Search

خطبے

বিষয় ৩: জল ও পবিত্র আত্মার সুসমাচার

[3-13] আপনার প্রকৃত রূপ এবং প্রভুর প্রেম (যোহন ৩:১৬ পদ)

আপনার প্রকৃত রূপ এবং প্রভুর প্রেম
(যোহন ৩:১৬ পদ)
 “কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।”
 
 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনাদের সকলকে উষ্ণ সম্ভাষণ। এই মন্ডলীতে প্রভুর বাক্য প্রচার করতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। আর আমি প্রভুর আরাধনা করার জন্য এখানে উপস্থিত সমস্ত পবিত্রগণের সাথে পাদ্রী এবং তাঁর স্ত্রীকে আমার গভীর ধন্যবাদ জানাই।  
আমি গতবার যখন এখানে এসেছিলাম, তার চেয়ে এবারের এই সমাবেশের লোকসংখ্যা যেভাবেই হোক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমি যেভাবে শান্তিতে ছিলাম, আপনারাও সেভাবেই প্রভুতে শান্তিতে ছিলেন। আসুন আমরা বাক্যের কাছে ফিরে যাই এবং দেখি ঈশ্বর এই মুহূর্তে আমাদের সাথে কি বলতে চান। 
বাইবেল বলে, “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।” এই উদ্বৃতাংশটি যোহন ৩:১৬ পদের, যার সাথে আমরা সকলেই খুবই পরিচিত। এই পদটি বলে যে, ঈশ্বর আমাদেরকে এমন প্রেম করলেন যে, তিনি আপনার এক জাত পুত্রকে আমাদের কাছে প্রেরণ করলেন, যাতে যে কেউ তাঁতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়। যদিও আমরা এই পদটির সাথে খুবই পরিচিত, কিন্তু এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ, কারণ এটি পরিত্রাণের দান এবং আমাদের প্রতি ঈশ্বরের প্রেমকে ব্যাখ্যা করে। অন্য কথায়, এটি আমাদের বলে যে, ঈশ্বর আমাদেরকে পরিত্রাণের আশীর্বাদ দান করেছেন। 
আজকের শাস্ত্রাংশটিতে বলা হয়েছে, “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন।” “জগৎ” বলতে এখানে কি বোঝানো হয়েছে? এখানে “জগৎ” শব্দটির দ্বারা সমগ্র মানবজাতিকে, আপনাকে এবং আমাকে বোঝানো হয়েছে। এর অর্থ হল- ঈশ্বর এই সমগ্র জগতের মানুষকে, প্রত্যেকটি মানুষকে প্রেম করলেন। এখানে আরো বলা হয়েছে যে, ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর এক জাত পুত্রকে দান করলেন, এর অর্থ হল-ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষকে পৃথক পৃথকভাবে জল ও আত্মার সুসমাচার দান করেছেন এবং প্রত্যেককে উদ্ধার করেছেন। এজন্য, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে প্রকৃতরূপে বিশ্বাসের দ্বারা ইতোমধ্যেই তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারা বাইবেলের এই বাক্য শুনতে পায় যে, পিতা ঈশ্বর তাদেরকে তাঁর এক জাত পুত্রকে  দান করেছেন। আর তারা উপলব্ধি করতে পারে যে, ঈশ্বর ইতোমধ্যেই জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। পিতা ঈশ্বর তাঁর এক জাত পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে আমাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে আমাদের কাছে পাঠালেন, এই কথার অর্থ হল- তিনি জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। 
আপনি কি প্রকৃতরূপেই ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানেন এবং এতে বিশ্বাস করেন? আমি বাক্যে বোঝাতে বোঝাতে পারব না যে, মহান ঈশ্বর আমাদের মতো জঘন্য মানব জাতিকে জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ হতে উদ্ধার করেছেন বলে আমি কতটা কৃতজ্ঞ। ঈশ্বর জগৎকে তাঁর এক জাত পুত্রকে দান করলেন- এর অর্থ হল তিনি আমাদেরকে প্রকৃত পরিত্রাণ দান করেছেন। অন্য কথায়, তিনি তাঁর পুত্রকে এই জগতে পাঠালেন, এর অর্থ হল- তিনি জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। আসুন আমরা এই মুহূর্তে আরো একবার বিবেচনা করি যে, ঈশ্বরের এই প্রেম প্রকৃতরূপে কতটা মহান এবং ঋণী। আর আসুন আমরা জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে এর গভীরতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। 
ঈশ্বরের এই প্রেমকে সংক্ষেপে সঠিকভাবে বুঝতে আমাদেরকে প্রথমে নিজেদেরকে অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা কোন ধরণের মানুষ। যতক্ষণ না আমরা আমাদের প্রকৃত রূপটা যথাযথরূপে দেখতে পাচ্ছি এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজেদেরকে পাপী হিসেবে দেখতে পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বাইবেলের এই কথার অর্থ প্রকৃতরূপে বুঝতে পারবো না যে, “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন।” এই আত্মোপলব্ধি না করতে পারলে আমরা বুঝতে পারবো না যে, ঈশ্বরের প্রেম প্রকৃতরূপে কতটা মহৎ। তাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে, যিনি তার পুত্র যীশু খ্রীষ্টকে পাঠালেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করলেন, তাঁর সাক্ষাতে আমরা প্রকৃতরূপে কারা- এটা জানা এবং উপলব্ধি করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সক্রেটিস বলেছেন, “নিজেকে জানুন।” যাইহোক, যদিও অনেকেই অনেক সময় দাবি করেন যে, তারা ঈশ্বরের প্রেমকে জানে, কিন্তু তারা নিজেদের পাপী রূপকে উপলব্ধি করতে পারে না। নিজের দূর্বলতা এবং অযোগ্যতাগুলো জানা এবং একই সাথে ঈশ্বরের প্রেমকে জানা- দু’টি বিষয় একে অপরের সাথে পারস্পরিকভাবে সম্পর্কিত। এটা ঔষধের মতো- একটা ঔষধ যত ভালই হোক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন না যে, এটা আপনার জন্য কতটা প্রয়োজনীয়, ততক্ষণ পর্যন্ত ঔষধ আপনাতে কোন কাজই করতে পারবে না। 
আজকের শাস্ত্রাংশে, প্রভু আমাদেরকে পাপের প্রকৃত ক্ষমা এবং পরিত্রাণ সম্পর্কে বলছেন। একজন রোগীর যেমন একজন চিকিৎসকের খুবই প্রয়োজন, তেমনি আমাদের পাপীদের জন্যও একজন ত্রাণকর্তার খুবই প্রয়োজন ছিল, যিনি আমাদেরকে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করতে পারতেন। এইজন্যই, ঈশ্বর যীশুকে, তাঁর এক জাত পুত্রকে আমাদের দান করলেন। যেহেতু আমরা অনিবার্যভাবে পাপেই জন্মগ্রহণ করেছি এবং পাপে পূর্ণ ছিলাম, তাই আমাদের জল ও আত্মার পরিত্রাণের সুসমাচার- এর প্রয়োজন ছিল, যা আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করত। 
 
 

ঈশ্বরের প্রদত্ত বিশেষ পরিত্রাণ লাভের জন্য একজন মানুষের অবশ্য করণীয় কি

 
আপনাদের কি মনে হয়, আমি আমার উপদেশের শুরুতেই এই বিষয়টি নিয়ে কেন কথা বলছি? এর কারণ হল, অনেক মানুষ এখনো তাদের পাপপূর্ণ অবস্থা পুরোপুরিভাবে উপলব্ধি করতে পারে না। আর এই কারণে তারা প্রভুর মহৎ প্রেমকে উপলব্ধি করতে পারে না। যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা কতটা পাপী, তাহলে এটা আমাদের কাছে প্রভুর প্রেমকে আরো স্পষ্ট করে তুলবে, আর পরিশেষে আমরা এতে বিশ্বাস করতে শুরু করব। যদি আপনি ঈশ্বরের প্রেম অনুভব অথবা এর অভিজ্ঞতা লাভ না করে থাকেন, তাহলে এর প্রমাণ এটাই যে, আপনি এখনো উপলব্ধি করতে পারেননি যে, আপনি প্রকৃতপক্ষে কতটা পাপী। যে কারণে অনেক মানুষ বিশ্বাসে ঈশ্বরের প্রেম গ্রহণ করতে পারে না, তা হল- তারা দেখতে পারে না যে, তারা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কতটা দুরাচারী পাপী। আমরা আমাদের নিজেদের বিষয়ে কত ভাল জানি? ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা কতটা অযোগ্য, এটা উপলব্ধি করা আমাদের জন্য অপরিহার্য। আমাদের মত মানুষদের উপরে তাঁর পরিত্রাণের অনুগ্রহ বর্ষণের জন্য আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষাতে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত ও তাঁর প্রশংসা করা উচিত। এজন্য, যদিও আমরা পাপী ছিলাম এবং পাপের জন্য দন্ড পাওয়া আমাদের ভাগ্যে ছিল, কিন্তু তিনি আমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে ধার্মিক মানুষ তৈরী করেছেন। 
এখন আমাদের দেখা দরকার প্রভু নিজে মানুষ সম্বন্ধে কি বলেছেন। মার্ক ৭:২১-২৩ পদে তিনি বলেছেন, “কেননা ভিতর হইতে, মনুষ্যদের অন্তঃকরণ হইতে, কুচিন্তা বাহির হয়- বেশ্যাগমন, চৌর্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মূর্খতা। এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর হইতে বাহির হয়, এবং মনুষ্যকে অশুচি করে।” এখানে এই অনুচ্ছেদটিতে প্রভু বলছেন মানুষ সব সময় কোন ধরণের পাপ করে থাকে, এবং কিভাবে তারা দুরাচারী পাপীতে পরিণত হয়েছে। এই অনুচ্ছেদের মাধ্যমে আমরা আরো একবার আমাদের প্রকৃত রূপ জানতে পারব, যা আমরা জানতাম না অথবা যা ভোলার চেষ্টা করেছিলাম। প্রভু এখানে মানুষের বারোটি পাপ উল্লেখ করেছেন। মানুষের অন্তঃকরণ থেকে কোন পাপটি সর্বপ্রথম বের হয় বলে তিনি বলেছেন? 
 
 

