Search

Проповіді

বিষয় ১১: আবাস

[2-4] মরণ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থাক (প্রকাশিত বাক্য ২: ৮-১১)

মরণ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থাক
< প্রকাশিত বাক্য ২: ৮-১১ >
 
আদি মন্ডলীর সময়ে অনেক খ্রীষ্টিয়ান ছিল, যারা রোমীয় শাসকদের অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটা নিরাপদ জায়গা খোঁজ করছিল৷ সম্রাট নিরোর ক্ষমতা হস্তান্তরের পরেও রোমীয় শাসকগণ তাদের অত্যাচার চালিয়ে যেত, এ কারণে খ্রীষ্টিয়ানগণ পশ্চাদগামী ছিল৷ শাসকদের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করত৷ আদি সাধুগণ রোমীয় সম্রাটদের জাগতিক শাসন মেনে নিতেন এবং স্বীকার করতেন, কিন্তু যখন তারা তাদের বিশ্বাসকে ত্যাগ করতে বলত, তখনই তারা তাদেরকে মেনে নিতে অস্বীকার করত৷ এ কারণে তারা রোমান শাসকদের এ ধরণের দাবির বিরোধিতা করত, প্রাথমিক মন্ডলীর ইতিহাস নির্যাতন ও সাক্ষ্যমরের মৃত্যুতে পরিপূর্ণ ছিল৷ 
নিজেদের কাছে আমাদের প্রশ্ন করা উচিত যে, প্রকাশিত বাক্যে বিশ্বাসীদের জন্য কিছু বলা হয়েছে কি না৷ কেননা দুহাজার বছর পূর্বে তা এশিয়াস্থ সপ্ত মন্ডলীর উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছিল, এখন আমাদের কাছে নয়৷
এটা প্রাসঙ্গিক কেননা, ভবিষ্যতে কি অপেক্ষা করছে, ঈশ্বরের এই বাক্য আমাদের কাছে তা প্রকাশ করে৷ আমাদের অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, আমরা এখন কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগে বাস করছি, প্রকাশিত বাক্য ৬ অধ্যায়ে তৃতীয় যুগের “চতুর্থ অশ্বের যুগ” হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ কৃষ্ণবর্ণ এবং লোহিতবর্ণ অশ্বের যুগ অতিক্রম করে, আমরা এখন কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগের শেষে বাস করছি৷ খুব শীঘ্রই সমস্ত পৃথিবীবাসী দৈহিক এবং আত্মিকভাবে মহা দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হবে৷ এটা নির্বিঘ্নে বলা যায় যে, এই দুর্ভিক্ষের যুগ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে৷ যখন বর্তমান কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের দুর্ভিক্ষের যুগের শেষে পান্ডুবর্ণ অশ্বের যুগ আরম্ভ হবে৷ 
প্রকাশিত বাক্য ৬ অধ্যায়ে যে সপ্ত মুদ্রাঙ্কের কথা বলা হয়েছে তার অর্থ হচ্ছে যে, যখন ঈশ্বর বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করেছেন সপ্ত যুগ ঈশ্বর খ্রীষ্টে সংকল্প সাধন করেছেন৷ প্রথম যুগ, কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ, সুসমাচারের যুগ, দ্বিতীয় যুগ, যখন শয়তান পৃথিবীতে মহা দুর্ভোগ আনয়ন করবে, যুদ্ধে রত হবে এবং প্রতিনিয়ত ঈশ্বরের মন্ডলীর বিরোধিতা করবে৷ এইসব যুগই কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগকে প্রদর্শন করে, এই যুগেই দৈহিক এবং আত্মিক দুর্ভিক্ষে পৃথিবী ধ্বংস হবে৷ কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের এই যুগ পূর্বেই শুরু হয়ে গেছে৷
যখন এই যুগ শেষ হবে তখন পান্ডুবর্ণ অশ্বের যুগ শুরু হবে, খ্রীষ্টারীর উত্থান হবে, যেভাবে প্রকাশিত বাক্য ৮ অধ্যায়ে বর্ণনা করা হয়েছে যে, সপ্ততুরীর মহামারী শুরু হবে৷ যখন শেষ তুরী বাজান হবে, সাধুগণ রূপান্তরিত হবে, এবং এই সময় সপ্ত বাটির মহামারী দ্বারা ঘটবে৷ তখন রূপান্তরিত সাধুগণের নিমিত্ত আকাশে মেষশাবকের বিবাহভোজ প্রস্তুত করা হবে এবং তখন সপ্ত বাটির সমস্ত মহামারী শেষ হবে, প্রভু আমাদের সাথে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন এবং তাঁর সহস্রাব্দের রাজত্ব আরম্ভ করবেন৷ সহস্রাব্দের রাজত্ব তখন নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীর নিমিত্ত ঘটবে, যা ঐ সমস্ত সাধুগণের নিমিত্ত নামিয়ে আনা হবে, যারা তাদের প্রথম পুনরুত্থানের নিমিত্ত সহস্রাব্দের রাজত্বে বসবাস করছিল৷
প্রকাশিত বাক্য পুস্তকটির অনুচ্ছেদটি এইরূপ, “মরণ পর্য্যন্ত বিশ্বস্ত থাক, তাহাতে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দিব।” এবং “যে জয় করে, সে দ্বিতীয় মৃত্যু দ্বারা হিংসিত হইবে না”, এ সমস্ত আমাদের কাছে সরাসরি প্রবেশ করে৷ অন্য কথায় বর্তমান বিশ্বে যে সব খ্রীষ্টিয়ানেরা বসবাস করছে তাদের পক্ষে প্রকাশিত বাক্য বোঝা খুবই কষ্ট সাধ্য৷ আমাদের কাছে প্রকাশিত বাক্য প্রকাশ না হলে, ঈশ্বরের সমস্ত বাক্যের কোনো অর্থই হত না৷
প্রকাশিত বাক্যে যে সপ্ত যুগের কথা প্রকাশ করা হয়েছে তা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা নিহিত ও সম্পন্ন হয়েছে৷ যখন পান্ডুর বর্ণ অশ্বের যুগ উপস্থিত হবে, খ্রীষ্টারী তার বাহ্যিক চেহারা প্রকাশ করবে৷ ঐ সময়ে আমাদের ঈশ্বরের বাক্য থেকে খুঁজে বের করার প্রয়োজন হবে যে, আমাদের প্রভু আমাদের জন্য কি সংকল্প করেছিলেন৷ এটা অবশ্যই চরম সংকটপূর্ণ যে, আমরা সকলেই প্রকাশিত বাক্য থেকে জানতে পেরেছি ঈশ্বর আমাদের জন্য কিভাবে তাঁর সংকল্প স্থির করেছেন, এবং কিভাবে তিনি তা সম্পন্ন করবেন, পৃথিবীতে কি মহামারী দেখা দেবে, বিশ্বাসীদের তখন কি অবস্থা হবে, এবং অবিশ্বাসীদের উপর এরূপ আকস্মিক কি ভয়াবহ মহামারী নেমে আসবে৷ আপনার জন্য যে ভবিষ্যতবাণী প্রকাশিত হয়েছে, আপনাকে তা অবশ্যই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করতে ও বিশ্বাস করতে হবে৷ 
সাত বছরের মহাক্লেশ এবং খ্রীষ্টে দ্বিতীয় আগমন সমন্ধে প্রকাশিত বাক্যে কি বলা হয়েছে, সেই বিষয়ে অবশ্যই আপনার পরিপক্ক জ্ঞান থাকা আবশ্যক৷ এখনকার অনেক খ্রীষ্টিয়ানরাই প্রাক-ক্লেশের রূপান্তরে বিশ্বাস করছে, যা ১৮৩০ দশকে ইংল্যান্ডে প্রথম প্রচারিত হয় এবং যেটা C. I. Scofield নামে একজন পন্ডিত ব্যক্তি যিনি মুডি বাইবেল ইনস্টিটিউট-এর একজন অধ্যক্ষ ছিলেন তার দ্বারা বিস্তার লাভ করেছিল৷
এই তত্ত্ব দাবি করে যে, সাত বছরের মহাক্লেশ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে সাধুগণের রূপান্তর হবে৷ এই উদ্দেশ্যেই পরজাতীয়রা প্রথমে রপান্তরিত হবে, এবং পরে ঈশ্বর ইস্রায়েলের লোকেদের জন্য তাঁর পরিত্রাণের কার্য্য শুরু করবেন৷ তাছাড়া খ্রীষ্টারীর উত্থান এবং সপ্তবাটির মহামারীর পূর্বেই সাধুগণ রূপান্তরিত হবে৷ 
অনেক খ্রীষ্টিয়ানেরাই হয় amillennialism-এ বিশ্বাস করে না হয় প্রাক-মহাক্লেশ রুপান্তরের মতবাদে বিশ্বাস করে৷ কিন্তু এইগুলো অসম্পূর্ণ জ্ঞান দ্বারা সত্য বলে প্রমানার্থে তৈরী করা হয়েছে, যা বাইবেলকে বোঝার জন্য পর্যাপ্ত নয়৷ প্রকাশিত বাক্যের সমন্ধে বিশ্বাসীদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দানে, এই সত্য প্রমানার্থে ভালোর চাইতে আরো ক্ষতি করেছে এবং প্রকাশিত বাক্য সমন্ধে আরো বেশী প্রশ্ন ও সন্দেহ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷
যদি প্রাক মহাক্লেশের মতবাদ সঠিক হয়, তাহলে পৌত্তলিক বিশ্বাসীদের জন্য প্রকাশিত বাক্যে কি প্রকাশ করা হয়েছে? প্রকাশিত বাক্যে মহাক্লেশ এবং তার যেসব ঘটনাবলীর ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে, তাতে আমাদের জন্য কোনো মুক্তি নেই, এজন্য আমরা সকলেই পূর্বেই রূপান্তরিত হব৷ এই কারণে অনেক লোকেই বিশ্বাসের পরিবর্তে কৌতুহলবশতঃ কখনও কখনও প্রকাশিত বাক্য গ্রহণ করে৷
কিন্তু আমরা যারা বর্তমান পৃথিবীতে বাস করছি তাদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, চরম সংকটপূর্ণ সময়ে প্রকাশিত বাক্য আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছে৷ আপনাকে বলছি আপনি কি ঈশ্বরের বাক্যে নাকি পন্ডিতদের বাক্যে বিশ্বাস করেন? শেষ কালে amillennialism, পরবর্তী সহস্রাব্দের রূপান্তর,, ক্লেশ পরবর্তী রূপান্তর, প্রাক-ক্লেশের রূপান্তর, মধ্য ক্লেশের রূপান্তর, এবং এমন আরো অসংখ্য মতবাদ উপস্থিত হবে৷ এই সব মতবাদ পন্ডিতদের দ্বারা উপস্থিত হবে সেগুলো কাল্পনিক চিন্তা বা ধারণা বা ভবিষ্যত সম্পর্কে আগাম চিন্তা ছাড়া আর কিছুই নয়৷ 
আপনি কি এইসব মতবাদে বিশ্বাস করেন? অনেকেই বলে যে, তারা প্রাক-ক্লেশের রূপান্তরে বিশ্বাস করে, কেননা এই সব তারা তাদের পালকদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছে৷ কিন্তু আপনি আমাকে পরিস্কার ও সঠিকভাবে বলুন: আপনি এবং আমি সপ্ততুরীর মহামারীর ভেতরে প্রবেশ করব এবং মহাক্লেশের মধ্যস্ততায় বসবাস করব৷ কেননা আমরা পূর্ব থেকেই মহাক্লেশের মধ্যে পতিত হয়েছি, মহাক্লেশ ও পরীক্ষা যা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে, তা জয় করার নিমিত্ত আমাদের বিশ্বাসকে অবশ্যই দৃঢ় ও বলবান হতে হবে৷
