Search

শিক্ষা

বিষয় ১১: আবাস

[4-2] যীশুই ঈশ্বর (প্রকাশিত বাক্য ৪:১-১১)

যীশুই ঈশ্বর
< প্রকাশিত বাক্য ৪:১-১১ >
 
প্রকাশিত বাক্য চতুর্থ অধ্যায়ের মাধ্যমে আমরা যীশুর ঈশ্বরত্ব সম্পর্কে জানতে পারব এবং সেই জ্ঞানে আমাদের বিশ্বাসকে আরো দৃঢ় করতে পারব৷ বাক্যের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান বিশ্বাসে রূপান্তরিত হয়, আমাদের হৃদয়ে প্রতিস্থাপিত হয় এবং যেহেতু খ্রীষ্টারীর যুগ আসন্ন এবং তার উত্থান হবে, তাই যতই প্রভুর পুনরাগমনের দিন আসন্ন হচ্ছে, ততই আরো দৃঢ় বিশ্বাসে আমরা শয়তানকে প্রতিরোধ করতে এবং জয় করতে পারব৷
আমরা আমাদের বিশ্বাস লালন ও নিজেদের তৈরী করছি, যেন সেই মহাক্লেশের প্রথম সাড়ে তিন বছরের মহাপরীক্ষাগুলোর সম্মুখে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারি৷ আমরা যদি এভাবে নিজেদের প্রস্তুত না করি, তবে আমরা অবশ্যই আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে ফেলব৷ কিন্তু যদি এই প্রকৃত বিশ্বাসে আমাদের নিজেদের প্রস্তুত রাখতে পারি, পরবর্তী মুহুর্তে মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও আমরা বলতে পারব যে, ঈশ্বর যিনি আমাদের পরিত্রাণ দিয়েছেন, আমরা সেই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সন্তান, শয়তানের সমস্ত শক্তির উর্দ্ধে তিনি, যার পরাক্রমের কোনো তুলনায় হয় না৷
কিন্তু এর জন্য প্রথমেই আমাদের হৃদয়ে গভীর বিশ্বাস থাকতে হবে যে, প্রভু সর্বশক্তিমান এবং আমরা তাঁর সন্তান৷ ঈশ্বরের সমরূপ থাকা সত্ত্বেও আমাদের প্রভু নিজেকে কতটা অবনত করলেন যে, আমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য তিনি পৃথিবীতে নেমে এলেন৷ তিনি মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে এলেন, দাসের রূপ ধারণ করলেন; আমরা তাঁর সৃষ্টি, তবুও আমাদের চেয়েও নিজেকে অবনত করলেন৷ প্রভু যদি নিজেকে এতটা অবনত করে পৃথিবীতে না আসতেন, বরং জগতের অন্যান্য শাসনকর্তাদের মত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব নিয়ে যদি আসতেন, তাহলে কি হত? ক্ষমতাবানেরা শুধু ক্ষমতাবানেদের সাথেই বন্ধুত্ব করতে পারে, অধীনস্থ এবং দুর্বল লোকেদের প্রতি তারা সবসময় নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে৷ কিন্তু প্রভু আমাদের চেয়েও অবনত হয়ে এই পৃথিবীতে এলেন, অধীনস্থ এবং দুর্বলদের সাথে বন্ধুত্ব করলেন এবং তাদেরকে তাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করে তাঁর সন্তান করলেন৷
এই কারণেই ঈশ্বর উত্তম মেষপালক এবং দয়াময় প্রভু৷ আর এ কারণেই, তাঁর সন্তান হিসাবে এই উত্তম মেষপালকের গৌরব এবং প্রশংসা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই৷ এইভাবে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অবস্থায় আমরা আমাদের প্রভুর ধন্যবাদ এবং প্রশংসা করব এবং যখন সেই সহস্রাব্দের রাজত্বে থাকব, তখনও তাঁর ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের গৌরব এবং প্রশংসা করব৷ স্বকন্ঠে প্রভুর প্রশংসায় অংশগ্রহণ করা মহা-আশীর্বাদের বিষয়, কারণ যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তারাই কেবল প্রভুর প্রশংসা করতে পারে৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীদের উপর যে মহা-আশীর্বাদ বর্ষিত হয়, আমরাও সেই আশীর্বাদে আশীর্বাদযুক্ত৷ এই কথা আমাদের ভুললে চলবে না যে, আমরা এইরূপ রাজকীয় ঈশ্বরের সন্তান এবং তাঁর দাস৷
অনেকই বলে যে, যীশু ঈশ্বরের পুত্র, কিন্তু তিনি নিজে ঈশ্বর নন৷ কিন্তু মানবীয় জন্ম মানবীয়ভাবে, এবং পশুদের জন্ম পশুদের মত হয়, এইরূপে ঈশ্বরের পুত্র ঈশ্বর৷ যেভাবে মানুষ একটি কুকুর জন্ম দিতে পারে না, তেমনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের পুত্র তাঁর সৃষ্টির অনুরূপ একজন মানুষ হতে পারেন না৷ যারা যীশুকে ঈশ্বর বলে স্বীকার করে না, তারা জানে না যে, তিনি আমাদেরকে তাঁর জল ও আত্মা দ্বারা উদ্ধার করেছেন৷
আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, যীশুই ঈশ্বর (যোহন ১:১)৷ পিতা ঈশ্বর যখন যীশু খ্রীষ্টের জন্য একটি সিংহাসন স্থাপন করেছেন এবং কর্তৃত্ব তাঁর উপর দিয়েছেন, যীশু – কে ছিলেন, সত্যিই বিচারের দিনে আসবেন, এবং ঈশ্বরের প্রতাপে সমস্ত কিছুর উপরে রাজত্বের নিমিত্তে, ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টির পরিত্রাণ এবং বিচারের নিমিত্ত অনন্তকালের জন্য তাঁর সিংহাসনে বসবেন৷ প্রভুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে আমরা তাঁর সন্তান হয়েছি, আমরা তাঁর রাজ্যে প্রবেশ করব এবং অনন্তকাল বেঁচে থাকব৷ আমরা যারা এই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করি, তিনিই যীশু, তাঁকে আমরা মুক্তিদাতারূপে গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা ঈশ্বরের সন্তান হয়েছি৷ 
ধার্মিকগণ, কার্যকারীগণ এবং ঈশ্বরের সেবকগণ যারা নুতন জন্ম লাভ করেছে, তারা অবশ্যই গর্বিত হবে৷ যদিও এই পৃথিবীতে আমাদের স্থান নিম্নে, তবুও ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার রাজকীয় গৌরব আমাদের আছে, যারা সমস্ত বিশ্বব্রহ্মান্ডের উপর রাজত্ব করবে৷ আমি মনে করি, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর পৃথিবীর সমস্ত পাপ থেকে আমাদের উদ্ধার করেছেন এবং আমাদেরকে তাঁর সন্তান করেছেন৷
এই পৃথিবীর উপর তিনি যে কার্য করেছিলেন, তার জন্য ২৪ জন প্রাচীনও এই প্রশংসা ঈশ্বরকে প্রদান করেছেন৷ তাদের প্রশংসা ছিল এইরূপ যে, ঈশ্বর সমস্ত সৃষ্টি করেছেন, তাই সমস্ত গৌরব এবং পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য তিনিই৷
এখানে আমাদের অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে যে, যীশু খ্রীষ্ট সিংহাসনে বসে আছেন এবং তিনি আমাদের ঈশ্বর৷ এই যীশু খ্রীষ্ট, যাকে আমরা বিশ্বাস করি, যিনি আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন, তিনিই প্রকৃত ঈশ্বর৷ স্বর্গরাজ্যের সমস্ত কর্তৃত্ব আমাদের ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টকে প্রদান করা হয়েছে৷ আমাদের উদ্ধারকর্তা ঈশ্বর, যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা শেষ বিচার সম্পন্ন হবে৷ খ্রীষ্ট যখন তাঁর সিংহাসনে বসে আমাদের বিচার করবেন, তখন জীবন-পুস্তকে যাদের নাম লেখা থাকবে, তারাই নুতন স্বর্গ এবং নুতন পৃথিবীতে প্রবেশ করবে, এবং এই পুস্তকে যাদের নাম খুঁজে পাওয়া যাবে না, তাদেরকে অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ করা হবে৷
অতএব, যীশুতে বিশ্বাস না করলে, অনুরূপভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করা হয় না, আর ঈশ্বরে বিশ্বাস না করলে ঈশ্বরের বিরোধিতা করা হয়৷ এই কারণে যারা বিশ্বাস করে না যে, যীশুই ঈশ্বর, তিনিই মুক্তিদাতা, আর তিনিই স্বর্গের রাজা, তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ভয়ঙ্কর বিচারের সম্মুখীন হবে৷ 
এদের মধ্যে যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, তারা এই দলের, তাদেরকে বলা হয়, Jehovah’s Witnesses, তারা পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্বাস করে যে, যীশু, যদিও তিনি ঈশ্বরের পুত্র কিন্তু নিজে ঈশ্বর নন৷ কিন্তু যীশু ঈশ্বর ছিলেন না, তিনি আমাদেরকে আমাদের পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারেন না, একমাত্র যিনি পূর্ণতাপ্রাপ্ত, তিনিই পারেন আমাদের সঠিক পরিত্রাণ দিতে৷
আমরা এতই দুর্বল যে, ত্বকচ্ছেদ করার মতই আমাদের হৃদয় সহজেই পরিবর্তন হয়ে যায়৷ কেন আমাদের দুর্বলতা সত্ত্বেও যীশু খ্রীষ্টকে চিরতরে আমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা প্রদান করতে পারি, এই জন্য যে, যীশু চিরতরে জীবিত এবং চিরতরে পূর্ণ এবং পাপীদের উদ্ধারকর্তা৷ যারা পূর্ণাঙ্গ ঈশ্বর যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে উদ্ধার পেয়েছে, যারা তাদের সমস্ত পাপ ধ্বংস করেছে একমাত্র তারাই প্রশংসা করতে পারে৷ যীশু খ্রীষ্টে আমাদের বিশ্বাস, আমাদের চিন্তা এবং চেতনা অবশ্যই বিশ্বের ঐ ধরনের ধার্মিকদের মত নয়৷ যখন আমরা যীশুকে ঈশ্বরের ন্যায় চিন্তা করি ও জানি এবং তাঁর উপরে আমাদের পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস থাকে, তখন আমরা প্রত্যেকে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে পারি৷ আমাদেরকে অবশ্যই এই বিশ্বাসে বেঁচে থাকতে হবে যে, যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস আমাদের উদ্ধারকারী ঈশ্বরের ন্যায়, এবং এই বিশ্বাসে আমরা যুদ্ধ করতে পারি এবং আমাদের শত্রুদের জয় করতে পারি৷ যখন আমরা বিশ্বাস করি যে, যীশু আমাদের ঈশ্বর, অন্যকথায়, এই বিশ্বাস শয়তানের মধ্যে ভয়ের কম্পন সৃষ্টি করে, আর এভাবে আমাদেরকে শেষদিনে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে এবং দুঃখ-দুর্দশাকে জয় করতে হবে, দৃঢ়ভাবে সাহায্য করে৷ অন্যভাবে, যদি আমরা যীশুকে আমাদের ঈশ্বর রূপে না বিশ্বাস করি, তাহলে আমাদের বিশ্বাস থেকে শয়তান আমাদেরকে হাসি-ঠাট্টা করবে এবং আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে৷ 
পিতা ঈশ্বরের নিকট থেকে তাঁর সিংহাসন গ্রহণের মাধ্যমে, যীশু আমাদের ঈশ্বররূপে এই সিংহাসনে বসলেন৷ প্রকাশিত বাক্যের মধ্য দিয়ে আমরা উপলব্ধি করি যে, যীশুই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, যিনি বিশ্বব্রহ্মান্ডের সমস্ত কিছুর উপরে রাজত্ব করবেন, কারণ পিতা ঈশ্বরের নিকট থেকে তিনি সমস্ত কর্তৃত্ব এবং ঈশ্বরের পরাক্রম গ্রহণ করেছেন৷ শয়তানকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করতে এই সত্যে বিশ্বাস আপনাকে সাহায্য করবে৷ কারণ তাঁর সন্তানরূপে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাদের পশ্চাতে রয়েছেন, কেউই দুঃখভোগ করবে না, এবং শেষকালে আমরা দৃঢ়তার সাথে এবং অটলভাবে জয় করতে পারি৷ আমাদের জন্য ঈশ্বর যা করেছেন, সমস্ত কিছুর জন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিই এবং প্রশংসা করি৷