Search

Проповіді

বিষয় ৪: প্রতিদিনের পাপসমূহের সমাধান

[4-1] অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার (যোহন ১৩:১-১৭ পদ)

অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার
< যোহন ১৩:১-১৭ পদ >
“নিস্তারপর্ব্বের পূর্ব্বে যীশু, এই জগৎ হইতে পিতার কাছে আপনার প্রস্থান করিবার সময় উপস্থিত জানিয়া, জগতে অবস্থিত আপনার নিজস্ব যে লোকদিগকে প্রেম করিতেন, তাহাদিগকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করিলেন। আর রাত্রিভোজের সময়ে—দিয়াবল তাঁহাকে সমর্পণ করিবার সঙ্কল্প শিমোনের পুত্র ঈষ্করিয়োতীয় যিহুদার হৃদয়ে স্থাপন করিলেন পর —তিনি জানিলেন, যে, পিতা সমস্তই তাঁহার হস্তে প্রদান করিয়াছেন ও তিনি ঈশ্বরের নিকট হইতে আসিয়াছেন, আর ঈশ্বরের নিকটে যাইতেছেন; জানিয়া তিনি ভোজ হইতে উঠিলেন, এবং উপরের বস্ত্র খুলিয়া রাখিলেন, আর একখানি গামছা লইয়া কটি বন্ধন করিলেন। পরে তিনি পাত্রে জল ঢালিলেন ও শিষ্যদের পা ধুইয়া দিতে লাগিলেন, এবং যে গামছা দ্বারা কটি বন্ধন করিয়াছিলেন তাহা দিয়া মুছাইয়া দিতে লাগিলেন। এইরূপে তিনি শিমোন পিতরের নিকটে আসিলেন। পিতর তাঁহাকে বলিলেন, প্রভু, আপনি কি আমার পা ধুইয়া দিবেন? যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে। পিতর তাঁহাকে বলিলেন, আপনি কখনও আমার পা ধুইয়া দিবেন না। যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, যদি তোমাকে ধৌত না করি, তবে আমার সহিত তোমার কোন অংশ নাই। শিমোন পিতর বলিলেন, প্রভু, কেবল পা নয়, আমার হাত ও মাথাও ধুইয়া দিউন। যীশু তাঁহাকে বলিলেন, যে স্নান করিয়াছে, পা ধোয়া ভিন্ন আর কিছুতে তাহার প্রয়োজন নাই, সেত সর্ব্বাঙ্গে শুচি; আর তোমরা শুচি, কিন্তু সকলে নহ। কেননা যে ব্যক্তি তাঁহাকে সমর্পণ করিবে, তাহাকে তিনি জানিতেন; এই জন্য বলিলেন, তোমরা সকলে শুচি নহ। যখন তিনি তাঁহাদের পা ধুইয়া দিলেন, আর আপনার উপরের বস্ত্র পরিয়া পুনর্ব্বার বসিলেন, তখন তাঁহাদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদের প্রতি কি করিলাম, জান? তোমরা আমাকে গুরু ও প্রভু বলিয়া সম্বোধন করিয়া থাক; আর তাহা ভালই বল, কেননা আমি সেই। ভাল, আমি প্রভু ও গুরু হইয়া যখন তোমাদের পা ধুইয়া দিলাম, তখন তোমাদেরও পরস্পরের পা ধোয়ান উচিত? কেননা আমি তোমাদিগকে দৃষ্টান্ত দেখাইলাম, যেন তোমাদের প্রতি আমি যেমন করিয়াছি, তোমরাও তদ্রূপ কর। সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, দাস নিজ প্রভু হইতে বড় নয়, ও প্রেরিত নিজ প্রেরণকর্ত্তা হইতে বড় নয়। এ সকল যখন তোমরা জান, ধন্য তোমরা, যদি এ সকল পালন কর।”      
 
 
 নিস্তারপর্বের পূর্বের দিন কেন যীশু পিতরের পা ধুয়ে দিলেন? পা ধোয়ানোর সময় পিতরকে যীশু বললেন, “তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।” যীশুর শিষ্যদের মধ্যে শিমন পিতর ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি বিশ্বাস করতেন যীশু ঈশ্বরের পুত্র এবং সাক্ষ্য দিলেন যীশুই খ্রীষ্ট। তাই, যীশু যে তাঁর পা ধুয়ে দিচ্ছিলেন, এর পিছনে অবশ্যই কোন জোরালো কারণ আছে। পিতর যখন তাঁর বিশ্বাস স্বীকার করলেন যে, যীশুই খ্রীষ্ট, তার মানে তিনি এও বিশ্বাস করতেন যে, ত্রাণকর্তা হিসাবে যীশুই তাঁর সমস্ত পাপ থেকে তাঁকে উদ্ধার করবেন।
 
ক্রুশে বিদ্ধ হওয়ার পূর্বে যীশু কেন তাঁর শিষ্যদের পা ধোয়ালেন?
কারণ তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর শিষ্যেরা যেন যথার্থ পরিত্রাণ বুঝতে পারে।
           
 কেন তিনি পিতরের পা ধোয়ালেন? যীশু জানতেন খুব শীঘ্রই পিতর তাঁকে তিন বার অস্বীকার করতে যাচ্ছে এবং পরেও সে অনেক পাপ করবে।
 যীশুর স্বর্গারোহনের পরে পিতরের হৃদয়ে যদি পাপ থাকত, তাহলে তিনি যীশুর সাথে এক হতে পারতেন না। যীশু তাঁর সব শিষ্যদের পাপ সম্বন্ধে জানতেন, তিনি চান নাই, তাঁর এবং তাঁর শিষ্যদের সম্পর্কের মাঝে কোন পাপ থাকুক। তাই তাঁদেরকে তিনি এই শিক্ষা দিতে চাইলেন যে, তাঁদের সমস্ত অধর্ম ইতিপূর্বেই ধুয়ে ফেলা হয়েছে। এই কারণে তিনি শিষ্যদের পা ধুয়ে দিলেন। মৃত্যুর পূর্বে এবং শিষ্যদের ছেড়ে যাওয়ার পূর্বে যীশু তাঁর শিষ্যদের তাঁর বাপ্তিস্মের সুসমাচার ও সারাজীবনের পাপমুক্তির বিষয় নিশ্চিতভাবে বুঝাতে চাইলেন।
 যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য যে প্রকৃত পরিত্রাণ সাধন করেছেন, যোহন ১৩ অধ্যায় তারই বর্ণনা দেওয়া আছে। পা ধোয়ানোর সময় যীশু তাঁর শিষ্যদেরকে তাঁর বাপ্তিস্মের সুসমাচারের জ্ঞানের বিষয় বললেন, যে সুসমাচার দ্বারা সকল মানুষ পাপ থেকে ধৌত হবে।
 “ভবিষ্যতে দিয়াবল দ্বারা প্রতারিত হয়ো না। যর্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণের সময় আমি সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছি এবং আমি তোমাদের পক্ষে বিচারিত হব। তারপর আমি পুনরুত্থিত হব এবং তোমাদের সকলের জন্য নূতন জন্মের পরিত্রাণ সাধন করব। ক্রুশে বিদ্ধ হওয়ার আগে আমি তোমাদের পা ধোয়ালাম, যেন তোমরা বুঝতে পার যে, তোমাদের ভবিষ্যতের পাপ আমি ইতিপূর্বেই ধুয়ে দিয়েছি, তোমাদিগকে পাপমুক্তির প্রকৃত সুসমাচার শিক্ষা দেওয়ার জন্য, এটা হল নতুন জন্মের সুসমাচারের প্রকৃত রহস্য। এইভাবেই তোমাদের সকলকে বিশ্বাস করতে হবে।”
 যীশু তাঁর শিষ্যদের পা ধোয়ালেন কেন? তার কারণ আমাদের বুঝতে হবে এবং জানতে হবে। কেন তিনি বললেন, “তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।” নিজেরা নূতন জন্ম লাভ করলেই কেবল নূতন জন্মের সুসমাচারে বিশ্বাস করতে পারব।
 
 
তিনি যোহন ১৩:১২ পদে বলেন
 
পাপগুলো কি কি?
দূর্বলতার কারণে প্রতিদিন যে পাপগুলি করি
 
ক্রশে মৃত্যুবরণ করার পূর্বে তিনি তাঁর শিষ্যদের নিয়ে নিস্তারপর্বের ভোজ প্রস্তত করলেন। এবং নিজ হাতে পা ধুয়ে দিয়ে তিনি তাঁদের ভিতরে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার সম্পর্কে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করলেন।
“তিনি ঈশ্বরের নিকট হইতে আসিয়াছেন, আর ঈশ্বরের নিকটে যাইতেছেন; জানিয়া তিনি ভোজ হইতে উঠিলেন, এবং উপরের বস্ত্র খুলিয়া রাখিলেন, আর একখানি গামছা লইয়া কটি বন্ধন করিলেন। পরে তিনি পাত্রে জল ঢালিলেন ও শিষ্যদের পা ধুইয়া দিতে লাগিলেন, এবং যে গামছা দ্বারা কটি বন্ধন করিয়াছিলেন তাহা দিয়া মুছাইয়া দিতে লাগিলেন। এইরূপে তিনি শিমোন পিতরের নিকটে আসিলেন। পিতর তাঁহাকে বলিলেন, প্রভু আপনি কি আমার পা ধুইয়া দিবেন? যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।
 তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে বাপ্তিস্মের সুসমাচার এবং তাঁর বাপ্তিস্মের জলের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে শিক্ষা দিয়েছিলেন।
 যীশুর প্রতি বিশ্বস্ত হয়েও পিতর সেই সময় বুঝতে পারেন নাই কেন যীশু তাঁর পা ধুয়ে দিলেন। যীশু যখন তার সঙ্গে কথা বললেন তখন তাঁর যীশু সম্বন্ধে পূর্বের বিশ্বাস পরিবর্তন হয়ে গেল, তাঁর পাপের ক্ষমা এবং যীশুর জলের বাপ্তিস্মের সুসমাচার তিনি পিতরকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।
 ভবিষ্যতের পাপের কারণে, বিশেষত মাংসিক পাপের কারণে পিতর হয়তো তাঁর কাছে আসতে পারবেন না, এই কথা ভেবে তিনি উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন। শয়তান যেন শিষ্যদের বিশ্বাস হরণ করতে না পারে এই জন্য তিনি তাদের পা ধুয়ে দিলেন, পরে পিতর এর কারণ বুঝতে পেরেছিলেন। যেন যীশুর বাপ্তিস্মের জলে এবং রক্তে বিশ্বাস করে পাপীরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারে,যীশু সেই পথ প্রস্তত করলেন।
 পা ধোয়ানোর সময় যীশু শিষ্যদের যে সমস্ত কথা বলেছিলেন, সেগুলো যোহন ১৩ অধ্যায় এ লিপিবদ্ধ আছে। এই গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো কেবলমাত্র নূতন জন্ম প্রাপ্তরা বুঝতে পারে। শিষ্যেরা যেন বুঝতে পারে তাদের সারা জীবনের পাপ ধৌত হয়ে গেছে; এই জন্য নিস্তারপর্ব ভোজের পরেই তিনি শিষ্যদের পা ধুয়ে দিলেন। যীশু বললেন, “কেন আমি তোমার পা ধুয়ে দিচ্ছি এখন বুঝবে না, পরে বুঝবে।” এই কথাগুলোর মধ্যেই নতুন জন্ম লাভের সত্য লুকিয়ে আছে।
 যীশুর বাপ্তিস্ম আমাদের সমস্ত অধর্ম ধুয়ে দিয়েছে, এই সত্যটি আমাদের জানতে ও বিশ্বাস করতে হবে, যর্দ্দনে যীশুর বাপ্তিস্মের ঘটনা হল হস্তার্পণ দ্বারা পাপ অর্পণের সুসমাচার। যীশুর বাক্যে আমাদের সবার বিশ্বাস করা উচিত। তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং ক্রুশে বিচারিত হয়ে পাপের ক্ষমা অর্জন করলেন। সমস্ত লোককে তাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হলেন।
 
 

যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে সারা জীবনের পাপের ক্ষমা সাধিত হয়েছে

 
 যীশু জানতেন যে, তাঁর মৃত্যু, পুনরুত্থান ও স্বর্গারোহনের পরে দিয়াবল তার শিষ্যদের প্রতারণা করবে এবং তাদেরকে অসত্যে টেনে নিয়ে যাবে। পিতরের সাক্ষ্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, “আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।” অর্থাৎ তিনি যীশুতে বিশ্বাস করতেন, তথাপি যীশু পিতরকে পাপের ক্ষমার সুসমাচার শিখাতে চাইলেন।
 সুসমাচারটি হল এই যে, তিনি তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। বিষয়টি আর একবার পিতরকে এবং তাঁর শিষ্যদেরকে, এবং আমরা যারা পরবর্তীতে জন্ম গ্রহণ করব আমাদেরকে শিখাতে চাইলেন। “আমি কি করছি তুমি তা এখন বুঝবে না, কিন্তু পরে তা জানতে পারবে।”
 
ধার্মিকদের জন্য শয়তানের ফাঁদ কি?
ধার্মিকদেরকে আবার পাপী করার জন্য দিয়াবল প্রতারনা করার চেষ্টা করে
 
 যীশুর শিষ্যেরা যখন পাপ করতো, দিয়াবল তখন এই বলে তাদের দোষী করতো, “তুমি তো পাপ করো, কেমন করে পাপ থেকে মুক্ত হবে! তুমি এখনও পাপ থেকে মুক্ত হও নাই।তুমি পাপী।” এটা প্রতিরোধ করার জন্য যীশু তাদের বললেন, তাঁর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করার মাধ্যমে ইতিপূর্বেই তাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত্যের পাপ ধৌত হয়ে গেছে।
 “তোমরা সবাই জান যে, আমি বাপ্তিস্ম নিয়েছিলাম, মানুষের সারা জীবনের সমস্ত পাপ এবং আদি পাপও তুলে নেওয়ার জন্য যদ্দর্নে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলাম। এখনকি তোমরা বুঝতে পারছো, আমি কেন বাপ্তিস্ম নিয়েছিলাম, কেন আমি ক্রুশে বিদ্ধ হলাম এবং ক্রুশে প্রাণ দিলাম?” যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাদের প্রতিদিনের পাপ ধুয়ে দিয়েছেন এবং তাদের পক্ষে তিনি বিচারিত হবেন, এটা বুঝানোর জন্য তিনি শিষ্যদের পা ধুলেন।
 এখন, যীশুর বাপ্তিস্মের ও রক্তের সুসমাচার যা আমাদের পাপের ভার লাঘব করে, তাতে বিশ্বাস করে আপনি এবং আমি পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। আমাদের জন্য যীশু বাপ্তাইজিত এবং ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছেন। তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্তের মাধ্যমে তিনি আমাদের সব পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে, প্রকৃত সত্যে যে বিশ্বাস করে সেই পাপ থেকে মুক্ত হয়।
 তাহলে পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পরে কি করা উচিত? যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের পরিত্রাণে এবং পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস কর প্রতিদিন পাপ স্বীকার করা উচিত। যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের এবং রক্তের মাধ্যমে সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, এই সুসমাচার হৃদয়ে গ্রহণ করতে হবে।
 যেহেতু আপনি আবার পাপ করেন, তাই বলে কি আবার পাপী হবেন? না। যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, একথা জানার পর আমরা কিভাবে আবার পাপী হতে পারি? যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্তের সুসমাচার হল আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার। যে এই পাপের ক্ষমার আদি সুসমাচারে বিশ্বাস করে, সে নূতন জন্ম লাভ করে ধার্মিক ব্যক্তি হয়।
 
 

ধার্মিক পুনরায় পাপী হতে পারে না

 
ধার্মিক কেন পুনরায় পাপী হতে পারে না?
কারণ যীশু তাদের সারা জীবনের পাপ ইতিপূর্বেই তুলে নিয়েছেন
 
জল ও আত্মার-পাপমুক্তির সুসমাচারে বিশ্বাস করার পরেও আপনি যদি প্রতিদিন পাপের জন্য নিজেকে পাপী মনে করেন, তাহলে যীশু যেখানে আপনার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, সেই যদ্দর্নে আপনার যাওয়া উচিত। পাপের মুক্তি পাওয়ার পরেও যদি আপনি আবার পাপী হন, তবে যীশুকে আবার যদ্দর্নে বাপ্তাইজিত হতে হবে। আপনি পাপ মুক্ত হয়েছেন, যীশুর বাপ্তিস্মের সুসমাচার দ্বারা পাপ মুক্ত হয়েছেন, এটা আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম দ্বারা একবারেই আপনার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যীশু খ্রীষ্ট যে ত্রাণকর্তা এ বিষয়ে আপনার অবিচলিত বিশ্বাস থাকতে হবে। যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে বিশ্বাস করা মানে তাঁর বাপ্তিস্ম বিশ্বাস করা, যে বাপ্তিস্ম আমাদের সারা জীবনের পাপ তুলে নিয়েছে। যদি যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশ ও পুনরুত্থানে আপনার বিশ্বাস থাকে, তাহলে যে পাপই আপনি করেন না কেন আপনি আর পাপী হতে পারে না। বিশ্বাসের মাধ্যমে আপনি আপনার সারা জীবনের পাপ থেকে মুক্ত হয়েছেন।
 যীশু খ্রীষ্ট আগামীদিনের পাপও ধুয়ে দিয়েছেন, নিজের দূর্বলতার কারণে যে সব পাপ করি সেগুলো এবং বাপ্তিস্মের সুসমাচারের উপর জোর দেওয়ার জন্য যীশু তাঁর শিষ্যদের পা জল দ্বারা ধুয়ে দিলেন, যা পাপ মুক্তির বা তাঁর বাপ্তিস্মের সুসমাচারের নির্দশন, সকল মানুষকে উদ্ধার করার জন্য, ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্ত সাধন করার জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হলেন, ক্রুশ বিদ্ধ হলেন, পুনরুত্থিত হলেন এবং স্বর্গারোহন করলেন। তার ফলে, তাঁর শিষ্যেরা জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার, যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশ ও পুনরুত্থান সস্পর্কে প্রচার করেছিলেন।
 
 
পিতরের মাংসের দূর্বলতা
 
বাইবেল বলে, মহাযাজক কায়ফার দাসেরা যখন পিতরকে জেরা করছিল এবং যীশুর অনুসারীদের একজন হিসাবে তাঁকে অভিযুক্ত করছিল; পিতর তখন দুইবার তা অস্বীকার করলেন। বললেন, “না, আমি এই ব্যাক্তিকে চিনি না।” তারপর তৃতীয়বার এই বিষয় শপথপূর্বক বললেন এবং অভিশাপও দিলেন।
  
