Search

শিক্ষা

বিষয় ৩: জল ও পবিত্র আত্মার সুসমাচার

[3-7] পরিবর্তিত যাজকত্ব (ইব্রীয় ৭:১-২৮)

পরিবর্তিত যাজকত্ব
(ইব্রীয় ৭:১-২৮)
সেই যে মল্কীষেদক, যিনি শালেমের রাজা ও পরাৎপর ঈশ্বরের যাজক ছিলেন, অব্রাহাম যখন রাজাদের সংহার হইতে ফিরিয়া আইসেন, তিনি তখন তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিলেন, ও তাঁহাকে আশীর্ব্বাদ করিলেন, এবং অব্রাহাম তাঁহাকে সমস্তের দশমাংশ দিলেন। প্রথমে তাঁহার নামের তাৎপর্য্য ব্যাখ্যা করিলে তিনি ‘ধার্ম্মিকতার রাজা’, পরে ‘শালেমের রাজা’, অর্থাৎ শান্তিরাজ; তাঁহার পিতা নাই, মাতা নাই, পূর্ব্বপুরুষাবলি নাই, আয়ুর আদি কি জীবনের অন্ত নাই; কিন্তু তিনি ঈশ্বরের পুত্রের সদৃশীকৃত; তিনি নিত্যই যাজক থাকেন। বিবেচনা করিয়া দেখ, তিনি কেমন মহান্‌, যাঁহাকে সেই পিতৃকুলপতি অব্রাহাম উত্তম উত্তম লুটদ্রব্য লইয়া দশমাংশ দান করিয়াছিলেন। আর লেবির সন্তানদের মধ্যে যাহারা যাজকত্ব প্রাপ্ত হয়, তাহারা ব্যবস্থানুসারে প্রজাবৃন্দের অর্থাৎ নিজ ভ্রাতৃগণের কাছে দশমাংশ গ্রহণ করিবার বিধি পাইয়াছে, যদিও তাহারা অব্রাহামের বংশ হইতে উৎপন্ন হইয়াছে; কিন্তু ঐ যে ব্যক্তি তাহাদের বংশজাত বলিয়া নির্দ্দিষ্ট নহেন, তিনি অব্রাহাম হইতে দশমাংশ লইয়াছিলেন, এবং প্রতিজ্ঞাকলাপের সেই অধিকারীকেই আশীর্ব্বাদ করিয়াছিলেন। ক্ষুদ্রতর পাত্র গুরুতর পাত্রকর্ত্তৃক আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়, এই কথা ত সমস্ত প্রতিবাদের বহির্ভূত। আবার এই স্থলে মরণশীল মনুষ্যেরাই দশমাংশ পায়, কিন্তু ঐ স্থলে তিনি পান, যাঁহার বিষয়ে এমন সাক্ষ্য দেওয়া হইয়াছে যে, তিনি জীবনবিশিষ্ট। আবার ইহাও বলিলে বলা যাইতে পারে যে, অব্রাহামের দ্বারা দশমাংশগ্রাহী লেবি আপনি দশমাংশ দিয়াছেন, কারণ যখন মল্কীষেদক তাঁহার পিতার সহিত সাক্ষাৎ করেন, তখন লেবি পিতার কটিতে ছিলেন। অতএব যদি লেবীয় যাজকত্ব দ্বারা সিদ্ধি হইতে পারিত—সেই যাজকত্বের অধীনেই ত প্রজাবৃন্দ ব্যবস্থা পাইয়াছিল—তবে আবার কি প্রয়োজন ছিল যে, মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে অন্যবিধ এক যাজক উৎপন্ন হইবেন, এবং তাঁহাকে হারোণের রীতি অনুযায়ী বলিয়া ধরা হইবে না? যাজকত্ব যখন পরিবর্ত্তিত হয়, তখন ব্যবস্থারও পরিবর্ত্তন হয়, ইহা আবশ্যক। এ সকল কথা যাঁহার উদ্দেশে বলা যায়, তিনি ত অন্যবিধ বংশভুক্ত; সেই বংশের মধ্যে যজ্ঞবেদির সেবাধিকারী কেহই হয় নাই। ফলতঃ আমাদের প্রভু যিহূদা হইতে উদিত হইয়াছেন, ইহা সুস্পষ্ট; কিন্তু সেই বংশের উদ্দেশে মোশি যাজকদের বিষয়ে কিছুই বলেন নাই। আমাদের কথা আরও অধিক স্পষ্ট হইয়া পড়ে, যখন মল্কীষেদকের সাদৃশ্য অনুযায়ী আর এক জন যাজক উৎপন্ন হন, যিনি মাংসিক বিধির নিয়ম অনুযায়ী হন নাই, কিন্তু অলোপ্য জীবনের শক্তি অনুযায়ী হইয়াছেন। কেননা তিনি এই সাক্ষ্য প্রাপ্ত হইতেছেন, “তুমিই মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে অনন্তকালীন যাজক।” কারণ এক পক্ষে পূর্ব্বকার বিধির দুর্ব্বলতা ও নিষ্ফলতা প্রযুক্ত তাহার লোপ হইতেছে —কেননা ব্যবস্থা কিছুই সিদ্ধ করে নাই—পক্ষান্তরে এমন এক শ্রেষ্ঠ প্রত্যাশা আনা হইতেছে, যদ্দ্বারা আমরা ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হই। অধিকন্তু ইহা বিনা শপথে হয় নাই। উহারা ত বিনা শপথে যাজক হইয়া আসিতেছে; কিন্তু ইনি শপথ সহকারে তাঁহারই দ্বারা নিযুক্ত, তিনি তাঁহার বিষয়ে কহিলেন, “প্রভু এই শপথ করিলেন, আর তিনি অনুশোচনা করিবেন না, তুমিই অনন্তকালীন যাজক।” অতএব যীশু এইরূপ মহৎ বিষয়েও উৎকৃষ্টতর নিয়মের প্রতিভূ হইয়াছেন। আর উহারা অনেক যাজক হইয়া আসিতেছে, কারণ মৃত্যু উহাদিগকে চিরকাল থাকিতে দেয় না। কিন্তু তিনি ‘অনন্তকাল’ থাকেন, তাই তাঁহার যাজকত্ব অপরিবর্ত্তনীয়। এই জন্য, যাহারা তাঁহা দিয়া ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হয়, তাহাদিগকে তিনি সম্পূর্ণরূপে পরিত্রাণ করিতে পারেন, কারণ তাহাদের নিমিত্ত অনুরোধ করণার্থে তিনি সতত জীবিত আছেন। বস্তুতঃ আমাদের জন্য এমন এক মহাযাজক উপযুক্ত ছিলেন, যিনি সাধু, অহিংসক, বিমল, পাপিগণ হইতে পৃথক্‌কৃত, এবং স্বর্গ সকল অপেক্ষা উচ্চীকৃত। ঐ মহাযাজকগণের ন্যায় প্রতিদিন অগ্রে নিজ পাপের, পরে প্রজাবৃন্দের পাপের নিমিত্ত নৈবেদ্য উৎসর্গ করা ইহাঁর পক্ষে আবশ্যক নয়, কারণ আপনাকে উৎসর্গ করাতে ইনি সেই কার্য্য একবারে সাধন করিয়াছেন। কেননা ব্যবস্থা যে মহাযাজকদিগকে নিযুক্ত করে, তাহারা দুর্ব্বলতাবিশিষ্ট মনুষ্য; কিন্তু ব্যবস্থার পশ্চাৎকালীয় ঐ শপথের বাক্য যাঁহাকে নিযুক্ত করে, তিনি অনন্তকালের জন্য সিদ্ধিপ্রাপ্ত পুত্র।
 
 

যীশুই স্বর্গীয় যাজকত্ব সম্পাদন করেছেন

 
কে শ্রেষ্ঠ, মহাযাজক কি মল্কীষেদক, নাকি জাগতিক ভাবে মহাযাজক হারোণের বংশধর?
মহাযাজক মল্কীষেদক৷
 
পুরাতন নিয়মের কালে মল্কীষেদক নামে একজন মহাযাজক ছিলেন৷ অব্রাহমের সময়, কদলায়োমর এবং অন্যান্য রাজারা মিলে সদোম এবং ঘমোরার সব কিছু লুট করে৷ অব্রাহম তখন তাঁর বংশধরদের এবং দাসদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেন এবং তাদের নিয়ে কদলায়োমর এবং তার সঙ্গী রাজাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হন৷
তখন কদলায়োমর, এলমের রাজা এবং তার সাথে অন্যান্য রাজারা অব্রাহমের ভাইয়ের ছেলে লোটকে এবং তার সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়৷ অব্রাহম তাঁর শত্রুদের পরাজিত করার পর শালেমের রাজা এবং মহাযাজক মল্কীষেদক রুটি এবং দ্রাক্ষারস বের করে আনলেন এবং অব্রাহমকে আশীর্বাদ করলেন৷ এবং অব্রাহম তাঁকে সমস্ত দ্রব্যের দশমাংশ দিলেন (আদিপুস্তক ১৪ অধ্যায়)৷
বাইবেলে মহাযাজক মল্কীষেদককে মহত্ব এবং অন্যান্য বংশানুক্রমিক মহাযাজকদের বিষয়েও বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে৷ মহাযাজক মল্কীষেদক ছিলেন পিতৃহীন, মাতৃহীন, বংশাবলিহীন; অথচ “শান্তিরাজ”, “ধার্মিকতার রাজা”৷ দিনের শুরু বা জীবনের শেষ না থাকলেও তাঁকে ঈশ্বরের পুত্রের মত অনন্তকাল স্থায়ী যাজক তৈরী করা হয়েছে৷
বাইবেলে যীশু খ্রীষ্টের মহত্ব খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে, যিনি ছিলেন নুতন নিয়মের যীশুর সাথে তুলনা করলে পুরাতন নিয়মের মহাযাজক যীশু খ্রীষ্ট, তিনি মল্কীষেদক৷
লেবীয় বংশধরেরা যাজক ছিলেন এবং তারা সকলের কাছ থেকে দশমাংশ সংগ্রহ করতেন, এমনকি অব্রাহমের বংশধর নিজেদের ভাইদের কাছ থেকেও৷ কিন্তু অব্রাহম যখন মহাযাজক মল্কীষেদককে দশমাংশ দেন, লেবী তখনও তার পিতার কটিতে ছিলেন৷
পুরাতন নিয়মের যাজকেরা কি যীশুর চেয়েও শ্রেষ্ঠ ছিলেন? বাইবেলে এর ব্যাখ্যা রয়েছে৷ যীশু কি জাগতিক মহাযাজকদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ছিলেন? কার দ্বারা কার আশীর্বাদযুক্ত হওয়া উচিত? ইব্রীয় পুস্তকের লেখক প্রথম থেকেই এই ব্যাপারে আলোচনা করেছেন৷ “ক্ষুদ্রতর পাত্র গুরুতর পাত্রকর্ত্তৃক আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়, এই কথা ত সমস্ত প্রতিবাদের বহির্ভূত৷”
আমাদের কিভাবে বিশ্বাসে বেঁচে থাকা উচিত? আমাদের কি পুরাতন নিয়মের সমাগম তাম্বুতে ব্যবস্থা দ্বারা ঈশ্বর যে বলিদান প্রথা দিয়েছিলেন সেই অনুযায়ী বেঁচে থাকা উচিত, অথবা স্বর্গীয় মহাযাজক যীশু খ্রীষ্ট, যিনি জল ও রক্তের মাধ্যমে বলিদান সাধন করেছিলেন, তাঁর উপরে নির্ভর করা উচিত?
এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা যে দিকটি বেছে নেব, তার উপরেই নির্ভর করছে আমরা আশীর্বাদযুক্ত নাকি অভিশপ্ত হব৷ আমরা কি ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী জীবন যাপন করব এবং প্রতিদিন বলিদান করব, অথবা আমরা যীশু খ্রীষ্টে দেওয়া পরিত্রাণে বিশ্বাস করব? তিনি জল ও রক্তের মাধ্যমে চিরদিনের তরে একবারই নিজেকে বলিদান করেছেন৷ এই দুটোর মধ্যে যে কেন একটিকে আমাদের বেছে নিতে হবে৷
পুরাতন নিয়মের সময়ে ইস্রায়েলীয়রা হারোণ এবং লেবীর বংশধরদের দিকে তাকিয়ে থাকত৷ বর্তমানের নুতন নিয়মের সময়ে, আমরা যদি প্রশ্ন করি, কে শ্রেষ্ঠ, যীশু অথবা হারাণের বংশধর যাজকেরা, তাহলে নিঃসন্দেহে বলতে পারি যীশুই শ্রেষ্ঠ৷ কিন্তু এই সত্য স্পষ্টরূপে জানার পরেও খুব কম লোকেই তা বিশ্বাস করে৷
বাইবেলে এই প্রশ্নের একটি সুনির্দিষ্ট উত্তর রয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে যীশু খ্রীষ্ট যিনি ভিন্ন বংশের কখনো যাজকত্ব করেন নি, তিনি স্বর্গীয় যাজকত্ব গ্রহণ করলেন৷ “যাজকত্ব যখন পরিবর্ত্তিত হয়, তখন ব্যবস্থারও পরিবর্ত্তন হয়, ইহা আবশ্যক।”
ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দেরকে আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং ৬১৩ টি ব্যবস্থা মোশির মাধ্যমে দিয়েছিলেন৷ মোশি তাঁর লোকেদেরকে আজ্ঞা ও ব্যবস্থা অনুসারে জীবন যাপন করতে বললেন এবং লোকেরা তার কথায় একমত হলেন৷
 
ঈশ্বর কেন প্রথম নিয়ম সরিয়ে রেখে দ্বিতীয়টি প্রতিষ্ঠা করলেন?
কারন মানুষ এতই দুর্বল যে তারা প্রথম আজ্ঞা অনুসারে জীবন যাপন করতে পারত না৷
 
