Search

उपदेश

বিষয় ১: পাপ

[1-2] মানুষ জন্মগতভাবে পাপী (মার্ক ৭: ২০-২৩ পদ )

মানুষ জন্মগতভাবে পাপী
(মার্ক ৭: ২০-২৩ পদ )
“ তিনি আরও কহিলেন , মনুষ্য হইতে যাহা বাহির হয় , তাহাই মনুষ্যকে অশুচি করে। কেননা ভিতর হইতে , মনুষ্যসের অন্তঃকরণ হইতে , কুচিন্তা বাহির হয় – বেশ্যাগমন- , চৌৰ্য্য , নরহত্যা , ব্যভিচার , লোভ , দুষ্টতা , ছল , লম্পটতা , কুদৃষ্টি , নিন্দা , অভিমান ও মূর্খতা ; এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর হইতে বাহির হয় , এবং মনুষ্যকে অশুচি করে।”
 
 

মানুষ দ্বিধান্বিত,এবং বিভ্রমের মধ্যে বাস করে

 
পাপ থেকে মুক্তি পাবার সম্ভবনা সবচেয়ে বেশি কার?
যে মনে করে সে পৃথিবীর জঘন্যতম পাপী
 
শুরু করার আগে আমি আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে চাই। আপনি নিজের সম্বন্ধে কি ভাবেন ? আপনি নিজেকে কি খুব ভাল । অথবা কি খুব খারাপ মনে করেন ? আপনার ধারনা কি ?
সমস্ত মানুষ বিভ্রমের মধ্যে জীবন-যাপন করে আপনি নিজেকে যতটা খারাপ মনে করেন, সম্ভবতঃ আপনি ততটা খারাপ নন।
 অথবা নিজেকে যতটা ভাল মনে করেন ততটা ভাল আপনি নন ।
 আপনার ধারণায় কারা অধিকতর বিশ্বাসে জীবন-যাপন করতে পারে? যারা নিজেদেরকে খুব ভাল, অথবা খুব খারাপ মনে করে ; কারা ?
দ্বিতীয় সারির লোকজন। কাদের পাপ থেকে উদ্ধার পাবার
সম্ভাবনা বেশি? যারা বেশি পাপ করে তারা নাকি যারা অল্প পাপ করে তারা? যারা বেশি পাপ করে তাদেরই উদ্ধার পাবার সন্তাবনা বেশি থাকে, কারণ তারা মনে করে যে,তারা পাপী।তারা যীশুর দেওয়া পাপের ক্ষমা ভালভাবে গ্রহণ করতে পারে।
 যখন আমরা সত্যিকার ভাবে নিজেদের দিকে তাকাই, তখন বুঝতে পারি আমাদের এই জীবন কতগুলি পাপের সমষ্টিমাত্র।মানুষ কি? মানুষ “পাপের বীজ” যিশাইয় ৫৯ অধ্যায়ে বলা হয়েছে যে,মানুষের হৃদয়ে সব ধরনের অধর্ম বাস করে। সুতরাং মানুষ হল পাপের সমষ্টি। যাহোক, যদি
 আমরা বলি যে , মানুষ পাপের সমষ্টি , অনেকেই একমত হবেন না। মানুষকে “ পাপের বীজ” হিসাবে আখ্যায়িত করা সঠিক। যদি আমরা সৎভাবে আমাদের দিকে তাকাই , তাহলে আমরা দেখতে পাব আমরা মন্দ। যারা নিজেদের কাছে সৎ তারা নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে একমত হবেন ।
 অনেকেই হয়তো স্বীকার করবেন না যে, তারা পাপের সমষ্টি। নিজেদেরকে পাপী হিসাবে দেখতে পায় না বলে অনেকেই নিশ্চিন্তে জীবন- যাপন করে। আমরা পাপী তাই আমরা পাপময় সভ্যতা তৈরী করেছি। অনেকে যদি তাদের পাপময় অবস্থা অস্বীকার না করত, তাহলে নিশ্চয়ই পাপের জন্য লজ্জিত হত। যাহোক,অনেকেই আছে যারা এ ব্যাপারে লজ্জিত নয়।
 কিন্তু তাদের বিবেক নিশ্চয় জানে। প্রত্যেক বিবেকই তাকে বলে, “এটা লজ্জাজনক”। যখন আদম হবা পাপ করল তখন তারা নিজেদেরকে গাছের আড়ালে লুকাল। বর্তমানে অনেক পাপী নিজেদেরকে অপসংস্কৃতির আড়ালে লুকায়, আমাদের সংস্কৃতি পাপের সংস্কৃতি। ঈশ্বরের বিচার এড়ানোর জন্য তারা সহপাপীদের আড়ালে নিজেদের লুকায়।
 নিজের বিভ্রম দ্বারা মানুষ প্রতারিত হয়। তারা নিজেদেরকে। অন্যদের তুলনায় বেশি পবিত্র মনে করে।তারা প্রকাশ্যে চিত্‍কার করে বলে,“কিভাবে মানুষ এমন কাজ করতে পারে? একজন ভদ্র লোক কিভাবে এটা করতে পারে? সন্তান পিতা - মাতার প্রতি এরকম কাজ কিভাবে করতে পারে?" তারা মনে করে যে, তারা নিজেরা হলে এরকম কাজ করতে পারত না।
 প্রিয় বন্ধুগণ, মানুষের প্রকৃতি বোঝা খুবই কঠিন ব্যাপার। আমরা সত্যিকার ভাবে যা, যদি তা আমরা জানতে চাই তাহলে আমাদের প্রথমেই পাপের ক্ষমা পেতে হবে। এটা একটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, এবং অনেকেই মৃত্যু পর্যন্ত এটা বুঝতে পারে না।
 
