< প্রকাশিত বাক্য ১১:১-১৯>
“পরে যষ্টির ন্যায় এক নল আমাকে দত্ত হইল; এক জন কহিলেন, উঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদি ও যাহারা তাহার মধ্যে ভজনা করে, তাহাদিগকে পরিমাণ কর। কিন্তু মন্দিরের বহিঃস্থিত প্রাঙ্গণ বাদ দেও, তাহা পরিমাণ করিও না, কারণ তাহা জাতিগণকে দত্ত হইয়াছে; বিয়াল্লিশ মাস পর্য্যন্ত তাহারা পবিত্র নগরকে পদতলে দলন করিবে। আর আমি আপনার দুই সাক্ষীকে কার্য্য দিব, তাঁহারা চটপরিহিত হইয়া এক সহস্র দুই শত ষাট দিন পর্য্যন্ত ভাববাণী বলিবেন। তাঁহারা সেই দুই জিতবৃক্ষ ও দুই দীপবৃক্ষস্বরূপ, যাঁহারা পৃথিবীর প্রভুর সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছেন। আর যদি কেহ তাঁহাদের হানি করিতে চায়, তবে তাঁহাদের মুখ হইতে অগ্নি বাহির হইয়া তাঁহাদের শত্রুগণকে গ্রাস করে; যদি কেহ তাঁহাদের হানি করিতে চায়, তবে সেইরূপে তাহাকে হত হইতে হইবে। আকাশ রুদ্ধ করিতে তাঁহাদের ক্ষমতা আছে, যেন তাঁহাদের ভাববাণী কথনের সমস্ত দিন বৃষ্টি না হয়; এবং জল রক্ত করিবার জন্য জলের উপরে ক্ষমতা, এবং যত বার ইচ্ছা করেন পৃথিবীকে সমস্ত আঘাতে আঘাত করিবার ক্ষমতা তাঁহাদের আছে। তাঁহারা আপনাদের সাক্ষ্য সমাপ্ত করিলে পর, অগাধলোক হইতে যে পশু উঠিবে, সে তাঁহাদের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর তাঁহাদিগকে জয় করিয়া বধ করিবে। আর তাঁহাদের শব সেই মহানগরের চকে পড়িয়া থাকিবে, যে নগরকে আত্মিক ভাবে সদোম ও মিসর বলে, আবার যেখানে তাঁহাদের প্রভু ক্রুশারোপিত হইয়াছিলেন। আর লোকবৃন্দের ও বংশবৃন্দের ও ভাষাসমূহের ও জাতিবৃন্দের লোক সাড়ে তিন দিন পর্য্যন্ত তাঁহাদের শব দেখিবে, আর তাঁহাদের শব কবরে রাখিবার অনুমতি দিবে না। আর পৃথিবী-নিবাসীরা তাঁহাদের বিষয়ে আনন্দিত হইবে, আমোদপ্রমোদ করিবে, ও পরস্পর উপঢৌকন পাঠাইবে, কেননা এই দুই ভাববাদী পৃথিবী-নিবাসীদিগকে যন্ত্রণা দিতেন। পরে সেই সাড়ে তিন দিন গত হইলে, “ঈশ্বর হইতে জীবনের নিশ্বাস তাঁহাদের মধ্যে প্রবেশ করিল, তাহাতে তাঁহারা চরণে ভর দিয়া দাঁড়াইলেন,এবং যাহারা তাঁহাদিগকে দেখিল, তাহারা অতিশয় ত্রাসযুক্ত হইল। পরে তাঁহারা শুনিলেন, স্বর্গ হইতে তাঁহাদের প্রতি এই উচ্চ রব হইতেছে, এই স্থানে উঠিয়া আইস; তখন তাঁহারা মেঘযোগে স্বর্গে উঠিয়া গেলেন, এবং তাঁহাদের শত্রুগণ তাঁহাদিগকে দেখিল। সেই দণ্ডে মহাভূমিকম্প হইল, তাহাতে নগরের দশমাংশ পতিত হইল; সেই ভূমিকম্পে সপ্ত সহস্র মনুষ্য হত হইল, এবং অবশিষ্ট সকলে ভীত হইল, ও স্বর্গের ঈশ্বরের গৌরব করিল। দ্বিতীয় সন্তাপ গত হইল; দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শীঘ্রই আসিতেছে। পরে সপ্তম দূত তূরী বাজাইলেন, তখন স্বর্গে উচ্চ রবে এইরূপ বাণী হইল,
জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও
তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি
যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব
করিবেন।
পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁহারা ঈশ্বরের সম্মুখে আপন আপন সিংহাসনে বসিয়া থাকেন, তাঁহারা অধোমুখে প্রণিপাত করিয়া ঈশ্বরের ভজনা করিয়া কহিতে লাগিলেন,
হে প্রভু ঈশ্বর, সর্ব্বশক্তিমান্,
তুমি আছ ও ছিলে, আমরা তোমার
ধন্যবাদ করিতেছি, কেননা তুমি
আপন মহাপরাক্রম গ্রহণ করিয়া
রাজত্ব করিয়াছ।
আর জাতিগণ ক্রুদ্ধ হইয়াছিল,
কিন্তু তোমার ক্রোধ উপস্থিত
হইল, আর মৃত লোকদের বিচার
করিবার সময় এবং তোমার দাস
ভাববাদিগণকে ও পবিত্রগণকে ও
যাহারা তোমার নাম ভয় করে,
তাহাদের ক্ষুদ্র ও মহান
সকলকে পুরস্কার দিবার,
এবং পৃথিবীর নাশকদিগকে
নাশ করিবার সময় উপস্থিত হইল।
পরে ঈশ্বরের স্বর্গস্থ মন্দিরের দ্বার মুক্ত হইল, তাহাতে তাঁহার মন্দিরের মধ্যে তাঁহার নিয়ম-সিন্দুক দেখা গেল, এবং বিদ্যুৎ ও রব ও মেঘধ্বনি ও ভূমিকম্প ও মহাশিলাবৃষ্টি হইল।
ঈশ্বরের সমস্ত বাক্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ, প্রকাশিত বাক্য ১১ অধ্যায়ও আমাদের কাছে তেমনি গুরুত্বপূর্ণ৷ পৃথিবীকে ধ্বংস করতেই পূর্ব হতেই ঈশ্বরের একটি বিশ্লেষনাত্বক কাজ করার প্রয়োজন ছিল৷ এটাই শেষ সময় ইস্রায়েলীয়দের জন্য শস্যচ্ছেদন৷ ইস্রায়েলীয় এবং পরজাতীয়দের নিমিত্ত ঈশ্বরের অন্যান্য কাজও রয়েছে, আর এটা তাদেরকে সাক্ষ্যমর হওয়ার নিমিত্ত প্রথম পুনরুত্থান এবং রূপান্তরে অংশগ্রহন করতে প্রস্তুত করবে৷
এই সমস্ত বিষয়ের জন্য বাইবেল যেভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রদান করে, ঠিক সেইভাবে আমাদেরও প্রয়োজন নুতন নিয়মে ঈশ্বরের সাধিত পাপ থেকে পরিত্রাণ কেমন তা খুঁজে বের করা৷ শাস্ত্র আমাদেরকে এই বিষয়ের উপর বলেছে, কেননা আমরা যদি সেগুলোকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা না করি, তাহলে আমরা ঈশ্বরের দাসগণ ও সাধুগণ এবং প্রকাশিত বাক্যের পুস্তকে প্রকাশিত ইস্রায়েলীয় লোকেদের সমন্ধে সন্দিহান হব৷
