Search

ስብከቶች፤

বিষয় ২ : ব্যবস্থা

[2-1] ব্যবস্থা অনুসরন করলে কি আমরা মুক্তি পাব? (লুক ১০:২৫-৩০)

ব্যবস্থা অনুসরন করলে কি আমরা মুক্তি পাব?
(লুক ১০:২৫-৩০)
 “আর দেখ, এক জন ব্যবস্থাবেত্তা উঠিয়া তাঁহার পরীক্ষা করিয়া কহিল, হে গুরু, কি করিলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হইব? তিনি তাহাকে কহিলেন, ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? কি রূপ পাঠ করিতেছ? সে উত্তর করিয়া কহিল, “তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” তিনি তাহাকে কহিলেন, যথার্থ উত্তর করিলে; তাহাই কর, তাহাতে জীবন পাইবে। কিন্তু সে আপনাকে নির্দোষ দেখাইবার ইচ্ছায় যীশুকে বলিল, ভাল, আমার প্রতিবাসী কে? এই কথা লইয়া যীশু বলিলেন, এক ব্যক্তি যিরুশালেম হইতে যিরীহোতে নামিয়া যাইতেছিল, এমন সময়ে দস্যুদলের হস্তে পড়িল; তাহারা তাহাকে আঘাত করিয়া আধমরা ফেলিয়া চলিয়া গেল।”
 
 
মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা কি?
তারা অনেক ভ্রান্তির মধ্যে বাস করে
 
 লুক ১০:২৮ পদ, “তাহাই কর, তাহাতে জীবন পাইবে।”
মানুষ অনেক ভ্রান্তির মধ্যে জীবন কাটায়। মনে হয়, এ ব্যাপারে তারা খুব নিরুপায়। তাদেরকে বুদ্ধিমানই মনে হয়, কিন্তু সহজেই তারা প্রতারিত হয় এবং পাপ সম্বন্ধে তারা অসচেতন। নিজেদেরকে না চিনেই আমরা জন্মগ্রহণ করেছি এবং এমনভাবে জীবন কাটাচ্ছি মনে হয় যেন আমরা আমাদের চিনি। মানুষ নিজেদের পাপের অস্তিত্বের কথা বলে। কখনো কখনো মনে হয় মানুষ ভাল কাজ করতেই অসমর্থ এবং নিজেদেরকে সৎভাবে প্রতিষ্ঠিত করতেও যেন তারা অক্ষম। নিজেদের ভাল কাজ প্রদর্শন করতে এবং তা নিয়ে গর্ব করতে তারা পছন্দ করে। তারা বলে যে তারা পাপী কিন্তু এমনভাবে কাজ করে যেন তারা কত ভাল।
 তারা জানে তাদের ভিতরে ভাল কিছুই নেই, ভাল কিছু তারা করতেও পারে না, এবং এভাবে নিজেদেরকে তো তারা প্রতারিত করেই, মাঝে মাঝে অন্যদেরকেও প্রতারিত করে। “ এসে দেখ, আমরা এত খারাপ নই; আমাদের ভাল কিছু আছে।”
 এইজন্য তারা অন্যদের দিকে দেখে এবং নিজেদেরকে এই বলে সান্ত্বনা দেয় যে, “ইস, ও যদি এটা না করত, এটা না করাই ওর জন্য ভাল ছিল। সে এভাবে বলত, তার জন্য ভাল হতো। আমার মনে হয় এইভাবে সুসমাচার প্রচার করা ভাল। আমার সামনেই সে পরিত্রাণ পেল, আমার মনে হয় অন্য অন্য পরিত্রাণ প্রাপ্তদের মত তার সব কাজ করা উচিত। আমি তো মাত্র ক’দিন হলো পরিত্রাণ পেয়েছি, আমি আরো শিখতে পারলে ওর চেয়ে ভাল কাজ করব।”
 তারা তাদের হৃদয়ের ছুরিকে আরো ধারালো করে। “অপেক্ষা কর, দেখ-আমি তোমার মত নই। তুমি তো ভাবছ তুমি আমার আগে চলছ, কিন্তু তুমি অপেক্ষা কর; বাইবেলে তো লেখা আছে – শেষের লোক আগে যাবে, এটা আমার জন্য লেখা হয়েছে। একটু অপেক্ষা কর, আমি তোমাকে দেখিয়ে দেব।” এইভাবে মানুষ নিজেকে প্রতারনা করছে।
 অথচ ঐ ব্যক্তির স্থলে সে থাকলে সেও ঐ একই রকম কাজ করত, কিন্তু তারপরেও অন্যের বিচার করে! যখন সে পুলপিটে দাঁড়ায় তখন অসহায়ের মত তার মুখের কথা জড়িয়ে যায় এবং নিজের পোষাকের প্রতি সচেতন হয়। প্রচারকদের দৃষ্টি থাকবে ঈশ্বরের দিকে, অন্য লোকে কি বলে- সেদিকে নয়। কিন্তু এরকম হলে তো তারা প্রচার করতে পারবে না।
 ভাল কাজ করার মত ক্ষমতা মানুষের আছে কি না, এমন প্রশ্ন করলে অনেকেই বলবে- নেই। কিন্তু তাদের ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে যে সে ক্ষমতা তাদের আছে। তাই মৃত্যু পর্যন্ত তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায়।
 তারা মনে করে তাদের হৃদয়ে সততা আছে, এবং এজন্য তারা ভাল কাজ করতে পারে না। যত আগেই নুতন জন্ম লাভ করুক না কেন, এমন কি যারা ঈশ্বরের কাজে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে তারাও মনে করে, “প্রভুর জন্য আমি এটা-ওটা করতে পারি।”
 কিন্তু প্রভুকে জীবন থেকে বের করে দিলে কি আমরা ভাল কাজ করতে পারি? মনুষ্যত্বের মধ্যে কি ভাল কিছু আছে? ভাল কাজ করে কি মানুষ বেঁচে থাকতে পারে? ভাল কিছু করার ক্ষমতা মানুষের নেই। নিজে থেকে মানুষ যখন কিছু করতে যায়, তখন সে পাপ করে। পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পর যীশুকে সরিয়ে রেখে অনেকে নিজে নিজে ভাল কাজ করতে চায়। মন্দ ছাড়া আমাদের ভিতরে অন্য কিছুই নেই। আমরা কেবল মন্দ বিষয়ের চর্চা করতে পারি। আমরা (এমন কি পরিত্রাণ প্রাপ্তরাও) নিজেদের চালনায় শুধু পাপই করতে পারি। আমাদের মাংসিক দেহে এটাই সত্য।
 
