Search

उपदेश

বিষয় ১১: আবাস

[1-1] ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্য শ্রবণ করুন (প্রকাশিত বাক্য ১: ১-২০)

ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্য শ্রবণ করুন
< প্রকাশিত বাক্য ১: ১-২০ >
“যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য, ঈশ্বর যাহা তাঁহাকে দান করিলেন, যেন তিনি, যাহ যাহা শীঘ্র ঘটিবে, সেই সকল আপন দাসগণকে দেখাইয়া দেন; আর তিনি নিজের দূত প্রেরণ করিয়া আপন দাস যোহনকে তাহা জ্ঞাত করিলেন। সেই যোহন ঈশ্বরের বাক্যের সম্বন্ধে, এবং যীশু খ্রীষ্টের সাক্ষ্যের সম্বন্ধে, যাহা যাহা দেখিয়াছে, তাহার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিল। ধন্য, যে এই ভাববাণীর বাক্য সকল পাঠ করে, ও যাহারা শ্রবণ করে, এবং ইহাতে লিখিত কথা সকল পালন করে; কেননা কাল সন্নিকট। যোহন—এশিয়ায় স্থিত সপ্ত মণ্ডলীর সমীপে। যিনি আছেন, ও যিনি ছিলেন, ও যিনি আসিতেছেন, তাঁহা হইতে, এবং তাঁহার সিংহাসনের সম্মুখবর্ত্তী সপ্ত আত্মা হইতে, এবং যিনি ‘‘বিশ্বস্ত সাক্ষী,” মৃতগণের মধ্যে ‘‘প্রথমজাত” ও ‘‘পৃথিবীর রাজাদের কর্ত্তা,” সেই যীশু খ্রীষ্ট হইতে, অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের প্রতি বর্ত্তুক। যিনি আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন, এবং আমাদিগকে রাজ্যস্বরূপ ও আপন ঈশ্বর ও পিতার যাজক করিয়াছেন, তাঁহার মহিমা ও পরাক্রম যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে হউক। আমেন। দেখ, তিনি “মেঘ সহকারে আসিতেছেন,” আর প্রত্যেক চক্ষু তাঁহাকে দেখিবে, এবং “যাহারা তাঁহাকে বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহারাও দেখিবে;” আর পৃথিবীর “সমস্ত বংশ তাঁহার জন্য বিলাপ” করিবে । হাঁ, আমেন। আমি আল্‌ফা এবং ওমিগা, আদি এবং অন্ত, ইহা প্রভু ঈশ্বর কহিতেছেন, যিনি আছেন ও যিনি ছিলেন, ও যিনি আসিতেছেন, যিনি সর্ব্বশক্তিমান্‌। আমি যোহন, তোমাদের ভ্রাতা, এবং যীশু সম্বন্ধীয় ক্লেশভোগে রাজ্যে ও ধৈর্য্যে তোমাদের সহভাগী, ঈশ্বরের বাক্য ও যীশুর সাক্ষ্য প্রযুক্ত পাট্‌ম নামক দ্বীপে উপস্থিত হইলাম। আমি প্রভুর দিনে আত্মাবিষ্ট হইলাম, এবং আমার পশ্চাৎ তূরীধ্বনিবৎ এক মহারব শুনিলাম। কেহ কহিলেন, তুমি যাহা দেখিতেছ, তাহা পত্রিকায় লিখ, এবং ইফিষ, স্মুর্ণা, পর্গাম, থুয়াতীরা, সার্দ্দি, ফিলাদিল্‌ফিয়া ও লায়দিকেয়া, এই সপ্ত মণ্ডলীর নিকটে পাঠাইয়া দেও। তাহাতে আমার প্রতি যাঁহার বাণী হইতেছিল, তাঁহাকে দেখিবার জন্য আমি মুখ ফিরাইলাম; মুখ ফিরাইয়া দেখিলাম, সপ্ত সুবর্ণ দীপবৃক্ষ, ও সেই সকল দীপবৃক্ষের মধ্যে “মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি”; তিনি পাদপর্য্যন্ত পরিচ্ছদে আচ্ছন্ন, এবং “বক্ষঃস্থলে সুবর্ণ পটুকায় বদ্ধকটি; তাঁহার মস্তক ও কেশ শুক্লবর্ণ মেষলোমের ন্যায়, হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ, এবং তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখার তুল্য, এবং তাঁহার চরণ অগ্নিকুণ্ডে পরিষ্কৃত সুপিত্তলের তুল্য, এবং তাঁহার রব বহুজলের রবের তুল্য” ; আর তাঁহার দক্ষিণ হস্তে সপ্ত তারা আছে, এবং তাঁহার মুখ হইতে তীক্ষ্ণ দ্বিধার তরবারি নির্গত হইতেছে, এবং তাঁহার মুখমণ্ডল নিজ তেজে বিরাজমান সূর্য্যের তুল্য। তাঁহাকে দেখিবামাত্র আমি মৃতবৎ হইয়া তাঁহার চরণে পড়িলাম। তখন তিনি আমার গাত্রে দক্ষিণ হস্ত দিয়া কহিলেন, ভয় করিও না, আমি প্রথম ও শেষ ও জীবন্ত ; আমি মরিয়াছিলাম, আর দেখ, আমি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে জীবন্ত; আর মৃত্যুর ও পাতালের চাবি আমার হস্তে আছে। অতএব তুমি যাহা যাহা দেখিলে, এবং যাহা যাহা আছে, ও ইহার পরে যাহা যাহা হইবে, সে সমস্তই লিখ। আমার দক্ষিণ হস্তে যে সপ্ত তারা দেখিলে, তাহার নিগূঢ়তত্ত্ব এবং সপ্ত সুবর্ণ দীপবৃক্ষ এই; সেই সপ্ত তারা ঐ সপ্ত মণ্ডলীর দূত, এবং সেই সপ্ত দীপবৃক্ষ ঐ সপ্ত মণ্ডলী।”
 
 

টীকা

 
পদ ১: “যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য, ঈশ্বর যাহা তাঁহাকে দান করিলেন, যেন তিনি, যাহ যাহা শীঘ্র ঘটিবে, সেই সকল আপন দাসগণকে দেখাইয়া দেন; আর তিনি নিজের দূত প্রেরণ করিয়া আপন দাস যোহনকে তাহা জ্ঞাত করিলেন।”
প্রেরিত যোহনের দ্বারা প্রকাশিত বাক্য লিপিবদ্ধ হয়েছে৷ তিনি রোমান সাম্রাজ্যের ডমিশিয়ানরাজত্বের শেষদিকে (আনুমানিক ৯৫ খ্রীঃ) অজিয়ান সাগরে অবস্থিত পাটম নামক দ্বীপে নির্বাসিত হয়েছিলেন এবং সেখানে অবস্থানকালে তিনি যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য লিপিবদ্ধ করেছিলেন৷ ঈশ্বরের বাক্য এবং যীশুর সমন্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে যোহনকে পাটম দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়েছিল৷ এখানেই যোহন পবিত্র আত্মার আবেশে এবং ঈশ্বরের দূতের মাধ্যমে যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পান৷
“যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য” কি? যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য বলতে পৃথিবী ও স্বর্গরাজ্যে ভবিষ্যতে ঘটতে যাওয়া ঘটনাগুলো ঈশ্বরের প্রতিনিধি যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলোকে বোঝানো হয়েছে৷ যীশু মূলতঃ কে? তিনি সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর এবং জগতের সমস্ত পাপ থেকে মানুষের উদ্ধারকর্তা৷
যীশু খ্রীষ্ট নুতন পৃথিবীর ঈশ্বর, আসন্ন নুতন পৃথিবীর প্রকাশক এবং পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধি৷ যোহনের লিখিত প্রকাশিত বাক্যের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব, যীশু কিভাবে পুরাতন পৃথিবী এবং নুতন পৃথিবীর সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন৷
 
পদ ২: “সেই যোহন ঈশ্বরের বাক্যের সম্বন্ধে, এবং যীশু খ্রীষ্টের সাক্ষ্যের সম্বন্ধে, যাহা যাহা দেখিয়াছে, তাহার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিল।”
পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধি যীশু খ্রীষ্ট ভবিষ্যতে কি করবেন যোহন টা দেখিয়েছিলেন, বিশেষ করে তিনি এই জন্যেই সত্যের বাক্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে পেরেছিলেন৷ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে যে সব ঘটনা পূর্ণ হতে যাচ্ছে টা তিনি দেখেছিলেন, এবং সেই জন্যেই তিনি সেই ঘটনাগুলোর সাক্ষ্য দিতে পেরেছিলেন৷ 
 
পদ ৩: “ধন্য, যে এই ভাববাণীর বাক্য সকল পাঠ করে, ও যাহারা শ্রবণ করে, এবং ইহাতে লিখিত কথা সকল পালন করে; কেননা কাল সন্নিকট।”
এখানে বলা হয়েছে যে, যোহনের দ্বারা ঈশ্বরের বাক্যের সাক্ষ্য যারা পড়বে এবং শুনবে তারা আশীর্বাদ পাবে৷ কারা ধন্য? প্রথমতঃ এবং প্রথমতঃ ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে সমস্ত পাপের ক্ষমা পেয়ে যারা ঈশ্বরের সন্তান হয়েছে – সেই বিশ্বাসীগণ৷ কেবলমাত্র ভক্তগণই ধন্য কারণ তারাই যোহনের দ্বারা লিপিবদ্ধ এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঘটতে যাওয়া তথ্য সম্বলিত ঈশ্বরের বাক্য পড়ে, শোনে, এবং তাঁর সাক্ষ্য দেয়৷ যারা এভাবে ঈশ্বরের সন্তান হয়, ঈশ্বরের বাক্য শ্রবনের ও বিশ্বাসের সাথে জীবন-যাপনের মাধ্যমে, তারা আশীর্বাদযুক্ত হয়৷ 
যোহনের মাধ্যমে ঈশ্বর যদি পৃথিবী এবং স্বর্গে ভবিষ্যতে ঘটতে যাওয়া ঘটনাগুলো না জানাতেন, তাহলে তাঁর সন্তানেরা কিভাবে টা শুনতে বা দেখতে পেত? পৃথিবীতে যে পরিবর্তন আসছে, পূর্ব থেকে টা জানতে পেরে এবং তাতে বিশ্বাস করে কিভাবে তারা আশীর্বাদ পেল? যোহনের মাধ্যমে পৃথিবীর ও স্বর্গের ভবিষ্যতের ঘটনা জানানোর জন্য আমি প্রভুর ধন্যবাদ ও গৌরব করি৷ আমাদের এই সময়ে প্রকৃতপক্ষে তারাই ধন্য, যারা যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশিত বাক্য নিজেদের চোখে দেখতে এবং পড়তে পারছে৷
 
পদ ৪: “যোহন—এশিয়ায় স্থিত সপ্ত মণ্ডলীর সমীপে। যিনি আছেন, ও যিনি ছিলেন, ও যিনি আসিতেছেন, তাঁহা হইতে, এবং তাঁহার সিংহাসনের সম্মুখবর্ত্তী সপ্ত আত্মা হইতে,”
এখানে যোহন বলছেন যে, এশিয়ার ৭ টি মন্ডলীর প্রতি তিনি এই পত্র পাঠাচ্ছেন৷ ভবিষ্যদ্বাণী এবং ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্য লিপিবদ্ধ করার পরে, পাটম দ্বীপে অবস্থান কালে, যোহন এই পত্র এশিয়ার সাতটি মন্ডলী এবং পৃথিবীর অন্যান্য মন্ডলীতে পাঠিয়েছিলেন৷
 
পদ ৫: “এবং যিনি ‘‘বিশ্বস্ত সাক্ষী,” মৃতগণের মধ্যে ‘‘প্রথমজাত” ও ‘‘পৃথিবীর রাজাদের কর্ত্তা,” সেই যীশু খ্রীষ্ট হইতে, অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের প্রতি বর্ত্তুক। যিনি আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন৷”
কেন যোহন যীশু খ্রীষ্টকে “বিশ্বস্ত সাক্ষী” বলেন? আমাদের প্রভু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, এবং যারা পাপে বন্দি ও ধ্বংস যোগ্য ছিল, তাদের সকলকে মুক্ত করার জন্য যোহন বাপ্তাইজক কর্তৃক বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন৷ যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মাধ্যমে তত্ক্ষণাৎ জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিলেন, জীবন দিয়ে রক্ত সেচন করে সেই পাপের মূল্য পরিশোধ করলেন এবং তৃতীয় দিবসে মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হলেন, যেন বিশ্বাসীদের মুক্ত করতে ও তাদের পাপ ধৌত করতে পারেন৷ কারণ একমাত্র যীশু নিজেই জগতের সমস্ত পাপীদের পাপ থেকে উদ্ধার করলেন, খ্রীষ্টই পরিত্রাণের জীবন্ত সাক্ষী৷ 
“মৃতগণের মধ্যে প্রথম জাত” বলতে, যোহন বলেছেন যে, এই পৃথিবীতে এসে যীশুই প্রথম ফল হলেন, ব্যবস্থার প্রাপ্য পূর্ণ করলেন বা পরিশোধ করলেন, অন্য কথায় বাপ্তিস্মের মাধ্যমে নিজের উপর সমস্ত পাপ তুলে নিয়ে, ক্রুশে মৃত্যুবরণ করে এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান করে সেই পাপের মূল্য পরিশোধ করলেন৷ এবং যেহেতু খ্রীষ্ট “আমাদিগকে প্রেম করেন, ও নিজ রক্তে আমাদের পাপ হইতে আমাদিগকে মুক্ত করিয়াছেন”, তাই যারা জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাস করে, তাদেরকে ঈশ্বর তাদের পাপ থেকে মুক্ত করেছেন৷
 
পদ ৫: “এবং আমাদিগকে রাজ্যস্বরূপ ও আপন ঈশ্বর ও পিতার যাজক করিয়াছেন, তাঁহার মহিমা ও পরাক্রম যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে হউক। আমেন৷”
পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে মাংসময় দেহে যীশু এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, এবং তাঁর বাপ্তিস্ম ও ক্রুশীয় রক্ত দ্বারা পাপীদেরকে উদ্ধার করেছিলেন৷ এই অনুগ্রহের কার্য দ্বারা খ্রীষ্ট আমাদের ধৌত করেছেন, এবং আমাদেরকে ঈশ্বরের প্রজা ও যাজক করেছেন৷ পিতা ঈশ্বর, যিনি এই সমস্ত বিস্ময়কর আশীর্বাদে আশীর্বাদযুক্ত করেছেন, এবং পুত্র যিনি তাঁর প্রতিনিধি এবং আমাদের ত্রাণকর্তা, সমস্ত গৌরব, প্রশংসা এবং ধন্যবাদ চিরকালের জন্য তাঁরই৷ যীশুর পুনরুত্থানের উদ্দেশ্য ছিল, যেন আমাদেরকে পিতা ঈশ্বরের রাজ্যের প্রজা এবং যাজক করতে পারেন৷ আমাদেরকে “রাজা” করা হয়েছে, অন্য কথায় স্বর্গরাজ্যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমরা চিরকাল থাকব৷
 
পদ ৭: “দেখ, তিনি “মেঘ সহকারে আসিতেছেন,” আর প্রত্যেক চক্ষু তাঁহাকে দেখিবে, এবং “যাহারা তাঁহাকে বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহারাও দেখিবে;” আর পৃথিবীর “সমস্ত বংশ তাঁহার জন্য বিলাপ” করিবে । হাঁ, আমেন।”
এখানে বলা হয়েছে যে, খ্রীষ্ট মেঘযোগে আসবেন এবং আমি টা পূর্ণরূপে বিশ্বাস করি৷ এটা কোনো বিজ্ঞানের কাহিনী নয়৷ ভাববাণী করা হয়েছে যে, যীশু খ্রীষ্ট অবশ্যই স্বর্গ থেকে এ পৃথিবীতে আসবেন৷ এখানে বলা হয়েছে , “যাহারা তাঁহাকে বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহারাও দেখিবে;”৷ এরা কারা? এরা তারা, যারা অন্যান্য ধর্মীয় মতবাদের মত জল ও আত্মার সুসমাচারকে সাধারণ ভাবে গ্রহণ করেছিল; অথচ এই বাক্যে সকলকে উদ্ধার করার ক্ষমতা রয়েছে৷ 
অবিশ্বাসের কারণে খ্রীষ্টকে যারা বিদ্ধ করেছিল, তারা অবশ্যই বিলাপ করবে৷ তারা ক্রন্দন ও আর্তনাদ করবে৷ কারণ তখন তারা বুঝতে পারবে যে, জল ও আত্মার সুসমাচার পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার প্রকৃত সুসমাচার, অর্থাৎ জগতের সমস্ত পাপ তুলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন, কিন্তু তখন তাদের জন্য অনেক দেরী হয়ে যাবে৷
 
পদ ৮: “আমি আল্‌ফা এবং ওমিগা, আদি এবং অন্ত, ইহা প্রভু ঈশ্বর কহিতেছেন, যিনি আছেন ও যিনি ছিলেন, ও যিনি আসিতেছেন, যিনি সর্ব্বশক্তিমান্‌।“
“আলফা এবং ওমিগা” দ্বারা যোহন বলেছেন যে, আমাদের প্রভু বিচারের ঈশ্বর, যিনি সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত আছেন, এবং মানবজাতির ইতিহাস তাঁর দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে৷ তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, মানুষের পাপের বিচার করবেন; যারা তাঁর ধার্মিকতায় বিশ্বাস করেন, সেই ধার্মিকদের তিনি পুনরুত্থিত করবেন৷
 
পদ ৯-১০: “ আমি যোহন, তোমাদের ভ্রাতা, এবং যীশু সম্বন্ধীয় ক্লেশভোগে রাজ্যে ও ধৈর্য্যে তোমাদের সহভাগী, ঈশ্বরের বাক্য ও যীশুর সাক্ষ্য প্রযুক্ত পাট্‌ম নামক দ্বীপে উপস্থিত হইলাম। আমি প্রভুর দিনে আত্মাবিষ্ট হইলাম, এবং আমার পশ্চাৎ তূরীধ্বনিবৎ এক মহারব শুনিলাম। ” 
“ভ্রাতা” শব্দটি সহ-বিশ্বাসীগণ পরস্পরের প্রতি ব্যবহার করেন৷ খ্রীষ্টীয় মন্ডলীতে যারা জল ও আত্মার সুসমাচারের মাধ্যমে একই পরিবারের সদস্য হয়েছেন, তারা পরস্পর ভাই ও বোন৷ জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের কারণেই তাদেরকে এই আখ্যা দেওয়া হয়েছে৷
“প্রভুর দিন” বলতে বিশ্রামবারের পরের দিন, অর্থাৎ যে দিন প্রভু পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, সেই দিনকে বোঝানো হয়েছে৷ এটা সপ্তাহের সেই দিন যে দিন প্রভু মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন, তাই এই দিনকে আমরা বলি, “প্রভুর দিন”৷ এই দিনেই ব্যবস্থার যুগ শেষ হয়েছে এবং পরিত্রাণের যুগ শুরু হয়েছে৷ এছাড়াও, তাঁর পুনরুত্থান দ্বারা প্রভু আমাদের বলেন যে, তাঁর রাজ্য এই পৃথিবীতে নয়৷
 
পদ ১১: “ কেহ কহিলেন, তুমি যাহা দেখিতেছ, তাহা পত্রিকায় লিখ, এবং ইফিষ, স্মুর্ণা, পর্গাম, থুয়াতীরা, সার্দ্দি, ফিলাদিল্‌ফিয়া ও লায়দিকেয়া, এই সপ্ত মণ্ডলীর নিকটে পাঠাইয়া দেও।”
যীশু খ্রীষ্টের প্রত্যাদেশ দ্বারা যোহন যা দেখেছিলেন, তা তিনি লিপিবদ্ধ করে এশিয়ার ৭ টি দেশে পাঠিয়েছিলেন৷ এই অংশ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, আমাদের আগে ঈশ্বরের যে ভক্তগণ ছিলেন, তাঁদের মাধ্যমে ঈশ্বর সব মন্ডলীর উদ্দেশ্যে এই কথাগুলো বলেছেন৷
 
পদ ১২: “ তাহাতে আমার প্রতি যাঁহার বাণী হইতেছিল, তাঁহাকে দেখিবার জন্য আমি মুখ ফিরাইলাম; মুখ ফিরাইয়া দেখিলাম৷”
যেহেতু, প্রেরিতদের যুগে শাস্ত্রের বাক্য সম্পূর্ণরূপে পূর্ণ হয়নি, তাই শিষ্যদেরকে চিহ্ন ও দর্শন দেখানো প্রয়োজন ছিল৷ যোহন যখন ঈশ্বরের দিকে মুখ ফিরালেন, তিনি দেখলেন, “সপ্ত সুবর্ণ দীপ বৃক্ষ” এই দীপ বৃক্ষের দ্বারা ঈশ্বরের মন্ডলীগুলোকে বোঝানো হয়েছে, অর্থাৎ যেখানে জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসীগণ একত্রিত হন৷ ঈশ্বরই এশিয়ার সাতটি মন্ডলীর ঈশ্বর ছিলেন৷ এবং তিনিই সমস্ত সাধুগণের পালক ছিলেন এবং আছেন৷
 
পদ ১৩: “ সপ্ত সুবর্ণ দীপবৃক্ষ, ও সেই সকল দীপবৃক্ষের মধ্যে “মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি”; তিনি পাদপর্য্যন্ত পরিচ্ছদে আচ্ছন্ন, এবং “বক্ষঃস্থলে সুবর্ণ পটুকায় বদ্ধকটি; ”
“মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি” যাকে যোহন “সপ্ত দীপ বৃক্ষের মধ্যে” দেখেছিলেন- তিনি যীশু খ্রীষ্ট৷ সাধুগণের পালক হিসাবে, যারা তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশারোপনের সত্য বাক্যে বিশ্বাস করেন, যীশু সেই সব সাধুগণের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এবং কথা বলেন৷ যীশুর সমন্ধে যোহনের বর্ণনা, তিনি পাদপর্য্যন্ত পরিচ্ছদে আচ্ছন্ন, এবং “বক্ষঃস্থলে সুবর্ণ পটুকায় বদ্ধকটি; ” দ্বারা পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধিরূপে আমাদের প্রভুর মর্যাদা বোঝানো হয়েছে৷
 
পদ ১৪: “ তাঁহার মস্তক ও কেশ শুক্লবর্ণ মেষলোমের ন্যায়, হিমের ন্যায় শুক্লবর্ণ, এবং তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখার তুল্য,”
আমাদের প্রভু মহাপবিত্র, রাজকীয় এবং মহিমাময়৷ “তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখার তুল্য,” অর্থাৎ তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, সকলের ন্যায় বিচারক৷
 
পদ ১৫: “ এবং তাঁহার চরণ অগ্নিকুণ্ডে পরিষ্কৃত সুপিত্তলের তুল্য, এবং তাঁহার রব বহুজলের রবের তুল্য”
আপনি কি মনে করেন, যীশু কে? সাধুগণ বিশ্বাস করেন যে, তিনি সম্পূর্ণরূপে এবং সর্বাংশে ঈশ্বর৷ আমাদের প্রভু সর্বশক্তিমান এবং তাঁর কোনো দুর্বলতা নেই৷ এই পৃথিবীতে থাকা কালীন সময়ে আমাদের সব দুর্বলতা, অবস্থা, পরিস্থিতি নিজের জীবন দ্বারা উপলব্ধি করেছেন, এবং এই জন্য আমাদের সাহায্য করতে পারেন৷ তাঁর কন্ঠস্বর যে, “বহুজলের রবের তুল্য” এর দ্বারা আমাদের প্রভু যে কতটা পবিত্র এবং পরাক্রমী সেটাই বোঝানো হয়েছে৷ কোনো রকম অশুচিতা বা দুর্বলতা আমাদের প্রভুর মধ্যে নেই৷ তিনি তাঁর পবিত্রতা, প্রেম, রাজ্যস্বীতা এবং সমাদরে পূর্ণ৷
 
পদ 16: “ আর তাঁহার দক্ষিণ হস্তে সপ্ত তারা আছে, এবং তাঁহার মুখ হইতে তীক্ষ্ণ দ্বিধার তরবারি নির্গত হইতেছে, এবং তাঁহার মুখমণ্ডল নিজ তেজে বিরাজমান সূর্য্যের তুল্য”৷
“ তাঁহার দক্ষিণ হস্তে সপ্ত তারা আছে ” অর্থাৎ প্রভু সাতটি মন্ডলী ধরে আছেন৷ তাঁর মুখ থেকে “তীক্ষ্ণ দ্বিধার তরবারি নির্গত” বলতে যীশু যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর এবং তিনি যে বাক্যের ক্ষমতায় এবং পরাক্রমে সব কিছু করেন, সেটাই বোঝানো হচ্ছে৷ “নিজ তেজে বিরাজমান সূর্য্যের তুল্য” আমাদের প্রভু বাক্যের ঈশ্বর, তিনি সর্বক্ষমতার অধিকারী৷ 
 
পদ ১৭: “ তাঁহাকে দেখিবামাত্র আমি মৃতবৎ হইয়া তাঁহার চরণে পড়িলাম। তখন তিনি আমার গাত্রে দক্ষিণ হস্ত দিয়া কহিলেন, ভয় করিও না, আমি প্রথম ও শেষ ও জীবন্ত ;”
এই বাক্য দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, ঈশ্বরের পবিত্রতার সম্মুখে আমরা নিতান্ত দুর্বল ও অন্ধকারময়৷ আমাদের প্রভু সব সময়েই সব ক্ষমতার অধিকারী এবং মহাপবিত্র৷ কখনও কখনও সাধুগণের কাছে তিনি বন্ধু হিসাবে প্রকাশিত হন, আবার কখনও কখনও কঠোর বিচারের ঈশ্বর হিসাবে নিজেকে প্রকাশ করেন৷
 
পদ ১৮: “ আমি মরিয়াছিলাম, আর দেখ, আমি যুগপর্য্যায়ের যুগে যুগে জীবন্ত; আর মৃত্যুর ও পাতালের চাবি আমার হস্তে আছে।”
আমাদের প্রভু, যুগে যুগে জীবন্ত, এবং পিতা ঈশ্বরের প্রতিনিধি হিসাবে স্বর্গের সব ক্ষমতা তাঁর হাতে রয়েছে৷ মানুষের ত্রাণকর্তা ও বিচারক হিসাবে অনন্ত জীবন ও মৃত্যুর ঐশ্বরিক ক্ষমতা তাঁর রয়েছে৷
 
পদ ১৯: “ অতএব তুমি যাহা যাহা দেখিলে, এবং যাহা যাহা আছে, ও ইহার পরে যাহা যাহা হইবে, সে সমস্তই লিখ।”
ঈশ্বরের দাসগণের এই কর্তব্য রয়েছে যে, তারা ঈশ্বরের বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমস্ত কাজ লিপিবদ্ধ করবেন৷ এভাবে, প্রভু যোহনকে বলেছেন, ঈশ্বরের মন্ডলীর বিশ্বাস- যার দ্বারা অনন্ত জীবনের অধিকারী হওয়া যায়, এবং ভবিষ্যতে আগত বিষয় সম্পর্কে৷ যোহনের মাধ্যমে আমাদেরকেও প্রভু এই আদেশ দিয়েছেন৷
 
পদ ২০: “আমার দক্ষিণ হস্তে যে সপ্ত তারা দেখিলে, তাহার নিগূঢ়তত্ত্ব এবং সপ্ত সুবর্ণ দীপবৃক্ষ এই; সেই সপ্ত তারা ঐ সপ্ত মণ্ডলীর দূত, এবং সেই সপ্ত দীপবৃক্ষ ঐ সপ্ত মণ্ডলী।”
“সপ্ত তারা” নিগুঢ়তত্ত্ব কি? তাহল এই যে, ঈশ্বর তাঁর দাসগণের মাধ্যমে আমাদের তাঁর সন্তান করে তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করবেন৷ “সুবর্ণ দীপবৃক্ষ” বলতে ঈশ্বরের মন্ডলীগুলোকে বোঝানো হয়েছে, যা ঈশ্বর জল ও আত্মার সুসমাচার দ্বারা তাঁর দাসগণের মাধ্যমে স্থাপন করেছিলেন৷
তাঁর দাসগণ এবং মন্ডলীগণের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁর বিশ্বাসীগণের জন্য যে উদ্দেশ্য রেখেছেন, এবং এই পৃথিবীর ভবিষ্যত সম্পর্কেও জানিয়েছেন৷ যোহনের কাছে প্রকাশিত বাক্য লিপিবদ্ধ করণের দ্বারা, ঈশ্বর আমাদেরকেও নিজেদের চোখ দ্বারা খুব শীঘ্রই তাঁর কাজ দেখতে দেবেন৷ এই পৃথিবীতে যা কিছু ঘটবে, সেই সব স্বর্গীয় সংকল্প প্রকাশ করার জন্য আমি ঈশ্বরের ধন্যবাদ ও প্রশংসা করি৷