পিতর কেন যীশুকে অস্বীকার করলেন?
তাঁর দূর্বলতার কারণে
 
 আসুন আমরা এই অংশটি পড়ি। “ইতিমধ্যে পিতর বাহিরে প্রাঙ্গণে বসিয়াছিলেন; আর একজন দাসী তাঁহার নিকটে আসিয়া কহিল, তুমিও সেই গালীলীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে। কিন্তু তিনি সকলের সাক্ষাতে অস্বীকার করিয়া কহিলেন, তুমি কি বলিতেছ, আমি বুঝিতে পারিলাম না। তিনি ফটকের নিকটে গেলে আর এক দাসী তাহাকে দেখিয়া সে স্থানের লোকদিগকে কহিল, এ ব্যাক্তি সেই নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল। তিনি আবার অস্বীকার করিলেন, দিব্য করিয়া কহিলেন, আমি সে ব্যক্তিকে চিনি না। আর অল্পক্ষণ পরে যাহারা নিকটে দাড়াইয়াছিল, তাহারা আসিয়া পিতরকে কহিল, সত্যই তুমিও তাহাদের এক জন, কেননা তোমার ভাষা তোমার পরিচয় দিতেছে। তখন তিনি অভিশাপ পূর্ব্বক শপথ করিয়া বলিতে লাগিলেন, আমি যে ব্যক্তিকে চিনি না। তখনই কুকড়া ডাকিয়া উঠিল। তাহতে যীশু এই যে কথা বলিয়াছিলেন, ‘কুকড়া ডাকিবার পূর্বে তুমি তিনবার আমাকে অস্বীকার করিবে; তাহা পিতরের মনে পড়িল; এবং তিনি বাহিরে গিয়া অত্যন্ত রোদন করিলেন।” (মথি ২৬:৬৯ -৭৫ পদ)।
পিতর আসলেই যীশুকে বিশ্বাস করেছিলেন এবং তাঁকে বিশ্বস্তভাবে অনুসরন করেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে, যীশুই তাঁর প্রভু এবং ত্রাণকর্তা, ‘ভাববাদী’। কিন্তু যখন যীশুকে পিলাতের বিচারালয়ে নেওয়া হল, তখন যীশুর সাথে থাকা খুব বিপদজনক হয়ে উঠল। পিতর তাঁকে অস্বীকার করলেন এবং অভিশাপ দিলেন।
 পিতর জানতেন না যে তিনি যীশুকে অস্বীকার করবেন। কিন্তু যীশু জানতেন। যীশু জানতেন সে দূর্বল। তাই যোহন ১৩ অধ্যায় বর্ণিত ঘটনানুযায়ী যীশু পিতরের পা ধুয়ে দিলেন, এবং তাঁকে পরিত্রাণের সুসমাচার শিক্ষা দিলেন, “তুমি ভবিষ্যতে পাপ করবে, কিন্তু আমি তোমার ভবিষ্যতের পাপও ইতিপূর্বে ধৌত করেছি।”
পিতরের জীবন যখন বিপদের সম্মুখীন হলো তখন তিনি সত্যই যীশুকে অস্বীকার করলেন। কিন্তু মাংসের দূর্বলতা থেকে তিনি এটা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। তাই তাঁর শিষ্যদেরকে ভবিষ্যতের অধর্ম থেকে উদ্ধার করার জন্য যীশু তাদের পাপ ধুয়ে দিলেন।
 “আমি তোমাদের ভবিষ্যতের পাপেরও পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত সাধন করব। বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমি তোমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছিলাম বলে আমাকে ক্রুশ বিদ্ধ হতে হবে এবং তোমাদের ত্রাণকর্তা হওয়ার জন্য তোমাদের সকল পাপের মূল্য আমাকে পরিশোধ করতে হবে। তোমাদের পাপের মূল্য আমিই পরিশোধ করব এবং আমার বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে তোমাদের পালক হব। আমি তোমাদের পরিত্রাণের পালক।”
 এই সত্য তাদের হৃদয়ে দৃঢ়ভাবে গেঁথে দেওয়ার জন্য নিস্তারপর্বের ভোজের পর তাদের পা ধুয়ে দিলেন। এই হল সুসমাচারের সত্য।
নূতন জন্ম লাভের পরেও আমরা পাপ করি। কারণ আমাদের মাংস দূর্বল। অবশ্যই আমরা পাপ করতে চাই না, কিন্তু পিতরের মত মারাত্মক পরিস্থিতিতে পড়লে, করতে না চাইলেও পাপ হয়ে যায়। কখনও কখনও আমরা পাপের কারণে ধ্বংসের দিকে ছুটে যাই, কারণ আমরা মাংসময় দেহে বাস করি। যতদিন মাংসময় দেহে এই পার্থিব
জগতে বাস করব ততদিন আমাদের মাংস পাপ করবে, কিন্তু যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীর রক্তের মাধ্যমে ঐ সমস্ত পাপ দূর করে দিয়েছেন।
 আমরা অস্বীকার করিনা যে, যীশু আমাদের ত্রাণকর্তা, কিন্তু মাংসময় দেহে আমরা সব সময়ই ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পাপ করছি। এর কারণ আমরা রক্ত মাংসের দেহে বাস করছি।
 কিন্তু যীশু জানতেন যে আমরা মাংসময় দেহে পাপী। যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করে আমাদের ত্রাণকর্তা হলেন। যেন তাঁর পরিত্রাণ ও পুনরূত্থান বিশ্বাস কর, তাদেরকে তিনি পাপ থেকে মুক্ত করেছেন। যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যীশুর বাপ্তিস্মের ঘটনা দিয়ে ৪টি সুসমাচারই শুরু হয়েছে। যীশু মানুষরূপে যে, পৃথিবীতে এসেছিলেন যেন, নূতন সুসমাচার, পরিত্রাণের সুসমাচার পূর্ণরূপে সাধন করতে পারেন।
 
রক্ত মাংসের দেহে আমরা কত দিন পর্যন্ত পাপ করি?
সারা জীবন, মৃত্যু দিন পর্যন্ত
 
একবার নয়, দুইবার নয়, কিন্তু তিন বার বিক্ষুব্ধ জনতার মাঝে পিতর যীশুকে অস্বীকার করেছিলেন, তবে তার হৃদয় কতটা ভেঙ্গে পড়েছিল? কতটা লজ্জিত তিনি হয়েছিলেন? যীশুর কাছে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে কখনও বিশ্বাস ঘাতকতা করবেন না। রক্ত মাংসের দূর্বলতার কারণে তিনি পাপ করলেন, কিন্তু যখন তিনি দূর্বলতার বশবর্তী হলেন তখন একবার নয় কিন্তু তিনবার যীশুকে অস্বীকার করে কতটা দুঃখই তিনি পেলেন? যীশুর প্রতি আবার দৃষ্টিপাত করে তিনি ভীষণ লজ্জিত হলেন।
কিন্তু যীশু এইসব ঘটনা এবং আরও কিছু জানতেন। কাজেই তিনি বললেন, “আমি জানি তুমি আবার পাপ করবে। কিন্তু আমার বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তোমার ঐ সমস্ত পাপ ইতিপূর্বে তুলে নিয়েছি,যাতে তুমি পাপে হোঁচট না খাও,পাছে তুমি আবার
পাপী হও এবং আবার ফিরে আসতে না পার। বাপ্তিস্ম গ্রহণ এবং বিচারিত হওয়ার মাধ্যমে আমি তোমাদের পাপ তুলে নিয়ে তোমাদের পূর্ণ ত্রাণকর্তা হয়েছি। আমি তোমাদের ঈশ্বর। তোমাদের পালক হয়েছি। পাপমুক্তির সুসমাচারে বিশ্বাস কর। তুমি মাংসের পাপ করলেও আমি তোমাকে ভালবেসে যাব। ইতিপূর্বে তোমার অধর্ম আমি ধুয়ে দিয়েছি। পাপ মুক্তির সুসমাচার চিরস্থায়ী। তোমার জন্য আমার ভালবাসাও চিরস্থায়ী।”
 পিতর এবং অন্য শিষ্যদের যীশু বললেন, “আমি যদি তোমাদের পা ধুইয়া না দিই, তাহা হইলে আমার সহিত তোমাদের কোন অংশ নাই।” যোহন ১৩ অধ্যায়ে তিনি সুসমাচারের কথা বললেন, কারণ জল ও আত্মার নূতন জন্ম লাভ করা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কি তা বিশ্বাস করেন?
 ৯ পদে আছে। “শিমোন পিতর বলিলেন, প্রভু, কেবল পা নয়, আমার হাত ও মাথাও ধুইয়া দিউন।”
 প্রিয় বন্ধুগন, আপনি কি ভবিষ্যতে মাংসিক পাপ করবেন?নাকি করবেন না? আপনি করবেন।কিন্তু যীশু বলেন যে, তিনি এমনকি ভবিষ্যতের পাপও ধুয়ে দিয়েছেন, তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত অধর্ম ধুয়ে দিয়েছেন। ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পূর্বে তাঁর শিষ্যদের তিনি পরিস্কারভাবে সত্যের বাক্য এবং প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার সম্পর্কে বললেন।
 আমাদের মাংস দূর্বল, তাই পাপ না করে আমরা পারি না। যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। শুধু আমাদের মাথা এবং শরীর তিনি ধুয়ে দেননি, কিন্তু আমাদের পাপ, ভবিষ্যতের পাপও ধুয়ে দিলেন। এটাই নতুন জন্মের, যীশুর বাপ্তিস্মের সুসমাচার।
 যীশুর বাপ্তিস্মের পরে যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিলেন, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান (যোহন ১:২৯ পদ)।” এই কথা আমরা মানতে বাধ্য যে, বাপ্তিস্মের সময় যীশুর উপর অর্পিত জগতের সমস্ত পাপ ধুয়ে গেছে।
এই জগতে জীবন-যাপন করার সময় আমরা পাপ না করে পারি না। চুড়ান্ত সত্য হিসাবে এটা আমাদের মানতে হবে আমাদের মাংসে দূর্বলতা যখন প্রচন্ড হয়ে পড়ে, তখন এ কথা মনে রাখতে হবে যে,
 যীশু আমাদের পাপ ধুয়ে দিয়েছেন, প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের মাধ্যমে এবং তাঁর রক্তের মূল্যে সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন।
 হৃদয়ের গভীর থেকে তাঁকে আমাদের ধন্যবাদ জানানো উচিত। আসুন, বিশ্বাসের সাথে আমরা স্বীকার করি যে, যীশু আমাদের ত্রাণকার্তা এবং আমাদের ঈশ্বর। প্রভুর প্রশংসা হোক। মাংসময় দেহে থাকা অবস্থায় এ পৃথিবীর সবাই পাপ করে। সারা জীবনের মাংসিক পাপের কারণে মানুষ মৃত্যুবরণ করে, মাংসিক দেহে মানুষ অনবরত পাপ করছে।
 
 
মানুষের হৃদয়ে মন্দ চিন্তা
 
মানুষ কিসে অপবিত্র হয়?
বিভিন্ন ধরণের পাপ এবং মন্দ চিন্তা
 
 মথি ১৫:১৯, ২০ পদে যীশু বলেন, “কেননা অন্তঃকরণ হইতে কুচিন্তা, নরহত্যা, ব্যাভিচার, বেশ্যাগমন, চৌর্য্য, মিথ্যাসাক্ষ্য নিন্দা আইসে। এই সকলই মনুষ্যকে অশুচি করে; কিন্তু অধৌত হস্তে ভোজন করিলে মনুষ্য তাহাতে অশুচি হয় না।”
 মানুষের হৃদয়ে বিভিন্ন প্রকার পাপ থাকে, যা তাকে অপবিত্র করে, কলুষীত করে।
 

প্রত্যেককে তার নিজের মন্দ প্রকৃতিকে জানতে হবে
 
প্রতিটি মানুষের হৃদয়েকি আছে?
 ১২ রকমের পাপ (মার্ক ৭:২১-২৩)
 
একথা আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, “মানুষের হৃদয়ে ঐ ১২ রকমের পাপ আছে। আমাদের হৃদয়ে এগুলো সব আছে। বাইবেলে লিখিত ১২ রকম পাপই আমার হৃদয়ে আছে।” জল ও আত্মায় নতুন জন্ম লাভ করার পূর্বে আমাদের হৃদয়ের পাপগুলো স্বীকার করতে হবে। স্বীকার করতে হবে যে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমরা সম্পূর্ণরূপে পাপী। প্রায়ই আমরা তা করি না। এই বলে বেশিরভাগ মানুষ অজুহাত খাড়া করে যে, “আগে আমার হৃদয়ে ঐসব ছিল না। হঠাৎ মুহূর্তের মধ্যে আমি ধ্বংসের পথে গিয়েছি।”
 কিন্তু মানুষের সম্বন্ধে যীশু কি বলেন? তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে, হৃদয়ে থেকে যা বেরিয়ে আসে তাই মানুষকে ‘অশুচি’ করে। তিনি বলেন যে, মানুষের হৃদয়ে মন্দ চিন্তা রয়েছে। আপনি কি মনে করেন? আপনি কি ভাল, নাকি মন্দ? আপনি কি জানেন যে, প্রত্যেকের ভিতরে মন্দ চিন্তা রয়েছে? হ্যাঁ, প্রত্যেকের চিন্তা মন্দ।
 কয়েক বছর আগে সিউলে স্যাম্পুং ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরের দালানটি ভেঙ্গে পড়েছিল। যে পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছিল, তারা গভীরভাবে শোকাহত হল। কিন্তু অনেকে সেই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য সেখানে গেল।
 কেউ কেউ ভাবল, কতজন মারা গেছে? ২০০? না, এটা খুব অল্প। ৩০০? হয়তো। অন্তত পক্ষে এক হাজার লোক মারা গেলে দৃশ্যটা খুব হৃদয়গ্রাহী হত। মানুষের মন এ রকম মন্দ হতে পারে। আমাদের তা মেনে নিতে হবে। মৃতদের জন্য এটা কতটা অশ্রদ্ধাজনক! পরিবারগুলোর জন্য এটা কতটা ধ্বংসাত্মক! অনেকে আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
 এটা পরিষ্কার যে, অনেক দর্শক সহানুভূতিশীল ছিল না। আরো বেশী মরলে দৃশ্যটা আরো উপভোগ হত। কী দৃশ্য! ঘটনাটা যদি লোকে পরিপুর্ণ বলপার্কে ঘটত তাহলে কি হতো? হাজার হাজার লোক ইট পাথরের নিচে চাপা পড়তো, তাই না? ও হ্যাঁ, তাহলে ঘটনাটি এর চেয়ে আরও বেশী উপভোগ্য হত। সম্ভবত অনেকের চিন্তা এরকম ছিল।
 কখনও কখনও মানুষ কতটা মন্দ হতে পারে আমরা সবাই তা ভাল করে জানি। অবশ্য এই মন্দ চিন্তা তাদের কখন করা উচিত নয়, তাদের জিহবা দমন করা উচিত এবং সহানুভূতি প্রকাশ করা
উচিত, কিন্তু গোপনে মনে মনে বিষয়টি আরও বেশী করে উপভোগ করতে চায়। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের সহ্যের সীমা অতিক্রম না করে ততক্ষণ পর্যন্ত হাজার লোকের দূর্দশাগ্রস্থ মৃত্যুর দৃশ্য তারা দেখতে চায়। মানুষের হৃদয় এইভাবেই কাজ করে, নূতন জন্ম লাভ করার আগে অধিকাংশ মানুষই এ রকম থাকে।
 
 
প্রত্যেক ব্যক্তির হৃদয়ে খুনের প্রবৃত্তি আছে
 
কেন আমরা পাপ করি?
কারণ আমাদের হৃদয়ে মন্দ চিন্তা রয়েছে
 
 ঈশ্বর বলেছেন যে প্রত্যেক ব্যক্তির হৃদয়ে নরহত্যার প্রবৃত্তি রয়েছে। কিন্তু অনেকে তা অস্বীকার করে। “তুমি কেমন করে তা বলতে পার! আমার হৃদয়ে কোন খুনের চিন্তা নাই! আমি কিভাবে এমন চিন্তা করতে পারি!” তারা কখনই স্বীকার করবে না যে তাদের হৃদয়ে খুনের প্রবৃত্তি আছে। তাদের ধারণা খুনিদের জাত আলাদা।
 “ঐ দিনের খবরের সেই খুনি, সেই দুস্কৃতকারীরা যারা নিচের তলার লোকগুলোকে খুন করেছিল এবং পুড়িয়ে ছিল, তাদের হৃদয়ে খুনের প্রবৃত্তি ছিল। তারা অন্য জাতের। আমি তাদের মত হতে পারি না। তারা দুর্বৃত্ত, খুনী!” তারা ক্রোধান্বিত হয় এবং চিৎকার করে বলে, “মন্দের বীজ থেকে যাদের জন্ম, এই পৃথিবী থেকে তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া উচিত। তাদের মৃত্যুদন্ড দেওয়া উচিত।”
 কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত: যারা ক্রোধে চিৎকার করে এবং যারা পেশাদারী খুনী, প্রত্যেকের হৃদয়েই খুনের প্রবৃত্তি আছে। ঈশ্বর বলেন, সব মানুষের হৃদয়ে নরহত্যার প্রবৃত্তি রয়েছে। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের মেনে নেওয়া উচিত, কারণ তিনি আমাদের হৃদয়ের গভীরে দেখতে পান। আমাদের স্বীকার করতে হবে, “আমার হৃদয়ে খুনের প্রবৃত্তি রয়েছে, আমি পাপী।”
 হ্যাঁ, ঈশ্বর বলেন, খুনসহ মানুষের হৃদয়ে সব ধরণের মন্দ চিন্তা রয়েছে। আসুন আমরা ঈশ্বরের বাক্য মেনে নিই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষ আরও মন্দ হচ্ছে, তার আত্মরক্ষার জিনিসগুলো খুনের অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের হৃদয়ে খুনের একটা ফলাফল রয়েছে। রাগ বা ভয়ের বসে আপনি খুন করতে পারেন। আমি বলছি না যে, আমাদের মাঝে প্রত্যেকেই খুন করে কিন্ত আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে এই চিন্তাটা আছে।
 কারণ মানুষ মন্দ চিন্তা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে , আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে এগুলো আছে। মানুষ খুন করে এই কারণে নয় যে সে খুনী হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছে, কিন্তু খুনী হওয়ার ক্ষমতা মানুষের আছে; এই কারণে সে খুন করে। ঈশ্বর বলেন , আমাদের হৃদয়ে মন্দ চিন্তা এবং খুনের প্রবৃত্তি রয়েছে । এটাই সত্যি। কেউই এই সত্যের ব্যতিক্রম নয়।
 সুতরাং ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ এবং মান্য করাই আমাদের জন্য যথার্থ সঠিক পথ। হৃদয়ে মন্দ চিন্তা রয়েছে বলেই আমরা এ জগতে পাপ করি।
 
 
আমাদের হৃদয়ে ব্যভিচার
 
 ঈশ্বর বলেন, প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে ব্যভিচার পাপ রয়েছে। আপনি কি একমত? আপনার হৃদয়ে ব্যভিচার পাপ রয়েছে, এটা কি আপনি স্বীকার করেন? হ্যাঁ, প্রত্যেক ব্যক্তির হৃদয়ে ব্যভিচার পাপ আছে।
 সেইজন্য আমাদের সমাজে নিষিদ্ধ পল্লী (বেশ্যালয়) ও অন্যান্য পাপপূর্ণ স্থানগুলো জায়গা করে নিয়েছে। ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ে অর্থ উপার্জনের নিশ্চিততম পথগুলোর একটা হলো এই পথ। অন্য সব ব্যবসাতে মন্দাভাব দেখা দিলেও এই ব্যবসার তেমন ক্ষতি হয় না, কারণ সব মানুষের ভিতরে ব্যভিচার পাপ রয়েছে।
 
