Search

उपदेश

বিষয় ৯: রোমীয় পুস্তক (রোমীয় পুস্তকের ভাষ্য)

[5-2] এক মানুষের মাধ্যমে (রোমীয় ৫:১৪)

< রোমীয় ৫:১৪ >
 “তথাপি যাহারা আদমের আজ্ঞা লঙ্ঘনের সাদৃশ্যে পাপ করে নাই, আদম অবধি মোশি পর্যন্ত তাহাদের উপরেও মৃত্যু রাজত্ব করিয়াছিল।”
 
 

পাপীদের অবশ্যই প্রথমতঃ পাপ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকতে হবে

 
 আজ আমি পাপের উৎপত্তি সম্পর্কে বলতে চাই। নিজে নিজে চিন্তা করবেন না, “আপনি প্রতিদিন একই কথা বলেন। আমাকে অন্য কিছু বলেন।” আমি চাই আপনি মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সুসমাচার হলো সবচেয়ে মূল্যবান বিষয়। যে ভক্তের পাপ ইতিপূর্বেই মুছে গেছে, সে যদি প্রতিদিন সুসমাচারের কথা না শোনে এবং স্মরণ না করে, তবে তার মৃত্যু হবে। জল ও আত্মার সুসমাচার সব সময় না শুনলে কিভাবে সে রক্ষা পাবে? রক্ষা পাবার একমাত্র উপায়ই হলো সুসমাচার শ্রবণ করা। আসুন বাইবেল খুলি এবং এ বিষয়ে আলোচনা করি।
 আমার চিন্তা ছিল, “যে পাপীদের পাপ ক্ষমা হয়নি, তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কিসের?” তখন আমি বুঝতে পারলাম যে, ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে পাপ সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞান তাদের থাকতে হবে, কারণ পাপ সম্পর্কে সচেতন হলেই কেবল পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য তারা সচেষ্ট হবে। আমি বিশ্বাস করি, পাপীদের জন্য সবচেয়ে বেশী যে জ্ঞানটি প্রয়োজন, তা হলো পাপের জ্ঞান।
 মানুষ ইচ্ছা করুক বা না করুক, জন্ম থেকেই সে অনেক পাপ করে। সারা জীবন ধরে সে এত বেশী পাপের মধ্যে ডুবে যায় যে, তার এই জ্ঞানটা আর থাকে না যে, সে গভীর পাপের মধ্যে ডুবে আছে। আপেল গাছ যেমন স্বাভাবিকভাবে যথাসময়ে বৃদ্ধি পায় এবং ফলবতী হয়, পাপও তেমনি স্বাভাবিকভাবেই হয়। যাহোক, ঈশ্বরের ব্যবস্থা থেকে আমরা জানতে পারি যে, পাপের বেতন মৃত্যু।
 যদি কেউ সত্যিকার অর্থে পাপের ফল সম্পর্কে বুঝতে পারে, তাহলে সে পাপ এবং ঈশ্বরের বিচারদন্ড থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে এবং সমস্ত আত্মিক আশীর্বাদ লাভ করতে পারে। সুতরাং একজন পাপীর সবচেয়ে বেশী জানা প্রয়োজন পাপ এবং তার ফলাফল সম্বন্ধে। এবং ঈশ্বরের দেওয়া পাপের ক্ষমার সত্য সম্পর্কে অবশ্যই জানা প্রয়োজন।
 
 

কিভাবে জগতে পাপ প্রবেশ করল?

 
 কেন মানুষ পাপ করে? আমি কেন পাপ করি? রোমীয় ৫:১২ পদে বাইবেল এই সম্বন্ধে বলে, “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমূদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।” পাপের মাধ্যমে জগতে কি প্রবেশ করল? মৃত্যু। মৃত্যু বলতে মানুষ সাধারণভাবে দৈহিক মৃত্যুর কথাই ভাবে। কিন্তু এখানে মৃত্যু বলতে আত্মিকভাবে ঈশ্বরের কাছ থেকে মানুষের বিচ্ছেদের কথা বলা হয়েছে। দৈহিক মৃত্যুর সাথে সাথে নরক এবং ঈশ্বরের বিচার দন্ডের কথা বলা হয়েছে। মানুষ কিভাবে পাপী হলো সেই কথাই রোমীয় ৫:১২ পদে বলা হয়েছে।
 বাইবেল বলে, “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমূদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।” ঈশ্বরের বাক্য সত্যস্বরূপ। এক মনুষ্যের দ্বারা জগতে পাপ প্রবেশ করল এবং পাপ দ্বারা মৃত্যু প্রবেশ করল।
 আমরা আদমের উত্তরসূরী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। তাহলে আদমের উত্তরসূরী হিসেবে কি আমাদের পাপ নেই?-হ্যাঁ,আমাদের পাপ আছে। আমরা কি পাপে পূর্ণ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছি?- হ্যাঁ, কারণ আমরা আদমের উত্তরসূরী, তিনি আমাদের পূর্বসূরী। 
 আদমের মাধ্যমে সমস্ত মানব জাতির উৎপত্তি হয়েছে এদো উদ্যানে থাকাকালীন সময়ে আদম এবং হবা শয়তান দ্বারা প্ররোচিত হয়ে ঈশ্বরের অবাধ্য হলেন এবং পাপ করলেন। ঈশ্বর তাঁদেরকে সদাসদজ্ঞানদায়ক বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন, এবং জীবনদায়ক বৃক্ষের ফল খেয়ে অনন্ত জীবন ধরে রাখতে বলেছিলেন।
 কিন্তু তাঁরা শয়তান দ্বারা প্ররোচিত হলেন, ঈশ্বরের বাক্য অবজ্ঞা করলেন এবং সদাসদজ্ঞানদায়ক বৃক্ষের ফল খেলেন। ঈশ্বরের বাক্যে, অর্থাৎ অনন্ত জীবনদায়ী বাক্য অবজ্ঞা করে আদম এবং হবা পাপ করলেন। পাপ করার পরে, আদম হবার সাথে মিলিত হলেন এবং সেখান থেকেই মানব জাতির উৎপত্তি হলো। আমার তাঁদের উত্তরসূরী। আমরা শুধু তাঁদের দৈহিক চেহারাই যে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি, তাই নয় সেই সাথে পাপের স্বভাবও লাভ করেছি।
 তাই বাইবেল বলে, মানুষ পাপের বীজ। জগতের সমস্ত মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে আদম এবং হবার কাছ থেকে পাপের স্বভাব লাভ করেছে। বাইবেল বলে, “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।” সুতরাং সমস্ত মানুষই জন্মগতভাবে পাপী।
 যাহোক, মানুষ জানে না যে, তারা জন্মগতভাবে পাপী। পাপে পূর্ণ হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও, পাপ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান তাদের নেই। বীজ থেকেই একটি গাছের অঙ্কুরোদগম হয় এবং যথাসময়ে তা ফল দেয়, কিন্তু মানুষ মনে করে যে, পাপ করা তাদের পক্ষে অদ্ভুত বিষয়, কারণ তারা জানে না যে, পাপের বীজ থেকে তাদের জন্ম হয়েছে। আপেল গাছ যদি চিন্তা করে, “কি অদ্ভুত বিষয়! আমি কেন আপেল জন্ম দিলাম?” মানুষের ক্ষেত্রেও এই একই বিষয় প্রযোজ্য।
 এইভাবে, পাপ করা মানুষের জন্য খুবই স্বাভাবিক। মানুষ পাপ এড়িয়ে চলতে পারে, -এই চিন্তা ভ্রান্ত। যে কিনা স্বাভাবিক ভাবেই উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে, সারা জীবন ধরে সে পাপ না করে এবং পাপের ফল জন্ম না দিয়ে পারে না। কিন্তু পাপী হিসেবে জন্মগ্রহণ করায় এই বিষয়টি সে গভীরভাবে চিন্তাও করতে পারে না। ঈশ্বর কি বলেন? “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমূদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।”
 পাপী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি বিধায় আমরা সারা জীবন ধরে পাপ করি। সেই জন্যও ঈশ্বরের বিচারদন্ডও আমাদের প্রাপ্য। আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন, “আমাদের পাপ না করে উপায় নেই, সেই জন্য আমাদের দন্ড দেওয়া কি ঈশ্বরের অবিচার নয়?” যাহোক, পাপ ক্ষমা লাভ করার পরে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আমরা যেন তাঁর সন্তান হতে পারি, এইজন্যই ঈশ্বর এই পরিকল্পনা করেছিলেন।
 
 