বাইবেলে প্রথম পাঁচটি পুস্তক- আদিপুস্তক, যাত্রাপুস্তক, লেবীয়পুস্তক, গনণাপুস্তক ও দ্বিতীয় বিবরণে ঈশ্বর যে সকল ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, ইস্রায়েল জাতি সেই ব্যবস্থা অনুসারে জীবনযাপন করার শপথ নিয়েছিল৷ ঈশ্বরের দেওয়া প্রতিটি বিধিই তারা বিনা দ্বিধায় মেনে নিয়েছিল৷
যাহোক, আমরা দেখতে পাই যে, দ্বিতীয় বিবরণের পর থেকে, অর্থাৎ যিহোশূয়ের পুস্তকের পর থেকে তারা কখনই ব্যবস্থা অনুযায়ী জীবনযাপন করতে পারে নি৷ বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ থেকে ১ রাজাবলি ও ২ রাজাবলি পর্যন্ত দেখা যায় যে, তারা তাদের নেতাদের অশ্রদ্ধা করেছে এবং তারা এতই নেমে গিয়েছিল যে, তারা সমাগম তাম্বুর বলিদান প্রথারও পরিবর্তন করে ফেলেছিল৷ 
তাই শেষ পর্যন্ত মালাখি পুস্তকে দেখা যায় যে, ঈশ্বরের বিধি-নিষেধ অমান্য করে, তারা নিঁখুত পশু বলিদান না করে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অগ্রাহ্য এমন পশু বলিদান করত৷ তারা যাজককে অনুরোধ করত, “দয়া করে এত নিঁখুত ভাবে দেখবেন না, এটাই গ্রহণ করুন৷” ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুযায়ী বলিদান না করে তারা নিজেদের ইচ্ছাঅনুসারে বলিদান করত৷
পুরাতন নিয়মের কালে ইস্রায়েল জাতি অন্তত একবারের জন্য হলেও ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে পারে নি৷ ব্যবস্থায় প্রকাশিত পরিত্রানকে তারা ভুলে গিয়েছিল এবং তুচ্ছ জ্ঞান করেছিল৷ এই জন্যই ঈশ্বরকে বলিদান প্রথা পরিবর্তন করতে হল৷ যিরমিয় পুস্তকে ঈশ্বর বলেন, “আমি ইস্রায়েল কুলের ও যিহূদা কূলের সহিত এক নুতন নিয়ম স্থির করিব৷”
আসুন যিরমিয় ৩১:৩১-৩৪ পদ দেখি, সদাপ্রভু বলেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি ইস্রায়েল-কুলের ও যিহূদা-কুলের সহিত এক নূতন নিয়ম স্থির করিব। মিসর দেশ হইতে তাহাদের পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার জন্য তাহাদের হস্তগ্রহণ করিবার দিনে আমি তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করিয়াছিলাম, সেই নিয়মানুসারে নয়; আমি তাহাদের স্বামী হইলেও তাহারা আমার সেই নিয়ম লঙ্ঘন করিল, ইহা সদাপ্রভু কহেন। কিন্তু সেই সকল দিনের পর আমি ইস্রায়েল-কুলের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, আমি তাহাদের অন্তরে আমার ব্যবস্থা দিব, ও তাহাদের হৃদয়ে তাহা লিখিব; এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব, ও তাহারা আমার প্রজা হইবে। আর, ‘তোমরা সদাপ্রভুকে জ্ঞাত হও,’ এই কথা বলিয়া তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন প্রতিবাসীকে ও আপন আপন ভ্রাতাকে আর শিক্ষা দিবে না; কারণ তাহারা ক্ষুদ্র ও মহান সকলেই আমাকে জ্ঞাত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন; কেননা আমি তাহাদের অপরাধ ক্ষমা করিব, এবং তাহাদের পাপ আর স্মরণে আনিব না।
ঈশ্বর বললেন যে, তিনি একটি নুতন নিয়ম স্থির করলেন৷ যদিও ইতিপূর্বেই ইস্রায়েলীয়দের জন্য তিনি নিয়ম প্রচলন করেছিলেন, কিন্তু তারা ঈশ্বরের সেই বাক্য অনুসারে চলতে পারে নি৷ তাই তিনি তাঁর সন্তানদের পরিত্রাণের জন্য নুতন নিয়ম তৈরী করতে চাইলেন৷
ঈশ্বরের সাক্ষাতে তারা প্রতিজ্ঞা করেছিল, “আমরা একমাত্র তোমারই আরাধনা করব এবং তোমার বাক্য ও ব্যবস্থা অনসারে জীবন যাপন করব৷” ঈশ্বর তাদের বলেছিলেন, “আমার সাক্ষাতে তোমাদের অন্য কোন দেবতা না থাকুক৷” এবং ইস্রায়েলীয়রা বলেছিল, “আমরা অবশ্যই অন্য কোনো দেবতার সেবা করব না৷ তুমিই আমাদের একমাত্র ঈশ্বর৷ আমাদের আর কোনো দেবতা কখনোই থাকবে না”৷ কিন্তু তারা তাদের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পারল না৷
ব্যবস্থার মূল বক্তব্য দশটি আজ্ঞার মধ্যে সীমাবদ্ধ: “আমার সাক্ষাতে তোমার অন্যকোন দেবতা না থাকুক৷ নিজেদের জন্য তোমরা কোনো ক্ষোদিত প্রতিমা নির্মান করবে না, বা তার সামনে নত হবে না, তার সেবাও করবে না৷ বিশ্রাম বারকে পবিত্র হিসাবে মেনে চলবে৷ অনর্থক ঈশ্বরের নাম নিও না৷ পিতামাতাকে সমাদর করবে৷ নরহত্যা করবে না৷ ব্যভিচার করবে না৷ চুরি করবে না৷ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না৷ প্রতিবেশীর কোনো বস্তুতে লোভ করবে না” (যাত্রাপুস্তক ২০ অধ্যায়)৷
এই আজ্ঞাগুলোকে ৬১৩ বিধিতে বিভক্ত করা হয়েছিল, যেন তারা এগুলো পালন করে৷ “কন্যাদের প্রতি কি করা যাবে না, পুত্রদের প্রতি কি করা যাবে না, বিধবাদের প্রতি কি করতে হবে....৷” ঈশ্বর তাদেরকে সব ভালো কাজ করতে বলেছিলেন, কিন্তু মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন৷ এই গুলোই হল দশ আজ্ঞা এবং ৬১৩টি বিধি৷
যাহোক, সমগ্র মানবজাতির মধ্যে একজনও ছিল না যে এই সমস্ত আজ্ঞা বা ব্যবস্থা পালন করতে পেরেছিল৷ এই জন্য ঈশ্বরকে অন্য পন্থা অবলম্বন করতে হয়েছিল যেন তাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করা যায়৷
কখন যাজকত্ব পরিবর্তিত হল? যীশু এই পৃথিবীতে আসবার পরে যাজকত্ব পরিবর্তিত হল৷ হারোণের এবং তাঁর বংশধরদের কাছ থেকে যীশু যাজকত্ব নিয়ে নিলেন৷ লেবীয় বংশের যাজকদের উত্তরাধিকার সুত্রে সমাগম তাম্বুতে যে বলিদান প্রথার উপর যাজকত্ব করার অধিকার ছিল, তিনি তা সরিয়ে নিলেন৷ তিনি নিজেই স্বর্গীয় মহাযাজকত্ব নিলেন৷
তিনি এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, হারোণের বংশে নয়, যিহূদার বংশে, রাজার বংশে৷ বাপ্তিস্মের এবং ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে তিনি নিজেকে বলিরূপে উত্সর্গ করলেন এবং সমগ্র মানবজাতিকে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করলেন৷
নিজেকে উত্সর্গ করার মাধ্যমে তিনি আমাদের পাপ সমস্যার সমাধান করলেন৷ তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় বলিদানের রক্তে তিনি মানুষের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিলেন৷ তিনি সমস্ত পাপের জন্য অনন্ত কালের জন্য একবারই নিজেকে বলি দিলেন৷
 
 

যাজকত্ব পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যবস্থারও পরিবর্তন হল

 
পরিত্রাণের পরিবর্তিত ব্যবস্থা কি?
যীশু খ্রীষ্টের অনন্তকালীয় বলিদান৷
 
প্রিয় বন্ধুগণ, পুরাতন নিয়মে যাজকত্ব নুতন নিয়মে পরিবর্তিত হয়েছে৷ পুরাতন নিয়মের সময়, লেবীয়রা অর্থাৎ হারোণের বংশধরেরা যাজক হিসাবে ইস্রায়েলীয়দের পূর্ববর্তী বছরের পাপ থেকে মুক্তি লাভের জন্য যাজক হিসাবে প্রায়শ্চিত্তের বলিদান উত্সর্গ করত৷ মহাযাজক মহা পবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেন৷ তিনি বলিকৃত পশুর রক্ত নিয়ে অনুগ্রহ সিংহাসনের সামনে উপস্থিত হতেন৷ মহা পবিত্র স্থানকে যে পর্দা দ্বারা পৃথক করা হয়েছিল, কেবলমাত্র মহাযাজকই সেই পর্দার অন্তরালে মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করতে পারতেন৷
কিন্তু যীশু আসবার পরে, হারোণের যাজকত্ব তাঁর উপর অর্পিত হয়েছে৷ যীশু অনন্তকালীয় যাজকত্ব গ্রহণ করেছেন৷ নিজেকে বলি দেওয়ার মাধ্যমে তিনি এই যাজকত্ব গ্রহণ করেছেন, যেন সমস্ত মানব জাতি তাদের পাপ থেকে উদ্ধার পায়৷
পুরাতন নিয়মের সময়ে, অন্যদের পাপমোচনের উদ্দেশ্যে বলিদান উত্সর্গ করার আগে মহাযাজককেও তার নিজের পাপ ধৌত করার জন্য বলিকৃত পশুর মস্তকে হস্তার্পণ করে পাপ স্বীকার করতে হত৷ হস্তার্পণ করে তিনি এই বলে নিজের পাপ অর্পণ করতেন, “ হে ঈশ্বর, আমি পাপ করেছি৷” তারপর তিনি পশু বলিদান করতেন এবং তার রক্ত সাতবার অনুগ্রহ সিংহাসনের সামনে ছিটিয়ে দিতেন৷
মহাযাজক হারোণ নিজেই যদি পরিস্কৃত না হতেন, তাহলে এটা সহজেই বোঝা যায় যে, অন্যেরা কত দুর্বল থাকত৷ লেবীর বংশধর মহাযাজক হারোণ নিজেই একজন পাপী ছিলেন, এই জন্য তাঁর নিজের এবং পরিবারের পাপমুক্তির জন্য পশু বলিদান করতে হত৷
যিরমিয় ৩১ অধ্যায়ে ঈশ্বর বলেন, “আমি নিয়ম ভঙ্গ করব৷ আমি তোমাদের সাথে নিয়ম করেছিলাম কিন্তু তোমরা তা রক্ষা কর নি৷ তাই যে নিয়ম তোমাদের পবিত্র করতে পারে নি সেই নিয়ম পরিবর্তন করে আমি তোমাদের উদ্ধারের জন্য নুতন নিয়ম করব৷ আমার আজ্ঞা পালনের মাধ্যমে তোমরা উদ্ধার পাবে বা, বরং জল ও আত্মার সুসামাচারের মাধ্যমে নিজেদের উত্সর্গ করে পরিত্রাণ পাবে”৷
ঈশ্বর আমাদের নুতন নিয়ম দিলেন৷ উপযুক্ত সময়ে যীশু মানুষ বেশে এই পৃথিবীতে এলেন, জগতের পাপভার তুলে নেওয়ার জন্য নিজেকে উত্সর্গ করলেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন, যেন যে কেউ বিশ্বাস করে সে পাপ থেকে উদ্ধার পায়৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছিলেন৷
ঈশ্বরের পূর্বোক্ত ব্যবস্থাকে সরিয়ে নুতন ব্যবস্থা স্থলাভিষিক্ত হল৷ ইস্রায়েলীয়রা যদি ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করত তাহলে তারা নিশ্চয় রক্ষা পেত৷ কিন্তু তারা তা পালন করতে পারে নি৷ “কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে” (রোমীয় ৩:২০)৷
ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের এটাই বোঝাতে চেয়েছিলেন যে তারা পাপী এবং ব্যবস্থা তাদেরকে উদ্ধার করতে পারবে না৷ তিনি তাদেরকে জল ও আত্মার ব্যবস্থা দ্বারা পরিত্রাণ করলেন, কর্ম দ্বারা নয়৷ তিনি তাঁর অসীম প্রেমের কারণে আমাদের জন্য নুতন নিয়ম দিলেন, অর্থাৎ যেন আমরা যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের দ্বারা জগতের সমস্ত পাপভার থেকে মুক্ত হতে পারি৷
যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তের তত্ত্ব না জেনে বা না বুঝে আপনি যদি যীশুতে বিশ্বাস করেন, আপনার সে বিশ্বাস বৃথা৷ যদি তাই করা হয়, তাহলে যীশুতে বিশ্বাস না করা অবস্থায় যে সমস্যায় মানুষ ভোগে, ভুল বিশ্বাসে তার সমস্যা আরো বেশী হয়৷
ঈশ্বর বললেন যে, পাপ থেকে মানুষকে উদ্ধার করবার জন্য তিনি এক নুতন নিয়ম করবেন৷ ফলে, ব্যবস্থার কর্ম দ্বারা নয়, কিন্তু জল ও রক্তের মাধ্যমে ধার্মিকতার ব্যবস্থার দ্বারাই আমরা এখন পরিত্রাণ পেয়েছি৷
এটা ছিল তাঁর অনন্তকালীয় প্রতিজ্ঞা এবং বিশ্বাসীদের জন্য তিনি তা পূর্ণ করলেন৷ এবং তিনি যীশুর মহিমা সম্পর্কে আমাদের জানালেন৷ তিনি দেখালেন যে, পুরাতন নিয়মের হারোণ বংশীয় যাজকদের চাইতে তিনি কত শ্রেষ্ঠ৷
যীশুর জল ও রক্তের পরিত্রাণে বিশ্বাস করে আমরা বিশেষত্ব লাভ করি৷ বিষয়টির প্রতি মনোযোগী হন৷ আপনার পালক যত শিক্ষিতই হোক বা যত ভাল বক্তাই হোক, যীশুর চেয়ে সে কিভাবে শ্রেষ্ঠ হতে পারে? কোনো ভাবেই তা সম্ভব নয়৷ শুধুমাত্র জল ও রক্তের সুসমাচার দ্বারা আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি, কিন্তু ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালনের মাধ্যমে কখনোই তা সম্ভব নয়৷ কারণ, যাজকত্ব পরিবর্তিত হয়েছে, পরিত্রাণের বিধিও পরিবর্তিত হয়েছে৷
 
