Search

Проповіді

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[2-1] রোমীয় পুস্তকের দ্বিতীয় অধ্যায়ের উপস্থাপন

পৃথিবীতে খ্রীষ্টিয়ান এবং যিহূদী দুটি দল আছে, যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, এবং এদের মধ্যে একটি দল যীশুকে বিশ্বাস করে এবং অন্যরা করে না। যারা যীশুতে বিশ্বাস করে না, ঈশ্বরের নিকট তাদের বিশ্বাস মূল্যহীন। খ্রীষ্টিয়ানদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, তারা কোন রকমে যীশুতে বিশ্বাস করে কিন্তু তারপরেও পাপের ক্ষমা পায় না। শুধু যিহূদী ও গ্রীকদের জন্য নয়, কিন্তু বর্তমান খ্রীষ্টিয়ানদের উদ্দেশেও প্রেরিত পৌল রোমীয় দুই অধ্যায়ে এই প্রসঙ্গে বলেছেন। 
 
 

যিহূদীরা সহজেই অন্যের বিচার করে

 
 একই বিশ্বাসে বিশ্বাসী যিহূদী এবং খ্রীষ্টিয়ান, উভয়কে প্রেরিত পৌল নিন্দা করেছেন। রোমীয় ২:১ পদে প্রেরিত পৌল বলেন, “হে মনুষ্য তুমি কে যে বিচার কর।” যিহূদী এবং খ্রীষ্টিয়ান যে কেউ তাদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে গর্ব করে, তিনি তাদের নিন্দা করেন। ঈশ্বরকে বিশ্বাস করার পরও যারা নূতন জন্ম লাভ করেনি, তাদের হৃদয়ে কি ভূল আছে ঈশ্বর তা জানেন। এইজন্য তারা অন্যদেরকে বলে চুরি করো না। তারা নিজেরাই ব্যভিচার করে এবং ঈশ্বরের ব্যবস্থা লংঘন করে। তারা নিজেদেরকে ঈশ্বরে বিশ্বাসী বলে জাহির করে, অথচ তারা ব্যবস্থা লংঘন করে। যিহূদী এবং খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে এই ধরণের লোকেরা নূতন জন্ম লাভ করেনি।
 যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, তারা অন্যকে বলে, প্রতিমাপূজা কর না। নরহত্যা কর না। তারা গর্ব করে যে, তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করে। এভাবে ব্যবস্থা লংঘনের মাধ্যমে তারা ঈশ্বরকে অসম্মান করে।
 যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা সম্বন্ধে জানে না, কিন্তু যীশুতে বিশ্বাস করে; তারা এও বলে যীশু তাদের ত্রাণকর্তা কিন্তু তাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার উপরে প্রতিষ্ঠিত নয়। ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় যে তাদের সমস্ত পাপ ইতিমধ্যে ধুয়ে গেছে তারা সেই সত্যের বিরোধী। তারা জানেনা যে তারা সত্য ঈশ্বর বিশ্বাসীদের বিরোধিতা করছে। আমরা দেখতে পাই যে, অনেক লোক আছে যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্টিয়ান বলে দাবী করে অথচ যীশু খ্রীষ্টের প্রেম বা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ কে না জেনেই ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতায় পূর্ণ সু-সমাচারে আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা দাবী করে যে তারা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে। যীশু নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করেছেন এই অভিযোগে অভিযুক্ত করে, অর্থাৎ ঈশ্বর নিন্দার অভিযোগে তারা যীশুকে ক্রুশে দিয়েছে।
 প্রেরিত পৌল বলেন, বাহিরের যিহূদীরা যিহূদীরা নয়, কিন্তু আত্মিক যিহূদীরাই প্রকৃত যিহূদী। তারা দাবী করে যে, তারা ঈশ্বরের লোক এবং ঈশ্বরের বিশেষ জাতির একটি অংশ। যীশুকে মুক্তিদাতা হিসাবে অস্বীকার ক’রে কিভাবে যিহূদীরা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে পারে।
 রোমীয় ২:২৯ পদে প্রেরিত পৌল বলেন, “হৃদয়ে যে ত্বক্‌ছেদ , যাহা অন্তরে নয় আত্মায়, তাহাই ত্বক্‌ছেদ ।” যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করে তারা প্রকৃত ঈশ্বর বিশ্বাসী। তারা বিশ্বাসে ধার্ম্মিক।
 ঈশ্বরে বিশ্বাসীরা কার নিকট থেকে স্বীকৃতি এবং প্রশংসা পাবে? তারা ঈশ্বরের নিকট থেকে পাবে। পৌল বলেন, “তার প্রশংসা মনুষ্য হইতে হয় না, কিন্তু ঈশ্বর হইতে হয়” (রোমীয় ২:২৯)। যদি আমরা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করি, আমরা তাঁর নিকট হইতে প্রশংসা পাই এবং পুরস্কৃত হই। হৃদয় পাপ থাকা অবস্থায় আপনি যদি যীশুকে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনি প্রকৃতভাবে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করছেন না। আপনি তাঁকে উপহাস করছেন। তাহলে আপনি অবিশ্বাসীদের মত বিচারিত হবেন।
 কে ঈশ্বরের সত্যকে অস্বীকার করে? যে ঈশ্বরের বাক্যের চেয়ে মানুষের কথাকে বেশী প্রাধান্য দেয়। সে নিজেকে বিভিন্ন খ্রীষ্টিয়ান ধর্মসম্প্রদায়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে। সে পরিত্রাণ অগ্রাহ্য এবং ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার পরিত্রাণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়। এইসব লোকদের উপরে কি ধরণের শাস্তি নেমে আসতে পারে, তা কি আপনি অনুমান করতে পারেন?
 
 

ঈশ্বর বিরোধীদের শাস্তি

 
 ৮ ও ৯ পদ অনুযায়ী “যারা প্রতিযোগী এবং সত্যের অবাধ্য ও অধার্ম্মিকতার বাধ্য, তাদের প্রতি ক্রোধ, ক্লেশ ও সংকট বর্ত্তিবে; প্রথমে যিহূদীদের, পরে গ্রীকদের উপরে, কদাচার মনুষ্য মাত্রের প্রাণের উপর বৰ্ত্তিবে।”
 যে সব প্রাণ মন্দ বিষয়ে লিপ্ত, তাদের উপরে তীব্র ক্লেশ ও সংকট নেবে আসবে। এখানে “মানসিক যাতনা” এই শব্দ দ্বারা নরকের শাস্তির তীব্রতা প্রকাশ করা হচ্ছে। যারা মন্দতায় আবদ্ধ জন্য রয়েছে কঠোর দুঃখ দূর্দশা এবং নরকের যন্ত্রনা।
 ঈশ্বরকে অগ্রাহ্যকারীদের উপরে কি প্রকার অভিশাপ নেমে আসবে? ঈশ্বরের প্রেম অবজ্ঞাকারীদের উপর ভয়ানক বিচার নেমে আসবে। আত্মিক ত্বক্‌ছেদের মাধ্যমে দেহমনে ঈশ্বরের যে প্রেম ও শান্তি নেমে আসে এবং যারা এসব অগ্রাহ্য করে, তাদের নিকট থেকে আপনি কি প্রত্যাশা করেন? কিছু লোক ঈশ্বরের গভীর ক্রোধে পতিত হওয়ার কারণে মৃত্যুর আগে ও পরে ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। তারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে অগ্রাহ্য করে এবং বিশ্বাসপূর্বক সত্যকে হৃদয়ে ধরে রাখতে পারে না। আত্মিক ত্বক্‌ছেদের কারণে যে ঈশ্বরের প্রেম নেমে আসে, তা তারা জানে না। তারা মন্ডলীতে যায়, স্বীকার করে যে, যীশুতে তাদের বিশ্বাস আছে। তারা পরেও পাপ থেকে মুক্তি না পাওয়ার কারণে, তারা কষ্ট পায়।
 কেবলমাত্র যীশুতে বিশ্বাস করে আপনি এই লুক্কায়িত বিষয় গুলি জানতে পারেন না। শুধুমাত্র ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় যাদের বিশ্বাস আছে, তারাই ইহা জানতে পারে। ভ্রান্ত ঈশ্বর বিশ্বাসীদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যেন, আপনারা জল ও আত্মার সুসমাচার অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা বুঝতে পারেন। তখন আপনি নিজেই দূর্দশার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
 হৃদয়ে পাপ থাকা অবস্থায় যদি কেহ বলে যে, সে যীশুকে বিশ্বাস করে, এর অর্থ তার বিশ্বাস ভ্রান্ত এবং সত্য সুসমাচার যে ঈশ্বরের বাক্য দিতে পারে, তাকে তা বিশ্বাস করতে হবে। সে যে সম্প্রদায়েরই থাকুক না কেন, কেহ যদি হৃদয়ে পাপ রেখে কোন রকমে যীশুতে বিশ্বাস করে তাহলে সে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা অস্বীকার করার মত পাপ করছে। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসের প্রকৃত ফল কি? যদি আপনি সত্যিকার ভাবে যীশুকে আপনার ত্রাণকর্তারূপে বিশ্বাস করেন, তাহলে, অবশ্যই আপনি পাপ মুক্ত হবেন। যীশুতে বিশ্বাস করার পরেও যদি আপনার হৃদয়ে পাপ থাকে এর অর্থ আপনি সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে বুঝতে পারেন নি।
 প্রভু, যিনি পাপীদের তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন, তিনি মাংসময় দেহে এসেছেন এবং সমস্ত বিশ্বাসীদের মুক্তিদাতা হয়েছেন। যে ব্যক্তির জল ও আত্মায় সত্যিকার বিশ্বাস আছে; তার কি পাপ থাকতে পারে? যদি সত্যিই সে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা হতে যীশুকে বিশ্বাস করে, তবে সেই মুহূর্ত থেকে তার পাপ থাকে না। তার কারণ, হৃদয় পাপ থাকা অবস্থায় সে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে অবজ্ঞা করে কোন রকমে যীশুকে বিশ্বাস করে।
 অতএব, আপনি এখনই আপনার একগুঁয়েমী ভাব পরিত্যাগ করুন। বলুন, আমি ভুলভাবে যীশুকে বিশ্বাস করেছি! আমি বুঝতে পেরেছি যে যীশুতে বিশ্বাসের জন্য ক্রুশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বাপ্তিস্মও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমি বুঝতে পেরেছি যে, যেহেতু বাপ্তিস্ম গ্রহণের মধ্য দিয়ে যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন- তাই ভয়ানক বিচারে বিচারিত হয়ে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন। এ সত্যগুলো আপনাকে অনুধাবন করতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে।
 যারা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে একগুঁয়েভাবে চলতে থাকে, তারা সেই অনুযায়ী ঈশ্বরের নিকট থেকে প্রতিফল ভোগ করবে। ফলস্বরূপ তারা জ্বলন্ত নরকে পতিত হবে। এ কারণে (মথি ৭:২২) অনুযায়ী, “সেই দিন অনেকে আমাকে বলিবে, হে প্রভু, আপনার নামে আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম কাৰ্য্য করি নাই?” প্রভু যখন পুনরায় আসবেন, তখন যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মি কতায় বিশ্বাস করে নাই এবং যাদের হৃদয় পাপ আছে, যারা যীশুকে বিশ্বাস করার ভান করছে ,তারা ঈশ্বরের সম্মুখে বিচারিত হবে। তারা প্রভুকে বলবে, আমি কি সত্যিই আপনাকে বিশ্বাস করি নাই? আপনার নামেই কি আমি ভূত ছাড়াই নাই? এবং বিভিন্ন ভাষায় কথা বলি নাই? প্রভু, “আমি আপনার সেবা করি নাই।”
 তখন প্রভু বলবেন, “আমার নিকট থেকে দূর হও।” তোমরা ব্যবস্থা বিহীন ভাবে চলছে। (যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে বিশ্বাস করে নি)! তোমরা কিভাবে বলতে পার যে, আমাতে তোমাদের বিশ্বাস আছে, যখন এটা বিশ্বাস কর না যে, আমি বাপ্তিস্ম গ্রহণ এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তোমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি? মিথ্যাবাদী, তোমরা অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে! যে সব ভাক্ত ভাববাদিরা অনেককে নরকে নিয়ে গেছে, তোমার পাপ তাদের মত। যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করেন এবং তাদের একগুঁয়েভাব পরিত্যাগ করেনি, তাদের উপর ঈশ্বরের ভয়ানক ক্রোধ পতিত হবে । 
 এ প্রকার বিশ্বাসের সবচেয়ে বড় উদাহরণ যিহূদীরা, ঈশ্বরেরর সাক্ষাতে এখনও তারা তাঁর বিরোধিতা করছে। যীশু খ্রীষ্টের মধ্যে যে ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতা রয়েছে এটা তারা বিশ্বাস করে না। এমন কি প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যেও কিছু একগুঁয়ে খ্রীষ্টিয়ান আছে, যারা মনে করে, তাদের প্রতিদিনের পাপের জন্য অনুতপ্ত হলে তাদের প্রতি দিনের পাপ ক্ষমা হতে পারে। যারা ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতার অবিশ্বাসী এবং নিজেদের একগুঁয়েমী পরিত্যাগ করে না, তাদের উপর ঈশ্বরের মহা ক্রোধ পতিত হবে।
 যারা তাদের নিজেদের অপরাধের জন্য যীশু কাছে ক্ষমা চায়, অনুতপ্ত হয় এবং প্রার্থনা করে, যীশু কি তাদের প্রতিদিনের পাপ ক্ষমা করবেন? তিনি তা করেন না। যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন পুরাতন নিয়মের সর্বশেষ মহাযাজক এবং মানব জাতির মুক্তির প্রতিনিধি। ২০০০ বছর পূর্বে যীশু যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন। এভাবে তিনি ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতা সাধন করলেন এবং একবারেই মানব জাতির সমস্ত পাপ মুছে দিলেন।
 যীশু আমাদের পাপ সমুহ কোথায় নিলেন? যোহনের দ্বারা যর্দ্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হয়ে, যীশু মানব জাতির সমস্ত পাপ নিজের উপরে একবারেই তুলে নিলেন। গলগাথা নামক স্থানে ক্রুশীয় রক্ত সেচনের মাধ্যমে বিশ্বাসীদেরকে তাদের সমস্ত পাপ থেকে চিরতরে মুক্ত করলেন এবং তাদের পাপের জন্য বিচারিত হলেন। কিন্তু সমস্ত খ্রীষ্টিয়ান-পাপী লোকেরা অবাধ্যতায় চলে এবং ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে না। ক্ৰুশীয় রক্তে তাদের হৃদয়ের সমস্ত পাপ মুক্ত হওয়া সত্ত্বেও, তবু কেন তারা মৃত্যু পর্যন্ত পাপের ক্ষমা চায়? তারা একগুঁয়ে। যীশুর ক্রুশীয় রক্ত গুঁরুত্বপূর্ণ কিছু যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম একইভাবে গুঁরুতুপর্ণ যা তাদের বিশ্বাস করা উচিত, এবং একবারেই তাদের পাপের ক্ষমা লাভের মাধ্যমে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা অর্জন করা উচিত। 
 প্রত্যেকেই অবাধ্য! কিন্তু ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা পরিত্যাগ করার মত অবাধ্যতাগুলো ঈশ্বরের সম্মূখে আপনাকে পরিত্যাগ করতে হবে। যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে, তাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করতে হবে এবং তা পালনও করা উচিত। একইভাবে আমি একজন একগুঁয়ে লোক, কিন্তু ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমি আমার একগুঁয়েমী পরিত্যাগ করেছি এবং তাঁর অনুগ্রহে ধার্ম্মিক হয়েছি। 
প্রকৃত অনুতাপের অর্থ একগুঁয়েমী পরিত্যাগ করা এবং হৃদয় ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে গ্রহণের মাধ্যমে পাপের ক্ষমা পাওয়া। পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আমরা আমাদের ভ্রান্তির পথ পরিহার করেছি এবং ভুল স্বীকার করেছি এবং ঈশ্বরের সম্মূখে আত্মিক জীবন যাপন করার চেষ্টা করছি। পরবর্তী বিষয়টি হল নূতন জন্ম প্রাপ্ত ভক্তের প্রকৃত অনুতাপের জীবন।
     যারা যীশুকে বিশ্বাস করে, কিন্তু ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে জানে না, তারা ধংস হবে। এই প্রকার লোকদের তাদের অবাধ্যতার পথ পরিত্যাগ করে অনুতাপ করা উচিত এবং তাদের পাপের ক্ষমার জন্য যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশে বিশ্বাস করা উচিত (প্রেরিত ৩:১৯)। তাঁর ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে একবারেই পাপের ক্ষমা গ্রহণের জন্য ঈশ্বর আমাদেরকে এই আদেশ দিয়েছেন। ঈশ্বরের কথা শুনে এবং তাঁর বাক্য পালনের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত ধার্ম্মিক হতে পারি। এবং এই সত্যে বিশ্বাসে আমরা একই সাথে আমাদের পাপের ক্ষমা পেতে পারি যে, যীশু বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মধ্য দিয়ে আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন। যখন কোন ব্যক্তি ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে, তখন তার পাপের ক্ষমা হয়। এবং তিনি পুরস্কার স্বরূপ পবিত্র আত্মার দান গ্রহণ করেন, যীশুর সকল প্রেরিত এবং শিষ্যগণ একই সাথে পাপের ক্ষমা পেয়েছেন এবং ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতাকে গ্রহণ করেছেন। আপনারও সত্যের সম্মুখে একগুঁয়ে হওয়া উচিত নয়। যথাসময়ে আপনার একগুঁয়ে হওয়া উচিত। আপনি যদি আত্মিক ত্বক্‌ছেদ কে ভালভাবে বুঝতে না পারেন। তাহলে তা আপনার জানা এবং বিশ্বাস করা প্রয়োজন। একগুঁয়েভাবে কিছু করা উচিত নয়। আপনার মধ্যে অনুতাপ এবং বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন।
 আত্মিক ত্বক্‌ছেদের সত্যকে না জেনে তারা সত্যকে অগ্রাহ্য করে এবং তা নিয়ে উপহাস করে। “এটা ঠিক নয়! একজন মানুষ যখন প্রতিনিয়ত পাপ করে, তখন সে কিভাবে ধার্ম্মিক হতে পারে? আপনি জানেন, যদিও তারা পাপে পূর্ণ, ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসীদেরকে যীশুর ধার্ম্মিকতার দিকে ডাকেন। এটা ন্যায়পরায়নতার মতবাদ। এই কারণে আপনাকে ধার্ম্মিক বলে গণ্য করা হয়নি যে, সত্যিকার অর্থে আপনার হৃদয়ে কোন পাপ নেই।” আপনার জানা উচিত যে, এটা খুবই ভ্রান্ত শিক্ষা।
 বাইবেলে, আত্মিক ত্বক্‌ছেদের সুসমাচারের মধ্যদিয়ে ঈশ্বর আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্তির কথা বলেছেন, “আমি তোমার সমস্ত পাপ মুছে ফেলেছি। এখন আর তুমি পাপী নও। কারণ আমি তোমার সমস্ত পাপ গ্রহণ করেছি, তুমি ধার্ম্মিক।” “তুমি কি আমার ধার্ম্মিকতা বিশ্বাস কর? যদি তুমি আত্মিক ত্বক্‌ছেদের বাক্যে বিশ্বাস কর, তবে তুমি আমার সন্তান এবং তুমি পাপ মুক্ত।” ঈশ্বর তাঁর সম্পূর্ণ মুক্তির কথা বলেছেন, কিন্তু আত্মিক ত্বকছেদে বিশ্বাসী নূতন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানদেরকে নিয়ে সাধারণ খ্রীষ্টিয়ানেরা উপহাস করে। তারা বলে পাপে লিপ্ত অবস্থায় কিভাবে একজন ব্যক্তি ধার্ম্মিক হতে পারে? কেবলমাত্র ন্যায়পরায়নতার মতবাদের মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে আপনি ‘পাপ মুক্ত হিসাবে’ গণ্য করতে পারে। একজন ব্যক্তি প্রতিদিন পাপ না করে পারে না। তারা এইভাবে মিথ্যা অপবাদ দেয় এবং বিরোধিতা করে, কারণ তারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে বিশ্বাস করে না। 
ভাল কিছু করার প্রয়াসে যারা ধৈর্য্যশীল, ঈশ্বর তাদেরকে অনন্ত জীবন দান করেন। যারা ভাল কিছু করার প্রয়াসে গৌরব, সম্মান, অমরত্ব, সহিষ্ণতার অন্বেষণ করে, তারা ঈশ্বরের সন্তান বলে গণ্য হয়। কিন্তু যারা তা করে না, তারা শাস্তি ভোগ করে। প্রত্যেকেই ঈশ্বরের সন্তান হতে চায় এবং অনন্ত জীবন পেতে চায়। যারা আন্তরিকতার সাথে চিরদিনের জন্য পাপ মুক্ত জীবন-যাপন করে যীশু তাদেরকে অনন্ত জীবন দান করেন।
“হে প্রভু, আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাসের মাধ্যমে সত্যিই আমি তোমার কাছে পাপের ক্ষমা চাই, যেন আমি আমার লজ্জাজনক বিষয় থেকে নিশ্চয়তার জীবন পেতে পারি। আমি তোমার সন্তান হতে চাই। আমি তোমার ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস স্থাপন করে তোমাকে সন্তুষ্ট করতে চাই। আমি পাপ মুক্ত হতে চাই। অনুরোধ করি, আমার সমস্ত পাপ থেকে আমাকে উদ্ধার কর।” যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার পরিত্রাণ অন্বেষণ করে, তাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তির জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে, ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শোনেন এবং ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতার সুসমাচারের মধ্য দিয়ে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেন। যারা অনন্ত জীবন পেতে চায়, ঈশ্বর তাদেরকে অনন্ত জীবন দান করেন।।
 
 

আত্মিক ত্বক্‌ছেদ কি?

 
 এর অর্থ হচ্ছে,যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তের মধ্য দিয়ে ইতিপূর্বে কৃত সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া। মেষশাবকের রক্ত ভয়ানক বিচারের নিদর্শন এবং যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্মের অর্থ হল -পৃথিবীর সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পণ করা। এমন কি আজও, খ্রীষ্টিয়ানেরা পুরাতন নিয়মকে অস্বীকার করলে নূতন নিয়মে বিশ্বাস করতে পারে না। শাস্ত্রে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ এবং মেষশাবকের রক্তের সাথে নিস্তারপর্বের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
 ১ যোহন ৫:৬ পদে বলে যে, যীশু “কেবল জলে নয়, কিন্তু জলে ও রক্তে” এসেছেন। যীশু জলে অথবা শুধুমাত্র রক্তে আসেননি, উভয়ের মাধ্যমে এসেছেন। আপনাকে আপনার পাপ থেকে উদ্ধারের জন্য জল, রক্ত এবং আত্মার বাক্যে নিহিত আত্মিক ত্বকছেদে বিশ্বাস করতে হবে।
যাত্রাপুস্তক ১২ অধ্যায় পাঠ করার পর, আত্মিক ত্বক্‌ছেদ সম্বন্ধে আমার কিছু প্রশ্ন জাগে। যাত্রাপুস্তক ১২ অধ্যায় কি অর্থ প্রকাশ করে? সমগ্র অধ্যায়টি আমি সতর্কতার সাথে দেখেছি এবং পংক্তি গুঁলো বাইবেলের অন্যান্য সম্পর্কযুক্ত অংশের সাথে বার বার অধ্যয়ন করেছি। এবং আমি অনুধাবন করেছি যে, ইস্রায়েলীয়েরা ত্বক্‌ছেদ করার কারণে নিস্তারপর্ব উৎসবে অংশ গ্রহণ করতে পারত। এবং নূতন নিয়মে বলে যে, যীশু কোন সাধারণ কারণে ক্রুশে রক্ত সেচন করেননি, তিনি যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন বলে রক্ত সেচন করেছিলেন।
 ঈশ্বর ইস্রায়েলদেরকে বিধিসংগতভাবে নিস্তারপর্ব পালনের জন্য দুটি আইন দিয়েছিলেন, নিস্তারপর্বের ভোজের পূর্বে ত্বক্‌ছেদ করা এবং পরে মেষশাবকের মাংস গ্রহণ। এটাই পুরাতন নিয়মে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ ? নূতন নিয়ম বলে যে, যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পণ করা হয়েছিল এবং সেই পাপের কারণে তিনি ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন। আমি বুঝতে পরেছি যে, এই সত্য গ্রহণ করার অর্থ আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করা। যীশু খ্রীষ্ট যর্দ্দনে যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন বিধায় পৃথিবীর সমস্ত পাপ নিজের উপর বহন করেছিলেন। এবং সেই পাপের কারণে আমাদের স্থলে বিচারিত হয়ে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেছিলেন।
হৃদয়ে এই সত্যকে গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আপনি সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। একজন ব্যক্তিকে সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করা প্রয়োজন, যা আমাদেরকে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ দান করতে পারে। এই সত্য অনুধাবন করা প্রয়োজন। পাঠক, আপনারও এই সত্য উপলব্ধি করা প্রয়োজন যে, পুরাতন নিয়মে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ এবং নূতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্ম, পাপের ক্ষমার সম্বন্ধে উভয়ে একই সাথে কার্যকরি। যীশু বিচারিত হয়েছিলেন, এই কারণে নয় যে, তিনি পাপ করেছিলেন; কিন্তু তিনি বাপ্তাইজিত হয়ে পৃথিবীর সমস্ত পাপ নিজেই বহন করেছিলেন বিধায় ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ গ্রহণ করেছেন, এটা তাদের বিশ্বাস।
 আত্মিক ত্বক্‌ছেদের মাধ্যমে যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতাকে বিশ্বাস করে তাদের কোন পাপ থাকে না। কারণ সত্যিই তারা যীশুকে বিশ্বাস করে। যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ না করে কোন রকমে যীশুতে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য আমার করুণা হয়। তাদের বিশ্বাস করতে হবে যে, যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণের মধ্য দিয়ে যীশু পৃথিবীর সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন।
এটা দুঃখজনক যে, অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ান কেবল মাত্র যীশুর ক্রুশে বিশ্বাস করে কিন্তু তাঁর বাপ্তিস্ম বিশ্বাস করে না। এভাবে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার উপর তাদের বিশ্বাস থাকতে পারে না। আমাদের জানা উচিত যে, বাইবেলে ঈশ্বর যা বলেছেন, তা অবশ্যই আমাদের বিশ্বাস করা উচিত।
ধর্মীয় শিক্ষা এবং মতবাদ গুরুত্বপূর্ণ নয়। সেগুলো আমাদের ছিন্ন করতে হবে এবং কেবল মাত্র ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস করতে হবে, যা আমাদেরকে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার দিকে নিয়ে যায়। এ কারণে তাঁর ধার্ম্মিকতা ব্যাতীত বাক্য ঈশ্বরের বাক্য হতে পারে না। আত্মিক ত্বক্‌ছেদ ব্যাতীত সু-সমাচার সম্পূর্ণ নয়। এ কারণে বাইবেলে ঈশ্বর পুরাতন নিয়মে ত্বক্‌ছেদ সম্পর্কে এবং নূতন নিয়মে যীশু বাপ্তিস্ম সম্পর্কে বারংবার বলেছেন। অন্যভাবে, পুরাতন নিয়মে ত্বক্‌ছেদ এবং মেষশাবকের রক্তদান এবং নূতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর রক্ত সেচন একই অর্থ প্রকাশ করে। আত্মিক ত্বক্‌ছেদ গ্রহণের জন্য আমাদেরকে এই সত্য বিশ্বাস করতে হবে। যাহোক, এই সত্যকে বিশ্বাস না করলে আমরা ঈশ্বরের রাজ্য থেকে বঞ্চিত হব।
শুধুমাত্র কি তাঁর ক্রুশীয় রক্তে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা পূর্ণতা পেয়েছে? তা নয়। যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্ত, উভয়ের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা পূর্ণতা পেয়েছে। তাঁর ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে আমরা যে শুধু আত্মিক ত্বক্‌ছেদ গ্রহণ করছি তা নয়, কিন্তু যোহনের দ্বারা তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তা গ্রহণ করেছি। যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্য দিয়ে আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন এবং ক্ৰুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের পাপের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করেছেন বিধায় আমাদের পক্ষে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করা সম্ভব হয়েছে।
 
 
ত্বক্‌ছেদের অর্থ কেটে ফেলা
 
যিশাইয় ভাববাদি ভাববাণী করেছিলেন যে, যিহূদীদের ভাবী ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপের জন্য বিচারিত হবেন, এবং চূর্ণ হবেন। অতএব, আলোচনা আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের আরো কিছু বিষয় জানা উচিত। খ্রীষ্ট কেন ক্রুশ বিদ্ধ হলেন?
পাপী তার পাপ পাপার্থক বলির উপর অর্পণ করার জন্য, পুরাতন নিয়মে বলির উপরে হস্তার্পণ করত এবং তারপর সেই বলির মেষশাবককে হত্যা করত। বলির কিছু রক্ত আঙ্গুলে নিয়ে যাজক হোমার্থক বলির বেদির শৃঙ্গে ছিটিয়ে দিতেন এবং বাকী রক্ত বেদি মূলে ঢেলে দিতেন (লেবীয় পুস্তক ৪:২৭-৩০)। এই প্রক্রিয়ায় পুরাতন নিয়মের সময়ে পাপী তার পাপ থেকে রেহাই পেত। তাহলে যীশু, যিনি ঈশ্বরের মেষশাবক (যোহন ১:২৯) হিসাবে আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করতে এসেছিলেন, পুরাতন নিয়মের বলিদান প্রথার মত পাপ অর্পণ করার জন্য তাঁর উপরেও কি হস্তার্পণ করা প্রয়োজন ছিল না?
তাহলে কখন এবং কিভাবে প্রভু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন? মথি ৩:১৩-১৭ পদে কি এ বিষয়ের বর্ণনা নাই যে, তিনি যর্দ্দনে যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন? লেবীয় পুস্তকে যেমন বার বার বলা হয়েছে যে, পাপী তার পাপ অর্পণের জন্য “হোমবলির মস্তকে হস্তার্পণ করিবে” (লেবীয়পুস্তক ১:৪, ৩:৮, ৪:২৯)। মহাযাজক তাঁর এবং সমগ্র ইস্রায়েল জাতির পাপ অর্পণ করার উদ্দেশে বলির মেষের মস্তকের উপর হস্তার্পণ করতেন। তারপর তিনি বলির কিছু রক্ত নিয়ে হোমার্থক বলির বেদির শৃঙ্গে ছিটিয়ে দিতেন এবং বাকি রক্ত বেদি মুলে ঢেলে দিতেন। এইরূপে তারা পাপ থেকে মুক্ত হতো।
ঠিক একই রকম উপায়ে এবং উদ্দেশে যীশুর যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিলেন এবং ক্ৰুশে রক্ত সেচন করলেন। বাইবেলে ঈশ্বরের এই ধার্ম্মিকতা এবং আত্মিক ত্বক্‌ছেদ ঈশ্বর আমাদের দিতে চেয়েছেন। কাজেই, যারা আমরা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করি, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্ৰুশীয় রক্তে আমাদের আত্মিক ত্বক্‌ছেদের মাধ্যমে আমাদের পাপ দূর হয়েছে। পুরাতন নিয়মের ত্বক্‌ছেদের সাথে যখন আমরা নূতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্মের সাদৃশ্য বুঝতে পারি, তখন আমরা সত্যি সত্যি ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা বুঝতে পারি এবং আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করতে পারি।
 
 
নূতন নিয়মে প্রকৃত আত্মিক ত্বক্‌ছেদ 
 
 আসুন মথি ৩:১৩-১৫ পদ পাঠ করি, “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন।”
 যর্দ্দনে যীশু যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। তিনি যীশুর মস্তকে হস্তাৰ্পণপূর্বক বাপ্তাইজিত করেছিলেন। (গ্রীক ভাষায় বাপ্তাইজ করা “baptizo” অর্থ জলে নিমজ্জিত করা বা ডুবিয়ে দেওয়া।)
 ক্রুশে মৃত্যুবরণ করার পূর্বে, আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার উদ্দেশে যীশুকে বাপ্তিস্ম নিতে হয়েছিল। তাই, তিনি যোহন কর্তৃক প্রথমে বাপ্তাইজিত হলেন এবং তারপর জলে নিমগ্ন হলেন। কেন তিনি বাপ্তাইজিত হলেন? তাঁর বাপ্তাইজিত হওয়ার কারণে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা পূর্ণরূপে সাধিত হলো। তিনি যেন আমাদের ঈশ্বর ও ত্রাণকর্তা হতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে আমাদের পাপ তুলে নেওয়ার জন্য তিনি ন্যায় ও উপযুক্ত কাজটি করলেন, অর্থাৎ বাপ্তিস্ম নিলেন। বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ নিজ দেহে বহন করে- সেই পাপের কারণে ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করা যীশুর জন্য যথাযথ ছিল।
 জনসম্মুখে যীশু যে কাজটি প্রথম করলেন তা হলো, তিনি বাপ্তিস্ম নিলেন। ‘বাপ্তিস্ম’ - এর গ্রীক প্রতিশব্দ ‘baptisma’ যার অর্থ হল ধৌত হওয়া, সমাধিস্থ করা, স্থানান্তর করা এবং অর্পণ করা। সপ্তম মাসের দশম দিন ছিল পুরাতন নিয়মে ইস্রায়েল জাতির প্রায়শ্চিত্ত দিবস। বলির উদ্দেশে মনোনীত মেষশাবকের মস্তকে হস্তার্পণ দ্বারা মহাযাজক হারোণ ইস্রায়েলদের পাপ তার উপর অর্পণ করতেন। দুটি ছাগের মধ্যে একটিকে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করা হতো, এবং অন্যটি ইস্রায়েল জাতির সম্মুখে প্রায়শ্চিত্তের জন্য উৎসর্গ করা হতো (লেবীয়পুস্তক ১৬)। নূতন নিয়মে যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন।
 বাপ্তিস্ম গ্রহণের পরদিন যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে দেখিয়ে বললেন, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান” (যোহন১:২৯)।
 আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে, শুধুমাত্র যীশুর রক্তে বিশ্বসের দ্বারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ সম্ভব নয়।
 আসুন, ১যোহন ৫:৪ পদ থেকে দেখি। “কারণ যাহা কিছু ঈশ্বর হইতে জাত, তাহা জগৎকে জয় করে; এবং যে জয় জগৎকে জয় করিয়াছে, তাহা এই, আমাদের বিশ্বাস। কে জগৎকে জয় করে? কেবল সেই, যে বিশ্বাস করে, যীশু ঈশ্বরের পুত্র। তিনি সেই, যিনি জল ও রক্ত দিয়া আসিয়াছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট; কেবল জলে নয়, কিন্তু জলে ও রক্তে। আর আত্মাই সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ আত্মা সেই সত্য। বস্তুতঃ তিনে সাক্ষ্য দিতেছেন, আত্মা ও জল ও রক্ত, এবং সেই তিনের সাক্ষ্য একই। আমরা যদি মানুষের সাক্ষ্য গ্রহণ করি, তরে ঈশ্বরের সাক্ষ্য মহোত্তর, ফতল: ঈশ্বরের সাক্ষ্য এই যে, তিনি আপন পুত্রের বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়াছেন। ঈশ্বরের পুত্রে যে বিশ্বাস করে, ঐ সাক্ষ্য তার অন্তরে থাকে; ঈশ্বরে যে বিশ্বাস না করে, সে তাঁহাকে মিথ্যাবাদী করিয়াছে; কারণ ঈশ্বর আপন পুত্রের বিষয়ে যে সাক্ষ্য দিয়াছেন, তাহা সে বিশ্বাস করে নাই। আর সেই সাক্ষ্য এই যে, ঈশ্বর আমাদিগকে অনন্ত জীবন দিয়াছেন, এবং সেই জীবন তার পুত্রে আছে। পুত্রকে যে পাইয়াছে, সে সেই জীবন পাইয়াছে; ঈশ্বরের পুত্রকে যে পায় নাই, সে সেই জীবন পায় নাই”(১যোহন ৫:৪-১২)।
 আত্মিক ত্বক্‌ছেদের প্রমান কি? যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে স্বীকার করা এবং বাপ্তিস্ম ও রক্তের পরিত্রাণে বিশ্বাস করা। যে জয় জগৎকে জয় করেছে তা হলো জল ও রক্ত। “তিনি সেই, যিনি জল ও রক্ত দিয়া আসিয়াছিলেন, যীশু খ্রীষ্ট; কেবল জলে নয়, কিন্তু জলে ও রক্তে। আর আত্মাই সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ আত্মা সেই সত্য। বস্তুতঃ তিনে সাক্ষ্য দিতেছেন, আত্মা ও জল ও রক্ত, এবং সেই তিনের সাক্ষ্য একই।” এই সাক্ষীদের সাক্ষ্য হলো এই যে, ঈশ্বরই আমাদের ঈশ্বর ও ত্রাণকর্তা, ঈশ্বর মাংসে এই জগতে এসেছিলেন, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ নিজ দেহে বহন করলেন, আমাদের পক্ষে ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন; এই ভাবে আমাদের সমস্ত পাপ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করলেন।
 নূতন নিয়মে আত্মিক ত্বক্‌ছেদের সুসমাচারে জল রক্তের সত্য নিহিত। নূতন নিয়মে জল হল - যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত হলো - যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যু। যীশুর বাপ্তিস্ম হলো পুরাতন নিয়মের ত্বক্‌ছেদের প্রতিরূপ। যোহনের দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্ম প্রমাণ করে যে, তার দ্বারা যীশুর উপর সমস্ত পাপ অর্পণ করা হয়েছিল। যারা এই সত্যে বিশ্বাস করে, তারা ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলতে পারে “হে ঈশ্বর, তুমিই আমার ত্রাণকর্তা। আমি তোমার ধার্ম্মিতায় বিশ্বাস করেছি, তাই আমার পাপ আর নেই। আমি তোমার পাপমুক্ত সন্তান, এবং তুমিই আমার ঈশ্বর।” আপনার এভাবে উচ্চৈস্বরে সাক্ষ্য দেওয়ার মত বিশ্বাসের ভিত্তি কোথায়? তা যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস,-যা ঈশ্বরের ধাৰ্ম্মিকতায় নিহিত আছে। শুধুমাত্র খ্রীষ্টের রক্তে বিশ্বাস দ্বারা ঈশ্বরের ধাৰ্ম্মিকতাকে নিজের ধার্ম্মিকতা হিসাবে গ্রহণ করা যায় না। বাপ্তিস্ম ও রক্ত - এই উভয়ের দ্বারা তা সম্ভব।
 আসুন, দেখি, শাস্ত্রে কোথায় আমাদের পরিত্রাণের জন্য যীশুর বাপ্তিস্মের অপরিহার্যতার কথা বলা হয়েছে। ১পিতর ৩:২১পদে এর প্রমাণ পাই, “আর এখন উহার প্রতিরূপ বাপ্তিস্ম - অর্থাৎ মাংসের মালিন্যত্যাগ নয়, কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে সৎসংবেদের নিবেদন।”
 প্রেরিত পিতর এখানে আমাদের পরিত্রাণের সন্দেহাতীত প্রমাণ দেখিয়েছেন। যীশুর বাপ্তিস্ম হলো পুরাতন নিয়মের ত্বক্‌ছেদের প্রথা। আপনি বুঝতে পারছেন? পুরাতন নিয়মে যেমন ইস্রায়েলরা ত্বক্‌ছেদের জন্য লিঙ্গাগ্রের ত্বক ছেদন করত নূতন নিয়মে তেমনি যীশুর বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলেন নিলেন, যেন আমরা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ প্রাপ্ত হই। বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্ত ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার সৃষ্টি করেছে। আত্মিক ত্বক্‌ছেদ এবং বাপ্তিস্ম একই বিষয়। আপনাকে বুঝতে হবে যে যীশুর বাপ্তিস্ম আমাদের সকলের জন্য আত্মিক ত্বক্‌ছেদ হিসাবে প্রকাশিত সত্য।
 “এখন উহার প্রতিরূপ বাপ্তিস্ম।” কিভাবে আমরা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা লাভ করতে পারি ? আমাদের পাপের জন্য যীশু বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। মথি ৩:১৫ পদে আছে “কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” কারণ মানব জাতির সমস্ত পাপ বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশুর মস্তকে অর্পিত হয়েছিল, এবং পাপীদের পাপ সম্পূর্ণরূপে মুছে গেছে। যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রত্যেক পাপী ধার্ম্মিক হতে পারে। জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর বহন করার কারণে যীশুকে ক্রুশে সেই সব পাপের বিচার দন্ড ভোগ করতে হয়েছিল, এবং এইভাবে সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত হলো। যীশু, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের পাপ তুলে নিয়েছিলেন এবং সেই পাপের কারণে আমাদের পক্ষে ভয়ানক বিচারে বিচারিত হয়েছিলেন,-এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা ঈশ্বরীয় ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে। এই সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করুন।
 যোহন ১:২৯ পদে বলা হয়েছে, “ঐ দেখ, ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান।” যীশু ঈশ্বরের পুত্র এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তা হিসাবে তিনি আমাদের পাপভার তুলে নেওয়ার মাধ্যমে তাঁর কৃত ত্বক্‌ছেদ বিষয়ক বিধি সাধন করলেন। এই সত্যে বিশ্বাস, অর্থাৎ ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস দ্বারা আমাদের আত্মিক ত্বক্‌ছেদ হয়। যীশুই আমাদের প্রকৃত ধার্ম্মিকতা। আমাদের অবশ্যই যীশুর কাছে কৃতজ্ঞ হতে হবে। তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্ত আমাদেরকে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভে সহায়তা করে, এই জন্য অবশ্যই তাঁর ধন্যবাদ এবং প্রশংসা করা উচিত।
 ১পিতর ৩:২১ পদে বলা হয়েছে, “মাংসের মালিন্যত্যাগ নয়, কিন্তু ঈশ্বরের নিকটে সৎসংবেদের নিবেদন -।” যীশুকে শুধুমাত্র ত্রাণকর্তা হিসেবে স্বীকার করলেই ব্যক্তির মাংসের মালিন্য দূর হয় না। এই বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারি যে, যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্ত সেচনের মাধ্যমে তাঁর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হয়েছে। যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে স্বীকার করলে পাপ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। হৃদয় দিয়ে ত্রাণকর্তাকে স্বীকার করে নিলে আপনি পাপ থেকে মুক্ত হবেন, যদিও পাপ মাংসের মালিন্য থাকতে পারে কিন্তু পাপ থাকবে না। যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে নিজের উপরে আপনার সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তাহলে আপনি ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা লাভ করবেন এবং আপনার হৃদয়ে পাপ আর থাকবে না।
 
 
এই সত্যে বিশ্বাসকে আপনার নিজের বিশ্বাস হিসাবে তৈরী করতে হবে
 
 যোহন ১:১২ পদে বলা হয়েছে, “কিন্তু যত লোক তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন।”
 আপনি কোন বাক্য গ্রহণ এবং বিশ্বাস করেছেন? ঈশ্বরের পুত্র যে কাজ সাধন করেছেন, তা আপনাকে গ্রহণ করতে হবে। ঈশ্বরের কাজ কি? ঈশ্বরের পুত্র মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে এলেন, ত্রিশ বছর বয়সে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন, যেন আমাদের পাপ সেই আত্মিক ত্বক্‌ছেদের মাধ্যমে মোচিত হয়ে যায়। তারপর তিনি ঈশ্বরের মেষশাবক হিসাবে ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করলেন। প্রভু অনন্তকালীয় মেষশাবকরূপে পাপার্থক বলি হিসাবে নিজেকে উৎসর্গ করলেন এবং এইভাবে আমাদের মত পাপীদেরকে অনন্তকালীয় পরিত্রাণ দিলেন। এটা সত্য বিশ্বাস। এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ধার্ম্মিক গণিত হতে পারি।
শুধুমাত্র খ্রীষ্টের রক্তের মাধ্যমে কি আমরা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করতে পারি? না, আমরা পারি না। যীশুর বাপ্তিস্মই আমাদের থেকে আমাদের পাপকে দূরিভূত করেছে এবং আমাদের যে মহা বিচারদন্ড প্রাপ্য ছিল, প্রভু নিজেই আমাদের স্থলে ক্ৰুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে সেই বিচারদন্ড ভোগ করলেন। আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছি এবং ভয়ানক বিচারদন্ড এড়াতে পেরেছি, কারণ আমরা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করেছি। যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে বিশ্বাস করলে এবং হৃদয়ে গ্রহণ করলে, পাপীর হৃদয়ের পাপ মোচন হয়ে যায়। হৃদয়ে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করুন। তাহলে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা আপনার নিজের হবে।
 
 
হৃদয়ে সত্যিকারের আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করতে হবে
 
 প্রেরিত পৌল রোমীয় ২ অধ্যায়ে বলেছেন, “হৃদয়ের যে ত্বক্‌ছেদ।” আপনি কিভাবে আপনার হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ করতে পারেন? এটা কেবল এই সত্যে বিশ্বাস করার মাধ্যমে সম্ভব যে, যীশু খ্রীষ্ট মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে “জগতের পাপভার” তুলে নিয়েছেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করেছেন এবং পুনরুত্থিত হয়ে আমাদের অনন্তকালীয় ত্রাণকর্তা হয়েছেন। প্রেরিত পৌল বলেন যে, আমাদের হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ হতে হবে এবং যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করার মাধ্যমেই আপানার হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ সম্ভব। যদি আত্মিকভাবে হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ গ্রহণ করতে চান, তাহলে যীশুর বাপ্তিস্ম বিশ্বাস করুন। এভাবেই আপনি ঈশ্বরের সত্যিকারের সন্তান হতে পারবেন। যিনি যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাস করেন, পাপ মুক্ত হয়ে তিনি ধার্ম্মিক গণিত হতে পারেন। আমেন।
 ঊনত্রিশ বৎসর বয়স পর্যন্ত যীশু তাঁর পরিবারের সাথে পরিবারের সাহায্যের জন্য পরিবারের মধ্যে জীবন যাপন করেছেন, কিন্তু ত্রিশ বছর বয়স থেকে জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়েছেন। এই সময়ে তিনি মানুষের সমস্ত পাপ মুছে নিয়েছেন এবং পাপীদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। প্রথম যে কাজটি তিনি করেছিলেন তা হল, পাপীদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করে ধার্ম্মিক করার জন্য তিনি বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন। “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন” (মথি ৩:১৩)। কেন যীশু বাপ্তাইজিত হওয়ার জন্য সচেষ্ট ছিলেন? আমাদের এটা জানতে হবে যে, পাপীদের পাপ তুলে নেবার জন্য তিনি এই কাজ সাধন করলেন। যীশুর বাপ্তিস্মের ভুল ব্যাখ্যা করা আমাদের অবশ্যই উচিত নয়। বাপ্তিস্ম হল অর্পণের মাধ্যমে পাপ ধৌত করা। এই কারণে, পাপ তুলে নেওয়ার জন্যে, যীশু যোহনকে তাঁকে বাপ্তাইজিত করতে বললেন।
 যীশুকে বাপ্তাইজিত করেছিলেন, এই যোহন কে? যোহন হলেন সমগ্র মানব জাতির প্রতিনিধি। মথি ১১:১১-১৪ পদে এর স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে, “আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক হইতে মহান কেহই উৎপন্ন হয় নাই, তথাপি স্বর্গ-রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র যে ব্যক্তি, সে তাঁহা হইতে মহান। আর যোহন বাপ্তাইজকের কাল হইতে এখন পর্যন্ত স্বর্গ-রাজ্য বলে আক্রান্ত হইতেছে, এবং আক্রমীরা সবলে তাহা অধিকার করিতেছে। কেননা সমস্ত ভাববাদি ও ব্যবস্থা যোহন পর্যন্ত ভাববণী বলিয়াছে । আর তোমরা যদি গ্রহণ করিতে সম্মত হও তবে জানিবে, যে এলিয়ের আগমন হইবে, তিনি এই ব্যক্তি।” 
 যোহন বাপ্তাইজকের সময়ের শুরু থেকে ব্যবস্থার যুগের সমাপ্তি হয়েছে। কারণ তাঁর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করতে যীশু তখন এসেছিলেন। তাহলে, সেই ব্যক্তিগণ কারা, যাঁরা পুরতন নিয়মের প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছেন? তাঁরা হলেন যীশু এবং যোহন বাপ্তাইজক। যোহন বাপ্তাইজক যীশুর উপরে পাপ অর্পণ করেছিলেন। যোহন ছিলেন পুরাতন নিয়মের শেষ ভাববাদী, যিনি নূতন নিয়মের মেষশাবকের উপরে পাপ অর্পণ করার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। বলিদান প্রথার বিধি অনুসারে যোহন বাপ্তাইজক যীশুর মস্তকের উপরে হস্তার্পণের মাধ্যমে এই কাজ সাধন করেছিলেন। যখন তিনি বাপ্তাইজিত হলেন, তখনই জগতের সমস্ত পাপ দুরীভূত হয়ে যীশুর উপরে অর্পিত হল। “এইরূপে” ঈশ্বর সমস্ত মানুষের হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ সাধন করলেন।
 যীশু বাপ্তিস্ম এবং তাঁর রক্তকে আপনার প্রায়শ্চিত্ত হিসাবে দৃঢ়ভাবে ধারন করুন। যীশু ইতিপূর্বেই জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং বিচারদন্ড নিজে বহন করেছেন। ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা সুসমাচারের সত্য হল বাপ্তিস্ম গ্রহণ এবং রক্ত সেচনের মাধ্যমে যীশু আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছেন। এখন, হৃদয়ে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা গ্রহন করার মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি। যদি আপনি এটা গ্রহণ করেন, তাহলে আপনি “দায়ুদের সন্তান, আব্রাহমের সন্তান যীশু খ্রীষ্টের’’ বংশাবলি পত্রে প্রবেশ করতে পারবেন। পৃথিবীতে এমন লোক আছে যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা সম্বন্ধে জানে, এবং এমন লোকও আছে যারা তা না জেনে এখনও যীশু খ্রীষ্ট থেকে দূরে রয়েছে। সময় শেষ হয়ে আসছে। যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করে তাঁতে প্রবেশ করুন। যীশুর বাপ্তিস্ম বিশ্বাসই আপনার জন্য তেলের কাজ করবে, যা নিয়ে আপনি বিবাহ ভোজে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। আমার প্রত্যাশা- আপনি এই নিগুরতত্ত্ব জানেন যে, যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের বিশ্বাসের দ্বারা, প্রদীপে তেল নিয়ে, আপানি প্রভু যীশুর দ্বিতীয় আগমনের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। 
 আমাদের প্রত্যেকের পাপ যেন তুলে নিতে পারেন, সেই উদ্দেশে যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। তিনি ঈশ্বরের পুত্র এবং নিজেই ঈশ্বর। তিনি স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা। পিতার সংকল্প সাধন করার জন্য, এবং আমাদেরকে যেন ঈশ্বরের সন্তান করতে পারেন, সেই উদ্দেশে তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন। পুরাতন নিয়মের সমস্ত ভাববানীগুলো কার সমন্ধে করা হয়েছিল? ভাববাণীগুলো ছিল যীশুর সম্পর্কে। তিনি কিভাবে পৃথিবীতে আসবেন, কিভাবে পাপ তুলে নেবেন এবং তা মোচন করবেন সেই বিষয়েই ভাববাণী করা হয়েছিল। পুরাতন নিয়মের ভাববাণী অনুসারে প্রায় দু হাজার বছর আগে যীশু এ পৃথিবীতে এসেছিলেন, এবং বাপ্তাইজিত হয়ে আমাদের পাপ তুলে নিয়েছিলেন। আদম এবং হবা থেকে শুরু করে শেষ মানুষটি পর্যন্ত সকলের পাপ তিনি বহন করেছিলেন।
 হৃদয়ে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ গ্রহণ করুন। “হৃদয়ের যে ত্বক্‌ছেদ” (রোমীয় ২:২৯)। যখনই আপনি যীশুর বাপ্তিস্মে বিশ্বাস করবেন, তখনই স্বাভাবিকভাবে আপনি আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করবেন। হৃদয়ের ত্বক্‌ছেদ কথাটির অর্থ হল পাপের মোচন, যখন আমরা স্বীকার করি যে, যীশুর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পিত হয়েছে, তখনই আমরা তা লাভ করি। আপনি কি আত্মিক ত্বক্‌ছেদ লাভ করেছন? হৃদয়ে আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করলে, “সমস্ত পাপ ধৌত হয়ে যায়।”
 
 
আপনি কি সত্যিই হৃদয়ের আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করেন?
 
 প্রায় দু হাজার বছর হয়ে গেছে যীশু এই পৃথিবীতে এসে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আমাদেরকে শুধু এ সত্যটাকে গ্রহণ করতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে।“হৃদয়ের যে ত্বক্‌ছেদ।” আমরা এই সত্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে হৃদয় ও মনের ত্বক্‌ছেদ লাভ করতে পারি। ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমরা সকলে পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। তাই পৃথিবীতে ঈশ্বরের দন্ড নেমে এলেও, আমাদের ভয় পাবার কিছু নেই। যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে, তাদের উপরে ঈশ্বরের দন্ড আসবে না। যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে না, তাদের উপরে ঈশ্বরের দন্ড নেমে আসবে।
 বর্তমান সময়ে, যীশুতে বিশ্বাস করার পরেও কেন মানুষ ধংস হয়ে যাচ্ছে? কেন তারা ক্রোধের মধ্যে রয়েছে? কারণ, পরিত্রাণের জন্য তারা কেবল যীশুর রক্তে বিশ্বাস করে। এ কথা এখন আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে, একগুঁয়েমী দ্বারা আপনি ঈশ্বরকে আঘাত দিয়েছেন, এবং যর্দ্দনে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে যীশু যে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এই সত্যের কাছে আপনাকে ফিরে আসতে হবে। তাহলেই আপনার হৃদয়ের আত্মিক ত্বক্‌ছেদ সম্ভব। 
 যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে আপনার হৃদয়ের আত্মিক ত্বক্‌ছেদ সম্ভব, তাহলে আপনি ঈশ্বরের বিচারদণ্ড এড়াতে পারবেন এবং ঈশ্বরের সন্তান হতে পারবেন। ঈশ্বর আপনার ঈশ্বর হবেন এবং আপনি তার প্রজা হবেন। আপনাদের মধ্যে যদি এমন কেউ থাকে, যে যীশুর রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে যীশুতে বিশ্বাস করে, তাহলে তাকে আমি একটি প্রশ্ন করতে চাই। আমাদের আত্মিক ত্বক্‌ছেদ এবং ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা কি শুধুমাত্র যীশুর ক্রুশীয় রক্তে সাধিত হয়েছে? শুধুমাত্র যীশুর রক্তে আমাদের পরিত্রাণ সাধিত হয়নি, কিন্তু তার বাপ্তিস্ম, রক্ত এবং আত্মা দ্বারা সাধিত হয়েছে। 
 
 
খ্রীষ্টের সাথে এক হয়ে ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা অর্জন করা যায়
 
 আসুন, রোমীয় ৬:৩-৮পদ দেখি, “অথবা তোমরা কি জাননা যে, আমরা যত লোক খ্রীষ্ট যীশুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি, সকলে তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তাইজিত হইয়াছি? অতএব আমরা তাঁহার মৃত্যুর উদ্দেশে বাপ্তিস্ম দ্বারা তাঁহার সহিত সমাধিপ্রাপ্ত হইয়াছি; যেন খ্রীষ্ট যেমন পিতার মহিমা দ্বারা মৃতগণের উত্থাপিত হইলেন, তেমনি আমরাও জীবনে নূতনতায় চলি। কেননা যখন আমরা তাঁহার মৃত্যুর সাদৃশ্যে তাঁহার সহিত একিভূত হইয়াছি, তখন অবশ্য পুনরুত্থানের সাদৃশ্যেও হইব। আমরা ত ইহা জানি যে, আমাদের পুরাতন মনুষ্য তাঁহার সহিত ক্রুশারোপিত হইয়াছে, যেন পাপদেহ শক্তিহীন হয়, যাহাতে আমরা পাপের দাস আর না থাকি। কেননা যে মারিয়াছে, সে পাপ হইতে ধার্ম্মি ক গণিত হইয়াছে। আর আমরা যখন খ্রীষ্টের সহিত মরিয়াছি, তখন বিশ্বাস করি যে, তাঁহার সহিত জীবনপ্রাপ্তও হইব।”
 ৫ পদে বলে, “কেননা যখন আমরা তাঁহার মৃত্যুর সাদৃশ্যে তাঁহার সহিত একিভূত হইয়াছি, তখন অবশ্য পুনরুত্থানের সাদৃশ্যেও হইব।” বাইবেল বলে পাপের বেতন মৃত্যু, অর্থাৎ যে ব্যক্তি পাপ করে সে ধংস এবং নরকের যোগ্য। যীশুতে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করার পূর্বে কি আপনারা সবাই পাপ করেননি? -হ্যাঁ। যদি বিন্দুমাত্র পাপও আপনার মধ্যে থেকে থাকে, তাহলে আপনি নরকে যাবেন এবং “অগ্নি ও গন্ধকের প্রজ্বলিত হ্রদে” নিক্ষিপ্ত হবেন (প্রকাশিত বাক্য ২১:৮)। আমাদের পাপের মূল্য যদি আমাদেরকেই পরিশোধ করতে হত, অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করতে হত, তাহলে আমরা কখনই পাপ থেকে মুক্ত হতে পারতাম না। তাই, ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টকে এই জগতে পাঠালেন, তাঁর উপরে আমাদের সব পাপ অর্পণ করলেন এবং আমাদের স্থলে তাঁর বিচার করলেন।
 আমাদেরকে এত বেশী প্রেম করেন বিধায় ঈশ্বর আমাদের পরিত্রাণ দিলেন। পিতা ঈশ্বর তার একজাত পুত্রকে এই জগতে পাঠালেন, বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাঁর উপরে জগতের সমস্ত পাপ অর্পণ করলেন, পেরেক দ্বারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করলেন, যেন রক্ত সেচনের মাধ্যমে তিনি আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারেন। এই সত্যে বিশ্বাস করার অর্থই হল যীশুর সাথে এক হওয়া। পাপের বেতন মৃত্যু। আমাদের সকলের হৃদয়ে পাপ ছিল এবং সেই পাপের কারণে আমরা সকলে নরকযোগ্য ছিলাম। কিন্তু আমাদের মত এই নরকযোগ্য পাপীদের স্থলে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে, ক্রুশীয় মৃত্যুর মহ ভয়ানক বিচারে বিচারিত হলেন। এই ভাবে তাঁর মৃত্যুই আমাদের মৃত্যু হল, কারণ বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন। যীশুর সাথে এক হওয়ার বিশ্বাস এটা।
“ধর্মীয়” পন্থায় বর্তমানে অনেকে যীশুতে বিশ্বাস করে। তারা গীর্জায় যায় এবং চোখের জলের মাধ্যমে পাপ স্বীকার করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে। এ থেকে এখনই বিরত হোন এবং ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করুন, তাহলে হৃদয়ে ঈশ্বরের শান্তি পাবেন। আমাদের পরিত্রাণ করার জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং ক্রুশে মরেছিলেন। আমি আশা করি আপনি এই সুসমাচারে বিশ্বাস করেন।
মোশির মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের পাপের ক্ষমা সম্বন্ধে শিক্ষা দিয়েছেন। ঈশ্বরের আজ্ঞা অনুসারে মোশি ঈশ্বরের প্রজা ইস্রায়েলকে মিশর থেকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। তাই তিনি তার স্ত্রী ও সন্তানকে গাধার পিঠে চড়িয়ে মিশরে গিয়েছিলেন। সেই রাতে ঈশ্বরের এক দূত উপস্থিত হলেন এবং মাোশিকে হত্যা করতে চাইলেন, তখন তাঁর স্ত্রী শিপ্পরা একটি পাথরের ছুরি নিয়ে নিজের পুত্রের ত্বক্‌ছেদ করলেন এবং মোশির পায়ের কাছে তা ফেলে দিয়ে বললেন, “আমার পক্ষে তুমি রক্তের বর।”(যাত্রাপুস্তক ৪:২৫)।
এই অংশের সত্যটি এই রকম;- ত্বক্‌ছেদ না করার কারণে, এমন কি মোশির পুত্রও ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে গ্রাহ্য হয়নি, তাই ঈশ্বর তাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। ঈশ্বর বলেছিলেন যে ত্বক্‌ছেদ না করলে ইস্রায়েলীয়েরা তাঁর প্রজা হতে পারবে না। পুরাতন নিয়মে ত্বক্‌ছেদ ছিল ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার চিহ্নস্বরূপ। মোশিকে ঈশ্বর এই সত্য অনুধাবন করাতে চাইলেন। তাই মোশির স্ত্রী দ্রুত তাঁর পুত্রের ত্বক্‌ছেদ করলেন এবং ফেলে দিয়ে বললেন, “আমার পক্ষে তুমি রক্তের বর!” মোশির পুত্রের ত্বক্‌ছেদ হীনতার কারণে ঈশ্বর মোশিকে হত্যা করতে চাইলেন।
ত্বক্‌ছেদ না থাকার কারণে, অব্রাহামের বংশধর হওয়া সত্বেও ইস্রায়েল জাতি থেকে লোকদেরকে দূর করে দেওয়া হত। কেবলমাত্র ত্বক্‌ছেদ কৃত ব্যক্তিরাই নিস্তারপর্বের মেষশাবকের মাংস ভোজন করতে পারত এবং মেষশাবকের রক্ত গৃহের দরজার দুই বাজুতে এবং চৌকাঠে লেপে দিতে পারত। ঠিক একইভাবে, যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ প্রাপ্ত, তারাই শুধুমাত্র প্রভুর ভোজে অংশগ্রহণ করার যোগ্য। এই বিশ্বাস যাদের নেই তারা কখনই ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় প্রবেশ করতে পারবে না এবং এই জন্য ঈশ্বরের গৌরব প্রশংসায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
প্রেরিত পৌল একজন যিহূদী ছিলেন। আট দিন বয়সের সময় ত্বক্‌ছেদ প্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং গমলিয়েলের চরণে বড় হয়েছিলেন। তিনি পুরাতন নিয়ম সম্পর্কে দক্ষ ছিলেন। তাই, যীশু কেন যর্দ্দনে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, এবং কেন তাঁকে ক্রুশীয় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে তিনি খুব ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তিনি প্রচন্ড দৃঢ়তার সাথে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করতে পেরেছিলেন। তাই তিনি বলেন, “হৃদয়ের যে ত্বক্‌ছেদ ” (রোমীয়২:২৯)।
প্রেরিত পৌল অবশ্যই যীশুর ক্রুশীয় মৃত্যু সম্পর্কে বার বার প্রচার করেছিলেন। কেন? কারণ যীশু যদি আমাদের পাপ তুলে নিয়ে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ সাধন না করতেন, যদি ক্রুশে বলিকৃত না হতেন, অর্থাৎ অন্য কথায়, তিনি যদি বিচারদন্ড ভোগ না করতেন, তাহলে আমরা পরিত্রাণ পেতাম না। তাই পৌল বার বার ক্রুশের কথা বলেছেন। এ কথা আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, ক্রুশ হলো আত্মিক ত্বক্‌ছেদের পরিপূর্ণতা এবং সমাপ্তি। কিন্তু বর্তমান সময়ের অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানেরা যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশের মধ্যে যে সম্পর্ক তার বিন্দুমাত্রও জানে না, তাই তারা নরকের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যদি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আত্মিক ত্বক্‌ছেদের বিশ্বাসের বিষয়টি প্রচারিত হত তাহলে বর্তমানে খ্রীষ্টিয় সমাজ এই পথে যেত না।
প্রভুকে পাওয়ার পর পরই অনেকে খুবই কৃতজ্ঞ হয় এবং প্রভুর প্রতি উদ্যোগী হয়, কিন্তু যখন তারা নিজেদের দূর্বলতা আবিষ্কার করে, তখন তারা হতোদ্যম হয়ে পড়ে এবং আরো বেশী পাপী হয়ে পড়ে। হয়তো বা প্রভুকে পাবার পরে দশ বছর পার হয়েছে, কিন্তু তখনো দেখা যায় কেউ কেউ ক্রমান্বয়ে আরো বেশী পাপী হয়ে পড়ে। যীশুতে বিশ্বাস করার পরেও কি কেউ পাপী হতে পারে? তারা শুধু আক্ষরিক অর্থে এই গীত গানটি করে।
“ক্রন্দনে আমার হৃদয় যদি ভেসেও যায়
তবু পরিত্রাণ আমি পাব না;
আমার ভয় দূর হবে না - অনেক দিনের পাপ মুছবে না
ক্রন্দনে আমি মুক্তি পাপ না।
খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই পরিত্রাণ
পুত্রে বিশ্বাসের মাধ্যমেই পরিত্রাণ
তার কাৰ্য্যে বিশ্বাসে পরিত্রাণ।
প্রভু আমাকে কোলে তুলে নাও
খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই পরিত্রাণ।”
তারা গান করে, “ক্রন্দনে আমি পরিত্রাণ পাব না, কিন্তু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমেই পরিত্রাণ পাই।” কিন্তু তারা শুধু আক্ষরিক অর্থেই গান করে। যতবার পাপ করে ততবার ক্রন্দন সহকারে প্রার্থনা করে। “হে ঈশ্বর, দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর। এবার আমাকে ক্ষমা করলে এখন থেকে আমি ভাল হয়ে যাব।” কোন খ্রীষ্টিয়ান যখন পাপ করে, তারপর সে ক্রন্দনের মাধ্যমে প্রার্থনা করে এবং ক্ষমা চায়, তখন তার একটু ভাল অনুভব হয়। কিন্তু যে ব্যক্তি বছরের পর বছর এ রকম করে, দেখা যাবে দশ বছর যেতে যেতে ক্রমান্বয়ে সে আরো বেশী পাপে পূর্ণ হয়ে পড়বে। সেই ব্যক্তি তখন দুঃখপূর্ণ হৃদয়ে প্রশ্ন করে, “কেন আমি এত তাড়াতাড়ি যীশুতে বিশ্বাস করতে গেলাম? আশি বছর বয়সে অথবা শেষ নিশ্বাস ত্যাগের আগে তাঁকে বিশ্বাস করলে ভাল হত। আসলে আমি খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বাস করে ফেলেছি।” এটা হয় কারণ সে ভাবে যে, সে ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে চলবে, কিন্তু আসলে সে তা পারে না।
প্রত্যেকের প্রতিটি পাপের জন্য বিচার নিরুপিত রয়েছে। এই কারণেই যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং ক্রুশে বিচারিত হয়েছিলেন, বহুমূল্য রক্ত সেচন করেছিলেন, যেন তিনি আমাদের মত পাপীদের পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারেন। তৃতীয় দিবসে তিনি আবার পুনরুত্থিত হলেন। পিতা ঈশ্বর যীশুকে আবার পূনর্জীবন দিলেন। যে ব্যক্তি আত্মিক ত্বকছেদে বিশ্বাস করে, সে সুসমাচার প্রচারের জন্য জীবন যাপন করতে পারে বা করে। আত্মিক ত্বক্‌ছেদ হলো ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার প্রমান এবং এটাই ঈশ্বরের ধার্ম্মি কতা। আমাদের পাপ যীশু তুলে নিয়েছেন, তার প্রমাণ হলো তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশে তার বহুমূল্য রক্ত সেচন হলো, তিনি যে আমাদের পাপের মূলরূপে ঈশ্বরীয় ভয়ানক বিচারে বিচারিত হলেন, তার প্রমাণ। 
আপনি কি যীশুতে বিশ্বাস করেন এবং তার পরেও কি আপনার হৃদয় পাপে পরিপূর্ণ থাকে? তা হল একজন কপটীর বিশ্বাস। তীত ৩:১০ পদে বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি দলভেদী, তাঁহাকে দুই একবার চেতনা দিবার পর অগ্রাহ্য কর।” যারা কপট বিশ্বাসী তারা সব সময় নিজেকে দোষী করে। এমনকি, মৃত্যুমুখে পতিত হলেও তারা নিজেদেরকে পাপী হিসাবে সাব্যস্ত করে। তারা এতটাই একগুঁয়ে যে, তারা তাদের ভ্রান্ত ধারনাকে পরিবর্তন করতে চায় না। এই ধরনের পাপীদের উদ্দেশে ঈশ্বর বলেন, “তুমি একজন কপটী। তুমি একজন পাপী; তুমি আমার সন্তান নও, তুমি নরকের অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে।”
যারা যীশুতে বিশ্বাস করে, অথচ ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা অথবা যীশুর বাপ্তিস্মপ্রসূত আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করে না, তারা কপটী খ্রীষ্টিয়ান এবং মহাপাপী হিসাবে ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিজেদের পাপের পরিপূর্ণতা স্বীকার না করে পারে না। যে সব পাপী যীশুর ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে না, তারা স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে যারা ধার্ম্মিক গণিত হয়েছে, হৃদয়ে আত্মিক ত্বক্‌ছেদ গ্রহণ করার প্রমাণ তাদের রয়েছে। এইগুলো হলো তার প্রমাণ :- যীশুই ঈশ্বর, তিনি মাংসময় দেহে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করেছিলেন। যীশু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন এবং জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার উদ্দেশে যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন; যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করে, তাদের বিশ্বাসকে খাঁটি করার জন্য তিনি ক্ৰুশীয় বিচারে বিচারিত হয়েছিলেন। তৃতীয় দিবসে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং এইভাবে আমাদের জীবন্ত ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এটাই হল ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতার যথার্থ পরিত্রাণ, যা শুধু রক্তের মাধ্যমে নয়, কিন্তু জল ও রক্ত এবং পবিত্র আত্মার মাধ্যমে সাধিত হয়েছে। এগুলোই আমাদের জন্য যথার্থরূপে সাধিত তাঁর পরিত্রাণের অর্থাৎ আত্মিক ত্বক্‌ছেদের সাক্ষ্য বহন করছে।
আমার প্রিয় খ্রীষ্টিয় ভাই ও বোনেরা, এ কথা বিশ্বাস করুন যে, শুধুমাত্র যীশুর রক্তে আমাদের পরিত্রাণ সাধিত হয়নি, কিন্তু জল, রক্ত ও পবিত্র আত্মা দ্বারা সাধিত হয়েছে। ঈশ্বর জগতের সমস্ত পাপ দূরীভূত করেছেন এবং আমাদের প্রাপ্য দন্ডাজ্ঞা সম্পূর্ণরূপে মোচন করেছেন। শুধুমাত্র আমার পাপই তিনি ক্ষমা করেছেন তাই নয়, কিন্তু জগতের সমস্ত পাপ অর্থাৎ আদম থেকে শুরু করে পৃথিবীর শেষ মানুষটি পর্যন্ত। তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্ত দ্বারা তিনি সব পাপ তুলে নিলেন। যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করে, যা যীশু জল ও রক্তের মাধ্যমে পূর্ণরূপে সাধন করেছেন, তারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ প্রাপ্ত হয়।
যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে যীশু জগতের সমস্ত পাপ দূরীভূত করেছেন। সুতরাং এখন যারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদে বিশ্বাস করে, তাদের হৃদয়ে আর কোন পাপ নেই। যীশু মৃতগণের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন এবং আমরা যারা আত্মায় মৃত ছিলাম বা হারিয়ে গিয়েছিলাম, তাঁর ধার্ম্মিকতার মাধ্যমে তিনি আমাদের আত্মাকেও পুনর্জীবন দিয়েছেন। যীশুর বাপ্তিস্ম, তাঁর রক্ত এবং আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে ঈশ্বর আমাদের অন্বেষণ করছেন এবং আত্মিক ত্বক্‌ছেদের মাধ্যমে আমরা এখন পরিত্রাণ লাভ করতে পেরেছি। যারা বিশ্বাস করে, সৃষ্টির পূর্ব থেকে যীশুর মাধ্যমে আত্মিক ত্বক্‌ছেদের পরিকল্পনা ঈশ্বরের ছিল। এখন, যারা ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতায় বিশ্বাস করেছেন, তারা আত্মিক ত্বক্‌ছেদ ও লাভ করেছেন।