সব সময় আমরা কোন্‌টা করি? ভাল নাকি মন্দ?
মন্দ।
 
“Praise The Lord” গান বইতে একটা গান আছে এরকম, “যীশু বিনা আমরা উছোট খাই, হালবিহীন জাহাজের সাগর পাড়ি দেবার মত অর্থহীন।” যীশুর সান্নিধ্যে না থাকলে আমরা কেবলই পাপ করি। পাপ থেকে মুক্তি পাবার কারণে আমরা ধার্মিকগণিত হয়েছি। কিন্তু বাস্তব সত্য হলো – আমরা মন্দ।
 প্রেরিত পৌল বলেন, “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করিনা, কাজে তাহাই করি” (রোমীয় ৭:১৯ পদ)। মানুষ যীশুর সাথে থাকলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যখন সে যীশুর সাথে থাকেনা, তখন সে ঈশ্বরকে ভাল কাজ দেখাতে চায়। যত সে চেষ্টা করে তত বুঝতে পারে সে মন্দ কাজ করছে।
 দায়ুদ রাজারাও একই সমস্যা ছিল। দেশে যখন শান্তি বিরাজ করছিল, দেশ উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছিল তখন তিনি জানালায় দাঁড়ালেন। এমন দৃশ্য দেখলেন যে তিনি প্রলোভিত হলেন এবং কামনার বশবর্তী হলেন। প্রভুকে ভুলে যাওয়াতে তিনি কেমন হয়ে গেলেন! সত্যিই মন্দ হয়ে গেলেন। উরিয়কে হত্যা করলেন, তার স্ত্রীকে নিয়ে এলেন, কিন্তু তবুও নিজের পাপ দেখতে পেলেন না। বরং ঐ কাজের জন্য তিনি অজুহাত খাঁড়া করলেন।
 তখন, নাথন ভাববাদী তাঁর কাছে একদিন এলেন, “পরে সদাপ্রভু দায়ুদের নিকটে নাথনকে প্রেরণ করিলেন। আর তিনি তাঁহার নিকটে আসিয়া তাঁহাকে কহিলেন, -এক নগরে দুইটি লোক ছিল; তাহাদের মধ্যে একজন ধনবান, আর একজন দরিদ্র। ধনবানের অতি বিস্তর মেষাদি পাল ও গোপাল ছিল। কিন্তু সেই দরিদ্রের আর কিছুই ছিল না, কেবল একটি ক্ষুদ্র মেষবৎসা ছিল, সে তাহাকে কিনিয়া পুষিতেছিল; আর সেটা তাহার সঙ্গে ও তাহার সন্তানদের সঙ্গে থাকিয়া বাড়িয়া উঠিতেছিল; সে তাহারই খাদ্য খাইত, ও তাহারই পাত্রে পান করিত, আর তাহার বক্ষঃস্থলে শয়ন করিত, ও তাহার কন্যার মত ছিল। পরে ঐ ধনবানের গৃহে এক জন পথিক আসিল, তাহাতে বাটীতে আগত অতিথির জন্য পাক করনার্থে সে আপন মেষাদি পাল ও গোপাল হইতে কিছু লইতে কাতর হইল, কিন্তু সেই দরিদ্রের মেষবৎসাটি লইয়া, যে অতিথি আসিয়াছিল, তাহার জন্য তাহাই পাক করিল” (২ শমুয়েল ১২:১-৪ পদ)।
 দায়ুদ বললেন, “যে ব্যক্তি এমন কাজ করেছে, সে অবশ্যই মরবে।”ক্রোধে এতই উত্তেজিত হলেন যে তিনি বললেন, “তার এত আঁচে, সেখান থেকে একটা মেষ নিয়ে সে অতিথির জন্য খাবার প্রস্তুত করতে পারত। এ কাজ করার জন্য সে অবশ্যই মরবে।” তখন নাথন ভাববাদী বললেন, “আপনি সেই ব্যক্তি।” আমরা নুতন জন্মপ্রাপ্ত হলেও, যদি যীশুকে অনুসরন না করি, যীশুর সাথে না থাকি; আমরাও এমন করতে পারি।
 সব মানুষ, এমনকি বিশ্বস্ত লোকদের জন্যও এটা প্রযোজ্য। যীশুবিহীন অবস্থায় আমরা উছোট খাই এবং মন্দ কাজ করি। তাই, মন্দ হওয়ার পরেও প্রভু অনুগ্রহ করে আমাদের উদ্ধার করেছেন, এইজন্য আমরা তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। “ক্রুশতলে আমি বিশ্রাম চাই।”
যীশু খ্রীষ্টের পরিত্রাণের মাঝে আমাদের আত্মা বিশ্রাম পায়।
 কিন্তু তাঁর আশ্রয় ত্যাগ করে নিজেদের জ্ঞানে চললে আমরা কখনো বিশ্রাম পাবনা।
 
 