প্রভু বলেন যে, আমরা সকলেই পাপী

 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, মানুষ হিসেবে আমাদের প্রকৃতি এমন যে, আমরা আমাদের সমগ্র জীবন ধরে আমরা কুচিন্তাকে মনে মনে পোষণ করি। আমরা এটার হাত থেকে বাঁচতে পারি না। মানুষ হিসেবে আমাদের মনের মধ্যে অনবরত বিভিন্ন ধরণের কুচিন্তা খেলা করতে থাকে, এবং আমরা আমাদের মরণ দিন পর্যন্ত এগুলোকে মনে মনে পোষণ করি এবং এগুলোর অনুশীলন করি। এভাবে, আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে অশুচি হই। তথাপি, কিছু মানুষ নিজেদেরকে এই বলে প্রতারিত করে যে, “আমার মধ্যে খুব একটা কুচিন্তা নেই। আমি মনের মধ্যে কুচিন্তা পোষণ করে রাখি না। আমার মধ্যে যে ভাল চিন্তাগুলো আছে, এগুলো একসাথে রাখা খুবই কঠিন, তাহলে আমি কিভাবে এরকম কুচিন্তা করতে পারি?” যাইহোক, এরকম লোকদেরও উপলব্ধি করতে হবে যে, তারা দিনে ২৪ ঘন্টায় যে সমস্ত চিন্তাভাবনা করে, তার অধিকাংশই মন্দ। যদিও অনেক মানুষ নিজেদেরকে প্রতারিত করে এবং নিজেদের পাপ অস্বীকার করে, তথাপি সত্য এটাই যে, প্রত্যেকেই প্রতিনিয়ত পাপ করে।
যীশু খ্রীষ্ট, যিনি সব সময় সত্য বলেন, তিনি স্বয়ং এখানে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন। ঈশ্বর এভাবেই মানুষের বর্ণনা দিয়েছেন। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যীশু খ্রীষ্টই ঈশ্বর, তিনি এই আকাশমন্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করেছেন। একজন খেলনার কারিগর যেমন তার খেলনার ভিতরের সমস্ত কিছুই জানে, সেরকমই প্রভু আমাদের সম্পর্কে যা বলেছেন, তিনি সবকিছু খুঁটিনাটি জেনেই বলেছেন। এভাবে, আমাদের প্রভু আমাদের থেকেও আমাদের বিষয়ে খুব ভাল করে জানেন। তিনি জানেন আমরা কিভাবে শয়তানের প্রলোভনে পড়ে পাপে পতিত হই এবং তার ফলোশ্রুতিতে ঈশ্বরকে ত্যাগ করি। বস্তুত, শয়তান আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে এসে তাদের চিন্তাগুলোকে বিভ্রান্ত করে তাদেরকে প্রতারিত করেছিল। আদিতে আদম এবং হবা শয়তানের প্রলোভনে পড়ে পাপ করেছিল এবং তাদের হৃদয়ে পাপ প্রবেশ করেছিল। আর তারপর থকেই মার্ক ৭ অধ্যায়ে লিখিত এই বারোটি পাপ আসল। আর বাইবেল বলে, আমরা যতদিন বেঁচে থাকবো, আমাদের হৃদয়ে এই পাপগুলো অনবরত খেলতেই থাকবে। 
আপনার বিষয়টি কেমন? আপনি কি নিজেকে একজন ভাল মানুষ মনে করেন, যে নিজের প্রকৃত রুপটি চেনে না? এই রকম মানুষদের পক্ষে ঈশ্বর-প্রদত্ত প্রেমের দান, পাপের ক্ষমা লাভ করা অসম্ভব। বাইবেল বলে, যারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজেদের প্রকৃত রূপটি জানে না, এবং     নিজেদেরকে ধার্মিক বলে মনে করে, তারা ঈশ্বর-দত্ত পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারে না, কিন্তু তারা সেই পাপের মধ্যেই অবস্থান করে। এইজন্য, যদি আপনি যীশুর প্রেমে বিশ্বাস করতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, আপনি প্রকৃতপক্ষে কোন ধরণের পাপী, ঈশ্বর এবং মানুষ উভয়ের সাক্ষাতে আপনি হৃদয়ে কি পরিমাণ কু-চিন্তা পোষণ করেন। অতঃপর জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস স্থাপনের দ্বারা আপনাকে আপনার সমস্ত পাপ হতে ধৌত হতে হবে। 
আপনারা এখনো যারা নিজেদের প্রকৃত রূপকে উপলব্ধি করতে পারছেন না, তারা হয়তো ভাবছেন, “আজকে আমি একজন ভাল মানুষ হিসেবে এই গীর্জায় এসেছি, কিন্তু পাস্টর এমন সব বিষয় প্রচার করছেন যা আমার চিন্তা-ভাবনার সাথে সাংঘর্ষিক। তাঁর উপদেশ আমার চিন্তার সম্পূর্ণ বিপরীত। আমি আশা করেছিলাম, তিনি আজকে কিভাবে ধার্মিকভাবে জীবন-যাপন করতে হয়, সে বিষয়ে প্রচার করবেন। কিন্তু তিনি আমাকে একজন সম্পূর্ণ খারাপ মানুষ হিসেবে দোষারোপ করছেন!” অনুগ্রহ করে শুনুন, যদি আপনাদের মধ্যে এই রকম চিন্তা সামান্যতমও থেকে থাকে, তাহলে আমি আপনাদেরকে বলব, আপনারা নিজেদের বিষয়ে আরো একবার চিন্তা করে দেখুন। আপনাদের চিন্তা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করার দরকার রয়েছে। তাই আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করব, আপনারা নিজেদের প্রকৃত রূপ উপলব্ধি করুন, এবং সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করুন যে, আপনাদের মন ও অন্তঃকরণ সর্বদা মন্দ বিষয়ে চিন্তা করে এবং মন্দ বিষয় অনুশীলন করে। এই রকম মানুষদেরকে ঈশ্বর তাঁর প্রেম, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে বলেছেন। 
 
 

কারা আদমের বংশধর হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিল?

 
প্রত্যেক মানুষই আদমের বংশধর হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। আর প্রত্যেক মানুষই ভাল কাজ করার বিষয়ে চিন্তা করতে সক্ষম, কিন্তু তাদের সহজাত প্রকৃত এই এমন যে, তারা যে ভাল কাজ করার বিষয়ে ইচ্ছা করে, সেটা করে না, কিন্তু সেই মন্দ বিষয়গুলোই করে যা তারা করতে চায় না। আমরা সকলেই পাপের সন্তান। আমরা হচ্ছি পাপের বীজ যা শুধুমাত্র মন্দ বিষয়ই সাধন করে, প্রত্যেক মানুষই এই রকম। একটা কন্টক গাছ যত পরিপাটিভাবেই সুসজ্জিত করা হোক না কেন এবং যত যত্নই নেওয়া হোক না কেন, সেটা কন্টকই উৎপন্ন করবে। মানুষও এই রকম। এভাবে, যেহেতু আমরা প্রত্যেক মানুষই আদি থেকেই পাপে জন্মগ্রহণ করেছি, তাই আমরা নিজেদের চেষ্টায় যত ধার্মিকভাবেই জীবন যাপনের চেষ্টা করি না কেন, আমরা স্বার্থপর এবং আমাদের মধ্যে কুচিন্তারই বসবাস। আর এইজন্য, আমরা প্রতিনিয়ত পাপ করি। 
আমাদের জন্ম থেকেই আমরা সহজাতভাবে পাপের সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। আমাদের সমস্ত চিন্তাই হচ্ছে আত্ম-কেন্দ্রিক, এবং আমরা এই স্বার্থপর চিন্তাগুলোই অনুসরণ করি। যখন আমরা সামান্যতম ভাল কাজ করার চেষ্টা করি, তখন আমরা থমকে যাই এবং নিজেদের লাভ-ক্ষতির হিসাব করি। তাই, অনেক সময় আমরা আমাদের অল্প কিছু ভাল কাজের দ্বারা আমাদের মন্দ কাজগুলো ঢাকার চেষ্টা করি। আর এই ভাল কাজগুলো দ্বারা আমরা নিজেদের ধার্মিকতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করি। 
যিশাইয় ৫৯ অধ্যায়ে প্রভু মানবজাতির মন্দতা সম্পর্কে বলেন, “তাহারা কালসর্পের ডিম ফুটায়, ও মাকড়সার জাল বোনে;….. তাহাদের চরণ দুষ্কর্মের দিকে দৌড়াইয়া যায়।” যেমনটি প্রভু এখানে বলেছেন, আমরা সব সময় হৃদয় মধ্যে কুচিন্তা ধারণ করি এবং মন্দ কাজ করি। জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কে জেনে এতে বিশ্বাস করার আগে আমি নিজেও ঠিক আপনাদের মতো ছিলাম। জল ও আত্মার সুসমাচার জানার আগে আমি সত্যিই কুচিন্তা ধারণ করা এবং মন্দ কাজ করাকে ঘৃণা করতাম। নিজের প্রকৃত রূপ না জেনেই আমি অন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতাম। যখন আমি এটা চিন্তা করি, তখন খুবই লজ্জিত হই। কিন্তু এখন আমি জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেছি, তাই এখন আমার নিজের প্রকৃত রূপে কিছু যায় আসে না। কারণ আমি প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, পবিত্র আত্মা এখন আমার হৃদয়ে এসেছেন, আর তাই এখন আমার হৃদয় অন্যদের পাপের সমস্যা সমাধানের জন্য তীব্র আকাঙ্খা করে।   
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যদি কেউ নিজেকে সঠিকভাবে এবং যত্নসহকারে দেখে, তাহলে সে উপলব্ধি করবে যে, সে সত্যিই পাপী মানুষ এবং সব সময় পাপ করে। মানুষের মন সহজাতভাবেই মন্দ, আর প্রত্যেক মানুষই আত্মকেন্দ্রিক অহমের জীবন যাপন করে। প্রকৃতিগতভাবে, সমস্ত মানুষই পাপী। তারা শুধুমাত্র নিজেদের আরাম-আয়েশ এবং নিজেদের স্বার্থ নিয়েই চিন্তা করে। জল ও আত্মার সুসমাচার জানার আগে আমরা এইরকম ছিলাম। এখন আমরা যীশুর সাক্ষাৎ লাভ করেছি যিনি আমাদের ধার্মিকতা গঠণ করেন এবং ফলোশ্রুতিতে এখন আমরা আমরা কিছুটা হলেও আমাদের জীবনে ঈশ্বরের ধার্মিকতা অনুশীলন করছি। যদি আমরা প্রকৃতভাবেই জানতাম যে, আমরা কোন সমস্ত পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি, তাহলে আমরা জানতাম যে, ঈশ্বর ও মানুষ উভয়ের সাক্ষাতে আমরা পাপী। আর আমরা দোষীকৃত হতাম। এই রকম লোকেরা পাপের ছায়ায় নিজেদের প্রকৃত রূপ লুকিয়ে তাদের সারাটি জীবন কাটিয়ে দেয়। আর এইভাবে, যদি প্রত্যেকে সহজাত মানবীয় প্রকৃতি অনুসারে সব সময় কুচিন্তা করত এবং মন্দ কাজ করত, তাহলে এই পৃথিবী অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। 
এইজন্যই মানুষদের নৈতিকতা শিক্ষা করার প্রয়োজন হয়েছে। মন্দ মানুষে ভরা পৃথিবীতে এটার প্রয়োজন ছিল। বলা হয়ে থাকে যে, অশিক্ষিত মানুষ পশুর চেয়ে কোন অংশেই উত্তম নয়। যাইহোক, শিক্ষিত মানুষেরা অশিক্ষিত মানুষদের থেকেও বেশি পাপ কাজ করে থাকে, কারণ প্রত্যেকেই মৌলিকভাবে পাপে জন্ম গ্রহণ করেছে। এইজন্য, সকলেই পাপী। এইজন্য, সমস্ত মানুষদের তাদের পাপের ক্ষমা লাভের জন্য এবং পবিত্র আত্মার দান প্রাপ্তির জন্য ঈশ্বর প্রদত্ত জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে- যা তাদেরকে একটা সত্যিকারের ধার্মিক জীবন যাপন করতে সক্ষম করে। আর এর জন্য ঈশ্বরের মন্ডলী অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
কিছু সময় আমরা এমন কিছু মানুষের সান্নিধ্যে আসি যারা চায় পারমাণবিক যুদ্ধ সংঘটিত হোক। তারা এটা চায়, কারণ তাদের কোন কিছুই ঠিকমতো হচ্ছে না। যেহেতু তারা তাদের এই দুর্বিষহ জীবন দ্বারা সুখী নয়, তাই তারা মনে করে যে সকলেরই অসুখী হওয়া উচিৎ। তাই তারা ইচ্ছা করে যে, একটা পারমাণবিক যুদ্ধ সংঘটিত হবে এবং ধনী ও সমৃদ্ধিশালী লোকদের ধ্বংস করে দেবে, আর তারা মনে করে যে এটা তাদেরকে কোনভাবে সন্তুষ্টি এনে দেবে। কিন্তু যখন তারা নিজেরাই এই লোকদের মতো সমৃদ্ধিশালী হবে, যাদেরকে তারা ঘৃণা করে, তখন তাদের মনের অবস্থার কেমন পরিবর্তন হবে? তারা নিঃসন্দেহে ভাববে যে একটা পারমাণবিক যুদ্ধ বিপর্যয় সাধন ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনবে না। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনাদের উপলব্ধি করতে হবে যে, এই লোকেরা হচ্ছে আপনারা নিজেরাই। এই পৃথিবীতে যারা অন্যদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তাদের ঈশ্বরকে দোষ দেওয়া উচিত নয়। এর কারণ হল- আমাদের প্রত্যেকেরই অন্যদের মতো একটা স্বার্থপর হৃদয় আছে। আমরা সবাই অসহায় ছিলাম এবং আমরা সবাই আত্মভিমানী ও মন্দ-হৃদয়ের মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। 
আমি উপলব্ধি করছি, আপনারা হয়তো কেউ কেউ ভাবছেন যে, আমি খুব খোলামেলাভাবে ও অকপটে কথা বলছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আপনাদের জন্য এটাই ভাল হবে যে, আমি খোলামেলা ও স্পষ্টবাদী হই। আজকের এই পৃথিবীতে অনেক প্রচারকই ছলনাময়ী প্রচার করছে, কিন্তু তাদেরকে বোঝা খুবই কঠিন। তারা তাদের উপদেশে বলে যে, “আসুন, আমরা সবাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে পবিত্র জীবন যাপন করি। আমরা সবাই ধার্মিকভাবে চলি।” যাইহোক, আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমরা যারা পাপে জন্মগ্রহণ করেছি, আমাদের কারো পক্ষে কি ঈশ্বরের সাক্ষাতে সত্যিকারের পবিত্র জীবন যাপন করা সম্ভব? আমরা কি প্রকৃতপক্ষেই ধার্মিকভাবে জীবন যাপন করতে পারি? যদি আমাদের চিন্তা-ভাবনা পবিত্রও হয়, আমরা কি সেগুলো বাস্তবে আমাদের জীবনে প্রয়োগ করতে পারি? না, বিষয়টি এমন নয়। আমরা পাপময় চিন্তায় পরিপূর্ণ, আর তাই, কেউ কিভাবে আমাদেরকে ধার্মিকভাবে জীবন যাপনের উপদেশ দিতে পারে? এইরকম উপদেশগুলো আপনার আত্মায় বিভ্রান্তি ও শূন্যতা ছাড়া আর কিছুই বয়ে নিয়ে আসতে পারে না। 
এই বিষয়টি নিয়ে আরো একবার ভাবুন। আপনার হৃদয় যে কারণে আরো ক্লিষ্ট ও অতৃপ্ত হচ্ছে তা হল- আপনি সদ্গুণ অনুশীলন করতে পারেন না। অনেক ধর্মীয় নেতা এবং প্রচারকরা ভ্রান্ত উপদেশ দেয় শুধুমাত্র পাপীলোকদের হৃদয়কে শান্ত করতে এবং তাদেরকে প্রতারিত করতে। তাই তারা তাদের সমাবেশে চিৎকার করে বলে, “আসুন আমরা ধার্মিকভাবে জীবন যাপন করি!” আর তখন সমাবেশে উপস্থিত কিছু মানুষ এই উপদেশ শুনে নিজেদের প্রকৃত রূপ না জেনেই তখন থেকে পবিত্র জীবন যাপনের চেষ্টা করে। তারা চিন্তা করে, “ঠিক আছে, আমি স্থির করেছি যে, এরপর থেকে আমি ধার্মিকভাবে জীবন যাপন করব। এই পর্যন্ত আমি পারি নাই, কিন্তু এখন থেকে আমি নিশ্চিতভাবে পবিত্রভাবে জীবন যাপন করব।” তাহলে, তখন কি ঘটবে? প্রচারকরা এবং সমাবেশের লোকজন উভয়েই নিজেদেরকে প্রতারিত করবে, কারণ তারা ইতোমধ্যেই নিজেরাই নিজেদেরকে প্রতারিত করেছে।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, নিজের পাপ কাজের জন্য অন্যকে দোষারোপ করবেন না। যাইহোক, কিছু মানুষ নিজেদের প্রকৃত রূপ না জেনেই তাদের পাপ কাজের জন্য অন্যদের দোষারোপ করে। তারা চিন্তা করে, “আমার ঈশ্বরে বিশ্বাসের কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। শুধু কুচিন্তা থাকাটাই আমার সহজাত প্রকৃতি, তাই ঈশ্বর কেন আমাকে ধার্মিকভাবে জীবন যাপন করতে বলেন? তাই, আমি যদিও যীশুতে বিশ্বাস করি, এটা প্রকৃতপক্ষে আমার স্বভাবের সাথে যায় না, তাই আমি আর বিশ্বাস করতে পারব না।” এভাবে, তারা তাদের বিশ্বাসের জীবন ত্যাগ করে। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যীশুকে নিজেদের ত্রাণকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করার জন্য আপনাদের নিজস্চ ধার্মিকতার প্রয়োজন নেই। এখানে যারা যারা উপস্থিত হয়েছেন, আপনারা সবাই ভাল কাজ করেন। কিন্তু ভাল কাজ করার যোগ্যতার জন্য আপনারা এখানে বসেন নাই। শুধুমাত্র নিজেদের পাপ থেকে মুক্তি লাভের জন্যই আপনারা ঈশ্বরের মন্ডলীতে এসেছেন এবং এখানে বসে জল ও আত্মার সুসমাচার শ্রবণ করছেন। এইজন্যই ঈশ্বর অবিরতভাবে আমাদের কাছে জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কে বলেন। তিনি এটা করেন, কারণ তিনি জানেন আমরা প্রকৃতপক্ষে কোন ধরণের পাপী এবং আমরা কোন ধরণের জীবন যাপন করছি। পাপীদের জন্য ঈশ্বরের করুণা আছে বলে এবং আমাদেরকে প্রেম করেন বিধায় ঈশ্বর জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ হতে একেবারে চিরকালের জন্য উদ্ধার করেছেন। আর তিনি আমাদেরকে এই পরিত্রাণ গ্রহণ করতে বলছেন। 
অন্যকথায়, যেহেতু আমরা সহজাতভাবেই ধার্মিক জীবন যাপন করতে অক্ষম, তাই ঈশ্বর আমাদেরকে নিজের কাছে এনেছেন এবং জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ হতে একবারে চিরকালের জন্য উদ্ধার করেছেন। যাইহোক, যারা নিজেদের প্রকৃত রূপ জানে না এবং নিজেদের পাপ ঢেকে রাখতে চায়, তারা ঈশ্বর প্রদত্ত প্রকৃত পরিত্রাণের অনুগ্রহ লাভ করতে পারে না। উল্টো তারা ঈশ্বরের প্রেমের বিপক্ষে যায়। আর তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ঔদ্ধত্যের পাপ করতেই থাকে। আমি নিশ্চিত, আমরা কেউ এমন মানুষ হতে চাই না। আমরা সব সময় মনে রাখব যে, আমরা এইরকম পাপ কাজ করি কারণ আমরা নিজেরা সব সময় পাপী। 
 