টীকা
পদ ১: “পরে যষ্টির ন্যায় এক নল আমাকে দত্ত হইল; এক জন কহিলেন, উঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদি ও যাহারা তাহার মধ্যে ভজনা করে, তাহাদিগকে পরিমাণ কর।”
এটা আমাদেরকে বলে যে, ঈশ্বরের অনুগ্রহের দ্বারা ইস্রায়েলীয়দের পাপ থেকে পরিত্রাণ করার কাজ এখনই শুরু হয়ে গেছে৷ “পরিমাপ” অর্থ হল, শেষকালে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের পাপ থেকে উদ্ধার করতে ব্যক্তিগতভাবে মধ্যস্ততা করবেন৷
আমরা অবশ্যই ১১ অধ্যায়ের মূল অনুচ্ছেদে পাপ থেকে ইস্রায়েলীয়দের পরিত্রাণের উপর আলোকপাত করব৷ এই বাক্য আমাদেরকে বলে যে, তখন থেকেই ইস্রায়েল জাতির কাছে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচারিত হবে, ঈশ্বরের কাজের আরম্ভকে গুরুত্ব দেওয়া হবে, যার দ্বারা ইস্রায়েলীয়রা তাদের পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যীশু খ্রীষ্টের দেওয়া পরিত্রাণ গ্রহণ করবে৷ এছাড়া প্রকাশিত বাক্য ১১ অধ্যায়ে লেখা আছে ঈশ্বর শেষকালে ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের পাপের ক্ষমা প্রদান করবেন৷ ১ ও ২ পদে “পরিমাপ” এর অর্থ হল সমস্ত জিনিসের মান নিরুপণ করা৷ ঈশ্বরের মন্দিরের পরিমাপের অর্থ হল, ইস্রায়েলীয়রা তাদের হৃদয়ে পরিত্রাণ গ্রহণ করতে প্রস্তুত হোক বা না হোক, ঈশ্বর ইতিমধ্যে ইস্রায়েলীয়দেরকে পরিত্রাণ করতে পরিকল্পনা করে ফেলেছেন৷ আর যদি তাদের হৃদয় প্রস্তুত না থাকে, তাহলে এটা তাদের হৃদয়কে প্রস্তুত করবে, যাতে তাদের হৃদয় সিদ্ধতায় স্থির থাকে৷
পদ ২: “কিন্তু মন্দিরের বহিঃস্থিত প্রাঙ্গণ বাদ দেও, তাহা পরিমাণ করিও না, কারণ তাহা জাতিগণকে দত্ত হইয়াছে; বিয়াল্লিশ মাস পর্য্যন্ত তাহারা পবিত্র নগরকে পদতলে দলন করিবে।”
ঈশ্বর শয়তানকে পরজাতীয়দের মন্দিরের উপরে সাড়ে তিন বছরের ক্ষমতা প্রদান করেছেন৷ অতএব, মহাক্লেশের প্রথম সাড়ে তিন বছরের মধ্যে পরজাতীয়দেরকে যত শীঘ্র সম্ভব পাপ মোচনের বাক্য জল ও আত্মার সুসমাচা গ্রহণ করতে হবে৷ মহাক্লেশের পরবর্তী সময় অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথেই এই পৃথিবীর ইতিহাস শেষ হয়ে যাবে এবং এই পৃথিবী তার দ্বিতীয়ার্ধ সময়ে প্রবেশ করবে৷ অদূর ভবিষ্যতে শীঘ্রই সেই সময় আসবে যখন সাধুগণের ন্যায় যে সমস্ত পরজাতীয়রা ইতিমধ্যেই সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছে, তারা শয়তানের দ্বারা পদদলিত হবে৷
মহাক্লেশের প্রথম সাড়ে তিন বছর পার হওয়ার পূর্বে এভাবে পরজাতীয়দেরকে তাদের পাপের মোচন লাভ করতে হবে এবং সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর জন্য তাদের বিশ্বাসকে প্রস্তুত করতে হবে৷ এই সময় ইস্রায়েলীয়রাও ভয়াবহ মহাক্লেশের সাড়ে তিন বছরের যন্ত্রণা ভোগ করবে৷ কিন্তু তারা এই বিষয়টি গ্রহণ করবে যে, যীশুই তাদের মুক্তিদাতা বা ত্রাণকর্তা৷ শেষকালে ইস্রায়েলীয়রা মহাক্লেশের সাড়ে তিন বছর সময়ের মধ্যে তারা তাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ করবে৷ আমরা অবশ্যই উপলব্ধি করতে পারি যে, এমনকি মহাক্লেশের সময়ের মধ্যেও ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের পাপমোচন অনুমোদন করবেন৷
পদ ৩: “আর আমি আপনার দুই সাক্ষীকে কার্য্য দিব, তাঁহারা চটপরিহিত হইয়া এক সহস্র দুই শত ষাট দিন পর্য্যন্ত ভাববাণী বলিবেন।”
ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের জন্য তাঁর দাসরূপে দুজন বিশেষ সাক্ষী উঠাবেন৷ যে দুই ভাববাদিকে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের জন্য উঠাবেন তারা পুরাতন ভাববাদীগণের মতই ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে এবং তাদের সাক্ষ্যের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে কার্য আরম্ভ করবেন, যাতে তারা যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তারূপে গ্রহণ করে৷ এই দুই ভাববাদীর কাজের মধ্যে দিয়ে অনেকে ইস্রায়েলীয় নুতন জন্ম প্রাপ্ত ঈশ্বরের লোক হয়ে যাবে৷ শেষকালে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের রক্ষার নিমিত্তে যে দুইজন ভাববাদী পাঠাবেন তারা আশ্চর্য এবং অদ্ভুতকার্য সাধন করবেন, যারা এই ভাববাদী দ্বারা পরিচালিত হবে, খ্রীষ্টের কাছে ফিরে আসবে এবং তাঁকে তাদের ত্রাণকর্তারূপে বিশ্বাস করবে তিনি সেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়দেরকে প্রস্তুত করবেন৷ মহাক্লেশের প্রথম সাড়ে তিন বছরের ১২৬০ দিনে এই দুই ভাববাদী ইস্রায়েলীয়দেরকে ঈশ্বরের বাক্য ভোজন করাবে৷ জল ও আত্মার সুসমাচার প্রদানের এবং তাদেরকে এটা বিশ্বাস করানোর মাধ্যমে ঈশ্বর তাদের জন্য একই পরিত্রাণ অনুমোদন করবেন৷, যা নুতন নিয়মের যুগে পরজাতীয়দেরকে বিশ্বাসের দ্বারা রক্ষা করেছিল৷