 
ঈশ্বরের প্রেমের শ্রেষ্ঠত্ব
 
কোনটি শ্রেষ্ঠ, ঈশ্বরের প্রেম, না কি ঈশ্বরের ব্যবস্থা?
ঈশ্বরের প্রেম
 
কেবলমাত্র যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমেই আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি৷ যীশু আমাদের কিভাবে উদ্ধার করেছেন এবং ঈশ্বরের প্রেম জানার মাধ্যমে৷ তাহলে, ঈশ্বরের আজ্ঞায় বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের প্রেমের মহত্বে বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য কি?
ব্যবস্থানুযায়ী ঈশ্বরের বাক্যের উপর নির্ভর করার চেয়ে নিজেদের মান্ডলিক মতবাদ এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে থাকে৷ যাহোক, জল ও আত্মার মাধ্যমে যীশুর প্রেমের যে মহৎ পরিত্রাণ সাধিত হয়েছে, একমাত্র সেই সত্যে বিশ্বাস করাই প্রকৃত ও সম্পূর্ণ আত্মিক বিশ্বাস৷
এমন কি আজও অনেকের ধারণা যে, তাদের আদি পাপ ক্ষমা হয়ে গেছে, কিন্তু দৈনন্দিন পাপের জন্য তাদেরকে অনুতপ্ত হতে হবে৷ অনেকেই এই ধারণায় বিশ্বাসী এবং তাই তারা পুরাতন নিয়মের ব্যবস্থা অনুযায়ী চলতে চায়৷ যীশুর দেওয়া মহৎ পরিত্রাণ যে, জল ও আত্মার মাধ্যমে এসেছে, তারা এখনও সেই সত্যকে উপেক্ষা করে৷
পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য ইস্রায়েলীয়দেরকে ঈশ্বরের দেওয়া ব্যবস্থা অনুসারে জীবন যাপন করতে হত, কিন্তু তারা তা করতে পারে নি বা পাপ থেকে উদ্ধারও পায় নি৷ কারণ ঈশ্বর জানেন যে, আমরা দুর্বল এবং অসম্পূর্ণ, তাই তিনি ব্যবস্থাকে সরিয়ে দিলেন৷ আমাদের নিজেদের কর্ম দ্বারা আমরা কখনই উদ্ধার পেতে পারি না৷ যীশু বলেন যে, তিনি তাঁর জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারাই আমাদেরকে পরিত্রাণ করবেন৷ তিনি বলেন, “আমিই তোমাদের সমস্ত পাপ থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করব৷” আদিপুস্তকেও ঈশ্বর সেই কথা বলেছিলেন৷
“নারীর বংশ তোমার মস্তক চূর্ণ করিবে, এবং তুমি তাহার পাদমূল চূর্ণ করিবে” (আদিপুস্তক ৩:১৫)৷ আদম ও হবা পাপে পতিত হবার পরে নিজেদের সেই পাপ ঈশ্বরের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখার জন্য গাছের পাতা দিয়ে দেহাবরণ তৈরী করলেন৷ কিন্তু ঈশ্বর তাদেরকে ডাকলেন এবং চামড়ার বস্ত্রে অর্থাৎ পরিত্রাণের বস্ত্রে আবৃত করলেন৷ আদি পুস্তকে দুই ধরনের পরিত্রাণ বস্ত্রের কথা লেখা আছে৷ একটি ডুমুর গাছের পাতার তৈরী, অন্যটি চামড়ার তৈরী৷ আপনার কি মনে হয়, কোনটি শ্রেষ্ঠ? অবশ্যই পশুর চামড়ার বস্ত্র, কারণ মানুষের রক্ষার উদ্দেশ্যেই পশুটিকে বলি দেওয়া হয়েছিল৷
গাছের পাতার বস্ত্র খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়৷ আপনি নিশ্চয় জানেন, ডুমুর গাছের পাতাকে অনেকটা পাঁচ আঙ্গুল বিশিষ্ট হাতের মত দেখা যায়৷ কাজেই ডুমুর গাছের পাতা দ্বারা নিজেকে আবৃত করা মানে নিজের ভালো কাজ দ্বারা পাপ ঢেকে রাখার চেষ্টা করা৷ আপনি যদি ডুমুর গাছের বস্ত্র পরিধান করে বসে থাকেন, তাহলে তার পাতাগুলি শীঘ্রই ছিঁড়ে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। ছোট বেলায়, খেলার সময় আমি পাতা দিয়ে আমি সৈনিকের বস্ত্র তৈরী করতাম, যত সাবধানেই করতাম না কেন, দিনের শেষে সেগুলো ছিঁড়ে যেত৷ ঠিক একইভাবে, মানুষের মাংসিক স্বভাব দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা অসম্ভব৷
কিন্তু জল এবং রক্ত, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে সাধিত পরিত্রাণ ঈশ্বরের প্রেমের মহত্ব প্রকাশ করে৷ এভাবেই ঈশ্বরের ব্যবস্থার চেয়ে তাঁর প্রেম শ্রেষ্ঠতর৷
 
 
যারা এখনও ঈশ্বরের ব্যবস্থায় বিশ্বাসী
 
ব্যাবস্থানুসারীরা কেন তাদের কর্ম দ্বারা প্রতিদিন নুতন বস্ত্র তৈরী করে?
কারণ তারা জানে না যে কর্মের দ্বারা ধার্মিকতা পাওয়া যায় না৷
 
যারা ডুমুরের পাতার বস্ত্র তৈরী করে, তারা ব্যবস্থানুযায়ী জীবনযাপন করে৷ এই সমস্ত ভ্রান্ত বিশ্বাসীদের নিয়মিতভাবে তাদের বস্ত্র পরিবর্তন করতে হয়৷ প্রতি রবিবারে গীর্জায় গিয়ে তারা নুতন আবরণ তৈরী করে৷ “হে ঈশ্বর, গত সপ্তাহে আমি অনেক পাপ করেছি৷ কিন্তু প্রভু আমি বিশ্বাস করি তুমি ক্রুশে আমাকে উদ্ধার করেছ৷ দয়া করে তোমার ক্রুশীয় রক্ত দ্বারা আমার পাপ ধৌত কর৷” সেখানেই তারা নুতন আবরণ সৃষ্টি করে৷ “ধন্য প্রভু! হাল্লেলুয়া!”
কিন্তু অল্পক্ষণ পরেই বাড়িতে এসে তাদেরকে আবার নুতন করে বস্ত্র তৈরী করতে হয়৷ কেন? কারণ তাদের আগের বস্ত্র ততক্ষণে নষ্ট হয়ে গেছে৷ “প্রভু, গত তিন দিন আমি অনেক পাপ করেছি৷ আমাকে ক্ষমা কর৷” বার বার তারা অনুতাপের বস্ত্র তৈরী করে ও পরিধান করে৷
প্রথম দিকে হয়ত কয়েক দিন বস্ত্র পরিবর্তন করতে হয় না, কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখা যায় যে, প্রতিদিনই বস্ত্র পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে৷ যেহেতু তারা কখনই ব্যবস্থা অনুসারে জীবনযাপন করতে পারে না, তাই তারা লজ্জিত হয়, “হায়! হায়! কি লজ্জাজনক ব্যাপার! হে প্রভু আমি আবারও পাপ করেছি৷” আবারও তাকে অনুতাপের মাধ্যমে নুতন বস্ত্র পরিধান করতে হয়৷ “হে প্রভু, আজ ডুমুরের পাতার বস্ত্র তৈরী করা সত্যিই অসুবিধাজনক৷” তারা খুব কষ্ট করে আবার নতুন সেট তৈরী করে৷
যখনই এই সব লোক প্রভুকে ডাকে, তখনই তারা তাদের পাপ স্বীকার করে৷ তারা তাদের ঠোঁট কামড়ায় এবং চিত্কার করে ঈশ্বরকে ডাকে, “হে ঈ---শ্ব---র” এবং প্রতিদিনই নুতন বস্ত্র তৈরী করতে থাকে৷ তারপর তারা এ বিষয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লে কি হয়?
বছরে একবার বা দুবার তারা পাহাড়ে গিয়ে উপবাস প্রার্থনা করে৷ তারা আরো দীর্ঘস্থায়ী বস্ত্র প্রস্তুত করার জন্য পরিশ্রম করে৷ “ হে প্রভু, দয়া করে আমার পাপ ক্ষমা কর৷ আমাকে নুতন করে দাও৷ আমি তোমাতে বিশ্বাস করি প্রভু৷” তারা মনে করে রাতে প্রার্থনা করা বেশী ভালো৷ কাজেই তারা দিনের বেলা বিশ্রাম করে এবং রাত হলেই তারা গাছে চড়ে বসে অথবা অন্ধকার গুহায় বসে চিত্কার করে ডাকে, “হে প্রভু আমি বিশ্বাস করি”৷ “♪ আমি অনুতপ্ত এবং আমার হৃদয় অনুতাপে ভরে দাও♪” তারা চিত্কার করে প্রার্থনা করে এবং বলে, “আমি বিশ্বাস করি৷” এভাবে তারা নুতন বস্ত্র তৈরী করে এবং ভাবে যে, এটা বোধ হয় আরো দীর্ঘসময় স্থায়ী হবে, কিন্তু তা কখনই হয় না৷
পাহাড়ের উপর প্রার্থনা করার পরে কি সতেজ হয়! ঠান্ডা হওয়ার মত অথবা বসন্তকালে গাছে বা ফুলে এক পশলা বৃষ্টির মত সতেজ মনে হয়, তাদের আত্মা শান্তিতে এবং সর্বশক্তিমানের অনুগ্রহে ভরপুর মনে হয়৷ আত্মায় আরো সতেজ মনে হয় এবং পাহাড়ে প্রার্থনার পরে, জগতের মাঝে তারা তাদের নুতন বস্ত্র পরিধান করে আবির্ভুত হয়৷
কিন্তু যখনই তারা তাদের বাড়িতে বা মন্ডলীতে ফিরে যায় এবং আবার স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে শুরু করে, তখনই তাদের বস্ত্র মলিন হয় এবং ছিঁড়ে যায়৷
বন্ধুরা জিজ্ঞাসা করে, “তুমি কোথায় ছিলে?”
“কিছুদিনের জন্য আমি একটু দুরে গিয়েছিলাম৷”
“মনে হয় তুমি একটু রোগা হয়ে গেছ৷”
“তা ঠিক, কিন্তু সেটা কোনো বিষয় নয়”৷
তারা কখনই প্রকাশ করে না যে, তারা উপবাস করছে, তারা গীর্জায় যায় এবং প্রার্থনা করে৷ “আমি কখনও মেয়েদের প্রতি কাম দৃষ্টিতে দেখব না৷ কখনো মিথ্যা বলব না৷ কখনো প্রতিবেশীর কোনো কিছুতে লোভ দেব না৷ আমি সবাইকে ভালবাসব৷”
কিন্তু যখনই তারা কোনো সুন্দরী মহিলাকে দেখে তখনই তাদের হৃদয়ের পবিত্রতাটি কামে রূপান্তরিত হয়৷ “দেখ, স্কার্টটা কি খাটো! দিন দিন স্কার্টগুলো খাটো হয়ে যাচ্ছে৷ আমি ঐ পা গুলো দেখতে পাচ্ছি৷ না প্রভু, আমি আবার পাপ করেছি৷”
ব্যবস্থা অনুসারীদেরকে ধার্মিক মনে হয়, কিন্তু আপনার জানা উচিত যে, তাদেরকে প্রতিদিন নুতন নুতন বস্ত্র তৈরী করতে হয়৷ ব্যবস্থা অনুসরণ করার অর্থ প্রতিদিন ডুমুরের পাতার পোশাক তৈরী করা, অর্থাৎ ভ্রান্ত বিশ্বাস৷ ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুসরণ করে বাঁচার জন্য মানুষ প্রাণপন করে৷ পাহাড়ের উপরে তারা বড় বড় নিশ্বাস নেয় যেন, তাদের কন্ঠস্বর ধার্মিক মনে হয়৷
ব্যবস্থানুসারীরা যখন গীর্জাতে প্রার্থনা সভা পরিচালনা করে, তখন তাদের দেখতে খুব ভালো লাগে৷ “হে পবিত্র পিতা, গত সপ্তাহ যাবৎ আমরা পাপ করেছি৷ দয়া করে আমাদের ক্ষমা কর......৷” তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং তাদের সদস্যরাও তাদের অনুসরণ করে৷ তারা মনে করে, “উনি অবশ্যই দীর্ঘদিন পাহাড়ে থেকে উপবাস প্রার্থনা করেছেন৷ তার কথা কত ধার্মিক এবং বিশ্বস্ত মনে হচ্ছে৷” কিন্তু যেহেতু তার বিশ্বাস ব্যবস্থানুযায়ী, তাই প্রার্থনা শেষ হতে না হতেই তার অন্তর ঔদ্ধত্য ও পাপে পূর্ণ হয়ে যায়৷
মানুষ যখন ডুমুর পাতার বিশেষ পোশাক তৈরী করে, তা খুব বেশী হলে দুই বা তিন মাস স্থায়ী হয়৷ কিন্তু শীঘ্রই তাদের সেই বিশেষ পোশাক নষ্ট হয়ে যায় এবং আবার নুতন করে পোশাক তৈরী করতে হয় এবং এভাবেই তাদের কপট জীবনযাপন করতে হয়৷ যারা ব্যবস্থা পালনের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্ত হতে চায় তাদের জীবন এই রকম৷ অনবরত তাদেরকে ডুমুরের পাতার বস্ত্র তৈরী করতে হয়৷
ডুমুরের পাতার পোশাক মানে ব্যবস্থায় বিশ্বাস৷ ব্যবস্থা অনুসারীরা আপনাকে বলবে, “আপনি গত সারা সপ্তাহ ধরে পাপ করেছেন, তাই নয় কি? তাহলে অনুতপ্ত হন৷”
তারা চিত্কার করে আপনাকে বলবে, “ অনুতাপ করুন, প্রার্থনা করুন৷”
ব্যবস্থা অনুসারীরা জানে কিভাবে তাদের কন্ঠস্বর মিষ্ট করতে হয়৷ “হে প্রভু, আমি দুঃখিত৷ আমি ব্যবস্থা অনুসারে চলতে পারি নি৷ আমি তোমার আজ্ঞা পালন করতে পারি নি৷ প্রভু, আমাকে আরেকটি বার ক্ষমা কর৷”
আপ্রাণ চেষ্টা করার পরেও তারা কখনোই ব্যবস্থা অনুসারে বাঁচতে পারে না৷ প্রকৃত অর্থে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে তথা ঈশ্বরকে চ্যালেঞ্জ করেছে৷ ঈশ্বরের সম্মুখে তারা ঔদ্ধত্ব প্রকাশ করেছে৷
 
 
চুড্যাল বেই-এর মত
 
ঈশ্বর কেন ব্যবস্থাকে সরিয়ে দিলেন?
কারণ এর দ্বারা আমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি না৷
 