 
পাপীর ফল পাপ
 
মানুষকে কিসের সাথে তুলনা করা যায়?
পাপের ফল উৎপাদনকারী গাছের সাথে
 
 যেমন আপেল গাছে আপেল, নাশপাতি গাছে নাশপাতি, খেজুর গাছ খেজুর এবং তালগাছে তাল জন্মে, তেমনি আমরা মানুষ, যাদের হৃদয়ে ১২ রকমের পাপ রয়েছে, আমরা পাপের ফল জন্ম দেই।
 যীশু বলেন, মানুষের হৃদয় থেকে যা বেরিয়ে আসে, তাই তাকে অশুচি করে। আপনি কি একমত? যীশুর কথায় একমত হয়ে আমরা শুধু বলতে পারি, “হ্যাঁ, আমরা পাপীর, মন্দ ক্রিয়াকারীর বংশ। হ্যাঁ, প্রভু, তোমার কথাই ঠিক।” হ্যাঁ, আমাদের মন্দ স্বভাবকে স্বীকার করে নেওয়া উচিত। আমাদের স্বভাবের সত্যকে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের স্বীকার করা উচিত।
যীশু যেমন ঈশ্বরের ইচ্ছার বাধ্য হয়েছেন, আমাদেরও তেমনি ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করা ও তা মেনে চলা উচিত। জল ও আত্মার মাধ্যমে আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার এটাই একমাত্র পথ। এগুলো ঈশ্বরের দান।
 আমার দেশ চারটি সুন্দর ঋতুতে ধন্য। ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে গাছগুলো তাদের ফল উৎপন্ন করে চলে। তেমনি ১২ রকম পাপেরও আমাদের উপরে প্রভাব রয়েছে, যার কারণে আমরা অনবরত পাপ উৎপন্ন করে চলেছি। আজ হয়তো করছি খুন (যার শিকড় আমাদের হৃদয়ে আছে), আগামীকাল করছি ব্যভিচার। রবর্তী দিন, মন্দ চিন্তা, তারপর লম্পটতা, চৌর্য্য, মিথ্যাসাক্ষী..................... ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং সারা বছর ধরে প্রতিমাসে, প্রতিদিন, প্রতি ঘন্টায় আমরা পাপ করছি। প্রতিদিন কোন না কোন পাপ না করে আমাদের কাটে না। অনবরত প্রতিজ্ঞা করছি পাপ থেকে দূরে থাকব, কিন্তু আমরা অসহায়; কারণ এভাবেই আমাদের জন্ম হয়েছে।
 আপনি কি এমন কোন আপেল গাছ দেখেছেন যে আপেলের জন্ম দিতে চায় না বলে আপেল জন্ম দেয় না? “আমি আপেল উৎপন্ন করতে চাই না।” যদি সে ফল উৎপন্ন করতে নাও চায়, তাহলে আপেল জন্ম না দিয়ে সে কিভাবে পারবে? যেভাবেই হোক বসন্তকালে ফুল ফুটবে, আপেল জন্মাবে এবং গ্রীষ্মে পাকবে, এবং শরতে তা পেড়ে খাওয়ার মত অবস্থায় পৌঁছাবে।
 এটা প্রকৃতির বিধান। এবং পাপীর জীবনও নিশ্চয়ই প্রকৃতির এই বিধান অনুসরন করে। পাপের ফল উৎপন্ন না করে পাপীর উপায় নেই।
 
 

আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশ

 
প্রায়শ্চিত্ত বলতে কি বুঝায়?
যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করা (হস্তার্পণ ও ক্রুশীয় রক্ত সেচন)
 
 আসুন, বাইবেলের একটা অংশ দেখি এবং দেখি কিভাবে মন্দা ক্রিয়াকারীর বংশ ঈশ্বরের সাক্ষাতে প্রায়শ্চিত্ত করে এবং তার মাধ্যমে সুখে জীবন যাপন করতে পারে। এটা পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার।
 লেবীয় ৪ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, “আর সাধারণ মধ্যে যদি কেহ প্রমাদবশত: সদাপ্রভুর কোন আজ্ঞানিষিদ্ধ কর্ম্ম দ্বারা পাপ করিয়া দোষী হয়, তবে সে যখন আপনার কৃত পাপ জ্ঞাত হইবে, তখন আপনার উপহার বলিয়া পালের মধ্যে হইতে এক নির্দোষ ছাগী আনিবে। পরে ঐ পাপার্থক বলির মস্তকে হস্তার্পণ করিয়া হোমবলি স্থানে সেই পাপার্থক বলি হনন করিবে। পরে যাজক অঙ্গুলি দ্বারা তাহার কিঞ্চিত রক্ত লইয়া হোমবেদির শৃঙ্গের উপরে দিবে, এবং তাহার সমস্ত রক্ত বেদির মূলে ঢালিয়া দিবে। আর মঙ্গলার্থক বলি হইতে নীত মেদের ন্যায় তাহার সকল মেদ ছাড়াইয়া লইবে; পরে যাজক সদাপ্রভুর উদ্দেশে সৌরভার্থে বেদির উপরে তাহা দগ্ধ করিবে; এইরূপ যাজক তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, তাহাতে তাহার পাপের ক্ষমা হইবে (লেবীয় ৪:২৭-৩১ পদ)।”
 পুরাতন নিয়মের যুগে মানুষ কিভাবে তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করত? তারা পাপার্থক বলির মস্তকে হস্তার্পণ করত এবং তার উপর তাদের পাপ অর্পণ করত।
 লেবীয়তে লেখা আছে, “তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে কহ, তাহাদিগকে বল, তোমাদের কেহ যদি সদাপ্রভুর উদ্দেশে উপহার করে, তবে সে পশুপাল হইতে অর্থাৎ গোরু কিম্বা মেষাপাল হইতে আপন উপহার লইয়া উৎসর্গ করুক। সে যদি গোপাল হইতে হোমবলির উপহার দেয়, তবে নির্দ্দোষ এক পুংপশু আনিবে; সদাপ্রভুর সম্মুখে গ্রাহ্য হইবার জন্য সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে আনয়ন করিবে। পরে হোমবলির মস্তকে হস্তার্পণ করিবে; আর তাহা তাহার প্রায়শ্চিত্তরূপে তাহার পক্ষে গ্রাহ্য হইবে (লেবীয় ১:২-৪ পদ)।”
 ইস্রায়েলের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বর তাদেরকে পাপার্থক বলি প্রস্তত করতে দিতেন। পাপার্থক বলির উপরে পাপ অর্পণ করার জন্য ‘হস্তার্পণ’ করতে বলতেন। পবিত্র সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণে হোমবলির বেদি ছিল। এটা চার কোনায় ৪ শৃঙ্গবিশিষ্ট একটি মেজ, যা পুলপিটের চেয়ে একটু বড়। পাপার্থক বলির মস্তকের উপরে হস্তার্পণ দ্বারা এবং হোমবলির বেদীতে সেই বলির মাংস পুড়িয়ে ইস্রায়েল জাতি তাদের পাপ অর্পণ করত।
 লেবীয় পুস্তকে ঈশ্বর বলেন, “সমাগম তাম্বুর দ্বার সমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে স্ব-ইচ্ছায় উৎসর্গ করিবে।” পাপার্থক বলির উপরে হস্তার্পণের মাধ্যমে তারা তাদের পাপ অর্পণ করত এবং পাপী বলির গলা কেটে তার রক্ত হোমবলির বেদির চারশৃঙ্গে ছিটিয়ে দিত।
 তারপর বলিটির দেহের ভিতরের সমস্ত অংশগুলো বের করে ফেলা হতো এবং মাংসগুলো খন্ড খন্ড করে হোমবলির উপরে পুড়িয়ে ছাই করা হতো। তারপর মাংসের মিষ্টি সৌরভ তাদের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হতো। এইভাবে তারা তাদের প্রতিদিনের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতো।
 বাৎসরিক পাপের জন্যও প্রায়শ্চিত্তের বলিদানের প্রথা ছিল। এটা প্রতিদিনের পাপার্থক বলিদানের চেয়ে আলাদা। কারণ মহাযাজক সমস্ত ইস্রায়েলের পক্ষে বলির উপরে হস্তার্পণ করতেন। তারপর তিনি বলির রক্ত পাপাবরণের পূর্বদিকে সাতবার ছিটিয়ে দিতেন। ইস্রায়েল সকল লোকের সামনে, প্রতি বছরের সপ্তম মাসের দশম দিনে মহাযাজক সকলের পক্ষে জীবিত ছাগটির উপরে হস্তার্পণ করতেন (লেবীয় ১৬:৫-২৭ পদ)
 
পুরাতন নিয়মের পাপার্থক বলির নিদর্শন কে?
 যীশু খ্রীষ্ট
 
 আসুন এবার দেখি নূতন নিয়মে কিভাবে বলিদান প্রথা পরিবর্তিত হল এবং কিভাবে ঈশ্বরের চিরস্থায়ী বিধি একই রকম রয়ে গেল।
 যীশুকে কেন ক্রুশে মরতে হল? জগতে এসে তিনি এমন কি ভুল করলেন যে, যার জন্য ঈশ্বর তাঁর নিজ পুত্রকে ক্রুশে মৃত্যুর অনুমোদন করলেন? কে তাঁকে ক্রুশীয় মৃত্যুর জন্য বাধ্য করল? যখন পৃথিবীর সমস্ত পাপী অর্থাৎ আমরা সকলে পাপে পতিত হলাম, তখন যীশু আমাদের উদ্ধার করতে জগতে এলেন।
 তিনি যর্দ্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হলেন তখন সমস্ত মানুষের পক্ষে তিনি ক্রুশীয় শাস্তি ভোগ করলেন। যেভাবে তিনি বাপ্তাইজিত হলেন, যেভাবে তিনি ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন, তা পুরাতন নিয়মের প্রায়শ্চিত্তের বলিদানের অনুরূপ, পাপার্থক বলির উপরে হস্তার্পণ এবং সেই বলির রক্ত সেচন।
 এভাবেই পুরাতন নিয়মে এই কাজ সাধিত হত। পাপী বলির উপর হস্তার্পণ করত এবং পাপ স্বীকার করে বলত, “হে প্রভু, আমি পাপ করেছি। আমি খুন করেছি এবং ব্যভিচার করেছি।” এইভাবে তার পাপ পাপার্থক বলির উপরে অর্পিত হত।
 যেভাবে পাপী পাপার্থক বলির উপর গলা কাটত এবং তা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করত, যীশুও ঠিক তেমনি ভাবে আমাদের সকলের পাপের জন্য আমাদেরকে উদ্ধার করবার জন্য রক্ত সেচন করেছিলেন। তাঁর বলিদানের মাধ্যমে আমাদের পাপের জন্য তিনি প্রায়শ্চিত্ত করলেন।
 আসলে যীশু আমাদের কারণে মরলেন। এ বিষয়ে আমরা যখন চিন্তা করি, তখন সকল লোকের পাপের জন্য নির্দ্দোষ পশু উৎসর্গ করার মানে কি দাঁড়ায়? পশুরা কি জানত পাপ কি? পশুরা পাপ সম্বন্ধে জানতো না, তারা মানুষের পাপ তুলে নিতে পারত না।
 পশুগুলোকে ঠিক যেমন সম্পূর্ণরূপে নির্দ্দোষ হতে হত, যীশুও তেমনি নিষ্পাপ ছিলেন। তিনি পবিত্র ঈশ্বর, ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনি কখনও পাপ করেন নাই। কাজেই ৩০ বছর বয়সে যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে তিনি আমাদের পাপ তুলে নিলেন।
 আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার জন্য, অর্থাৎ যেহেতু তিনি আমাদের পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিলেন, তাই তাকে ক্রুশে মরতে হল। মানব জাতির পাপ ধুয়ে দিয়ে পরিত্রাণ সাধন করার জন্য এই ছিল যীশুর কাজ। এবং ( মথি ৩ অধ্যায়) এ বিষয়ে লেখা আছে। পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য সুসমাচারের আরম্ভ
 
যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা যর্দ্দন নদীতে কেন যীশু বাপ্তাইজিত হলেন?
সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করার জন্য
 
 মথি ৩ অধ্যায়ে লেখা আছে, “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারাই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধনা করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন (মথি ৩:১৩-১৫ পদ)।”
 আমাদিগকে জানতে এবং বুঝতে হবে যে, কি কারণে যীশুও ত্রিশ বছর বয়সে বাপ্তাইজিত হলেন। সমস্ত লোকের সব পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য এবং ঈশ্বরের সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করার জন্য তিনি বাপ্তাইজিত হলেন। সকল মানুষকে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য নিস্পাপ যীশু খ্রীষ্ট যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হলেন। এইভাবে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং সমস্ত মানুষের পক্ষে পাপের প্রায়শ্চিত্ত হিসাবে নিজেকে উৎসর্গ করলেন। পাপ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য আমাদের সত্য জানা উচিৎ, এবং সত্যে বিশ্বাস কর উচিৎ। উদ্ধার পাওয়ার জন্য তাঁর পরিত্রাণে বিশ্বাস করা আমাদের উপরে নির্ভর করে।
 যীশুর বাপ্তিস্মের তাৎপর্য কি? এটা পুরাতন নিয়মের হস্তার্পণ প্রথার অনুরূপ। পুরাতন নিয়মের পাপার্থক বলির মস্তকের উপরে হস্তার্পণ করে সমস্ত মানুষ তাদের পাপ বলির উপরে অর্পণ করত। তেমনি ভাবে নতুন নিয়মে যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়ে যীশু নিজেকে পাপার্থক বলি হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করলেন।
 সমস্ত মানুষের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন মহত্তম ব্যক্তি, ঈশ্বর কর্তৃক অভিষিক্ত মানব জাতির প্রতিনিধি। মানব জাতির প্রতিনিধি হিসাবে, সকলের মহাযাজক হিসাবে হস্তার্পণ দ্বারা তিনি জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করলেন। “বাপ্তিস্ম” অর্থ “অর্পণ করা, সমাধিস্থ হওয়া এবং ধৌত হওয়া।” আপনি কি জানেন কেন যীশু এ জগতে এসেছিলেন এবং যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন? তাঁর বাপ্তিস্মের তাৎপর্য জেনেই কি আপনি যীশুকে বিশ্বাস করেন? আমাদের অর্থাৎ মন্দ ক্রিয়াকারীর বংশের রক্ত মাংসে কৃত সারা জীবনের পাপ তুলে নেওয়ার জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। আমাদের সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্তের আদি সুসমাচার পুর্ণ করার জন্য যীশু যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিলেন।
 মথি ৩ অধ্যায় ১৩ থেকে ১৭ পদে লেখা আছে, “তখন অর্থাৎ যে সময়ে যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন সমস্ত জগতের পাপ তাঁর উপর অর্পণ হয়েছিল।”
‘তখন’ যিশু মানবজাতির সব পাপ তুলে নিলেন, তিন বছর পর
ক্রুশে প্রাণ দিলেন এবং তৃতীয় দিবসে পুনরুত্থিত হলেন। জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্ত তিনি একবারই বাপ্তাইজিত হলেন, একবারই ক্রুশীয় মৃত্যুকে বরণ করলেন এবং একবারই পুনরুত্থিত হলেন। যাদের তিনি ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপমুক্ত দেখাতে চান, তাদের সকলের জন্য একবারই তিনি পরিত্রাণ সাধন করলেন।
 কেন যীশুকে বাপ্তাইজিত হতে হলো? কেন তাঁকে কাঁটার মুকুট পরতে হলো এবং কেন পিলাতের আদালতে সাধারণ দুর্বৃত্তের মত তাঁকে বিচারিত হতে হলো? কেন তিনি ক্রুশবিদ্ধ হলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন? এইসব প্রশ্নের উত্তর হলো, কারণ তিনি জগতের সমস্ত পাপ, আপনার এবং আমার পাপ তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে নিজের উপর তুলে নিয়েছিলেন। আমাদের পাপের কারণেই তাঁকে ক্রুশীয় মৃত্যু বরণ করতে হলো।
 ঈশ্বর আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন পরিত্রাণের এই বাক্যে আমাদের বিশ্বাস করা উচিত এবং তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত। যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশ ও পুনরুত্থান না হলে আমাদের পরিত্রাণ হতো না।
 যোহন বাপ্তাইজকের বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে যীশু জগতের সব পাপ তুলে নিলেন, যারা তাঁর পরিত্রাণের সুসমাচারে বিশ্বাস করে তাদের পাপ তুলে নিয়ে তিনি তাদেরকে উদ্ধার করলেন। অনেকে ভাবে, “তিনি শুধু আদি পাপ তুলে নিয়েছেন, তাই নয় কি? কিন্তু তাদের চিন্তা ভুল।
 বাইবেলে পরিস্কারভাবে লেখা আছে যে, যীশু বাপ্তিস্ম নেওয়ার সময় জগতের সবার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। আদি পাপসহ আমাদের সবপাপ ধৌত হয়ে গেছে। মথি ৩:১৫পদ লেখা আছে, “কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” সমস্ত ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধন করার অর্থ আমাদের সব ধরণের পাপ আমাদের থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
 যীশু কি আমাদের সারাজীবনের পাপও তুলে নিয়েছেন? হ্যাঁ, নিয়েছেন। আসুন, প্রথমে লেবীয় পুস্তকে এর প্রমাণ দেখি। এখানে মহাযাজক এবং প্রায়শ্চিত্ত দিনের বলিদানের কথা বলা হয়েছে।
 
 
ইস্রায়েল জাতির সারা বছরের পাপের প্রায়শ্চিত্তের বলিদান
 
এই জগতের পাপার্থক বলির মাধ্যমে কি ইস্রায়েল জাতি পবিত্র হতে পারত?
না
 
 “ আর হারোণ আপনার জন্য পাপার্থক বলির গোবৎস আনয়ন করিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিবে। পরে সেই দুইটী ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বার সমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে। পরে হারোণ ঐ দুইটী ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে। কিন্তু গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ ত্যাগের নিমিত্তে হয়, সে যেন ত্যাগের নিমিত্তে প্রান্তরে প্রেরিত হইতে পারেম তন্নিমিত্ত তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাকে জীবিত উপস্থিত করিতে হইবে (লেবীয় ১৬:৬-১০ পদ)।”
 এখানে হারোণ ইস্রায়েল জাতির সারা বছরের পাপের প্রায়শ্চিত্তের উদ্দেশ্যে সমাগম তাম্বুর দ্বারে দুটি ছাগ নিতেন।
 “পরে হারোণ ঐ দুইটি ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে।” ত্যাগের জন্য যে ছাগটি সেটা প্রায়শ্চিত্তের জন্য প্রয়োজন ছিল। দৈনন্দিন পাপের প্রায়শ্চিত্তের বলিদান প্রথা ছিল এটা, পাপী বলির মস্তকে হস্তার্পণ করে নিজের পাপ বলির উপরে অর্পণ করত। কিন্তু বাৎসরিক পাপের ক্ষেত্রে, মহাযাজক নিজে সকল মানুষের পক্ষে বলির মস্তকের উপর হস্তার্পণ করে তাদের সারা বছরের পাপ বলির উপর অর্পণ করতেন, প্রতি বছর সপ্তম মাসের দশম দিনে এই পর্ব পালন করা হতো।
লেবীয় ১৬:২৯-৩১ পদে লেখা আছে, “তোমাদের নিমিত্ত ইহা চিরস্থায়ী বিধি হইবে; সপ্তম মাসের দশম দিনে স্বদেশী কিম্বা
তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী বিদেশী, তোমরা আপন আপন প্রাণকে দুঃখ দিবে ও কোন ব্যবসায় কর্ম্ম করিবে না। কেননা সেই দিন তোমাদিগকে শুচি করণার্থে তোমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা হইবে; তোমরা সদাপ্রভুর সম্মুখে আপনাদের সকল পাপ হইতে শুচি হইবে। তাহা তোমাদের বিশ্রামার্থক বিশ্রামদিন; এবং তোমরা আপন আপন প্রাণকে দুঃখ দিবে; ইহা চিরস্থায়ী বিধি।”
 পুরাতন নিয়মে ইস্রায়েল জাতির লোকেরা প্রতিদিনের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য পাপার্থক বলি আনত, বলির উপর পাপ অর্পণ করত, এবং পাপস্বীকার করত, “হে প্রভু, আমি অমুক অমুক পাপ করেছি। দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর।” তারপর বলির গলা কেটে তার রক্ত যাজককে দিত। সে মনে করত যে পাপ থেকে মুক্ত হয়ছে এবং বাড়ি ফিরে যেত। পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে পাপার্থক বলি ঐ পাপীর পক্ষে মৃত্যুবরণ করত। তার পরিবর্তে পাপার্থক বলি মৃত্যুবরণ করত। ঈশ্বর যা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, পুরাতন নিয়মে পাপার্থক বলি হিসাবে সেই সব পাশুকে বেছে নেওয়া হতো, যেমন একটি ছাগ, একটি গো-বৎস, একটি বৃষ। ঈশ্বরের অসীম প্রেমের জন্য তিনি পাপীর মৃত্যুর পরিবর্তে পশুর জীবন উৎসর্গ করাকে অনুমোদন করেছিলেন।
 পুরাতন নিয়মে এইভাবে পাপী তার পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্তের বলিদান করত। হস্তার্পণের দ্বারা পাপীর সমস্ত অধর্ম পাপার্থক বলির উপরে অর্পণ করা হতো এবং পাপীর পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধন করার জন্য বলির রক্ত যাজককে দিত।
 যাহোক, প্রতিদিনের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা অসম্ভব ছিল। এই জন্য ঈশ্বর মহাযাজকের মাধ্যমে বাৎসরিক পাপের প্রায়শ্চিত্তের অনুমোদন করলেন, প্রতি বছর সপ্তম মাসের দশম দিন সমগ্র ইস্রায়েল জাতির পক্ষে যাজক তা সম্পন্ন করতেন।
 তাহলে প্রায়শ্চিত্ত দিনে যাজকের ভূমিকা কি ছিল? প্রথমতঃ মহাযাজক হারোণ পাপার্থক বলির উপরে হস্তার্পণ করতেন এবং লোকদের পাপ স্বীকার করতেন, “হে প্রভু, ইস্রায়েল লোকেরা অমুক অমুক পাপ করেছে; নরহত্যা, ব্যভিচার, লম্পটতা ,চৌর্য্য, মিথ্যা সাক্ষী, ঈশ্বর নিন্দা...............।”
তারপর তিনি বলির গলা কাটতেন এবং বলির রক্ত সমাগম
তাম্বুর ভিতরে পাপাবরণের উপর সাতবার ছিটিয়ে দিতেন। (বাইবেলে সাত সংখ্যা একটি পূর্ণ সংখ্যা)
 সকল লোকের পক্ষে পাপার্থক বলির মস্তকে তাদের বাৎসরিক পাপ অর্পণ করা এবং বলিটি উৎসর্গ করা মহাযাজকের কাজ ছিল।
 ঈশ্বর ন্যায় বিচারক, পাপীকে উদ্ধার করার জন্য তাই তিনি তাদের পরিবর্তে পাপার্থক বলির মৃত্যু অনুমোদন করলেন। ঈশ্বর আসলেই দয়াময়, তাই তিনি অনুমোদন করলেন যেন পাপীর প্রাণের পরিবর্তে অন্য প্রাণ উৎসর্গ করা হয়। মহাযাজক তখন পাপাবরণের পূর্বদিকে রক্ত ছিটাতেন, এইভাবেই তিনি প্রায়শ্চিত্তের দিনে সপ্তম মাসের দশম দিনে সমস্ত লোকের পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধন করতেন।
 
