Search

শিক্ষা

বিষয় ১১: আবাস

[22-2] গৌরবের প্রত্যাশায় দৃঢ় ও আনন্দপূর্ণ হোন (প্রকাশিত বাক্য ২২:১-২১)

গৌরবের প্রত্যাশায় দৃঢ় ও আনন্দপূর্ণ হোন
< প্রকাশিত বাক্য ২২:১-২১>
 
প্রকাশিত বাক্য ২২:৬-২১ পদ আমাদেরকে স্বর্গের নিমিত্ত প্রত্যাশা প্রদর্শন করে৷ ২২ অধ্যায়টি প্রকাশিত বাক্যের সমাপ্তিকালীন অধ্যায়, যা শাস্ত্রীয় ভাববাণীর প্রতিশ্রুতি রক্ষার দৃঢ়তা এবং ঈশ্বরের নুতন যিরূশালেমের প্রতিআমন্ত্রণ সহ উপস্থিত হয়েছে৷ এই অধ্যায় আমাদেরকে বলে যে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা যে সমস্ত সাধুগণ নুতন জন্ম লাভ করেছে, নুতন যিরূশালেমে তাদের নিমিত্ত ঈশ্বরের দেওয়া একটি অনুগ্রহদান৷
নুতন জন্ম প্রাপ্ত সাধুগণ ঈশ্বরের গৃহে তাঁর প্রশংসা করবেন৷ এই জন্য আমি প্রভুর নিকটে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ হই৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা আমাদেরকে সাধু হতে অনুমোদন করার জন্য এবং প্রভুর সাক্ষাতে আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যে কত কৃতজ্ঞ তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না৷ আমরা যে অনুগ্রহ লাভ করেছি, পৃথিবীতে কেউ কি কখনও এর চেয়ে মহৎ অনুগ্রহ লাভ করেছে? কেউই না৷
আজকের মূল অনুচ্ছেদ হল প্রকাশিত বাক্যের শেষ অধ্যায়৷ আদি পুস্তকে মানবজাতির নিমিত্ত ঈশ্বরের সমস্ত পরিচালনা আমরা দেখতে পাই, আর প্রকাশিত বাক্যে আমরা দেখি যে, আমাদের প্রভু এই পরিচালনা গুলির সমস্তই পূর্ণ করেছেন৷ ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুযায়ী মানবজাতির নিমিত্ত ঈশ্বরের সমস্ত কার্যের পূর্ণতা সাধন অনুসারে প্রকাশিত বাক্যকে এই পৃথিবীর ধ্বংসের প্রক্রিয়া হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে৷ ঈশ্বর কর্ত্তৃক প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই প্রকাশিত বাক্যের মধ্যে দিয়ে আমরা স্বর্গরাজ্য দেখতে পাই৷ 
 
 
ঈশ্বরের নগরী এবং উদ্যানের আকৃতি
 
২২ অধ্যায়ে ঈশ্বরের নগরীর বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে৷ ১৭-২১ পদ আমাদেরকে বলে: “আর আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস। যে শুনে, সেও বলুক, আইস। আর যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক। যাহারা এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল শুনে, তাহাদের প্রত্যেক জনের কাছে আমি সাক্ষ্য দিয়া বলিতেছি, যদি কেহ ইহার সহিত আর কিছু যোগ করে, তবে ঈশ্বর সেই ব্যক্তিকে এই গ্রন্থে লিখিত আঘাত সকল যোগ করিবেন; আর যদি কেহ এই ভাববাণী-গ্রন্থের বচন হইতে কিছু হরণ করে, তবে ঈশ্বর এই গ্রন্থে লিখিত জীবন-বৃক্ষ হইতে ও পবিত্র নগর হইতে তাহার অংশ হরণ করিবেন। যিনি এই সকল কথার সাক্ষ্য দেন, তিনি কহিতেছেন, সত্য, আমি শীঘ্র আসিতেছি। আমেন; প্রভু যীশু, আইস। প্রভু যীশুর অনুগ্রহ পবিত্রগণের সঙ্গে থাকুক। আমেন।”
প্রকাশিত বাক্যের এই বাক্যে নুতন যিরূশালেমের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা ঈশ্বর তাঁর নুতন জন্ম প্রাপ্ত লোকদেরকে দেবেন৷ আমদেরকে যিরূশালেমের যে নগরীর কথা বলা হয়েছে, সেটা স্বর্গে অবস্থিত, মুক্ত নির্মিত দ্বারস্থ বারো প্রকারের মূল্যবান মণি দ্বারা নির্মিত৷
তাহলে, ২২ অধ্যায়ে যিরূশালেম নগরীর উদ্যানের প্রকৃতির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে৷ ১ পদ বলে, “আর তিনি আমাকে ‘জীবন-জলের নদী দেখাইলেন’, তাহা স্ফটিকের ন্যায় উজ্জ্বল, তাহা ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন হইতে নির্গত হইয়া তথাকার চকের মধ্যস্থানে বহিতেছে;”৷ ঈশ্বরের নগরীতে উদ্যানের মধ্য দিয়ে স্ফটিকবৎ নদীপ্রবাহিত, ঠিক ঈশ্বর যেভাবে শুরুতে এদোন উদ্যানের মধ্যে দিয়ে চারটি নদীর প্রবাহ সৃষ্টি করেছিলেন তেমনি৷ ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন যে, এই উদ্যান ভবিষ্যতে ধার্মিকেরা উপভোগ করবে৷
মূল অনুচ্ছেদটিও আমাদেরকে বলে যে, এই উদ্যানে জীবন-বৃক্ষ দন্ডায়মান, যা বারো রকমের ফল ধারণ করে, এক এক মাসে আপন আপন ফল দেয় এবং সেই বৃক্ষের পাতা জাতিগণের আরোগ্য নিমিত্তক, এটা আমার দৃষ্টিতে এমন যে, স্বর্গের প্রকৃতি এইরূপ যে, যেহেতু বৃক্ষের পাতায় আরোগ্য সাধক ক্ষমতা রয়েছে, তাই এর ফলই কেবল খাওয়া যাবে না, বরং এর পাতাও খাওয়া যাবে৷
 