চুড্যাল বেই নামে একজন যুবক ছিল৷ ১৯৫০ সালে কোরিয়ান যুদ্ধের সময় এক বিশ্রামবারে কমুনিষ্ট সৈনিকেরা এসে তাকে উঠান ঝাড়ু দিতে বলল; আসলে তাকে তারা ধর্মীয় দৃঢ়তা থেকে তাকে সরিয়ে দিয়ে কমিউনিস্ট বানাতে চেয়েছিল৷ কিন্তু ধর্মপ্রাণ এই যুবক তাদের আদেশ অমান্য করল৷ তারা যতবারই তাকে বাধ্য করতে চেষ্টা করল, সে ততবার তাদের অবাধ্য হল৷
শেষে, সৈন্যের তাকে একটি গাছের সাথে বেঁধে তার দিকে রাইফেল তাঁক করে তাকে করল, বলল, “তুমি কোনটা চাও? উঠান ঝাড় দিতে চাও নাকি মরতে চাও?
যখন তাকে বার বার এই প্রশ্ন দ্বারা জোর করে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছিল, সে বলেছিল, “বিশ্রামবারে কাজ করার চেয়ে আমার পক্ষে মরে যাওয়া ভালো৷”
“তুমিই তোমার সিদ্ধান্ত নিলে, আমরা তোমার ইচ্ছা পূরণ করব৷”
তখনই তারা তাকে গুলি করে হত্যা করল৷ পরবর্তীতে, তারা তাকে মরণোত্তর পুরস্কার স্বরূপ তার দৃঢ় বিশ্বাসের স্বীকৃতি হিসাবে মন্ডলীর ডিকন ঘোষণা করেছিল৷
তার দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় গোঁড়ামি তাকে ভ্রান্ত করল৷ কেন সে উঠান ঝাড়ু দিল না এবং সেই সাথে সাথে সৈনিকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করল না? কেন তাকে জেদী হয়ে মরতে হল? বিশ্রামবারে কাজ করে নি বলে ঈশ্বর কি তার প্রশংসা করবেন? না৷ 
আমাদের আত্মিক জীবনযাপন করা উচিত৷ ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের কাজ নয়, বরং আমাদের বিশ্বাসই গুরুত্বপূর্ণ৷ মন্ডলীর নেতারা চুড্যাল বেই-এর লোককে স্মরণ করতে চায়, কারন তারা তাদের মন্ডলীর গোঁড়ামির উত্কৃষ্টতা দেখাতে ভালবাসে৷ ঠিক ফরীশীরা যেমন যীশুকে চ্যালেঞ্জ করত৷
ব্যাবস্থানুসারীদের কাছ থেকে আমরা কিছুই শিখতে পারি না৷ আমাদের আত্মিক বিশ্বাস সম্পর্কে শেখা উচিত৷ আমাদের এই বিষয় খুব ভালো করে জানা উচিত কেন যীশু বাপ্তাইজিত হলেন, ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন এবং জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কেও আমাদের ভালোভাবে জানা উচিত৷
প্রথমত: ঐসব প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানতে হবে৷ এবং তারপর পৃথিবীর মানুষের কাছে সুসমাচার প্রচার করতে হবে, যেন তারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত হয়৷ আত্মিক কাজে আমাদের আত্মনিয়োগ করা উচিত৷
যদি কোনো প্রচারক আপনাকে বলে, “চুড্যাল বেই এর মত হও এবং বিশ্রামবার পালন কর,” তার অর্থ হল সে মন্ডলীতে রবিবারে আপনার উপস্থিতিই শুধু কামনা করে৷
আরেকটি কাহিনী যার দ্বারা আরো পরিস্কার হতে পারে৷ একজন মহিলা ছিল, নিয়মিতভাবে রবিবারে গীর্জায় যেতে তাকে অনেক সংগ্রাম করতে হত৷ তার শশুর-শাশুড়ি খ্রীষ্টিয়ান ছিল না৷ তাকে তারা গীর্জায় যেতে খুব বাঁধা দিত৷ তাকে তারা রবিবারে কাজ করতে বলত৷ কিন্তু সে এতটা কষ্ট করত যে, শনিবার রাতে সে মাঠে চলে যেত এবং চাঁদের আলোতে কাজ করত, যেন তার পরিবার তাকে পরবর্তী দিন রবিবারে গীর্জায় যেতে বাঁধা দিতে না পারে৷
অবশ্যই গীর্জায় যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; কিন্তু শুধুমাত্র মানুষকে নিজের বিশ্বস্ততা দেখানোর জন্যই শুধু নিয়মিত রবিবারে গীর্জায় যাওয়া কি যথেষ্ট? প্রকৃত বিশ্বস্তেরা জল ও আত্মায় নুতন জন্ম প্রাপ্ত হয়৷
ঈশ্বরের ব্যবস্থা অনুসারে যথাযতভাবে জীবনযাপন করলে কি আপনি পাপ থেকে মুক্ত হতে পারবেন? না৷ আমি আপনাকে ব্যবস্থা তুচ্ছ করতে বলছি না, কিন্তু আমরা সকলেই এই সত্য জানি যে, মানুষ হিসাবে ব্যবস্থাকে হুবহু পালন করা অসম্ভব৷
যাকোব ২:১০ পদে আছে, “কারণ যে কেহ ব্যবস্থা পালন করে, কেবল একটি বিষয়ে উছোট খায়, সে সকলেরই দায়ী হইয়াছে৷” সুতরাং প্রথমত: চেষ্টা করুন জল ও আত্মার সুসামাচারের মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করার৷ তারপর যেখানে এই সুসমাচার শুনতে পান এমন একটি গীর্জায় যান৷ নুতন জন্ম লাভ করার পরেই আপনি বিশ্বস্ত জীবনযাপন করতে পারবেন৷ তারপরে ঈশ্বরের আহ্বান পেলে আপনি সানন্দে তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হতে পারবেন৷
ভ্রান্ত গীর্জায় যোগ দিয়ে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না, অথবা ভুল জায়গায় আপনার দান ধ্যান করে অর্থ নষ্ট করবেন না৷ ভ্রান্ত পালকেরা আপনাকে নরক থেকে রক্ষা করতে পারবে না৷ প্রথমত: জল ও আত্মার সুসমাচার শুনুন এবং তাকে বিশ্বাস করে নুতন জন্ম লাভ করুন৷
যীশুর এই জগতে আসার কারণ চিন্তা করুন৷ ব্যবস্থা পালন করে যদি আমরা স্বর্গে যেতে পারতাম তবে তাঁকে পৃথিবীতে আসতে হত না৷ তিনি আসার পরে যাজকত্ব পরিবর্তীত হয়ে গেল৷ ব্যবস্থার যুগ অতীত হয়ে গেল৷ পরিত্রাণ পাওয়ার আগে আমাদের ধারণা ছিল যে, ব্যবস্থা পালন করলেই আমরা পাপ থেকে মুক্ত হব৷ কিন্তু এই ধারণা সত্য নয়৷
যীশু তাঁর প্রেমে, বাপ্তিস্মের জলে, ক্রুশীয় রক্তে ও আত্মায় আমাদেরকে জগতের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন৷ যর্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণ, ক্রুশে রক্ত সেচন ও পুনরুত্থানের মাধ্যমে তিনি আমাদের পরিত্রাণ করেছেন৷
ঈশ্বর পূর্ববর্তী ব্যবস্থাকে সরিয়ে দিলেন, কারণ তা দুর্বল ও অকেজো ছিল৷ “কেননা ব্যবস্থা কিছুই সিদ্ধ করে নাই- পক্ষান্তরে এমন এক শ্রেষ্ঠ প্রত্যাশা আনা হইতেছে, যদ্দারা আমরা ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত হই৷ অধিকন্তু ইহা বিনা শপথে হয় নাই (ইব্রীয় ৭:১৯-২০)৷ যীশু শপথ করলেন এবং তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের দ্বারা আমাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করলেন৷ ব্যবস্থা অনুসরণের মাধ্যমে সাক্ষ্যমর হওয়া ফলহীন, একমাত্র সত্য বিশ্বাস হল জল ও আত্মার সুসামাচারে বিশ্বাস করা৷
আমাদের কার্যকর বিশ্বাস থাকতে হবে৷ আপনার আত্মার জন্য কোনটি শ্রেয় বলে মনে হয়? ব্যবস্থা অনুসরণ করে নিয়মিত গীর্জায় যোগদান করা, অথবা এমন কোন গীর্জায় যোগদান করা যেখানে জল ও আত্মার সুসামাচার প্রচারিত হয় এবং এই সুসামাচারের মাধ্যমে নুতন জন্ম লাভ করা যায়? কোন মন্ডলী এবং কোন প্রচারক আপনার আত্মার জন্য যথার্থ হবে? এ বিষয় চিন্তা করুন এবং আত্মার জন্য যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করুন৷
এমন প্রচারকের মাধ্যমে ঈশ্বর আপনার আত্মাকে উদ্ধার করেছেন, যিনি জল ও আত্মার সুসামাচার প্রচার করেন৷ প্রত্যেককে তার নিজের আত্মার দায়িত্ব নিতে হবে৷ সেই প্রকৃত বুদ্ধিমান বিশ্বাসী, যে ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে তার আত্মা সমর্পণ করে৷
 
 

শপথের মাধ্যমে যীশু হয়েছেন

 
লেবীর বংশধরেরা কি শপথের মাধ্যমে যাজক হয়েছিলেন?
না৷ কেবলমাত্র যীশুই শপথের মাধ্যমে যাজক হয়েছেন৷
 
ইব্রীয় ৭:২০-২১ পদে বলা হয়েছে, “অধিকন্তু ইহা বিনা শপথে হয় নাই৷ উহারা তো বিনা শপথে যাজক হইয়া আসিতেছে; কিন্তু ইনি শপথ সহকারে তাঁহারই দ্বারা নিযুক্ত, যিনি তাঁহার বিষয়ে কহিলেন, ‘তুমিই মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে অনন্তকালীন যাজক৷”
এবং গীতসংহিতা ১১০:৪ পদে বলা হয়েছে, “সদাপ্রভু শপথ করিলেন, অনুশেচনা করিবেন না, তুমি অনন্তকালীন যাজক, মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে৷” প্রভু একটি শপথ করলেন৷ তিনি আমাদের সাথে নিয়ম স্থির করলেন এবং শাস্ত্রের মাধ্যমে তা দেখালেন৷ “মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে আমি অনন্তকালীন মহাযাজক হব৷ মল্কীষেদক হলেন ধার্মিকতার রাজা, শান্তির রাজা এবং অনন্তকালীন মহাযাজক৷ তোমাদের পরিত্রাণের জন্য মল্কীষেদকের রীতি অনুসারে আমি অনন্তকালীন যাজক৷”
যীশু এই পৃথিবীতে এলেন এবং উত্কৃষ্ট নিয়মের নিশ্চয়তা দিলেন (ইব্রীয় ৭:২২)৷ বৃষ বা ছাগলের রক্তের পরিবর্তে তিনি বাপ্তাইজিত হয়ে ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা আত্মবলিদাবের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর রক্ত দ্বারা ধুয়ে দিলেন৷
পুরাতন নিয়মের সময়ে একজন যাজক মারা গেলে তার পুত্র ৩০ বছর বয়স হলে উত্তরাধিকার সুত্রে যাজকত্ব লাভ করত৷ যখন কোনো যাজক বৃদ্ধ হয়ে যেত, এবং তার পুত্র ৩০ বছর বয়স্ক হত, তখন পুত্রের কাছে যাজকত্ব অর্পণ করত৷
মহাযাজকের অনেক উত্তরাধিকারী ছিল৷ তাই দায়ুদ এমন কথা প্রচলন করলেন যে, তাদের প্রত্যেকেই যেন পালাক্রমে যাজকত্ব পালন করতে পারে৷ যেহেতু হারোণের বংশধরেরা যাজকত্বের জন্য নিযুক্ত হয়েছিল, তাই যাজকত্ব পরিচালনার অধিকার এবং বাধ্যবাধকতা তাদেরই ছিল৷ লুক বলেন, “একদা যখন সখরিয় নিজ পালার অনুক্রমে যাজকীয় কার্য করিতেছিলেন, তখন যাজকীয় কার্যের প্রথা অনুসারে গুলিবাঁটক্রমে তাঁহাকে প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করিয়া ধুপ জ্বালাইতে হইল.....৷”
যীশু এই পৃথিবীতে এলেন এবং যাজকত্বের পরিচর্যা কাজ চিরতরে নিজের উপরে নিয়ে নিলেন৷ তিনি আগমী উত্তম উত্তম বিষয়ের যাজক হলেন৷ তিনি জল ও আত্মার সুসামাচারের মাধ্যমে নুতন জন্মের পরিত্রাণ সাধন করলেন৷
হারোণের বংশধরেরা মাংসিকভাবে দুর্বল ও অসম্পূর্ণ ছিলেন৷ যখন কোনো মহাযাজক মারা যেত, তখন কি হত? তখন তাঁর পুত্র যাজকত্ব গ্রহণ করত৷ কিন্তু এই ধরনের বলিদান প্রথা মানুষের পরিত্রাণের জন্য কখনোই যথেষ্ট ছিল না৷ মানুষের মাধ্যমে যে বিশ্বাস তা কখনই সত্য এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাস হতে পারে না৷
নুতন নিয়মের সময়ে যীশু এই পৃথিবীতে এলেন৷ তাঁকে অবিরত বলি উত্সর্গ করতে হয় নি, কারণ তিনি চিরকাল জীবিত৷ তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তিনি আমাদের সমস্ত পাপ চিরতরে তুলে নিলেন৷ তিনি নিজেকে বলিকৃত করলেন, এবং যারা বিশ্বাস করে তাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য ক্রুশবিদ্ধ হলেন৷
এখন তিনি জীবিত এবং ঈশ্বরের দক্ষিণ পাশে বসে আমাদের জন্য অনুরোধ করছেন৷ “হে পিতা, তারা অসম্পূর্ণ হলেও আমাতে বিশ্বাস করে৷ আমি কি অনেক পূর্বেই তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিই নি?” যীশু আমাদের পরিত্রাণের অনন্তকালীয় যাজক৷
জাগতিক যাজকেরা কখনোই সম্পূর্ণ ছিলেন না৷ যখন তারা মারা যেতেন, তাদের পুত্রেরা যাজকত্বের দায়িত্ব পেত৷ আমাদের প্রভু অনন্তকাল জীবন্ত৷ তিনি এই পৃথিবীতে এসে যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছেন, এবং তারপর আমাদের সমস্ত পাপের জন্য ক্রুশে রক্ত সেচন করেছেন এবং এইভাবেই তিনি পরিত্রাণ সাধন করেছেন৷
“ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না” (ইব্রীয় ১০:১৮)৷ যীশু যুগান্ত পর্যন্ত আমাদের পরিত্রাণের সাক্ষ্য বহন করেছেন৷ আপনি কি জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্ম প্রাপ্ত?
“বস্তুতঃ আমাদের জন্য এমন এক মহাযাজক উপযুক্ত ছিলেন, যিনি সাধু, অহিংসক, বিমল, পাপীগণ হইতে পৃথকীকৃত, এবং স্বর্গ সকল অপেক্ষা উচ্চীকৃত” (ইব্রীয় ৭:২৬)৷ “কেননা ব্যবস্থা যে মহাযাজকদিগকে নিযুক্ত করে, তাহারা দুর্বলতাবিশিষ্ট মনুষ্য, কিন্তু ব্যবস্থার পশ্চাত্কালীয় ঐ শপথের বাক্যে যাঁহাকে নিযুক্ত করে, তিনি অনন্তকালের জন্য সিদ্ধিপ্রাপ্ত পুত্র” (ইব্রীয় ৭:২৮)৷
আপনাকে আমি যা বলতে চাইছি তা হল এই যে, যীশু খ্রীষ্ট ছিলেন নিষ্কলুষ, তিনি তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে এবং ক্রুশে রক্ত সেচনের মাধ্যমে একেবারে চিরতরে আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে দিয়েছেন৷ তিনি আমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন, আমাদের কর্মের ফলে নয়, বরং আমাদের স্থলে আমাদের পাপের জন্য তিনি নিজে বিচারিত হয়ে চিরকালের জন্য এই পরিত্রাণ সাধন করেছেন৷
আপনি কি বিশ্বাস করেন যে তিনি অনন্তকালীয় পরিত্রাণ সাধনের মাধ্যমে আমাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন? যদি তাই হয় তাহলে আপনি পরিত্রাণ পেয়েছেন৷ কিন্তু যদি তা না হয় তাহলে আপনাকে যীশুর অনন্তকালীয় পরিত্রাণ সম্পর্কে আরো জানতে হবে৷
শাস্ত্রীয় দৃঢ়ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত জল ও আত্মার সুসামাচারেই যথার্থ বিশ্বাস নিহিত রয়েছে৷ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি অনন্তকালীয় স্বর্গীয় মহাযাজক, তিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে আমাদের অনন্তকালীয় ত্রাণকর্তা হয়েছেন৷
 
 
নিজেদের বিশ্বাস সম্পর্কে আমাদের পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে
 
“যীশুতে বিশ্বাস”- এর মানে কি?
যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস করা৷
 