 
ঈশ্বর বলেন, মনুষ্যদের অন্তঃকরণ থেকে চৌর্য বাহির হয়
 
প্রভু আর কি বলেন যে, আমাদের অন্তঃকরণ থেকে আর কি কি বাহির হয়? তিনি বলেন, মনুষ্যদের অন্তঃকরণ থেকে “চৌর্য” বাহির হয়। প্রত্যেকের অন্তঃকরণ এত এত কামুক অভিলাষে পরিপূর্ণ যে, এটা সব সময় অশ্লীল কাজ করতে চায়। যদি আমাদের অশ্লীল কল্পনা আয়নাতে প্রতিফলিত হতো, তাহলে আমরা এতো লজ্জিত হতাম যে, আমরা হয়তো আমাদের মাথা আর উঁচু করতে পারতাম না। যদিও আমরা হয়তো শারীরিকভাবে যৌনতার পাপাত্মক কাজ করি না, কিন্তু যেহেতু আপনি এবং আমি সেগুলো আমাদের মনে কল্পনা করি, তাই আমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মৌলিকভাবেই পাপী। যখন পুরুষেরা রাস্তায় কোন সুন্দরী নারী দেখে, তখন তারা অনেক ধরণের কামুক চিন্তা শুরু করে। পুরুষ ও নারী উভয়েই যখন আকর্ষণীয় কাউকে দেখে, তখন তারা শুধু পাস কেটে যেতে পারে না, কিন্তু তাদের নিজেদের চোখ দিয়ে মেপে দেখতে চায়। অন্যরা কি ভাববে, এই ভেবে যখন তারা তাদের এই সমস্ত অশ্লীল কল্পনাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে না, তখন তারা একা এক তাদের ঘরে গিয়ে, যখন তারা একা তখন সমস্ত ধরণের কামুক কল্পনা করতে থাকে। ইন্টারনেটে যেভাবে যৌনতাপূর্ণ ছবির ছড়াছড়ি, তা দেখে আমরা তাৎক্ষনণকভাবে উপলব্ধি করতে পারি যে, আমরা মানবজাতি কোন ধরণের কামুক জাতি।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমরা এমন যে, আমাদের সমগ্র জীবনই আমরা অশ্লীল চিন্তা করতে করতে এবং কামুক কাজ করতে করতে কাটাই। আমি কি আরো নির্দিষ্ট করে বলব? যখন আমরা টিভিতে যৌনতার উপর ভিত্তি করে নির্মিত কোন সিনেমা দেখি, তখন আমাদের কি ঘটে? যদিও আমরা রাগে আমাদের হাত দিয়ে আমাদের চোখ ঢাকি, কিন্তু কোন একটা জিনিস আমাদেরকে প্ররোচনা দেয় আঙ্গুলের মধ্য দিয়ে সেগুলো দেখার জন্য। কিছু নারী ছোট ছোট কাপড় পরিধান করে, এবং তাদের শরীরকে কামুকতার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। অবশ্যই নারীরা একটা সীমিত মাত্রা পর্যন্ত তাদের সুন্দর শরীরের প্রদর্শন করতে পারে, কিন্তু যখন আমি টিভিতে চিত্তবিনোদনকারীদেরকে এমনকি তাদের নিতম্বের পার্শ্বদেশ প্রদর্শন করতে দেখি, তখন আমার মনে হয় যে, বাস্তবিকই জগতের শেষ সময় এসে পড়েছে। কিন্তু আমরা শুধুমাত্র তাদেরকেই দোষারোপ করতে পারি না। কারণ আমরাই তারকাদের এই কামুক দৃশ্যগুলো উপভোগ করি। ঠিক যেমনটি প্রভু বলেছেন, “মনুষ্যদের অন্তঃকরণ হইতে কুচিন্তা বাহির হয়-বেশ্যাগমন, চৌর্য,”- বাস্তবিকই আমরা যৌনতার পাপে পরিপূর্ণ। আমরা দেখতে পাই আমাদের প্রভু কেন বিস্তারিতভাবে এই সমস্ত বিষয়ে বলেছেন।
নতুন নিয়মে প্রায়শই ফরীশীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ফরীশীরা এতটাই ব্যবস্থানির্ভর ছিল যে, যখন খাওয়ার সময় হতো তখন তারা খাওয়ার আগে তাদের হাত খুব ভাল করে ধুয়ে নিত। একদিন এক ফরীশী যীশুকে এবং তাঁর শিষ্যদেরকে এক ভোজের নিমন্ত্রণ দিলেন। শিষ্যরা তাদের হাত না ধুয়েই খাওয়া শুরু করলেন। তাদের এই কান্ড দেখে ফরীশী খুবই ভয়ঙ্কর হয়ে গেলেন এবং যীশুর শিষ্যদের দেখে মনে মনে ভাবতে লাগলেন, “এই লোকেরা খুবই অজ্ঞ এবং ময়লা। এদের সঙ্গে আমাদের কোন উঠা-বসা থাকতে পারে না!” তাই, শিষ্যদের প্রতি এই নিদারুণ ঘৃণা দেখে যীশু সেই ফরীশীকে বললেন, “ভিতর থেকে, মানুষের অন্তঃকরণ থেকে, কুচিন্তা বাহির হয়- বেশ্যাগমন, চৌর্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মূর্খতা। এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর থেকে বাহির হয়, এবং মানুষকে অশুচি করে। সহজাতভাবে প্রত্যেক মানুষের অন্তঃকরণ এই সমস্ত জিনিস দিয়ে পরিপূর্ণ, এবং মানুষ তাদের সারাটি জীবন ধরে এই সমস্ত পাপ করে।”
ফরীশীরা শুধুমাত্র যীশুর শিষ্যদের বাহ্যিক দিকটা দেখল এবং তাদের নোংরামির জন্য তাদেরকে ঘৃণা করতে লাগল। কিন্তু যীশু প্রত্যেকের মধ্যে পাপের অস্তিত্ব দেখলেন, এবং বললেন- এগুলোই হলো আসল ময়লা। তাহলে কার কথা সত্য এবং সঠিক? যীশু যা বলেছিলেন তাই সত্য এবং সঠিক। প্রভু বললেন, মানুষদের অন্তঃকরণ থেকে যা বাহির হয়, তাই তাদেরকে অশুচি করে। এবং তিনি আরো বললেন যে, তিনি পাপে কলুষিত এই সমস্ত মানুষদেরকে উদ্ধারের জন্যই এই পৃথিবীতে এসেছেন। আমরা আমাদের সমগ্র জীবন ধরে লম্পটতা এবং মন্দ চিন্তায় জর্জরিত থাকি, কিন্তু জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদেরকে এই সমস্ত পাপ থেকে মুক্তির জন্য প্রভু এই জগতে আসলেন। 
তাই, আজকের এই শাস্ত্রাংশটিতে বিশ্বাস স্থাপন করাটা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণঃ “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন।” সবশেষে, প্রভু যখন এই জগতে আসলেন, তিনি জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য মোচন করলেন। যখন আমি এই সুসমাচার সম্পর্কে চিন্তা করি এবং যখন আমি প্রভুর প্রেম সম্পর্কে চিন্তা করি, তখন প্রভুর অনুগ্রহের জন্য এতই কৃতজ্ঞ হই যে, আমার হৃদয় প্রভুর এই অবর্ণনীয় আশীর্বাদের জন্য খুশিতে টগবগ করে ওঠে। আমি নিশ্চিত যে, আপনারা যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা পূণর্জন্ম লাভ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই। 
 