পদ ৪: “তাঁহারা সেই দুই জিতবৃক্ষ ও দুই দীপবৃক্ষস্বরূপ, যাঁহারা পৃথিবীর প্রভুর সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছেন।”
“দুই জিতবৃক্ষ” এখানে দুই ভাববাদিকে নির্দেশ করে (প্রকাশিত বাক্য ১১:১০)৷ অন্যদিকে “দুই দীপবৃক্ষ” ঈশ্বরের মন্ডলীকে নির্দেশ করে, যেটা তিনি পরজাতীয়দের মধ্যে স্থাপন করেছেন এবং যে মন্ডলীটা তিনি ইস্রায়েলীয়দের জন্য অনুমোদন করেছেন৷ ঈশ্বর যিহুদী এবং পরজাতী উভয়ের মধ্যেই তাঁর মন্ডলী নির্মান করেছেন এবং শেষ দিন পর্যন্ত তিনি পাপ থেকে আত্মা রক্ষার কাজ চালিয়ে যাবেন৷
“দুই জিতবৃক্ষ” এবং “দুই দীপবৃক্ষ” এর দ্বারা ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন যে, তিনি পুরাতন নিয়মের সময় ভাববাদিগণকে তুলেছিলেন শুধু ইস্রায়েলীয়দেরকে তাদের পাপ থেকে মুক্ত করতে এবং এই ভাববাদীগণের মাধ্যমে কাজ করেছেন, তাদেরকে বলেছেন, যখন শেষ সময় আসবে তখন তিনি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে থেকে দুইজন ভাববাদিকে উঠাবেন যারা তাঁর বাক্য প্রচার করবেন, এবং এই ভাববাদীদের মাধ্যমে তাদেরকে যীশুর পথে চালিত করবেন৷
ইস্রায়েলীয় পরজাতীয়রা ঈশ্বরের দাসগণকে গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং ঈশ্বরের এই দাসগণ তাদেরকে যা বলেছেন তারা তা শোনে নি৷ শেষ সময়ে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে থেকে ঈশ্বরের ভাববাদী উঠানোর প্রয়োজন হবে, যারা পুরাতন নিয়মের ভাববাদী, এবং বলিদানের নিয়ম সম্পর্কে শাস্ত্র বিষয়ে তারা সব কিছু জানে৷ ইস্রায়েলীয়রা শাস্ত্র বিষয়ে খুব দক্ষ ছিল এবং মোশির নিয়ম তাদের মুখস্ত ছিল, যেমনটি আজও চলেছে৷ একারণে ঈশ্বরের পরজাতী দাস তাদেরকে যা বলেছে, সেটা তারা কখনই বিশ্বাস করে না৷
কিন্তু আপনি ও আমি বর্তমানে প্রচারিত যে জল ও আত্মার সুসমাচার শুনছি, তাতে ঈশ্বরের যে দাস উঠবে তা তাদের নিজেদের লোক থেকেই উঠবে৷ যখন তাদের নিজেদের মধ্যে থেকে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসী উঠবে এবং ঈশ্বর নিযুক্ত দুই ভাববাদী উঠবে, যেসব ভাববাদীদের বিষয়ে ঈশ্বরের বাক্যে প্রচার ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে, কেবলমাত্র তখনই ইস্রায়েলীয়রা তাদেরকে বিশ্বাস করবে৷ ইস্রায়েলীয়রা বুঝবে যে, এই দুই সাক্ষীই দুই ভাববাদী, যাদেরকে শেষ সময়ে ঈশ্বর নিজেই তাদের পাপ থেকে মুক্ত করতে প্রেরণ করেছেন এবং উঠিয়েছেন৷ পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের দাসগণের ন্যায় তারা তাদের সর্ব ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন, যেভাবে তারা পূর্বে করতেন এবং যাদেরকে ইস্রায়েলীয়রা বিশ্বাস করবে৷ এই দুই সাক্ষী যে সমস্ত অদ্ভত কার্য সম্পাদন করবেন তা ইস্রায়েলীয়রা নিজের চোখে দেখতে পাবে৷ এর থেকে ইস্রায়েলীয়রা যীশু খ্রীষ্টের কাছে ফিরে আসবে এবং প্রভুতে বিশ্বাস করবে৷ যখন তারা যীশু খ্রীষ্টকে ঈশ্বরের পুত্র এবং ত্রাণকর্তারূপে জানবে, যেমনটি আমরা জানি, তাদের বিশ্বাস আমাদের বিশ্বাসের ন্যায় একই হবে,- এইভাবে তারাও জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা রক্ষা পাবে৷
এই দুই সাক্ষী মহাক্লেশের সাত বছরের ১২৬০ দিন ইস্রায়েলীয়দের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করবে এবং ভোজন করবে৷ এভাবে আপনি এবং আমি পরজাতি হিসাবে নুতন নিয়মে এসে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস হেতু রক্ষা পেয়েছি, ঈশ্বর শেষ কালে ইস্রায়েলীয়দেরকেও জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস হেতু রক্ষা পেতে সাহায্য করবেন৷
৪ পদে যেভাবে বলা হয়েছে, “তাঁহারা সেই দুই জিতবৃক্ষ ও দুই দীপবৃক্ষস্বরূপ, যাঁহারা পৃথিবীর প্রভুর সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছেন।” বাইবেল এই দুই সাক্ষীকে “দুই জিতবৃক্ষ” বলেছে৷ এই দুই জিতবৃক্ষ শেষকালীন দুই ভাববাদিকে নির্দেশ করে৷ ১০ পদে লেখা হয়েছে, “আর পৃথিবী-নিবাসীরা তাঁহাদের বিষয়ে আনন্দিত হইবে, আমোদপ্রমোদ করিবে, ও পরস্পর উপঢৌকন পাঠাইবে, কেননা এই দুই ভাববাদী পৃথিবী-নিবাসীদিগকে যন্ত্রণা দিতেন।” এখানে কারা এই দুই জিতবৃক্ষ এর উপরে আলোকপাতের দ্বারা আমরা অবশ্যই এই বাক্যের সমাধান করতে পারি৷
পুরাতন নিয়মের যুগে পবিত্র স্থান তৈরীর কাজে জিতবৃক্ষের আসবাবপত্র ব্যবহৃত হত এবং এর তৈল দ্বারা ঈশ্বরের মন্দিরের বেদী লেপন করা হত, যেমন মন্দিরের দীপ জ্বালানোর কাজেও ব্যবহৃত হত৷ ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে যে কোনো তৈল অনুমোদন করতেন না, কিন্তু তিনি স্থির করেছিলেন যে শুধুমাত্র জিতবৃক্ষের তৈলই ব্যবহৃত হবে৷ এভাবে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে, ডুমুর বৃক্ষের মত জিতবৃক্ষও ইস্রায়েলীয়দের প্রতিরূপ৷
এই দুই জিতবৃক্ষ ও দীপবৃক্ষের অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে৷ কিছু লোক দাবি করে যে, তারা নিজেরাই জিতবৃক্ষ৷ কিন্তু এই জিতবৃক্ষের দ্বারা দুইজন অভিষিক্ত ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে৷ পুরাতন নিয়মের সময়ে লোকেরা ভাববাদী, রাজা অথবা যাজকদের অভিষেক করার সময় এই তৈল লেপনের দ্বারা অভিষিক্ত করতেন৷ যখন কেউ তৈলাভিষিক্ত হতেন পবিত্র আত্মা তার (নারী/পুরুষ) উপরে নেমে আসতেন৷ এইরূপে জিতবৃক্ষ দ্বারা যীশু খ্রীষ্টকে বোঝানো হয়েছে, তিনি পবিত্র আত্মা হতে জাত (রোমীয় ১১:২৪)৷ কিন্তু এই বিষয়ের উপরে লোকেদের প্রচুর ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে৷
তত্সত্ত্বেও, মূল অনুচ্ছেদে যে দুই জিতবৃক্ষের উল্লেখ রয়েছে, তাদেরকে ঈশ্বরের দুই দাস বোঝায় এবং যাদেরকে তিনি শেষকালে ইস্রায়েলীয়দের পরিত্রাণের নিমিত্ত বিশেষভাবে উঠাবেন৷
৪ পদে যা বলা হয়েছে এটা তাই৷ আর দুই জিতবৃক্ষ বলতে এখানে ঈশ্বরের মন্ডলীকে বোঝানো হয়েছে যা তিনি পরজাতি এবং ইস্রায়েলীয়দের জন্য অনুমোদন করেছেন৷ পুরাতন নিয়মের যুগে ইস্রায়েলীয়রা ঈশ্বরের আদি মন্ডলী ছিল৷ কিন্তু নুতন নিয়মের যুগ হতে তারা আর ঈশ্বরের মন্ডলী ছিল না৷ কেন? কারণ তারা এখনও যীশুকে জানে না এবং তাদের অন্তরে পবিত্র আত্মা নেই৷
যেমন তারা জল ও আত্মার সুসমাচার বা যীশু খ্রীষ্ট কোনটিকেই গ্রহণ করে নি, তেমনি তাদের মধ্যে ঈশ্বরের মন্ডলীও পাওয়া যায় না৷ যাহোক, শেষকালে পৃথিবীর চূড়ান্ত ধ্বংসের পূর্বে মহাক্লেশের সাড়ে তিন বছর সময়ে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দেরকে তাঁর মন্ডলীতে অনুমোদন করবেন৷ একারণে বাইবেল দুই জিতবৃক্ষের কথা বলছে, যারা দুজন সাক্ষী৷
প্রভু যিহুদী এবং পরজাতি উভয়ের মধ্যে তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠা করবেন এবং পাপ থেকে আত্মা রক্ষার কাজ করবেন৷ আর এই মন্ডলীগুলির মাধ্যমে তিনি খ্রীষ্টারীর উত্থান পর্যন্ত তাদেরকে দিয়ে পাপ থেকে আত্মা রক্ষার কাজ করাবেন৷ এর অর্থ ঈশ্বর সাধুগণ থেকে পাত্র প্রস্তুত করবেন, তাঁর মন্ডলীর সদস্য করবেন, তাদেরকে দিয়ে পাপে হারানো আত্মাদের উদ্ধারের কাজ করবেন৷ অতএব, আমরা অবশ্যই আমাদের অবশিষ্ট কার্যক্রম বিশ্বাসের সাথে প্রাণপণে পরিচালনা করব৷
পদ ৫: “আর যদি কেহ তাঁহাদের হানি করিতে চায়, তবে তাঁহাদের মুখ হইতে অগ্নি বাহির হইয়া তাঁহাদের শত্রুগণকে গ্রাস করে; যদি কেহ তাঁহাদের হানি করিতে চায়, তবে সেইরূপে তাহাকে হত হইতে হইবে।”
ঈশ্বর এই দুই ভাববাদিকে এই ক্ষমতা প্রদান করেছেন যেন তারা তাদের বিশেষ উদ্দেশ্য পরিচালনা করতে পারেন৷ শেষ সময়ে ইস্রায়েলীয়দেরকে অনুতপ্ত হতে এবং শয়তানের উপরে বিজয়ী হতে, ঈশ্বর আমাদেরকে দেখিয়েছেন যে, যে কেউ তাদের হানি করতে চায়, তাহলে তাকেও হত হতে হবে, আর এই দুই সাক্ষীর সাথে ঈশ্বরের বাক্যের ক্ষমতা থাকবে৷
এইরূপে, দুই ভাববাদির শিক্ষায় বিশ্বাস করে ইস্রায়েলীয়রা যীশু খ্রীষ্টের কাছে ফিরে আসবে৷ একারণে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়কে যে দুই জিতবৃক্ষ অনুমোদন করবেন, তারা দুই সাক্ষী, যাতে শেষকালে ইস্রায়েলীয়রা তাদের পাপ থেকে রক্ষা পেতে পারে৷
পদ ৬: “আকাশ রুদ্ধ করিতে তাঁহাদের ক্ষমতা আছে, যেন তাঁহাদের ভাববাণী কথনের সমস্ত দিন বৃষ্টি না হয়; এবং জল রক্ত করিবার জন্য জলের উপরে ক্ষমতা, এবং যত বার ইচ্ছা করেন পৃথিবীকে সমস্ত আঘাতে আঘাত করিবার ক্ষমতা তাঁহাদের আছে।”
ঈশ্বর তাঁর ক্ষমতার দ্বারা কাজ করতে দুই সাক্ষী অনুমোদন করবেন, কেননা ঈশ্বর যদি তাঁর দাসগণকে এই সকল ক্ষমতার কার্য করতে না উঠাতেন, তাহলে ইস্রায়েলীয়রা অনুতাপ করত না৷ দুই ভাববাদি কেবল ইস্রায়েলীয়দেরকে যীশুর পথে পরিচালিতই করবে না, তারা পরাক্রমের সাথে ঈশ্বরের শত্রুদের উপর জয়লাভ করবে, এবং তাদের আহ্বানের সমস্ত কাজের পূর্ণতা সাধন করবেন৷ ঈশ্বর তাদেরকে বিশেষ ক্ষমতা দেবেন, যাতে তারা ইস্রায়েলীয়দের কাছে সমস্ত ভাববাণী প্রচার করতে, সাক্ষ্য দিতে এবং বিশ্বাস করাতে পারে যে, যীশু খ্রীষ্টই তাদের বহু প্রতীক্ষিত মসীহ৷
পদ ৭: “তাঁহারা আপনাদের সাক্ষ্য সমাপ্ত করিলে পর, অগাধলোক হইতে যে পশু উঠিবে, সে তাঁহাদের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর তাঁহাদিগকে জয় করিয়া বধ করিবে।”
এই পদ আমাদেরকে বলে যে, যখন মহাক্লেশের সাত বছরের প্রথম সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হবে, সেই সময় খ্রীষ্টারী পৃথিবীতে আবির্ভূত হবে৷ এই সময় ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে যে কেউ যীশুকে মসীহ বলে বিশ্বাস করবে সে-ই উঠে আসবে৷ কিন্তু তাদের অনেকে বিশ্বাস করতে সেই পশু, অর্থাৎ খ্রীষ্টারী এবং তার অনুসারীদের দ্বারা সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করবে৷ ঈশ্বরের দুই সাক্ষী, যখন তাদের আহ্ববানের কার্যসকল সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন তারাও সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করবে৷
দুইজন সাক্ষী যে খ্রীষ্টারীর দ্বারা হত হবেন, তা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ীই হবে৷ কেন? কেননা সাক্ষ্যমরদেরকে তিনি তাঁর পুরস্কার দিতে চান৷ এই পুরস্কার তাদের প্রথম পুনরুত্থানের অংশগ্রহনের নিমিত্ত, প্রভুতে যুক্ত হয়ে মেষশাবকের বিবাহভোজে অংশগ্রহনের নিমিত্ত, এবং আনন্দ ও অনন্তজীবন গ্রহণের নিমিত্ত৷ ঈশ্বর সমস্ত সাধুগণকে এই আশীর্বাদ প্রদান করতে চান, যেন তারা বিশ্বাসে সাক্ষ্যমর হয়৷ অতএব, সমস্ত সাধুগণ তাদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে অবশ্যই ভয় করবে না বা এড়িয়ে যাবে না, বরং বিপরীতে অবশ্যই সত্য বিশ্বাসে তারা একে আলিঙ্গন করবে এবং তাদের অনুগ্রহের পুরস্কার গ্রহণ করবে৷
পদ ৮: “আর তাঁহাদের শব সেই মহানগরের চকে পড়িয়া থাকিবে, যে নগরকে আত্মিক ভাবে সদোম ও মিসর বলে, আবার যেখানে তাঁহাদের প্রভু ক্রুশারোপিত হইয়াছিলেন।”
এই পদ আমাদেরকে বলে যে, “দুই সাক্ষী” আসলে ইস্রায়েলীয়৷ যে দুই দাসকে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের জন্য উঠাবেন তারা পরজাতীয় নয় কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের নিজেদের লোক৷ এরূপে, যীশু যেখানে ক্রুশে মরেছিলেন সেই একই স্থানে দুই সাক্ষীও হত হয়েছিল৷ এই ঘটনা আমাদেরকে স্পস্টভাবে বলে যে, এই দুই সাক্ষী ইস্রায়েলীয়৷ ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে তারা ঈশ্বরের দাস৷
যে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা আত্মিকভাবে সদোম ও মিশরের লোক, ঈশ্বর তাদের জন্য যে দুই ভাববাদী নিরূপন করবেন এবং ক্ষমতা প্রদান করবেন এবং তাদেরকে দিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করাবেন যে, ইস্রায়েলীয়রা যার জন্য প্রতীক্ষা করছে, যীশুই সেই মসীহ, যাতে ইস্রায়েলীয়রা অনুতাপ করে এবং যীশুতে বিশ্বাস করে৷
খ্রীষ্টারী ঈশ্বরের দুই দাসকে গলগাথা নামক স্থানে হত্যা করবে, যেখানে যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল৷ কেননা খ্রীষ্টারীর অনুসারীরা মন্দ অত্মাগ্রস্থ, তারা এই দুই মৃত সাক্ষীকে ঘৃণা করবে, যারা যীশুতে বিশ্বাস করে এবং তার পক্ষে সাক্ষ্য দেয়৷ পূর্বে রোমান সৈন্যদের ন্যায় যারা যীশুকে ক্রুশে দিয়েছিল এবং বর্শা দ্বারা কুক্ষিদেশ ভেদ করেছিল, সেই মন্দ আত্মাগ্রস্থরা কেবল যীশুকেই ঘৃনা করবে না, বরং তারা ঈশ্বরের দুই সাক্ষীকেও ঘৃনা করবে এবং তাদেরকে হত্যা করবে৷
পদ ৯: “আর লোকবৃন্দের ও বংশবৃন্দের ও ভাষাসমূহের ও জাতিবৃন্দের লোক সাড়ে তিন দিন পর্য্যন্ত তাঁহাদের শব দেখিবে, আর তাঁহাদের শব কবরে রাখিবার অনুমতি দিবে না।”
ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে এমন লোকও থাকবে যারা যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তারূপে বিশ্বাস করবে না৷ ঈশ্বরের দুই দাসের (দুই জিতবৃক্ষ) শব দেখে এই সমস্ত লোকেরা তাদের বিজয়োল্লাস দ্বারা তা আচ্ছন্ন করবে এবং এমনকি এই বিজয়কে আরো উন্নত করতে তারা তাদের বলিকৃত দাসদেরকে ঠিকমত কবরস্থও করবে না৷ কিন্তু ঈশ্বর যখন পুনরায় “দুই সাক্ষী” কে জীবিত করবেন, তখন তাদের বিজয় চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে, অতঃপর তারা ঈশ্বরকে ভয় করবে৷
ঈশ্বরের দুই দাসের মৃত্যুতে হয়তো তারা একে অপরকে উপঢৌকন পাঠাবে, কিন্তু তাদের ঐ আনন্দ স্থায়ী হবে না, কেননা তারা শীঘ্রই বুঝতে পারবে যে, খ্রীষ্টারী যীশু খ্রীষ্টের সমান নয় এভাবে হতাশা এবং শূন্যতা তাদেরকে আছন্ন করবে৷
এই লোকেরা দুই ভাববাদী কর্তৃক প্রচারিত ঈশ্বরের বাক্যের ভাববাণী অপছন্দ করে৷
ঈশ্বরের এই দুই দাসের বিপক্ষে দাঁড়ানোর ফলে পরিনামস্বরূপ তারা পরিত্রাণের শেষ শস্যচ্ছেদন থেকে বাদ পড়বে এবং শেষে শয়তানের অনুসারীতে পরিণত হবে৷
পদ ১০: “আর পৃথিবী-নিবাসীরা তাঁহাদের বিষয়ে আনন্দিত হইবে, আমোদপ্রমোদ করিবে, ও পরস্পর উপঢৌকন পাঠাইবে, কেননা এই দুই ভাববাদী পৃথিবী-নিবাসীদিগকে যন্ত্রণা দিতেন।”
যেরূপে তারা ঈশ্বরের বাক্যের ভাববাণী প্রচার করতে থাকবে, তাতে ইস্রায়েলীয়দের পরিত্রাণের নিমিত্ত উত্থিত দুই সাক্ষী শয়তানের অনুসারীদের মাথা ব্যথার কারণ হবে৷ এইরূপে দুই সাক্ষীর মৃত্যুতে তারা সবাই আনন্দ করবে এবং একে অপরকে উপঢৌকন পাঠাবে৷
যারা আমাদেরকে নির্যাতন করে তারা যদি নিঃশেষ হয়ে যায়, তখন আমরাও খুশী হই৷ যখন ঈশ্বর কর্তৃক দুই সাক্ষী উঠবে এবং তাঁর বাক্য প্রচার করবে, তখন খ্রীষ্টারী এবং তার অনুসারীরা তা ঘৃনা করবে৷ সর্বদা তারা ঈশ্বরের বাক্য শুনতে পাবে তাতে তাদের আত্মা নিদারুন যন্ত্রনায় আচ্ছন্ন হবে৷ যখন তারা খ্রীষ্টারী কর্তৃক দুই সাক্ষীকে হত্যা করতে দেখবে, তখন তারা আনন্দ করবে, কেননা যখন দুই সাক্ষী তাদেরকে যীশুর সম্পর্কে বলত তখন তারা দারুন যন্ত্রণা পেত৷ একারণেই তারা একে অপরকে অভিনন্দন জানাতে উপঢৌকন বিনিময় করবে৷
পদ ১১: “পরে সেই সাড়ে তিন দিন গত হইলে, “ঈশ্বর হইতে জীবনের নিশ্বাস তাঁহাদের মধ্যে প্রবেশ করিল, তাহাতে তাঁহারা চরণে ভর দিয়া দাঁড়াইলেন,এবং যাহারা তাঁহাদিগকে দেখিল, তাহারা অতিশয় ত্রাসযুক্ত হইল।”
যাহোক, ঈশ্বর দুই সাক্ষীকে প্রথম পুনরুত্থানে অংশগ্রহণ করাবেন৷ যে সমস্ত সাধুগণ প্রভুর দেওয়া বাক্যে বিশ্বাস হেতু পাপ মুক্ত হয়ে বিশ্বাস রক্ষার্থে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করবে, তারা প্রথম পুনরুত্থানে অংশগ্রহণ করবে, এই বাক্যই সেই ঘটনার প্রমাণ৷
“সাড়ে তিন দিন” পর জীবনের বায়ু তাদের মধ্যে প্রবেশ করল, আমাদেরকে বলে যে, প্রভু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের পুনরুত্থান অনুমোদন করবেন, ঠিক যেভাবে তিনি নিজে তাঁর মাংসিক মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন৷ ঈশ্বর সমস্ত সাধুগণকে প্রথম পুনরুত্থানের যে বিশ্বাস অনুমোদন করেছেন, তা সাধুগণের নিজেদের জন্য ঈশ্বরীয় এক মহা আশীর্বাদ, কিন্তু পাপীদের জন্য তা হতাশা ও ত্রাস আনয়ন করবে৷ সাধুগণের প্রথম পুনরুত্থান, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা এবং তাদের বিশ্বাসের জন্য তাঁর পুরস্কার৷
পদ ১২: “পরে তাঁহারা শুনিলেন, স্বর্গ হইতে তাঁহাদের প্রতি এই উচ্চ রব হইতেছে, এই স্থানে উঠিয়া আইস; তখন তাঁহারা মেঘযোগে স্বর্গে উঠিয়া গেলেন, এবং তাঁহাদের শত্রুগণ তাঁহাদিগকে দেখিল।”
এই বাক্য সাধুগণের পুনরুত্থান এবং রূপান্তরকে নির্দেশ করে৷ প্রভুর ভাববানীতে বিশ্বাস হেতু তারা পাপ মুক্ত হয়েছে, বিশ্বাস রক্ষার্থে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ ব্যতীত তাদের অন্যকোন উপায় থাকবে না৷ এই পদ আমাদেরকে এটা দেখায় যে, প্রভু এই সমস্ত সাধুগণকে পুনরুত্থিত ও রূপান্তরিত করবেন৷ ঈশ্বরের যে সমস্ত সাধুগণ এবং দাসগণ তাঁর উপরে তাদের বিশ্বস্ততায় সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করবেন, তারা প্রভুতে তাদের বিশ্বাসের কারণে উর্দ্ধে নীত (রূপান্তরিত) হওয়ার দ্বারা আশীর্বাদযুক্ত হবেন৷ প্রভু আমাদেরকে যে পাপমুক্তি প্রদান করেছেন, তাতে বিশ্বাসের দ্বারা রক্ষা পেয়ে সাক্ষ্যমর হওয়ার পুরস্কারস্বরূপ তিনি আমাদেরকে পুনরুত্থান ও রূপান্তর প্রদান করেছেন, এই জন্য আমরা প্রভুর ধন্যবাদ না করে থাকতে পারি না৷
যারা যীশুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা সাক্ষ্যমর হবে এবং যে সমস্ত সাধুগণ খ্রীষ্টারীর বিপক্ষে দাঁড়াবে, পিতা ঈশ্বর তাদের নিমিত্ত পুনরুত্থান ও রূপান্তর অনুমোদন করবেন৷ আমাদেরকে অবশ্যই এই ঘটনায় বিশ্বাস করতে হবে৷ সাধুগণের পুনরুত্থান ও রূপান্তর হল আশীর্বাদ, যা ঈশ্বর দেয় জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পরিত্রাণের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়৷ শেষকালে শয়তান এবং তার অনুসারীরা যখন দেখবে যে, তারা যে সমস্ত সাধুগণকে নির্যাতন করেছিল এবং মেরে ফেলেছিল তারা পুনরুত্থিত এবং রূপান্তরিত হচ্ছে, তখন তারা বাস্পের ন্যায় শূণ্যে উঠতে কঠোর প্রচেষ্টা করবে৷
ঈশ্বর সাধুগণকে পুনরুত্থিত এবং রূপান্তরিত করবেন, তবে তিনি সেই সমস্তদের ধ্বংস করবেন যারা তখনও সপ্তবাটির মহামারী প্রবাহিত এই পৃথিবীতে রয়ে যাবে৷ যখন এই কাজ দ্রুত সম্পন্ন হয়ে যাবে, তখন তিনি সাধুগণসহ এই পৃথিবীতে নেমে আসবেন এবং ধার্মিকগণকে খ্রীষ্টের বিবাহভোজে নিমন্ত্রণ করবেন৷ আমাদের প্রভুর এই আনন্দ উত্সব এক হাজার বছরকাল স্থায়ী হবে৷ যখন এই সহস্রাব্দ পার হয়ে যাবে, তিনি অল্প সময়ের জন্য শয়তানকে অগাধলোকের কূপ থেকে উঠাবেন এবং ঈশ্বর ও তাঁর সাধুগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অনুমোদন করবেন, কিন্তু তিনি চরমভাবে শয়তানকে আর তার অনুসারীদেরকে ধ্বংস করবেন এবং অনন্ত নরকে তাদেরকে নিক্ষেপ করবেন৷ যাহোক, ধার্মিকেরা প্রভুর স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে এবং অনন্তকাল তাঁর সাথে বাস করবে৷
পদ ১৩: “সেই দণ্ডে মহাভূমিকম্প হইল, তাহাতে নগরের দশমাংশ পতিত হইল; সেই ভূমিকম্পে সপ্ত সহস্র মনুষ্য হত হইল, এবং অবশিষ্ট সকলে ভীত হইল, ও স্বর্গের ঈশ্বরের গৌরব করিল।”
ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের নিমিত্ত দুই ভাববাদিকে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ, পুনরুত্থিত এবং রূপান্তরিত করার পরে তিনি তাঁর দূতকে এই পৃথিবীতে সপ্তবাটির মহামারী ঢেলে দেওয়ার জন্য আজ্ঞা দেবেন৷ সাধুগণের রূপান্তরের পরে যারা পৃথিবীতে রয়ে যাবে, তারা উপহার হিসাবে সপ্তবাটির মহামারী গ্রহণ করবে, কিন্তু তাতে তাদের কোনো উপকার হবেনা, ঈশ্বরের প্রেমে সঠিক বিশ্বাসের নিমিত্ত এতে কোনো কাজ হবে না৷
যখন এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন ধার্মিকেরা অনন্ত স্বর্গ, অনন্ত পুনরুত্থান এবং অনন্ত আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে, কিন্তু পাপীদের জন্য কেবল অনন্ত অগ্নির নরকভোগ অপেক্ষা করবে৷ একারণেই জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা প্রত্যেককে অবশ্যই পাপের ক্ষমা লাভ করতে হবে৷ আর এ কারণে যারা এভাবে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত নুতন পৃথিবীতে বিশ্বাস করে তাদের পাপ থেকে মুক্ত হয়, তারা প্রত্যেকের নিকট জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করে৷
পদ ১৪: “দ্বিতীয় সন্তাপ গত হইল; দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শীঘ্রই আসিতেছে। ”
যারা সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করেছেন, এবং তাদের পুনরুত্থান ও রূপান্তরের দ্বারা রক্ষা পেয়েছেন, তারা ব্যতীত পরজাতীয় এবং ইস্রায়েলীয় প্রত্যেকের জন্য ঈশ্বর হতে তৃতীয় সন্তাপ অপেক্ষা করছে৷
ষষ্ঠ তুরীধ্বনি শুরু থেকে সপ্তবাটির মারীর সপ্তম তুরীধ্বনি পর্যন্ত যে মারী স্থায়ী হবে, সেটা দ্বিতীয় সন্তাপ৷ সপ্ত তুরীধ্বনির মহামারীকে তিনটি সময়ে ভাগ করা যায়, প্রারম্ভিককাল, মধ্যবর্তীকাল এবং পরবর্তীকাল৷ প্রাকৃতিক মারী এবং খ্রীষ্টারী কর্তৃক সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণপ্রথম ও দ্বিতীয় সন্তাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত৷ অপরদিকে, তৃতীয় সন্তাপের মহামারী এমন যা পৃথিবীকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবে৷ এই তৃতীয় সন্তাপ ঈশ্বরের ক্রোধ, যা পৃথিবীতে থাকাকালীন পাপীদের উপর প্রবাহিত হবে৷
পদ ১৫: “পরে সপ্তম দূত তূরী বাজাইলেন, তখন স্বর্গে উচ্চ রবে এইরূপ বাণী হইল, জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন।”
“স্বর্গে উচ্চ রবে এইরূপ বাণী হইল” এই উক্তিটির দ্বারা আমরা দেখতে পাই যে, যে সমস্ত সাধুগণ ও দাসগণ সকল পাপ হতে মুক্ত হয়েছে, পৃথিবীতে সপ্তবাটির মহামারীর সময়ে তারা স্বর্গে অবস্থান করবে৷ এইরূপে, এই সময় তাঁর সন্তানদেরকে আর পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না৷ আমাদেরকে অবশ্যই এটা বুঝতে হবে৷ “জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন।”
এই সময়ে সাধুগণ স্বর্গে প্রভুর প্রশংসা করতে থাকবেন, কিন্তু সপ্তবাটির মহামারীর প্রবাহ শেষ হওয়ার পরে নুতন পৃথিবীতে তারাও প্রভুর সাথে নেমে আসবেন এবং পৃথিবীতে প্রভুর সাথে সহস্র বছর রাজত্ব করবেন৷ নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী তখন প্রভু ও তাঁর সাধুগণের অনন্ত রাজত্বে অনুগামী হবে৷
আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করতে প্রভু আমাদের উপরে রাজত্ব করার পরিবর্তে দাস হিসাবে আমাদের সেবা করেছেন৷ যারা তাদের পরিত্রাণ হিসাবে জল ও আত্মার সুসমাচারকে বিশ্বাস করেছে, তাদেরকে ঈশ্বরের সন্তান তৈরী করার অনুগ্রহ তিনি আমাদেরকে প্রদান করেছেন৷ আমাদের প্রভুরূপে আমাদের নিমিত্ত অনন্তকালের রাজা হয়ে তিনি তাঁর লোকেদের দিয়ে অনন্তকাল রাজত্ব করাবেন৷ হাল্লিলুয়া! ধন্যপ্রভু!
পদ ১৬: “পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁহারা ঈশ্বরের সম্মুখে আপন আপন সিংহাসনে বসিয়া থাকেন, তাঁহারা অধোমুখে প্রণিপাত করিয়া ঈশ্বরের ভজনা করিয়া কহিতে লাগিলেন”
ঈশ্বর সমস্ত গৌরব গ্রহণের যোগ্য৷ ঈশ্বরের প্রশংসা, আরাধনা এবং তাঁকে প্রণিপাত করতে কেবল তারাই যোগ্য, যারা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছে৷ আমাদের প্রভু যিনি পাপীদের রক্ষার্থে এই সমস্ত কাজ করেছেন, তিনি সাধুগণ এবং এই সমস্ত সৃষ্টি কর্তৃক অনন্তকালের নিমিত্ত আরাধনা ও প্রশংসা গ্রহণ করার যোগ্য৷
পদ ১৭: “‘হে প্রভু ঈশ্বর, সর্ব্বশক্তিমান্, তুমি আছ ও ছিলে, আমরা তোমার ধন্যবাদ করিতেছি, কেননা তুমি আপন মহাপরাক্রম গ্রহণ করিয়া রাজত্ব করিয়াছ। ”
আমাদের প্রভু তাঁর লোকেদের সাথে অনন্তকাল রাজত্ব করতে শয়তানকে জয় করবেন এবং পিতা ঈশ্বরের নিকট থেকে মহা পরাক্রম গ্রহণ করবেন৷ এইরূপে প্রভু অনন্তকাল রাজত্ব করবেন৷ তিনি এইরূপ করার যোগ্য৷ আমি প্রভুকে গৌরব প্রদান করি যে, যিনি পৃথিবীর সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেছে তিনি তাদেরকে মুক্ত করেছেন এবং তাঁর শত্রুদের বিচার করেছেন, তিনি ঈশ্বরের মহিমা গ্রহণ করার জন্য এবং অনন্তকাল রাজত্ব করার যোগ্য৷ এইরূপে যারা ঈশ্বরের অসীম ক্ষমতা জানে, তারা প্রভুর সর্বশক্তিমান ক্ষমতা এবং প্রেমের দ্বারা আবৃত হয়ে অনন্তকাল ঈশ্বরের গৌরবের প্রশংসা করতে থাকবে৷
পদ ১৮: “আর জাতিগণ ক্রুদ্ধ হইয়াছিল, কিন্তু তোমার ক্রোধ উপস্থিত হইল, আর মৃত লোকদের বিচার করিবার সময় এবং তোমার দাস ভাববাদিগণকে ও পবিত্রগণকে ও যাহারা তোমার নাম ভয় করে, তাহাদের ক্ষুদ্র ও মহান সকলকে পুরস্কার দিবার, এবং পৃথিবীনাশকদিগকে নাশ করিবার সময় উপস্থিত হইল।”
যারা এখনও আত্মিকভাবে পরজাতি, সপ্তবাটির মহামারী প্রবাহের সময়ে তাদের দেহ ধ্বংস হয়ে যাবে৷ এই বাক্য আমাদেরকে বলে যে, সকলের বিচারকরূপে বিচার করতে, তাঁর দাস, ভাববাদী এবং সাধুগণকে এবং যারা তাঁকে সম্মান করে তাদেরকে পুরস্কৃত করতে ও যারা তাঁর ইচ্ছা অমান্য করে এবং তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাদেরকে ধ্বংস করতে তখন ঈশ্বরের সময় হবে৷ যারা তাঁর অসীম ক্ষমতা জানে না, তিনি তাদের উপরে তাঁর ক্রোধের বিচার আনয়ন করবেন, কিন্তু সাধুগণকে তাঁর সাথে গৌরাবন্বিত হতে তিনি অনুমোদন করবেন৷ এর অর্থ হল, ঈশ্বর ভালো ও মন্দ সকলের বিচারক৷ প্রভু যখন নুতন জন্ম প্রাপ্তদের রাজা হিসাবে তাঁর সিংহাসনে উপবিষ্ট হবেন এবং বিচার করবেন, তখন পৃথিবীর পাপী ও ধার্মিকরা তাদের ন্যায়বিচার গ্রহণ করবে৷ এই সময়ে তাঁর বিচারের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রভু সাধুগণকে স্বর্গ এবং অনন্তজীবন প্রদান করবেন, কিন্তু পাপীদের জন্য তিনি অনন্ত ধ্বংস এবং নরকের শাস্তি আনয়ন করবেন৷ যীশু খ্রীষ্টের অসীম ক্ষমতা এবং আশীর্বাদে তাঁর সন্তানদের রাজত্ব অনন্তকাল ধরে চলতে থাকবে৷ এই সময়ে প্রথম পৃথিবীর শেষ হবে এবং এভাবে দ্বিতীয় পৃথিবী অর্থাৎ খ্রীষ্টের রাজ্য আরম্ভ হবে৷
পদ ১৯: “পরে ঈশ্বরের স্বর্গস্থ মন্দিরের দ্বার মুক্ত হইল, তাহাতে তাঁহার মন্দিরের মধ্যে তাঁহার নিয়ম-সিন্দুক দেখা গেল, এবং বিদ্যুৎ ও রব ও মেঘধ্বনি ও ভূমিকম্প ও মহাশিলাবৃষ্টি হইল।”
ঈশ্বর তাঁর সাধুগণকে ও ধার্মিকগণকে তাঁর মধ্যে বাস করার আশীর্বাদ অনুমোদন করেছেন৷ এই সমস্ত জিনিসগুলো ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত হিসাবে যীশু খ্রীষ্টেতে মানবজাতির কাছে পূর্ণতা পেয়েছে৷ ঈশ্বরের রাজ্য ঈশ্বরের ভাববানীর বাক্যের দ্বারা আরম্ভ হয়েছে এবং এই ভাববানীর পূর্ণতা দ্বারা তা সম্পূর্ণ হয়েছে৷
পুনরুত্থান এবং রূপান্তর থেকে শুরু করে যীশু খ্রীষ্টের সাথে মেষশাবকের বিবাহভোজে অংশগ্রহণ এবং রাজা হিসাবে অনন্তকাল রাজত্ব করতে আমাদের ও পরজাতীয়দের নিমিত্ত ঈশ্বর সমানভাবে এই আশীর্বাদ প্রদান করার প্রতিজ্ঞা করেছেন৷ শেষ সময়ে তিনি আমাদের এবং ইস্রায়েলীয়দের একইভাবে পরিত্রাণের ব্যবস্থা করবেন, এই সময় আমাদের উভয়কে সাক্ষ্যমর করাবেন, তারপরে একই পুনরুত্থান এবং রূপান্তর অনুমোদন করবেন এবং একই গৌরবে আবৃত করবেন৷ বাক্য আমাদেরকে বলে যে, যদিও ইস্রায়েলীয় এবং আমরা পরজাতীয়রা দৈহিকভাবে ভিন্ন, তত্সত্ত্বেও, ঈশ্বরের আত্মিকতায় আমরা সকলে সমান৷
অনেক লোক বিশ্বাস করে এবং দাবি করে যে, সাত বছরের মহাক্লেশ পুরোপুরিভাবে আরম্ভ হওয়ার পূর্বেই নুতন জন্ম প্রাপ্তেরা রূপান্তরিত হবে৷ কিন্তু এটা কোনো ব্যাপার নয়৷ বাইবেল অনুসারে মহাক্লেশের সাত বছর সময়ের প্রথম সাড়ে তিন বছর লোকেরা অবিরত সুসমাচার শুনবে ও রক্ষা পেতে থাকবে৷ তখন খ্রীষ্টারীর উত্থান হবে, সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবেন এবং তাদের পুনরুত্থান এবং রূপান্তরের পরে খ্রীষ্টের, মেষশাবকের বিবাহভোজ উপস্থিত হবে এবং সাধুগণকে তাঁর সাথে সহস্র বত্সর রাজত্ব করতে অনুমোদন করা হবে৷
সাধুগণের অবশ্যই তাদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু, পুনরুত্থান এবং রূপান্তরের সময় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে৷ এই সময় জানা ব্যতীত তারা অবিরত তাদের সন্দেহবশতঃ বিপথগামী হবে এবং আত্মিকভাবে মারা পড়বে৷
যাদের শেষ সময়ে ঈশ্বরের দূরদর্শিতা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রয়েছে, তাদের পুনরুত্থান এবং রূপান্তরের প্রত্যাশা রয়েছে, তারা নিষ্ঠার সাথে সুসমাচার প্রচার করবে৷ যারা জানে যে, এই পৃথিবীতে কোনো প্রত্যাশা নেই, তারা অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত হয়ে সেই একই প্রত্যাশা করবে৷ আর ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাসের দ্বারা সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবে৷৷
যে বিশ্বাস অপরিহার্যভাবে সময় উপলব্ধি করতে পারে তা এই যুগে প্রয়োজন৷ ভয়াবহ মারী এবং এই পৃথিবীতে মহাক্লেশের অবতরন এবং খ্রীষ্টারীর উত্থানের সময় আসন্ন৷ এখনই আপনার ঘুম থেকে জেগে উঠার সময়৷ আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, আমাদেরকে মহাক্লেশের সিংহভাগ ক্লেশের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে৷ আর এটা সঠিক যে, আমরা খ্রীষ্টের পুনরাগমন, আমাদের পুনরুত্থান এবং রূপান্তর, এবং খ্রীষ্টের সাথে আমাদের মেষশাবকের বিবাহভোজে অংশগ্রহণে আমরা বিশ্বাস করি৷ আমাদেরকে অবশ্যই এই যুগ সম্পর্কে বিশ্বাস রাখতে হবে, এবং আমাদেরকে অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারের তরীতে প্রবেশ করতে হবে৷
আমি প্রত্যাশা ও প্রার্থনা করি যে, বর্তমান যুগকে জানার দ্বারা এই যুগের উপযোগী বিশ্বাসকে আপনি জরুরীভাবে অর্জন করুন৷