ব্যবস্থার পূর্বে ঈশ্বর আমাদেরকে বিশ্বাসপ্রসূত ধার্মিকতা দিয়েছেন।

 
কোনটা আগে – বিশ্বাস নাকি ব্যবস্থা?
বিশ্বাস
 
 প্রেরিত পৌল বলেন যে, ঈশ্বর প্রথমে আমাদের বিশ্বাসের ধার্মিকতা দিয়েছেন। বিশ্বাসের ধার্মিকতাই প্রথমে এসেছে। আদম ও হবাকে, কইন ও হেবলকে, শ্বেত ও হনোককে, নোহ পর্যন্ত, অব্রাহামকে, ইসহাককে, যাকোবকে এবং তার বার ছেলেকে ঈশ্বর তা দিয়েছিলেন। ঈশ্বরের বাক্যে বিশ্বাসের মাধ্যমে ধার্মিকতা দ্বারা তারা ধার্মিকগণিত হয়েছিলেন। তাঁরা আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর বাক্যে বিশ্বাস করে বিশ্রাম পেয়েছিলেন।
 সময় অতিক্রান্ত হল এবং যোযেফের কারণে যাকোবের বংশধরেরা ৪০০ বছর মিশর দেশে ক্রীতদাস ছিল। তারপর মোশির মাধ্যমে ঈশ্বর তাদের কনান দেশে নেওয়ার পরিচালনা দিলেন। যাহোক, ঐ ৪০০ বছর দাসত্ব করতে গিয়ে তারা ঈশ্বরের সেই বিশ্বাসের ধার্মিকতা ভুলে গেল।
 তাই ঈশ্বর পরাক্রম কাজের মাধ্যমে তাদেরকে সূফ সাগর পার করলেন এবং প্রান্তরে পরিচালনা দিলেন। যখন তারা পাপের প্রান্তরে পৌঁছাল, ঈশ্বর তখন সিনয় পর্বতে তাদের ব্যবস্থা দিলেন। তিনি তাদেরকে দশ আজ্ঞা দিলেন, যা ব্যবস্থার ৬১৩টি বিষয়ের মধ্যে নিহিত। “আমি সদাপ্রভু, তোমাদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, যাকোবের ঈশ্বর। মোশিকে সিনয় পর্বতে আসিতে দাও, আমি
তোমাদিগকে ব্যবস্থা দিব।” ঈশ্বর ইস্রায়েলদিগের জন্য ব্যবস্থা দিলেন।
 তিনি তাদের ব্যবস্থা দিলেন, যেন তাদের “পাপের জ্ঞান জন্মে” (রোমীয় ৩:২০ পদ)। তিনি কি পছন্দ করেন এবং অপছন্দ করেন, এবং তাদের কাছে তার ধার্মিকতা ও পবিত্রতা প্রকাশ করার জন্য তিনি ব্যবস্থা দিলেন।
 ইস্রায়েলের যত লোক ৪০০ বছর মিশরে দাসত্ব করেছিল, তারা সকলেই সূফ সাগর পার হয়েছিল। তারা কখনও অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, যাকোবের ঈশ্বরের সন্ধান পায় নাই। তারা তাঁকে চিনত না।
 ৪০০ বছর দাসত্বের সময় তারা ঈশ্বরের ধার্মিকতা ভুলে গিয়েছিল। সেই সময়ে তাদের কোন নেতা ছিল না। যাকোব এবং যোযেফ তাদের নেতা ছিলেন, কিন্তু তাঁরা মারা গিয়েছিলেন, মনে হয় যোযেফের বিশ্বাস যোযেফ তাঁর ছেলে মনঃশী ও ইফ্রয়িমের মধ্যে জাগাতে পারেননি।
 ঈশ্বরের ধার্মিকতা তারা ভুলে গিয়েছিল। তাই আবার ঈশ্বরের সাক্ষাত লাভের জন্য ঈশ্বরকে খুঁজে পাওয়া প্রয়োজন হয়ে পড়ল। সুতরাং প্রথমে ঈশ্বর তাদেরকে বিশ্বাসের ধার্মিকতা দিয়েছিলেন, কিন্তু সেই বিশ্বাস ভুলে যাওয়াতে ঈশ্বর তাদেরকে ব্যবস্থা দিলেন। তাদেরকে নুজের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্যই ঈশ্বর ব্যবস্থা দিলেন।
 ইস্রায়েলকে মুক্ত করার জন্য, তাঁর প্রজা করার জন্য, অব্রাহামের বংশধর করার জন্য তিনি ত্বকছেদ প্রথা দিলেন।
 ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রথমতঃ ঈশ্বর তাদেরকে জানাতে চাইলেন যে, ঈশ্বর আছেন এবং দ্বিতীয়তঃ তাদেরকে জানাতে চাইলেন যে তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপী। পাপ মুক্তির জন্য বলিদানের প্রথা দিয়ে ঈশ্বর তাদেরকে পাপমুক্ত করতে চাইলেন এবং তাঁর কাছে আনতে চাইলেন। এবং তিনি তাদেরকে তাঁর প্রজা করলেন।
 ব্যবস্থায় যে মসিহের আসার কথা ছিল, সেই ব্যবস্থা (বলিদান প্রথা) তে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে ইস্রায়েল জাতি পাপ থেকে মুক্তি পেল। লুক ১০ অধ্যায় ২৫ পদে আছে, “এক জন ব্যবস্থাবেত্তা উঠিয়া তাঁহার পরীক্ষা করিয়া কহিল।” এই ব্যবস্থাবেত্তা ছিল একজন ফরীশী। ফরীশীরা রক্ষণশীল ছিল এবং তাঁর বাক্যনুসারে জীবন যাপন করতে চেষ্টা করত। তারা প্রথমে দেশ রক্ষা করতে চাইত এবং তারপর ব্যবস্থা দ্বারা বাঁচতে চাইত। অনেক গোঁড়া লোক ও ছিল এবং অনেক আবেগ প্রবণ লোক ছিল যারা নিজেদের দর্শন মানুষকে দেখানোর জন্য সব সময় ব্যস্ত ছিল।
 
যীশু কাদের দেখা পেতে চেয়েছিলেন?
পালক বিহীন পাপীদের সাথে
 
 বর্তমানে এক ধরনের লোক আছে, “নির্যাতিত লোকদের রক্ষা কর” ----- এধরনের স্লোগান দিয়ে তারা সামাজিক আন্দোলন পরিচালনা করে। যীশু গরীব এবং নির্যাতিত লোকদের উদ্ধার করতে এসেছিলেন, এটাই তাদের ধারণা। তাই ধর্মতত্ত্ব বিষয়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা পড়াশোনা করে, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে, এবং সমাজের সর্বস্তর থেকে অবহেলিতদের মুক্ত করার চেষ্টা করে।
 তাদের সকলের প্রচেষ্টা, “আসুন আমরা সকলে পবিত্র ও অনুগ্রহের ব্যবস্থানুসারে বাঁচি, তার বাক্যনুসারে বাঁচি।” কিন্তু আসলে তারা তাঁর বাক্যের অর্থ বোঝে না। ব্যবস্থার পত্রানুসারে তারা বাঁচতে চেষ্টা করে কিন্তু ব্যবস্থার স্বর্গীয় অর্থ তারা বুঝতে পারে না।
 সুতরাং আমরা বলতে পারি, যীশু আসার পূর্বে প্রায় ৪০০ বছর কোন ভাববাদী ছিল না। এইভাবে তারা পালকহীন মেষপালে পরিনত হয়েছিল। তাদের কোন ব্যবস্থাও ছিল না নেতাও ছিল না। সেই সময়কার ভন্ড ধর্মীয় নেতাদের মাধ্যমে ঈশ্বর নিজেকে প্রকাশ করেননি। দেশটা হয়ে গেল রোমান সাম্রাজ্যের একটা উপনিবেশ। তাই যীশু সেই ইস্রায়েল লোকদিগকে বললেন, যারা প্রন্তরে তার অনুসরন করবে তিনি তাদের অভুক্ত রাখবেন না। পালকহীন সেই মেষপালের প্রতি তার করুনা হল।অনেকেই সেই সময়ে কষ্ট পাচ্ছিল। সেই সময়ে ব্যবস্থাবেত্তা এবং এই ধরনের পদে যারা ছিল তাদের উপরে অধিকার ন্যস্ত ছিল।
ফরীশীরা ছিল যিহুদী ধর্মালম্বী এবং ইস্রায়েলদের প্রধান। তারা ছিল খুব অহংকারী।
 লূক ১০-২৫ পদে এই ব্যবস্থাবেত্তা যীশুকে প্রশ্ন করল, “কি করিলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হইব?” মনে হচ্ছিল যেন ইস্রায়েলদের মধ্যে তার মত ধার্মিক আর কেউ নাই। তাই এই ব্যবস্থাবেত্তা (যে পাপের ক্ষমা পায় নাই) যীশুকে চ্যালেঞ্জ করল এইকথা বলে, “কি করলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হব?” এই ব্যবস্থাবেত্তা আমাদেরই প্রতিরূপ। সে যীশুকে জিজ্ঞাসা করল, “কি করলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হব” যীশু তাকে বললেন, “ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? কিরূপ পাঠ করিতেছ?”
 সে উত্তর দিয়ে বলল, “তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে, এবং তোমার প্রতিবেশীকে আপনার প্রেম করিবে।”
 তিনি তাকে বললেন, “যথার্থ উত্তর করিলে; তাহাই কর, তাহাতে জীবন পাইবে।”
 সে জানত না যে সে পাপের সমষ্টি, সে মন্দ, ভাল কিছুই করতে পারে না- এই জন্য সে যীশুকে চ্যালেঞ্জ করল। এই জন্য যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? কিরূপ পাঠ করিতেছ?”
 