 
প্রভু বলেন যে, আমরা চোর
 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, তৃতীয় যে জিনিসটি মানুষের অন্তঃকরণ থেকে বের হয় বলে প্রভু বলেছেন, তা হল- চুরি করার ইচ্ছা। এই পৃথিবীতে শুধু ভয়ঙ্কর ডাকাতরাই ছিনতাই এবং চুরি করে না। সাধারণ লোক এবং শিক্ষিত লোকেরাও চুরি করে এবং তাদের এই চুরির ধন নিয়ে জীবন যাপন করে। কারো কাছ থেকে ডাকাতি করা এবং চুরি করা প্রকৃতপক্ষে খুবই ভয়ানক একটা অপরাধ। যাইহোক, এর চেয়েও আরো ভয়ানক অপরাধ হল- নিরবে এবং আইনগতভাবে অন্যদের কাছে থেকে চুরি করা অর্থাৎ অন্যদের পরোক্ষ সম্মতি নিয়ে এবং আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করে চুরি করা। খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলবেন না যে, “আমি আমার জীবনে কখনোই চুরি করিনি।” আপনি বরং আপনার অন্তঃকরণ আরো সতর্কভাবে দেখেন। আপনি কি কখনো অন্যদের জিনিস নিতে চাননি? আপনি কি কখনোই অন্যদের জিনিস চুরি করতে চাননি, যা ধরা পড়ার ভয়ে চুরি করেননি? আমি নিশ্চিত, আমাদের জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে আমরা এই রকমটি করেছি। যদি এটি সত্য হয়, তাহলে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে প্রকৃতরূপে কেমন? আমরা চোর! তাই প্রভু বলেন, আমরা সহজাতভাবেই চোর।
 
 
প্রভু বলেন, প্রত্যেকেই নরঘাতক
 
প্রভু আরো বলেন যে, আমরা মানুষরা নরঘাতক। বস্তুতঃ এমন একটা দিন আমরা দেখি না, যেদিন আমরা খবরে নরহত্যার খবর দেখতে পাই না। সন্তানরা তাদের নিজেদের পিতা-মাতাকে হত্যা করছে, আর পিতা-মাতারাও তাদের নিজেদের সন্তানদের হত্যা করছে। একজন স্বামী তার স্ত্রীকে হত্যা করছে, তার বন্ধুদের হত্যা করছে এবং সবশেষে নিজেকেও হত্যা করছে। যখন আপনারা কারো সাথে মারামারি করেন এবং রাগান্বিত হয়ে যান, আমি নিশ্চিত তখন আপনারা সবাই এমনটা চিন্তা করেছেন, “আমি যদি এই লোকটাকে মেরে ফেলতে পারতাম?” নরহত্যা বলতে কাউকে বাস্তবে হত্যা করাই বোঝায় না। কাউকে হত্যা করার ইচ্ছাটাও হল নরহত্যার সমান। উদাহরণস্বরূপ, যখন আমাদের পিতা-মাতার সাথে আমাদের বিচ্ছেদ হয়, তখন আমরা হয়তো চিন্তা করি, “আমার পিতা-মাতা যেন তাড়াতাড়ি মারা যায়। কেন তারা অন্য কোথাও যায় না এবং নিরবে মরে না?” এই কথাগুলো আসলেই খুব ভয়ানক, কিন্তু এটাই বাস্তবতা। যেকোন সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এই একই কথা খাটে। সেটা স্বামী-স্ত্রীই মধ্যেই হোক, পিতা-মাতা এবং সন্তানদের মধ্যেই হোক, অথবা বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যেই হোক, কোন না কোন সময়ে আমরা সবাই অন্যকে হত্যার ইচ্ছা পোষণ করেছি, যদিও আমরা বাস্তবে কেউ কাউকে হত্যা করিনি।
যদিও আমরা এই সমস্ত চিন্তা-ভাবনা বাস্তবে প্রকাশ করি না, কিন্তু প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই কোন না কোন সময় নরহত্যার ইচ্ছা জেগেছিল। আমাদের হৃদয়ে কি আছে, তা যদি আমাদেরকে স্বীকার করতে হতো এবং বলতে হতো যে, “কিছুক্ষণ আগেই আমি তোমাকে হত্যার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু এখন আমি দেখছি আমার সেই চিন্তা ভুল ছিল। আমি সত্যিই দুঃখিত,” তাহলে আমরা এই জগতের কাউকেই বিশ্বাস করতে পারতাম না। এইভাবে, আমরা একে অন্যের থেকে আমাদের পাপ গোপন করে থাকি। এইজন্যই, শুধুমাত্র আপনি নিজেই জানেন আপনার প্রকৃত রূপ কি, এবং শুধুমাত্র এইজন্যই আপনাকে অবশ্যই নিজেকেই উপলব্ধি এবং স্বীকার করতে হবে যে, আপনি কেমন।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, প্রভু যেমনটি বলেছেন, আমাদের হৃদয়ে প্রকৃতপক্ষে চৌর্য, ব্যভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল এবং অভিমান বাস করে। এই কুচিন্তাগুলো আমাদের সারাটি জীবনে মাত্র একবারের জন্য উদিত হয় না। কিন্তু যেহেতু আমরা পাপেই জন্মগ্রহণ করেছিলাম, তাই এই জিনিসগুলো আমাদের জন্ম থেকে মরণ দিন পর্যন্ত অনবরত আমাদের সাথেই থাকে এবং ক্ষণে ক্ষণে আমাদের মধ্যে জেগে উঠে। যতদিন না আমাদের জীবনের সমাপ্তি ঘটছে, যতদিন না আমাদের শরীর থেকে নিঃশ্বাস বের হয়ে যাচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই বিষয়গুলো একদম সত্য। এমনকি আমরা যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে পাপের ক্ষমা লাভ করেছি, আমাদের ক্ষেত্রেও বিষয়টা সত্য। এক মাস আগে আপনাদের সাথে আমার দেখা হয়েছিল, এবং আমি এই বিষয়টি অনুমান করতে পারছি যে, এই এক মাস আপনাদেরকে এই মন্দ অভিলাষগুলোর জন্য কত ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের যন্ত্রণা দেখি নাই, তথাপি আমি এটা উপলব্ধি করতে পারছি। আমরা সবাই নরঘাতক, ব্যভিচারি, লোভী এবং লম্পট। এখানে ব্যভিচার এবং লম্পটতা  শব্দ দু’টি একই রকম মনে হলেও আদতে তা নয়। “লম্পটতা” বলতে কথায়, চিন্তায় এবং কাজ- সবকিছুতে কপটতা বোঝায়। অন্যদিকে “ব্যভিচার” বলতে লম্পট চিন্তা থাকাকে বোঝায়, কিন্তু অভিনয় করা হয় যে- লম্পটতা নেই।  
তাহলে, এখন কি আপনারা স্বীকার করছেন যে, যীশু আপনাদের যেমনটি বলেছেন, আপনারা সেই রকমের পাপী। আমার মধ্যে এই সমস্ত মন্দ জিনিস আছে। যখন আমি নিজের দিকে ফিরে তাকাই, আমি দেখি- জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করার আগে আমার হৃদয় মধ্যে এই সমস্ত মন্দ অভিলাষ ছিল। তাই “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন,”-এই পদটি দ্বারা আমি আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়েছি, এবং আমি এইজন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। স্বভাবগতভাবে, আমি পাপের একটা স্তুপ ছাড়া আর কিছুই ছিলাম না। কিন্তু পিতা ঈশ্বর তাঁর এক জাত পুত্রকে এই জগতের জন্য প্রেরণ করে জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমার কৃত সমস্ত পাপ মোচন করলেন। তাহলে, আমি কতটা ভাগ্যবান? আমি এটি যেভাবেই দেখি না কেন, আমি শুধুমাত্র প্রভুকে ধন্যবাদই দিতে পারি, যিনি জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে এসেছিলেন। 
প্রভু যদি মানুষের বেশ ধরে এই জগতে না আসতেন, তাহলে কি হতো? আমরা যারা শুধুমাত্র কুচিন্তা করি, আমাদেরকে যদি তিনি জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ হতে একেবারে চিরকালের জন্য মুক্ত না করতেন, তাহলে কি হতো? তাহলে আমরা লম্পটই থেকে যেতাম এবং ঈশ্বরের নিন্দাকারী হতাম। যীশুকে তো বিশ্বাস করতামই না, বরং আমরা আমাদের মৃত্যুদিন পর্যন্ত শুধু পাপপূর্ণ কাজই করে যেতাম। আমরা অন্ধভাবে অন্যদের মতামতকে দোষারোপ করতাম, তাদেরকে বাধাগ্রস্থ করতাম, এবং উদ্ধত ও মূর্খ হতাম। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনারা কি জানেন, এখানে মূর্খতা বলতে কি বোঝানো হয়েছে? এখানে মূর্খতা বলতে- এমন ভাবকে বোঝায় যে, সে বোকা বনে গেছে। প্রভু যদি আমাদের পরিত্রাণ না করতেন, তাহলে আমরা আমাদের মৃত্যুদিন পর্যন্ত এই রকম মন্দ কাজ করে যেতাম এবং আমাদের কোন ভাল ফল হতো না। শুধুমাত্র একবার বা দু’বার নয়, কিন্তু আমাদের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমরা এই সমস্ত বোকামীপূর্ণ কাজ করেই যেতাম- উদ্ধত চিন্তা করতাম, ঈশ্বরের নিন্দা করতাম, কুদৃষ্টি নিয়ে ঈশ্বরের বিপক্ষে দাঁড়াতাম, লম্পটপূর্ণ কাজ করতাম, লোভ করতাম, ব্যভিচার করতাম, নরহত্যা করতাম, চুরি করতাম এবং হৃদয়ে অশ্লীল চিন্তা ধারণ করতাম। স্বভাবগতভাবে আপনি এবং আমি, যারা এখানে বসে আছি এবং জগতের সমস্ত মানুষই এই রকম ছিলাম। 
 
 

যাইহোক, ঈশ্বর আমাদেরকে সমস্ত পাপ হতে মুক্ত করেছেন, কারণ তিনি আমাদেরকে প্রেম করেছেন।

