আমার ইব্রীয় ৬:১-৮ পদের ব্যাখ্যা:
“অতএব আইস, আমরা খ্রীষ্টবিষয়ক আদিম কথা পশ্চাৎ ফেলিয়া সিদ্ধির চেষ্টায় অগ্রসর হই; পুনর্ব্বার এই ভিত্তিমূল স্থাপন না করি, যথা মৃত ক্রিয়া হইতে মনপরিবর্ত্তন, ও ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস, নানা বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের শিক্ষা, মৃতগণের পুনরুত্থান ও অনন্তকালার্থক বিচার। ঈশ্বরের অনুমতি হইলে তাহাই করিব। কেননা যাহারা একবার দীপ্তি প্রাপ্ত হইয়াছে, ও স্বর্গীয় দানের রসাস্বাদন করিয়াছে, ও পবিত্র আত্মার ভাগী হইয়াছে, এবং ঈশ্বরের মঙ্গলবাক্যের ও ভাবী যুগের নানা পরাক্রমের রসাস্বাদন করিয়াছে, পরে ধর্ম্মভ্রষ্ট হইয়াছে, মনপরিবর্ত্তনার্থে আবার তাহাদিগকে নূতন করিতে পারা যায় না; কেননা তাহারা আপনাদের বিষয়ে ঈশ্বরের পুত্রকে পুনরায় ক্রুশে দেয় ও প্রকাশ্য নিন্দাস্পদ করে। কারণ যে ভূমি আপনার উপরে পুনঃ পুনঃ পতিত বৃষ্টি পান করিয়াছে, আর যাহাদের নিমিত্ত উহা চাষ করা গিয়াছে, তাহাদের জন্য উপযুক্ত ওষধি উৎপন্ন করে, তাহা ঈশ্বর হইতে আশীর্ব্বাদ প্রাপ্ত হয়; কিন্তু যদি কাঁটাবন ও শ্যাকুল উৎপন্ন করে, তবে তাহা অকর্ম্মণ্য ও শাপের সমীপবর্ত্তী, জ্বলনই তাহার পরিণাম”।
< ১-২ পদ >
ঈশ্বর আজকের দিনের খ্রীষ্টবিশ্বাসী এবং একইসাথে যীশুর ইব্রীয় বিশ্বাসীদের মধ্যে খ্রীষ্টবিষয়ক আদিম কথাতে সিদ্ধ বিশ্বাস স্থাপন করতে চান৷
তাদের মধ্যে কেউ কেউ একদা দীপ্তি প্রাপ্ত হয়েছিল, এবং প্রকৃত সুসমাচারের রসাস্বাদন করেছিল, এবং পাপের মোচন গ্রহণ করেছিল, এবং সেই কারণে পবিত্র আত্মা প্রাপ্ত করেছিল, কিন্তু পরবর্তীতে সত্য বিশ্বাস থেকে ভ্রষ্ট হয়েছিল৷ তারা তাদের মনে জল ও আত্মার সুসমাচারের বিরুদ্ধে একটি সন্দেহ পোষণ করে চলেছিল৷
সেই কারণে, বাইবেল স্পষ্টভাবে ঘোষণা করে যে খ্রীষ্টবিষয়ক আদিম কথাগুলি (মৃত ক্রিয়া হইতে মনপরিবর্ত্তন, ও ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস, নানা বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের শিক্ষা, মৃতগণের পুনরুত্থান ও অনন্তকালার্থক বিচার) প্রত্যেক বিশ্বাসীর হৃদয়ে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত হওয়া উচিত
এখানে আমাদের এই সত্যের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত যে এই আদিম কথাগুলি আদি মন্ডলীর সত্য সুসমাচারের উপাদানসমূহ৷
এবং সেগুলির মধ্যে বাপ্তিস্ম ও হস্তার্পণের শিক্ষা রয়েছে৷ এটি এই বিষয়ের অকাট্য প্রমাণ যে জল ও আত্মার সুসমাচার সেই সুসমাচার যেটি সেই যুগের প্রেরিত ও শিষ্যরা প্রচার করেছিল৷
যাদের সত্য সুসমাচারে দৃঢ়বিশ্বাস রয়েছে তাদের খ্রীষ্টবিষয়ক আদিম কথায় কোনোরূপ সন্দেহ থাকে না, বরং তারা সুসমাচারে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে, এবং বিশ্বাসের জীবনে, সিদ্ধতার জীবনে অগ্রসর হয়৷মানুষের কার্যকলাপ সিদ্ধ হতে পারে না, কিন্তু যখন আমরা জল ও আত্মার সত্য সুসমাচারে বিশ্বাস করি, তখন আমরা বিশ্বাসে সম্পূর্ণভাবে পাপশূন্য হতে পারি৷
সেই কারণেই ঈশ্বর অব্রাহমকে বলেছিলেন, “তুমি আমার সাক্ষাতে গমনাগমন করিয়া সিদ্ধ হও” (আদিপুস্তক ১৭:১)৷ এর অর্থ সেই নিঁখুত বিশ্বাস থাকা যা আপনাদের সম্পূর্ণরূপে পাপশূন্য করে তোলে৷
< ৪-৬ পদ >
কিন্তু কেউ যদি সত্য সুসমাচারে বিশ্বাস করবার পর তা অস্বীকার করে, তাহলে পুনরায় পরিত্রাণ প্রাপ্ত করবার কোনো পথ থাকে না৷ এটি ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বরের ইচ্ছা৷ তাঁর প্রেম এতই মহান ও নিঁখুত যে তাঁর বিপক্ষদের প্রতি তাঁর ক্রোধও মহান ও শীতল-হৃদয়সম্পন্ন৷
সুতরাং, পরমগীত ৮:৬ পদ বলে:
“তুমি আমাকে মোহরের ন্যায় তোমার হৃদয়ে,
মোহরের ন্যায় তোমার বাহুতে রাখ;
কেননা প্রেম মৃত্যুর ন্যায় বলবান;
অন্তর্জ্বালা পাতালের ন্যায় নিষ্ঠুর;
তাহার শিখা অগ্নির শিখা, তাহা সদাপ্রভুরই অগ্নি”
ইব্রীয় ১০:২৬-২৭ সেই একই সতর্কবাণী বলে: “কারণ সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পাইলে পর যদি আমরা স্বেচ্ছাপূর্ব্বক পাপ করি, তবে পাপার্থক আর কোন যজ্ঞ অবশিষ্ট থাকে না৷ কেবল থাকে বিচারের ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা এবং বিপক্ষদিগকে গ্রাস করিতে উদ্যত অগ্নির চণ্ডতা।”
আপনাদের হয়তো এখন সত্যের জ্ঞানে, অর্থাৎ, জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস রয়েছে৷ তাহলে “স্বেচ্ছায় পাপ করা”-এর অর্থ কি? আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে পাপকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: “যে পাপ মৃত্যুজনক নয়” এবং “মৃত্যুজনক পাপ” (১ যোহন ৫:১৬)৷
প্রতিদিন আমরা পাপ করি৷ সেগুলি “মৃত্যুজনক পাপ নয়”, এবং প্রভু ইতিমধ্যেই সেই সকল পাপগুলি মুছে দিয়েছেন৷ কিন্তু “মৃত্যুজনক পাপ” হল পবিত্র আত্মার নিন্দা করবার পাপ৷ লিখিত আছে, “এই কারণ আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, মনুষ্যদের সকল পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হইবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হইবে না” (মথি ১২:৩১)৷
পবিত্র আত্মা সাক্ষ্য দেন যে যীশু প্রকৃত ত্রাণকর্তা, এবং তিনি নুতন জন্ম প্রাপ্ত সাধুদের মাধ্যমে জল ও আত্মার সুসমাচারের বিষয়ে সাক্ষ্য দেন৷ সংক্ষেপে বলতে গেলে, যদি কেউ সত্য সুসমাচারের সকল উপাদানগুলি শ্রবণ করবার পর তাকে অস্বীকার করে, তাহলে সেই ব্যক্তিটি বর্তমানে পবিত্র আত্মার নিন্দার পাপ করছে৷ দুর্ভাগ্যবশতঃ, এমন লোক আছে যারা যখন সুসমাচারের কারণে কিছু ক্লেশের সম্মুখীন হয় তখন তারা সুসমাচারকে অস্বীকার করে৷
কোনো একজন ব্যক্তি যদি জানে যে এই সুসমাচারটি সত্য, কিন্তু তথাপি সে স্বেচ্ছায় তা অস্বীকার করে, তাহলে সেই ব্যক্তি কি এহেন পাপের জন্য ঈশ্বর কর্তৃক ক্ষমাপ্রাপ্ত হতে পারে? ঈশ্বর স্পষ্টভাবে এ ধরনের পাপের জন্য অনন্ত দন্ড ঘোষণা করেন৷
আমি আশা করি এই উত্তরটি আপনার আত্মিক তৃষ্ণা নিবারণ করবে৷ কিন্তু সর্বোপরি, আমি চাই আপনি জল ও আত্মার সুসমাচারে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকুন, যে আদি সুসমাচার প্রথম থেকে আমাদের প্রভু যীশু আমাদেরকে দিয়েছেন৷