আপনি কেমন ব্যবস্থা পাঠ করেছেন?
আমরা পাপী আমরা ব্যবস্থা পালন করতে অসমর্থ
 
“কিরূপ পাঠ করিতেছ?” “যথার্থ উত্তর করিলে; তাহাই কর তাহাতে জীবন পাইবে।” “কিরূপ পাঠ করিতেছ?” এর অর্থ হল ব্যবস্থা কতটা জানতে পারছ ও বুঝতে পারছ।
 ঐ ব্যবস্থাবেত্তার মত বর্তমান অনেক লোকই ভাবে যে, পালন করার জন্যই ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। “তুমি তোমার সমস্ত
অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত শক্তি ও তোমার সমস্ত চিত্ত দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে, এবং তোমার প্রতিবেশীকে আপনার প্রেম করিবে।”
 ব্যবস্থায় কোন দোষ ছিল না। তিনি আমাদের একটা বিশুদ্ধ আইন দিয়েছিলেন। আমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ, আমাদের সমস্ত প্রাণ, আমাদের সমস্ত শক্তি ও চিত্ত দিয়ে ঈশ্বরকে প্রেম করা সঠিক কাজ। কিন্তু এই পবিত্র বাক্য কেউ পালন করতে পারে নাই।
 “কিরূপ পাঠ করিতেছ” তার অর্থ হল ব্যবস্থা সত্য এবং সঠিক, কিন্তু কতটা বুঝতে পারছ? ব্যবস্থাবেত্তা মনে করেছিল পালন করার জন্য ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছেন। কিন্তু আমরা যেন আমাদের পাপগুলো দেখতে পারি আমাদের অধর্ম বুঝতে পারি এই জন্যই ঈশ্বর ব্যবস্থা দিয়েছিলেন। ব্যবস্থা আমাদের পাপ প্রকাশ করে দেয়, “তুমি পাপ করেছ আমি তোমাকে খুন করতে নিষেধ করেছি, কিন্তু তুমি খুন করেছ। কেন তুমি আমার অবাধ্য হলে?”
 ব্যবস্থা মানুষের হৃদয়ের পাপ প্রকাশ করে দেয়। মনে করুন আমি আসার পথে পাকা তরমুজ দেখেছিলেম। ব্যবস্থা দ্বারা ঈশ্বর আমাকে সতর্ক করেছিলেন, “ঐ তরমুজগুলো তুলে খেও না। যদি তুমি তা কর তাহলে আমাকে লজ্জা দেওয়া হবে।” “হ্যাঁ পিতা।” “এই খেতটি মিঃ অমুকের; সেই জন্য তুমি এই ফল তুলবে না।” “হ্যাঁ পিতা।”
 ব্যবস্থার মাধ্যমে যখন আমরা শুনতে পাই যে সেটা তুলতে আমাদিগকে নিষেধ করা হয়েছে, তোলার জন্য তখন আমাদের ভিতরে প্রচন্ড ইচ্ছা জাগে। যদি কোন স্প্রিংকে চেপে ধরি, প্রতিক্রিয়া হিসাবে সেই স্প্রিং উল্টো চাপ দেয়। মানুষের পাপ ও ঠিক সে রকম। ঈশ্বর বলেছেন কখনও মন্দ কাজ কর না। তিনি পবিত্র, তিনি সম্পূর্ণ এবং তিনি নিজে তা পালন করতে সক্ষম এইজন্য তিনি এই কথা বলতে পারেন। অন্যদিকে আমরা পাপ করব না- কখনও তা হতে পারে না এবং ভাল কাজ করব কখনও তা সম্ভব না। আমাদের হৃদয়ে ভাল কিছু কখনই নেই। ব্যবস্থায় “কখনও কর না” কথাটির দ্বারা চুক্তি করা হয়েছে। কেন? মানুষের
হৃদয়ে ব্যভিচার রয়েছে। কামনা বহির্ভূত হয়ে আমরা কাজ করি। হৃদয়ে ব্যভিচার রয়েছে বলে আমরা ব্যভিচার করি।
 সতর্কতার সাথে আমাদের বাইবেল পাঠ করা উচিত। যীশুকে আমি যখন প্রথম বিশ্বাস করেছিলাম, আমি তাঁর বাক্যের দ্বারাই তাঁকে বিশ্বাস করেছিলেম। আমি পড়েছিলাম যে আমার জন্যই যীশু ক্রুশে মরেছেন, আমি কান্না থামিয়ে রাখতে পারিনি। আমার মত এমন এক জঘণ্য ব্যক্তির জন্য তিনি ক্রুশে মরলেন। আমার হৃদয়ে এমন গভীরভাবে বেদনা অনুভব করলাম যে আমি তাকে বিশ্বাস করলাম। তখন আমি ভাবলাম, “বিশ্বাস যদি করতেই হয়, তাঁর বাক্যনুসারেই বিশ্বাস করতে হবে।”
 যাত্রাপুস্তক ২০ অধ্যায়ে আমি পড়লাম, “আমার সাক্ষাতে তোমার অন্য দেবতা না থাকুক।” এই বাক্যনুসারে আমি অনুতাপ সহকারে প্রার্থনা করলাম। আমি নিজেকে খুঁজে দেখলাম আমার হৃদয়ে অন্য দেবতা ছিল কি না, অনর্থক তাকে ডেকেছি কিনা অথবা অন্য দেবতার সামনে কখনও প্রণিপাত করেছি কি না। আমি দেখতে পেলাম আমার পূর্ব পুরুষদের সম্মান দেখাতে গিয়ে যে আচার অনুষ্ঠান করেছি তার মাধ্যমে আমি অন্য দেবতার কাছে নত হয়েছি। অন্য দেবতা থাকার পাপ আমার ছিল।
 তাই আমি অনুতাপ করে প্রার্থনা করলাম, “হে প্রভু আমি প্রতিমা পূজা করেছি। এইজন্য আমার বিচার হওয়া উচিত, দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর। আমি আর কখনো এই কাজ করব না।” এইভাবে আমি একটা পাপের ক্ষমা চাইলাম।
 তারপর আমি চিন্তা করে বের করতে চেষ্টা করলাম যে, আমি তাঁর নাম কখনও অনর্থক নিয়েছি কি না। তখন আমার মনে পড়ল, যে সময়ে আমি ঈশ্বরকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম সে সময়ে আমি ধুমপান করতাম। আমার বন্ধুরা আমাকে বলত, “ধুমপান করে কি তুমি ঈশ্বরকে লজ্জিত করছ না? একজন খ্রীষ্টিয়ান কিভাবে ধুমপান করতে পারে?”
 এটা ছিল তাঁর নাম অনর্থক নেওয়ার সামিল। তাইনয় কি? আমি আবার প্রার্থনা করলাম, “হে প্রভু আমি তোমার নাম অনর্থক নিয়েছি। আমাকে ক্ষমা কর। আমি আর ধুমপান করব না।” তাই আমি ধুমপান ত্যাগ করার চেষ্টা করলাম। এক বছর যাবৎ আমি আগুন ধরালাম
এবং নিভালাম। ধুমপান ত্যাগ করা কঠিন, এমনকি প্রায় অসম্ভব ব্যাপার ছিল। এক সময় আমি সম্পূর্ণরূপে ধুমপান ত্যাগ করতে পারলাম। আমার মনে হল আরেকটা পাপ থেকে আমি মুক্ত হলাম।
 পারবর্তী আজ্ঞা, “বিশ্রামবারকে পবিত্র বলিয়া মান্য করিও।”এর অর্থ হল রবিবারে কাজ করা বা অর্থ উপার্জন করা যাবে না। আমি তাও করলাম।
 তারপর, “পিতা-মাতাকে সমাদর করিও।” যখন আমি তাদের কাছ থেকে দূরে থাকতাম তখন তাদের শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু কাছালাছি থাকলে তাদের প্রতি মনস্তাপ জাগত।
 “হায়, হায় আমি ঈশ্বরের সাক্ষাতে পাপ করেছি। প্রভু দয়া করে আমাকে ক্ষমা কর।” আমি অনুতাপ সহকারে প্রার্থনা করলাম।
 কিন্তু যেহেতু তারা মারা গিয়েছিলেন তাই পিতামাতাকে সমাদর করা আমার পক্ষে সম্ভব হল না। আমি কি করতে পারতাম? “হে প্রভু, আমার এই অনর্থক পাপ ক্ষমা কর। আমার জন্য তুমি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলে।” আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ হলাম।
 এইভাবে আমি ভাবলাম যে আমি একটা একটা করে সব পাপ থেকে মুক্ত হয়েছি। আরও অনেক ব্যবস্থা ছিল, খুন কর না, ব্যভিচার কর না, লোভ কর না,.... আমি এর একটাও রক্ষা করতে পারিনি। আমি সারারাত ধরে প্রার্থনা করলাম। আপনি নিশ্চয়ই জানেন অনুতাপের প্রার্থনা করা আনন্দের বিষয় নয়। আসুন, এই সম্বন্ধে কিছু বলি।
 যীশুর ক্রুশ ধ্যান করে আমি বুঝতে পারলাম সেটা কত মর্মান্তিক ছিল। যারা তার বাক্যের দ্বারা জীবন-যাপন করতে পারবে না তাদের জন্যই তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। আমি সারারাত ধরে কাঁদলাম, ভাবলাম আমি তাঁকে কত ভালবাসি এবং সত্যিকার আনন্দ দেওয়ার জন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিলাম।
 প্রথম বছর গীর্জাতে আমার খুব সহজেই কেটে গেল। কিন্তু পরবর্তী বছরগুলো আমার কাছে খুব কঠিন মনে হল। কারণ চোখের জল ফেলার আগে আমাকে বিষয়টি নিয়ে খুব ভাবতে হল।
 যখন আমার চোখে জল এল না, আমি প্রার্থনা করতে পাহাড়ে গেলাম এবং তিনদিন উপবাস করলাম। তারপর আমার চোখে জল এল। আমি চোখের জলে ভিজে গেলাম, সমাজে ফিরে এলাম এবং
গীর্জা ঘরে কাঁদতে লাগলাম।
 আমার চারিদিকে লোকেরা বলতে লাগল, “পাহাড়ে গিয়ে প্রার্থনা করে তুমি আরও পবিত্র হয়েছ।” কিন্তু আমার চোখ আবার শুকিয়ে গেল। তৃতীয় বছর আমার জন্য আরও কঠিন হল। আমার বন্ধু ও সহ খ্রীষ্টিয়ানদের প্রতি আমি যে ভুল করেছিলাম তাই স্মরণ করে আমি আবার কাঁদতে পারলাম। কিন্তু চতুর্থ বছর পর আমার চোখ আবার শুকিয়ে গেল। আমার চোখের ভিতরের অশ্রুর থলি আর কোন কাজ করল না।
 পাঁচ বছর অনেক চেষ্টা করেও আমি কাঁদতে পারলাম না। তারপর আমি নাকি কান্না শুরু করলাম। এর আরও কয়েক বছর পরে নিজের প্রতি আমার খুব ঘৃণা জন্মালো এবং বাইবেলের কাছে ফিরে এলাম।
 