 
ধার্মিকগণ কর্ত্তৃক গৃহীত অনুগ্রহ সমূহ
 
বাইবেল আমাদেরকে বলে যে, ঈশ্বরের নগরীতে, “’কোন শাপ আর হইবে না;’ আর ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সিংহাসন তাহার মধ্যে থাকিবে; এবং তাঁহার দাসেরা তাঁহার আরাধনা করিবে, ও তাঁহার মুখ দর্শন করিবে, এবং তাঁহার নাম তাহাদের ললাটে থাকিবে।” এটা আমাদেরকে বলে যে, আমাদের যাদের সমস্ত পাপের ক্ষমা হয়েছে, যিনি আমাদেরকে রক্ষা করেছেন, আমরা অনন্তকাল সেই ঈশ্বরের সাথে রাজত্ব করব৷
পৃথিবীতে থাকাকালীন জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা যাদের পাপ মুছে গেছে, তারা কেবল তাদের সমস্ত পাপ মুছে যাওয়ার আশীর্বাদই লাভ করবে না, কিন্তু তারা ঈশ্বরের আপন সন্তানও হবে, যখন তারা স্বর্গরাজ্যে যাবে, তখন অনেক দূতগণ তাদের তত্ত্বাবধান করবে, এবং তারা প্রভুর সাথে অনন্তকাল রাজত্ব করবে৷ অনুচ্ছেদটি আমাদেরকে বলে যে, ধার্মিকেরা জীবন নদীর তীরে দাঁড়িয়ে জীবন বৃক্ষের ফল খাওয়ার আশীর্বাদ ঈশ্বর হতে লাভ করবে এবং এই আশীর্বাদের অংশরূপে সেখানে আর কোনো রোগ ব্যাধি থাকবে না৷
এটা আমাদের আরো বলে যে, যেহেতু সেখানে তারা ঈশ্বরের সাথে বাস করবে, সেই ঈশ্বরের গৌরবময় রাজ্যের আলো ঈশ্বর নিজেই, তাই তাদের জগতের আলো কি সূর্যের প্রয়োজন হবে না৷ অন্যকথায়, ঈশ্বরের যে সমস্ত সন্তানেরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারা ঈশ্বরের ন্যায় জীবনযাপন করবে৷ এটাই ধার্মিকগণ কর্ত্তৃক গৃহীত আশীর্বাদ৷
যীশুর বারোজন শিষ্যের একজন এই যোহন, যিনি প্রকাশিত বাক্য লিখেছেন, তিনি যোহনের সুসমাচারও লিখেছেন এবং নুতন নিয়মের যোহনের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তিনটি পত্র লিখেছেন৷ তিনি রোম সম্রাটকে ঈশ্বর রূপে না স্বীকার করার কারণে পাটম নামক দ্বীপে নির্বাসিত হয়েছিলেন৷ এই নির্বাসনকালে ঈশ্বর তাঁর দূতকে যোহনের কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং পৃথিবীর উপরে কি উপস্থিত হতে যাচ্ছে তা দেখিয়েছিলেন, পৃথিবীর ধ্বংস এবং যে স্থানে সাধুগণ প্রবেশ ও বাস করবে তা ঈশ্বর তার কাছে প্রকাশ করেছেন৷
আমরা যদি আদি পুস্তককে সৃষ্টির পরিকল্পনা হিসাবে বর্ণনা করি, তাহলে পরিকল্পনা পূর্ণতা সাধন হিসাবে প্রকাশিত বাক্যকে বর্ণনা করতে হয়৷ ৪০০০ বছর পূর্বে আমাদের প্রভু মানবজাতিকে বলেছিলেন, তিনি যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ মুছে দেবেন৷ আর নুতন নিয়মের যুগে যখন সময় এসেছে, তখন ঈশ্বর তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা সাধন করেছেন, তিনি ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টকে এই পৃথিবীতে পাঠাবেন, যোহন কর্ত্তৃক তাঁকে বাপ্তাইজিত করবেন এবং খ্রীষ্টের ক্রুশীয় রক্তের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর পাপ মুছে দেবেন৷
যখন মানবজাতি শয়তানের প্রতারনায় পতিত হয়েছিল এবং পাপের কারণে যখন ধ্বংসের ফাঁদে পতিত হয়েছিল, তখন আমাদের প্রভু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি জগতকে পাপ থেকে মুক্ত করবেন৷ তিনি তখন যীশু খ্রীষ্টকে পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে বাপ্তাইজিত হতে এবং রক্ত সেচন করতে হয়েছিল, আর এভাবে মানবজাতি তাদের পাপ থেকে যথাযথভাবে রক্ষা পেয়েছিল৷ প্রকাশিত বাক্যের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বর বিস্তারিতভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন যে, যারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে তাদের জন্য কি প্রকারের গৌরব প্রতীক্ষা করছে এবং অন্যদিকে পাপীদের নিমিত্তে কি প্রকারের বিচার প্রতীক্ষা করছে৷ এদিকে ঈশ্বর আমাদেরকে বলেছেন এমন অনেকে আছে, যদিও তারা বিশস্তভাবে তাঁকে বিশ্বাস করার দাবি করবে (মথি ৭:২১-২৩), তথাপি তারা শেষ পর্যন্ত নরকে যাবে৷
আমাদের প্রভু পাপীদেরকে তাদের পাপ থেকে রক্ষা করেছেন, এবং তিনি আমাদেরকে অনুগ্রহের বাক্যকে মুদ্রাঙ্কিত করতে নিষেধ করেছেন, যা তিনি ধার্মিকগণের নিমিত্ত প্রস্তুত করেছেন৷
 
 
অধার্মিক এবং কলুষিত কারা?
 