পুরাতন নিয়ম অনুযায়ী কে বলিদান যোগ্য মেষশাবক?
যীশু, যিনি নিষ্পাপ
 
 প্রায়াশ্চিত্তের দিনে ইস্রায়েলদের পক্ষে মহাযাজক দুইটি ছাগল উৎসর্গ করতেন। এদের মধ্যে একটি ছিল ‘ত্যাগের নিমিত্তে’ অর্থাৎ ‘ছেড়ে দেওয়ার জন্য’। নূতন নিয়মে যীশু খ্রীষ্টই ত্যাগের নিমিত্তের অনুরূপ। “কারণ ঈশ্বর জগতকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে প্রদান করিলেন, যেন যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায় (যোহন ৩:১৬ পদ)।” ঈশ্বর তাঁর একজাত পুত্রকে বলিদানযোগ্য মেষশাবক হিসাবে দিলেন এবং বলিদানযোগ্য মেষশাবক হিসাবে সমগ্র মানব জাতির পক্ষে তিনি যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিলেন এবং ত্রাণকর্তা জগতের মসীহ হলেন। মসীহ মানে ত্রাণকর্তা এবং যীশু খ্রীষ্ট মানে ‘রাজা যিনি আমাদের উদ্ধার করবেন।’
 সুতরাং পুরাতন নিয়মে প্রায়শ্চিত্তের দিনে লোকেরা বাৎসরিক পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতেন। যীশু প্রায় ২০০০ বছর আগে এসে বাপ্তিস্ম নিলেন। ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা রক্ত বহালেন এবং আমাদের সকলের জন্য প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার সাধন করলেন।
 এখন আসুন,লেবীয় পুস্তক থেকে একটি অংশ পাঠ করি। “পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অর্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও তাহাদের সমস্ত অধর্ম্ম অর্থাৎ তাহাদের সর্বাবিধ পাপ তাহার উপর স্বীকার করিয়া সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে। আর ঐ ছাগ নিজের উপরে তাহাদের সমস্ত অপরাধ বিচ্ছিন্ন ভূমিতে বহিয়া লইয়া যাইবে; আর সেই ব্যক্তি ছাগলটীকে প্রান্তরে ছাড়িয়া দিবে (লেবীয় ১৬:২১-২২ পদ)।”
 লেবীয় ১ অধ্যায়ে যেমন লিখিত আছে, তেমনি এখানেও ছাগের মস্তকে পাপ অর্পণের কথা লিখিত আছে। “ তাহাদের সমস্ত অধর্ম” অর্থাৎ হৃদয়ে এবং মাংসে কৃত সমস্ত পাপ। হস্তার্পণের দ্বারা ‘তাহাদের সমস্ত অধর্ম’ পাপার্থক বলির উপরে অর্পণ করা হতো।
 
 
ঈশ্বরের ব্যবস্থা দ্বারা পাপের প্রকৃত জ্ঞান আমাদের অর্জন করতে হবে
 
ঈশ্বর কেন আমাদের ব্যবস্থা দিলেন?
আমাদেরকে পাপের জ্ঞান দেওয়ার জন্য
 
 ঈশ্বরের ব্যবস্থায় ও আজ্ঞায় ৬১৩ টি বিষয় নিহিত রয়েছে। প্রকৃত পক্ষে, আমরা যদি চিন্তা করি তাহলে দেখতে পাব, তিনি আমাদের যা করতে নিষেধ করেছেন, আমরা তাই করছি কিন্তু আমাদের যা করতে বলেছেন, আমরা তা করিনি।
সুতরাং আমরা পাপী। বাইবেলে লেখা আছে যে। আমরা যেন আমাদের পাপ সুতরাং বুঝতে পারি এইজন্য ঈশ্বর ব্যবস্থা দিলেন (রোমীয় ৩:২০ পদ)। অর্থাৎ তিনি ব্যবস্থা ও আজ্ঞা সমূহ দিলেন আমাদেরকে এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য যে আমরা পাপী। তিনি ব্যবস্থা এই কারণে দেন নাই, যে,ব্যবস্থা অনুসারে আমাদের জীবন যাপন করতে হবে, কিন্তু আমরা যেন আমাদের পাপ চিহ্নিত করতে পারি, এইজন্য ব্যবস্থা দিয়েছেন।
 ব্যবস্থা বা আজ্ঞা পালন করার জন্য দেন নাই। কুকুরকে কখনো মানুষের মত জীবন যাপন করার প্রত্যাশা করা যায় না,। তেমনি আমরা কখনো ঈশ্বরের ব্যবস্থানুযায়ী জীবন যাপন করতে পারি না, কিন্তু ব্যবস্থা ও আজ্ঞার মাধ্যমে আমাদের পাপগুলো আমরা উপলব্ধি করতে পারি মাত্র।
 আমরা পাপের সমষ্টি, কিন্তু আমরা নিজেরা তা উপলব্ধি করি না, তাই ঈশ্বর ব্যবস্থা দিলেন। “তোমরা নরহত্যাকারী, লম্পট, মন্দ ক্রিয়াকারী।” তিনি নিষেধ করেছেন নরহত্যা করতে, অথচ আমরা তা করছি। কখনো হৃদয়ে,কখনো বাস্তবে।
 যাহোক, এটা স্পষ্ট যে, আমরা নরহত্যাকারী, তাই ব্যবস্থায় নরহত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে। আমরা জানি আমরা খুনী, তাই বলি, “হায়, আমি ভুল করেছি। আমি পাপী, যা করা উচিত নয় তাই করেছি। আমি পাপ করেছি।”
 সুতরাং সমগ্র ইস্রায়েল জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য পুরাতন নিয়মে হারোণকে ঈশ্বর প্রায়শ্চিত্তের বলিদান উৎসর্গ করার অনুমতি দিয়েছিলেন এবং হারোণ বছরে একবারই তা পালন করতেন।
 পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রায়শ্চিত্ত দিনে দুইটি পাপার্থক বলি উৎসর্গ করা হতো। একটিকে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান করা হতো এবং অন্যটিকে সমগ্র ইস্রায়েল জাতির বাৎসরিক পাপ সহ প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হতো। একজন উপযুক্ত ব্যক্তি দ্বারা ছাগটিকে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়ার পূর্বে মহাযাজক তার মস্তকের উপরে হস্তার্পণ করতেন এবং ইস্রায়েলের পাপ স্বীকার করতেন। “হে প্রভু, লোকেরা নরহত্যা করেছে, লম্পটতা করেছে, চুরি করেছে, মূর্তিপূজা করেছে................। আমরা পাপ করেছি।”
 প্যালেষ্টাইন দেশটি বালুময় মরুভুমির দেশ। এই সীমাহীন মরুভুমির প্রান্তরে ছাগটিকে ছেড়ে দেওয়া হতো। যখন এটাকে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। ইস্রায়েল লোকেরা তখন তাকিয়ে দেখতো
 এবং বিশ্বাস করতো তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়েছে। তারা মনে শান্তি পেত এবং লোকদের সারা বছরের পাপ নিয়ে ছাগটি প্রান্তরে মারা পড়তো।
 ঈশ্বরের মেষশাবক যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের সকলের পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন। যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের সকলের সমস্ত পাপ সম্পূর্ণরূপে ধৌত হয়ে গেছে।
 যীশুই ঈশ্বর এবং আমাদের ত্রাণকর্তা। তিনি ঈশ্বরের পুত্র হয়ে মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য নেমে এলেন এবং তিনি সৃষ্টিকর্তা, নিজ মূর্তিতে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। আমাদের সকলকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য তিনি পৃথিবীতে নেমে এলেন।
 শুধু আমাদের দৈনন্দিন পাপ নয়, ভবিষ্যতের পাপও, মাংসের এবং আত্মার পাপ যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছিল। ঈশ্বরের ধার্মিকর্তা পূর্ণরূপে সাধন করার জন্য, পৃথিবীর সমস্ত পাপের পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য যোহন বাপ্তাইজকের কাছে তাঁকে বাপ্তাইজিত হতে হল।
 প্রকাশ্যে কাজ আরম্ভ করার সময়ে অর্থাৎ ক্রুশ বিদ্ধ হওয়ার তিন বছর পূর্বে যর্দ্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিয়ে তিনি পৃথিবীর সব পাপ তুলে নিলেন। মানব জাতির পরিত্রাণের জন্য তাঁর প্রায়শ্চিত্তের কাজ তাঁর বাপ্তিস্ম থেকেই শুরু হয়েছিল।
 যর্দ্দন নদীতে কোমর পর্যন্ত গভীর জলে যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে হস্তার্পণ করলেন এবং তাঁকে জলে ডুবালেন। এই বাপ্তিস্ম পুরাতন নিয়মের হস্তার্পণের অনুরূপ এবং একইভাবে পাপ অর্পণ করাই হল এর মূল উদ্দেশ্য।
 জলে ডুবানো অর্থ মৃত্যু এবং ডুবন্ত অবস্থা থেকে উঠে আসার মানে পুনরুত্থান। সুতরাং যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু তিনটি বিষয় প্রকাশ্যে সাধন করলেন: পাপ তুলে নেওয়া, ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করা এবং পুনরুত্থিত হওয়া।
আমাদিগকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য যীশু যে বাক্য দিয়েছেন, তা মেনে চললেই আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পাব। যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের উদ্ধার করতে চেয়েছেন এবং
পুরাতন নিয়মে তিনি যে বিধি স্থির করেছিলেন, তা এভাবে পূর্ণ হল। যীশু নিজের মস্তকে আমাদের সমস্ত পাপ নিয়ে ক্রুশের দিকে অগ্রসর হলেন।
 
আমাদের সব পাপ তুলে নেওয়ার পরে, আমাদের আর কি কাজ বাকী থাকে?
আমাদের কেবল মাত্র ঈশ্বরের বাক্য মেনে চলতে হবে
 
 যোহন ১:২৯ পদে লেখা আছে, “পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকট আসিতে দেখিলেন, আর কহিলেন, ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।”
 যোহন বাপ্তাইজক সাক্ষ্য দিলেন, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” যর্দ্দনে বাপ্তিস্মের সময় যীশুর উপর সমস্ত পাপ অর্পিত হল। এটা বিশ্বাস করুন, তাহলেই আপনি আপনার পাপ থেকে মুক্ত হয়ে আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন।
 ঈশ্বরের বাক্যে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। আমাদের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা, হোঁচট খাওয়া, দূরে সরিয়ে রেখে এই সত্য বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশুই জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং আমাদিগকে তার বাক্য মেনে চলতে হবে। যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন-একথা বলা এবং তিনি আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধনের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্মিকতা পূর্ণরুপে সাধন করছেন-এ কথা বলা হুবুহু একই বিষয় এবং ‘হস্তার্পণ’ এবং ‘বাপ্তিস্ম’ একই কথা।
 ‘সকল’, ‘প্রত্যেক’, ‘সমস্ত’ শব্দগুলি ভিন্ন হলেও এদের অর্থ একই। পুরাতন নিয়মে ‘হস্তার্পণ’ নতুন নিয়মেও একই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, তবে নতুন নিয়মে কথাটিকে ‘বাপ্তিস্ম’ হিসাবে বলা হয়েছে। এই সাধারণ সত্য প্রকাশ করা হয়েছে যে বাপ্তাইজিত হয়ে এবং ক্রুশে বিচারিত হয়ে যীশু আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন। এই মুল সুসমাচারে বিশ্বাস করার মাধ্যমেই আমরা পাপ থেকে মুক্তি পাই।
 যখন আমরা বলি যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তখন ‘জগতের সমস্ত পাপ’ বলতে কি বুঝান হয়? বুঝান হয় যে পাপসহ আমরা জন্মগ্রহণ করি এবং মন্দ চিন্তা থেকে যে সমস্ত পাপের উদ্ভব হয়, চৌর্য, লম্পটতা, লোভ, দুষ্টতা, ঈশ্বর নিন্দা, গর্ব এবং মুর্খতা –এগুলো মানুষের হৃদয়ে বাস করে। তার অর্থ হল সমস্ত ধরণের অধার্মিকতা এবং পাপ মানুষের হৃদয়ে এবং মাংসে বাস করে।
 “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু, কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান, যীশু খ্রীষ্টে অনন্ত জীবন (রোমীয় ৬:২৩ পদ)।”
 “রক্ত সেচন ব্যতিরেকে পাপের মোচন হয় না (ইব্রীয় ৯:২২ পদ)।” এই বাক্য গুলোতে যেভাবে বলা হয়েছে সেভাবেই পাপের মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট সমস্ত মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য নিজের জীবনকে পাপের মুল্য দিতে একবারই দান করলেন।
 সেইজন্য আমাদেরকে যা করতে হবে তা হল, মূল সুসমাচরে অর্থাৎ যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে এবং যীশুর ঈশ্বরত্বে বিশ্বাস করতে হবে। তিনিই আমাদিগকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করে আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন এই সত্য বিশ্বাস করতে হবে।
 
 
আগামী দিনের পাপের প্রায়শ্চিত্ত
 
আমাদের পাপের জন্য আর কি কোন বলিদানের প্রয়োজন আছে?
আর কখনও না
 
“সমস্ত জগতের পাপ” বলতে আগামী দিনের, পরের দিনের এবং এমনকি আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত কৃত সকল পাপ, আজকের, গতকালের এবং গত কালের পূর্বের দিনের পাপও বুঝান হয়েছে। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কৃত সকল পাপকে “সমস্ত জগতের পাপ” বলা হয়েছে এবং তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর উপরে সমস্ত পাপ অর্পণ করা হয়েছে। সুতরাং মৃত্যু দিন পর্যন্ত আমরা যেসব পাপ করব ইতিপূর্বেই তুলে নেওয়া হয়েছে।
 আমাদের শুধু প্রয়োজন মূল সুসমাচারে বিশ্বাস করা এবং ইশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস ও তা মান্য করা। পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য আমাদের নিজেদের চিন্তা ভাবনা গুলোকে দূর করা উচিত। আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, “যে পাপ এখনও করা হয়নি তা তিনি কিভাবে তুলে নিলেন?” তাহলে আমি আপনাকে প্রশ্ন করব, “তাহলে কি যতবার আমরা পাপ করব ততবারই যীশুকে জগতে আসতে হবে এবং বার বার রক্ত সেচন করতে হবে?”
 নূতন জন্মের সুসমাচারের মধ্যেই আবার পাপের প্রায়শ্চিত্তের ব্যবস্থা রয়েছে। “এবং রক্তসেচন ব্যতিরেকে পাপের মোচন হয় না (ইব্রীয় ৯:২২ পদ)।” যখন কেউ পাপ থেকে মুক্ত হতে চাইতো তাকে পাপার্থক বলির উপর হস্তার্পণ করতে হতো এবং তার সেই পাপ নিয়ে পাপার্থক বলিটি মৃত্যু বরণ করতো।
 অনেকটা এইভাবেই মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য ঈশ্বরের পুত্র জগতে নেমে এলেন। আমাদের সব পাপ তুলে নেওয়ার জন্য তিনি বাপ্তাইজিত হলেন এবং পাপের মূল্য পরিশোধ করার জন্য ক্রুশে রক্তসেচন করলেন, ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন, বললেন, ‘সমাপ্ত হইল’। মৃত্যুর তিন দিন পর তিনি পুনরুত্থিত হলেন এবং এখন ঈশ্বরের দক্ষিণে বসে আছেন। তিনি চিরদিনের জন্য আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন।
 পাপ থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পাওয়ার জন্য, যে সব চিন্তা ভাবনা হৃদয়ে স্থায়ী হয়ে গেছে এবং প্রতিদিনের এবং বার্ষিক পাপ মুক্তির জন্য হৃদয়ে যে ধর্মীয় বিশ্বাস রয়েছে সেগুলো পরিত্যাগ করা উচিত। মানুষের পাপের পুর্ণ প্রায়শ্চিত্ত সাধন করার জন্য একবারই বলিদানের প্রয়োজন ছিল। স্বর্গীয় ঈশ্বর তাঁর নিজ পুত্রের উপরে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন এবং আমাদের জন্য তাঁকে ক্রুশে হত হতে হল। এবং তাঁর মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের মাধ্যমে পরিত্রাণ সম্পূর্ণ হল।
“তিনি অবজ্ঞাত ও মনুষ্যদের ত্যাজ্য, ব্যথার পাত্র ও যাতনা পরিচিতি হইলেন; লোকে যাহা হইতে মুক আচ্ছাদন করে, তাহার
ন্যায় তিনি অবজ্ঞাত হইলেন, আর আমরা তাঁহাকে মান্য করি নাই। সত্য, আমাদের যাতনা সকল তিনিই তুলিয়া লইয়াছেন, আমাদের ব্যথা সকল তিনি বহন করিয়াছেন; তবু আমরা মনে করিলাম, তিনি আহত, ঈশ্বরকর্ত্তৃক প্রহারিত ও দুঃখার্ত্ত। কিন্তু তিনি আমাদের অধর্ম্মের নিমিত্ত বিদ্ধ, আমাদের অপরাধের নিমিত্ত চুর্ণ হইলেন; আমাদের শান্তিজনক শান্তি তাঁহার উপর বর্ত্তিল, এবং তাঁহার ক্ষত সকল দ্বারা আমাদের আরোগ্য হইল। (যিশাইয় ৫৩:৩-৫ পদ)।” যিশাইয় ৫৩ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে, জগতের মানুষের সমস্ত পাপ ও অধর্ম যীশু খ্রীষ্টের উপরে বর্তানো হয়েছে।
 নূতন নিয়মে ইফিষীয় ১:৪ পদে বলা হয়েছে, “অর্থাৎ পৃথিবী সৃষ্টি হওয়ার আগে থেকেই তিনি আমাদের মনোনীত করে রেখেছিলেন। এমনকি পৃথিবীর সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে খ্রীষ্টে তিনি আমাদের মনোনীত করেছেন, পূর্বে আমাদের যে চিন্তাই থাকুক না কেন, এখন আমাদের ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস এবং তা মান্য করতে হবে, অর্থাৎ জল, রক্ত এবং আত্মার বাক্যে বিশ্বাস করতে হবে।”
 ঈশ্বর বলেন যে, তাঁর মেষশাবক যীশু খ্রীষ্ট সমস্ত মানব জাতির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। ইব্রীয় ১০ অধ্যায়ে লেখা আছে, “কারণ ব্যবস্থা আগামী উত্তম উত্তম বিষয়ের ছায়াবিশিষ্ট, তাহা সেই সকল বিষয়ের অবিকল মূর্ত্তি নহে; সুতরাং একরূপ যে সকল বার্ষিক যজ্ঞ নিয়ত উৎসর্গ করা যায়, তদ্দ্বারা, যাহারা নিকটে উপস্থিত হয়, তাহাদিগকে ব্যবস্থা কখনও সিদ্ধ করিতে পারে না (ইব্রীয় ১০:১ পদ)।”
এখানে বলা হয়েছে যে, বছরের পর বছর অবিরত বলিদান উৎসর্গ করলেও তা আমাদের শুদ্ধ করতে পারে না। ব্যবস্থা আগামী উত্তম বিষয়ের ছায়াস্বরূপ, সাধারণ কোন বিষয় নয়। আমাদিগকে একেবারে শুদ্ধ করার জন্য মসীহ যীশু খ্রীষ্ট এলেন (যেমন ইস্রায়েলরা সারা বছরের জন্য একবারই প্রায়শ্চিত্ত করতো), বাপ্তাইজিত হলেন, আমাদের পাপের জন্য ক্রুশে প্রায়শ্চিত্ত করলেন।
 এই জন্য ইব্রীয় ১০ অধ্যায়ে যীশু বলেন, “এই সকল ব্যবস্থানুসারে উৎসৃষ্ট হয়-তৎপরে তিনি বলিলেন, দেখ তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি। তিনি প্রথম বিষয় লোপ করিতেছেন, যেন দ্বিতীয় বিষয় স্থির করেন। সেই ইচ্ছাক্রমে, যীশু খ্রীষ্টের দেহ
একবার উৎসর্গ করণ দ্বারা, আমরা পবিত্রীকৃত হইয়া রহিয়াছি। আর প্রত্যেক যাজক দিন দিন সেবা করিবার এবং একরূপ নানা যজ্ঞ পুনঃ পুনঃ উৎসর্গ করিবার জন্য দাঁড়ায়; সেই সকল যজ্ঞ কখনও পাপ হরণ করিতে পারে না। কিন্তু ইনি পাপার্থক একই যজ্ঞ চিরকালের জন্য উৎসর্গ করিয়া ঈশ্বরের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন, এবং তদবধি অপেক্ষা করিতেছেন, যে পর্যন্ত তাঁহার শত্রুগণ তাঁহার পাদপীঠ না হয়। কারণ যাহারা পরিত্রীকৃত হয়, তাহাদিগকে তিনি একই নৈবেদ্য দ্বারা চিরকালের জন্য সিদ্ধ করিয়াছেন। আর পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ অগ্রে তিনি বলেন, সেই কালের পর, প্রভু কহেন, আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব। তৎপরে তিনি বলেন, এবং তাহাদের পাপ ও অধর্ম্ম সকর আর কখনও স্মরণে আনিব না। ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না (ইব্রীয় ১০:৯-১৮ পদ)।”
 আমরা বিশ্বাস করি যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন।
 
 
জল ও আত্মায় নতুন জন্ম লাভের পরিত্রাণ আমাদের হৃদয়ে এবং মনে গভীরভাবে গেঁথে আছে
 
আমরা আর পাপ করিনা, সেই কারণে কি আমরা ধার্মিক?
না, যীশু আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন এবং আমরা তাঁতে বিশ্বাস করি তাই আমরা ধার্মিক
 
 আপনারা সবাই কি বিশ্বাস করেন? –আমেন- আপনারা কি
 ঈশ্বরের এই বাক্য বিশ্বাস করেন এবং তা মান্য করেন যে, আমাদের
উদ্ধার করার জন্য যীশু খ্রীষ্ট বাপ্তাইজিত হলেন এবং ক্রুশে রক্তসেচন করলেন। নতুন জন্ম লাভের জন্য আমাদের তা বিশ্বাস করতেই হবে। পাপ মুক্তির সুসমাচারের মাধ্যমে যীশু আমাদের এবং জগতের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, এ কথা বিশ্বাস করলেই আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পাই।
 ঈশ্বরের ব্যবস্থা মান্য করে আমরা কখনও শুদ্ধ হতে পারি না, কিন্তু তাঁর কাজে বিশ্বাস করে আমরা শুদ্ধ হতে পারি। যর্দ্দনে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। এবং ক্রুশীয় বিচারদন্ড ভোগ করে আমাদের পাপের শাস্তি থেকে উদ্ধার করেছেন। এই সুসমাচার হৃদয়ে বিশ্বাস করে আমরা পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি এবং ধার্মিকগণিত হতে পারি। আপনি তা বিশ্বাস করেন?
 যীশুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশীয় মৃত্যু এবং পুনরুত্থান মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করে এবং ঈশ্বরের অনন্ত প্রেমের ভিত্তিতে পরিত্রাণের এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। আমরা যেমন তেমনিভাবেই ঈশ্বর আমাদের প্রেম করেন এবং তিনি ন্যায় বিচারক তাই প্রথমে তিনি আমাদের ধার্মিক করেন। যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাঁর উপরে আমাদের পাপ অর্পণ করে ঈশ্বর আমাদের ধার্মিকগণিত করেন।
 আমাদের পাপ ধৌত করার জন্য তিনি তাঁর পুএ যীশুকে জগতে পাঠালেন। যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য তিনি অনুমোদন করলেন এবং আমাদের পাপের জন্য তাঁর পুত্রের উপর বিচার অর্পণ করলেন। জল ও রক্তের পরিত্রাণের মাধ্যমে, ঈশ্বরের স্বর্গীয় প্রেমের মাধ্যমে তিনি আমাদের তাঁর ধার্মিক সন্তান করেছেন।
 ইব্রীয় ১০:১৬ পদে লেখা আছে, “আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব।”
ঈশ্বরের সাক্ষাতে হৃদয়ে এবং মনে আমরা কি পাপী না কি ধার্মিক? ঈশ্বরের বাক্য মেনে চললে আমরা ধার্মিক হই। যীশু খ্রীষ্টই আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং বিচারিত হলেন। যীশু খ্রীষ্ট আমাদের ত্রাণকর্তা। আমরা ভাবতে পারি।“প্রতিদিন পাপ করলে আমরা কিভাবে ধার্মিকগনিত হব? আমরা নিশ্চিতভাবে পাপী।”যীশু খ্রীষ্ট যেমন তাঁর পিতার বাক্য মান্য করেছেন, আমরা যদি তেমনি
ঈশ্বরের বাক্য মেনে চলি, তাহলে আমরা ধার্মিকগনিত হব। অবশ্যই, পূর্বে যেমন বলেছি, নতুন জন্ম লাভের পূর্বে আমাদের হৃদয়ে পাপ ছিল। হৃদয়ে পাপ মুক্তির সুসমাচার গ্রহণ করার পরে আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। যখন আমরা সুসমাচের জানতাম না। তখন পাপী ছিলাম। যীশুর পরিত্রাণে বিশ্বাস করার পর থেকে আমরা ধার্মিকগণিত হই এবং ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে ধার্মিকগনিত হই। প্রেরিত পৌল যা বলেছেন, এটা সেই ধার্মিকগণিত হওয়া বিশ্বাস। পাপ মুক্তির সুসমাচারে বিশ্বাসই আমাদের ধার্মিকগণিত করেছে। প্রেরিত পৌল বা অব্রাহাম বা কোন পূর্বপুরুষই নিজেদের কর্মের মাধ্যমে ধার্মিক গণিত হতে পারে নাই। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস করে এবং তা মান্য করে ধার্মিকগণিত হয়েছিলেন।
 ইব্রীয় ১০:১৮ পদে আছে, “ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না।” যেমন লিখিত আছে, পাপের কারণে আমাদেরকে যেন মরতে না হয়, এই জন্য ঈশ্বর আমাদের উদ্ধার করলেন, আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন? আমেন।
 ফিলিপীয় ২ অধ্যায় আছে, “খ্রীষ্ট যীশুতে যে ভাব ছিল, তাহা তোমাদিগতেও হউক। ঈশ্বরের স্বরূপ বিশিষ্ট থাকিতে তিনি ঈশ্বরের সহিত সমান থাকা ধরিয়া লইবার বিষয় জ্ঞান করিলেন না, কিন্তু আপনাকে শূন্য করিলেন, দাসের রূপ ধারণ করিলেন, মনুষ্যদের সাদৃশ্যে জন্মিলেন; এবং আকার প্রকারে মনুষ্যবৎ প্রত্যেক্ষ হইয়া আপনাকে অবনত করিলেন; মৃত্যু পর্যন্ত, এমন কি, ক্রুশীয় মৃত্যু পর্যন্ত আজ্ঞাবহ হইলেন। এই কারণ ঈশ্বর তাঁহাকে অতিশয় উচ্চ পদান্বিতও করিলেন, এবং তাঁহাকে সেই নাম দান করিলেন, যাহা সমুদয় নাম আপেক্ষা শ্রেষ্ঠ; যেন যীশুর নাম স্বর্গ মর্ত্ত পাতালনিবাসীদের সমুদয় জানু পাতিত হয়, এবং সমুদয় জিহবা যেন স্বীকার করে যে, যীশু খ্রীষ্টই প্রভু, এইরূপ পিতা ঈশ্বর যেন মহিমান্বিত হন ( ফিলিপীয় ২:৫-১১ পদ)।”
 নিজের সুনামের জন্য যীশু খ্রীষ্ট জগতে বিশ্বাসের বিদ্ধ করেন নাই। বরং দাসের রূপ ধারণ করলেন এবং মানুষের আকার ধারণ করলেন। তিনি নিজেকে নত করলেন এবং আমাদের উদ্দারের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত বাধ্য থাকলেন।
 তাই আমরা যীশুর প্রশংসা করে বলি, “ তিনি আমাদের ঈশ্বর, ত্রাণকর্তা এবং রাজা।” যীশু তাঁর পিতার ইচ্ছা শেষ পর্যন্ত পালন করেছিলেন বলে, আমরা ঈশ্বরের গৌরব করি এবং যীশুর প্রশংসা করি। তিনি যদি পিতার ইচ্ছা পালন না করতেন তাহলে আমরা এখন তাঁর গৌরব করতাম না। কিন্তু যেহেতু ঈশ্বরের পুত্র মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করলেন তাই সকল মানুষ এবং সমস্ত সৃষ্টি তাঁর প্রশংসা করে এবং চিরকাল করবে।
 ঈশ্বরের মেষশাবক হিসাবে যীশু খ্রীষ্ট জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং লেখা আছে যে, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি তা তুলে নিয়েছেন।প্রায় ২০০০ বছর আগে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যেহেতু আপনি এবং আমি জন্ম থেকেই এই পৃথিবীতে বাস করছি, তাই আমাদের পাপও জগতের সমস্ত পাপের মধ্যে নিহিত।
 
আগামীকাল পাপ করলে কি আমরা পাপী হব?
না, যীশু আমাদের অতীত বর্তমান এবং ভবিষ্যতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন
 
 সারা জীবনের আমাদের নিজস্ব অধর্মের সাথে আদি পাপ পৃথক না করেই কি জন্ম থেকে আমরা পাপ করছি না? যীশু জানতেন যে জন্মের দিন থেকে মৃত্যু দিন পর্যন্ত আমরা পাপ করব এবং আগাম তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন, এখন কি আমরা তা দেখতে পাচ্ছি? যদি আমরা ৭০ বছর বেঁচে থাকতাম, তবে একশ ট্রাক ভর্তি করার মত যথেষ্ট পাপ আমাদের জমা হতো। কিন্তু যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে এক বারেই আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। তিনি তাঁর সাথে আমাদের পাপগুলো ক্রুশে নিয়ে গেলেন।
 যীশু যদি শুধু আমাদের আদি পাপ তুলে নিতেন, তবে আমাদের মরতে হতো এবং নরকে যেতে হতো। এমনকি যদি আমরা চিন্তা
করি যে, তিনি আমাদের সব পাপ তুলে নিতে পারতেন না, তাতেও এই সত্য পরিবর্তন হতো না যে, যীশু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন। এ জগতে আমরা কতটা পাপ করতে পারি? যত পাপই করি না কেন, সবই জগতের সমস্ত পাপের মধ্যে নিহিত।
 যীশু যখন তাঁকে বাপ্তিস্ম দেওয়ার জন্য যোহনকে বললেন, তিনি আসলেই তা বললেন, যীশু নিজেই সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যীশুর পূর্বে ঈশ্বর তাঁর দাসকে পাঠিয়েছিলেন এবং তার দ্বারাই বাপ্তিইজিত হলেন। মানব জাতির প্রতিনিধি যোহনের কাছে বাপ্তাইজিত হয়ে, বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য তার কাছে মাথা নত করে যীশু মানুষের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন।
 ২০ থেকে ৩০, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়স এবং পরবর্তীতে আমাদের সন্তানদের পাপও জগতের সমস্ত পাপের সাথেই রয়েছে, যা যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তুলে নিয়েছেন।
 কে বলতে পারে জগতে এখনও পাপ রয়েছে? যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যখন আমরা কোন রকম সন্দেহ ছাড়া হৃদয়ে বিশ্বাস করি যে, আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য যীশু বাপ্তিস্ম নিলেন এবং ক্রুশে তাঁর বহুমূল্য রক্ত সেচন করলেন, তখন আমরা পাপ থেকে মুক্ত হই।
 নিজস্ব ধ্যান ধারণার মাঝে অধিকাংশ লোক উচ্ছৃংখল জীবন যাপন করে এবং ভাবে তাদের জীবনই সবকিছু। কিন্তু অনেকে আরো কঠিন জীবন যাপন করে। অনেকে, এমনকি আমিও উচ্ছৃংখল জীবন যাপন করেছি। যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের যে পাপমুক্তির সুসমাচার, তা আপনি কিভাবে বুঝতে বা গ্রহণ করতে পারেন?
 
 
পাপীর পরিত্রাণ সাধন করা হয়ে গেছে
 
কেন যীশু পিতরের পা ধুয়ে দিলেন?
যেন পিতরের হৃদয়ে দৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস জন্মে যে, তিনি ইতিপূর্বেই তার ভবিষ্যতের পাপ তুলে নিয়েছেন
 
 আসুন, যোহন ১৯ অধ্যায় পাঠ করি। “তখন তাহারা যীশুকে লইল; এবং তিনি আপনি ক্রুশ বহন করিতে করিতে বাহির হইয়া মাথার খুলির স্থান নামক স্থানে গেলেন। ইব্রীয় ভাষায় সেই স্থানকে গলগথা বলে। তথায় তাহারা তাঁহাকে ক্রুশে দিল, এবং তাঁহার সহিত আরও দুইজনকে দিল, দুই পার্শ্বে দুই জনকে, ও মধ্যস্থানে যীশুকে। তার পীলাত একখান দোষপত্র লিখিয়া ক্রুশের উপরিভাগে লাগাইয়া দিলেন। তাহাতে এই কথা লিখিত ছিল, নাসরতীয় যীশু, যিহুদীদের রাজা। তখন যিহুদীরা অনেকে সেই দোষপত্র পাঠ করিল, কারণ যেখানে যীশুকে ক্রুশে দেওয়া হইয়াছিল, সেই স্থানকে নগরের সন্নিকট, এবং উহা ইব্রীয়, রোমীয় ও গ্রীক ভাষায় লিখিত ছিল (যোহন ১৯:১৭-২০ পদ)।”
 প্রিয় বন্ধুগণ, যীশু খ্রীষ্ট জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং তিনি পিলাতের আদালতে বিচারিত হলেন। আসুন, সেই দৃশ্যটাও এক সাথে চিন্তা করি।
 ২৮ পদ থেকে, “ইহার পরে যীশু, সমস্তই এখন সমাপ্ত হইল, জানিয়া শাস্ত্রের বচন যেন সিদ্ধ হয়, এই জন্য কহিলেন, আমার পিপাসা পাইয়াছে। সেই স্থানে সিরকায় পূর্ণ একটী পাত্র ছিল; তাহাতে লোকেরা সিরকায় পূর্ণ একটী ষ্পঞ্জ এসোব নলে লাগাইয়া তাঁহার মুখের নিকটে ধরিল। সিরকা গ্রহণ করিবার পর যীশু কহিলেন, সমাপ্ত হইল; পরে মস্তক নত করিয়া আত্মা সমর্পণ করিলেন।”
 তিনদিন পর তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হলেন এবং স্বর্গারোহন করলেন।
 যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু পরষ্পর অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। একটাকে ছাড়া অন্যটি সম্পুর্ণ নয়। তাই, আসুন, যীশুর পাপমুক্তির সুসমাচারের দ্বারা উদ্ধার পেয়ে আমরা তাঁর প্রশংসা করি।
মানুষের মাংস সব সময় মাংসের চাহিদা পূরণ করতে চায়। তাই আমরা মাংসে পাপ না করে পারি না। মাংসের পাপ থেকে আমাদিগকে উদ্ধ্বার করার জন্য যীশু খ্রীষ্ট তাই তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্ত আমাদের জন্য দিলেন। তাঁর সুসমাচার দ্বারা তিনি আমাদের সব রকম মাংসিক পাপ থেকে মুত্তু করলেন।
 যারা পাপ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়েছে, তারা যে কোন সময়
স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে এই বিশ্বাসের মাধ্যমে যে যীশু, যিনি বেথলেহমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যর্দ্দনে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছিলেন এবং তিন দিন পর আবার পুনরুথিত হয়েছিলেন । তাই আমরা চিরদিন প্রভুর প্রশংসা করি এবং তার নামের গৌরব করি।
 যোহন লিখিত সুসমাচারের শেষ অধ্যায়ে আছে যে, পুনরুত্থানের পর যীশু গালীলীতে গেলেন। তিনি পিতরের কাছে গেলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে যোহনের পুত্র শিমোন, ইহাদের অপেক্ষা তুমি কি আমাকে অধিক প্রেম কর?” উত্তরে পিতর বলেন, হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভালবাসি।” তখন যীশু তাকে বললেন, “আমার মেষগণকে চড়াও।”
 পিতর সবকিছু উপলদ্ধি করতে পারলেন, যীশুর বাপ্তিস্ম ও রত্তের সুসমাচার, পাপের মৃত্যু। এখন তিনি জল ও রক্তের সুসমাচারে এবং পাপ মুক্তির সুসমাচারে বিশ্বাস করলেন, তিনি অনুধাবন করতে পারলেন কেন যীশু তার পা ধুয়েছিলেন; তার বিশ্বাস আরও দৃঢ় হল।
 আসুন, যোহন ২১:১৫ পদ আবার পড়ি, “তাঁহার আহার করিলে পর যীশু শিমোন পিতরকে কহিলেন, হে যোহনের পুএ শিমোন, ইহাদের অপেক্ষা তুমি কি আমাকে অধিক প্রেম কর? তিনি কহিলেন,হ্যাঁ, প্রভু; আপনি জানেন আমি আপনাকে ভাল বাসি। তিনি তাঁহাকে কহিলেন, আমার মেষশাবকগণকে চরাও।”
 তিনি পিতরের দায়িত্বে তাঁর মেষদের রাখার আস্থা পেলেন, কারণ পিতর তাঁর শিষ্য ছিলেন, কারণ তিনি সম্পূর্ণরূপে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন, কারণ পিতর ঈশ্বরের ধার্মিক এবং বিশ্বস্ত দাস হয়েছিলেন।
 পিতর যদি প্রতিদিনের পাপের জন্য পাপী হতেন, তাহলে যীশু তাঁকে পরিত্রাণের সুসমাচার প্রচার করতে বলতেন না, কারণ তিনি এবং অন্য শিষ্যরাও প্রতিদিন মাংসের পাপ না করে থাকতে পারতেন না। কিন্তু যীশু তাদেরকে পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার প্রচার করতে বললেন, যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের যে সুসমাচার দ্বারা তিনি তাদের পাপ মুছে দিয়েছিলেন।
 
 
হ্যাঁ, প্রভু আপনি জানেন আমি আপনাকে ভালবাসি
 
আপনি যদি আবার পাপ করেন, তাহলে কি আবার পাপী হবেন?
না, যর্দ্দণে যীশু আপনার ভবিষ্যতের পাপও তুলে নিয়েছেন
 
 আসুন যীশু পিতরকে যে কথা বলেছিলেন, তা একটু চিন্তা করি। “হে যোহনের পুএ শিমোন, ইহাদের অপেক্ষা তুমি কি আমাকে অধিক প্রেম কর?” “হ্যাঁ, প্রভু; আপনি জানেন যে, আমি আপনাকে ভালবাসি।” তার প্রেমের স্বীকারোক্তি সত্য ছিল, সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার থেকে বিশ্বাসের এই উক্তি বেরিয়ে এসেছিল।
 পা ধোয়ানোর মাধ্যমে যীশু যদি পিতর এবং অন্য শিষ্যদেরকে পাপ মুক্তির সুসমাচার শিক্ষা দিতেন, তাহলে তারা এইভাবে তাদের প্রেম প্রকাশ করতে পারতেন না।
 পক্ষান্তরে, যীশু যখন তাদের প্রশ্ন করতেন, “তুমি কি ইহাদের অপেক্ষা আমাকে অধিক প্রেম কর?” তখন পিতর উত্তর দিতে পারতেন, “হ্যাঁ, প্রভু; আমি অসস্পুর্ণ, এবং আমি একজন পাপী। আমি পাপী বিধায় এদের চেয়ে আপনাকে অধিক ভালবাসতে পারি না। দয়া করে আমার কাছ থেকে চলে যান।” পিতর পালিয়ে গিয়ে প্রভুর কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারতেন।
 কিন্তু আসুন, আমার পিতরের উত্তর গুলো দেখি,যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের যে পরিত্রাণের সুসমাচার, পিতর সেই পরিত্রাণে আশীর্বাদ যুক্ত হয়েছিলেন।
 তাই তিনি বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন আমি আপনাকে ভালবাসি।”যীশুর পরিত্রাণের সুসমাচারের,বিশ্বাস থেকেই এই প্রেমের স্বীকারোক্তি বেরিয়ে এসেছে। পাপ মুক্তির যে সুসমাচার জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছে, মানুষ ভবিষ্যতে বাধ্যগত ভাবে মাংসের অসস্পুর্ণতা ও দূর্বলতা থেকে যে পাপ করবে, তাও তুলে নিয়েছেন, পিতর সেই প্রকৃত সুসমাচার বিশ্বাস করেছিলেন।
 কারণ পিতর পাপ মুক্তির সুসমাচার বিশ্বাস করেছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে, যীশুই ঈশ্বরের মেষশাবক, সেইজন্য কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই প্রভুকে উত্তর দিতে পারলেন। পাপ মুক্তির সুসমাচার থেকেই যীশুর পরিত্রাণ এসেছে, এবং পিতরও এইভাবে প্রতিদিনের পাপ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন। জগতের সমস্ত পাপ মুক্তির পরিত্রাণের সুসমাচারে পিতর বিশ্বাস করেছিলেন।
 আপনিও কি পিতরের মত? যিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে, পরিত্রাণের সুসমাচার দ্বারা জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, সেই যীশুকে কি আপনি বিশ্বাস করেন এবং তাঁর উপরে কি নির্ভর করতে পারেন? তাঁকে বিশ্বাস না করে বা প্রেম না করে আপনি কিভাবে পারবেন ? অন্য কোন পথ নাই।
 যীশু যদি শুধু বর্তমান এবং অতীতের পাপ তুলে নিতেন এবং ভবিষ্যতের আমাদের পাপ না নিতেন, তাহলে আমার এখন তাঁর প্রশংসা করতে পারতাম না, উপরন্ত নিশ্চিতভাবে আমরা নরকে যেতাম। কাজেই আমাদের সকলকে দৃঢ়ভাবে এটা প্রকাশ করতে হবে যে পাপ মুক্তির সুসমাচার বিশ্বাস করে আমরা সকলে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি।
 মাংস সর্বক্ষণ পাপ করতে আসক্ত থাকে এবং আমরা সব সময় পাপ করি।তাই আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচারের মাধ্যমে যীশু আমাদের জন্য যে অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন, তাতে বিশ্বাস করতে হবে।
 যদি আমরা যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্ত দ্বারা প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস না করতাম, তবে কোন বিশ্বাসীই সারা জীবনের পাপ থেকে উদ্বার পেত না।
 তাছাড়াও, প্রতিবারের পাপের জন্য সারা জীবন ধরে যদি আমরা বার বার স্বীকার ও অনুতাপ করতাম, তাহলে সব সময় এই কাজ করতে আমরা হয়তো অলস হয়ে পড়তাম,ধার্মিক হতে পারতাম না এবং আমাদের হৃদয়ে সব সময় পাপ থাকত।
 তাই যদি হতো, তাহলে আমরা আবার পাপী হয়ে পড়তাম, যীশুকে ভালবাসতে বা তাঁর কাছে আসতে পারতাম না । তাহলে আমরা যীশুর পরিত্রাণে বিশ্বাস করতে পারতাম । এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁকে অনুসরন করতে পারতাম না।
 যা হোক, যীশু আমাদের পাপ মুক্তির সুসমাচার দিয়েছেন।
যারা বিশ্বাস করে, তারা মুক্তি পায়। তিনি প্রকৃত ত্রাণকর্তা হলেন এবং আমরা যেন তাঁকে সত্যিকারভাবে ভালবাসতে পারি। এইজন্য তিনি আমাদের প্রতিদিনের পাপ ধুয়ে দিয়েছেন।
 তাই, আমরা বিশ্বাসীরা, তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচারে, তাঁর প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস এবং প্রেম না করে পারি না। সকল বিশ্বাসী যীশুকে চিরকালের জন্য ভালবাসতে পারে। যীশু যে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দিয়েছেন, আমরা সেই সুসমাচারের প্রেমে বন্দী হতে পারি।
 অতি প্রিয় বন্ধুগণ! যীশু যদি একটা পাপও বাকী রাখতেন, তাহলে আপনাকে যীশুতে বিশ্বাস করতে হতো না, আপনাকে পাপ মুক্তির এই প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের সাক্ষী হতে হতো না। আপনি ঈশ্বরের দাস হিসাবে তাঁর সেবা করতে পারতেন না।
 আপনি যদি পাপমুক্তির প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করেন, তাহলে জগতের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারেন। যখন আপনি যীশুর বাক্যে লিপিবদ্ধ প্রায়াশ্চিত্তের প্রকৃত সুসমাচার উপলব্ধি করতে পারেন, তখন তিনি আপনাকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার অনুমোদন দেন।
 
 
তুমি কি ইহাদের অপেক্ষা আমাকে অধিক প্রেম কর?
                                        
কেন আমরা যীশুকে অন্য সব কিছুর চেয়ে বেশি ভালবাসি?
কারণ বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ, এমনকি ভবিষ্যতের পাপও ধুয়ে দিয়েছেন।
 
 যারা পরিত্রাণের সুসমাচারে বিশ্বাস করে, সেই মেষদেরকে ঈশ্বর
তাঁর দাসদের দায়িত্বে দিয়েছেন। যীশু তিনবার জিজ্ঞাসা করলেন, “হে যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি ইহাদের অপেক্ষা আমাকে অধিক প্রেম কর?” প্রতিবার পিতর উত্তরে বলেছেন , “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন আমি আপনাকে ভালবাসি।” আসুন , পিতরের উত্তরগুলো চিন্তা করি। এটা তাঁর ইচ্ছাপ্রসূত অভিব্যক্তি নয়, বরং জগতের সমস্ত পাপমুক্তির সুসমাচারের বিশ্বাস প্রসূত উক্তি ।
 অন্যের প্রতি আমাদের প্রেম যদি ইচ্ছা থেকে উদ্ভুত হয় ,তবে আমাদের যে কোন দূর্বলতার কারণে তা হোঁচট খেতে পারে। কিন্তু সে প্রেম যদি শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়, তবে তা চিরস্থায়ী হয়। ঈশ্বরের প্রেম নামান্তরে আমাদের সব পাপের অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্ত , অর্থাৎ এটাই যীশুর বাপ্তিস্ম ও আত্মার পরিত্রাণ।
 জগতের সমস্ত পাপ মুক্তির সুসমাচারই প্রভুর জন্য আমাদের এবং প্রভুর প্রতি আমাদের প্রেমের ভিত্তি হওয়া উচিত। যদি তাঁকে শুধু আমাদের ইচ্ছার ভিত্তিতে ভালবাসতাম তবে আগামী দিন আমরা হোঁচট খেতাম এবং নিজেকে ঘৃণা করতে করতে আমরা শেষ হয়ে যেতাম। যা হোক, যীশু আমাদের সমস্ত পাপ, আদি পাপ, অতীতের প্রতিদিনের পাপ, আগামী দিনের পাপ এবং আমাদের সারা জীবনের পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। এই পৃথিবীর একজনকেও তিনি পরিত্রাণের বাইরে রাখেননি।
 এ সবই সত্য। আমাদের ইচ্ছার উপরে যদি আমাদের প্রেম ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হতো , তাহলে বিশ্বাসে আমরা ব্যর্থ হয়ে যেতাম। কিন্তু যেহেতু যীশু দত্ত পরিত্রাণের সুসমাচারে আমাদের বিশ্বাস ও প্রেমের ভিত্তি, তাই আমরা ঈশ্বরের সন্তান হয়েছি , ধার্মিক গণিত হয়েছি। আমরা পাপ থেকে মুক্ত, কারণ আমরা জল ও আত্মার পরিত্রাণে বিশ্বাস করেছি।
 যেহেতু আমাদের কর্মফলের থেকে আমাদের পরিত্রাণ আসেনি কিন্ত ঈশ্বরের প্রেমের গুণেই আমরা পরিত্রাণ পেয়েছি, তাঁর ব্যবস্থা সঞ্জাত পাপমুক্তির প্রকৃত পরিত্রাণ পেয়েছি , তাই বাস্তব জীবনে যত দূর্বল বা অসম্পূর্ণ হই না কেন, আমরা ধার্মিক গণিত হয়েছি। আমরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করব এবং অনন্তকাল ঈশ্বরের প্রশংসা করব। আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন ? যীশু বলেন, “ তোমরা যে আমাকে ভালবেসেছ তা নয়, কিন্তু আমি তোমাদিগকে ভালবেসেছিলাম। এই প্রেম, তোমরা প্রেম করেছ, তা নয় কিন্তু আমি তোমাদিগকে প্রেম করেছি।” যীশু জল ও আত্মা দ্বারা আমাদিগকে উদ্ধার করেছেন,কাজেই যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে আমাদের বিশ্বাস করা উচিত।
 ঈশ্বর যদি পাপ মুক্তির সুসমাচার দ্বারা আমাদিগকে উদ্ধার না করতেন, তাহলে যত দৃঢ় বিশ্বাসই থাকুক না কেন, আমরা উদ্ধার পেতাম না। কিন্তু আত্মায় এবং দেহে আমরা যত পাপ করি যীশু সেগুলো ধৌত করেছেন।
 ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে হলে, ধার্মিকগণিত হতে হলে , প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে , জল ও আত্মার সুসমাচরে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণ সম্বন্ধে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে , জগতের সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার মানে যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাস করা। প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাসই প্রকৃত বিশ্বাস , পরিত্রাণের প্রকৃত ভিত্তি , ঈশ্বরের সুসমাচারের চাবিকাঠি।
 
 
আমাদের নিজস্ব ইচ্ছা প্রসূত বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান করতে হবে

প্রকৃত বিশ্বাসের উৎসকোথায় ?
যিনি আমাদের ভবিষ্যতের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন, তার প্রেমের মধ্যে
 
 ইচ্ছা থেকে উদ্ভূত প্রেম বা বিশ্বাস , প্রকৃত প্রেম বা প্রকৃত বিশ্বাস নয়। এই পৃথিবীতে অনেকেই প্রথমে সুনামের সাথে যীশুতে বিশ্বাস করে,পরে তা সবশুদ্ধ পরিত্যাগ করে , কারণ হৃদয়ে তাদের পাপ থাকে। 
 কিন্তু আমাদের জানতে হবে যে, যীশু জগতের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, শুধু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অধর্মই নয় , কিন্তু অ‌জ্ঞনতা প্রসূত বড় বড় সব পাপও।
 যোহন ১৩ অধ্যায়ে, তাঁর পরিত্রাণের ব্যাপ্তি বুঝানোর জন্য যীশু ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার পূর্বে শিষ্যদের এক করে শিক্ষা দিলেন। পরিত্রাণ বিস্তারিতভাবে বুঝানোর জন্য তিনি শিষ্যদের সাথে সান্ধ্যভোজের পূর্বে শিষ্যদের পা ধুয়ে দিলেন। পা ধোয়ার মাধ্যমে শিষ্যদেরকে যীশু যে শিক্ষা দিয়েছিলেন, তা আমাদের জানতে ও বিশ্বাস করতে হবে।
 কিন্তু পিতর প্রথমে দৃঢ়ভাবে যীশুকে তার পা ধুতে বাঁধা দিয়েছিলেন। “আপনি কখনও আমার পা ধুইয়া দিবেন না। ” এটা হলো ইচ্ছা- প্রসূত বিশ্বাস। কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “আমি যাহা করিতেছি, তা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।”
 জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে এখন আমরা যীশুর কথার অর্থ বুঝতে পারি। এগুলো ছিল সত্যের বাক্য, জল ও আত্মার সুসমাচার , পাপের মোচন, সমস্ত হৃদয়ে, বিশ্বাসের মাধ্যমে যা একজন পাপীকে ধার্মিকগণিত করে।
 অন্য শিষ্যদের নিয়ে পিতর মাছ ধরতে চলে গিয়েছিলেন। যীশুর সাক্ষাত পাওয়ার আগে যেমন, তেমনি তাঁরা মাছ ধরছিলেন। তখন যীশু তাদের দেখা দিলেন এবং তাঁদের আহবান করলেন। তিনি তাসের জন্য সকালের খাবার প্রস্তত করেছিলেন; যখন খাওয়া শেষ হলো,তখন যীশুর পূর্বকথিত কথাগুলো পিতর বুঝতে পারলেন। “ আমি যাহা করিতেছি , তাহা তুমি এক্ষণে বুঝিতে পার না , কিন্তু ইহার পরে জানিতে পারিবে।” পা ধোয়ানোর সময় যীশু যা বলেছিলেন , অবশেষে তিনি তা বুঝতে পারলেন।
“প্রভু আমার সব পাপ ধুয়ে দিয়েছেন। দূর্বলতার কারণে আমি যেসব পাপ করি এবং ভবিষ্যতে যে পাপ করব।” তাই পিতর ইচ্ছা প্রসূত বিশ্বাস পরিত্যাগ করলেন এবং যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে, পাপমুক্তির সুসমাচারে বিশ্বাস করা শুরু করলেন।
 প্রাত: রাশের পরেই যীশু পিতরকে জিজ্ঞাসা করলেন , “ তুমি কি ইহাদের অপেক্ষা আমাকে অধিক প্রেম কর ? ” তখন যীশুর প্রেমে আরো অধিক শক্তিশালী হয়ে পিতর উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভালবাসি।” পিতর একথা বলতে পারলেন, কারণ তিনি যীশুর সেই কথা অনুধাবন করতে পেরেছিলেন,
“……ইহার পরে বুঝিবে।” তিনি প্রকৃত বিশ্বাস, বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাস অর্থাৎ প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস স্বীকার করতে পারলেন।
 
 
পরে, তিনি ঈশ্বরের প্রকৃত দাস হলেন
 
সুতরাং তারপরেই পিতর ও শিষ্যেরা জীবনের শেষছিল পর্যন্ত সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। এমনকি যে পৌল নির্মমভাবে খ্রীষ্টিয়ানদের উপর অত্যাচার করেছিলেন, তিনিও রোমীয় সাম্রাজ্যের কঠিন সময়েও সুমাচারের সাক্ষ্য বহন করেছিলেন
 
কিভাবে আপনি ঈশ্বরের প্রকৃত দাস হতে পারেন ?
আপনার সমস্ত পাপের অনন্তকালীন প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে
 
 যীশুর ১২ জন শিষ্যের মধ্যে একজন যিহুদা যীশুকে বিক্রি করেছিল এবং পরে গলায় দড়ি দিয়ে মরেছিল। প্রেরিত পৌল তার স্থালাভিষিক্ত হয়েছিলেন। শিষ্যদের মধ্যে থেকে মত্তনিয়কে নির্বাচন করা হয়েছিল, কিন্তু ঈশ্বর প্রেরিত পৌলকে নির্বাচিত করেছিলেন। পৌল যীশুর একজন প্রেরিত হলো। এবং অন্যান্য শিষ্যদের সাথে প্রায়শ্চিতের সুসমাচার প্রচার করলেন।
 যীশুর অধিকাংশ শিষ্যেরা সাক্ষ্যমরের মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মৃত্যুর হুমকি থাকা সত্বেও তারা সত্য সুসমাচার প্রচার করে গেছেন।
 “যীশু খ্রীষ্ট তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচার, পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দ্বারা আপনার মাংসের পাপ ধৌত করেছেন। যর্দ্দনে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি আপনার পাপ তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশে আপনার পক্ষে বিচারিত হয়েছেন। যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের সুসমাচারে বিশ্বাস করুন এবং পাপ থেকে মুক্ত হউন।”
শিষ্যগণ জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করেছেন,”যীশুই ঈশ্বর
ও ত্রাণকর্তা।” আপনি এবং আমি, আমরা যেন জল ও আত্মার সুসমাচার এবং পরিত্রাণ সম্পর্কে শুনতে পাই এইজন্য শিষ্যেরা যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। ঈশ্বরের অনন্ত প্রেমের কারণে এবং যীশুর পূর্ণ পরিত্রাণের কারণে আমরা সকলে যীশুর শিষ্য হতে পেরেছি।
 আপনারা সবাই কি বিশ্বাস করেন ? যীশু আমাদের এত প্রেম করেন বলেই জল ও আত্মার সুসমাচার দিয়েছেন , প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দিয়েছেন , তাই আমরা যীশুর ধার্মিক শিষ্য হয়েছি । প্রায়শ্চিত্তের প্রকৃত সত্য সুসমাচার শিক্ষা দেওয়ার জন্য যীশু তাঁর শিষ্যদের পা ধুলেন ।
 শিষ্যদের ও আমাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য যীশু শিষ্যদের পা ধুলেন , যেন জগতের সমস্ত পাপ , সারা জীবন ধরে আমরা যত পাপ করি সেগুলো তার বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্ত সেচনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ধৌত হয়ে যায় ; তার প্রেম ও প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের জন্য আমরা যীশুকে ধন্যবাদ জানাই ।
 শিষ্যদের পা ধোয়ানোর মাধ্যমে যীশু দুটো বিষয় শিক্ষা দিলেন । প্রথমত : তিনি যেমন বলেছিলেন , “ আমি যা করতেছি তাহা তুমি এখন বুঝিবে না , কিন্তু ইহার পরে জানিতে পারিবে ” , যে আমাদের সমস্ত পাপ যীশুর পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে অর্থাৎ বাপ্তিস্ম এবং তাঁর রক্তে ধৌত হয়ে গেছে ।
 তাদেরকে এই শিক্ষা দেওয়ার জন্য যে পাপীকে উদ্ধার করার জন্য ধার্মিক করার জন্য যীশু নিজেকে নত করলেন, যেন নুতন জন্ম লাভের পর আমরা অন্যের কাছে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার প্রচার করতে পারি। যারা প্রথমে এসেছে , এটা তাদের অধিকার যেন যারা পরে আসে তাদের সেবা করতে পারে।
 যে দুটো কারণে যীশু নিস্তারপর্ব ভোজের দিনে শিষ্যদের পা ধোয়ালেন, তা পরিষ্কারভাবেই বোঝা যাচ্ছে । বর্তমান মন্ডলীতে তার অস্তিত্ব এখনও আছে ।
 গুরুর চেয়ে শিষ্য কখনও বড় হতে পারে না । তাই জগতে সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমে আমরা যীশুর সেবা করছি। যারা পূর্বে এসেছে তাদের উচিত, পরে যারা আসবে তাদের সেবা করা। এটা শিক্ষা দেওয়ার জন্য যীশু শিষ্যদের পা ধুলেন । আরও উল্লেখ্য যে , পিতরের পা ধোয়ার মাধ্যমে তিনি আমাদের বুঝালেন যে তিনিই প্রকৃত ত্রাণকর্তা , যেন শয়তান আর কখনও আমাদের প্রতারণা না করতে পারে।
 জল ও আত্মার , প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা উদ্ধার পেতে পারি।বাপ্তিস্মের ক্রুশীয় মৃত্যুর এবং পুনরুথানের মাধ্যমে যীশু আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন । যারা এই সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারাই কেবল চিরকালের জন্য জগতের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারে।
 
 
যে সুসমাচার আমাদের প্রতিদিনের সমস্ত পাপধুয়ে দিয়েছে সেই সুসমাচারে বিশ্বাস
 
জল ও আত্মার বাক্যে , পরিত্রাণের সুসমাচারে বিশ্বাস করে আমরা শয়তানের প্রতারণাকে জয় করতে পারি । শয়তান মানুষকে খুব সহজেই প্রতারণা করতে পারে এবং শয়তান সারাক্ষণ আমাদের কানের কাছে ফিস ফিস করে । মাংসময় দেহে মানুষ এই জগতে পাপ করে , তারা কিভাবে পাপবিহীন হতে পারে ? সমস্ত মানুষই পাপী
 আমরা এর উত্তর জানি, “ যদি জানি যে তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে
 যীশু আমাদের মাংসের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তাহলে একজন বিশ্বাসী কি করে আবার পাপে জীবন যাপন করে? কারণ যীশু আমাদের পাপের সমস্ত মূল্য পরিশোধ করেছেন , তাহলে আমাদের পাপের জন্য আর কি মূল্য দিতে হবে ? ”
 যদি জল ও রক্তের সুসমাচারে বিশ্বাস না করি তাহলে শয়তানের কথা সত্যি বলে মনে হবে । যীশুর বাপ্তিস্ম, তাঁর ত্রুশীয় রক্তে , তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানে বিশ্বাসী হল প্রকৃত বিশ্বাস ।
 আপনি কি পবিত্র সমাগম তাম্বুর নমুনা চিত্র দেখেছেন? এটা একটি ছোট্ট ঘর। ঘরটি দুইভাগে বিভক্ত, বাইরের অংশটি পবিত্র স্থান এবং ভিতরের অংশ মহাপবিত্র স্থান যেখানে পাপাবরণ রয়েছে।
 মোট ৬০ টি স্তম্ভের উপরে সমাগম তাম্বুর বাইরের অংশটি ছিল এবং পবিত্র স্থানের ৪৮ টি মঙ্ক (বেদি ) ছিল। ঈশ্বরের বাক্যের অর্থ
বোঝার জন্য আমাদের মনে সমাগম তাম্বুর চিত্র অবশ্যই থাকতে হবে।
 
 
 সমাগম তাম্বুর দরজা কি দিয়ে তৈরী ছিল
 
সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজা কি দিয়ে তৈরী ছিল ?
একটি নীল, বেগুনে এবং টকটকে লাল বর্ণের মিহি সুতার
 
যাত্রাপুস্তক ২৭:১৬ পদে সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজার বিবরণ আছে , “আর প্রাঙ্গণের দ্বারের নিমিত্তে নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সূত্রে শিল্পকারের কৃত বিংশতি হস্ত এক পর্দ্দা ও তাহার চারি স্তম্ভ ও চারি চুক্তি হইবে।” যে সব জিনিস দিয়ে সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজা তৈরী ছিল , সেগুলো ছিল নীল , বেগুণে এবং লাল সুতা এবং মসীনা সুতার বস্ত্র । এটা বিভিন্ন রংয়ে জটিল ভাবে বোনাছিল।
 প্রত্যেকেই যেন প্রবেশ দ্বার সহজেই চিনতে পারে এইজন্য ঈশ্বর মোশিকে নীল, বেগুণে এবং লাল সুতায় বোনার আদেশ দিয়েছিলেন। নীল, বেগুনী, লাল এবং মসীনা সুতা দ্বারা বোনা দরজাটি স্তম্ভের উপর ঝুলান ছিল।
 এই চারটি জিনিস ঈশ্বরের পরিত্রাণের নকশার নমুনা, যা দিয়ে তিনি রক্ষা করবেন তাদের , যারা তাঁর পুত্র যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে এবং তার ঈশ্বরত্বে বিশ্বাস করে।
 যেসব জিনিস দিয়ে পবিত্র সমাগম তাম্বু তৈরী হয়েছিল তার প্রত্যেকটি বিশেষ অর্থ আছে যা ঈশ্বরের বাক্য এবং যীশুর মাধ্যমে মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য তাঁর পরিকল্পনা প্রকাশ করে।
তাহলে, সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজা তৈরী করতে কতটি জিনিস প্রয়োজন হয়েছিল? নীল, বেগুণে, লাল ও মসীনা সুতা। নতুন জন্মের সুসমাচারের বিশ্বাসকে আরো দৃঢ় করার জন্য এই চারটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। যদি এতটা গুরুত্বপূর্ণ না হতো, তাহলে এই বিষয়ে বাইবেল এত বিশদ আলোচনা হতো না।
 পবিত্র সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজা এবং বহি : প্রাঙ্গণ যেসব জিনিস দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল তা আমাদের পরিত্রাণের , জন্য সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ; যে পরিত্রাণ আমাদের প্রতিদিনের পাপ, আদি পাপ এবং ভবিষ্যতের পাপ ধুয়ে দিয়েছে। সেই জিনিসগুলো নীল , বেগুনী , লাল ও মসীনা সুতার হওয়া প্রযয়োজন ছিল। সেই জন্য ঈশ্বর মোশির কাছে তা প্রকাশ করেছিলেন এবং মোশিকে হুবহু তেমনি তৈরী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
 
 
ঈশ্বরের সুসমাচারে নীল , বেগুণে ও লাল সুতা কি অর্থ প্রকাশ করে?
 
সমাগম তাম্বুর যে সব জিনিস দিয়ে তৈরী হয়েছিল তা কিসের নিদর্শন বহন করে ?
বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু যে পরিত্রাণ সাধন করেছেন
 
 পবিত্র সমাগম তাম্বুর অভ্যন্তরে নীল ও বেগুনি , লাল এবং মসীনা সুতার পর্দা ব্যবহার করা হতো, যা পবিত্র স্থান ও মহাপবিত্র স্থানের মাঝে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। পবিত্র সমাগম তাম্বুর অভ্যন্তরে কর্মরত মহাযাজকের পোশাকও একই জিনিস দিয়ে তৈরী ছিল।
 নীল সুতা যীশুর বাপ্তিস্মের প্রতীক। ১ পিতর ৩:২১ পদে বলা হয়েছে , “ আর এখন উহার প্রতিরূপ বাপ্তিস্ম, যা আমাদিগকে পুরিত্রাণ করে।” পিতর এই বাক্যের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্তের পরিত্রাণের বিষয়টি অর্থাৎ যীশুর বাপ্তিস্ম যা জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছে, তা আরও
দৃঢ় করেছে। যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের তথা জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপর অর্পণ করা হয়েছিল। সুতরাং নীল সুতা, বাপ্তিস্ম পরিত্রাণের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ।
 লাল সূতা যীশুর রক্তের প্রতীক, বেগুনী সূতা রাজকীয়তার প্রতীক-যীশুর রাজা হওয়া এবং ঈশ্বরত্ব প্রকাশ করেছে। সুতরাং যীশুতে এবং তাঁর পরিত্রাণে বিশ্বাসের জন্য এই তিন রংয়ের সূতা আবশ্যক ছিল।
মহাযাজক যে জাঁকজমকপূর্ণ পোশাক ব্যবহার করতেন, তাকে বলা হতো এফোদ এবং এফোদ বস্ত্রটি ছিল সম্পূর্ণ নীল। মহাযাজক স্বর্ণের পাতে খাঁচিত পাগড়ী পরতেন। যেখানে খোদিত ছিল,“ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা। ” পাতটি নীল সূতা দিয়ে পাগড়ীর সাথে বাধা থাকত।
 
 
নীল সূতা দ্বারা সত্যের নির্দশন বুঝায়
 
নীল সূতা কিসের নির্দশন ?
যীশুর বাপ্তিস্মের
 
 বাইবেলে নীল সূতার অর্থ খুঁজে পেয়েছি। নীল রং সম্বন্ধে বাইবেলে কি বলে? আমাদের বুঝতে হবে, নীল বেগুনী ও লাল রংয়ের সূতার মধ্যে নীল সূতা।
 নীল সূতা যীশুর বাপ্তিস্মের প্রতীক। যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা বাপ্তাইজক দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে যীশু খ্রীষ্ট জগতের সব পাপ তুলে নিলেন ( মথি ৩: ১৫ পদ)। যীশু যদি তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে না নিতেন, তাহলে আমরা বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে শুচি হতে পারতাম না। তাই যীশুর জগতে আসতে হল এবং যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নিয়ে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন।
 পবিত্র সমাগম তাম্বুর প্রাঙ্গণের দরজায় নীল সূতা থাকার অর্থ হল, যীশুর বাপ্তিস্ম ছাড়া আমরা পবিত্র হতে পারি না।
 লাল সূতা যীশুর মৃত্যু প্রকাশ করে ।বেগুনী মানে আত্মা, এইভাবে যীশুর মর্যাদা ‘সম্রাট ও প্রভুত্বকারীদের প্ৰভু ‘হিসাবে দেখান হয়েছে ( ১ তীমথিয় ৬:১৫পদ ) । লাল সূতা মানে খ্রীষ্টের রক্ত । খ্রীষ্ট মানব জাতির পাপের মূল্য হিসাবে ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন । নিজের উপরে মানব জাতির সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা পরিত্রাণের সুসমাচারের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে যীশু মানুষ বেশে এই জগতে এসেছিলেন । পুরাতন নিয়মে পবিত্র সমাগম তাম্বুতে বিভিন্ন রংয়ের ব্যবহারের মাধ্যমে যীশুর বাপ্তিস্মে পাপ মুক্তির সুসমাচার সম্পর্কে ভাববাণী করা হয়েছে।
 সমাগম তাম্বুর স্তম্ভগুলি শিটিম কাঠ দ্বারা তৈরী ছিল, আঁকড়াগুলো পিতলের এবং পিতলের আঁকড়াগুলো রূপার পাত দ্বারা মোড়ানো ছিল ।
 পাপের জন্য সব পাপীকে বিচারিত হতে হতো , কারণ পাপের বেতন মৃত্যু । ঈশ্বরের আশীর্বাদে পুনর্বার জীবন যাপন করতে হলে আগে পাপের জন্য বিচারিত হতে হতো।
 যা হোক, পুরাতন নিয়মের সমাগম তাম্বুর নীল সূতা নূতন নিয়মে যীশু বাপ্তিস্মের নির্দশন , যা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছে । আমাদের পাপ নিয়ে তিনি ক্রুশে রক্তসেচন করলেন , আমাদের পক্ষে বিচারিত হলেন, এইভাবে পাপমুক্তির সুসমাচার দ্বারা সকল বিশ্বাসীকে উদ্ধার করলেন । তিনি রাজাদের রাজা এবং পবিত্র ঈশ্বর।
 প্রিয় বন্ধুগণ, যীশুর বাপ্তিস্ম ছিল যীশুর পরিত্রাণ , যা দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন । যীশু , যিনি ঈশ্বরও , তিনি এই পৃথিবীতে মাংসের বেশে নেমে এলেন । জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার জন্য বাপ্তাইজিত হলেন, আমাদের পক্ষে বিচারিত হবার জন্য তিনি ক্রুশবিদ্ধ হলেন ও ক্রুশে রক্তসেচন করলেন।যীশুর বাপ্তিস্ম বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছাড়া আমাদের বলে যে, তিনিই মানব জাতির ত্রাণকর্তা হয়েছেন।
পবিত্র সমাগম তাম্বুর রঙের মাঝেও আমরা এটা দেখতে পাই । মসীনা সূতা বহার করার অর্থ, তিনি নির্বিশেষে আমাদের সকলকে জগতে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। সমাগম তাম্বুর দরজা নীল , বেগুনী ও লাল মসীনা সূতার দ্ধারা তৈরী করার অর্থ তা ঈশ্বরীয় পরিত্রাণের সত্যতা পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করছে । প্রায়শ্চিত্তের পরিত্রাণের জন্য এটা অত্যাবশ্যক ছিল। পবিত্র সমাগম তাম্বুর দরজা প্রস্তূত করতে যে জিনিসগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল , তা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে , যীশু খ্রীষ্ট এলোমেলোভাবে বা পরিকল্পনাহীন ভাবে পাপীদের উদ্ধার করেন নাই। মানব জাতির পরিত্রাণের জন্য এবং ঈশ্বরের সযত্নে প্রস্তত পরিকল্পনানুযায়ী তিনি বাপ্তাইজিত হলেন , ক্রুশবিদ্ধ হলেন এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হলেন। নীল , বেগুনী ও লাল সূতা পরিত্রাণের সুসমাচারের প্রতীক , যার দ্বারা যীশু বিশ্বাসীদের পরিত্রাণ দান করেছেন।
 
 
পুরাতন নিয়মের পিতলের প্রক্ষালন পাত্র নূতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্মের প্রতীক
 
পবিত্র স্থানে প্রবেশের আগে মহাযাজকগণ কেন হাত ও পা ধুতেন ?
 কারণ, তাদেরকে পাপহীনভাবে ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াতে হতো
 
 প্রক্ষালনপাত্র পিতলের তৈরী ছিল। যীশু আমাদের পক্ষে যে বিচারদন্ড ভোগ করছেন, পিতলের প্রক্ষালনপাত্র তার প্রতীক।জলের পাত্রাটি সুসমাচারের নিদর্শন, যা আমাদের বলে যে, আমাদের সমস্ত অধার্মিকতা ধৌত হয়ে গেছে।
 আমাদের প্রতিদিনের পাপ কিভাবে ধৌত হয়,এটা দ্ধারা তাই প্রকাশ করা হয়েছে। এটা সেই সত্যের প্রতীক যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম দ্বারা সমগ্র মানব জাতির সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন।
 হোমবলির বেদি বিচারের নিদর্শন। যীশুর জল,যা নীল দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে, তা প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার, অর্থাৎ যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন (মথি ৩:১৫,১যোহন ৫:৫-১০পদ)। এটা প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে পরিত্রাণের সুসমাচার প্রকাশ করে।
 ১যোহন ৫ অধ্যায় ৬ ও ৭ পদে লেখা আছে, “তিনি সেই, যিনি জল ও রক্ত দিয়া আসিয়াছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট ; কেবল জলে নয়, কিন্ত জলে ও রক্তে। আর আত্মাই সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ আত্মা সেই সত্য।’’
 তিনি আমাদের আরো বলেন যে,যে ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাস করে যে তার জীবনে জল , রক্ত ও আত্মার সাক্ষ্য বহন করে।
 প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস করার মাধ্যমে পবিত্র হয়ে ঈশ্বর আমাদের সমাগম তাম্বুতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। সুতরাং এখন আমরা বিশ্বাসে জীবন ধারণ করতে পারি , ঈশ্বরের বাক্যের উপর নির্ভর করে,তাঁর আশীর্বাদের মধ্যে থেকে আমরা ধার্মিক জীবন যাপন করতে পারি। ঈশ্বরের প্রজা হওয়ার অর্থ , প্রায়শ্চিত্তের। সুসমাচারে বিশ্বাস করা এবং পবিত্র সমাগম তাম্বুর অভ্যন্তরে বাস করা।
 বর্তমানে অনেকে পবিত্র সমাগম তাম্বুর দরজায় নীল, বেগুণী ও লাল মসীনা সূতার বিষয় চিন্তা না করে , শুধু বিশ্বাসে জীবন যাপন করে , তাদের বিশাস যথার্থ হবে না। করণ তাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে। পরিত্রাণের সুসমাচারে , অর্থাৎ জল, রক্ত ও আত্মার সুসমাচারে , নূতন জন্মের সত্যে বিশ্বাস না করলে মানুষের হৃদয়ে পাপ থাকে।
যদি কাউকে কোন অল্প পরিচিত ব্যক্তি সম্বন্ধে মূল্যায়ন করতে বলা হয়, তাহলে শ্রোতাকে খুশি করার জন্য সে বলে , “হ্যাঁ আমি তাকে বিশ্বাস করি। যদিও তার সাথে আমার কখনো দেখা হয়নি,যা হোক, আমি তাকে বিশ্বাস করি।” আপনি কি মনে করে শ্রোতা এ কথায় সন্তষ্ট হবে? আপনাদের কেউ কেউ হয়তো হতে পারেন। কিন্ত ঈশ্বর আমাদের কাছে এরূপ বিশ্বাস আশা করেন না।
ঈশ্বর চান যেন আমরা প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস করি, নীল (যীশুর বাপ্তিস্ম), বেগুণী (রাজকীয়তা) এবং লাল ( রক্ত),যীশুর এই পরিত্রাণে বিশ্বাস করতে হবে । যীশুতে বিশ্বাস করার পূর্বে আমাদের জানা উচিত তিনি কিভাবে আমাদের উদ্ধার করেছেন।
 যীশুতে বিশ্বাস করতে হলে আমাদের জানতে হবে কিভাবে তিনি জল(যীশুর বাপ্তিস্ম), রক্ত (তাঁর মৃত্যু) এবং আত্মা ( যীশুর ঈশ্বরত্ব ) দ্ধারা আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন।
 যখন আমরা যথার্থভাবে বুঝেত পারি , আমরা প্রাকৃত বিশ্বাস উপলব্ধি করতে পারি এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস ধারণ করতে পারি। সত্য না জানলে আমাদের বিশ্বাস কখনো সম্পূর্ণ হবে না। যীশুর পরিত্রাণের সাক্ষ্য জানার মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার জানার মাধ্যমে এবং যীশু মানব জাতির ত্রাণকর্তা এই সত্য জানার মাধ্যমেই কেবল প্রকৃত বিশ্বাস সৃষ্টি হয় ।
 তাহলে, যীশুকে পরিহাসকারী বিশ্বাস কি ? আসুন দেখি।
 
 
যে বিশ্বাস যীশুকে পরিহাস করে
 
বিশ্বাসের জন্য সর্বাপেক্ষা প্রয়োজন কিসের?
যীশুর বাপ্তিস্ম সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান
 
