Search

उपदेश

বিষয় ১২: প্রেরিতের বিশ্বাসসূত্রের বিশ্বাস

[11-17] পাপ ক্ষমার উপহার অনুগ্রহ সিংহাসনের উপর দত্ত হয়েছে (যাত্রাপুস্তক ২৫:১০-২২)

পাপ ক্ষমার উপহার অনুগ্রহ সিংহাসনের উপর দত্ত হয়েছে
(যাত্রাপুস্তক ২৫:১০-২২)
 “তাহারা শিটীম কাষ্ঠের এক সিন্দুক নির্ম্মাণ করিবে; তাহা আড়াই হস্ত দীর্ঘ, দেড় হস্ত প্রস্থ ও দেড় হস্ত উচ্চ হইবে। পরে তুমি নির্ম্মল সুবর্ণে তাহা মুড়িবে; তাহার ভিতর ও বাহির মুড়িবে, এবং তাহার উপরে চারিদিকে স্বর্ণের নিকাল গড়িয়া দিবে। আর তাহার জন্য সুবর্ণের চারি কড়া ছাঁচে ঢালিয়া তাহার চারি পায়াতে দিবে; তাহার এক পার্শ্বে দুই কড়া, ও অন্য পার্শ্বে দুই কড়া থাকিবে। আর তুমি শিটীম কাষ্ঠের দুইটী বহন-দণ্ড করিয়া স্বর্ণে মুড়িবে। আর সিন্দুক বহনার্থে ঐ বহন-দণ্ড সিন্দুকের দুই পার্শ্বস্থ কড়াতে দিবে। সেই বহন-দণ্ড সিন্দুকের কড়াতে থাকিবে, তাহা হইতে বহিষ্কৃত হইবে না। আর আমি তোমাকে যে সাক্ষ্যপত্র দিব, তাহা ঐ সিন্দুকে রাখিবে। পরে তুমি নির্ম্মল স্বর্ণে আড়াই হস্ত দীর্ঘ ও দেড় হস্ত প্রস্থ পাপাবরণ প্রস্তুত করিবে। আর তুমি স্বর্ণের দুই করূব নির্ম্মাণ করিবে; পাপাবরণের দুই মুড়াতে পিটান কার্য্য দ্বারা তাহাদিগকে নির্ম্মাণ করিবে। এক মুড়াতে এক করূব ও অন্য মুড়াতে অন্য করূব, পাপাবরণের দুই মুড়াতে তৎসহিত অখণ্ড দুই করূব করিবে। আর সেই দুই করূব ঊর্দ্ধে পক্ষ বিস্তার করিয়া ঐ পক্ষ দ্বারা পাপাবরণকে আচ্ছাদন করিবে, এবং তাহাদের মুখ পরস্পরের দিকে থাকিবে, করূবদের দৃষ্টি পাপাবরণের দিকে থাকিবে। তুমি এই পাপাবরণ সেই সিন্দুকের উপরে রাখিবে, এবং আমি তোমাকে যে সাক্ষ্যপত্র দিব, তাহা ঐ সিন্দুকের মধ্যে রাখিবে। আর আমি সেই স্থানে তোমার সহিত সাক্ষাৎ করিব, এবং পাপাবরণের উপরিভাগ হইতে, সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরিস্থ দুই করূবের মধ্য হইতে তোমার সঙ্গে আলাপ করিয়া ইস্রায়েল-সন্তানগণের প্রতি আমার সমস্ত আজ্ঞা তোমাকে জ্ঞাত করিব।”
 
 

অনুগ্রহের সিংহাসন

অনুগ্রহের সিংহাসন
 এক হস্ত পরিমাণ হচ্ছে হাতের কনুই পর্যন্ত দীর্ঘ্য। বাইবেলে বর্তমান হিসাব অনুযায়ী এক হস্ত সমান প্রায় ৪৫ সে: মি: অনুগ্রহের সিংহাসন ছিল দৈর্ঘ্যে আড়াই হস্ত পরিমাণ, আর যখন মেট্টিক প্রদ্ধতিতে এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১১৩ সে: মি:। এবং এর প্রস্থ ছিল দেড়। 
 হস্ত পরিমাণ যা প্রায় ৬৭.৫ সে: মি: সাধারণ জ্ঞানে এটা আমাদেরকে অনুগ্রহ সিংহাসনের আকৃতিটা প্রকাশ করে। 
 সাক্ষ্য সিন্দুকটি ছিল শিটীম কাষ্ঠের তৈরী এবং এর ভিতরে ও বাইরে স্বর্ণ দ্বারা মুড়িত ছিল। কিন্তু অনুগ্রহের সিংহাসন যা সিন্দুকের উপরে রাখা ছিল তা ছিল সম্পূর্ণরূপে খাঁটি স্বর্ণের তৈরী। আর এর উভয় প্রান্তে দুই করূব ছিল, তাদের দুই পক্ষ বিস্তার করতে যে সিন্দুক আচ্ছাদিত ছিল, তাহল, অনুগ্রহের সিংহাসন, -আর করূবের দৃষ্টি ছিল অনুগ্রহের সিংহাসনের দিকে। অনুগ্রহের সিংহাসন সেখানেই যেখানে ঈশ্বর তাঁর অনুগ্রহ প্রদান করেন, যারা বিশ্বাসে তাঁর কাছে আসে।
 সিন্দুকের চার কোনায় চারটি স্বর্ণের কড়া রাখা হত। প্রত্যেক পাশে দুইটি স্বর্ণের কড়া রাখা হত, এবং যাতে সাক্ষ্য-সিন্দুক বহন করা যায় তত্‍জ্জর্ন্যে করার মধ্যে বহনদন্ড রাখা হত। এই বহনদন্ড ছিল শিটীম কাষ্ঠের তেরী এবং স্বর্ণ দ্বারা মুড়িত। একপাশে দুইটি কড়ার মধ্য দিয়ে বহনদন্ড রাখা এবং অন্যপাশের দুইটি কড়ার মধ্য দিয়ে বহন দন্ড রাখার মধ্য দিয়ে ঈশ্বর নিশ্চিত করেছেন যাতে লোকেরা এই সিন্দুক তুলতে পারে এবং বহন করতে পারে। আর আমাদের প্রভু বলেছেন, “আর আমি সেই স্থানে তোমার সহিত সাক্ষাত করিব।” 
 সিন্দুকে বহনদন্ড স্থাপনের দ্বারা অনুগ্রহ সিংহাসনের সাথে সাক্ষ্য- সিন্দুক বহন করতে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের প্রস্তুত করেছিলেন, এর অর্থ হল, ঈশ্বর সমগ্র জগতের মধ্যে সুসমাচার বিস্তার করতে আমাদের চেয়েছেণ। একই সত্য ছিল সুগন্ধি বেদি, তাহল, এর উভয় পাশে কড়া রাখা হত, কড়ার মদ্যে বহন দন্ড রাখা হত, এবং দুইজন লোককে এই বেদি বহন করতে নিযুক্ত করা হত। এরও অর্থ হল, আমরা যখনই পরীক্ষায় পড়ি, তখন আমাদের উচিৎ ঈশ্বরের সাহায্য চাওয়া, আর এই জন্য আমরা যখনই সুসামচার প্রচার করতে চাই আমাদের উচিত প্রার্থনা করে বের হওয়া। 
 সাক্ষ্য-সিন্দুকে তিনটি উপাদান রাখা ছিল: মান্না সম্বলিত স্বর্ণের পাত্র, হারোণের মুকুলিত যষ্ঠি এবং আজ্ঞা সম্বলিত পাথর ফলক। এ সবের অর্থ কি? প্রথমতঃ মান্না সম্বলিত স্বর্ণের পাত্রের অর্থ হল, যীশু খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদেরকে নূতন জীবন দান করেন। একদা তিনি জনসাধারণের সম্মুখে বলেছিলেন, “আমিই সেই জীবন-খাদ্য। যে ব্যক্তি আমার কাছে আইসে, সে ক্ষুধার্ত, হইবে না, এবং যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে তৃষ্ণার্ত হইবে না, কখনও না” (যোহন ৬:৩৫)। 
 হারোণের মুকুলিত যষ্ঠি আমাদেরকে বলে যে, যীশু খ্রীষ্ট হলেন পুনরুত্থিত প্রভু এবং তিনি আমাদেরকে অনন্ত জীবন দান করেছেন। আজ্ঞা সম্বলিত পাথর ফলক আমাদের বলে যে, ব্যবস্থার সম্মুখে আমরা অবশ্যই মৃত্যুজনক শাস্তির যোগ্য। যাহোক, ঈশ্বরের অনুগ্রহ এতই মহৎ যে, ব্যবস্থা আমাদেরকে যে পাপের বিষয় দেখায়, আমাদের সমস্ত শাস্তিকে এটা আচ্ছাদিত করেছে। ব্যবস্থার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই সিন্দুকের আলোর ন্যায় অনুগ্রহের সিংহাসন যথাযোগ্য ভাবে স্থাপন করা হয়েছিল। ঈশ্বর তাঁর পুত্র যীশুকে বলিদানের মধ্য দিয়ে যথাযুক্ত ভাবে অনুগ্রহের সিংহাসন সম্পূর্ণ করেছেন। অতএব, জল ও আত্মার সুসমাচারে প্রত্যেক বিশ্বাসী দৃঢ় প্রত্যয়ে অনুগ্রহের সিংহাসনের, পাপাবরণের কাছে আসতে পারে। 
 
