Search

শিক্ষা

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[10-2] প্রকৃত বিশ্বাস শ্রবণ থেকে আসে (রোমীয় ১০:১৬-২১)

< রোমীয় ১০:১৬-২১ >
“কিন্তু সকলে সুসমাচারের আজ্ঞাবহ হয় নাই। কারণ যিশাইয় বলে, “হে প্রভু, আমরা যাহা শুনিয়াছি, তাহা কে বিশ্বাস করিয়াছে?” অতএব বিশ্বাস শ্রবণ হইতে এবং শ্রবণ খ্রীষ্টের বাক্য দ্বারা হয়। কিন্তু আমি বলি, তাহারা কি শুনিতে পায় নাই? পাইয়াছে বই কি!
“তাহাদের স্বর ব্যাপ্ত হইল সমস্ত পৃথিবীতে,
তাহাদের বাক্য জগতের সীমা পর্যন্ত।”
কিন্তু আমি বলি, ইস্রায়েল কি জানিতে পায় নাই?
 প্রথমে মোশি কহেন, “আমি ন-জাতি দ্বারা তোমাদের অন্তর্জ্জালা জন্মাইব; মূঢ় জাতি দ্বারা তোমাদিগকে ক্রুদ্ধ করিব।” আর যিশাইয় অতিশয় সাহসপূর্বক বলেন, “যাহারা আমার অন্বেষণ করে নাই, তাহারা আমাকে পাইয়াছে, যাহারা আমার কাছে জিজ্ঞাসা করে নাই, তাহাদিগকে দর্শন দিয়াছি।” কিন্তু ইস্রায়েলের বিষয় তিনি কহেন, “আমি সমস্ত দিন অবাধ্য ও প্রতিকুলবাদী প্রজাবৃন্দের প্রতি হস্ত বিস্তার করিয়া ছিলাম।”
 
 ১৭ পদে আছে, “অতএব বিশ্বাস শ্রবণ হইতে এবং শ্রবণ খ্রীষ্টের বাক্য দ্বারা হয়।” সমস্ত পাপ হতে মুক্তকারী বিশ্বাস কোথা থেকে আসে? ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণের মধ্য দিয়েই প্রকৃত বিশ্বাস আসে।
 আমি সব সময় তাঁর বাক্যের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতার সুসমাচারের সাক্ষ্য বহন করতে ভালবাসি। আমরা রোমীয় ৩:১০- ২০ পদ দেখি,
 “যেমন লিখিত আছে; ধার্মিক কেহই নাই, একজনও নাই, বুঝে, এমন কেহই নাই, ঈশ্বরের অন্বেষণ করে, এমন কেহই নাই। সকলেই বিপথে গিয়েছে, তাহারা একসঙ্গে অকৰ্ম্মন্য হইয়াছে; সৎকর্ম করে এমন কেহই নাই, একজনও নাই। তাহাদের কণ্ঠ অনাবৃত কবরস্বরূপ; তাহারা জিহবাতে ছলনা করিয়াছে; তাহাদের ওষ্টাধারের নিন্মে কাল সর্পের বিষ থাকে। তাহাদের মুখ অভিশাপে ও কটুবাক্যে পূর্ণ; তাহাদের চরণ রক্তপাতের জন্য ত্বরান্বিত। তাহাদের পথে পথে ধংস ও বিনাশ, এবং শান্তির পথ তাহারা জানে নাই, ঈশ্বরভয় তাহাদের চক্ষুর অগোচর। আর আমরা জানি, ব্যবস্থা যাহা কিছু বলে, তাহা ব্যবস্থার অধীন লোকদিগকে বলে; যেন প্রত্যেক মুখ বন্ধ এবং সমস্ত জগৎ ঈশ্বরের বিচারের অধীন হয়। যেহেতুক ব্যবস্থার কার্য্য দ্বারা কোন প্রাণী তাঁহার সাক্ষাতে ধার্মিক গণিত হইবে না, কেননা ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে।” 
পরিত্রাণ গ্রহণ করে আমরা কিভাবে এই ক্ষুদ্র অংশ বুঝব এবং বিশ্বাস করব? আদিতে ধার্মিকত কিংবা ঈশ্বরের অন্বেষণকারী কেহই ছিল না, কিন্তু সকলেই পাপী ছিল। তাদের কন্ঠ অনাবৃত কবরস্বরঙ্গ। তাহাদের ওষ্টাধরের নিন্মে কাল সাপের বিষ থাকে, তাহাদের মুখ অভিশাপ ও কটু বাক্যে পূর্ণ; তাহাদের চরণ রক্তপাতের জন্য ত্বরান্বিত। তাহাদের পথে পথে ধংস ও বিনাশ এবং শান্তির পথ তাহারা জানে নাই; ঈশ্বরভয় তাহাদের চক্ষুর অগোচর। ঈশ্বরের ধার্মিকতা জানা ও বিশ্বাসের পূর্বে প্রত্যেকে পাপী ছিল এবং এভাবে তারা খুঁজে পায় যে, ব্যবস্থার দ্বারা ঈশ্বরের সামনে তারা পাপী ছিল।
কিভাবে আমরা ব্যবস্থা ব্যাতিত আমাদের পাপ সকল জানতে পারি? কিভাবে আমরা ঈশ্বরকে জানতে পারি? আমরা কি কখনো ঈশ্বরকে ভয় করি? রোমীয় ৩:১৮ পদে আছে, “ঈশ্বরভয় তাদের চক্ষুর অগোচর।” আমাদের মাংসিক চক্ষু কি কখনো তাঁকে দেখতে পায়? আমরা সম্ভবত ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে সামান্যই সচেতন, তাই আমরা তাঁকে দেখতেও পাই না, ভয়ও করি না। তাহলে আমরা কিভাবে খুঁজে পেলাম যে, আমরা পাপী ছিলাম? আমরা তাঁর লিখিত বাক্য শ্রবণের দ্বারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পর্কে জেনে আসছি। এই কারণে ঈশ্বরের বাক্য থেকেই শ্রবণ আসে।
আমরা জানি যে, ঈশ্বর জগৎ সৃষ্টি করলেন, কারণ এভাবে বাইবেলে লিখিত আছে, “আদিতে ঈশ্বর আকাশ মন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন” (আদি ১:১)। আমরা ঈশ্বরের এই বাক্য শ্রবণের দ্বারা আমরা এবং তাঁর অস্তিত্বে বিশ্বাস করি এবং আরো বিশ্বাস করি যে, এই সমস্ত বিশ্ব মন্ডল তিনিই সৃষ্টি করেছেন। যদি ঈশ্বরের বাক্য থেকে এটা না হত, তাহলে কেহই তাঁকে জানত না, তাঁকে ভয় করত না। ঈশ্বরের বাক্য ব্যাতিত আমরা কেহই আমাদের পাপ সম্পর্কে জানতে পারতাম না। 
অন্য কথায়, আমরা ঈশ্বর সম্পর্কে মৌলিকভাবে অজ্ঞ ছিলাম, অসার বস্তুর পূজা করতাম এবং আমাদের নিজের পাপ সম্পর্কে অসচেতন ছিলাম। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের ব্যবস্থা দিলেন এবং এভাবে আমরা ঈশ্বরের সম্মুখে আমাদের পাপ সকল জানতে পারলাম। তাঁর বাক্য শ্রবণের দ্বারা ব্যবস্থাস্বরূপ দশ আজ্ঞা পেলাম এবং ৬১৩টি অনুচ্ছেদে লিখিত ব্যবস্থায় আমাদের দোষ এবং পাপগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারলাম।
ব্যবস্থার কথা ব্যাতিরেকে কেহই কারো নিজের কোন পাপ সম্পর্কে জানতে পারে না। প্রায় প্রত্যেক অপরাধী ব্যক্তির দাবীর পিছনে প্রতিবন্ধকতা থাকে যে, সে জানে না তার অপরাধ কি ছিল, অথবা কেন তাকে তালাবদ্ধ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই নির্দোষ বলে দাবি করেছিল। তাদের ভুলবশতঃ এবং অন্যায়ভাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ঈশ্বরের ব্যবস্থা ব্যাতিত আমরা আমাদের নিজের পাপগুলি জানতে পারি না। বলা যায়, “আমি সর্বদাই এভাবে কাজ করে থাকি। প্রত্যেকেই ইহা করুক। কিভাবে পাপ হতে পারে?”
কেবলমাত্র ঈশ্বরের ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও শ্রবণের মধ্য দিয়ে আমাদের পাপ সম্পর্কে উপলব্দি আসতে পারে। আমাদের জানা প্রয়োজন যে, আমাদের অন্যান্য দেবতাদের পূজা করা, অনর্থক ঈশ্বরের নামে ডাকা, বিশ্রাম দিবস পালনে আমাদের অকৃতকার্যতা, আমাদের ধংস করা, আমাদের ব্যভিচার, আমাদের চৌর্য্যবৃত্তি, আমাদের মিথ্যা বলার অভ্যাস, আমাদের হিংসা করা, এ সকল পাপের কাজে ঈশ্বরের বাক্যানুসারে জীবন-যাপন করার নিষ্ফল প্রয়াস, কারণ ঈশ্বরের ব্যবস্থা তাই বলে। এভাবে ব্যবস্থানুসারে আমরা ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপী বলে স্বীকৃত হই। এই ব্যবস্থার পূর্বে আমাদের নিজের পাপ সম্পর্কে আমরা তেমন কিছুই জানতাম না।
 আমাদের নিজেদের উপলব্দি হল, আমরা পাপী, তাহলে, ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমাদের কি করা উচিত? আমাদের জানা প্রয়োজন কিভাবে আমরা পাপের ক্ষমা পেতে পারি। ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণের মধ্য দিয়ে আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করা প্রয়োজন। ঠিক যেমন ক্ষুধা তার খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে, যারা উহা অনুমোদন করে তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা লঙ্ঘন করে এবং জানে যে তারা মৃত্যু যোগ্য পাপী, তাদের পরিত্রাণের প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করে। এভাবে আমরা ঈশ্বরের সান্নিধ্যে আসি এবং যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে তাঁর ধার্মিকতার মধ্য দিয়ে তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করি, যাকে তিনি আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন। যেমন, “বিশ্বাস শ্রবণের দ্বারা আসে,” আমরা ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণের মাধ্যমে আমাদের পাপ সকল জানতে পারি।
 
 

এখন আমরা জানি যে, আমরা পাপী। আমরা কি অবিলম্বে আমাদের পাপ থেকে মুক্ত হব?

 
তাঁর বাক্যে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পরিত্রাণ আসে, যা অন্তরের অন্তঃস্থলে বিদ্যমান, বাস্তবিক আমরা ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ এবং শিক্ষা করার মাধ্যমে আমাদের পাপ সম্পর্কে উপলব্দি করতে সক্ষম হই। যেমন রোমীয় ৩:২১-২২ পদে আছে, “কিন্তু এখন ব্যবস্থা ব্যাতিরেকেই ঈশ্বর-দেয় ধার্মিকতা প্রকাশিত হইয়াছে। আর ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণ কর্ত্তৃক তাঁহার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইতেছে। ঈশ্বর- দেয় সেই ধার্মিকতা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা যাহারা বিশ্বাস করে, তাহাদের সকলের প্রতিবর্ত্তে।”
আমাদিগকে প্রদত্ত তাঁর ব্যবস্থানুসারে, আমরা তাঁর সাক্ষাতে পাপী হিসাবে গণ্য হই, কেননা আমরা তাঁর বাক্যানুসারে জীবন- যাপন করতে ব্যর্থ হয়েছি। অতএব, আমাদের দুটো বিশেষ আবশ্যকতা আছে; আমরা ব্যবস্থা অনুসারে জীবন-যাপন করতে চাই, কিন্তু একই সময়ে আমরা পাপ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য বেপরোয়াভাবে অনুসন্ধান করতে থাকি। কেননা, “আন্তরিকভাবে বলতে গেলে ব্যবস্থার পরিত্রাণ হল ঈশ্বরের ধার্মিকতা” তারা তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেয়েছে ব্যবস্থানুসারে নয়, কিন্তু অবশ্যই ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস দ্বারা তাদের পাপ মোচন সাধিত হয়েছে। আমরা জানি যে, এই মুক্তি ঈশ্বরের ব্যবস্থা মান্য করার মধ্য দিয়ে আসে নাই, কিন্তু ঈশ্বর কর্ত্তৃক প্রদত্ত পরিত্রাণে বিশ্বাস দ্বারা হয়েছে, ঈশ্বরের অতিশয় ধার্মিকতার গুনে যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে আমাদিগকে রক্ষা করেছেন।
অতএব, ঈশ্বরের ধার্মিকতা এবং তাঁর সাধিত পরিত্রাণ কি? ইহা পুরাতন ও নূতন নিয়মে উক্ত জল ও আত্মার সুসমাচার। জল ও আত্মার সুসমাচার পুরাতন নিয়মে আবির্ভূত হয়েছে বলিদান প্রথায় বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে, এবং নূতন নিয়মে যীশুর বাপ্তিস্ম ও তাঁর ক্ৰুশীয় মৃত্যুতে বিশ্বাস দ্বারা। রোমীয় ৩:২১-২২ পদে আছে, “কিন্তু এখন ব্যবস্থা ব্যাতিরেকেই ঈশ্বর-দেয় ধার্মিকতা প্রকাশিত হইয়াছে। আর ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণ কর্ত্তৃক তাঁহার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইতেছে। ঈশ্বর-দেয় সেই ধার্মিকতা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা যাহারা বিশ্বাস করে, তাহাদের সকলের প্রতিবর্ত্তে।”
আমরা কিভাবে অবিলম্বে ঈশ্বরের ধার্মিকতা গ্রহণ করতে পারি? আমরা ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণের দেওয়া সাক্ষ্য অনুসারে ঈশ্বরের বাক্যের মধ্য দিয়ে জেনে ঈশ্বরের ধার্মিকতা গ্রহণ করতে পারি, যেমন যীশুই ঈশ্বর এবং আমাদের মুক্তিদাতা; এবং তাঁহাতে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমাদিগকে সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আছেন।
অন্য কথায়, আমরা তাঁর বাক্যে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ধার্মিকতা গ্রহণ করেছি, পুরাতন নিয়মে বর্ণিত ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণের সাক্ষ্য অনুসারে। ইব্রীয় ও রোমীয়দের পুস্তকে প্রথম অধ্যায়ে বর্ণিত বিষয়গুলি ঈশ্বরের বাক্যে দেখানো হয়েছে।
কেননা যীশু আমাদের ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত দান পরিত্রাণের মাধ্যমে মুক্তি দিতে এসেছেন। এই প্রতিজ্ঞা পাপীদের রক্ষা করে, যারা ব্যবস্থার অধীন ছিলেন তাদের ধংস আবশ্যক, যা হাজার হাজার বছর আগে ঈশ্বর তৈরী করেছিলেন। তিনি প্রায়শঃ পূনঃ পূনঃ এই প্রতিজ্ঞা করেন এবং যারা আমাদের পূর্বে এসেছিলেন তাঁরক দাসগণের মাধ্যমে কিভাবে রক্ষ করবেন, সেই সংকল্প ব্যক্ত করেন। 
 আমরা উদাহরণসরূপ এই অংশটকু দেখি। লেবীয় ১৬:২১ পদে আছে, “পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অর্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও সমস্ত অধৰ্ম্ম অর্থাৎ তাদের সর্ববিধ পাপ তাহার উপরে স্বীকার করিয়া, সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তুত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে।” রোমীয় ৩:২১-২২ পদে আছে, “কিন্তু এখন ব্যবস্থা ব্যাতিরেকেই ঈশ্বর-দেয় ধার্মিকতা প্রকাশিত হইয়াছে। আর ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণ কর্ত্তৃক তাঁহার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইতেছে। ঈশ্বর-দেয় সেই ধার্মিকতা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা যাহারা বিশ্বাস করে, তাহাদের সকলের প্রতিবর্ত্তে।” অন্য কথায়, ঈশ্বর পুরতন নিয়মের মধ্য দিয়ে ইতিপূর্বে প্রকাশ করেছেন, তিনি তাঁর পরিত্রাণের প্রতিজ্ঞা কিভাবে রক্ষা করবেন-যা তিনি যীশু খ্রীষ্টকে পাঠিয়ে সাধন করবেন, তাঁর বাপ্তিস্ম ও আমাদের স্থানে ক্রুশের উপর মৃত্যু দ্বারা তিনি জগতের সমস্ত পাপভার নিজের উপর তুলে নিবেন, এবং তাঁর নিজের শরীরের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপের বেতন পরিশোধ করবেন, ঈশ্বরের ধার্মিকতার মধ্য দিয়ে আমাদিগকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করবেন। আমাদের পরিত্রাণ এরূপ কোন ব্যবস্থা দ্বারা হয় নাই, কিন্তু ব্যবস্থা এবং ভাববাদীগণের সাক্ষ্য অনুসারে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় আমাদের বিশ্বাসের দ্বারা খ্রীষ্ট যীশুতে সাধিত হয়।
 ঈশ্বর আমাদিগকে বলেন যে, আমরা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা আমাদের পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছি, যাহা যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে সাধিত হয়েছিল। যীশু খ্রীষ্টের বাক্যানুসারে ঈশ্বরের এই বাক্য শ্রবণের মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্বাস উৎপন্ন হয়, আমরা কিভাবে জানি এবং বিশ্বাস করি যে, যীশু আমাদের মুক্তিদাতা? তাঁর দাসের বক্তব্য অনুসারে ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণের দ্বারা আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি যে, যীশুই আমাদের মুক্তিদাতা; যাহা তাঁর পরিকল্পনা অনুসারে আমাদিগকে রক্ষার নিমিত্তে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন এবং যীশু এই প্রতিজ্ঞা এবং যীশু এই সংকল্প ও প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমাদিকে রক্ষা করতে এসেছিলেন। যেমন দানিয়েল ৯:২৪ পদে লিখিত আছে, “তোমার জাতির ও তোমার পবিত্র নগরের সম্বন্ধে সত্তর সপ্তাহ নিরূপিত হইয়াছে - অধৰ্ম্ম সমাপ্ত করিবার জন্য, পাপ শেষ করিবার জন্য, অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করিবার জন্য; অনন্তকালস্থায়ী ধার্মিকতা আনয়ন জন্য; দর্শন ও ভাববাণী মুদ্রাঙ্কিত করিবার জন্য, মহাপবিত্রকে অভিষেক করিবার জন্য।”
 
 

ঈশ্বর আমাদের লোকদের জন্য সত্তর সপ্তাহ নির্ধারণ করিয়াছেন

 
আমরা উপরে লিখিত দানিয়েলের পুস্তকের অংশটুকুর প্রতি মনোযোগী হই। এই অংশে বাবিলের দ্বারা ইস্রায়েলের পতনের বর্ণনা করা হয়েছে, যখন ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের বিষয় সংকল্প করেন, তাদের প্রতিমা পূজা করার অপরাধে বন্দি হয়ে বাবিলে নীত হয়ে এবং তথায় সত্তর বৎসর ক্রীতদাসরূপে করবে জীবন-যাপন করবে। ঈশ্বরের সংকল্প অনুসারে বাবিলের দ্বারা ইস্রায়েল আক্রান্ত ও পরাভূত হয় এবং ধংস প্রতিরোধ করতে অসমর্থ হয়। অবশেষে ও আক্রমণকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে, তারা অনেক ইস্রায়েলীয়দের বন্দি করে নিয়ে যায় এবং তাদের ক্রীতদাসে পরিণত করে। বন্দিদের মধ্যে অনেক জ্ঞানী লোক নীত হয়েছিল, যেমন দানিয়েল, যাকে বাবিলীয় রাজা উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করেছিল। 
ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের এইভাবে তাদের পাপের জন্য শাস্তি দিলেন, তিনি দয়ালু, তিনি তাঁর ক্রোধ চিরকাল ধরে রাখেন না; তাই তাদেরকে সংকল্পানুযায়ী সত্তর বছরের মধ্যে মুক্ত করলেন।
যখন দানিয়েল তার স্বজাতির পক্ষে ঈশ্বরের সাক্ষাতে অনুতাপ করলেন; তাঁর দয়া এবং মুক্তির জন্য প্রার্থনা করলেন, ঈশ্বর একজন দূত পাঠালেন, যিনি উক্ত ঘটনা ঘোষণা করলেন, “তোমার জাতির ও তোমার পবিত্র নগরের সম্বন্ধে সত্তর সপ্তাহ নিরুপিত হইয়াছে-অধৰ্ম্ম করিবার জন্য, পাপ শেষ করিবার জন্য, অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করিবার জন্য অনন্তকালস্থায়ী ধার্মিকতা আনয়ন করিবার জন্য এবং মহাপবিত্রকে অভিষেক করিবার জন্য।” এই অংশে ঈশ্বর দানিয়েলের কাছে প্রতিজ্ঞা করলেন যে, তিনি সত্তর বছরের মধ্যে তাঁর জাতির সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন, তখন তাদের অপরাধের সমাপ্তি ঘটবে, যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত মুক্তি আমাদের কাছে ব্যক্ত করা হয়েছে।
কেননা ইস্রায়েলীয়রা অনেক পাপ ভারাক্রান্ত, ঈশ্বর তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলেন, ঈশ্বর তাদের অতীতের সমস্ত পাপ ক্ষমা করলেন। তখন তাদের সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা হল, এবং পাপের পরিসমাপ্তি ঘটল, ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত পাপ আর দীর্ঘায়িত হল না, যখন পাপের মিমাংসা করা হল, অনন্তকালীন ধার্মিকতা আনীত হল। দর্শন এবং ভাববাণী সীলমোহর করা হল। যিরমিয়ের কাছে প্রকাশিত বাক্যগুলি পরিপূর্ণ হল। সত্তর বছরের দাস্যকর্মের মধ্য দিয়ে সব কিছু বহন করে আনা হল, এবং ইস্রায়েলীয়রা সত্তর বছর পর তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে আসল।
ইহাই ঈশ্বর তাঁর দূতের দ্বারা দানিয়েলের কাছে প্রকাশ করেছিলেন। এই প্রতিজ্ঞা ইস্রায়েলীয়দের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করেছিল। কেননা ইহা ছিল আধ্যাত্মিক দর্শন - যেমন ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতি এবং তার পবিত্র নগরীর জন্য সত্তর সপ্তাহ নির্ধারন করেছিলেন; ঈশ্বর আমাদের জন্য সবকিছু প্রস্তুত করেছেন, যারা আমাদের স্বর্গীয় স্থানে পবিত্র নগরী ও ঈশ্বরের রাজত্ব সম্পর্কে বিশ্বাস করেন।
রোমীয়দের পুস্তকে বলা হয়েছে, “কিন্তু এখন ব্যবস্থা ব্যাতিরেকেই ঈশ্বর-দেয় ধার্মিকতা প্রকাশিত হইয়াছে। আর ব্যবস্থা ও ভাববাদীগণ কর্ত্তৃক তাঁহার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হইতেছে। ঈশ্বর- দেয় সেই ধার্মিকতা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা যাহারা বিশ্বাস করে, তাহাদের সকলের প্রতিবর্ত্তে।” যখন যীশু এই পৃথিবীতে নেমে আসলেন, বাপ্তাইজিত হলেন, এবং ক্রুশের উপরে মরলেন, আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করলেন, আমাদের পাপ মুক্ত করলেন, অনন্তকালীন ধার্মিকতা প্রকাশ করলেন, দর্শন এবং ভাববাণী মুদ্রাঙ্কিত করলেন। দানিয়েলের এই অংশের সমাপ্তি ঘটল, “মহাপবিত্র অভিষিক্ত করা।” এর অর্থ কি? মহাপবিত্র নির্দ্দেশ করছে যীশু খ্রীষ্ট ছাড়া আর কেহই নাই; যিনি এই পৃথিবীতে এসে অভিষিক্ত হবেন।
অভিষিক্তের অর্থ কি? যীশুর উপর রাজার তিন ধরনের অধিকার বর্ত্তিয়েছে, ঈশ্বরের রাজত্বের মহাযাজক এবং ভাববাদী, আমাদের রাজা হিসাবে মহাযাজক এবং ভাববাদী। আমাদের সমস্ত পাপ থেকে যীশু আমাদিগকে মুক্ত করার জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছার পূর্ণতা সাধন করেছেন। যে দূত দানিয়েলের কাছে ভাববাণী বলেছিল, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপের বোঝা নিজে বহন করেছিলেন এবং বাপ্তাইজিত হওয়ার মধ্য দিয়ে এই পৃথিবীতে আমাদের পরিবর্ত্তে বিচারিত হলেন। 
 “বিশ্বাস শ্রবণ থেকে আসে,” তাহলে আমরা কিভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতার এই সুসমাচার শ্রবণ করতে এবং বিশ্বাস করতে পারি? আমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারি যে, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের মুক্তি দাতা? পুরাতন ও নূতন নিয়মে বর্ণিত ঈশ্বরের বাক্য যা ঈশ্বরের ভাববাদীগণ এবং তাঁর দাসগণের দ্বারা বলা হয়েছিল, সেই বাক্য আমরা শ্রবণ ও বিশ্বাস করতে পারি।
এই কারণ পৌল বলেছিলেন, বিশ্বাস শ্রবণ থেকে আসে এবং এই বিশ্বাস খ্রীষ্টের বাক্য শ্রবণ থেকে আসে। 
পুরাতন নিয়মের ভাববাদীগণ, যেমন দানিয়েল এবং যিশাইয় যীশু খ্রীষ্টের আশমন বিষয় ভাববাণী বলেছিলেন। যিশাইয় বিশেষভাবে ভাববাণী বলেছিলেন, “সত্য, আমাদের যাতনা সকল তিনিই তুলিয়া লইয়াছেন, আমাদের ব্যথা সকল তিনিই বহন করিয়াছেন এবং মেষশাবক যেমন হত হইবার জন্য নীত হয়, মেষী যেমন লোমছেদকদের সম্মুখে নীরব হয়, সেইরূপ তিনি মুখ খুলিলেন না’ (যিশাইয় ৫৩:৪,৭)।
কে যিশাইয়-এর সময়ের এই ব্যথা বিশ্বাস করবে যে, যীশু খ্রীষ্ট একজন কুমারীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করে অতিশয় দীনহীন বেশে এই পৃথিবীতে আসবেন, ৩৩ বছর বেঁচে থাকবেন, বাপ্তাইজিত ও ক্রুশবিদ্ধ হবেন এবং মৃত্যু থেকে তৃতীয় দিবসে উঠবেন? তবুও যিশাইয় যীশু খ্রীষ্ট আসবার ৭০০ বছর আগে দেখেছিলেন এবং ভাববাণী বলেছিলেন। এভাবেই সব বিষয় অতিবাহিত হবে। তিনি এই ঘটনার সাক্ষ্য দেন যে, খ্রীষ্ট আমাদের সব দুঃখ কষ্ট এবং পাপ বহন করেছেন।
এই কারণে পৌল রোমীয় পুস্তকে বার বার পূরাতন নিয়মের বাক্যের উদ্ধৃতি দিয়েছেন, ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে ঈশ্বরের দাসগণ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, কিভাবে যীশু এই জগতে আমাদের মুক্তিদাতা হিসাবে এসেছিলেন, আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং ঈশ্বরের ধার্মিকতা দ্বারা আমাদিগকে রক্ষা করেছেন।
 
 

কারণ সকলেই পাপ করিয়াছে

 
রোমীয় ৩:২৩-২৪ পদে আছে, “কেননা সকলেই পাপ করিয়াছে এবং ঈশ্বরের গৌরব বিহীন হইয়াছে-উহারা বিনামূল্য তাঁহারই অনুগ্রহে, খ্রীষ্ট যীশুতে প্রাপ্য মুক্তির দ্বারা, ধার্মিক গনিত হয়।” কারণ আমরা পাপে জন্মগ্রহণ করেছি এবং ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করেছি, আমরা গৌরবের এবং তাঁর রাজ্যের নিকটবর্ত্তী হয়েছি। আমরা ঈশ্বরের অনুগ্রহে যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা বিনামূল্যে ন্যায়সঙ্গত ভাবে মুক্তি অর্জন করেছি। আমাদের সমর্থন ছিল বিনামূল্যে, মূল্যহীন। আমাদের পাপের জন্য আমরা কোন মূল্য পরিশোধ করি নাই। কারণ যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং ক্রুশে নিজের জীবন দিয়ে আমাদের সমস্ত দেনা শোধ করেছেন, যারা শ্রবণ করে এবং তাঁহাতে বিশ্বাস করে এমন সকলকে মুক্ত করেছেন।
সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণের বিশ্বাস দ্বারা আমরা কি বুঝি? আমরা সাধারণভাবে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস বুঝি। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস কর্মের দ্বারা কিছুই হয় না, কিন্তু সবকিছু আমাদের অন্তর দ্বারা হয়। আমরা আমাদের প্রভুর বাক্য শ্রবণের দ্বারা আমাদের অন্তরে বিশ্বাস করি। আমাদেরকে আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। ঈশ্বরের মেষশাবকরূপে আমাদের প্রভু এই জগতে এসেছিলেন, যিনি যোহনের বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজিত হয়ে এবং ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা জগতের পাপভার বহন করেছেন। তৃতীয় দিবসে তিনি মৃত্যু থেকে উঠেছেন, এবং এখন পিতা ঈশ্বরের দক্ষিণে বসে আছেন।
যীশু আপনার উপরে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন; নিজের জীবন দিয়ে আমাদের পাপের শাস্তি পরিশোধ করেছেন, এবং মৃত্যু থেকে উঠেছেন; আমাদের নিশ্চিত মৃত্যু থেকে উদ্ধার করেছেন আমরা ইহা বিশ্বাসেরর দ্বারা রক্ষা পেয়ে থাকি। আমাদের পরিত্রাণ বিশ্বাস থেকে আসে এবং আমাদের বিশ্বাস ঈশ্বরের লিখিত বাক্য থেকে শ্রবণের মধ্য দিয়ে আসে; এবং আমাদের শ্রবণ খ্রীষ্টের বাক্যের মধ্য দিয়ে আসে। 
“বিশ্বাস শ্রবণের দ্বারা আসে।” আমরা আমাদের অন্তরে বিশ্বাস করি। আমাদের বুদ্ধি জ্ঞানের জন্য, আবার আমাদের শরীর কাজের জন্য এবং ইহা আমাদের অন্তরের বিষয় যাহা আমরা বিশ্বাস করি। কখন কি বিষয়ে আমাদের অনন্তরে বিশ্বাস করি এবং কিভাবে? ঈশ্বরের বাক্য শ্রবণ দ্বারা, আমরা তাঁর সুসমাচার শুনতে পারি, এবং তাঁর সুসমাচার শ্ৰবনের দ্বারা, আমরা বিশ্বাস করতে পারি। আমরা যখন বিশ্বাস করি, আমরা ঈশ্বরের বাক্যানুসারে বিশ্বাস করি, আমরা লিখিত বাক্যে বিশ্বাস করি ও স্বীকার করি যে খ্রীষ্ট তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, উহা বহন করেছেন, ক্রুশের উপরে মরেছেন এবং মৃত্যু থেকে পুনরায় উঠেছেন।
ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি। বস্তুত, ঈশ্বরের বাক্যে শ্রবণ ব্যাতিত বিশ্বাস হল ভ্রান্ত ও অপ্রয়োজনীয় বিশ্বাস। এরূপ দাবি- ঈশ্বর কারো কল্পনার মধ্য দিয়ে ব্যক্ত করেন তাহা নয় সবই মিথ্যা।
আমরা বিশ্বাস কেবলমাত্র বিশ্বাস দ্বারাই রক্ষা পাই। আসুন, আমরা রোমীয় ৩:২৪-২৬পদ বারংবার পড়ি, “উহারা বিনামূল্যে তাঁহারই অনুগ্রহে, খ্রীষ্ট যীশুতে প্রাপ্য মুক্তি দ্বারা, ধার্মিক গণিত হয়। তাহাকে ঈশ্বর তাঁহার রক্তে বিশ্বাস দ্বারা প্রায়শ্চিত্ত বলিরূপে প্রদর্শন করিয়াছেন; যেন তিনি আপন ধার্মিকতা দেখন- কেননা ঈশ্বরের সহিষ্ণুতায় পূর্বকালে কৃত পাপ সকলের প্রতি উপেক্ষা করা হইয়াছিল-যেন এক্ষণে যথাকালে আপন ধার্মিকতা দেখান, যেন তিনি নিজে ধার্মিক থাকেন, এবং যেন যে কেহ যীশুতে বিশ্বাস করে তাহাকেও ধার্মিক গণনা করেন।” আমেন। আমাদের প্রভু আমাদের পাপের জন্য ঈশ্বরের ক্রোধ দূর করার নিমিত্ত প্রদত্ত উপহার স্বরূপ হয়েছেন। কেননা আমাদের পাপ সকল ঈশ্বরের শক্রুতে পরিনত করেছে; যীশু তাঁর বাপ্তিস্ম, মৃত্যু এবং পুনরুত্থান দ্বারা ঈশ্বরের ক্রোধ দূর করার নিমিত্ত প্রদত্ত উপহার স্বরূপ হয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।
রোমীয় ৩:২৫ পদের মধ্যের অংশে আছে,“কেননা ঈশ্বরের সহিষ্ণুতার পূর্বকালে কৃত পাপ সকলের প্রতি উপক্ষো করা হয়েছিল- যেন এক্ষনে যথাকালে আপন ধার্মিকতা দেখান।” এই অংশটুকু আমাদের বলছে যে, ঈশ্বরের দীর্ঘকাল ধরে সীমাহীন ধৈর্য্যে অপেক্ষা করছিলেন, এবং তিনি বিচারের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। যারা যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাস করেন, যারা জল ও রক্তের মধ্য দিয়ে প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করেন, যারা পুত্রের প্রায়শ্চিত্তে বিশ্বাস করেন, যিনি পিতা ঈশ্বরের সন্তুষ্টি সাধনে এসেছিলেন-ঈশ্বর কর্তৃক তাদের সমস্ত পাপ উপেক্ষা করা হয়েছিল। “পাপ উপেক্ষা করা” অর্থ যারা ঈশ্বরের বাক্যে ও তাঁর সুসমাচার শ্রবণ করে ও বিশ্বাস করে তাদের পাপ সকল উপেক্ষা করা হয়েছিল, যে সকল লোক তাঁর বাপ্তিস্মে এবং ক্ৰুশীয় রক্তে অতিশয় বিশ্বাস করে।
আমরা মাঝে মাঝে আমাদের জীবনে বাধাপ্রাপ্ত হই, এর কারণ হল আমাদের দেহ ও মনের দূর্বলতা। আমরা যীশুর পরিত্রাণ দীর্ঘকাল যাবৎ অস্বীকার করতে পারি না; ঈশ্বর সব পাপগুলি পাপ হিসাবে দেখেন না। অন্য কথায়, খ্রীষ্ট যীশুর জল ও রক্তে বিশ্বাসের মাধ্যমে যারা পরিত্রাণ পেয়েছে, ঈশ্বর তাদের পাপ ধরেন না, কিন্তু সেগুলো দূর করে দেন।
কেন ঈশ্বর আমাদের পাপ সকল উপেক্ষা করেছিলেন? যখন তিনি পবিত্র এবং ধার্মিক ঈশ্বর তখন তিনি এরূপ পাপ প্রত্যাখান করতে পারেন না? এই কারণে খ্রীষ্ট জগতে এসেছিলেন। এই কারণ যীশু তাঁর ক্রুশীয় মৃত্যু দ্বারা জগতের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, এভাবে ঈশ্বর আমাদের পূর্বতন লিখিত পাপগুলি উপেক্ষ করেছিলেন। পূর্বতন লিখিত পাপগুলি কি আমাদের পাপ নয়? না, তা নয়, কারণ তারা যা কিছু আমাদের আসল পাপ হিসাবে উপস্থাপন করেন, আমাদের অনন্তকালস্থায়ী পিতা ঈশ্বর সে সব দুর করে দিয়েছেন।
অনন্তকালের দৃষ্টিকোন থেকে এই পৃথিবীর সময় সর্বদাই অতীত হিসাবে আবির্ভূত হচ্ছে। এই পৃথিবী এর শুরু থেকে শেষ পর্যায়ে এসেছে, ঈশ্বর অসীম, বস্তুত আমরা যখন তাঁর সময়ের তুলনা করি, পৃথিবীর সমস্ত পাপ তাঁর সাক্ষাতে অতীত হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। “ঈশ্বরের সহিষ্ণুতায় পূর্বকালে কৃত পাপ সকলের প্রতি উপেক্ষা করা হয়েছিল, যেন এক্ষনে যথাকালে আপন ধার্মিকতা দেখান।” এই কারণে ঈশ্বর আমাদের পাপ সকলের প্রতি অবধান করেন না, এটা নয় যে, তাঁর আমাদের পাপ সকল দেখার চোখ নেই, কিন্তু তিনি সেগুলো দেখেন না, কারণ তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্ট আমাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করেছেন। কারণ খ্রীষ্টের বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশোরোপণের দ্বারা আমাদের পাপ থেকে পবিত্র করেছেন, আমরা প্রকৃত পক্ষে পাপ মুক্ত মানুষ হিসাবে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আবির্ভূত হই। ঈশ্বর কিভাবে আমাদের পাপ দেখতে পারেন, যখন যীশু খ্রীষ্ট, যিনি ঈশ্বরের ধার্মিকতায় পরিপূর্ণ হয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে, যারা বিশ্বাস করে তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন? এভাবে ঈশ্বর এখন তাঁর ধার্মিকতার প্রমাণস্বরূপ যাহা পূর্বকালে কৃত পাপসকল উপেক্ষা করেছিলেন, সেই পাপসকল যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন। 
খ্রীষ্টের বাক্যের মধ্যে দিয়ে ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস আসে। কারণ খ্রীষ্টের বাক্যে ঈশ্বরের অতিশয় ধার্মিকতার অন্তভূক্ত। ঈশ্বর কেবলমাত্র তাঁর ধার্মিকতার উপস্থাপন করেননি, কিন্তু যারা যীশুতে বিশ্বাস করে তাদের ধার্মিকতার নিমিত্তে তাঁর নিজের ধার্মিকতার নিশ্চিত প্রমাণ দিয়েছেন। ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ থেকে আমাদিগকে মুক্ত করেছেন এবং আমরাও আমাদের অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করি যে, যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন। এই কারণে আমরা পাপহীন এবং ধার্মিকগণিত হই এবং খ্রীষ্টেতে একই ধার্মিকতা পরিহিত হই (গালাতীয় ৩:২৭)। কারণ, ঈশ্বর এবং আমরা উভয়ই ধার্মিক, আমরা সকলে এক পরিবার ভুক্ত, আপনি এবং আমি তাঁর সন্তান। আপনি কি এই সুন্দর সুসমাচার বিশ্বাস করেন? 
 উল্লেখ্য এই যে, আমাদের নিজের কি কোন কিছু আছে যা নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি? অবশ্যই না! প্রকৃত পক্ষে আমাদের গর্বের বিষয় কি? আমাদের পরিত্রাণ কি? খ্রীষ্টের বাক্য শ্রবণ ও বিশ্বাসের মাধ্যমে সম্ভব? আমাদের রক্ষার কারণ কি আমাদের কর্ম? আমাদের গর্বের বিষয় কি? কিছুই না! আপনি কি পরিত্রাণ পাবার জন্য গীর্জাতে প্রাতঃকালীন উপাসনাতে যোগদান করেছিলেন? আপনি কি পরিত্রাণ পাওয়া সত্ত্বেও রবিবারের গীর্জার উপাসনা কখনো বাদ দিয়েছিলেন? আপনি কি নিশ্চিত যে, পরিত্রাণ পাওয়ার পর থেকে আপনি দশমাংশ দিয়েছিলেন? অবশ্যই না।
এই সমস্ত কাজগুলি এবং কাজগুলির ভিত্তি বিশ্বাস অথবা এই অতিরিক্ত বিশ্বাস হল ভ্রান্ত বিশ্বাস। আমরা আমাদের অন্তরে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছি। বিশ্বাস শ্রবণের দ্বার আসে এবং পরিত্রাণ খ্রীষ্টের বাক্যে বিশ্বাসের মধ্যদিয়ে আসে। 
যীশুতে বিশ্বাসের পর অনুতাপের প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পাপের ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করা একটি ভ্রান্ত বিশ্বাস, প্রকৃত বিশ্বাস আসে ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের দ্বারা, ব্যবস্থা পালনের দ্বারা নয়। ঈশ্বরের বাক্যে আছে, “দম্ভোক্তি কোথায়? ইহা বর্জন করা হয়েছে। কি ব্যবস্থা দ্বারা? কি কার্যের দ্বারা? না তবে বিশ্বাসের ব্যবস্থা দ্বারা। এতএব আমরা এ বিষয় স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে বিশ্বাস ব্যবস্থা কার্য থেকে একজন মানুষকে পৃথক করে। অথবা তিনি কি কেবলমাত্র যিহুদীদের ঈশ্বর? তিনি কি পরজাতীয়দের ঈশ্বর নহেন? হ্যাঁ, তিনি পরজাতীয়দেরও।”
 যীশু খ্রীষ্ট তাদেরকে তাঁর জল ও রক্তের দ্বারা শ্রবণ এবং! বিশ্বাসের মাধ্যমে রক্ষা করেছেন, ইস্রায়েলীয় এবং পরজাতীয়দের অন্তরে এই বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পরিত্রাণ আসে আমরা পাপ থেকে রক্ষা পাই যখন আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি। যখন আমরা এই ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি যাহা যীশু খ্রীষ্টের, আমরা পাপ থেকে রক্ষা পেয়েছি। ঈশ্বর আমাদের পিতা এবং আমরা তাঁর সন্তান হই। এই পরিত্রাণ ঈশ্বরের ধার্মিকতা দ্বারা হয়েছে। খ্রীষ্টের বাক্য শ্রবণ ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে। ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমাদের বিশ্বাস আসে।
খ্রীষ্টের বাক্যে আমাদের বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিত্রাণ আসে। আপনি কি বিশ্বাস করেন খ্রীষ্ট এই পৃথিবীতে আপনার মুক্তিদাতা হিসাবে এসেছেন, তাঁর বাপ্তিস্মে, বিশ্বাসের দ্বারা। তিনি জগতের সমস্ত পাপ ঈশ্বরের তুষ্টি সাধনের নিমিত্তে তুলে নিয়েছেন, এবং তারপরে তিনি ক্রুশের উপরে মরলেন, তৃতীয় দিবসে মৃত্যু থেকে উঠলেন, এবং পিতা ঈশ্বরের প্রতাপের দক্ষিণে তিনি বসলেন? আপনি কি বাস্তবিক এই পরিত্রাণ বিশ্বাস করেন, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রায়শ্চিত্তে?
অনেক লোক আছে যারা ঈশ্বরকে তাঁদের কল্পনায় আবিভূত করেছে। তারা বলে যে, যদি তারা তাঁকে স্বচক্ষে দেখতে পায় তবে বিশ্বাস করবে। অনেকে এমন দাবি করে যে, তারা যীশুকে স্বপ্নে দেখেছে; তিনি তাদেরকে এই রকম কিছু করতে বলছেন যেমন এখানে একটি গীর্জা তৈরী করতে, সেখানে একটি প্রার্থনার গৃহ তৈরী করতে; ইত্যাদি, কিন্তু সাধরনত কেহ কেহ টাকা দাবি করে এবং মিথ্যা দাবির দ্বারা প্রতারিত হয়। অনেকে ভুল পথে চালিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। খ্রীষ্টিয় জগতে অনেক দুঃখ জনক ঘটনা ঘটে থাকে। আপনি অবশ্যই উপলব্ধি করতে পরবেন যে, সব কিছু আমাদের প্রভুর কাজ নয়, কিন্তু দিয়াবলের নিজের কাজ।
যদি দৈবক্রমে, আপনি আপনার স্বপ্নের মধ্যে যীশুকে দেখেন তবে ইহা আন্তরিকতার সহিত নেবেন না। স্বপ্ন কেবলমাত্র স্বপ্নই; যীশু যে কোন লোক নন যিনি আপনার সামনে অন্য প্রকারে এসে আবিভূত হবেন, তাহলে বাইবেলের কোন প্রয়োজন ছিল না। যদি যীশু আমাদের সামনে একবারের জন্যও আবির্ভূত হন তাহলে অবশ্যই আমরা বাইবেল বন্ধ করব, ইহাতে আর আমাদের প্রয়োজন নেই। বস্তুত এটা খ্রীষ্টের পরিত্রাণের কাজকে ধ্বংশ করতে থাকবে।
আমরা যদি বাইবেল ব্যতিত যীশুকে বিশ্বাস করি তাহলে তাঁকে প্রত্যেকের সামনে আবিভূত হতে হবে। কিন্তু এর আর কোন প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রভু পরিত্রাণের প্রয়োজনীয় সবকিছুই ইতিমধ্যে পূর্ণতা সাধন করেছন। এভাবেই খ্রীষ্টের বাক্য শ্রবণ ও বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা আসে। সকলেই কি যীশু খ্রীষ্টের কথা শুনতে পায়? তারা যীশু খ্রীষ্টের নাম শুনতে পারে কিন্তু তাদের সকলে সত্যের সুসমাচার শুনতে পায় না। এই কারণ পৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রচারক ভিন্ন তারা কিভাবে শুনবে?” 
অতএব, আমরা অবশ্যই, ঈশ্বরের ধার্মিকতাকে অন্তর্ভূক্ত করে এই সুসমাচার প্রচার করে। কিন্তু কিসের দ্বারা কেমনভাবে? কোন পদ্ধতি দ্বারা অথবা সুসমাচার প্রচার কিভাবে গুরুপূর্ণ নয়; সুসমাচার প্রচারের সকল পদ্ধতির কথা বলা অথবা ছাপার উপকরণ ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে হতে হবে। বিশ্বাস শ্রবন থেকে আসে এবং শ্রবন খ্রীষ্টের বাক্যের দ্বারা আসে। ছাপার উপকরণ গুলি সুসমাচার প্রচার ও প্রকৃত বিশ্বাসে পাঠকদের পরিচালনা করতে পারে। এ পদ্ধতিতে অমনোযোগী হলে আপনি অবশ্যই স্মরণ করবেন যে, বিশ্বাস কেবলমাত্র শ্রবন থেকে আসতে পারে এবং শ্রবন কেবলমাত্র সুসমাচার প্রচারের দ্বারা আসে।
যদি আপনার অন্তরে বাস্তবিক ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাস থাকে, তাহলে আপনি জানবেন যে আপনি একজন প্রকৃত খ্রীষ্টিয়ান। আমি আশা ও প্রার্থনা করি যে আপনি ইহা জ্ঞাত আছেন যে, আপনি আপনার পাপ সকল থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আমি আর ও আশা এবং প্রার্থনা করি যে আপনি জল ও আত্মার বাক্য অত্যন্ত গভীর ভাবে ধরে থাকবেন। অতঃপর রোমীয় ১০:১৭পদ একসঙ্গে পাঠ করে আলোচনার মধ্য দিয়ে স্থির সিদ্ধান্তে উপনিত হই।
 “অতএব বিশ্বাস শ্রবণ হইতে এবং শ্রবণ ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা হয়।” আমেন। যারা ঈশ্বরের লিখিত বাক্য শ্রবণের দ্বারা তাদের অন্তরে বিশ্বাস করে তাদের প্রকৃত বিশ্বাস আছে আপনার কি এই রকম প্রকৃত বিশ্বাস আছে? আমাদের প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ থেকে আমাদিগকে মুক্ত করেছেন।
যত ধন্যবাদ এবং সুখের বিষয় যে প্রভু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন! সুসমাচার ব্যতিত লোকেরা সর্বদাই নিরুৎসাহ বোধ করে; কিন্তু ঠিক শ্রবণের দ্বারা যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন; আমাদের অন্তর আনন্দে পূর্ণ হবে এবং আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
আমাদিগকে রক্ষার জন্য আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দেই।