১১ পদে বলা হয়েছে, “যে অধর্ম্মাচারী, সে ইহার পরেও অধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে কলুষিত, সে ইহার পরেও কলুষিত হউক; এবং যে ধার্ম্মিক, সে ইহার পরেও ধর্ম্মাচরণ করুক; এবং যে পবিত্র, সে ইহার পরেও পবিত্রীকৃত হউক।” এখানে “অধর্মাচারী” কারা? যারা প্রভুর দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না, অধর্মাচারী ভিন্ন তারা অন্য কেউ নয়৷ যেহেতু লোকেরা প্রতিনিয়ত পাপ করে, তাই প্রভু তাদেরকে যে জল ও আত্মার সুসমাচার দিয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই তাতে বিশ্বাস করতে হবে এবং এভাবে তাদেরকে ঈশ্বরের গৌরবজনক জীবনযাপন করতে হবে৷ কেননা, ঈশ্বর এমনই একজন, যিনি মানবজাতির কাছে গৌরব গ্রহণ করেন এবং যিনি তাঁর পরিত্রাণের অনুগ্রহ দ্বারা আমাদেরকে আবৃত করেন৷ আমাদের সকলকে অবশ্যই এমন জীবনযাপন করতে হবে, যে জীবন ঈশ্বরকে সমস্ত গৌরব প্রদান করে৷ যারা ঈশ্বরকে অমান্য করে তারা কলুষিত, যেহেতু তারা সর্বদা তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করে না৷ 
যে সকল ধার্মিকগণ মুখে প্রভুকে বিশ্বাস করে বলে স্বীকার করে, মথি ৭:২৩ পদে তিনি তাদেরকে বলেছেন, “আমি কখনই তোমাদিগকে জানি নাই, হে অধর্মাচারীরা আমার নিকট হইতে দূর হও৷” আমাদের প্রভু তাদেরকে “হে অধর্মাচারীরা” বলে আখ্যায়িত করেছেন৷ আন্তরিকভাবে জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করার পরিবর্তে, যারা তাদের কাজের মধ্যে দিয়ে যীশু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করে, তিনি এই লোকগুলোকে ভর্ত্সনা করেছেন৷ অধর্মাচারণ পাপ, এবং সেটা হল হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস না করা৷ অতএব, লোকেরা যখন ঈশ্বরের সাক্ষাতে অধর্মাচারণ করে, এর অর্থ হল তাদেরকে দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারের পরিত্রাণে এবং তাঁর প্রেমে তারা বিশ্বাস করে না৷ অধর্মাচারণ হল কারো নিজের খেয়ালে ঈশ্বরের বাক্যকে পরিবর্তন করা ছাড়া আর কিছু নয়, এবং কারো ইচ্ছামত খামখেয়ালীভাবে এটাকে বিশ্বাস করা৷
যারা প্রকৃতভাবে যীশুতে বিশ্বাস করে, তা হল ঈশ্বর যা কিছু স্থাপন করেছেন তাদেরকে অবশ্যই সেইভাবে তা গ্রহণ করতে হবে৷ আমরা যীশুতে বিশ্বাস করি, কিন্তু তা কোনভাবে আমাদেরকে ঈশ্বরের পরিকল্পনা এবং তাঁর পরিত্রাণের পূর্ণতা সাধনকে পরিবর্তন করতে অনুমোদন করে না৷ মূল অনুচ্ছেদের বক্তব্য হল, ঈশ্বরের পরিত্রাণ যেভাবে স্থাপিত, সেইভাবে যারা এতে বিশ্বাস করে, তিনি তাদেরকে অনন্ত জীবন দেবেন, কিন্তু যারা ঈশ্বরের ব্যবস্থার পরিবর্তন করে এবং নিজেদের ইচ্ছামত যে কোনো ভাবে এতে বিশ্বাস করে, তিনি তাদেরকে নরকে পাঠাবেন৷
“যে অধর্ম্মাচারী, সে ইহার পরেও অধর্ম্মাচরণ করুক৷” এই বাক্য আমাদেরকে বলে যে, এইরূপ লোকেরা তাদের একগুঁয়েমির কারণে ঈশ্বর কর্ত্তৃক যেভাবে পরিত্রাণ স্থাপিত হয়েছে সেইভাবে বিশ্বাস করে নি, তারাই অধার্মাচারী৷ এ কারণেই পাপীরা সর্বদা অধর্মাচারী৷
অনুচ্ছেদটি আরো বলছে, “যে কলুষিত, সে ইহার পরেও কলুষিত হউক”৷ এটা তাদের বিষয় বলে যে, যদিও তারা পাপে পরিপূর্ণ, তথাপি জল ও আত্মার সুসমাচারের দ্বারা যীশু তাদের পাপ মুছে দিয়েছেন, বিশ্বাসে তাদের পাপ ধৌত করতে আর কোনো অভিপ্রায়ের প্রয়োজন নেই৷ এইরূপে ঈশ্বর এই বিশ্বাসবিহীন লোকগুলোকে একাকী ফেলে যাবেন এবং অতঃপর তাদের বিচার করবেন৷ নৈতিক চেতনা প্রদানের দ্বারা ঈশ্বর লোকদেরকে হৃদয়ে পাপ চিনতে পারার ক্ষমতা প্রদান করেছেন৷ তথাপি লোকেদের হৃদয়ে এখনও পাপ পরিস্কার করার কোনো ইচ্ছা কিম্বা জল ও আত্মার সুসমাচার জানার কোনো ইচ্ছা নেই৷ ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন যে, এই লোকেরা যেভাবে চায় সেভাবেই তাদের অনুমতি দেবেন৷ 
হিতোপদেশ ৩০:১২ পদ বলে, “এক বংশ আছে, তাহারা আমাদের দৃষ্টিতে শুচি, তবুও আপনাদের মালিন্য হইতে ধৌত হয় নাই৷” আজকের খ্রীষ্টিয়ান ধর্মবিদগণরাই এরূপ লোক যারা কখনও তাদের পাপ থেকে ধৌত হতে চায় না৷ যাহোক, যিনি স্বয়ং ঈশ্বর, সেই যীশু পাপীদেরকে রক্ষা করতে এই জগতে এসেছিলেন, তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে মানবজাতির সমস্ত পাপ একেবারে নিজের উপরে তুলে নেওয়ার দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, ক্রুশারোপিত হওয়ার দ্বারা এই সমস্ত পাপের জন্য তত্ক্ষনাত বিচারিত হয়েছিলেন এবং আমরা যারা বিশ্বাস করি বাস্তবিক এভাবেই আমাদেরকে রক্ষা করেছেন৷
যে কেউ জল ও আত্মার সুসমাচারের বাক্য জানে এবং বিশ্বাস করে, যার দ্বারা যীশু পাপীদেরকে রক্ষা করেছেন, সে যে প্রকারের পাপী হোক না কেন, আমাদের প্রভু এই ব্যক্তির (নারী/পুরুষ) সমস্ত পাপ ক্ষমা হওয়ার অনুমোদন করেছেন৷ আর এখনও অনেক লোক রয়েছে, যারা এই বিশ্বাসের দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করে নি৷ এই লোকগুলো এমন লোক যারা তাদের এই পাপ ধৌত করার চেষ্টা না করে নিজেদেরকে পৃথক করেছে৷ তারা যেরূপ লোক ঈশ্বর তাদেরকে তেমনই হতে দেবেন৷
ঈশ্বর তাঁর ন্যায়বিচার সাধন করতেই এটা করবেন৷ এটা দেখাতে যে, ঈশ্বর ন্যায়বিচারের ঈশ্বর৷ এই লোকগুলো গন্ধকের অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হবে এবং অনন্তকাল প্রজ্বলিত হবে৷ তখন তারা বুঝবে যে, বাস্তবিক ন্যায়বিচারের ঈশ্বর কে? যদিও তারা যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তা হিসাবে স্বীকার করে, তথাপি তারা কেবল নিজেদের বিবেককেই ঠকাচ্ছে না, বরং তারা অন্যদের বিবেককেই কলুষিত করেছে৷ যেহেতু তারা জল ও আত্মার সুসমাচারকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই তারা যা করেছে সেই অনুসারে ঈশ্বর তাদের পাওনা ফিরিয়ে দেবেন৷ যখন সময় উপস্থিত হবে, যারা ঈশ্বরের ক্রোধের যোগ্য, তিনি তাদের উপরে তাঁর ক্রোধ আনয়ন করবেন৷
 
 
যার যার কর্ম অনুযায়ী ফল প্রদান
 
এই পৃথিবীতে দুই প্রকারের লোক রয়েছে: যারা ঈশ্বরকে জানে এবং যারা তাঁকে জানে নি৷ আমাদের প্রভু প্রত্যেককে তাঁর (নারী/পুরুষ) কর্ম অনুসারে ফল দেবেন৷
কেউ নিজে নিজে সৎ হতে পারে না, কিন্তু সততা যীশু হতে আসে৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন, পৃথিবীর এই সমস্ত পাপ ক্রুশে বহন করেছেন এবং মানবজাতিকে পাপের কারণে যে বিচারের সম্মুখীন হতে হত, ক্রুশের উপরে তিনি সেই সমস্ত পাপের বিচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন৷ এই সত্যে বিশ্বাসের দ্বারা মানবজাতি ধার্মিক হতে পারবে৷ যারা এই সত্যে বিশ্বাস করে তারা প্রভুকে জেনেছে৷
যারা পাপবিহীন এবং যারা এই সত্য জানে ও বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাদেরকে এই পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচার করতে বলেছেন এবং তিনি চান যেন তাঁর পবিত্র বাক্য পালনে জীবনযাপন করে৷ ঈশ্বর বলেন, “যে পবিত্র, সে ইহার পরেও পবিত্রীকৃত হউক।” আমাদেরকে অবশ্যই এই আজ্ঞা হৃদয়ে পালন করতে হবে, আমাদের পবিত্র বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে এবং সর্বদা সঠিক সুসমাচার প্রচার করতে হবে৷ কেন? কেননা এই পৃথিবীর প্রচুর লোক এখনও এই সত্য সুসমাচার জানে না, ফলে তাদের সমস্ত বিশ্বাস ভ্রান্ত৷ 
এই পৃথিবীতে অনেকে রয়েছে যারা নিঃশর্তভাবে বর্ধিত পবিত্রতার মতবাদ সমর্থন করে৷ যদিও আমাদের প্রভু মানবজাতির সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, তথাপি এই সমস্ত লোকেরা এখনও তাদের প্রতিদিনের পাপের ক্ষমার জন্য প্রার্থনা করে এমনকি এখনও করে৷ প্রতিদিনের নিমিত্ত তাদের অনুতাপের প্রার্থনা উত্সর্গ করে তারা তাদের পাপ সকল ধৌত করার চেষ্টা করে, বর্ধিত পবিত্রীকৃত হতে চেষ্টা করে যাতে তারা চূড়ান্তভাবে ধার্মিক হতে পারে এবং আর যেন পাপ না করে এবং এভাবে যীশুর সমকক্ষ হওয়ার চেষ্টা করে৷ কিন্তু যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের পুত্র, রাজা, ভাববাদী এবং মহা যাজক৷
ঈশ্বরের প্রকৃত দাসেরা কেবল প্রত্যেকে সত্যই পাপের ক্ষমা হয়েছে এই বিষয়টিই নিশ্চিত করে না, বরং তারা প্রত্যেককে ঈশ্বরের সহকার্যকারী রূপে তাদেরকে পরিচালিত করে নিয়ে যায়৷ ঈশ্বরের দাস তারা, যারা ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে ভবিষ্যত ঘটনাগুলো জানতে পারে৷
১২-১৩ পদ বলে, “দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি; এবং আমার দাতব্য পুরস্কার আমার সহবর্ত্তী, যাহার যেমন কার্য্য, তাহাকে তেমন ফল দিব। আমি আল্‌ফা এবং ওমিগা, প্রথম ও শেষ, আদি এবং অন্ত। ” বাস্তবিকই আমাদের প্রভু আলফা ও ওমিগা, প্রথম ও শেষ, আদি এবং অন্ত৷ প্রভু আমাদের প্রতি যা বলেছেন, আমরা অবশ্যই সভয়ে সবকিছু বিশ্বাস করব৷ 
আমাদের প্রভু সাধুগণকে আশীর্বাদসহ পুরস্কৃত করবেন যা তাদের কাজের চেয়েও অধিক, কেননা তিনি গৌরবময় ও দয়ালু৷ যিনি আমাদেরকে আমাদের সমস্ত পাপ হতে রক্ষা করেছেন, তিনি দয়ালু এবং করুনাময়, প্রকাশিত বাক্য আমাদেরকে যেমনটি বলে, যিনি তাঁর পবিত্রগণের কার্যসাধন করেছেন, তিনি ন্যায় ও পরাক্রমের ঈশ্বর৷ আর এই পরিত্রাণের পূর্ণতা সাধন শীঘ্রই উপস্থিত হবে, যা নুতন যিরূশালেম নগরীতে সাধুগণের গৌরবময় প্রবেশের অনুমোদন, তাদের নিমিত্ত আমাদের প্রভুর মহৎ এবং যথার্থ পুরস্কার৷
 