আমরা সকলে এক মনুষ্য-আদমের উত্তরসূরী

 
 তাহলে, সব মানুষই যদি একজন মানুষ অর্থাৎ আদমের উত্তরসূরী হয়, তাহলে আমাদের শরীরের রঙ ভিন্ন হয় কেন? আমাদের কি ভিন্ন ভিন্ন বীজ থেকে জন্ম হয়েছে? মানুষ কেন ফর্সা (সাদা), কালো বা শ্যামবর্ণ হয়? কিছু লোকের ধারণা হলো, মাটি দিয়ে মানুষ তৈরী করে তাকে আগুনে পুড়িয়েছিলেন, যাকে অল্প তাপ দিয়েছিলেন তার রঙ সাদা হয়েছে, যাকে যথার্থ তাপ দিয়েছিলেন তার রঙ যথার্থ হয়েছে এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত তাপ যাকে দিয়েছিলেন, তার রঙ কালো হয়েছে।
 এই কথা চিন্তা করেও আপনি আশ্চর্য হতে পারেন যে, একজন মানুষের মাধ্যমে যদি সমস্ত মানুষের মধ্যে পাপ এসে থাকে, তাহলে তারই মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করা মানুষ কেন সাদা, কালো বা রঙিন হয়! বাইবেলে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, আদিতে ঈশ্বর যখন আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন, তখনই আদমকেও সৃষ্টি করলেন। “আদম” অর্থ মানুষ, ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করলেন। ঈশ্বর যদি একজন মানুষই অর্থাৎ আদমকে সৃষ্টি করে থাকেন, এবং তাঁর মাধ্যমেই যদি সকলের জন্ম হয়ে থাকে, তাহলে পৃথিবীতে মানুষ কেন ভিন্ন ভিন্ন জাতের? আমরা প্রশ্ন করতে পারি, ‘কেন’ এবং তার উত্তরও এখানে রয়েছে। 
 বিজ্ঞানীরা বলেন যে, মেলানীন হলো ত্বকের একটি রঞ্জক উপাদান, যা দ্বারা সূৰ্য্য রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে। পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে ঘূর্ণায়মান অবস্থায় যে অংশে সূর্যে রশ্মি অধিক পরিমাণে পড়ে, সেই অংশের মানুষের রঙ কালো হয়, যে অংশে প্রয়োজনের তুলনায় সূর্যে রশ্মি কম পড়ে, সেই অংশের মানুষের গায়ের রং সাদা হয় এবং পরিমাণমত সূর্যে রশ্মি যেখানে পড়ে, সেখানকার মানুষের রং শ্যামবর্ণ হয়। কিন্তু, আমাদের পূর্বপুরুষ কিন্তু একই ব্যক্তি।
 বিজ্ঞান এই কথা বলে যে, সূর্যে রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষ করার জন্য মেলানীন স্বাভাবিকভাবে বেরিয়ে আসে। তাই এই বিষয়টি আমি সেই সময় থেকে বুঝতে পারলাম। এ কথা আমি জানতাম যে মানুষ আদমের উত্তরসূরী, কিন্তু মেলানীন সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। আমরা শুধু মাংস নয়, পাপও উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কারণ আমরা এক মনুষ্য, অর্থাৎ-আদমের উত্তরসূরী।
 আপনি কি পাপ চেনেন? আসুন, এই বিষয়টি আমরা অনুসন্ধান করে দেখি যে, মানুষ জন্ম থেকেই পাপী কিনা। “সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে। ভাল গাছে মন্দ ফল ধরিতে পারে না, এবং মন্দ গাছে ভাল ফল ধরিতে পারে না।” (মথি ৭:১৭-১৮)। ঈশ্বর বলেন যে, ভ্রান্ত ভাববাদিরা মিথ্যা ফল উৎপন্ন করে, কখনো ভাল ফল উৎপন্ন করতে পারেনা। আমরা মূলতঃ মন্দ গাছ, কারণ আমরা জন্মগতভাবে পাপে পরিপূর্ণ, তাই আমরা মন্দ ফল উৎপন্ন না করে পারি না। কারণ আমরা মন্দ গাছ হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেছি।
 একজন মনুষ্যের দ্বারা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাপী হয়েছি। যদি গাছের সাথে তুলনা করা হয়, তবে আমরা মন্দ গাছ। মানবিকভাবে যিনি একজন পাপী হয়ে জন্মেছেন, তিনি পাপ না করে পারেন না, এমনকি যদি সে (নারী/পুরুষ) ভাল জীবনে প্রবেশ করতে চায় এবং পাপ থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে, সে তা পারে না, যেমন একটি মন্দ গাছ ভাল ফল দিতে পারে না। মানবিক বিষয় সাধারণত ভদ্র, নম্র এবং ধার্মিক জীবন-যাপন করতে চায়। সে যাহোক, একজন ব্যক্তি পাপের ক্ষমা না পেলে এবং একজন জন্মসূত্রে পাপী ব্যক্তি ধার্মিকতাপূর্ণ জীবনে বাস করতে পারে না। কিছু মদ্য সেবনকারী বেশী মদ্য সেবন না করার চেষ্টা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা মদ্য পানাক্তিতে ভোগে এবং পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে হাসপাতালে রেখে আছে।
 একদিন আমি টিভিতে, “ঐ হতশঢ় ঢ়ষ যশষং ভঢ়” শিরোনামে একটি অনুষ্ঠান দেখেছিলাম। একটি মানষিক হাসপাতালে ১৩ বছরের সাজা প্রাপ্ত একজন ব্যক্তি ছিল। একজন সাংবাদিক যখন তাকে তার পরিবার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করল, তিনি বললেন যে, তিনি যদি মদ্য পানের আসক্তি থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে ওঠেন এবং ডাক্তাররা যদি তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ্য বলে ঘোষনাও করেন, তবুও তার পরিবার তাকে পূনরায় বাড়ীতে ফিরিয়ে নেবে না। সাংবাদিকের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন যে, তাকে পরিবার থেকে পৃথক করার জন্য তার পরিবার ডাক্তারকে ঘুষ দিয়ে তাকে হাসপাতালে রেখেছে। তিনি প্রচন্ড কষ্ট পেয়েছেন। তার পরিবার তাকে নিয়ে এতই অধৈৰ্য্য হয়ে পড়েছিল যে, তাকে তারা পরিত্যাগ করেছিল। সাংবাদিক বলেছেন যে, হাসপাতালে রোগীরা তাদের ইচ্ছানুসারে মদ্যপানের ইচ্ছা করতে পারে না এবং অনেক সময় ধরে তারা বেশী মদ্যপান করতে পারে না, যে কারণে অন্য কেহ তাদেরকে অনুসরণ করতে পারে না। 
 একজন মানুষ কেন মদ্যপান নিয়ন্ত্রন করতে পারে না? সে জানে যে, এটা তার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং ছাড়ার চেষ্টা করতে পারে; কিন্তু তার পরেও অবিরত মদ্যপান করে। এর কারণ, সে ইতিমধ্যে মদ্যপানাক্তিতে পরিণত হয়েছে, প্রধান কারণ হলো, তার হৃদয় সর্বদা শূণ্য। সে নিজেকে রিক্ত মনে করে বিধায় মদ্যপান করে। একজন সর্বদা কষ্ট অনুভব করে এবং ভাল কিছু করার অসমর্থ মনে করে বিধায় সে (নারী/পুরুষ) পাপ করে। সুতরাং সে (নারী/পুরুষ) হতাশ হয় এবং পুনরায় মদ্যপান শুরু করে। হয়তো সে (নারী/পুরুষ) মনে করতে পারে যে, “আমি জানি না, কেন আমি এটা করছি। আমার এমন করা উচিত হবে না।” আর সে আরও মনে করে যে সে (নারী/পুরুষ) তাদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছে, একারণে নিজের ধংসের জন্য সে (নারী/পুরুষ) আরও বেশী পরিমাণে মদ্যপান করে।
 মদ্যপান পরিত্যাগ করতে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও কেউ তা করতে পারে না। এভাবে সে ক্রমান্বয়ে হতাশ হয়ে পড়ে এবং একসময় হাসপাতালে তার স্থান হয়। মানুষের ভেতরের স্বভাবই তার কথায় এবং আচরণে প্রকাশ পায়। মানুষ জন্মগতভাবে পাপী, যতই চেষ্টা করুক না কেন, সারাজীবন সে পাপ না করে পারে না। উত্তরাধিকার সূত্রে আপেলের জ্বীন রয়েছে বলে একটি আপেল গাছে আপেলই ধরে। মানুষ ভাল হতে চায়, কিন্তু যে পাপের ক্ষমা পায়নি তার পক্ষে সৎ হওয়া সম্ভব নয়, কারণ সৎ হওয়ার ক্ষমতা মানুষের নেই। তারা মনে করে তাদের পাপ মারাত্মক নয়, এবং এইভাবেই তারা নিজেদেরকে আড়াল করে এবং যখনই পাপ প্রকাশিত তখন তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে।
 একজন পাপীর পক্ষে পাপ করা স্বাভাবিক, চারিত্রিক বৈশিষ্টগত এবং যথাযথ। কারণ সে পাপের সমষ্টি হয়ে জন্মেছে এবং উত্তরাধিকার সূত্রে সে সেই স্বভাব প্রাপ্ত হয়েছে। পাপ করা মানুষের পক্ষে একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়, কারণ সে পাপের জ্বীনগত বৈশিষ্ট নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। যেমন মরিচ গাছে মরিচ ধরে, তেমনি বেগুণ গাছে বেগন ধরে। জন্মগত ভাবে পাপী বিধায় মানুষ পাপ না করে পারে না। পাপ নিয়ে জন্মগ্রহণ করার ফলে মানুষ কিভাবে পাপ না করে পারে?
 
 
বার রকমের মন্দ চিন্তা নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে
 
 মার্ক লিখিত সুসমাচারের সাত অধ্যায়ে যীশু বলেছেন যে, মানুষ বার রকমের মন্দতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, সেগুলো হল- বেশ্যাগমন, চৌর্য, নরহত্যা, ব্যাভিচার, লোভ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মূর্খতা। চুরি করার মন মানষিকতা নিয়ে মানুষ জন্মগ্রহণ করে। চুরির চিন্তা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পাপগুলোর একটি। আপনি কি চুরি করেন? প্রত্যেকেই চুরি করে। যদি কেউ চুরি না করে, তাহলে বুঝতে হবে সে অন্যের সতর্ক দৃষ্টির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু যখন আশে পাশে কেউ না থাকে, তখন কোন লোভনীয় জিনিস দেখলে চুরির চিন্তা জাগ্রত হয় এবং সেই চুরির চিন্তা থেকেই সে চুরির। পাপটি করে।
 নিজেরা পালন করার জন্য মানুষ অনেক আইন কানুন ও নিয়মাবলী তৈরী করেছে। মানুষ নিজেরাই এই নিয়ম সৃষ্টি করেছে যে, অন্যের ক্ষতি করতে নাই। অনেক মানুষ সমাজে বাস করে বিধায় সেখানে নিয়ম নীতির প্রয়োজন আছে। সামাজিক বিধি নিষেধ অনুসারে আমাদের চলা উচিত। কিন্তু তথাপি দেখা যায় যে, যখন আমরা একাকী থাকি, অন্যের দৃষ্টি এড়িয়ে আমরা চুরি করি। 
 এমন কেউ নেই যে চুরি করে না। প্রত্যেকেই চুরি করে। অনেকদিন আগে আমি একটি আত্মিক উদ্দীপনা সভায় বলেছিলাম, যারা জীবনে কখনও পাপ করেনি তারা যেন হাত উঠায়। একজন বৃদ্ধা মা তার হাত তুললেন এবং বললেন, “আমি কখনও কোন কিছু চুরি করিনি।” সুতরাং আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি তার বাড়ীর পাশ থেকে কোন কিছু নিয়েছেন কি না। তখন তিনি সেই অপ্রত্যাশিত প্রশ্নে হতবিহব্বল হয়ে উত্তর দিলেন, “একদিন আমি আমার বাড়ীর আসার পথে একটি কঁচি কুমড়া দেখেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম এটা খুব সুস্বাদু হবে, তাই আমি চারিদিকে তাকালাম এবং কাউকে দেখতে পেলাম না। আমি তা তুলে নিলাম এবং আমার স্কার্টের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলাম, এবং পরে সীম দিয়ে তরকারি রান্না করে খেয়েছিলাম।” তিনি জানতেন না যে, তিনি একটি চুরির পাপ করেছেন।
 যাহোক, ঈশ্বর বলেন, অনুমতি ছাড়া কারো কিছু নেয়াই হল পাপ। মোশীর ব্যবস্থানুসারে ঈশ্বরের আজ্ঞা, “তুমি চুরি কর না।” প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু চুরি করার অভিজ্ঞতা আছে। সুযোগ পেলেই মানুষ চুরি করতে এবং খুন করতে ওস্তাদ। জীবন ধারণের জন্য সে (নারী/পুরুষ) ইদুর ও মুরগীর বাচ্চার মত অন্যের বাড়ী থেকে চুরি করে। এটাকেই বলা হয়েছে চুরি। এমনকি তার (নারী/পুরুষ) পাপ সম্বন্ধে কোন ধারণা নেই এবং সে (নারী/পুরুষ) হত্যা ও চুরির মত পাপ করেই চলেছে। তার (নারী/পুরুষ) পক্ষে এটা করা স্বাভাবিক, কেননা সে (নারী/পুরুষ) উত্তরাধিকার সূত্রে জন্মগতভাবেই পাপী। 
 