 

পাপের জ্ঞান লাভ করার জন্য ব্যবস্থা

 
ব্যবস্থা সম্বন্ধে আমাদের কি বোঝা উচিত?
আমরা কখনও ব্যবস্থা রক্ষা করতে পারি না
 
 রোমীয় ৩:২০ পদে লেখা আছে, আমরা পড়ি, “ব্যবস্থা দ্বারা পাপের জ্ঞান জন্মে।” আমি মনে করেছিলাম যে এটা প্রেরিত পৌলের ব্যক্তিগত কথা। এবং যে বাক্যগুলো আমি পছন্দ করতাম সেই বাক্যগুলো বিশ্বাস করতাম। কিন্তু আমার চোখের জল শুকিয়ে যাবার পর আমি আর আমার বিশ্বাস ধরে রাখতে পারলাম না।
 তাই আমি অনবরত পাপ করতে থাকলাম। এবং এক সময় দেখলাম যে আমার হৃদয় পাপে এওত পরিপূর্ণ হয়ে গেছে যে, ব্যবস্থা অনুসরন করলে আমি আর বাঁচতে পারব না। আমি আর বইতে পারছিলাম না। আমি ব্যবস্থা ত্যাগ করতে পারছিলাম না কারণ আমি জানতাম, ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছে যেন আমরা ব্যবস্থা পালন করি। শেষ পর্যন্ত আমি বাইবেলের ঐ ব্যবস্থাবেত্তাদের মত একজন হয়ে পড়লাম। বিশ্বাসের জীবন-যাপন করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ল।
 সুতরাং এই কষ্ট থেকে উদ্ধার পাবার জন্য আমি ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এমন একজন প্রচারককে খুঁজতে লাগলাম, যিনি জল ও আত্মার মাধ্যমে নুতন জন্মের কথা প্রচার করেন। আমি একজন প্রচারক পেলাম যিনি প্রচার করতেন যে আমাদের সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়েছে।
 যখন আমি শুনতে পেলাম যে আমি পাপ থেকে মুক্ত, আমার হৃদয়ের মধ্যে একটা নির্মল মৃদু বাতাস বয়ে গেল। যখন আমি ব্যবস্থা পড়তে শুরু করলাম, তখন আমি আমার সমস্ত পাপ দেখতে পেলাম এবং বুঝতে পারলাম। আমি হৃদয়ে ঈশ্বরের দশ আজ্ঞা লঙ্ঘন করেছিলাম। হৃদয়ে পাপ করাও পাপ এবং নিজের অজান্তেই আমি ব্যবস্থার একজন বিশ্বাসী হয়ে গেলাম।
 যখন ব্যবস্থা পালন করতে পারতাম তখন নিজেকে খুব সুখি মনে হত। কিন্তু যখন আমি ব্যবস্থা পালন করতে পারতাম না তখন নিজেকে খুব অসহায়, অস্থির এবং দুঃখিত মনে হত। ক্রমান্বয়ে এই ব্যাপারে আমি উদ্‌ভ্রান্ত হয়ে হয়ে উঠলাম। প্রথম থেকেই যদি আমাকে শিক্ষা দেওয়া হত, “না, না। ব্যবস্থার আরও একটা অর্থ আছে। ব্যবস্থা তোমাকে দেখিয়ে দেয় তুমি একটা পাপের সমষ্টি, অর্থের প্রতি, বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি এবং সুন্দর জিনিসের প্রতি তোমার লোভ আছে, এমন কিছু বিষয় আছে ঈশ্বরের থেকেও যা তুমি বেশি ভালবাস। তুমি জগতের বিষয় অনুসরন করতে চাও। পালন করার জন্য ব্যবস্থা তোমাকে দেওয়া হয়নি কিন্তু তুমি যেন নিজেকে পাপপূর্ণ হৃদয়ের পাপী হিসাবে চিনতে পার এজন্য ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল।”
 যদি আমাকে অতীতে কেউ এভাবে শিক্ষা দিত, তাহলে গত দশ বছর ধরে এভাবে আমাকে কষ্ট পেতে হত না। আসল সত্য বোঝার আগে এই ভাবেই আমি ব্যবস্থা অনুসারে চলতে চেষ্টা করতাম।
 চতুর্থ আজ্ঞা বলে, “বিশ্রামবারকে পবিত্র বলিয়া মান্য করিও।” তার অর্থ হলো বিশ্রামবারে আমরা কোন কাজ করব না। অর্থাৎ দূরে কোথাও যেতে হলে আমরা হেঁটে যাব, গাড়িতে চড়ে নয়। এবং আমি ভাবতাম যে, সম্মান পাবার জন্য হেঁটে গিয়ে আমি প্রচার করব। সর্বপরি, আমি ব্যবস্থাই প্রচারের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলাম। আমি ভাবতাম আমি যা প্রচার করি নিজের জীবনেও তা অনুসরন করব। কিন্তু বিষয়টা এত কঠিন ছিল যে, আমি পরিত্যাগ করার জন্য সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়ে ফেলেছিলাম।
 যেমন লেখা আছে “কিরূপ পাঠ করিতেছ।” এই প্রশ্নটি আমি বুঝতে পারিনি বিধায় ১০ বছর কষ্ট পেয়েছি। ঐ ব্যবস্থাবেত্তাও একই ভুল করেছিল। সে ভেবেছিল সতর্কতার সাথে ব্যবস্থা মেনে চলবে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে।
 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “কিরূপ পাঠ করিতেছ?” হ্যাঁ তুমি ঠিকই উত্তর দিয়েছ; আক্ষরিক অর্থে তুমি এটা গ্রহণ করেছ। পালন করার চেষ্টা করেছ। এটা পালন করলে তুমি বাঁচবে, পালন না করলে মরবে। পাপের বেতন মৃত্যু। “যদি পালন না কর, তবে মরবে।” (জীবনের বিপরীত মৃত্যু, তাই নয়কি?)
 কিন্তু তবুও ব্যবস্থাবেত্তা বুঝতে পারল না। আপনি এবং আমি, আমরাই সেই ব্যবস্থাবেত্তা। আমি ১০ বছর ধর্মতত্ত্ব পড়েছি, সবকিছু চেষ্টা করেছি, সব কিছু পড়েছি এবং করেছিও সবকিছু –উপবাস, বিভ্রম, পরভাষায় কথা বলা ……..। আমি ১০ বছর বাইবেল পড়েছি এবং ভাল কিছু করার প্রত্যাশা করেছি। কিন্তু আত্মিকভাবে আমি একজন অন্ধ ছিলাম।
 সুতরাং এমন ব্যক্তির সংগে একজন পাপীর সাক্ষাত হওয়া উচিত, যে যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসাবে চিনিয়ে দিতে পারে। তখন সে বুঝতে পারবে “হ্যাঁ, আমরা কখনও ব্যবস্থা পালন করতে পারব না। যত রকম ভাবেই চেষ্টা করি না কেন, চেষ্টা করতে করতেই একদিন মারা যাব। কিন্তু যীশু জল ও আত্মার মাধ্যমে আমাদিগকে উদ্ধার করতেই এসেছিলেন! হাল্লিলূয়া!” জল ও আত্মার মাধ্যমে আমরা উদ্ধার পেতে পারি। এটা ঈশ্বরের অনুগ্রহ, ঈশ্বরের দান। সেজন্য আমরা ঈশ্বরের প্রশংসা করি।
 আমি যথেষ্ট ভাগ্যবান যে এতটা বেপরোয়া হয়েও আমি গ্রাজুয়েট হতে পেরেছিলাম। কিন্তু অনেক বৃথাই সারা জীবন ধর্মতত্ত্ব পড়ে এবং মৃত্যুদিন পর্যন্ত আসল সত্য বুঝতে পারে না। অনেকে কয়েক দশক ধরে বিশ্বাস করে, আবার অনেকে কয়েক পুরুষ ধরে বিশ্বাস করে কিন্তু তারপরেও নুতন জন্ম লাভ করতে পারে না।
 পাপী থাকা অবস্থায় আমরা গ্রাজুয়েট হই, আমরা বুঝতে পারি ব্যবস্থা পালন করা কখনই সম্ভব নয়। তখন আমরা যীশুর কাছে এসে জল ও আত্মার সুসমাচার শুনতে পাই। যীশুর দেখা পেলে আমরা সকল বিচারে প্রকৃত জ্ঞানে গ্রাজুয়েট হই, এবং নরকের অনন্ত শাস্তি থেকে মুক্ত হই। আমরা জঘণ্যতম পাপী, কিন্তু জল ও রক্তে আমাদিগকে উদ্ধার করে ধার্মিকগণিত করেন।
 যীশু আমাদিগকে বলেন যে আমরা কখনই তাঁর ইচ্ছায় বাঁচতে পারি না। ব্যবস্থাবেত্তাকে যীশু এই কথা বলেছিলেন, কিন্তু সে তা বুঝতে পারেনি। তাই তাকে বুঝানোর জন্য যীশু একটা গল্প বললেন।
 
কি কারনে মানুষ বিশ্বাসের জীবন রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়?
পাপ
 
“এই কথা লইয়া যীশু বলিলেন, এক ব্যক্তি যিরূশালেম হইতে যিরীহোতে নামিয়া যাইতেছিল, এমন সময় দস্যুদলের হস্তে পড়িল; তাহারা তাহার বস্ত্র খুলিয়া লইল, এবং তাহাকে আঘাত করিয়া আধমরা ফেলিয়া চলিয়া গেল। (লূক ১০:৩০ পদ)।” যীশু তাকে বুঝতে চাইলেন যে ঐ লোকটি যেমন দস্যুদের দ্বারা প্রহারিত হল এবং মৃত্যুর অবস্থায় পৌঁছে গেল, সারা জীবন ধরে সেও ঐ একই কষ্ট ভোগ করেছে।
 এক ব্যক্তি যিরূশালেম থেকে যিরীহোতে নেমে যাচ্ছিল। যিরীহো হল পার্থিব জগত, এবং যিরূশালেম ধর্মের নগরী, বিশ্বাসের নগরী এবং ব্যবস্থা সম্বন্ধে গর্বিত লোকদের নগরী। এটা আমাদের বলে যে, যদি আমরা ধর্ম হিসাবে খ্রীষ্টে বিশ্বাস করি, ধ্বংস হওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নাই।
 “এক ব্যক্তি যিরূশালেম হইতে যিরীহোতে নামিয়া যাইতেছিল, এমন সময় দস্যুদলের হস্তে পড়িল; তাহারা তাহার বস্ত্র খুলিয়া লইল, এবং তাহাকে আঘাত করিয়া আধমরা ফেলিয়া চলিয়া গেল।” বিশাল
জনসংখ্যায় পরিপূর্ণ যিরূশালেম ছিল একটি বৃহৎ নগরী। সেখানে একজন মহাযাজক এবং একদল যাজক ছিল। লেবীয় এবং ধর্মীয় জ্ঞান সম্পন্ন অনেক লোক সেখানে ছিল। ব্যবস্থা ভালো জানে এমন লোকও ছিল। তারা ব্যবস্থা অনুসারে জীবন যাপন করার চেষ্টা করত। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ক্রমানয়ে যিরীহোতে নেমে যাচ্ছিল। তারা পার্থিব জগতে (যিরীহো) পতিত হচ্ছিল এবং দস্যুর সাক্ষাত পেল।
 যিরুশালেম থেকে যিরীহো যাবার পথে লোকটি দস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হল এবং দস্যুরা তার পোশাক খুলে নিল। “তাহারা তাহার বস্ত্র খুলিয়া লইল” অর্থাৎ সে তার ধার্মিকতা হারিয়ে ফেলল। ব্যবস্থা দ্বারা এবং ব্যবস্থা অনুসারে চলা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। প্রেরিত পৌল রোমীয় ৭ অধ্যায় বলেন, “কেননা আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি। পরন্তু যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি করিনা, কিন্তু আমাতে বসবাসকারি পাপ তাহা করে”।
 আমি ভাল কাজ করতে চাই এবং তাঁর বাক্য অনুসারে বাঁচতে চাই। মানুষের হৃদয়ে থাকে মন্দ চিন্তা, ব্যভিচার, বেশ্যাগমন, খুন, চুরি, লোভ, দুষ্টতা, প্রবঞ্চনা, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, ধর্মনিন্দা, অহংকার এবং মূর্খতা (মার্ক ৭:২১-২৩ পদ)।
 এগুলি আমাদের হৃদয়ে থাকে এবং যখন তখন বেরিয়ে আসে। তাই আমাদের যা করা উচিত আমরা তা করি না, এবং যা না করা উচিত আমরা তাই করি। আমাদের হৃদয়ের মন্দতা গুলি আমরা বার বার করি। শয়তান মন্দকাজ করার জন্য আমাদের সামান্য একটু প্রলোভন দেখায়।
 
 

সমস্ত মানুষের হৃদয়ে পাপ থাকে

 
আমরা কি ব্যবস্থা দ্বারা জীবন ধারণ করতে পারি?
না
 
 মার্ক ৭ অধ্যায় বলা হয়েছে, “যাহা কিছু বাহির হইতে মনুষ্যের ভিতরে যায় তাহা তাহাকে অশুচি করে না; কিন্তু যাহা কিছু মনুষ্যের ভিতর হইতে বাহির হয় তাহাই মনুষ্যকে অশুচি করে।” তিনি আমাদের বলেন যে, মানুষের হৃদয় মন্দ চিন্তা করে ব্যভিচার, বেশ্যাগমন, খুন, চুরি, লোভ, দুষ্টতা, প্রবঞ্চন, লম্পটতা, কুদৃষ্টি, ধর্মনিন্দা, অহংকার এবং মূর্খতা থাকে। আমাদের সবার হৃদয়ে খুনের প্রবণতা আছে।
 এমন কেউ নেই যে নরহত্যা করে না। মা তার সন্তানদেরকে নিষেধ করেন, “না, এটা কর না। আমি তোমাকে বলেছিলাম ওটা কর না; তুমি নরকে যাবে। আমি বললাম তুমি ওটা কর না।” তারপর বলেন, “এখানে আস। আমি তোমাকে বলেছিলাম ওটা কর না। আমি তোমাকে খুন করব।” এটা এক ধরনের খুন করা। আপনার অবিবেচনাপ্রসূত কথার দ্বারা আপনি আপনার সন্তানকে খুন করতে পারেন।
 আমাদের সন্তানেরা দ্রুত আমাদের কাছ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায় এই জন্য তারা বেঁচে যায়, কিন্তু আমরা যদি তাদের উপরে আমাদের রাগ উদ্‌গিরন করি তাহলে তারা মারা যাবে। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমরা তাদেরকে খুন করব। মাঝে মাঝে আমরা আফসোস করি, “হায় ঈশ্বর কেন আমি এমন করলাম।” শিশুকে প্রহার করার পরে আমরা সে আঘাত প্রাপ্ত জায়গাগুলো দেখি তখন মনে হয় আমরা বোধ হয় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। হৃদয়ে প্রবনতা আছে বলেই আমরা এরকম করি।
 কাজেই “আমি যা করতে চাই না তাই করি।” অর্থাৎ আমরা মন্দ বিধায় মন্দ কাজ করি। আমাদিগকে পাপ করানোর জন্য প্রলোভনে ফেলা শয়তানের পক্ষে খুবই সহজ।
 মনে করুন কোরিয় ভিক্ষু সুংচলে –এর মত পাপ থেকে উদ্ধার না পাওয়া কোন ব্যক্তি ১০ বছর ধরে একটি কুঁড়ে ঘরে দেওয়ালের দিকে মুখ করে ধ্যানমগ্ন আছে। দেওয়ালের দিকে মুখ করে বসে আছে এটা ভাল, কিন্তু কাউকে তো তার খাবার এনে দিতে হবে এবং উচ্ছিষ্ট সরিয়ে নিতে হবে।
 এইজন্য তাকে কারো সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সে যদি কোন পুরুষ হয় তাহলে সমস্যা নেই, কিন্তু ধরুন সে একজন
সুন্দরী মহিলা। যদি হঠাৎ এক নজর সে তাকে দেখে ফেলে তাহলে তার এই বসে থাকা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
 সে মনে মনে বলে, “আমি ব্যভিচার করব না; আমার হৃদয়ে তা আছে কিন্তু আমি তা ঢেকে রাখব। আমি তা পরিত্যাগ করব না! আমার মন থেকে দূর হও!”
 যে মুহুর্তে সে ঐ মহিলাকে দেখে তখন থেকেই তার ভিতরে মন্দ ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। মহিলাটি চলে যাবার পর সে নিজের হৃদয়কে দেখে। তার ১০ বছরের কঠিন সাধনা বিফলে গেল।
 কোন ব্যক্তির ধার্মিকতা কেড়ে নেওয়া শয়তানের পক্ষে অনেক সহজ। শয়তান শুধু সামান্য একটু ধাক্কা দেয়। পাপ থেকে মুক্ত না হয়ে মানুষ যত কঠিন সাধনাই করুন না কেন সে পাপে ডুবে যায়। প্রতি রবিবারে নিয়মিত দশমাংশ দেয়, চল্লিশ দিন উপবাস করে, একশ’ দিন ভোরের প্রার্থনা করে, কিন্তু শয়তান তার জীবনের ভাল বিষয়গুলো দিয়েই তাকে প্রলোভনে ফেলে।
 “আমি তোমাকে এ কোম্পানিতে একটি ভাল পদে চাকরি দিতে চাই, কিন্তু তুমি তো খ্রীষ্টিয়ান তাই রবিবারে কাজ করতে পারে না, তাই না? এটা একটা খুব বড় পদ। মাসে তুমি তিন রবিবার কাজ করতে পার এবং এক রবিবার গীর্জায় যেতে পার। তাহলে তুমি অনেক বড় মর্যাদা উপভোগ করতে পারবে এবং অনেক বেতন পাবে। বিষয়টি কেমন মনে হয়?” এতে সম্ভবত একশ জনের মধ্যে একশ জনই বিকিয়ে যাবে।
 এতে যদি কাজ না হয় তাহলে এমন ব্যক্তি আছে যাদের নারীর প্রতি দূর্বলতা আছে। শয়তান তার সামনে নারীকে উপস্থিত করে, তখন সে ঈশ্বরকে ভুলে গিয়ে আপাদ – মস্তক নারীর প্রেমে পড়ে যায়। এভাবেই মানুষের ধার্মিকতা ফাঁদে আটকে যায়।
 যদি আমরা ব্যবস্থা দ্বারা বাঁচতে চাই তাহলে আমরা আমাদের ধার্মিকতা হারাব, পরিবর্তে পাব পাপের ক্ষত, বেদনা ও দারিদ্রতা। “যিরুশালেম হইতে যিরীহোতে নামিয়া গেল, এমন সময়ে দস্যুদলের হস্তে পড়িল; তাহারা তাহার বস্ত্র খুলিয়া লইল এবং তাহাকে আঘাত করিয়া আধমরা ফেলিয়া চলিয়া গেল।”
অর্থাৎ পবিত্র ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে জীবন – যাপন করার জন্য আমরা যিরুশালেমে থাকার চেষ্টা করতে পারি, কিন্তু আমাদের
দূর্বলতার জন্য আমরা বারবার উছোট খাব এবং ধ্বংস হয়ে যাব।
 তখন আমরা ঈশ্বরের কাছে অনুতাপের প্রার্থনা করব। “হে প্রভু আমি পাপ করেছি। আমাকে ক্ষমা কর। আমি আর কখনো এমন করব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে এটাই আমার শেষ। আর একবার আমি তোমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করছি।”
 কিন্তু এটা কখনও স্থায়ী হয় না। পাপ ছাড়া মানুষ এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারে না। কিছু সময়ের জন্য হয়তো সে এড়িয়ে চলতে পারে, কিন্তু এটা অসম্ভব যে সে আবার পাপ করবে না। তাই সে আবার পাপ করে। “হে প্রভু আমাকে ক্ষমা কর।” যদি এরকম চলতে থাকে তাহলে তারা গীর্জা (ধর্ম) থেকে বিতাড়িত হবে। সে ঈশ্বর থেকেও বিতাড়িত হবে এবং পাপের কারণে নরকে যাবে।
 যিরীহোতে যাওয়ার মানে পার্থিব জগতে পতিত হওয়া, জগতের নিকটবর্তী হওয়া এবং যিরুশালেম থেকে দূরবর্তী হওয়া। শুরুতে যিরুশালেম নিকটবর্তী থাকে। কিন্তু পাপ এবং অনুতাপের চক্রের কারণে আমরা গভীর জগতের মাঝে, যিরীহোর পথে নিজেদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।
 
কারা মুক্তি পেতে পারে?
যারা নিজের চেষ্টা পরিত্যাগ করে
 
 যিরীহোর পথে লোকটি কাদের সাক্ষাত পেল? দস্যুদের সাক্ষাত পেল। যে ব্যবস্থার মধ্যেও জীবন –যাপন করে না। সে নিকৃষ্ট কুকুরের সমান। সে পান করে এবয় যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়ে, যেখানে খুশি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়। পরবর্তী সকালে জেগে উঠে সে আবার পান করে। নিকৃষ্ট কুকুর তার নিজের বমি খায়। এজন্যই সে কুকুর। সে জানে তার পান করা উচিত নয়। পরের দিন সে অনুতাপ করে কিন্তু আবার পান করে।
 যে লোকটি যিরীহোর পথে দস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল সেই লোকটির মত। আহত এবং অর্ধমৃত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে চলে
গেল। তার হৃদয়ে শুধু পাপ রয়েছে। মানুষ এরকমই।
 মানুষ যীশুকে বিশ্বাস করে এবং ব্যবস্থানুসারে (যিরুশালেমে) বাস করে। কিন্তু হৃদয়ের পাপসহ পরিত্যাক্ত হয়। তাদের ধর্মীয় জীবন প্রদর্শনের জন্য তাদের হৃদয়ের পাপের ক্ষত দেখাতে হবে। যাদের হৃদয়ে পাপ থাকে তারা নরকে নিক্ষিপ্ত হয়। তারা এটা জানে কিন্তু কি করতে হবে এটা জানে না। আপনি এবং আমি, আমরা কি একই স্থানে ছিলাম না? হ্যাঁ। আমরা একই রকম ছিলাম।
 যে ব্যবস্থাবেত্তা সারা জীবন ধরে ব্যবস্থার ভুল ব্যাখ্যা করল সে আহত অবস্থায় নরকে যাবার যোগ্য। সে আমাদেরই মত, আপনার এবং আমার মত।
 একমাত্র যীশুই পারেন আমাদের উদ্ধার করতে। আমাদের চারিদিকে অনেক বুদ্ধিমান লোক আছে যারা সব সময় নিজেদের জাহির করতে চায়। তারা সকলে ঈশ্বরের ব্যবস্থানুসারে চলার চেষ্টা করে। নিজেদের কাছে তারা সৎ না। তারা কোদালকে কোদাল বলতে পারে না, কিন্তু নিজেদেরকে বিশ্বস্ত দেখানোর জন্য নম্রভাবে চলাফেরা করে।
 এদের মধ্যে যিরীহোর পথের পাপী আছে, যারা দস্যু দ্বারা প্রহারিত এবং মৃতও। আমাদের জানা উচিত যে ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমরা কতটা দূর্বল।
 তাঁর সাক্ষাতে আমাদের স্বীকার করা উচিত, “প্রভু তুমি যদি আমাকে উদ্ধার না কর তাহলে আমি নরকে যাব। দয়া করে আমাকে রক্ষা কর। তুমি যেখানে বলবে আমি সেখানে যাব, যত বড় তুফান আসুক না কেন। তুমি তোমার সত্য সুসমাচার আমাকে শুনাও। তুমি যদি আমাকে পরিত্যাগ কর আমি নরকে যাব। আমি তোমার কাছে ভিক্ষা চাই আমাকে উদ্ধার কর।”
যারা জানে যে তারা নরকে যাচ্ছে, যারা নিজেদের চেষ্টা পরিত্যাগ করে প্রভুর কাছে নিজেদের উত্‍সর্গ করেছে তারা উদ্ধার পাবে। নিজেদের দ্ধারা আমরা কখনই উদ্ধার পাব না।
 আমাদের জানতে হবে যে, আমরা দস্যু দ্ধারা আত্রান্ত সেই লোকটির মত।