 

ধন্য তারা, যারা তাঁর আজ্ঞাসকল পালন করে

 
১৪ পদ সহ মূল অনুচ্ছেদটি আমাদেরকে বলে যে, “ধন্য তাহারা, যাহারা আপন আপন পরিচ্ছদ ধৌত করে, যেন তাহারা জীবনবৃক্ষের অধিকারী হয়, এবং দ্বার সকল দিয়া নগরে প্রবেশ করে।” অনেক লোক রয়েছে যারা এই পদের উপর ভিত্তি করে দাবি করে যে, কার্যাদির দ্বারা পরিত্রাণ আসে, তাঁর আজ্ঞাপালনের দ্বারা পরিত্রাণ আসে৷
বস্তুতঃ, “তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন” এর অর্থ হল বিশ্বাসের সাথে ঈশ্বরের লিখিত বাক্যের পালন এবং বিশ্বাস করা৷ প্রেরিত যোহন লিখেছেন, “আর তাঁহার আজ্ঞা এই, যেন আমরা তাঁহার পুত্র যীশু খ্রীষ্টের নামে বিশ্বাস করি, এবং পরস্পর প্রেম করি, যেমন তিনি আমাদিগকে আজ্ঞা দিয়াছেন৷” সুতরাং, যখন আমরা জল ও আত্মার সত্য সুসমাচারে বিশ্বাস করি এবং সমগ্র পৃথিবীর হারানো আত্মাগণকে রক্ষা করণার্থে সুসমাচার প্রচার করতে নিয়োজিত হই, তখনই তাঁর সাক্ষাতে আমরা তাঁর আজ্ঞা সকল পালন করি৷
আমরা সারা জীবনে যে সমস্ত পাপ করেছি, যোহন কর্ত্তৃক যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, সেই বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে ইতিমধ্যে সেই সমস্ত পাপ মুছে গেছে৷ এই বাপ্তিস্ম, আমাদের প্রভুর ক্রুশীয় রক্ত, তাঁর পুনরুত্থান ও স্বর্গারোহন অনুসরণ আমাদের নুতন জন্ম পেতে সাহায্য করে এবং তাঁর বিশ্বাসে একটি নুতন জীবনযাপনে সাহায্য করে৷
নুতন জন্ম লাভ করার পরে যখনই আমরা পাপে পতিত হই, যে সত্যের বাক্য আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছিল, আমাদের অবশ্যই সেখানে ফিরে যেতে হবে, অনুধাবন করতে হবে যে, আমাদের ভিত্তিমূল এইরূপ যা পাপ না করে পারে না এবং আর একবার আমাদেরকে যর্দন নদীর বিশ্বাসের কাছে ফিরে যেতে হবে, যেখানে আমাদের প্রভু আমাদের সমস্ত দুর্বলতা, ত্রুটি ও পাপ তুলে নিয়েছেন, যীশুর সঙ্গে একত্রে বাপ্তাইজিত হই, এবং যিনি ক্রুশে মরেছিলেন তাঁর সঙ্গে ক্রুশারোপিত হই৷ যখন আমরা এইরূপ করি, তখনই আমরা নুতন জন্ম লাভের পর কৃত পাপ হতে চূড়ান্তভাবে মুক্ত হই এবং ধৌত ও পরিস্কৃত হই৷ আমাদের প্রায়শ্চিত্তের অনন্ত পরিত্রাণ দৃঢ়ভাবে হৃদয়াঙ্গম করার দ্বারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা ধারণ করি এবং তাঁর যথার্থ ও চিরস্থায়ী পরিত্রাণের জন্য তাঁর ধন্যবাদ করতে থাকি৷
যীশু ইতিমধ্যে এই পৃথিবীর সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন৷ আমাদের বিবেক-বুদ্ধিতেই সমস্যা আছে৷ যদিও আমাদের প্রভু ইতিমধ্যে তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত পাপ অকাতরে সহ্য করেছেন, তথাপি মানবজাতি উপলব্ধি করে না যে, প্রভু তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশারোপনের মাধ্যমে আমাদের সকল পাপ ধৌত করেছেন, আমাদের বিবেক-বুদ্ধি পাপীদের ন্যায় সমস্যাগ্রস্থ রয়ে গেছে৷ অতএব, আমরা ঠিকই উপলব্ধি করি যে, আমাদের মধ্যে এখনও পাপ রয়েছে, তাই আমাদের যা কিছু করতে হবে, তা হল, কেবল বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশু খ্রীষ্টের দেওয়া জল ও আত্মার সুসমাচারের মধ্যে দিয়ে ইতিমধ্যে বাস্তবিকই আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত হয়ে গিয়েছে৷
যদি আমাদের পাপের দ্বারা আমাদের হৃদয় ক্ষত হয়ে থাকে, তবে কোন বিশ্বাসের দ্বারা আমরা পাপের ক্ষতস্থানের প্রতিকার করতে পারি?
এই ক্ষতসমুহ, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা সুস্থ হতে পারে – অর্থাৎ এটা বিশ্বাসের দ্বারা যে, যর্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের প্রভু পৃথিবীর সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন এবং কালভেরী ক্রুশে এই সমস্ত পাপ বহন করার এবং ক্রুশে তাঁর রক্তসেচনের দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন৷ অন্যকথায়, পাপের ক্ষমা লাভের পরে কাজ কর্মের মধ্যে দিয়ে আমরা যে সমস্ত পাপ করি, এই পাপগুলিও ধৌত হতে পারে; যখন আমরা আরেকবার আমাদের বিশ্বাসকে নিশ্চিত করি যে, যীশু খ্রীষ্ট ইতিমধ্যে আমাদের কর্মের পাপ সহ সকল পাপ ধৌত করেছেন৷
যীশু যখন বাপ্তাইজিত ও ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন তখনই এই পৃথিবীর সমস্ত পাপ একেবারেই ধৌত হয়ে গিয়েছিল৷ তাই, পৃথিবীর কিম্বা আমাদের ব্যক্তিগত পাপসমূহ দুইবারে অথবা তিনবারে ধৌত হয়ে গিয়েছে - এমন নয়৷ যদি কেউ শিক্ষা দেয় যে, পাপের ক্ষমা একটু একটু করে অর্জিত হয়, তবে সে (নারী/পুরুষ) যে সুসমাচার প্রচার করছে, তা একটা ভ্রান্ত সুসমাচার৷
ঈশ্বর পৃথিবীর সমস্ত পাপ একেবারে মুছে দিয়েছেন৷ ইব্রীয় ৯: ২৭ পদ আমাদেরকে বলে, “আর যেমন মনুষ্যের নিমিত্ত এক বার মৃত্যু, তৎপরে বিচার নিরূপিত আছে”৷ যেহেতু আমরা পাপে মৃত, সেহেতু ঈশ্বরের ইচ্ছা যেন আমরা পাপের ক্ষমা লাভ করি৷ এই পৃথিবীতে যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন, একবার মৃত্যুবরণ করেছেন, আর একবারই আমাদের স্থলে বিচারিত হয়েছেন৷ তিনি এই সমস্ত কিছু একাধিকবার করেন নি৷
যখন আমরা আমাদের হৃদয় দিয়ে যীশু খ্রীষ্টতে বিশ্বাসের দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করি, তখন একবারই সমস্ত কিছু বিশ্বাস করা এবং আমাদের সমস্ত পাপের অনন্ত ক্ষমা লাভ করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত৷ কেননা, তারপর থেকে আমরা যে পাপ করি, সেগুলো মাঝে মাঝে আমাদের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে, আমাদেরকে যা করতে হবে, তা হল, আমাদেরকে এই পরিত্রাণের বাক্যের সম্মুখে যেতে হবে, আমাদের প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে ধৌত করেছেন, আর এই বিশ্বাসের দ্বারা আমাদের ক্ষতবিক্ষত হৃদয়কে সুস্থ এবং পরিস্কৃত করতে হবে৷ “প্রভু আমি অতি দুর্বল৷ আমি আবার পাপ করেছি৷ আমি তোমার সম্পূর্ণ ইচ্ছা অনুসারে জীবনযাপন করতে পারি নি৷ কিন্তু তুমি যখন যর্দন নদীতে যোহন কর্ত্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলে এবং ক্রুশে রক্তসেচন করেছিলে, তখন তুমি কি আমার এই সমস্ত পাপ তুলে নাও নি? হাল্লিলুয়া! প্রভু, আমি তোমার প্রশংসা করি!”
এইরূপ বিশ্বাসের দ্বারা আমরা আর একবার আমাদের পাপের ক্ষমা নিশ্চিত করতে পারি এবং সর্বদা প্রভুর ধন্যবাদ করতে পারি৷ প্রকাশিত বাক্যের এই শেষ অধ্যায় আমাদেরকে বলে যে, যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জীবনবৃক্ষ, তাঁর সাক্ষাতে যাওয়ার দ্বারা এবং এটা বিশ্বাসের দ্বারা যে, প্রভু ইতিমধ্যে পৃথিবীর সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, যারা তাদের বিশ্বাসের দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারা ঈশ্বরের পবিত্র নগরী স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার অধিকার অর্জন করেছে৷
