Search

শিক্ষা

বিষয় ৩: জল ও পবিত্র আত্মার সুসমাচার

[3-17] যীশু যেভাবে পিতরের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, সেভাবেই আমাদের পা-ও ধুয়ে দিয়েছেন যোহন ১৩:১-১১)

যীশু যেভাবে পিতরের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, সেভাবেই আমাদের পা-ও ধুয়ে দিয়েছেন
< যোহন ১৩:১-১১ >
“নিস্তারপর্বের পূর্বে যীশু, এই জগৎ হইতে পিতার কাছে আপনার প্রস্থান করিবার সময় উপস্থিত জানিয়া, জগতে অবস্থিত আপনার নিজস্ব যে লোকদিগকে প্রেম করিতেন, তাহাদিগকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করিলেন। আর রাত্রিভোজের সময়ে- দিয়াবল তাঁহাকে সমর্পণ করিবার সংকল্প শিমোনের পুত্র ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদার হৃদয়ে স্থাপন করিলে পর- তিনি জানিলেন যে, পিতা সমস্তই তাঁহার হস্তে প্রদান করিয়াছেন ও তিনি ঈশ্বরের নিকট হইতে আসিয়াছেন, আর ঈশ্বরের নিকটে যাইতেছেন; জানিয়া তিনি ভোজ হইতে উঠিলেন, এবং উপরের বস্ত্র খুলিয়া রাখিলেন, আর একখানি গামছা লইয়া কটি বন্ধন করিলেন। পরে তিনি পাত্রে জল ঢালিলেন ও শিষ্যদের পা ধুইয়া দিতে লাগিলেন, এবং যে গামছা দ্বারা কটিবন্ধন করিয়াছিলেন, তাহা দিয়া মুছাইয়া দিতে লাগিলেন। এইরূপে তিনি শিমোন পিতরের নিকটে আসিলেন। পিতর তাঁহাকে বলিলেন, প্রভু, আপনি কি আমার পা ধুইয়া দিবেন? যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে। পিতর তাঁহাকে বলিলেন, আপনি কখনও আমরা পা ধুইয়া দিবেন না। যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, যদি তোমাকে ধৌত না করি, তবে আমার সহিত তোমার কোন অংশ নাই। শিমোন পিতর বলিলেন, প্রভু, কেবল পা নয়, আমরা হাত ও মাথাও ধুইয়া দিউন। যীশ তাঁহাকে বলিলেন, যে স্নান করিয়াছে, পা ধোয়া ভিন্ন আর কিছুতে তাহার প্রয়োজন নাই, সে ত সর্বাঙ্গে শুচি; আর তোমরা শুচি, কিন্তু সকলে নহ। কেননা যে ব্যক্তি তাঁহাকে সমর্পণ করিবে, তাহাকে তিনি জানিতেন; এই জন্য বলিলেন, তোমরা সকলে শুচি নহ।”
 
 
আমি যা পরিকল্পনা করেছিলাম, তার চেয়ে একদিন আগে এসে পৌঁছেছি। তাই আমি এই সময়ে, আপনাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য থেকে যোহন ৩:১-১১ পদ নিয়ে কথা বলার সুযোগটি নিতে চাই। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিষ্যত্ব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আমি এই বিষয়টি নিয়ে কথা চেয়েছিলাম, কিন্তু যথেষ্ট সময়ের অভাবে তা বলতে পারিনি। আজকের শাস্ত্রাংশটিতে আমরা দেখতে পাই যীশু তাঁর শিষ্যদের পা ধুয়ে দিচ্ছেন। যীশু সমস্ত শিষ্যদের পা ধুয়ে দিচ্ছিলেন, আর তিনি পিতরের পাও ধুয়ে দিতে চাইলেন, কিন্তু পিতর প্রথমে তাতে বাঁধা দিল। কারণ লেখা আছে, পিতর অস্বস্তি বোধ করলেন, তাই তিনি প্রভুকে বাধা দিলেন। তিনি প্রভুকে বললেন যে, তিনি কি করে তাঁর পা ধুয়ে দিতে পারেন। আজকের এই শাস্ত্রাংশ থেকে আমরা বোঝার চেষ্টা করবে যে, পিতর কিভাবে প্রভুকে এত বিশ্বস্থভাবে অনুসরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 
 
 
ইহাদের অপেক্ষা তুমি কি আমাকে অধিক প্রেম কর?
 
গত বৃহস্পতিবার সকালে শিষ্যত্ব প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে আমি যোহন ২১ অধ্যায়ের উপর প্রচার করেছিলাম। আমরা যখন এই অধ্যায়টি পাঠ করি, তখন দেখতে পাই প্রভু পিতরকে বলছেন, “হে যোহনের পুত্র শিমোন, ইহাদের অপেক্ষা তুমি কি আমাকে অধিক প্রেম কর?” তখন পিতর তাঁকে উত্তর দিয়ে বললেন, “হাঁ, প্রভু; আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভাল বাসি।” প্রভু তাঁকে বললেন, “আমার মেষশাবকগণকে চরাও।” তখন তিনি পিতরকে দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করলেন, “হে যোহনের পুত্র শিমোন, তুমি কি আমাকে প্রেম কর?” পিতর উত্তর দিলেন, “হাঁ, প্রভু; আপনি জানেন, আমি আপনাকে ভাল বাসি।” যীশু পিতরকে একই প্রশ্ন তৃতীয় বার জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু তৃতীয়বারে পিতর যীশুকে উত্তর দিয়ে বললেন, “প্রভু, আপনি সকলই জানেন; আপনি জ্ঞাত আছেন যে, আমি আপনাকে ভাল বাসি।” পিতর পুনরুত্থিত যীশুর কাছে এই স্বীকারোক্তি করলেন। এই ঘটনার পর পিতরকে যীশু খ্রীষ্টের শিষ্য হিসেবে এবং ঈশ্বরের একজন লোক হিসেবে বিশ্বস্থভাবে কাজ করতে হতো। আর পিতর তা করতে পেরেছিলেন, কারণ প্রভু তাঁর সমগ্র জীবনের সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন। প্রভু, যেহেতু, যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যর্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা পিতর এবং সমস্ত মানবজাতির পাপ নিজেই বহন করেছিলেন, ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন এবং মৃত্যু হতে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, তাই তিনি পিতরের এবং আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন। 
পিতর প্রভুকে অনুসরণ করতে পেরেছিলেন এবং প্রেরিত হিসেবে তাঁর সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে পেরেছিলেন, কারণ প্রভু ইতোমধ্যেই তাঁর সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন। যদিও পিতর যীশুকে তিন বার অস্বীকার করেছিলেন, তথাপি তিনি প্রভুকে অনুসরণ করতে পেরেছিলেন এবং প্রভু তাঁকে এটা করার অনুমতি দিয়েছিলেন, কারণ তিনি ইতোমধ্যেই তাঁর সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন। যদি প্রভু পিতরের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য মোচন না করতেন- অর্থাৎ, যদি যীশু খ্রীষ্ট যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা পিতরের সমস্ত পাপ নিজে বহন না করতেন এবং এই পাপের জন্য ক্রুশারোপিত না হতেন- তাহলে পিতর তাঁকে অনুসরণ করতে পারতেন না। এমনকি পিতর নিজেও পুনরুত্থিত যীশুর সামনে এরকম স্বীকারোক্তি করতে পারতেন না। তিনি যীশুকে একই উত্তর তিন বার দিতে পারতেন না যে, “প্রভু, আপনি জানেন যে, আমি আপনাকে ভাল বাসি।” প্রভু যখন পিতরকে তৃতীয় বার জিজ্ঞেস করলেন, তখন পিতর উত্তর দিলেন, “প্রভু, আপনি সকলই জ্ঞাত আছেন” পিতর এই উত্তর দিতে পেরেছিলেন, কারণ তিনি যদিও জানতেন যে, তিনি নিজে কতটা দূর্বল এবং পাপী, কিন্তু তিনি এটাও জানতেন যে, প্রভু ইতোমধ্যেই তাঁর সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। 
 
 

যীশু কেন পিতরের পা ধুতে চেয়েছিলেন?

 
আজকের শাস্ত্রাংশ, যোহন ২১ অধ্যায়ে যীশু এবং পিতরের মধ্যকার কথোপকথন লেখা হয়েছে। শত্রু হস্তে সমর্পিত হওয়া ঠিক আগে প্রভু শেষবারের মতো নিস্তারপর্ব পালন করতে চেয়েছিলেন। শিষ্যদের সাথে শেষ ভোজ এবং কিছু কথোপকথনের পর প্রভু মেজ থেকে উঠলেন, একটি গামছা নিলেন, একটি পাত্রে জল ঢাললেন এবং তাঁর শিষ্যদের পা ধুতে শুরু করলেন। আর পা ধুয়ে দেওয়ার পর তিনি সেই গামছা দিয়ে তাদের পা মুছে দিতে লাগলেন। কয়েকজন শিষ্যের পা ধুয়ে দেওয়ার পর পিতরের পালা আসল। কিন্তু পিতর তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কি করে আমার পা ধুয়ে দিবেন?” যীশু তাঁকে বললেন, “আমি যা করছি, তুমি এখন তা জান না, কিন্তু এর পরে বুঝবে।” পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি কখনও আমার পা ধুয়ে দিবেন না!” কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, “যদি আমি তোমাকে না ধুয়ে দিই, তাহলে আমার সাথে তোমার কোন অংশ নাই।” তখন পিতর উত্তর দিয়ে বললেন, “তাহলে আমার পুরো শরীর ধুয়ে দিন!” কিন্তু যীশু বললেন, “যেহেতু তোমরা ইতোমধ্যেই সম্পূর্ণরূপে শুচি, তাই এখন শুধু তোমাদের পা ধোওয়ারই প্রয়োজনীয়তা আছে।”
দেখে মনে হয়, পিতরের একটা খুঁতখুঁতে ব্যক্তিত্ব ছিল। প্রভু অন্য শিষ্যদের পাও ধুয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা আপত্তি করে না। অন্যদিকে, যখন পিতরের পালা আসল, তখন তিনি বাধা দিলেন এবং বললেন, “প্রভু, আপনি কি করে আমার পা ধুয়ে দিবেন?” এর আগে, যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, লোকে তাঁর বিষয়ে কি বলে। তখন পিতর প্রভুকে উত্তর দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনিই হলেন খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র। পিতর জানতেন যে, যীশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র, যিনি নিজেই ঈশ্বর এবং যিনি সমস্ত বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি করেছেন; আর তিনি হলেন তাঁর ত্রাণকর্তা, যিনি মানবজাতিকে তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য এসেছেন। তাই, যখন প্রভু তাঁর পা ধুতে চাইলেন, তখন তিনি তাঁকে বাধা দিলেন এবং বললেন যে, কিভাবে তাঁর ত্রাণকর্তা তাঁর পা ধুয়ে দিতে পারেন? এখানে বোঝা যায় যে, অন্য শিষ্যদের বিশ্বাসও পিতরের বিশ্বাসের মতো একইরকম শক্তিশালী ছিল। তখন যীশু পিতরকে বললেন, “আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।” যখন প্রভু পিতরকে বললেন যে, যদি তিনি তাঁর পা না ধুয়ে দেন, তাহলে তাঁর সাথে পিতরের কোন সম্পর্ক নেই, তখন পিতর ব্যগ্রভাবে যীশুকে বললেন যেন তিনি তাঁর সমস্ত শরীর ধুয়ে দেন। কিন্তু প্রভু পিতরকে উত্তর দিয়ে বললেন, “যে স্নান করিয়াছে, পা ধোয়া ভিন্ন আর কিছুতে তাহার প্রয়োজন নাই, সে তো সর্বাঙ্গে শুচি।” 
যীশু এবং পিতরের মধ্যকার এই কথোপকথনের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, প্রভু এই জগতের মানুষকে কতটা প্রেম করেছেন। তিনি তাদেরকে কেমন প্রেম করেছেন? তিনি তাদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করেছেন। এর অর্থ হল- আমাদের প্রতি প্রভুর যে প্রেম, সেটা অবস্থাগত নয় যে, অসুবিধা হলে তিনি আমাদেরকে প্রেম করা বন্ধ করে দিবেন। যেমনটি যোহন ১৩:১ পদে লেখা আছে, “জগতে অবস্থিত আপনার নিজস্ব যে লোকদিগকে প্রেম করিতেন, তাহাদিগকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করিলেন,” প্রভু তাঁর শিষ্যদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করলেন। বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা তিনি ইতোমধ্যেই মানবজাতির সমস্ত পাপ এবং পিতরের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। যেহেতু যীশু যোহন বাপ্তাইজকের নিকট বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা জগতের সমস্ত পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন, তাই তিনি ইতোমধ্যেই পিতরের সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন। তাই যীশু শুধুমাত্র যে কাজটি বাকি ছিল, তা হল- তাঁকে ক্রুশারোপিত হয়ে হত হতে হতো এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হতে হতো, আর এভাবে মানবজাতির পাপের পরিত্রাণ সাধন করতে হতো। 
যাইহোক, এখানে পিতর নিজেকে যথেষ্ঠ ভালভাবে জানতেন না, তাই তিনি উপলব্ধি করতে পারেননি যে, তিনি যীশুকে তিন বার অস্বীকার করবেন। পিতর এবং অন্য শিষ্যেরা উপলব্ধি করতে পারেননি যে, তাঁরা আরো অনেক পাপ করবেন। এইজন্যই যীশু ক্রুশারোপিত হওয়ার আগে তাদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, যেন তারা এই শিক্ষা পায় যে, তাদের ভবিষ্যৎ পাপ নিয়ে তাদের কি করা উচিৎ। তিনি তাঁদের এটাও দেখাতে এবং বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি শুধু তাঁদেরকেই প্রেম করেননি, কিন্তু ঈশ্বরের সমস্ত লোকদের চিরকালের জন্য প্রেম করেছেন। আর এইজন্যই তিনি বলেন, “আমি যাহা করিতেছি, তাহা তুমি এক্ষণে জান না, কিন্তু ইহার পরে বুঝিবে।” যীশু এটি বলেছিলেন, কারণ তিনি পিতরকে বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, পিলাতের প্রাঙ্গণে যীশুকে তিন বার অস্বীকার করার অনেক আগেই, যীশুর মৃত্যুর পর হতাশায় ডুবে গিয়ে মাছ ধরতে ফিরে যাওয়ার অনেক আগেই তিনি তাঁর সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন। 
মানুষ মনে করে যে, যদি তারা অন্যের সাথে খুব খারাপ কিছু করে, তাহলে তার কোন ক্ষমা নেই। এত খারাপ কাজ করার পর লজ্জায় পালিয়ে যাবার মতো প্রবণতা তাদের মধ্যে দেখা যায়। যাইহোক, প্রভু এখানে আমাদের এই শিক্ষাও দিচ্ছেন যে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা পরিত্রাণ লাভের পরও আমরা যে সমস্ত পাপ করব, তিনি আমাদের সে সমস্ত পাপও মোচন করেছেন। এই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাটি দেওয়ার জন্যই প্রভু শিষ্যদের পা ধুয়ে দিলেন। প্রভু কখন এবং কোথায় তাঁর শিষ্যদের পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়ে মোচন করেছিলেন? যর্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হওয়ার সময় তিনি এটা করেছিলেন। কারণ মথি ৩:১৫ পদে লেখা আছে, “এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” এই অনুচ্ছেদটি পরিষ্কারভাবে বলছে যে, যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা যীশু মানবজাতির সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। এভাবে মানবজাতির পাপ মোচিত হয়েছিল। এটা ছিল পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছা যে, প্রভু তাঁর দেহে জগতের সমস্ত পাপ বহন করবেন, আর ঠিক এই কারণেই যীশু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। ঐ সময়ে প্রভু মানবজাতির সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন এবং সেগুলো মোচন করেছিলেন। যীশু পিতরের এবং অন্য শিষ্যদের পা ধুয়েছিলেন এইজন্য যেন, তারা এটা জানতে পারে। আর যীশু এটা করেছিলেন, কারণ তিনি জানতেন যে, তিনি খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন; আর তিনি এটাও জানতেন যে, পিতর খুব দূর্বল মানুষ, আর তিনি যীশুকে তাঁর ক্রুশারোপনের পূর্বে তিন বার অস্বীকার করবেন। 
প্রভুর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভের পরও যখন আমাদের দূর্বলতা প্রকাশিত হবে, তখন আমরা এই ধার্মিকতাকে মনে অবশ্যই আন্দোলন করব। প্রভুকে অনুসরণ করতে করতে- যখন আমাদের অসংখ্য দূর্বলতা অনবরত প্রকাশিত হতে থাকবে, আমরা যে লালসাগুলোকে দমন করতে চাই, সেগুলো যখন আমাদের হৃদয়ে বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকবে- তখন আমাদের পক্ষে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। আমরা হতাশ হয়ে পড়ি এবং মনে মনে নিজেদেরকেই বলি, “আমি কেন এত দূর্বল? আমি কি এতটাই অক্ষম?” সম্প্রতি, আমরা সারা পৃথিবীর অনেক মানুষদের কাছ থেকে তাদের পরিত্রাণের সাক্ষ্য পাচ্ছি। তারা আমাদেরকে বলছে যে, জল ও আত্মার সুসমাচারের উপরে লেখা আমাদের বই পড়ে তারা তাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ করেছে। যখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয় যে, তারা কিভাবে পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তখন তারা বলে যে, তারা এটা লাভ করেছে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা। যখন তাদেরকে তাদের ভবিষ্যৎ পাপের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, তাদের অধিকাংশই বলে যে, তারা বিশ্বাস করে যে, প্রভু তাদের সমস্ত পাপই মোচন করেছেন। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু বলে যে, প্রভুর ইচ্ছানুসারে জীবন যাপনের দ্বারা তারা তাদের পাপের নিষ্পত্তি করতে পারবে। 
যারা খুব সম্প্রতি, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারা তাদের দূর্বলতা সম্পর্ক খুব ভাল করে জানে না। যদি তাদের নিজেদের দূর্বলতা সম্পর্কে জ্ঞান থেকেও থাকে, তবে তা খুবই অপ্রতুল। তাই, যখন তারা দেখে যে, তারা আবার পাপ করছে, তখন তারা হতাশ হয়ে পড়ে। তারা নিজেদের ইচ্ছাশক্তি দ্বারা তাদের দূর্বলতা এবং অযোগ্যতা জয় করার চেষ্টা করে। যেহেতু তারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তাই তারা আর পাপ না করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে। যাইহোক, যদিও তাদের নিজস্ব এই ইচ্ছা তাদেরকে পাপ করা থেকে কিছুক্ষণের জন্য বিরত রাখে, কিন্তু শেষমেশ, তারা পাপকে আর প্রতিরোধ করতে পারে না, কিন্তু পাপের অধীন হয়ে পড়ে। তাহলে, আমরা পাপকে কিভাবে প্রতিরোধ করতে পারি? ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস স্থাপনের দ্বারা, মন্ডলীর সাথে নিজেদেরকে এক করার দ্বারা এবং ঈশ্বরের লোকদের নির্দেশনা অনুসরণের দ্বারা আমরা একে প্রতিরোধ করতে পারি। 
ধার্মিকতার কার্যে মনোনিবেশ করার দ্বারা এবং বাস্তবে তা করার দ্বারা ধার্মিকগণ তাদের হৃদয়ের পাপের লালসাকে অনেকখানিই জয় করতে পারে। এই রকম ধার্মিকতার কার্য সাধনের দ্বারা, ধার্মিকগণের সাথে সহভাগিতা করার দ্বারা এবং ঈশ্বরের সুসমাচার অর্থাৎ জল ও আত্মার সুসমাচার শ্রবণের দ্বারা আমরা এই জগৎকে জয় করতে পারি। আরাধনার সময় যখন আমরা জল ও আত্মার সুসমাচার শ্রবণ করি, তখন আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা সর্বদাই জ্যোতিতে হাঁটছি। প্রভু তাঁর বাপ্তিস্মের সময়ে শুধু আপনার পাপই নয়, কিন্তু এই জগতের সকলের পাপ গ্রহণ করেছেন এবং এই সমস্ত পাপের দন্ড ভোগের জন্য ক্রুশারোপিত হয়েছেন- এটা আরো একবার নিশ্চিত হওয়ার দ্বারা আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন যে, আপনার হৃদয় ইতোমধ্যেই ধৌত হয়েছে। 
আসলে এটাই ঘটে থাকে। যাইহোক, নতুন পরিত্রাণ প্রাপ্তরা এই বিষয়টি যথেষ্ট ভাল করে বুঝতে পারে না। তাই তারা এই সমস্ত বিষয় নিয়ে নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করে এবং যথেষ্ট সংগ্রাম করে। সম্প্রতি আমি “আপনি কিভাবে আপনার ব্যক্তিগত পাপ ধৌত করবেন?” এই শিরোনামে একটি বই লিখছি। এই বই ব্যক্তিগত পাপের বিষয়ে শিক্ষা দিবে। বিশ্বাসীদেরকে জল ও আত্মার সুসমাচার এবং তাদের পাপ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়াটা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। যদিও তারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তথাপি তারা আরো পাপ করবেই। তাই তাদের কাছে সত্যের বাক্য পুনরায় প্রচার করার প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়েছে। 
অবশ্যই, জ্ঞান থাকলে, জল ও আত্মার সুসমাচার মাত্র পাঁচ মিনিটে বোঝা সম্ভব। কিন্তু জল ও আত্মার সুসমাচার জানার মধ্যে এবং বাস্তবে পাপ করার পর এবং যখন আপনার হৃদয়ে অন্ধকার নেমে আসে, তখন পুনরায় জল ও আত্মার সুসমাচার শোনার মধ্যে বিস্তর ফারাক বিদ্যমান। যদিও আমরা জল ও আত্মার সুসমাচারের ক্ষমতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু যখন আমরা পুনরায় এই পরাক্রমী বাক্য শ্রবণ করি, তখন আমাদের হৃদয়ের পাপ অন্তর্হিত হয়ে যায়। আমাদের হৃদয় তো ইতোমধ্যেই শুচি হয়েছে; এই অন্ধকারটা ক্ষণিকের জন্য আমাদের হৃদয়ে নেমে এসেছে। যেহেতু দিয়াবল আমাদেরকে আমাদের পাপের জন্য দোষীকৃত করে, তাই আমাদের হৃদয়ে অন্ধকার নেমে আসে। এই অন্ধকারকে জ্যোতির সাহায্যে তাড়িয়ে দেওয়ার উপায় হচ্ছে- আমাদের হৃদয়ে আমাদের পরিত্রাণের গৌরবময় সংবাদ আরো একবার দৃঢ় করা; অর্থাৎ, আমাদের হৃদয়ে এই সত্য আরো একবার গেঁথে নেওয়া যে, আমাদের প্রভু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজে বহন করেছেন, ক্রুশারোপিত হয়েছেন এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন। যখন আমরা নিশ্চিত হই যে- যীশু যখন বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়েছিল- তখন আমাদের হৃদয় আলোতে ভরে ওঠে। 
এইজন্যই যীশু আমাদেরকে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীদেরকে বলেছেন যে, “তোমরা জগতের দীপ্তি।” আর বাস্তবিকই আমরা জগতের আলো, কারণ আমরা ঈশ্বর-প্রদত্ত জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছি। যাইহোক, যদি কোন কিছু এই দীপ্তিকে ঢেকে ফেলে, তাহলে অন্ধকার আমাদের ঢেকে ফেলবে। সুতরাং, তখন আমাদের মনে হবে যেন, পরিত্রাণের দীপ্তি আমাদের কাছ থেকে গুপ্ত। প্রকৃতপক্ষে যদিও আমরা জগতের দীপ্তি, কিন্তু শয়তানের এই দোষারোপের কারণে আমাদের নিজেদেরকে হতাশ মনে হয়। ফলে, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের পরও কিছু মানুষ তাদের আত্মিক শক্তি হারিয়ে ফেলে, আর তারা পাপের অধীনে আটকা পড়ে যায়। 
যেহেতু, বিবেকের তাড়নাতেই এই অন্ধকার অনুভূত হয়, তাই এই অন্ধকারকে বিশ্বাসে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য জল ও আত্মার সুসমাচার বারংবার রোমন্থন করাটা আমাদের জন্য অপরিহার্য। প্রভু যখন যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন- আমাদের এই বিশ্বাস নূতনীকরণ করার দ্বারা এবং জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা অবশ্যই আমাদের স্বীকারোক্তিমূলক প্রার্থনা তুলে ধরব। আমাদেরকে অবশ্যই এই সত্য মনে মনে আন্দোলন করতে হবে। আমাদের পাপ ইতোমধ্যেই আবারো মোচিত হয়েছে, যখন আমরা এই সত্য নিজেদেরকে পুনরায় মনে করিয়ে দিই, তখন আমাদের হৃদয়ের অন্ধকার অন্তর্হিত হয়ে যায়। 
যখন আমরা জল ও আত্মার সুসমাচার ধ্যান করি এবং সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করি যে, “আমাদের প্রাত্যহিক দিনের পাপও যীশুর দেহে অর্পিত হয়েছিল। এইজন্যই প্রভু আমার ত্রাণকর্তা। তিনি জানতেন যে, আমি এই সমস্ত পাপ করব, তাই তিনি যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা এই সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন!” তখন আমাদের হৃদয় আরো একবার আলোকিত হয়ে ওঠে। সুতরাং, আমরা যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, আমরা এটা ভালভাবেই বুঝতে পারছি যে, আমাদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়, ক্ষণে ক্ষণে আমাদের অনুভূতির পরিবর্তন ঘটে, একদিন আনন্দ অনুভব করি তো পরের দিন হতাশ অনুভব করি। যাইহোক, একটা জিনিসের কিন্তু কোন পরিবর্তন হয় না, আর তা হল- আপনি এবং আমি, আমরা যারা জল ও আত্মার সুসমাচার সুসমাচারে বিশ্বাস করি, আমাদের হৃদয়ে কোন পাপ নেই।
আমাদের হৃদয়ে পাপ না থাকলেও কিছু সময় ক্ষণিক মুহূর্তের জন্য আমাদের হৃদয়ে অন্ধকার নেমে আসে। কেন এই অন্ধকার নেমে আসে? এটা নেমে আসে কারণ কিছু সময় আমরা মাংসিক অভিলাষ পূরণ করতে ইচ্ছা করি অথবা সে অনুসারে কার্যও করি। যখন আমাদের হৃদয়ে ক্ষণিকের জন্য এই রকম অন্ধকার নেমে আসে, তখন এই অন্ধকার থেকে মুক্তির উপায় হল- আরাধনার সময়ে আসা এবং জল ও আত্মার সুসমাচার শোনা। বিশ্বাসে আমাদের সহ-ভ্রাতা এবং ভগ্নিদের সাথে সহভাগিতা করে, ঈশ্বরের কার্য্যকারীদের সাথে সাক্ষাৎ করে এবং তাঁর কার্য করে আমরা প্রভুর আলোর মধ্যে বাস করতে পারি। জল ও আত্মার লিখিত সুসমাচার রোমন্থনের দ্বারা, তা অনুসরণ করার দ্বারা এবং তা আমাদের হৃদয়ে পূনর্স্থাপনের দ্বারা আমাদের হৃদয় পূনর্বার সত্যের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে।
আমরা ধার্মিকগণই সারা পৃথিবীতে জল ও আত্মার সত্য আলো প্রতিফলিত করি। আমাদের হৃদয় হলো আয়নার মতো যা যত সময় যায় ততই ময়লায় ভরে ওঠে এবং এর স্পষ্টতা হারিয়ে ফেলে। কিন্তু, এই আয়নাটি যেমন সূক্ষসুতার কাপড় দিয়ে মোছা দিলেই পরিষ্কার হয়ে যায় এবং সবকিছু খুব স্পষ্টভাবে দেখায়, সেই রকমই আমাদের হৃদয়ও জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা মোছা দিলে এবং তা রোমান্থন করলে একেবারে চকচকে হয়ে যায়। এইভাবে আমরা জগতের আলো হিসেবে বাস করতে পারি। আর আজকের এই শাস্ত্রাংশটির দ্বারা প্রভু আমাদেরকে এই বিষয়টিই শিক্ষা দিচ্ছেন। 
পরিত্রাণ-প্রাপ্তরা পাপের পরও কোন ধরণের বিশ্বাস দ্বারা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারে? তা হল- জল ও আত্মার সুসমাচারের বিশ্বাস। এটা সম্ভব, কারণ প্রভু যেমন তিনি পিতরের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন, তেমনি তিনি জল ও আত্মার সুসমাচারের দ্বারা ইতোমধ্যেই আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। আমরা জল ও আত্মার সুসমাচার লাভ করেছি, এবং এই সত্য সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারাই আমাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছি। তাই আমরা জানি যে, জল ও আত্মার সুসমাচারে স্থিত আমাদের এই বিশ্বাস দ্বারাই আমরা ইতোমধ্যে আমাদের সেই সমস্ত পাপ থেকেও মুক্তি লাভ করেছি, যা আমরা পাপের ক্ষমা লাভের পরও করি। যেহেতু প্রভু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজে বহন করেছিলেন, এবং যেহেতু তিনি এই সমস্ত পাপের জন্য ইতোমধ্যেই ক্রুশে শাস্তি ভোগ করেছেন, তাই আমরা, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীরা সর্বদাই জ্যোতির মধ্যে বাস করতে পারি এবং প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি। সংক্ষেপে, আমাদের প্রভু অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এইজন্য, আপনি এবং আমি, আমরা প্রভুর ধার্মিকতা অনুসরণ করতে পারি।
যাইহোক, কিছু মানুষের এই সত্য বুঝতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষভাবে, তাদের পক্ষে যোহন ১৩:৯-১১ পদের পূর্ণ অর্থ বোঝাটা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এখানে লেখা আছে, “যীশ তাঁহাকে বলিলেন, যে স্নান করিয়াছে, পা ধোয়া ভিন্ন আর কিছুতে তাহার প্রয়োজন নাই, সে ত সর্বাঙ্গে শুচি; আর তোমরা শুচি, কিন্তু সকলে নহ। কেননা যে ব্যক্তি তাঁহাকে সমর্পণ করিবে, তাহাকে তিনি জানিতেন; এই জন্য বলিলেন, তোমরা সকলে শুচি নহ।” প্রশ্নটি হলঃ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীরা কি সম্পূর্ণরূপে শুচি নাকি আংশিকভাবে শুচি? তারা সম্পূর্ণরূপে শুচি, কারণ তারা ইতোমধ্যেই তাদের সমস্ত পাপ থেকে ধৌত হয়েছে। 
যেদিন আমি প্রভুর ধার্মিকতা প্রথম জেনেছি, সেই দিন থেকে আমি আজকের এই দিন পর্যন্ত জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বস্থভাবে প্রচার করে আসছি। যখন আমি ঈশ্বরের মন্ডলীতে এই সুসমাচার প্রচার করি, তখন একটু নরমভাবেই প্রচার করি। কিন্তু যখন আমি এটি বড় উদ্দীপনা সভায় প্রচার করি, তখন আমি এটি আরো জোর দিয়ে প্রচার করি। আমি জল ও আত্মার সুসমাচার অনন্তকাল ধরে প্রচার করতে পারব। আর যখন আমি এই সুসমাচার প্রচার করি, তখন যারা ইতোমধ্যেই এতে বিশ্বাস করেছে, তারা আত্মিকভাবে আরো শক্তিশালী হয়। কিছু মানুষ মনে করতে পারে যে, আমি  মনে হয় শুধু জল ও আত্মার সুসমাচার সম্পর্কেই জানি, তাই শুধু এটাই প্রচার করি। কিন্তু বিষয়টি তা নয়। আমি জল ও আত্মার সুসমাচার প্রতিদিন প্রচার করি, কারণ এটা খুবই মূল্যবান এবং রাজকীয়; কারণ এই বাক্যের মধ্যে লোকদেরকে নতুন জীবন দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। অবশ্যই এটা সত্য যে, আপনি যেটি জানেন, সে সম্পর্কে দিনের পর দিন শোনাটা আপনার জন্য ক্লান্তিকর; আর এটা বক্তার ক্ষেত্রেও সত্য। যাইহোক, জল ও আত্মার সুসমাচার খুবই ভিন্ন। দিনের পর দিন ধরে এটা প্রচার করাটা সত্যিই একটা চমৎকার বিষয়।  
জল ও আত্মার সুসমাচার অবশ্যই প্রতিদিন প্রচার করতে হবে, কারণ আপনি এবং আমি এই সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করলেও আমরা আমাদের জীবনে এরপরও পাপ করতেই থাকি। কিছু সময় আমরা জীবনে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে পাপ করি, অথবা কিছু সময় আমরা নিজেদের মানবীয় চিন্তা অনুসারে চলার কারণে প্রভুর ইচ্ছার বিপরীতে গিয়ে পাপ করি। এইজন্যই, আমাদের সকলের জল ও আত্মার সুসমাচারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জীবন ধারণের জন্য যেমন আমাদের প্রতিটি মিনিটে অক্সিজেনের প্রয়োজন, তেমনি জীবনের প্রতিটি মিনিটে আমাদের জল ও আত্মার সুসমাচার প্রয়োজন। তার কারণ হল- জল ও আত্মার এই সুসমাচার আমাদেরকে নূতন জীবন দান করেছে; আর আমাদের দায়িত্ব হল সমগ্র জগতে সত্য জ্যোতিকে প্রকাশ করা। 
 
 
আজকের এই শাস্ত্রাংশের বিষয়ে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা
 
দূর্ভাগ্যবশত, সমসাময়িক অনেক খ্রীষ্টানই শাস্ত্রের এই অংশটি বোঝে না। আসুন আমরা দেখি যোহন ১৩:১ পদ স্পষ্টভাবে কি বলছে। এখানে লেখা আছে, “নিস্তারপর্বের পূর্বে যীশু, এই জগৎ হইতে পিতার কাছে আপনার প্রস্থান করিবার সময় উপস্থিত জানিয়া, জগতে অবস্থিত আপনার নিজস্ব যে লোকদিগকে প্রেম করিতেন, তাহাদিগকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করিলেন।” যীশু যখন জানলেন যে, খুব শীঘ্রই তাঁকে পিতার কাছে চলে যেতে হবে, তখন তিনি ধার্মিকদের, এই জগতে যাঁরা তাঁর নিজের লোক, তাদেরকে এই কথাটি বলেছিলেন। তিনি এটা শুধু তাঁর তখনকার শিষ্যদেরকে বলেননি, কিন্তু আমরা যারা ভবিষ্যতে জল ও আত্মার সুসমাচার বিশ্বাস করব, আমাদেরকেও বলেছেন। বাইবেল কি বলে, প্রভু তাঁর লোকদেরকে কতক্ষণ প্রেম করেছিলেন? বাইবেল কি বলে যে, তিনি তাঁদেরকে ছয় মাস প্রেম করেছিলেন? নাকি ষাট বছর প্রেম করেছিলেন? না, বাইবেল বলে যে, তিনি তাঁদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করলেন। আমাদেরকে এই শিক্ষাটি দেওয়ার জন্যই প্রভু তাঁর শেষ ভোজের সময় তাঁর শিষ্যদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন। আর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তুলে ধরার জন্যই যীশুর একজন শিষ্য, প্রেরিত যোহন এই ঘটনাটি বিশদভাবে লিখেছেন যে, যীশু কিভাবে শিষ্যদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন। 
যীশু আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করেছিলেন বলেই আমরা তাঁকে অনুসরণ করতে পারি। তিনি আমাদেরকে কিভাবে প্রেম করেছিলেন? আমরা এই উত্তরটি তখন পাব, যখন আমরা জল ও আত্মার সুসমাচার জানব। যীশু বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজে বহন করেছিলেন বলেই আমরা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা তাঁকে অনুসরণ করতে পারি। কিছু মানুষ বলে, “এই অনুচ্ছেদটি কি মনপরিবর্তনার্থক প্রার্থনার বিষয়ে বলে না?” তাই তারা মনে করে যে, যীশু যখন পিতরকে বললেন যে, তিনি সম্পূর্ণরূপে শুচি ছিলেন, আর তাঁর শুধু পা ধোওয়ার প্রয়োজনীয়তাই ছিল- তখন তিনি আমাদের প্রাত্যহিক দিনের পাপের কথাই বলছিলেন। আর তারা ভ্রান্তভাবে দাবী করে যে, আমরা আমাদের নিজস্ব মনপরিবর্তনার্থক প্রার্থনা উৎসর্গের দ্বারাই আমাদের নিত্যদিনের সমস্ত পাপ থেকে ধৌত হই। 
যাইহোক, এটা সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন। আমাদের প্রভু আমাদের জন্য যা করেছেন, আমাদের সেটির দিকে নজর দেওয়া উচিত। যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার সময় প্রভু যা বলেছিলেন, আমাদের সেটা জানা উচিত এবং তা সম্পূর্ণরূপে বোঝা উচিত। আসুন আমরা মথি ৩:১৩-১৭ পদ দেখি, “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাঁহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাকে কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযু্ক্ত। তখন তিনি তাঁহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া যখন জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইহাঁতেই আমি প্রীত।” প্রভু যখন বাপ্তাইজিত হন, তখন তিনি বলেছিলেন যে, এভাবে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা তাঁদের পক্ষে উপযুক্ত ছিল। এখানে “এইরূপে” শব্দটি সেই পদ্ধতিকে নির্দেশ করে যার দ্বারা সমস্ত ধার্মিকতা সম্পন্ন হয়েছিল। অন্যকথায়, এটা পরিত্রাণের উপায়কে নির্দেশ করে, যার দ্বারা প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশে হত হয়েছিলেন এবং এগুলোর জন্য দন্ড ভোগ করেছিলেন। এভাবে, যীশু আমাদের ধার্মিকতার বিষয়ে বলছেন। তিনি বলছেন যে, যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা তিনি মানব জাতির সমস্ত পাপ বহন নিজে বহন করেছিলেন। যীশুকে বাপ্তিস্ম দানের মাধ্যমে যোহন বাপ্তাইজক মানব জাতির সমস্ত পাপ যীশুর উপরে অর্পন করেছিলেন। 
যোহন বাপ্তাইজক ছিলেন সমস্ত মানব জাতির প্রতিনিধি, কারণ নারীর গর্ভজাত প্রত্যেকের মধ্যে তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ। এজন্য, তিনি এমনকি সমস্ত ভাববাদী থেকেও মহান। প্রত্যেকের প্রতিনিধি হয়ে যোহন বাপ্তাইজক পৃথিবীর শেষ প্রধান যাজক হিসেবে তাঁর ভূমিকা পূর্ণ করলেন। তিনিই যীশুকে বাপ্তিস্ম দানের মাধ্যমে মানবজাতির সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পন করেছিলেন। এজন্য, এই বাক্য পুনর্বার রোমন্থনের মাধ্যমে আমরা জ্যোতির মধ্যে সব সময় থাকতে পারি। আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, যীশু যখন যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাজিত হয়েছিলেন, তখন আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে একেবারে চিরকালের জন্য অর্পিত হয়েছিল। বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন বলেই যীশু ঈশ্বরের মেষশাবক হিসেবে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করে হত হয়েছিলেন। আর মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে তিনি আমাদের অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এজন্যই যীশু ক্রুশে তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার আগে চিৎকার করে ঘোষণা করে বলেছিলেন, “সমাপ্ত হইল!” এটিই ছিল ক্রুশের উপরে প্রভুর কথিত শেষ বাণী। প্রভু নিজেই পরিত্রাণের অন্তিম কার্য সম্পন্ন করেছিলেন। যদি এটি একটি বই হতো, তাহলে তিনি তাঁর বইয়ের শেষ টানলেন। এটি ছিল তাঁর কার্যের সমাপ্তি এবং পূর্ণতা। অন্যকথায়, যীশু যখন ক্রুশে হত হয়েছিলেন, তখন তাঁর পরিত্রাণের কার্য সম্পন্ন হয়েছিল। 
যীশু তাঁর হৃদয়ের সমস্ত রক্ত সেচন করেছিলেন। আপনারা কি জানেন, যখন মানুষের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়, তখন তাদের কি অবস্থা হয়? তাদের হৃদস্পন্দন খুব বেড়ে যায়, তাদের চেহারা ফেকাশে হয়ে যায়, আর কিছু সময় তারা এমনকি অজ্ঞানও হয়ে যায়। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন আমার হাত ছিদ্র করার মেশিন দিয়ে ছিদ্র হয়েছিল। কিন্তু আমি কিছুই শুনতে পাইনি। এটা এত দ্রুত ঘটেছিল যে, আমি শুধু আমার হাতটা ছিদ্র হতেই দেখেছিলাম। আমি এতই আঘাত পেয়েছিলাম যে, আমি কিছুই বলতে বা যন্ত্রণায় একটু চিৎকারও করতে পারিনি। আমি শুধু দাঁড়িয়ে থাকলাম, আর আমার সারাটা শরীর ঘামতে থাকল। আমার নিকটবর্তী এক লোক আমার ক্ষত দেখে চিকিৎসার জন্য আমাকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। যদি আপনার সারাটা শরীর ক্ষতযুক্ত হতো এবং সারাটা শরীর থেকে রক্তপাত হতো, তাহলে কি আপনি বলতে পারতেন, “সমাপ্ত হইল”? না, অবশ্যই না! শুধুমাত্র যীশুই এটি করতে পেরেছিলেন। তিনি মানব রূপ ধারণ করে এই জগতে এসেছিলেন। তিনি মরিয়মের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। তাঁকে ক্রুশারোপিত হতে হয়েছিল, কারণ তিনি আমাদের সমস্ত পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। আর মৃত্যুর ঠিক শেষ মুহূর্তে, তিনি শেষ শক্তিটুকু নিয়ে বললেন, “সমাপ্ত হইল!” এভাবে, তিনি আমাদেরকে বলতে চেয়েছিলেন যে, এখন আমাদের অনন্তকালীন পরিত্রাণের কার্য সম্পন্ন হয়েছে। 
প্রভু এই জগতে তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জল ও আত্মার সুসমাচার প্রচার করে বলেছেন, “সমাপ্ত হইল!” সম্প্রতি, একটা কিছু কাটতে গিয়ে ভগ্নি সোইয়াং তাঁর হাতে আঘাত পেয়েছেন। তাই কয়েকজন বোন এবং আমাদের এক পাস্টরের স্ত্রী মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আর ডাক্তার সেখানে তার অভিভাবকদেরকে অফিসে আসতে বলেন। ভগ্নি সোইয়াং তাঁর রক্ত দেখে এতই ভয় পেয়েছিলেন যে, তার চেহারা একেবারে নীল হয়ে গেল। আর তিনি ভয়ে এতই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন যে, তাকে সঙ্গ দেওয়া বোনদেরকে তার অভিভাবক হিসেবে অফিসে আসার জন্য নরমভাবে অনুরোধ করার পরিবর্তে তিনি উন্মত্তভাবে বলেই ফেলেন, “সোইয়াং ওন- এর অভিভাবক অফিসের ভিতরে আসুন! তাড়াতাড়ি! আপনি যেই হোন না কেন, এক্ষুণি আসুন!” ভগ্নি সোইয়াং তখন আর তাঁর মধ্যে ছিলেন না। তাঁর রক্ত দেখে তিনি অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। যখন আপনি আপনার নিজের রক্ত দেখবেন, তখন আপনি এই রকম উত্তেজিত হয়ে পড়তে পারেন, এমনকি নিথর হয়ে যেতে পারেন। যাইহোক, ভগ্নি ছোই তার অভিভাবক হিসেবে ভিতরে গেলেন; আর সৌভাগ্যবশতঃ, তার ক্ষত ততটা ভয়ানক কিছু ছিল না, তাই তারা সকলেই বিষয়টি নিয়ে খুবই হেসেছিল। আমি যখন এই ঘটনাটি শুনি, তখন আমিও হেসেছিলাম।  
রক্ত পড়াটা অবশ্যই একটা হাসির বিষয় নয়। কিছু মানুষ যখন ক্ষতগ্রস্থ হয়, তখন এমনকি একটু রক্ত দেখলেও ভয়ে পেয়ে যায়; এবং কিছু এমনকি ভয়ে বাকহারা হয়ে যায়। মানুষ নিজেদের রক্তক্ষরণ দেখলে খুবই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এর কারণ হল- রক্তই জীবন। যখন আপনি আঘাত প্রাপ্ত হবেন, তখন আতঙ্কে আপনি এমনকি মারাও যেতে পারেন। বাইবেল-পন্ডিতগণ বলে থাকেন যে, যীশু যখন ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন, তখন তাঁর ধমনী পেরেকে বিদ্ধ হয়েছিল। হাত এবং পা উভয়ে পেরেক বিদ্ধ হয়ে যীশুর রক্ত ঝরেছিল এবং তাঁর মৃত্যু ঘটেছিল। হৃদয়ে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম  থাকে, যা রক্তকে অনবরত পাম্প করতে থাকে এবং সারা শরীরে রক্তের সঞ্চালন ঘটায়। হৃদয় থেকে যে রক্ত পাম্প হয়ে বের হয়ে যায়, তা আবার হৃদয়ে ফিরে আসে; আর এই রক্ত আবার হৃদয় থেকে পাম্প হয়ে বেরিয়ে আসে। আমাদের শরীরে এভাবেই রক্তের সঞ্চালন ঘটে থাকে। 
যীশু যখন ক্রুশারোপিত হন, তখন তাঁর ধমনী পেরেক বিদ্ধ হয়েছিল, আর সেই ক্ষত দিয়ে তাঁর রক্ত বের হয়ে এসেছিল। রক্তক্ষরণের ফলে পানিশূণ্যতার সৃষ্টি হয়। রক্ত যেহেতু পানি এবং অন্যান্য কিছু উপাদানের তরল মিশ্রণ, তাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ অত্যন্ত প্রকট পানিশূণ্যতা তৈরী করতে পারে। এজন্যই যীশু বলেছিলেন যে, তিনি তৃষিত ছিলেন। এভাবে, যীশু তাঁর শরীরের সমস্ত রক্ত সেচন করেছিলেন। তিনি তাঁর মৃত্যুর খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তিনি তাঁর চেতনা হারিয়ে ফেলছিলেন। কিন্তু এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও যীশু ক্রুশে মৃত্যুবরণের আগে বলতে পেরেছিলেন, “সমাপ্ত হইল!” তিনি আমাদেরকে তাঁর পরিত্রাণ কার্য সম্পর্কে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। তিনি আমাদেরকে বলছিলেন যে, তিনি এই জগতে এসেছেন, তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা আপনার এবং আমার সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশারোপিত হয়ে ও রক্ত সেচন করে আমাদের সমস্ত পাপের দন্ড ভোগ করেছেন। 
এটা উপলব্ধি করা ও সম্পূর্ণরূপে বোঝাটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের নিজস্ব মনপরিবর্তনার্থক প্রার্থনা দ্বারা আমাদের পাপের মোচন হয় না। তাহলে, আমাদের পাপ কিভাবে মোচিত হয়েছিল? এগুলো মোচিত হয়েছিল কারণ প্রভু যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা প্রকৃতপক্ষেই সে সমস্ত পাপের মোচন করেছিলেন। এগুলো মোচিত হয়েছিল কারণ যীশু জগতের এই সমস্ত পাপ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এবং ক্রুশারোপিত হয়ে হত হওয়ার দ্বারা সে সমস্ত পাপের দন্ড ভোগ করেছিলেন। এগুলো মোচিত হয়েছিল কারণ তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং এভাবে আমাদের প্রকৃত ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এজন্য, যে কেউ প্রভুর এই কার্যে বিশ্বাস করে, তার মধ্যে আর কোন পাপ নেই। মানুষকে এই বিষয়টি অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে। তাদেরকে বুঝতে হবে যে, প্রভু প্রকৃতপক্ষে কিভাবে তাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক যর্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা প্রভু আমাদের সমগ্র জীবনের সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। তিনি এই জগতের প্রথম থেকে শুরু করে জগতের শেষ হওয়া অবধি পর্যন্ত সমস্ত পাপ আছে এবং করা হবে, সে সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজে বহন করেছিলেন। আমাদেরকে এই বিষয়টিই অবশ্যই জানতে এবং উপলব্ধি করতে হবে। আমি যথেষ্ট জোর দিয়ে বোঝাতে পারছি না যে, এই বিষয়টি উপলব্ধি করা এবং এতে বিশ্বাস করাটা আমাদের জন্য ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা ইতোমধ্যেই শুচি হয়েছি। জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস দ্বারা আমরা আমাদের সমস্ত পাপের ক্ষমা লাভ করেছি। যাইহোক, আমরা যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন পাপ করতেই থাকব। কিন্তু প্রভু এই সমস্ত পাপও মোচন করেছেন। প্রভু যেমন পিতরের পা এবং অন্যান্য শিষ্যদের পাও ধুয়ে দিয়েছিলেন, তেমনি প্রভু যখন যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন আমাদের সমস্ত ব্যক্তিগত পাপও নিজে বহন করেছিলেন। আর আমাদের এই সমস্ত পাপের দন্ড ভোগস্বরূপ তাঁকে ক্রুশারোপিত হতে হয়েছিল। আর মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হওয়ার দ্বারা তিনি আমাদেরকে চিরকালের জন্য পবিত্র করেছেন। এজন্য, আপনার সমস্ত পাপ ইতোমধ্যেই মোচিত হয়েছে। এজন্যই পিতর প্রভুর প্রধান শিষ্য হতে পেরেছিলেন। প্রভু যেহেতু পিতরের সমস্ত পাপ মোচন করেছিলেন এবং তাঁকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করেছিলেন, সেহেতু ক্রুশারোপিত হওয়ার আগে পিলাতের প্রাঙ্গণে যীশুকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় যীশুকে তিন বার অস্বীকার করলেও পিতর প্রভুকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করতে পেরেছিলেন। তাই, প্রভু যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন যে, তিনি তাঁকে প্রেম করেন কিনা; তখন পিতর তাঁকে উত্তর দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি জানেন যে, তিনি তাঁকে ভালবাসেন। প্রভু পিতরকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করেছিলেন বলে পিতরও প্রভুকে প্রেম করতে পেরেছিলেন। 
আপনি এবং আমি প্রভুর কাছ থেকে এই রকম প্রেম লাভ করেছি। তথাপি, কিছু মানুষ এখনো ভ্রান্তভাবে চিন্তা করে যে, “আমি এই পাপের বিষয়ে জানি না। এটা এতটাই ঘৃণ্য যে, আমি নিজেই নিজেকে ক্ষমা করতে পারছি না। যীশু এত জঘন্য পাপ ক্ষমা করতে পারেন নাই।” অন্যান্য কিছু খ্রীষ্টান মনে করে যে, প্রায় সব ধরণের পাপের ক্ষমা হলেও শরীর দ্বারা করা পাপের ক্ষমা হয় না। কিন্তু এরকম কথা বাইবেলের কোথায় লেখা আছে? শাস্ত্রের কোথাও পাওয়া যাবে না! তবুও কিছু পাস্টর এখনো দাবী করে যে, অন্য সব ধরণের পাপের ক্ষমা হলেও ব্যভিচার পাপের কোন ক্ষমা হবে না। যদি তাই হতো, তাহলে বিষয়টি কি এমন হতো না যে, যে কেউ ব্যভিচার করে, সে স্বর্গে প্রবেশ করতে পারবে না? এটা কি এই বিষয় নির্দেশ করে না যে, পাপের পূর্ণাঙ্গ ক্ষমা নেই? এই ভ্রান্ত শিক্ষা কি এই বিষয়টি নির্দেশ করে না যে, যীশু ব্যভিচারের পাপ ক্ষমা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন?
প্রত্যেকেই নিজেদের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে কথা বলেন। পূর্ণজন্ম না পাওয়া পাস্টররা বাক্য পাঠ করার পরও এর উপর ভিত্তি করে কথা বলে না। বাক্যের প্রচারক এবং শ্রোতাদের অবশ্যই ঈশ্বরের এই বাক্যের উপর ভিত্তি করেই কথা বলতে হবে। শুধুমাত্র তাহলেই তারা বিশ্বাসে নিজেদের মধ্যে একটা অর্থপূর্ণ সহভাগিতা করতে পারবে, হৃদয়ে বাক্য বপন করতে পারবে এবং সমস্ত প্রশ্নের উত্তর লাভ করতে পারবে। তথাপি, যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে না, তারা বলে যে, সব ধরণের পাপের ক্ষমা হলেও ব্যভিচারের পাপ ক্ষমা হবে না। আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, এটা সম্পূর্ণরূপে ভুল। প্রভু প্রত্যেকটি পাপের মোচন করেছেন। যে ধরণের পাপই হোক না কেন, এই পৃথিবীতে এমন কোন পাপ নেই যা প্রভু মোচন করেন নাই। আমাদের শরীর দ্বারা করা সমস্ত পাপও তিনি মোচন করেছেন। 
যাইহোক, একটা পাপ রয়েছে, যার কোন ক্ষমা নেই। সেই পাপটি কোনটি? এটি হল পবিত্র আত্মাকে নিন্দা করার পাপ। এই পাপটি তখন হয়, যখন কেউ অস্বীকার করে যে, প্রভু মানব দেহ ধারণ করে এই জগতে এসেছিলেন, যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা মানবজাতির সমস্ত পাপ নিজের উপরে তুলে নিয়েছিলেন, ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করে হত হয়েছিলেন, মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং এভাবে আমাদের অনন্তকালীন ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এই পাপটির ক্ষমা কখনোই হবে না। যারা জল ও আত্মার সুসমাচারকে অস্বীকার করে, তারা কখনোই পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারবে না। যখন তারা জল ও আত্মার সুসমাচার শোনে, তখনও তারা অস্বীকার করে যে, যীশু যখন বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন তখন তিনি তাদের পাপ বহন করেছিলেন।  আর তারা দাবী করে যে, তারা তাদের নিজস্ব মনপরিবর্তনার্থক প্রার্থনা উৎসর্গের দ্বারাই তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করে।
এটা হল শাস্ত্রকে পরিবর্তন করার পাপ কাজ। এই কাজটি প্রভুর কার্যকে নিষ্ফল করে দেয় এবং একে বিকৃত করে। এজন্যই, যারা পরিত্রাণের জন্য শুধুমাত্র যীশুর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাস করে, তারা পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারে না। এর কারণ হল তারা একটি গভীর ভ্রান্তির মধ্যে পতিত হয়েছেন। এই রকম লোকেরা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করতে পারে না। কেন? এর কারণ হল- প্রভু তাদের জন্য যা করেছেন, তারা সেটাতে বিশ্বাস করে না। এর কারণ হল- তারা পবিত্র আত্মা কর্তৃক সাধিত পরিত্রাণ কার্যকে বিশ্বাস করে না। এর কারণ হল- তারা প্রভুর পরিত্রাণ কার্যকে পায়ে ঠেলে দেয়, কারণ তারা এতে বিশ্বাস করে না এবং এটাকে গ্রহণও করে না। এজন্যই, তাদের ক্ষমা হবে না। এই একটি মাত্র পাপ ছাড়া আর সব পাপের ক্ষমা হবে। 
আমি আরো একটিবার ব্যাখ্যা করি। ‘পবিত্র আত্মার নিন্দা করার পাপ’- এটি দ্বারা কি বোঝায়, সে বিষয়ে কিছু খ্রীষ্টানদের ভিন্ন মতামত রয়েছে, তারা বলে, “যখন বিশ্বাসীরা নানাবিধ ভাষায় কথা বলে এবং ভূত ছাড়ায়, এটা হল পবিত্র আত্মার কাজ। এই শিক্ষার বিরোধীতা করাই হল পবিত্র আত্মার নিন্দা করার পাপ। তাই এই পাপের ক্ষমা হবে না।” যাইহোক, এটি পবিত্র আত্মার নিন্দা করার পাপ না। এগুলো পবিত্র আত্মার কাজ নয়, আর তাই, এরকম ভ্রান্ত শিক্ষার বিরোধীতা করাটা পবিত্র আত্মার নিন্দা করার পাপ নয়। পবিত্র আত্মার প্রকৃত কাজ কি? বাইবেল বলে যে, আমাদেরকে আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণ করার জন্য প্রভু মরিয়মের গর্ভের মাধ্যমে এই জগতে জন্ম গ্রহণ করলেন, যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ নিজে বহন করলেন, জগতের এই সমস্ত পাপ নিজের কাঁধে নিয়ে ক্রুশে রক্ত সেচন করলেন ও হত হলেন, এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হলেন। এভাবে, যীশু আমাদের ত্রাণকর্তা হয়েছেন। এটিই হল পবিত্র আত্মার কাজ। এটিই হল ঈশ্বরের কাজ। এইজন্য, যে কেউ ঈশ্বরের এই কাজকে অস্বীকার করে, সে ক্ষমা পাবে না, সে এ জগতেও নয়, পর জগতেও নয়। 
তাহলে, প্রভুর অনুমোদিত কার্য্যকারী হতে হলে আমাদেরকে কিভাবে তাঁর অনুসরণ করতে হবে। আসুন আমরা যোহন ১৫: ৩-৪ পদ দেখি, এখানে লেখা আছে, “আমি তোমাদিগকে যে বাক্য বলিয়াছি, তৎপ্রযুক্ত তোমরা এখন পরিষ্কৃত আছ। আমাতে থাক, আর আমি তোমাদের মধ্যে থাকি; শাখা যেমন আপনা হইতে ফল ধরিতে পারে না, দ্রাক্ষালতায় না থাকিলে পারে না, তদ্রূপ আমাতে না থাকিলে তোমরাও পার না।” প্রভু এখানে স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, তিনি আমাদেরকে যে সমস্ত বাক্য বলেছেন, সে বাক্য দ্বারা ইতোমধ্যেই পরিষ্কৃত আছি। এখানে যোহন ১৫ অধ্যায়ে, প্রভু আমাদেরকে বলছেন যে, আমরা তাঁর পরিত্রাণের কার্য দ্বারা পরিষ্কৃত হয়েছি। ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস দ্বারাই পাপের ক্ষমা লাভ করা যায়। ঈশ্বরের বাক্য জল ও আত্মার সুসমাচারের মধ্যে লিখিত আছে, আর তাই, এই বাক্যে বিশ্বাস দ্বারা পাপের ক্ষমা লাভ করা যায়।
প্রভুর বাক্যে বিশ্বাস দ্বারা আমরা পাপ থেকে পরিত্রাণ লাভ করি। আর তখন, আমরা প্রভুর মধ্যে থাকি, আর তিনিও আমাদের মধ্যে থাকেন। এজন্য, যখন আমরা প্রভুর বাক্য গ্রহণ করি, তখন আমরা আমাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা অনুসারে চলব না। যখন আমরা প্রভুর বাক্যকে ঠিক এর মত করেই গ্রহণ করি, তখন আমরা পাপের ক্ষমা লাভ করি। যখন আপনি জল ও আত্মার সুসমাচার শোনেন, তখন আপনাকে যেটা করতে হবে তা হল- এই বাক্যকে হ্যাঁ বলা এবং আমেন বলে এটাকে আপনার হৃদয়ে গ্রহণ করা। তখন আপনি পাপের ক্ষমা লাভ করবেন। শাস্ত্র বলে, “অতএব বিশ্বাস শ্রবণ হইতে এবং শ্রবণ খ্রীষ্টের বাক্য দ্বারা হয়” (রোমীয় ১০:১৭)। বস্তুত, বিশ্বাস শ্রবণ থেকে আসে, আর শ্রবণ আসে খ্রীষ্টের বাক্য থেকে। কিভাবে আমরা প্রভুর মধ্যে থাকি? প্রভুর বাক্যে বিশ্বাস দ্বারাই আমরা তাঁর মধ্যে থাকি। প্রভু আমাদের মধ্যে কিভাবে থাকেন? যারা আমরা তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করি, তিনি আমাদের হৃদয়ে আসেন এবং আমাদের হৃদয়ে বাস করেন। অন্যকথায়, প্রভু পরিত্রাণ প্রাপ্তদের হৃদয়ে বাস করেন। এই প্রভু আর কেউ নন, ইনি হলেন পবিত্র আত্মা। 
প্রভু বলেন যে, তিনিই প্রকৃত দ্রাক্ষালতা। যোহন ১৫:১-২ পদে লেখা আছে, “আমি প্রকৃত দ্রাক্ষালতা এবং আমার পিতা কৃষক। আমাতে স্থিত যে কোন শাখায় ফল না ধরে, তাহা তিনি কাটিয়া ফেলিয়া দেন; এবং যে কোন শাখায় ফল ধরে, তাহা পরিষ্কার করেন, যেন তাহাতে আরও অধিক ফল ধরে।” ফল ধরা শাখাগুলো হল তারা, যারা প্রভুর বাক্য গ্রহণ করে। তাহলে, যে ফল না ধরা শাখাগুলো কারা? তারা হল সেই সমস্ত লোক, যারা ঈশ্বরের বাক্য শোনার পরও আমেন বলে এটাকে গ্রহণ করে না। এ সমস্ত লোকদের মধ্যে কোন ফল ধরে না। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনি এবং আমি এখন সারা পৃথিবীতে জল ও আত্মার সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এই কাজকে চালু রাখতে যথাসম্ভব সব কিছুই করছি। আপনার এবং আমার মাধ্যমেই প্রভু জল ও আত্মার সুসমাচার ছড়িয়ে দিচ্ছেন। নতুন মুকুল যেমন অঙ্কুরিত হয়, তেমনি সুসমাচার ছড়িয়ে যায়। দ্রাক্ষালতা যখন বৃদ্ধি পায়, তখন এর শাখা গজায় এবং নতুন মুকুল অঙ্কুরিত হয়। এই সমস্ত শাখা একটা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, যাদের মাধ্যমে শিকড় থেকে সব জায়গায় পুষ্টি ছড়িয়ে যায়। তাহলে ফল কোথায় ধরে? যখন নতুন মুকুল অঙ্কুরিত হয়, তখন সেখানে ফল উৎপন্ন হয়। বসন্তকালে নতুন মুকুল অঙ্কুরিত হয়, আর আঙ্গুর ধরে। আমরা সবাই দ্রাক্ষালতার শাখার মতো। 
আমরা হলাম দাক্ষালতার মতো মাধ্যম, যার মাধ্যমে প্রভুর পুষ্টি সারা পৃথিবীর লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। আর তারা যখন আমাদের কাছে সুসমাচার শোনে, তখন তারা প্রস্ফুটিত হয়। এভাবে, তারা পাপের ক্ষমা লাভ করে। এভাবেই ফল উৎপন্ন হয়। এই সমস্ত নতুন বিশ্বাসী, যারা আমাদের কাছে সুসমাচার শোনার মাধ্যমে তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তাদের মাধ্যমে সুসমাচার ছড়িয়ে যেতে থাকে। যখন সুসমাচারের কার্য এভাবে প্রকাশিত হতে থাকে, তখন নতুন বিশ্বাসীরা আমাদের মতোই এই মিনিস্ট্রিকে সহায়তা করে যায়, যাতে অন্যরাও ফলবান হতে পারে। তাহলে, যে সমস্ত শাখায় প্রভুতে ফল ধরে, তারা কারা? তারা হল সেই সমস্ত মানুষ, যারা প্রভুর বাক্যে বিশ্বাস দ্বারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে।
 
 

আমাদের মধ্যে অগণিত ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও আমরা কিভাবে প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি

 
আমাদের মধ্যে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকার পরও আমরা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি এবং তাঁর শিষ্য হিসেবে জীবন যাপন করতে পারি, কারণ প্রভু ইতোমধ্যেই আপনার এবং আমার সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। কারণ, প্রভু যর্দন নদীতে যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য নিজে বহন করেছিলেন। এজন্যই প্রভু ক্রুশে হত হয়ে এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে আমাদের ত্রাণকর্তা হতে পেরেছেন। এজন্য, আমরা যারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছি, আমরা এখন প্রভুর কার্য করতে পারি এবং তাঁকে অনুসরণ করতে পারি। অন্যকথায়, আমরা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি, কারণ প্রভু আমাদের জন্য তা সম্ভবপর করেছেন। আমরা প্রভুকে প্রথমে প্রেম করি নাই, কিন্তু প্রভুই আমাদেরকে প্রথমে প্রেম করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রভু আমাদেরকে শেষ পর্যন্ত প্রেম করেন। এজন্যই আমরা প্রভুকে প্রেম করতে পারি। আর এজন্যই, আমরা এখন প্রভুর শিষ্য হিসেবে জীবন যাপন করতে পারি। আর ঠিক এই কারণেই, যাদের বিশ্বাস পরিপক্কতা লাভ করেছে, তারা তাদের নিজস্ব ধার্মিকতায় গর্ব করে না। বরঞ্চ, তারা সমস্ত কিছুকে প্রভুর ইচ্ছামতো তাঁর চরণে সমর্পণ করে। 
প্রভুর ধার্মিকতায় তাদের ধার্মিকতা হয়, আর তাদের ধার্মিকতা প্রভুর ধার্মিকতা হয়, আর শেষে, তারা প্রভুর সাথে এক হয়ে যায়। যদিও আমরা, পরিত্রাণ-প্রাপ্তরা এরপরও পাপ করে যাব, কিন্তু তবুও আমরা প্রভুর অনুসরণ করতে পারি, কারণ তিনি ইতোমধ্যেই আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য মোচন করেছেন, যার মধ্যে আমাদের ব্যক্তিগত পাপও আছে। এজন্যই আপনি এবং আমি প্রভুর অনুসরণ করতে পারি। এজন্যই পিতর এবং অন্য শিষ্যরা প্রভুকে প্রেম করতে পেরেছিলেন এবং তাঁর ইচ্ছানুসারে চলতে পেরেছিলেন; তারা এমনকি তাদের শহীদত্ব বরণ পর্যন্ত প্রভুকে প্রেম করেছিলেন। যীশুর শিষ্যদের মধ্যে থোমা নামে এক শিষ্য ছিলেন। অন্যান্য শিষ্যেরা যখন বলল যে, তাঁরা পুনরুত্থিত যীশুকে দেখেছে, তখন তিনি তাঁদের কথা বিশ্বাস করেন নাই। তিনি এতটাই অবিশ্বাসী ছিলেন যে, তিনি বললেন যে, যীশুর কুক্ষিদেশে হাত না দেওয়া পর্যন্ত তিনি তা বিশ্বাস করবেন না। এ কারণেই, কিছু সময় থোমাকে সন্দেহপ্রবণ থোমা বলা হয়ে থাকে। তথাপি, এরকম সন্দেহবাদী মানুষও যীশুর বারো শিষ্যের মধ্যে একজন ছিলেন। আর অবশেষে থোমা যখন পুনরুত্থিত প্রভুকে দেখলেন, তখন তিনি বললেন, “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার!” 
খ্রীষ্টানদের ঐতিহ্য অনুসারে এটা বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, থোমা সুসমাচার প্রচারের জন্য ভারতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে সাক্ষ্যমর হয়েছিলেন। সম্ভবত এই কারণেই হিন্দুরা গঙ্গা নদীকে একটা পুণ্য নদী বলে মনে করে, তারা বিশ্বাস করে যে, যদি তারা সেই নদীতে গোসল করে, তাহলে তাদের আত্মার সমস্ত পাপ ধৌত হয়ে যাবে। তাই তারা নিয়মিতভাবে গঙ্গাকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতে থাকে। অনেক হিন্দু তাদের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে, এই গঙ্গায় আসে তাদের জীবনের শেষ মুহূর্ত এই নদীতে কাটানোর জন্য। মৃতদের দেহও এই গঙ্গার তীরে পোড়ানো হয় এবং তাদের ছাই সেই নদীতে ঢেলে দেওয়া হয়। তারা মনে করে যে, এটা তাদেরকে পরিত্রাণ দান করবে। এই বিশ্বাসটা সম্ভবত খ্রীষ্টানদের বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সৃষ্ট হয়েছে। হয়তো কেউ একজন ভারতে গিয়ে লোকদের কাছে যীশুর বাপ্তিস্মের বিষয়ে প্রচার করেছে, সে শিক্ষা দিয়ে বলেছিল যে, যীশু এই জগতে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। কিন্তু এই শিক্ষা কোন একভাবে বিকৃত হয়ে যায় এবং হিন্দুদেরকে গঙ্গার পবিত্রতায় বিশ্বাস করায়। অবশ্য, এটি আমার নিজস্ব ধারণা। এটা সত্য নয়। শুধুমাত্র সুসমাচারে যা লেখা আছে, তাই সত্য।
যদিও এই পৃথিবীর ইতিহাস খুব দীর্ঘ বলে মনে হয়, কিন্তু এর এটি সত্যিকারভাবে খুবই সংক্ষিপ্ত। আধুনিকতার ছাপ মাত্র ৫০০ বছর আগে থেকে দেখা যায়। এর আগ পর্যন্ত, এই পৃথিবী বিভিন্ন ধরণের কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিল। যখন আমরা এই পৃথিবীর পুরো ইতিহাস দেখি, তখন আমরা দেখতে পাই যে, ৫০০ বছরের আগ পর্যন্ত মানুষ খুব একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করতে পারে নাই। এখন পৃথিবীতে লক্ষ কোটি মানুষ আছে; কিন্তু প্রাচীন সময়ে, পৃথিবীর লোকসংখ্যা খুব কম ছিল, একটা লম্বা সময় ধরে এর লোকসংখ্যা ১০ কোটিরও কম ছিল । নোহের জলপ্লাবনের সময় এর জনসংখ্যা অবশ্যই আরো কম ছিল, যদিও আমরা এর সঠিক সংখ্যাটি জানি না। অনেক দিক থেকেই, বর্তমান যুগে জন্মগ্রহণ করতে পেরে আমরা খুবই ভাগ্যবান। 
কোরিয়ান হিসেবে যদি বলি, আরো ৭০ বছর আগে জন্মগ্রহণ করলে আমরা জাপানের ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে থাকতাম। জাপানের ঔপনিবেশিক শাসনের সময় জাপানীরা কোরিয়ানদেরকে শুধুই চাকরের মতো খাটিয়েছে। ঐ সময়ে জন্মগ্রহণ করলে জাপানীদের প্রতি আমাদের খুবই ঘৃণা তৈরী হতো, আর আমরা শুধু তার প্রতিশোধ নেওয়ার কথাই ভাবতাম। যদি ঐ ঔপনিবেশিক সময়ে আমার জাপানীদের কাছে সুসমাচার প্রচারের সুযোগ হতো, তাহলে হয়তো তারা আমার অবদমিত রাগের শিকার হতো। সত্যিকারভাবে, কিছুক্ষণ আগে আমি সাকামতো নামে এক জাপানীর কাছে সুসমাচার প্রচার করেছি। আমি তাকে বললাম যে, যীশু তার অত্যন্ত ক্ষুদ্র এবং বড় সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, কিন্তু আমার কথা বুঝতে তাকে বেগ পেতে হয়েছিল। আমি এতোটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম যে, একটা সময় আমি সাকামতোকে স্থূলবুদ্ধির অধিকারী বলেই ফেললাম। কিন্তু উল্টো আক্রমণাত্মক না হয়ে সাকামতো শুধু বললেন যে, তিনি সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ নন। 
তাঁকে একজন ভাল মানুষ বলেই মনে হল। অন্ততঃপক্ষে তিনি নিজের সীমাবদ্ধতাটুকু জানেন। বৌদ্ধিকভাবে বললে, সুসমাচারের বার্তা বোঝাটা ততটা কঠিন নয়। সুসমাচারের বার্তা এই যে, যীশু যখন যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, তখন জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে অর্পিত হয়েছিল, আর এর ফলে, পরবর্তীতে যীশুকে ক্রুশারোপিত হয়ে হত হতে হয়েছিল। কিন্তু সাকামতোকে এই বিষয়টি বুঝতেই বেগ পেতে হচ্ছিল, আর তাই আমি আমার ধৈর্য হারিয়ে ফেলি, যা আমার উচিত হয়নি। আমি নিশ্চিত যে, সাকামতো একবার সুসমাচার সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বুঝতে পারলে, তিনি এটা সারা পৃথিবীতে প্রচার করতে সক্ষম হবেন। জাপানীরা স্বার্থপর এবং হিসেবী, তাই তারা আমাদের মতো অতটা ভক্তি নিয়ে সুসমাচারের কাজ করতে পারে না। 
যেকোনভাবেই হোক, কোরিয়ানরা ঈশ্বরের কার্যের জন্য উপযোগী। ঈশ্বরের কার্যের জন্য তারা শুধু উত্তমই নন, কিন্তু নিখুঁতও। লোকেরা পাপী কিনা, এই বিষয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করতে কোরিয়ানরা কুন্ঠিত বোধ করে না। তারা প্রকৃতপক্ষে এই ধরণের সরাসরি প্রশ্ন সব সময় না করলেও, তারা স্পষ্টবাদী। যখন কোরিয়ানরা কাউকে কোন জায়গায় যেতে দেখে, তখন তারা সেই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করতে পছন্দ করে যে, সে কোথায় যাচ্ছে। যখন তাদেরকে সেই ব্যক্তির গন্তব্য সম্পর্কে বলা হয়, তখন তারা আরো নানান প্রশ্ন করতে থাকে যে, কেন যাচ্ছে, যাওয়ার উদ্দেশ্য কি, এবং সেখানে গিয়ে সে কি করবে। একজন মানুষ কোথায় যাচ্ছে এবং সে সেখানে গিয়ে কি করবে, এটা তাদের জানার কোন বিষয় না হলেও, তারা কৌতূহলভরা মন নিয়ে প্রশ্ন করতেই থাকে। তথাপি, কোরিয়ানরা ‘কোথায় যাচ্ছে, এবং কি করতে যাচ্ছে’ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে আপত্তি করে না। তাই, যখন আমরা কোরিয়ানদের দেখি, আমরা দেখতে পাই যে, তারা সহানুভূতিশীল। 
সম্ভবত এই কারণেই ঈশ্বর কোরিয়ানদেরকে এত ভালবাসেন, আর তিনি আপনার এবং আমার দ্বারা সুসমাচার প্রচার করছেন। কোরিয়ানরা সৎও। যদিও অনেক অসৎ কোরিয়ান রয়েছে, কিন্তু অধিকাংশ কোরিয়ানই সৎ। যখন তারা রাগান্বিত হয়, তখন তারা তা স্পষ্টভাবেই প্রদর্শন করে। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই সৎ হওয়াটা ঠিক নয়; যদি এর দ্বারা অন্যেরা আঘাত প্রাপ্ত হয়, তবে আপনার অতটা সৎ হওয়া উচিত নয়। অত্যন্ত স্পষ্টবাদী হওয়াটা অনেক সময় হিতে বিপরীত হতে পারে। যাইহোক, আমাদেরকে প্রভুর সাক্ষাতে সৎ হতে হবে। 
আমাদের সকলকে অবশ্যই প্রভুতে থাকতে হবে, কিন্তু আমরা এটা কিভাবে করতে পারি? আমরা বিশ্বাসে প্রভুর মধ্যে থাকতে পারি। বিশ্বাসেই আমরা প্রভুর শিষ্য হই। বিশ্বাসেই আমরা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি। যারা পাপের ক্ষমা লাভ করেছে, তারাও তাদের অযোগ্যতার কারণে পাপ করতেই থাকে, কিন্তু তবুও তারা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারে। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা সম্ভব- কারণ, প্রভু ইতোমধ্যেই আমাদের পা ধৌত করেছেন, অর্থাৎ, আমাদের সমস্ত ব্যক্তিগত পাপ ধৌত করেছেন। এই কার্যটি এখনো চলমান কোন কার্য নয়। প্রভু এখনো আমাদের পাপ মোচন করছেন না। বরং, এটা ইতোমধ্যেই করা হয়েছে এবং সম্পন্ন হয়েছে। ২,০০০ বছর আগে প্রভু যখন এই জগতে এসেছিলেন, তখন যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হওয়ার দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ একেবারে চিরকালের জন্য মোচন করেছিলেন। তিনি ইতোমধ্যেই আমাদের সমস্ত পাপ মোচন করেছেন। আর এই পাপ নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার কারণে দন্ডস্বরূপ তাঁকে ক্রুশে রক্তপাত করতে হয়েছিল এবং হত হতে হয়েছিল। এরপর তিনি মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হলেন। 
এই সমস্ত কাজই অনেক বছর আগেই করা হয়েছে। যেহেতু এটি ২০১৪ সাল এবং যীশু ৩৩ বছর বয়সে হত হয়েছিলেন, তাহলে পরিত্রাণের এই সমস্ত কাজ প্রায় ২,০০০ বছর আগে সম্পন্ন হয়েছিল। এখন আর করার মতো কিছুই অবশিষ্ট নেই, সমস্ত কাজই অনেক বছর আগেই করা হয়েছে। আমরা যা শুনেছি, যাতে বিশ্বাস করি এবং যা এখন প্রচার করছি, তা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। বিশ্বাস দ্বারাই পাপের ক্ষমার লাভ করা যায়। আর বিশ্বাসের দ্বারাই আমরা ইতোমধ্যে পাপের ক্ষমা লাভ করেছি। আমাদের অসংখ্য অযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, যদি আমরা প্রভুর বাক্য দৃঢ়রূপে ধারণ করি, তবে আমরা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি।
যদি আমরা প্রভুর সাক্ষাতে পাপ করি, তাহলে আমরা এটা স্বীকার করি এবং নত হই। আর আমরা বিশ্বাস করি যে, এই সমস্ত পাপও প্রভুর উপরে অর্পিত হয়েছিল। প্রভু এই সমস্ত পাপও ইতোমধ্যেই মোচন করেছেন- এটা বিশ্বাসের দ্বারা আমরা একটা পরিষ্কার বিবেক নিয়ে প্রভুকে অনুসরণ করতে পারি। আমরা সব সময় প্রভুর শিষ্য হিসেবে জীবন যাপন করতে পারি এবং তাঁর কার্য বহন করতে পারি। প্রভু আমাদেরকে এরকম পবিত্র মানুষ হিসেবে আশীর্বাদ করেছেন। এজন্য আমরা প্রভুর নিকট অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। এত সুন্দর আশীর্বাদের জন্য আমরা অবশ্যই প্রভুকে ধন্যবাদ দিব। 
আমার সহ-বিশ্বাসীগণ, আপনাদের মধ্যে যতই অযোগ্যতা থাকুক না কেন, আপনারা যতক্ষণ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করছেন, ততক্ষণ আপনারা প্রভুর অনুমোদিত কার্য্যকারী হতে পারেন। আর আপনারা সব সময়ই প্রভুকে অনুসরণ করতে পারেন। যদিও নিজেদের দিকে তাকালে আপনাদের মনে হবে যে, আপনারা প্রভুকে অনুসরণ করতে পারবেন না, কিন্তু প্রভুর দিকে তাকালে আপনারা আপনাদের সামর্থ্যের চেয়েও বেশী সক্ষম হবেন তাঁকে অনুসরণ করতে। আপনাদের শুধুমাত্র যে কাজটি করতে হবে, তা হল- আপনাদেরকে যীশু খ্রীষ্টের দিকে তাকাতে হবে, যিনি আমাদেরকে পবিত্র করেছেন। প্রভু শুধু আমাদের পাপই মোচন করেননি, কিন্তু সমগ্র জগতের সমস্ত পাপও মোচন করেছেন। প্রথম পাপ ক্ষমা লাভের পরও আমরা যে সমস্ত পাপ করেছি, প্রভু সে সমস্ত পাপও মোচন করেছেন। আর এটা করার দ্বারা তিনি আমাদেরকে ধার্মিকতার কার্য্যকারীতে রূপান্তর করেছেন। আমাদের প্রভুকে আমি আমার সমস্ত কৃতজ্ঞতা প্রদান করছি!