 
যোহন ৩:১৬ পদে লেখা আছে, “কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন।” এখানে ‘জগৎ’ বলতে আপনাকে এবং আমাকে, সমস্ত মানব জাতিকে বোঝানো হয়েছে। অন্যকথায়, ঈশ্বর পাপীদের এই বংশধরকে প্রেম করলেন, মূলগতভাবেই যাদের সমস্ত চিন্তা শুধু মন্দ এবং যারা সব সময় পাপ করে। পাপীদের এই বংশধরদের গতি ছিল নরক, আস্তাকুড়ে ফেলে পুড়ে ফেলানোই যাদের পাওনা ছিল। কিন্তু ঈশ্বর আমাদেরকে প্রেম করলেন, তাঁর এক জাত পুত্রকে দান করলেন, এবং জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ হতে মুক্ত করলেন। যদিও আমরা সম্পূর্ণ মূল্যহীন ছিলাম, কিন্তু ঈশ্বর আমাদেরকে এত প্রেম করলেন যে, তিনি তাঁর এক জাত পুত্রের দ্বারা আমাদেরকে সম্পূর্ণ ধার্মিক মানুষ বানালেন।
এই সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে আপনারা প্রভু-দত্ত জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কে শুনবেন। আর যদি আপনারা সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি এবং হৃদয়োঙ্গম করতে পারেন যে, প্রভু কিভাবে এই রকম মন্দ মানব জাতিকে উদ্ধার করলেন, কিভাবে জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করলেন, তাহলে আপনারা এই সময়ে ঈশ্বরের প্রশংসা না করে থাকতে পারবেন না। এইভাবে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা একবার পাপের ক্ষমা লাভ করলে আপনারা আরো গভীরভাবে ঈশ্বরের প্রেম এবং তাঁর অনুগ্রহ বুঝতে পারবেন, এবং সব সময় আপনাদের হৃদয় দিয়ে তাঁকে ধন্যবাদ দিতে থাকবেন। যত সময় যাবে, আপনারা ততই তাঁকে ধন্যবাদ দিবেন। অবশ্যই, প্রথমে আপনারা বলতে পারেন, “আমি এই রকম পাপী নই। আমি এই রকম পাপ করি না।” কিন্তু উপযুক্ত সময়ে আপনারা প্রভুর বাক্য বুঝতে পারবেন। এবং প্রভু আপনাদের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে যেমনটি বলেছেন যে, আপনারা প্রকৃতিগতভাবেই মন্দ- প্রভুর এই বাক্য উপলব্ধি করতে পারবেন। আর আপনারা উপলব্ধি করতে পারবেন যে, ঈশ্বর জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আপনাদেরকে এই রকম মন্দ পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যারা পাপ করেনি, ঈশ্বর তাদেরকে মুক্ত করেন নাই। কিন্তু যারা তাদের মরণ দিন পর্যন্ত পাপ করে, তারাই ঈশ্বরের সাক্ষাতে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা মুক্তিপ্রাপ্ত হয়েছে। কিছু মানুষ নিজেদেরকে ভাল মানুষ মনে করে, কিন্তু বাস্তবতা এই যে, এই পৃথিবীতে ধার্মিক এক জনও নেই। আমরা মানব জাতিরা ভাল করতে অক্ষম। যদি কেউ মনে করে যে, সে ধার্মিক, তাহলে সে মিথ্যাবাদী এবং ভন্ড। এই রকম লোকেরা শুধুমাত্র মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অভিনয় করে যে, তারা ধার্মিক মানুষ। এটা হচ্ছে এমন যে, আপনি কাউকে দেখে উপরে উপরে হাসছেন, কিন্তু ভিতরে ভিতরে ছুরি ধার দিচ্ছেন এবং তাকে কেটে কুচি কুচি করে ফেলছেন। আমাদের প্রভু এটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, মানুষ ভাল কাজ করতে সম্পূর্ণভাবে অক্ষম। তিনি বলেছেন যে, মানুষ হচ্ছে নরঘাতক, ব্যভিচারী, চোর, লম্পট, উদ্ধত, কুদৃষ্টিসম্পন্ন এবং মূর্খ। তিনি বলেছেন যে, মানুষই পাপ করে- অর্থাৎ, প্রত্যেকে তাদের সমগ্র জীবন ধরে অনবরত বারোটি পাপ করে এবং তাদের গন্তব্য হচ্ছে নরক। 
প্রভু যেমনটি খুব নির্ভুলভাবে বলেছেন যে, মানুষের পক্ষে ধার্মিকভাবে জীবন যাপন করা মূলগতভাবে অসম্ভব। আর তাই তারা অনবরত পাপ কাজ করে যায়, এবং তাদের জন্ম দিন থেকে তাদের মৃত্যু দিন পর্যন্ত পাপ করেই যায়। আর তাই, ধার্মিক জীবন যাপনের চেষ্টার মাধ্যমে আপনি ঈশ্বর থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারেন না। বরং আপনাকে আপনার প্রকৃত রূপ উপলব্ধি করতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে যে, আপনার সহজাত প্রকৃতির কারণে আপনি পাপ না করে থাকতে পারেন না; আর প্রভুকে অনুরোধ করতে হবে, যেন তিনি আপনাকে রক্ষা করেন। এটাই একমাত্র উপায় যার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রকৃত পরিত্রাণে পৌঁছাতে পারেন এবং আপনার পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারেন।
এখানে পুলপিটের সামনে কিছু সুন্দর চন্দ্রমল্লিকা ফুল আছে। এই ফুলের নাম আমার কেবলই মনে হল। যাইহোক, আপনাদের কি মনে হয়, এখানে এই চন্দ্রমল্লিকা ফুল কেন প্রস্ফুটিত হচ্ছে? উত্তরটি খুবই সহজ। যেহেতু এটা চন্দ্রমল্লিকা গাছ, তাই চন্দ্রমল্লিকা ফুলই ফুটছে। তাহলে, যেহেতু প্রত্যেক মানুষ পাপেই জন্মগ্রহণ করে, তাহলে তারা কি ধরণের ফুল উৎপন্ন করবে? তারা পাপের ফুল উৎপন্ন করবে। আরো খারাপ বিষয় হল, তারা শুধুমাত্র এক ধরণের পাপের ফুল উৎপন্ন করে না, কিন্তু এই বারোটি পাপের সব কয়টি পাপের ফুলই উৎপন্ন করে। আজকে যখন এটা কামুক দৃশ্যের উৎপত্তি হবে, তখন তাদের হাত এবং চোখ যৌনতার পাপের ফুল উৎপন্ন করে। আর কাল যখন একটা নরহত্যার অভিলাষ উৎপন্ন হবে, তখন যদিও তারা বাস্তবে শারীরিকভাবে কাউকে হত্যা করবে না, কিন্তু পরোক্ষভাবে হত্যা করবে। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, ফুল এবং অন্যান্য সব প্রাকৃতিজ জিনিস যেভাবে তৈরী, তারা ঠিক তাদের সেই রূপটাই প্রকাশ করে। কিন্তু শুধুমাত্র মানুষের ক্ষেত্রেই এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটেছে। তাদের সহজাত প্রকৃতি অনুসারে তারা মিথ্যার বেশ ধারণ করে এবং তারপর নিজেদেরকে প্রকাশ করে। তাদের কুৎসিত রূপ এবং মন্দ অন্তঃকরণ লুকাতে তারা একটার পর আর একটা পাপের আশ্রয় নেয়- আজকে তারা একটা নরহত্যার অভিলাষ পোষণ করে, কাল একটা ব্যভিচারের অভিলাষ পোষণ করবে এবং তারপরের দিন একটা চুরির অভিলাষ পোষণ করবে। এভাবে বারোটি পাপ করে ফেলার পর তারা পুনরায় প্রথম থেকে শেষ সমস্ত পাপ করে। তারা এই পাপগুলো বারংবার করা হয়ে, আর যখন তারা নতুন একটা পাপ করে, তখন আগের পাপের কথা ভুলে যায়। কিছু সময় এভাবে পাপ করার পর তারা ভাবে, “একটু থামা যাক, আমি এই ধরণের পাপ করব না,” কিন্তু এই সময়ে তারা অন্য আর একটি পাপ করে ফেলায়; আর তাই তারা আগের পাপের কথা ভুলে যায়। বলা হয়ে থাকে যে, একটা মাছের স্মৃতিশক্তির স্থায়িত্ব প্রায় ৩ সেকেন্ড হয়। যখন আপনি একটি মাছ ধরেন, তখন যদি ভুল করে একে পানিতে হারিয়ে ফেলেন, তখন যদি আপনি পানিতে আবারো দ্রুত টোপ ফেলেন, তাহলে কেবলই যে মাছটিকে আপনি ধরেছিলেন, সেই মাছটি আবারো ধরা পড়তে পারে। যেহেতু মাছের স্মৃতিশক্তি খুবই অল্প সময় স্থায়ী হয়, তাই তারা কেবলমাত্র যে টোপ খেয়েছে সেই টোপের কথাও মনে করতে পারে না। 
তাহলে আমাদের, মানুষদের স্মৃতিশক্তি কেমন? যদিও এটার স্থায়ীত্ব তিন সেকেন্ডের চেয়ে বেশি, কিন্তু এটা প্রকৃতপক্ষে ৩০ ঘন্টার বেশি স্থায়ী হয় না। দিনের অর্ধেক যেতে না যেতেই কিছু মানুষ তাদের গতকালকের পাপ মনে করতে পারে না। অবশ্যই প্রত্যেকে এমন নয়। আমরা আজকের করা পাপ নিয়ে অনুশোচনা করে নিজেরাই নিজেদেরকে বলি, “আমার এটা করা উচিৎ হয়নি। আমি কেন এটা করলাম?” যাইহোক, যখন আগামীকাল উপস্থিত হয়, তখন আমরা নতুন পাপ করি, এবং গতকালকের পাপ আমাদের স্মৃতি থেকে বাষ্পের মতো উধাও হয়ে যায়। যেহেতু আমরা বছরের বারোটি মাস জুড়েই একই বারোটি পাপ বারংবার করতে থাকি, তাই আমরা কখন এবং কোন ধরণের পাপ করেছি তা খুব সহজেই ভুলে যাই। তাই মানুষ বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত, তাদের মরার বয়স পর্যন্ত পাপ করলেও বলে যে, “আমি আমার জীবনে অনেক বেশি পাপ করি নাই।” অন্যকথায়, যেহেতু মানুষ অনেক পাপ করে, তাই তারা পাপের একটা স্তুপ ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা পাপ করতে করতেই তাদের সমগ্র জীবন কাটিয়ে দেয়, আর তারা এমনকি এটাও উপলব্ধি করতে পারে না যে, তারা পাপ করেছে। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, প্রভু আজকে কি বলছেন, তা যদি আপনারা সম্পূর্ণরূপে বুঝেন এবং তা গ্রহণ করেন, তাহলে কলেজে ধর্মতত্ত্ব শেখার জন্য অনেক অর্থ এবং আপনাদের সমগ্র জীবন ব্যয় করার চেয়েও এটাই আপনাদের জন্য হিতকর হবে। কারণ প্রভুর বাক্যের দ্বারাই আপনারা নিজেদের প্রকৃত পাপরূপ উপলব্ধি পারেন, যা আপনারা এখন পর্যন্ত উপলব্ধি করতে পারেন নাই। প্রভুর বাক্যের দ্বারাই আপনারা উপলব্ধি করতে পারেন যে, মানুষের হৃদয়ে ভাল কাজ করার অভিলাষ থাকলেও, তারা বাস্তবে সেটা প্রয়োগ করতে অক্ষম। যদি কেউ বলে যে, সে ভাল কাজ করতে পারে, তাহলে এই লোকটি একজন কপট ছাড়া আর কিছুই নয়। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমাদেরকে অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমরা কতটা কলুষিত এবং মন্দ। শুধুমাত্র তাহলেই আমরা ঈশ্বরের পরিত্রাণের মহতী প্রেম লাভ করতে পারব, আর এই প্রেমে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারব। এর অর্থ হল এই যে, যদি আপনি যথাযথভাবে স্বীকার করেন যে, আপনি প্রকৃতরূপে কে, শুধুমাত্র তাহলেই আপনি জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে মুক্তি লাভ করতে পারবেন এবং স্বর্গ-রাজ্যের মহিমা উপভোগ করতে পারবেন। তাহলে, যারা উপলব্ধি করে না যে, তারা পাপীদের বংশধর, তাদের কি হবে? তারা ঈশ্বরের প্রেম উপলব্ধি করতে পারবে না, উল্টো তারা এটাকে অগ্রাহ্য করবে। তাহলে, কে ঈশ্বরের প্রেম উপলব্ধি করতে সক্ষম? যারা তাদের প্রকৃত রূপ জানে, শুধুমাত্র তারাই ঈশ্বরের প্রেম উপলব্ধি করতে পারে। শুধুমাত্র যে তার প্রকৃত রূপ জানে এবং মানুষ হিসেবে তার সহজাত অযোগ্যতা সম্পর্ক জানে, সে উপলব্ধি করতে পারে যে, ঈশ্বর তাকে কতটা প্রেম করেন, সে এই প্রেম গ্রহণ করে এবং এর জন্য ঈশ্বরকে কৃতজ্ঞতা প্রদান করেন। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আজকে অনেক খ্রীষ্টান আছে, যারা দাবি করে যে, তারা যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করে। কিন্তু তাদের মধ্যে খুব অল্প কয়েক জনেরই তাদের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। যখন তারা নিজেদের সম্পর্কে ভাবে, তখন তাদের অনেকেই এই ভ্রান্ত চিন্তা করে যে, “মূলত আমি একজন ভাল মানুষ, কিন্তু কিছু সময় আমি ছোট কিছু ভুল করে ফেলি।” এটা একটা ভ্রম ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই, যদিও এই লোকেরা দাবি করে যে, তারা যীশু খ্রীষ্টকে প্রেম করে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে, তাদের প্রেম এবং বিশ্বাস উভয়ই খুবই নগণ্য। এই ধরণের বিশ্বাস বাস্তবে একটা ভ্রান্ত বিশ্বাস। যে ব্যক্তি নিজেকে যথাযথভাবে জানে এবং নিজেকে একজন পাপী হিসেবে সত্যিকারভাবে স্বীকার করে, শুধুমাত্র সেই জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। তাই আমি আপনাদের সকলকে অনুযোগ করব, যেন আপনারা উপলব্ধি এবং বিশ্বাস করেন যে, যারা নিজেদেরকে যথাযথভাবে জানে, শুধুমাত্র তারাই রক্ষা পেতে পারে। 
 
 
আমাদের প্রভু আমাদের, মানুষদের সম্পর্কে কি বলেছেন?
 
প্রভু বলেছেন যে, আমাদের সহজাত প্রকৃতি হল এই যে, আমরা আমাদের সমগ্র জীবন ধরে বারংবার বারোটি পাপ করে যাই, কারণ আমরা এই পাপগুলো নিয়েই জন্মগ্রহণ করেছি। যখন আমরা প্রকৃতরূপে এই বিষয়টি নিয়ে যথাযথভাবে চিন্তা করি, তখন আমরা দেখতে পাই যে, এটা আসলেই সত্য। ফুল যেমন প্রস্ফুটিত হয়, আমরাও তেমনি আজকে একটা কামুকপূর্ণ হৃদয় দিয়ে কামনার পাপ করি, আর আগামীকাল একটা লোভী হৃদয় দিয়ে চুরির পাপ করি। এভাবে আমরা বারোটি পাপের সমস্ত পাপই করি। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, এভাবে আমাদের নিজেদের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে অবশ্যই সঠিক ধারণা থাকতে হবে। যখন আমরা নিজেদের প্রকৃত রূপ জানতে পারব, শুধুমাত্র তখনই আমরা ঈশ্বরকে তাঁর মহতী প্রেমের জন্য ধন্যবাদ দিতে পারব। শুধুমাত্র যখনই আমরা নিজেদেরকে জানতে পারব, তখনই আমরা যীশু খ্রীষ্টেতে আমাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে প্রকৃতরূপে বিশ্বাস করতে পারব এবং আমাদের অসংখ্য অযোগ্যতা সত্ত্বেও ঈশ্বরকে প্রশংসা প্রদান করতে পারব। 
নিজেকে না জানলে, আপনি আপনার বিশ্বাস বৃদ্ধি করতে পারবেন না। যদিও আপনার মধ্যে একটু বিশ্বাস থেকে থাকে, আপনার দূর্বলতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে আপনি নিরুৎসাহিত এবং হতাশ হয়ে পড়বেন, আপনি বলবেন যে, “আমি কেন এত মন্দ?” আর আপনি প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন। যাইহোক, যারা নিজেদেরকে জানে, তারা এইভাবে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে না। তারা প্রভুর প্রেমের জন্য সব সময় তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকে, যিনি তাদেরকে উদ্ধার করেছেন। আর তারা চিৎকার করে বলে উঠে যে, “প্রভু, তুমি ঠিক! প্রভু আমি চিরকাল তোমার প্রশংসা করব!” “প্রভু আমাকে এত প্রেম করলেন যে, তিনি তাঁর এক জাত পুত্রকে দান করলেন এবং আমাকে সম্পূর্ণরূপে উদ্ধার করলেন। আমার মতো অযোগ্য মানুষকে তিনি রক্ষা করেছেন। তিনি আমাকে এই সমস্ত ভয়াবহ পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। যদিও আমি অযোগ্য, যদিও আমার নরকে যাওয়ার কথা ছিল, আর যদিও আমি অভিশাপের পাত্র ছিলাম, কিন্তু প্রভু আমাকে রক্ষা করেছেন।” এটা হৃদয়ে উপলব্ধি করে, তারা ঈশ্বরের বিবিধ অনুগ্রহের জন্য তাদের হৃদয় দিয়ে তাঁর প্রশংসা করতে শুরু করে।  
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, কিছু সময় আমরা নিজেদেরকে ভাল মানুষ মনে করে নিজেদেরকেই ঠকাই। পাপের ক্ষমা লাভের আগে ও পরে আমরা ভ্রান্তভাবে নিজেদেরকে ধার্মিক মানুষ মনে করে চলি। আপনাদের আশেপাশের অন্যান্য অনেক লোকদের দিকে চেয়ে দেখুন। তাদের মধ্যে কেউ কি বলে, “আমি খারাপ মানুষ। আমি পাপী। আমি একজন দূর্বল মানুষ।”? অধিকাংশ মানুষই চিন্তা করে যে, “আমি একজন ভাল মানুষ; আমি খুব একটা খারাপ মানুষ নই।” কিন্তু বাস্তবতা কেমন? প্রকৃতরূপে কেউ ধার্মিক নয়। আমাদের জীবনে চলতে চলতে আমাদের মধ্যে মন্দ চিন্তা উদিত হতে থাকে, আমরা একটার পর একটা খারাপ কাজ করতেই থাকি, আর যতবার আমরা নিজেদের দিকে ফিরে তাকাই, আমরা শুধু হতাশ হই। এটাই মৌলিক সত্য। প্রকৃতিগতভাবে, আমাদের জন্মক্ষণ থেকেই আমরা ধার্মিক নই। আপনারা কি আমার মতের সাথে একমত?
এটা সত্য যে, আমি আমার সারাটি জীবন ধরে প্রভুর মধ্যে থেকে শুধু ধার্মিক এবং ভাল কাজই করতে ইচ্ছা করি। কিন্তু এই ধার্মিক ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও, সময়ে সময়ে আমার মধ্যে কুচিন্তা উদিত হতে থাকে এবং এগুলোর জন্য আমি নিজেকে ঘৃণা করি। কারণ আমি খুব ভালভাবেই জানি যে, বাইবেলে উল্লেখিত বারোটি পাপের সব কয়টি পাপই বাস্তবে আমার হৃদয় মধ্যে আছে, যদিও বা আমি সেগুলো বাস্তবে প্রয়োগ করি নাই। তাই আমি প্রভু যা বলেছেন তার সাথে একমত। আমার মত অবর্ণনীয় ঘৃণ্য পাপীকে উদ্ধার করার জন্য আমি প্রভুকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমাদেরকে নিজেদের প্রকৃত রূপ খুব ভালভাবে জানতে হবে। আজকের শাস্ত্রাংশটিতে বলছে যে, “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন,” এখানে ‘জগৎ’ শব্দটি বলতে আপনাকে এবং আমাকে বোঝানো হয়েছে। আপনি এবং আমি, আমরা হলাম পাপী; আমরা বারোটি পাপের সব কয়টি পাপই করে থাকি। এটা অবশ্যস্বীকার্য সত্য। শুধুমাত্র অজ্ঞ ধর্মীয় নেতারাই বলে থাকে যে, “আমরা মানুষরা একটা সাদা কাগজের মতো জন্ম গ্রহণ করেছিলাম। এই কাগজের উপর যেভাবে লিখেছি, সেভাবে অনেকে আমরা ভাল মানুষ হয়েছি, এবং অনেকে মন্দ মানুষ হয়েছি। তাই আমাদেরকে ধার্মিকভাবে জীবন যাপনের চেষ্টা করতে হবে। আমাদেরকে অবশ্যই একটা ধার্মিক জীবন যাপন করতে হবে।” মানুষ নিজের চেষ্টায় উত্তম কাজ করতে পারে না। 
শুধুমাত্র যখনই আপনি আপনার অন্তঃকরণ দিয়ে বিশ্বাস করবেন যে, যীশু খ্রীষ্ট বাস্তবিকই আপনার সমস্ত পাপ জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা মোচন করেছেন, এবং শুধুমাত্র যখনই আপনি এইভাবে আপনার পাপের ক্ষমা লাভ করবেন, তখন আপনার মধ্যে অযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আপনি ঈশ্বরের ধার্মিকতার অনুশীলন করতে পারবেন। কারণ এখন আপনার অন্তঃকরণ পরিষ্কার এবং শুদ্ধ। 
 
 

যারা নিজেদের প্রকৃত রূপ জানে না, তাদের প্রতি কি ঘটবে?

 
মথি ৭ অধ্যায়ে লেখা আছে, “হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম-কার্য করি নাই?” এই পদটির অর্থ হল এই- যদিও বা আপনি নিজেকে একজন ধার্মিক মানুষ মনে করেন এবং অনেক উত্তম কাজ করেছেন, কিন্তু যদি আপনি জল ও আত্মার সুসমাচার না জেনে থাকেন এবং এইজন্য পাপের ক্ষমা লাভ না করে থাকেন, তাহলে যুগান্তে আপনাকে অবশ্যই নরকে নিক্ষিপ্ত হতে হবে। আজকে আমরা জানি, অনেক মানুষ আছে যারা বিশ্বাস করে যে, তাদেরকে অবশ্যই সৎ ও ধার্মিক জীবন যাপন করতে হবে; আর এরা তাদের সমগ্র জীবন ধরেই ভ্রান্ত ভাববাদীদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে এসেছে। যুগান্তে এরা স্বর্গ লাভ করতে পারবে না, কিন্তু সোজা নরকে নিক্ষিপ্ত হবে। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আমাদের নিজেদের সামান্যতম সৎ কাজ, এমনকি শতকরা ০.০০১ অংশ সৎ কাজ যোগ করে আমরা পাপের পরিত্রাণ লাভ করিনি। শুধুমাত্র যীশু খ্রীষ্টের একার ধার্মিকতার কার্য দ্বারাই আমাদের অন্তঃকরণের সব কয়টি বারোটি পাপ এবং এ পর্যন্ত বাস্তবে করা আমাদের সমস্ত পাপ মোচিত হয়েছে। অন্যকথায়, প্রভু জল ও আত্মা সুসমাচার দ্বারা এসেছিলেন বলে এবং আমাদের সমস্ত পাপ গ্রহণ করে সেগুলোর জন্য দন্ড ভোগ করেছিলেন বলেই আমরা, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীরা আমাদের পরিপূর্ণাঙ্গ পরিত্রাণ লাভ করেছি। 
এইভাবে, যদিও মানুষ দাবি করে যে তারা সৎ কাজ করে, কিন্তু তারা প্রকৃত সৎ কাজ করতে পারে না। সক্রেটিস একজন খ্রীষ্টান মানুষ ছিলেন না, কিন্তু তবুও তিনি একটি বিখ্যাত নীতিকথা রেখে গিয়েছেনঃ “নিজেকে জানুন।” এই নীতিকথা অনুসারে, আমাদেরকে প্রথমে আমাদের প্রকৃত রূপ অবশ্যই জানতে হবে। যদি আমরা নিজেদেরকে জানতে পারি, তাহলে আমরা উপলব্ধি করতে পারব যে, আমরা বাস্তবিকই কতটা পাপী, আর আমরা আমাদেরকে দত্ত প্রভুর জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে পারব। তখন আমরা প্রভুর অনুগ্রহ এবং তাঁর প্রেম আরো প্রচুররূপে লাভ করতে পারব এবং স্বর্গে পৌঁছাতে পারব। নিজেদের প্রকৃত রূপ জানার কোন চেষ্টা না করা এবং নিজেদেরকে ধার্মিক মানুষ মনে করে নিজেদেরকেই বিভ্রান্ত করা- এই রকম অবস্থা থাকলে মন্ডলীতে যোগদান করে, হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করলেও ঈশ্বরের প্রেম এবং তাঁর আশীর্বাদ লাভ করা যাবে না। আপনারা কি এটা বুঝতে পারছেন? যদি কেউ এমনটা থেকে থাকে, তাহলে ঈশ্বর তাকে বলবেন, “তুমি একটা ভন্ড, তুমি দিয়াবলের পূজারী!”
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, যারা ঈশ্বরের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তাদের হাঁটু ব্যাথা হয়ে রক্ত পড়া পর্যন্ত প্রার্থনা করে, তাদের থেকে যারা প্রভুর সামনে নিজেদের প্রকৃত রূপ স্বীকার করে, এদের পক্ষে পরিত্রাণের আশীর্বাদ লাভ অধিকতর সহজ। এই লোকেরা স্বর্গে প্রবেশ করবে, কারণ তারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করবে, যা ঈশ্বরের প্রেম থেকে এসেছে। এই রকম লোকেরা স্বাভাবিকভাবেই স্বীকার করে যে, তাদের হৃদয়ে বাস্তবিকই কুচিন্তা আছে- ব্যভিচার, চৌর্য, লোভ, মতবিরোধ, কুদৃষ্টি,  অভিমান এবং মূর্খতা রয়েছে। আর তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্বীকার করে যে, “হ্যাঁ প্রভু, তুমি সঠিক। আমি পাপের একটা স্তুপ ছাড়া আর কিছুই নই। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে, আমাকে দেওয়া তোমার জল ও আত্মার সুসমাচারই আমার পরিত্রাণ। যারা বিশ্বাসে এই ধরণের স্বীকারোক্তি করে, তারা প্রকৃতরূপেই তাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি লাভ করবে। যাইহোক, যদি আপনি প্রভুর সাক্ষাতে ভন্ডামি করেন এবং তাঁকে বলেন, “প্রভু, আমি তোমাকে প্রেম করি। তোমার জন্য আমি আমার জীবন দিয়ে দিব। আমি গরীব লোকদের সেবার জন্য মিশনারী হিসেবে পৃথিবীর কিছু দেশে যাব। তোমার জন্য আমি আমার বাড়ি বিক্রি করে দিব এবং এর পুরোটাই তোমার গীর্জা তৈরির জন্য দান করব,” তাহলে প্রভু আপনাকে কি বলবেন? এই ঢেলে-পড়া উক্তির উত্তর দিয়ে ঈশ্বর বলবেন যে, “যখন পুরো বিশ্বব্রহ্মান্ডটাই আমার, তখন আমার গীর্জা তৈরীর জন্য তুমি তোমার বাড়ি বিক্রি করতে চাচ্ছো, এতে কি আমি খুশি হবো? আমার এটার দরকার নেই। আমি যা চাই তা হল, আমি তোমাকে পাপ ক্ষমার যে সত্য, অর্থাৎ যে জল ও আত্মার সুসমাচার দিয়েছি, তা জান এবং তাঁতে বিশ্বাস কর। যদি তুমি এটা কর, তাহলে তুমি পাপ থেকে মুক্তি লাভ করবে।” 
আপনারা সবাই খুব ভাল করেই জানেন, ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে পার্থিব কিছু চান না। তথাপি, অনেক মানুষ ঈশ্বরকে “সাহায্য” করতে চায়, যেন সর্বশক্তিমান ঈশ্বর কোনভাবে গরীব। অন্যকথায়, যদিও মানুষ নিছক একট সৃষ্টি ছাড়া আর কিছুই নয়, তবুও তারা সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরকে কি দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবে। এমনটা চিন্তা করা হল ঈশ্বরের সাক্ষাতে উদ্ধত হওয়া এবং নিজেকে বিভ্রান্ত করা। আপনি এমনটা চিন্তা করবেন, যদি আপনি আপনার বিশ্বাসের জীবনটা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করতে চান। এমনকি মন্ডলীর নেতারাও তাদের মন্ডলীর সদস্যদের থেকে তাদের সম্পত্তি লাভের জন্য দাবি করে যে, “যদি আপনারা ঈশ্বরকে প্রচুর পার্থিব সম্পত্তি দান করেন, তাহলে আপনারা অবশ্যই আশীর্বাদযুক্ত হবেন।” মানুষকে প্রভুর নামে ঠকানোর থেকে নিকৃষ্ট আর কিছুই হতে পারে না। এটা হল নিজেদের লোভ পূরণের জন্য লাভের জন্য প্রভুকে বিক্রি করা, যা প্রভুর কোন ধার্মিক লোক কখনোই করবেন না। এই লোকদেরকে প্রভুর সত্যিকারের লোক বলা যায় না। ঈশ্বর আপনার সম্পত্তিতে লোভ করেন না যে, তিনি চাইবেন যে, আপনি তাঁর জন্য একটা গীর্জা তৈরী করে দেন। অন্যকথায়, শুধুমাত্র যদি আপনি মন্ডলীতে প্রচুর দান দেন, তাহলে ঈশ্বর খুব সন্তুষ্ট হবেন এবং আপনাকে আশীর্বাদ দান করবেন; আর যদি আপনি পার্থিব কোন সম্পত্তি দান না করেন, তাহলে ঈশ্বর আপনাকে আশীর্বাদ করবেন না- বিষয়টি এমন নয়। আমি আপনাদেরকে এটা পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করতে অনুযোগ করব যে, এটা ঈশ্বরের ইচ্ছা নয়। শুধু ভ্রান্ত ভাববাদীরাই এটা শিক্ষা দিয়ে থাকে।  
আজকে, এই পৃথিবীতে এমন অনেক পাস্টর আছে, যারা ঈশ্বরকে প্রচার না করে, তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসকে প্রচার না করে, নিজেদের ধার্মিকতাকে প্রচার করছে। তাদের জাগতিক মন্ডলীর মাধ্যমে তারা নিজেদের গুণ প্রদর্শন করে এবং নিজেদেরকে জাহির করে, আর এটা করে তারা নিজেদের পদমর্যাদা বৃদ্ধির পরমানন্দ লাভ করে। উদাহরণস্বরূপ, ৪০ দিনের ভোরের প্রার্থনা সভা অথবা ১০০ দিনের প্রার্থনার মাধ্যমে তারা তাদের সদস্যদের তারা সম্মানিত হতে চায়। আর যখন কেউ ভাল কোন কাজ করে, তখন তাকে ভাল মানুষ এবং উত্তম বিশ্বাসের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়; আর যখন কেউ ভাল কোন কাজ করে না, তখন তাকে অল্প বিশ্বাসের অধিকারী বলে অভিহিত করা হয়। এই অভিযোগ দিয়ে কিভাবে কাউকে অভিহিত করা যায় যে, তার বিশ্বাসে ঘাটতি আছে? তারা আরো কঠোর চেষ্টা করতে চায়, এজন্য চিন্তা করে, “অন্যেরা যেটা করছে, আমি যেহেতু সেটা করতে পারছি না, তাই আমার বিশ্বাসে অবশ্যই ঘাটতি আছে। আমি ভোরের প্রার্থনা সভায় যোগদান করি না, তাই আমার বিশ্বাস অবশ্যই কম।”
এই শহরে কতজন পাস্টর এবং খ্রীষ্টানদের মধ্যে এই রকম ভ্রান্ত চিন্তা দেখা যায়? অবশ্যই, ভোরের প্রার্থনা সভায় যোগদান এবং ভাল কাজ করার মধ্যে মন্দতা কিছু নেই, কিন্তু যেহেতু এই পুরো প্রচেষ্টাটিই একটা ভ্রান্ত জ্ঞানের উপর প্রতিষ্ঠিত, তাই এর ফলাফলও ভুল। কারণ, প্রথমে নিজেদের প্রকৃত পাপী রূপ উপলব্ধি না করে কেউ যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করতে পারে না। 
৩০ বছরের বেশি হল আমি যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করি। আর প্রথম দশ বছরে, আমি নিজের প্রকৃত রূপটিও জানতাম না। তাই আমি সব সময় সৎ কাজ করার চেষ্টা করতাম এবং ধার্মিক জীবন যাপনের চেষ্টা করতাম। আমি ভাবতাম, আমার গীর্জার মেরামত এবং রং করার প্রয়োজন হলে আমি শুধু স্বেচ্ছায় শ্রমই দিব না, কিন্তু মন্ডলীর কোন আর্থিক সংকট দেখা দিলে আমি অর্থও দান করব। তাই আমি নিজে নিজে চিন্তা করে নিজের চেষ্টায় ঈশ্বরে আমার বিশ্বাস বৃদ্ধির চেষ্টা করতাম, “আমার মধ্যে শুধু অল্প কিছু জিনিসের অভাব আছে। কিন্তু যেহেতু যীশু আমার সমস্ত পাপ মোচন করেছেন, তাই আমাকে শুধুমাত্র যা করতে হবে, তা হল ঈশ্বরের দৃষ্টিতে একটা ধার্মিক জীবন যাপন করা।” যাইহোক, সেই সময় পর্যন্ত আমি নিজের প্রকৃত রূপ সম্পর্কে ভালভাবে জানতাম না। আমি সম্পূর্ণরূপে জ্ঞাত ছিলাম না যে, আমি কোন ধরণের পাপী ছিলাম এবং আমি কত কত ঘৃণ্য পাপ নিয়ে জীবন যাপন করছিলাম। এই দশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরই আমি পরিশেষে উপলব্ধি করতে পারলাম যে, আমি সত্যিই একজন পাপী। এর আগ পর্যন্ত, যখন আমি একজন সুন্দরী নারী দেখতাম, এবং তখন যদিও আমার হৃদয়ে কামুক অভিলাষ জাগরিত হতো, তথাপি আমি নিজেকে কলুষিত ভাবতাম না। আমি শুধু ভাবতাম যে, ঐ নারীই আমাকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, তাই এটা তার দোষ; আমার হৃদয় যে কামুক হয়েছে, এটা আমার দোষ নয়। যাইহোক, পরিশেষে আমি উপলব্ধি করতে পারলাম যে, আমার হৃদয়ে কলুষতা এবং মন্দতা সব সময়ই ছিল। এতদিন আমি শুধু নিজের পাপকে ঢাকছিলাম, কিন্তু আমার হৃদয় ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ সমস্ত ধরণের পাপে পূর্ণ ছিল। 
আপনাদের কি মনে হয়, যখন আমি উপলব্ধি করতে পারলাম যে, আমি অবর্ণনীয় ঘৃণ্য এক পাপী ছিলাম- তখন আমার মধ্যে কি ঘটেছিল? আমার পাপপূর্ণ রূপ দেখে, আমি নিজেকে ঘৃণা করতে শুরু করলাম। যাইহোক, একই সময়ে, আমি চিন্তা করছিলাম যে, আমার মতো কোন যুবকের পক্ষে একজন আকর্ষণীয় নারীকে দেখে লোভ না করে থাকাটা কি করে সম্ভব? বাইবেল বলে যে, যদি আমি বাস্তবে সত্যি সত্যি ব্যভিচার নাও করি, কিন্তু যদি আমার মধ্যে কামুক চিন্তার উদয় হয়, তাহলে এটাও ব্যভিচারের সামিল। বাইবেল বলে যে, যদি কারো মধ্যে কোন পুরুষ অথবা নারী সম্পর্কে কামুক চিন্তার উদ্ভব হয়, তাহলে এই ব্যক্তি ব্যভিচার করে ফেলল। ঈশ্বরের এই বাক্যের মাধ্যমে আমি উপলব্ধি করলাম যে, আমি একজন পাপী ছিলাম। আমি আবিষ্কার করলাম যে, আমি যতই এই কামুক চিন্তা না করার চেষ্টা করেছি, ততই কামুক চিন্তা করেছি। অবশেষে, আমার পক্ষে যীশুতে বিশ্বাস করাটা এতই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ল যে, একটা সময় আমি চিন্তা করলাম, “আমি সম্পূর্ণরূপে হতাশ! অন্যেরা হয়তো বিশ্বাসের একটা ধার্মিক জীবন যাপন করতে পারছে, কিন্তু আমি পারছি না। আমি আমার বিশ্বাসের জীবন ছেড়ে দিব। আমি অবশ্যই যীশুতে খুব তাড়াতাড়িই বিশ্বাস করে ফেলেছি। ঠিক মৃত্যুর আগ মুহূর্তে যীশুতে বিশ্বাস করাটাই আমার জন্য ভাল হতো। তাহলে, আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দিতে দিতে এবং হাল্লিলূয়া বলতে বলতে মরতে পারতাম। কিন্তু আমি যীশুতে খুব তাড়াতাড়িই বিশ্বাস করে ফেলেছি, তাই এখন আমি নারীদের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পারছি না এবং এটা আমার পক্ষে খুব যন্ত্রণাদায়ক। যীশুকে আমার ত্রাণকর্তা হিসেবে না জানলেই আমার পক্ষে ভাল হতো।”
কিন্তু ততক্ষণে আমি ঈশ্বরের বাক্য এবং তাঁর ব্যবস্থা জেনেছি, তাই আমি যীশুকে আমার ত্রাণকর্তা হিসেবে বিশ্বাস না করে পারলাম না। যীশুতে বিশ্বাস করি বা নাই করি, আমি পাপী ছিলাম, আর প্রত্যেক পাপীর গন্তব্য হল নরক। এই নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগের এক পর্যায়ে এক দিন হঠাৎ আমার মধ্যে এই চিন্তা আসল যেঃ “যেহেতু ঈশ্বরের প্রেম প্রচুর, তাহলে তিনি আমাকে আমার অগণিত পাপ থেকে অবশ্যই উদ্ধার করে থাকবেন। অবশ্যই তিনি ইতোমধ্যেই আমার সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। তাহলে তিনি এটা কিভাবে করেছেন?”
সেই সময়ে, আমার এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। তাই, সেই দিন থেকে আমি বাইবেল আরো মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকলাম। এই ব্যাপক খোঁজের পর অবশেষে আমি জল ও আত্মার সুসমাচারের সত্য জানতে পারলাম, যা প্রভুর ধার্মিকতা প্রতিষ্ঠিত করে। “তাহলে, আমি এত খারাপ মানুষ। আমি আমার সারাটি জীবন ধরে এই ধরণের পাপ করে যাই! প্রথম থেকেই আমার গন্তব্য ঠিক হয়ে গিয়েছিল নরক, আর আমার কোন ধার্মিকতাই নেই। আমার পাপ থাকা সত্ত্বেও প্রভু তাঁর সঙ্কল্প অনুসারে আমাকে প্রেম করলেন এবং তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমার সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন, আর আমার জায়গায় আমার সমস্ত পাপের শাস্তি তিনি নিজে ক্রুশে বহন করলেন। তাই, আমার জায়গায় নিজে মরে তিনি আমার পাপের বেতন পরিশোধ করলেন। অতঃপর মৃত্যু থেকে পূণর্জীবিত হয়ে এবং স্বর্গে আরোহণ করে তিনি আমার প্রকৃত ত্রাণকর্তা হয়েছেন।” ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমি জল ও আত্মার সুসমাচার জানতে ও উপলব্ধি করতে পারলাম।
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, এতক্ষণ যেমনটি আমি আমার জীবনের কাহিনী আপনাদের কাছে তুলে ধরলাম, যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসের পরও আমার হৃদয় নিদারুণ যন্ত্রণায় কষ্ট পেয়েছিল। যাইহোক, একবার নিজের প্রকৃত রূপ জানার পর এবং জল ও আত্মার সুসমাচার বোঝার পর আমার হৃদয়ে প্রকৃত বিশ্বাস আসতে লাগল। আমি আমার সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। প্রেরিত পৌল বলেন, “সতত আনন্দ কর, অবিরত প্রার্থনা কর, এবং সর্ববিষয়ে ধন্যবাদ কর।” এই পদটি যেমন বলছে, আমরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীরা প্রকৃতরূপেই সর্বদা বিশ্বাসে আনন্দ করতে পারি। আমি আনন্দ করতে পারি, কারণ প্রভু যোহন বাপ্তাইজকের নিকট নেওয়া বাপ্তিস্মের দ্বারা আমার সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন। অন্যকথায়, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি বলেই আমি ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে সক্ষম হয়েছি। যদি আমি আমার নিজের যোগ্যতায় অথবা নিজের গুণে পাপ থেকে মুক্তি পেতাম, তাহলে আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়ার কোন প্রয়োজনই পড়ত না। যদি আমি আমার নিজের সৎ কাজ এবং গুণ দ্বারাই আমার পাপ থেকে মুক্তি লাভ করে থাকি, তাহলে আমি কেন ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ হব? প্রভু নিজেই আমাকে জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে উদ্ধার করেছেন। 
এটাই সত্য। পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভের জন্য আমরা নিজেরা কিছুই করি নাই। পাপী হিসেবে আমরা শুধুমাত্র যে কাজটি করেছি, তা হল একটার পর আর একটা পাপ করেছি। তথাপি, জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ মোচনের জন্য প্রভু নিজের উপরে এই সমস্ত পাপ গ্রহণ করলেন, আর তিনি আমাদের সমস্ত পাপ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করলেন। তাই এখন, আমরা যারা প্রভুর এই প্রেমে বিশ্বাসের দ্বারা পাপ ক্ষমা লাভ করেছি, আমরা স্বর্গে প্রবেশ করতে পারি, আর আমরা সতত আনন্দ করতে পারি। একটার পর একটা পাপ করা সত্ত্বেও, প্রভুর প্রেম এবং তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস দ্বারা আমার উদ্ধারপ্রাপ্ত হয়েছি, তাহলে আমরা কি করে খুশি ও কৃতজ্ঞ না হয়ে পারি? 
আমরা পাপ করি, কারণ আমরা অযোগ্য মানুষ। আর যদিও সমগ্র জীবন ধরে পাপ করাই আমাদের সহজাত প্রকৃতি, তথাপি জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা আমরা অনবরত আনন্দ করতে পারি। যখন আমাদের কাজের দূর্বলতা প্রকাশ হয়ে পড়বে, তখন আমরা প্রভুকে বলতে পারি, “প্রভু, আমার মতো অযোগ্য মানুষকে রক্ষা করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমি খুবই খুশি।” একইভাবে, যখন আমরা সৎ কোন কিছু করি, তখন আমরা প্রভুকে বলতে পারি, “প্রভু, আমাকে রক্ষা করার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। আমরা মধ্যে বাস করার জন্য এবং আমাকে এই উত্তম কাজ করতে দেওয়ার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ। প্রভু তুমি আমার মাধ্যমে জল ও আত্মার সুসমাচার, পাপ থেকে মানুষের আত্মার মুক্তির সুসমাচার প্রচার করছো, তাই আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই। তুমি আমাকে তোমার ধার্মিকতার কার্যের একটা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছো। প্রভু, আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাই; আমি যারপর নাই আনন্দিত।” আমাদের সফলতা এবং ব্যর্থতায়, উভয় ক্ষেত্রেই আমরা বিশ্বাসে সর্বদা প্রভুকে ধন্যবাদ দিতে পারি; আর সর্বদাই আমরা একটা আনন্দপূর্ণ হৃদয় লাভ করতে পারি।
যদি আমরা সুদক্ষ সাঁতারু হই, তাহলে ভুল করে পানিতে পড়ে গেলেও আমাদেরকে কেউ সাহায্য করবে না। যাইহোক, যদি সাঁতার না জানা কেউ পানিতে পড়ে যায়, তাহলে অন্যরা তার দিকে ধরে উঠার মতো কোন কিছু ছুড়ে দিবে, এবং তাকে উদ্ধার করবে। একইভাবে, যেহেতু আমরা এই জগতে সাঁতার কাটতে পারি না, অর্থাৎ যেহেতু আমরা সর্বদাই অক্ষম এবং সর্বদাই পাপ করি, তাই প্রভু জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ হতে একেবারে চিরকালের জন্য উদ্ধার করলেন। আমি আপনাদেরকে অনুযোগ করব, আপনারা সম্পূর্ণ অন্তঃকরণের সহিত এই সত্য বিশ্বাস করুন এবং সর্বদা এটাকে স্মরণে রাখুন। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমরা সম্পূর্ণ পাপী, আর যীশু খ্রীষ্টই আমাদের প্রকৃত ত্রাণকর্তা। তিনি আমাদের হৃদয়ের এবং কার্যের সমস্ত পাপ থেকে আমাদের উদ্ধার করেছেন। যদি আপনার এবং আমার মধ্যে একটি মাত্র জিনিস থেকে থাকে, তাহলে এটা হল কুচিন্তা এবং পাপপূর্ণ কাজ। তথাপি, প্রভু জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা আমাদের মত মানুষদেরকে একেবারে চিরকালের জন্য উদ্ধার করলেন। এই কারণেই আমরা তাঁকে সর্বদা ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমার প্রিয় সাধুগণ, যারা আমরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, আমাদেরকে অবশ্যই উপলব্ধি ও বিশ্বাস করতে হবে যে, ঈশ্বরের পরিত্রাণের প্রেম কেমন মহৎ। অন্যভাবে বললে, আমাদেরকে অবশ্যই যথাযথভাবে যাচাই করে দেখতে হবে যে, আমাদের সারাজীবন ধরে করা সমস্ত পাপ থেকে আমরা কিভাবে মুক্তি লাভ করেছি, এবং কিভাবে আমরা এই সত্য বিশ্বাস লাভ করেছি। আর এর জন্য আমাদেরকে ঈশ্বরের কাছে অবশ্যই কৃতজ্ঞ হতে হবে। আপনাদের মধ্যে কয়েকজন হয়তো এখনো ভাবছেন, “আমি উপলব্ধি করি যে, আমি সব সময় পাপ করি। কিন্তু আমি নিশ্চিত না- কিভাবে ঈশ্বর আমার সমস্ত পাপ সত্যই মোচন করেছেন। আমি একদমই বিশ্বাস করতে পারি না যে, প্রভু আমার সমস্ত পাপ সম্পূর্ণরূপে মোচন করেছেন। আমার মধ্যে প্রশ্ন জাগে- আমি কি সত্যিই অনন্ত জীবন লাভ করেছি না কি করি নাই।” যদি আপনারা এইভাবে চিন্তা করছেন, তাহলে আমি আপনাদেরকে বলব- আপনারা আরো একবার জল ও আত্মার সুসমাচার রোমন্থন করুন, যেখানে প্রভু বলেছেন- “ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার এক জাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।”
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, জল ও আত্মার সুসমাচার দাবি করে যে, ঈশ্বর তাঁর এক জাত পুত্রকে আমাদের ত্রাণকর্তা হওয়ার জন্য আমাদের কাছে পাঠালেন। আর ঈশ্বরের এই পুত্র যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে গ্রহণ করলেন এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচনের দ্বারা আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ থেকে একেবারে চিরকালের জন্য মুক্ত করলেন। ঈশ্বর এইভাবে আমাদের সকলকে রক্ষা করলেন। আপনি কি এখনো বিশ্বাসে ঈশ্বর-দত্ত পরিত্রাণ লাভ করেছেন? আপনাদের মধ্যে অনেকেই এখন হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়ছেন, কিন্তু আমি নিশ্চিত- আপনাদের মধ্যে কয়েকজন এখনো তাদের সম্পূর্ণ অন্তঃকরণ দিয়ে জল ও আত্মার সুসমাচারকে গ্রহণ করে নাই। কিন্তু দুশ্চিন্তার কোন প্রয়োজন নেই। 
আগামী সপ্তাহে আপনারা প্রভুর বাক্য থেকে এবং জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে ঈশ্বর-দত্ত পরিত্রাণের বিষয়ে আরো জানতে পারবেন। আপনারা যদি এই সপ্তাহে আপনাদের অন্তঃকরণ খোলা রাখেন, একাগ্রচিত্তে ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ করেন এবং আপনাদের হৃদয়ে প্রভুর ধার্মিকতা গ্রহণ করেন, তাহলে আপনারা পাপের প্রকৃত ক্ষমা লাভ করতে পারবেন। আপনারা আপনাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হবেন, ধার্মিক মানুষ হবেন এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবেন। ঈশ্বর জগৎকে অর্থাৎ আপনাকে, আমাকে এবং সবাইকে এমন প্রেম করলেন যে, তিনি আমাদের মত নিকৃষ্ট পাপীদের জন্য তাঁর পুত্রকে পাঠালেন, এবং বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাঁর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন। আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর পুত্রে উপরে তুলে দিয়ে তাঁকে আমাদের জন্য বলি দিয়ে ঈশ্বর আমাদের অযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করলেন। 
আপনি কি জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেন? আপনি, আমি এবং আমরা সকলেই ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপী। জ্ঞানবান এবং পবিত্র লোক যারা ধার্মিকতা অনুশীলন করতে পারে, ঈশ্বর তাদেরকে উদ্ধার করেন নাই। কিন্তু যারা ঘৃণ্য পাপী, তাদেরকেই ঈশ্বর পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। প্রভুর পরিত্রাণের এই নিয়মে আমরা বিশ্বাসে ধার্মিক ও ঈশ্বরের সন্তান হয়েছি। যারা পাপের প্রকৃত ক্ষমা লাভ করেছি, আমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক মানুষ হয়েছি। যদিও আমরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, তথাপি যারা বিশ্বাস করে যে, এখনো তাদের হৃদয়ে পাপ আছে, তারা পাপীই থেকে যাবে। তারা পাপী, কারণ তারা ঈশ্বরের প্রেম অথবা জল ও আত্মার সুসমাচার- কোনটিই সত্যিকারভাবে জানে না। আমি আশা ও প্রার্থনা করব যেন আপনারা সকলে উপলব্ধি করতে পারেন যে, ঈশ্বর আমাদেরকে কতটা প্রেম করেন এবং তিনি তাঁর পরিত্রাণের আশ্চর্য সত্য দ্বারা কিভাবে আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন; যাতে আপনারা সকলে ঈশ্বরের প্রকৃত ধার্মিক মানুষ হওয়ার মূল্যবান আশীর্বাদ লাভ করতে পারেন এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারেন।