Search

শিক্ষা

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[7-6] ধন্য প্রভু, পাপীদের মুক্তিদাতা! (রোমীয় ৭:১৪-৮:২)

< রোমীয় ৭:১৪-৮:২ >
 “কারণ আমরা জানি, ব্যবস্থা আত্মিক, কিন্তু আমি মাংসময়, পাপের অধীনে বিক্রীত। কারণ আমি যাহা সাধন করি, তাহা জানি না; কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহাই যে কাজে করি, এমন নয়, বরং যাহা ঘৃনা করি, তাহাই করি। কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি না, তাহাই যখন করি, তখন ব্যবস্থা যে উত্তম, ইহা স্বীকার করি। এইরূপ হওয়াতে সেই কাৰ্য্য আর আমি সাধন করি না, আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। যেহেতুক আমি জানি যে আমাতে, অর্থাৎ আমার মাংসে, উত্তম কিছুই বাস করে না; আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়। কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। পরন্তু যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। অতএব আমি এই ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি যে, সৎ কাৰ্য্য করিতে ইচ্ছা করিলেও মন্দ আমার কাছে উপস্থিত হয়। বস্তুতঃ আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করে। কিন্তু আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য প্রকার এক ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি; তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে। দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে? আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি। অতএব আমি আপনি মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করি। অতএব এখন যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই। কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে জীবনের আত্মার যে ব্যবস্থা, তাহা আমাকে পাপের মৃত্যুর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত করিয়াছে।”
 
 

মানুষ উত্তরাধিকারসূত্রে পাপী

 
 সমগ্র মানব জাতি আদম এবং হবা হইতে উত্তরাধিকার সূত্রে পাপী এবং পাপের বীজ। তাহলে আমরা প্রকৃতই পাপের জন্ম এবং অবশ্যই পাপী মানুষ হয়ে যাব। পৃথিবীর সমস্ত মানুষ পাপী ছাড়া কিছু পারে না, এটা তাদের পূর্ব পুরুষ আদামের কারণে, যদিও তারা কেউ পাপী হতে চায়নি।
পাপের উৎস কি? ইহা আমাদের পিতা-মাতা থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে। আমরা হৃদয়ে পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। এটাই পাপের আদি প্রকৃতি। আমরা আদম ও হবা থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে বার প্রকারের পাপের অধিকারী। এসমস্ত পাপ - বেশ্যাগমন, চৌর্য্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মুর্খতা–হল আমাদের জন্মের পরে সহজাত প্রবৃত্তি।
তাহলে আমরা বার প্রকারের পাপ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করি। আমরা স্বীকার না করে পারি না যে, আমরা পাপী, কারণ আমরা হৃদয়ে পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। একজন মানুষ পাপী হয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং অবশ্যই একজন পাপী হয়, কারণ প্রথম থেকেই সে (পুং/স্ত্রী) পাপী, যদি সে (পুং/স্ত্রী) সারা জীবন পাপ না করেও থাকে। হৃদয়ে পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে বলেই মানুষ পাপী হয়। যদি আমরা মাংস দ্বারা পাপ করি না, তথাপি আমরা পাপী হওয়া থেকে রেহাই পাই না, কারণ ঈশ্বর অন্তর দেখেন। সুতরাং ঈশ্বরে সম্মুখে সমগ্র মানব জাতি পাপীষ্ট।
 
 
মানুষ ব্যবস্থা লঙ্ঘনের দ্বারা পাপ করে
 
মানুষ শাস্ত্র বিধি লঙ্ঘনের দ্বারাও পাপ করে। সে (পুং/স্ত্রী) মাংস দ্বারা পাপের আদি উদগম করে। আমরা এগুলোকে বালি, “অপরাধ”বা “শাস্ত্রলঙ্ঘন”। এগুলো হল আমাদের বাহ্যিক আচরণের অপরাধ, যা আমাদের হৃদয়ে বার রকমের পাপ থেকে সৃষ্টি করে। মানুষের ভিতরকার মন্দতার পাপ মানুষকে দিয়ে ব্যবস্থাবিহীন কাজ করায় এবং মানুষজাতি অন্য কিছু নয় কিন্তু পাপী হয়ে যায়। মানুষ যখন খুব ছোট থাকে, তখন তাকে পাপী মনে হয় না। পাপ চিহ্নিতভাবে বেরিয়ে আসে না, যখন একটা শিশু (পুং/স্ত্রী) খুব ছোট থাকে ঠিক যেমন একটা ছোট খেজুর গাছ থেকে চারটি খেজুর পাওয়া যায় না। কিন্তু যখন আমরা বড় হতে থাকি তখন ভিতর থেকে বেশী বেশী বের হয়ে আসে, আমরা জানতে পারি যে, আমরা পাপী। এই পাপকে আমরা বলি, অপরাধ বা বিধি লঙ্ঘল এবং এগুলোই সেই পাপ যা আমরা আমাদের মাধ্যমে করি।
ঈশ্বর বলেন এগুলো উভয়ই পাপ। হৃদয়ের পাপ এবং মাংসের ব্যবস্থা বিহীন কাজ, উভয়ই পাপ। ঈশ্বর মানুষকে পাপী বলেন। সমস্ত পাপগুলি আমাদের হৃদয় এবং আচরনের সাথে সম্পৃত্ত। সুতরাং সমস্ত মানুষ ঈশ্বরের চোখে পাপী হয়ে জন্মে, তারা তাদের আচরনে পাপ করুক বা না করুক।
অবিশ্বাসীরা দৃঢ়ভাবে বলে যে, মানুষের জন্মের আরম্ভটা ভাল, এবং কেউ দুষ্টতা নিয়ে জন্মায় না। কিন্তু দায়ুদ ঈশ্বরের কাছে স্বীকার করেছেন, “তোমার বিরুদ্ধে, কেবল তোমারই বিরুদ্ধে আমি পাপ করিয়াছি, তোমার দৃষ্টিতে যাহা কুৎসিত, তাহাই করিয়াছি; অতএব তুমি আপনার বাক্যে ধৰ্ম্মময়, আপনার বিচারে নির্দ্দোষ রহিয়াছ। দেখ, অপরাধে আমার জন্ম হইয়াছে, পাপে আমার মাতা আমাকে গর্ভে ধারণ করিয়াছিলেন” (গীতসংহিতা ৫১:৪-৫)। এই অনুচ্ছেদের অর্থ হল, “পাপ আমি না করে থাকতে পারি না, কারণ শুরুতেই আমি একটি পাপের বীজ। আমি একটি পাপের কবর স্বরূপ। সুতরাং তুমি যদি আমার পাপ তুলে নাও, তাহলে আমি সমুস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি এবং ধার্মিক হতে পারি। কিন্তু তুমি যদি সেগুলো তুলে না নাও, আমাকে নরকে যেতে হবে। যদি তুমি বল আমার পাপ আছে, তাহলে আমার পাপ আছে। কিন্তু তুমি যদি বল পাপ নেই, তাহলে আমার পাপ নেই। ঈশ্বর সব কিছু তোমার এবং তোমার বিচারের উভয় নির্ভরশীল।”
স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ঈশ্বরের চোখে সমগ্র মানুষজাতি সাহায্যকারী হতে পারে না, কিন্তু পাপী হতে পারে, কারণ তারা উত্তরাধিকার সুত্রে তাদের পিতা-মাতা থেকেই পাপী হয়েছে। তাদের আচরণ ব্যতিরেকে তারা জন্ম থেকেই পাপী। পাপ থেকে উদ্ধার পাবার এক মাত্র পথ, সেটা হল যীশু সাধিত পরিত্রাণে বিশ্বাস করা। জনসাধারনের শিক্ষা আমাদের সন্তানদের ভুল শিক্ষা দেয়, যার বর্ণনা করলে এই অর্থ দাঁড়ায়, “সব মানুষ ভাল চরিত্র নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। সুতরাং মানুষের নৈতিক উৎকর্ষতা গুনে মানুস ভালভাবে জীবন যাপন করে। আপনি যদি শুধু চেষ্টা করেন তাহলে ভাল কিছু করতে পারেন।” তারা শুধু ভাল দিকটাই বলেছে। মানুষ শুধু নীতি কথার অধীনে জীবন ধারন করে। কিন্তু কেন তারা তাদের হৃদয়ে অথবা মাংসে তাদের সমাজে অথবা গৃহে পাপ করে? তারা এগুলো করে, কারণ তারা জন্মগতভাবে পাপী। মানুষ পাপের বীজ হয়ে জন্মে। একজন মানুষ ভাল কিছু করতে চায়। এটা ইহা প্রমান করে যে, আমরা পাপ নিয়ে জন্মগ্রহন করি।
 
 

আপনাকে অবশ্যই নিজেকে জানতে হবে

 
মানুষ তাদের জীবন যাপনে মাংস দ্বারা কোন ভাল কিছু করতে পারে না, কিন্তু পাপ করতে পারে, কারণ তারা পাপ নিয়ে জন্মে। এটাই মানব জাতির আসল বর্ণনা-আমাদের সর্ব প্রথমে নিজেদেরকে জানতে হবে। সক্রেটিস বলেছেন, “নিজেকে জানো”! এবং যীশু বলেছেন, “তোমরা পাপী কারণ, তোমরা গর্ভে পাপী ছিলে এবং অপরাধে তাহাদের জন্ম হয়েছে। সুতরাং তোমাদের অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।” নিজেকে জানুন। অধিকাংশ মানুষ নিজেদেরকে ভুল বোঝে। অধিকাংশ মানুষ নিজেকে জানা ব্যতিরেকে মৃত্যু বরণ করে। একমাত্র জ্ঞানীরাই শুধু নিজেদেরকে জানে। তারাই জ্ঞানী, যারা জানে যে, তারা দুষ্টের বীজ এবং যীশুর সত্যকে মনে মনে উপলব্দি করে এবং বিশ্বাস করে। তাদের স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার অধিকার আছে।
 তারাই নিজেদের সম্পর্কে কিছুই জানে না, যারা লোকদেরকে ভন্ডামি এবং পাপ না করতে শেখায়। তারা লোকদের ভিতরকার পাপ প্রকাশ করতে শেখায় না। ধর্ম শিক্ষকরা তাদের পাপ না করতে এবং দমন করতে শিখায়, যখনই তারা পাপে আন্দোলিত হয়। তারা সবাই তাদের নরকের পথে। তারা কারা? তারা শয়তানের, ভূয়া কর্তার দাস। তারা কি শিখায় এবং আমাদের প্রভু আমাদের কি শিখিয়েছেন। কিন্তু তিনি আমাদিগকে বলেছেন, “তোমরা পাপ করেছ, এবং তোমরা পাপী ও পাপের বেতন মৃত্যু। তোমাদের পাপের কারণে তোমরা ধংসের পথের যাত্রী। সুতরাং তোমাদের অবশ্যই পাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে। পরিত্রাণের দান গ্রহন করতে হবে যা তোমাকে সমস্ত পাপ হতে রক্ষা করে। তাহলে তোমার সমস্ত পাপ ক্ষমা হবে এবং তুমি অনন্ত জীবন লাভ করবে। তুমি একজন ধার্মিক, একজন অতি সাধু এবং ঈশ্বরের সন্তান হবে।”
 
 

কেন মানুষকে ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছেন

 
পৌল বলেন, “আর ব্যবস্থা তৎপরে পার্শ্বে উপস্থিত হইল, যেন অপরাধের বাহুল্য হয়; কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল”(রোমীয় ৫:২০)। ঈশ্বর আমাদের ব্যবস্থা দিয়েছেন যেন, এর মাধ্যমে আমাদের পাপ আরো পূর্ণভাবে প্রকাশিত হয় (রোমীয় ৭:১৩)। তিনি পাপীদের তাঁর ব্যবস্থা দিয়েছেন যেন তারা গভীরভাবে তাদের পাপকে চিনতে পারে।
ঈশ্বর ইস্রায়েলদের ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, যখন যাকোবের বংশধরেরা মিশর ত্যাগ করে আসার পরে প্রান্তরে থাকত। তিনি ৬১৩ প্রকার আজ্ঞা দিয়েছিলেন। ঈশ্বর কেন মানুষ জাতিকে ব্যবস্থা দিলেন? ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা দিয়েছিলেন যেন, প্রথমতঃ তারা তাদের পাপ চিনতে পারে, যেহেতু তাদের পাপের সম্বন্ধে জানত না, এবং দ্বিতীয়তঃ তারা পাপে জন্মেছে।
মানুষ জাতি যে কি গুরুতর পাপী দশ আজ্ঞায় সেটা দেখানো হয়েছে। “আমার সাক্ষাতে তোমার অন্য দেবতা না থাকুক। তুমি আপনার নিমিত্তে খোদিত প্রতিমা নির্মাণ করিও না; উপরিস্থ স্বর্গে, আপনার নীচস্থ পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নীচস্থ জলমধ্যে যাহা যাহা আছে, তাহাদের কোন মূর্তি নির্ম্মাণ করিও না; তুমি তাহাদের কাছে প্রণিপাত করিও না, এবং তাহাদের সেবা করিও না; কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমি স্বগৌরব রক্ষণে উদযোগী ঈশ্বর; আমি পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল সন্তানদিগের উপরে বর্ত্তাই, যাহারা আমাকে দ্বেষ করে, তাহাদের তৃতীয় চতুর্থ পুরুষ পর্য্যন্ত বর্ত্তাই; কিন্তু যাহারা আমাকে প্রেম করে ও আমার আজ্ঞা সকল পালন করে, আমি তাদের সহস্র (পুরুষ) পর্য্যন্ত দয়া করি। তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক লইও না, কেননা যে কেহ তাঁহার নাম অনর্থক লয়, সদাপ্রভু তাহাকে নির্দ্দোষ করিবেন না। তুমি বিশ্রামদিন স্মরণ করিয়া পবিত্র করিও। ছয় দিন শ্রম করিও, আপনার সমস্ত কাৰ্য্য করিও; কিন্তু সপ্তম দিন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামদিন; সে দিনতুমি কি তোমার পুত্র কি কন্যা, কি তোমার দাস কি দাসী, কি তোমার পশু, কি তোমার পুরদ্বারের মধ্যবর্ত্তী বিদেশী, কেহ কোন কাৰ্য্য করিও না; কেননা সদাপ্রভু আকাশমন্ডল ও পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যবর্ত্তি সমস্ত বস্তু ছয় দিনে নির্মাণ করিয়া সপ্তম দিনে বিশ্রাম করিলেন; এই জন্য সদাপ্রভু বিশ্রামদিনকে আশীর্ব্বদ করিলেন, ও পবিত্র করিলেন। তোমার পিতাকে ও তোমার মাতাকে সমাদর করিও, যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিবেন, সেই দেশে তোমার দীর্ঘ পরমাযু হয়। নরহত্যা করিও না। ব্যভিচার করিও না। চুরি করিও না। তোমার প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ দিও না। তোমার প্রতিবাসীর গৃহে লোভ করিও না; প্রতিবাসীর স্ত্রীতে, কিম্বা তাহার দাস কি দাসীতে কিম্বা তাহার গোরুতে, কি গর্দ্দভে, প্রতিবাসীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না” (যাত্রাপুস্তক ২০:৩-১৭)।
 ঈশ্বর আমাদেরকে ব্যবস্থা দিয়েছেন, যেন এর মাধ্যমে তিনি সঠিকভাবে আমাদের শিখাতে চেয়েছেন যে, আমাদের অন্তরে কি ধরনের পাপ রয়েছে। ঈশ্বর আমাদের বুঝাতে চেয়েছেন যে, ঈশ্বরের সম্মুখে আমরা সবাই পাপী, তিনি আমাদেরকে সত্যের আলোয় আলোকিত করেছেন, যে আমরা পাপী, কারণ আমরা আজ্ঞা পালন করি না।
 একজন মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করা সম্ভব? যখন ইস্রায়েল এবং তাদের বংশধরদের বলেছিলেন যে, তাঁর সম্মুখে অন্য কোন ঈশ্বর নাই, তিনি তাদেরকে এটা জ্ঞাত করতে চেয়েছিলেন যে, তারা সেই পাপী যারা প্রথম থেকেই, এমনকি প্রথম আজ্ঞাটা পালন করেনি। আজ্ঞার দ্বার তারা জানতে পারল যে, তারা স্রষ্টা থেকে অন্য সৃষ্টিকে বেশি ভালবাসছে। তারা বুঝতে পারল যে, তারা অনর্থক ঈশ্বরের নাম লয়, যে প্রতিমা পূজা ঈশ্বর ঘৃনা করেন, তারা তাই তৈরী করল এবং সেবা করল, ঈশ্বর যতক্ষণ তাদের স্থির না করলেন, তারা স্থির হলো না। তারা আরো বুঝতে পারল যে, তারা তাদের পিতা মাতাকে সম্মান করেনি, তারা নরহত্যা করল, ব্যভিচার করল এবং তারা সর্ব প্রকার অসৎকাজ করল, যা ঈশ্বর তাদের না করতে বলেছিলেন। তারা বিন্দুমাত্র ও ঈশ্বরের জ্ঞা মানল না।
 
 
যাদের পাপ এখনো ক্ষমা হয়নি, ব্যবস্থা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে
 
আপনি কি বুঝতে পারছেন, ঈশ্বর কেন আমাদিগকে ব্যবস্থা দিয়েছেন? ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছেন, প্রথমত তাদের যারা এখন নূতন জন্মপ্রাপ্ত হয়নি। “অথবা হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা কি জান না- কারণ যাহারা ব্যবস্থা জানে, আমি তাহাদিগকেই বলিতেছি,-মনুষ্য যত কাল জীবিত থাকে, তত কাল পর্যন্ত ব্যবস্থা তাহার উপরে কর্তৃত্ব করে”(রোমীয় ৭:১) ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা দিয়েছেন, যারা তাদের পূর্বপুরুষের সূত্রে পাপ অর্জন করেছে এবং যাদের নূতন জন্ম হয়নি, এতদ্ব্যাতিত তাদেরকে পাপের অধীনে আর্ত্তনাদ করাবেন। ব্যবস্থা মানুষের উপরে কর্তৃত্ত্ব করে, যতদিন সে বেঁচে থাকে। আদমের প্রত্যেক বংশধরের অন্তরে পাপ রয়েছে। যাদের অন্তরে পাপ রয়েছে, ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা দিয়েছেন, এবং তিনি তাদের বলেন, তাদের অদৃষ্টে পাপ রয়েছে। তাহলে যখনই নরহত্যা এবং ব্যভিচার আমাদের মধ্যে থেকে বেরিয়েআসে এবং আমাদেরকে পাপী করে, তখন ব্যবস্থা আমাদিগকে বলে, “ঈশ্বর তোমাকে ব্যভিচার করতে না বলেছেন, কিন্তু তুমি আবার ব্যভিচার করেছ। সুতরাং তুমি একজন পাপী। ঈশ্বর তোমাকে নরহত্যা করতে না বলেছেন, কিন্তু তুমি তোমার ঘৃনা দ্বারা নরহত্যা করেছ। তুমি নরহত্যা এবং ব্যভিচার করা পাপী। ঈশ্বর তোমাকে চুরি করতে না বলেছে, কিন্তু তুমি আবার চুরি করেছ। সুতরাং তুমি একজন পাপী।” এ ভাবেই পাপের অস্থিত্ব বেরিয়ে আসে, যেখানে ব্যবস্থা বিদ্যমান।
এই কারণে পৌল বলেছেন, “অতএব ভ্রাতৃগণ তোমরা কি জান না (তাদের জন্য বলছি, যারা ব্যবস্থা জানে), যে, মানুষ যতদিন জীবিত থাকে, ব্যবস্থা ততদিন তার উপরে কর্তৃত্ব করে?” ব্যবস্থা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে, যাদের পাপ এখনও ক্ষমা হয়নি। যে পরজাতীয়েরা ব্যবস্থা জানে না, তাদের নিজেদের বিবকই তাদের ব্যবস্থা। যখন তারা মন্দ কাজ করে, তাদের বিবেক তাদের বলে যে, তারা যা করছে, সেটা পাপ। পরজাতীয়দের বিবেকই তাদের ব্যবস্থার মত কাজ করে এবং তারা তাদের বিবেক দ্বারা পাপকে চিনতে পারে (রোমীয় ২:১৫)।
যখন আপনার বিবেক বলছে যে, সৃষ্টিকর্ত্তা আছে, তখন কেন আপনি সষ্টিকর্ত্তার সেবা করেন না? কেন আপনি ঈশ্বরের অনুসন্ধান করেন না? আপনি কি আপনার হৃদয়ের সাথে প্রবঞ্চনা করছেন? অন্য লোকেরা আপনার পাপ খুঁজে বের করবে, সেজন্য আপনার লজ্জিত এবং ভীত হওয়া উচিত। কিন্তু যে সমস্ত পাপীরা ঈশ্বরে নির্ভরশীল নয় এবং নিজেদের হৃদয়কে ঠকায়, তাদের লজ্জা নেই।
যখন আমরা আকাশের দিকে তাকাই এবং যদি আমাদের পাপ থাকে, তখন আমরা নিজেরাই লজ্জিত হই, পৃথিবী, অন্যান্য মানুষ অথবা ঈশ্বরের সৃষ্টিগুলোর দিকে তাকিয়ে। ঈশ্বর মানুষকে বিবেক দিয়েছে এবং ব্যবস্থার বিবেক পাপকে চিহ্নিত করা। কিন্তু তাদের অধিকাংশই ঈশ্বরবিহীন জীবন-যাপন করছে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ভন্ডামী করছে এবং নিজেদের খুশীমত জীবন-যাপন করছে। তারা নরকে যাবেই। পৌল যেমন তাদের ব্যবস্থার দিকে মনোযোগী হতে বলেছেন, “অতএব ভ্রাতৃগণ তোমরা কি জান না (তাদের জন্য বলছি, যারা ব্যবস্থা জানে), যে, মানুষ যতদিন জীবিত থাকে, ব্যবস্থা ততদিন তার উপরে কর্তৃত্ব করে?” একজন মানুষকে দুই ভাবে জন্মগ্রহণ করতে হয়-একবার পাপী হয়ে এবং তারপর ধার্মিক জীবন-যাপন করার জন্য ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত আশীর্বাদের দ্বারা নূতন জন্মপ্রাপ্ত হয়ে।
 নিচের বিষয়টি দিয়ে পৌল আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, প্রভু কিভাবে পাপ ব্যবস্থার অভিশাপ হতে আমাদের মুক্ত করেছেন;“কারণ যতদিন স্বামী জীবিত থাকে, ততদিন সধবা স্ত্রী ব্যবস্থা দ্বারা তাহার কাছে আবদ্ধ থাকে; কিন্তু স্বামী মরিলে সে স্বামীর ব্যবস্থা হতে মুক্ত হয়। সুতরাং যদি সে স্বামী জীবিত থাকিতে অন্য পুরুষের হয়, তবে ব্যভিচারিণী বলিয়া আখ্যাত হইবে; কিন্তু স্বামী মরিলে সে ঐ ব্যবস্থা হইতে স্বাধীন হয়, অন্য স্বামীর হইলেও ব্যভিচারিণী হইবে না।”(রোমীয় ৭:১-৩)
একজন বিবাহিত মহিলার যদি অন্য কারো সাথে প্রেম থাকে, তাহলে তাকে ব্যভিচারিণী বলা হয়। কিন্তু তার স্বামী মরিলে সে যদি অন্য লোককে বিবাহ করে, তাহলে এটার মধ্যে কোন ভুল নাই। একই যুক্তি আমাদের পাপ মোচনের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করি। আদমের সকল বংশধর, যাদের পাপ এখনও ক্ষমা হয়নি, তাদের উপরে ব্যবস্থা কর্তৃত্ব করে। ইহা তাদের বলে “তোমরা পাপী” তাই ব্যবস্থানুযায়ী তারা পাপ স্বীকার করে বলে, “আমি অবশ্য নরকে যাব। আমি একজন পাপী। নরকে যাওয়া আমার পক্ষে স্বাভাবিক কারণ সেটা আমার পাপের বেতন।” কিন্তু যদি আমরা খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে ব্যবস্থায় মৃত হই, তাহলে ব্যবস্থা আর আমাদের উপরে কর্তৃত্ব করতে পারবে না, কারণ আমাদের পুরাতন আমিত্ব খ্রীষ্টের বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তাঁর সাথে ক্রুশারোপিত হয়েছে।
 
 
আমাদের পুরাতন আমিত্বগুলো মরে গেছে
 
আমাদের প্রভু আমাদের পুরাতন স্বামীগুলির দেখাশুনা করেন এবং তিনি আমাদিগকে তাঁর সঙ্গে বিবাহ হতে সক্ষম করেছেন। “অতএব হে ভ্রাতৃগণ, খ্রীষ্টের দেহ দ্বারা ব্যবস্থা সম্বন্ধে তোমাদেরও মৃত্যু হইয়াছে, যেন তোমরা অন্যের হও, যিনি মৃতদের মধ্য হইতে উত্থাপিত হইয়াছেন, তাঁহারই হও; যেন আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশে ফল উৎপন্ন করি” (রোমীয় ৭:৪)। ঈশ্বর সমগ্র মানব জাতিকে ব্যবস্থা দিয়েছেন, যারা তাদের আদিপিতা আদমের কারণে পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে; তাই ব্যবস্থার মাধ্যমে পাপ আরো বেশী প্রকাশিত হয়। তিনি দুইভাবে তাদেরকে রেখেছেন, ঈশ্বরের বিচারের অধীনে, কিন্তু খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে তাদেরকে মুক্ত করেছেন। আমাদের স্থলে যীশু খ্রীষ্ট মরেছেন। এটা কি আমাদের জন্য ঠিক নয় যে, ঈশ্বরের ব্যবস্থার কারণে আমরা নরকে যাই? ঠিক তাই। যাহোক, প্রভুকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল, তিনি যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপরে নিলেন, ক্রুশারোপিত হলেন, বিচারিত এবং ব্যবস্থার দ্বারা আমাদের স্থলে দন্ডিত হলেন। এর মাধ্যমে এবং কেবলমাত্র এর মাধ্যমেই এখন আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি, এতে বিশ্বাসের দ্বারা নূতন জন্ম পেতে পারি।
 যারা নূতন জন্মপ্রাপ্ত হয়নি, তারা অবশ্যই নরকে যাবে। যীশুকে তাদের বিশ্বাস করা এবং পরিত্রাণ পাওয়া উচিত। আমাদের অবশ্যই একবার খ্রীষ্টের সাথে মরতে হবে। আমাদের পুরাতন আমিত্বগুলো যদি একবার না মরে, তাহলে আমরা নূতন সৃষ্টি হতে পারি না এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারব না। খ্রীষ্ট যীশুতে একীভুত বিশ্বাসের ব্যবস্থায় আমাদের পুরাতন আমিত্বগুলো যদি বিচারিত না হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা বিচারিত হব এবং নরকে যাব। যাদের নূতন জন্ম হয়নি, তাদের নরকে যাওয়া উচিত।
 পরজাতিরা ভাল জীবন-যাপন করে, একটা ভাল জীবনযাত্রায় যা প্রয়োজন, সব কিছুই তারা উপভোগ করছে, কিন্তু অনন্ত বিশ্বাসের ব্যপারে তারা উদাসীন। যখন তারা এই জগতে বাস করছে, তখন সমগ্র মানবজাতিকে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপের ক্ষমা পেতে হবে। বিশ্বাসের দ্বারা যীশু খ্রীষ্টে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে প্রত্যেক পুরাতন আমিত্বগুলোকে একবার মরতে হবে, কিন্তু পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার পরে আমরা নূতন জন্ম নিতে পারি না। আমাদের অবশ্যই একবার মরতে হবে এবং যীশু খ্রীষ্টে আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা পাপ থেকে মুক্তি পেতে হবে। কার মাধ্যমে? যীশু খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে। কিভাবে? বিশ্বাসের দ্বারা যে, যীশু খ্রীষ্ট জগতে এসেছেন এবং আমাদের সকল পাপ তুলে নিয়েছেন। আপনি কি মরেছেন? আর কেউ কি আছে যে এখনও মারে নাই? আপনি হয়তো আশ্চর্য্য হবেন,“আমি কিভাবে মৃত হতে পারি? যদি আমি মৃতই ছিলাম, তাহলে আমি কিভাবে এখনও জীবিত?” এটাই রহস্য; এটাই গূঢ় রহস্য যা কোন ধর্মই কোনদিন উদঘাটন করতে পারে নাই।
একমাত্র নূতন জন্মপ্রাপ্তরাই বলতে পারে যে, তাদের পুরাতন আমিত্বগুলি যীশু খ্রীষ্টের সাথে একীভুত হয়ে মরে গেছে। পাপীর নূতন জন্মপ্রাপ্ত হতে পারে, এবং তাদের পুরাতন আমিত্বগুলো মরে যেতে পারে, যদি নূতন জন্ম হওয়ার পর থেকে ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ করে। এবং এর মাধ্যমে তারা ঈশ্বরের দাস হতে পারে। প্রত্যেক মানুষের অবশ্যই নূতন জন্মপ্রাপ্ত সাধুদের কাছ থেকে ঈশ্বরের বাক্য শুনতে হবে। আপনি তাদের শিক্ষা অগ্রাহ্য করলে নূতন জন্ম পাবে না। এমনকি পৌল সেই সময়কার বিশিষ্ট ব্যবস্থাবেক্তা গমলিয়েলের নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন, তথাপি যীশু খ্রীষ্ট ব্যতিত নূতন জন্ম পেতে পারেন নাই। আমরা কত ধন্য! যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের উদ্দেশে ধার্মিকতার ফল উৎপন্ন করতে পারি, যখন খ্রীষ্টে বিশ্বাসের দ্বারা যীশুর মাধ্যমে মৃত্যু বরণ করি, যিনি মৃত্যু হইতে পুনরুত্থিত হয়েছেন। আমরা তখন পবিত্র আত্মার নয়টি বর প্রাপ্ত হই।
 
 
পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করে
 
“কেননা যখন আমরা মাংসের বশে ছিলাম, তখন ব্যবস্থা হেতু পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার জন্য আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত” (রোমীয় ৭:৫)। “যখন আমরা মাংসে থাকি”অর্থাৎ “আমাদের নূতন জন্মের পূর্বে”। যখন আমাদের বিশ্বাস ছিল না তখন আমাদের পাপ-বাসনা সকল মৃত্যুর নিমিত্ত ফল উৎপন্ন করিবার নিমিত্তে আমাদের অঙ্গমধ্যে কাৰ্য্য সাধন করিত। হৃদয়ে বার রকমের পাপ থাকে। ভিন্নভাবে দেখলে, অর্থাৎ আমাদের হৃদয়ে পাপের বার রকমের নির্গম পথ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ আজকে, হয়তো ব্যভিচারপাপটি হৃদয়কে উত্তেজিত করে এর নির্গম পথ দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে। তখন হৃদয় মাথাকে নির্দেশ করে,“ব্যভিচার তার গর্ত থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং আমাকে ব্যভিচার করতে বলছে,” তখন মাথা উত্তর দেবে, “ঠিক আছে। আমি হাত এবং পাকে তা করতে নির্দেশ দিব। শোন হাত এবং পা, তোমরা যা করতে চাও করতে পার। তাড়াতাড়ি কর।” মাংস যেখানে ব্যভিচার করবে, মাথা তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে সেখানে যেতে নির্দেশ করে। তখন শরীর সেখানে যায় এবং মাথা যেভাবে নির্দেশ করছে, সেভাবে কাজ করছে। ঠিক তখন নরহত্যা পাপটি যখন তার গর্ত থেকে বেরিয়ে আসে, ইহা মাথাকে উত্তেজিত করে এবং মাথা কারো রাগান্বিত হয়। তখন মাথা শরীরকে তা করার জন্য প্রস্তুত হতে বলে। পাপ আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো দ্বারা এভাবেই কাজ করে।
আমাদের পাপের জন্য কেন ক্ষমা চাওয়া উচিত এটাই তার কারণ। যদি আমরা পাপের ক্ষমা না পাই, তাহলে আমরা সাহায্য পাপ না, কিন্তু আমাদের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও মনের নির্দেশমত চলতে হবে। প্রত্যেকের সত্য সুসমাচারের মাধ্যমে নূতন জন্ম পাওয়া উচিত। একজন তখনই পরিপূর্ণ হয়, যখন সে নূতন জন্ম পায়, ঠিক একটি শুককীট যেমন ঘুর্ঘরে পোকায় পরিণত হয়। প্রচারকেরা সত্যই প্রভুর সেবা করতে পারে শুধুমাত্র নূতন জন্ম লাভের পর। নূতন জন্মের পূর্বে তারা যা বলতে পারে তা হল, “প্রিয় সাধুগণ, আমাদের অবশ্যই উত্তম কাজ করা উচিত।” এই একজন রোগীকে বলার মত একই কথা যে, আপনি নিজে নিজেই সুস্থ্য হবেন। তারা তাদের উপাসকমন্ডলীদের তাদের নিজেদের দ্বারা হৃদয় পরিস্কার করতে উৎসাহিত করে, যদিও তারা নিজেরাই জানে না যে, কিভাবে তাদের নিজেদের পাপ পূর্ণ হৃদয় পরিস্কার করতে হয়।
আমাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলির পাপপূর্ণ ইচ্ছাগুলি মৃত্যুর ফল উৎপন্ন করতে লিপ্ত। একজন মানুষ কি ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে? পাপের দাস হিসাবে আমরা পাপ করি, কারণ আমরা পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করি, কারণ আমাদের পাপ এখনও মোচন হয়নি এবং এখনও আমাদের যীশু খ্রীষ্টের দেহের মাধ্যমে মরতে হয়নি। আমরা পাপ করি, কারণ আমরা সেরূপ করতে ঘৃনা করি। অতএব প্রত্যেকের পাপের ক্ষমা লাভ করা উচিত।
 যে সমস্ত প্রচারকদের প্রভুর সেবা করনার্থে এখনও পাপ তুলে নেওয়া হয়নি এটা তাদের জন্য ভাল। সেটা তাদের জন্য চাইনিজ বাঁধাকপি বিক্রি করার মত সুবিধা হত। আমি তাদের সেইরূপ করার অনুমতি দিতাম। এটা তাদের জন্য লোকদের মিথ্যা বলে টাকা বানানো এবং ঘুষ খেয়ে নিজেদের শুকরের মত মোটা হওয়ার কথা বলার চেয়ে ভাল।
যদি কেউ তার সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত না হয়, পাপ এবং তার ইচ্ছাগুলো তার (পুং/স্ত্রী) অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোকে দিয়ে মৃত্যুর ফল উৎপন্ন করায়। আমাদের সব তুলে নেওয়ার পরে প্রভুর অনুগ্রহে আমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণের মাধ্যমে তাঁর সেবা করতে পারি। কিন্তু ব্যবস্থার অধীনে আমরা তাঁর সেবা করতে পারি না। আমাদের প্রভু এভাবে আমাদের বলেন, “কিন্তু এক্ষণে আমরা ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হইয়াছে; কেননা যাহাতে আবদ্ধ ছিলাম, তাহার সম্বন্ধে মরিয়াছি, যেন আমরা অক্ষরের প্রাচীনতায় নয়, কিন্তু আত্মার নূতনতায় দাস্যকর্ম্ম করি” (রোমীয় ৭:৬)।
 
 
ব্যবস্থা আমাদের পাপকে অত্যাধিক পরিমানে প্রকাশ করে
 
 “তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দূরে থাকুক; বরং পাপ কি, তাহা আমি জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা“লোভ করিও না,” এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না; কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া সেই সেই আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সম্পন্ন করিল; কেননা ব্যবস্থা ব্যতিরেকে পাপ মৃত থাকে। আর আমি একসময় ব্যবস্থা ব্যতিরেকে জীবিত ছিলাম, কিন্তু আজ্ঞা আসিলে পাপ জীবিত হইয়া উঠিল, আর আমি মরিলাম; জীবনজনক যে আজ্ঞা, তাহা আমার মৃত্যুজনক বলিয়া দেখা গেল। ফলতঃ পাপ সুযোগ পাইয়া আজ্ঞা দ্বারা আমাকে প্রবঞ্চনা করিল, ও তদ্বারা আমাকে বধ করিল। অতএব ব্যবস্থা পবিত্র, এবং আজ্ঞা পবিত্র, ন্যায্য ও উত্তম” (রোমীয় ৭:৭-১৩)।
পৌল বলেন, ঈশ্বর আমাদের পাপকে অত্যাধিক পরিমানে প্রকাশ করার জন্য ব্যবস্থা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন,“যেহেতুক ব্যবস্থার কাৰ্য্য দ্বারা কোন প্রাণী তাঁহার সম্মুখে ধার্মিক গণিত হইবে না, কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে” (রোমীয় ৩:২০)। যাহোক, অধিকাংশ খ্রীষ্টিয়ানরা ব্যবস্থার ধার্মিকতার বিরুদ্ধাচারণ করেও ব্যবস্থার দ্বারা জীবন-যাপন করতে চেষ্টা করে। সুতরাং অধিকাংশ প্রচারকরা, যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত হয় নাই, তারা নিশ্চিত যে, লোকেরা ব্যবস্থার অবাধ্যতার কারণে দূর্বল হয়ে পড়ে এবং তারা যদি ব্যবস্থা পালন করে, তাহলে তারা সবল হতে পারে।
 আমরা কি আসলে তা পোষন করি যে, ব্যবস্থার অবাধ্যতাই সমস্ত রোগের কারণ? অনেক খ্রীষ্টিয়ান এবং মন্ডলীর অনুসারীগণ ভাবেন যে, বিষয়টি ভাল হচ্ছে না, কারণ তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থানুসারে জীবন-যাপন করতে ব্যর্থ। তারা তাদের পাপের কারণে অসুস্থ্য। প্রতিদিন তারা কাঁদে। তারা বাইবেলে সংযুক্ত এই অনুচ্ছেদের মত, “সর্বদা ক্রন্দন কর, ক্ষান্ত না হয়ে ক্রন্দন কর, সবকিছুতে ক্রন্দন কর” এমন কি যদিও বাইবেল আমাদের বলে, “সতত আনন্দ কর; অবিরত প্রার্থনা কর; সর্ব বিষয়ে ধন্যবাদ কর; কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে ইহাই তোমাদের উদ্দেশে ঈশ্বরের ইচ্ছা” (১থিষলনীকীয় ৫:১৬-১৮) কিন্তু ভুয়া প্রচারকরা লোকদের সর্বদা কাদতে শিখায়, ক্ষান্ত না হয়ে কাঁদতে, যেন অতিরিক্ত কান্না তাদের বিশ্বাস চিহ্নিত করে।
 ঐগুলো ব্যবস্থা বেক্তাদের দাবী যে, ক্রন্দনকারীদের বিশ্বাস ভাল। যে সমস্ত ভূয়া প্রচারকরা নূতন জন্ম পায়নি, তারা এমন একজনকে ডিকন হিসাবে নিয়োগ দেন, যে ভাল কাঁদতে পারে এবং ক্রন্দনে অভ্যস্ত একজন খ্রীষ্টিয়ানকে তার উচ্চপদে নিয়োগ দেন। গীর্জায় কাঁদবেন না, যদি আপনা সত্যিই কঁদতে চান তাহলে বাড়ীতে কাঁদবেন। যীশু কেন ক্রুশে মরেছিলেন? আমাদেরকে শিশুদের মত কাঁদাতে? অবশ্যই না! যীশু আমাদের সমস্ত দুর্দশা, অভিশাপ, দুর্বলতা এবং ব্যথা চিরতরে তুলে নিয়েছেন, যাতে তার ক্রুশারোপণ আমাদেরকে আর না কাঁদায় এবং পরিবর্তে আমরা সুখী জীবন-যাপন করি। সুতরাং কেন তারা কাঁদে? যদি তারা ঈশ্বরের নূতন জন্মের মন্ডলীতে কাঁদার চেষ্টা করতে চায়, তাহলে তাদের অবশ্যই বাড়ী ফেরা উচিত।
 
 
যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত এবং নূতন জন্ম প্রাপ্ত নয়, এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কি?
 
ব্যবস্থা কখনই ভুল নয়। ব্যবস্থা পবিত্র। আমরা সবাই ধার্মিক না হতে পারি, কিন্তু ইহা ধার্মিক। আমরা ব্যবস্থার ব্যতিক্রম, কারণ আমরা আদম হইতে উত্তরাধিকার সূত্রেই পাপী। আমাদের যা করা উচিত নয়, তাই করি, আবার যা করা উচিত, তা করি না। সুতরাং ব্যবস্থা আমাদেরকে অত্যাধিক পাপে পূর্ণ করে।
“কারণ আমরা জানি, ব্যবস্থা আত্মিক, কিন্তু আমি মাংসময়, পাপের অধীনে বিক্রীত। কারণ আমি যাহা সাধন করি, তাহা জানি না; কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, তাহাই যে কাজে করি, এমন নয়, বরং যাহা ঘৃনা করি, তাহাই করি। কিন্তু আমি যাহা ইচ্ছা করি না, তাহাই যখন করি, তখন ব্যবস্থা যে উত্তম, ইহা স্বীকার করি। এইরূপ হওয়াতে সেই কাৰ্য্য আর আমি সাধন করি না, আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। যেহেতুক আমি জানি যে আমাতে, অর্থাৎ আমার মাংসে, উত্তম কিছুই বাস করে না; আমার ইচ্ছা উপস্থিত বটে, কিন্তু উত্তম ক্রিয়া সাধন উপস্থিত নয়। কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। পরন্ত যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে। অতএব আমি এই ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি যে, সৎ কাৰ্য্য করিতে ইচ্ছা করিলেও মন্দ আমার কাছে উপস্থিত হয়। বস্তুতঃ আন্তরিক মানুষের ভাব অনুসারে আমি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আমোদ করে। কিন্তু আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে অন্য প্রকার এক ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি; তাহা আমার মনের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, এবং পাপের যে ব্যবস্থা আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গে আছে, আমাকে তাহার বন্দি দাস করে। দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” (রোমীয় ৭:১৪-২৪)
পূর্বের অনুচ্ছেদে পৌল আমাদেরকে বলেছেন যে, তিনিসহ আমরা সবাই একদা ব্যবস্থা দ্বারা বিচারিত হব। তিনি বলেছেন, যারা যীশুর দেহের মাধ্যমে ব্যবস্থার ক্রোধ এবং দন্ড দ্বারা দন্ডিত হয়, তারা ঈশ্বরের পক্ষে ধার্মিকতার ফল উৎপন্ন করে। তিনি আরো বলেন, কোন দ্বৈত জিনিস তার মধ্যে নাই, এবং যে নূতন জন্মপ্রাপ্ত না হয়, সে সাহয্য করতে পারে না, কিন্তু পাপ করতে পারে। কিন্তু একজন সাহয্য করতে পারে, যে নূতন জন্ম পায়। অবশ্যই এই দুইয়ের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। যারা নূতন জন্ম পেয়েছে, তাদের মধ্যে মাংস এবং আত্মা উভয়ই রয়েছে, সুতরাং তাদের মধ্যে দুই প্রকারের ইচ্ছা বিদ্যমান। কিন্তু যাদের নূতন জন্ম হয়নি, তাদের মধ্যে মাংসের লালসা বিদ্যমান এবং তারা শুধুই পাপ করতে চায়। সুতরাং তারা কত সুন্দরভাবে এবং অবিরত পাপ করে সে বিষয়ে উদ্বিগ্ন। যাদের নূতন জন্ম হয়নি এটা তাদের জীবনের লক্ষ্য।
পাপ মানুষকে দিয়ে পাপ করায়। রোমীয় ৭:২০ পদে বলা হয়েছে, “পরন্ত যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে।” নূতন জন্ম প্রাপ্তদের হৃদয়ে কি পাপ আছে? না। তাহলে যাদের নূতন জন্ম হয়, তাদের হৃদয়ে কি পাপ আছে? হ্যাঁ! যদি আপনার হৃদয়ে পাপ থাকে, তাহলে মাংসে কাজ করে এবং এমনকি ইহা আপনাকে আরো বেশী পাপ করায়। “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। পরন্তু যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি আর সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে।” মানুষ সারা জীবনে পাপ ছাড়া উপকারী কিছু করতে পারে না, কারণ তারা পাপসহ জন্মগ্রহণ করে।
নূতন জন্ম স্বতঃস্ফূর্তভাবে পবিত্র আত্মার ফল উৎপন্ন করে। কিন্তু যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত হয় নাই, তারা এইরকম ফল উৎপন্ন করতে পারে না। অন্যের উপর তাদের কোন দয়া নাই। তাদের কেউ, এমন কি সন্তান অবাধ্য হলে তাকে মেরে ফেলে। তাদের হৃদয় থেকে নিষ্ঠুরতা বেরিয়ে আসে এবং যখন তাদের সন্তানেরা অবাধ্য হয়, তখন তাদের মেরে ফেলে। যদিও তারা আসলে তাদের সন্তানদের মারে না, তাদের হৃদয় দিয়ে অগণিতবার তাদের মেরে ফেলে।
এখানে আমি কি বলতে চাচ্ছি, আপনি কি তা বুঝতে পারছেন? কিন্তু ধার্মিকতা এরূপ কাজ করতে পারে না। তারা প্রমাণ দেখাতে পারে, কিন্তু তাদের এরূপ নিষ্ঠুর হৃদয় থাকতে পারে না এবং থাকবেও না, যা এতবেশী তিক্ততা এবং রাগে পরিপূর্ন। 
পরিবর্তে ধার্মিকতা চায় হৃদয় দিয়ে লোকজনকে দয়া করতে, এমনকি তাদেরকে ও যারা বিভিন্ন মতবাদের উপর প্রমান দেখায়। “অতএব আমি এই ব্যবস্থা দেখিতে পাইতেছি যে, সৎ কাৰ্য্য করিতে ইচ্ছা করিলে ও মন্দ আমার কাছে উপস্থিত হয়।” মানুষ ভাল কাজ করতে চায়, কারণ তারা ঈশ্বরের প্রতি মুর্ত্তিতে সৃষ্টি, কিন্তু তাদের হৃদয়ে যখন পাপ উদয় হয়, শুধু তখনই তাদের মধ্যে থেকে মন্দতা বেরিয়ে আসে।
যে সমস্ত খ্রীষ্টিয়ান নূতন জন্ম পাই নাই, তারা একে অনেকের সহিত আর্তনাদ করে বলাবলি করে। “আমি সত্যিই ভাল কাজ করতে চাই, কিন্তু আমি পারি না। আমি জানি না কেন আমি পারি না।” তারা অবশ্যই জানে কেন তারা সেইরূপ করতে পারেনা, কারন তারা পাপী, তারা এখনো পরিত্রাণ পায় নাই। তারা ভাল কাজ করতে পারেনা, কারণ তাদের হৃদয়ে পাপ আছে। যাদের নূতন জন্ম হয়েছে মাংসের অভিলাসের মত তাদের ও আত্মার অভিলাস আছে, কিন্তু যাদের নূতন জন্ম হয়নি, তাদের পবিত্র আত্মা নাই। এটাই পার্থক্যের চাবি যা, যারা নূতন জন্ম পেয়েছে এবং যারা পায় নাই তাদের পৃথকীকরনে।।
 পৌল ৭অধ্যায়ে তার নূতন জন্ম না পাওয়ার সম্বন্ধে বলেছেন। রোমীয় ৭:১ পদে ব্যবস্থার ব্যাখ্যা করেছেন, তিনি বলেন যে, তিনি যে উত্তম কাজ করতে ইচ্ছা করেন, তা তিনি করতে পারেন না, কিন্তু যে মন্দ কাজ তিনি করতে চান, তাই তিনি করেন। অন্যকথায়, পৌলের পাপ করার ইচ্ছা ছিল না এবং শুধু ভাল কাজ করতে চাইতেন, কিন্তু তিনি আসলে যা ইচ্ছা করতেন তা করতে পারতেন না, পরন্ত তিনি হৃদয় দ্বারা আসলে কি করতে চান, তিনি দেখলেন ইহা করা অসম্ভব। “দুর্ভাগ্য মনুষ্য আমি! এই মৃত্যুর দেহ হইতে কে আমাকে নিস্তার করিবে?” তিনি তার এই দুর্ভাগ্যের জন্য বিলাপ করেন, কিন্তু এক্ষনে প্রভুর ধন্যবাদ করেন, বলেন, “আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ করি।”
আপনি কি বুঝেন এর অর্থ কি? আমরা নূতন জন্ম প্রাপ্তরা এই কথার অর্থ বুঝি-কিন্তু যাদের নূতন জন্ম হয়নি তারা কখনই এর অর্থ বুঝবে না। একটি শুককীট কখনই বুঝতে পারে না যে, একটি ঘুর্খরে পোকা কি বলে। আহা! আমি দিতে কয়েক ঘন্টা গাছে গান গাই। বাতাস কি ঠান্ডা! শুককীট মাটি থেকে অবশ্যই উত্তর দিবে,“সত্যিই? বাতাস কি?” ইহা কখনই বুঝতে পারে না ঘুর্খরে পোকা কি বলছে, কিন্তু ঘুর্খরে পোকা জানে বাতাস কি।
কারণ পৌলের নূতন জন্ম হয়েছিল, তিনি ব্যাখ্যা করতে পেরেছিলেন আসলে তাদের মধ্যে পার্থক্যটা কি, যারা নূতন জন্ম পেয়েছে এবং যারা পায়নি। তিনি তাকে ত্রাণকর্তা বলেন যে, যীশু খ্রিষ্ট তাকে মুক্ত করেছেন। যীশু খ্রীষ্ট কি আমাদের মুক্ত করেছেন? অবশ্যই তিনি করেছেন! “অতএব আমি আপন মন দিয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করি, কিন্তু মাংস দিয়া পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করি।”
যারা ঈশ্বরের ব্যবস্থার দাসত্ব করে তাদের পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে। তাহলে তারা কি মাংসের দাসত্ব করে? তারা তাদের মাংস দিয়ে পাপ ব্যবস্থার দাসত্ব করে। মাংস পাপ করতে ভালবাসে কারণ ইহা মোটেও পরিবর্তিত হয় নাই। মাংস মাংসের বিষয় ভাবে এবং আত্মা আত্মার বিষয় ভাবে। অতএব, যাদের পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে তারা পারে এবং প্রভুকে অনুসরণ করতে চায়। কারণ পবিত্র আত্মা তাদের ভিতরে বাস করে। কিন্তু যাদের পাপ তুলে নেওয়া হয় নাই তারা তাদের মন এবং মাংস দ্বারা পাপ ছাড়া কিছু করতে পারে না। যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত যাদের পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে তাদের মাংস যদিও পাপ অনুসরণ করে, তথাপি তাদের মন ঈশ্বরের অনুসরণ করে।
 
 
যীশু খ্রীষ্টে জীবনের আত্মার ব্যবস্থা আমাদেরকে মৃত্যু এবং পাপ ব্যবস্থা থেকে মুক্ত করে
 
আসুন আমরা রোমীয় ৮:১ পদ ছাড়িয়ে যাই। যীশুর পরিত্রাণে বিশ্বাস করেযাদের পাপ চলে গিয়েছে, পাপী হয়েও জন্ম গ্রহণ করলেও, ঈশ্বরের ব্যবস্থার কোন দন্ডাজ্ঞা নাই। “অতএব এখন, যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই। কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে জীবনের আত্মার যে ব্যবস্থা, তাহা আমাকে পাপের ও মৃত্যুর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত করিয়াছেন” (রোমীয় ৮:১-২)।
অতএব এখন যারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নাই। কোন দন্ডজ্ঞা নাই! যারা নূতন জন্ম প্রাপ্ত হয়েছে তাদের কোন পাপ নাই এবং তাদের প্রতি কোন বিচার নাই। তাদের হৃদয়ে কোন পাপ নাই, কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে জীবনের আত্মার ব্যবস্থা তাদেরকে মৃত্যু এবং পাপ ব্যবস্থা থেকে মুক্ত করেছে। আমাদের প্রভু হচ্ছেন জীবনরে উৎস। পবিত্র আত্মা গ্রহণ করে তিনি ঈশ্বরের মেষশাবক হয়েছেন এবং যোহনের দ্বারা যর্দ্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হয়ে আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর নিজের উপরে তুলে নিলেন। আমাদের স্থলে বিচারিত হয়ে তিনি আমাদের জন্য ক্রুশারোপিত হলেন। এর দ্বারা তিনি সম্পূর্ণ ভাবে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিলেন।
তাহলে কি আমাদের পাপের কারণে আমাদের আবার মরতে হবে? আমাদের কি কোন কিছু বিচারিত হওয়ার আছে? যদি আমাদের পাপ সকল যীশুতে চলে যায় তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা, তাহলে আমদের মধ্যে কি আর পাপ আছে? অবশ্যই না। আমাদের বিচারিত হতে হবে না, কারণ প্রভু আমাদের জন্য যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নিয়েছেন, আমাদের স্থলে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন এবং আমাদের সমস্ত পাপীদের মুক্ত করতে তৃতীয় দিবসে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছেন।
ঈশ্বরের পরিত্রাণ আমাদেরকে তাঁর বিচার থেকে মুক্ত করেছেন যেখানে ব্যবস্থার কোপ ছিল। “কেননা যীশু খ্রীষ্টেতে জীবন ও আত্মার যে ব্যবস্থা তাহা আমাকে পাপ ও মৃত্যুর ব্যবস্থা থেকে মুক্ত করেছেন।” যাদের পাপ আছে, ঈশ্বরের ক্রোধ তাদের প্রকাশ করেছে। ঈশ্বর তাদের নরকে পাঠান। কিন্তু প্রভু আমাদের হৃদয় থেকে পাপ তুলে নিয়ে আমাদের মৃত্যু ও পাপ ব্যবস্থা থেকে মুক্ত করেছেন। যারা যীশুতে আছে, তারা বিশ্বাসের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্ত হন আপনার পাপ কি তুলে নেওয়া হয়েছে?
“কারণ ব্যবস্থার মাংস দ্বারা দূর্ব্বল হওয়াতে যাহা করিতে পারে নাই, ঈশ্বর তাহা করিয়াছেন, নিজ পুত্রকে পাপময় মাংসের সাদৃশ্যে এবং পাপার্থক বলিরূপে পাঠাইয়া দিয়া মাংসে পাপের দন্ডজ্ঞা করিয়াছেন, যেন আমরা যাহারা মাংসের বশে নয়, কিন্তু আত্মার বশে চলিতেছি, ব্যবস্থার ধৰ্ম্মবিধি সেই আমাদিগেতে সিদ্ধ হয়” (রোমীয় ৮:৩-৪)।
আমাদের প্রভু এখানে স্পষ্ট বলেছেন যে, মাংস দুর্বল এবং ব্যবস্থার ধার্মিকতা পালন করতে পারেনা। ঈশ্বরের ব্যবস্থা সত্যিই ভাল এবং সুন্দর কিন্তু এতে জীবন যাপন করি না, কারণ আমাদের মাংস খুব দুর্বল। ঈশ্বরের ব্যবস্থা আমাদেরকে যথাযথ হতে শিক্ষা দেয়। এটা আমাদেরকে ঈশ্বরের ব্যবস্থার সম্পূর্ন বাধ্য থাকতে নির্দেশ দেয়, কিন্তু আমাদের মাংসের দুর্বলতার কারনে আমরা ব্যবস্থানুযায়ী জীবন-যাপন করতে পারি না। এ জন্য ব্যবস্থা আমাদের উপরে কোপ আনায়ন করে। আমরা সবাই যদি বিচারিত হই, তাহলে যীশু কিসের জন্য আছেন?
ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুত্রকে আমাদের মুক্তির জন্য পাঠিয়েছেন। আমাদের পাপের কারনে ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুত্রকে পাপময় মাংসের বেশে পাঠিয়ে আমাদেরকে তাঁর ধার্মিকতা দিয়েছেন। যীশুকে এই পৃথিবীতে মাংসের সাদৃশ্যে পাঠানো হয়েছিল। “তিনি মাংসে পাপের দন্ডাজ্ঞা করিয়াছেন।” ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ যীশুতে অর্পন করেছিলেন যেন, আমাদের মধ্যে ব্যবস্থার ধার্মিকতা পূর্ন হয়, যারা মাংসের বসে না চলে কিন্তু আত্মার বশে চলে। আমাদের হৃদয় দিয়ে যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের কারনে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে। যখন আমরা বিশ্বাস করি যীশু খ্রীষ্ট আমাদের জন্য কি করেছেন, তখন আমাদের পাপ সব মুছে যায়।
 
 
যারা আত্মার বশে চলে এবং যারা মাংসের বশে চলে
 
 দুই প্রকারের খ্রীষ্টিয়ান আছেঃ যারা তাদের নিজস্ব চিন্তা ধারা অনুসরণ করে এবং যারা সত্যের বাক্য অনুসরণ করে। যেখানে প্রথমে উল্লেখিত শাস্তি পাবে, সেখানে তার উল্লেকিতরা পরিত্রাণ পাবে এবং ধার্মিক হবে।
“কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে, কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে। কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি” (রোমীয় ৮:৫-৬)। যারা ভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা হচ্ছে ব্যবস্থার অধীনে জীবন-যাপন করা তারা কখনই শুদ্ধ হতে পারে না। “যারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে।”
মাংসের দ্বারা শুধু বাহ্যিক দিকটা পরিষ্কার করা যায়। যারা এরূপ, বাইবেলের মতে তারা ধুলিমাত্র, তারা বাড়ীতে স্ত্রীর সাথে অশান্তি করে এবং কলহে লিপ্ত হয়, কিন্তু প্রতি রবিবার তারা স্বর্গ দূতের ন্যায় পবিত্র সেজে মন্ডলীতে যায়। 
“ওহে আপনি কেমন ছিলেন? ” 
“আপনার সাথে আবার দেখা হয়ে ভাল লাগছে”
পুরোহিত যখন পবিত্র ভাষায় ক্ষমার বাণী প্রচার করেন, তখন তারা অনেকবার ‘‘আমেন”বলে। আরাধনার পরে তারা শান্তভাবে গির্জা থেকে বের হয়ে আসে, কিন্তু যত শীঘ্র গির্জা ঘর তাদের দৃষ্টির আড়াল হয়, তত শীঘ্র তারা পরিবর্তিত হয়ে যায়।।
“ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কি বলেছে ? আমি মনে করতে পারছি না; চল একটু পান করে আসি?”
গির্জার ভিতরে তারা স্বর্গ দূতের ন্যায় কিন্তু গির্জার বাইরে এমন সময় নাই যে, তারা রক্ত মাংসে কামজ থাকে না।
অতএব পাপীদের অবশ্যই ঈশ্বরের নিকটে এভাবে প্রার্থনা করতে হবে: “ঈশ্বর অনুগ্রহ পূর্বক আমাকে, একজন হতভাগ্যকে রক্ষা কর। যদি তুমি আমাকে রক্ষা না কর, তাহলে আমি স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারব না, আমি নরকে যাব। কিন্তু তুমি যদি আমার পাপ ধুয়ে দাও, যা আমি মৃত্যু পর্যন্ত করতাম, তাহলে আমি বিশ্বাসের দ্বারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারি।” তাদের অবশ্যই সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করতে হবে।
প্রত্যেক বিশ্বাসী যখন সে (পুং/স্ত্রী) ঈশ্বরের বাক্য অনুসরন করে, সে আত্মিক জীবন-যাপন করে এবং পাপ মোচন লাভ করতে পারে। “কিন্তু যারা আত্মার বশে চলে (মনকে আত্মার উপরে স্থাপন করতে পারে), তারা আত্মিক বিষয় ভাবে, কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মর ভাব জীবন ওশান্তি।” যদি আমরা ঈশ্বরের সত্যে বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের মধ্যে শান্তি আসবে। “কেননা মাংসের ভাব ঈশ্বরের প্রতি শত্রুতা, কারণ তাহা ঈশ্বরের ব্যবস্থার বশীভূত হয় না, বাস্তবিক হইতে পারে না। আর যাহারা মাংসের অধীনে থাকে তাহারা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করিতে পারে না” (রোমীয় ৮:৭-৮)। যাদের পাপ এখনো তুলে নেওয়া হয় নাই এবং যারা এখনো মাংসে আছে, কখনোই ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করতে পারে না।
“কিন্তু তোমরা মাংসের অধীনে নও, আত্মার অধীনে রহিয়াছ, যদি বাস্তবিক ঈশ্বরের আত্মা তোমাদিগেতে বাস করেন। কিন্তু খ্রীষ্টের আত্মা যাহার নাই, সে খ্রীষ্টের নয়” (রোমীয় ৮:৯)। লোকে এই অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিভ্রান্ত হবে। কারণ পৌল গভিরভাবে আত্মিক কথা বলেছেন। যাদের নূতন জন্ম হয়নি, তাদের কাছে রোমীয় ৭ এবং ৮ অধ্যায় অস্পষ্ট। তারা বাইবেলের এই অংশ কখনই বঝে না। কিন্তু আমরা নূতন জন্ম প্রাপ্তরা মাংসে নই এবং শুধু মাংসের জন্য জীবন যাপন করি না।
উপরের অনুচ্ছেদে পৌল কি বলেছেন সেটা গুরুত্ব সহকারে পড়ুন। পবিত্র আত্মা কি আপনার মধ্যে বাস করে? যদি কার মধ্যে খ্রীষ্টের আত্মা না থাকে, তাহলে সে তাঁহার নয়। যদি তাঁহার না হয়, তাহলে এর অর্থ হল সেই ব্যক্তি শয়তানের এবং পাপী হিসাবে সে নরকগামী।
“আর যদি খ্রীষ্ট তোমাদিগেতে থাকেন, তবে দেহ পাপ প্রযুক্ত মৃত্যু বটে, কিন্তু আত্মা ধার্ম্মিকতা প্রযুক্ত জীবন। আর যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে যীশুকে উঠাইলেন, তাঁহার আত্মা যদি তোমাদিগেতে বাস করেন, তবে যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্ট যীশুকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাস কারি আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন” (রোমীয় ৮:১০-১১) আমেন।
আমাদের প্রভু পবিত্র আত্মা দ্বারা গর্ভধারণ হয়েছিলেন, মাংসের বেশে পৃথিবীতে পাঠান হয়েছিল এবং আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। প্রভু বিশ্বাসীর হৃদয়ে আসেন, যে পাপ মোচনে বিশ্বাস করে এবং তাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে বসেন। পবিত্র আত্মা হৃদয়ে আসে এবং প্রমাণ করে যে, আমাদের প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ ধুয়ে তুষারের ন্যায় শুভ্র করেছেন। যীশু যখন পুনরায় এই পৃথিবীতে আসবেন তখন ঈশ্বরও আমাদের দেহে জীবন প্রদান করবেন। “যিনি মৃতগণের মধ্য হইতে খ্রীষ্টকে উঠাইলেন, তিনি তোমাদের অন্তরে বাসকারী আপন আত্মা দ্বারা তোমাদের মর্ত্ত্য দেহকেও জীবিত করিবেন।”
 
 
পবিত্র আত্মা আমাদের আত্মার সহিত সাক্ষ্য দিতেছেন যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান
 
 নূতন জন্মের পরে আমাদের অবশ্যই পবিত্র আত্মা এবং ঈশ্বরের বিশ্বাসের দ্বারা জীবন-যাপন করতে হবে। “অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, আমরা ঋণী, কিন্তু মাংসের কাছে নয় যে, মাংসের বশে জীবন-যাপন করিব। কারণ যদি মাংসের বশে জীবন-যাপন কর, তবে তোমরা নিশ্চয় মরিবে, কিন্তু যদি আত্মাতে দেহের ক্রিয়া সকল মৃত্যুসাৎ কর, তবে জীবিত থাকিবে। কেননা যত লোক ঈশ্বরের আত্মা দ্বারা চালিত হয়, তাহারাই ঈশ্বরের পুত্র। বস্তুতঃ তোমরা দাসত্বের আত্মা পাও নাই যে, আবার ভয় করিবে; কিন্তু দত্তকপুত্রতার আত্মা পাইয়াছ, যে আত্মাতে আমরা আব্বা, পিতা, বলিয়া বলিয়া ডাকিয়া উঠি। আত্মা আপনিও আমাদের আত্মার সহিত সাক্ষ্য দিতেছেন যে,আমরা ঈশ্বরের সন্তান। আর যকন সন্তান, তখন দায়াদ, ঈশ্বরের দায়াদ ও খ্রীষ্টের সহদায়াদ-যদি বাস্তবিক আমরা তাঁহার সহিত দুঃখ- ভোগ করি, যেন তাঁহার সহিত প্রতাপান্বিতও হই” (রোমীয় ৮:১২- ১৭)। আমরা দাসত্বের আত্মা পাই নাই যে আবার ভয় করব। কিন্তু দত্তকপুত্রতার আত্মা পাইয়াছি যে আত্মাতে আমরা আব্বা, পিতা, বলে ডেকে উঠি।
 “আত্মা আপনিও আমাদের আত্মার সহিত সাক্ষ্য দিতেছেন যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান।” সর্বপ্রথম পবিত্র আত্মা সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, ঈশ্বরের মিশ্রিত বাক্যের মাধ্যমে আমরা পাপ থেকে নিমিত্ত পেয়েছি। দ্বিতীয় সাক্ষ্য হচ্ছে আমাদের কোন পাপ নেই। পবিত্র আত্মা সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, আমরা মুক্ত। পবিত্র আত্মা তাদের হৃদয়ে এইরূপ করে যাদের পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে। “ধার্ম্মিক কেহই নাই, একজনও নাই” (রোমীয় ৩:১০)। সত্য, কিন্তু এটা আমাদের ঈশ্বরের মুক্ত করার আগের কথা। নিচের অনুচ্ছেদে লেখা আছে যীশুর পাপ মোচনের মাধ্যমে তাঁর দয়ার দ্বারা আমরা বিনামূল্যে মুক্ত পতিপন্ন হয়েছি (রোমীয় ৩:২৪)। ইহাতে আরো লেখা আছে যে, আত্মা আপনিও সাক্ষ্য দিতেছেন যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান। আত্মা আমাদের কাছে আসে, যখন আমরা এটা হৃদয়ে ধারণ করি যে, ঈশ্বর আমাদের জন্য কাজ করেন। কিন্তু আমরা যদি বিশ্বাস না করি, তাহলে আমাদের মধ্যে কোথায়ও আত্মাকে পাওয়া যাবে না। ঈশ্বর আমাদের জন্য আমাদের হৃদয়ে যে কাজ করেন তা যদি আমরা গ্রহণ করি, আত্মা সাক্ষ্য দেয়, “তোমরা ধার্ম্মিক। তোমরা আমরা সন্তান। শুধু তোমরা। তোমরা আমার লোক।” “আর যখন সন্তান তখন দায়াদ, ঈশ্বরের দায়াদ ও খ্রীষ্টের সহদায়াদ- যদি বাস্তবিক আমরা তাঁহার সহিত দুঃখ-ভোগ করি, যেন তাঁহার সহিত প্রতাপান্বিতও হই।” এটা সম্পূর্ণভাবে সম্ভব ঈশ্বরের সন্তানদের পক্ষে, তাঁর সাথে যেমনি দুঃখ-ভোগ তেমনি প্রতাপান্বিতও হওয়া। যারা পবিত্র আত্মার পেয়েছে, আত্মা দ্বারা চালিত হয়, তারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশের আকাঙ্মা করে।
 
 
বর্তমান সময়ের কষ্ট ভোগ সত্ত্বে ও আমরা সহসাব্দের রাজত্ব এবং স্বর্গ-রাজ্যের প্রত্যাশা করি
 
আসন রোমীয় ৮:১৮-২৫ পদ পড়ি। “অব্রাহাম প্রত্যাশা না থাকিলেও প্রত্যাশা যুক্ত হইয়া বিশ্বাস করিলেন, যেন ‘এইরূপ তোমার বংশ হইবে,’ এই বচন অনুসারে তিনি বহু জাতি পিতা হন। আর বিশ্বাসে দুর্ব্বল না হইয়া, তাঁহার বয়স প্রায় শত বৎসর হইলেও তিনি আপনার মৃতকল্পতাও টের পাইলেন বটে, তথাপি ঈশ্বরের পতিজ্ঞার প্রতি লক্ষ্য করিয়া অবিশ্বাস বশতঃ সন্দেহ করিলেন না; কিন্তু বিশ্বাসে বলবান হইলেন, ঈশ্বরের গৌরব করিলেন, এবং নিশ্চয় জানিলেন, ঈশ্বর যা প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, তাহা সফল করিতে সমর্থও আছেন। আর এই কারণ তাঁহার পক্ষে উহা ধার্ম্মিকতা বলিয়া গণিত হইল। তাঁহার পক্ষে গণিত হইল, ইহা যে কেবল তাঁহার জন্য লিখিত হইয়াছে, এমন নয়, কিন্তু আমাদেরও জন্য; আমাদের পক্ষে গণিত হইবে, কেননা যিনি আমাদের প্রভু যীশুকে মৃতগণের মধ্য হইতে উত্থাপন করিয়াছেন, আমরা তাঁহার উপরে বিশ্বাস করিতেছি। সেই যীশু আমাদের অপরাধের নিমিত্ত সমর্পিত হইলেন, এবং আমাদের ধাৰ্ম্মিকগণনার নিমিত্ত উত্থাপিত হইলেন।”
 আমরা হচ্ছি আত্মার প্রথম ফল। আমরা যারা নূতন জন্ম পেয়েছি, তারা পুনরুত্থানের প্রথম ফল। আমরা প্রথম পুনরুত্থানে অংশ গ্রহন করব। যীশু খ্রীষ্ট পুনরুত্থানের প্রথম ফল এবং আমরাও যারা তাঁর সাথে সম্পৃক্ত। যারা পুনরুত্থানে অংশ নিবে তারা খ্রীষ্টের, যখন শেষ কাল আসবে। ঈশ্বর বিহীনরা দ্বিতীয় পুনরুত্থনে অংশ নিবে, বিচারিত হবার জন্য। এই জন্য পৌল বলেন, “কারন আমার মিমাংশা এই, আমাদের প্রতি যে প্রতাপ প্রকাশিত হইবে, তাহার সঙ্গে এই বর্তমান কালের দুঃখ ভোগ তুলনার যোগ্য নয়।” গৌরবের দ্বারা তিনি সহস্রাব্দ এবং স্বর্গ রাজ্যের নিরুপিত। যখন সেই আশীর্বাদযুক্ত সময় আসবে আমরা সবাই তখন বদলে যাব। ঈশ্বরের সন্তানেরাতখন সম্পূর্ন পুনরুত্থি হবে এবং প্রত্যেকে প্রভুর অনন্ত জীবন লাভ করবে। মাংস আসলেই মৃত্যু থেকে জীবিত হবে (আমাদের পুনরায় হৃদয় ইতিমধ্যে পুনরুত্থিত হয়েছে)। ঈশ্বর সব কিছু নূতন করবেন এবং ধার্মিকেরা সহস্র বছরের জন্য রাজার ন্যায় সুখে জীবন যাপন করবে। 
বিশ্বের সমস্ত সৃষ্টি ঈশ্বরের সন্তানদের শোভাযাত্রার জন্য আপেক্ষা করছে। সৃষ্টি যেমন পরিবর্তিত হয় তেমনি পরিবর্তিত হবে। প্রত্যাশিত সহস্রাব্দে আর কোন ব্যথা থাকবে না, কষ্ট এবং মৃত্যু থাকবে না। কিন্ত এখন আমরা আর্তনাদ করছি। কেন? কারন মাংস এখন ও দূর্বল। আমাদের আত্মা কিসের জন্য আর্তনাদ করে? তারা আমাদের দেহের মুক্তির জন্য আর্তনাদ করে।
 “কেবল তাহা নয় ; কিন্তু আত্মারূপ অগ্রিমাংশ পাইয়াছি যে আমরা, আমরা আপনারাও দত্তকপুত্রতা-আপন আপন দেহের মুক্তির-অপেক্ষা করিতে করিতে অন্তরে আর্ত্তস্বর করিতেছি। কেননা প্রত্যাশায় আমরা পরিত্রান প্রাপ্ত হইয়াছি; কিন্তু দৃষ্টিগোচর যে প্রত্যাশা, তাহা প্রত্যাশাই নয়। কেননা যে যাহা দেখে, সে তাহার প্রত্যাশা কেন করিবে? কিন্তু আমরা যাহা দেখিতে না পাই, তাহার প্রত্যাশা যদি করি, তবে ধৈৰ্য্য সহকারে তাহার অপেক্ষায় থাকি” (রোমীয় ৮:২৩-২৫)।
আমরা দত্তকপুত্রতার জন্য তীব্র প্রতিক্ষা করিতেছি, কারণ এই প্রত্যাশায় আমরা মুক্ত হই। আমাদের যাদের পাপ তুলে নেয়া হয়েছে তারা সহস্রাব্দ এবং স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করব। এমন কি পৃথিবী যদি হঠাৎ এর শেষ পর্যায়ে চলে আসলেও আমরা ধংস হব না। আমাদের প্রভু পৃথিবীর অন্তিম লগ্নে আবার আসবেন। তিনি সমস্ত জিনিস নূতন করবেন এবং ধার্মিকের নূতন দেহ পুনরুজীবিত হবে। তিনি সহস্র বছর ধরে তাদের নিয়ন্ত্রন করবেন।
 পৃথিবীর শেষ পাপীদের জন্য হতাশা, কিন্ত ধার্মিকদের জন্য নূতন প্রত্যাশা। পৌল এর জন্য প্রত্যাশা করতেন। আপনি কি আর্তনাদ করেন, এবং আপনার দেহের মুক্তির জন্য অপেক্ষা করছেন আত্মাও কি অপেক্ষা করছে? আমরা আত্মিক দেহতে রুপান্তরিত হব। যীশুর পুনরুত্থিত দেহের মত ব্যথাও থাকবে না দূর্বলতাও থাকবে না।
 
 
পবিত্র আত্মা ধার্মিকদেরকে বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করে
 
পবিত্র আত্মা আমাদিগকে বিশ্বাস রাখতে সাহায্য করে। আমরা যা দেখি তার জন্য কি আমরা প্রত্যাশিত? না, আমরা প্রত্যাশিত যা আমরা দেখিনাই। “আর সেইরূপে আত্মা ও আমাদের দুর্ব্বলতায় সাহায্য করেন; কেননা উচিত মতে কি প্রার্থনা করিতে হয়, তাহা আমরা জানি না, কিন্তু আত্মা আপনি অবক্তব্য আর্ত্তস্বর দ্বারা আমাদের পক্ষে অনুরোধ করেন। আর যিনি হৃদয় সকলের অনুসন্ধান করেন, তিনি জানেন, আত্মার ভাব কি, কারণ ইনি পবিত্রগনের পক্ষে ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারেই অনুরোধ করেন” (রোমীয় ৮:২৬-২৭)।
আত্মা আসলে আমাদের মধ্যে কি চান? তিনি আমাদের কি করতে সাহায্য করেন? আপনি কি জন্য প্রত্যাশিত? আমরা নূতন স্বর্গ এবং নূতন পৃথিবী স্বর্গ-রাজ্যের জন্য প্রত্যাশিত (২পিতর ৩:১৩)। আমরা আর এই ধংসের পৃথিবীতে থাকতে চাই নাই। আমরা ক্লান্ত, অতএব আমরা প্রভুর দিনের জন্য প্রত্যাশিত। আমরা অনন্ত জীবন-যাপন করতে চাই, কোন পাপ দূর্বলতা বা মন্দতার আত্মা দ্বারা নয়, আমরা সেখানে আনন্দে, শান্তিতে, ভালবাসা এবং প্রভু যীশু ও সকলের সাথে পূর্ণ অকৃত্রিম সহবাগিতায় থাকতে চাই।
 সুতরাং আত্মা আমাদের জন্য আর্তনাদ এবং মধ্যস্থতা করছে, অপেক্ষা করছে নূতন স্বর্গ এবং পৃথিবী। আমরা ধার্মিকেরা খোলাখুলিভাবে বলছি, এই পৃথিবীতে আমাদের কোন আনন্দ নেই, শুধু সম্ভবত কোন এক সময় আমাদের ঈশ্বরের দাসদের সাথে সকার খেলা ব্যতিত। আমরা পৃথিবীতে বাস করছি। কারণ আমরা সুসমাচার প্রচার জন্য অনুরাগী। কিন্তু এই মহা ক্ষমতার কারণে ধার্মিকদের এই পৃথিবীতে থাকার কোন কারণ নেই।
 
 
নূতন জন্ম প্রাপ্ত যারা তাঁকে ভালবাসে, ঈশ্বর তাদের পক্ষে সকলি মঙ্গলার্থে করেন
 
আসুন রোমীয় ৮:২৮-৩০ পদ পড়ি। “আর আমরা জানি, যাহারা ঈশ্বরকে প্রেম করে, যাহারা তাঁহার সঙ্কল্প অনুসারে আহূত, তাহাদের পক্ষে সকলই মঙ্গলার্থে একসঙ্গে কাৰ্য্য করিতেছে। কারণ তিনি যাহাদিগকে পূৰ্ব্বে জানিলেন, তাহাদিগকে আপন পুত্রের প্রতিমূর্ত্তির অনুরূপ হইবার জন্য পূর্ব্বে নিরূপণও করিলেন; যেন ইনি অনেক ভ্রাতার মধ্যে প্রথম জাত হন। আর তিনি যাহাদিগকে পূর্ব্বে নিরূপণ করিলেন, তাহাদিগকে আহবানও করিলেন; আরো যাহাদিগকে আহবান করিলেন, তাহাদিগকে ধার্ম্মিক গণিতও করিলেন; আর যাহাদিগকে ধাৰ্মিক গণিত করিলেন, তাহাদিগকে প্রতাপান্বিতও করিলেন।”
রোমীয় ৮:২৮ পদে পৌল বলেছেন, “আর আমরা জানি যাহারা ঈশ্বরকে প্রেম করে, যাহারা তাঁহার সঙ্কল্প অনুসারে আহূত, তাহাদের পক্ষে সকলই মঙ্গলার্থে একসঙ্গে কাৰ্য্য করিতেছে।”এই অনুচ্ছেদ খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেক মানুষ ভাবে, কেন আমি জন্মে ছিলাম? ঈশ্বরের উচিত ছিল যেখানে শয়তান নেই সেখানে আমাকে সৃষ্টি করা এবং তাঁর উচিৎ ছিল প্রথম থেকেই আমাকে স্বর্গরাজ্যে বসবাস করতে অনুমতি দেয়। কেন তিনি আমাকে এভাবে তৈরী করলেন? কিন্তু যারা খারাপ অবস্থার মধ্যে জন্মে, তারা এভাবে অসন্সোভরে বিড়বিড় করে, প্রথমে তাদের পিতামাতার বিরূদ্ধে এবং তার পরে ঈশ্বরের বিরূদ্ধে। “তুমি কেন আমাকে এই ভোগান্তিসহ জন্ম দিলে?”
এই আমাদের এই ধরণের প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সহায়তা করবে। আমরা ঈশ্বরের সৃষ্টিরূপে জন্মেছিলাম। এটা কি ঠিক? আমরা তাঁর সৃষ্টি। ঈশ্বর তাঁর নিজের সাদৃশ্যে এবং প্রতিমূর্তিতে আমাদের সৃষ্টি করেছেন, আমরা তাঁর সৃষ্টি। এই পৃথিবীতে আমাদেরকে রাখার ঈশ্বরের একটা উদ্দেশ্য আছে। শাস্ত্র এখানে বলছে, “আর আমরা জানি, যাহারা ঈশ্বরকে প্রেম করে, যাহারা তাঁহার সঙ্কল্প অনুসারে আহূত, তাহাদের পক্ষে সকলই মঙ্গলার্থে একসঙ্গে করিতেছে।” কারণ প্রথম পাপের কারণে যা উত্তরাধীকার সূত্রে আমাদের পূর্বপুরুষ আদম ও হবা থেকে এসেছে, যারা দিয়াবল দ্বারা প্রতারিত হয়েছিলেন, আমরা পাপী হয়ে জম্মগ্রহন করি এবং যন্ত্রণা ভোগ করি। কিন্তু ঈশ্বর যীশুকে পাঠিয়েছেন আমাদেরকে বিশ্বাসের মাধ্যমে তাঁর সন্তান তৈরী করতে। আমাদেরকে সৃষ্টির এটাই তাঁর উদ্দেশ্য। তিনি আমাদেরকে আরো দিবেন সুখ এবং ঈশ্বরের অনন্ত জীবন, সেই সাথে যীশু খ্রীষ্ট এবং পিতা ঈশ্বরের সহস্র বছরের রাজ্য এবং স্বর্গরাজ্য।
“আর আমরা জানি যাহারা ঈশ্বরকে প্রেম করে, যাহারা তাঁহার সঙ্কল্প অনুসারে আহূত তাহাদের পক্ষে মঙ্গলার্থে সকলি একসঙ্গে কার্য্য করিতেছে।” যখন আমাদের পাপ তুলে নেয়া হবে তখন ঈশ্বর আমাদের জন্য তাঁর ইচ্ছা সিদ্ধ করবেন। এটা কি ঠিক নয়? আমাদের কি সুখী হওয়া উচিত নয় যে, আমরা এই পৃথিবীতে জন্মেছি? যখন আমরা গৌরবের বিষয় ভাবি যে, আমরা ভবিষ্যতে উপভোগ করব, আমরা জন্ম নেয়ার জন্য সুখী না হয়ে পারি না। কিন্তু অধিকাংশ লোক সুখী নয়, এবং এর কারণ হল, তারা ঈশ্বরের ভালবাসাকে অগ্রাহ্য করেছে।
 আপনি কি জানেন কেন পাপ এবং রোগ, এবং কেন মন্দ লোকদের সব কিছু মনে হয় সুন্দরভাবে চলছে, যদিও তারা যা কিছু ভাল করার চেষ্টা করছে, মনে শুধু তা যন্ত্রনাভোগের? এর কারণ শুধু মাত্র যখন আমরা ভূগী, আমরা ঈশ্বরকে খুঁজি, আমরা তাঁর কাছে আসি এবং পাপের ক্ষমা গ্রহনের মধ্য দিয়ে তাঁর সন্তান হই। ঈশ্বর মন্দ লোকদের এই পৃথিবীতে সকলই মঙ্গলার্থে একসঙ্গে করার জন্য থাকতে দেন, যারা তাঁকে ভালবাসে।
এভাবে ভাববেন না: “ঈশ্বর কেন আমাকে এভাবে তৈরী করলেন, আমি জানিনা। কেন ঈশ্বর আমাকে এমন দরিদ্র এবং কষ্টের পরিবারে জন্ম নিতে দিলেন?” ঈশ্বর আমাদেরকে শয়তান এবং ব্যবস্থার জগতে জন্ম নিতে দেন, আমাদেরকে তাঁর সন্তান তৈরী করতে এবং রাজার ন্যায় প্রভুর সাথে স্বর্গরাজ্যে বাস করতে। সবকিছু মঙ্গলার্থে এক সঙ্গে কাৰ্য্য করে এবং ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর সন্তান তৈরী করেন। এইভাবে আমাদেরকে তৈরী করাই ঈশ্বরের উদ্দেশ্য। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে আমাদের কোন অসন্তোস বা অভিযোগ নেই। “কেন আমি এরূপ সৃষ্টি হয়েছিলাম? কেন আমি এই পথে?” ঈশ্বরের সদ্ইচ্ছা এই কঠিনতার মধ্যে সিদ্ধ হবে।
আপনার ভোগান্তির জন্য অভিযোগ করবেন না। এই ধরনের হতাশাপূর্ণ গান আপনি আপনার জীবনে আর গাইবেন না। “আর যেমন মনুষ্যের নিমিত্ত এক বার মৃত্যু, তৎপরে বিচার নিরূপিত আছে” (ইব্রীয় ৯:২৭)। এক জনের জন্ম এবং বিচার, এই দুইয়ের মধ্যে ঈশ্বরের পরিত্রাণের অনুগ্রহ রয়েছে। আমরা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস করি, ঈশ্বরের অনুগ্রহে আমার সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া হয়েছে এবং আমরা অনন্তকাল বরের এবং স্বর্গ-রাজ্যে রাজত্ব করব। আমাদের ডাকা হবে “সমস্ত সৃষ্টির প্রভু।” আপনি কি এখন বুঝতে পারছেন, ঈশ্বর কেন আপনাকে যন্ত্রনাভোগী সৃষ্টি করেছেন? তিনি আমাদেরকে যন্ত্রনা এবং কষ্ট দিয়েছেন আমাদেরকে ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে তাঁর আর্শীবাদ পেতে ও সন্তান হতে।
 
 
ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর পুত্রের প্রতিমূৰ্ত্তির হইবার জন্য পূর্বে পূর্বে নিরূপণ করিয়াছিলেন
 
পাপের মুক্তি লাভ করতে, ঈশ্বরের বিচার থেকে মুক্তি পেতে এবং ধার্মিক হতে আমাদের সময় লাগবে না। আমরা এখন এবং চিরদিনের জন্য ধার্মিক তৈরী হয়েছি এবং আমরা তরায় বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর সন্তান হতে পারি। ঈশ্বরের পরিত্রাণ দীর্ঘকাল ধরে আমাদের নিজস্ব সন্তুষ্টির কল নয়। ঈশ্বর আমাদের চিরদিনের জন্য মুক্ত করেছেন এবং আমাদেরকে অবিলম্বে ধার্মিক করেছেন।
 “কারণ তিনি যাহাদিগকে পূৰ্ব্বে জানিলেন, তাহাদিগকে আপন পুত্রের প্রতিমূর্ত্তির অনুরূপ হইবার জন্য পূর্ব্বে নিরূপণও করিলেন; যেন ইনি অনেক ভ্রাতার মধ্যে প্রথম জাত হন। আর তিনি যাহাদিগকে পূর্ব্বে নিরূপণ করিলেন, তাহাদিগকে আহবানও করিলেন; আরা যাহাদিগকে আহবান করিলেন, তাহাদিগকে ধার্ম্মিক গণিতও করিলেন; আর যাহাদিগকে ধার্ম্মিক গণিত করিলেন, তাহাদিগকে প্রতাপান্বিতও করিলেন” (রোমীয় ৮:২৯-৩০)।
 অনেক লোক “ক্যালভিনের পাঁচটি মতবাদ” এই অনুচ্ছেদে উপর নির্ভর করে চলে। কিন্তু তারা ভূল করে। এখানে পৌল বলেন, “কারণ তিনি যাহাদিগকে পূর্ব্বে জানিলেন, তাহাদিগকে আপন পুত্রের প্রতিমূর্ত্তির অনরূপ হইবার জন্য পূর্ব্বে নিরূপণও করিলেন।” ঈশ্বর যীশুতে আমাদেরকে তাঁর সন্তান হইতে নিরূপণ করিয়াছে এই পরিকল্পনার ঈশ্বর আমাদেরকে এই পৃথিবীতে জন্ম নিরূপিত করেছেন। তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। কার প্রতিমূর্তির অনুরূপ? ঈশ্বরের আপন পুত্রের প্রতিমূর্ত্তির অনুরূপ।
ঈশ্বর আমাদেকে জন্ম নিতে এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমাদেরকে তাঁর সন্তান এবং দত্তকপুত্রতার অধীকার দিয়েছেন, তাঁর মঙ্গল সঙ্কল্প অনুসারে। তিনি তাঁর সন্তানকে পাঠাতে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, আমাদেরকে তাঁর সন্তান তৈরী করার জন্য যারা তাঁর প্রত্রের প্রতি মুক্তির অনুরূপ। ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আমাদেরকে আহবান করলেন যখন আমরা আদমের বংশধর হিসাবে পাপী ছিলাম। “হে পশ্রিান্ত ও ভরাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব” (মথি ১১:২৮)। আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার পরে তিনি আমাদেরকে আহবান করেছেন, তিনি বিশ্বাসে ধার্মিক হওয়ার জন্য আমাদেরকে ডেকেছেন।
 
 
ঈশ্বর আমাদিগকে ধার্মিক গণিত এবং গৌরাবান্বিত করেছেন
 
ঈশ্বর পাপীদের আহবান করেছেন, এবং তাদেরকে পূর্ব থেকে চিরকালের জন্য ধর্মিক গণিত করেছেন। যীশুকে আমাদের পরিত্রাণ কার্তা হিসাবে বিশ্বাসের দ্বারা আমরা পূর্বের এবং চিরকালের জন্য ধার্মিক গণিত হয়েছি। বিশ্রামে পবিত্র পবিত্র হয় নাই, যেরূপ ব্যবস্থা বেক্তারা করে। ঈশ্বর পাপীদের আহবান করেন এবং তাদেরকে ধার্মিক গণিত করেন-কেন তিনি পাপীদের আহবান করেন এটাই তার কারণ।
“আর যাহাদিগকে আহবান করিলেন, তাহাদিগকে ও ধার্মিক গনিত করিলেন।” যারা ঈশ্বর কর্ত্তৃক আহবানকৃত হয় এবং যারা বিশ্বাস করে যীশু ধার্মিকতার জন্য কি করেছেন। আদমের বংশধর হিসাবে সত্যিই পূর্বে আমাদের পাপ ছিল কিন্তু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়া হয় যখন আমরা এই সত্য বিশ্বাস করি যে, যীশু বাস্তবিক সে সমস্ত তুলে নিয়েছেন। তাহলে আপনার পাপ আছে কি নাই? অবশ্যই নাই। আমাদের মধ্যে আর কোন কিছু অবশিষ্ট নাই। “তিনি যাহাদিগকে আহবান করিলেন তাহাদিগকে ধার্মিক গণিতও করিলেন।”
তারাই ধার্মিক যারা ঈশ্বরের সন্তান হয়। এটা সত্য নয় যে, আমরা ধাপে ধাপে তাঁর সন্তান হই। উপরোন্ত আমরা তাঁর পাপ মোচনের দ্বারা তাৎক্ষণিক ভাবে ঈশ্বরের সন্তানরূপে গৌরাবান্বিত হই।
“আর যাহাদিগকে ধার্মিক গনিত করিলেন, তাহাদিগকে প্রতাপান্বিতও করিলেন।” ঈশ্বর আমদেরকে তাঁর সন্তান করেছেন। আমি বুঝতে পারি না কেন এত খ্রীষ্টিয়ানরা তথাকথিত “পরিত্রাণে, পাঁচটি ধাপ” বিশ্বাস করে। পরিত্রাণ এবং ঈশ্বরের সন্তান হওয়া পূর্বের এবং চিরকালের জন্য করা হয়েছে। আমাদের দেহের পুনরুত্থানের জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন, আর তার জন্য আমাদের যীশুর দ্বিতীয় আগমনের অপেক্ষা করতে হবে, কিন্তু পাপ পরিত্যাগ হয়েছে মুহুর্তের মধ্যে, চোখের পলকে। যখন আমরা আমাদের পাপের পরিত্রাণের জন্য তাঁর বাক্যে সাড়া দেই, যা ঈশ্বর, আমাদের আহবানকারী, আমাদের জন্য উৎসর্গ করেছেন এবং গণনা করি যে, তিনি আমাদের মুক্তর জন্য কি করেছেন, তখন আমরা ত্বরায় পাপ মুক্ত হতে পারি।“প্রভু তুমি ধন্য। হাল্লিলূয়া! আমেন! আমি মুক্ত কারণ তুমি আমাকে মুক্ত করিয়াছ। আমার কোনদিন পাপ মোচন হত না, যদি তুমি আমার সমস্ত পাপ ধুয়ে না দিতে। ধন্য আমার প্রভু! হাল্লিলূয়া।” এই ভাবে আমাদের পাপগুল মুছে যায়।
পাপ মোচন না আমাদের কর্ম অনুসন্ধান করে, না আমাদের সময় অনুসন্ধান করে। আমাদের পাপ মোচনে আমাদের কাজের কোন ভূমিকা নেই, এমন কি ০.১% ও নেই। ক্যালভিন অনুসারীরা বলে যে, কাউকে ধাপে ধাপে ধার্মিক হয়ে পাপ মোচন লাভ করতে হয়; এবং স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশ করতে হয়। ঠিক যেমন একটি কেঁচো যতই চেষ্টা করুক না কেন, এক সেকেন্ডে ১০০ মাইল দৌঁড়াতে পারে না, মানুষও তেমননি তাদের নিজস্ব ইচ্ছায় ধার্মিক হতে পারে না, তারা কত ভাল অথবা ব্যবস্থা পালন করতে কতটুক চেষ্টা করে সেদিকে না তাকিয়েই। যতই নিজেকে ধৌত করুক এবং দামী কসমেটিক দ্বারা নিজেকে আবৃত করুক, কেঁচো কেঁচোই থাকে। এইরকম যতক্ষণ পাপীর হৃদয়ে পাপ থাকে, যত ভাল মনে হোক না কেন; সেটা কোন ব্যপার নয় কিন্তু সে খাঁটি পাপীই রয়ে যায়।
একজন পাপী কিভাবে ধাপে ধাপে পবিত্র হয়ে সম্পূর্ণ ধার্মিক হতে পারে? সময়ের ব্যবধানে মাংস কি ভাল হয়ে যেতে থাকে? না, মাংসের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ঈশ্বর বিহীন এবং মন্দ হতে থাকে। কিন্তু বাইবেল বলে, “আর তিনি যাহাদিগকে পূর্বে নিরূপন করিলেন, তাহাদিগকে আহবানও করিলেন। আর যাহাদিগকে আহবান করিলেন, তাহাদিগকে ধার্মিকত গণিতও করিলেন, আর যাহাদিগকে ধার্মিক গণিত করিলেন, তাহাদিগেকে প্রতাপান্বিতও করিলেন।” ঈশ্বরের অনুগ্রহে তাৎক্ষণিকভাবে কি হয়, তাহা এই অনুচ্ছেদে একটি সারিতে সারিবদ্ধভাবে সাজান হয়েছে; এটা বলা হয়নি যে, পাপ মোচনের ধার্মিকতা ধাপে ধাপে সাধিত হয়। মানুষ প্রভুতে বিশ্বাসের দ্বারা পূর্বের এবং অনন্তকালের জন্য ধার্মিক গণিত হতে পারে, কিন্তু বিনা শ্রমে নয়।
 অনেক ধর্মতত্ত্ববিদরা নিজেরা কি করছে সেটা না জেনে, অযৌক্তিক তত্ত্ব পরিবেশন করে এবং লোকদের নরকে পাঠায়। ঈশ্বর আমাদেরকে পাপ মোচনের প্রতিজ্ঞা করেছেন। যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে আহবান করেছেন, আমাদের ধার্মিক করেছেন এবং যারা তাঁর আহবানে তাঁর সম্মুখে আসে, তাদের গৌরবান্বিত করেন। “কিন্তু যত লোক তাঁহাকে গ্রহণ করিল, সেই সকলকে, যাহারা তাঁহার নামে বিশ্বাস করে তাহাদিগকে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান হইবার ক্ষমতা দিলেন” (যোহন ১:১২)। ঈশ্বর কি আমাদের গৌরবান্বিত করেন? অবশ্যই! আমরা কি ভাল কাজ ও চেষ্টার দ্বারা গৌরবান্বিত হতে পারতাম? ধার্মিক হওয়ার জন্য কি আমরা কঠিনতর চেষ্টা করি? অবশ্যই না! আমরা ইতিমধ্যে ধার্মিক গণিত হয়েছি।
 
 
কেউ ঈশ্বরের প্রেম থেকে আমাদের পৃথক করতে পারে না 
 
যদি ঈশ্বর আমাদের পক্ষে থাকেন, তাহলে কে আমাদের বিপক্ষে থাকতে পারে? কেউনা। “এই সকল ধরিয়া আমরা কি বলিব? ঈশ্বর যখন আমাদের সপক্ষ, তখন আমাদের বিপক্ষ কে? যিনি নিজ পুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না, কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাঁহাকে সমর্পণ করিলেন, তিনি কি তাঁহার সহিত সমস্তই আমাদিগকে অনুগ্রহপূর্বক দান করিবেন না? ঈশ্বরের মনোনীতদের বিপক্ষে কে অভিযোগ করিবে? ঈশ্বর ত তাহাদিগকে ধার্ম্মিক করেন; কে দোষী করিবে? খ্রীষ্ট যীশু ত মরিলেন, বরং উত্থাপিতও হইলেন; আর তিনিই ঈশ্বরের দক্ষিণে আছেন, আবার আমাদের পক্ষে অনুরোধ করিতেছেন। খ্রীষ্টের প্রেম হইতে কে আমাদিগকে পৃথক করিবে? কি ক্লেশ? কি সঙ্কট? কি তাড়না? কি দুভিক্ষ? কি উলঙ্গতা? কি প্রাণ-সংশয়? কি খড়গ? যেমন লেখা আছে,
“তোমাদের জন্য আমরা সমস্ত দিন
নিহত হইতেছি
আমরা বধ্য মেষের ন্যায় গণিত
হইলাম।”
 কিন্তু যিনি আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন, তাঁহারই দ্বারা আমরা এই সকল বিষয়ে বিজয়ী অপেক্ষাও অধিক বিজয়ী হই। কেননা আমি নিশ্চয় জানি, কি মৃত্যু, কি জীবন, কি দূতগণ, কি আধিপত্য সকল, কি উপস্থিত বিষয় সকল, কি ভাবী বিষয় সকল, কি পরাক্রম সকল, কি উৰ্দ্ধ স্থান, কি গভীর স্থান, কি অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু, কিছুই আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অবস্থিত ঈশ্বরের প্রেম হইতে আমাদিগকে পৃথক করিতে পারিবে না” (রোমীয় ৮:৩১-৩৯)।
ঈশ্বরের প্রেম হইতে আমাদের পৃথক করতে পারে না। কেউ আমাদের পুনরায় ধার্মিক, পাপী তৈরী করতে পারে না। কেউ তাদের থামাতে পারে না, যারা ঈশ্বরের সন্তান হয়েছে এবং যারা সহস্রবর্ষের রাজত্বে এবং স্বর্গ-রাজ্যে বাস করে। কঠোর মানসিক যন্ত্রনা কি আমাদের পাপী তৈরী করতে পারে? নিদারূণ বেদনা কি আমাদের পাপী তৈরী করতে পারে? কি দূর্ভিক্ষ, উলঙ্গতা, সংকট, এবং খড়গ আমাদিগকে পুনরায় পাপী তৈরী করতে পারে? “যিনি নিজ পুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না, কিন্তু আমাদের সকলের নিমিত্ত তাঁহাকে সমর্পণ করিলেন, তিনি কি তাঁহার সহিত সমস্তই আমাদিগকে অনুগ্রহ পূর্বক দান করিবেন না?” ঈশ্বর আমাদিগকে স্বর্গরাজ্য দিয়েছেন। তিনি সমস্ত কিছুই আমাদিগকে অনুগ্রহপূর্বক দান করিয়াছে, কারণ তিনি আমাদের মুক্ত করতে তাঁর একজাত পুত্রের প্রতি মমতা করিলেন না। ঈশ্বর যখন সমস্ত কিছু দান করার মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য এত বড় ত্যাগ স্বীকার করলেন, তাহলে কেন তিনি আমাদেরকে তাঁর সন্তান করবেন না?
 
 
আমাদের জন্য ঈশ্বর-দেয় প্রায়শ্চিত্ত ...
 
ঈশ্বর বলেন যে, আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত হতে হলে, প্রথমতঃ আমাদের স্বীকার করতে হবে যে পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছায় যীশু খ্রীষ্টকে মাংসের বেশে পাঠান হয়েছিল। দ্বিতীয়তঃ আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্মের মাধ্যমে যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। তৃতীয়তঃ আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে, যীশু আমাদের জন্য ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন এবং পরিশেষে, তিনি পুনরুত্থিত হয়েছেন। আমরা যদি উপরে উল্লিখিত যে কোন একটি বিষয় বিশ্বাস না করি, আমরা মুক্ত হতে পারি না।
যারা বিশ্বাস করে না যে, যীশু ঈশ্বরের পুত্র এবং তিনিই ঈশ্বর এবং সৃষ্টিকর্ত্তা, তাদেরকে ঈশ্বরের পরিত্রাণ থেকে বাদ দেয়া হবে। যদি কোন ব্যক্তি যীশুকে স্বর্গীয় বলে স্বীকার না করে, তবে সে শয়তানের সন্তান। যীশু যখন যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা বাপ্তাইজিত হন, তখনই যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, এই ঘটনা যে না মানে, সে পরিত্রাণ পাবে না। যীশু তাদের ত্রাণকর্ত্তা হতে পারেন না। যদিও তারা তাদের চিন্তাভাবনায় যীশুতে বিশ্বাস করে, তথাপি তারা হৃদয়ে রক্ষা পাবে না। যদিও তারা যীশুকে জানে, তারা নরকে যাবে। যীশু আমাদের স্থলে মৃত্যু বরণ করেছেন, কারণ তিনি বাপ্তিস্মের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। যীশু আমাদের পাপের কারণে মরেছেন, তাঁর পাপের কারণে নয়। যারা বিশ্বাস করে এবং নিজেদেরকে পুনরুত্থিক করে, যীশু তাদের জন্য আবার পুনরুত্থিত হলেন।
 
 
আমরা তাঁর বাপ্তিস্মে বিশ্বাসের দ্বারা পরিত্রাণ পাই
 
 আমাকে ৮ অধ্যায়ের সাথে সঙ্গতি রেখে ৭ অধ্যায় প্রচার করতে হয়েছে। ৭ অধ্যায় বলে যে, যার পাপ আছে সে উত্তম কিছু করতে পারে না। কিন্তু ৮ অধ্যায় বলে, যারা খ্রীষ্টেতে আছে এবং বিশ্বাস করে যে, যীশু খ্রীষ্ট তাদের পাপহীন করেছেন, তাদের কোন দন্ডাজ্ঞা নেই। আমরা দূর্বল এবং ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী জীবন-যাপন করতে পারি না, তাই পিতা ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টকে আমাদের ত্রাণর্ত্তারূপে পাঠালেন এবং যখন আমরা পাপী ছিলাম, তাঁর বাপ্তিষ্মের দ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। আমরা আমাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছি এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ধার্মিক গণিত হয়েছি। ইহাই সত্য যা, পৌল ৭ অধ্যায় এবং ৮ অধ্যায়ের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছেন।
 “অতএব এখন যাহারা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে, তাহাদের প্রতি কোন দন্ডাজ্ঞা নেই। যাহারা মাংসের বশে চলে না, কিন্তু আত্মার বশে চলে।” আমাদের এখন কোন পাপ নেই। আপনি কি যীশুতে আছেন? যীশু আপনার জন্য আপনি যা কিছু করেছেন আপনি কি তা স্বীকার করেন? ঠিক যেভাবে পৌল তার পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন, যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত পাপও তেমনি তুলে নেওয়া হয়েছে। যীশু খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম, রক্ত এবং পুনরুত্থানে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করা হয়েছে। যদি কোন ব্যক্তি ঔদ্ধত্যের সাথে যীশুর বাপ্তিস্মের বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে এবং যদি কোন ব্যক্তি স্বনির্বন্ধভাবে বলে যে, যীশু নম্রতা দেখানোর জন্য বাপ্তিস্ম নিয়েছেন, ঈশ্বর সেই ব্যক্তিকে নরকে পাঠাবেন। ঈশ্বরের বাক্যের সম্মুখে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করবেন না। পৌল যখন নিজেই যীশুর বাপ্তিস্ম সম্পর্কে এত কিছু বলেছেন, সেখানে পুরোহিত এবং কাৰ্য্যকারীরা কিভাবে ইহা অগ্রাহ্য করে? অন্য যার হোক কিন্তু পৌলের বিশ্বাস তারা কিভাবে অগ্রাহ্য করে, যিনি বিশ্বাসের একজন অন্যতম মহৎ পিতা? কিভাবে তারা ঈশ্বরের, দাসের শিক্ষাকে অগ্রাহ্য করে, যাকে ঈশ্বর নিজে প্রেরিত নিযুক্ত করেছেন?
যদি যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে আমরা প্রচার করতে চাই, আমাদের অবশ্যই বাইবেলের লেখা অনুযায়ী প্রচার করতে হবে, এবং অবশ্য আমাদের বাইবেল অনুযায়ী বিশ্বাস করতে হবে। প্রভু আমাদিগকে বলেন, “ইতিমধ্যে শিষ্যেরা তাঁহাকে বিনতী করিয়া কহিলেন, রব্বি, আহার করুন। কিন্তু তিনি তাঁহাদিগকে বলিলেন, আহারের জন্য আমার এমন খাদ্য আছে, যাহা তোমরা জান না” (যোহন ৪:৩১-৩২) । আপনার এবং আমার যীশুতে বিশ্বাস করে পৌলের মত বাপ্তিস্ম নিতে হবে।
কখন আপনার পাপগুলো খ্রীষ্টের দেহে চলে গেছে? যীশু যখন যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হলেন, তখন আমাদের সমস্ত পাপ যীশুর দেহে চলে গেছে। যীশু যোহনকে বলেছেন, “এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত।” এখানে “এইরূপে” হল গ্রীক ভাষায় “বয়ঢ়ষড়” যার অর্থ “এইভাবে” “সর্বোত্তম উপায়ে” অথবা “এর চেয়ে বিকল্প কিছু নাই”। এই বাক্যে দেখা যাচ্ছে যে, যীশু যোহনের দ্বারা যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, তদ্বারা তিনি আমাদের সমস্ত পাপ এমনভাবে তুলে নিয়েছেন যেন পুনরায় তা আর ফিরে না আসে। এভাবে বাপ্তিস্ম অর্থ “ধৌত হওয়া” আমাদের হৃদয়ের সমস্ত পাপ ধৌত করতে হবে, আমাদের পাপগুলোকে খ্রীষ্টের দেহে অর্পণ করা উচিত।
যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপ তুলে নিয়েছেন, আমাদের স্থলে ক্রুশারোপিত হয়েছেন এবং আমাদের সাথে একীভূতভাবে সমাধিস্থ হয়েছেন। তাই পৌল ঘোঘনা করেন, “খ্রীষ্টে সহিত আমি ক্রুশারোপিত হইয়াছি” (গালাতীয় ২:২০)। বস্তুতঃ যীশু যখন আমাদের জন্য ক্রুশে মরলেন তাহলে আমরা কিভাবে ক্রুশারোপিত হতে পারি? আমরা যীশুর সহিত ক্রুশারোপিত হয়েছি, কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে, যীশু তাঁর নিজের উপর আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং এই পাপের জন্য ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন।
আমি প্রভুর প্রশংসা করি, যিনি আমাকে আমার সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ করেছেন। আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সুসমাচার প্রচার করতে পারি, কারণ যীশু আমাদিগকে ধার্মিক গণিত করেছেন। আমার যারা মাংসে দূর্বল এবং তাঁর গৌরববিহীন হয়েছি, এই আমাদেরকে রক্ষা করার জন্য আমি প্রভুর ধন্যবাদ করি।