প্রাক-ক্লেশের রূপান্তর মতবাদে বিশ্বাস, নিজেই চিন্তা করুন, “মহাক্লেশের পূর্বেই আমি রুপান্তরিত হব, এ বিষয় আমি অমনোযোগী হতে পারি না,” এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যদি আপনি বিশ্বাসে স্থির থাকতে না পারেন, তখন কি হবে? সাত বছরের মহাক্লেশের দিন যখন নেমে আসবে, ঈশ্বরের বাক্য বলে যে, যারা মহাক্লেশের মধ্যেও বিশ্বাসে স্থির থাকতে পারে না, তারা মহা বিভ্রান্তিতে, দুঃখকষ্টে, এমনকি মৃত্যুতে সম্পূর্ণরূপে আচ্ছন্ন হবে, এই কারণে যীশুতে গভীর বিশ্বাসই তাদেরকে উদ্ধার করতে পারে৷ তাদের মধ্যে অনেকেই এই দুঃখকষ্ট জয় করতে সমর্থ নয় এবং শেষ পর্যন্ত তাদের বিশ্বাসের সজ্জা হারিয়ে ফেলে৷
প্রাক-ক্লেশের মতবাদ উপস্থিত হওয়ার পূর্বে, অনেক খ্রীষ্টিয়ানেরাই বিশ্বাস করেছিল যে, তারা সাত বছরের মহাক্লেশের মধ্য দিয়ে যাবে শেষে খ্রীষ্ট যখন তাঁর দ্বিতীয় আগমনে আসবেন কেবলমাত্র তার পূর্বে তারা রূপান্তরিত হবে৷ সাত বছরের প্রত্যেকটি বছরই তারা এই চিন্তা করে আসছিল, অতি আকুলভাবে তারা তাদের বিশ্বাসকে তৈরী করেছিল, কিন্তু তাদের প্রচন্ড ভয়ও ছিল৷ এই সমস্ত মহামারীর ভেতর দিয়ে গমন করার মাধ্যমে শুধু তাদের জন্যই নয়, বরং সকলের জন্যই উজ্জ্বল সম্ভবনার ইঙ্গিত রয়েছে৷ কিন্তু এই বিশ্বাস প্রাতিষ্ঠানিক মতবাদ, ঈশ্বরের সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল৷
যারা amillennialism-এ বিশ্বাস করে তারাই সংরক্ষণশীল ব্যক্তি৷ এই প্রকার লোকেরা চিহ্নস্বরূপ সহস্রাব্দের রাজত্ব দেখতে পাবে৷ যে বিশ্বাসীরা খ্রীষ্টের মধ্যে দিয়ে পরিত্রাণ লাভ করেছে, তারা শান্তির প্রতীক হিসাবে এটা দেখতে পাবে৷ এই ধরণের পুঁথিগত মতবাদগুলো যদি সত্যি হয়, তাহলে পৃথিবীতে কি ঘটবে তা আমরা অবহেলা করতে পারি না, কেননা মহাক্লেশ শুরু হওয়ার সময় আমরা সকলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে উর্দ্ধে নীত হব৷ 
কিন্তু সেগুলো যদি সত্য না হয়, তখন কি ঘটবে? বিশ্বাসে স্থির না থাকলে, আমাদেরকে মহাক্লেশের মুখোমুখি হতে হবে, এবং অসহনীয় ভয়ে আমরা নিশ্চল হয়ে পড়ব৷ বিশ্বাসে স্থির থাকতে আমরা অসমর্থ হব, চরম পরীক্ষা এবং ক্লেশের সময়ে আমরা আত্মসমর্পণ করব এবং শেষে পৃথিবীর সকলেই একইভাবে পতিত হব৷ কিন্তু ঈশ্বর আমাদেরকে বলেছেন, যাদের নাম জীবন পুস্তকে লেখা হয়েছে, যারা জল ও আত্মা থেকে নুতন জন্ম প্রাপ্ত, তারা কখনও আত্মসমর্পণ করবে না৷
প্রকাশিত বাক্যে ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন, যারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত, তারা বিশ্বাসের দ্বারা মহাক্লেশের পরীক্ষা জয় করতে পারবে এবং এটাই ক্লেশের মধ্যাবস্থা যে, ঈশ্বর তাদেরকে আকাশে তুলে নেবেন৷ বাইবেলের এই সত্য থেকেই প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদ শুরু হয়, অর্থাৎ এটা দাবি করে যে, এটা মানুষের তৈরী মতবাদ, এটা মিথ্যা, সত্য নয়৷
কিন্তু পৃথিবীর অনেকেই এখন প্রাক-ক্লেশের রূপান্তর এই মতবাদকে গ্রহণ করেছে৷ যারা Scofield এর প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের শিক্ষায় বিশ্বাস করে, তারা নিম্নের বিষয়গুলো অনুসরণ করেছে:
১৷ শেষ সময়ে খ্রীষ্টারী উত্থাপিত হওয়ার পর পরেই সাত বছরের মহাক্লেশ শুরু হবে৷
২৷ সাত বছরের মহাক্লেশের সময় খ্রীষ্টারী সমস্ত পৃথিবীকে শাসন করবে; সাত বছরের প্রথম অর্ধেক সময় ধরে যে সেবা পরায়নমূলক কাজ করবে এবং বাকি শেষ অর্ধেক সময় যে মন্দতার কার্য্য করবে৷
৩৷ যিরূশালেম মন্দির পুনঃস্থাপিত হবে এবং আবার বলি প্রথা চালু হবে৷
৪৷ খ্রীষ্টারী ইস্রায়েলের সাথে সাত বছরের একটি চুক্তি করবে৷
৫৷ প্রথম সাড়ে তিন বছরের চুক্তির পর খ্রীষ্টারী ইস্রায়েলের এই চুক্তি ভঙ্গ করবে৷
৬৷ ইস্রায়েলীয়দের জন্য পরবর্তী সাড়ে তিন বছর হবে মহাক্লেশ ও নির্যাতনের সময়৷ এই সময় অনুগ্রহের সুসমাচারের পরিবর্তে সহস্রাব্দের রাজত্বের সুসমাচার প্রচারিত হবে৷
৭৷ ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে ১৪৪,০০০ জন ক্লেশ হতে রক্ষা পাবে৷
৮৷ সত্য ও অসত্যের লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই ক্লেশ সমাপ্ত হবে৷
যে সময়ের মধ্যে মহাক্লেশের নিয়ম নির্ধারণ করা হয়েছে, মহাক্লেশের সময়ে পরজাতীয়দের মধ্যে কি ঘটবে সে বিষয়ে Scofield কোনো দুঃশ্চিন্তা করতে বারণ করেছেন৷ অন্য কথায় Scofield যুক্তি দেন যে, পরজাতীয় যারা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করবে ক্লেশ শুরু হওয়ার পূর্বেই তারা রূপান্তরিত হবে এবং তাদের রুপান্তরের পরেই ঈশ্বর ইস্রায়েলের ওই সমস্ত লোকের উপর কার্য আরম্ভ করবেন৷ ১৪৪,০০০ জন ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধারের মধ্য দিয়েই তাঁর কার্য সম্পাদিত হবে এবং এভাবেই তিনি তাঁর পরিত্রাণের কার্য সমাপ্ত করবেন৷ তখন সহস্রাব্দের রাজত্ব শুরু হবে৷
জন নেলসন ডারবাই, Plymouth Brethren হিসাবে পরিচিত একটি দলের স্থপতি ছিলেন, যিনি পেন্টিকষ্টাল নেতাদের একটি সভার পরে এই মতবাদ প্রচার করতে শুরু করেন, Scofield-এর মতবাদে প্রভাবিত হয়ে প্রাক-ক্লেশের রূপান্তরে দাবি করেন৷ এই ধর্মীয় নেত্রী স্কটল্যান্ডের ১৫ বছর বয়সের একজন কিশোরী ছিলেন, যার নাম ছিল মার্গারেট ম্যাকডোনাল্ড, ১৮৩০ সালে তিনি দাবি করেছিলেন যে, ঈশ্বরের থেকে তার আহ্বান ছিল যে মহাক্লেশের সময়ে তিনি খ্রীষ্টিয়ানদের রূপান্তরিত হতে দেখবেন৷ এই কিশোরী চলে যাওয়ার পর ডারবাই প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদ শিক্ষা দিতে আরম্ভ করলেন৷
ডারবাই-এর শিক্ষা তখন একজন আমেরিকান ধর্মতত্ত্ববিদ Scofield –এর উপর পড়েছিল৷ Scofield, যিনি তার সারাটি জীবন Scofield Reference Bible তৈরী করার কাজে ব্যয় করেছিলেন, এবং ক্লেশের পূর্বে নাকি পরে রূপান্তর ঘটবে এই প্রশ্নটি তার নিজের মনে জেগেছিল৷ Scofield ডারবাই-এর প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদ শুনে ইতিহাসে সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছিলেন, এবং সম্পূর্ণ যুক্তি পপ্রমাণ দ্বারা এটা স্বীকার করেছিলেন, Scofield Reference Bible এটা সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে তিনি এই নতুন মতবাদের সাথে মিলিত হয়েছিলেন৷ এইভাবেই Scofield বিশ্বাস করে আসছেন এবং প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, এবং বর্তমানের অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানেরা এটা ভালোভাবে অনুসরণ করে আসছে৷
ডারবাই এবং Scofield পূর্বেই প্রাক-রুপান্তরের মতবাদ ব্যাখ্যা করেছেন, এবং অধিকাংশ Post tribulation rapture এ বিশ্বাস ছিল৷ কিন্তু Scofield যিনি ইউনাইটেড এস্টেটের Moody Bible Institute- এর একজন অধ্যক্ষ ছিলেন, তিনি তার Scofield Reference Bible এই মতবাদ অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে ভীষণ উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন৷ Scofield এবং তার উদ্বুদ্ধতার জন্যই সমগ্র পৃথিবীর খ্রীষ্টিয়ান সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদ দ্রুত বিস্তার লাভ করেছিল৷
দুর্ভাগ্যজনক হলেও, বর্তমানে অনেক খ্রীষ্টিয়ান তাদের বিশ্বাস নিয়ে ঘুমিয়ে আছে৷ তাদের ঘুমিয়ে থাকার কারণ, তারা ভুলবশতঃ চিন্তা করেছে যে খ্রীষ্টারী উত্থাপিত হলেও সে তাদের কিছু করতে পারবে না৷ তারা ভাবে মহাক্লেশের যুগের নিমিত্ত তাদের বিশ্বাসের প্রস্তুতিকরণের কোনো প্রয়োজন নেই, তারা আরও বিশ্বাস করে মহাক্লেশ শুরু হওয়ার পূর্বেই তারা রুপান্তরিত হবে৷ কিন্তু আমাদের প্রভু সর্বদায় আমাদের জেগে থাকতে বলেছেন, কেননা কখন বর আসবে তা কেউ জানেনা৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, যারা ঈশ্বরের বাক্যের অসম্মান করে, প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদে আস্থার সঙ্গে নির্ভর করে, তারা গভীর ঘুমে মগ্ন৷
কিন্তু এখনই জেগে ওঠার সময়৷ প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের ভ্রান্ত মতবাদের বিশ্বাস ছুড়ে ফেলে এবং সত্য বাক্যে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে এটিই আপনার জন্য উপযুক্ত সময়৷ না প্রাক-ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদের কোনো বাইবেল ভিত্তিক গ্রহণযোগ্যতা আছে, না পরবর্তী ক্লেশের রুপান্তরের মতবাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা আছে; অবশ্যই আপনাকে ঈশ্বরের সত্য বাক্যের প্রতি আসতে হবে৷ প্রকাশিত বাক্য ৬:৮ পদ আমাদের বলে, “পরে আমি দৃষ্টি করিলাম, আর দেখ, এক পাণ্ডুবর্ণ অশ্ব, এবং যে তাহার উপরে বসিয়া আছে, তাহার নাম মৃত্যু, এবং পাতাল তাহার অনুগমন করিতেছে; আর তাহাদিগকে পৃথিবীর চতুর্থ অংশের উপরে কর্ত্তৃত্ব দত্ত হইল, যেন তাহারা তরবারি, দুর্ভিক্ষ, মারী ও বনপশু দ্বারা বধ করে।”
এখানে বলা হয়েছে, খ্রীষ্টারী যে পান্ডুরবর্ণের অশ্বের উপর বসে আছে, তার নাম মৃত্যু, এবং পাতাল তার অনুগমন করছে৷ এর অর্থ হচ্ছে খ্রীষ্টারী একজন হত্যাকারী যে তার অনুসারীদের নরকে নিয়ে যায়৷ এখানে আরো বলা হয়েছে যে, পৃথিবীর চতুর্থাংশের উপর তাকে কর্তৃত্ব দেওয়া হবে যেন সে তরবারি, দুর্ভিক্ষ, মারী ও বনপশু দ্বারা বধ করতে পারে৷ অন্য কথায়, ঐ সময়ে খ্রীষ্টারী রোমীয় শাসকদের মতই নৃসংসতা করতে উদ্বুদ্ধ হবে, হত্যা ও নির্যাতনের উদ্দেশ্যে উদ্যত হবে এবং তাদের বিশ্বাস ধ্বংস করবে৷
আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, পান্ডুরবর্ণের অশ্বের যুগই খ্রীষ্টারীর যুগ৷ প্রভু আমাদেরকে বলেন, “তোমরা আকাশের লক্ষণ বুঝিতে পার, কিন্তু কালের চিহ্নসকল বুঝিতে পার না৷” (মথি ১৬:৩)৷ আমরা যখন কালের চিহ্ন বুঝতে পারি না, তখন আমরা জানি না কি প্রকার বিশ্বাস আমাদের থাকা প্রয়োজন, এবং এ জন্যই আমরা না বীজ বপন করতে পারি, না শষ্য কাটতে পারি, আমরা প্রভুর পক্ষে কাজ করতে পারি না৷ লোহিত বর্ণের অশ্বের যুগ শেষ হয়েছে এবং এখন আমরা কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগে বাস করছি৷ পৃথিবী খুব শীঘ্রই ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সংকটে পতিত হবে এবং কঠোর দুর্ভিক্ষের যুগের মুখোমুখি হবে৷ সমগ্র পৃথিবীতে ক্ষুধা এবং দারিদ্রতা ছড়িয়ে পড়বে৷ এ সমস্ত যখন ঘটে যাবে, তখন অনেকেই এই নিদারুন যন্ত্রনায় দুঃখ প্রকাশ করবে৷ তাদের মধ্যে একজনও পারবে না বরং যার বিশ্বাস আছে সেও কালের চিহ্নসমূহ দেখতে পাবে৷
বর্তমানের যুগ কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ৷ কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ অতিক্রম করার পরেই পান্ডুরবর্ণের অশ্বের যুগ উপস্থিত হবে৷ এই সময় খ্রীষ্টারী প্রকাশিত হবে, সে বাছবিচার ছাড়াই হত্যা করবে এবং ধার্মিককে তাড়না করবে, এই যুগই সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর যুগ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে৷
প্রকাশিত বাক্য ১৩:৬-৮ পদ বলে, “ তাহাতে সে ঈশ্বরের নিন্দা করিতে মুখ খুলিল, তাঁহার নামের ও তাঁহার তাম্বুর, এবং স্বর্গবাসী সকলের নিন্দা করিতে লাগিল৷ আর পবিত্রগনের সহিত যুদ্ধ করিবার ও তাহাদিগকে জয় করিবার ক্ষমতা তাহাকে দত্ত হইল; এবং তাহাকে সমস্ত বংশের ও লোকবৃন্দের ভাষা ও জাতির উপরে কর্তৃত্ব দত্ত হইল৷ তাহাতে পৃথিবী নিবাসীদের সমস্ত লোক তাহার ভজনা করিবে, যাহাদের নাম জগত্পত্তনের সময়াবধি হত মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লিখিত নাই৷” এখানে “সে” বলতে খ্রীষ্টারীকে বোঝানো হয়েছে৷ এই অনুচ্ছেদটি আমাদেরকে বলে যে, ঈশ্বরকে নিন্দা এবং সাধুগণের উপর নির্যাতনের নিমিত্ত পৃথিবীস্থ একজনকে শয়তানের ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হবে৷ সে দিয়াবলের সন্তান, নাগের ক্ষমতায় সে যুদ্ধ করবে এবং সাধুগণকে জয় করবে৷ কিন্তু এই জয় করার অর্থ হচ্ছে, সে ধার্মিকদের সাক্ষ্যমরতা কে তরান্বিত করবে৷ এটা কেবল ধার্মিকদের দৈহিক মৃত্যুকেই বহন করে, খ্রীষ্টারী ধার্মিকদেরকে তার বিশ্বাসের প্রতি নিয়ে যেতে পারে নি৷
Scofield যুক্তি দেখিয়েছিলেন যে, ধার্মিক আদৌ মহাক্লেশের সম্মুখীন হবে না৷ কিন্তু সাত বছরের মহাক্লেশ ব্যতিরেকে, ধার্মিকদের জন্য সহস্রাব্দের রাজত্ব হতে পারে না৷ মহাক্লেশের সময় সাক্ষ্যমরের জন্য ধার্মিকগণ বেরিয়ে আসবে৷ সৃষ্টির শুরুতেই বাইবেলের এই ভবিষ্যতবাণী খ্রীষ্ট যীশুতে সম্পন্ন হয়েছে৷ খ্রীষ্ট কার্য সম্পন্ন করেছেন তাঁর দ্বারা জগতের সমস্ত মতবাদই শেষ হয়ে যাবে৷
আপনাকে অবশ্যই সপ্ত যুগের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে যা ঈশ্বর আমাদের জন্য স্থাপন করেছেন৷ প্রথম যুগ শুক্লবর্ণ অশ্বের যুগ, এই যুগে ঈশ্বরের বাক্যের কার্য শুরু হয়৷ দ্বিতীয় যুগ লোহিত বর্ণের অশ্বের যুগ, মন্দতার/দিয়াবলের যুগ৷ তৃতীয় যুগ কৃষ্ণবর্ণ অশ্বের যুগ, দৈহিক এবং আত্মিক দুর্ভিক্ষের যুগ৷ চতুর্থ যুগ পান্ডুরবর্ণের অশ্বের যুগ, এই যুগ খ্রীষ্টারীর উত্থানের যুগ৷ এটাই সপ্ত তুরীর যুগ, সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর যুগ৷ পান্ডুরবর্ণের অশ্বের যুগকে বুঝতে না পারার কারণেই মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত হচ্ছে৷
এই যুগ সম্পর্কে ভালোভাবে না জানলে আমরা নুতন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানে হিসাবে যথার্থ জীবনযাপন করতে পারব না, আমাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে আমরা যদি উদাসীন থাকি, তাহলে আমরা কিভাবে প্রস্তুত হব? যারা ব্যবসা করে তাদেরও ভবিষ্যতের পরিবর্তন সম্পর্কে আগাম ধারণা থাকা উচিত, নতুবা তারা ব্যবসায় উন্নতি করতে পারবে না৷ তাহলে আমরা যারা খ্রীষ্টে বিশ্বাসী, কোনো সুত্র না থাকলে, আমরা কিভাবে প্রত্যাশিত বিষয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারি৷
যেন যথাযথভাবে প্রস্তুত হতে পারি, এইজন্য মহাক্লেশ সম্পর্কে আমাদের পরিস্কার ধারণা থাকা উচিত৷ মহাক্লেশের প্রথম সাড়ে তিন বছর ভক্তগণ জীবিত থাকবেন এবং এই সময়েই তারা সাক্ষ্যমর হবেন৷ তারা ক্লেশের সাত বছর জীবিত থাকবেন না, কিন্তু শুধুমাত্র তারা অর্ধেক সময় পর্যন্ত জীবিত থাকবেন৷ এবং এর পরেই তারা সাক্ষ্যমর ও রুপান্তরিত হবেন৷ সাধুগণ রুপান্তরিত হবেন তার মানে এই নয় যে, খ্রীষ্ট পৃথিবীতে নেমে আসবেন৷
বরং তারা উর্দ্ধে নীত হবেন এবং মেষশাবকের বিবাহভোজে অংশ নেবেন৷ এই সময়ের মধ্যে পৃথিবী সপ্তবাটির মহামারীর পরে কেবলমাত্র তারাই খ্রীষ্টের সঙ্গে ফিরে আসবেন, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমেপাপের ক্ষমা লাভ করেছে, যারা তুষারের ন্যায় শুভ্র হয়েছে৷ এই জন্যই এই যুগ সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝে এবং এর গুরুত্ব ও বিশ্লেষনাত্বক সংশ্লিষ্টতা জেনে আমাদের নিজেদেরকে অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে৷
স্মূর্ণাস্থ মণ্ডলীর দূতকে আমাদের প্রভু বলেছেন, “এবং আপনাদিগকে যিহূদী বলিলেও যাহারা যিহূদী নয়, কিন্তু শয়তানের সমাজ, তাহাদের ধর্ম্ম-নিন্দাও আমি জানি। তোমাকে যে সকল দুঃখ ভোগ করিতে হইবে, তাহাতে ভয় করিও না। দেখ, তোমাদের পরীক্ষার জন্য দিয়াবল তোমাদের কাহাকেও কাহাকেও কারাগারে নিক্ষেপ করিতে উদ্যত আছে, তাহাতে দশ দিন পর্য্যন্ত তোমাদের ক্লেশ হইবে। তুমি মরণ পর্য্যন্ত বিশ্বস্ত থাক, তাহাতে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দিব” এই অংশে আমরা দেখতে পাই যে, স্মূর্ণাস্থ মণ্ডলী যিহূদীদের দ্বারা নির্মমভাবে নির্যাতিত হয়েছিল৷ কিন্তু প্রভু বলেন যে, এরা প্রকৃত যিহূদী নয়, বরং শয়তানের বাহিনী৷ একথা তিনি শুধু স্মূর্ণাস্থ মণ্ডলীকে বলেন নি, কিন্তু তিনি তাঁর এশিয়ার সাতটি মন্ডলীকেও বলেছেন৷
স্মূর্ণাতে যিহূদীদের একটি বিরাট সমাজ ছিল৷ খ্রীষ্টে বিশ্বাসী এবং সেই যিহূদীরা যদিও একই ঈশ্বরের আরাধনা করত, এর পরেও যিহূদীরা রোমীয়দের মতই খ্রীষ্টে বিশ্বাসীগনের উপরে অত্যাচার করত৷ যে সমস্ত সাধুগণ এই নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, ঈশ্বর তাদেরকে বলেন, “তুমি মরণ পর্য্যন্ত বিশ্বস্ত থাক, তাহাতে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দিব” এবং “যে জয় করে, সে দ্বিতীয় মৃত্যু দ্বারা হিংসিত হইবে না”৷ ঈশ্বর সাধুগনকে বলেন যে, তাদেরকে অবশ্যই জয় করতে হবে৷ একইভাবে আমাদেরকেও শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসের যুদ্ধে খ্রীষ্টারীকে জয় করতে হবে৷ তাহলে প্রভু আমাদেরকে জীবন মুকুট দেবেন, অন্য কথায় আমরা যেন তাঁর সাথে সহস্রাব্দের রাজত্বে নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে বাস করতে পারি, তিনি আমাদের এই আশীর্বাদ করবেন৷
সাক্ষ্যমর হওয়ার সাহস কি আপনার আছে? সাক্ষ্যমর হওয়ারবিশ্বাস তৈরী করার এখনই উপযুক্ত সময়৷ তা করতে হলে আপনাকে প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করতে হবে, যে বিশ্বাস দ্বারা আপনি প্রভুর সামনে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে পারবেন এবং দ্বিধাহীন ভাবে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারবেন৷
এখনই আমাদের এই বিশ্বাস তৈরী করার সময়৷ প্রভু প্রত্যেককে বলেছেন যে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস ছাড়া কেউই ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে এমনকি দেখতেও পারবে না৷ তিনি আমাদের বলেছেন যে, এই সুসমাচারে বিশ্বাসই শেষ কালে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার বিশ্বাস৷
মানুষের হৃদয়ে যদি পাপ থাকে, তাহলে কি তারা সাক্ষ্যমর হবে? সাক্ষ্যমর হওয়া দুরে থাকুক, বরং তারা সেই পশুর ছাব ধারণ করার জন্য চালিত হবে৷ জল ও আত্মার সুসমাচার ছাড়া অন্য কিছুই আমাদের পাপ ধৌত করতে পারে না৷ আপনার অনুতাপের প্রার্থনা বা রুটিন ভিত্তিক বা পর্ব ভিত্তিক কোনো প্রার্থনাই আপনার পাপ ধৌত করতে পারবে না৷ অনুতাপের প্রার্থনার মাধ্যমে আপনার পাপের ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করার অর্থ আপনার সময় ও শ্রমের অপচয় করা৷
যারা এইভাবে বিশ্বাস করে, তারা প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরের বাক্য তাদেরকে কি বলছে তার চেয়ে বেশী ধর্মতত্ত্ববিদেরা কি বলছে তার উপর নির্ভর করে৷ পন্ডিতদের জন্য এটা কোনো বিষয় নয়, খ্রীষ্টিয়ানদের মধ্যে অনেকে যুক্তি প্রমাণ দ্বারা সহস্রাব্দে তাদের বিশ্বাস স্থাপন করে তারা কিভাবে বাইবেলকে অগ্রাহ্য করছে, এই ধরনের Amillennialists রা মহাক্লেশের দিনে না সহস্রাব্দের রাজ্যের অধিকারী হবে, না সাধুগণের মত সাক্ষ্যমর হবে৷ যারা প্রাক-ক্লেশের রূপান্তর বা Amillennialism এ বিশ্বাস করে, প্রকাশিত বাক্যে আদৌ এর কোনো অর্থ হয় না!
প্রকাশিত বাক্য হলো ঈশ্বরের বাক্য৷ এটাই ইশ্বরের বাক্য, যা খ্রীষ্টের অত্যন্ত প্রিয় শিষ্য প্রেরিত যোহনের দ্বারা লেখা হয়েছে৷ কেউই এটা প্রত্যাখান করতে পারে না৷
কোনো কারণ ছাড়াই আমি ধর্মতত্ত্ববিদদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই সব মতবাদ এবং তত্ত্বের উপহাস করছি না, কিন্তু এটা আমি করছি এ কারণে, যেন আপনি আপনার বিশ্বাসকে প্রস্তুত করতে পারেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত প্রভুর পক্ষে বিশ্বস্থ থাকতে সমর্থ হন৷ এটা আপনাকে শাস্ত্রের বাক্যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য, যেন আপনি মহাক্লেশের সময় সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার জন্য স্থির থাকতে পারেন৷
এই উদ্দেশ্যে, এখনই আপনাকে জল ও আত্মার সুসমাচারের সাথে আপনার বিশ্বাসকে প্রস্তুত করতে হবে৷ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না, তারা শয়তানের সম্মুখে আত্মসমর্পণ করবে এবং শেষে ঈশ্বরের শত্রুতে পরিণত হবে, কেননা যাদের জীবন পুস্তকে লেখা হয় নি, তারা শয়তানের ভজনা করে৷ ঈশ্বরের বাক্য আমাদেরকে এটাই বলে৷ 
মধ্য মহাক্লেশের সময় সাধুগণ সাক্ষ্যমর হবে৷ মহাক্লেশের সাত বছরের প্রথম সাড়ে তিন বছর যখন অতিক্রম করবে, তখন জল ও আত্মার সুসমাচারে যারা বিশ্বাস করবে, তারাই সাক্ষ্যমর হবে৷ তাদের সাক্ষ্যমরের মৃত্যুর পরেই তাদের পুনরুত্থান-এর রূপান্তর ঘটবে৷ এটাই সমগ্র প্রকাশিত বাক্যের সারাংশ, এবং এ কারণেই আমি এর মূল বিষয়টির পুনরাবৃত্তি করছি৷
আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, যখন খ্রীষ্টারীর যুগ আসবে, অনেকই যারা জল ও আত্মার সুসমাচার গ্রহণের পরে সাক্ষ্যমর হবে, পুনরুত্থিত হবে এবং একই সময়ে রুপান্তরিত হবে৷ পান্ডুরবর্ণ অশ্বের যুগ যখন উপস্থিত হবে, তাদের সাক্ষ্যমরের সাথে সাথেই বিশ্বাসের পুস্পগুলিও প্রস্ফুটিত হবে৷ যখন উপযুক্ত সময় আসবে, সত্য বিশ্বাস সত্য ফল ধারণ করবে এবং সুন্দর ফুল ফুটবে৷
মরুভূমিতে একধরনের উদ্ভিদ আছে যা এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে বৃদ্ধি পায়, পুস্পিত হয় ও ফল ধারণ করে৷ এর কারণ এগুলো মরুভূমির অবস্থার উপযোগী হয়ে পড়েছে, যেখানে জল ও বৃষ্টিপাত উভয়ই দুর্লভ৷ এগুলোর বৃদ্ধি পেতে, পুস্পিত হতে এবং তাড়াতাড়ি ফল ধারণ করার কারণ হল এই দুর্লভ জলের যোগান দীর্ঘস্থায়ী হয়৷
সাত বছরের মহাক্লেশের সময় যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করবে, তারাও এই চারাগাছের মত৷ কারণ, তারা অল্প সময়ের জন্য এতে বিশ্বাস করবে, অনুসরণ করবে ও এই সুসমাচারের জন্য আমাদের সাথে সাক্ষ্যমর হবে৷ মহাক্লেশের শুরু থেকে মাঝামাঝি সাড়ে তিন বছর পর্যন্ত খ্রীষ্টারীর উন্মাদনা সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছাবে৷
এই সময়ে সাধুগণের সাক্ষ্যমরের মৃত্যু উপস্থিত হবে, এমনকি ইতিমধ্যে যারা জল ও আত্মার সুসমাচার শুনেছে এবং তাদের হৃদয়ে গ্রহণ করেছে, তারা বিশ্বাসে স্থির থাকতে সমর্থ হবে, এবং আমাদের সাক্ষ্যমরের সাথে যুক্ত করবে, ক্লেশের সময়ে যদি তারা দেরী করেও এই সুসমাচার বিশ্বাস করে৷ এই জন্য আমরা পৃথিবীর সমস্ত খ্রীষ্টিয়ানদেরকে তাদের আত্মিক নিদ্রা থেকে জাগিয়ে তোলার জন্য সুসমাচার প্রচার করছি৷ আমাদের নিজেদের সাক্ষ্যমরের পূর্ব পর্যন্ত আমরা পৃথিবীর শেষ প্রান্তে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করব৷ যদি সাক্ষ্যমরের মৃত্যু না হবে, তাহলে এই সুসমাচার যা আমরা ছড়িয়ে দিচ্ছি তার কি হবে? যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করবে তারা শেষ কালে সাক্ষ্যমর হবে৷ এর জন্য এখন থেকেই আমরা আমাদের বিশ্বাসকে প্রস্তুত করব৷ 
জল ও আত্মার সুসমাচারের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে আমাদের বিশ্বাসকে যদি এখনও প্রস্তুত করতে না পারি, তাহলে যখন আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে উপস্থিত হব, তখন আমরা তার জন্য কেবল লজ্জিত হব৷ যখন শেষ সময় আসবে, আমরা নিজেদেরকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ব, বলব, “ প্রভু আমি এখন খুবই ব্যস্ত৷ আমার জন্য এক মুহূর্ত অপেক্ষা কর; আমি এখন অনুতাপ করছি৷” এই রকম বিশ্বাস যদি আমরা শেষ দিন পর্যন্ত ধরে রাখি, ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন, “ কেন তুমি নিজেই অগ্নিহ্রদে ঝাঁপ দিচ্ছ না? তুমি এর চেয়ে আরো বেশী যোগ্য!” যাদের এখনও পাপ আছে তাদেরকে বুঝতে হবে যে, শেষ পর্যন্ত তাদের পরিণতি এই রকম হবে৷ এজন্য ঈশ্বর বলেন, “যাহার কর্ণ আছে, সে শুনুক, আত্মা মণ্ডলীগণকে কি কহিতেছেন”
সাধুগণ যখন সাক্ষ্যমর হবেন, পৃথিবীর প্রাকৃতিক পরিবেশ তখন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে৷ বন পুড়ে যাবে, সাগর, নদী, ঝর্না রক্তে পরিণত হবে৷ সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র এগুলো অন্ধকার হয়ে যাবে, সমস্ত পৃথিবী অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে৷ শয়তানের কর্তৃত্বাধীনের তখনকার অধিবাসীদের মন, মানসিকতা ও আচরণ হিংস্র হয়ে উঠবে, তারা যেখানেই ঈশ্বরের সন্তানকে দেখবে, সেখানেই তারা তাদেরকে হত্যা করবে৷ একারণেই আপনাকে অবশ্যই প্রকাশিত বাক্য বুঝতে হবে এবং তাতে বিশ্বাস করতে হবে৷
বর্তমান মন্ডলীগুলো কেবল তাদের উপাসনালয়গুলোকে দৈঘ্য ও প্রস্থে বড় করতেই কেবল ব্যস্ত৷ ঘর বড় করার জন্য তারা লক্ষ লক্ষ ডলার ব্যয় করছে, অথচ তাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে; ঈশ্বরের জন্য সাক্ষ্যমর হওয়ার মত উপযুক্ত বিশ্বাস তাদের মাঝে নেই৷ এই সমস্ত লোকেদের প্রথমত তাদের হৃদয়ের পাপ ধৌত করার প্রয়োজন আছে৷
খুব শীঘ্রই পৃথিবী মহাক্লেশে, অর্থাৎ পান্ডুবর্ণ অশ্বের যুগে প্রবেশ করছে৷ আমি বিশ্বাস ও প্রত্যাশা করি সাক্ষ্যমরের মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার মত বিশ্বাস আপনার মাঝে সৃষ্টি হোক এবং মরণ পর্যন্ত খ্রীষ্টে বিশ্বস্ত থাকুন৷ এই জন্য আত্মা দ্বারা ভালোভাবে প্রকাশিত বাক্য পরীক্ষা করার মাধ্যমে তাতে আপনার বিশ্বাস করা প্রয়োজন৷