যে কেউ ঈশ্বরের পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করতে চায় তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম গ্রহণ ও রক্ত সেচনের দ্বারা চিরস্থায়ীভাবে মানবজাতির পাপের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করেছেন৷ যদিও আমাদের অনেক ত্রুটি বিচ্যুতিপূর্ণ কাজ রয়েছে, তথাপি যীশুর বাপ্তিস্ম গ্রহণ এবং আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের রক্তে বিশ্বাসের দ্বারা ঈশ্বর কর্ত্তৃক আমাদের বিশ্বাস সত্য গণিত হয়, এবং আমরা সকলে জীবন বৃক্ষের সম্মুখে যেতে পারি৷
কেবল খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং রক্তে বিশ্বাসের দ্বারাই আমরা নুতন যিরূশালেম নগরীতে প্রবাহমান জীবন-জল পান করতে এবং জীবন বৃক্ষের ফল খেতে উপযুক্ত হতে পারি৷ যেহেতু নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবেশের যোগ্যতা, যা কেবল জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের মধ্যে দিয়ে আসে, তা যে কেউ কখনো গ্রহণ করতে অনুমোদন পেতে পারে না, আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে এবং এটা আরো অনেকের কাছে প্রচার করতে হবে৷ তেমনিভাবে, “তাঁর আজ্ঞাসকল পালন কর” বাক্যাংশটি আমাদেরকে বিশ্বাসের দ্বারা পৃথিবীকে জয় করার অর্থ প্রকাশ করে- অর্থাৎ, আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে এবং পালন করতে হবে, আর সমগ্র পৃথিবীতে সত্য সুসমাচার প্রচার করতে নিয়োজিত থাকতে হবে৷
মথি ২২ অধ্যায়ে যীশু আমাদেরকে “বিবাহ ভোজের দৃষ্টান্ত” বলেছেন৷ এই দৃষ্টান্তের সারমর্ম হল যে, যাদের বিবাহ বস্ত্র থাকবে না, তারা বাইরের অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হবে (মথি ২২:১১-১৩)৷ মেষশাবকের বিবাহভোজে যোগদান করতে কিভাবে আমরা আমাদের বিবাহ বস্ত্র পরিধান করতে পারি এবং বিবাহ বস্ত্র কি? বিবাহ বস্ত্র হল, জল ও আত্মার সুসমাচারের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে দেওয়া ঈশ্বরের ধার্মিকতা, যার দ্বারা আমরা মেষশাবকের বিবাহভোজে প্রবেশ করতে পারি৷ আপনি কি জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করেন? যদি করেন, যদি করেন, তাহলে আপনি তাঁর ধার্মিকতার বস্ত্রে মনোরমভাবে আচ্ছাদিত, আর আপনি পুত্রের একজন পাপহীন কনে রূপে স্বর্গে প্রবেশ করতে পারেন৷
আমরা, নুতন জন্মপ্রাপ্তরাও প্রতিদিন পাপ করি৷ কেবল ধার্মিকেরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারাই বিশ্বাসের দ্বারা তাদের ধার্মিকতার বস্ত্র হতে তাদের প্রতিদিনের পাপ ধৌত করতে যোগ্যতা অর্জন করেছে৷ কারণ যাদের পাপ ক্ষমা হয় নি, তারা তাদের পাপ ধৌত করতে উপযুক্ত নয়, তারা কখনই তাদের প্রতিদিনের অনুতাপের প্রার্থনার দ্বারা তাদের পাপ ধৌত করতে পারবে না৷ এই পৃথিবীতে এসে বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা এবং তাঁর রক্তসেচনের দ্বারা প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন, এটা জানা এবং বিশ্বাসের দ্বারা প্রভু সমস্ত কিছুই সম্ভব করেছেন, আর এতে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা পৃথিবীর সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছি৷ 
অন্যকথায়, আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, কেবল তাঁর সত্য সুসমাচারে ইতিমধ্যে আমাদের প্রতিদিনের পাপ ধৌত হয়ে গিয়েছে৷ যারা জল ও রক্তের বাক্যের মধ্যে দিয়ে প্রভু হতে পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারা তাদের প্রতিদিনের জীবনযাপন কালীন কৃত পাপ হতেও পরিত্রাণের দৃঢ় প্রত্যয় রাখতে পারে৷
যেহেতু আমাদের প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে মুছে দিয়েছেন, কাজেই এই অনন্ত প্রায়শ্চিত্তের পরিত্রাণে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা নিজেদের কাজের মধ্যে দিয়ে পাপ হতেও ধৌত হতে পারি৷ অন্যকথায়, যদি এই ঘটনা না ঘটত, আমাদের প্রভু যদি আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে না ধৌত করতেন তাহলে আমরা কিভাবে পাপহীন হতাম?
কিভাবে আমরা স্বর্গের পবিত্র নগরীর মধ্যে প্রবেশ করতাম? কিভাবে আমরা যীশু খ্রীষ্টের জীবন বৃক্ষের সম্মুখে যেতাম? আমাদের প্রভুতে বিশ্বাসের দ্বারা যিনি আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, আমরা নিস্কলঙ্ক এবং পরিস্কার লোক হিসাবে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি; আর যখনই আমরা আমাদের জীবনযাপনে পাপ করি, তখন প্রভুর সাক্ষাতে গিয়ে, তিনি যে আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, এটা নিশ্চিত হওয়ার দ্বারা আমরা আমাদের এরূপ পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি৷ সেইজন্যই আমি আপনাদের বলি যে, একমাত্র নুতন জন্মপ্রাপ্তদেরই বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পাপ হতে ক্ষমা পাওয়ার বিশেষ অধিকার রয়েছে৷ 
যদিও রাজা দায়ুদ ঈশ্বরের একজন দাস ছিলেন, তথাপি তিনি ঈশ্বরের সাক্ষাতে মহাপাপ করেছিলেন৷ তিনি একজন বিবাহিত স্ত্রীলোকের সাথে ব্যভিচার ও তার স্বামীকে হত্যা করেছিলেন, যে তার একজন বিশ্বস্ত দাস ছিল৷ তথাপি এইরূপে সে ঈশ্বরের অনুগ্রহপূর্ণ ক্ষমার জন্য তাঁর প্রশংসা করেছিলেন;
“ধন্য সেই, যাহার অধর্ম ক্ষমা হইয়াছে,
যাহার পাপ আচ্ছাদিত হইয়াছে৷
ধন্য সেই ব্যক্তি, যাহার পক্ষে সদাপ্রভু অপরাধ গণনা করেন না,
ও যাহার আত্মায় প্রবঞ্চনা নাই” (গীতসংহিতা ৩২:১-২)৷
এই পৃথিবীতে এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে সর্বাধিক আশীর্বাদযুক্ত কারা? যারা নুতন জন্ম পেয়েছে, যারা রক্ষা পেয়েছে এবং আমরা ব্যতীত অন্য কেউ নয়, যারা যখনই আমাদের জীবনে পাপ করি, আমরা এই ঘটনার দিকে তাকাই যে, প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, আর আমরা প্রতিদিন আমাদের জীবনের উনুইয়ের কাছে যাই এবং প্রতিদিন আমাদের কলুষিত হৃদয়গুলো ধৌত করি৷ এটা হল আমাদের মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে রোমন্থন করা এবং আমাদের প্রভুর পরিত্রাণের মহা অনুগ্রহ নিশ্চিত হওয়া৷ 
একমাত্র ধার্মিকেরা তাদের ত্রুটি বিচ্যুতি গুলোর আরোগ্য লাভের দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছে৷ তাদের কার্যকাল উত্তম তাই তাদের হৃদয়গুলো তেমন৷ এরূপ হওয়াতে ধার্মিকেরা অনিন্দনীয়, তাহলে ঈশ্বর আমাদের নিমিত্ত যে রাজ্য, স্বর্গরাজ্য প্রস্তুত করেছেন, আমরা তাতে প্রবেশ করতে পারি৷
যীশু খ্রীষ্ট, পরিত্রাণের দ্বার এবং জীবন বৃক্ষ আমাদের নিমিত্ত যা করেছেন তা যদি আমরা গ্রহণ করি, তাহলে তাঁর প্রতাপ প্রকাশিত হবে এবং আমরা সকলে পাপের ক্ষমা লাভ করব ও স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করব৷
 
 

যারা জীবন বৃক্ষের সম্মুখে গমন করে

 
আমরা যারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছি, আমরা কি কারণে সর্বদা প্রভুর সম্মুখে যাই? কারণ হল, এটা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হতে যে, প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, আর একটি বার মহৎ পরিত্রাণের রোমন্থন করতে, এটাকে স্মরণ করতে এবং এর জন্য ঈশ্বরের প্রশংসা করতে, যাতে আমরা তাঁর রাজ্যে প্রবেশের অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন হই৷ এ কারণেই আমরা সুসমাচার প্রচার করি৷
অগনিত খ্রীষ্টিয়ান ঈশ্বরের দাসগণের সঙ্গলাভ করে নি যারা সঠিকভাবে বাইবেল শিক্ষা প্রদানের দ্বারা তাদেরকে পরিচালিত করতে পারে, এই সমস্ত খ্রীষ্টিয়ানেরা তাদের পার্থিব ধারণা এবং ভ্রান্ত বিশ্বাস নিয়ে পড়ে আছে৷ এমনকি বর্তমানেও, এমন লোক আছে যারা তাদের পুর্বকার কার্যাবলীতে আবিষ্ট রয়েছে, প্রত্যহ সকালে অনুতাপের প্রার্থনা উত্সর্গ করে, এবং সারারাত ধরে তেমনটিই করে৷ কেন তারা এগুলো করে? কেননা তারা বিশ্বাস করে যে, এরূপ করার দ্বারা তাদের পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে৷ আর তারা এরূপ করে কারণ তাদেরকে ভ্রান্ত মতবাদের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এই সকল কার্য ঈশ্বরের সাক্ষাতে অধার্মিকতা৷ এরূপ লোক এমন জঘন্য, সে না জানে ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে, এবং না জানে তাঁর নিঃশর্ত প্রেমকে৷
বাইবেল এমন কিছু নয়, যেটাকে হালকাভাবে নিতে পারা যায়, আর এটা কারো ইচ্ছামত যে কোনো ভাবে ব্যাখ্যা করা যায় না৷ তথাপি লোকেরা তাদের মানবীয় চিন্তা থেকে সৃষ্ট চিন্তাধারার উপরে ভিত্তি করে এটাকে ব্যাখ্যা করেছে, শিক্ষা দিচ্ছে এবং বিশ্বাস করছে, ফলাফল উপরোক্ত উক্তির সম্পর্কে অজ্ঞতা৷ বাইবেলের প্রতিটি অনুচ্ছেদের সঠিক অর্থ রয়েছে এবং এটা কেবল ঈশ্বরের যে ভাববাদীগণ পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তাদের দ্বারাই সঠিকভাবে ব্যাখায়িত হতে পারে৷
জীবন বৃক্ষের সম্মুখে যেতে হলে, এই পৃথিবীতে থাকাকালীন আমাদেরকে প্রভুতে বিশ্বাস করতে হবে, প্রতিদিন স্মরণ করতে হবে যে, আমাদের প্রভু আমাদের পাপ সমূহ মুছে দিয়েছেন, তাঁর প্রশংসা করতে হবে এবং তাঁর সুসমাচার প্রচার করতে হবে৷ আমাদের নুতন জন্ম প্রাপ্তদেরকেও স্মরণ রাখতে হবে যে, তিনি আমাদের পাপসমূহ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন, এই সত্য প্রতিদিন স্বীকার করতে হবে, কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের আনন্দের সাথে তাঁকে ভজনা করতে হবে, এবং আমাদের প্রভুর সম্মুখে যেতে হবে৷
যাহোক, এটা অতিরঞ্জিত করে বলার জন্য বলছি না যে, সমগ্র পৃথিবীর খ্রীষ্টিয়ানেরা এই অনুচ্ছেদের ভুল ব্যাখ্যা করে এবং ভ্রান্তভাবে বিশ্বাস করে যে, তারা তাদের প্রতিদিনের অনুতাপের প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে পাপ ধৌত করার দ্বারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে৷ কিন্তু অনুচ্ছেদটির অর্থ এটা নয়৷
পাপ ক্ষমা লাভের পরে আমাদের হৃদয় এটা দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত হওয়ার দ্বারা শান্ত থাকে যে, আমরা আমাদের কার্যাবলীর দ্বারা যে পাপ করি যীশু আমাদের সমস্ত পাপই মুছে দিয়েছেন৷ আমাদের সমস্ত পাপের ক্ষমা নিশ্চিত হওয়ার দ্বারা আমরা আর পাপের দ্বারা বলি নই৷ স্বর্গের জীবন বৃক্ষের সম্মুখে যাওয়ার এটাই পথ৷
মানবীয় চিন্তা ধারণা থেকে শাস্ত্রীয় বিষয়গুলো সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ এইরূপে সত্যকে জানতে আমাদেরকে অবশ্যই প্রথমে নুতন জন্ম প্রাপ্ত ঈশ্বরের দাসগণের থেকে সত্য শুনতে এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে৷
 
 
যারা নগরের বাইরে
 
১৫ পদ বলে, “বাহিরে রহিয়াছে কুক্কুরগণ, মায়াবিগণ, বেশ্যাগামীরা, নরঘাতকেরা ও প্রতিমাপূজকেরা, এবং যে কেহ মিথ্যা কথা ভাল বাসে ও রচনা করে।” এই বাক্য শেষ সময়ে তাদেরকে বোঝাচ্ছে, যারা নুতন জন্ম পায় নি৷ এটা স্বাভাবিকভাবেই বিস্ময়কর যে, আমাদের প্রভু এই লোকগুলোকে এইরূপ কাজের দ্বারা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বর্ণনা করবেন৷
কুকুরের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট হল, তারা উদগীরণ করে, অর্থাৎ তারা যা খায় তা উদগীরণ করে দেয়, এবং পুনরায় তা আবার খায় এবং তারপরে আবার উদগীরণ করে এবং ঠিক যা উদগীরণ করে আবারও সেটা খায়৷ প্রভু আমাদের এখানে বলেন যে, এই কুকুরেরা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না৷
তাহলে এই কুক্কুরগণ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? যে সমস্ত লোকেরা বিলাপ করে, “প্রভু, আমি পাপী, অনুগ্রহ করে আমার পাপ ধৌত কর,” আর তারপর ঈশ্বরের প্রশংসাগান করতে থাকে, “আমি ক্ষমা পেয়েছি”! কিন্তু পরবর্তী মুহুর্তে এই লোকেরাই আবার ক্রন্দন করে, “প্রভু আমি পাপী, যদি তুমি আরেকটি বার পুনরায় আমাকে ক্ষমা কর, তাহলে আমি আর পাপ করব না”৷ তারপর তারা আবারও গান ধরে, “কালভেরী রক্তের দ্বারা আমি ক্ষমা পেয়েছি”!
এই লোকেরা এত বেশি পিছিয়ে যায় এবং সম্মুখে ধাবিত হয় যে, কেউই নিশ্চিত নয় যে তারা বাস্তবিকই ক্ষমা পেয়েছে কি না৷ বাইবেলে বলা “কুক্কুরগণ” এই লোকগুলো ব্যতিত অন্যকেউ নয়৷ কুকুর প্রত্যহ ঘেউ ঘেউ করে৷ তারা সকালে, দুপুরে এবং সন্ধ্যাতেও ডাকে৷ এই সমস্ত লোকেরা ঠিক এইভাবে ডাকে৷ এই সমস্ত লোকেরা ঠিক এইভাবে ডাকে না, যদিও তারা পাপের ক্ষমা পেয়েছে, তথাপি তারা যে পাপী বলে ক্রন্দন করে এটাই কুকুরের মত ডাকা৷ তারা এই ধার্মিক হয়, আবার পরবর্তী মুহুর্তে তারা পাপীতে পরিনত হয়৷
এইভাবে তারা কুকুরের ন্যায় অভ্যন্তরস্থ যা কিছু আছে, তা উদগীরণ করে ফেলে এবং পুনরায় তা খেয়ে ফেলে এবং আরো বহুবার খাওয়ার জন্য পুনরায় উদগীরণ করে৷ সংক্ষেপে, যে সমস্ত খ্রীষ্টিয়ানদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে বাইবেল তাদেরকে “কুক্কুর” হিসাবে নির্দেশ করে৷ এই কুকুরেরা কখনও স্বর্গে প্রবেশ করবে না, কিন্তু অবশ্যই নগরীর বাইরে পড়ে থাকবে৷
পরবর্তীতে, “মায়াবীগণ” কারা? এমন লোক যারা নবীন মন্ডলীগামীদের সুযোগ গ্রহণ করে, মিষ্টি কথা বলে তাদের অর্থ হরণ করে, এবং তাদের ভ্রান্ত চিহ্নকার্য দ্বারা রোগ থেকে সুস্থ করার দাবীর দ্বারা লোকদেরকে ঠকায়৷ যেহেতু তারা অনর্থক ঈশ্বরের নাম নেয়, তাই তারা পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না৷
তাছাড়া, বেশ্যাগামীরা, নরঘাতকেরা ও প্রতিমাপুজকেরা এবং যে কেউ মিথ্যা ভালবাসে ও রচনা করে, তারা পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করতে পারে না৷ যখন শেষ সময় আসবে, কুক্কুরগণ ও মায়াবীগণ লোকদেরকে প্রতারিত করবে এবং তখনই খ্রীষ্টারীর উত্থান হবে৷ খ্রীষ্টারী যে ভ্রান্ত চিহ্নকার্য দ্বারা লোকদেরকে ঠকায় তাদের আত্মাকে উচ্চে উঠাতে চায়, পূজিত হতে চায়, তার সমস্ত অনুসারীগণ কখনই তে প্রবেশ করতে পারবে না৷
এইরূপে, যারা দাবী করে যে, আমাদের এখনো পাপ রয়েছে, আমরা যদি তার প্রতারনায় পতিত হই অথবা আমরা যদি চিহ্নকার্য দ্বারা প্রতারিত হই, যা আমাদের আবেগকে আলোড়িত করে, তাহলে শেষপর্যন্ত খ্রীষ্টারী ও শয়তানের সাথে নগরীর বাইরে পড়ে থাকব, রোদন ও দন্ত ঘর্ষণ করব, ঠিক বাক্য যেভাবে আমাদের পূর্বে সতর্ক করেছিল তেমনিভাবেই৷
১৬-১৭ পদ বলে যে, “আমি যীশু আপন দূতকে পাঠাইলাম, যেন সে মণ্ডলীগণের নিমিত্ত তোমাদের কাছে এই সকল সাক্ষ্য দেয়। আমি দায়ূদের মূল ও বংশ, উজ্জ্বল প্রভাতীয় নক্ষত্র। আর আত্মা ও কন্যা কহিতেছেন, আইস। যে শুনে, সেও বলুক, আইস। আর যে পিপাসিত, সে আইসুক; যে ইচ্ছা করে, সে বিনামূল্যেই জীবন-জল গ্রহণ করুক।”
আপনি কি বিনামূল্যে আপনার পাপের ক্ষমা লাভ করেছেন? পবিত্র আত্মার এবং ঈশ্বরের মন্ডলীর ভেতর দিয়ে আমাদের প্রভু আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রদান করেছেন, যা আমাদেরকে জীবন জল পান করতে সক্ষম করে৷ যারা ঈশ্বরের ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধিত, যারা সত্য বাক্যের জন্য পিপাসিত এবং যারা তাদের পাপের ক্ষমা পেতে ব্যাকুল- এই সমস্ত লোকদেরকে তাঁর ধার্মিকতার বস্ত্রে আচ্ছাদন করতে এবং পরিত্রাণের জীবন জলের দ্বারা তাদের তৃষ্ণা মেটাতে চেয়েছেন৷ নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবী যেখানে জীবন-জলে প্রবাহমান, সেই স্থানের আমন্ত্রণে সাড়া দেবার একটাই পথ আর তা হল. পাপের মোচন লাভ করা৷ 
 
 
আমেন, প্রভু যীশু আইস!
 
