব সুক্ষ্মভাবে আমাদের ভিতর থেকে পাপের অভিলাষ বেরিয়ে আসে। ঈশ্বরের সংকল্পের কাছে মাংস নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে উপস্থাপন করে। সেই জন্য একমাত্র বিশ্বাসেই ঈশ্বরের সংকল্প সাধন করা সম্ভব। মাংস দ্বারা কখনোই সম্ভব নয়। পরিত্রাণ পাওয়ার পরে নিজের সাথে প্রতারণা করবেন না। পরিত্রাণ পাওয়ার পরে মাংসের অধীনে থাকলে, যেকোন সময় পতিত হওয়া সম্ভব, কারণ আমরা ভাল করেই জানি মাংস সব সময়ই অসম্পূর্ণ এবং দূর্বল।
আমরা আত্মায় জাত, আমরা বিশ্বাসে জাত। মাংসের উপরে কখনোই নির্ভর করবেন না। আমার সাথে সাথে বলুন, “আমার দেহ ডাষ্টবিনের মত।” আমি চাই কথাটি আপনি স্মরণে রাখুন। নিজেকে বিশ্বাস করবেন না। হৃদয় দিয়ে আমাদেরকে ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে হবে এবং তাঁকে অনুসরন করতে হবে। ঈশ্বরের ব্যবস্থার ক্রোধ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করার জন্য, আমি তাঁর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি। হাল্লিলূয়া।