 
মহামূল্যবান রক্ত যা অনুগ্রহের সিংহাসনের উপরে ছিটান হত! 
 
 প্রথমত আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে যে, অনুগ্রহ সিংহাসনের কি নিগুঢ়তত্ত্ব লূকিয়ে আছে। বছরে একবার মহাযাজক নিষ্পাপ বলির রক্ত নিতেন এবং মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করতেন। পরে তিনিএই রক্ত সাত বার অনুগ্রহের সিংহাসনের উপর ছিটিয়ে দিতেন। ঈশ্বর বলেন যে ঐ সময় তিনি অনুগ্রহের সিংহাসনে তাদের সাক্ষাত করতেন। মহাযাজকের ন্যায় অনুরূপ বিশ্বাস যাদের থাকত, তাহলে-বলিদান প্রথায় তাদর পাপের ক্ষমা হয়েছে এই বিশ্বাস যাদের রয়েছে ঈশ্বর তাদের সাতে সাক্ষাত করতেন। 
 অনুগ্রহ সিংহাসনের উপর বলির রক্ত ছিটানই ঈশ্বরে কেবল পাপের বিচার করেন এবং মানব জাতির উপর তাঁর অনুগ্রহ প্রকাশ করে। সপ্তম মাসের দশম দিন প্রায়শ্চিত্তের দিন, মহাযাজক হারোণ ইস্রায়েল জাতির সারাবছরের পাপ মুছে ফেলতে বলিদানের যোগ্য উপহারের মস্তকের উপর তার হস্ত অর্পণ করতেন। পরে তিনি রক্ত নিতে এটাকে বলিদিতেন, এবং এর রক্ত নিয়ে তিরস্করিণীর অভ্যান্তরে অনুগ্রহ সিংহাসনের উপর ছিটিয়ে দিতেন (লেবীয় ১৬:১১-১৬)।
 যে রক্ত ছিটান হয়েছে তাঁর মধ্য দিয়ে ঈশ্বর ইস্রায়ে জাতির সাথে সাক্ষাত করতেন এবং তাদেরকে পাপের ক্ষমার আশীর্বাদ দান করতেন। এটা ছিল ইস্রায়েলজাতির উপর ঈশ্বরের অনুগ্রহ, যা তিনি বলিদান প্রথার মধ্য দিয়ে স্থির করেছিলেন। বলিদানের যোগ্য পশুর মস্তকের উপর হস্তৰ্পণ করে এবং রক্তের দ্বারা ঈশ্বর কেবল তাদের পাপ মুছে দিতেন এবং অনুগ্রহের দ্বারা তাদের পাপ ক্ষমা করে তাঁর দয় প্রদান করেছেন।
 তাহলে, কিভাবে আমরা এই অনুগ্রহ গ্রহণ কতে পারি? কোন বাক্যের দ্বারা ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ একেবারেই মুছে দিয়েছেন? ঈশ্বর আমাদেরকে বুঝিয়েছেন যে, আমাদের অবশ্যই এই বিশ্বাস থাকতে হবে যা বলিদান যোগ্য প্রথায় প্রতিয়মান সত্য জানে ও বিশ্বাস করে, আমাদের নিমিত্ত এই দান গ্রহণ করতে সক্ষম করে যা, তিনি আমাদের নিমিত্ত প্রদান করেছেন। বলির মস্তকের উপর হস্তৰ্পণ এবং এর রক্ত এই দুটি ঘটনার পরিপূর্ণতা সাধন করতে তাঁর ধার্মিকতার নিমিত্ত ঈশ্বর এটা স্থির করেছিলেন। পূরাতন নিয়মের এই বলিদান প্রথা বাপ্তিস্ম ব্যতিরেকে আর অন্য কিছু প্রকাশ করে না, যা যীশু খ্রীষ্ট গ্রহণ করেছিলেন এবং রক্ত যা তিনি ক্রুশে সেচন করেছিলেন। 
 আমাদের নিজেদের পাপের নিমিত্ত ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্ট জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিতে যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এই সমস্ত পাপের মূল্য পরিশোধ করতে ক্রুশে বলির উপহার হয়েছেন, আমাদের জন্য মরেছেন, এবং আমাদেরকে জীবন্ত করতে তিনি পুনরায় মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছেন। যীশুখ্রীষ্ট যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছেন এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছেন তা আমাদের পাপের ক্ষমা দিয়েছে, এবং এগুলোই প্রকৃত আর্শিবাদের অনুগ্রহ; যাদের এরূপ বিশ্বাস রয়েছে তারাই ঈশ্বরের সাথে মিলিত হতে সক্ষম। এই সত্য হল জল ও আত্মার সুসমাচারের ছায়া। জল ও আত্মার সুসমাচার হল প্রকৃত সত্য, যা সত্যবিশ্বাসের ভিত্তি স্থাপন করেছে, যা পাপীদেরকে ঈশ্বরের কাছ থেকে তাদের পাপের ক্ষমা গ্রহণ করতে সক্ষম করেছে, যীশুখ্রীষ্ট আমাদের পাপের নিমিত্ত বলির উপহার হয়েছেন। তিনি সত্যের সেতুবন্ধন হয়েছেন যা আমাদেরকে পবিত্র পিতা ঈশ্বরের কাছে যেতে অনুমোদন করেছে। 
 আবার, চার রঙের সুতা; যা সমাগম তাম্বুর দ্বারে ব্যবহার করা হত, তার মধ্যে এই সত্যের নিমিত্ত আমরা কিছু বিশেষ সাক্ষ্য প্রমান খুজে পাই; এই চার রঙের সূতা হল: নীল, বেগুনী ও লাল সূতা এবং পাকান মিহি মসীনা সূত। অন্যভাবে বলা যায়; সমাগম তাম্বুর দ্বারের এই চার প্রকারের সূতা আমাদেরকে সত্য সুসমাচারের বিষয় প্রকাশ করে। 
 প্রথম সূত্র হল, সমাগম তাম্বুর দ্বারে প্রতিয়মান নীল সূতার নিগুঢ়তত্ত্ব। এই নিগুঢ়তত্ত্ব হল যীশু খ্রীষ্ট যোহনের সূতার বাপ্তাইজিত হয়েছেন, এর অর্থ হল, তিনি জগতে আমাদের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন। অপর দিকে, আমাদের প্রভু আমাদেরকে পাপ সমূহ গ্রহণ করেছেন যখন যোহন তাঁর উপর হাত রেখেছিলেন। এর কারণে তিনি যোহনতে তাঁকে বাপ্তাইজিত করতে সম্মত হতে বলেছিলেন, বললেন “এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত” (মথি ৩:১৫)। 
 দ্বিতীয় সূত্র হল সমাগম তাম্বুতে প্রতিয়মান বেগুনী সূতা “বেগুনী” রক্ত হলে রাজার রঙ। যীশু খ্রীষ্ট হলেন রাজাদের রাজ, যিনি মানবজাতির ত্রাণকর্তা রূপে তাদেরকে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করতে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন তিনি স্বর্গের গৌরব পরিত্যাগ করেছিলেন এবং আমাদের পাপ মুছে ফেলতে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। যীশু খ্রীষ্ট তাঁর অস্তিত্বে নিজেই ঈশ্বর, তথাপি আমাদের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করতে তিনি এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং পিতার ইচ্ছার আনুগত্যে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। অন্যভাবে বলা যায়, আমাদের সমস্ত পাপ মুছে ফেলতে, পাপীদেরকে উদ্ধার করতে ঈশ্বর স্বর্গের গৌরবের সিংহাসন পরিত্যাগ করেছিলেন এবং এই পৃথিবীতে কুমারী মেরীর গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। অতএব, আমরা অবশ্যই এটা বিশ্বাস করব যে, ঈশ্বর নিজেই কুমারীর গর্ভে জন্ম নিবেন, বাপ্তাইজিত হবেন, এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করবেন, ও সমস্ত প্রতিজ্ঞা সম্পন্ন করবেন। এ সমস্ত কিছুই ৭০০ বছর পূর্বে যিশাইয় ভাববাদির মধ্য দিয়ে তিনি স্থির করেছিলেন। 
 তৃতীয় সূত্র হল লাল সূতা। এটা যীশুর রক্তকে প্রকাশ করে। এই সত্য এটা প্রতিয়মান করে যে, যীশু খ্রীষ্ট ক্রুশে তাঁর সেচনের দ্বারা ঈশ্বরের প্ররিত্রাণের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করেছেন। ক্রুশের উপর তাঁর রক্ত সেচন ছিল একটা শাস্তি, যা ছিল সমস্ত পাপীদের মন্দতার নিমিত্ত সংরক্ষিত। পাপের শান্তি যা যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্য দিয়ে বহন করেছেন, মানব জাতির সেই সমস্ত পাপের বিচার হয়ে গেছে। তাঁর ক্রুশারোপন এবং রক্ত সেচনের দ্বারা তিনি জগতের সমস্ত পাপের দন্ড ভোগ করেছেন, আর এই ভাবে আমাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। যোহনের দ্বারা তাঁর বাপ্তিস্ম গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমাদের সমস্ত পাপ গ্রহণ করে এবং পিতার ইচ্ছা পালন করে তিনি মরেছেন, আর এই ভাবে ঈশ্বর পাপীদের সমস্ত মন্দতা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করেছেন।
 আপনি কি বুঝেন, যে যীশু সমস্ত পাপের দন্ডের অবসর ঘটিয়েছেন তাঁর ক্রুশারোপনের শাস্তির দ্বারা আমাদের সমস্ত পাপের ভঙ্ককর শাস্তি ভোগ করেছেন ও বিশ্বাসীদেরকে ঈশ্বরের সন্তান করেছেন? ঈশ্বর এই সকল কার্য্য করেছেন যেন আমরা এই সত্যে বিশ্বাস করি এবং অনন্ত জীবন গ্রহণ করি। তাই যীশু বাপ্তাইজিত হয়েছেন, এবং তারপর ক্রুশে শাস্তি ভোগ করেছেন, এর অর্থ হল, তিনি আমাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন। এই কারণে তিনি তর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের পূর্বে চিত্‍কার করে বলেছিলেন, “সমাপ্ত হইল!” (যোহন ১৯:৩০)। যীশু মহা আনন্দের সাথে ঘোষনা করলেন এবং মুক্ত করলেন যে, তিনি পিতা ঈশ্বরের ইচ্ছানুযায়ী পাপ থেকে আমাদের পরিত্রাণ সম্পূর্ণ করেছেন। 
 সবশেষে, মিহি মসীনা সূতা প্রকাশ করে যে, যীশু হলেন বাক্যের ঈশ্বর। তিনি তাঁর শ্ৰত/কাৰ্য্য ও ধার্মিক বাক্যের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। পূরাতন নিয়মের মধ্য দিয়ে তিনি পূর্বেই বলেছিলেন যে, তিনি এই পৃথিবীতে আসবেন এবং তাঁর বাপ্তিস্ম ক্রুশারোপনের দ্বারা সমগ্র মানবজাতিকে উদ্ধার করবেন। আর পরে তিনি নূতন নিয়মে যথাযথ ভাবে তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছেন। এই কারণে বাইবেল অনুযায়ী,“আদিতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের কাছে ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বর ছিলেন আর সেই বাক্য মাংসে মূর্তিমান হইলেন, এবং আমাদের মধ্যে প্রবাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেমন পিতা হইতে আগত একজনের মহিমা; তিনি অনুগ্রহের ও সত্যে পূর্ণ” (যোহন ১:১,১৪)। 
 এই সত্য আমাদের সমস্ত পাপ তুষারের ন্যায় শুভ্ররূপে ধৌত করতে সক্ষম করেছে। যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর রক্ত সেচন করেছেন, তা হস্তার্পণ এবং প্রায়শ্চিত্তের বলিদান প্রথা ছাড়া অন্য কিছু নয়। এর কারণ যীশু জগতের সমস্ত পাপ তাঁর কাঁধে বহন করেছেন, তাই তিনি ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছেন। যেহেতু যীশু আমাদের পাপ বহন করতে আমাদের ভুলে বাপ্তাইজিত হয়েছেন, এবং ক্রুশের পথে গিয়েছেন ও ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছেন এটাই সেই সত্য যা প্রায়শ্চিত্ত রূপে আমাদের সমস্ত পাপ ধৌত করেছে।
 যীশু যখন মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে আসিলেন, তখন তিনি যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং যে রক্ত তিনি ক্রুশে সেচন করেছিলেন তা নীল, বেগুনী ও লাল সূতায় প্রতিয়মান সত্য। যীশু ২০০০ বছর পূর্বে এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বাপ্তাইজিত হয়ে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর বহন করেছিলেন, ক্রুশে মরেছিলেন এবং তৃতীয় দিবসে পূনরায় মৃত্যু থেকে উঠেছেন, পরবর্তি ৪০ দিন সাক্ষ্য বহন করেছেন এবং তারপর ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণ পাশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন,-এটাই হল নীল, বেগুনী ও লাল সূতায় প্রতিয়মান সত্য। ঈশ্বর আমাদেরকে এই সত্যে বিশ্বাস করতে বলেছেন, কেননা আমাদের পাপ মুছে ফেলার দ্বারা সমস্ত পাপ থেকে তিনি আমাদেরকে উদ্ধার করেছেন।
 আমরা যখন এই সত্যে বিশ্বাস করি, তখন ঈশ্বর আমাদেরকে বলেন, “এখন, তুমি আমার সন্তান হয়েছে। তুমি আর পাপী নও। তুমি আমার লোক এবং আর পাপী নও। আমি তোমাকে তোমার সমস্ত পাপ, শাস্তি ও অভিশাপ থেকে উদ্ধার করেছি। আমি তোমাকে আমার শর্তহীন প্রেমের দ্বারা উদ্ধার করেছি। কেননা তুমি আমার কাছে এত প্রিয় যে আমি তোমাকে বিনা শর্তে উদ্ধার করেছি। কারণ আমি তোমাকে প্রেম করি, আমার ইচ্ছায় আমি তোমাকে রক্ষা করেছি। আমি তোমাকে কেবল প্রেমই করি না, বরং বাস্তবিক এই ভাবে তোমার প্রতি আমার প্রেম প্রদর্শন করেছি। আমার বলিকৃত রক্তের দিকে তাকাও। এটাই তোমার প্রতি আমার প্রেমের সাক্ষ্য প্রমাণ। এই সাক্ষ্য প্রমাণ আমি তোমাকে দেখিয়েছি।” 
 আমরা যখন দ্ব্যর্থহীন বেশে প্রভুর পক্ষে বের হয়ে আসি, তখন তিনি আমাদেরকে দেখনা যে, তিনি আমাদেরকে নীল, বেগুনী ও লাল সূতা দ্বারা উদ্ধার করেছেন। প্রভু এই পৃথিবীতে এসেছেন বাপ্তাইজিত হয়েছেন, ঘৃণিত হয়েছেন এবং ক্রুশে মৃত্যু বরণ করেছেন, পুনরায় মৃত্যু থেকে উঠেছেন এবং স্বর্গে অধিষ্ঠান করেছেন। যে কেউ তাঁর পরিত্রাণের প্রেমে বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাঁর সাথে মিলিত হন।
 যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাদেরকে পরিত্রাণের অনুগ্রহ প্রদান করেন। ঈশ্বরের পরিত্রাণ কেবলমাত্র ঈশ্বরের সৃষ্ট সন্তানদের মধ্যে বিরাজ করে। ঈশ্বর আমাদের বলেন, “তুমি আমার সন্তান। তুমি আমার পুত্র এবং কন্যা । তুমি আমার শয়তানের সন্তান নও , বরং তুমি আমার নিজের সন্তান। আমি আমার পুত্র যীশুর মধ্য দিয়ে তোমার সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছি। এখন আমি তোমাকে আমার প্রজা করেছি এবং তুমি বিশ্বাসে আমার প্রজা হয়েছ।” ঈশ্বর কেবল পাপীদেরকে উদ্ধারই করেন নাই, বরং তিনি তাদেরকে তাঁর সন্তান করতে অনুগ্রহও প্রদান করেছেন। 
 ঈশ্বর সমাগম তাম্বুতে সিন্দুকের সাক্ষ্য পত্রকে অনুগ্রহের সিংহাসন রূপে বলেছেন। এর সম্মুখভাগে দুইটি করূব রাখা ছিল। ঈশ্বর কেন বলেছেন যে, তিনি অনুগ্রহের সিংহাসনের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েল জাতির সাথে কথা বলবেন? এর কারণ ছিল বলির পশু যার উপরে হস্তার্পণের দ্বারা তাদের সমস্ত পাপ চলে যেত, সেই বলির পশুর রক্ত গ্রহণের দ্বারা ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির পাপ মুছে দিতেন। 
 অন্যকথায়, ঈশ্বর এরূপ বলেছিলেন, কারণ তিনি চেয়েছিলেন, ইস্রায়েলের লোকদের হোমবলির উপর হস্তার্পণের মাদ্যেমে তাদের পাপ সব এর মাথার উপর অর্পন করে পাপ মোচনের আর্শিবাদ প্রদান করতে ও তাদের প্রতিনিধি রূপে সমস্ত অপরাধ মুছে দিয়ে তাদের পাপের জন্য পরিশোধ করেছিলেন। কারণ ঈশ্বর পাপের প্রায়শ্চিত্তের উপহার ব্যতীত পাপীদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে পারেন না। এটা ছিল সেই পাপার্থক হোমবলি যার মাধ্যমে তিনি তাদের পাপ নোচন করেছিলেন এবং তাদের স্বক্ষাতে মিলিত হয়েছিলেন।
 আদমের বংশধর রূপে এই পৃথিবীতে প্রত্যেকেই পাপী হয়ে জন্ম গ্রহণ করে। এজন্য প্রত্যেকেরই পাপ হয়েছে, আর একারণে কেউই বলিদান ব্যতিত ঈশ্বরের সাক্ষাতে মিলিত হতে পারেনা এজন্য ঈশ্বর বলেছেন যে, তিনি ইস্রায়েলজাতির পাপের প্রায়শ্চিত্তের নিমিত্তে বলির উপহার গ্রহণ করবেন, এবং অনুগ্রহের সিংহাসনে তাদের সাথে কথা বলবেন।
 ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির জন্য সপ্তম মাসের দশম দিনকে প্রায়শ্চিত্তের দিন হিসাবে স্থির করেছেন। ইস্রায়েল জাতির এক বছরের পাপ বলিদানের উপহারের উপর চলে যেতে এবং এই বলির রক্ত তাঁকে দানের জন্য ঈশ্বর একজন মহা যাজক নিযুক্ত করলেন। এই দিনে মহাযাজক তাদের স্থলে পাপার্থকবলি উপহার দিব।
 
 

পূরাতন নিয়মের বলিদান প্রথা পাপীদেরকে তাদের মন্দস্বভাব থেকে মুক্তির নিমিত্ত

 
 লেবীয় ১:৪ পদ যে ভাবে বলে, “পরে হোম বলির মস্তকে হস্তৰ্পন করিবে; আর তাহা তাহার প্রায়শ্চিত্ত রূপে তাহার পক্ষে গ্রাহ্য হইবে,” একজন পাপীর সমস্ত পাপ বলির মস্তকের উপর হস্তার্পণের দ্বারা বলির ছাগের উপর বাস্তবিক চলে যেত। বিশ্বাসে যে উপহার দেওয়া হত ঈশ্বর সানন্দে তা গ্রহণ করতেন, কেননা তা সত্যই তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করে। ইস্রায়েল জাতির জন্য ঈশ্বর যে বলিদানের প্রথা স্থির করেছেন, এটাই ছিল প্রয়োজনীয় এবং প্রথম ধাপ। 
 পরে ঐ ব্যক্তি পশুর গলা কেটে এর রক্ত নিত এবং এই রক্ত যাজকের কাছে দিত। যাজক পরে এই রক্ত হোমবেদির শৃঙ্গের উপর রাখত, এর মাংস বেদির উপর রাখত এবং তা পোড়ানো হত, আর এই ভাবে পাপীদের পাপের নিমিত্ত বলির উপহার হিসাবে ইহা ঈশ্বরকে দেওয়া হত। এটাই ছিল পরিত্রাণের ব্যবস্থা, যা প্রত্যেক পাপীর পাপ মুছে ফেলতে ঈশ্বর স্থির করেছিলেন। 
 যাহোক, সমপ্ত মাসে দশম দিনে, প্রায়শ্চিত্তের দিনে ঈশ্বর তাঁর লোকদেরকে বলি উপহার দিতে অনুমতি দিতেন যেন তারা এক বছরের পাপের ক্ষমা পেতে পারে। ঐ দিনে ইস্রায়েল জাতির প্রতিনিধি মহাযাজক দুইটি ছাগ প্রস্তুত করে রাখতেন। “পরে হারোন ঐ দুইটি ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; একগুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে” (লেবীয় ১৬:৮-৯)। তিনি প্রথম ছাগের মস্তকের উপর হাত রাখতেন যেন বলির উপর ইস্রায়েল জাতির এক বৎসরের পাপ চলে যায়। পরে বলির রক্ত নিয়ে মহাপবিত্র স্থানে যেতেন, আর তার আঙ্গুলে রক্ত মেখে অনুগ্রহ সিংহাসনের পূর্ব পাশে ছিটিয়ে দিতেন, এবং অনুগ্রহ সিংহাসনের সম্মুখে তিনি এভাবে সাতবার ছিটিয়ে দিতেন। বলির উপহারের এই রক্ত গ্রহণের দ্বারা ঈশ্বর তাদের পাপ ধৌত করেছেন এবং তাদেরকে তাঁর নিজের লোক বলে অনুমোদন করতেন। 
 এরপর, মহাযাজক সমাগম তাম্বু থেকে বের হয়ে আসতেন, এবং অন্য ছাগটি ইস্রায়েল জাতির উপস্থিতিতে দিয়ে দিতেন। বাস্তবিক তার লোকদের পাপ মুছে ফেলতে, তিনি পুনরায় বলির উপহারের মস্তকের উপর তার হস্ত অর্পণ করতেন। পরে তিনি দোষ স্বীকার করতেন, “গত একবছরে আমার লোকেরা যে সমস্ত পাপ করেছে, আমি সেই সকল পাপ এই উপহারের উপর অর্পণ করছি।” এরপর, একজন উপযুক্ত লোকের দ্বারা তিনি ছাগটি প্রান্তরে পাঠিয়ে দিতেন। 
 এই ছাগটিকে মরতে বিচ্ছিন্ন ভুমিতে পাঠিয়ে দেওয়া হত (লেবীয় ১৬:২০-২২) এই বিষয়টি আমাদেরকে বলে যে, মহা প্রায়শ্চিত্তের দিনে যে পাপার্থক বলি উৎসর্গ করা হত, তার মধ্য দিয়ে ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ একেবারেই মুছে যেত। 
 এই বলির ছাগ যীশু খ্রীষ্টের প্রতিবিম্ব বই অন্য কিছু নয়। এই পাপার্থক বলি পরিত্রাণের সত্যকে প্রতিয়মান করে যা যীশু খ্রীষ্ট যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে সম্পন্ন করেছেন এবং এই জগতের প্রত্যেকের পাপ মুছে ফেলতে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন। ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন যে, ইস্রায়েল জাতির যখন মহাযাজকের মধ্য দিয়ে ব্যবস্থানুসারে বলি উৎসর্গ করবে, তখন তিনি অনুগ্রহের সিংহাসনের ভেতর দিয়ে তাদের সাতে কথা বলবেন। ইস্রায়েল জাতি মহাযাজক এবং অনুগ্রহ সিংহাসনকে মূলবান মনে করত, কেননা এই মহাযাজকই তাদের স্থলে প্রতিবছর পাপার্থ বলি উৎসর্গ করতেন, আর এটাই অনুগ্রহ সিংহাসন যেখানে তাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করা হয়েছে। 
 তেমনিভাবে, যীশু আমাদের সমস্ত পাপের নিমিত্ত চিরতরে তাঁর দেহ উৎসর্গের দ্বারা, তাঁর বাপ্তিস্ম এবং রক্ত সেচনের মধ্যদিয়ে ঈশ্বরের সাথে আমাদেরকে পূনঃমিলন করিয়েছেন। এই কারণে আমরা প্রভুকে অসংখ্য ধন্যবাদ না দিয়ে পরি না , আর এই জন্যই তাঁর ক্রুশারোপনের সাথে সাথে তাঁর বাপ্তিস্মেও বিশ্বাস করি। 
 
 
অনুগ্রহ সিংহাসন দশ আজ্ঞা সম্বলিত দুইটি পাথর ফলকে মুদ্রাঙ্কিত করা হয়েছে, যা সাক্ষ্য-সিন্দুকের 
অভ্যান্তরে রক্ষিত
 
 সিনাই পর্বতে ঈশ্বর মোশিকে আজ্ঞা দিলেন যেন তিনি পাথরে খোদাই করা দশ আজ্ঞা সম্বলিত পাথর ফলক দুইটি সাক্ষ্য-সিন্দুকের অভ্যান্তরে রাখন এবং অনুগ্রহের সিংহাসনের দ্বারা সিন্দুক দ্বারা সিন্দুক বদ্ধ করেন। ঈশ্বর এরূপ করতে বললেন, কারণ তিনি চেয়েছেন যেন তিনি ইস্রায়েল জাতির উপর তাঁর অনুগ্রহের প্রেম প্রদান করতে পারেন, কেননা তারা ব্যবস্থা পালন করতে পারত না। অন্যভাবে বলা যায়, এর আর একটি কারণ হল ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির সাথে থাকতে পারতেন না, কেননা যে ব্যবস্থা ঘোষনা করে যে পাপের বেতন মৃত্যু, সেই ব্যবস্থা দ্বারাই তারা প্রতিনিয়ত পাপ করত। ইস্রায়েল জাতিকে পাপের ক্ষমা দিতে এই ব্যবস্থা ছিল।
 অপর দিকে ইস্রায়েল জাতি ছিল, ঈশ্বরের সাক্ষাতে এতই অনুপযুক্ত যে, তারা তাদের কায্য দ্বারা ব্যবস্থা পালন করতে পারত না। এই কারণে ঈশ্বর ব্যবস্থার সাথে তাদের বলিদানের প্রথা দিলেন। বলিদানের মধ্য দিয়ে তাদের সমস্ত পাপ থেকে পরিস্কৃত হওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা ছিল। এই বিষয়টি আমাদের প্রকাশ করে যে, ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপ মুছে ফেলতে বলিস মস্তরে উপর হস্তার্পণের দ্বারা তাদের পাপ চলে যেত, এবং তাদের স্থলে বলির পশু হত্যা করতে, ঈশ্বর তাদের কাছে বলি যোগ্য উপহার দাবী করেছেন। ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে তাঁর রোধের ব্যবস্থার সাথে সাথে তাঁর পরিত্রাণের ব্যবস্থাও দিয়েছেন। এইরূপে আমাদের ঈশ্বরের পরিত্রাণের এই দুই অরাপর সত্য; যা মসিহ যোহনের কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন, এবং রক্ত যা তিনি ক্রুশে সেচন করেছেন, এতে বিশ্বাস করার প্রয়োজন রয়েছে। 
 পুরাতন নিয়মে পাপার্থক বলির নিমিত্ত যে পশু উৎসর্গ করা হত, নূতন নিয়মে তা ছিল মশিহের দেহ। শাস্ত্রে আমাদেরকে যে বলির উপহার দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে ঈশ্বরের প্রেমের অনুগ্রহ, য আমাদের সমস্ত পাপ মুছে দিয়েছে। অতএন এখন আমাদের সমস্ত পাপ মুছে ফেলতে প্রকৃতই আমাদের প্রায়শ্চিত্তের বলি উপহারের প্রয়োজন রয়েছে। অনেকদিন আগে থেকেই মানব জাতির প্রেমের অনুগ্রহের প্রয়োজন রয়েছে।
 সুতারাং, আমরা যদি পাপ করি তাহলে ন্যায় বিচারক ঈশ্বর অবশ্যই আমাদের বিচার করবেন, তাই পাপার্থক বলির উপর পাপ প্রবাহিত করার দ্বারা আমাদের পাপ সমূহ ধৌত করার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন কোরিয়ায় একটা কথা চলে আসছে, “পাপকে ঘৃনা কর, কিন্তু পাপীকে নয়,” ঈশ্বর আমাদের পাপকে ঘৃনা করেন, কিন্তু তিনি আমাদেরকে ঘৃনা করেন না। ঈশ্বরের কাছে আমাদের আত্মার পাপ মুছে ফেলতে বলির পশুর উপর আমাদের হস্ত অর্পণের প্রয়োজন রয়েছে, এর রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে; এবং তাঁকে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। পূরাতন নিয়মে ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতেন; এর অর্থ হচ্ছে ঈশ্বর তাদের বলির উপহার গ্রহন করতেন আর এই ভাবে তাদের পাপ ক্ষমা করতেন। 
 ইস্রায়েল জাতির জন্য একমাত্র ব্যবস্থাদানকারী ছিলেন ঈশ্বর। যিহোবা, যিনি নিজেই ইস্রায়েল জাতির সাক্ষাতে নিজেকে প্রকাশ করেছেন, তিনি সেই, যিনি নিজেই নিজের অস্তিত্ব। যেমন আমরা বুঝতে পারছি যে ঈশ্বরই কেবল ব্যবস্থার আইন প্রনেতা, আমরা অবশ্যই এটা অনুধাবন করব যে তিনি আমাদের সকলের ঈশ্বর এবং তিনি বলিদানের প্রথা গ্রহণ করেন, যা তিনি আমাদের পাপ মুছে ফেলতে হীর করেছেন। ঈশ্বর যে বলিদানের প্রথা স্থির করেছেন তার মধ্যদিয়ে আমরা এটা উপলব্দি করতে সক্ষম হয়েছি; ঈশ্বর আমাদেরকে কতটা প্রেম করেছেন, এবং তিনি কতটা ধার্মিকতায় আমাদেরকে আমাদের পাপ থেকে কমুক্ত করেছেন। আর ঈশ্বরের এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা এটাও বুঝতে সক্ষম হয়েছি যে কিভাবে আমরা সাধারণ ভাবে তাঁর ব্যবস্থা পালন বরতে পারিনা। আমাদের স্বভাবে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা প্রতিমাপূজা করছি, সকল প্রকার পাপাচারন করছি এবং ব্যবস্থার নির্দেশ ভঙ্গ করছি। অতএব, এই কারণে যে কোন সময় আমরা আমাদের পাপের জন্য নরকে যেতে বাধ্য। আর এ কারণেই ঈশ্বর নিজেই আমাদের মুক্তিদাতারূপে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন।
 যীশুখ্রীষ্ট জগতের সমস্ত পাপের নিমিত্তে বলিরূপে নিজের দেহকে দান করেছেন। যে ভাবে পূরাতন নিয়মে পাপার্থক বলি উৎসর্গ করা হত, ঠিক একই ভাবে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন, বিশেষভাবে প্রায়শ্চিত্তের দিনে: বলির মস্তকের উপর হস্তার্পনের দ্বারা এবং রক্ত সেচনের দ্বারা এই বিষয়টি দেখান হয়েছে। সাক্ষ্য সিন্দুকের অভ্যান্তরে দুইটি পাথর ফলক এবং অনুগ্রহের সিংহাসন; ইস্রায়েল জাতির পাপেরক্ষমা গ্রহণের দিমিত্ত বিশেষভাবে প্রয়োজন ছিল, কেননা ঈশ্বর তাদেরকেই তাঁর প্রতিজ্ঞাত জীবন, নূতন জীবন গ্রহণ করতে সক্ষম করত যারা তাঁর ব্যবস্থাতে বিশ্বাস করত। বর্তমানে যে ব্যবস্থা ঈশ্বরের বিচার প্রকাশ করে এবং সত্য বাক্য যা পাপ থেকে অনন্তকালীন পরিত্রাণ আনয়ন করে, তা কেবল ইস্রায়েল জাতিকেই সক্ষম করে না, বরং আমাদেরকেও ঈশ্বরের সাথে মিলিত হতে এবং অনন্ত জীবন গ্রহণ করতে সক্ষম করে। 
 আপনি এবং আমি যারা এই বর্তমান যুগে বাস করছি, আমাদেরকে অবশ্যই জানতে হবে এবং বিশ্বাস করতে হবে কে আমাদের ঈশ্বর, তিনি আমাদেরকে কি বলছেন, এবং আমাদের পাপের ক্ষমা গ্রহনের মধ্যদিয়ে তিনি আমাদের জন্য কি করেছেন। পূরাতন নিয়মে সমাগম তাম্বুর দ্বারে প্রতিয়মান নীল, বেগুনী ও লাল সুতা এবং মিহি মসিনা সূতার বিশ্বাসের মধ্যদিয়ে ঈশ্বর আপনাকে এবং আমাকে আহবান করেছেন, আমাদেরকে গ্রহণ করেছেন, এবং যা এতে বিশ্বাস করে, সেই বিশ্বাস আমাদেরকে দিয়েছেন।
 
 

নীল সূতা সঠিক বাপ্তিস্মকে দেখায় যা যীশু গ্রহণ করেছেন

 
 চলুন আমরা মথি ৩:১৩-১৭ পদ দেখি, “তৎকালে যীশু যোহন দ্বারা বাপ্তাইজিত হইবার জন্য গালীল হইতে যর্দ্দনে তাঁহার কাছে আসিলেন। কিন্তু যোহন তাহাকে বারণ করিতে লাগিলেন, বলিলেন, আপনার দ্বারা আমারই বাপ্তাইজিত হওয়া আবশ্যক, আর আপনি আমার কাছে আসিতেছেন? কিন্তু যীশু উত্তর করিয়া কহিলেন, এখন সম্মত হও, কেননা এইরূপে সমস্ত ধার্ম্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত। তখন তিনি তাহার কথায় সম্মত হইলেন। পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তিনি তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, ইহাতেই আমি প্রীত।”
 পুরাতন নিয়ম প্রদত্ত বলিদান প্রথায় উপহারের মধ্য দিয়ে পিতা ঈশ্বর দেখাতে চেয়েছেন যে, তিনি তাঁর একমাত্র পুত্র যীশু খ্রীষ্টের উপর জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিবেন। বস্তুতঃ এই কারণে ঈশ্বরের সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করতে যোহন বাপ্তাইজক যীশুকে বাপ্তিস্ম দিয়েছিলেন। এই কারণে বাস্তবিক তিনি যখন যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়েছেন জগতের সমস্ত পাপ তাঁর উপর চলে গেছে, যারা এতে বিশ্বাস করে; তারা তাদের হৃদয়ের সমস্ত পাপের ক্ষমা পেতে পারে।
 ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান অনুসারে খ্রীষ্টিয়ান হতে মানুষ সাধারণ যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে, যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, জলের সেই বাপ্তিস্ম থেকে সম্পূর্ণ রূপে আলাদা। অন্য ভাবে বলা যায়, বর্তমান কালে লোকেরা জলে যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে থাকে, তা সাধারণ খ্রীষ্টিয়ান ধর্ম গ্রহণের একটা বাহ্যিক চিহ্নমাত্র। মানব জাতির প্রতিনিধি যোহন বাপ্তাইজকের হস্তার্পণের মধ্য দিয়ে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিতে যীশু যর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন। যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, এটা সেই বাপ্তিস্ম যা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত পাপের ক্ষমা, অনন্ত কালীন পরিত্রাণ সাধন করেছে, যা লেবীয়তে বলিদান প্রথার মধ্য দিয়ে ঈশ্বর স্থির করেছিলেন। তাই যীশু ব্যক্তিগত বাপ্তাইজিত হয়ে জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছিলেন এবং এই সমস্ত পাপের মূল্য পরিশোধ করতে ক্রুশের উপর মৃত্যুবরণ করেছেন, এটাই মানবজাতির নিমিত্ত ঈশ্বরের প্রেম এবং প্রকৃত পাপের ক্ষমা।
 এটা ছিল জগতের সমস্ত পাপ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করতে, তাই পিতা ঈশ্বর যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হতে তাঁর পুত্রকে স্থির করেছেন, “এখন সম্মত হও, কেননা এই রূপে সমস্ত ধার্মিকতা সাধন করা আমাদের পক্ষে উপযুক্ত” (মথি ৩:১৫)। “এইরূপে” এখানে এর অর্থ হচ্ছে, যীশু বাপ্তিস্ম গ্রহণের দ্বারা সমগ্র জগতের মানব জাতির সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিবেন। কেননা যোহন যীশু খ্রীষ্টকে বাপ্তাইজিত করেছেন, আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর উপর চলে গেছে। এর কারণ হল, যীশু খ্রীষ্ট আমাদের সমস্ত পাপ তাঁর বাপ্তিস্ম দ্বারা তুলে নিয়েছেন; তাই তিনি আমাদের স্থলে ক্রুশে রক্ত সেচন করেছেন ও মরেছেন। যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিলেন, তা হচ্ছে ঈশ্বরের কৃতজ্ঞতায় প্রেম এবং পাপের ক্ষমা। তিনি সত্যই আমাদের সমস্ত পাপ এই জলমগ্ন হওয়া তাঁর মৃত্যুকে বহন করে। আর তাই তিনি অগ্রে তাঁর পুনরুত্থানের সাক্ষ্য বহন দিতে জল থেকে উঠে আসবেন।
 
 

যীশুই আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং মুক্তিদাতা

 
 এটা সত্য যে, যীশু খ্রীষ্ট যিনি আমাদের কাছে এসেছিলেন, তিনি নিজেই ঈশ্বর, যিনি এই বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড এবং এর অভ্যান্তরের সমস্ত কিছুই সৃষ্টি করেছেন। আদিপুস্তক ১:১ পদ বলে, “আদিতে ঈশ্বর আকাশ মন্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন,” এবং আদিপুস্তক ১:৩ পদ বলে, “পরে ঈশ্বর কহিলেন, দীপ্তি হউক; তাহাতে দীপ্তি হইল।” যোহন ১:৩ পদ অনুযায়ী, 
“সকলই তাঁহার দ্বারা হইয়াছিল, যাহা হইয়াছে, তাঁহার কিছুই তাহা ব্যতিরেকে হয় নাই।” বাস্তবিকই যীশু খ্রীষ্ট পিতা এবং পবিত্র আত্মা দ্বারা সমগ্র বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করেছেন। 
 ফিলিপীয় ২:৫-৮ পদ অনুযায়ী, “খ্রীষ্ট যীশুতে যে ভাব ছিল, তাহা তোমাদিগেতেও হউক। ঈশ্বরের স্বরূপবিশিষ্ট থাকিতে তিনি ঈশ্বরের সহিত সমান থাকা ধরিয়া লইবার বিষয় জ্ঞান করিলেন না, কিন্তু আপনাকে শূন্য করিলেন, দাসের রূপ ধারণ করিলেন, মনুষ্যদের সাদৃশ্যে জন্মিলেন; এবং আকার প্রকারে মনুষ্যবৎ প্রত্যক্ষ হইয়া আপনাকে অবনত করিলেন; মৃত্যু পর্য্যন্ত এমনকি, ক্রুশীয় মৃত্যু পর্য্যন্ত আজ্ঞাবহ হইলেন।” তিনি হলেন প্রকৃত স্রষ্টা, যিনি এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আমাদেরকে পাপ থেকে মুক্ত করতে, এই প্রভু নিজেই একজন মানুষরূপে এসেছিলেন, যোহনের দ্বারা বাপ্তাইজিত হয়ে জগতের সমস্ত পাপ তুলেনিয়েছেন এবং এই বাপ্তিস্মের কারনে তাঁর তক্ত সেচন করেছিলেন; আর এভাবেই আমাদেরকে পাপ থেকে উদ্ধার করেছেন।
 সমাগম তাম্বুর সকল দ্বার নীল, বেগুনী ও লালসূতা এবং সাদা মিহি মসীনা দ্বারা প্রস্তুত করতে ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে স্থির করেছেন। বাপ্তিস্মের মধ্যদিয়ে জগতের সমস্ত পাপ তুলে নিতে যীশু যে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করবেন এবং তাঁর ক্রুশীয় রক্তের দ্বারা তাদের পাপের মূল্য পরিশোধ করবেন; তা প্রকাশ করতে ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতিকে সমাগম তাম্বুর দ্বারে নীল, বেগুনী ও লালসূতা ব্যবহার করতে বলেছেন।
 পুরাতন নিয়মে পাপীরা সমাগম তাম্বুতে তাদের বলির উপহার আনয়ন করত এবং হোমবলির বেদির সম্মুখে এর মস্তকের উপর তাদের হর্স্তাপনের দ্বারা বলিতে তাদের পাপ চলে যেত। তারপর তিনি বলির রক্ত নিতেন এবং এই রক্ত যাজকের কাছে দিতেন। তখন যাজক এই রক্ত হোমবেদির চারি শৃঙ্গে লেপন করতেন; এবং অবশিষ্ট রক্ত ভূমির উপর ঢেলে দেয়ার দ্বারা এই উপহার ঈশ্বরকে প্রদান করতেন।
 প্রশ্চিত্তের দিনে মহাযাজক যখন বলির রক্ত নিতেন এবং মহাপবিত্র স্থানে যার মস্তকে তার হস্ত অর্পণ করতেন এবং অনুগ্রহের সিংহাসনের উপর প্রক্ষেপ করতেন, তখন ঈশ্বর তাঁর সেই লোকের উপর ভয়ঙ্কর বিচার রূপে বলিকৃত উপহারের এই রক্ত গ্রহণ করতেন। কেন এই পশু হত্যা করা হত? এর কারন হল এই পশুর মস্তকে মহাযাজকের হস্তার্পণের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েলদের সমস্ত পাপ তুলে নেয়া হত। অন্যভাবে বলা যায়, এর রক্ত ছিল হস্তার্পণের ফল। এইভাবে ঈশ্বর বলিকৃত পশুর রক্ত গ্রহণ করতেন এবং বেদির উপর দগ্ধ মাংসের সৌরভযুক্ত মিষ্টি গন্ধ গ্রহণ করতেন, আর এইভাবে ইস্রায়েল জাতির সমস্ত পাপের ক্ষমা দিতেন। 
 নূতন নিয়মের যুগেও, ঠিক একই ভাবে যীশু এরূপ কার্য্য করতে এসেছিলেন; আমাদের পাপ তুলে নিতে এবং পাপের শাস্তি বহন করতে আমাদের প্রভু কুমারী মরিয়মের গর্ভে মানুষের বেশে এই পৃথিবীতে এসেছিলেন, এবং যোহনের দ্বারা বাপ্তিস্ম গ্রহণের মধ্যদিয়ে তিনি পরিত্রাণ সম্পন্ন করেছেন, এবং ক্রুশে তাঁর রক্ত সেচন করেছেন। নীল, বেগুনী, ও লালসূতার সুসমাচার প্রকৃতই সুসমাচার যা প্রতিয়মান করছে যে যীশু, নিজেই ঈশ্বর, যিনি বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন এবং ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। 
 যেহেতু যীশু তাঁর বাপ্তিস্মের মধ্যদিয়ে আমাদের সমস্ত পাপ তুলে নিয়েছেন, তাই তিনি ক্রুশবিদ্ধ হয়েছেন; তাঁর সমস্ত রক্ত সেচন করেছেন, মরেছেন এবং তৃতীয় দিবসে পুনরায় মৃত্যু থেকে উঠেছেন আর এভাবেই আমরা যারা তাকে বিশ্বাস করি তাদের ত্রানকর্ত্তা হয়েছেন, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিন পাশে বসে আছেন। যারা সত্যই যীশু খ্রীষ্টকে তাদের ত্রানকর্ত্তা রূপে বিশ্বাস করে এবং পিতা ঈশ্বরের সাক্ষাতে একবারেই যাদের পাপের ক্ষমা হয়েছে, যীশু খ্রীষ্ট তাদেরকে ঈশ্বরকে আব্বা বা পিতা বলে ডাকার অধিকার দিয়েছেন। এটাই হচ্ছে নীল, বেগুনী ও লালসূতায় লূকায়িত সত্যের নিগূঢ়তত্ত্ব। 
 মশীহ, তাঁর বাপ্তিস্ম এবং ক্রুশীয় রক্তের মধ্য দিয়ে আমাদের পাপ ধৌতকরণের কার্য্য সম্পন্ন করেছেন এবং আমাদের স্থলে আমাদের পাপের শাস্তি ভোগ করেছেন। এখন তিনি সমগ্র পৃথিবীর ত্রানকর্ত্তা হয়েছেন। তাই আমরা অবশ্যই বিশ্বস করব যে, পূরাতন নিয়মে সমাগম তাম্বুর দ্বার নীল, বেগুনী, ও লালসূতা এবং মিহি মসীনা সূতায় বোনা ছিল, এবং নূতন নিয়মে আমরা এও বিশ্বাস করব যে, মশীহ আমাদের মুক্তিদাতা; যিনি সত্যই এই পৃথিবীতে এসেছেন, বাপ্তিস্মের দ্বারা জগতের সমস্ত পাপ নিজের উপর তুলে নিয়েছেন, এবং ক্রুশে আমাদের সমস্ত পাপের শাস্তি ভোগ করেছেন,- আর এইরূপে বিশ্বাস করে আমরা অবশ্যই আমাদের পাপের ক্ষমা গ্রহণ করব।
 
 
খ্রীষ্টিয়ান হিসাবে তাঁর বাক্যে আপনি কতটা মনোযোগী? 
 
 যাত্রাপুস্তক ২৫:২২ পদ অনুসারে, “আর আমি সেই স্থানে তোমার সহিত সাক্ষাত করিব, এবং পাপাবরণের উপরিভাগ হইতে, সাক্ষ্য- সিন্দুকের উপরিস্থ দুই করূবের মধ্য হইতে তোমার সঙ্গে আলাপ করিয়া ইস্রায়েল সস্তানে প্রতি আমার সমস্ত আজ্ঞা করিব।” তাহলে আপনি জল ও আত্মার সুসমাচার, প্রায়শ্চিত্তের সুসমাচারের কতটা কাছে? কোথা থেকে প্রভু বলবেন যে, যারা যীশুকে মুক্তিদাতা হিসাবে বিশ্বাস করবে তাদের সাথে তিনি কথা বলবেন? যাত্রাপুস্তক ২৫:২২ পদে তিনি বলেন যে, সাক্ষ্য- সিন্দুকের ভেতর থেতে তিনি তোমাকে সমস্ত আজ্ঞা দিবেন। পুরাতন নিয়মে ইস্রায়েল জাতিকে ঈশ্বর বলেছিলেন, অনুগ্রহ সিংহাসন থেকে সমস্ত কিছুর বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলবেন। 
 আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এটাই হল ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা যে ব্যবস্থা সিদ্ধ বলিদানের মধ্যদিয়ে আপনাকে পাপের ক্ষমা প্রদানের পর তিনি আপনার জীবন দিবেন এবং আপনাকে তাঁর জাতি করবেন। ঈশ্বর আমাদেরকে বলেছেন যে, আপনি কতটা খ্রীষ্টিয়ান আচার অনুষ্ঠান বিশ্বাস করেন এটা কোন বিষয় নয়, কিন্তু জল ও আত্মার সুসমাচারের সত্য অগ্রাহ্য করে আপনি যদি যীশুতে বিশ্বাস করেন, তাহলে তিনি আপনাকে পরিচালনা করতে পারেন না। সুতরাং আপনি যদি সত্যই প্রভুর দ্বারা পরিচালিত হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রথমে পাপ ক্ষমার সত্য জানতে হবে এবং এতে বিশ্বাস করতে হবে, যা আপনাকে সমস্ত পাপ একবারেই মুছে দিয়েছে এবং তারপরে তাঁর তত্ত্ববধানের অপেক্ষা করুন। 
 একটা বিষয় রয়েছে যা আমি আপনাকে বলতে চাই, আর এটা জল, আপনি যদি ঈশ্বরের সন্তান হতে চান, এবং আপনি যদি তাঁর মন্ডলীর অংশ হতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই প্রথমে নীল, বেগুনী, ও লাল সূতার দ্বারা নিগুঢ়তত্ত্ব জল ও আত্মার সুসমাচারে বিশ্বাসের দ্বারা পাপের ক্ষমা পেতে হবে। কেবলমাত্র তারপরেই আপনি প্রভুর আজ্ঞা গ্রহণ করতে পারেন যা সাক্ষ্য-সিন্দুকের ভেতর দিয়ে আপনাকে বলা হয়েছে। 
 আমাদেরকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, যে বিশ্বাস আমাদের পাপের ক্ষমা গ্রহণ করতে সক্ষম করে, আমাদের যখন সেই বিশ্বাস থাকে, কেবল তখনই প্রভু সর্বদা আমাদেরকে আদেশ নির্দেশ দেন এবং আমাদের জীবনকে পরিচালিত করেন। আপনি কি এখনও প্রভুর নির্দেশ গ্রহণ করেছেন যা অনুগ্রহ সিংহাসন থেকে প্রভু আপনাকে দিয়েছেন? অথবা আপনি কি আপনার নিজস্ব অনুভূতি দিয়ে প্রভুকে অনুসরন করেছেন? 
 আপনার নিজস্ব আবেগ এবং অনুভুতি আপনার বিশ্বাসকে গঠন করতে পারে না, বরং কেবল আপনাকে দ্বিধাদন্দের দিকে নিয়ে যায়। সাক্ষ্য- সিন্দুকের ভেতর দিয়ে আপনাকে বলা ঈশ্বরেরর আজ্ঞা সমূহ যদি অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারবেন এবং বিশ্বাস করবেন যে সমাগম তাম্বুতে বলা নীল, বেগুনী ও লাল সূতা এবং মিহি মসীনা সূতা হল পাপের ক্ষমা যা ঈশ্বর আমাদেরকে দিয়েছেন। 
 হাল্লিলূয়া! প্রভুর বাপ্তিস্ম, ক্রুশীয় রক্ত এবং তাঁর প্রেম ও শক্তি যা আমাদেরকে জগতের সমস্ত পাপ থেকে উদ্ধার করেছে তার জন্য আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দেই।