কিভাবে সঠিক পথে যীশুকে বিশ্বাস করা যায় এবং দৃঢ়বিশ্বাসী হওয়া যায় সেই ব্যাপারে আমাদের চিন্তা করা উচিত৷ কিভাবে আমরা সঠিক ও যথার্থভাবে যীশুতে বিশ্বাস করতে পারি? যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা তা করতে পারি৷
প্রকৃত বিশ্বাস হল যীশুর সাধিত কাজে বিশ্বাস করা, অর্থাৎ তাঁর বাপ্তিস্ম, রক্তে বিশ্বাস, আমাদের চিন্তাধারা যোগ না করে৷ আপনি কি এটা সত্য বলে বিশ্বাস করেন? আপনার আত্মিক অবস্থা কেমন? নিজের কর্ম ও প্রচেষ্টার উপরে কি আপনি খুব বেশী নির্ভর করেন?
খুব বেশী দিন হয় নি যে, আমি যীশুতে বিশ্বাস করা শুরু করেছি, কিন্তু ব্যবস্থা অনুসারী হওয়া আমি প্রায় দশ বছর প্রচন্ড কষ্ট ভোগ করেছি৷ ক্রমান্বয়ে আমি সেই জীবন সম্পর্কে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম৷ সেই সময় আমি এমনকি নিজের বিষয়েও ভাবতাম না৷ আমার স্ত্রী এখানে বসে রয়েছেন, তিনি জানেন আমাদের সেই অবস্থা কি ভয়ঙ্কর ছিল৷
রবিবারে আমি বলতাম, “প্রিয়ে, চল আজ আমরা আনন্দ করি৷”
“কিন্তু আজ যে রবিবার৷”
সে রবিবারে কাপড় পর্যন্ত ধুত না৷ এক রবিবার আমার একটা প্যান্ট ছিঁড়ে গেল, সে আমাকে সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলল৷ আসল কথা হল, আমরা সঠিকভাবে বিশ্রামবার পালন করছি কি না সে ব্যাপারে আমি আরো বেশী সচেতন ছিলাম৷ কিন্তু তা ছিল খুবই কঠিন ব্যাপার৷ আমরা কখনও রবিবারে বিশ্রাম করতে পারি নি, কারণ যথার্থভাবে বিশ্রামবার পালন করা খুব কঠিন ছিল৷ আমি এখনও সেসব দিন মনে করতে পারি৷
বন্ধুগণ, যীশুতে প্রকৃতভাবে বিশ্বাস করার অর্থ হল, যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে আমাদের জন্য যে প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন, তাতে বিশ্বাস করা৷ প্রকৃত বিশ্বাস হল যীশুর ঈশ্বরত্ব ও মানবীয় বৈশিষ্টে এবং তিনি যে সমস্ত কাজ এই পৃথিবীতে সাধন করেছেন, তাতে বিশ্বাস করা৷ সত্যিকার বিশ্বাসীরা তাঁর সমস্ত বাক্যে বিশ্বাস করে৷
“যীশুতে বিশ্বাস”- এ কথাটির অর্থ কি? এর অর্থ হল যীশুর বাপ্তিস্ম ও রক্তে বিশ্বাস করা৷ এর মধ্যে একটি পবিত্র সরলতা রয়েছে৷ আমাদের যা করতে হবে তা হল বাইবেল পড়তে হবে এবং সুসমাচার বিশ্বাস করতে হবে৷
“হে প্রভু তোমাকে ধন্যবাদ৷ আমি এখন বুঝতে পেরেছি যে, আমার কাজের দ্বারা এটা হয় নি৷ কারণ ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে (রোমীয় ৩:২০)৷ আমি এখন সব বুঝতে পারছি৷ আগে আমার ধারণা ছিল যেহেতু ব্যবস্থা ঈশ্বর কর্তৃক আদিষ্ট তাই এটি উত্তম এবং আমার এটির দ্বারা জীবনযাপন করার চেষ্টা করা উচিত সেইভাবে আমি কঠোর সাধনা করেছি, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি যে, ব্যবস্থা অনুযায়ী জীবনযাপনের চেষ্টা করা আমার ভুল ছিল৷ এখন আমি দেখতে পারছি যে, আমি কখনই ব্যবস্থা পালন করতে পারব না৷ সুতরাং ব্যবস্থা অনুসারে বুঝতে পারছি যে, আমার হৃদয় পাপ ও অধর্মে পরিপূর্ণ৷ এখন আমি বুঝতে পারি যে, আমরা যেন পাপ সমন্ধে বুঝতে পারি সেই উদেশ্যেই ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল৷ হে প্রভু তোমাকে ধন্যবাদ৷ আমি তোমার ইচ্ছা বুঝতে পারি নি, কঠোরভাবে ব্যবস্থা পালন করার চেষ্টা করেছি৷ সেই চেষ্টা করা আমার জন্য ঔদ্ধত্ব ছিল৷ আমি এখন অনুতাপ করছি৷ এখন আমি জানি যে, আমার পরিত্রাণের জন্য যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং রক্ত সেচন করেছিলেন৷ আমি তা বিশ্বাস করি৷”
মুক্তভাবে এবং সঠিকভাবে আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে৷ বাইবেলের লিখিত বাক্যই কেবল আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে৷ নুতন জন্ম লাভ করার জন্য এটাই একমাত্র পথ৷
যীশুতে বিশ্বাস করার অর্থ কি? এটা কি এমন কিছু যা করতে আমাদের সময় প্রয়োজন? এটা কি ধর্মীয় বিশ্বাস যার জন্য আমাকে নির্দিষ্ট কোনো কাজ করতে হবে? মানুষ অনেক দেবতা তৈরী করেছে এবং সেইসব দেবতাকে সন্তুষ্ট করার জন্য ধর্মের সৃষ্টি করেছে৷ ধর্ম হল এমন একটি পদ্ধতি যার কারণে মানুষ একটি লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য কাজ করে, মানুষের সততা প্রকাশের জন্য আকাঙ্খা করে৷
তাহলে বিশ্বাস কি? তার অর্থ হল ঈশ্বরে বিশ্বাস করা এবং তাঁর দিকে দৃষ্টি করা৷ আমরা প্রভুর পরিত্রাণের দিকে দৃষ্টি করি এবং অত্ন্র আশীর্বাদের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিই৷ এটাই প্রকৃত বিশ্বাস৷ এটাই হল বিশ্বাস এবং ধর্মের মধ্যে পার্থক্য৷ আপনি যদি একবার এই পার্থক্য বুঝতে পারেন, তাহলে বিশ্বাস সমন্ধে আপনি ১০০ পয়েন্ট পাবেন৷
যেসব ধর্মতত্ত্ববিদেরা নুতন জন্ম লাভ করে নি, তারা আমাদের যীশুতে বিশ্বাস করতে এবং ধার্মিক জীবনযাপন করতে বলে৷ ধার্মিক হলেই কি কেবল আপনি বিশ্বস্ত হতে পারবেন? অবশ্যই আমাদের সৎ হতে হবে৷ আমরা যারা নুতন জন্ম প্রাপ্ত, আমাদের চেয়ে কে আর অধিকতর ধার্মিক জীবনযাপন করতে পারে?
কিন্তু ব্যাপার হল এই যে, তারা পাপীদের কাছে একথা বলছে৷ গড়পরতা পাপীদের মধ্যে ১২ রকমের পাপ রয়েছে৷ কিভাবে সে ধার্মিক জীবনযাপন করতে পারে? অবশ্যই কর্তব্য সম্পর্কে তার মন উপলব্ধি করতে পারে, কিন্তু তার হৃদয় তা পালন করতে পারে না৷ যখন কোনো পাপী গীর্জার বাইরে যায়, এবং ধর্মীয় জীবনযাপন করতে চেষ্টা করে, কিন্তু তার প্রবৃত্তি পাপের দিকে ছোটে৷
এই জন্য আমাদের হৃদয়ের সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে যে, আমরা কি ব্যবস্থা অনুসারে চলব না কি যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করে পাপ থেকে মুক্ত হব, এবং স্বর্গরাজ্যের অনন্তকালীয় মহাজাজককে বিশ্বাস করব৷
মনে রাখুন যে, যারা বিশ্বাস করে যীশুই তাদের জন্য প্রকৃত মহাযাজক৷ যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্ত দ্বারা যে পরিত্রাণ সাধন করেছেন, আসুন আমরা তাতে বিশ্বাস করে পাপ থেকে মুক্ত হই৷
 
 
নুতন জন্ম প্রাপ্তরা যুগান্ত সম্পর্কে ভীত নয়
 
নুতন জন্ম প্রাপ্তরা কেন যুগান্ত সম্পর্কে ভীত নয়?
কারণ তারা জল ও আত্মার সুসামাচারে বিশ্বাস করে, যার দ্বারা পাপ থেকে মুক্ত হয়েছে৷
 
যখন আপনি সত্যিই নুতন জন্ম লাভ করবেন, তখন পৃথিবীর অত্যাসন্ন ধ্বংস দেখে আপনি ভীত হবেন না৷ কোরিয়ার অনেক খ্রীষ্টিয়ান দাবি করেছিল যে, ১৯৯৯ সালের ২৮শে অক্টোবর পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে৷ তারা বলত সে ঘটনা কি ভয়ানক আলোড়নকারী ও ভয়ঙ্কর হবে! কিন্তু তাদের সমস্ত দাবি মিথ্যা হয়ে গেল৷ সত্যিকারের নুতন জন্ম প্রাপ্তেরা ধার্মিক জীবন যাপন করে এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সুসমাচার প্রচার করে৷ যখন এই পৃথিবী শেষ হয়ে আসবে, তখনও আমাদের জল ও আত্মার এই সুসমাচার প্রচার করতে হবে৷
যখন বর আসবেন, তখন জল ও আত্মায় সত্যিকার ভাবে নুতন জন্ম প্রাপ্তেরা ভার্য্যা হয়ে আনন্দের সাথে তাঁর সাথে মিলবে, বলবে, “শেষ পর্যন্ত তুমি এলে! আমার মাংস এখনও অসম্পূর্ণ, কিন্তু তুমি আমাকে ভালোবেসেছ এবং আমার সমস্ত পাপ থেকে আমাকে মুক্ত করেছ৷ তাই আমার হৃদয়ে কোনো পাপ নেই৷ হে প্রভু, তোমাকে ধন্যবাদ জানাই৷ তুমিই আমার ত্রাণকর্তা৷”
যীশুই সকল ধার্মিকের বর৷ বর ভার্য্যাকে ভালবাসে বলেই বিবাহ সম্পন্ন হয়, অন্য কোনো কারণে নয়৷ আমি জানি অন্য কোনো ভাবেও এটা পৃথিবীতে ঘটে, কিন্তু স্বর্গে বরই সিদ্ধান্ত নেবেন বিবাহ হবে কি না৷ যীশুই বর হিসাবে তাঁর প্রেমে চয়নকৃত পরিত্রাণ প্রাপ্ত সকল ভার্য্যাকে মনোনীত করেন৷ এইভাবেই স্বর্গে বিবাহ সম্পন্ন হয়৷
বর ভার্য্যার সব বিষয় জানেন৷ কারণ তাঁর প্রিয় ভার্য্যারা এমন পাপী ছিল, তিনি তাদেরকে প্রেম করলেন এবং বাপ্তাইজিত হয়ে ও ক্রুশে রক্ত সেচন করে তাদেরকে সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করলেন৷
আমাদের প্রভু যীশু এই পৃথিবীতে হারোণের বংশধর হিসাবে আসেন নি৷ এগুলো করার জন্য হারোণের বংশধর অনেক লেবীরা ছিল৷
প্রকৃতপক্ষে, পুরাতন নিয়মের বলিদান যীশুর বলিদান ছাড়া আর কিছু নয়৷ সুতরাং যখন আসল বিষয় জগতে দেখা দিল, তখন তার ছায়ায় কি ঘটল? ছায়া দুরে সরে গেল৷
যীশু এই পৃথিবীতে থাকতে হারোণের মত বলি উত্সর্গ করেন নি৷ তিনি সমগ্র মানবজাতির জন্য নিজেকে উত্সর্গ করলেন, এবং তা করলেন বাপ্তাইজিত হয়ে ও রক্ত সেচন করে, এভাবেই পাপীর পরিত্রাণ সাধন করলেন৷ ক্রুশে তিনি পরিত্রাণ সম্পন্ন করলেন৷ ক্রুশে তিনি পরিত্রাণ সম্পন্ন করলেন৷
যারা যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে পরিত্রাণে বিশ্বাস করে, অবশ্যই তারা পরিত্রাণ পাবে৷ অস্পষ্ট কোনো উপায়ে যীশু আমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করেন নি৷ তিনি স্পষ্টরূপে সাধন করেছেন৷ “আমিই পথ ও সত্য ও জীবন” (যোহন ১৪:৬)৷ যীশু এই পৃথিবীতে এলেন এবং তাঁর বাপ্তিস্ম, মৃত্যু ও পুনরুত্থান দ্বারা আমাদের পরিত্রাণ করলেন৷
 
 
পুরাতন নিয়ম হল যীশুর প্রতিচ্ছবি
 
ভিন্ন নিয়ম স্থাপন করার পিছনে কারণ কি?
কারণ প্রথম নিয়ম ছিল দুর্বল ও অকার্য্যকর৷
 
পুরাতন নিয়ম হল নুতন নিয়মের ছায়াস্বরূপ৷ যদিও পুরাতন নিয়মের মহাযাজকদের মত যীশু কখনও বলি উত্সর্গ করেন নি, তথাপি তিনি একটি উত্কৃষ্টতর যাজকত্ব স্থাপন করেছেন, অনন্তকালীয় স্বর্গীয় যাজকত্ব৷ কারণ, এই পৃথিবীতে মানুষ জন্ম থেকেই পাপে পরিপূর্ণ, তারা পাপী হয়, ঈশ্বরের ব্যবস্থার মাধ্যমে তখনও তারা ধার্মিক হতে পারে না৷ এইজন্য ঈশ্বর ভিন্ন নিয়ম স্থাপন করলেন৷
আমাদের স্বর্গীয় পিতা তাঁর একজাত পুত্রকে এই পৃথিবীতে পাঠালেন, তার বিনিময়ে তিনি আমাদের কাছে প্রত্যাশা করেন যেন, আমরা তাঁর বাপ্তিস্মে, রক্তে ও পুনরুত্থানে বিশ্বাস করি৷ এটাই হল ঈশ্বরের দ্বিতীয় নিয়ম৷ দ্বিতীয় নিয়ম আমাদের কাছে প্রত্যাশা করে যেন, আমরা জল ও আত্মার সুসামাচারে বিশ্বাস করি৷
প্রভু আমাদের সত্কর্মের প্রচেষ্টা আর দেখতে চান না৷ কিভাবে জীবনযাপন করলে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে তাও তিনি বলেন না৷ আমাদের কাছে তাঁর একমাত্র প্রত্যাশা আমরা যেন তাঁর একমাত্র পুত্রের মাধ্যমে সাধিত পরিত্রাণে বিশ্বাস করি৷ তিনি চান আমরা যেন সর্বোপরি তাঁর বাপ্তিস্মে ও ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করি৷ এবং আমাদের হ্যাঁ বলতে হবে৷
বাইবেলে যিহুদা বংশ রাজকীয় মর্যাদা সম্পন্ন৷ রাজা শলোমন পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত রাজা যিহুদা বংশে জন্মগ্রহণ করেন৷ এমনকি রাজ্য বিভক্তির পরেও, ৫৮৬ খৃষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত, অর্থাৎ এই সময় পর্যন্ত যিহুদা রাজ্যের দক্ষিণ অংশ যিহূদার কর্তৃত্বাধীন ছিল৷ এইভাবে যিহুদা বংশকে ইস্রায়েলীয় বলা হয়৷ লেবীয় বংশধরেরা যাজকদের অন্যতম ছিল৷ ইস্রায়েলের প্রতিটি বংশের পৃথক পৃথক দায়িত্ব ছিল৷ ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, যিহুদা বংশে যীশুর আগমন হবে৷
কেন তিনি যিহুদা বংশের সঙ্গে এই প্রতিজ্ঞা করলেন? এই নিয়ম স্থাপন করা আর জগতের সকল মানুষের সাথে নিয়ম স্থাপন করা একই কথা, কারণ ইস্রায়েল বলতে পৃথিবীর জাতিগণকে বোঝানো হয়েছে৷ যীশু নুতন নিয়মের পূর্ণতা দিলেন, অর্থাৎ তিনি তাঁর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু ও পুনরুত্থানের মাধ্যমে মানব জাতির পরিত্রাণ সাধন করলেন৷
 
 

অনুতাপের দ্বারা মানুষের পাপ ধুয়ে যায় না

 
মানুষের পাপ কি অনুতাপের মাধ্যমে ধৌত করা যায়?
না৷
 
যিরমিয় ১৭:১ পদে লেখা আছে যে, প্রতিটি মানুষের পাপ দুই জায়গায় লেখা থাকে৷ “যিহূদার পাপ লৌহলেখনী ও হীরকের কাঁটা দিয়া লিখিত হইয়াছে, তাহাদের চিত্তফলকে ও তাহাদের যজ্ঞবেদীর শৃঙ্গে তাহা ক্ষোদিত হইয়াছে৷”
আমাদের হৃদয়ে আমাদের পাপগুলো লেখা থাকে৷ তাই আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা পাপী৷ যতক্ষণ পর্যন্ত না কেউ যীশুতে বিশ্বাস করছে, ততক্ষন পর্যন্ত সে সচেতন নয় যে, সে পাপী৷ কেন? কারণ ঈশ্বরের ব্যবস্থা তার হৃদয়ে অনুপস্থিত থাকে৷ কাজেই, যখনই কেউ যীশুতে বিশ্বাস করে, তখনই সে নিজেকে ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপী হিসাবে দেখতে পায়৷
কেউ কেউ যীশুতে বিশ্বাস করার ১০ বছর পর উপলব্ধি করতে পারে যে, সে পাপী৷ “হায়! হায়! আমি একজন পাপী৷ আমি ভেবে ছিলাম যে, আমি পরিত্রাণ পেয়েছি, কিন্তু দেখতে পাচ্ছি যে, আমি এখনও পাপী রয়ে গেছি৷” যখন আমরা নিজেদের প্রকৃত স্বরূপ দেখতে পাই, কেবলমাত্র তখনই এই সজ্ঞানতা আসে৷ দশ বছর যাবৎ তারা খুবই সুখে তাহকে, কিন্তু হটাৎ তারা সত্যটা উদঘাটন করে৷ কেন তা কি জানেন? এই উপলব্ধিটা তখনই আসে যখন এক পর্যায়ে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেদের পাপ ও অধার্মিকতা সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করে৷ এই ধরনের লোকেরা নুতন জন্ম না পেয়েই ১০ বছর যাবৎ যীশুকে বিশ্বাস করে আসছে৷ 
যে কোনো পাপীই তার হৃদয় থেকে তার পাপ গুলো মুছতে পারে না, তাই ঈশ্বরের সম্মুখে সে পাপী থেকে যায়৷ এই উপলব্ধিতে পৌঁছাতে কারো কারো পাঁচ বছর, আবার কারো বা দশ বছর লেগে যায়৷ কারো বা ৩০ বছর, কারো বা ৫০ বছর পর এবং এমনও দেখা যায় যে, কারো কারো ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত এই উপলব্ধি আসে না৷ “হে ঈশ্বর, পূর্বে মনে করতাম যে, আমি সৎ আছি, কারণ তোমার ব্যবস্থা আমার হৃদয়ে রয়েছে, কিন্তু এখন বুঝতে পারি যে, আমি প্রতিদিন পাপ করছি৷” যেমন প্রেরিত পৌল বলেছেন, “আর আমি এক সময়ে ব্যবস্থা ব্যতিরেকে জীবিত ছিলাম, কিন্তু আজ্ঞা আসিলে পাপ জীবিত হইয়া উঠিল, আর আমি মরিলাম” (রোমীয় ৭:৯)৷ খ্রীষ্টে বিশ্বাস করার পরেও আমি একজন পাপী৷
আপনার নিজের পাপই আপনাকে ঈশ্বরের বাক্য অনুযায়ী চলতে বাধা দেয়৷ আপনার হৃদয়ে আপনার পাপগুলো লেখা থাকে৷ কারণ সেখানেই ঈশ্বর আপনার পাপ গুলো রেকর্ড করেন, যখন আপনি প্রার্থনায় মাথানত করেন, তখন আপনার পাপ গুলো ভেসে উঠে৷ “আশ্চর্য! আমিই সেই পাপ, যা তুমি করেছিলে৷”
কিন্তু ২ বছর আগে আমি তোমার ব্যাপারে প্রায়শ্চিত্ত করেছি, তাহলে কেন তুমি হটাত করে আবার উদয় হলে? কেন তুমি একেবারে দূর হয়ে যাও নি?”
“আহা! কেন তুমি এত নোংরা! তোমার হৃদয়ে আমি লিখিত আছি৷ তুমি কি ভাবছ তাতে কিছু যায় আসে না, তুমি এখনও পাপী রয়েছ৷”
“না! না”
কাজেই দেখা যায় ২ বছর আগে করা পাপের জন্য পাপী আবার অনুতাপ করছে৷ “হে প্রভু, দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর৷ পূর্বের কৃত পাপ এখনও আমাকে কষ্ট দিচ্ছে৷ আমি সেই সব পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো এখনও রয়েছে৷ দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর৷ আমি পাপ করেছি৷”
কিন্তু অনুতাপে কি পাপ চলে যায়? কারণ মানুষের হৃদয়েই তার পাপ গুলো লিখিত থাকে, জল ও আত্মার সুসমাচার ছাড়া আর কোনো ভাবেই তা মোছা সম্ভব নয়৷ কেবলমাত্র জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারাই প্রকৃত প্রায়শ্চিত্ত লাভ করা যায়৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারাই কেবল আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি৷
 
 
আমি তোমাদের ত্রাণকর্তা হব
 
নুতন নিয়মের প্রতি আমাদের কিভাবে সাড়া দিতে হবে?
আমাদের হৃদয়ে বিশ্বাস করতে হবে এবং পৃথিবী ব্যাপী প্রচার করতে হবে৷
 
আমাদের স্বর্গীয় প্রভু আমাদের জন্য একটি নুতন নিয়ম তৈরী করেছেন৷ “আমি তোমাদের ত্রাণকর্তা হব৷ তোমাদের সমস্ত পাপ থেকে তোমাদেরকে মুক্ত করব৷ এবং জল ও রক্তের মাধ্যমেই করব৷ যারা আমাতে বিশ্বাস করে, আমি তাদের সকলকে আশীর্বাদ করব৷
আপনি কি ঈশ্বরের সাথে নুতন নিয়মে বিশ্বাস করেন? আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে এবং নুতন জন্ম লাভ করতে পারব তখনই , যখন আমরা তাঁর নিয়মে বিশ্বাস করব এবং জল ও রক্তের পরিত্রাণে বিশ্বাস করব৷
কোনো ডাক্তার যদি ঠিকমত রোগ নির্ণয় না করতে পারে, আমরা তাকে বিশ্বাস করি না৷ একজন ডাক্তারের প্রথম কাজ হল ঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা এবং তারপর সঠিক ওষুধ ব্যবস্থা করা৷ সব রকমের ওষুধ আছে, ডাক্তারকেই সঠিক ওষুধটি নির্ধারণ করতে হয়৷ একবার যদি সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়, সেই রোগের চিকিত্সার জন্য বিভিন্ন রকমের ওষুধ পাওয়া যায়৷ কিন্তু যদি রোগ নির্ণয়ে ভুল করা হয়, তাহলে যত ভালো ওষুধই দেওয়া হোক না কেন, রোগীর অবস্থা আরোও খারাপ হয়ে যাবে৷
একই ভাবে যখন আপনি যীশুতে বিশ্বাস করেছেন, তখন ঈশ্বরের বাক্যের ভিত্তিতে আপনার হৃদয়ের প্রকৃত অবস্থা নির্ণয় করতে হবে৷ যখন আপনি ঈশ্বরের বাক্যের মাধ্যমে নিজের হৃদয় পরীক্ষা করবেন, তখন আপনি আপনার হৃদয়ের আসল চেহারা দেখতে পাবেন৷ যিনি আত্মার চিকিত্সক, তিনি সব রোগীকে সুস্থ করতে পারেন৷ তারা সকলেই নুতন জন্ম লাভ করতে পারে৷
আপনি যদি বলেন, “আমার পাপ ক্ষমা হয়েছে কিনা আমি জানিনা,” তার মানে আপনি পরিত্রাণ পান নি৷ কোনো পালক বা প্রচারক যদি সত্যিই যীশুর শিষ্য হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি অবশ্যই তার অনুসারীদের পাপের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন৷ তারপর তিনি তাদের বিশ্বাসের সমস্যার সমাধান করবেন এবং আত্মিকভাবে পরিচালনা দেবেন৷ তাকে অবশ্যই তার অনুসারীদের আত্মার প্রকৃত অবস্থা বুঝতে হবে৷
যীশু এই পৃথিবীতে এসে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ তিনি এই পৃথিবীতে এলেন এবং বাপ্তাইজিত হলেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করলেন৷ তিনি যখন সমস্ত পাপেরই প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন, তিনি কি তখন আপনার গুলো বাদ রেখেছেন? জল ও আত্মার বাক্য বিশ্বাসীদের হৃদয়ের সমস্ত পাপ মুছে ফেলে৷
সুসমাচার হল ডিনামাইটের মত৷ বিশাল অট্টালিকা থেকে বড় বড় পাহাড় পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে৷ যীশুর কাজও ঠিক এই রকম৷ যারা জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করে, তিনি তাদের সকলের পাপ মুছে ফেলেন৷ আসুন বাইবেলে যেমন আছে, ঠিক তেমনি ভাবে জল ও আত্মার সুসমাচারের প্রতি মনোযোগী হই৷
 
 

পুরাতন নিয়মের হস্তার্পনের সুসমাচার

 
পুরাতন নিয়মে হস্তার্পনের উদ্দেশ্য কি ছিল?
উদ্দেশ্য ছিল পাপার্থক বলির উপরে পাপ অর্পন করা
 
আসুন লেবীয়পুস্তক ১:৩-৪ পদে বর্ণিত প্রায়শ্চিত্তের প্রকৃত সুসমাচার সমন্ধে দেখি, “সে যদি গো পাল হইতে হোমবলির উপহার দেয়, তবে নির্দোষ এক পুং পশু আনিবে, সদাপ্রভুর সম্মুখে গ্রাহ্য হইবার জন্য সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে আনয়ন করিবে৷ পরে হোমবলির মস্তকে হস্তার্পণ করিবে; আর তাহা তাহার প্রায়শ্চিত্তরূপে তাহার পক্ষে গ্রাহ্য হইবে৷”
এই অংশে বলা হয়েছে যে, সমাগম-তাম্বুর দরজার নিকট ঈশ্বরের সম্মুখে সমবেত হওয়ার আগে হোমার্থক বলি উত্সর্গ করতে হবে, বলির মস্তকে হস্তার্পণ করতে হবে, বলিটি হবে একটু নিঁখুত জীবিত পশু৷
পুরাতন নিয়মের যুগে, একজন পাপী তার প্রতিদিনের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য বলির উপরে হস্তার্পণ করত৷ সে সদাপ্রভুর সাক্ষাতে পাপার্থক বলিদান করত এবং যাজক কিছু রক্ত নিয়ে হোমবলির যজ্ঞবেদির শৃঙ্গে ছিটিয়ে দিত৷ তারপরে সে বাকি রক্ত বেদিমূলে ঢেলে দিত এবং এইভাবে সেই পাপীর একদিনের পাপ ক্ষমা হত৷
এক বছরের পাপের জন্য লেবীয়পুস্তক ১৬:৬-১০ পদে বলা হয়েছে, “আর হারোণ আপনার জন্য পাপার্থক বলির গোবৎস আনয়ন করিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিবে। পরে সেই দুইটী ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে। পরে হারোণ ঐ দুইটী ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে। কিন্তু গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ ত্যাগের নিমিত্তে হয়, সে যেন ত্যাগের নিমিত্তে প্রান্তরে প্রেরিত হইতে পারে, তন্নিমিত্ত তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাকে জীবিত উপস্থিত করিতে হইবে।” বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী ত্যাগের ছাগটিকে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হত৷ সুতরাং এক বছরের পাপের প্রায়শ্চিত্ত হত সপ্তম মাসের দশম দিনে৷
লেবীয়পুস্তক ১৬:২৯-৩০ পদে আছে, “তোমাদের নিমিত্ত ইহা চিরস্থায়ী বিধি হইবে; সপ্তম মাসের দশম দিনে স্বদেশী কিম্বা তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী বিদেশী, তোমরা আপন আপন প্রাণকে দুঃখ দিবে ও কোন ব্যবসায় কর্ম্ম করিবে না। কেননা সেই দিন তোমাদিগকে শুচি করণার্থে তোমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা যাইবে; তোমরা সদাপ্রভুর সম্মুখে আপনাদের সকল পাপ হইতে শুচি হইবে।“
এই দিনে ইস্রায়েলীয়রা তাদের এক বছরের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করত৷ কিভাবে তা করা হত? প্রথমত: মহাজাজককে বলির কাছে উপস্থিত থাকতে হত৷ ইস্রায়েলীয়দের প্রতিনিধিত্ব কে করত? হারোণ৷ ঈশ্বর হারোণকে এবং তার বংশধরদের মহাযাজকরূপে নিযুক্ত করেছিলেন৷
নিজের এবং পরিবারের প্রায়শ্চিত্ত করতে হারোণ বৃষ বলিদান করতেন৷ তিনি সেই বৃষ বলি দিতেন এবং এর কিছু রক্ত অনুগ্রহ সিংহাসনের সামনে সাতবার ছিটিয়ে দিতেন৷ নিজের এবং পরিবারের জন্য তাঁকে প্রথমে প্রায়শ্চিত্ত করতে হত৷
প্রায়শ্চিত্তের অর্থ হল, একজন পাপীর পাপ পাপার্থক বলির উপরে অর্পণ করা এবং সেই পাপীর স্থলে সেই পাপার্থক বলিকে হত্যা করা৷ সেই পাপীরই মৃত্যু প্রাপ্য, কিন্তু তার পাপ বলির উপর অর্পণ করে, সে প্রায়শ্চিত্ত করতে পারে এবং তার স্থলে সেই বলিকে মৃত্যুবরণ করতে হয়৷
যখন তাঁর এবং তাঁর পরিবারের প্রায়শ্চিত্ত হয়ে যেত, তারপর তিনি একটি ছাগ ঈশ্বরের সাক্ষাতে বলি দিতেন এবং অন্যটি ইস্রায়েলের লোকেদের সাক্ষাতে প্রান্তরে ছেড়ে দিতেন৷
একটি ছাগকে পাপার্থক বলিরূপে উত্সর্গ করা হত৷ পাপার্থক বলির উপর হস্তার্পণ করে হারোণ স্বীকার করতেন, “হে ঈশ্বর, তোমার ইস্রায়েলের লোকেরা দশ আজ্ঞা এবং ব্যবস্থার ৬১৩টি বিধি লঙ্ঘন করেছে৷ ইস্রায়েলীয়রা পাপী হয়েছে৷ আমি এই ছাগের উপরে হস্তার্পণ দ্বারা আমাদের এক বছরের সমস্ত পাপ এর উপরে অর্পন করছি”৷
তিনি ছাগটি বলিদানের পর কিছু রক্ত নিয়ে সমাগম-তাম্বুর মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেন৷ তারপর কিছু রক্ত অনুগ্রহ সিংহাসনের উপরে ও সামনে সাতবার ছিটিয়ে দিতেন৷
মহাপবিত্র স্থানে নিয়ম-সিন্দুক রয়েছে৷ এর ঢাকনাকে অনুগ্রহ সিংহাসন বলা হয়, এবং এর ভেতরে ব্যবস্থার দুটি ফলক ছিল, মান্নাধারী স্বর্ণের ঘট ছিল, এবং হারোণের পুস্পিত যষ্টি ছিল৷
হারোণের যষ্টি পুনরুত্থানের নিদর্শন, ফলক দুটি তাঁর ন্যায় বিচারের নিদর্শন এবং মান্নাধারী ঘটটি তাঁর জীবন্ত বাক্যের নিদর্শন৷
নিয়ম সিন্দুকের উপরে একটি ঢাকনা ছিল৷ অনুগ্রহ সিংহাসনের সামনে সাতবার রক্ত ছিটানো হত৷ যেহেতু মহাযাজকের পোশাকের সাথে স্বর্ণের ঘন্টা বাঁধা থাকত, তাই রক্ত ছিটানোর সময় সেই ঘন্টা বাজতে থাকত৷
লেবীয়পুস্তক ১৬:১৪-১৫ পদে লেখা আছে, পরে সে ঐ গোবৎসের কিঞ্চিৎ রক্ত লইয়া পাপাবরণের পূর্ব্বপার্শ্বে অঙ্গুলি দ্বারা ছিটাইয়া দিবে, এবং অঙ্গুলি দ্বারা পাপাবরণের সম্মুখে ঐ রক্ত সাত বার ছিটাইয়া দিবে। পরে সে লোকদের পাপার্থক বলির ছাগটী হনন করিয়া তাহার রক্ত তিরস্করিণীর ভিতরে আনিয়া যেমন গোবৎসের রক্ত ছিটাইয়া দিয়াছিল, সেইরূপ তাহারও রক্ত লইয়া করিবে, পাপাবরণের উপরে ও পাপাবরণের সম্মুখে তাহা ছিটাইয়া দিবে।”
যতবার সে ঐ রক্ত ছিটাতো ততবার ঘন্টা বাজত এবং বাইরে সমবেত ইস্রায়েলীয়রা তা শুনতে পেত৷ যেহেতু মহাযাজকের মাধ্যমে তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হত, তাই যখন তারা ঘন্টা শুনতে পেত তারা মনে করত তাদের পাপ ক্ষমা হয়েছে৷ এটা ছিল সমগ্র ইস্রায়েল জাতির জন্য আশীর্বাদের ঘন্টাধ্বনি৷
যখন সাতবার ঘন্টা বেজে উঠত, তারা বলত, “এখন আমি মুক্ত৷ আমি সারা বছরের পাপের জন্য উদ্বিগ্ন ছিলাম, কিন্তু এখন আমি মুক্ত৷” এবং তারপর লোকেরা নিজেদেরকে মুক্ত মনে করত ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যেত৷ সেই সময়কার সেই ঘন্টাধ্বনি এবং বর্তমান কালের জল ও আত্মার সুসমাচার একই বিষয়৷
যখন আমরা প্রায়শ্চিত্তকারী জল ও আত্মার সুসমাচার শুনতে পাই, এবং যখন হৃদয় দিয়ে তা বিশ্বাস করি এবং মুখে স্বীকার করি, সেটাই হল জল ও আত্মার সুসমাচার৷ যখন সাতবার ঘন্টা বাজত, তখন ইস্রায়েলীয়দের বাত্সরিক পাপ ধৌত হত, ঈশ্বরের সম্মুখে তাদের পাপ পরিস্কার হত৷
একটি ছাগ ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে বলি দেওয়ার পরে মহাযাজক অন্য ছাগটি নিয়ে সমাগম-তাম্বুর বাইরে অপেক্ষমান লোকেদের কাছে যেতেন৷ তখন তারা দেখতে পেত যে, মহাযাজক হারোণ ছাগটির মাথার উপরে হাত দিয়ে আছেন৷
লেবীয়পুস্তক ১৬:২১-২২ পদে লেখা আছে, “পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অর্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও তাহাদের সমস্ত অধর্ম্ম অর্থাৎ তাহাদের সর্ব্ববিধ পাপ তাহার উপরে স্বীকার করিয়া সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তুত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে। আর ঐ ছাগ নিজের উপরে তাহাদের সমস্ত অপরাধ বিচ্ছিন্ন ভূমিতে বহিয়া লইয়া যাইবে; আর সেই ব্যক্তি ছাগটীকে প্রান্তরে ছাড়িয়া দিবে।”
মহাযাজক হারোণ ত্যাগের ছাগটির উপরে হস্তার্পণ করতেন এবং ইস্রায়েলীয়দের সারা বছরের সমস্ত পাপ ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্বীকার করতেন৷ “হে ঈশ্বর, ইস্রায়েলীয়রা তোমার সাক্ষাতে পাপ করেছে৷ তারা দশ আজ্ঞা এবং ব্যবস্থার ৬১৩টি বিধি লঙ্ঘন করেছে৷ হে ঈশ্বর, আমি ইস্রায়েলীয়দের সারা বছরের পাপ এই ছাগের মাথায় অর্পণ করছি৷”
যিরমিয় ১৭:১ পদ অনুযায়ী দুই জায়গায় পাপ লেখা হয়৷ একটি হল স্মরণ পুস্তকে এবং অন্য স্থানটি হল পাপীদের হৃদয় ফলক৷
সুতরাং মানুষকে যদি তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়, তবে স্মরণপুস্তক ও হৃদয়ফলক থেকে তাদের পাপ মুছে ফেলতে হবে৷ প্রায়শ্চিত্তের দিনে একটি ছাগ স্মরণপুস্তকের পাপের জন্য এবং অন্যটি হৃদয়ফলকের পাপের জন্য নির্ধারিত ছিল৷
 
পুরাতন নিয়মের বলিদান প্রথা দ্বারা ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দেরকে কি শিক্ষা দিলেন?
তিনি বোঝাতে চাইলেন যে, যথার্থ উপায়ে একবার চিরতরে তাদের পাপ মুছে ফেলার জন্য ত্রাণকর্তা আসবেন৷
 
ছাগের মাথায় হস্তার্পনের দ্বারা মহাযাজক লোকদের দেখাতেন যে, তাদের সারা বছরের পাপ ছাগের উপরে অর্পণ করা হয়েছে৷ ছাগের মস্তকে পাপ অর্পণ করার পরে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি সেই ছাগ নিয়ে প্রান্তরে চলে যেতেন৷
প্যালেস্টাইন একটি মরুভূমির দেশ৷ যে ছাগটির উপরে সারা বছরের পাপ অর্পিত, নির্ধারিত ব্যক্তিটি সেই ছাগকে নিয়ে জল ও ঘাসবিহীন মরুভূমিতে ছেড়ে দিয়ে আসত৷ ছাগটি যখন প্রান্তরের দিকে চলে যেত তখন লোকেরা তা দাঁড়িয়ে দেখত৷
তারা নিজেরা বলাবলি করত, “আমারই মৃত্যু প্রাপ্য ছিল, কিন্তু ছাগটি আমার পরিবর্তে মৃত্যুবরণ করেছে৷ পাপের বেতন মৃত্যু, কিন্তু ছাগটি আমার পাপের জন্য মরেছে৷ হে ছাগ তোমাকে ধন্যবাদ৷ তোমার মৃত্যু মানে আমি জীবন পেয়েছি৷” ছাগটিকে দুরের প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হত এবং এইভাবে ইস্রায়েলীয়রা এক বছরের পাপের ক্ষমা পেত৷
যখন আপনার পাপ পাপার্থক বলির উপরে অর্পিত হয়, তখন আপনি পরিস্কৃত হয়ে যান৷ এটাই তার নিদর্শন৷ আপনি যদি বুঝতে পারেন, দেখবেন সত্য সব সময় সরল৷
ছাগটি এক সময় দিগন্তে হারিয়ে যেত৷ ছেড়ে দেওয়ার পরে ঐ ব্যক্তিটি একাই ফিরে আসত৷ ইস্রায়েলীয়দের এক বছরের পাপ চলে যেত৷ জল ও ঘাসবিহীন প্রান্তরে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরতে ঘুরতে ইস্রায়েলীয়দের পাপ নিয়ে ছাগটি এক সময় মারা যেত৷
পাপের বেতন মৃত্যু এবং ঈশ্বরের ন্যায়বিচার এভাবে সাধিত হত৷ ইস্রায়েলীয়দের বাঁচানোর জন্য ঈশ্বর ছাগ বলিদান করতেন৷ ইস্রায়েলীয়দের এক বছরের সমস্ত অধর্ম ধুয়ে পরিস্কার হত৷
পুরাতন নিয়মের সময় একদিনের ও এক বছরের পাপ যেমন ক্ষমা হয়ে যেত, তেমনি এটাও ঈশ্বরের নিয়ম যে, আমাদের পাপও একেবারে চিরতরে ক্ষমা হবে৷ এটা তাঁর প্রতিজ্ঞা ছিল যে, তিনি আমাদের জন্য মসীহকে পাঠাবেন এবং সারা জীবনের পাপ থেকে আমাদের মুক্ত করবেন৷ যীশুর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সেই নিয়ম স্থাপিত হয়েছে৷
 
 
নুতন নিয়ম অনুযায়ী জল ও আত্মা দ্বারা নুতন জন্ম লাভ
 
যীশু কেন যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন?
জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নেওয়ার মাধ্যমে ধার্মিকতা সাধন করার জন্য৷ নুতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্ম পুরাতন নিয়মে হস্তার্পনের প্রতিরূপ৷
 
আসুন মথি ৩:১৩-১৫ পদ পড়ি, “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন।”
যীশু যর্দনে গিয়ে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে বাপ্তিস্ম নিলেন৷ এবং এইভাবে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করলেন৷ স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন ছিলেন শ্রেষ্ঠ৷
মথি ১১:১১-১২ পদে বলা হয়েছে, “আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক হইতে মহান্‌ কেহই উৎপন্ন হয় নাই, তথাপি স্বর্গ-রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র যে ব্যক্তি, সে তাঁহা হইতে মহান্‌। আর যোহন বাপ্তাইজকের কাল হইতে এখন পর্য্যন্ত স্বর্গ-রাজ্য বলে আক্রান্ত হইতেছে, এবং আক্রমীরা সবলে তাহা অধিকার করিতেছে।”
যোহন বাপ্তাইজক ঈশ্বরের নিযুক্ত মাবব জাতির প্রতিনিধি৷ তিনি তাঁকে খ্রীষ্টের ৬ মাস পূর্বে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন৷ তিনি হারোণের বংশধর এবং শেষ মহাযাজক৷
যীশু যখন তাঁর কাছে এলেন যোহন বাপ্তাইজক বললেন, “আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন?”
“এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মানব জাতিকে পাপ থেকে উদ্ধার করা যেন তারা ঈশ্বরের সন্তান হতে পারে৷ যীশু যোহনকে বললেন, “জল ও আত্মার সুসামাচারের মাধ্যমে আমাদের নুতন জন্ম লাভ করা উচিত৷ সুতরাং এখন আমাকে বাপ্তাইজিত কর৷”
যোহন বাপ্তাইজিত করলেন৷ এটা যীশুর জন্য উপযুক্ত ছিল যে, তিনি জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নেবেন৷ কারণ তিনি সর্বোত্তম উপায়ে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, আমরা যথার্থরূপে পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছি৷ তাঁর উপরে যেন সমস্ত পাপ অর্পিত হয়, এজন্য যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন৷
যীশু এই পৃথিবীতে এলেন এবং ৩০ বছর বয়সে বাপ্তাইজিত হলেন৷ এটা তাঁর প্রথম কাজ ছিল৷ জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নিয়ে তিনি ধার্মিকতা সাধন করলেন৷ এইভাবে সমস্ত মানুষকে শুচি করল৷
যীশু এই পৃথিবীতে এলেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ যথার্থ উপায়ে তুলে নিলেন৷ “এইরূপে” সমস্ত ধার্মিকতা পূর্ণরূপে সাধন করলেন৷
ঈশ্বর বলেন, “ইনি আমার প্রিয় পুত্র, ইহাতেই আমি প্রীত৷” (মথি ৩:১৭ পদ)৷ যীশু খ্রীষ্ট জানতেন যে, তিনি মনুষ্যের সমস্ত পাপ তুলে নেবেন এবং ক্রুশে রক্ত সেচন করবেন, কিন্তু তিনি পিতার ইচ্ছা পালন করলেন; বললেন “আমার ইচ্ছা নয়, কিন্তু তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হউক” (মথি ২৬:৩৯)৷ পিতার ইচ্ছা ছিল মানব জাতির পাপ ধৌত করা এবং এইভাবে জগতের মানুষের জন্য পরিত্রাণ সাধিত করা৷
সুতরাং যীশু বাধ্যতা সহকারে তাঁর পিতার ইচ্ছা পালন করলেন এবং যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা বাপ্তাইজিত হলেন৷
যোহন ১:২৯ পদে লেখা আছে, “পরদিন তিনি যীশুকে আপনার নিকটে আসিতে দেখিলেন, আর কহিলেন, ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান৷” যীশু জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং গলগাথায় ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন৷ “ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান৷” যোহন বাপ্তাইজক এই সাক্ষ্য দিলেন৷
আপনার কি পাপ আছে? আপনি কি একজন ধার্মিক নাকি পাপী? সত্য হল যীশু জগতের পাপভার তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের জন্য ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন৷
 
কখন যীশুর জগতের সমস্ত পাপ অর্পিত হল?
যর্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজকের কাছে যীশু বাপ্তাইজিত হওয়ার মাধ্যমে আমাদের পাপ তুলে নিলেন৷
 