 
নিজেকে জানুন
 
যারা নিজেকে জানে না তারা কিভাবে বাঁচবে ?
কারণ তারা নিজেদেরকে জানে না
 
 মাঝে মাঝে আমরা এমন কাউকে দেখতে পাই যে নিজেকে জানে না, সক্রেটিস বলেছিলেন, “নিজেকে জানো।” অনেকেই জানে না তাদের হৃদয়ের মধ্যে কি আছে। খুন , চৌৰ্য্য , লোভ , দুষ্টতা , প্রবঞ্চনা , লম্পটতা , কুদৃষ্টি ....... ।
 তার হৃদয়ে সাপের মত হিংসা রয়েছে কিন্তু মুখে সততার কথা বলে। সে জানে না যে সে পাপী হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছে, এই জন্যই সে এমন করে।
পৃথিবীতে অনেক লোক আছে যারা নিজেদেরকে দেখতে জানে না। নিজেদের দ্বারাই তারা প্রতারিত হয় এবং সারা জীবনটাই। প্রতারণার মধ্যে কেটে যায়। তারা নিজেদেরকে নরকে নিক্ষেপ করে। নিজেদের প্রবঞ্চনার কারণেই তারা নরকে যাচ্ছে।
 
 

সারা জীবন মানুষ পাপ ছড়ায়

 
কেন তারা নরকে যাচ্ছে ?
কারণ তারা নিজেদেরকে জানে না
 
 আসুন মার্ক ৭:২১ -২৩ পদ দেখি,“ কেননা ভিতর হইতে মনুষ্যদের অন্তঃকরণ হইতে, কুচিন্তা বাহির হয় বেশ্যাগমন, চৌৰ্য্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মুর্খতা; এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর হইতে বাহির হয়, এবং মনুষ্যকে অশুচি করে।” যেদিন থেকে মানুষ মাতৃগর্ভে জন্মগ্রহণ করে, সে দিন থেকে তার হৃদয় পাপ চিন্তায় পরিপূর্ণ থাকে।
 আসুন, আমরা মানুষের হৃদয়কে দুষিত তরল পদার্থে কানায় কানায় পূর্ণ একটি গ্লাস হিসাবে দেখি, সেই তরল পদার্থকে মনেকরি আমাদের পাপ। সেই হৃদয়কে যদি এদিক ওদিক নাড়াচাড়া করা হয় তবে কি হবে? অবশ্যই সেই দুষিত তরল পদার্থ ( পাপ ) সব দিকে ছড়িয়ে যাবে। সেই হৃদয়ের মানুষটি যতই এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করবে, তার পাপগুলো ততই চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে।
 আমাদের জীবন পাপের সমষ্টি, তাই আমাদের জীবন - যাপনের ধারাও এরকম। যেখানে যাই সেখানেই পাপ ছিটাই। যেহেতু আমরা পাপের সমষ্টি, তাই সারাজীবনই আমরা পাপ করে যাবো।
 সমস্যা হল এই যে, আমরা বুঝতে পারি না আমরা পাপের সমষ্টি এবং পাপের বীজ। আমরা পাপের সমষ্টি এবং আমাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে। মানুষ আসলেই এরকম।
 পাপের এই সমষ্টি উথলে পড়বেই। মানুষের প্রাথমিক পাপ হল তারা বিশ্বাস করে না উত্তরাধিকার সূত্রেই তারা পাপী। তারা মনে করে অন্যেরা।
 তাদের পাপের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং এ জন্য আসলে তারা নিজেদেরকে দোষী হিসাবে বুঝতে পারে না।
 সুতরাং পাপ করার সময় তারা ভাবে পাপ মুছে ফেলার জন্য নিজেদেরকে ধুয়ে ফেলা প্রয়োজন। যতবার পাপ করে ততবারই মনে করে এটা তাদের নিজেদের দোষ না এবং এভাবে পাপ মুছে ফেলতে চায়। নিজেরা পাপ মুছে ফেলার অর্থ পাপকে আবার ছড়িয়ে ফেলতে চায় । নিজেরা পাপ মুছে ফেলার জন্য পাপ মোছার তালে থাকতে হবে।
 পাপে পরিপূর্ণ গ্লাসটি উথলে পড়তেই থাকবে। বাইরে মোছা অর্থহীন। অনেক সময় আমাদের নৈতিকতা দিয়ে আমরা আমাদের বাহ্যিক দিকটাকে মুছতে চাই। কিন্তু যতকাল আমাদের হৃদয় সেই পাপে পূর্ণ গ্রাসের মত থাকবে ততকাল মোছার চেষ্টা করা অর্থহীন।
 আমরা এত পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি যে,সারাজীবন ধরে উথলে পড়লেও আমাদের হৃদয় কখনও শূন্য হবে না।সেইজন্য আমরা সারাজীবনই পাপ করতে থাকি।
 যখন কেউ বুঝতে পারে না যে, সে সত্যিকার অর্থেই পাপের সমষ্টি তখন সে নিজেকে লুকাতে চেষ্টা করে। প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে পাপ আছে, বাইরের দিকটা পরিষ্কার করলে তা কখনই মুছে যাবে না। যখন আমরা ছোট পাপ ছড়াই তখন ছোট কাপড় দিয়ে তা মোছার চেষ্টা করি, যখন আবার পাপ করি তখন আরো একটু বড় কাপড়, তোয়ালে অথবা কম্বল দিয়ে মোছার চেষ্টা করি। আমরা সব সময় ভাবি যে অনবরত মুছতে থাকলে আমরা সব সময় পরিষ্কার থাকব। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই পাপ সব সময় ছড়িয়ে যায় ।
 আপনার কি মনে হয়, এভাবে কতদিন চলতে পারে? যতদিন তার মৃত্যু না হয়। মানুষ মৃত্যু পর্যন্ত পাপ করে। তাই যীশুতে বিশ্বাস করে আমাদের পাপমুক্তি লাভ করতে হবে; পাপমুক্তি লাভ করতে হলে নিজেকে জানতে হবে।
 
কারা কৃতজ্ঞতার সহকারে যীশুকে গ্রহণ করতে পারে?
যে পাপী স্বীকার করে যে সে অনেক পাপ করেছে
 
 আসুন, আমরা দুইজন ব্যক্তিকে দুষিত তরল পদার্থপুর্ণ দুটো গ্লাসের সাথে তুলনা করি। দু’টো গ্লাসই পাপে পরিপূর্ণ। একজন নিজের দিকে তাকিয়ে বলল, “ হায়, হায় আমি একজন পাপী মানুষ” তারপর সে সাহায্যের জন্য অন্যের কাছে গেল।
 অন্য জন ভাবল সে নিজে ততটা খারাপ নয়। নিজের পাপের সমষ্টি সে দেখতে পায় না এই জন্য নিজে পাপী নয় বলে নিজেকে ধন্যবাদ দেয়। কিন্তু সারাজীবনই সে ছিটানো পাপ মুছে চলেছে। একদিকে মুছতে যায় আর একদিকে ছড়িয়ে যায় আবার তাড়াহুড়া করাতে অন্যদিক ছড়িয়ে যায়। এরকম অনেক মানুষ আছে যারা, পাপ যেন ছড়িয়ে না যায়, এই জন্য ছোট ছোট পাপ নিয়ে জীবন-যাপন করে। কিন্তু তারপরও তাদের হৃদয়ে পাপ থাকে, এতে কি ভাল হল? সাবধানতার সাথে জীবন - যাপন করলে তারা স্বর্গের নিকটবর্তী হতে পারে না। “সাবধান হওয়া, ” মানে নরকের পথে চলা।
 প্রিয় বন্ধুগণ, “ সাবধান হওয়া ” শুধু নরকের দিকেই চালিত করে। যখন কেউ সাবধান হয়, তখন তার পাপ হয়তো ততটা ছড়িয়ে যায় না, কিন্তু ছদ্মবেশে সে পাপাই থেকে যায়। মানুষের হৃদয়ে কি আছে ? পাপ ? অনৈতিকতা ? হ্যাঁ। মন্দ চিন্তা ? হ্যাঁ। চৌৰ্য্য? হ্যাঁ। ঔদ্ধত্য? হ্যাঁ। পাপ এবং দুষ্টতা সম্পর্কে আমাদের কোন শিক্ষা না থাকলেও আমরা সেই কাজগুলিই করি, কারণ আমরা জানি আমরা পাপের সমষ্টি। যখন আমরা ছোট থাকি তখন হয়তো ততটা জোরালো থাকে না ।
 কিন্তু বড় হলে কি হয়? যখন আমরা হাই স্কুলে, কলেজে এবং আরও উচ্চ শিক্ষার দিকে যাই, তখন আমরা দেখতে পাই যে আমাদের ভিতরে পাপ আছে। এটা কি সত্য নয়? এই সময়ে পাপ লুকানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। ঠিক না ? আমরা এটাকে ছড়াতেই থাকি। তারপর আমরা অনুতাপ করি। “আমার এটা করা উচিত হয়নি।” কিন্তু সত্যিকার ভাবে পরিবর্তিত হওয়া তখন অসম্ভব মনে হয়। কেন এমন মনে হয়? তাহলে আমরা প্রত্যেকেই পাপের সমষ্টি হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছি।
 শুধুমাত্র সতর্কভাবে জীবন-যাপন করলে আমরা পরিষ্কার হতে পারি না। আমরা যেন সম্পূর্ণরূপে পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারি সেই জন্য আমরা পাপের সমষ্টিরুপে জন্মগ্রহণ করেছি। যীশুর প্রস্তূত করা পরিবাণ যারা কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করে সেই পাপীরাই কেবল পাপ থেকে মুক্তি পায়।
যারা মনে করে “ আমি বেশি ভুল করি নাই, আমার বেশি পাপ নাই” তারা বিশ্বাস করে না যে যীশু তাদের পাপ তুলে নিয়েছেন এবং এই জন্য তারা নরকে যাবে। আমাদের জানা উচিত যে আমাদের ভিতরে পাপের স্তুপ রয়েছে, সেটা নিয়েই আমরা জন্মগ্রহণ করেছি।
 কেউ যদি মনে করে, “ আমি বেশি ভুল করি নাই; এই ছোট্ট পাপ থেকে আমি উদ্ধার পেতে পারব,” তাহলে কি আপনি পরবর্তী পাপ থেকে উদ্ধার পাবেন? কখনই না। যে নিজেকে পাপের সমষ্টি হিসাবে দেখতে পায়, তার পক্ষে পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব। সে বিশ্বাস করে যে, যর্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণের মাধ্যমে যীশু তার পাপ থেকে তাকে উদ্ধার করেছেন।
 আমরা পাপ থেকে মুক্তি পাই বা না পাই, সকলেই আমরা বিভ্রমের মধ্যে বাস করি। আমরা পাপের সমষ্টি। আমরা তা-ই। যীশু আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এই বিশ্বাসেই আমরা সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হতে পারি।
 
 
ক্ষুদ্র পাপের পাপীকেও ঈশ্বর ক্ষমা করেন নাই
 
প্রভুর সাথে কে প্রবঞ্চনা করে ?
যে প্রতিদিনের কৃত পাপের ক্ষমা চায়
 
 ক্ষুদ্র পাপের পাপীকে ঈশ্বর ক্ষমা করেন নাই। যে বলে, “ঈশ্বর,আমার পাপ এত ক্ষুদ্র ,” ঈশ্বর তাদের দিকে ফিরেও তাকান না। ঈশ্বর তাদের দিকেই তাকান যারা বলে, “ ঈশ্বর, আমি পাপের সমষ্টি।আমি নরকে যাচ্ছি। আমাকে উদ্ধার কর।” সম্পূর্ণ পাপী যারা তারা বলে,“ প্রভু, তুমি রক্ষা করলেই আমি রক্ষা পাব। আমি অনুতাপের জন্য আর প্রার্থনা করতে পারবো না, কারণ আমি আবার পাপ করব, দয়া করে আমাকে উদ্ধার কর।”
 যারা সম্পূর্ণরূপে ঈশ্বরের উপর নির্ভর করে ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেন। আমি নিজেও প্রতিদিন অনুতাপের প্রার্থনা করেছি। কিন্তু অনুতাপের প্রার্থনা আমাদের পাপ থেকে মুক্ত করতে পারে না। “হে ঈশ্বর দয়া করে আমার প্রতি করুণা কর, আমাকে পাপ থেকে উদ্ধার কর।” যারা এভাবে প্রার্থনা করে তারা উদ্ধার পাবে। যোহন বাপ্তাইজক দ্বারা যীশুর বাপ্তিস্মে, অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রায়শ্চিত্তে তারা বিশ্বাস করে। তারা উদ্ধার পাবে।
 যারা নিজেদেরকে পাপের সমষ্টি, পাপের বীজ হিসাবে চিনতে পারে ঈশ্বর তাদেরকে উদ্ধার করেন। যারা বলে,“আমি এইটুকু পাপ করেছি আমাকে ক্ষমা কর,” তারা পাপী, ঈশ্বর তাদেরকে রক্ষা করতে পারেন না। যারা নিজেদেরকে পাপের সমষ্টি ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারে না, তাদেরকেই ঈশ্বর শুধুমাত্র রক্ষা করতে পারেন।
 যিশাইয় ৫৯:১,২ পদে লেখা আছে,“ দেখ, সদাপ্রভুর হস্ত এমন খাট নয় যে, তিনি পরিত্রাণ করিতে পারেন না; তাঁহার কর্ণ এমন ভারী নয় যে, তিনি শুনিতে পান না; কিন্তু তোমাদের অপরাধ সকল তোমাদের ঈশ্বরের সহিত তোমাদের বিচ্ছেদ জন্মাইয়াছে, তোমাদের পাপ সকল তোমাদের হইতে তাঁহার শ্রীমুখ আচ্ছাদন করিয়াছে, এই জন্য তিনি শুনেন না।”
 কারণ আমরা পাপের সমষ্টি হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছি, ঈশ্বর আমাদের প্রতি প্রেমময় দৃষ্টি রাখতে পারেন না। এমন নয় যে,তাঁর হাত খাট বা তাঁর কর্ণ ভারী, তাই আমাদের ক্ষমা চাওয়ার প্রার্থনা তিনি শুনতে পারেন না। ঈশ্বর আমাদের বললেন , তোমাদের অপরাধ সকল “ তোমাদের ঈশ্বরের সহিত তোমাদের বিচ্ছেদ জন্মাইয়াছে, তোমাদের পাপ সকল তোমাদের হইতে তাঁহার শ্রীমুখ আচ্ছাদন করিয়াছে, এই জন্য তিনি শোনেন না।” স্বর্গের দরজা প্রসস্তভাবে খোলা থাকলেও আমরা সেখানে ঢুকতে পারব না, কারণ আমাদের হৃদয় পাপে পরিপূর্ণ।
 পাপের সমষ্টি হিসাবে যতবার আমরা পাপ করি ততবারই যদি আমরা ক্ষমা চাইতাম, ততবারই ঈশ্বরের পুত্রকে হত্যা করতে হত। ঈশ্বর তা করতে চান না। তাই তিনি বলেন, “প্রতিদিন তোমাদের পাপ নিয়ে আমাদের কাছে এস না । তোমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করার জন্য আমি আমার পুত্রকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি কিভাবে পাপ তুলে নিলেন তা বোঝার চেষ্টা কর এবং দেখ তা সত্যি কিনা। অতপর উদ্ধার পাবার জন্য পরিত্রাণের সুসমাচারে বিশ্বাস কর। হে আমার সৃষ্টি, তোমাদের প্রতি এটাই আমার সর্ব উত্তম প্রেম।” তিনি আমাদের বলেন,“ পাপ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য আমার পুত্রে বিশ্বাস কর। আমি, তোমার ঈশ্বর, তোমার সমস্ত পাপ ও অধর্ম থেকে তোমাকে উদ্ধার করার জন্য আমার পুত্রকে পাঠিয়ে ছিলাম। আমার পুত্রকে বিশ্বাস কর এবং পাপ থেকে মুক্ত হও।” যারা জানে না যে তারা পাপের সমষ্টি,ক্ষুদ্র পাপের জন্য তারা ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চায়। তাদের মারাত্মক পাপের পরিমান ও ওজন না জেনেই তারা ঈশ্বরের সম্মুখে আসে ও প্রার্থনা করে,“দয়া করে এই ক্ষুদ্র পাপটি ক্ষমা কর আমি এটা আর করব না।” তারা ঈশ্বরকে প্রবঞ্চনা করার চেষ্টা করছে। আমরা কেবল একবার পাপ করি না, কিন্তু মৃত্যু পর্যন্ত পাপ করতে থাকি। মৃত্যু দিন পর্যন্ত আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। ছোট্র একটা পাপের ক্ষমা পাওয়ার মাধ্যমে কোন সমস্যারই সমাধান হয় না, কারণ মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিদিন আমরা পাপ করতে থাকি। সুতরাং পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার আমাদের একটাই মাত্র পথ, আর তা হল যীশুর উপরে আমাদের সমস্ত পাপ অর্পণ করা।
 
মানুষ কি ?
পাপের সমষ্টি
 
 মানুষের পাপ সমন্ধে বাইবেলে লিপিবদ্ধ আছে। যিশাইয় ৫৯:৩-৮ পদে আছে,“বস্তত: তোমাদের করতল রক্তে ও তোমাদের অঙ্গুলি অপরাধে অশুচি হইয়াছে, তোমাদের ওষ্ঠ মিথ্যা কথা কহিয়াছে, তোমাদের জিহবা দুষ্টতার কথা কহে। কেহ ধার্স্মিকতায় অভিযোগ করে না, কেহ সত্যে হেতুবাদ করে না; তাহারা অবস্ততে নির্ভর করে, ও মিথ্যা কথা কহে, অনিষ্ট গর্ভে ধারন করে, অন্যায় প্রসব করে। তাহারা কালসর্পের ডিম ফুটায়, ও মাকড়সার জাল বুনে; যে তাহাদের ডিম খায়, সে মারা পড়ে, তাহা ফুটিলে কালসর্প বাহির হয়।
তাহাদের জালের সুতায় বস্ত্র হইবে না, তাহাদের কর্মে তাহারা আচ্ছাদিত হইবে না, তাহাদের কর্ম সকল অধর্মের কর্ম, তাহাদের হস্তে দৌরাত্ন্যের কাৰ্য্য থাকে। তাহাদের চরণ দুষ্কর্মের দিকে দৌড়িয়া যায়, তাহারা নির্দোষের রক্তপাত করিতে ত্বরান্বিত হয়; তাহাদের চিন্তা সকল অধর্মের চিন্তা, তাহাদের পথে ধংস ও বিনাশ থাকে। তাহারা শান্তির পথ জানে না, তাহাদের মার্গে বিচার নাই; তাহারা আপনাদের পথ বক্র করিয়াছে; যে কেহ সেই পথে যায়, সে শান্তি জানে না।”
 মানুষের আঙ্গুল অধর্মে পরিপূর্ণ এবং সারাজীবন তারা মন্দ উদ্দেশ্যেই কাজ করে। তারা যা করে তাই খারাপ। এবং আমাদের জিহবা ‘মিথ্যা বলিয়াছে`। আমাদের মুখ থেকে যা বেরিয়ে আসে তাই মিথ্যা। ‘সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতে বলে,……………’( যোহন ৮:৪৪ পদ )। যারা নতুন জন্ম প্রাপ্ত নয় তারা বলে,‘আমি তোমাকে সত্যি বলছি…..........’ ‘আমি সত্যি কথাই বলছি..........’ ‘আমি যা বলছি তা সত্য.................’ যাহোক, তারা সবাই মিথ্যা বলে। যেমন লেখা আছে, ‘সে যখন মিথ্যা বলে, আপনা হইতেই বলে......’।
 তাদের মিথ্যা কথায় এবং অসার কথায় লোকে বিশ্বাস করে। মানুষ পাপ গর্ভে ধারন করে এবং অধর্ম প্রসব করে। তারা বিষধর সাপের ডিমের চাষ করে এবং মাকোড়সার জাল বুনে। ঈশ্বর বলেন, ‘যারা ঐ ডিম খায়, তারা মারা যায় এবং যে ডিম ভেঙ্গে যায় তা থেকে বিষাক্ত সাপের ডিম আছে। বিষাক্ত সাপের ডিম! জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্ত হও।
 ঈশ্বরের কথা বলতে গেলে অনেকে বলে, ‘ও হে বন্ধু, আমরা কাছে ঈশ্বরের কথা বলে না।যখনই আমি কিছু করতে যাই তখনই পাপ ছড়িয়ে যায়, যেন প্লাবিত হয়। সব জায়গায় পাপ ছড়ানো ছাড়া আমি অগ্রসর হতে পারি না। আমি খুবই অসহায়। পাপে অতিশয় পরিপূর্ণ। সুতরাং আমার
কাছে ঈশ্বরের কথা বলো না।’ লোকটি নিশ্চিতভাবে জানে যে, সে পাপের সমষ্টি কিন্তু জানে না যে, সুসমাচার তাকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারে। যে নিজেকে পাপের সমষ্টি হিসাবে জানে সেই পাপ থেকে উদ্ধার পাবে।
আসলে প্রত্যেকেই এই রকম। যেখানেই যাক না কেন, সেখানেই পাপ ছড়াচ্ছে। পাপ উথলে পড়ছে কারন সে পাপে পরিপূর্ণ। এই ধরনের লোককে ঈশ্বরের ক্ষমতায় উদ্ধার করা যায়। যারা নিরাশ, আনন্দিত অথবা নিশ্চিন্তভাবে, অর্থাৎ বিভিন্নভাবে পাপ ছড়ায়, একমাত্র প্রভু যীশুর মাধ্যমেই তাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করা যায়। যীশু এই লোকদেরকে উদ্ধার করার জন্য এসেছিলেন।
 আপনার পাপের জন্য তিনি পূর্ণ প্রায়শ্চিত্ত সাধন করেছেন। নিজেকে জানুন- পাপের সমষ্টি হিসাবে জানুন, এবং পাপ থেকে মুক্তি লাভ করুন।