 আপনাকে জানতে হবে যে , বিধি বহির্ভূতভাবে যীশুকে বিশ্বাস করা মানে তাঁকে উপহাস করা । আপনি যদি মনে করেন, “বিশ্বাস করা আমাদের পক্ষে কঠিন, কিন্তু যেহেতু তিনি ঈশ্বর, তিনি ঈশ্বরের পুত্র, তাই আমাকে বিশ্বাস করতেই হবে”, তাহলে আপনি যীশুকে পরিহাস করছেন । প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার অর্থাৎ যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচার আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে ।
যীশুকে একেবারে বিশ্বাস না করার চেয়ে , প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার
না জেনে যীশুকে বিশ্বাস করা আরো খারাপ । প্রকৃত সত্য ছাড়া যীশুর রক্তের সুসমাচারে বিশ্বাস প্রচার করা অর্থহীন । তাঁকে কেউ বিধি বহির্ভুতভাবে বিশ্বাস করুক , বা প্রকৃত কারণ ছাড়া কেউ তাঁকে বিশ্বাস করুক এটা যীশু চান না। আমরা যেন প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার ভালভাবে জেনে তাঁকে বিশ্বাস করি, তিনি তাই চান।
 যীশুকে বিশ্বাস করলে আমরা জানতে পারি যে, যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তই হলো প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার । যীশুকে বিশ্বাস করলে,তাঁর বাক্যের মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার আমাদের বুঝতে হবে , কিভাবে তিনি আমাদের পাপ ধুলেন তা সুনির্দিষ্টভাবে জানতে হবে ।
 আমাদের আরো জানতে হবে , সমাগম তাম্বুর দরজায় নীল, বেগুনী ও লাল সূতা দ্বারা কিসের নিদর্শন প্রকাশ করা হয়। তাহলে আমরা চিরস্থায়ী বিশ্বাস অর্জন করতে পারব ।
 
 
যীশু,যিনি নীল, বেগুনী ও লাল সূতার মূলসুর , তাঁকে বিশ্বাস না করলে আমরা কখনো নূতন জন্ম লাভ করব না
 
পবিত্রস্থানে প্রবেশের আগে যাজকেরা কি করতেন ?
পিতলের প্রক্ষলন পাত্রের জলে হাত ও পা ধৌত করতেন।
 
 আমাদের প্রভু যীশু আমাদিগকে উদ্ধার করেছেন । যখন আমরা দেখি যে তিনি কী যথার্থভাবে আমাদের উদ্ধার করেছেন, তখন আমরা তাঁর প্রশংসা না করে পারি না। পবিত্র সমাগম তাম্বুর নীল, বেগুণী এবং লাল সূতার মাধ্যমে তিনি আমাদের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দিয়েছেন । আমরা প্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি।
 ভয়ানক বিচারের মধ্য দিয়ে ছাড়া পাপী পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারে না। পাপের কারণে বিচারিত না হয়ে কিভাবে একজন পাপী পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারে? এটা অসম্ভব।যদি কেউ প্রবেশ করে, তবে তক্ষণই সে মারা পড়বে। এটা একটি আশীর্বাদ নয় কিন্তু নরক যন্ত্রনা হবে। পাপী পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেও পারে না,বাঁচতেও পারে না।
 পবিত্র সমাগম তাম্বুর দরজাতে স্থিত গোপন রহস্য দ্ধারা প্রভু আমাদের রক্ষা করেছেন। নীল ,বেগুনী ও লাল সূতা দ্ধারা তিনি আমাদের উদ্ধার করেছেন । এবং এই বিষয়গুলোর মাধ্যমে তিনি তাঁর পরিত্রাণের রহস্য আমাদের কাছে উম্মোচন করেছেন ।
 আপনি এবং আমি কি এভাবে উদ্ধার পেয়েছি ? নীল, বেগুণী এবং লাল সূতার বাক্যে বিশ্বাস না করলে আমরা প্রায়ত্তেশ্চির সুসমাচারের মাধ্যমে পরিত্রাণ পেতে পারি না । নীল রং দ্ধারা ঈশ্বরকে বোঝানো হয় নি , কিন্তু যীশুর বাপ্তিস্মকে বোঝানো হয়েছে । বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু আমাদের সব পাপ তুলে নিয়েছেন ।
 নীল সূতায় বিশ্বাস না করে কোন ব্যক্তি হোমার্থক বলির বেদি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে । কিন্তু ঈশ্বর যেখানে বসতি করেন , সেই পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারে না ।
 কাজেই , সমাগম তাম্বুর দরজা দিয়ে প্রাবেশ করার আগে নীল সূতা ( যীশুর বাপ্তিস্ম ) , লাল সূতা ( যীশুর ক্রুশীয় রক্তু) , এবং বেগুনী সূতা ( যীশুর ঈশ্বরত্ব এবং ঈশ্বরপুত্রত্ব ) এইগুলোতেই বিশ্বাস করতে হবে । এই বিশ্বাসের মাধ্যমেই কেবল আমরা ঈশ্বরের রাজ্যে এবং মহাপবিত্র প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারি ।
অনেকে সমাগম তাম্বুর বহিঃপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করে মনে করে তারা তাম্বুর অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে । কিন্তু এটা পরিমাণ নয় । উদ্ধার পেতে হলে আমাদের কতদুর পর্যন্ত যেতে হবে? আমাদিগকে মহাপবিত্র স্থান পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে । মহাপবিত্র স্থানে পৌঁছাতে হলে আমাদেরকে পিতলের প্রক্ষালন পাত্র অতিত্রুম করতে হবে। পিতলের প্রক্ষালন পাত্র যীশুর বাপ্তিস্মের নিদর্শন , এবং পবিত্র স্থানে পৌঁছাতে হলে আমাদের যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে প্রতিদিনের সমস্ত পাপ ধৌত হয়ে, পবিত্র হয়ে প্রবেশ করতে হবে।
 পুরাতন নিয়মে যাজকগণ প্রবেশের আগে নিজেদেরকে ধৌত
করতেন এবং নুতন নিয়মে যীশু তাঁর শিষ্যদের পা ধোয়ানোর মাধ্যতে তাঁদের সারাজীবনের পাপ ও অধর্ম ধৌত করার নিদর্শন দেখালেন ।
ঈশ্বরের ব্যবস্থা বলে , “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু , কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ দান, প্রভু যীশু খ্রীষ্টে অনন্ত জীবন ” ( রোমীয় ৬:২৩ পদ)।
 ঈশ্বর নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষের পাপের বিচার করেন, তিনি মানুষের পাপ তাঁর পুত্রের উপর অর্পণ করলেন এবং মানুষের পক্ষে পুত্রের বিচার করলেন । এটাই ঈশ্বরের প্রেম , তাঁর পরিত্রাণ। প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার , অর্থাৎ যীশু বাপ্তিস্ম , রক্ত , মৃত্যু এবং পুনরুত্থানে বিশ্বাস করার মাধ্যমেই কেবল প্রকৃত পরিত্রাণ লাভ করা সম্ভব ।
 
 
 নূতন জন্ম লাভ করতে হলে কখনও ঈশ্বরের বাক্য , পাপের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার ঘৃণা করা উচিত নয়
 
আমাদের করণীয় একমাত্র  বিষয়টি কি ?
ঈশ্বরের লিখিত বাক্যে বিশ্বাস করতে হবে ।
 
 আমরা কখনও অন্যকে ঘৃণা করি না । আমার অজানা কিছু সম্বন্ধে যখন কেউ কোন আলোচনা করে, আমি তাকে সেই বিষয়ে শিক্ষা দিতে বলি । কিন্তু যখন আমি সবার কাছে পবিত্র সমাগম তাম্বুর অর্থ জিজ্ঞাসা করি , তখন কেউ উত্তর দিতে পারে না।
 তাহলে আমি কি করতে পারি ? আমাকে বাইবেলের কাছে যেতে হয়। বাইবেলের কোন অংশে সমাগম তাম্বুর কথা লেখা আছে? যাত্রা পুস্তকে এ বিষয়ে সবিশেষ বর্ণনা আছে । কেউ যদি সতর্কভাবে এই বই পড়ে , তাহলে ঈশ্বরের লিখিত বাক্যের মাধ্যমে এর অর্থ বুঝতে পারবে ।
 প্রিয় বন্ধুগণ, অন্ধভাবে যীশুকে বিশ্বাস করলে আপনি উদ্ধার পাবেন না। নিয়মিতভাবে গীর্জায় যোগ দিলেও আপনি নূতন জন্ম লাভ করতে পারবেন না। নীকদীমকে যীশু কি বলেছিলেন তা আপনি জানেন, “তুমি ইস্রায়েলের গুরু, আর এ সকল বুঝিতেছ না। ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে হইলে এবং ঈশ্বরের রাজ্য দেখিতে হইলে , নূতন জন্ম লাভ করিতে হইবে” ( যোহন ৩ অধ্যায়)।
 যারা যীশুকে বিশ্বাস করে, তাদেরকে নীল সূতা ( যা প্রকাশ করে যে, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ যীশুর উপর অর্পণ করা হয়েছে ), লাল সূতা ( আমাদের পাপের জন্য যীশুর মৃত্যু ), এবং বেগুনী সূতা ( যীশুই ত্রাণকর্তা , ঈশ্বর , ঈশ্বরের পুত্র ) এই সত্যে বিশ্বাস করতে হবে।
 আমাদিগকে বিশ্বাস করতে হবে যে , যীশুই সকল পাপীর ত্রাণকর্তা। এই বিশ্বাস ব্যতিরেকে আমরা নূতন জন্ম লাভ করতেও পারব না , ঈশ্বরের রাজ্যের মত পবিত্র স্থানেও প্রবেশ করতে পারব না । এমনকি , এই বিশ্বাস ছাড়া এই পৃথিবীতে কেউ বিশ্বস্তভাবে জীবন ধারণ করতে পারে না।
শুধু যীশুতে বিশ্বাস করার মাধ্যমেই নূতন জন্ম লাভ করা সহজ বিষয় নয় কি ? হ্যাঁ। “ তুমি মুক্তি পেয়েছে , আমি মুক্তি পেয়েছি , আমরা সবাই মুক্তু হয়েছি।”কী চমৎকার এই গানটি! কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছে যারা প্রকৃতভাবে নূতন জন্ম লাভ না করেই যীশুকে বিশ্বাস করে।
 প্রত্যেককে বাইবেলের সত্যও জানতে হবে এবং যীশুতেও বিশ্বাস করতে হবে। বাইবেলে বর্ণিত প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার সম্বন্ধে আমাদের জানতে হবে , পবিত্র সমাগম তাম্বুতে প্রবেশ দ্ধারে নীল, বেগুনী, লাল সূতা সম্পর্কে জানতে হবে, এবং ঈশ্বরের সাথে বিশ্বাসের জগতে বাস করতে হবে। ঈশ্বরের রাজ্য আসা পর্যন্ত আমরা সমাগম তাম্বুতে সুখে বাস করতে পারি। সঠিকভাবে যীশুকে বিশ্বাস করা অত্যাবশ্যক।
 
 
নীল সূতার সঙ্গে মূল সুসমাচারের পবিত্রতার মিল রয়েছে  
 
পরিএণের জন্য অপরিহার্য শর্ত কি ?
যীশুর বাপ্তিস্ম
 
অনেক সময় অনেকে মনে করে যে , কোন ভুল ছাড়াই সুন্দরভাবে সে জীবন যাপন করতে পারে। যখনই সে কিছু করতে। যাবে তখনই নিজের অসম্পূর্ণতা তার কাছে ধরা পড়বে। মানুষ খুবই অসম্পূর্ণ, পাপ না করে বেঁচে থাকা তার পক্ষে অসম্ভব। যেহেতু যীশু আমাদিগকে নীল, বেগুনী ও লাল সূতা, প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দ্ধারা উদ্ধার করেছেন, তাই আমরা পবিত্র হতে পারি এবং পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারি।
ঈশ্বর যদি নীল, বেগুনী ও লাল সূতার দ্বারা আমাদিগকে রক্ষা না করতেন, আমরা নিজেদের চেষ্টায় কখনো পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারতাম না। এর কারণ কি? যারা রক্ত মাংসের শরীরে সঠিকভাবে জীবন যাপন করে শুধুমাত্র তারাই যদি প্রবেশ করার অধিকার পেত, তাহলে আসলে কেউই পবিত্র স্থানে প্রবেশ করার যোগ্য হতো না। প্রকৃত সুসমাচার ছাড়া যীশুতে বিশ্বাস করা মানে নিজের হৃদয়ে আরো একটা পাপ যোগ করা।
 যীশু তাঁর সুপরিকল্পিত পরিত্রাণের মাধ্যমে, অর্থাৎ নীল, বেগুনী এবং লাল, এবং মসীনা সূতার পরিত্রাণের মাধ্যমে আমাদিগকে উদ্ধার করেছেন। তিনি আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন। আপনি কি তা বিশ্বাস করেন? হ্যাঁ। আপনার হৃদয়ে কি প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের সত্য আছে এবং আপনি কি সেই সাক্ষ্য বহন করেন? হ্যাঁ।
 যখন আপনি সুসমাচারের এই সাক্ষ্য বহন করেন, তখন আপনার কপালে “ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা” লেখা থাকে এবং আপনি “রাজকীয় যাজকবর্গ” এর সাথে যুক্ত হতে পারেন (১ পিতর ২: ৯ পদ )। কেবলমাত্র তখনই আপনি লোকদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে
সাক্ষ্য দিতে পারেন যে, আপনি ঈশ্বরের একজন দাস, যাজক হিসাবে কাজ করছেন।
 মহাযাজকের পাগড়ীতে স্বর্ণের পাত ছিল, এবং এই পাতটি নীল সূতা দ্ধারা বাঁধা ছিল। কেন নীল? কারণ যীশু তাঁর প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দ্বারা আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন, কারণ তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন, (পুরাতন নিয়মে হস্তার্পণ অর্থাৎ নূতন নিয়মের বাপ্তিস্ম)।
 নীল, বেগুনী এবং লাল সূতার গুঢ় রহস্য যদি আমরা বুঝতে না পারি, তাহলে যত গভীর বিশ্বাসই থাকুক না কেন, আমরা “ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা” খঁচিত পাত কখনই অর্জন করতে পারব না।
 আমরা কিভাবে ধার্মিকগণিত হয়েছি? মথি ৩ অধ্যায় ১৫ পদে লেখা আছে, “ কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” যীশু বাপ্তাইজিত হলেন এবং জগতের সমস্ত পাপ থেকে আমাদের উদ্ধার করলেন। কারণ , বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং বিশ্বাসীদের ধাৰ্মিকগণিত করলেন।
 যদি যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস না থাকে, তাহলে আমরা কিভাবে বলতে পারি যে, আমাদের পাপ নাই? এমনকি আমরা যদি যীশুকে বিশ্বাসও করি, যদি আমরা চিৎকারও করি, এবং ভাবি যে ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে যীশু আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন, তাহলেও জগতের সমস্ত চোখের জলে আমরা আমাদের পাপ ধুতে পারব না। না। আমরা যতই কাঁদি না কেন এবং অনুতাপ করি না কেন, পাপ আমাদের মধ্যে রয়েই যাবে।
 “ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্রতা”। কারণ তিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, কারণ সমস্ত পাপীর সকল পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করা হয়েছে, কারণ বাইবেলে পরিত্রাণের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, তাই সব রকম দূর্বলতা সত্বেও আমরা বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিকগণিত হয়েছি।
 তাই আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে এখন দাঁড়াতে পারি। আমরা ধার্মিক জীবন যাপন করতে পারি এবং জগতের কাছে সুসমাচার প্রচার করতে পারি। “আহা, আমি মুক্ত হয়েছি। তুমি মুক্ত হয়েছ। আমরা সবাই মুক্ত হয়েছি।” এই গানের মত আমরা ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী সকলে উদ্ধার পেয়েছি।
 হৃদয়ে প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের বাক্য না থাকলে, হাজার চেষ্টা করেও পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়।এটা কোরীয় একটি জনপ্রিয় প্রতিদানহীন প্রেমের গানের মত। “যখন আমি তাকে দেখি, বিনা কারণেই আমার অন্তরে ঘন ঘন শিহরণ জাগে, যতবার আমি তার কাছে আসি। অবশ্যই আমি তার প্রেমে পড়েছি।” তার নয়, আমার হৃদয়ে শিহরণ জাগে, কিন্তু আমার প্রেম কখনও ফিরে আসে না।
 লোকে মনে করে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের কাছে পরিত্রাণ ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে আসে। তারা প্রশ্ন করে, “কেন এর শুধুমাত্র বাপ্তিস্মের সুসমাচার দ্বারা আসতে হবে?” যীশুর বাপ্তিস্মের সুসমাচারের মাধ্যমে না এলে পরিত্রাণ সম্পূর্ণ হবে না। ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিকগাণিত হওয়ার এটাই একমাত্র পথ, এবং শুধুমাত্র এই পথের মাধ্যমেই আমরা সম্পূর্ণরূপে পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি।
 
 
যীশুর দেওয়া নীল সূতার পরিত্রাণ কি ?
 
কিসে আমাদের ধার্মিকগণিত করেছে ?
নীল, বেগুনী এবং লাল সূতার সুসমাচারে
 
 নীল, বেগুনী এবং লাল সূতার সুসমাচারের যে পরিত্রাণ ত মানুষের জন্য ঈশ্বরেরই দান। এই দান আমাদিগকে পবিত্র সমাগম তাম্বুতে প্রবেশাধিকার এবং শান্তিতে জীবন যাপন করার অধিকার দিয়েছে। এটা আমাদের ধার্মিকগণিত করেছে। এটা আমাদের ধার্মিকগণিত করেছে এবং মন্ডলীতে প্রবেশাধিকার দিয়েছে; মন্ডলীতে ঈশ্বরের বাক্যের শিক্ষা লাভ করার সুযোগ দিয়েছে।
 যখনই আমরা প্রার্থনা করতে ঈশ্বরের সম্মুখ যাই, এই সুসমাচার
তাঁর প্রেমে আমাদেরকে আশীর্বাদযুক্ত করে। এজন্যই পরিত্রাণ আমাদের কাছে এত মূল্যবান । যীশু পাথরের উপরে গৃহ নির্মাণ করতে বলেছেন। সেই পাথর হল যীশুর বাপ্তিস্ম। আমরা সকলে উদ্ধার পাব, পরিত্রাণ প্রাপ্ত জীবন যাপন করব, স্বর্গে যাব , অনন্ত জীবন পাব এবং ঈশ্বরের সন্তান হব। প্রিয় বন্ধুগণ, প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের কারণে বিশ্বাসসহ আমরা পবিত্র সমাগম তাম্বুতে প্রবেশ করতে সক্ষম হব। যেহেতু আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে গেছে (যীশুর বাপ্তিস্ম দ্ধারা) ক্রুশে বিচার নিষ্পন্ন হয়ে গেছে। আমরা যীশুর বাপ্তিস্মের সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমে পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছি। যীশুর অপরিমেয় প্রায়শ্চিত্তের জন্য, তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের সুসমাচারের জন্য আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে গেছে। আপনি কি তা বিশ্বাস করেন? সত্য সুসমাচার হলো স্বর্গীয় প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার যা সম্পূর্ণরূপে আমাদের পাপ থেকে ধৌত করেছে। 
 প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারে বিশ্বাস করে আমরা নূতন জন্ম লাভ করেছি।যীশু আমাদের প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচার দিয়েছেন, যা আমাদের প্রতিদিনের পাপ থেকে আমাদেরকে ধৌত করেছে।
ঈশ্বরের প্রশংসা হোক। হাল্লিলূয়া ! প্রভুর ধন্যবাদ হোক । জল ও আত্মার সুসমাচার ( জল ও রক্তের সুসমাচার ) যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা কথিত প্রকৃত সুসমাচার । যীশুর সুসমাচার , জল ও আত্মার সুসমাচার প্রকাশ করার জন্যই এই বইটি লেখা হয়েছে। কারণ পূর্ণ সত্য না জেনে অনেকে যীশুকে বিশ্বাস করে , তারা খ্রীষ্টধর্ম তত্ত্ব অনুযায়ী (তথাকথিত দার্শনিক ধর্মমত) জীবন যাপন করছে , অল্প কথায় , তারা প্রচলিত ধর্মমতের বিরুদ্ধে এবং দ্বিধার মধ্যে আছে। সুতরাং আমাদের ফিরে আসা উচিত এবং প্রকৃত সুসমাচারে বিশ্বাস করা উচিত। যাদের মনে জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে নূতন জন্ম লাভের ক্ষেত্রে প্রশ্ন রয়েছে, তাদের জন্য দ্বিতীয় বইতে আমি আরও বিশদভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই।