Search

佈道

বিষয় ৩: জল ও আত্মার সুসমাচার

[3-2] যীশুর বাপ্তিস্ম ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত (মথি ৩ : ১৩ – ১৭)

যীশুর বাপ্তিস্ম ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত
(মথি ৩ : ১৩ – ১৭)
 ‘‘তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন,আপনার দ্বারা আমরাই বাপ্তাইজিত হওয়ার আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গী হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইহাঁতেই আমি প্রীত।”
 
 
পাপের যাতনাগ্রস্ত কেউ কি এখনো আছে?
 
আমাদের পাপের দাসত্ব কি শেষ হয়েছে?
হ্যাঁ
 
 ঈশ্বর মানুষের পাপের বেড়ি কেটে দিয়েছেন। পাপের অধীনে যারা পরিশ্রম করছে, তারা পাপের দাস। আমাদের প্রভু তাঁর প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে দাসত্ব ছিন্ন করেছেন। আমাদের সব পাপ তিনি দূর করেছেন। এখনো কি এমন কেউ আছে যে পাপের যাতনা ভোগ করছে?
 আমাদের বুঝতে হবে যে, আমাদের পাপের পরিবর্তে আমাদের জন্য কল্যাণ সাধন করা হয়ে গেছে। আমরা পাপের জন্য আর যাতনা ভোগ করব না। যীশু প্রায়শ্চিত্ত করে আমাদের পাপের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছেন, তৎক্ষণাৎ আমাদের পাপ শেষ হয়ে গেছে। তাঁর পুত্রের মাধ্যমে আমাদের পাপের পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত সাধন করা হয়েছে। যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করেছেন এবং চিরকালের জন্য আমাদের মুক্ত করেছেন।
 আপনি কি জানেন, পাপের জন্য মানুষ কতখানি যন্ত্রনাভোগ করে? আদম ও হবার সময় থেকে এই যন্ত্রনা শুরু। আদম থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পাপের যাতনা মানুষ ভোগ করে আসছে।
 আদি পুস্তক ৩ : ১৫ পদে ঈশ্বর একটি নিয়ম স্থির করলেন যে, জল ও আত্মার দ্বারা আগত যীশু খ্রীষ্টের বলিদানের মাধ্যমে তিনি মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করবেন। এবং কালের পূর্ণতায় আমাদের ত্রাণকর্তা যীশুকে তিনি আমাদের কাছে পাঠালেন।
 যীশুর পূর্বে যোহন বাপ্তাইজককে পাঠানোর প্রতিজ্ঞা তিনি করলেন এবং তিনি প্রতিজ্ঞা রক্ষা করলেন।
 মার্ক ১ : ১-৮ পদে আছে, ‘‘যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার আরম্ভ; তিনি ঈশ্বরের পুত্র। যিশাইয় ভাববাদী গ্রন্থে যেমন লেখা আছে, ‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে। প্রান্তরে এক জনের রব ঘোষণা করিতেছে, তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর, তাঁহার রাজপথ সকল সরল কর; তদনুসারে যোহন উপস্থিত হইলেন, ও প্রান্তরে বাপ্তাইজ করিতে লাগিলেন, এবং পাপমোচনের জন্য মনপরিবর্তনের বাপ্তিস্ম প্রচার করিতে লাগিলেন। তাহাতে সমস্ত যিহুদা দেশ ও যিরুশালেম – নিবাসী সকলে বাহির হইয়া তাঁহার নিকটে যাইতে লাগিল; আর আপন আপন পাপ স্বীকার করিয়া যর্দ্দন নদীতে তাঁহা দ্বারা বাপ্তাইজিত হইতে লাগিল। সেই যোহন উটের লোমের কাপড় পরিতেন, তাঁহার কটিদেশে চর্ম্মপটুকা ছিল, এবং তিনি পঙ্গপাল ও বনমধু ভোজন করিতেন। তিনি প্রচার করিয়া বলিতেন, যিনি আমা অপেক্ষা শক্তিমান, তিনি আমার পশ্চাৎ আসিতেছেন; আমি হেঁট হইয়া তাঁহার পাদুকার বন্ধন খুলিবার যোগ্য নই। আমি তোমাদিগকে জলে বাপ্তাইজ করিলাম, কিন্তু তিনি তোমাদিগকে পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করিবেন।”
 
 

যোহন বাপ্তাইজক সুসমাচারের সাক্ষী এবং অগ্রদূত

 
যোহন বাপ্তাইজক কে?
মানবজাতির মহাযাজক এবং প্রতিনিধি
 
 যারা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা বাপ্তাজিত হয়। বাপ্তিস্ম অর্থ, ‘‘ধৌত হওয়া, সমাহিত হওয়া, ভুবান, অর্পণ করা।” যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধিত হল। গ্রীক ভাষায় ‘ধার্মিকতা’ এর প্রতিশব্দ ‘dikaiosune’ যার অর্থ ধার্মিক হওয়া, এর আরও মানে হল ‘সবচেয়ে সঠিক’, ‘সবচেয়ে উপযুক্ত’।
 ত্রাণকর্তা হওয়ার উদ্দেশ্যে যীশুর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত এবং সবচেয়ে সঠিক উপায় ছিল বাপ্তাইজিত হওয়া। তাই তাঁর বাপ্তিস্মে ও ক্রুশে, জলে ও আত্মায় বিশ্বাসের মাধ্যমে, যীশুকে গ্রহণ করার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরীয় প্রায়শ্চিত্তরূপ দান লাভ করে।
 নূতন নিয়মে যোহন বাপ্তাইজকে পুরাতন নিয়মের সর্বশেষ মহাযাজক। আসুন আমরা মথি ১১ : ১০-১১ পদ দেখি, এখানে বলা হয়েছে যে যোহন বাপ্তাইজক মানবজাতির প্রতিনিধি। নূতন নিয়মেরকালে মহাযাজক হিসাবে যীশুর উপরে তিনি জগতের সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন; এইভাবে পুরাতন নিয়মের মহাযাজকের দায়িত্ব পালন করলেন।
 যীশু নিজেই যোহন বাপ্তাইজক সম্পর্কে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন, মথি ১১ : ১৩ – ১৪ পদে তিনি বলেন, ‘‘কেননা সমস্ত ভাববাদী ও ব্যবস্থা যোহন পর্যন্ত ভাববাণী বলিয়াছে। আর তোমার যদি গ্রহণ করিতে সস্মত হও, তবে জানিবে, যে এলিয়ের আগমন হইবে, তিনি এই ব্যক্তি।” এইজন্য যোহন বাপ্তাইজক, যিনি সর্বশেষ মহাযাজক, পুরাতন নিয়মের মহাযাজক হারোণের বংশধর, বাইবেলে এই বিষয়ে আরো সাক্ষ্য আছে, (লূক ১ : ৫, ১ বংশাবলী ২৪ : ১০ পদ)।
 তাহলে যোহন বাপ্তাইজক কেন একাকী প্রান্তরে বাস করতেন? এবং কেন উটের পশমের বস্ত্র পরতেন। মহাযাজকত্বের নিয়োগের যোগ্যতা রক্ষার জন্য। মানবজাতির প্রতিনিধি হওয়ার কারণে তিনি মানুষের মাঝে বাস করতে পারতেন না। তাই তিনি চিৎকার করে লোকদের বললেন, ‘‘মন ফিরাও, হে সর্পের বংশেরা।” যীশু, যিনি জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন, তাঁর প্রতি মন ফিরানোর জন্য যোহন বাপ্তাইজক তাদের বাপ্তিস্ম দিতেন। আমাদের পরিত্রাণের জন্য যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে জগতের সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন।
 
 
বাপ্তিস্ম দুই ধরনের
 
যোহন বাপ্তাইজক কেন লোকদের বাপ্তিস্ম দিতেন?
পাপ থেকে লোকদের মন ফিরানোর জন্য এবং যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ লাভের জন্য
 
যোহন বাপ্তাইজক লোকদের বাপ্তিস্ম দিতেন এবং যীশুকেও বাপ্তিস্ম দিলেন। প্রথমটা হল ‘‘মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্ম” যা মানুষকে ঈশ্বরের প্রতি ফিরতে আহ্বান জানাতো। যোহন বাপ্তাইজকের আহ্বানে অনেকেই মূর্তিপূজা ত্যাগ করে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছিল।
দ্বিতীয় বাপ্তিস্ম হল যীশুর বাপ্তিস্ম, যার মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করা হয়েছিল। ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধন করার জন্য যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন। জগতের সমস্ত মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য যোহন বাপ্তাইজ যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন (মথি ৩ : ১৫পদ)।
কেন যোহনকে যীশুর বাপ্তিস্ম দিতে হল? জগতের সমস্ত পাপ মুছে ফেলার জন্য, ঈশ্বর যোহনকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন যেন তিনি যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করেন এবং যারা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা যেন পাপমুক্ত হয়।
যোহন বাপ্তাইজক ঈশ্বরের দাস ছিলেন, তাঁর দায়িত্ব ছিল মানবজাতির পাপ ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করা। তিনি ছিলেন মানবজাতির প্রতিনিধি, তিনি পাপ মুক্তির সুসমাচার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এই জন্য যোহন প্রান্তরে একাকী বাস করতেন। যোহন বাপ্তাইজকের আমলে ইস্রায়েল জাতি প্রচণ্ডভাবে কলুষিত ও নষ্ট ছিল।
তাই ঈশ্বর পুরাতন নিয়মে বললেন মালাখি ৪ : ৫-৬ পদ, ‘‘দেখ, সদাপ্রভুর সেই মহৎ ও ভয়ংকর দিন আসিবার পূর্বে আমি তোমাদের নিকট এলিয় ভাববাদীকে প্রেরণ করিব। সে সন্তানদের প্রতি পিতৃগণের হৃদয়, ও পিতৃগণের প্রতি সন্তানদের হৃদয় ফিরাইবে; পাছে আমি আসিয়া পৃথিবীকে অভিশাপে আঘাত করি।”
ইস্রায়েলের সমস্ত লোক, যারা যিহবার উপাসনা করত, তারা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে কলুষিত ছিল। তাঁর সাক্ষাতে কেউই ধার্মিক ছিল না। মন্দিরের ধর্মগুরুরা, উদাহরণ সরূপ –যাজক, ব্যবস্থাবেত্তা এবং অধ্যাপকেরা বিশেষভাবে অন্তরের গভীরে কলুষিত ছিল। ইস্রায়েল জাতি এবং যাজকেরা ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুসারে বলিদান উৎসর্গ করত না।
পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য রক্ত সেচনের বলিদান এবং হস্তার্পণের প্রথা যাজকেরা পরিত্যাগ করেছিল। লেখা আছে যে, মালাখি ভাববাদীর সময়ে যাজকেরা বলিদান প্রথা, হস্তার্পণ এবং রক্ত সেচনের প্রথা পরিত্যাগ করেছিল।
এইজন্য যোহন বাপ্তাইজক তাদের সঙ্গে থাকতে পারেন নাই। তাই তিনি প্রান্তরে চলে গেলেন এবং ,উচ্চৈঃস্বরে বললেন। তিনি কি বললেন?
মার্ক ১:২-৩ পদে যিশাইয় ভাববাদীর ভাববানী লেখা আছে, “যিশাইয় ভাববাদী গ্রন্থে যেমন লেখা আছে, ‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে। প্রান্তরে এক জনের রব ঘোষণা করিতেছে, তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর, তাঁহার রাজপথ সকল সরল কর।”
প্রান্তরে একজনের রব উচ্চৈঃস্বরে মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্মের কথা ঘোষণা করেছিল। বাইবেল কোন ‘‘মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্মর’ এর কথা বলে? যোহন বাপ্তাইজক যে বাপ্তিস্মের কথা ঘোষণা করেছিলেন; সেই বাপ্তিস্ম যা মানুষকে যীশুর কাছে ফিরিয়ে আনে, যেন তারা বিশ্বাস করে যীশু তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং এইভাবে উদ্ধার পায়। পরিত্রাণের দিকে চালিত করাই মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্ম।
মন পরিবর্তন কর এবং বাপ্তাইজিত হও, তোমাদের পাপ তুলে দেওয়ার জন্য যীশুও এভাবে বাপ্তাইজিত হবেন। যোহন বাপ্তাইজক এই ঘোষণা করেছিলেন যে, যীশু জগতের পাপভার তুলে নিয়ে যাবেন এবং মানুষ যেন ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসতে পারে, সেজন্য মানুষকে বাঁচানোর জন্য তিনি ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা বিচারিত হবেন।
‘‘আমি জলে বাপ্তাইজ করাইতেছি বটে, কিন্তু তিনি তোমাদিগকে পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করাইবেন।” ‘‘পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজ করাইবেন” – অর্থ সমস্ত পাপ ধুয়ে দিবেন। বাপ্তাইজিত করার অর্থ ‘ধৌত করা’ যর্দ্দনে যীশুর বাপ্তিস্ম আমাদের বলে যে, ঈশ্বরের পুত্র এইভাবে বাপ্তাইজিত হবেন এবং আমাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের বলে যে, ঈশ্বরের পুত্র এইভাবে বাপ্তাইজিত হবেন এবং আমাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের পাপ তুলে নিয়ে যাবেন।
সুতরাং পাপ থেকে আমাদের ফিরে আসতে এবং তাঁতে বিশ্বাস করতে হবে। তিনি সেই মেষশাবক যিনি মানুষের পাপভার তুলে নিয়ে যান। প্রায়শ্চিত্তের এই সুসমাচারই যোহন বাপ্তাইজক প্রচার করেছিলেন।
 
 
মহাযাজকের দায়িত্ব পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য কাজ করা
 
পরিত্রাণের পথ কে প্রস্তুত করলেন?
যোহন বাপ্তাইজক
 
যিশাইয় ভাববাদী ভাববাণী করেছিলেন, ‘‘যিরূশালেমকে চিত্ত তোষক কথা বল; আর তাহার নিকটে ইহা প্রচার কর যে, তাহার সৈন্যবৃত্তি সমাপ্ত হইয়াছে তাহার অপরাধের ক্ষমা হইয়াছে: তাহার যত পাপ, তাহার দ্বিগুন [ফল] সে সদাপ্রভুর হস্ত হইতে পাইয়াছে” (যিসাইয় ৪০ : ২ পদ)।
আপনার এবং আমার, নির্বিশেষে সকলের পাপ যীশু খ্রীষ্ট তুলে নিয়েছেন। তাঁর বাপ্তিস্মে আদি পাপ, বর্তমান এমন কি ভবিষ্যতের পাপও ধুয়ে গেছে। আমাদের সকলকে তিনি উদ্ধার করেছেন। পাপ থেকে প্রায়শ্চিত্তের পথ সম্বন্ধে আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত।
পাপ থেকে মুক্ত হয়ে আমাদের সকলকে এই সুসমাচারে বিশ্বাস করা উচিত যে, যোহন বাপাইজক বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করেছেন।
এটা চিন্তা করে ভুল বোঝা উচিত নয় যে, ‘‘ঈশ্বর প্রেম, তাই হৃদয়ে পাপ থাকলেও শুধুমাত্র যীশুকে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা স্বর্গে প্রবেশ করতে পারব।”
বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করেছিলেন – পাপ থেকে মুক্তি পেতে হলে এই সত্য এবং ক্রুশে বিশ্বাস করতে হবে। ‘জল’ দ্বারা যোহন বাপ্তাইজক মানব জাতির সমস্ত পাপ যীশুর উপর অর্পণ করলেন।
আমাদিগকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বর প্রথমে যোহন বাপ্তাইজককে জগতে পাঠালেন। ঈশ্বরের দূত যোহন বাপ্তাইজককে রাজার দূত হিসাবে ঈশ্বর পৃথিবীতে পাঠালেন, যেন বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর উপর অর্পণ করতে পারেন। মানব জাতির পক্ষে তিনি মহা যাজকের দায়িত্ব পালন করলেন।
ঈশ্বর আমাদিগকে বললেন, তিনি আমাদের কাছে দূত যোহন বাপ্তাইজকে পাঠাবেন। ‘‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি।” তোমার অগ্রে অর্থাৎ যীশুর আগে। যীশুর আগে যোহনকে পাঠানোর কারণ কি ছিল? বাপ্তিস্মেমের মাধ্যমে যীশুর উপর সমস্ত পাপ অর্পণ করার মাধ্যমে –‘‘সে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে” এটাই ঈশ্বর বোঝাতে চেয়েছিলেন। যেন আমরা পাপ থেকে মুক্তি পেয়ে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি, সেই পথ কে প্রস্তুত করলেন? যোহন বাপ্তাইজক। তোমার বলতে যীশুকে এবং আমার বলতে ঈশ্বর নিজেকে বুঝিয়েছেন। তাই যখন তিনি বলেন, ‘‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।” – এর দ্বারা তিনি কি বুঝিয়েছেন?
আমাদের স্বর্গে যাওয়ার পথ কাকে প্রস্তুত করতে হল? যীশু যেন আমাদের পাপ ধুয়ে নিয়ে যান, সেই জন্য যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে আমাদের পাপ অর্পণ করেছেন।এই সত্য আমরা যেন বিশ্বাস করতে পারি এবং পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি সেই জন্য যীশু এবং যোহন এই কাজ সাধন করলেন।
আমদের পরিত্রাণ কিসের উপর নির্ভর করে? ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টে আমরা বিশ্বাস করি কিনা এবং ঈশ্বরের দূত যোহন যীশুর উপরে জগতের সমস্ত পাপ অর্পণ করেছেন- এটা বিশ্বাস করি কিনা, তার উপরে নির্ভর করে। পাপের ক্ষমা সুসামচার সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। পিতা ঈশ্বর তাঁর দূতকে প্রথমে পাঠালেন যেন তিনি সমস্ত মানবজাতির প্রতিনিধি হিসাবে তাঁর পুত্রকে বাপ্তাইজিত করেন। এই ভাবে তিনি পাপ মুক্তির কাজ সম্পূর্ণ করলেন।
তাঁর পুত্রকে বাপ্তাইজিত করার জন্য ঈশ্বর তাঁর দাস যোহন বাপ্তাইজককে পাঠালেন। যেন যারা তাঁর পুত্রকে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য পরিত্রাণের পথ প্রস্তুত করতে পারেন। যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা যীশুর যীশুর বাপ্তিস্ম ছিল মানুষের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়। কারণ, তিনি যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন, যেন যত লোক যীশুতে বিশ্বাস করে, তারা স্বর্গে যেতে পারে। তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে, এমন কি ভবিষ্যতের পাপ ও তাঁর উপর অর্পিত হল। যীশু এবং যোহন বাপ্তাইজক একসঙ্গে আমাদের স্বর্গে যাওয়ার পথ প্রস্তুত করলেন। এই ভাবে ঈশ্বর যোহন বাপ্তাইজকের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্তির উপায় প্রকাশ করলেন। আমাদের প্রত্যেকের প্রতিনিধি রূপে যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিলেন যেন আমরা প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করে স্বর্গে যেতে পারি। বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন। এটাই পাপ মুক্তির আনন্দের খবর, সেই সুসমাচার।
 
 
যোহন বাপ্তাইজক কেন জন্ম গ্রহণ করলেন?
 
কার মাধ্যমে আমরা যীশুকে বিশ্বাস করতে পারি?
যোহন বাপ্তাইজক
 
 মালাখি ৩: ১ পদে লেখা আছে, ‘‘দেখ আমি তোমার অগ্রে আপন দূতকে প্রেরণ করি, সে আমার পথ প্রস্তুত করিবে।” সতর্কতার সাথে আমাদের বাইবেল পড়া উচিত। আমদের অগ্রে ঈশ্বর কেন তাঁর দূতকে পাঠালেন? কেন যীশুর ৬মাস পূর্বে যোহন বাপ্তাইজক জন্ম গ্রহণ করল।
 বাইবেল সামগ্রিক ভাবে আসলে কি? আমাদের তা বুঝতে হবে। পুরাতন নিয়মের একাংশে মহাযাজক হারোণের কাজের বিবরণ দেওয়া আছে। হারোন ছিলেন মোশির বড় ভাই। তিনি এবং তাঁর পুত্রেরা ঈশ্বর কর্তৃক যাজক নিযুক্ত হয়েছিলেন। অনান্য লেবীয়েরা তাদের অধীনে কাজ করত, বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত পাত্রগুলি এনে দিত। রুটির জন্য গুড়া মিশাত। হারোণের পুত্রগণ সমাগম তাম্বুর অভ্যন্তরে যখন বলিদান উৎসব করত তখন তারা এই কাজগুলি করত।
 কাজেই, নিজেদের মধ্যে সমস্ত কাজে সমভাবে অংশ গ্রহণ করার জন্য হারোণের পুত্রগণ নিযুক্ত হয়েছিল। কিন্তু সপ্তম মাসের দশম দিন, প্রায়শ্চিত্তের দিন-মহাযাজক একাই তাঁর লোকদের পক্ষে প্রায়শ্চিত্তের বলি উৎসর্গ করতেন।
 লূক ১:৫ পদে, যোহন বাপ্তাইজকের বংশ পরিচয় পাওয়া যায়। যীশুকে সঠিক ভাবে বুঝতে হলে, ঈশ্বরের দূত যোহন বাপ্তাইজক সম্বন্ধে সঠিক ধারনা থাকতে হবে। আমরা যীশুর সমন্ধে অনেক কিছু জানার আগ্রহ প্রকাশ করি, কিন্তু তার পূর্বে যিনি এসেছিলেন সেই যোহন বাপ্তাইজকের বিষয় আমরা যথেষ্ট অবহেলা করি। আমি আপনাদের এ বিষয়ে বুঝতে সাহায্য করতে চাই। ‘‘ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের শুরু। যেন ভাববাদী গ্রস্থে লিখিত আছে, দেখ আমি তোমার অগ্রে আমার দূতকে প্রেরণ করিব।” স্বর্গীয় সুসমাচার সব সময় যোহন বাপ্তাইজকের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।
যোহন বাপ্তাইজক সম্পর্কে ভাল ভাবে বুঝতে পারলে যীশুর প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে আমরা পরিষ্কার ভাবেবুঝতে পারব এবং তাঁকে পরিষ্কারভাবে জানতে পারব এবং তাঁকে বিশ্বাস করতে পারব।
কোন জাতির পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে হলে, যেমন সেই দেশের রাজদূতের মাধ্যমে জানা যায়। এই বিষয়টা হচ্ছে তেমনি। যখন আমরা যোহন বাপ্তাইজক সম্পর্কে জানতে পারি, তখন ঈশ্বরের প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে ভালভাবে বুঝতে পারি।
কিন্তু দুঃখের বিষয় যে, বর্তমানে অনেক খ্রীষ্টিয়ান যোহন বাপ্তাইজক সম্পর্কে গুরুত্ব দেয় না। ঈশ্বর হতাশ হয়েছিলেন বা তাঁর অন্যকিছু করার ছিল না –এই কারনে যে তিনি যোহন বাপ্তাইজককে পাঠিয়েছিলেন তা নয়। ৪টি সুসমাচারেই যীশুর প্রায়শ্চিত্তের কথা লেখার আগে যোহন বাপ্তাইজকের কথা লেখা আছে।
কিন্তু বর্তমান কালের প্রচারকরা তাঁকে অবজ্ঞা করে এবং প্রচার করে যে পাপ মুক্তি পাওয়ার জন্য শুধু যীশুকে বিশ্বাস করাই যথেষ্ট। আসলে তারা মানুষকে পাপী হিসাবে বাঁচতে এবং নরকে যেতে পরিচালনা দিচ্ছে। যোহন বাপ্তাইজকের বিষয় ছাড়া শুধুমাত্র যীশুকে আপনি যদি বিশ্বাস করেন, তাহলে খ্রীষ্টিধর্ম অন্যান ধর্মের মত হয়ে যাবে। সত্য যদি না জানেন তাহলে আপনি কিভাবে মুক্তি পাবেন? এটা অসম্ভব।
 পাপ মুক্তির সুসমাচার ততটা সহজ নয়, ততটা সরলও নয়। অনেক লোকের ধারনা যীশু ক্রুশে মরেছেন বিধায় শুধুমাত্র ক্রুশে বিশ্বাস করলেই পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাপ অর্পণের সত্য না জেনে আপনি যদি শুধু ক্রুশে বিশ্বাস করেন, বিশ্বাসের কোন স্তরই আপনাকে মুক্তি দিতে পারবেনা।
 এই জন্য সঠিক উপায়ে পাপের মুক্তি সাধন করা হয়েছে এবং কি রূপ যীশুর উপরে জগতের পাপ অর্পণ করা হয়েছে তা জানানোর জন্য যোহন বাপ্তাইজককে ঈশ্বর পাঠিয়েছিলেন। একমাত্র এই সত্য জানলে আমরা বুঝতে পারব যে ঈশ্বরের পুত্র যীশু তাঁর নিজের উপরে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন।
 যোহন বাপ্তাইজক আমাদের প্রায়শ্চিত্তের সত্য জানিয়েছেন। যীশুর ঈশ্বরত্ব সম্পর্কে তিনি বলেছেন এবং মানুষ তাঁকে, স্বর্গ থেকে নেমে জ্যোতিকে বিশ্বাস করবেন না, সে বিষয়ও তিনি বলেছেন। যোহন ১ অধ্যায় তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, যীশুকে বাপ্তাইজিত করার মাধ্যমে তিনি পাপ মুক্তির সুসমাচার প্রস্তুত করবেন।
 যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা আমরা যদি প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের সাক্ষ্য না জানতাম, তা হলে কিভাবে যীশুকে বিশ্বাস করতাম? আমরা কখনও যীশুকে দেখিনি। যেহেতু আমরা বিভিন্ন কৃষ্টি ও ধর্মতত্ত্ব থেকে এসেছি, তাই কিভাবে আমরা যিহোবাকে বিশ্বাস করতাম?
 পৃথিবীতে এত ধর্মীয় মতবাদ কিভাবে আমরা যীশু খ্রীষ্টকে জানতে পারতাম? যীশু ঈশ্বরের পুত্র, নিজের উপর আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে আমাদিগকে তিনি পাপ মুক্ত করেছেন–এই সত্য আমরা কি ভাবে জানতাম?
 যীশু আমাদের ত্রাণকর্তা, এবং প্রায়শ্চিতের সম্বন্ধে প্রাথমিক বাক্যগুলো জানার জন্য আমাদের পুরাতন নিয়ম জানা উচিত। সঠিক ভাবে বিশ্বাস করার জন্য আমাদের সঠিক জ্ঞান প্রয়োজন। সত্যিকার জ্ঞান ছাড়া আমরা কিছুই করতে পারি না। যীশুতে বিশ্বাস করার জন্য এবং মুক্তি পাবার জন্য যোহন বাপ্তাইজক যে সুসমাচারের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সেই সুসমাচারে, এবং যোহন বাপ্তাইজকের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। যীশুতে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে সেই পাপ মুক্তির সত্য জানতে হবে।
কাজেই, যীশু যেমন বলেছেন, ‘‘আর তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে।” আমাদিগকে যীশুর মাধ্যমে সেই পাপ মুক্তির সত্য জানতে হবে।
 
 
বাইবেলে যে সব প্রমান আছে
 
কোন বিষয় দিয়ে ৪টি সুসমাচার শুরু হয়েছে?
যোহন বাপ্তাইজকের আবির্ভাব থেকে
        
 আসুন, বাইবেল বণিত প্রায়শ্চিত্তের প্রমান গুলি আমরা আরো একটু বিশ্লেষণ করি। ৪টি সুসমাচারে যোহন বাপ্তাইজক সম্পর্কে কি বলা হয়েছে, তিনি কে ছিলেন, কেন তাকে মানব জাতির প্রতিনিধি বলা হয়েছে, অথবা তাঁকে সর্বশেষে মহাযাজক বলা হয়েছে, কিভাবে তার মাধ্যমে জগতের পাপ ন্যাস্ত করা হয়েছে, এবং যীশু তাঁর নিজের উপর পাপ তুলে নিয়েছিলেন কিনা – এই সকল বিষয় গুলি উম্মোচন করি।
 চারটি সুসমাচারই যোহন বাপ্তাইজকের কাহিনী দ্বারা শুরু হয়েছে। যোহন ১:৬ পদে সুসমাচারের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আমাদের বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে কে যীশুর উপরে পাপ অর্পণ করার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ‘‘একজন মনুষ্য উপস্থিত হইলেন, তিনি ঈশ্বর হইতে প্রেরিত ছিলেন, তাঁহার নাম যোহন। তিনি সাক্ষ্যের জন্য আসিয়াছিলেন, যেন সেই জ্যোতির বিষয় সাক্ষ্য দেন, যেন সকলে তাঁহার দ্বারা বিশ্বাস করে।”
 এখানে বলা হয়েছে, ‘‘যেন সকলে তাঁহার দ্বারা বিশ্বাস করে,” এবং যেন তিনি ‘‘সেই জ্যোতির বিষয় সাক্ষ্য দেন।” যীশু খ্রীষ্টই সেই জ্যোতি। অথাৎ যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্যই যোহন এসেছিলেন, যেন তাঁর মাধ্যমে সকলে বিশ্বাস করতে পারে। এখন আসুন আমরাও নিবিড় ভাবে দেখি।
 মথি ৩:১৩-১৭ পদে আছে, ‘‘তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীলে হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন আপনার আমারই বাপ্তিস্ম হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমার পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ইনি আমার প্রিয় পুত্র, ইহাতেই আমি প্রীত।”
 
কেন যোহন বাপ্তাইজকের বংশাবলী বুঝতে হবে?
কারণ, বাইবেল অনুযায়ী যোহন বাপ্তাইজক মানবজাতির মহাযাজক
        
 যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন, লূক ১:৭-৮ পদে বলে যে, যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে যীশু খ্রীষ্ট সকল পাপের প্রায়শ্চিত্ত পূর্ণরূপে সাধন করলেন। আসুন, এক নজরে দেখি।
         লূক ১:১-১৪ পদে আছে, ‘‘প্রথম অবধি যাহারা স্বচক্ষে দেখিয়াছেন, এবং বাক্যের সেবা করিয়া আসিয়াছেন, তাঁহারা আমাদিগকে যেমন সমর্পণ করিয়াছেন, তদনুসারে অনেকেই আমাদের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে গৃহীত বিষয়াবলির বিবরন লিপিবদ্ধ করিতে হস্তক্ষেপ করিয়াছেন, সেই জন্য আমিও প্রথম হইতে সকল বিষয় সবিশেষ অনুসন্ধান করিয়াছি বলিয়া, হে মহামহিম থিয়ফিল, আপনাকে আনুপূর্ব্বিক বিবরণ লেখা বিহিত বুঝিলাম; যেন, আপনি যে সকল বিষয় শিক্ষা পাইয়াছেন, সেই সকল বিষয় নিশ্চয়তা জ্ঞাত হইতে পারেন।
         যিহূদীয়ার রাজা হেরোদের সময় অবিয়ের পালার মধ্যে সখরিয় নামের একজন যাজক ছিলেন; তাঁহার স্ত্রী হারোণ বংশীয়া, তাঁহার নাম ইলীশাবেৎ। তাঁহার দুই জন ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্ম্মিক ছিলেন,প্রভুর সমস্ত আজ্ঞা ও বিধি অনুসারে নির্দ্দোষরূপে চলিতেন। তাঁহাদের সন্তান ছিলনা, কেননা ইলীশাবেৎ বন্ধ্যা ছিলেন, এবং দুইজনেরই অধিক বয়স হইয়াছিল।
         একদা যখন সখরিয় নিজ পালার অনুক্রমে ঈশ্বরের সাক্ষাতে যাজকীয় কার্য্য করিতেছিলেন, তখন যাজকীয় কার্য্যর প্রথানুসারে গুলিবাঁটক্রমে তাঁহাকে প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করিয়া ধূপ জ্বালাইতে হইল। সেই ধূপদাহের সময়ে সমস্ত লোক বাহিরে থাকিয়া প্রার্থনা করিতেছিল। তখন প্রভুর এক দূত ধূপবেদির দক্ষিণ পার্শ্বে দাঁড়াইয়া তাঁহাকে দর্শন দিলেন। দেখিয়া সখরিয় ত্রাসযুক্ত হইলেন, ভয় তাঁহাকে আক্রমন করিল। কিন্তু দুত তাঁহাকে বলিলেন, সখরিয়, ভয় করিওনা, কেননা তোমার বিনতি গ্রাহ্য হইযাছে, তোমার ইলীশাবেৎ তোমার জন্য পুত্র প্রসব করিবেন, ও তুমি তাহার নাম যোহন রাখিবে আর তোমার আনন্দ ও উল্লাস হইবে, এবং তাহার জন্মে অনেকে আনন্দিত হইবে।”
যোহনের বংশধর সম্পর্কে লূক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যীশুর শিষ্য লূক প্রথম থেকে যোহনের বংশধারা ব্যাখ্যা করেছেন। থিওফিল নামে ব্যক্তি ভিন্ন সংস্কৃতি থেকে প্রভুর কাছে এসেছিল, লূক তাকে সুসমাচার শিক্ষা দিয়েছিলেন।
কাজেই লূক ভাবলেন, পাপীদের ত্রানকর্তা প্রভু যীশুর সম্পর্কে শিক্ষা দিতে গেলে যোহন বাপ্তাইজকের বংশধারা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা প্রয়োজন।
লূক ১:৫ -৯ পদে তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘‘যিহূদিয়ার রাজা হেরোদের সময় অবিয়ের পালার মধ্যে সখরিয় নামের একজন যাজক ছিলেন; তাঁহার স্ত্রী হারোনবংশীয়া, তাঁহার নাম ইলীশাবেৎ। তাঁহার দুই জন ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্ম্মিক ছিলেন, প্রভুর সমস্ত আজ্ঞা ও বিধি অনুসারে নির্দ্দোষরূপে চলিতেন। তাঁহাদের সন্তান ছিল না, কেননা ইলীশাবেৎ বন্ধ্যা ছিলেন এবং দুইজনেরই অধিক বয়স হইয়াছিল।
একদা যখন সখরিয় নিজ পালার অনুক্রমে ঈশ্বরের সাক্ষাতে যাজকীয় কার্য্য করিতেছিলেন, তখন যাজকীয় কার্য্যর প্রথানুসারে গুলিবাঁটক্রমে তাঁহাকে প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করিয়া ধূপ জ্বালাইতে হইল।”
সখরিয় যখন যাজকীয় রীতি অনুসরন করে প্রভুর কাজ করছিল তখন একটা ঘটনা সেখানে ঘটল। লূক পরিষ্কার ভাবে সেখানে সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, সখরিয় হারোণের বংশধর ছিলেন। তাহলে সখরিয় কোন অংশের ছিলেন? এটা একটা গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘‘একদা সখরিয় নিজ পালাক্রমে ঈশ্বরের সাক্ষাতে যাজকীয় কার্য্য করিতেছিলেন।” আমরা দেখতে পাই যে, লূক সখরিয় সমন্ধে এত ভালভাবে জানতেন যে, তিনি সখরিয় ও ইলীশাবেথের কাহিনী থেকে পাপ মুক্তির সুসমাচার লিখতে শুরু করেছেন।
যেহেতু আমরাও পরজাতীয়, ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠি থেকে এসেছি, তাই বিস্তারিত ভাবে এবং ধাপে ধাপে যীশুর পরিত্রাণ ব্যখ্যা না করলে আমরা বুঝতে পারবনা। আসুন আমরা দেখি পূর্ণরূপে কি বর্ণনা আছে। সখরিয় এবং ইলীশাবেথের মাধ্যমে যোহন বাপ্তাইজকের জন্ম হল। ইলীশাবেৎ ছিলেন হারোণ বংশের কন্যা, এখন আসুন সখরিয় এবং যোহনের বংশধারা দেখি।
 
 
যোহন বাপ্তাইজকের বংশধারা
 
যোহন বাপ্তাইজক কার বংশধর ছিলেন?
মহাযাজক হারোণের
        
 যোহন বাপ্তাইজকের বংশধারা বুঝতে হলে আমাদের পুরাতন নিয়ম পড়তে হবে, ১ বংশাবলী ২৪:১-১৯ পদ-
         ‘‘হারোণের – সন্তানদের পালার কথা। হারোণের পুত্র নাবদ ও অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামর। কিন্তু নাবদ ও অবীহূ আপনাদের পিতার অগ্রে মারা পড়িল, এবং তাহাদের পুত্র ছিল না; অতএব ইরিয়াসর ও ঈথামর যাজক হইলেন। আর দায়ূদ এবং ইলিয়াসরের বংশজাত সাদোক ও ঈথামরের বংশজাত অহীমেলক যাজকদিগকে সেবাকর্ম সম্বন্ধীয় আপন আপন শ্রেণীতে বিভক্ত করিলেন। তাহাতে জানা গেল, পুরুষদের সংখ্যাতে ঈথামের সন্তানগণ অপেক্ষা ইলিয়াসের সন্তানগণের মধ্যে প্রধান লোক অনেক; আর তাহাদিগকে এইরূপ বিভাগ করা হইল; ইরিয়াসের সন্তানগনের মধ্যে ষোলজন পিতৃকুলপতি, ও ঈথামের সন্তানগনের মধ্যে আটজন পিতৃকুলপতি হইল। পিতৃকুল নির্ব্বিশেষে গুলিবাঁট দ্বারা তাহাদিগকে বিভাগ করা হইল, কেননা ধর্ম্মধামের অধ্যক্ষগণ ও ঈশ্বরীয় অধ্যক্ষগণইলিয়াস ও ঈথমের উভয়ের সন্তানগনের মধ্যে হইতে
[গৃহীত] হইল। আর রাজার, অধ্যক্ষদের, সাদোক ও যাজকের অবিয়াথেরর পুত্র অহীমেলকের ও যাজকীয় ও লেবীয় পিতৃকুলপতিদের সাক্ষাতে লেবীয় বংশজাত নথনেলের পুত্র শমরিয় লেখক তাহাদের নাম লিখিলেন; বস্তুত ইরিয়াসের জন্য এক, ও ঈথমের জন্য এক পিতৃকুল গ্রহণ করা হইল।
         তখন প্রথম গুলিবাঁট যিহোয়ারীবের নামে উঠিল; দ্বিতীয়, যিদয়িয়ের, তৃতীয় হারীমের, চতুর্থ সিয়োরামের, পঞ্চম মল্কিয়ের, ষষ্ঠ মিয়ামীনের, সপ্তম হক্কোষের, অষ্টম অবিয়ের, নবম যেশূয়ের, দশম শখনিয়ের, একাদশ ইলীয়াশীবের, দ্বাদম যাকীমের, ত্রয়োদশ হুপ্পের, চতুর্দশ যেশবারের, পঞ্চদশ বিলৃগার, ষোড়শ ইম্মেবের, সপ্তদশ হেজীরের, অষ্টাদশ হপ্পিসেসের, ঊনবিংশ পথাহিয়ের, বিংশ যিহিস্কেলের, একবিংশ যাখীনের, দ্বাবিংশ গামূলের, ত্রয়োবিংশ দলায়ের, চতুবিংশ মাসিয়ের [নাম উঠিল]। ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞানুসারে তাহাদের পিতা হারোন কওক নিরূপিত যে তাহাদের বিধান, তদনুসারে সদাপ্রভুর গৃহে উপস্থিত হইবার বিষয়ে তাহাদের কর্মের জন্য এই শ্রেণী হইল।”
         আসুন আমরা ১০ পদ আবার পড়ি, ‘‘সপ্তম হাক্কোষের, অষ্টম অবিয়ের।” এখানে দায়ূদ গুলিবাঁট করে হারোণের পুত্রগণকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন যেন সঠিক ভাবে বালদান উৎসর্গ করা হয়। (আপনারা সবাই যেমন জানেন যে, হারোণর মোশীয় বড় ভাই ছিলেন। মোশিকে ঈশ্বর তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে অভিষেক করেছিলেন এবং ইস্রায়েল সন্তানগনের পক্ষে হারোণকে পবিত্র সমাগমতাম্বুর মহাযাজক হিসাবে অভিষেক করেছিলেন।)
         অন্যান্য লেবীয় যাজকরা এবং হারোণ ও তাঁর পুত্রগণের অধীনে ছিল, তাঁর পুত্রগণ ঈশ্বরের সাক্ষাতে সব বলিদানের দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। দায়ুদ গুলিবাঁট করার পূর্বে, হারোণের যাজক পুত্রগণ গুলিবাঁট করত এবং এইজন্য অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতো।
         তাই প্রত্যেক বিভাগকে সাজানোর জন্য দায়ূদ নিয়ম তৈরী করলেন। হারোণের পৌত্র ও অবিয়ের মাঝে ২৪টি বিভাগ ছিল। এখানে বলা হয়েছে, অবিয়ের বিভাগে কোন এক যাজক ছিল যার নাম সখরিয়।সুতারাং সখরিয় অবিয়ের বিভাগের যাজক ছিলেন। তাঁরা উভয়ই মহাযাজক হারোণের বংশধর ছিলেন।
         অবিয়ের বিভাগের যাজক সখরিয়ই যোহন বাপ্তাইজকের পিতা। বাইবেল থেকে জানা যায় যে, তারা নিজেদের বংশে বিয়ে করতেন।
আমরা জানি, যাকোব তাঁর মায়ের কুলে এক কণ্যাকে বিয়ে করেছিলেন। বংশধারা এই বর্ণনা অবশ্যই গুরুত্ব বহন করে। এখানে বলা হয়েছে, ‘‘অবিয়ের বিভাগের কোন এক যাজক যাহার নাম সখরিয়।”
সুতরাং তিনি নিশ্চিতভাবেই হারোণের বংশধর ছিলেন। কে? সখরিয়, যোহন বাপ্তাইজকের পিতা। যীশুর প্রায়শ্চিত্ত যোহন বাপ্তাইজকের কাজ এবং যীশুর উপরে জগতের পাপ অর্পণ – এই সব বিষয় বিশ্লেষণের জন্য এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক।
 
 
শুধুমাত্র হারোণের পুত্রগণ যাজকের দায়িত্ব পালন করবে
 
পুরাতন নিয়মের কালে কারা মহাযাজকের দায়িত্ব পালন করতে পারত?
হারোণ ও তাঁর পুত্রগণ
 
 বাইবেলের কোন অংশে বর্ণিত আছে যে, হারোণের পুত্রগণ যাজকের দায়িত্ব পালন করবে?
 গণনাপুস্তক ২০:২২-২৯ পদ। ‘‘আর ইস্রায়েল – সন্তানগন অর্থাৎ সমস্ত মন্ডলী কাদেশ হইতে প্রস্থান করিয়া হোর পর্ব্বতে উপস্থিত। তখন ইদোম দেশের সমীর নিকটস্থ হোর পর্ব্বতে ঈশ্বর মোশী ও হারোনকে কহিলেন, হারোন আপন লোকেদের নিকটে সংগৃহীত হইবে; কেননা আমি ইস্রায়েল সন্তানগনকে যে দেশদিয়াছি, সেই দেশে সে প্রবেশ করিবেনা; কারন মরীবা জরের নিকটে তোমরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচারী হইয়াছিলে। তুমি হারোনকে ও তার পুত্র ইলীয়াসরকে হোর পর্ব্বতের উপরে লইয়া যাও। আর হারোণকে তাহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাও; হারোণ সে স্থানে [আপন লোকদের কাছে] সংগৃহীত হইবে, সেখানে মরিবে। তখন মোশী সদাপ্রভুর আজ্ঞানুযায়ী কর্ম্ম করিলেন; তাঁহারা সমস্ত মন্ডলীর সাক্ষাতে হোর পর্ব্বতে উঠিলেন।পরে মোশী হারোনকে তাহার বস্ত্র ত্যাগ করাইয়া তাহার পুত্র ইলীয়াসরকে তাহা পরিধান করাইলেন; এবং হারোণ সে স্থানে পর্ব্বতশৃঙ্গে মরিলেন; পরে মোশী ও ইলীয়াসব পর্ব্বত হইতে নামিয়া আসিলেন। আর যখন সমস্ত মন্ডলী দেখিল যে, হারোণ মরিয়া গিয়াছেন, তখন সমস্ত ইস্রায়েল – কুল হারোণের জন্য ত্রিশ দিন পর্যন্ত শোক করিল।”
 যাত্রাপুস্তকে ঈশ্বরের ব্যবস্থা লেখা আছে। পিতারা যেমন তাঁহাদের বয়সের কালে করেছিলেন, তেমনি মহাযাজকের পুত্রগণও মহাযাজকত্ব করবে।
 যাত্রাপুস্তক ২৮:১-৫ পদে, ‘‘আর তুমি আমার যাজনার্থে ইস্রায়েল সন্তানগণের মধ্যে হইতে হারোণকে ও তাহার সঙ্গে তাহার পুত্রগণকে আপনার নিকট উপস্থিত করিবে; হারোণ এবং হারোণের পুত্র নাদব, অবীহ, ইলীয়াসর ও ঈথামরকে উপস্থিত করিবে।
 আর তোমার ভ্রাতা হারোণের জন্য, গৌরব ও শোভার নিমিত্তে তুমি পবিত্র বস্ত্র করিবে। আর আমি যাহাদিগকে বিজ্ঞতার আত্মায় পৃর্ণ করিয়াছি, সেই সকল বিজ্ঞমনা লোকদিগকে বল; যেন আমার যাজনার্থে হারোণকে পবিত্র করিতে তাহার তাহার বস্ত্র প্রস্তুত করে। এই সকল বস্ত্র তাহার প্রস্তুত করিবে; বুকপাটা, এফোদ, পরিচ্ছদ, চিত্রিত, অঙ্গরক্ষক বস্ত্র, উষ্ণীষ ও কটিবন্ধন; তাহার আমার যাজনার্থে তোমার ভ্রাতা হারোণের ও তাহার পুত্রগনের নিমিত্ত পবিত্র বস্ত্র প্রস্তুত করিবে। তাহার স্বর্ণ এবং নীল, বেগুনে ও লাল এবং সাদা মসীনা সূত্র লইবে।” মোশির ভাই হারোণকে ঈশ্বর পরিষ্কার ভাবে যাজকত্বের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। যাজকত্ব করার অধিকার অন্য কারো ছিল না। এই জন্য ঈশ্বর মোশিকে আদেশ করলেন যেন হারোণ মহাযাজক হয় এবং বাইবেলের বর্ণনানুযায়ী তাঁর জন্য পোশাক প্রস্তুত করা হয়। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কখনই ভুলে যাওয়া উচিত নয়।
যাত্রাপুস্তক ২৯:১-৯ পদে আছে, ‘‘আর আমার যাজন কর্ম্ম করণার্থে তাহাদিগকে পবিত্র করিবার জন্য তুমি তাহাদের প্রতি এই কর্ম্ম করিবে; নির্দ্দোষ একটি পুংগোবৎস ও দুইটি মেষ লইবে; আর তাড়ীশূণ্য, রুটি, তৈলমিশ্রিত তাড়ীশূণ্য সরুচাকলী গোমের ময়দা দ্বারা প্রস্তত করিবে; এবং সেইগুলি এক ডালিতে রাখিবে, আর সেই ডলিতে করিয়া আনিবে এবং ঐ গোবৎস ও দুই মেষ আনিবে। আর হারোণকে ও তাহার পুত্রগণকে সমাগম তাম্বুর দ্বার – সমীপে আনিয়া জলে স্নান করাইবে। আর সেই সকল বস্ত্র লইয়া হারোণকে অঙ্গরক্ষিনী, এফোদ পরিচ্ছদ, এফোদ বুনানি করা পটুকা তাহাতে আবদ্ধ করিবে। আর তাহার মস্তকে উষ্ণীষ দিবে ও উষ্ণীষের উপরে পবিত্র মুকুট দিবে। পরে অভিষেকার্থে তৈল লইয়া তাহার মস্তকের উপরে ঢালিয়া তাহাকে অভিষিক্ত করিবে। আর তুমি তাহার পুত্রগণকে আনিয়া অঙ্গরক্ষক বস্ত্র পরাইবে। আর হারোণকেও তাহার পুত্রগণকে কটিবন্ধন পরাইবে, ও তাহাদের মস্তকে শিরোভূষণ বাঁধিয়া দিবে; তাহাদের যাজকত্বপদে তাহাদের চিরস্থায়ী অধিকার থাকিবে। আর তুমি হারোণের ও তাহার পুত্রগণের ও তাহার পুত্রগণের হস্তপূরণ করিবে।”
হারোণ এবং তার পুত্রগণকে এফোদ এবং বুনানী পটুকা দিয়ে আবদ্ধ করার নিয়ম ছিল। যাজকত্ব তাদের চিরস্থায়ী কাজ ছিল। ঈশ্বর সুনির্দিষ্ট করে হারোণ এবং তার বংশধরকে যাজকত্বের দায়িত্ব চিরস্থায়ী ভাবে দিয়েছিলেন। তিনি সুনির্দিষ্ট ভাবে যখন বলেন, ‘‘চিরস্থায়ী অধিকার” তখন সেই অর্থে যীশুর পরবর্তী সময়কেও বুঝান হয়েছে।
 সেই জন্য লূক মহাযাজক হারোণের বংশধর সখরিয়ের বর্ণনা পরিষ্কার ভাবে দিয়েছেন। সদাপ্রভুর মন্দিরে ঈশ্বরের সাক্ষাতে সখরিয় যখন যাজকীয় দায়িত্ব পালন করছিলেন তখন একজন স্বর্গীয় দূত তাঁকে দেখা দিলেন এবং বললেন তার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়েছে এবং তাঁর স্ত্রী তাঁর জন্য পুত্র সন্তান প্রসব করবেন। সখরিয় বিশ্বাস করলেন না, আমার স্ত্রীর অনেক বয়স হয়ে গেছে, তিনি কি ভাবে পুত্র প্রসব করবেন? তাঁর এই সন্দেহের জন্য, ঈশ্বরের বাক্য যে সত্য এটা বুঝানোর জন্য সখরিয় কিছু কাল বোবা থাকলেন।
 যথাসময়ে তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী হলেন এবং তার কিছুদিন পর এক জন কুমারী, মরিয়ম গর্ভবতী হলেন, এই দুটো ঘটনা ঈশ্বরীয় পরিত্রাণ কার্যের প্রাথমিক ধাপ। কলুষিত মানব জাতিকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বর তাঁর দাস যোহনকে এবং একজাত পুত্র যীশুকে এই জগতে পাঠিয়েছিলেন।
 এইজন্য জগতের সমস্ত পাপভার পুত্রের উপরে অর্পণ করার জন্য ঈশ্বর যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম দেওয়ালেন, যেন যে এই সত্যে বিশ্বাস করে, সে উদ্ধার পায়।
 
 
ঈশ্বরের বিশেষ দূরদর্শিতা
 
প্রায়শ্চিত্তের পক্ষে কাজ করার জন্য যীশুর আগে ঈশ্বর কাকে প্রস্তুত করেছিলেন?
যোহন বাপ্তাইজককে
        
 কুমারী মরিয়মের গর্ভে যে যীশু খ্রীষ্টের জন্ম হয়েছিল, তিনি সমগ্র জাতির ত্রার্ণকর্তা। যিহুদা বংশীয় যোষেফের সাথে মরিয়ম বাকদত্তা ছিলেন। মহাযাজক হারোণের গৃহে যেমন যোহন বাপ্তাইজকের জন্মগ্রহণের কথা ছিল, তেমনিভাবে ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে যিহুদা কুলে যীশুর জন্ম গ্রহণের কথা ছিল।
 যোহন এবং যীশু ঈশ্বরের পরিকল্পনানুসারেই এই জগতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যীশুকে বাপ্তাইজক করার জন্য এবং জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করার জন্য যোহন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পুরাতন ও নুতন নিয়মে বর্ণিত ঈশ্বরের নিয়ম রক্ষার জন্য মহাযাজকের কোন এক বংশধরকে প্রায়শ্চিত্তের বলিদান উৎসর্গ করতে হবে। যেন যীশুর প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার সঠিকভাবে প্রচার ও বিশ্বাস করা হয়।
 যাত্রাপুস্তকে ইস্রায়েল জাতিকে ঈশ্বর ব্যবস্থা ও নিয়ম দিয়েছিলেন। ঈশ্বরের ব্যবস্থা, সমাগম তাম্বুতে বলিদান কাজ পরিচালনা, যাজকদের পোশাকাদি পর্যন্ত, বলিদানের পূর্ণ বিবরণ, পুরুষাণুক্রমে যাজকদের পুত্রদের উপর যাজকীয় দায়িত্ব – এ সবই ঈশ্বর নির্ধারণ করে দিলেন।
 এই জন্য হারোণের বংশধরেরা বলিদান উৎসর্গ করার অধিকার প্রাপ্ত ছিলেন, হারোণের বংশ থেকেই মহাযাজক হতে পারত। আপনি কি বুঝতে পারছেন, বিষয়টা কেমন ছিল?
 কিন্তু হারোণের অনেক বংশধরের মধ্য থেকে ঈশ্বর একজন নির্দিষ্ট যাজক সখরিয় ও তাঁর স্ত্রী ইলীশাবেতকে বেছে নিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি।” ঈশ্বর যখন সখরিয়কে বললেন যে, তাঁর মাধ্যমে ইলীশাবেৎ গর্ভধারণ করবেন ও পুত্র প্রসব করবেন, তখন তিনি এতটা চমৎকৃত হলেন যে, পুত্র জন্মলাভ না করা পর্যন্ত এবং তাঁর নাম না রাখা পর্যন্ত সখরিয় বোবা হয়ে রইলেন।
 এবং আসলেই সেই গৃহে এক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করল। ইস্রায়েলের প্রথা অনুযায়ী শিশুটির নাম রাখার সময় হলো এবং পিতার নামে পুত্রের নাম রাখা হলো। ‘‘পরে ইলীশাবেতের প্রসবকাল সম্পূর্ণ হইলে তিনি পুত্র প্রসব করিলেন। তখন, তাঁহার প্রতিবাসী ও আত্মীয়গণ শুনিতে পাইল যে, প্রভু তাঁহার প্রতি মহা দয়া করিয়াছেন, আর তাহার তাঁহার সহিত আনন্দ করিল। পরে তাহার অষ্টম দিনে বালকটির ত্বকচ্ছেদ করিতে আসিল, আর তাহার পিতার নামানুসারে তাহার নাম সখরিয় রাখিতে চাহিল। কিন্তু তাহার মাতা উত্তর করিয়া কহিলেন, তাহা নয়, ইহার নাম যোহন রাখা যাইবে। তাহার তাঁহাকে কহিল, আপনার গোষ্ঠীর মধ্যে এ নামে তো কাহাকে ডাকা হয় না। পরে তাহার তাহার পিতাকে সঙ্কেতে জিজ্ঞাসা করিল, আপনার ইচ্ছা কি? ইহার কি নাম রাখা যাইবে? তিনি একখানা লিপিফলক চাহিয়া লইয়া লিখিলেন, ইহার নাম যোহন। তাহাতে সকলে আশ্চর্য জ্ঞান করিল। আর তখনই তাঁহার মুখ ও তাঁহার জিহ্বা খুলিয়া গেল, এবং তিনি কথা কহিলেন, ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিতে লাগিলেন। ইহাতে চারিদিকে প্রতিবাসীরা সকলে ভয়গ্রস্থ হইল, আর যিহূদিয়ার পাহাড় অঞ্চলের সর্ব্বত্র লোকে এই সমস্ত কথা বলাবলি করিতে লাগিল। আর যত লোক শুনিল, সকলে তাহা হৃদয়ে স্থান দিয়া বলিতে লাগিল, এ বালকটি তবে কি হইবে? কারণ প্রভুর হস্তও তাহার সহবর্তী ছিল (লুক ১:৫৭-৬৬)”
 সেই সময়ে সখরিয় বোবা ছিলেন। আত্মীয় – স্বজনেরা শিশুটির নাম সখরিয় রাখতে চাইল। কিন্তু তাঁর মা বললেন যে, তাঁর নাম যোহন রাখা হবে। আত্মীয়রা বলল, তাদের পরিবারে এই নামের কেউ নেই, পিতার নামেই তাঁর নাম রাখা হোক।
 ইলীশাবেত যখন নাছোড় বান্দা যে, তাঁর নাম যোহন রাখা হবে, আত্মীয়েরা তখন সখরিয়ের কাছে গেল এবং সখরিয়কে প্রশ্ন করল ছেলের কি নাম হবে। সখরিয় তখনও কথা বলতে পারতেন না। তাই তিনি একখানা লেখার ফলক চাইলেন এবং লিখলেন ‘যোহন’। এই অস্বাভাবিক নাম পছন্দ করার কারণে তাঁর আত্মীয় স্বজনেরা আশ্চর্য হয়ে গেল।
 নামকরণের পর পরই সখরিয়ের মুখ খুলে গেল। তিনি ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন এবং পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে ভাববাণী বললেন।
 
 

যীশুর বাপ্তিস্ম

 
যীশু কেন যোহন কর্তৃক বাপ্তাইজিত হলেন?
জগতের পাপভার তুলে নিতে
        
 যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, যীশুই ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনি জগতের পাপভার নিয়ে যাবেন। আমাদের পরিত্রাণ সম্বন্ধে ঈশ্বরের দাস যোহনই সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। এর মানে এই নয় যে, ঈশ্বর বলেন নাই যে তিনি নিজেই আমাদের ত্রাণকর্তা। মন্ডলীতে ঈশ্বর তাঁর দাসদের মাধ্যমে কাজ করেন এবং পরিত্রাণ প্রাপ্ত ব্যক্তিদের মুখ দ্বারা কাজ করেন।
 ঈশ্বর বলেন, ‘‘যিরূশালেমকে চিত্ততোষক কথা বল; আর তাহার নিকটে ইহা প্রচার কর যে, তাহার সৈন্যবৃত্তি সমাপ্ত হইয়াছে তাহার অপরাধের ক্ষমা হইয়াছে; তাহার যত পাপ, তাহার দ্বিগুণ [ফল] সে সদাপ্রভুর হস্ত হইতে পাইয়াছে। তৃণ শুষ্ক হইয়া যায়, পুষ্প ম্লান হইয়া পড়ে, কিন্তু আমাদের ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকিবে (যিশাইয় ৪০:২, ৮ পদ)।”
 ‘‘তুমি আর পাপী নও। তোমার সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত আমি করেছি এবং যুদ্ধ শেষ হয়েছে।” এভাবে পরিত্রাণের সুসমাচারের বাণী ঘোষিত হচ্ছে। একেই বলা হয় পূর্ব থেকে প্রস্তুত সুসমাচার।
 যখন আমরা যোহন বাপ্তাইজকের কাজ বুঝতে পারি, তখন পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি যে, যোহন বাপ্তাইজকের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছে, তখনই আমরা পাপ থেকে মুক্ত হই।
 চারটি সুসমাচারে যোহন বাপ্তাইজকের কথা বলা হয়েছে এবং পুরাতন নিয়মেও তাঁর সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়ন যোহন বাপ্তাইজকের জন্ম কাহিনী দিয়ে শুরু হয়েছে এবং তাঁর মাধ্যমে পাপ অর্পণের কাহিনী দিয়ে শুরু হয়েছে।
 তাহলে তাঁকে কেন যোহন বাপ্তাইজক বলা হয়? কারন, তিনি যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন। বাপ্তিস্ম অর্থ কি? বাপ্তিস্ম অর্থ “অর্পণ করা, সমাহিত হওয়া, ধৌত হওয়া;” ঠিক পুরাতন নিয়মে যেমন ‘হস্তার্পণ’।
 পুরাতন নিয়মে নির্দোষ পাপার্থক বলির উপরে মানুষ হস্তার্পণের মাধ্যমে নিজের পাপ অর্পণ করতো এবং সেই পাপ নিয়ে বলিটি মৃত্যু বরণ করতো। ‘হস্তার্পণ’ করা মানে ‘অর্পণ’ করা।” সুতরাং ‘হস্তার্পণ’ এবং ‘বাপ্তিস্ম’ ভিন্ন নামে একই অর্থ বহন করে।
 তাহলে যীশুর বাপ্তিস্মের অর্থ কি? বাপ্তিস্ম হলো ঈশ্বরের অভিষেকের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্ত সাধন করার একমাত্র উপায়। বলির মস্তকে পাপ অর্পণ করার উদ্দেশ্যে পুরাতন নিয়মের লোকেরা বলির মস্তকে হস্তার্পণ করতো। তারপর তারা বলির গলা কেটে হোমবলির যজ্ঞবেদির শৃঙ্গে রক্ত ছিটিয়ে দিত। এটা ছিল প্রতিদিনের পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্তের বলিদান প্রথা।
 তাহলে সারা বছরের পাপের প্রায়শ্চিত্ত তারা কিভাবে করত? মহাযাজক হারোণ সমস্ত ইস্রায়েল জাতির পক্ষে বলির উপরে হস্তার্পণ করত। যোহন বাপ্তাইজকে হারোণের বংশধর ছিলেন, তাই মহাযাজকত্ব তাঁরই প্রাপ্য ছিল। তাঁর প্রতিজ্ঞা পাপমুক্তির কাজে সহায়তা করার জন্য ঈশ্বর যোহন বাপ্তাইজককে সর্বশেষ মহাযাজক হিসাবে পূর্ব থেকেই মনোনীত করে রেখেছিলেন।
 যীশু যখন জন্মগ্রহণ করলেন, তখন পুরাতন নিয়মের কাল শেষ হলো। তাই যোহন বাপ্তাইজক মানব জাতির জন্য মহাযাজক হিসাবে সর্বশেষ প্রতিনিধি। হারোণ যেমন তাঁর লোকদের পক্ষে বলির উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করতেন, তেমনি নূতন নিয়মে যোহন বাপ্তাইজক ছাড়া আর কে যীশুর উপর পাপ অর্পণ করতে পারত? তাই যীশুর বাপ্তিস্মের সময়ে সর্বশেষ মহাযাজক হিসাবে এবং মানবজাতির প্রতিনিধি হিসাবে যোহন বাপ্তাইজকই যীশুর উপর সমগ্র জগতের পাপভার অর্পণ করলেন।
 যেহেতু যোহন বাপ্তাইজক জগতের সকল পাপ বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর উপর অর্পণ করলেন, তাই জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি। সকল পাপীকে উদ্ধার করার জন্য যীশু মেষশাবক হলেন, এভাবে ঈশ্বরের পরিকল্পিত প্রায়শ্চিত্ত সাধন করলেন। যীশু বলেন যে, যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন সর্বশেষ ভাববাদী এবং যিনি সর্বশেষ মহাযাজক হিসাবে যীশুর উপরে জগতের পাপভার অর্পণ করলেন।
 কেন যীশু নিজে তা করলেন না? কেন তাঁর যোহন বাপ্তাইজকের সহায়তা প্রয়োজন হলো? যীশুর ছয়মাস পূর্বে যোহন বাপ্তাইজকের এ জগতে আসার প্রয়োজন ছিল। পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা পূর্ণ করার জন্য, পুরাতন নিয়মকে যথার্থ প্রমাণ করার জন্য।
 যীশু জন্মগ্রহণ করলেন কুমারী মরিয়মের গর্ভে, এবং যোহন বাপ্তাইজক জন্মগ্রহণ করলেন বৃদ্ধা ইলীশাবেতের গর্ভে। এটা ঈশ্বরের কাজ, তিনি সকল পাপীকে পাপ থেকে উদ্ধার করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পাপের সাথে মানুষের চিরস্থায়ী যুদ্ধ থেকে উদ্ধার করার জন্য, পাপের যন্ত্রণা থেকে পাপীকে মুক্ত করার জন্য ঈশ্বর তাঁর দাস যোহনকে পাঠালেন এবং তারপর নিজপুত্র যীশুকে পাঠালেন। যোহন বাপ্তাইজক সমগ্র মানবজাতির প্রতিনিধি হিসাবে, সর্বশেষ মহাযাজক রূপে প্রেরিত হয়েছিলেন।
 
 
স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ
 
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ কে ছিলেন?
যোহন বাপ্তাইজক
 
আসুন, লূক ১১:৭-১৪ পদ দেখি, ‘‘তাহা হইলে সেই ব্যক্তি ভিতরে থাকিয়া কি এমন উত্তর দিবে, ‘আমাকে কষ্ট দিও না, এখন দ্বার বন্ধ, এবং আমার সন্তানেরা আমার কাছে শুইয়া আছে, আমি উঠিয়া তোমাকে দিতে পারি না’? আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, সে যদ্যপি বন্ধু বলিয়া উঠিয়া তাহা না দেয়, তথাপি উহার আগ্রহ প্রযুক্ত উঠিয়া উহার যত প্রয়োজন তাহা দিবে। আর আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যাচ্ঞা কর, তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে; অন্বেষণ কর, পাইবে; দ্বারে আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। কেননা যে কেহ যাচ্ঞা করে, সে গ্রহণ করে, এবং যে অন্বেষণ করে, তাহার জন্য খুলিয়া দেওয়া যাইবে। তোমাদের এমন পিতা কে, যাহার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে? কিম্বা মাছ চাহিলে মাছের পরিবর্তে সাপ দিবে? কিম্বা ডিম চাইলে তাহাকে বৃশ্চিক দিবে? অতএব তোমার মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চিত যে, স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে পবিত্র আত্মা দান করিবেন।
 আর তিনি একটা ভূত ছাড়াইয়া ছিলেন, সে গোঁগা। ভূত বাহির হইল সেই গোঁগা কথা কহিতে লাগিল; তাহাতে লোকেরা আশ্চর্য্য জ্ঞান করিল।”
যিনি চিৎকার করে বলতেন, ‘‘সর্পের বংশেরা, মন পরিবর্তন কর”, সেই যোহন বাপ্তাইজকের দেখা পাবার জন্য লোকেরা প্রান্তরে যেত। এবং যীশু বললেন, ‘‘তবে কি দেখিতে গিয়াছিলে? কি কোমল বস্ত্র পরিহিত কোন ব্যক্তিকে? দেখ, যাহার কোমলবস্ত্র পরিধান করে, তাহার রাজবাটীতে থাকে।”
 যোহনের মহত্ব সম্বন্ধে যীশু নিজে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ‘‘তোমরা কি দেখতে গিয়েছিলে? উটের লোমের কাপড় এবং কটিদেশ চর্ম পটুকা পরিহিত কোন বর্বর লোককে? তিনি অবশ্যই উটের লোমের কাপড় পরতেন। তোমরা কি দেখতে গিয়েছিলে? কোমলবস্ত্র পরিহিত কোন ব্যক্তিকে? যারা কোমলবস্ত্র পরে তারা রাজবাড়িতে থাকে। কিন্তু তিনি রাজা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।” যীশু সাক্ষ্য দিলেন, ‘‘প্রকৃতপক্ষে, যাহারা কোমল বস্ত্র পরিধান করে, তাহারা রাজবাটীতে থাকে। কিন্তু তোমরা কি দেখিতে গিয়াছিলে? কি একজন ভাববাদীকে দেখিবার জন্য? হ্যাঁ, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, ভাববাদী অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে।”
 প্রাচীনকালে ভাববাদীদেরকে রাজাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করা হত। যোহন বাপ্তাইজক রাজার চেয়েও এবং ভাববাদীর চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন। পুরাতন নিয়মের সকল ভাববাদীর চেয়ে বেশি কিছু ছিলেন। প্রকৃত পক্ষে, যোহন ছিলেন সর্বশেষ মহাযাজক এবং মানব জাতির প্রতিনিধি, মহাযাজক হারোণের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। যীশু নিজেই যোহনের সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
 মানব জাতির প্রতিনিধি কে ছিলেন? যীশু ছাড়া পৃথিবীতে আর কোন ব্যক্তি শ্রেষ্ঠতম ছিলেন? যোহন বাপ্তাইজক, ‘‘আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, ভাববাদী অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে। দেখ, তোমার অগ্রে আমি আপন দূতকে প্রেরণ করিব, সে তোমার অগ্রে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে।”
 যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিয়ে বলেছিলেন যে, পাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ হয়েছে। ‘‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে যীশু জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন।
 মথি ১১ : ১১ পদে আছে, ‘‘স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক হইতে মহান কেহই উৎপন্ন হন নাই।” এমন লোককি কখনও স্ত্রীলোকের গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেছে, যে যোহন বাপ্তাইজক অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ?
 ‘‘স্ত্রীলোকের গর্ভজাত” বলতে কি বুঝান হয়েছে? তার মানে সমস্ত মানব জাতিকে বুঝান হয়েছে। একমাত্র আদম ছাড়া সব মানুষ স্ত্রীলোকের গর্ভজাত। হ্যাঁ, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক ছাড়া কাউকেই শ্রেষ্ঠ করা হয় নাই। কাজেই তিনি সর্বশেষ মহাযাজক এবং মানব জাতির প্রতিনিধি। যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন মহাযাজক, ভাববাদী এবং মানব জাতির প্রতিনিধি।
 পুরাতন নিয়মে হারোণ এবং তার পুত্রদেরকে ঈশ্বর চিরস্থায়ীভাবে অভিষেক করেছিলেন। হারোণ এবং তার পুত্রদের মাধ্যমে সমস্ত পাপ ধুয়ে দিতে হবে, এটা ঈশ্বরের আদেশ।
 লেবীয়দের মধ্যে অন্য কেউ যদি দুঃসাহস দেখিয়ে সেই কাজ করার জন্য অগ্রসর হত, তাহলে সে নিশ্চয়ই মারা পড়তো। তারা যজ্ঞ বেদীর জন্য কাঠ সংগ্রহ করতে পারত, পশুর চামড়া ছাড়াতে পারত, নাড়ি ভুড়ি পরিষ্কার করতে পারত, এবং চর্বি আলাদা করতে পারত, এগুলোই ছিল তাদের দায়িত্ব। তারা যদি উপযাচক হয়ে মহাযাজকের কাজ করতে চাইতো তাহলে তারা মারা পড়তো। এটি ঈশ্বরের ব্যবস্থা। তারা সীমা লংঘন করতে পারতো না।
 যোহন বাপ্তাইজকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোন মানুষ ওঠে নাই। মরনশীল মানুষদের মধ্যে তিনি ছিলেন শ্রেষ্ঠতম। ‘‘আর যোহন বাপ্তাইজকের কাল হইতে এখন পর্যন্ত স্বর্গরাজ্য বলে আক্রান্ত হইতেছে, এবং আক্রাসীরা সবলে তাহা অধিকার করিতেছে।”
যোহন বাপ্তাইজক যখন যীশুকে বাপ্তাইজিত করলেন তখন মানুষের পাপের মুক্তি সাধিত হল, এবং যারা যীশুতে বিশ্বাস করে তারাই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে। তারা ধার্মিক বলে গণিত হয়, আসুন দেখি যোহনের পিতা যোহন সম্বন্ধে কি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন?
 
 
যোহনের পিতা সখরিয়ের সাক্ষ্য
 
সখরিয় তাঁর পুত্র সম্বন্ধে কি ভাববাণী করেছিলেন?
প্রভুর প্রজাদের পরিত্রাণের জ্ঞানদানের মাধ্যমে প্রভুর পথ প্রস্তুত করবেন।
        
 আসুন লূক ১: ৬৭-৮০ পদ দেখি, ‘‘তখন তাহার পিতা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন, এবং ভাববাণী বলিলেন; তিনি কহিলেন, ধন্য প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর; কেননা তিনি তত্ত্বাবধান করিয়াছেন, আপন প্রজাদের জন্য মুক্তি সাধন করিয়াছেন, আর আমাদের জন্য আপন দাস দায়ূদের কুলে পরিত্রাণের এক শৃঙ্গ উঠাইয়াছেন, যেমন তিনি পুরাকাল অবধি তাঁহার সেই পবিত্র ভাববাদিগণের মুখ দ্বারা বলিয়া আসিয়াছেন – আমাদের শত্রুগণ হইতে ও যাহারা আমাদিগকে দ্বেষ করে, তাহাদের সকলের হস্ত হইতে পরিত্রাণ করিয়াছেন। আমাদের পিতৃপুরুষগণের প্রতি কৃপা করিবার জন্য, আপন পবিত্র নিয়ম স্মরণ করিবার জন্য। এ সেই দিব্য, যাহা তিনি আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহামের কাছে শপথ করিয়াছিলেন, আমাদিগকে এই বর দিবার জন্য, যে আমরা শত্রুগণের হস্ত হইতে নিস্তার পাইয়া, নির্ভয়ে সাধুতায় ও ধার্ম্মিকতায় তাঁহার আরাধনা করিতে পারিব, তাঁহার সাক্ষাতে যাবজ্জীবন করিতে পারিব। আর, হে বালক, তুমি পরাৎপরের ভাববাদী বলিয়া আখ্যাত হইবে, কারণ তুমি প্রভুর সম্মুখে চলিবে, তাঁহার পথ প্রস্তুত করিবার জন্য; তাঁহার প্রজাদের পাপমোচনে তাহাদিগকে পরিত্রাণের জ্ঞান দিবার জন্য। ইহা আমাদের ঈশ্বরের সেই কৃপাযুক্ত স্নেহহেতু হইবে যদ্বারা ঊর্দ্ধ হইতে ঊষা আমাদের তত্ত্বাবধান করিবে, যাহারা অন্ধকারে ও মৃত্যুচ্ছায়ায় বসিয়া আছে, তাহাদের উপরে দীপ্তি দিবার জন্য, আমাদের চরণ শান্তিপথে চালাইবার জন্য। পরে বালকটী বাড়িয়া উঠিতে এবং আত্মায় বলবান হইতে লাগিল; আর সে যতদিন ইস্রায়েলের নিকট প্রকাশিত না হইল, তত দিন প্রান্তরে ছিল।।”
 দুইটি বিষয়ে সখরিয় ভাববাণী করেছিলেন। তিনি ভাববাণী করেছিলেন যে, মানব জাতির রাজা এসে গেছেন। ৬৮ থেকে ৭৩ পদে দেখা যায়, তিনি আনন্দের সাথে ভাববাণী করেছিলেন যে, ঈশ্বর তাঁর প্রতিজ্ঞা ভোলেন নাই। অব্রাহামের কাছে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, কুমারী মরিয়মের গর্ভজাত যীশুর দ্বারা তিনি অব্রাহামের বংশধরদের তাদের শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করবেন।
 তারপর ৭৪ পদে, ‘‘আমাদিগকে এই বর দিবার জন্য যে, আমরা শত্রুগণের হস্ত হইতে নিস্তার পাইয়া, নির্ভয়ে সাধুতায় ও ধার্মিকতায় তাঁহার আরাধনা করিতে পারিব।” অব্রাহাম ও ইস্রায়েল জাতির কাছে ঈশ্বরের সেই প্রতিজ্ঞা তিনি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, এবং তিনি ভাববাণী করলেন, ‘‘নির্ভয়ে তাঁহার আরাধনা করিতে পারিব, আমাদিগকে এই বর দিবার জন্য।”
 ৭৬ পদ থেকে নিজের পুত্র সম্পর্কে ভাববাণী করলেন, ‘‘আর, হে বালক, তুমি পরাৎপরের ভাববাদী বলিয়া আখ্যাত হইবে, কারণ তুমি প্রভুর সম্মুখে চলিবে, তাঁহার পথ প্রস্তুত করিবার জন্য; তাঁহার প্রজাদের পাপমোচনে তাহাদিগকে পরিত্রাণের জ্ঞান দিবার জন্য। ইহা আমাদের ঈশ্বরের সেই কৃপাযুক্ত স্নেহহেতু হইবে যদ্বারা ঊর্দ্ধ হইতে ঊষা আমাদের তত্ত্বাবধান করিবে, যাহার অন্ধকারে ও মৃত্যুচ্ছায়ায় বসিয়া আছে, তাহাদের উপরে দীপ্তি দিবার জন্য, আমাদের চরণ শান্তিপথে চালাইবার জন্য।”
 তিনি বললেন, ‘‘তাঁহার প্রজাদের পাপ মোচন তাহাদিগকে পরিত্রাণের জ্ঞান দিবার জন্য।” কার দ্বারা পরিত্রাণের জ্ঞান দেবার কথা বললেন? যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা। আপনি কি বিষয়গুলো বুঝতে পারছেন? যোহন বাপ্তাইজকের মাধ্যমে ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা আমাদিগকে এরই জ্ঞান দেবেন যে, ঈশ্বরের পুত্র যীশু জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নেবেন।
 আসুন মার্ক ১ অধ্যায়ে দেখি, ‘‘যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচারের আরম্ভ; তিনি ঈশ্বরের পুত্র। যিশাইয় ভাববাদীর গ্রন্থে যেমন দেখা আছে, ‘দেখ, আমি আপন দূতকে তোমার অগ্রে প্রেরণ করি; সে তোমার পথ প্রস্তুত করিবে। প্রান্তরে এক জনের রব, সে ঘোষণা করিতেছে, তোমরা প্রভুর পথ প্রস্তুত কর, তাঁহার রাজপথ সকল সরল কর;’ তদনুসারে যোহন উপস্থিত হইলেন, ও প্রান্তরে বাপ্তাইজ করিতে লাগিলেন, এবং পাপমোচনের জন্য মন পরিবর্ত্তনের বাপ্তিস্ম প্রচার করিতে লাগিলেন। তাহাতে সমস্ত যিহুদিয়া দেশ ও যিরুশালেম নিবাসী সকলে বাহির হইয়া তাঁহার নিকটে যাইতে লাগিল; আর আপন আপন পাপ স্বীকার করিয়া যর্দ্দন নদীতে তাঁহা দ্বারা বাপ্তাইজিত হইতে লাগিল (মার্ক ১:১-৫ পদ)।
 পরজাতীয়রা মুর্তিপূজা থেকে ফিরল এবং যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হলো। কিন্তু যোহন সাক্ষ্য দিলেন, ‘‘তোমার যেন ঈশ্বরের কাছে ফিরে আস, সেইজন্যে আমি জলে বাপ্তাইজিত করাইতেছি। কিন্তু ঈশ্বরের পুত্র আসবেন এবং আমার মাধ্যমে বাপ্তাইজিত হবেন যাতে জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়। তোমরা যদি বিশ্বাস কর যে, আমার মাধ্যমে বাপ্তাইজিত হয়ে তোমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়েছে; যেমন পুরাতন নিয়মে হস্তার্পণ দ্বারা পাপ অর্পণ করা হতো।” এটা ছিল যোহনের সাক্ষ্য।
 প্রকৃত পক্ষে, যর্দ্দন নদীতে যীশুকে বাপ্তাইজিত করা হয়েছিল বলতে মৃত্যু নদীতে বাপ্তাইজিত করা হয়েছিল। সমাধির সময়ে আমরা গান করি, ‘‘ধীরে ধীরে সেই সুন্দর তীরে মিলিত হব, আমরা সেই সুন্দর তীরে মিলিত হব।” আমরা যখন মরব-আমরা যর্দ্দন নদী পাড়ি দেব। যর্দ্দন নদী মৃত্যু নদী। যীশুকে মৃত্যু নদীতে বাপ্তাইজিত করা হয়েছিল।
 
 
যে বাপ্তিস্ম আমাদের পাপ দূর করে
 
নূতন নিয়মে হস্তার্পণ কি?
যীশুর বাপ্তিস্ম
        
 মথি ৩:১৩-১৭ পদে আমরা পাঠ করি, ‘‘তৎকালে যীশু হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকের কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইহাতেই আমি প্রীত।”
 যীশু যর্দ্দনে এলেন এবং যোহন বাপ্তাইজ দ্ধারা বাপ্তাইজিত হলেন। ‘‘আমাকে বাপ্তিস্ম দাও।” ‘‘কিন্তু আপনার কাছে আমারই বাপ্তিস্ম নেওয়া উচিত, অথচ আপনি আমার কাছে আসছেন?” স্বর্গীয় মহাযাজক ও পৃথিবীর মহাযাজক পরস্পরের সাক্ষাতে পেলেন।
 ইব্রীয় পুস্তক অনুযায়ী, মল্কীষেদকের রীতি অনুযায়ী যীশু খ্রিষ্ট অনন্তকালীয় মহাযাজক। তাঁর বংশবৃত্তান্ত নাই। হারোণ বা জগতের কোন পুরুষের তিনি বংশধর নন। আমাদের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের পুত্র তিনি। তিনি তিনিই। কাজেই তাঁর কোন বংশবৃত্তান্ত নাই। কিন্তু স্বর্গের সমস্ত গৌরব ত্যাগ করে তাঁর সন্তানদের উদ্ধারের জন্য তিনি পৃথিবীতে নেমে এলেন।
 শয়তানের প্রতারণায় প্রতারিত পাপীদের উদ্ধার করার উদ্দেশ্যে তিনি পৃথিবীতে নেমে এসেছিলেন। উপরন্তু, যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। ‘‘কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।”
 ‘এখন সম্মত হও।’ সম্মত হও। যীশু মানব জাতির প্রতিনিধিকে আদেশ দিলেন এবং তাঁর কাছে মাথা নত করলেন। পুরাতন নিয়মে যখন কোন বলিদান উৎসর্গ করা হতো, বলির উপর পাপ অর্পণ করার জন্য হয় মহাযাজক অথবা পাপী নিজেই বলির উপর হস্তার্পণ করতো। ‘হস্তার্পণ করা’ অর্থ ‘অর্পণ করা’।
 যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। পুরাতন নিয়মের হস্তার্পণ প্রথা এর দ্বারা পূর্ণ হলো। ‘অর্পণ করা’, ‘সমাধিস্থ করা’, ‘ধৌত করা’ এবং ‘বলিদান করা’ সবগুলো একই অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। পুরাতন নিয়মে যেটা ছায়া স্বরূপ নতুন নিয়মে সেটা বাস্তবায়িত হয়েছে।
 পুরাতন নিয়মে কোন পাপী যখন মেষশাবকের উপরে হস্তার্পণ করত, মেষশাবকের উপর তখন তার পাপগুলো অর্পিত হত, এবং সেই পাপের বোঝা নিয়ে মেষশাবকটি মৃত্যুবরণ করত। যে মেষশাবকের উপর পাপ অর্পণ করা হতো সেটা কি নিষ্পাপ ছিল?
 মনে করুন, এই রুমালটা পাপ এবং এই মাইক্রোফোনটা মেষশাবক। যখন আমি মাইক্রোফোনের উপর হস্তার্পণ করছি তখন মাইক্রোফোন অর্থাৎ মেষশাবকের উপর পাপ অর্পণ করছি। ঈশ্বর চাইলেন যেন এমনটিই হয়। ‘‘তোমার হাত অর্পণ কর।” কাজেই পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য ব্যক্তিকে হস্তার্পণ করতে হতো। তারপর সে পাপমুক্ত হতো। পাপ থেকে ধৌত করার জন্য, পাপের সমাধি করার জন্য এবং পাপ অর্পণ করার জন্য যীশু বাপ্তিস্ম হলো। যীশুর বাপ্তিস্মের এটাই প্রকৃত অর্থ।
 
সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা অর্থ কি?
যীশুর উপর অর্পণের মাধ্যমে সমস্ত পাপ ধৌত করা।
 
কাজেই, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যদি যীশু সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে থাকেন, তাতে কি সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল? সমস্ত জগতের সকল পাপ তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল, যেন সকল মানুষ পাপ থেকে মুক্ত হয়। পুরাতন নিয়মে যেভাবে বলিদানের উপর সব পাপ অর্পণ করা হতো, ঠিক সেইভাবে। যীশু পৃথিবীতে এলেন এবং যর্দ্দনে এসে বললেন, ‘‘এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সকল ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত” (মথি ৩:১৫ পদ)।
 তারপর বাপ্তিস্মের জন্য নিজেকে সমর্পণ করলেন। যোহনকে যীশু বললেন যে, তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা তাঁদের পক্ষে উপযুক্ত। ‘সমস্ত ধার্মিকতা’ বলতে ‘সবচেয়ে সঠিক ও উপযুক্ত’। অর্থাৎ যোহন কর্তৃক যীশুর বাপ্তিস্ম সঠিক ছিল এবং সমস্ত পাপ যেন তাঁর উপর অর্পণ করা হয়, এইজন্য তিনি যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হলেন।
 যীশুর বাপ্তিস্ম, তাঁর বলিদান এবং আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তিতে ঈশ্বর পাপের প্রায়শ্চিত্ত অনুমোদন করলেন। ‘‘পাপের কারণে সমস্ত মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এবং শয়তান দ্বারা যন্ত্রণাগ্রস্থ হচ্ছে। এইজন্য সমগ্র মানবজাতির প্রতিনিধিরূপে, মহাযাজক হিসাবে তুমি আমার বাপ্তিস্ম দাও। তোমার দ্বারা আমি বাপ্তাইজিত হব। তাহলে প্রায়শ্চিত্ত কার্য পূর্ণরূপে সাধিত হবে।”
         ‘আমি বুঝলাম’।
 কাজেই যোহন যীশুকে বাপ্তিস্ম দিলেন। তিনি যীশুর মাথায় হাত রাখলেন এবং জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করলেন। যীশু ত্রানকর্তারূপে আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিলেন। তাঁর প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করলে আমরা রক্ষা পাই। আপনি কি বিশ্বাস করেন?
 যর্দ্দন নদীতে মানবজাতির প্রতিনিধি হস্তার্পণের মাধ্যমে বাপ্তিস্ম গ্রহণ দ্বারা যীশুর সাড়ে তিন বছরের সুসমাচার প্রচারের কাজ প্রকাশরূপে শুরু হলো। সমস্ত, মানুষের পাপ মাথায় করে তিনি সাড়ে তিন বছর ভ্রমণ করে সুসমাচার প্রচার করে বেড়ালেন।  ব্যভিচারে ধৃত স্ত্রীলোকটিকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমিও তোমাকে দোষী করি না।” তার পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে তিনি ক্রুশে প্রাণ দিতে যাচ্ছিলেন তাই তিনি তাকে দোষী করতে পারলেন না। গেৎসিমানী বনে প্রার্থনা করার সময় তিন তিনবার পিতার কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন যেন সেই পানপাত্র তাঁর কাছ থেকে দূর করা হয়। তৎপরেই আবার বললেন, ‘‘আমার ইচ্ছা নয়, কিন্তু তোমার ইচ্ছাই সিদ্ধ হোক।”
 
 
ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান
 
কতটা পাপ যীশু তুলে নিলেন?
সমগ্র জগতের সকল পাপ
 
 যোহন ১:২৯ পদে আছে, ‘‘পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকটে আসিতে দেখিলেন, আর কহিলেন, ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন। পরদিন যীশুকে তাঁর কাছে আসতে দেখে যোহন অন্যদেরকে বললেন, ‘‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” এই ছিল তাঁর সাক্ষ্য।
 ঈশ্বরের পুত্র এই জগতে এলেন এবং জগতের সকল পাপ তুলে নিলেন। যোহন বাপ্তাইজক আবার সাক্ষ্য দিলেন। যোহন ১:৩৫-৩৬ পদ। ‘‘পরদিন পুনরায় যোহন ও তাঁহার দুই জন শিষ্য দাঁড়াইয়া ছিলেন; আর যীশু বেড়াইতেছিলেন, এমন সময়ে তিনি তাঁহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিলেন, ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক।”
 ঈশ্বরের মেষশাবক অর্থ ইস্রায়েল জাতির পাপের জন্য বলিদান হিসাবে মৃত্যুবরণের জন্য তিনিই সত্য ও বাস্তব সত্তা। আপনার এবং আমার জন্য, আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের পুত্র এই জগতে এলেন এবং আমাদের পাপ তুলে নিলেন। জগতের শেষদিন পর্যন্ত সৃষ্টির সমস্ত পাপ। আদি পাপ থেকে শুরু করে আমাদের সকল অধর্ম, আমাদের সমস্ত অন্যায়, দোষ, তাঁর বাপ্তিস্মে ও ক্রুশীয় রক্তে আমাদেরকে পাপমুক্ত করেছেন।
 আমাদের সব পাপ তুলে নিয়ে আমার পাপমুক্ত করেছেন। আপনি কি তা বুঝতে পারেন? ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।”
 ২০০০ বছর হয়ে গেছে। অর্থাৎ ২০০০ বছর আগে তিনি এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। এবং ৩০ খ্রীষ্টাব্দে যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। ১ খ্রীষ্টাব্দে যীশু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এর পূর্বের সময়কে আমরা খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ বলি। সুতরাং ২০০০ বছরের বেশি পেরিয়ে গেছে যীশু এই জগতে এসেছিলেন।
 ৩০ খ্রীষ্টাব্দে যীশু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। পরদিন যোহন লোকেদের কাছে ঘোষণা করলেন, ‘‘ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” “ঐ দেখ” তিনি লোকেদেরকে যীশুতে বিশ্বাস করতে বলেছিলেন, কারণ তিনি তাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন। ঈশ্বরের মেষশাবক হিসাবে যীশুকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, একমাত্র তিনিই আমাদিগকে সব পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন।
 যীশু আমাদের সব পাপ তুলে নিলেন এবং পাপের সাথে আমাদের চিরস্থায়ী সংঘর্ষের অবসান ঘটালেন। ঈশ্বরের পুত্র আমাদের সব পাপ তুলে নেওয়ায় আমাদের এখন আর পাপ নেই। যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি আপনার আমার সকলের পাপ তুলে নিয়েছেন। ‘‘তিনি সাক্ষ্যের জন্য আসিয়াছিলেন, যেন সেই জ্যোতির বিষয়ে সাক্ষ্য দেন, যেন সকলে তাঁহার দ্বারা বিশ্বাস করে।” (যোহন ১:৭পদ)।  যোহনের সাক্ষ্য ছাড়া আমরা কিভাবে জানতে পারতাম যে যীশুই আমাদের সব পাপ তুলে নেবেন? বাইবেলে অনেক জায়গায় বলা হয়েছে তিনি আমাদের জন্য মরেছেন, কিন্তু একমাত্র যোহন বাপ্তাইজকই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন।
 
জগতের পাপ বলতে কতটা পাপ বুঝানো হয়েছে?
পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষের সমস্ত পাপ।
        
 যীশুর মৃত্যুর পরে অনেকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর জীবিত অবস্থায় একমাত্র যোহনই তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। অবশ্যই যীশুর শিষ্যরাও যীশুর প্রায়শ্চিত্তের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তাঁরা এই সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, যীশু আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন এবং তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা।
 যীশু জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন। আপনার বয়স তো এখনো ১০০ বছর হয়নি, তাই না? ৩০ বছর বয়সে যীশু জগতের পাপ তুলে নিয়েছেন। এখন নিচের চিত্রটা বিবেচনা করুন।
আদম অব্রাহাম যীশুর বাপ্তিস্ম বর্তমানকাল যুগের শেষ
 

মনে করুন, যীশু ৪০০০ বছর আগে পৃথিবীতে এসেছিলেন। যীশু আসার সময় থেকে এখনো ২০০০ বছর হয়নি। কত দেরীতে তা না জানলেও আমরা এটা জানি যে এই কালের শেষ হবে। তিনি বলেন, ‘‘ আমি আলফা ও ওমেগা, আদি এবং অন্ত, প্রথম ও শেষ (প্রকাশিত বাক্য ২২:১৩)।”
 কাজেই অন্ত অবশ্যই আছে। আমরা যে পর্যায়ে আছি সেটা ১৯৯৯ খ্রীষ্টাব্দ। এবং খ্রীষ্ট ক্রুশীয় মৃত্যুবরন করার তিন বছর আগে, অর্থাৎ ৩০ খ্রীষ্টাব্দে আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন।
 ‘‘ঈশ্বরের মেষশাবক যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” জগতের সমস্ত পাপ তিনি তুলে নিয়েছেন। আপনার এবং আমার পাপও। আমরা যীশুর জন্ম সময়ের এতটা দূরত্বে আছি; অর্থাৎ প্রায় ২০০০ বছর। যীশু আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার প্রায় ২০০০ বছর পরবর্তী সময়ে আমরা বসবাস করছি। এই সময়ে, এই যুগে আমরা এখনো বেঁচে আছি ও পাপ করছি। যীশু ঈশ্বরের মেষশাবকরূপে আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন। জন্মের মুহূর্ত থেকে আমরা এই পৃথিবীতে জীবন ধারণ করছি।
 আমরা কি জন্ম মুহূর্ত থেকে পাপ করি, নাকি পাপ করি না? হ্যাঁ আমরা পাপ করি। আসুন, সম্পূর্ণরূপে দেখি। জন্মের দিন থেকে ১০ বছর বয়স পর্যন্ত আমরা পাপ করি কি করিনা? আমরা করি। সেই পাপও যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছে কিনা? হ্যাঁ, হয়েছে। কারণ, সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছে। তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা। তাই যদি না হবে, তবে তিনি কিভাবে আমাদের ত্রাণকর্তা হলেন? যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করা হয়েছে।
 ১১ থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আমরা পাপ করি কি না? হ্যাঁ, করি। আমাদের চিন্তায় ও কর্মে আমরা পাপ করি। আমরা পাপ করতে ওস্তাদ। শিক্ষা পেয়ে থাকি যেন পাপ না করি, কিন্তু খুব সহজেই আমরা পাপ করি।
 ঈশ্বর বলেন আমাদের সমস্ত পাপই যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছে। আমরা কী, তা তিনি ভাল করেই জানতেন, তাই পূর্বেই আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন।
 সাধারণতঃ আমাদের আয়ু কত বছর? ধরুন ৭০ বছর। আমরা যদি এই দীর্ঘ ৭০ বছরের পাপ একত্রে করি, তা কতটা ভারী হবে? যদি আমরা ৮টন ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রাকে বোঝাই করি, তবে ১০০ ট্রাকেরও বেশি ট্রাক প্রয়োজন হবে।
কল্পনা করুন সারা জীবনে আমরা কতটা পাপ করব। সেগুলো কি এই জগতের পাপ নয়? এগুলো জগতের পাপ। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সেও আমরা পাপ করি, এগুলোও এই জগতের পাপ।
 
 
মানুষের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট
 
যীশু কতটা পাপ তুলে নিয়েছেন?
আমাদের পূর্বপুরুষের, আমাদের এবং আমাদের উত্তরপূরুষের সকল পাপ
        
 যীশু আমাদিগকে বলেন যে, তিনি ঐ সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন। যীশু নিজের জন্য বলতে পারেন নাই ‘‘আমাকে বাপ্তিস্ম দাও” তাই ঈশ্বর তাঁর দাস যোহনকে সমগ্র মানবজাতির প্রতিনিধিরূপে পাঠিয়েছিলেন। ‘‘তাঁহাকে বলা যাইবে আশ্চর্যমন্ত্রী, বিক্রমশালী ঈশ্বর।” তিনি নিজে তাঁর জ্ঞানে, তাঁর মন্ত্রণায়, মানবজাতির প্রতিনিধিকে আগে পাঠালেন, এবং সমগ্র জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য ঈশ্বরের পুত্র নিজে পৃথিবীতে নেমে এলেন। এটা কি আশ্চর্য পরিত্রাণ নয়?
 এটা আশ্চর্যজনক, তাই না? কাজেই যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা একবার মাত্র বাপ্তাইজিত হয়ে সারা পৃথিবীতে সমস্ত মানুষের সকল পাপ ধুয়ে দিলেন এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে প্রত্যেককে পাপ থেকে উদ্ধার করলেন। আমাদের সবাইকে তিনি উদ্ধার করলেন। চিন্তা করুন। ২০ থেকে ৩০, ৩০ থেকে ৪০,৪০ থেকে ৬০, ৭০, ১০০ বছরের আপনার এবং পরবর্তীতে আপনার সন্তানদের কথা। তিনি কি আপনার সমস্ত পাপ মুছে নেন নি? হ্যাঁ, নিয়েছেন। তিনি যীশু খ্রীষ্ট, মানবজাতির ত্রাণকর্তা।
 যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে আমাদের পাপ অর্পণ করলেন, এটা ঈশ্বরেরই পরিকল্পনা ছিল, যীশুতে বিশ্বাস ক’রে আমরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি? আমাদের সকল পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করা হয়েছে কি না? এখন আমরা আর পাপী নই। আমাদের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করা হয়েছে।
 এখনো কে দুঃসাহস ক’রে বলতে পারে যে, জগতে এখনো পাপ রয়েছে? যীশু জগতের সব পাপ তুলে নিয়েছেন। তিনি জানতেন যে আমরা পাপ করব এবং তাই ভবিষ্যতের পাপও তুলে নিলেন। আমাদের অনেকের ৫০বছর বয়স এখনো হয়নি, অনেকের অর্ধেক জীবনও পার হয়নি, কিন্তু আমরা বলে থাকি, আমি নিজেও বলি যে, চিরদিন বেঁচে থাকব।
 আমাদের মাঝে অনেকেই প্রচন্ড অবাধ্যতার জীবন যাপন করি। আসুন এভাবে ব্যাখ্যা করি। একটা ক্ষণজীবী পতঙ্গের অর্ধেক জীবন কতটুকু সময়ের? প্রায় ১২ ঘণ্টার।
 ‘‘হায় হায়! আমি এই রকম এক লোকের দেখা পেয়েছিলাম, আমার দিকে সে মাছি ধরার যন্ত্র দুলিয়েছিল, আর একটু হলে চাপা পড়ে আমি মরেই যেতাম। তুমি জান যে …..।’
 মাত্র ১২ ঘণ্টার জীবন, অথচ বকবকানী থামে না। জীবনের অর্ধেক তার পার হয়ে গেছে।
 সন্ধ্যা ৭টা বা ৮টায় সে জীবনের গোধূলি বেলায় পৌঁছে যায় এবং কিছু পরেই মৃত্যুবরন করে। কারো কারো আয়ু ২০ ঘণ্টা, কারো বা ২১ ঘণ্টায়। ২৪ ঘণ্টার সর্বোচ্চ বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত অল্প পতঙ্গই আয়ু পায়। তারা তাদের সারাজীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলে, কিন্তু আমাদের কাছে তা কেমন? আমাদের আয়ু ৭০ বা ৮০ বছর, আমরা হয়তো বলি ‘‘আমাকে হাসিয়ো না” আমাদের তুলনায় পতঙ্গের জীবন আমাদের কাছে কিছু নয়।
 ঈশ্বর অনন্তকাল স্থায়ী। অনন্তকাল জীবন্ত। শুরু ও শেষ তাঁরই সিদ্ধান্তের উপর। তিনি অনন্তকাল জীবিত বিধায় তিনি অনন্তকালীয় সময়ে বসবাস করেন। তাঁর অনন্তকাল স্থায়ী অবস্থান থেকে আমাদের প্রতি তিনি দৃষ্টিপাত করেন।
 কোন এক সময়ে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন, ক্রুশে প্রাণ দিলেন এবং বললেন, “সমাপ্ত হইল।” তৃতীয় দিবসে পুনরুত্থিত হয়ে তিনি স্বর্গে চলে গেলেন। তিনি অনন্তে বসবাস করেন। তিনি আমাদের প্রত্যেকের প্রতি দৃষ্টিপাত করছেন।
 একজন বলছে, ‘‘হায় হায়! আমি এত পাপ করেছি। মাত্র ২০ বছরের জীবনে এত পাপ করেছি আমি।” “৩০ বছরের জীবনে আমি এত পাপ করেছি, সত্যি অনেক পাপ করেছি। সত্যিই অনেক পাপ করেছি। আমি কি কখনো ক্ষমা পাব?
 কিন্তু ঈশ্বর তাঁর অনন্ত আবাস থেকে বলছেন, ‘‘আমাকে হাসিয়ো না। আমি শুধু তোমার পাপই ক্ষমা করেছি, তা নয়, কিন্তু তোমার জন্মের পূর্বে তোমার পূর্বপুরুষদের এবং তোমার মৃত্যুর পর পরবর্তী বংশধরদের পাপও আমি ক্ষমা করেছি।” অনন্তকালীয় সময়ের মধ্যে থেকে তিনি আপনাকে একথা বলেছেন। আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন? বিশ্বাস করুন। বিনামূল্যে যে পরিত্রাণ দান করা হয়েছে তা গ্রহণ করুন। স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করুন।
 আমাদের চিন্তা বা ধারনায় নির্ভর না করে ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করুন। ‘‘সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” ঈশ্বরের মেষশাবক আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করেছেন। যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। তিনি কি তুলে নিয়েছেন? নাকি তুলে নেননি। হ্যাঁ, নিয়েছেন।
 
ক্রুশের উপরে শেষ পর্যন্ত যীশু কি বললেন?
‘‘সমাপ্ত হইল’’
        
 যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। পন্তীয় পিলাত তাঁকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করল এবং তিনি ক্রুশবিদ্ধ হলেন।
 ‘‘তখন তাহারা যীশুকে লইল; এবং তিনি আপন ক্রুশ বহন করিতে করিতে বাহির হইয়া মাথার খুলির স্থান নামক স্থানে গেলেন। ইব্রীয় ভাষায় সেই স্থানকে গলগথা বলে। তথায় তাহার তাঁহাকে ক্রুশে দিল, এবং তাঁহার সহিত আর দুই জনকে দিল, দুই পার্শ্বে দুই জনকে ও মধ্যস্থানে যীশুকে। আর পিলাত একখান দোষপত্র লিখিয়া ক্রুশের উপরিভাগে লাগাইয়া দিলেন। তাহাতে এই কথা লিখিত ছিল। ‘নাসারতীয় যীশু, যিহুদীদের রাজা।’ তখন যিহুদীরা অনেকে সেই দোষপত্র পাঠ করিল, কারণ যেখানে যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হইয়াছিল, সেই স্থান নগরের সন্নিকট, এবং উহা ইব্রীয়, রোমীয় ও গ্রীক ভাষায় লিখিত ছিল (যোহন ১৯:১৭-২০ পদ)।
 যীশু ক্রুশবিদ্ধ হবার পর কি ঘটেছিল, আসুন আলোচনা করি। ‘‘ইহার পরে যীশু সমস্তই এখন সমাপ্ত হইল, জানিয়া শাস্ত্রের বচন যেন সিদ্ধ হয় ….।’’ শাস্ত্রানুসারে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন। ‘‘ইহার পরে যীশু, সমস্তই সমাপ্ত হইল, জানিয়া শাস্ত্রের বচন যান সিদ্ধ হয়, এই জন্য কহিলেন, ‘আমার পিপাসা পাইয়াছে।’ সেই স্থানে সিরকায় পূর্ণ একটা পাত্র ছিল; তাহাতে লোকেরা সিরকার পূর্ণ একটি স্পঞ্জ এসোব নলে লাগাইয়া তাঁহার মুখের নিকটে ধরিল। সিরকা গ্রহণ করিবার পর যীশু কহিলেন, ‘সমাপ্ত হইল’; পরে মস্তক নত করিয়া আত্মা সমর্পণ করিলেন (যোহন ১৯:২৮-৩০ পদ)।”
         সিরকা গ্রহণ করার পর যীশু বললেন, ‘‘সমাপ্ত হইল” এবং মাথা নত করলেন ও আত্মা উৎসর্গ করলেন। তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। তৃতীয় দিবসে যীশু খ্রীষ্ট পুনরুত্থিত হলেন এবং স্বর্গারোহন করলেন।
 আসুন ইব্রীয় ১০:১-৯ পদ দেখি, ‘‘কারণ ব্যবস্থা আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াবিশিষ্ট, তাহা সেই সকল বিষয়ের অবিকল মূর্ত্তি নহে; সুতরাং একরূপ যে সকল বার্ষিক যজ্ঞ নিয়ত উৎসর্গ করা যায়, তদ্বারা, যাহার নিকট উপস্থিত হয়, তাহাদিগকে ব্যবস্থা কখনও সিদ্ধ করিতে পারে না। যদি পারিত, তবে ঐ যজ্ঞ কি শেষ হইত না? কেননা আরাধনাকারীরা একবার শুচীকৃত হইলে তাহাদের কোন পাপ-সংবেদ আর থাকিত না। কিন্তু ঐ সকল যজ্ঞে বৎসর পুনর্ব্বার পাপ স্মরণ করা হয়। কারণ বৃষের কি ছাগের রক্ত যে পাপ হরণ করিবে, ইহা হইতেই পারে না। এই কারণ খ্রীষ্ট জগতে প্রবেশ করিবার সময়ে বলেন, ‘তুমি যজ্ঞ ও নৈবেদ্য ইচ্ছা করা নাই, কিন্তু আমার জন্য দেহ রচনা করিয়াছ; হোম ও পাপার্থক বলিদানে তুমি প্রীত হও নাই। তখন আমি কহিলাম, দেখ, আমি আসিয়াছি, গ্রন্থখানিতে আমার বিষয় লিখিত আছে –হে ঈশ্বর, যেন তোমার ইচ্ছা পালন করি।’ উপরে তিনি কহেন, ‘যজ্ঞ, নৈবেদ্য, হোম ও পাপার্থক বলিদান তুমি ইচ্ছা কর নাই, এবং তাহাতে প্রীতও হও নাই” – এই সকল ব্যবস্থানুসারে উৎসৃষ্ট হয় – তৎপরে তিনি বলিলেন, ‘দেখ, তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি।’ তিনি প্রথম বিষয় লোপ করিতেছেন, যেন দ্বিতীয় বিষয় স্থির করেন।”
 
 
শাশ্বত মুক্তি
 
যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে কিভাবে আমরা প্রতিদিনের পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি?
যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন – এই সত্যে দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপনের দ্বারা
 
 ব্যবস্থা ছিল আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াস্বরূপ। পুরাতন নিয়মে মেষ ও ছাগের বলিদান প্রথা এটাই প্রকাশ করে যে, যীশু এসে বলিকৃত হয়ে সমস্ত পাপ মুছে দেবেন।
 পুরাতন নিয়মের সকলে, দায়ূদ, অব্রাহাম এবং অন্যেরাও বলিদান প্রথার তাৎপর্য জানতেন ও বিশ্বাস করতেন। এর দ্বারা প্রকাশিত হয়েছিল যে, এক সময় মসীহ, খ্রীষ্ট (খ্রীষ্ট মানে ত্রাণকর্তা) আসবেন এবং তাঁদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দেবেন। তাঁরা প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করতেন এবং বিশ্বাসে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন।
 ব্যবস্থা আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াস্বরূপ। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর বলিদান উৎসর্গের মাধ্যমে তারা সম্পূর্ণরূপে কখনো পাপ থেকে মুক্ত হতে পারত না। সুতরাং ঈশ্বরের পুত্র যিনি নির্দোষ ছিলেন, যিনি অনন্তকালে স্থায়ী, তাঁকে জগতে আসতে হয়েছিল।
 তিনি বললেন, শাস্ত্রে তাঁর বিষয়ে যা লিখিত আছে, তাঁর পিতার সেই ইচ্ছা পালন করতে তিনি পৃথিবীতে এসেছেন। ‘‘তৎপরে তিনি বলিলেন, দেখ তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি, হে ঈশ্বর। তিনি প্রথম বিষয় লোপ করিতেছেন, যেন দ্বিতীয় বিষয় স্থির করেন।” পুরাতন নিয়মের লেখা অনুযায়ী যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং যীশুতে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছি।
 আসুন ইব্রীয় ১০:১০ পদ পড়ি, ‘‘সেই ইচ্ছাক্রমে, যীশু খ্রীষ্টের দেহ একবার উৎসর্গ করণ দ্বারা আমরা পবিত্রীকৃত হইয়া রহিয়াছি।” এখানে বলা হয়েছে যে, যীশু খ্রীষ্টের দেহ একবার উৎসর্গ করণ দ্বারা আমরা পবিত্রীকৃত হয়ে রয়েছি। আমরা কি পবিত্র হয়েছি? হ্যাঁ, হয়েছি।
 এর অর্থ কি? পিতা ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন যেন তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে, একবার ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা বিচারিত হয়ে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পণ করা। এভাবে পাপের যাতনাগ্রস্থ আমাদের সবাইকে তিনি মুক্ত করলেন। ঈশ্বরের ইচ্ছায় এটা হয়েছে।
 আমরা যেন পাপ থেকে মুক্ত হয়ে পবিত্র হতে পারি। সেই উদ্দেশ্যে যীশু নিজেকে একবারই উৎসর্গ করলেন। আমরা পবিত্র হয়েছি। আমাদের সমস্ত পাপের জন্য যীশু নিজেকে উৎসর্গ করলেন, আমরা যেন বিচারিত না হই, সেজন্য আমাদের পক্ষে তিনি মৃত্যুবরন করলেন।
 যেহেতু প্রতিটি নতুনভাবে কৃত পাপের থেকে ধৌত হতে হতো, তাই প্রত্যেকটা নতুন পাপের জন্য পুরাতন নিয়মে প্রতিদিন বলিদান করা হতো।
 
 

যীশুর দ্বারা পিতরের পা ধুইয়ে দেওয়ার আত্মিক অর্থ

 
এমন কোন পাপ এখনো কি আছে যার জন্য আমরা অনুতাপের প্রার্থনা উৎসর্গ করতে পারি?
না।
 
 যোহন ১৩ অধ্যায়ে আমরা দেখতে পাই যে যীশু পিতরের পা ধুয়ে দিচ্ছেন। যীশু পিতরকে এই ঘটনার দ্বারা বুঝালেন যে সে ভবিষ্যতে যে পাপ করবে তাও তিনি ক্ষমা করেছেন। যীশু জানতেন পিতর আগামীতে পাপ করবে, তাই একটি পাত্রে জল নিয়ে পা ধুয়ে দিলেন।
 পিতর যখন যীশুর দ্বারা পা ধুতে অস্বীকার করল, তখন যীশু বললেন, ‘‘আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।” এর অর্থ, ‘‘তুমি এর পরেও পাপ করবে। তুমি আমাকে অস্বীকার করবে এবং তোমার সব পাপ ধুয়ে দেওয়ার পরেও তুমি পাপ করবে। এমনকি আমার স্বর্গরোহনের পরেও তুমি পাপ করবে। শয়তান যেন তোমাকে পরীক্ষা করতে না পারে, তাই আমি তোমার পা ধোয়াচ্ছি, কারণ তোমার ভবিষ্যতের পাপও আমি তুলে নিয়েছি।”
 আপনি কি মনে করেন যে, যীশু পিতরের পা ধোয়ালেন আমাদের এটা বোঝানোর জন্য যে আমাদের প্রতিদিনের পাপের জন্য অনুতাপ করতে হবে? না। যদি প্রতিদিনই পাপের জন্য আমাদের অনুতাপ করতে হতো, তাহলে যীশু নিজেকে একবার উৎসর্গকরণ দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিতেন না। যীশু বলেন, তিনি একবারেই আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। প্রতিদিনের পাপের জন্য আমাদের অনুতাপ করতে হলে আমাদের পুরাতন নিয়মের কালে ফিরে যেতে হতো। তাহলে কে ধার্মিকগণিত হতে পারত? কে সম্পূর্ণরূপে পাপমুক্ত হতে পারত? ঈশ্বরে বিশ্বাস করার পরেও কে পাপহীন অবস্থায় জীবন যাপন করতে পারত?
 অনুতাপের মাধ্যমে কে পবিত্র হতে পারত? প্রতিদিন আমরা অনবরত পাপ করছি, তাহলে প্রতিটি পাপের জন্য আমরা কিভাবে ক্ষমা চাইতে পারি? প্রতিদিন প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য কি করে আমরা নির্লজ্জের মত তাঁকে অনবরত বিরক্ত করতাম? সকালের পাপ বিকালে, বিকালের পাপ পরবর্তী সকালে আমরা ভুলে যাই। আমাদের সমস্ত পাপের জন্য অনুপাত করা সম্পূর্ণরূপে অসম্ভব।
 তাই, একবারই যীশু বাপ্তাইজিত হলেন, একবার মাত্র ক্রুশে নিজেকে উৎসর্গ করলেন, যেন একবারেই আমরা পবিত্রীকৃত হই। আপনি কি বিষয়টি বুঝতে পারছেন? একবারেই আমরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। অনুতাপ করলেই আমরা পাপমুক্ত হই না।
 তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, আপনার পাপ ও আমার পাপ, - এই বিশ্বাসে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি।
 ‘‘আর প্রত্যেক যাজক দিন দিন সেবা করিবার এবং একরূপ নানা যজ্ঞ পুনঃ পুনঃ উৎসর্গ করিবার জন্য দাঁড়ায়; সেই সকল যজ্ঞ কখনও পাপ হরণ করিতে পারে না। কিন্তু ইনি পাপার্থক একই যজ্ঞ চিরকালের জন্য উৎসর্গ করিয়া ঈশ্বরের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন, এবং তদবধি অপেক্ষা করিতেছেন, যে পর্য্যন্ত তাঁহার শত্রুগণ তাঁহার পাদপীঠ না হয়। কারণ যাহার পবিত্রীকৃত হয়, তাহাদিগকে তিনি একই নৈবেদ্য দ্বারা চিরকালের জন্য সিদ্ধ করিয়াছেন। আর পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ অগ্রে তিনি বলেন, ‘সেই কালের পরি, প্রভু কহেন, আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব,’ তৎপর তিনি বলেন, ‘এবং তাহাদের পাপ ও অধর্ম্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না।’ ভাল যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না (ইব্রীয় ১০: ১১-১৮ পদ)।”
 ‘‘এই সকলের মোচন হয়” বলতে কি বুঝানো হয়েছে? ১০:১৮ পদের এই অংশে বলা হয়েছে, পাপ, অর্থাৎ যে কোন পাপ, ছোট বড় নির্বিশেষে সকল পাপের পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত সাধন করা হয়েছে। আপনি কি তা বিশ্বাস করেন? ‘‘ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না।”
 আসুন, এতক্ষণ আলোচনার একটা সারমর্ম করি। যোহন বাপ্তাইজক যদি হস্তার্পণ না করতেন অর্থাৎ যদি যীশুকে বাপ্তাইজিত না করতেন, তাহলে আমরা কি পাপ থেকে উদ্ধার পেতাম? আমরা উদ্ধার পেতাম না। পিছনে একটু চিন্তা করি। যীশু যোহন বাপ্তাইজককে মানব জাতির প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচন না করতেন এবং তাঁর মাধ্যমে যদি সমস্ত পাপ অর্পণ করা না হতো, তবে কি তিনি আমাদের পাপ ধুতে পারতেন? না, তিনি পারতেন না।
 ঈশ্বরের ব্যবস্থা ন্যায্য। সৎ। তিনি বলতে পারতেন না যে, তিনি আমাদের ত্রাণকর্তা বিধায় আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন। নিজ দেহে তিনি আমাদের পাপ বহন করেছেন। কেন যীশু, ঈশ্বর, মাংসে মুর্তিমান হলেন? কারণ, তিনি মানুষের সমস্ত পাপ, আত্মার পাপ, মাংসের পাপ জানতেন, এই সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য ঈশ্বরের পুত্রকে মাংসের বেশে পৃথিবীতে নেমে আসতে হলো।
 যীশু বাপ্তাইজিত না হলে আমাদের পাপ থেকে যেত। সমস্ত পাপ নিজের উপর না নিয়ে তিনি যদি ক্রুশবিদ্ধ হতেন, তাহলে তাঁর মৃত্যু বৃথা হতো। তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য কিছুই করতে পারত না। সম্পূর্ণ অর্থহীন হতো।
 সুতরাং ৩০ বছর বয়সে কাজ শুরুর সময়ে বাপ্তাইজিত হওয়ার জন্য তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে এলেন। ৩০ বছর বয়সে তিনি প্রাকাশ্যে কাজ শুরু করেন এবং ৩৩ বছর বয়সে তাঁর কাজ শেষ হয়। ৩০ বছর বয়সে বাপ্তাইজিত হওয়ার জন্য তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে এলেন। ‘‘এখন সম্মত হও। কারণ সকল মানুষকে উদ্ধার করার জন্য এবং ধার্মিকগনিত করার জন্য এটা করা উপযুক্ত। এটাই সঠিক কাজ। এখন, আমাকে বাপ্তাইজিত কর।” হ্যাঁ, সমস্ত পাপীর পাপ মুক্তির জন্য যীশু খ্রীষ্ট বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন।
 যীশু ক্রুশে মৃত্যুবরণের সময়ে ঈশ্বর নিজে যীশুর থেকে তাঁর দৃষ্টি সরিয়ে নিয়েছিলেন; কারণ, বাপ্তিস্মের সময় যোহন বাপ্তাইজক হস্তার্পণ দ্বারা সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করেছিলেন। তাঁর একজাত পুত্র হওয়া সত্ত্বেও তাই তিনি যীশুর মৃত্যু অনুমোদন করলেন।
 ঈশ্বর প্রেম, কিন্তু তাঁর পুত্রকে তিনি মরতে দিলেন। তাই সারাদেশ তিন ঘণ্টা অন্ধকারাছন্ন ছিল। মৃত্যুর পূর্বে যীশু চিৎকার করে বললেন, ‘‘এলি –এলি লামা শবক্তনী’’ অর্থাৎ ‘‘ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করিয়াছ?” আমাদের সমস্ত পাপ যীশু নিজের কাঁধে নিলেন এবং আমাদের পক্ষে বিচারিত হলেন। এইভাবে তিনি আমাদের উদ্ধার করলেন। যীশুর বাপ্তিস্ম ব্যতিরেকে তাঁর মৃত্যু অর্থহীন হতো।
 
আপনি কি ধার্মিক না পাপী?
ধার্মিক ব্যক্তি যার হৃদয়ে কোন নেই
        
 বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সকল পাপ তুলে নিয়ে তিনি যদি ক্রুশে না মরতেন, তা হলে তাঁর মৃত্যু প্রায়শ্চিত্ত সাধন করতে পারতো না। আমাদিগকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য মানব জাতির প্রতিনিধি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে যীশু বাপ্তিস্ম নিলেন এবং আমাদের পক্ষে ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা বিচারিত হলেন, যেন যে কেউ এই সত্য বিশ্বাস করে পাপ থেকে মৃক্ত হতে পারে।
 এই জন্য যোহন বাপ্তাইজকের কাল থেকে এখন পর্যন্ত স্বর্গরাজ্য সবলে আক্রান্ত হচ্ছে। যেন আপনার এবং আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধিত হয়, এই জন্য যোহন বাপ্তাইজক জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করলেন। তাই আপনি এবং আমি এখন ঈশ্বরকে পিতা বলে ডাকতে পারি এবং সাহসের সাথে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি।
 ইব্রীয় ১০: ১৮ পদে আছে, ‘‘যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না।” আপনি কি পাপী? যীশু আপনার সমস্ত ঋণ পূর্বেই পরিশোধ করেছেন, এখনও কি আপনাকে ঋন পরিশোধ করতে হবে?
 মদ্যপানের কারণে এক ব্যক্তি প্রচুর রূপে ঋণী হয়ে গিয়েছিল। তার ছেলে সৌভাগ্যের কারণে তার পিতার সমস্ত ঋণ শোধ করে দিলেন। তার পিতা পূর্বে যতই মদ্যপান করুক না কেন, এখন আর তার কোন ঋণ নেই।
 আমাদের জন্য যীশু এই কাজই করেছেন। পূর্বেই তিনি আমাদের পাপের জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঋণ শোধ করেছেন। শুধু আমাদের সারা জীবনের পাপ নয়, কিন্তু জগতের সমস্ত পাপ বাপ্তিস্মের সময় এই পাপগুলো যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছিল, তাই আপনি এখনও পাপী? না, আপনার কোন পাপ নেই।
 প্রথম থেকেই যদি প্রায়শ্চিত্তের এই সুসমাচার আমাদের জানা থাকত, তাহলে যীশুতে বিশ্বাস করা কত না সহজ হতো। কিন্তু অনেকের কাছেই বিষয়টি নূতন মনে হয়, তাই তারা আশ্চর্য হয়।
কিন্তু এটা নূতন কিছু নয়, শুরু থেকে এটা রয়েছে। আমরা পূর্বে জানতাম না। জল ও আত্মার সুসমাচার সব সময়ই লিপিবদ্ধ রয়েছে এবং এর প্রভাব রয়েছে। সব সময় রয়েছে আপনার এবং আমার জন্মের পূর্ব থেকেই আছে। পৃথিবী সৃষ্টির কাল থেকে আছে।
 
 
প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার
 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের কি করতে হবে?
আমাদিগকে অবশ্যই অনন্তকাল স্থায়ী প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করতে হবে।
        
 আপনার এবং আমার জন্মের পূর্বেই যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। তিনি সব পাপ তুলে নিয়েছেন। আপনি কি পাপে আছেন? না। তাহলে আগামী দিন আপনি যে পাপ করবেন, তার কি হবে? সেগুলোও জগতের সমস্ত পাপের মধ্যে নিহিত রয়েছে।
 আসুন, আগামীকালের পাপের বিষয়ে এখন চিন্তা না করি। এখন পর্যন্ত আমরা যে পাপগুলো করেছি, সেগুলো জগতের সমস্ত পাপের সাথে সম্পৃক্ত, নয় কি? সেগুলো কি যীশুর উপরে অর্পণ করা হয়েছিল? হ্যাঁ, হয়েছিল।
 তাহলে কি আগামীকালের পাপও একই সাথে অর্পণ করা হয়েছিল? হ্যাঁ, তিনি নির্বিশেষে সব পাপই তুলে নিয়েছেন। একটা পাপও তিনি বাকি রাখেন নাই। সুসমাচারের আমাদিগকে এই কথা সর্বান্ত: করণে বিশ্বাস করতে বলে যে, যীশু একবারেই আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। এবং আমাদের জন্য মূল্য পরিশোধ করেছেন।
 ‘‘ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার শুরু।” স্বর্গীয় সুসমাচার হল আনন্দের সংবাদ। তিনি আমাদিগকে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘আমি তোমার সব পাপ তুলে নিয়েছি। আমি তোমার ত্রাণকর্তা। তুমি কি আমাকে বিশ্বাস কর? অগণিত লোকের মধ্য থেকে কয়েকজন মাত্র উত্তর দিবে, হ্যাঁ, আমি বিশ্বাস করি, তুমি যা বলেছ আমি তা বিশ্বাস করি। এটা এত সহজ যে আমি সাথে সাথেই বুঝতে পেরেছি।” যারা একথা বলতে পারবে তারা অব্রাহামের মত ধার্মিক গণিত হয়।
 কিন্তু অন্যেরা বলে, ‘‘আমি এটা বিশ্বাস করি না। এটা আমার কাছে নূতন এবং অদ্ভুত মনে হচ্ছে।”
 তারপর থেকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আমাকে শুধু এইটুকু বল, আমি তোমার সব পাপ তুলে নিয়েছি কি না?”
 ‘‘আমি শিক্ষা পেয়েছিলাম যে, তুমি আমার আদি পাপ তুলে নিয়েছ, প্রতিদিনের পাপ নয়।”
 ‘‘তোমার কথাতেই বুঝা যাচ্ছে যে, তুমি খুব চতুর। তুমি অবশ্যই নরকে যাবে, কারন তোমাকে বলার আমার কিছুই নেই।”
 আমরা তাঁর পূর্ণ সুসমাচারে বিশ্বাস করার মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। যারা সব সময় বলে যে তাদের পাপ রয়েছে, তারা অবশ্যই নরকে যাবে এটা তাদের সিদ্ধান্ত।
 যোহন বাপ্তাইজকের সাক্ষ্যের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার শুরু হয়েছে। কারণ যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হওয়ার সময়ে যীশু জগতের সব পাপ তুলে নিয়েছেন – এই সত্যে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা পবিত্র হই।
 প্রেরিত পৌল তাঁর পত্র গুলোতে বহুবার যীশুর বাপ্তিস্মের কথা উল্লেখ করেছেন। গালাথিয় ৩:২৭পদে আছে, ‘‘কারণ তোমার যত লোক খ্রীষ্টের উদ্দেশ্যে বাপ্তাজিত হয়েছে সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করিয়াছ।” খ্রীষ্টে বাপ্তাইজিত হওয়া অর্থ খ্রীষ্টে থাকা। যীশু বাপ্তাইজিত হওয়ার সময় যোহন বাপ্তাইজকে দ্বারা জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পণ করা হয়, এবং আমাদের পাপগুলো ধৌত হয়ে গেল।
 ১ম পিতর ৩:২১ পদে আছে, ‘‘আর এখন উহার প্রতি রূপ বাপ্তিস্ম অর্থাৎ মাংসের মালিন্য ত্যাগ নয়, কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে সৎ সংবাদের নিবেদন তাহাই যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান দ্বারা তোমাদিগকে পরিত্রাণ করে।”
 যারা যোহন বাপ্তাইজকের সাক্ষ্যে বিশ্বাস করে তাদের জীবনে যীশুর বাপ্তিস্ম, তাঁর ক্রুশীয় রক্তসেচন এবং তাঁর অনুগ্রহের প্রায়শ্চিত্ত সাধিত হয়েছে।
 পরিত্রাণের প্রতিরূপ যীশুর বাপ্তিস্ম হৃদয়ে গ্রহণ করুন এবং পাপ থেকে উদ্ধার লাভ করুন।