Search

דרשות

বিষয় ১১: আবাস

[20-1] সেই নাগ অগাধ লোকের কূপে বদ্ধ হবে (প্রকাশিত বাক্য ২০:১-১৫)

সেই নাগ অগাধ লোকের কূপে বদ্ধ হবে
< প্রকাশিত বাক্য ২০:১-১৫ >
“পরে আমি স্বর্গ হইতে এক দূতকে নামিয়া আসিতে দেখিলাম, তাঁহার হস্তে অগাধলোকের চাবি এবং বড় এক শৃঙ্খল ছিল। তিনি সেই নাগকে ধরিলেন; এ সেই পুরাতন সর্প, এ দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] ; তিনি তাহাকে সহস্র বৎসর বদ্ধ রাখিলেন, আর তাহাকে অগাধলোকের মধ্যে ফেলিয়া দিয়া সেই স্থানের মুখ বদ্ধ করিয়া মুদ্রাঙ্কিত করিলেন; যেন ঐ সহস্র বৎসর সম্পূর্ণ না হইলে সে জাতিবৃন্দকে আর ভ্রান্ত করিতে না পারে; তৎপরে অল্প কালের নিমিত্ত তাহাকে মুক্ত হইতে হইবে। পরে আমি কয়েকটী সিংহাসন দেখিলাম; সেগুলির উপরে কেহ কেহ বসিলেন, তাঁহাদিগকে বিচার করিবার ভার দত্ত হইল। আর যীশুর সাক্ষ্য ও ঈশ্বরের বাক্যের নিমিত্ত যাহারা কুঠার দ্বারা হত হইয়াছিল, এবং যাহারা সেই পশুকে ও তাহার প্রতিমাকে ভজনা করে নাই, আর আপন আপন ললাটে ও হস্তে তাহার ছাব ধারণ করে নাই, তাহাদের প্রাণও দেখিলাম; তাহারা জীবিত হইয়া সহস্র বৎসর খ্রীষ্টের সহিত রাজত্ব করিল। যে পর্য্যন্ত সেই সহস্র বৎসর সমাপ্ত না হইল, সে পর্য্যন্ত অবশিষ্ট মৃতেরা জীবিত হইল না। ইহা প্রথম পুনরুত্থান। যে কেহ এই প্রথম পুনরুত্থানের অংশী হয়, সে ধন্য ও পবিত্র; তাহাদের উপরে দ্বিতীয় মৃত্যুর কোন কর্ত্তৃত্ব নাই; কিন্তু তাহারা ঈশ্বরের ও খ্রীষ্টের যাজক হইবে, এবং সেই সহস্র বৎসর তাঁহার সঙ্গে রাজত্ব করিবে। সেই সহস্র বৎসর সমাপ্ত হইলে শয়তানকে তাহার কারা হইতে মুক্ত করা যাইবে। তাহাতে সে পৃথিবীর চারি কোণে স্থিত জাতিগণকে, গোগ ও মাগোগকে, ভ্রান্ত করিয়া যুদ্ধে একত্র করিবার জন্য বাহির হইবে; তাহাদের সংখ্যা সমুদ্রের বালুকার তুল্য। তাহারা পৃথিবীর বিস্তার দিয়া আসিয়া পবিত্রগণের শিবির এবং প্রিয় নগরটী ঘেরিল; তখন স্বর্গ হইতে অগ্নি পড়িয়া তাহাদিগকে গ্রাস করিল। আর তাহাদের ভ্রান্তিজনক দিয়াবল অগ্নি ও গন্ধকের হ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল, যেখানে ঐ পশু ও ভাক্ত ভাববাদীও আছে; আর তাহারা যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে দিবারাত্র যন্ত্রণা ভোগ করিবে। পরে আমি এক বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসন ও যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন, তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম; তাঁহার সম্মুখ হইতে পৃথিবী ও আকাশ পলায়ন করিল; তাহাদের নিমিত্ত আর স্থান পাওয়া গেল না। আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান্‌ সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে কয়েকখান পুস্তক খোলা গেল, এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা গেল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে আপন আপন কার্য্যানুসারে বিচারিত হইল। আর সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্য্যানুসারে বিচারিত হইল। পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু। আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।”
 
 

টীকা

 
পদ ১: “পরে আমি স্বর্গ হইতে এক দূতকে নামিয়া আসিতে দেখিলাম, তাঁহার হস্তে অগাধলোকের চাবি এবং বড় এক শৃঙ্খল ছিল।”
যে সমস্ত সাধুগণ সুসমাচারের জন্য পরিশ্রম করছে, তাদের ক্ষতিপুরনার্থে, আমাদের প্রভু ঈশ্বর, তার পুরস্কার স্বরূপ তাদেরকে এক সহস্র বছর রাজত্বের নিমিত্ত উপহার স্বরূপ খ্রীষ্টের রাজ্য দেবেন৷ এরূপ করণার্থে, ঈশ্বর অবশ্যই প্রথমে সেই নাগকে ধরে তাকে এক সহস্র বছরের জন্য অগাধ লোকের কূপে বদ্ধ রাখতে, তাঁর এক দূতকে নির্দেশ দেবেন৷ ঈশ্বর অবশ্যই প্রথমে এই কাজটি করবেন, কেননা সাধুগণের খ্রীষ্টের সহস্রাব্দের রাজ্যে বসবাস করার পূর্বেই সেই নাগ অবশ্যই ধৃত হবে এবং অতল গহ্বরে যেতে বাধ্য হবে৷ এজন্য ঈশ্বর তাঁর দূতকে অগাধ লোকের কূপের চাবি দিলেন, একটি শৃঙ্খল দিলেন, এবং তাকে সেই নাগকে ধরার কাজ শুরু করতে এবং বেঁধে অতল গ্বহবরে বদ্ধ করতে আদেশ দিলেন৷ 
 
পদ ২: “তিনি সেই নাগকে ধরিলেন; এ সেই পুরাতন সর্প, এ দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] ; তিনি তাহাকে সহস্র বৎসর বদ্ধ রাখিলেন”
এ সেই সর্প, যার দ্বারা আদম ও হবা পরীক্ষিত হয়েছিল৷ বাইবেল এই সর্পকে নাগ এবং শয়তান বলে আখ্যা দেয়৷ ঈশ্বর এই নাগকে ধরবেন এবং তাকে বেঁধে সহস্র বছরের জন্য অগাধ লোকের কূপে বদ্ধ করবেন, যেন সাধুগণ শান্তিতে খ্রীষ্টের সাথে সহস্রাব্দের রাজ্যে বাস করতে পারে৷
 
পদ ৩: “আর তাহাকে অগাধলোকের মধ্যে ফেলিয়া দিয়া সেই স্থানের মুখ বদ্ধ করিয়া মুদ্রাঙ্কিত করিলেন; যেন ঐ সহস্র বৎসর সম্পূর্ণ না হইলে সে জাতিবৃন্দকে আর ভ্রান্ত করিতে না পারে; তৎপরে অল্প কালের নিমিত্ত তাহাকে মুক্ত হইতে হইবে।”
এই পৃথিবীতে খ্রীষ্টের রাজ্য স্থাপিত হওয়া এবং প্রভুর সাথে সাধুগণের সহস্র বছর রাজত্ব করার আগেই, ঈশ্বর সেই নাগকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে সহস্র বছরের জন্য অনন্ত গহ্বরে বদ্ধ রাখবেন যেন সে সাধুদেরকে বিভ্রান্ত না করতে পারে৷
এই অংশটি এখানে বলে যে, “তৎপরে অল্প কালের নিমিত্ত তাহাকে মুক্ত হইতে হইবে।” যখন সহস্র বছর সমাপ্ত হবে, তখন ঈশ্বর অল্প সময়ের জন্য সেই নাগকে মুক্ত করে দেবেন, যেন সে পুনরায় সাধুগণকে উত্পীড়ন করতে পারে, তারপর তিনি তাকে চিরতরে নরকে পাঠাবেন, তাকে আর কখনই দেখা যাবে না৷ 
 
পদ ৪: “পরে আমি কয়েকটী সিংহাসন দেখিলাম; সেগুলির উপরে কেহ কেহ বসিলেন, তাঁহাদিগকে বিচার করিবার ভার দত্ত হইল। আর যীশুর সাক্ষ্য ও ঈশ্বরের বাক্যের নিমিত্ত যাহারা কুঠার দ্বারা হত হইয়াছিল, এবং যাহারা সেই পশুকে ও তাহার প্রতিমাকে ভজনা করে নাই, আর আপন আপন ললাটে ও হস্তে তাহার ছাব ধারণ করে নাই, তাহাদের প্রাণও দেখিলাম; তাহারা জীবিত হইয়া সহস্র বৎসর খ্রীষ্টের সহিত রাজত্ব করিল।”
খ্রীষ্টের রাজ্যে নুতন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানেরা বিচারের ভার গ্রহণ করবে৷ সাধুগণ খ্রীষ্টের যাজক হয়ে প্রভুর সাথে সহস্রাব্দের রাজ্যে রাজত্ব করবে৷ এর অধিবাসী হল তারাই যারা যীশু খ্রীষ্টের সাক্ষ্য বহন করতে এবং তাদের বিশ্বাস রক্ষার্থে সাক্ষ্যমর হয়েছে, তারা সেই পশুর ছাবও ধারণ করে নি, বা তার প্রতিমাকে ভজনাও করেনি৷ 
তারাই সেই ব্যক্তি যারা খ্রীষ্টারীর দ্বারা আনয়নকৃত মহাক্লেশের সময় সাক্ষ্যমর হয়েছে, এবং ঈশ্বর তাদের পুনরায় পুনরুত্থিত করবেন এবং তাদেরকে খ্রীষ্টের রাজ্যে এক সহস্র বছর রাজত্ব করতে দেবেন৷ অবশ্যই, যারা প্রথম পুনরুত্থানে অংশগ্রহণ করেছে, তাদেরকেও এই আশীর্বাদ দান করা হবে৷
প্রভু কর্ত্তৃক দুটি পুনরুত্থান দত্ত হয়েছে: প্রথম পুনরুত্থান ও দ্বিতীয় পুনরুত্থান৷ সাধুগণ যারা সহস্রাব্দের রাজ্যে বাস করবেন, তারা সেই যারা অধিকার করবেন এবং প্রথম পুনরুত্থানে অংশগ্রহণ করবেন৷ তারা সকলে, যারা এই প্রথম পুনরুত্থানে অংশ নেবেন, তারা সহস্রাব্দের রাজ্যে, খ্রীষ্টের রাজ্যেও বসবাসের গৌরবে অংশ নেবেন৷ যখন যীশু সাধুগণকে রূপান্তর করতে আসবেন, সেই স্থানে প্রথম পুনরুত্থান হবে (১থিষলনীকীয় ৪:১৫-১৭)৷ কিন্তু দ্বিতীয়টি সহস্রাব্দের রাজ্যের শেষে ঘটবে, কেননা এটা পাপীদের নিমিত্ত প্রস্তুত করা হয়েছে, যা তাদের বিচারার্থে অনন্ত নরকে প্রবেশ করাবে৷
সর্বশক্তিমান প্রভু কর্ত্তৃক সাধুগণকে এক সহস্র বছর রাজত্ব করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে৷ খ্রীষ্টের রাজ্য তাদেরকে দেওয়া হবে, কেননা তারা প্রভুর জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেছিল, এবং এতে তাদের বিশ্বাস রক্ষার্থে তাদের জীবন উত্সর্গ করেছিল৷
 
পদ ৫: “যে পর্য্যন্ত সেই সহস্র বৎসর সমাপ্ত না হইল, সে পর্য্যন্ত অবশিষ্ট মৃতেরা জীবিত হইল না। ইহা প্রথম পুনরুত্থান।”
যারা এখনও প্রভুর কাছ থেকে পাপের ক্ষমা গ্রহণ করে নি, তারা এই পৃথিবীতে পাপীর ন্যায় জীবনযাপন করার পরতাঁর কাছে গেলে, প্রভু সাধুগণকে যে পুনরুত্থান দান করবেন, তাতে পাপীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে না৷ তাই, যেহেতু সাধুগণ সহস্রাব্দের নিমিত্ত খ্রীষ্টের রাজ্যে বাস করবে, তাই তারা প্রথম পুনরুত্থান গ্রহণ করবে না, বরং তার পরিবর্তে তারা দ্বিতীয় পুনরুত্থানে অংশগ্রহণ করবে৷ এর কারণ, সাধুগণ যারা প্রথম পুনরুত্থানের আশীর্বাদ গ্রহণ করেছেন, তারা সুখী, সমৃদ্ধ ও গৌরবের সাথে খ্রীষ্টের রাজ্যে সহস্র বছরের নিমিত্ত রাজত্ব করার ক্ষমতা গ্রহণ করবেন৷
যাহোক, ঈশ্বর পাপীদেরকে “দ্বিতীয় পুনরুত্থান” গ্রহণ করার অনুমতি দেবেন৷ কেন? এর কারণ দ্বিতীয় পুনরুত্থানের সময় ঈশ্বর তাদেরকে মৃত্যু থেকে উঠাবেন, যেন তিনি তাদের পাপের বিচার করতে পারেন৷ ঘটনাটি এমন যে, তারা তাদের পাপের জন্য বিচারিত হতে তারা পুনরায় অবশ্যই মৃত্যু থেকে জেগে উঠবে৷ এই কারণে ধারাবাহিকতা ও ফলাফলের ভিত্তিতে পাপী ও সাধুগণের পুনরুত্থানের পার্থক্য আছে৷ 
যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের কারণে প্রথম পুনরুত্থান করবে, সহস্রাব্দের রাজত্ব সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত, তাদের ব্যতিরেকে আর কাউকে প্রভু সেখানে বসবাস করার অনুমতি দেবেন না৷ তাই, পাপীদের পুনরুত্থানের সহস্র বছর পূর্বে, ধার্মিকদের পুনরুত্থান ঘটবে৷ ধার্মিকদের পুনরুত্থান হবে অনন্তজীবন ও আশির্বাদ গ্রহনের জন্য, আর পাপীদের পুনরুত্থান হবে তাদের পাপের নিমিত্ত অনন্ত শাস্তি ভোগ করার জন্য৷
 
পদ ৬: “যে কেহ এই প্রথম পুনরুত্থানের অংশী হয়, সে ধন্য ও পবিত্র; তাহাদের উপরে দ্বিতীয় মৃত্যুর কোন কর্ত্তৃত্ব নাই; কিন্তু তাহারা ঈশ্বরের ও খ্রীষ্টের যাজক হইবে, এবং সেই সহস্র বৎসর তাঁহার সঙ্গে রাজত্ব করিবে।”
বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, যারা প্রথম পুনরুত্থানের অংশী হয়, তাদের উপর দ্বিতীয় মৃত্যুর কোনো কর্ত্তৃত্ব নেই৷ কাজেই এটা আমাদেরকে বলে, প্রথম পুনরুত্থানে অংশগ্রহণকারীরা আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে, কেননা তারা সহস্রাব্দের রাজ্যে রাজত্ব করবে৷
 
পদ ৭-৮: “সেই সহস্র বৎসর সমাপ্ত হইলে শয়তানকে তাহার কারা হইতে মুক্ত করা যাইবে। তাহাতে সে “পৃথিবীর চারি কোণে স্থিত জাতিগণকে, গোগ ও মাগোগকে”, ভ্রান্ত করিয়া যুদ্ধে একত্র করিবার জন্য বাহির হইবে; তাহাদের সংখ্যা সমুদ্রের বালুকার তুল্য।”
সহস্র বছরের নিমিত্ত অতল গহ্বর থেকে মুক্ত হওয়ার পর, সেই নাগ সাধুগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে, আর তাই ঈশ্বর তাকে গন্ধকের অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন, যেন সে আর কখনই পুনরায় বার হতে না পারে৷ এই বিচারের পরে, সেই নাগকে কেবল নরকেই দেখা যাবে৷
তাহলে কি আমরা বলতে পারি, “এর অর্থ এই যে, যারা নুতন জন্ম লাভ করে নি, তারা এই সহস্রাব্দের রাজ্যের বাইরে থাকবে?” এর উত্তর “হ্যাঁ,” প্রকাশিত বাক্য ২০: ৮ পদে লিখিত আছে যে, এই জগতে খ্রীষ্টের রাজ্যের অনেক লোক রয়েছে৷ আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না, তারা ঈশ্বর হতে নুতনভাবে সৃষ্ট কিনা, অথবা তারা পূর্ব থেকেই পৃথিবীতে বাস করত কিনা৷ কিন্তু আমরা জানি যে, ঈশ্বর তাদেরকে চেনেন এবং সমুদ্রের বালুকারাশির ন্যায় অগণ্য সাধুগণ রাজত্ব করবেন৷
সত্য হল এই যে, সাধুগণ যখন খ্রীষ্টের রাজ্যে বসবাস করবেন, তখন তারা জগতের লোকদেরকে দেখতে পাবে৷ সাধুগণের সেবা করতে তারা বাইরে থাকবে এবং তাদের সংখ্যা সমুদ্রের বালির ন্যায়৷ যদিও তারা পুনরায় সাধুগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে সেই নাগের সাথে একত্রিত হবে, তারা সকলে ঈশ্বর কর্ত্তৃক আনীত অগ্নি দ্বারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে, তাঁর বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসনের সম্মুখে অনন্তকালীন দন্ডে দন্ডিত হবে এবং তারা অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে৷ এর পরেই সহস্রাব্দের রাজ্য আসবে এবং তখন থেকে সাধুগণ নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী, যেখানে তারা যুগপর্যায়ে যুগে যুগে বসবাস করবে, সেখানে ঘুরে বেড়াবে৷
 
পদ ৯: “তাহারা পৃথিবীর বিস্তার দিয়া আসিয়া পবিত্রগণের শিবির এবং প্রিয় নগরটী ঘেরিল; তখন স্বর্গ হইতে অগ্নি পড়িয়া তাহাদিগকে গ্রাস করিল।”
এই নাগ হল শয়তান, সে অবিরত ঈশ্বর এবং তাঁর সাধুগণের বিরোধিতা করছে৷ যদিও সে পৃথিবীস্থ লোকদেরও প্রতারিত করবে এবং সাধুগণকে ভয়-ভীতি দেখাবে, কিন্তু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান, তিনি স্বর্গ থেকে অগ্নি আনয়ন করবেন, এবং তাদের সকলকে গ্রাস করবেন, আর সেই নাগকে অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ করবেন, যেন সে আর, তাঁর এবং তাঁর সাধুগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে৷
 
পদ ১০: “আর তাহাদের ভ্রান্তিজনক দিয়াবল অগ্নি ও গন্ধকের হ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল, যেখানে ঐ পশু ও ভাক্ত ভাববাদীও আছে; আর তাহারা যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে দিবারাত্র যন্ত্রণা ভোগ করিবে।”
সেই নাগকে অগ্নি ও গন্ধকময় হ্রদে নিক্ষেপ করে, ঈশ্বর নিশ্চিত হবেন যে, সে দিবারাত্র যন্ত্রণা ভোগ করছে৷ এটাই ঈশ্বরের ন্যায্য বিচার, যা সেই নাগ এবং তার অনুসারীরা ভোগ করার যোগ্য৷
 
পদ ১১: “পরে আমি এক বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসন ও যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন, তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম; তাঁহার সম্মুখ হইতে পৃথিবী ও আকাশ পলায়ন করিল; তাহাদের নিমিত্ত আর স্থান পাওয়া গেল না।”
সহস্র বছরের নিমিত্ত সাধুগণের পুরস্কার সম্পন্ন করতে, ঈশ্বর যখন তাঁর নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী সৃষ্টি করবেন এবং সেখানে তাদের সঙ্গে যুগপর্যায়ে যুগে যুগে বাস করবেন৷ এটি সম্পন্ন করতে ঈশ্বর তাঁর সমস্ত কার্যই চূড়ান্তভাবে গুছিয়ে আনবেন, এই গুছিয়ে আনার কাজে প্রভু শুভ্র সিংহাসনে উপবিষ্ট হয়ে বিচারক হিসাবে সমস্ত পাপীর বিচার করবেন, স্মরণ পুস্তকে যাদের বিষয়ে লিপিবদ্ধ রয়েছে, তাদের বিচার করবেন, কিন্তু জীবন পুস্তকে যাদের নাম রয়েছে, তাদেরকে বিচারে আনবেন না৷
এই সমস্ত কিছুর শেষে পাপীদের ঈশ্বর বিচার করবেন এবং তারপর থেকেই নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী খুলে দেবেন৷ আমাদের প্রভু প্রথম আকাশ ও প্রথম পৃথিবী অদৃশ্য করবেন এবং দ্বিতীয় আকাশ ও দ্বিতীয় পৃথিবী সৃষ্টি করবেন, এবং সাধুগণকে এই স্বর্গরাজ্যে বাস করার অনুমতি দেবেন৷ “ তাঁর জীবন পুস্তক এবং বিচার পুস্তকে লেখা অনুসারে, ঈশ্বর একদল লোককে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী দান করবেন এবং অন্য একটি দলকে নরকের শাস্তি দান করবেন৷ 
 
পদ ১২: “আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান্‌ সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে কয়েকখান পুস্তক খোলা গেল, এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা গেল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে আপন আপন কার্য্যানুসারে বিচারিত হইল।”
এই সময়ে খ্রীষ্টের বিচারে চূড়ান্ত শাস্তি হবে, অর্থাৎ, পাপীদের জন্য তিনি চূড়ান্তভাবে নরকদন্ড কার্যকর করবেন৷ বিচার পুস্তকে লিখিত তাদের কার্য্যানুসারে তারা বিচারিত হবে৷ এইভাবে পাপীদের দ্বিতীয় মৃত্যু হবে৷ তাদের দ্বিতীয় মৃত্যু হল নরকের শাস্তি, যা বাইবেলে অনন্ত মৃত্যু হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ পাপীরা নরকের শাস্তি থেকে রক্ষা পাবে না৷ সুতরাং এই পৃথিবীতে থাকাকালীন অবস্থায় তাদেরকে অবশ্যই জল ও আত্মার সুসমাচারের বাক্য জানতে ও এতে বিশ্বাস করতে হবে, আর এভাবে জীবন-পুস্তকে তাদের নাম লিখিত হয়েছে এই আশীর্বাদ গ্রহণ করতে হবে৷
 
পদ ১৩: “আর সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্য্যানুসারে বিচারিত হইল।”
“আর সমুদ্র আপনার মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল, এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্ত্তী মৃতগণকে সমর্পণ করিল” সমস্ত পাপীরা তাদের পাপের নিমিত্ত চূড়ান্ত শাস্তিভোগ করবে৷ এই অনুচ্ছেদে মৃত্যু এবং পাতাল সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে, অর্থাৎ, এখানেই শয়তানের অনুসারীদের স্থান, যারা জীবিত অবস্থায় শয়তানের দ্বারা প্রতারিত এবং নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছিল তাদেরকে বন্দি করা হল৷ এই পদ থেকে আমরা জানতে পারি যে, যদিও ঈশ্বর কিছু কালের জন্য তাদের পাপ স্থগিত রেখেছিলেন, কিন্তু এখন তাদের চূড়ান্ত বিচারের সময় উপস্থিত হয়েছে৷
তেমনিভাবে মানুষ যেখানেই বাস করুক না কেন, কার অধীনে তারা জীবনযাপন করছে, সেটাই অনুধাবন করাই মুখ্য বিষয় হওয়া উচিত৷ এই পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় যারা শয়তানের দাস হয়ে কার্য করেছে, চূড়ান্ত বিচারের শাস্তি ভোগ করতে তারা মৃত্যু থেকে উত্থিত হবে, কিন্তু যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের পরিচর্যা করেছে অনন্ত জীবনের পুনরুত্থান ও আশীর্বাদের অধিকারী তারা হবে৷ 
অতএব, এই পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় মানুষকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, জল ও আত্মার সুসমাচার, যার দ্বারা প্রভু মানবজাতির সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ যারা এই পৃথিবীতে শয়তানের দাস হিসাবে কাজ করেছিল, তারা শাস্তির নিমিত্ত পুনরুত্থিত হবে, কিন্তু যারা আমাদের প্রভুর ধার্মিকতার কার্য করেছিল, তারা অনন্তজীবনের আশীর্বাদের নিমিত্ত পুনরুত্থিত হবে৷ সমস্ত পাপীরা তাদের অপরাধের নিমিত্ত বিচারিত হবে এবং নরকে অনন্ত শাস্তি ভোগ করবে৷ এটাই সেই স্থান, যেখানে জীবিত অবস্থায় জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করার মূল কারণ খুঁজে পাই; এই সুসমাচার দ্বারাই প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন৷
 
পদ ১৪: “পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু।”
শয়তানের পক্ষে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে মানবজাতি যে পাপ করেছিল, ঈশ্বরের সম্মুখে মানবজাতির সেই পাপের বিচার সম্পর্কে এটা আমাদেরকে বলে৷ মন্দ ব্যক্তি, যারা মানুষকে শয়তানের দিকে ধাবিত করে তাদের জন্য ঈশ্বরের ধরে রাখা হয়েছে, তাদেরকে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত করা হবে৷ এটাই দ্বিতীয় মৃত্যু, যা ঈশ্বর পাপীদের জন্য আনয়ন করবেন, এবং এটাই অগ্নিহ্রদের শাস্তি৷ এখানে বাইবেলে যে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে তা সাধারণ নয়, বরং এটা অগ্নিময় নরকে অনন্ত কালীন শাস্তিভোগ৷
শাস্ত্রে যে পরিত্রাণের কথা বলা হয়েছে, তা অস্থায়ী নয়, বরং চিরস্থায়ী৷ পৃথিবীতে থাকা অবস্থায় যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করবে, তারা অনন্তকালীন স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে এবং সেখানে যুগ পর্যায়ে যুগে যুগে আনন্দে বাস করবে৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীদের পুরস্কার এবং অবিশ্বাসীদের শাস্তি, এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, আকাশ ও পৃথিবীর ন্যায় এতই দূরত্ব৷
 
পদ ১৫: “আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।””
এখানে “যে কেউ” শব্দটি দ্বারা, এই পদটি আমাদেরকে বলে যে, তাদের নাম জীবন পুস্তকে লিখিত আছে কিনা, এটা নির্ভর করে তারা জল ও আত্মার সুসমাচারের বাক্যে বিশ্বাস করে কিনা, তার উপর, তারা চার্চে গমনকারী হোক বা না হোক বা তাদের চার্চ অর্থডক্স বা হিট্রডক্স সম্প্রদায়ভুক্ত হোক বা না হোক, এই সুসমাচারের মধ্যে দিয়ে তাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করা হয়েছে, তারা তুষারের ন্যায় শুভ্র হয়েছে৷ কাজেই যাদের নাম প্রভুর জীবন-পুস্তকে লিখিত নেই, তারা সকলেই কোনো আপত্তি ছাড়াই অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হবে৷ 
জগতের ধার্মিক লোকেদের মধ্যে একটা প্রবণতা রয়েছে যে, তারা তাদের পাপমোচনের চাইতে, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়৷ কিন্তু যখন কেউ ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়ায় সে যত ভালো খ্রীষ্টিয়ানই হোক না কেন, যদি যীশু দত্ত জল ও আত্মার সুসমাচার তার হৃদয়ে পাওয়া না যায়, তাহলে সে ব্যক্তির নাম জীবন-পুস্তকে লিখিত হবে না, আর সে (নারী/পুরুষ) অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হবে৷
সুতরাং আপনি যখন এই পৃথিবীতে বাস করতে থাকবেন, আপনাকে অবশ্যই আপনার কর্ণ দ্বারা প্রভুর জল ও আত্মার সুসমাচার শুনতে হবে, যা আপনার সমস্ত পাপ মুছে দেবে, এবং আপনাকে অবশ্যই আপনার সমস্ত হৃদয় দিয়ে এতে বিশ্বাস করতে হবে৷ তাহলে আপনি জীবন-পুস্তকে আপনার নাম লেখার গৌরব অর্জন করবেন৷