১৯ পদ বলে, “আর যদি কেহ এই ভাববাণী-গ্রন্থের বচন হইতে কিছু হরণ করে, তবে ঈশ্বর এই গ্রন্থে লিখিত জীবন-বৃক্ষ হইতে ও পবিত্র নগর হইতে তাহার অংশ হরণ করিবেন।” ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা নিজেদের চিন্তা-ভাবনার উপরে ভিত্তি করে ইচ্ছামত বিশ্বাস করতে পারি না৷ যদি এটা প্রভুর বাক্যে লেখা থাকে, তাহলে আমাদের যেটা বলতে হবে তা হল, “আমেন” যদি কেউ ঈশ্বরের বাক্যের প্রতি “না” বলে থাকে, তাহলে আমাদের প্রভুও তাকে বাইরে নিয়ে যাবেন, বলবেন, “তুমি আমার সন্তান নও৷” এই কারণে আমাদের অবশ্যই বাক্য অনুসারে তাঁকে বিশ্বাস করতে হবে৷ ঈশ্বরের বাক্য হতে, না আমরা কিছু বাদ দেব, না তাতে কিছু যোগ করব, বরং তাতে যেভাবে যা কিছু লেখা আছে, আমরা তা অবশ্যই বিশ্বাস করব৷
প্রভুর দাসগণের কথা পালন করা এবং ঈশ্বরের মন্ডলীর মধ্যে দিয়ে পবিত্র আত্মা যা বলেন তা বিশ্বাস করাই হল সত্য বিশ্বাস৷ তথাপি অনেক লোক রয়েছে, যারা তাদের বিশ্বাস থেকে জল ও আত্মার সুসমাচারকে বাদ দিয়েছে, কারণ তাদের হৃদয়ে পাপ রয়ে গেছে৷ এমনকি বাক্য যখন তাদেরকে বারংবার বলে যে, যারা পাপহীন তারাই কেবল ঈশ্বরের পবিত্র নগরীতে প্রবেশ করতে পারে, তথাপি তারা তাদের বিশ্বাস থেকে যীশুর বাপ্তিস্মকে বাদ রেখেছে এবং তার স্থানে অনুতাপের প্রার্থনা ও বস্তুগত জিনিস উত্সর্গ করার মত একগুঁয়ে কাজ করছে৷
যারা যীশুকে তাদের ত্রাণকর্তারূপে বিশ্বাস করে, তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাসের সাথে সাক্ষ্য দিতে হবে যে, যীশু যর্দন নদীতে যোহন কর্ত্তৃক যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন সেই বাপ্তিস্মের মধ্যে দিয়ে মানব জাতির সমস্ত পাপ যীশুতে চলে গেছে৷ যদি আপনি যীশুর বাপ্তিস্মকে বাদ দেন, তাহলে আপনি অপরিহার্যরূপে নিজের বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করছেন৷ অন্যকথায়, যদি আপনি জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস না করেন, তাহলে ক্রুশীয় রক্ত অর্থহীন হয় এবং খ্রীষ্টের পুনরুত্থানও আপনার কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়৷ একমাত্র যারা বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বর বিনামূল্যে তাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, তারা যীশুর পুনরুত্থানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং ২০ পদে প্রেরিত যোহন যেমনটি করেছেন, তারাও তেমনি প্রভু যীশুর আগমনের নিমিত্ত উচ্চঃস্বরে চিত্কার করতে পারে৷
২০ পদ বলে, “যিনি এই সকল কথার সাক্ষ্য দেন, তিনি কহিতেছেন, সত্য, আমি শীঘ্র আসিতেছি। আমেন; প্রভু যীশু, আইস।” কেবলমাত্র ধার্মিকেরাই বলতে পারে৷ ধার্মিকগণের প্রার্থনা অনুসারে আমাদের প্রভু শীঘ্রই এই পৃথিবীতে ফিরে আসবেন৷ যে সমস্ত ধার্মিকেরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা তাদের পাপের যথার্থ ক্ষমা লাভ করেছেন, তারাই প্রভুর পুনরাগমনের জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা ও আনন্দ করবেন৷ কেননা যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের বস্ত্র দ্বারা আচ্ছাদিত হয়েছে, অর্থাৎ যারা পাপহীন কেবল তারাই প্রভুকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত হয়েছে৷
আমাদের প্রভু কেবল সেইদিনের প্রতীক্ষায় রয়েছেন, যেদিন তিনি ধার্মিকগণের প্রতিক্ষায় সাড়া দেবেন, যে দিন তিনি এই পৃথিবীতে আসবেন৷ আমরা যারা ধার্মিক, তারা সহস্রাব্দের রাজ্য দ্বারা আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন, এবং যেখানে জীবন-জলের নদী প্রবাহমান সেই নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীতে প্রবেশের আশীর্বাদে আবৃত করবেন৷ আমাদের প্রভুর এই অপেক্ষা দীর্ঘকালব্যাপী নয়৷ এইরূপে, আমরা যা কিছু বলতে পারি তা হল, “আমেন; প্রভু যীশু, আইস।” আর বিশ্বাস এবং ধন্যবাদ প্রদান করতে করতে আমরা প্রভুর ফিরে আসা পর্যন্ত ব্যগ্রভাবে প্রতীক্ষা করতে পারি৷
চূড়ান্তভাবে, ২১ পদ বলে, “প্রভু যীশুর অনুগ্রহ পবিত্রগণের সঙ্গে থাকুক। আমেন।” প্রেরিত যোহন প্রত্যেকের জন্য তার আশীর্বাদের প্রার্থনার মাধ্যমে প্রকাশিত বাক্য শেষ করেছেন৷ তিনি হৃদয় দিয়ে প্রত্যেকের জন্য যীশু খ্রীষ্টের বিশ্বাসের নিমিত্ত, রক্ষা পাওয়ার নিমিত্ত এবং ঈশ্বরের পবিত্র নগরীতে প্রবেশের আশীর্বাদের প্রার্থনা উত্সর্গের দ্বারা শেষ করেছেন৷ 
আমার প্রিয় সাধুগণ, ঈশ্বর কর্ত্তৃক আমরা যে রক্ষা পেয়েছি, এর অর্থ হল, তিনি আমাদেরকে ভালোবেসেছেন, আমাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন এবং তাঁর প্রজা করেছেন৷ এটা স্বাভাবিকভাবেই চমত্কার ও কৃতজ্ঞতার বিষয় যে, ঈশ্বর আমাদেরকে ধার্মিক করেছেন যাতে আমরা তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করতে পারি৷
বাইবেল আমাদেরকে যা বলে, এটাই সে মূল কথা৷ তাঁর রাজ্যে আমাদেরকে অনন্তকাল বাস করাতে ঈশ্বর আমাকে ও আপনাকে এই সত্য বাক্য শোনানোর দ্বারা নুতন জন্ম লাভ করতে সাহায্য করেছেন, এবং আমাদেরকে সমস্ত পাপ ও বিচার থেকে মুক্ত করেছেন৷ প্রভুর পরিত্রাণের নিমিত্ত আমি তাঁর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি৷
এটা সৌভাগ্যের বিষয় যে, আমরা নিরাপদেই আমাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছি৷ আমরা সকল লোকেই ঈশ্বর কর্ত্তৃক মহা আশীর্বাদযুক্ত হয়েছি৷ আর আমরা তাঁর ভাববাদী, এরূপে এখনও যে সকল আত্মা এই সুসমাচার শোনে নি, আমাদেরকে অবশ্যই তাদের কাছে জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করতে হবে এবং সুসমাচারের পরিপূর্ণতা প্রকাশিত বাক্যও প্রচার করতে হবে৷
আমার প্রত্যাশা এবং প্রার্থনা, যখন শেষ আসবে তখন প্রত্যেকে যীশুতে বিশ্বাস করবে, যিনি সৃষ্টিকর্তা, ত্রাণকর্তা এবং বিচারক, আর এভাবে প্রভুর দেওয়া নুতন আকাশ ও নুতন পৃথিবীর পবিত্র স্থানে প্রবেশ করবে৷ আমাদের প্রভু যীশুর অনুগ্রহ আপনাদের সকলের সহবর্তী হোক৷