 
মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পাপী
 
 একজন মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পিতামাতা থেকে সে (নারী/পুরুষ) ব্যাভিচার পাপ লাভ করে। ব্যাভিচারের কামলালসায় তার (নারী/পুরুষ) জন্ম। যখন তার (নারী/পুরুষ) চারপাশে কেউ থাকে না, তখনই সে গোপনে ব্যাভিচার করে। ক্যাফে এবং স্যালুন এর মত জায়গা পছন্দ করে। পাপীদের জন্য ঐ সমস্ত স্থান খুবই পছন্দনীয়। কেন? বংশানুক্রমের পাপ প্রদর্শনের জন্য ঐ সমস্ত স্থানগুলো বেশ ভাল।
 এমনকি ভদ্র লোকেরাও ঐ সমস্ত স্থান পছন্দ করে। তার নিজের ঘরে একজন উত্তম পিতার মত এবং সমাজের উচ্চস্থানে অবজ্ঞান করে কিন্তু তারা ঐ সমস্ত অন্ধকারময় খারাপ জায়গা গমনাগমন করে। তারা ঐ সমস্ত স্থানে গমন করে যেন তারা তাদের খারাপ স্বভাব প্রকাশ করতে পারে এবং পাপের ফল বহন করতে পারে। তারা ঐ সব স্থানে মিলিত হয় এবং এক গ্লাস মদ্যপান করার মতই পুরানো বন্ধুদের মত হয়ে যায়। যখনই তারা একত্রে মিলিত হয়, তারা খুবই ঘনিষ্ট হয়, এবং একে অপরের ভেতরের মন্দ স্বভাগুলো প্রকাশ করে। “আপনারও কি এসব আছে? আমার আছে।” “আমি এরূপ করি। আপনি আমার বন্ধু।” “আপনার বয়স কত?” “বয়স কোন ব্যপার নয়,” আপনার সাথে সাক্ষাত করে ভাল লাগল।”
 এমনকি লোকেরা যখন অন্যান্য পাপীদের সাথে মিলিত হয়, তারা একে অপরের সাথে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত পাপের প্রকাশ করে, কেননা তারা এই পৃথিবীতে পাপী হয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। এ কারণে তাদের জন্য পাপ করা স্বাভাবিক। কেন? কারণ তাদের হৃদয়ে পাপ রয়েছে এবং এই স্বভাবেই তারা সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য পাপ না করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। পাপপূর্ণ জীবনে বসবাস করেও তারা নিজেদেরকে সংযম রাখছে কেননা তারা একটি সমাজে বাস করছে, কারণ এই সমাজের একটি নিজস্ব সামাজিক নিয়ম আছে। কাজেই তারা ভন্ডামি করে এবং অপরের প্রতি তার বিকৃতি চেহারা প্রকাশ করে সামাজিক নিয়মেই তারা তাদের সমাজকে প্রতিষ্ঠিত করছে। লোকেরা এইভাবে থাকতে পছন্দ করে না তাদেরকে তারা মূর্খ এবং মন্দ হিসাবে আখ্যায়িত করে। মানুষ দ্যার্থহীন ভাবে একজন পাপী হয়ে জন্মায়, যেমন বাইবেল বলে, “এক মনুষ্য দ্বারা পাপ জগতে প্রবেশ করিল” (রোমীয় ৫:১২)।
 এটা ঠিক, কেউ হয়ত বলতে পারে, আমি ইতর নই। মিনিস্কাট পড়া মহিলাদের থেকে আমি আলাদা নই। সে কি সত্যই আলাদা নয়? আর চারিদিকে অনেক লোকের ভরি থাকার কারণে সে হয়ত ভান করতে পারে সে আলাদা নয়। কিন্তু যখন তার চারপাশে কেই থাকে না, তখন সে তার ইতর স্বভাব জাত পাপ না করে পারে না।
 একটা মন্দগাছ মন্দ ফল ধারণ করে কিন্তু একটি ভাল গাছ মন্দ ফল ও খারাপ জ্বীন ধারণ করতে পারে না। মানুষ অবশ্যই জানে যে সে (পুরুষ নারী) পাপী। যখন কেউ তার নিজের পাপ জানে, তখন সে যীশুর মধ্য দিয়ে পাপ থেকে উদ্ধার পেতে পারে। অন্যথায় সে (পুরুষ / নারী) ঈশ্বরের কাছে বিচারিত হবে, এবং নরকে যাবে, এমন কি সে (পুরুষ/নারী) যদি পাপ করে নাই এমন ভাব করে ও পাপ জানা সত্ত্বেও পাপ ঢেকে রাখার চেষ্টা করে তাহলেও নরকে যাবে। লোকেরা পাপী হয়েই জন্ম গ্রহণ করে। একার নেই তাদের জন্মের সময় হতেই তারা পাপী হয়ে জন্মায়, যেমন একটি মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে।
 সুতরাং, যারা শৈশব কাল থেকেই তাদের মন্দ স্বভাব ত্যাগ করতে পারে; তাদের সমস্ত জীবন আলোকিত হয়ে ওঠে। কিন্তু মন্দ স্বভাব পরিত্যাগ করতে দেরি করে তারা তাদের জীবনের গোধুলী লগ্নেও মন্দ ফল ধারণ করে। কোরিয়ার TAEGU শহরে একজন মহিলা যাজক ছিলেন। তিনি যখন তার তরুণী বয়ষে খ্রীষ্টিয়ান সম্প্রদায়ে অন্তরভুক্ত হলেন, তিনি একজন তহিলা যাজক হিসাবে প্রভুর সেবার উদ্দেশে একাকী জীবন অতিবাহিত করবেন এই উদ্দেশে নিজেকে সমর্পণ করলেন। কিন্তু ৬০ বছর বয়সে তিনি তার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে একজন মৃতপ্রায় ব্যক্তিকে বিবাহ করলেন। দেরীতে হলেও তিনি তার পাপ স্বভাব প্রকাশ করেছেন। অবশেষে ব্যভিচারে উদ্ভুত হয়েছেন।
 অধিকাংশ লোকেরই সাধারণত শৈশবকাল থেকে তাদের মন্দ স্বভাবের উম্মেষ ঘটে। এখনকার দিনে শৈশবকাল থেকেই যুবকরা মন্দ স্বভাবের দিকে ধাবিত হয়। তারা নিজেদের এবং পূর্বের প্রজম্মের মধ্যে ভিন্নতা অনুভব কর। তাদেরকে বলা হয় X- GENERATION। ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি যে আমরা জন্মগত ভাবেই পাপী এবং আমরা সারা জীবন পাপ না করে থাকতে পারি না। আপনি কি তা স্বীকার করেন?
 
 
কুষ্ঠ রোগের ব্যবস্থা
 
 দ্বিতীয়তঃ ঈশ্বর বলেন, “অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মানুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল” (রোমীয় ৫:১২)। পাপের কারণেই মানুষ ঈশ্বর দ্বারা বিচারিত হয়। তাই পাপীকে তার নিজের সম্বন্ধে জানতে হবে, এবং পাপ থেকে উদ্ধার পেতে হবে। কিভাবে (পুরুষ/নারী) নিজেকে জানতে পারে? কিভাবে ঈশ্বরের সাক্ষাতে তাঁর (পুরুষ/নারী) পাপের ক্ষমা হবে?
 লেবীয় পুস্তক ১৩ অধ্যায়ে মোশী এবং হারণকে ঈশ্বর কুষ্ঠ রোগ পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেছিলেন। পুরাতন নিয়মের যুগে অনেকে কুষ্ঠ রোগী ছিল। আমি কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে ভাল জানি না, তবে ছোট বেলায় আমি অনেক কুষ্ঠ রোগী দেখেছিলাম। আমার এক বন্ধু কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল।
 মোশী ও হারণ কুষ্ঠ রোগের পরীক্ষা করতেন এবং কুষ্ঠ রোগীকে ইস্রায়েল শিবির থেকে বের করে দিতেন। ঈশ্বর তাদেরকে কুষ্ঠ রোগীকে পরীক্ষা করার শিক্ষা দিয়েছিলেন। “যদি কোন মনুষ্যের শরীরের চর্ম্মে শোথ কিম্বা পামা কিম্বা চিক্কণ চিহ্ন হয়, আর তাহা শরীরের চৰ্ম্মে কুষ্ঠ রোগের ন্যায় হয়, তবে সে হারোণ যাজকের নিকটে কিম্বা তাহার পুত্র যাজকগণের মধ্যে কাহারও নিকটে আনীত হইবে” (লেবীয় ১৩:২)। যাজক যখন মনে করতেন যে কারও চৰ্ম্ম রোগ হয়েছ, তখন তাকে সাত দিনের জন্য সমাজ থেকে বাইরে রাখতেন। সাত দিন পর যাজক তাকে আবার পরীক্ষা করতেন। তখন যদি সেই গা বিস্তার লাভ না করত, যাজক তাকে সূচি হিসাবে স্বীকৃতি দিতেন। বলতেন, তুমি শুচি, তুমি শিবিরে থাকতে পার।
 চামড়ার ঘা যদি সাদা হত এবং লোম গুলো যদি সাদা হয়ে যেত, এবং কাঁচা মাংস যদি দেখো যেত, তাহলে সেটা কুষ্ঠ হিসাবে চিহ্নিত হত। তখন যাজক তাকে অশুচি বলে ঘোষনা দিতেন। লেবীয় ১৩:৯- ১১ পদে আছে, “কোন মনুষ্যে কুষ্ঠ রোগের ঘা হইলে সে যাজকের নিকটে আনীত হইবে। পরে যাজক দেখিবে; যদি তাহার চর্ম্মে শুক্ল - বর্ণ শোথ থাকে, এবং তাহার লোম শুক্লবর্ণ হইয়া থাকে, ও শোথে কাঁচা মাংস থাকে, তবে তাহা তাহার শরীরের চৰ্ম্মে পুরাতন কুষ্ঠ, আর যাজক তাহাকে অশুচি কহিবে; রুদ্ধ করিবে না; কেননা সে অশুচি।” যাজক তাকে ইস্রায়েল শিবির থেকে দূর করে দিতেন।
 আমাদের দেশেও একই ব্যাপার। কুষ্ঠ রোগীদের জন্য বিচ্ছিন্ন গ্রাম রয়েছে, যেমন ফ্লাওয়ার ভিলেজ, অথবা স্রোক দ্বীপ। অনেক দিন আগে যখন আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে গাড়ীতে দূরে যাচ্ছিলাম, আমরা রাস্তার পাশে “ফ্লাওয়ার ভিলেজ” সাইনবোর্ড দেখেছিলাম। আমি মনে মনে বললাম, “তুমি জান না যে ফ্লাওয়ার ভিলেজ কি।” কিন্তু মুখে বললাম, “তুমি কি সত্যিই ঐ শহরে যেতে চাও?” সে বলল, “হ্যাঁ”। যাহোক, সে তখন জানতে পারল যে ফ্লাওয়ার ভিলেজ কুষ্ঠ রোগীদের স্থান, তারপর সে আর কখনও আমাকে সেখানে যাওয়ার অনুরোধ করে নি। কুষ্ঠ রোগীরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এইসব স্থানে থাকে।
 এখানে আমাদের যে বিষয়টির প্রতি মনোযোগ দিতে হবে তা হল, -যখন কারও শরীরে কুষ্ঠ ছড়িয়ে পড়ে, যাজক তাকে শুচি বলে ঘোষনা দেন। এর কি কোন মানে হয়? সামান্য তম কুষ্ঠ ধরা পড়লেই যাজক সেই ব্যক্তিকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন। কিন্তু যখন সমস্ত শরীরে (আপাদমস্তক) কুষ্ঠ ছড়িয়ে পরে, যাজক থাকে শিবিরে থাকতে বলেন।
 কিভাবে কুষ্ঠ রোগের শ্রেণী বিভাগ করতে হবে, ঈশ্বর তা যাজকদের বলেছিলেন। “আর চৰ্ম্মের সর্ব্বত্র কুষ্ঠ রোগ ব্যাপিলে যদি যাজকের দৃষ্টি গোচরে ঘা বিশিষ্ট ব্যক্তির মস্তকাবধি পাদ পৰ্য্যন্ত সমস্ত চৰ্ম্ম কুষ্ঠ রোগে আছন্ন হইয়া থাকে” (লেবীয় ১৩:১২)। এইভাবে ঈশ্বর যাজকদেরকে কুষ্ঠ রোগের শ্রেণী বিভাগ করতে বলেছিলেন।
 
 
কুষ্ঠ রোগের ব্যবস্থার মাধ্যমে আমাদের কি বলা হয়েছে
 
 এই বিষয়টি আমাদেরকে বলা হয়েছে যে, পাপীর পাপ স্বভাব নিয়েই জন্মায় এবং সারা জীবন ধরে পাপ করে, কিন্তু অল্প লোকেই কেবল তাদের কিছু পাপ প্রকাশ করে। প্রথমে তারা তাদের হাত দিয়ে ও পা দিয়ে এবং পরে তাদের চিন্তা-চেতনা দিয়ে তা প্রকাশ করে, কাজেই বাহ্যিক ভাবে তারা তাদের পাপ স্বভাব প্রকাশ করতে পারে না যখন কুষ্ঠ ভীষন আকারে ছড়িয়ে পরে, তখন কে বলতে পারে যে এখানে একটা ক্ষত এবং ওখানে একটা ছোট ক্ষত হতে পারে? কেউই তার (পুরুষ/নারী) কুষ্ঠের লক্ষণ সমূহ বলতে পারে না।
 উত্তরাধিকার সূত্রে মানুষ জন্মগত ভাবে পাপী। সে (পুরুষ/নারী) অগণিত পাপ না করা পর্যন্ত জানে না যে, সে (পুরুষ/নারী) একজন পাপী, যদিও ঈশ্বর তাকে (পুরুষ/নারী) একজন পাপী হিসাবে ঘোষনা করেছেন। অবশেষে সে বুঝতে পারে যে, পৃথিবীতে সে একজন পাপী।
 কেউ হয়ত নিজেকে সৎ, সহিষ্ণু ভাবতে পারে, অল্প পাপ/ছোট পাপ করতে পারে, তবু সে বুঝতে পারে না যে সে একজন পাপী। সামান্য কুষ্ঠ রোগের দেখাদিলেই ঈশ্বরের নির্দশ অনুযায়ী যাজক, সেই রোগীকে অশুচি বলে ঘাোষনা করত- এবং তাকে সমাজ থেকে বের করে দিতেন। পাপীরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। আপনি কি বুঝতে পারছেন, ঈশ্বর পবিত্র। সে মনে করে গমের দানার মত তার ক্ষুদ্র পাপ রয়েছে সেও স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
 স্বর্গরাজ্যে কে বাস করতে পারে? যার সমস্ত শরীরে পাপ ছড়িয়ে গেছে এবং সে বুঝতে পারে যে সে অসম্ভাবি একজন পাপী, কেবলমাত্র সেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে। যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে তাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা হয়ে যায় এবং তারা ঈশ্বরের সাথে স্বর্গরাজ্যে রাজত্ব করবে।
 বাইবেল বলে যে, যার দেহে সামান্য কুষ্ঠ রয়েছে ঈশ্বর তাঁকে অশুচি হিসাবে গন্য করেন। ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি বারবার পাপ করতে থাকে এবং যে নিজেকে একজন পাপী হিসাবে স্বীকার করে, ঈশ্বর তাকে আহবান করেন। যীশু বলেন, “কিন্তু তোমরা গিয়া শিক্ষা কর, এই বচনের মর্ম্ম কি, “আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়” কেননা আমি, ধার্মিকদিগকে নয়, কিন্তু পাপী দিগকে ডাকিতে আসিয়াছি।” (মথি ৯:১৩)। ঈশ্বর পাপীদেরকে আহবান করেন এবং তাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেন। ঈশ্বর ইতি পূর্বেই একবারে চিরতরে তাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেছেন। যীশু বাপ্তিস্মের মাধ্যমে, ক্রুশে বিচারিত হওয়ার মাধ্যমে তাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং পুনরুত্থানের মাধ্যমে তাদেরকে ধার্মিক করেছেন, যেন তারা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারে।
 
 
আমাদেরকে অবশ্যই নিজেদের জানতে হবে
 
 আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে যে, আমরা সম্পূর্ণ পাপী, না কি আংশিক পাপী। যখন রোগীর সমস্ত শরীরে এবং চামড়ায় কুষ্ঠ রোগ ছড়িয়ে যায়, তখন ঈশ্বর তাকে শুচি ব্যক্তি বলে ঘোষনা দেন। ঈশ্বর এইভাবে কুষ্ঠ রোগের ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। যখন কেউ বুঝতে পারে যে সে পাপে পরিপূর্ণ, তখন সে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস এবং পাপের ক্ষমা গ্রহণ না করে পারে না, যখন যীশু তার (পুরুষ/নারী) সমস্ত পাপ ধৌত করেছেন। কাজেই, একজন আংশিক পাপী যে চিন্তা করে সে (পুরুষ/নারী) পাপে পূর্ণ নয় সে সুসমাচারকে উপহাস করে।
 যীশু তাদেরকে এই ভাবে ধৌত করার পরেও কি তাদের পাপ থাকতে পারে? না।একজন হতেই আমরা সকলে পাপের ক্ষমা পেয়েছি। এজন্য একজন পাপীর নিজের সম্বন্ধে জানতে পারে, তখন সে (পুরুষ/নারী) সমস্ত পাপ পরিত্যাগ করতে পারে। মানুষ কেবলমাত্র তাদের ছোট ছোট পাপ গুলো ঈশ্বরের সাক্ষাতে নিয়ে আসে। “প্রভু, আমি পাপ করেছি আমি এটা করতে চাই নি, কিন্তু সে এটা করতে আমাকে বাধ্য করেছে। অনুরোধ করি এজন্য তুমি আমাকে ক্ষমা কর, আমি আর কখনও এই পাপ করব না।” তারা ঈশ্বরের সম্মুখে ছোট ছোট পাপ নিয়ে আসে ঈশ্বর তখন বলেন, “তুমি অপবিত্র।”
 ঈশ্বরের সাক্ষাতে মানুষের কোন ধার্মিকতা নাই। থাকুক বা না থাকুক, ঈশ্বর এটা আপনার উপর নির্ভর করে। আমি একজন পাপী এবং নরক যাোগ্য। অনুরাোধ করি আপনার যা ইচ্ছা হয় তাই করুন, কিন্তু ঈশ্বর, আমার উপর দয়া করুন এবং আমাকে উদ্ধার করুন। আপনি যদি ঈশ্বর হন, আমাকে উদ্ধার করুন। তাহলে আপনাকে আমি বিশ্বাস করব এবং আপনার ইচ্ছানুসারে জীবন-যাপন করব। যিনি (পুরুষ/নারী) সম্পূর্ণরূপে পাপে পতিত, ঈশ্বর তাকেই উদ্ধার করবেন।
 
 
মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে চেতনায় ১২ রকমের
 
 চলুন আমরা মার্ক ৭:২০-২৩ পদে দেখি। “তিনি আরও কহিলেন, মনুষ্য হইতে যাহা বাহির হয়, তাহাই মনুষ্যকে অশুচি করে। কেননা ভিতর হইতে, মনুষ্যদের অন্তঃকরণ হইতে কুচিন্তা বাহির হয়-বেশ্যাগমন,চৌর্য্য , নরহত্যা, ব্যভিচার, লাঐ, দুষ্টতা ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান ও মর্খতা; এই সকল মন্দ বিষয় ভিতর হইতে বাহির হয়, এবং মনুষ্যকে অশুচি করে।” মানুষের হৃদয় থেকে যে মন্দ চিন্তা সমূহ বের হয়। এই জন্যই স্বভাবত মানুষ উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ করে। আপনি কি বুঝতে পারছেন? একজন সারা জীবন ধরে কু-চিন্তা করছে। তার (পুরুষ/নারী) উদ্ধার পাওয়া কোন পথই নাই, যদি তার (পুরুষ/নারী) সমস্ত পাপ চিরদিনের জন্য ক্ষমা না হয়। 
 মানুষ এই ১২ প্রকারের মন্দ চিন্তা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে যেমনঃ- বেশ্যাগমন, চৌর্য্য, নরহত্যা, ব্যভিচার, লোঐ, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান, ও মুখতা। এইজন্য, সে (পুরুষ/নারী) অবিরত পাপ না করে পারে না। যে ব্যক্তি পাপে জীবন-যাপন করেছে যার পাপ ক্ষমা করা হয়নি, সে (পুরুষ/নারী) এই ভাবে বেঁচে থাকতে চায় না। মানুষের ভিতরের এই সমস্ত মন্দ চিন্তা-চেতনা এবং মন্দ স্বভাব গুলোই ঈশ্বরের সম্মুখে পাপ। 
 ভাল হওয়া একজন পাপীর জন্য ভন্ডামির মত। সে (পুরুষ/নারী) নিজেকে ধার্মিক হিসাবে জাহির করতে পারে এটা ঈশ্বরের সাথে প্রতারণা করার মত। মানুষ পাপী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে এবং জানে যে তাদেরকে (পুরুষ/নারী) উদ্ধার পেতে হবে। যাহোক, যদি কারও নিজের সম্বন্ধে এই জ্ঞান না থাকে যে সে পাপে পরিপূর্ণ, তবুও পাপ করার সময় সে (পুরুষ/নারী) হতাশার সাথে বলে, “হায়! হায়! কেন আমি এই কাজ করছি?” সে (পুরুষ/নারী) নিজের দ্বারাই প্রতারিত হয়।
 মানুষের মধ্যে মন্দ চিন্তা চেতনা রয়েছে। একজন মানুষ চিন্তা করতে পারে যে, “কেন আমি মন্দ চিন্তা করি? না, আমার এসব চিন্তা করা উচিত নয়। কেন আমি নোংরা বিষয় নিয়ে চিন্তা করি? আমার শিক্ষক আমাকে ভাল কিছু করতে বলেছেন।” সে এই রকম চিন্তা করে, কেননা সে জানেনা যে, কেন এ রকম করছে। সে চুরি এবং ব্যভিচারের মত পাপ করার কারণেই নিদারুন যন্ত্রণা অনুভব করছে, কেননা সে জানে না যে সে উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ করছে। নরহত্যা, ব্যভিচার চৌর্য্য, দুষ্টতা, ছল, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, নিন্দা, অভিমান এবং মূর্খতা অবিরামভাবে তার ভেতর থেকে বার বার বেরিয়ে আসে। সুতরাং, সে কারণ না জেনেই নিজেকে ঘৃণা করছে এবং লজ্জা অনুভব করছে।
 আমরা আমাদের সারা জীবন ধরে অসংখ্য পাপ এবং বার রকমের মন্দতার ফল বহন করে চলেছি, কেননা আমরা পাপী হয়ে জন্ম গ্রহণ করেছি এবং আমাদের পূর্ব পুরুষ আদম হতে উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ করছি। তারাই আশীর্বাদ প্রাপ্ত, যারা জানে যে, তারা পাপী।
 মানুষ যখন জানতে পারে যে, সে(পুরুষ/নারী) অযোগ্য পাপী এবং যীশু, যিনি উদ্ধারকর্ত্তারূপে তাকে (পুরুষ/নারী) তার (পুরুষ/নারী) সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন; তখন সে (পুরুষ/নারী) যীশুকে পাবার চেষ্টা করে। ঈশ্বরের কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার এটাই একমাত্র পথ। কাজেই সে (পুরুষ/নারী) যদি নিজেকে (পুরুষ/নারী) জানতে না পারে, তাহলে সে (পুরুষ/নারী) মুক্তিদাতা /উদ্ধারকর্ত্তাকে পেতে পারে না। যে ব্যক্তি নিজেকে (পুরুষ/নারী) ভাল ভাবে জানে, সে নিজেকে (পুরুষ/নারী) অস্বীকার করে, তার (পুরুষ/নারী) মন্দতা পরিত্যাগ করে মানুষের উপর নির্ভরতা পরিত্যাগ করে, যীশু খ্রীষ্টকে পাওয়ার চেষ্টা করে, যিনি ঈশ্বরের মুক্তিদাতা এবং ভাববাদী, এবং যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে।
 পাপীদের তাদের নিজেদেরকে জানা প্রয়োজন, কেননা যারা নিজেদেরকে জানেনা, তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে আশীর্বাদ পারে। যে কেউ নিজেকে জানে না, সে আশীর্বাদ পেতে পারে না। অতএব পাপীদেরকে অবশ্যই জানাতে হবে, তারা কেমন। আপনি কি বুঝতে পারছেন? পাপের ক্ষমা গ্রহণের পূর্বে আপনি কি কখনও মন্দ কিছু করেছেন? যদি আপনি করে থাকেন, আপনি কি জানেন কেন করেছেন? আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আপনি মন্দ কার্য্য করেছেন, কেননা আপনি উত্তরাধিকার সূত্রে পাপী।
 
 
একজন মানুষের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাপ এবং পাপের মাধ্যমে মৃত্যু প্রবেশ করেছে
 
 মানুষের জন্য মৃত্যু অপরিহার্য, কেননা তাদের পাপ রয়েছে। পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য মানুষকে যীশুর সঙ্গে মিলিত হওয়া এবং তাঁকে পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত, যেন তার (পুরুষ/নারী) পাপ মুছে ফেলতে পারে। তাহলে সে (পুরুষ/নারী) অনন্তকালীন জীবন পেতে পারে। আপনি কি আপনার সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার পেতে চান?
 “তথাপি যাহারা আদমে আজ্ঞালঙ্ঘনের সাদৃশ্যে পাপ করে নাই, আদম অবধি মোশী পৰ্য্যন্ত তাহাদের উপরেও মৃত্যু রাজত্ব করিয়াছিল। আর আদম সেই ভাবী ব্যক্তির প্রতিরূপ। কিন্তু অপরাধ যেরূপ, অনুগ্র-দানটি সেরূপ নয়। কেননা একের অপরাধে যখন অনেকে মরিল, তখন ঈশ্বরের অনুগ্রহ এবং আর এক ব্যক্তি- যীশু খ্রীষ্টের- অনুগ্রহে দত্ত দান, অনেকের প্রতি আরও অধিক উপচিয়া পড়িল। আর, এক ব্যক্তি পাপ করাতে যেমন ফল হইল, এই দান তেমন নয়; কেননা বিচার এক ব্যক্তি হইতে দন্ডাজ্ঞা পর্যন্ত, কিন্তু অনুগ্রহ-দান অনেক অপরাধ হইতে ধার্মিক- গণনা পর্যন্ত। কারণ সেই একের অপরাধে যখন সেই একের দ্বারা মৃত্যু রাজত্ব করিল, তখন সেই সেই আর এক ব্যক্তি দ্বারা, যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা, যাহারা অনুগ্রহের ও ধার্মিকতা-দানের উপচয় পায়, তাহারা কত অধিক নিশ্চয় জীবনে রাজত্ব করিবে। অতএব যেমন এক অপরাধ দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে দন্ডাজ্ঞা পর্যন্ত ফল উপস্থিত হইল, তেমনি ধার্মিকতার একটি কাৰ্য্য দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে জীবন-দায়ক ধার্মিক-গণনা পৰ্য্যন্ত ফল উপস্থিত হইল। কারণ যেমন সেই এক মনুষ্যের অনাজ্ঞাবহতা দ্বারা অনেককে পাপী বলিয়া ধরা হইল, তেমনি সেই আর এক ব্যক্তির আজ্ঞাবহতা দ্বারা অনেককে ধার্মিক বলিয় ধরা হইবে। আর ব্যবস্থা তৎপরে পার্শ্বে উপস্থিত হইল, যেন অপরাধের বাহুল্য হয়; কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল; যেন পাপ যেমন মৃত্যুতে রাজত্ব করিয়াছিল, তেমনি আবার অনুগ্রহ ধার্মিকতা দ্বারা, অনন্ত জীবনের নিমিত্ত, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা রাজত্ব করে” (রোমীয় ৫:১৪-২১)।
 ‘‘অতএব যেমন এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারের মৃত্যু সমুদয় মানুষের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল” (রোমীয় ৫:১২)। এখানে, কে সেই একজন মানুষ? আদম। হবা হতে একজন মানুষ হতে এসেছেন, আদম। এজন্য বাইবেল বলে, “একজন মনুষ্য হতে।” শুরুতেই ঈশ্বর একজন মনুষ্য সৃষ্টি করেছেন, এবং এই মনুষ্যের মধ্য দিয়েই পৃথিবীতে পাপ প্রবেশ করেছে। আমাদের সৃষ্টিতে এদোন বাগানে তখন দুই জন মাত্র ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু এমন হতে পারে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে একজন ব্যক্তি ছিলেন। একজন মানুষ, আদম থেকেই মানুষের জীবন চক্র বিস্তার লাভ করেছে।
 এই বাক্যটি, “একজন মানুষের দ্বারাই পৃথিবীতে পাপ প্রবেশ পাপ করছে।” অর্থাৎ আদমের বংশ উদ্ভুত সকলেই পাপী, কেননা আদম পাপ করেছে। সকলের মধ্যে মৃত্যু প্রবেশ করেছে, কেননা সকলেই পাপ করেছে। পাপের কারণে সকলেইর মৃত্যু দন্ডাজ্ঞা হয়েছে। এ কারণে যার পাপ আছে ঈশ্বর তাকে পরিত্যাগ করতে পারেন না।
 ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, কিন্তু তিনি দুইটা জিনিস করতে পারেন না তিনি মিথ্যাও বলতে পারে না, কাউকে পাপ নিয়ে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতেও দিতে পারেন না। যেহেতু তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, তাই তিনি তাঁর ব্যবস্থার কার্য সম্পাদন করবেন। যারা পাপ আছে ঈশ্বর অবশ্যই তার বিচার করবেন, কেননা ঈশ্বর নিজেই যা তৈরী করেছেন তিনি তা অবজ্ঞাও করতে পারেননা, মিথ্যাও বলতে পারেন না। আদম, একজন মানুষ যারা দ্বারা সকলেই পাপী হয়েছে, পতিত হয়েছে এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপ করেছে। ঈশ্বরের বিচারে সকলের উপরে মৃত্যু বিস্তার করেছে, কেননা তারা একজন মানুষ আদমের বংশানুক্রমে পাপী হয়ে জন্মগ্রহণ করেছে। এইরূপে মৃত্যু সমস্ত কিছুর উপর বিস্তার লাভ করেছে। 
 আদিতে ঈশ্বর যখন মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন, তখন কোন মৃত্যু ছিল না। যেখানে কেবল ভাল এবং মন্দের জ্ঞানদায়ক বৃক্ষই ভল ছিল না, কিন্তু জীবনদায়ক বৃক্ষ ও ছিল। যাহোক, আদম শয়তানের দ্বারা প্রলোভিত হয়েছিল এবং ভাল মন্দের জ্ঞানদায়ক বৃক্ষের ফল খেয়েছিল, যা ঈশ্বর তাকে নিষেধ করছিলেন, যেন সে ঐ বৃক্ষের ফল ভোজন না করে এবং ঈশ্বরকে এবং তাঁর বাক্যের পরীক্ষা না করে, এভাবেই পৃথিবীর সমস্ত মানুষের উপর পাপে মৃত্যু বিস্তার লাভ করেছে। একজন মানুষ আদমের দ্বারাই পৃথিবীতে পাপ প্রবেশ করেছে। 
 
 
ঈশ্বর কেন মানুষকে ব্যবস্থা দিয়েছিলেন?
 
 আদমের মাধ্যমে পৃথিবীতে যদি পাপ প্রবেশ না করত, তাহলে সমস্ত মানব জাতির কাছে মৃত্যু প্রকাশিত হত না। একজন মানুষ কেন মৃত্যু বরণ করে? পাপের কারণেই সে মরে। পাপ একজন মানুষের ভিতর দিয়ে পৃথিবীতে প্রবেশ করেছিল, তাই মৃত্যু সমস্ত লোকের জন্য ব্যপৃত। যখন ব্যবস্থা ছিল না, তখন পাপ পৃথিবীতে ছিল, কিন্তু ব্যবস্থা না আসা পর্যন্ত পাপ সম্পর্কে মানব জাতির কোন জ্ঞান ছিল না। 
 মোশীর মাধ্যমে সমস্ত মানুষের জন্য ব্যবস্থা নেমে এসে ছিল। যদিও আদম ও নোহের সময়ে পাপ ছিল কিন্তু ঈশ্বর মোশীর সময় না আসা পর্যন্ত ব্যবস্থা স্থাপন করেন নি। যা হোক, বাইবেল বলে যে, ঐ সময় যারা বেঁচে ছিল তাদের প্রত্যেকের অন্তরে পাপ ছিল ।
 আসুন আমরা রোমীয় ৫:১৩ পদ দেখি “কারণ ব্যবস্থার পূর্ব্বেও জগতে পাপ ছিল; কিন্তু ব্যবস্থা না থাকিলে পাপ গণিত হয় না।” পৃথিবীতে যখন ব্যবস্থা ছিল না, এমন কি তখন পৃথিবীতে পাপ ছিল না। অতএব, সমস্ত লোককে মরতে হয়েছিল, কারণ ঈশ্বরের সাক্ষাতে সকলেই পাপী ছিল। ঈশ্বর তাঁর সাক্ষাতে পালানার্থে মানুষের মধ্যে ৬১৩ প্রকারের আজ্ঞা সম্বলিত ব্যবস্থা দিলেন তাদেরকে পাপের জ্ঞান প্রদান করনার্থে। ঈশ্বর ব্যবস্থার মাধ্যমে লোকেরা কি জানতে পারল? আরা অনুধাবন করল যে, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তারা পাপে পূর্ণ এবং জানতে পারল যে তাদের পাপ ছিল। লোকেরা অনুধাবন করেছিল যে, তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে পারছিল না। সুতরাং তারা তাদের পাপ চিনতে পেরেছিল। আদমের বংশধরেরা জানত যে, তারা পাপী এবং শুধু ঈশ্বরই তাদের পাপ ক্ষমা করেন। কিন্তু তারা তাদের পূর্ব পুরুষ আদম হতে পাপী এবং পরবর্তীতে আরো পাপী হওয়াতে সেটা ভুলে গিয়েছিল। ঐ সময়ে তারা জানত যে, তারা যখন পাপ করে তখন তারা পাপী, কিন্তু তারা জানত না যে, যখন তারা পাপ না করে তখন ও তারা পাপী। কিন্তু তাদের ভুল ছিল। এই দিনগুলোতে অনেক লোক ভাবত, তারা যদি পাপ করে তাহলে তারা পাপী হবে এবং তারা যদি পাপ না করে তাহলে তারা পাপী হবে না। বস্তুতঃ পাপ করুক বা না করুক, সমস্ত লোকই পাপী, কারণ তারা জন্মের থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ লাভ করো।
 মানবজাতি অবশ্যম্ভাবী পাপী, কারণ তারা পাপ থেকে জাত। তাই পাপের জ্ঞান জন্মাতে ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা দিয়েছেন। একজন ব্যক্তি যদি ব্যবস্থার মাধ্যমে ঈশ্বরকে জানে এবং ব্যবস্থাকে স্বীকার করে, তাহলে সে (নারী/পুরুষ) একটি পাপের গহবর। একজন মানুষ যত শীঘ্র ব্যবস্থা জানবে, তত শীঘ্রই সে একজন ভয়ানক পাপী হয়ে যাবে।
 
 
একজন মানুষের মধ্য দিয়ে মৃত্যু সমস্ত মানুষের কাছে বিস্তার লাভ করল
 
 রোমীয় ৫:১৩-১৪ পদে বলা হয়েছে, “কারণ ব্যবস্থার পূৰ্ব্বেও জগতে পাপ ছিল; কিন্তু ব্যবস্থা না থাকিলে পাপ গণিত হয় না। তথাপি যাহারা আজ্ঞালঙ্ঘনের সাদৃশ্যে পাপ করে নাই, আদম অবধি মোশি পর্য্যন্ত তাহাদের উপরেও মৃত্যু রাজত্ব করিয়াছিল। আর আদম সেই ভাবী ব্যক্তির প্রতিরূপ” ঈশ্বর বলেন যে, একজন মানুষের মাধ্যমে সমস্ত মানুষ পাপী হয়েছে এবং একজন মানুষের মাধ্যমে মৃত্যু বিস্তার লাভ করেছে। এটা একজন মানুষের কারণেই। এই একজন মানুষটি কে? আমরা সবাই এটা জানি। কিন্তু অনেক মানুষ এটা জানে না। এমনকি অনেক খ্রীষ্টিয়ান এটা জানে না। তারা পাপকে দুই ভাগে পৃথক করে, আদি পাপ এবং বর্তমান পাপ, এবং তারা মনে করে যে, তাদের বর্তমান পাপগুলো প্রতিদিনের অনুতাপের প্রার্থনার দ্বারা ক্ষমা হতে পারে। তারা জানে না যে, তারা আদমের কারণে বিচারিত হবে এবং নরকে যাবে।
 
 
যে আদমকে আসতে হয়েছিল, তিনি তাঁর প্রতিমূর্ত্তির
 
 এটা লেখা আছে যে, যে আদমকে আসতে হয়েছিল, তিনি ছিলেন তাঁর সদৃশ। একজনের মাধ্যমে সমস্ত মানুষ পাপী হয়েছিল এবং মৃত্যু তাদের কাছে এসেছিল। যাহোক, একজন আদমের মাধ্যমে যেমন সমস্ত মানুষ পাপী হয়, তেমনি একজন যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতি ধার্মিক গণিত হয়। এটা ঈশ্বরের ব্যবস্থা।
 লোকেরা ধার্মিক গণিত হয়েছে, কারণ তারা ঈশ্বরের ব্যবস্থা জানত না। তারা বলে যে, যদিও তারা যীশুতে বিশ্বাস করে, মুক্তি পাওয়ার জন্য তাদের ভাল কাজ করা উচিত। কিভাবে এটা পৃথিবীতে ব্যপকভাবে বিস্তৃত এবং কিভাবে তারা প্রায়ই মিথ্যা বলে। তারা লোকদের শিক্ষা দেয়, বলে, “খ্রীষ্টিয়ানদের মত আপনার ভাল হওয়া উচিত।” কাজের দ্বারা কখনও আমাদের পাপ মোচন হয় না।
 “ যে আদমকে আসতে হয়েছিল, তিনি তাঁর প্রতিমূৰ্ত্তির।” পাপ থেকে আমাদের পরিত্রাণের জন্য কোন মানুষটিকে আসতে হয়েছিল? তিনি যীশু খ্রীষ্ট। যীশুকে পৃথিবীতে পাঠান হয়েছিল এবং ব্যবস্থা অনুযায়ী বাপ্তিস্মের দ্বারা তিনি পৃথিবীর সমস্ত পাপ তৎক্ষনাৎ এবং অনন্তকালের জন্য তুলে নিলেন, আমাদেরকে ধার্মিক করতে এবং আমাদেরকে বিচার থেকে মুক্ত করতে ক্রুশারোপিত হয়েছিলেন।
 পৃথিবীতে পাপ প্রবেশ করেছিল কারণ একটি সৃষ্টি, শয়তান আদমকে ভুলিয়েছিল। পাপ আদমের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে প্রবেশ করল। যাহোক, যীশু খ্রীষ্ট, মুক্তদাতা, সৃষ্টিকর্তা এবং রাজাদের রাজা, যিনি সর্বশক্তিমান, তাঁকে মানুষের বেশে সমস্ত মানবজাতিকে তাদের পাপ থেকে তৎক্ষনাৎ এবং অনন্তকালের জন্য মুক্ত করতে পাঠান হয়েছিল। তিনি পৃথিবীর সমস্ত পাপ তৎক্ষনাৎ এবং অনন্তকালের জন্য মুছে দিয়েছিলেন। তিনি বাপ্তিস্মের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত পাপ তাঁর উপরে নিলেন এবং ক্রশারোপিত হয়ে তৎক্ষনাৎ এবং অনন্তকালের জন্য পাপের মূল্য পরিশোধ করলেন। 
 একজন মানুষের পাপ যত গভীর হোক না কেন, যদি সে (নারী/পুরুষ) বিশ্বাস করে যে, যীশুকে সমস্ত পাপ মোচনের জন্য পাঠান হয়েছিল, তাহলে সে পাপ মোচন এবং নূতন জীবন লাভ কর। ঈশ্বর স্বর্গ এবং পৃথিবীর সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান নিয়েছিলেন আমাদেরকে তাঁর সন্তান করার জন্য। তিনি পৃথিবীতে এসেছেন এবং যথাযথভাবে তাঁর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছেন। সুতরাং অবশ্যই আমাদের কোন পাপ নেই। ঈশ্বর কখনই ভুল করেন নাই। যীশু ছিলেন তাঁর সদৃশ, যাকে আসতে হয়েছিল। আমি বুঝি না না লোকেরা কেন তাদের নিজেদের কর্মের উপরে নির্ভর করে। সত্যই আমাদের পরিত্রাণ যীশুর উপরে নির্ভরশীল। মানুষজাতি এক আদমের মাধ্যমে পাপী হয়েছিল, এবং একজন মানুষ যীশুর মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে।
 একটি মাত্র জিনিসই আমাদের করা উচিত, তাহল, পাপ মুক্তির পরিত্রাণে বিশ্বাস করা। এটাই একমাত্র জিনিস যা আমরা করতে পারি। আমাদের কিছুই করার নেই, কিন্তু এই বিষয়ে আনন্দ করি যে, যীশু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন। এইভাবে, কেন আপনি অন্যদেরকে ঈর্ষান্বিত ভাল করতে বাধ্য করবেন? লোকেরা কি তাদের কাজের মাধ্যমে তাদের পাপ থেকে মুক্তি পেতে পারে? না। পরিত্রাণ কেবলমাত্র পাপ মোচনে বিশ্বাসের উপরে নির্ভর করে।
 
 
অপরাধ যেরূপ, অনুগ্ৰহদানটি সেরূপ নয়
 
 রোমীয় ৫:১৪-১৬পদে বলা হয়েছে, “তথাপি যাহারা আদমের আজ্ঞালঙ্ঘনের সাদৃশ্যে পাপ করে নাই, আদম অবধি মোশি পর্যন্ত তাহাদের উপরেও মৃত্যু রাজত্ব করিয়াছিল। আর আদম সেই ভারী ব্যক্তির প্রতিরূপ। কিন্তু অপরাধ যেরূপ, অনুগ্রহ-দানটি সেরূপ নয়। কেননা সেই একের অপরাধে যখন অনেকে মরিল, তখন ঈশ্বরের অনুগ্রহ, এবং আর এক ব্যক্তির-যীশু খ্রীষ্টের-অনুগ্রহের দত্ত দান, অনেকের প্রতি আরও অধিক উপচিয়া পড়িল। আর, এক ব্যক্তি পাপ করাতে যেমন ফল হইল, এই দান তেমন নয়; কেননা বিচার এক ব্যক্তি হইতে দন্ডাজ্ঞা, কিন্তু অনুগ্রহ-অনেক অপরাধ হইতে ধার্মিক গণনা পৰ্য্যন্ত।”
 এই অনুচ্ছেদের অর্থ কি? বাইবেল বলে, “অপরাধ যেরূপ, অনুগ্রহ-দানটি সেরূপ নয়।” পরিত্রাণ ঈশ্বরের অনুগ্রহ-দান। এর অর্থ হল, সমস্ত মানুষ আদমের মাধ্যমে উত্তরাধিকার সূত্রে পাপী এবং তাদের গন্তব্য নরক, কিন্তু যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে তাদের পাপ বাছবিচারহীনভাবে ক্ষমা হতে পারে, যিনি তাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন। এর আরও অর্থ হল, যীশু ইতিমধ্যে আমাদের ভবিষ্যতের পাপও মুছে দিয়েছেন।
 একজন মানুষ যে আদমের বংশধর হিসাবে জন্মগ্রহণ করে, সে যদি পাপ নাও করে, তথাপি সে পাপী। অতএব, যদি সে পাপ নাও করে তথাপি সে (নারী/পুরুষ) নরকে যাওয়া এড়াতে পারবে না। যীশু পৃথিবীতে এসেছেন এবং আমাদের মুক্তিদাতা হয়েছেন। অনুগ্রহ- দানটি হচ্ছে, যীশু আমাদের পাপের প্রয়োজনাতিরিক্তরূপে মোচন করেছেন, যা লোকেরা পৃথিবীর শেষাবধি অবিরত করে যেত।
 অতএব, একজন মানুষের অপরাধের চেয়ে একজন মানুষের অনুগ্রহ-দান মহৎ। যদি কেউ ঈশ্বরের বিরুদ্ধে একটি পাপ করে, তবে ঈশ্বরের সম্মুখে বিচারিত হতে এবং নরকে যেতে তার (নারী/পুরুষ) ঐ একটি পাপই যথেষ্ট। যাহোক, প্রভুর অনুগ্রহ-দান, যিনি ইতিমধ্যে আমাদের সমস্ত পাপ অপরাধ মুছে দিয়েছেন, সেটা একজন মানুষের অপরাধের চেয়ে মহৎ।
 এর কারণ হল যীশু, প্রেম এবং পাপ মোচনের অনুগ্রহ-দান, যা সমগ্র মানবজাতির অপরাধের চেয়ে মহৎ। প্রভু পর্যাপ্তরূপে সমস্ত পৃথিবীর পাপ মুছে দিয়েছেন। যীশুর প্রেম, যিনি আমাদিগকে রক্ষা করেছেন, এবং পরিত্রাণের অনুগ্রহ-দান একজন মানুষের কৃত অপরাধের চেয়ে মহৎ এবং প্রয়োজনাধিক। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পাপ, এমনকি যদিও আমরা আমাদের মাংস দ্বারা আমরা তাঁর বিপক্ষে, তথাপি প্রভু ইতিমধ্যে সেগুলো মুছে দিয়েছেন। এখন প্রভুর প্রত্যাশা, আমরা যেন বিশ্বাস করি যে, তিনি এই মুহুর্তে পৃথিবীর সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন। এই জন্যই তিনি পাপীদের তাদের পাপ থেকে রক্ষা করেছেন, ঈশ্বরের মেষশাবকের মত, যিনি পৃথিবীর সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন।
 যে তত্ত্বটি বলে যে, যখন আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তখনই আমাদের পাপ মুছে যায় এবং যখন বিশ্বাস করি না, তখন পাপ মুছে যায় না। এটা অসত্য।ঈশ্বর অবিশ্বাসীদের পাপও মুছে দিয়েছেন, কারণ তিনি পৃথিবীর সমস্ত লোককে ভালবাসেন, এমনকি যে ঈশ্বরের প্রেম গ্রহণ করতে না চায় তাকেও। কেউই ঈশ্বরের প্রেম এবং পরিত্রাণের বাইরে নয়। যারা সুসমাচারের সত্য বিশ্বাস করে, ঈশ্বরের পরিত্রাণ তাদের উপরে আসে, যাতে বলা হয়েছে যে, যীশু আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন।
 আমরা এরূপ দূর্বল প্রাণী। যারা বিশ্বাস করে যে, যীশু সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন, ঈশ্বর তাদেরকে নিষ্পাপ গণনা করেন। এমনকি আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা হবার পরেও আমাদের মাংসে অনেক দূর্বলতা এখনও রয়েছে। অনেকবার আমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করি এবং যখন আমরা তাঁর ইচ্ছানুযায়ী চলতে রাজি না হই, তখন আমরা তাঁর ধার্মিকতা ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু ঈশ্বর বলেন, “আমি তোমাকে ভালবাসি এবং রক্ষা করেছি। তুমি এই মুহুর্ত পর্যন্ত যে পাপ করেছ তা ইতিমধ্যে আমি মুছে দিয়েছি।” “আহ! প্রভু, এটা কি সত্য?” “হ্যাঁ, আমি সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি।” “ধন্য প্রভু। আমি তোমার প্রশংসা করি। আমি তোমার প্রশংসা করে তোমাকে সন্তুষ্ট করতে পারি না, কারণ তুমি আমাকে এত ভালবেসেছ যে, তোমাকে অস্বীকার করার পাপও তুমি মুছে দিয়েছ।”
 যারা পাপী হয়েছিল, তারা ধার্মিক হয়েছে এবং প্রেমের দাস হয়েছে। তারা নিজেদেরকে তাঁর প্রেমের কাছে সমর্পণ করেছে। তারা যীশুকে সন্তোসজনক বিশ্বাস করতে পারে না, কারণ প্রভু তাঁকে অস্বীকার করার পাপ মুছে দিয়েছেন, এমনকি তাদের দূর্বলতার কারণে যদিও তারা তাঁকে অস্বীকার করে, ঠিক পিতর যেমন করেছিল, এটা তাদেরকে প্রভুকে প্রশংসা করা শিখায়। তাই প্রেরিত পৌল বলেন যে, একজন মানুষের অপরাধের চেয়ে ঈশ্বরের পরিত্রাণ মহৎ।
 উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া আদিপাপ এবং পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত আমাদের কর্মের দ্বারা যে আসল পাপ করি, যীশু সমস্ত পাপই তুলে নিয়েছেন। সুতরাং, ঈশ্বরের প্রেম কত মহৎ! তাই বাইবেলে প্রকাশিত হয়েছে, “ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক, যিনি জগতে পাপভার লইয়া যান”(যোহন ১:২৯)।
 
 
একজন, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ধার্মিকেরা জীবনে রাজত্ব করবে
 
 অনুতাপের প্রার্থনার মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত পাপের ক্ষমা হতে পারে না। বিশ্বাসীদের আর কোন পাপ নেই এবং সমস্ত পাপ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে, কারণ প্রভু ইতিমধ্যে ভবিষ্যতে যে পাপ করবে, সেই সব পাপ পরিহার করেছেন। রোমীয় ৫:১৭ পদে বলা হয়েছে, “কারণ সেই একের অপরাধে যখন সেই একের দ্বারা মৃত্যু রাজত্ব করিল, তখন সেই আর এক ব্যক্তি দ্বারা, যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা, যাহারা অনুগ্রহের ও ধার্মিকতা-দানের উপচয় পায়, তাহারা কত অধিক নিশ্চয় জীবনে রাজত্ব করিবে।”
 আমরা অনুগ্রহের মধ্য দিয়ে আশীর্বাদযুক্ত হয়েছি। তারা কারা, যারা অনুগ্রহের প্রাচুর্য এবং ধার্মিকতার অনুগ্রহ-দান লাভ করেছে? তারা ঐ সকল, যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে এবং তাঁহাতে বিশ্বাসের দ্বারা যাদের পাপ ক্ষমা হয়েছে। আমরা প্রভুর ধন্যবাদ করি, কারণ আমরা পাপ মোচনের অনুগ্রহ-দানের প্রাচুর্য লাভ করেছি। “যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা যাহারা অনুগ্রহ ও ধার্মিকতা দানের উপচয় পায়, তাহারা কত অধিক নিশ্চয় জীবনে রাজত্ব করিবে।” আমরা রাজা, যারা জীবনে রাজত্ব করি।
 একমাত্র রাজাই রাজত্ব করেন। আমরা এখন রাজত্ব করি। কে রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে? আমরা যারা ধার্মিকতার অনুগ্রহের দানের উপচয় পেয়েছি, প্রতিদিন রাজত্ব করি। আমরা আজও রাজত্ব করি এবং আমরা আগামীকাল ও রাজত্ব করব। যে কেহ আমাদের রাজত্বের অনুহগ্রহ প্রদর্শন করে তারা আশীর্বাদ যুক্ত এবং আমাদের সাথে রাজা হতে পারে। যাহোক, রাজা যা প্রচার করেন, যে কেহ এই সত্য সুসমাচার বিশ্বাস না করে, সে নরকে যাবে।
 পৃথিবীতে অনেক রাজা ছিল। যারা রক্ষা পেয়েছিলেন এবং অনেক লোক ছিল, যারা নরকে গিয়েছিল, কারণ তারা রাজাদের বিপক্ষ ছিল। রাজাদের প্রতি তাদের দয়ালু হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা তা করে নি। তারা রাজা হতে পারত। যদি তাদের অন্তরে এবং সত্যের চোখ থাকত।
 আপনি কি রাজত্ব করেন? পৃথিবীর রাজা হওয়ার হওয়াতে আমরা আত্মবিশ্বাসীর সাথে শ্লাঘা করি। আমরা ঘোষনা করি যে, যখন আত্মবিশ্বাসীরা আমাদের বিরদ্ধে যুদ্ধ করবে, তারা নরকে যাবে। একমাত্র রাজারা এটা করতে পারে। আমরাই সত্যিকারের রাজা। এমন কেউ কি আছে যে, ধার্মিকদের মধ্যে রাজত্ব করে না? রাজার ন্যায় রাজত্ব না করা আমাদের পক্ষে ধৃষ্টতা। একজন রাজার রাজত্ব করতে হয় রাজার ন্যায়। “আপনার ধারণা ভুল। আপনি যদি এই সত্য গ্রহণ না করেন, আপনি নরকে যাবেন।” একজন রাজার আচরণ একজন রাজার ন্যায় হয়। একজন রাজা অবশ্যই মহীয়ান হন এবং পাপীদেরকে সত্যে বিশ্বাস করতে নির্দেশ প্রদান করেন।
 রাজা যতই ছোট হোক না কেন, একজন রাজা বিচার করতে, আদেশ দিতে এবং যে অবিশ্বাসীরা ধার্মিকতার বিপক্ষে, তাদেরকে নরকে যাওয়ার দন্ডাদেশ দিতে পারে এবং তাঁকে তা দিতে হয়। ঈশ্বরের সম্মুখে অবিশ্বাসীদের নরকে যাওয়ার দন্ডাজ্ঞা দেওয়া তার (নারী/পুরুষ) ক্ষমতা আছে, কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, একজন রাজা তার (নারী/পুরুষ) ইচ্ছামত ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে। প্রভু আমাদেরকে পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করতে বলেন। অতএব, আসুন আমরা রাজত্ব করি এবং স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করি।
 যাহোক, কিন্তু ধার্মিকেরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহারে খুবই নম্র। প্রভু যখন আবার আসবেন, তিনি তাদেরকে তিরষ্কার করবেন। “তুমি তোমার বিশ্বাস ত্যাগ করেছ। কেন তুমি দাসের ন্যায় আচরণ করলে? আমি তোমাকে রাজ তৈরী করেছিলাম।” কিছু লোক আছে, যারা পৃথিবীতে দাসের ন্যায় আচরণ করে। এই বিষয়টি তেমন, একজন রাজার পক্ষে “মহাশয়” বলার মত ভাব প্রকাশ করে? যাহোক, কিছু ধার্মিকেরা ঐ রকমভাবে বলে। এমন কি যদিও এটা তেমন ভাব প্রকাশ করে না। এমন কি ঈশ্বর তাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করার পরেও পৃথিবীতে তারা জানু পেতে ক্ষমা ভিক্ষা চায়। একজন রাজার রাজকীয় হওয়া উচিত।
 আমি পৃথিবীর বিরুদ্ধে স্বাধীন রাজকীয় ভাবে ঘোষনা করেছিলাম যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি একজন রাজা হয়েছি। আমি বিশ্বাস করেছি যে, আমি রাজা হয়েছি এবং আমি যত ছোট হই না কেন আমি রাজকীয় আচরণ করি।
 
 
একজন, যীশু খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহতার দ্বারা
 
 রোমীয় ৫:১৮-১৯ পদে বলা হয়েছে, “অতএব যেমন এক অপরাধ দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে দন্ডাজ্ঞা পৰ্য্যন্ত ফল উপস্থিত হইল, তেমনি ধাৰ্ম্মিকতার একটি কাৰ্য্য দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে জীবন দায়ক ধাৰ্ম্মিক -গণনা পৰ্য্যন্ত ফল উপস্থিত হইল। কারণ যেমন সেই এক মনুষ্যের অনাজ্ঞবহতা দ্বারা অনেককে পাপী বলিয়া ধরা হইল, তেমনি সেই আর এক ব্যক্তির আজ্ঞাবহতা দ্বারা অনেককে ধাৰ্ম্মিক বলিয়া ধরা হইবে।”
 “যেমন এক অপরাধ দ্বারা সকল মনুষ্যের কাছে দন্ডজ্ঞা পর্যন্ত ফল উপস্থিত হইল” এখানে দন্ডজ্ঞা অর্থ বিচার। একজন ব্যক্তি যে আদমের বংশধর হিসাবে জন্ম গ্রহণ করে এবং যে জল ও আত্মায় নূতন জন্ম গ্রহণ না করে, সে যদি ও যীশুতে বিশ্বাস করে, সে বিচারিত হয়। “তেমনি ধার্মিকতার একটি কাৰ্য্য দ্বারা সকল মানুষের কাছে জীবনদায়ক ধার্মিক গণনা পর্যন্ত ফল উপস্থিত হইল।” 
 যীশুর একটি ধার্মিকতার কাজের দ্বারা সমূদয় লোক ধার্মিক গণিত হয়েছে। কুমারী মরিয়মের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং পৃথিবীর সমস্ত পাপ বহন করতে যর্দ্দন নদীতে বাপ্তাইজিত হয়েছিলে। তাদেরকে ধার্মিক করতে তিনি তাদের স্থলে ক্রুশারোপনের দ্বারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। একজন মানুষের পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছার আজ্ঞাবহতার দ্বারা, অনেকে ধার্মিক গণিত হয়েছে।
 কঠোরভাবে বলা হয়েছে, জগতের সমস্ত লোক পাপী অথবা আমরা যদি বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অবলোকন করি, তারা কি ধার্মিক? আদের সবাই ধার্মিক। যখন আমি আস্তাসহকারে এরূপ বলি, তখন আমার উপর রাগান্বিত হয় এবং আমরা বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। বস্তুতঃ, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এমন কেউ নাই যার পাপ আছে। ঈশ্বর তাঁর একজাত পুত্রকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন এবং পৃথিবীর সমস্ত পাপ তাঁহাতে অর্পণ করেছিলেন এবং সমস্ত লোকের প্রতিনিধি রূপে তাঁকে বিচারিত হতে দিয়েছিলেন।
 
 
লোকেরা তাদের বিশ্বাস অনুসারে স্বর্গরাজ্যে অথবা নরকে প্রবেশ করে
 
 ঈশ্বর আর পৃথিবীর বিচার করবেন না কারণ তিনি যীশুকে সমস্ত লোকের স্থলে বিচার করছেন। যাহোক, কিছু লোক এটা বিশ্বাস করে এবং অন্যরা করে না, এমনকি যদিও ঈশ্বরের ইচ্ছার আজ্ঞাবহতার দ্বারা তার পুত্র সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন এবং সেগুলোকে মুছে ফেলেছেন। ঈশ্বরের ধার্মিকতার বিশ্বাসের দ্বারা বিশ্বাসীরা স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে। ঈশ্বর তাদেরকে ধার্মিক গণনা করেন এবং বলেন, “তুমি ধার্মিক। তুমি বিশ্বাস কর যে, আমি সত্যই তোমার সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছি। এস। আমি তোমার জন্য স্বর্গরাজ্য প্রস্তুত করেছি।” তারা যথাযথভাবে স্বর্গে প্রবেশ করে।
 কিন্তু কিছু লোক তাঁহাতে বিশ্বাস করে না এবং সুসমাচার অগ্রাহ্য করে, বলে, “এটা কি সত্য? আমি এটা বিশ্বাস করতে পারি না। এটা কি সত্য? আমি আসলে বুঝি না।” ঈশ্বর বলবেন, “কেন তুমি আমাকে রাগান্বিত করছ? যদি তুমি বিশ্বাস করতে চাও, আমাকে কর, কিন্তু যদি বিশ্বাস না করতে চাও, তাহলে করো না। “প্রভু, জল ও আত্মার সুসমাচার কি সত্য?” “আমি তোমাকে রক্ষা করেছি।” আমি এটা বিশ্বাস করতে পারি না। আমি যতদূর সম্ভব ৯০% বিশ্বাস করতে পারি, কিন্তু শেষ ১০% আমার সন্দেহ আছে।
 ঈশ্বর তখন তাদেরকে বলবেন, “আমি ইতিমধ্যে তোমাকে রক্ষা করেছি, এটা তুমি যথার্থ বিশ্বাস করে না। তোমার বিশ্বাস অনুসারে কর। আমি মন স্থির করেছি, আদমের বংশধর হিসাবে যাদের পাপ রয়েছে, তাদেরকে নরকে পাঠাবো। আমি স্বর্গরাজ্যও তৈরী করেছি। যদি তুমি চাও, স্বর্গরাজ্য প্রবেশ কর, এবং যদি নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হতে চাও, নরকে যাও।” তারা নরকে কি স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করবে, এটা তাদের বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে।
 আপনি কি বিশ্বাস করেন যে বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশে রক্ত সেচনের দ্বারা যীশু আপনাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করেছেন? এটা আপনার বিশ্বাসের উপর নির্ভরশীল। স্বর্গরাজ্য এবং নরকের মধ্যবর্ত্তী কোন স্থান নেই। ঈশ্বরের সম্মুকে “না” এই দরণের কোন জিনিস নেই; সেখানে শুধুই হ্যাঁ। ঈশ্বর ও আমাদের কখনও “না” বলেন না। ঈশ্বরের সমস্ত প্রতিজ্ঞার তিনি পূর্ণতা সাধন করেন। তিনি পাপীদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন।
 
 
যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল
 
 আসুন রোমীয় ৫:২০-২১ পদের দিকে তাকাই। “আর ব্যবস্থা তৎপরে পার্শ্বে উপস্থিত হইল, যেন অপরাধের বাহুল্য হয়; কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল; যেন পাপ যেমন মৃত্যুতে রাজত্ব করিয়াছিল, তেমনি আবার অনুগ্রহ ধার্মিকতা দ্বারা, অনন্ত জীবনের নিমিত্ত, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা, রাজত্ব করে।” ব্যবস্থা কেন উপস্থিত হয়েছিল? যেন অপরাধের বাহুল্য হয়। আদমের স্বভাব অনুযায়ী মানবজাতির অবশ্যই পাপ রয়েছে। কিন্তু তারা তাদের পাপে পূর্ণ স্বভাবকে জানে না, এজন্য ঈশ্বর মানুষকে পাপের জ্ঞান প্রদানের জন্য ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, কারণ ব্যবস্থা তাদেরকে নির্দেশ দেয়, কি করতে হবে এবং কি না করতে হবে, আর তাদের কাজ এবং চিন্তা দ্বারা ব্যবস্থা না পালন করাটাই পাপ হবে।
 ব্যবস্থা উপস্থিত হল, যেন অপরাধের বাহুল্য হয়। ঈশ্বর আমাদিগকে ব্যবস্থা দিলেন এবং জানতে দিলেন যে, আমরা পাপের গহবর এবং পাপী মানুষ। এর অর্থ হল, আদমের বংশধর হিসাবে একজন মানুষ পাপী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে, কিন্তু কোন কার্য্য ব্যতিতই যীশু তাকে রক্ষা করেছেন, এই ঘটনার দ্বারা সে নিজেকে একজন লঘু পাপী ভাবে।
 যাহোক, যে কেউ ভাবে যে, তার (নারী/পুরুষ) অনেক দূর্বলতা রয়েছে এবং মাংস দ্বারা ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে জীবন-যাপন করতে পারে না, সে প্রভুর ধন্যবাদ করে, যিনি তাকে রক্ষা করেছেন। সুসমাচার বলে যে, এরূপ লোকের জন্য মহানুগ্রহের দান হল, প্রভু পৃথিবীর সমস্ত পাপ একেবারে তুলে নিয়েছেন। “কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, অনুগ্রহ সেখানে আরও উপচিয়া পড়িল।” অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল, কবরতুল্য পাপীরা যথার্থভাবে ধার্মিক হয়ে গেল। লঘু পাপীরা, যারা ভাবে তারা পাপে পূর্ণ নয়, তারা নরকে যাবে। শুধু কবরতুল্য পাপীরাই যথার্থভাবে ধার্মিক হয়েছে।
 সুতরাং একজন ব্যক্তি যে জানে যে, সে (নারী/পুরুষ) কবরতুল্য পাপী। সে যীশুর পরিত্রাণের মহা প্রশংসা করতে পারে। পৃথিবীতে সুসমাচার প্রচারকদের মধ্যে ভাল স্বভাবের অল্প কিছু সুসমাচার প্রচারক রয়েছে। “কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, অনুগ্রহ সেখানে আরও উপচিয়া পড়িল।” এর অর্থ এই নয় যে, আমরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পাপ করি যাতে আরও বেশী অনুগ্রহের বাহুল্য হয়।
 রোমীয় ৬:১ পদে প্রেরিত পৌল বলেছেন, “তবে কি বলিব? অনুগ্রহের বাহুল্য যেন হয় এই নিমিত্ত কি পাপে থাকিব?” শুধু যদি আমরা ঈশ্বরের ধার্মিকতায় বিশ্বাস করি, আমরা মুক্ত। প্রভু ইতিমধ্যে আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছেন এবং পাপীদেরকে তাদের পাপ থেকে প্রচুররূপে মুক্ত করেছেন। আমরা হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করার মাধ্যমে ধার্মিক গণিত হই। যদি আমরা বিশ্বাস করি যে, প্রভু আমাদের জন্য কি করেছেন, তাহলে আমরা রক্ষা পেতে পারি। আমরা কত মন্দ হই বা আমরা কতবার পাপ করি, সেটা কোন ব্যপার নয়, সত্য বিশ্বাস থাকার দ্বারা কোন কার্য্য ব্যতিতই আমরা ধার্মিক গণিত হয়েছি।
 বিশ্বাসের দ্বারা আমরা ধার্মিক গণিত হই। আমাদের কর্ম কত খারাপ? আমরা কতবার পাপ করি? পবিত্র যদি আমাদের পাপের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন, আমাদের কত ক্রুটি রয়েছে? আমি প্রভুর প্রশংসা না করে পারি না। রোমীয় ৫:২০-২১ পদে বলা হয়েছে, “আর ব্যবস্থা তৎপরে পার্শ্বে উপস্থিত হইল, যেন অপরাধের বাহুল্য হয়; কিন্তু যেখানে পাপের বাহুল্য হইল, সেখানে অনুগ্রহ আরও উপচিয়া পড়িল; যেন পাপ যেমন মৃত্যুতে রাজত্ব করিয়াছিল, তেমনি আবার অনুগ্রহ ধার্মিকতা দ্বারা, অনন্ত জীবনের নিমিত্ত, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা, রাজত্ব করে।” 
 যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বর আমাদিগকে অনন্ত জীবন প্রদান করেছেন। প্রভুর ধার্মিকতা আমাদেরকে তাঁর সাথে রাজত্ব করাবে। 
আমি প্রভুর প্রশংসা করি, যিনি পাপীদেরকে তাদের পাপ থেকে অযাচিতরূপে মুক্ত করেছেন। ধন্য প্রভু।