এই জগতে জন্মগ্রহণ করার পর আমরা এমনকি ১ থেকে ১০ বছর বয়সের মধ্যে পাপ করি৷ যীশু সেইসব পাপ তুলে নিয়েছেন৷ ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যেও পাপ করি৷ হৃদয় ও কাজের মাধ্যমে আমরা পাপ করি, সেই সব পাপ তিনি তুলে নিয়েছেন৷
আমরা ২১-৪৫ বছর বয়সের মধ্যেও পাপ করি৷ সেগুলোও তিনি তুলে নিয়েছেন৷ তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন৷ জন্মের দিন থেকে মৃত্যুদিন পর্যন্ত আমরা পাপ করি৷ তিনি সমস্তই তুলে নিয়েছেন৷
“ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতের পাপভার লইয়া যান৷” সমস্ত পাপ, প্রথম আদম থেকে শুরু করে, জগতে জন্ম গ্রহণ করা শেষ মানুষটি পর্যন্ত, যে যখনই জন্মগ্রহণ করুক না কেন তিনি সকলের পাপ তুলে নিলেন৷ তিনি কার কার পাপ তুলে নেবেন সে বিষয়ে কাউকে আলাদাভাবে মনোনীত করলেন না৷
তিনি যে মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে প্রেম করবেন তাও নয়৷ তিনি মাংসে এই পৃথিবীতে এলেন এবং জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং ক্রুশে হত হলেন৷ তিনি আমাদের সকলের বিচারদন্ড নিজে গ্রহণ করলেন এবং জগতের সমস্ত পাপ চিরতরে মুছে দিলেন৷
তাঁর পরিত্রাণ থেকে তিনি কাউকে বাদ দেন নি৷ “জগতের পাপভার” বলতে আমাদের সব পাপকে বোঝানো হয়েছে৷ যীশু সমস্ত তুলে নিয়েছেন৷
তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের মাধ্যমে তিনি জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে সেগুলো সব তুলে নিয়েছেন এবং আমাদের পাপের জন্য ক্রুশে বিচারিত হয়েছেন৷ ক্রুশে মৃত্যুবরণের আগে তিনি বলেছিলেন, “সমাপ্ত হইল” (যোহন ১৯:৩০)৷ অর্থাৎ মানুষের জন্য পরিত্রাণ সাধিত হল৷
কেন যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ হতে হল? কারণ রক্তের মধ্যে মানুষের জীবন, এবং রক্তের দ্বারাই প্রায়শ্চিত্ত করা হয় (লেবীয়পুস্তক ১৭:১১)৷ কেন যীশুকে বাপ্তাইজিত হতে হল? কারণ তিনি জগতের সমস্ত পাপভার তুলে নিতে চাইলেন৷
“ইহার পরে যীশু, সমস্তই এখন সমাপ্ত হইল, শাস্ত্রের বচন যেন সিদ্ধ হয়, এই জন্য কহিলেন, ‘আমার পিপাসা পাইয়াছে’” (যোহন ১৯:২৮)৷ যর্দনে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যুর মাধ্যমে পুরাতন নিয়মে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা পূর্ণ হয়েছে জেনে যীশু ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেন৷
যীশু বুঝতে পারলেন যে, তাঁর মাধ্যমে প্রায়শ্চিত্ত সাধিত হল, তাই বললেন, “সমাপ্ত হইল৷” তিনি ক্রুশে প্রাণ দিলেন৷ তিনি আমাদের শুচি করলেন৷ তিন দিন পর মৃত্যুকে জয় করে উঠলেন এবং স্বর্গারোহন করলেন, এবং এখন তিনি ঈশ্বরের দক্ষিনে বসে আছেন৷
যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা পাপ ধৌত হওয়াই হল আশীর্বাদযুক্ত নুতন জন্ম লাভের জল ও আত্মার সুসমাচার৷ বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনার সমস্ত পাপের ক্ষমা আপনি পাবেন৷
প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনা করে আমরা আমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে পারি না৷ যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা একেবারেই চিরতরে আমাদের মুক্তি সাধিত হয়েছে৷ “ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না৷” (ইব্রীয় ১০:১৮)৷
এখন একমাত্র করণীয় হল, যীশুর বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে সাধিত পরিত্রাণে বিশ্বাস করা৷ বিশ্বাস করুন এবং আপনি পরিত্রাণ পাবেন৷
রোমীয় ৫:১-২ পদে বলা হয়েছে, “অতএব বিশ্বাস হেতু ধার্মিক গণিত হওয়াতে আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশে সন্ধি লাভ করিয়াছি; আর তাঁহারই নামে আমরা বিশ্বাসে এই অনুগ্রহের মধ্যে প্রবেশ লাভ করিয়াছি, যাহার মধ্যে দাঁড়াইয়া আছি, এবং ঈশ্বরের প্রতাপের প্রত্যাশায় শ্লাঘা করিতেছি৷”
নুতন জন্ম লাভের আশীর্বাদযুক্ত জল ও আত্মার সুসামাচারে বিশ্বাস করা ছাড়া বিচারিত হওয়ার আর কোনো পথ নেই৷
 
 
ঈশ্বরের ব্যবস্থার উদ্দেশ্য
 
ব্যবস্থা দ্বারা আমরা কি শুচি হতে পারি?
না, পারি না৷ ব্যবস্থা দ্বারা আমাদের মধ্যে পাপের জ্ঞান জন্মে৷
 
ইব্রীয় ১০:৯ পদে লেখা আছে, “তত্পরে তিনি বলিলেন, দেখ, তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি৷ তিনি প্রথম বিষয় লোপ করিতেছেন, যেন দ্বিতীয় বিষয় স্থির করেন৷” আমরা ব্যবস্থা দ্বারা শুচি হতে পারি না, বরং, কেবল পাপীই হই৷ আমরা যেন ব্যবস্থা পালন করি সেই উদ্দেশ্যে ঈশ্বর ব্যবস্থা দেন নি৷
রোমীয় ৩:২০ পদে বলা হয়েছে, “কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে”৷ অব্রাহমের সাথে নিয়ম স্থির করার ৪৩০ বছর পরে ঈশ্বর মোশির মাধ্যমে ইস্রায়েলীয়দেরকে ব্যবস্থা দিয়েছিলেন যেন তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপ কি তা বুঝতে পারে৷ ঈশ্বরের ব্যবস্থা ছাড়া মানুষের পাপের জ্ঞান জন্মাত না৷ ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছিলেন যেন আমরা পাপ সমন্ধে জ্ঞান লাভ করি৷
কাজেই ব্যবস্থা দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল যেন আমরা বুঝতে পারি যে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা পাপী৷ এই জ্ঞান দ্বারা আমরা যেন নুতন জন্ম লাভের জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা যীশুর কাছে ফিরে আসতে পারি৷ ঈশ্বরের দেওয়া ব্যবস্থার এটাই উদ্দেশ্য ছিল৷
 
 
ঈশ্বরের সংকল্প পালন করার উদ্দেশ্যে প্রভু এসেছেন
 
ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের কি করা উচিত?
যীশুর মাধ্যমে ঈশ্বরের পরিত্রাণে বিশ্বাস করা উচিত৷
 
“তারপর তিনি কহিলেন, তোমার ইচ্ছা পালন করিবার জন্য আসিয়াছি” (ইব্রীয় ১০:৯)৷ ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা শুচি হতে পারি না, কিন্তু তাঁর পরিত্রাণ দ্বারা শুচি হতে পারি৷ ব্যবস্থা দ্বারা কেবল পাপীই হতে পারি৷ ঈশ্বর এটা চান নি যে, ব্যবস্থা পালন করি৷ ঈশ্বর তাঁর প্রেম ও ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আমাদের উদ্ধার করেছেন৷
“সেই ইচ্ছাক্রমে, যীশু খ্রীষ্টের দেহ একবার উৎসর্গ করণ দ্বারা, আমরা পবিত্রীকৃত হইয়া রহিয়াছি। আর প্রত্যেক যাজক দিন দিন সেবা করিবার এবং একরূপ নানা যজ্ঞ পুনঃপুনঃ উৎসর্গ করিবার জন্য দাঁড়ায়; সেই সকল যজ্ঞ কখনও পাপ হরণ করিতে পারে না। কিন্তু ইনি পাপার্থক একই যজ্ঞ চিরকালের জন্য উৎসর্গ করিয়া ঈশ্বরের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন” (ইব্রীয় ১০:১০-১২)৷
তিনি ঈশ্বরের দক্ষিণে বসলেন, কারণ, তাঁর পরিত্রাণের কার্য সম্পূর্ণরূপে সাধিত হয়েছে এবং আর কিছু করার বাকি নেই৷ তিনি আর বাপ্তাইজিত হবেন না বা আমাদের মুক্তির জন্য নিজেকে আর উত্সর্গ করবেন না৷
সুতরাং এখন পৃথিবীর সমস্ত পাপভার ধৌত হয়ে গেছে, এখন তাঁর যা করণীয় তা হল যারা তাঁকে বিশ্বাস করবে, তিনি তাদেরকে অনন্তজীবন দেবেন৷ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করবে তিনি তাদেরকে আত্মার দ্বারা মুদ্রাঙ্কিত করবেন৷
যীশু এই পৃথিবীতে নেমে এলেন এবং সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিলেন এবং ক্রুশে মৃত্যুবরণ করে তাঁর কাজ সম্পন্ন করলেন৷ প্রভুর কাজ এখন সমাপ্ত এবং তিনি এখন ঈশ্বরের দক্ষিণে বসে আছেন৷
আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে প্রভু যীশু আমাদেরকে অনন্তকালের জন্য পরিত্রাণ দিয়েছেন৷ তাঁর বাপ্তিস্ম ও রক্তের দ্বারা তিনি চিরকালের জন্য আমাদেরকে শুচি করেছেন৷
 
 
যারা ঈশ্বরের বিপক্ষ
 
ঈশ্বরের বিপক্ষ করা?
যারা হৃদয়ে পাপ নিয়ে যীশুতে বিশ্বাস করে৷
 
ইব্রীয় ১০:১২-১৩ পদে প্রভু বলেন, কিন্তু ইনি পাপার্থক একই যজ্ঞ চিরকালের জন্য উৎসর্গ করিয়া ঈশ্বরের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইলেন, এবং তদবধি অপেক্ষা করিতেছেন, যে পর্য্যন্ত তাঁহার শত্রুগণ তাঁহার পাদপীঠ না হয়। কারণ যাহারা পবিত্রীকৃত হয়, তাহাদিগকে তিনি একই নৈবেদ্য দ্বারা চিরকালের জন্য সিদ্ধ করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, তাদের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য তিনি শেষ বিচার করা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন৷
তাঁর শত্রুগণ তখনও বলবে, “হে ঈশ্বর আমার পাপ ক্ষমা কর”৷ শয়তান ও তার অনুসারীরা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না৷ তারা অবিরত ক্ষমা চাইতেই থাকে৷
আমাদের প্রভু ঈশ্বর এখন তাদের বিচার করবেন না৷ কিন্তু যীশুর দ্বিতীয় আগমনের দিনে তারা বিচারিত হবে এবং চিরকালের জন্য নরকে নিক্ষিপ্ত হবে৷ ঈশ্বর এই প্রত্যাশায় এখনও ধৈর্য্য ধরেছেন যে, তারা হয়তো অনুতাপ করে পরিত্রাণের মাধ্যমে ধার্মিক হবে৷
আমাদের প্রভু যীশু সমস্ত পাপ তুলে নিলেন এবং যারা বিশ্বাস করে, তিনি তাদের স্থলে মৃত্যুবরণ করলেন৷ যারা তাঁতে বিশ্বাস করে তিনি তাদেরকে মুক্ত করবার জন্য দ্বিতীয়বার আসবেন৷ “হে প্রভু শীঘ্র আইস৷” তিনি দ্বিতীয়বার আসবেন পাপহীনদেরকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং তাঁর সাথে অনন্তকাল স্বর্গরাজ্যে বাস করার জন্য৷
যারা সর্বক্ষণ নিজেকে পাপী পাপী বলে, প্রভু যখন আসবেন তখন তাদের জন্য স্বর্গে স্থান হবে না৷ শেষ দিনে তারা বিচারিত এবং নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে৷ এই শাস্তি তাদের জন্য অপেক্ষা করছে যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে নুতন জন্ম লাভ করতে অস্বীকার করেছে৷
যারা অসত্যে বিশ্বাস করে আমাদের প্রভু যীশু তাদেরকে তাঁর শত্রু হিসাবে গণ্য করেন৷ এই জন্যই অসত্যের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে৷ এই জন্যই আশীর্বাদযুক্ত জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করার মাধ্যমে আমাদেরকে নুতন জন্ম লাভ করতে হবে৷
 
 
আমাদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করতে হবে
 
আমাদের সমস্ত ঋণ (পাপ) সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ হওয়ার পরেও কি আমাদের আর কোনো প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন আছে?
না, একেবারেই না৷
 
ইব্রীয় ১০:১৫-১৬ পদে বলা হয়েছে, “ আর পবিত্র আত্মাও আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিতেছেন, কারণ অগ্রে তিনি বলেন, সেই কালের পর, প্রভু কহেন, আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব, আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব৷”
আমাদের পাপ মুছে ফেলার পরে তিনি বললেন, “আমি তাহাদের সহিত এই নিয়ম স্থির করিব” সেই নিয়মটি কি? “আমি তাহাদের হৃদয়ে আমার ব্যবস্থা দিব, আর তাহাদের চিত্তে তাহা লিখিব৷” প্রথমত আমরা ব্যবস্থানুসারে ব্যবস্থাভিত্তিক জীবনযাপন করতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ব্যবস্থা দ্বারা সত্যিকারের মুক্তি পাওয়া যায় না৷
পরে আমরা জানতে পারি যে, যারা হৃদয়ে আশীর্বাদযুক্ত নুতন জন্মের জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, যীশু তাদেরকে ইতিপূর্বেই পরিত্রাণ দিয়েছেন৷ যে কেউ যীশুর বাপ্তিস্মে ও রক্তে বিশ্বাস করে সে-ই মুক্তি পায়৷
যীশুই হলেন পরিত্রাণের প্রভু৷ “আকাশের নীচে মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোনো নাম নাই, যে নামে আমাদিগকে পরিত্রাণ পাইতে হইবে” (প্রেরিত ৪:১২)৷ আমাদের ত্রাণকর্তা হিসাবে যীশু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন৷ কারণ কর্ম দ্বারা আমরা মুক্তি পেতে পারি না৷ যীশু আমাদের পরিত্রাণ দিয়েছেন, এবং আমাদের হৃদয়ের ফলকে এই কথা লিখে দিয়েছেন যে, তিনি তাঁর প্রেমের ব্যবস্থা দ্বারা আমাদেরকে পরিত্রাণ করেছেন৷
তাহাদের পাপ ও অধর্ম্ম সকল আর কখনও স্মরণে আনিব না।” ভাল, যে স্থলে এই সকলের মোচন হয়, সেই স্থলে পাপার্থক নৈবেদ্য আর হয় না (ইব্রীয় ১০:১৭-১৮)৷
এখন তিনি আর আমাদের ব্যবস্থাবিহীন কাজ স্মরণ করেন না৷ এখন তিনি আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন৷ ক্ষমা পেতে হবে এমন পাপ আর আমাদের নেই৷ আমাদের ঋণ(পাপ) সম্পূর্ণরূপে শোধ করা হয়েছে, পরিশোধ করার আর কিছু বাকি নেই৷ যীশুর কাজে বিশ্বাসের দ্বারা মানুষ মুক্তি পায়৷ তিনি তাঁর বাপ্তিস্মে ও ক্রুশীয় রক্তের মাধ্যমে আমাদেরকে মুক্ত করেছেন৷
এখন আমাদের করণীয় যীশুর জল ও রক্তে বিশ্বাস করা৷ “ আর তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে”৷ (যোহন ৮:৩২)৷ যীশুর সাধিত পরিত্রাণে বিশ্বাস করুন৷ নিঃশ্বাস গ্রহণের চেয়ে পরিত্রাণ লাভ করা সহজতর৷ এই জন্য করণীয় হল, প্রকৃত সত্যে বিশ্বাস করা৷ ঈশ্বরের বাক্য বিশ্বাস করাই হল পরিত্রাণ৷
বিশ্বাস করুন যে, যীশুই আমাদের ত্রাণকর্তা (যীশুর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস করুন)৷ এবং বিশ্বাস করুন যে, আপনি পরিত্রাণ পেয়েছেন৷ নিজের ধ্যানধারণা পরিত্যাগ করুন এবং শুধু যীশুর পরিত্রাণে বিশ্বাস করুন৷ আমি প্রার্থনা করি আপনি যেন, যীশুতে বিশ্বাস করেন এবং তাঁর পরিচালনায় অনন্ত জীবনের অধিকারী হন৷